বাগেরহাটের রামপালে শেখ আব্দুল্লাহ (২৫) নামের এক যুবককে প্রায় ২২ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে নির্যাতনের বিষয়টি কাউকে না জানানোর শর্তে পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। গত ২৩ মার্চ উপজেলার ব্রী-চাকশ্রি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গত ২৩ মার্চ দুপুরে ইজিবাইকযোগে বাগেরহাট আসার পথে রামপাল উপজেলার চাকশ্রি নামক স্থান থেকে জোরপূর্বক শেখ আব্দুল্লাহকে তুলে নিয়ে যায় ব্রি চাকশ্রী এলাকার শেখ হাসান আলী ও ইউপি চেয়ারম্যান ফকির আব্দুল্লাহর ভাগনে আবু সালেহসহ কয়েকজন। পরে প্রায় ২২ ঘণ্টা নির্যাতনের পরে পরদিন শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ছেড়ে দেয়া হয়।
নির্যাতনের শিকার আব্দুল্লাহ বাগেরহাটে সদর উপজেলার মুনিগঞ্জ এলাকার শেখ গফুরের ছেলে। সে বর্তমানে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নির্যাতনের শিকার আব্দুল্লাহ বলেন, পূর্ব পরিচিত হওয়ায় ব্রি চাকশ্রী এলাকার শেখ হাসান আলীকে এক লাখ ২৭ হাজার টাকা ধার দেই করি। কিন্তু সে আমাকে টাকা না দিয়ে নানা টালবাহানা করতে থাকে। এক পর্যায়ে টাকা পরিশোধ বাবদ শেখ হাসান আলী তার ইজিবাইকটি আমার কাছে বিক্রি করে দেয়। এরপর প্রতিদিন দুই শ টাকা ভাড়ায় ইজিবাইকটি চালাতে থাকে হাসান আলী। কয়েকদিন ভাড়া দিলেও পরে আর দেয়নি। যে কারণে ইজিবাইকটি বিক্রি করে দেই।
পরে এ বিষয় নিয়ে আর কথা হয়নি। কিন্তু হঠাৎ করে গত ২৩ মার্চ দুপুরে শেখ হাসান আলী ও চেয়ারম্যানের ভাগনে আবু সালেহসহ কয়েকজন মিলে জোরপূর্বক আমাকে ধরে নিয়ে যায়। ব্রি চাকশ্রী এলাকায় শেখ হাসান আলী বাড়িতে নিয়ে আমাকে নির্যাতন করে। সন্ধ্যার দিকে আমার বন্ধু প্রাইভেট কার চালক আল আমিনকে চাকশ্রী আসার জন্য আমাকে দিয়ে ফোন করায়। পরে আল আমিন গেলে তাকেও বেঁধে রাখে হাসান ও আবু সালেহরা। সারা রাত আমাকে নির্যাতন করেছে আবুল সালেহ ও হাসানসহ কয়েকজন। বেধড়ক মারধরের পাশাপাশি শরীরে সিগারেটের সেকা ও আঙ্গুলের মধ্যে খেজুরের কাটা ঢুকিয়ে দেয়। এ ছাড়া চোখ উঠিয়ে ফেলার হুমকি দেয়।
আব্দুল্লাহ আরও বলেন, সারা রাত এভাবে নির্যাতনের পর দুপুরে বাইনতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফকির আব্দুল্লাহর কাছে নিয়ে যায় আমাদের। তিনি কোনো কথা না শুনে আমাদের চোখ তুলে ফেলতে বলেন। পরে ফাঁকা স্ট্যাম্পে আমার এবং আমার মায়ের স্বাক্ষর রেখে এবং তিন লাখ টাকার দেয়ার স্বীকারোক্তি রেখে ছেড়ে দেয়।
শেখ আব্দুল্লাহর মা খালেদা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে যেভাবে নির্যাতন করেছে, তা মানুষে করে না। চেয়ারম্যানের কাছে যেয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। আমি আমার ছেলেকে নির্যাতনের বিচার চাই।
শেখ আব্দুল্লাহর বন্ধু প্রাইভেটকার চালক আল আমিন বলেন, আল আমিনের ফোন পেয়ে চাকশ্রী বাজারে গেলে, হাসান ও আবু সালেহ আমাকে বেঁধে রাখে। সারা রাত আব্দুল্লাহকে নির্যাতন করে। শুক্রবার দুপুরে আমাদের ছেড়ে দেয়।
অভিযোগ অস্বীকার করে বাইনতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফকির আব্দুল্লাহ বলেন, আমার সামনে কোনো নির্যাতন হয়নি। আবু সালেহ আমার ভাগনে নয়।
বাগেরহাট জেলা হাসপাতালের তত্ত্ববাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সমাদ্দার বলেন, আব্দুল্লাহর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলা-জখম রয়েছে। গুরুতর কোনো জখম হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যাবে।
এদিকে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হওয়া ২ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ঘরের পেছনে আম গাছের সঙ্গে বেঁধে এক যুবককে মারধর করছে কয়েকজন যুবক। পরে ওই যুবককে মাটিতে ফেলে এক পায়ের ওপর দাঁড়িয়ে অন্য পা উপরে উঠিয়ে গালিগালাজ করা হচ্ছে। এক পর্যায়ে দুই পায়ের তলায় মোটা লাঠি দিয়ে পেটাতে দেখা যায় আবু সালেহকে। ওই সময় যুবক মাগো মাগো বলে চিৎকার করতে শোনা যায়।
পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক বলেন, ভিডিওটি আমরা দেখেছি। বিষয়টি তদন্ত চলছে। অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ময়মনসিংহের ভালুকার একটি ডেইরি ফার্ম থেকে ১০টি গরু চুরির ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের কাছ থেকে সাতটি চোরাই গরু উদ্ধার করে দুটি পিকআপ জব্দ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে বুধবার দিন-রাত অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের গাজীভিটা গ্রামের কাইয়ুম (৪২), নেত্রকোনার দুর্গাপুরের বনগ্রাম গ্রামের খাইরুল ইসলাম (২২), গাজীপুরের কাপাসিয়ার সূর্যনারায়ণপুর গ্রামের নাহিদ হোসেন (২৫) এবং কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের চর দিহুনদা নামাপাড়া গ্রামের রাজিব হাসান সবুজ (৩০) ও হোসেনপুরের বালিয়াচর গ্রামের দ্বীন ইসলাম (২৮)।
ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম জানান, সোমবার রাত আড়াইটার দিকে জেলার ভালুকার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের জামিরদিয়া এলাকার ডেইরি ফার্ম বেলেজিং ইনভেস্টমেন্ট প্রজেক্ট থেকে ১০টি গরু চুরি হয়। এ ঘটনায় পরদিন ভালুকা মডেল থানায় মামলা হলে চোর চক্রকে গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে গোয়েন্দা পুলিশ।
ওসি সফিকুল ইসলাম বলেন, বুধবার বিকেলে জেলার নান্দাইলের কানারামপুর এলাকা থেকে গরু চোর চক্রের মূল হোতা রাজীব হোসেন সবুজকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই রাতেই কিশোরগঞ্জ সদর থানা এলাকা থেকে চোরাই সাতটি গরু উদ্ধার করে কাইয়ুমকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে একে একে গ্রেপ্তার করা হয় আরও তিনজনকে।
গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গত ২০ মে গরুভর্তি ট্রাক ডাকাতি মামলায় সবুজ কিশোরগঞ্জ কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়েই আন্তজেলা গরু চোর চক্র গঠন করে। বিভিন্ন এলাকায় ছদ্দবেশে ডেইরি ফার্ম ঘুরে ঘুরে চুরির পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সবুজের নেতৃত্বে ৯ জনের চোর চক্রটি ভালুকায় বেলেজিং ইনভেস্টমেন্ট প্রজেক্টে গিয়ে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দিয়ে দেয়াল ভেঙে ডেইরি ফার্মে ঢুকে ১০টি গরু দুইটি পিকআপে তুলে নিয়ে কিশোরগঞ্জ সদর থানা এলাকায় নিয়ে যায়।
গ্রেপ্তার পাঁচজনকে বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি সফিকুল ইসলাম।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের মৌসুমে সব শ্রেণিপেশার মানুষের আচরণের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার জহুরুল হক।
তিনি বলেন, আমের রাজ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে গাছে গাছে এত আম, তবু কেউ আম পাড়ে না। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা গাছে ঢিল দেয় না। আমের সঙ্গে বহুকাল থেকে চলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষের এমন সম্পর্ক ও রীতিনীতি তৈরি হয়েছে। এটি সততার এক অনন্য উদহারণ।
বৃহস্পতিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমিতে ‘রুখব দুর্নীতি গড়ব দেশ, হবে সোনার বাংলাদেশ’ স্লোগানে দুদকের সততা সংঘের রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এভাবেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিয়ে তার মুগ্ধতার কথা তুলে ধরেন।
এ সময় শিক্ষার্থীদের সৎ ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান জহুরুল হক। বলেন, এখন অভিবাবকরা শুধু বলে আমার সন্তান ডাক্তার হোক, ইঞ্জিনিয়ার হোক, জজ হোক ব্যারিস্টার হোক। কিন্তু তারা এটা বলে না যে আমার সন্তান সৎ হোক, মানুষ হোক। সৎ না হলে শেষ পর্যন্ত কিছুই টিকে না। আর অসৎ মানুষকে কেউ শ্রদ্ধা করে না।
দুদক রাজশাহী বিভাগে পরিচালক কামরুল আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক দেবেন্দ্র নাথ ওরাও, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সহিদ, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ইব্রাহিম হোসেনসহ অন্যরা।
পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী গম্ভীরা গানের মাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন করা হয়।
দুদক সততা সংঘের সমাবেশ রাজশাহী বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গড়া সততা সংঘের কমিটির সদস্য ও শিক্ষকরা অংশ নেন। সারা দেশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সততা সংঘ ও সততা স্টোর কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সৎ ও মানবিক মূল্যবোধ শেখানের কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে বলে সমাবেশে জানানো হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী যুদ্ধাপরাধী ছিলেন না বলে মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামে অবস্থিত বন গবেষণাগার ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. রফিকুল হায়দারের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক ছাত্রলীগ নেতা।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন পাঁচলাইশ থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সোহরাব হোসাইন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী কামরুল ইসলাম মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজহারে বলা হয়, সম্প্রতি বন গবেষণাগার ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. রফিকুল হায়দার কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসিতে ঝুলানো সালাউদ্দিন কাদেরকে নিরপরাধ দাবি করেন। ওই বক্তব্যের ৪৪ সেকেন্ডের একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে ড. রফিকুল হায়দারকে বলতে শোনা যায়, ‘সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী যুদ্ধাপরাধী ছিল না। ভালো মানুষ ছিল। তার এলাকায় যাও, খবর নাও। তার একটাই দোষ, হাসিনাকে আঘাত করেছে সংসদে দাঁড়িয়ে।’
তার এমন বক্তব্যের পর বন গবেষণার এলাকায় এর পক্ষে-বিপক্ষে অনেকে অবস্থান নিয়ছেন। এতে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মামলার বাদী পাঁচলাইশ থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘আমার বাড়ি বন গবেষণাগার ইনস্টিটিউটের পাশে। আমি বিষয়টি দুটি পত্রিকায় দেখেছি কয়েকদিন আগে। পরে সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে ৪৪ সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ড পাই। ওই কল রেকর্ডে তাকে স্পষ্ট বলতে শোনা গেছে কথাটি। তিনি সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হয়ে এমন মন্তব্য করতে পারেন না। সাকা যে যুদ্ধাপরাধী, এটি আদালত দ্বারা স্বীকৃত। তাই আমি এগিয়ে এসে মামলা করেছি।’
তবে বক্তব্যের বিষয়টি মিথ্যা দাবি করেছেন বন গবেষণাগার ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. রফিকুল হায়দার। তিনি বলেন, ‘আমি আমার অফিসের দুর্নীতিগ্রস্ত কয়কজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ায় তারা এটি ছড়িয়েছে। সালাউদ্দিন কাদের স্বীকৃত যুদ্ধপরাধী, এটা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
‘তাছাড়া তারা আমার বিরুদ্ধে আরও অনেক মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। সবকিছু তদন্ত হয়েছে। এমনকি এটিও একটি গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়েছে। তারা তদন্ত করে প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে সম্ভবত,’— বলেন ড. রফিকুল।
জয়পুরহাট শহরের গুলশান মোড়ে এন এ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে কিশোর আব্দুর রহমানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলার একমাত্র আসামি আবু জাফরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার আব্দুর রহমানকে কুপিয়ে হত্যার পর থেকে আবু জাফর দিনাজপুর শহরে গিয়ে আত্মগোপনে ছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জয়পুরহাট সদর থানার উপপরির্দশক (এসআই) যোবায়ের বৃহস্পতিবার বিকেলে বলেন, হত্যা মামলার একমাত্র আসামি আবু জাফরকে নিয়ে জয়পুরহাটের উদ্দেশে রওনা দিয়েছি।
গ্রেপ্তার আবু জাফর (২৮) দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ডুগডুগি গ্রামের মৃত বারী মাস্টারের ছেলে। তিনি ওই মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের প্রধান বাবুর্চি ছিলেন। নিহত কিশোর আব্দুর রহমান তার সহকারী ছিল।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের রান্নাঘর থেকে কিশোর আব্দুর রহমানের (১৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় থেকেই বাবুর্চি আবু জাফর নিখোঁজ ছিলেন। পরে আব্দুর রহমানের মা মোছা. আমিরুন জয়পুরহাট থানায় আবু জাফরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, কিশোর আব্দুর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। হত্যা মামলার একমাত্র আসামি আবু জাফরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করা হবে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কিশোর আব্দুর রহমান মাদক ও মোবাইল ফোনে গেম খেলায় আসক্ত ছিল। বছর দেড়েক আগে অভিভাবকরা তাকে সুস্থ করার জন্য জয়পুরহাট শহরের গুলশান মোড়ে এন এ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করার জন্য নিয়ে যান। বয়স কম হওয়ায় তাকে সেখানে ভর্তি না করেই রাখা হয়। কেন্দ্রের পরিচালক বিপ্লব সরকার পিটারের ফরমায়েশ শুনত সে, কেন্দ্রের প্রধান বাবুর্চি আবু জাফরের সহকারী হিসেবেও কাজ করত।
এন এ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক বিপ্লব সরকার পিটার বলেন, বয়স কম হওয়ায় আব্দুর রহমানকে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র ভর্তি করানো হয়নি। তাকে ভালো করতে জয়পুরহাট পুলিশ লাইনস স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি করে দিয়েছিলাম। এ ছাড়া আমার ফরমায়েশ ও প্রধান বাবুর্চি আবু জাফরের সহকারী হিসেবে কাজ করত সে। মঙ্গলবার সকালে রান্নাঘরে রক্তাক্ত অবস্থায় তার লাশ পড়েছিল। ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ছিল প্রধান বাবুর্চি আবু জাফর।
বাড়ির দখল নিতে এক বিধবা নারী ও তার ভাড়াটিয়াদের জোর করে বাড়ি থেকে উৎখাতের অভিযোগ উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার কাউন্সিলর মিজানুর রহমান আনসারীর বিরুদ্ধে। কাউন্সিলের উৎপাত থেকে রেহাই পেতে ওই নারী থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন। তাতে বলেছেন, বাড়ি থেকে তুলে দিতে লোকজন দিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানিসহ হুমকি দিচ্ছেন কাউন্সিলর।
অভিযোগকারী ওই নারীর নাম সুলতানা আক্তার। তিনি জেলা শহরের পশ্চিমপাইকপাড়ার মৃত সহিদুল ইসলামের স্ত্রী। গত ২৬ মে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে তিনি সদর থানায় জিডি করেন।
সুলতানা, তার পরিবারের সদস্য ও জিডির অভিযোগ থেকে জানা গেছে, সহিদুল ইসলামের সঙ্গে সুলতানার বিয়ে হয় ১৯৯৭ সালে। চার-পাঁচ বছর পর স্বামীর সঙ্গে পশ্চিমপাইকপাড়ার বাসায় চলে আসেন সুলতানা। সেখানে শ্বশুরের নামে থাকা তিন দশমিক ৮১ শতক জায়গায় বসবাস শুরু করেন। ২০১৭ সালে মৃত্যু হয় সহিদুলের। এরপর স্বামীর ওয়ারিশ সূত্রে ও অন্যান্য শরিকদের সঙ্গে আপস-বণ্টনের মাধ্যমে সুলতানা সেখানেই থেকে যান।
আরও জানা যায়, স্বামীর মৃত্যুর পর সুলতানার উপার্জনের কোনো উৎস ছিল না। এ সময় স্বামীর ভাই-বোনদের সঙ্গে আলোচনা করে ওই বাসার দুটি ঘর ভাড়া দেন সুলতানা। সেই আয় দিয়েই মেয়েকে নিয়ে চলছিলেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি বাড়ির এই সম্পত্তির বণ্টন নিয়ে স্বামীর ভাই-বোন ও তাদের সন্তানদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।
এ পরিস্থিতিতে সুলতানা কয়েক মাস আগে ব্রাহ্মবাড়িয়া যুগ্ম জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতে বণ্টননামা মামলা করেন, যা বিচারাধীন। কিন্তু এর মধ্যেই কাউন্সিলর মিজানুর রহমান বাড়িটি দখলে নিতে সুলতানা ও তার মেয়েকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন ও চাপ প্রয়োগ করছেন। মঙ্গলবার রাতেও বাড়িতে লোক পাঠিয়ে সুলতানা ও তার ভাড়াটিয়েকে সেখান থেকে উঠে যেতে বলেছেন।
সুলতানা জানান, ওই লোকজন তাকে জানান, কাউন্সিলর বাড়িটি কিনে নিয়েছেন। প্রতিবাদ করলে এলাকার বখাটেদের তার মেয়ের পেছনে লেলিয়ে দিয়েছেন কাউন্সিলর। ভাড়াটিয়াদেরও বাসা ছেড়ে দিতে চাপ প্রয়োগসহ হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন।
সুলতানা বেগম বলেন, কাউন্সিলর মিজানুর রহমানের কথামতো এলাকার কিশোর গ্যাং অন্যায়ভাবে আমার ভাড়াটিয়াদের বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দিচ্ছে। কাউন্সিলের কারণে মেয়েকে নিয়ে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। স্বামীর ভাই-বোনদের কাছ থেকে এই জায়গা কিনেছেন বলে কাউন্সিলর জানিয়েছেন। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির কেউই এ বিষয়ে কিছু বলেনি। আদালতে বণ্টননামা মামলা করেছি এবং আদালত থেকে জায়গা বুঝে নিতে কাউন্সিলরকে বলেছি। কিন্তু কাউন্সিলের উৎপাত দিনদিন বাড়ছে।
জানতে চাইলে মিজানুর রহমান আনসারী বলেন, ওই বাড়ির দক্ষিণ ও উত্তর দিকে পৌরসভার মেয়র নায়ার কবির। বিক্রি হবে জেনে বাড়িটি কিনতে মেয়র আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। পরে বাড়ির মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। বাড়ির প্রকৃত মালিকারা ৩ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট মেয়রের ছেলে ও আমার নামে বায়না দলিল করে দিয়েছেন। ওই নারীকে (সুলতানা) বলেছি, তার ও তার মেয়ের প্রাপ্যটুকু আমি পাইয়ে দিতে সাহায্য করব।
এক প্রশ্নের জবাবে কাউন্সিলর মিজানুর বলেন, ‘আমি কোনো ধরনের হয়রানি করছি না। কাউকে কোনো হুমকিও দেয়া হয়নি। তবে তার বাসার এক ভাড়াটিয়া আমার আত্মীয়।’ আদালতে বণ্টননামার মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রকৃত মালিকরা বিষয়টি দেখবেন।
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ভগ্নিপতির দেয়া আগুনে ঝলসে যাওয়া আব্দুল কাদের (৩০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে দগ্ধ হওয়ার তিন দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় দগ্ধ আব্দুল কাদেরের স্ত্রী শারমিন (২৫) ও মেয়ে ফাতেমা খাতুন (৪) এখনো চিকিৎসাধীন।
এর আগে গত ২৭ মে দিবাগত রাতে ভগ্নিপতি সবুজ হোসেন (৩২) শ্যালক আব্দুল কাদেরে ঘরে পেট্রল ঢেলে দরজায় তালা লাগিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে আব্দুল কাদের, তার স্ত্রী শারমিন ও শিশুকন্যা ফাতেমা ঝলসে যায়। পরে তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা ঘরের তালা ভেঙে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করান। কিন্তু সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল কাদের মারা যান।
স্থানীয়রা জানান, যশোরের নারায়ণপুর পোড়াবাড়ী গ্রামের সবুজ হোসেনের সঙ্গে আব্দুল কাদের গাজীর বোন সুফিয়া খাতুনের (২৬) বিয়ে হয়। কিছুদিন ধরেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে শ্যালক আব্দুল কাদেরের ওপর ক্ষিপ্ত হন সবুজ। এর জের ধরে গত শনিবার রাতে চন্দনপুর (কাতপুর) গ্রামের সোহাগ হোসেনের বাড়িতে অবস্থান নেন সবুজ। পরে রাতে সোহাগের সহযোগিতায় ঘুমিয়ে থাকা আব্দুল কাদেরের ঘরে পেট্রল ঢেলে দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে পালিয়ে যান তিনি।
এ ঘটনায় পরদিন আব্দুল কাদেরের বোন সুফিয়া খাতুন বাদী হয়ে সবুজ ও সোহাগকে আসামি করে কলারোয়া থানায় মামলা করেন। মামলার ২ নম্বর আসামি সোহাগ হোসেনকে ওই দিনই আটক করে পুলিশ।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আগুনে দগ্ধ আব্দুল কাদের গতকাল সকালে মারা গেছেন। আমরা এরই মধ্যে মামলার একজন আসামিকে আটক করেছি। অন্যজনকেও আটকের চেষ্টা চলছে।’
চট্টগ্রামে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ, বাজারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ ও ভেজালবিরোধী নানা অভিযান পরিচালনাকারী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্তকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে মুঠোফোনে দুই দফা কল করে তাকে হুমকি দেন অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি।
প্রতীক দত্ত জানান, তিনি অফিসের কাজে ঢাকায় এসেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৪৪ ও ৮টা ৪৮-এর দিকে দুটি কল আসে, একটি আইপি (+৫৭২৫৮২৪৭৮) কল, অন্যটি ফোন নম্বর (+৮৮০১৯৪২২০৬০৩১) থেকে। কল করে তাকে বলা হয়, যেখানেই পাবে, সেখানেই তাকে গুলি করবে, জবাই করবে।
প্রতীক দত্ত বলেন, ‘তার (হুমকিদাতার) কথায় সাম্প্রতিক কোনো অভিযানের বিষয়ে ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। তবে তিনি আমার ধর্ম উল্লেখ করে বাজেভাবে গালাগাল করছিলেন। অন্যদিকে ৩০ মে চকবাজারে ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ নামের যে প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করেছিলাম, সেটা একটা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ছিল। তা ছাড়া ওই অভিযানে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ব্যানার, চাঁদা আদায়ের রসিদ এবং বিপুল পরিমাণ সরকারবিরোধী বই জব্দ করা হয়েছে। তাই কাজটি তাদের কেউ করতে পারে বলে ধারণা আমার।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাবিক হাসান বলেন, ‘প্রতীক দত্তকে মুঠোফোনে হুমকির ঘটনায় ঢাকার শাহবাগ থানায় ইতিমধ্যে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তার নিরাপত্তা ও হুমকির বিষয়ে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হয়েছে।’
টাঙ্গাইলের মধুপুরে বাসের ধাক্কায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার যাত্রী স্বামী-স্ত্রীসহ চারজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের উপজেলার গাংগাইর বোমা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার পাইস্কা গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে মাঈনুদ্দিন (৫০), তার স্ত্রী তাহেরা বেগম (৩০) ও একই গ্রামের দরদ আলীর ছেলে ফরহাদ (৪৫)। বাকি এক শিশুটির পরিচয় পাওয়া যায়নি।
মধুপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুরাদ জানান, মধুপুর হতে ঢাকাগামী বিনিময় পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে মধুপুরগামী অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে তিনজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া এক শিশু গুরুত্বর আহত হলে স্থানীয়রা হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়।
তিনি আরও জানান, এই দুর্ঘটনায় ঘাতক বাসটিকে জব্দ করা গেছে। বাসের চালক ও সহকারী পালিয়ে গেছেন।
ভোলার মনপুরা থেকে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে বিকল হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা একটি ট্রলারে থাকা ২১ জন জেলেকে জীবিত উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী।
কোস্টগার্ডের জাহাজ সবুজ বাংলার অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুল্লাহ্-আল-মামুনের নেতৃত্বে অভিযানে গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
গতকাল বিকেলে কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুর রহমান এ তথ্য জানান। তিনি জানান, উদ্ধার হওয়া জেলেরা সবাই ভোলার মনপুরা থানার বাসিন্দা। উদ্ধারের পর তাদের প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি
ফেনীর কাজির দিঘী এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে লরির পেছনে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন আরনও দুইজন। বৃহস্পতিবার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন জেলার হোমনা উপজেলার শুবারামপুর এলাকার শিমুল (২৮) ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন (২০) এবং পিকআপ চালক আবু সাঈদ (২৯)। তার বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায়। আহতরা হলেন, শিমুলের শ্বশুর দেলোয়ার হোসেন (৬৫) ও পিকআপ চালকের সহকারী মো. সাগর (২২)। তাদের দুজনকে ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে বাসার আসবাবপত্র নিয়ে একটি পিক-আপ কুমিল্লায় যাচ্ছিল। এ সময় দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সামনে থাকা লরির পেছনে ধাক্কায় দেয় পিকআপটি। এতে পিকআপটি দুমড়েমুচড়ে গিয়ে তিনজন নিহত হন। আর আহত হয় দুইজন।
ফেনী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক রায়হান উদ্দিন চৌধুরী বলেন, গুরতর আহত অবস্থায় দুইজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আর নিহত তিনজনের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
ফেনীর ছাগলনাইয়া মুহুরিগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ওসি রাশেদ খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
জয়পুরহাট-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ৩৭ কিলোমিটার সংস্কার ও সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল ছয় বছর আগে। একটি ঠিকাদার কোম্পানি কাজও পায় ১০ কিলোমিটার অংশের জন্য। তবে পাকা সড়কের সামান্য কিছু অংশে খোঁড়াখুঁড়ি করে পুরোনো ইট, খোয়া ও কার্পেটিং তুলে বালু ফেলা ছাড়ার আর কিছু করেনি তারা। এরপর এ বছরের জুন পর্যন্ত সময় দিয়ে গত বছরের জুলাইয়ে নতুন এক ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়। অথচ কাজের মেয়াদ শেষের মাস শুরু হয়ে গেলেও এখনো সেই কাজই শুরু হয়নি।
এমন চিত্রই দেখা গেছে জয়পুরহাট-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণ কাজের। স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির বেহাল হলেও সংস্কার না হওয়ায় তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জয়পুরহাট সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে জয়পুরহাট-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ৩৭ কিলোমিটার সড়ক ১৮ থেকে ২৪ ফুটে উন্নীত করতে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এর মধ্যে বটতলী থেকে জয়পুরহাট শহর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটারের কাজ পায় নাভানা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। ২০১৭ সালের শেষের দিকে কার্যাদেশ পায়। ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিলের মধ্যে ওই কাজ শেষ করার কথা ছিল। ১০ কিলোমিটারের মধ্যে সাড়ে তিন কিলোমিটার পাকা সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করে পুরোনো ইট, খোয়া ও কার্পেটিং তুলে কাজও শুরু করে নাভানা। তবে মাত্র আড়াই কিলোমিটারের কাজ দায়সারাভাবে করে চলে যান ঠিকাদারের লোকজন।
এ অবস্থায় ২০২০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সাড়ে তিন কোটি টাকা জরিমানা করে সড়ক বিভাগ নাভানার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে। নতুন করে দরপত্রের মাধ্যমে ওই অংশ প্রশস্ত করতে যৌথভাবে অসমাপ্ত কাজের দায়িত্ব পায় রিলায়েবল বিল্ডার্স ও হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেড। ৫১ কোটি টাকার কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করতে ২০২২ সালের ২০ জুলাই কার্যাদেশ দেয়া হয়। চুক্তি অনুযায়ী চলতি বছরের জুনে কাজটি শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু শেষ করা তো দূরের কথা, কাজটি এখনো শুরুই হয়নি।
গত সোমবার সরজমিনে দেখা গেছে, অসমাপ্ত সাড়ে সাত কিলোমিটার সড়কের কোমরগ্রাম থেকে হিচমি পর্যন্ত এক কিলোমিটার অংশে জনস্বার্থে চলাচলের জন্য ইট বিছিয়ে দিয়েছে সড়ক বিভাগ।
স্থানীয়রা বলছেন, এরপরও অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় সড়কে প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ে যানবাহন। দুর্ঘটনাও ঘটছে। এলাকার কৃষিজীবীরা তাদের কৃষিপণ্য পরিবহন করতে পারছেন না। যানবাহনের অভাবে সময়মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও পৌঁছতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। ফলে মানুষকে পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার কোমরগ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মামুন পারভেজ বলেন, এ আঞ্চলিক মহাসড়ক হয়ে বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলার পাশাপাশি নওগাঁর ধামইরহাট এবং দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ পথের বাস-ট্রাকসহ নানা যানবাহন চলাচল করে। হিলি স্থলবন্দর থেকে পণ্যবাহী ট্রাক দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়। সড়ক বেহাল হওয়ার কারণে চালকরা যানবাহন চালাতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন।
অটোরিকশাচালক বাবু মিয়া বলেন, এ রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। এ রাস্তার কারণে প্রায়ই গাড়ি অকেজো হয়ে যায়।
মোটরসাইকেল আরোহী মিলন হোসেন বলেন, কাজের সুবাদে এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু খানাখন্দের কারণে বিশেষ করে বর্ষাকালে এ রাস্তায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। কারণ, রাস্তায় পানি উঠলে আর খানাখন্দ বোঝার উপায় থাকে না। যানবাহনও নষ্ট হয়ে পড়ে।
জানতে চাইলে রিলায়েবল বিল্ডার্স ও হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সাজ্জাদ কাদির খান বলেন, জয়পুরহাট শহরের আড়াই কিলোমিটার অংশে ড্রেন নির্মাণের কাজ চলমান থাকায় সময় মতো কাজটি শুরু করা যায়নি। তবে শিগগির কাজটি শুরু করার জন্য সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
জয়পুরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সৌম্য তালুকদার দৈনিক বাংলাকে বলেন, আঞ্চলিক মহাসড়কের অসমাপ্ত কাজ আগামী বর্ষার আগেই শুরু করা হবে। আশা করছি ২০২৪ সালের জুন মাসের মধ্যেই এ কাজটি শেষ হবে।
আসন্ন ঈদুল আজহা সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভায় কোরবানির পশুর হাট ইজারা দেয়া নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ওই হাটের ইজারা নিতে আগ্রহী ব্যবসায়ীরা বলছেন, তিন ধাপে দরপত্র জমা ও ইজারা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও তারা দ্বিতীয় ধাপের নির্ধারিত সময়ে গিয়ে দরপত্র কিনতে ও জমা দিতে পারেননি। প্রথম ধাপে দরপত্র জমা দেয়া একমাত্র ব্যবসায়ীকেই হাটটি স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে ইজারা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।
গতকাল বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার পশুর হাট ইজারা নিতে আগ্রহী অন্তত ছয়জন দরপত্র কিনতে না পারার অভিযোগ জানিয়েছেন। তারা হলেন মোস্তাফিজুর রহমান, জাকির হোসেন, আব্দুল মতিন, আব্দুস সাত্তার, আব্দুল হাই ও জালাল মিয়া।
পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ মে সংস্থাটির অধীন ভাদুঘর বাস টার্মিনালের মাঠে (বর্তমানে বিজয় মেলার মাঠ) চার দিনব্যাপী অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাটের ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেয় পৌরসভা। বিজ্ঞপ্তিতে তিন পর্যায়ে দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে উল্লেখ করা হয়। প্রথম পর্যায়ে দরপত্র বিক্রি ২৪ ও ২৫ মে এবং জমা ২৫ মে বেলা ১টা পর্যন্ত; দ্বিতীয় পর্যায়ে বিক্রি ৩১ মে ও ১ জুন এবং জমা ১ মে এবং তৃতীয় পর্যায়ে বিক্রি ৭ ও ৮ জুন এবং জমার শেষ সময় ছিল ৮ জুন। ইজারার সম্ভাব্য মূল্য ভ্যাট, আয়করসহ সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা ধরা হয়।
জেলা শহরের শিমরাইলকান্দি এলাকার আলমগীর মিয়া ৭০ লাখ টাকা দর উল্লেখ করে প্রথম পর্যায়ে একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে দরপত্র জমা দেন। তিনি ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাকিল মিয়ার নিকটাত্মীয়। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, তাকে হাট ইজারা দিতেই তাদের দরপত্র কিনতে দেয়া হয়নি।
হাট ইজারা নিতে আগ্রহী ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ব্যক্তিগত কারণে জেলার বাইরে থাকায় প্রথম পর্যায়ে দরপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারিনি। তবে তিন ধাপে দরপত্র বিক্রি ও জমার কথা ছিল। এখন তো দরপত্রই কিনতে দিচ্ছে না।’
আর কোনো ধাপে না গিয়েই আলমগীর মিয়াকে হাটের ইজারা দিয়ে দেয়া হবে জানতে পেরে মোস্তাফিজুর পৌরসভার মেয়র বরাবর একটি আবেদনও করেছিলেন। তবে কাজ হয়নি। গতকাল দরপত্র কিনতে পারেননি তিনি।
আরেক ঠিকাদার আব্দুল মতিন বলেন, ‘পশুর হাটের ইজারার সম্ভাব্য মূল্য ভ্যাট, আয়করসহ সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা ধরা হয়। সে বিষয়টি মাথায় রেখে দ্বিতীয় পর্যায়ে দরপত্র জমা দিতে চেয়েছিলাম। আজ (গতকাল) সেখানে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করলেও দরপত্র কিনতে দেয়নি পৌর কর্তৃপক্ষ। প্রথম পর্যায়ের দরপত্র থেকেই ইজারার প্রক্রিয়া শেষ করে ফেলেছে বলে জানিয়ে দিয়েছে।’
এই দুই ব্যবসায়ীই জানান, আলমগীর মিয়ার দেয়া ৭০ লাখ টাকা দরের চেয়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বেশি দরে হাট ইজারা নিতে আগ্রহী তারা।
আরেক ব্যবসায়ী আব্দুল হাই বলেন, ‘পশুর হাট ইজারার দরপত্র নিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ দেয়নি। যেখানে দরপত্র বিক্রি করা হচ্ছিল, সেখানে গিয়ে তালা ঝোলানো পাওয়া যায়। পরে পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়ে দিয়েছেন, দরপত্র বিক্রি হবে না।’
দরপত্র বিক্রির দায়িত্বে থাকা সাঈফুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ের দরপত্র বিক্রির সময় আমার দায়িত্ব ছিল। এখন আমি ছুটিতে আছি। দরপত্র বিক্রির দায়িত্ব কাকে দেয়া হয়েছে, সেটি আমার জানা নেই।’
জানতে চাইলে পৌরসভার মেয়র নায়ার কবির বলেন, ‘ঠিকাদাররা শিডিউল কেন কিনতে পারেননি, সেটি আমি জানি না। পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী প্রকৌশলী ও কাউন্সিলরা জানেন। তবে প্রথম ধাপে যিনি দরপত্র কিনেছেন, গত বছরের চেয়ে ৪ শতাংশ বেশি দর দিয়েছেন তিনি। কমিটি দরপত্রটি গ্রহণ করে তাকেই ইজারা দেয়ার পরিকল্পনা করছে। এর চেয়ে বেশি কিছু জানি না।’
যোগাযোগ করলে পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা আ. কূদদূস বলেন, সব নিয়ম ও আইন মেনেই ইজারার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে।
এক সপ্তাহ ধরে তীব্র দাবদাহে অতীষ্ঠ বন্দরনগরী চট্টগ্রামের মানুষ। একটু শীতলতার জন্য প্রাণ হাঁসফাঁস করছিল সবার। অবশেষে বুধবার রাতে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরেছে জনমনে। তবে ঘণ্টা দুয়েকের বৃষ্টি নগরকে শীতল করার পাশাপাশি জলাবদ্ধও করে ফেলেছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া সাধারণ মানুষ।
বুধবার রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীতে শুরু হয় বৃষ্টি, স্থায়ী ছিল দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। এই বৃষ্টিতেই শহরের নিচু অঞ্চলে পানি জমে তৈরি হয় জলাবদ্ধতা।
এ দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জিইসি মোড়, দুই নম্বর গেট, চকবাজার, শুল্কবহর, বহদ্দারহাট, কাতালগঞ্জ, আগ্রাবাদ, হালিশহর ও বাকলিয়ার বিভিন্ন স্থানে পানি বৃষ্টির পানি জমে গেছে।
নগরজুড়ে এমন জলাবদ্ধতার ফলে কমে যায় যানবাহন চলাচল। গণপরিবহন আদায় করে অতিরিক্ত ভাড়া। এতে চরম দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ।
নগরীর দুই গেট এলাকার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বহদ্দারহাটে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। রাত ১০টার দিকে আমার অফিস ছুটি। আজ বৃষ্টি হওয়ায় ফেরার পথে দেখি বিভিন্ন স্থানে পানি। শহরে পানি জমলে গণপরিবহনও কমে যায়। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে পরে বাড়তি ভাড়া দিয়ে এসেছি।’
এদিকে রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ৫০ দশমিক ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে চট্টগ্রাম শহরে। নগরীর আমবাগান আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা মো. ইউছুপ বলেন, ‘রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত আমরা ৫০ দশমিক ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছি। এখন বন্ধ থাকলেও গভীর রাতে আবার কোথাও কোথাও বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে টানা বর্ষণ হওয়ার সম্ভবনা নেই।’
জলাবদ্ধতা চট্টগ্রামের অন্যতম বড় সমস্যা। গত কয়েক দশক ধরেই জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে চলছে নগরবাসী। জলাবদ্ধতা নিরসনে ১০ হাজার ৯২১ কোটি টাকার চারটি বড় সরকারি প্রকল্পের কাজ চলছে বছরের পর বছর। এই চার প্রকল্পের প্রতিটিরই সময় ও ব্যয় বাড়লেও সুফল মিলছে না।
বড় চার প্রকল্পের মধ্যে পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) হাতে। ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ নামের এই প্রকল্পে এরই মধ্যে খরচ হয়েছে তিন হাজার কোটি টাকা।
জলাবদ্ধতা নিরসনে আরেকটি বড় প্রকল্প ‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ’ও সিডিএর হাতে। দুই হাজার ৩১০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে এরই মধ্যে খরচ হয়েছে ১২০০ কোটি টাকা। তারপরও বর্ষা মৌসুমে এর বিন্দুমাত্র সুফল পাচ্ছে না নগরবাসী।