‘আমার ছেলের লাশটা আইন্না দাও, আমি দেখমু। আমার পোলাডা ১২ দিনের ছুটি পাইয়া চির ছুটিতে চইলা গেলো।’ এভাবেই আহাজারি করছিলেন সৌদি আরবে ওমরা করতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মামুন মিয়ার (২২) বাবা আবদুল আওয়াল।
নিহত মামুন কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার মোস্তাপুর গ্রামের বাসিন্দা। বুধবার সকাল থেকে প্রতিবেশী ও স্বজনরা ভিড় করতে থাকেন মামুনের বাড়িতে।
বুধবার সকালে মোস্তাপুর গিয়ে দেখা যায়, মামুনের বাবা আবদুল আওয়াল নির্বাক হয়ে বসে আছেন। মা মমতাজ বেগম ছেলের জন্য হাউমাউ করে কাঁদছেন। মোবাইলে ছবি দেখে বুক চাপড়ে কাঁদছেন। আবদুল আওয়ালের ৩ মেয়ে ২ ছেলের মধ্যে মামুন মিয়া চার নম্বর সন্তান। ৬ মাস আগে মামুন তার মামা ইয়ার হোসেনের মাধ্যমে সৌদিতে যান। সেখানে হোটেল বয়ের চাকরি নেন।
নিহত মামুনের মামী তাসলিমা বেগম বলেন, ‘ঘটনার আগে মামুন, তার মামা ইয়ার হোসেন ও মামুনের ভাগিনা জাহিদুল ইসলাম গাড়িতে করে ওমরা করার জন্য মক্কার উদ্দেশে রওনা করে। পথিমধ্যে তারা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তাদের বহন করা গাড়িটি ব্রেকফেল করে একটি ব্রিজের সঙ্গে ধাক্কা খায়। পরে গাড়িতে আগুন ধরে যায়। মামুন গাড়ি থেকে বের হতে পারে নাই। আগুনে পুড়ে মারা যায় সে। দুর্ঘটনায় ইয়ার হোসেন ও জাহিদ গুরুতর আহত হন। তারা এখন মক্কার একটি হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।’
নিহত মামুনের বাবা আবদুল আওয়াল বলেন, ‘অন্তত ৯ মাস আগে মামুন ভিসার জন্য আবেদন করে। বয়স কম হওয়ায় সে আবেদন বাদ দেয়া হয়। পরে ৬ মাস আগে পুনরায় আবেদন করে মামুন। ৫ লাখ টাকা খরচ করে তাকে সৌদিতে আরবে পাঠাই। পুরোটা টাকা ঋণ করেছি আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে।’
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলাউদ্দিন ভুইয়া জনি বলেন, ‘আমি নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রশাসনিকভাবে পরিবারটির জন্য যা করার দরকার আমরা তাই করবো।’
কুমিল্লা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান দফতরের কর্মকর্তা দেব্রবত ঘোষ বলেন, ‘আমরা ঘটনা শুনেছি। মরদেহ দেশে নিয়ে আসার জন্য যা যা করতে হয়, তা সবই করবো।’
উল্লেখ্য, সোমবার বিকেলে সৌদি আরবের মক্কায় ওমরা করতে যাওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে একটি বাস। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই দুর্ঘটনায় ১২ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ১৪ জন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলা সদরের গ্রামীণ ব্যাংক শাখায় দুর্বৃত্তরা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে।
মঙ্গলবার রাত তিনটার দিকে মহম্মদপুর সদরের আমিনুর রহমান ডিগ্রী কলেজের পাশে অবস্থিত গ্রামীণ ব্যাংক শাখার জানালা দিয়ে পেট্রোল দিয়ে কে বা কাহারা আগুন লাগিয়ে পালিয়েছে।
আগুনের সূত্রপাত দেখে প্রতিবেশীরা ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে দ্রুত তারা আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। বেশ কিছু কাগজপত্র চেয়ার-টেবিল পুড়ে গেছে।
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রহমান জানান, রাতের অন্ধকারে কোন দুর্বৃত্তরা গ্রামীণ ব্যাংকের জানালা দিয়ে পেট্রোল ফেলে আগুন লাগিয়ে পালিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত চলছে।
মহম্মদপুর গ্রামীণ ব্যাংকের সেকেন্ড ম্যানেজার সিরাজুল ইসলাম জানান, রাত তিনটার দিকে দুর্বৃত্তরা জানালার লক ভেঙে ভিতর দিয়ে আগুন লাগিয়ে পালিয়েছে। কিছু কাগজপত্র চেয়ার টেবিল আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নবান্ন উৎসব উপলক্ষে জয়পুরহাটের কালাই পৌরশহরের পাঁচশিরা বাজারে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বসেছে মাছের মেলা। থরে থরে সাজানো রুই, কাতলা, চিতল, সিলভার কার্প, বিগহেড কার্প, বোয়াল ও সামুদ্রিক মাছসহ নানা প্রজাতির দেশি মাছ।
মেলায় এবার প্রচুর মাছের আমদানি হলেও এবার মাছের দাম বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। মেলাকে ঘিরে সকাল থেকেই সৃষ্টি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন ভিড় করছেন মেলাপ্রাঙ্গণে। মেলার দিনে এই এলাকার সকলেই জামাইদের আমন্ত্রণ করেন। এ কারণে এই মেলাটি জামাই মেলা নামেও পরিচিত।
মাছের মেলায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রঙিন কাপড়ের বিশাল প্যান্ডেল বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে। সেই প্যান্ডেলের নিচে থরে-থরে দেশীয় প্রজাতির বড়-বড় মাছ সাজিয়ে রাখা হয়েছে। মাছের মেলায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের প্রচুর ভিড়। মেলায় সারি সারি দোকানে চলছে হাঁকডাক, দরদাম। মিলছে তিন কেজি থেকে শুরু করে ৩৫ কেজি গ্রাস কার্প ওজনের মাছ। লোকজনও উৎসাহ নিয়ে দেখছেন। কেউ কেউ মাছ কিনে বাড়িতে ফিরছেন।
স্থানীয়রা জানান, ক্যালেন্ডার নয় পঞ্জিকা অনুসারে অগ্রহায়ণ মাসে প্রথম দিনে নবান্ন উৎসব উপলক্ষে প্রতি বছর এখানে মাছের মেলা বসে। মাছ ব্যবসায়ীরা মূলত এই মাছের মেলা বসিয়ে থাকেন। আর এই মাছের মেলাকে কেন্দ্র করে অংশ নেন কালাই পৌর শহরে মূলগ্রাম, দুরঞ্জ, আঁওড়া, সড়াইলসহ উপজেলার পুনট, মাদাই, পাঁচগ্রাম, মাদারপুর, বেগুনগ্রাম, হতিয়ার, ঝামুটপুর, হাতিয়র, মাত্রাইসহ আশপাশের ২৫-৩০ গ্রামের মানুষ। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতি বাড়িতে জামাইসহ স্বজনদের আগে থেকে দাওয়াত করা হয়। এছাড়া দূর-দূরান্ত থেকেও লোকজন আসেন মেলায় মাছ কিনতে।
মেলায় এবার প্রচুর মাছের আমদানি হয়েছে। মাছের সারি সারি দোকানে আকৃতি অনুযায়ী বিক্রি করছে মাছ ব্যবসায়ীরা। সিলভার কার্প প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৯০০ টাকা, বিগহেড কার্প প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, রুই মাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ১২০০ টাকা ও কাতলা মাছ প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ১৩০০ টাকা।
মেলায় বিশালাকৃতির একটি মাছ মাথায় তুলে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করছিলেন কালাইয়ের মাছ বিক্রেতা আব্দুল লতিফ। সাড়ে ১৮ কেজি ওজনের রুই মাছটির দাম হাঁকেন ২৫ হাজার টাকা। সেই মাছ ক্ষেতলাল উপজেলার পাঠানপাড়া এলাকার মনোয়ার হোসেন ২২ হাজার ২০০ টাকায় কিনে নেন।
মেলায় মাছ কিনতে এসেছেন কালাই পৌরশহরের মূলগ্রামের সুরেষ চন্দ্র। তিনি বলেন, প্রতি বছর এ মেলায় আসি। আর মেলা থেকে পছন্দসই মাছ কিনে বাড়িতে ফিরি। এবার মেলায় মাছের দাম বেশি। ১৯ কেজি ওজনের কাতলা মাছ কিনলাম ২৪ হাজার ৭০০ টাকায়।
মেলায় উপজেলার আহম্মেদাবাদের হাতিয়র গ্রাম থেকে বেড়াতে এসেছেন নার্গিস বেগম। তিনি বলেন, স্বামীকে নিয়ে মাছের মেলায় ঘুরতে এসেছি। পাঁচশিরা বাজারে মাছের মেলার নাম আগে থেকেই জানি। কিন্তু কখনো আসা হয়নি। মেলায় এসে বড় বড় মাছ দেখছি। অনেক ভালো লাগছে। ঘুরেফিরে মেলা থেকে স্বাদ ও সাধ্যের কথা মাথায় রেখে পছন্দের একটি বড় মাছ ৭ হাজার ৩০০ টাকায় কিনলাম।
মেলায় মাছ কিনতে আসা শফিকুল ইসলাম নামে এক জামাই বলেন, অন্য বছরের চেয়ে এবার মেলায় বড় মাছের আমদানি অনেক বেশি। মেলা থেকে ৬ কেজি ওজনের একটি কাতলা মাছ কিনলাম। এখন শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি।
স্থানীয় কালাই পৌর শহরের পূর্বপাড়ার তাইফুল ইসলাম বাবু বলেন, এই মাছের মেলাটি এক যুগ ধরে চলে আসছে। মাছের মেলাকে কেন্দ্র করে এই মেলায় বড় পুকুর, দিঘি ও নদী থেকে নানান জাতের বড় বড় মাছ সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন মাছ ব্যবসায়ীরা।
মৎস্য খামারি মকবুল হোসেন বলেন, মেলা সামনে রেখে এক বছর ধরে পুকুরে বড় বড় মাছ বাছাই করে চাষ করেছেন। তাই এবার পাঁচশিরা বাজারের মাছের মেলায় বড় বড় মাছ বিক্রি করতে পারছেন। এবার সকাল থেকে ক্রেতারা আসছেন মাছ কিনতে। তারা তাদের পছন্দ মতো মাছ কিনে বাড়িতে ফিরছেন।
মাছ ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম বলেন, মাছের মেলায় প্রচুর লোক সমাগম হলেও বিক্রি সেই তুলনায় কম। তারপরও যেটুকু হয়েছে, সব খরচ বাদে তাতে লাভ সামান্যই টিকবে। তবে এবার অন্য বছরের তুলনায় ক্রেতা বেশি। তাই মাছও বিক্রি হচ্ছে বেশি।
মেলার আরেক মাছ ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা ব্যবসায়ীরা মিলে প্রতি বছর এ মাছের মেলা আয়োজন করে থাকি। এবার মেলায় ছোট-বড় মিলে ৫০টি মাছের দোকান বসেছে। মাছের মেলাতে বড় পুকুর, দিঘি ও নদী থেকে নানান জাতের বড় বড় মাছ সংগ্রহ করা হয়েছে। রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউশ, বিগহেড কার্প, সিলভার কার্পসহ বড় আকারের মাছ প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ১হাজার ১০০টাকায়। এছাড়া মাঝারি আকারের মাছ প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৬৫০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছোট আকারের প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কালাই পৌর শহরের পাঁচশিরা বাজার ইজারাদার প্রতিনিধি উজ্জ্বল হোসেন বলেন, এ মেলার কোন আয়োজক নেই, মাছ ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যাগে প্রতি বছর এ মেলার আয়োজন করে থাকে। মাছ ব্যবসায়ীরা মেলার আগে এক সপ্তাহ ধরে এলাকায় মাইকে প্রচার প্রচারণা করে থাকেন। এই দিনে মেলায় যেমন প্রচুর মাছ আমদানি হয় তেমনি বিক্রিও হয়।
কালাই উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তৌহিদা মোহতামিম বলেন, মেলায় ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ওঠেছে। এই মেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বড় মাছ ব্যবসায়ীরা ও মাছ চাষিরা বিভিন্ন এলাকা থেকে বড় বড় মাছ নিয়ে আসেন। বড় বড় মাছ দেখে এ এলাকার চাষীদের আগ্রহ বাড়ছে। মেলায় কমপক্ষে এক কোটি টাকার মাছ ক্রয়-বিক্রয় হবে। মৎস্য বিভাগ চাষীদের সবসময় মাছ চাষে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া মেলায় যেনো কেউ বিষযুক্ত মাছ বিক্রি করতে না পারেন, সেদিকে আমাদের কঠোর নজরদারি রয়েছে।
গাজীপুরের টঙ্গীতে বস্তার গুদামে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এতে ছয়টি বস্তার গুদাম পুড়ে গেছে।
মঙ্গলবার (১৮) নভেম্বর ভোরে টঙ্গী পূর্ব থানাধীন বউ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।
টঙ্গী ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ শাহিন আলম বলেন, মঙ্গলবার ভোরে টঙ্গীর বউবাজার গরুর হাট এলাকায় একটি বস্তার গুদামে আগুনের সূত্রপাত হয়। ভোরবেলায় স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন দেখে ফায়ার সার্ভিসের হট লাইনে কল করেন। খবর পেয়ে আমাদের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। ততক্ষণে পাশে থাকা অন্যান্য গুদামেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের চেষ্টায় সকাল পৌনে ৯টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।
তিনি আরও বলেন, তাৎক্ষণিক আগুনের সূত্রপাত জানা যায়নি। আগুনে ছয়টি গুদাম পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
পঞ্চগড়ের নতুন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন কাজী সায়েমুজ্জামান। যোগদানের আগে সোমবার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি পঞ্চগড়বাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দায়িত্ব পালনে নিজের অঙ্গীকার তুলে ধরেন।
৯ নভেম্বর পঞ্চগড়ে পদায়ন হওয়ার পর সামাজিক মাধ্যমে স্থানীয় মানুষের উচ্ছ্বাস, শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনে তিনি অভিভূত হয়েছেন বলে জানান। তিনি লেখেন, অভিনন্দনের জোয়ারে যোগ দিতে গিয়ে অনেকটা প্রত্যাশার চাপ অনুভব করছি। কাজ দিয়ে এই চাপ কমানোর চেষ্টা করব।
দীর্ঘদিন সরকারি কর্মকর্তা প্রশিক্ষণদানে যুক্ত থাকা এই কর্মকর্তা বলেন, হয়রানিমুক্ত ও স্বল্প খরচে সরকারি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়াই তার মূল লক্ষ্য। চাকরি জীবনের শুরু থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, নিজে দুর্নীতি করি না, অন্যকে করতে দিই না। একটি লাগেজ আর আপনাদের ভালোবাসা নিয়েই ফিরব।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন তার কাছে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি লেখেন, ভোটরক্ষা মানে দেশরক্ষা। ভোটরক্ষা আমার ওপর অর্পিত পবিত্র আমানত। রাগ–অনুরাগ বা লোভের বশবর্তী হয়ে আমি নীতির বাইরে যাব না।
নিজের ব্যক্তিজীবন সম্পর্কে ডিসি আরও লেখেন, জীবনে কারও কাছ থেকে ধার নেননি, নেই কোন ঋণ। হারাম আয় থেকে সর্বদা দূরে থেকেছেন। চাকরিতে কখনও বদলি বা পোস্টিংয়ের জন্য তদবিরও করেননি।
পঞ্চগড়ের বাসিন্দাদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আগমনের আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি অনুরোধ করেন, কেউ যেন ফুল বা উপহার না আনেন। তিনি জানান, গিফট গ্রহণ না করার নীতি তিনি বহু বছর ধরে অনুসরণ করছেন। দোয়াই আমার জন্য যথেষ্ট। সবার সহযোগিতা ও দোয়া চাই।
রাউজানে সোনালি ধানের শীষে ভরে উঠেছে বিস্তীর্ণ মাঠ। সেই সোনালি আমন ধান ঘরে তুলতে এখন ব্যস্ত কৃষক-কৃষাণি। কেউ মাঠ থেকে পাকা আমন ধান কাটছেন, কেউবা কাটা ধান আঁটি বাঁধছেন। আবার কেউ কেউ বাঁধা আঁটিগুলো কাঁধে তুলে স্তূপ করে রাখছেন বাড়ির উঠানে কিংবা রাস্তার পাশে। সেখানে কৃষক-কৃষাণিরা মেশিনের মাধ্যমে ধান মাড়াই করে নতুন ধান ঘরে তুলছে। সব মিলিয়ে নতুন ধান ঘরে আশায় কৃষকের মনে দোলা দিচ্ছে এক ভিন্ন আমেজ।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রাউজানে আমন ধানের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষক-কৃষাণিও খুশি। তবে ফলন ভালো হলেও নানা কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি নেই। ভালো দাম পাওয়া নিয়েও শঙ্কা আছে। কৃষকরা বলছেন, দাম ভালো পেলে আগামী মৌসুমে ধানের আবাদ বাড়বে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াশাভেজা মাঠ থেকে সবুজ থেকে সোনালি হয়ে ওঠা সেই পাকা ধান কেটে আনার মহোৎসব চলছে। সে সাথে চলছে নবান্ন উৎসব। কার্তিক ও অগ্রহায়ণ নিয়ে হেমন্ত ঋতু। কৃষাণিরা নতুন ধানের চাল দিয়ে তৈরি করে পিঠা-পুলি, পায়েস, ক্ষীর, মুড়ি ও মুড়ির নাড়ুসহ নানা খাবার।
হলদিয়া ইউনিয়নের বৃক্ষভানপুর এলাকার কৃষক মন্টু ঘোষ বলেন, ‘এ বছর আমি ১৬০ শতক জমিতে আমন ধান চাষাবাদ করেছি। খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। ফলনও হয়েছে ভালো। তবে মাঠ থেকে পাকা ধান ঘরে তুলতে প্রতিজন শ্রমিককে দুবেলা খাওয়াসহ ৬০০ টাকা বেতন দিতে হচ্ছে।’ তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, ‘কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ সার কোনো সময় পাইনি।’
বৃন্দাবন এলাকার কৃষক নুরুল আলম বলেন, ‘৮০ শতক জমিতে আমন ধান আবাদ করেছি। এখন পাকা ধান ঘরে তুলতে চারজন শ্রমিক দিয়ে কাটা শুরু করেছি। আশা করি ফলন ভালো হবে।’
শ্রমিকরা জানান, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা বেকায়দায় পড়েছেন। তাই এবার দুই বেলা খেয়ে ৫০০-৬০০ টাকা দরে পারিশ্রমিক নিচ্ছেন। রাউজান উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সনজীব কুমার সুশীল বলেন, ‘রাউজানে প্রান্তিক কৃষকরা পুরোদমে আমন ধান কাটা শুরু করেছেন। নতুন ধান ঘরে তোলার পর তাদের উৎসব শুরু হবে।
কৃষকরা ধান কেটে বাড়ি আনার পর মাড়াই-মলন শেষে কৃষাণিরা সেটা পরিষ্কার করে রোদে শুকিয়ে ঘরে তুলা নিয়েও ব্যস্ত সময় পার করছেন।’
রাউজান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুম কবির জানান, এবার রাউজানে আমনের চাষ হয়েছে ১২ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের আমন ধানের চাষ হয়েছে ৫৬০ হেক্টর জমিতে। উফসী জাতের আমন হয়েছে ১১ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে। স্থানীয় জাতের আমন হয়েছে ২১০ হেক্টর জমিতে। এই ১২ হাজার ২০ হেক্টর জমি থেকে ৬০ হাজার ২০০ মেট্রিক টন শুকনো ধান উৎপাদন হবে। এবার আমনের ভালো ফলন হয়েছে। কৃষকরা পুরোদমে পাকা আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। নতুন ধান ঘরে তুলে কৃষক পরিবারের সদস্যরা নবান্ন উৎসবের আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
পান-সুপারি বাংলাদেশের ঐতিহ্যের অংশ। গল্পে, আড্ডায়, অতিথি আপ্যায়নে কিংবা বিয়েবাড়িতে সুপারি যুগ যুগ ধরে বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তবে এখন এই ঐতিহ্যবাহী ফল শুধু সংস্কৃতির নয়, গ্রামীণ অর্থনীতিরও শক্ত ভিত্তি হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের ঝালকাঠিতে প্রায় প্রতিটি গ্রামেই দেখা যায় সুপারির বাগান।
ঝালকাঠির চারটি উপজেলা ও ৩২টি ইউনিয়নের ৪৭১টি গ্রামজুড়ে ছড়িয়ে আছে সুপারি গাছ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ৭০০ থেকে ৭৫০ হেক্টর জমিতে সুপারির চাষ হয়েছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারের ফলন অনেক ভালো। অনুকূল আবহাওয়া ও রোগ-বালাই কম থাকায় কৃষকরা পেয়েছেন বাম্পার ফলন।
তবে ফলন ভালো হলেও বাজারদর কিছুটা কম থাকায় অনেক চাষি হতাশা প্রকাশ করেছেন। বর্তমানে সুপারির আকার অনুযায়ী প্রতি কুড়ি (২১০টি) বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকায়। আবার কোনো কোনো বাজারে প্রতি পণ পাকা সুপারি ১৬০-১৮০ টাকা এবং প্রতি কুড়ি ৪০০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঝালকাঠির প্রায় সব হাটেই সুপারির জন্য আলাদা জায়গা নির্ধারিত থাকে। হাটের দিনে এসব বাজারে পাইকার ও কৃষকের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়।
ছত্রকান্দা, সারেঙ্গল, কৃত্তিপাশা, সিঅ্যান্ডবি বাজার, রাজাপুরের বাগড়ি, লেবুবুনিয়া, বাদুরতলা, নাপিতেরহাট, নলছিটির ভৈরবপাশা, চাকলার বাজার, কাঠালিয়ার কৈখালী ও সাতানি বাজারসহ জেলার ৮৯টি সাপ্তাহিক হাটে মোট প্রায় ৫ কোটি টাকার সুপারি বেচাকেনা হয়।
এর মধ্যে সবচেয়ে জমজমাট হাট রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া সুপারি হাট। প্রতি মঙ্গলবার এখানে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকার সুপারি বেচাকেনা হয়। রাজাপুর, পিরোজপুর ও কাউখালী অঞ্চলের মাঝামাঝি অবস্থান হওয়ায় সাতুরিয়া দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তম সুপারি বাজারে পরিণত হয়েছে।
জেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে সুপারি গাছ। অনেকেই বাড়ির পাশেই গাছ লাগিয়ে ভালো ফলন পাচ্ছেন। কৃষকের মতে, একবার গাছ লাগালে ৪-৫ বছরের মধ্যে ফল দিতে শুরু করে এবং টানা ৩০-৩৫ বছর ফল দেয়। খুব বেশি পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় স্থানীয়রা দিন দিন সুপারি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
জানা গেছে, একসময় ফিলিপাইন ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ থেকে আমদানি করা এরিকা ক্যাটচু প্রজাতির এই গাছ এখন দেশে সফলভাবে চাষ হচ্ছে। একবার রোপণের পর এটি ৩০-৩৫ বছর ফল দেয়। উৎপাদন খরচ কম, আয় ধানের তুলনায় তিন থেকে চার গুণ বেশি তাই এখন অনেক কৃষক ধানের বদলে সুপারি চাষে ঝুঁকছেন।
কৃষি বিভাগ জানায়, সুপারি এখন ঝালকাঠির গ্রামীণ অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি। কম পরিচর্যা, কম খরচে দীর্ঘমেয়াদি ফলন এবং বাজারে স্থায়ী চাহিদা সব মিলিয়ে এটি কৃষকের কাছে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ফসলে পরিণত হয়েছে।
জেলার বিভিন্ন হাটে প্রতিদিন কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে সুপারি ঘিরে। স্থানীয়ভাবে বিক্রি হওয়া সুপারির মাধ্যমে কৃষক, পাইকার, ব্যবসায়ী ও পরিবহন শ্রমিক সবাই অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হচ্ছেন। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঝালকাঠির সুপারি এখন রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও। পাইকাররা সুপারি কিনে সড়ক ও নৌপথে চট্টগ্রাম, খুলনা ও যশোরের আড়তে পাঠান। সেখান থেকে এগুলো রপ্তানি হয় ভারত, চীন, থাইল্যান্ডসহ মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে।
ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা চাই সুপারি শুধু কৃষিপণ্য নয়, বরং একটি রপ্তানিযোগ্য ব্র্যান্ডে পরিণত হোক। এ জন্য কৃষকের প্রশিক্ষণ ও বাজার সংযোগে কাজ করছি। একবার গাছ লাগালে বছরের পর বছর ফল দেয়, বছরে দুবার সার-পানি দিলেই চলে। তাই এখন সুপারি চাষই আমাদের প্রধান ভরসা। ঝালকাঠির সুপারির মান অত্যন্ত উন্নত। এখানকার সুপারি ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারেও যাচ্ছে। কৃষককে আমরা পরিকল্পিত চাষে উৎসাহিত করছি, যেন এ ফসল আরও রপ্তানিযোগ্য হয়।
সুপারি চাষ এখন আর শুধু পান-বিলাসের উপকরণ নয়, বরং সম্ভাবনাময় এক কৃষিশিল্পে পরিণত হয়েছে। ঝালকাঠির মাঠে-মাঠে দুলছে সুপারির থোকা, হাটে জমে উঠছে বেচাকেনা, আর দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও ছড়াচ্ছে ঝালকাঠির সুপারি। ভালো দাম পেলে কৃষকের মুখে হাসি আরও চওড়া হবে এমনটাই আশা ঝালকাঠির সুপারি চাষিদের।
ঝিনাইদহে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রবাসী মাহাবুব হত্যা মামলার প্রধান আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে রবিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গত রোববার রাতে শহরের আদর্শপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি সদর উপজেলার কালা গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে।
র্যাব-২ ঝিনাইদহ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী জানান, প্রবাসী মাহাবুব হত্যা মামলার প্রধান আসামি শহরের আদর্শপাড়া এলাকায় অবস্থান করছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। পরে আসামি পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোমবার সকালে সদর থানায় সোপর্দ করা হয়।
গত শনিবার সকালে সদর উপজেলার কালা গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় কম্বোডিয়া প্রবাসী মাহাবুবকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে প্রতিপক্ষরা। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় গত রোববার রাতে নিহতের ভাই রুবেল হোসেন বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ ১০-১২ জনকে আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা করে।
নীলফামারীতে সংরক্ষিত আলুর বাজারদর তলানিতে নেমে যাওয়ায় কৃষক, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে হিমাগার মালিক সবাই মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। উৎপাদন ও সংরক্ষণ ব্যয়ের তুলনায় দাম কমে যাওয়ায় জেলার ১১টি হিমাগারের প্রায় ৯৫ হাজার টন আলু নিয়ে সংকট তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩৫ হাজার টন আলু কৃষকের। কৃষকের অভিযোগ, জমিতে উৎপাদন থেকে সংরক্ষণ পর্যন্ত প্রতি কেজি আলুর খরচ পড়েছে ২৮ থেকে ২৯ টাকা। অথচ বাজারে ভালো মানের আলুর দাম ৭-১০ টাকার বেশি নয়।
কৃষক মোস্তফা ইসলাম বলেন, ‘২২ টাকা খরচ করে আলু তুলেছি, এখন ৮-১০ টাকায় বিক্রি করছি। লোকসানে ডুবে আছি।’
কৃষক জিয়ারুল হকের বলেন, ‘দাম এভাবে কমই থাকলে আগামী মৌসুমে অনেকেই আলু চাষ বন্ধ করতে বাধ্য হবেন।’
সংরক্ষণ ব্যয়ের বাড়তি চাপ সামলাতে হিমাগারনির্ভর ব্যবসায়ীরাও বিপাকে। প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) আলু রাখতে খরচ হয়েছে ১,২০০ থেকে ১,৪০০ টাকা। কিন্তু এখন বাজারে একই বস্তা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকায়।
উত্তরা হিমাগারের ব্যবস্থাপক নিরদ চন্দ্র রায় জানান, ১ লাখ ১৫ হাজার বস্তার মধ্যে এখনো ৭৫ হাজার বস্তা বের হয়নি। জায়গা খালি না হওয়ায় খরচ আরও বাড়ছে।
বাজার মন্দার মধ্যেই হিমাগারগুলোতে নতুন বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যানুযায়ী, চুক্তির মেয়াদ ১৫ নভেম্বর শেষ হওয়ার আগেই কয়েকজন হিমাগার মালিক কৃষকের আলু গোপনে বিক্রি করেছেন। বিষয়টি জানতে পেরে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগে হিমাগার মালিকদের কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন। চিঠিতে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কোনো আলু বিক্রি না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মনজুর রহমান বলেন, খুব শিগগিরই নতুন আলু বাজারে আসবে। দাম কিছুটা সমন্বিত হলে কৃষকরা লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে ইসলামী ব্যাংক সিংগাইর শাখার ক্ষুদ্রঋণদান বিভাগ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে ব্যাংকের আসবাবপত্র, কম্পিউটার, এসি, ডেকারেশনসহ প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
গত রোববার রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার শহিদ রফিক সড়কের দেওয়ান প্লাজায় ইসলামী ব্যাংকে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা ও ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গত রোববার রাত আড়াইটার দিকে বিদ্যুতের শর্ক-সার্কিট হয়ে হঠাৎ ব্যাংকের ক্ষুদ্র ঋণদান বিভাগে আগুন লাগে। এ সময় ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড আগুন দেখে সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। ততক্ষণে আগুনের লেলিহান শিখায় ব্যাংকের আসবাবপত্রসহ ও মূল্যবান জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পরে উপজেলা ফায়ার স্টেশনের টিম এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ব্যাপারে উপজেলা ফায়ার স্টেশনের ইনচার্জ মো. মহিবুর রহমান জানান, বিদ্যুতের শর্ক-শার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় সমতল ভূমিতে বসবাসরত অতি দরিদ্র্য নৃ-গোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে ১১১ জন উপকারভোগীর মাঝে বিনামূল্যে ছাগল ও ছাগলের গৃহনির্মাণ উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।
সোমবার বেলা ১১টায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এ বিতরণ কার্যক্রম হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ আল জিনাত। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ চন্দ্র রায়, উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মাসউদ পারভেজ প্রমুখ।
জানা যায়, ক্ষেতলাল উপজেলায় সমতল ভূমিতে অতি দরিদ্র্য ৯৩৬ জন নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস করে। এদের মধ্যে পর্যায়ক্রমে তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে ১১১ জন উপকারভোগীর মাঝে বিনামূল্যে ছাগল ও ছাগলের গৃহনির্মাণ উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।
উপকারভোগীদের মধ্যে বিশেষ ক্যাটাগরি তৃতীয় লিঙ্গের উপজেলার রোয়ার গ্রামের আব্দুল হামিদ ছাগল বলেন, ছাগল পেয়ে আমি খুব খুশি। এগুলো লালন-পালন করে পরিবারের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করতে পারব।
শীতের আগমনী বার্তায় কেশবপুরজুড়ে শুরু হয়েছে লেপ–তোশক মৌসুমের উৎসব। দিনের বেলা রোদ ঝলমলে থাকলেও ভোরের কুয়াশা আর সন্ধ্যার হিমেল হাওয়া জানান দিচ্ছে- শীত আর দরজার বাইরে নয়। আর ঠিক সেই মুহূর্তেই কেশবপুরের লেপ–তোশক কারিগর বা ধুনকদের ব্যস্ততা আকাশছোঁয়া হয়ে উঠেছে। উপজেলার শতাধিক দোকানে এখন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত একটানা কাজ- তুলা ধোয়া, ধুনন, সেলাই, ডিজাইন তৈরি- সব জায়গাতেই কর্মচাঞ্চল্য।
বাজারে ক্রেতার ঢল, অর্ডারের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে কারিগররা। শীত পুরোপুরি নামার আগেই বেডিং দোকানগুলোতে ভিড় জমাতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। পাতলা কম্বলে আর শীত মানছে না বলে নতুন লেপ বানাতে অনেকে অর্ডার দিচ্ছেন। কেউ আবার পুরনো লেপ–তোশকে নতুন তুলা ভরছেন বা মেরামত করাচ্ছেন।
দোকানিদের দাবি- এই মৌসুমের শুরুতেই বিক্রি গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। শীত আরও বাড়লে অর্ডারের চাপ দ্বিগুণ হবে বলে প্রত্যাশা তাদের। কাপড়-তুলার চড়া দাম কারিগরদের চিন্তায় ফেলেছে। তুলা ও কাপড়ের দাম গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ২০–৩০ শতাংশ। বর্তমান বাজারদর শিমুল তুলা: ৬০০–৯০০ টাকা কেজি, কার্পাস তুলা: ৩০০–৩৫০ টাকা কেজি, কালো তুলা: ৭৫–৮০ টাকা কেজি, রাবিশ তুলা: ৬০–৮০ টাকা কেজি, সাদা তুলা: ১০০–১২০ টাকা কেজি প্রতি গজ কাপড়েও বেড়েছে ১০–১৫ টাকা। ফলে একটি মাঝারি লেপ তৈরি করতে খরচ পড়ছে ১,২০০–২,০০০ টাকা, যা গত বছর থেকে প্রায় ৩০০–৪০০ টাকা বেশি। কারিগরদের ভাষায় দাম বাড়ায় লাভ কম, কিন্তু অর্ডার বেশি বলে দিন-রাত পরিশ্রম করতে হচ্ছে। শীতের আমেজে হাট-বাজারে চাঙা লেপতোশকের
কেশবপুরের বিভিন্ন হাট–বাজারে দেখা গেছে কারিগরদের কদর এখন সবচেয়ে বেশি। মানুষ শীতের প্রস্তুতি নিতে দোকানে দোকানে ঘুরছেন। কেউ রোদে পুরনো লেপ দিচ্ছেন, কেউ ধুনন করাচ্ছেন। দোকানিরা বলছেন শীতটা যদি ভালো থাকে, এক মৌসুমের আয়েই সারাবছর সংসার চলে যায়।
নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলায় রয়েছে ১২২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়গুলোতে দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমেই কমছে। উপবৃত্তি, মিড-ডে মিল, শিক্ষা উপকরণসহ নানা সুবিধা দিয়েও বিদ্যালয়ে উপস্থিত করা যাচ্ছে না।
তথ্য বলছে, সোনাইমুড়ীতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১২২টি। ৩১টি স্কুলে প্রধান শিক্ষক রয়েছে। চলতি দায়িত্বে রয়েছে ২৬টি স্কুলে। ৬৫টি স্কুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রয়েছে। এসব স্কুলে ৬৭২টি সহকারী শিক্ষকের পদ রয়েছে। কর্মরত সহকারী শিক্ষক আছেন ৬২৪ জন। ৪৮টি পদ শূন্য রয়েছে।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র। ২নং নদনা ইউনিয়নের বোরপিট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিকে ১২, ১ম শ্রেণিতে ৭, ২য় শ্রেণিতে ১০, ৩য় শ্রেণিতে ১০, ৪র্থ শ্রেণিতে ১২ ও ৫ম শ্রেণিতে ১১ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে।
৭নং বজরা ইউনিয়নের শিলমুদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিকে ১ম শ্রেণিতে ৬, ২য় শ্রেণিতে ৫, ৩য় শ্রেণিতে ৯, ৪র্থ শ্রেণিতে ১০ ও ৫ম শ্রেণিতে ১০ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। ১০নং আমিশাপাড়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিকে ১ম শ্রেণিতে ৬, ২য় শ্রেণিতে ৩য় শ্রেণিতে ১০, ৪র্থ শ্রেণিতে ১৭ ও ৫ম শ্রেণিতে ৬ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৮নং সোনাপুর ইউনিয়নের হাসানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি রয়েছে ২৯ জন ছাত্র এবং ৩৮ জন ছাত্রী। সোনাপুর-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি রয়েছে ৩২ জন ছাত্র এবং ৩০ জন ছাত্রী। ৯নং দেওটি ইউনিয়নের ঘাসেরখিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি রয়েছে ৩৫ জন ছাত্র এবং ৩২ জন ছাত্রী। দেওটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি রয়েছে ৪০ জন ছাত্র এবং ২৮ জন ছাত্রী। ১০নং আমিশাপাড়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি রয়েছে ৩০ জন ছাত্র এবং ২৫ জন ছাত্রী। পুর্ব কৃঞ্চপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি রয়েছে ২৬ জন ছাত্র এবং ৩০ জন ছাত্রী। ৭নং বজরা ইউনিয়নের শিলমুদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি রয়েছে ২৫ জন ছাত্র এবং ৩৬ জন ছাত্রী। ২নং নদনা ইউনিয়নের বোরপিট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি রয়েছে ৩৭ জন ছাত্র এবং ২৫ জন ছাত্রী। এভাবেই অন্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর তুলনামূলক কম রয়েছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়াতে ইউএনও নাসরিন ডাক্তারের উদ্যোগে গান্ধী আশ্রমের অর্থায়নে সোনাইমুড়ী উপজেলা ৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মিড-ডে মিল কার্যক্রম চালু করা হয়। উপজেলার শিলমুদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাসানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দেওটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মিড-ডে মিল চালু করেন। গত ১৯ আগস্ট সোনাইমুড়ী উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অসহায় দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন তিনি। উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪০০ জন ছাত্র-ছাত্রীর মাঝে শিক্ষা উপকরণ স্কুল ব্যাগ, টিফিন বক্স ও জ্যামিতির বক্স বিতরণ করা হয়।
সোনাইমুড়ী প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উপজেলার তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয় মিড-ডে মিল চালু হওয়ায় শিক্ষকরা আনন্দিত। এতে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলমুখী হবে। না খেয়ে অনেক দরিদ্র শিক্ষার্থী স্কুলে চলে আসে। নতুন শিক্ষা উপকরণ পেয়েও তারা আনন্দিত। এ উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। এ কারণে স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়বে।
উপজেলা সহকারী শিক্ষক অফিসার মহিউদ্দিন বলেন, করোনাকালে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমতে শুরু হয়। এছাড়া যত্রতত্র নূরানী মাদ্রাসা থাকায় শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক বিদ্যালয় ছেড়ে মাদ্রাসামুখী হচ্ছে। এ উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
২নং নদনা ইউনিয়নের বোরপিট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মেছবাহুর রহমান বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা মাদ্রাসা এবং কিন্ডারগার্টেনমখী। তাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন জানান, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম তা সত্য। তবে তিনি যোগদান করার পর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
নোয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইসরাত নাসিমা হাবিব বলেন, শিক্ষক সংকট রয়েছে। পাশাপাশি স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে কম। উপস্থিতি বাড়াতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষকরা উঠান বৈঠক করছে।
চট্টগ্রাম ওয়াসার বিরুদ্ধে মিটারের চেয়ে বেশি বিল দাবির অভিযোগ উঠেছে। মিটার ইন্সপেক্টর মিটার না দেখেই অতিরিক্ত রিডিং দেখিয়েছে বিলে এমন অভিযোগ গ্রাহকের। কিন্তু অতিরিক্ত বিলের অর্থ পরিশোধে অনিহা গ্রাহকের। প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তাকে অভিযোগ করার পর বিল সংশোধনের নির্দেশ রাজস্ব কর্মকর্তাকে।
জানা গেছে, মিসেস রওশন আরা বেগম হিসাব নং-২৯৩৭৮৪, মিটার নং- ০৯০৭০০২৪৬৭ পাহাড়তলী এলাকায় আবাসিক সংযোগ নিয়েছেন চট্টগ্রাম ওয়াসার। বাস্তবে নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখে মিটারে পানির ব্যবহৃত ইউনিটের পরিমাণ ৩ হাজার ২৮৭ ইউনিট। বিলের কপি অনুযায়ী চলতি বছরের ৩১ আগস্ট মিটারে রিডিং দেখানো হয়েছে ৩ হাজার ৯০ ইউনিট। ৩০ দিন পর তথা ৩০ সেপ্টেম্বর মিটারের রিডিং দেখানো হয়েছে ৩,৪৯০ ইউনিট। অর্থাৎ এক মাসে গ্রাহক মোট ৪০০ ইউনিট পানি ব্যবহার করেছেন। প্রতি ইউনিটের বিল ১৮ টাকা হিসেবে ৪০০ ইউনিটের বিল ধরা হয়েছে ৭ হাজার ২০০ টাকা। এর সঙ্গে ১৫% ভ্যাট ১ হাজার ৮০ টাকা যুক্ত করে গ্রাহকের মোট প্রদেয় বিলের পরিমাণ ৮ হাজার ২৮০ টাকা।
অভিযোগ উঠেছে, গ্রাহক বয়োবৃদ্ধ হওয়ার কারণে চট্টগ্রাম ওয়াসার মিটার রিডারে লাফিয়ে লাফিয়ে ভুল রিডিং দিয়ে বিলের টাকা বাড়ানোর বিষয়টি বুঝতে পারেননি। প্রশ্ন উঠেছে, মিটার রিডার বা ইন্সপেক্টর কী কারণে এমন বিল তৈরি করেছেন তা রহস্যজনক। প্রত্যক্ষভাবে গত ১৫ নভেম্বর ওয়াসার মিটারটিতে দেখা গেছে অন্যতথ্য। মিটারে মাত্র ৩,২৮৭ ইউনিট রয়েছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে মিটার ইন্সপেক্টর মেহেদী হাসান মিটার না দেখেই বিল করেছেন গত দুই মাস।
এ ব্যাপারে গ্রাহক রওশন আরা বেগম বলেন, আমি ঠিক সময়ে বিল পরিশোধ করে দেই। কিন্তু দুই মাস পরের রিডিং দুই মাস আগে দেখানো হয়েছে। এতে আমি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারি। তাই এ বিষয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার চিফ রেভিনিউ অফিসারকে জানিয়েছি। তিনি সংশোধন করে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার রাজস্ব কর্মকর্তা বলেছেন, গত মাসে যদি ৪০০ ইউনিট দেখানো হয় পরবর্তী মাসে সর্বোচ্চ শতকরা ২০ ভাগ ব্যবহৃত ইউনিট কম দেখানো যাবে। এর চেয়ে বেশি কম দেখাতে হলে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার অনুমতি লাগবে। কিন্তু এ বিষয়ে গ্রাহকের জানার কথা নয়।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা রুমেন দে বলেন, একটি ভবনে প্রতিটি পরিবার গড়ে ৩০ ইউনিট পানি ব্যবহার করতে পারে। সে অনুযায়ী বিলে ১০০ ইউনিট বেশি দেখানো হয়েছে। তিনি মেহেদী হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেন, মিটারটি পরিদর্শন করে দেখতে হবে। আর রাজস্ব কর্মকর্তাকে বলেন, যেহেতু মিটারের ছবি তোলা হয়েছে সেখানে রিডিং ৩,২৮৭ ইউনিট দেখা যাচ্ছে সেহেতু বিলে ভুল হয়েছে।