‘আমার ছেলের লাশটা আইন্না দাও, আমি দেখমু। আমার পোলাডা ১২ দিনের ছুটি পাইয়া চির ছুটিতে চইলা গেলো।’ এভাবেই আহাজারি করছিলেন সৌদি আরবে ওমরা করতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মামুন মিয়ার (২২) বাবা আবদুল আওয়াল।
নিহত মামুন কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার মোস্তাপুর গ্রামের বাসিন্দা। বুধবার সকাল থেকে প্রতিবেশী ও স্বজনরা ভিড় করতে থাকেন মামুনের বাড়িতে।
বুধবার সকালে মোস্তাপুর গিয়ে দেখা যায়, মামুনের বাবা আবদুল আওয়াল নির্বাক হয়ে বসে আছেন। মা মমতাজ বেগম ছেলের জন্য হাউমাউ করে কাঁদছেন। মোবাইলে ছবি দেখে বুক চাপড়ে কাঁদছেন। আবদুল আওয়ালের ৩ মেয়ে ২ ছেলের মধ্যে মামুন মিয়া চার নম্বর সন্তান। ৬ মাস আগে মামুন তার মামা ইয়ার হোসেনের মাধ্যমে সৌদিতে যান। সেখানে হোটেল বয়ের চাকরি নেন।
নিহত মামুনের মামী তাসলিমা বেগম বলেন, ‘ঘটনার আগে মামুন, তার মামা ইয়ার হোসেন ও মামুনের ভাগিনা জাহিদুল ইসলাম গাড়িতে করে ওমরা করার জন্য মক্কার উদ্দেশে রওনা করে। পথিমধ্যে তারা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তাদের বহন করা গাড়িটি ব্রেকফেল করে একটি ব্রিজের সঙ্গে ধাক্কা খায়। পরে গাড়িতে আগুন ধরে যায়। মামুন গাড়ি থেকে বের হতে পারে নাই। আগুনে পুড়ে মারা যায় সে। দুর্ঘটনায় ইয়ার হোসেন ও জাহিদ গুরুতর আহত হন। তারা এখন মক্কার একটি হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।’
নিহত মামুনের বাবা আবদুল আওয়াল বলেন, ‘অন্তত ৯ মাস আগে মামুন ভিসার জন্য আবেদন করে। বয়স কম হওয়ায় সে আবেদন বাদ দেয়া হয়। পরে ৬ মাস আগে পুনরায় আবেদন করে মামুন। ৫ লাখ টাকা খরচ করে তাকে সৌদিতে আরবে পাঠাই। পুরোটা টাকা ঋণ করেছি আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে।’
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলাউদ্দিন ভুইয়া জনি বলেন, ‘আমি নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রশাসনিকভাবে পরিবারটির জন্য যা করার দরকার আমরা তাই করবো।’
কুমিল্লা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান দফতরের কর্মকর্তা দেব্রবত ঘোষ বলেন, ‘আমরা ঘটনা শুনেছি। মরদেহ দেশে নিয়ে আসার জন্য যা যা করতে হয়, তা সবই করবো।’
উল্লেখ্য, সোমবার বিকেলে সৌদি আরবের মক্কায় ওমরা করতে যাওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে একটি বাস। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই দুর্ঘটনায় ১২ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ১৪ জন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ প্রেসে ক্লাবের আয়োজনে ও ‘ইটারনেল গিভি’এর সহযোগতিায় উপজেলার ২৫টি অসহায় ও দু:স্থ পরিবারের মাঝে বিশুদ্ধ পানির জন্য টিউবওয়েল বিতরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কমলগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আনুষ্ঠানকিভাবে এসব টিউবওয়েল বিতরণ করা হয়।
কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আসহাবুজ্জামান শাওনের সভাপকিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আহমেদুজ্জামন আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তৌহিদুল ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী সমাজসবেক আহসান কবির চৌধুরী (রিপন)।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বিশুদ্ধ পানির সংকট নিরসনে এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। প্রবাসীদরে এমন মানবকি সহায়তা সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এসময় প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং উপকারভোগী পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজকরা জানান, ইটারনেল গিভিং-এর র্অথায়নে এবং কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় যাচাই-বাছাই শেষে প্রকৃত ২৫টি অসহায় ও দু:স্থ পরিবারকে এই সহায়তা প্রদান করা হয়।
ফ্লাস্ক হাতে নিয়ে দোকানে দোকানে ঘুরে চা বিক্রি করে সংসার চালান জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার লাভলী বেগম (৪৮)। ২০ বছর ধরে স্বামী পরিত্যক্তা হয়ে দোকানে দোকানে ফ্লাক্স হাতে নিয়ে চা বিক্রি করে দিব্যি সংসার চালাচ্ছেন তিনি। মানুষের ইচ্ছাশক্তি আর মনোবল থাকলে সবাই সম্ভব তারই উদাহরণ যেন লাভলী বেগম। প্রয়োজন একটু সহযোগীতা।
জানা যায়, লাভলী আক্তারের সাথে ৩০ বছর আগে আবুল হোসেন বল্টুর সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তান জন্মায়। প্রায় ১০ বছর পর স্বামী বল্টু লাভলীকে তালাক দিয়ে অন্য জায়গায় বিয়ে করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে শিমলা পল্লী এলাকার সিটঘরে খলিল হোসেনের বাড়ি ভাড়া নেন। আলহাজ জুট মিলে ড্রয়িং মেশিন অপারেটর হিসেবে কাজ শুরু করেন। সেখানে কাজ করে মেয়ে আলোকে বিয়ে দিয়েছেন উপজেলার সানাকৈর এলাকায়। হঠাৎ করে আলহাজ জুট মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। কোনরকমে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করেন এই নারী। পরে অন্যের টাকায় ফ্লাস্ক কিনে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ও দোকানে দোকানে চা বিক্রি করা শুরু করেন তিনি। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত শিমলা বাজারের বিভিন্ন দোকানে দোকানে ঘুরে ৪/৫ ফ্লাস্ক চা বিক্রি করেন তিনি। প্রতিদিন গড়ে ৫ থেকে ৭শ টাকার চা বিক্রি হয়। এতে করে প্রতিদিন খরচ বাদ দিয়ে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা থাকে। যা দিয়ে জীবন চালাচ্ছেন লাভলী। তার এমন করুন অবস্থা দেখে প্রায় ১০ বছর ধরে বাসা ভাড়া না নিয়ে বিনা ভাড়ায় নিজের বাড়িতে থাকতে দিয়েছেন খলিল হোসেন। তার এমন মহানুভবতা ও উদারতা মুগ্ধ করেছে স্থানীয়দের।
বাড়ির মালিক খলিল হোসেন বলেন, লাভলী অনেক বছর ধরে আমার বাসায় ভাড়া আছেন। আগে জুটমিলে চাকরি করত কিন্তু মিল হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর্থিক সংকট ও ধার-দেনায় জরিয়ে পড়েন তিনি। তার স্বামী ও ছেলে নেই। একটা মেয়ে আছে তাকে আমরা এলাকাবাসী সহযোগীতায় বিয়ে দিয়েছি। তার এমন পরিস্থিতি দেখে আমি তাকে বিনা ভাড়ায় আমার বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দেই। বর্তমানে তিনি আমার বাসায় থেকে ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করে জীবন চালাচ্ছে। সরকারি বা কোন সহযোগীতা পেলে হয়তো এই অসহায় মেয়েটির ভাগ্যের পরিবর্তন হবে।
লাভলী বেগম বলেন, স্বামী তালাক দেয়ার পর একমাত্র শিশু সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে ছিলাম। মেয়েকে মানুষ করতে পাট মিলে কাজ করেছি। পাটমিল হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। সংসার চালানোর জন্য অন্য কোন উপায় না দেখে অন্যের সহযোগীতায় ফ্লাস্ক কিনে বিভিন্ন বাজারের দোকানগুলোতে ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করি। যা রোজগার হয় তাতেই আমার একার জীবন চলে যাচ্ছে। তবে এখন শরীরে নানা অসুখ হয়েছে। এভাবে ফ্লাস্ক নিয়ে হেটে হেটে চা বিক্রি করতে খুব কষ্ট হয়। তবুও পেটের দায়ে সব কষ্ট মেনে নেই।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার যুবক আকন্দ (ছদ্মনাম) সম্প্রতি বিয়ে করেছেন। তার এক বন্ধুর পরামর্শে সপ্তাহে ২ দিন করে বিভিন্ন ধরনের যৌন শক্তিবর্ধক সিরাপ পান করেন। স্থানীয় বাজারের মুদির দোকান থেকে ৭০ টাকা দামে ক্রয় করেন এসব সিরাপ।
এই যুবক জানান, এক বন্ধুর মাধ্যমে এ সিরাপের নাম জেনেছেন। এরপর থেকে কিনে খান। এটা না খেলে মনের দিক থেকে ভয় কাজ করে। এখন এটার ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল হয়ে পরেছেন। এটা পান করা ছাড়া স্ত্রীর কাছে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না।
এমনকি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে থেকে এসব ওষুধ সেবনের ঝুঁকি সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই বলে মন্তব্য করেন এই যুবক।
তবে চিকিৎসকরা বলছেন, যৌন শক্তিবর্ধকের নামে এসব সিরাপ মানবদেহে নানা মরণব্যাধি সৃষ্টির কারণ হয়ে উঠেছে। ওষুধ প্রশাসনের নিয়ম অনুযায়ী ড্রাগ লাইসেন্স ও সাইনবোর্ড ছাড়া ওষুধের ব্যবসা পরিচালনা করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। অথচ সারিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, শুধু আকন্দ নামের এই যুবকই নন। পাড়া-মহল্লার কিশোর-যুবক-বয়স্কদের অনেকেই সেবন করছেন এসব ক্ষতিকর সিরাপ। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে অনুমোদনহীন এসব যৌন উত্তেজক ওষুধ।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্ন স্ট্যান্ড ও বাজার এলাকার অলিতে-গলিতে পড়ে থাকে এমন ওষুধের খালি বোতল। মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর এসব যৌন উত্তেজক ওষুধ বিক্রি হলেও প্রশাসনের ভূমিকা যেন একেবারেই নীরব।
সরেজমিনে জানা গেছে, এই সকল ওষুধ বা সিরাপের তালিকায় রয়েছে নানা নামের জিনসিন, হ্যাপি, টার্চ, হর্স, থ্রী-হর্স, এ ওয়ান, ফাইট ওয়ান, এ্যানজয় ফ্রটুস্, ইকলিপ নামীয় তরলীকরণ সিরাপ, ওষুধ মুনইশ, পাওয়ার-৩০, এগ্রা, নিশাত, জিগরাসহ বিভিন্ন বেনামী কোম্পানির পণ্য।
অনুমোদনহীন এই সকল ওষুধ বা সিরাপের গায়ে বিএসটিআই, মেয়াদ, উৎপাদন তারিখ ও ব্যাচ নম্বর ও খুচরা মূল্য যথারীতি লেখা থাকেও তা নিয়ে বিষ্মিত অনেকেই। এই সকল ওষুধ শোভা পাচ্ছে উপজেলার পাড়া-মহল্লার বিভিন্ন ওষুধের ফার্মেসি, হোমিও, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক দাওয়াখানা, পান-বিড়ির দোকান, মুদি দোকান, হাটবাজারের অস্থায়ী হকারের দোকানগুলোতেও।
ফার্মেসিগুলোতে কথা বলে জানা যায়, যৌনরোগ নিরাময়ে ডাক্তার প্রেসক্রিপশন অনুসারে সাধারণত ভিগোরেক্স, সিলেগ্রা, ডিউমাক্স-৩০, ভায়াগ্রা-৫০, ইনন্টিমেট, বিক্রি হয়ে থাকে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সীমিত পুজি খাটিয়ে এই সকল ওষুধ চুপিসারে উঠতি বয়সি ক্রেতা, প্রাপ্ত বয়স্ক ক্রেতাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত খুচরা বিক্রিতাদের কাছে বিক্রি করছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যৌন সমস্যায় ভুগছেন এমন অনেকেই চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে নিজে থেকে ওষুধের দোকান বা ফার্মেসি থেকে যৌন উত্তেজক ওষুধ কিনে সেবন করেন। এটি এক সময় অভ্যাসে পরিণত হয়। কিন্তু যারা এভাবে কিনছেন তারা হয়তো জানেনই না প্রকৃত অর্থে তার সমস্যা কী এবং কোথায়।
একইসঙ্গে যে কারণে যৌন সমস্যা হচ্ছে সেটি শনাক্ত ও চিকিৎসা না হওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত আরও খারাপ পরিস্থিতিতে পড়তে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশেজ্ঞরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাত একটু বাড়া মাত্রই উঠতি বয়সি বা প্রাপ্ত বয়স্করা এই সকল সিরাপ বা ওষুধ সরবরাহ বা ক্রয়ে অধিক আগ্রহী হয়ে ওঠে। নগরীর বিভিন্ন ফার্মেসিগুলোর সামনে দাড়িয়ে থাকে দীর্ঘক্ষণ।
অন্য ক্রেতারা সরে যাওয়ার মাত্র চুপিসারে ক্রয় করেই তড়িঘড়ি করে চলে যায়। তবে প্রতিদিন ক্রয় করা ক্রেতা বিক্রেতার নিকট অনেকটাই পরিচিতি হওয়ায় চেহেরা দেখা মাত্র বিক্রেতা অতি সহজেই দিয়ে দেয় এই উত্তেজক ওষুধ। নগরীর বিভিন্ন ফার্মেসি সম্মুখ আর পাড়া-মহল্লা ঘুরে অনুসন্ধ্যানে এমনই চিত্র উঠে এসেছে।
হাট শেরপুরের ইনসান বলেন, সারিয়াকান্দি বিভিন্ন হাট-বাজার, পথে-ঘাটে ও ফুটপাতে এমন কী বিড়ি-পানের দোকানে দিনদিন বেড়েই চলেছে এসব অবৈধ ওষুধের ব্যবসা। এতে প্রশাসনের কোনো ভূমিকা দেখি না। প্রশাসন যদি কোনো পদক্ষেপ নিত তাহলে জীবনরক্ষাকারী নিম্নমানের ওষুধ যত্রতত্র বিক্রি বন্ধ হতো। এসব বন্ধ না করলে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়েই চলবে। বিক্রেতা জাকির জানান, গ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে দোকানগুলোতে জিনসিন জাতীয় সিরাপগুলো ভালো চলে লাভ বেশি তাই, দোকানদাররা আগ্রহ সহকারে বিক্রি করে।
চর্ম, এলার্জি, যৌন ও কুষ্ঠ রৌগ বিশেষজ্ঞ ডা. কোরবান আলী (রনি) বলেন, পুরুষের ইরেকটাল ডিসফাংশনের জন্য সাধারণত ওষুধ দেওয়া হয়, যা কিছু ব্র্যান্ডের নামে পাওয়া যায়। মূলত এই ওষুধগুলো যৌন উত্তেজক ওষুধ হিসেবে চিকিৎসকরা প্রেসক্রিপশনে দিয়ে থাকেন। কার জন্য কোন ওষুধ এবং কত ডোজে দেওয়া প্রয়োজন সেটি একজন চিকিৎসক রোগীর সঙ্গে কথা বলে, পরীক্ষা করে নির্ধারণ করেন।
এসব ওষুধ সেবনে তাৎক্ষণিকভাবে দৈহিক মিলনে স্থায়িত্ব বাড়ালেও শরীরের রক্তচাপ অনেক বেড়ে যায়। ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। একই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপের কারণে কিডনির মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
নড়াইলে গাঁও-গেরামের স্বভাব কবি বিপিন সরকারের ১০তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার নড়াইল পৌর সভার বাহিরডাঙ্গা গ্রামের নিজ বাড়ির আঙিনায় কবির মৃত্যুদিন পালনে সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল কবির সমাধি এবং প্রতিকৃতিতে পুষ্প্যমাল্য অর্পণ, এক মিনিট নীরবতা,স্মরণ সভা। স্বভাব কবি বিপিন সরকার স্মৃতিরক্ষা পরিষদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বিপিন সরকার স্মৃতি রক্ষা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মায়া রানী বিশ্বাস দৈনিক বাংলাকে বলেন, ১৯২৩ সালে কবি নড়াইল পৌরসভার বাহিরডাঙ্গা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ২০১৫ সালে তিনি নিজ বাড়িতে দেহ ত্যাগ করেন। কবিকে ধরে রাখতে মৃত্যুর পর থেকেই প্রতি বছর তার জন্ম এবং মৃত্যু দিবস পালিত হয়ে আসছে। তিনি বলেন, কবি প্রায় একশর মতো কবিতা, দুইশর মতো হালই গান, ৫০টির মতো অষ্টক গান রচনা করে গেছেন।
স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন, স্মৃতিরক্ষা পরিষদের সহসভাপতি বিদ্যুৎ স্যান্নাল। স্বাগত বক্তব্য দেন, স্মৃতিরক্ষা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মায়া রানী বিশ্বাস। বক্তব্য দেন, লেখক সুবাষ বিশ্বাস, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শঙকর কর্মকার, সঙ্গীত শিল্পী প্রতুল হাজরা, হীরক গোস্বামী, মো. তরিকুল ইসলাম, কবির ছেলে বিজন বিশ্বাস অনেকে।
বক্তারা বলেন, বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন স্বভাব কবি বিপিন সরকার। শিল্পী সুলতান কবিকে খবর দিয়ে বাড়িতে এনে তার লেখা কবিতা, গান, হালই নিয়মিত শুনতেন। তার রচিত বিভিন্ন গান দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের মানুষ শুনতেন এবং গাইতেনও। তরি রচিত গান খুলনা বেতারে গাওয়া হয়ে থাকে। এছাড়া নড়াইলের বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের কৃষক জমিতে কাজ করার সময়, নৌকার মাঝিরা নৌকা চালানোর সময় কবির গান পরিবেশন করে থাকেন। তিনি শুধু সুলতানেরই বন্ধু ছিলেন না। কবিয়াল বিজয় সরকার ও জারী সম্রাট মোসলেম উদ্দীন বয়াতিরও বন্ধৃ ছিলেন। ক্ষণজন্মা এই স্বভাব কবির মৃত্যুতে দক্ষিণবঙ্গের মানুষ মর্মাহত।
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে গাছের চারা বিতরণ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রুদ্রদীপ নামে এক শিশুর জন্মদিন উপলক্ষে সাত দিনব্যাপী ঘুরে ঘুরে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ২১৭টি গাছের চারা বিতরণ করেন শিশুটির বাবা রাজীব পাল রনি ও মা পূর্ণিমা পাল।
ছেলেটির বাবা বলেন, আমাদের দেশে পরিবেশ দূষণ দিন দিন বেড়েই চলছে। পরিবেশকে সুন্দরভাবে দূষণমুক্ত রাখতে গাছের বিকল্প নেই। আসলে গাছ মানুষের পরম বন্ধু। সবুজ পৃথিবীর বার্তা দিতে তাই তাদের একমাত্র সন্তান রুদ্রদীপ পালের জন্মদিন উপলক্ষে প্রতি বছর গাছের চারা বিতরণ করেন তারা।
কয়েকটি পর্বে চারা বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে টঙ্গীবাড়ী উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তানিয়া খাতুনকে একটি নিম গাছের চারা উপহার দেন রুদ্রদীপ পাল। তিনি বলেন, নিঃসন্দেহে এটি একটি মহান উদ্যোগ। ব্যতিক্রমধর্মী এই কর্মসূচির মাধ্যমে গাছ বিতরণের পাশাপাশি জন্মদিনে গাছ উপহার দেওয়ার সংস্কৃতি জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। জানা গেছে, ছেলে রুদ্রদীপ জন্মগ্রহণ করার পর থেকে সাত বছর ধরে তার জন্মদিন উপলক্ষে চারা বিতরণের আয়োজন করে আসছেন এ দম্পতি। শুধু টঙ্গীবাড়ীতে নয়, তারা সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে টঙ্গীবাড়ী থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে মুন্সীগঞ্জ জেলা সদরের বিভিন্ন প্রান্তে পথচলতি মানুষের হাতে গাছের চারা তুলে দিয়েছেন।
গাছ বিতরণের পাশাপাশি টঙ্গীবাড়ী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। শিশুদের আঁকার বিষয় ছিল উন্মুক্ত। প্রতিযোগিতায় প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের গাছ ও কলম উপহার দেওয়া হয়। অন্য শিক্ষার্থীদেরও একটি করে গাছের চারা উপহার দেওয়া হয়।
কৃষ্ণচূড়া, বকুল, কাঁঠাল, পেয়ারা, বহেরা, হরতকি, চালতা, নিম, কাগজি লেবু, জাম, কাঠবাদাম, সোনালু, বেলসহ বিভিন্ন ধরনের ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা শিশুদের মাঝে তুলে দেওয়া হয়।
সার্বিক সহযোগিতা করেন বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষিকা শারমিন আক্তার। জানা গেছে, রুদ্রদীপ পালের জন্ম ২৮ নভেম্বর। চলতি বছর এ দম্পতির ছেলে ৭ থেকে ৮ বছরে পা দিয়েছে। আর প্রতি বছর ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে একটি ভালো কাজের অংশ হিসেবে গাছের চারা বিতরণ করবেন এ দম্পতি। রুদ্রদীপ পাল বিভিন্ন প্রতিভার অধিকারী। তিনি একজন খুদে লেখক। কালের কণ্ঠ, সমকাল, ইত্তেফাকসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় তার লেখা ও কবিতা প্রকাশিত হয়েছে।
গত মঙ্গলবারের কথা, তখনো ভালো করে সকালের আলো ফোটেনি, ঘুমিয়ে আছে পাড়া। হালকা ভাঙা মেঘের ভেতর থেকে অনেক দূরে সূর্য একটু একটু করে জাগছে। পথের দুই পাশের গ্রামগুলো ঘুমিয়ে আছে তখনো। শুধু বালুর সড়কের মাথায় অল্পকিছু মানুষের দেখা পাওয়া যায়। তারা সবাই মৎস্য ব্যবসায়ী। তারা জেলেদের কাছ থেকে তাজা মাছ কিনে দূরের শহরে যাবেন, কেউ যাবেন গ্রামের দিকে। এ এক অন্য রকম সময়।
এক দিকে সকাল হয়। পূর্বের আকাশে সূর্য ওঠে। আর অন্য দিকে চলে মানুষের স্রোত। কারণ নগরপাড়া বাজার-সংলগ্ন বালুর সড়কে বসেছে মাছের মেলা। এখানে পাওয়া যায় পুকুর ও নদীর মিঠা পানিতে বেড়ে ওঠা ছোট-বড় নানা তরতাজা মাছ। সুস্বাদু মাছই এই অস্থায়ী হাটের মূল আকর্ষণ। লোকজন আসছে, দরদাম করে মাছ কিনছে। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার রূপগঞ্জ উপজেলার নগরপাড়া এলাকায় বসা মেলায় এই দৃশ্য দেখা গেছে।
সকাল বেলার কয়েক ঘণ্টার হাটে তখন চিংড়ি, পুঁটি, টেংরা, কই, শিং, মাগুর এসব মাছ উঠেছে। ডালার মধ্যে মাছগুলো তখনো তরতাজা, নড়ছে, লাফাচ্ছে। এই হাটে পাইকারি ক্রেতাই বেশি। এরা এই হাট থেকে মাছ কিনে কেউ বড় কোনো শহরে নিয়ে যান। কেউ গ্রামের দিকে ফেরি করে এই মাছ বিক্রি করেন। ক্রেতাদের কাছে এখানকার মাছের চাহিদা বেশি।
সারা বর্ষাকাল জুরেই থাকে এ মেলা। তবে এ সময়টাতেও সকাল-বিকাল পাওয়া যায় বিভিন্ন জাতে মাছ। আশেপাশের গ্রামগুলো থেকে জেলেরা পুকুর-বিল সেচে মাছ নিয়ে আসে। স্থানীয় লোকজনরা কিনে। শহরের লোকেরাও গাড়ি থামিয়ে মাছ কিনে নিয়ে যায়। এই এলাকার যে মেয়েগুলো এখন দূরের কোনো গায়ের গৃহবধূ, তারা বাবার বাড়ি আসেন। সঙ্গে স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে আসেন। নিমন্ত্রণ করা হয়েছে আত্মীয়-স্বজনকে। মাছ ভাজা হয়। নানা পদের তরকারি রান্না করা হয়। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মজা করে খান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দূর-দূরান্ত থেকে দলে দলে লোকজন মাছ কিনতে আসছে। সবাই সাধ্যমতো মাছ কিনে বাড়ি ফিরছে। সবার হাতেই একটি করে মাছের ব্যাগ। যাদের হাতে ব্যাগ নেই, তাদের হাতে ঝুলছে দেখার মতো বড় মাছ।
মাছ ব্যবসায়ী নজরুল মিয়া বলেন, ‘প্রত্যেক দিন সকাল ৫টার সময় আইয়া (এসে) ইছা (চিংড়ি) মাছ কিনি (ক্রয় করি)। বেশি কিনি ইছা মাছই। তবে পুঁটি, ট্যাংরা ছোট মাছ যা পাই তাই কিনি। সুন্দর সুন্দর মাছ আছে।’ আশিক মিয়া বলেন, ‘দুজন মাইনসে (মানুষে) ১০-১২ হাজার টাকার একখান নাও খাটায়, জাল খাটায়। ইছা মাছ ধরলে এক হাজার, ৮০০ টাকা পায় (পাচ্ছে)। অন্য কিছু মারলে (অন্য জাতের ছোট মাছ ধরলে) ২০০-৩০০ টাকা পায়। এর লাগি বেশি ইছা মাছ মারে (ধরে), কোনো রকম পেট বাচার।’
প্রায় ১৫ বছর ধরে সকাল-বিকেল এই হাট বসছে। সকাল ৫-৬টা থেকে ক্রেতা-বিক্রেতার আসা শুরু হয়, হাট চলে সকাল প্রায় সকাল ৯টা পর্যন্ত।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, শুনেছি আমাদের অনেক অফিসাররাও নাকি এখান থেকে মাছ কিনে নিয়ে যান। চাষের মাছের যুগে মিঠা পানির মাছ তো পাওয়াই যায় না।
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জের বেহেলী ইউনিয়নের বদরপুর গ্রাম, হাওরের পাড়ে অবস্থান হওয়ায় সড়ক যোগাযোগে এখনো পিছিয়ে। বর্ষায় পুরো এলাকা হয়ে পড়ে বিচ্ছিন্ন, আর শুষ্ক মৌসুমেও মাটির পথ পেরিয়ে পৌঁছানো কষ্টসাধ্য। তবুও এই প্রত্যন্ত গ্রামটিতে বেঁচে আছে এক অমূল্য সংস্কৃতি মৃৎশিল্প। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে গ্রামের নারীরা তৈরি করছেন মাটির কলস, হাঁড়ি, সরা, থালা, পেয়ালা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের পুতুল।
হাওরের বিশেষ এক ধরনের মাটিতেই তৈরি হয় এসব শিল্প। হাওরের চিকনা মাটি তুলে এনে শুকিয়ে তা প্রস্তুত করেন বিভিন্ন পণ্য তৈরির জন্য। মাটির কাজের ধাপ অনেক। প্রথমে মাটি সংগ্রহ ও পরিষ্কার করা হয়। তারপর তৈরি হয় গোল আকারের কাঁচামাল। এরপর নিচে রেখে ঘুরিয়ে তাতে হাতে আকার দেওয়া হয় কলস, সরা, থালা কিংবা পুতুলের। আকার ঠিক হলে রোদে শুকানো হয়। পরে আগুনে পোড়ানো হয় পণ্যগুলো। আগুনে পোড়ানোর পরই এগুলো ব্যবহারের যোগ্য হয়ে ওঠে।
গ্রামবাসী বলছেন, একসময় হাওর অঞ্চলে মাটির হাঁড়ি পাতিল, কলস, সরা ও পুতুলের ব্যাপক চাহিদা ছিল। সেই সময় মৃৎশিল্পই ছিল ঘরোয়া ব্যবহারের প্রধান উপকরণ। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রামে গ্রামে সিলভার ও প্লাস্টিকের পণ্যের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় এই শিল্প এখন হারিয়ে যাওয়ার মুখে। তবুও পূর্বপুরুষের পেশা আঁকড়ে ধরে নারীরা এখনো টিকিয়ে রেখেছেন শত বছরের এই ঐতিহ্য। তবে সমস্যা বেড়েছে উৎপাদন ব্যয়ে। হাওরে বিশেষ ধরনের মাটি পাওয়া গেলেও আগুনে পোড়ানোর জন্য আগের মতো জ্বালানি বন আর পাওয়া যায় না। এতে বাধ্য হয়ে বাজার থেকে লাকড়ি কিনতে হচ্ছে তাদের। প্রতিটি পণ্যের উৎপাদন খরচ আগের তুলনায় অনেক বেশি বেড়ে গেছে। অথচ বাজারে সেই অনুযায়ী দাম মিলছে না। ফলে পরিশ্রমের তুলনায় লাভ কম পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ছেন মৃৎশিল্পীরা। তবুও গ্রামের নারীরা আশা ছাড়েননি। প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেলে আবারও এই শিল্প ফিরে পাবে তার পুরোনো দিন।
স্থানীয় মৃৎশিল্পী শিখা রানী পাল বলেন, আমার দিদিমারা করতেন। পরে মা করেছে, এখন আমরা করছি। একসময় বদরপুর গ্রামে প্রায় সব বাড়িতেই মাটির হাঁড়ি-পাতিল তৈরি হতো। এখন সংখ্যায় কমে গেলেও কিছু পরিবার এখনো এই কাজে জড়িত। পুরুষরা হাওর থেকে মাটি সংগ্রহ করে দিল পণ্য তৈরি করেন নারীরাই।
তিনি বলেন, মৃৎশিল্পের পণ্যগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি হলেও বর্তমানে দাম কমে যাওয়ায় আগের মতো লাভ নেই। বাজার দরে একটি পাতিল ১০ টাকা, সরা ৫ টাকা ও মাছ ধরার জালের কট হাজারে একশ’ টাকায় বিক্রি করতে পারি।
গ্রামের আরেক মৃৎশিল্পী মিনতি রানী পাল বলেন, আগে মানুষের ঘরে ঘরে মাটির হাঁড়ি-পাতিল ছিল। এখন সবাই স্টিল আর প্লাস্টিকের জিনিস ব্যবহার করে। এ জন্য চাহিদা কমেছে। একই সঙ্গে দামও কমেছে। তবুও উৎসব বা বিশেষ অনুষ্ঠান এলেই আমাদের পণ্য লাগে। মেলায় মাটির পুতুলের চাহিদা থাকে। অন্য সময় মাছ ধরার জালের কটির চাহিদা থাকে। সামান্য বিক্রি করতে পারি পাতিল ও সরা।
মৃৎশিল্পী শ্যামল পাল বলেন, বাচ্চাদের খেলনার চাহিদা রয়েছে। বড়-ছোট অনুযায়ী দাম নির্ধারণ হয়। হাড়ি-পাতিলও একেকটির একেক দামে বিক্রি করা যায়। মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিক্রি করতে হয়। কোথাও মেলা হলে সেখানেও বিক্রি করা যায়।
গ্রামের বাসিন্দা যোগবন্ধু পাল বলেন, সিলভার-প্লাস্টিক বের হওয়ায় মাটির জিনিসের মান কমেছে। এখন পূজা, পার্বণে ও মেলায় এগুলো চলে। এতে হাড়ি পাতিল বানিয়ে বিক্রি করে এখন আর সংসার চলে না। আগে চলেছে। তাই অনেকে এই পেশা বাদ দিয়ে কৃষি ও মাছ ধরায় যাচ্ছেন। কেউ কেউ শহরে কাজের উদ্দেশ্যে চলে যাচ্ছেন।
সুনামগঞ্জ বিসিকের উপব্যবস্থাপক এমএনএম আসিফ বলেন, জামালগঞ্জ, শান্তিগঞ্জসহ আরও কয়েকটি উপজেলায় মৃৎশিল্পের বিভিন্ন পণ্য উৎপাদিত হয়। যারা এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত তারা পারিবারিকভাবে বংশপরম্পরায় এটি ধারণ করেন। এটির যেমন আর্থিক গুরুত্ব রয়েছে, তেমন ঐতিহ্যগত গুরুত্বও রয়েছে অনেক।
তিনি বলেন, প্লাস্টিক পণ্যের সঙ্গে তাদের লড়াই করতে হয়েছে। এ জন্য তারা আগের মতো লাভবান হতে পারছেন না। এ জন্য তাদের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বিসিক কাজ করছে। বিপণনে সযোগ বাড়াতে আমাদের অনলাইন ডাটাবেজে তাদের যোগ করার কাজ চলছে। এভাবে সারাদেশের ক্রেতারা সরাসরি মৃৎশিল্পীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পণ্য কিনতে পারবেন। এছাড়া কেউ যদি আর্থিকভাবে সহযোগিতা চার যাচাই-বাছাই করে তাদের সহযোগিতা করার সুযোগ রযেছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ১০ মাস ২৫ দিনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ৭১০ কোটি ৮১ লাখ টাকা মূল্যের চোরাচালান আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সরাইল রিজিয়নের ইউনিটগুলো। এসব অভিযানে মোট ৩৯৪ জন চোরাকারবারির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গত বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহে অবস্থিত বিজিবির-৩৯ ব্যাটালিয়নে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন সেক্টর সদর দপ্তর ময়মনসিংহের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি জানান, বিজিবির সরাইল রিজিয়নের অধীনস্থ ৪টি সেক্টর ও ব্যাটালিয়ন সমূহের অদম্য অভিযানে চোরাচালন, মাদকপাচার, পুশইন, জালনোটপাচার এবং অবৈধভাবে পাথর ও বালু উত্তোলন প্রতিরোধ করতে নিরলসভাবে কাজ করেছে। বিজিবির উত্তর-পূর্ব এ রিজিয়নের অন্তর্ভুক্ত ময়মনসিংহ, সিলেট, শ্রীমঙ্গল ও কুমিল্লা সেক্টর। এসব সেক্টরের অধীনে থাকা ইউনিট সমূহ গত জানুয়ারি থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত অভিযানে এ সাফল্য অর্জন করেছে। এটি বাংলাদেশে একটি নতুন মাইলফলক। উল্লিখিত সময়ে বিজিবির সরাইল রিজিয়ন মোট ৭১০ কোটি ৮১ লাখ টাকার মূল্যের চোরাই পণ্য আটক করেছে। যার মধ্যে মাদক ৪৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা মূল্যের। এসব চোরাচালান আটকের পাশাপাশি দেশের সার্বভৌমত্ব ও সীমান্ত সুরক্ষায় অবৈধ অনুপ্রবেশ (পুশইন) প্রতিরোধ করেছে। অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন রোধেও অভিযান পরিচালনা করেছে সরাইল রিজিয়নের ইউনিট সমূহ। এসব অভিযানে ৯ লাখ ৭৫ হাজার ৭৫৬ ঘনফুট বালু ও ৪ লাখ ৯১ হাজার ৮৪২ ঘনফুট পাথর জব্দ করেছে। এসব অভিযানে ২৭টি ট্রাক, ৭৫টি ট্রলি, ৫৫টি ট্রাক্টর, ১৮টি লরি ও ৪০টি নৌকা জব্দ করা হয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে সুরক্ষিত থাকে সীমান্তে জালনোট পাচার রোধে গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও জবাব দেন কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সীমান্তে যেন কোনো ধরনের দুষ্কৃতিকারী তৎপর না হয় সে জন্য বিজিবি বিশেষ নজরদারি করছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিজিবির কোনো সদস্য সীমান্তের চোরাচালান ও অন্য কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত হয়ে পরে কি না, সে বিষয়ে দৃষ্টি রাখা হয়।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আবারও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। আজ বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট ২০ সেকেন্ডে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয় বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৬। এটা স্বল্পমাত্রার ভূমিকম্প। এর উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর ঘোড়াশালে।
গত শুক্র ও পরদিন শনিবার প্রায় ৩১ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা ও এর আশপাশে চারবার ভূমিকম্প হয়। এর মধ্যে শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎস ছিল নরসিংদীর মাধবদী। উৎপত্তিস্থলের গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। শুক্রবারের ভূমিকম্পে ১০ জন নিহত হয়। আহত হয় কয়েকশ’র বেশি মানুষ। সূত্র: বাসস
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় চলাচলে অক্ষম অসহায় শারীরিক প্রতিবন্ধীদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলেছেন নবাগত জেলা প্রশাসক মো. সাইফুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত ও অন্যের সাহায্যে চলাফেরা করা এমন প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ করেন তিনি।
জেলা প্রশাসকের হাত থেকে বিশেষ এ সহায়তা পেয়ে খুশি প্রতিবন্ধী ও তাদের পরিবারের লোকজন।পরে তিনি প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ খবর নেন।
এদিন জেলা প্রশাসক মো. সাইফুর রহমান উপজেলার বিভিন্ন সরকারি দফতর ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিদর্শনে এসে উপজেলার ২৫ জন শারীরিক প্রতিবন্ধীদের মধ্য হুইল চেয়ার, ২১ জন হতদরিদ্র নারীর মধ্যে সেলাই মেশিন ও ১৩ টি ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ সদস্যদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন বলে জানাগেছে।
এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ তাকী তাজওয়ার, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইদুল হক,উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ জোবায়ের হোসেন, সমাজ সেবা অফিসার মোজাম্মেল হক, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ও পুটিজানা ইউনিয়নের প্রশাসক রওশন জাহান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
জেলার মাঠে মাঠে রবি মৌসুমে শীতকালীন শাক-সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে চাষিরা। মাঠে মাঠে এখন শোভা পাচ্ছে ফুলকপি, শিম, পটল, বেগুন, মুলা, মরিচসহ বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি। ভালো ফলনের আশায় খেতে নানা পরিচর্যায় ব্যস্ত তারা। প্রায় ১ মাস থেকে শীতকালীন সবজি হাট-বাজারে উঠেছে। তবে ফুলকপির উৎপাদন বেশি হওয়ায় সরবরাহ বেড়েছে। আর সরবরাহ বাড়ায় দামও কিছুটা কমেছে। তবে কৃষকরা ফুলকপি এখন আর হাট-বাজারে না নিয়ে অস্থায়ী বাজারে বিক্রি করছেন। নওগাঁ সদর উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ডাক্তার মোড় নামক স্থানে অস্থায়ী বসেছে ফুলকপির হাট। প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১,২০০ টাকা। দেড় ঘণ্টার টোলমুক্ত এ হাটে বেচাকেনা চলে প্রায় লক্ষাধিক টাকা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যায় ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে- জেলায় বরি মৌসুমে প্রায় ৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের শাক-সবজির চাষাবাদ হয়ে থাকে। এর মধ্যে ফুলকপি ১২০ হেক্টর। যা থেকে উৎপাদন হবে প্রায় ২ হাজার ১০০ টন।
সদর উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ডাক্তার মোড় নামক স্থানে অস্থায়ী পাইকারি ফুলকপির হাট বসেছে। গত ১০ দিন থেকে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এ হাটে বেচাকেনা শুরু হয়ে চলে ৭টা পর্যন্ত। ভ্যান, সাইকেল কেউ বা কাঁধে করে ফুলকপি বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। তবে আগের দিন বিকেলে কৃষকরা খেত থেকে সংগ্রহ করে রাখেন। প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১,২০০ টাকা। এ হাট থেকে শহরের দূরুত্ব ৪ কিলোমিটার।
সদর উপজেলার চক-বালুভরা গ্রামের কৃষক মোতালেব হোসেন বলেন- ১৫ কাঠা জমিতে প্রায় ২,২০০ ফুলকপি চারা রোপণ করেছি। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। প্রতি পিস ফুলকপি ২৫ টাকা হিসেবে ৫৫ হাজার টাকা বিক্রির আশা। খরচ বাদে লাভ থাকবে অন্তত ৪০ হাজার টাকা।
হাঁপানিয়া গ্রামের কৃষক আমিনুর রহমান বলেন- ১০ কাঠা জমিতে ফুলকপির আবাদ করেছি। ৫০ কেজি ফুলকপি এ হাটে নিয়ে এসে ১ হাজার টাকা মণ বিক্রি করা হয়। ১৫ দিন আগে ১,৮০০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছিল। হাটে বিক্রি করতে গেলে প্রতি পিসে ২ টাকা খাজনা (টোল) ও ১ টাকা ভাড়া গুণতে হয়। সে হিসেবে এ হাটে খাজনা ও ভাড়া ছাড়াই বিক্রি করা কৃষকদের জন্য সুবিধা হয়েছে।
বর্ষাইল গ্রামের পাইকারি ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন প্রায় ২৫-৩০ হাজার টাকার ফুলকপি কেনা হয়। যা ট্রাকযোগে ঢাকায় পাঠানো হয়। প্রতিদিন দেড় থেকে ২ ঘণ্টার এ হাটে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ফুলকপি বেচাকেনা হয়। তবে দিন যত যাবে ফুলকপির উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়বে। এতে দাম কিছুটা কমে আসবে। আগামী ১ মাস এ হাটে বেচাকেনা চলবে।
নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপরিচালক মোছা. হোমায়রা মণ্ডল বলেন, ভালো দাম পাওয়ার অনেক কৃষক আগাম ফুলকপির আবাদ করেন। শুরুতে উৎপাদন কম থাকায় দাম ভালো পেয়ে লাভবান হয়েছেন। তবে উৎপাদন বাড়লে দাম কিছুটা কমে আসে। তারপরও বাজারে দাম ভালো আছে। মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
এদিকে, জেলায় রঙিন ফুলকপি চাষ নিয়ে তিনি আরও বলেন, অন্যান্য কপির চেয়ে রঙিন ফুল কপির স্বাদ অনেক বেশি। আর নতুন হওয়ায় ভোক্তার কাছে চাহিদা রয়েছে প্রচুর। আর তাই বাজারজাতের ঝামেলা কম। নওগাঁ জেলার অনেক কৃষক এবার রঙিন ফুলকপি চাষ করেছেন। আগামীতে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও আশা করেন তিনি।
তিনি আরও জানান, শুধু নওগাঁতেই নয়। আশপাশের জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া ও নাটোরসহ বৃহত্তর উত্তরাঞ্চলেই রঙিন ফুলকপিতে আগ্রহ বাড়ছে দিন দিন।
এক প্রশ্নের জবাবে রঙিন ফুলকপি নিয়ে সদর উপজেলার হাপানিয়া ইউনিয়নের কৃষক জালাল হোসেন বলেন, প্রথমবারের মতো চাষ করেছিলাম রঙিন ফুল কপি। প্রায় ১২ শতক জমিতে হলুদ ও বেগুনি রঙের কয়েকশ গাছ লাগিয়ে ছিলেন তিনি। প্রথমবার হলেও ফলনও বেশ ভালোই পেয়েছিলেন বলে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান।
রঙিন ফুলকপি চাষ করা নিয়ে কৃষক জালাল অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সাংবাদিকদের কাছে। একপর্যায়ে তিনি অভিজ্ঞতার কথাও উল্লেখ করে বলেন, এসব কপির সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে সার, সেচ ও কীটনাশক তুলনামূলক অনেক কম প্রয়োজন হয়। সাদা ফুলকপিতে যা অনেক বেশি প্রয়োজন হয়। কৃষক যদি এই রঙিন কপি চাষ করতে চায় তাহলে বড় অঙ্কে লাভবান হওয়ার সম্ভব রয়েছে। এই মৌসুমে শুরুতেই একেকটি কপি বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকা পর্যন্ত। আর পরে বিক্রি হয়েছে প্রকারভেদে ৫০ থেকে ৪০ টাকায়। যদিও খুচরা বাজারে এসব কপির দাম আরও বেশি।
জামালপুর-২ (ইসলামপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী শরিফুল ইসলাম খান ফরহাদের কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ দুপুরে ইসলামপুর উপজেলার ধর্মকুড়া বাজার এলাকায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের ছোট ভাই ও জামালপুর-২ আসনের বিএনপি'র মনোনয়ন প্রত্যাশী শরিফুল ইসলাম খান ফরহাদ ও ভুক্তভোগী পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা জানান, জামালপুর-২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী শরিফুল ইসলাম খান ফরহাদকে গতকাল (বুধবার) উপজেলার কুলকান্দী এলাকায় বাড়িতে রেখে ফিরছিলো নেতা-কর্মীরা। এসময় মলমগঞ্জ পৌছালে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সুলতান মাহমুদ বাবুর সমর্থকরা তাদের গাড়ি বহরে লাঠিসোটা দিয়ে হামলা চালায়। এতে ৪ জন গুরুতর আহত হয় এবং তাদেরকে বিভিন্ন হাসাপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
দূর্বৃত্তদের গ্রেফতারের বিষয়ে তারা আরও বলেন, এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে মামলা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তাই মামলা অন্তর্ভুক্ত করে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের সম্মুখীন করার আহবান জানান তারা।
রঙিন সাজ, আনন্দ উল্লাস আর মধুর আবহে অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী মেহেরপুর সরকারি কলেজের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণির নবীন বরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
নবীণবরন উপলক্ষে কলেজ ক্যাম্পাসজুড়ে সকাল থেকেই ছিল উৎসবের আমেজ—রঙিন ব্যানার, ফুলের মালা, আর নবীন-প্রবীণের হাসিমুখে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো পরিবেশ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার একান্ত সহকারী (ঐকমত্য) ও সাংবাদিক মনির হায়দার। তিনি নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন “নতুন পথচলা শুধু বইয়ের জ্ঞান নয়, মানুষের মতো মানুষ হয়ে ওঠারও পথ দেখায় কলেজ জীবন। স্বপ্ন বড় হবে, পথ চলা হোক আলোকিত।”
কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম নজরুল কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন—অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল ইসলাম, মেহেরপুর জেলা শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক খেজমত আলী মালিথ্যা।
অতিথিরা বলেন, তাঁরা নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন, শৃঙ্খলা ও মানবিক মূল্যবোধে বড় হয়ে ওঠার আহ্বান জানান। এছাড়া কো কারিকোলাম এ্যাক্টিভিটিস, সামাজিক কার্যক্রমসহ মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে কলেজকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরার পাশাপাশি একটি মানবিক সমাজ গঠণ করার আহবান জানান।
নবীনদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্র মো. বিধান শেখ এবং দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী উলফাতুন নেছা পূর্ণিমা।
নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তারা বলেন “এ কলেজে ভর্তি হওয়া আমাদের গর্ব। প্রবীণদের ভালোবাসা আর শিক্ষকদের দিকনির্দেশনা আমাদের পথচলা আরও সুন্দর করবে।”
অনুষ্ঠানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় মুহূর্ত ছিল ফুল ছিটিয়ে নবীনদের বরণ করে নেওয়া। প্রবীণ শিক্ষার্থীরা হাতে রঙিন পাপড়ি ছিটিয়ে নবীনদের স্বাগত জানালে ক্যাম্পাসজুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর এক আবহ।
পরে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান, নৃত্য, কবিতা আর নাট্য পরিবেশনায় মাতিয়ে রাখেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। পুরো অনুষ্ঠানে ছিল শৃঙ্খলা, সৌন্দর্য আর এক সজীবতার পরশ।