সবজির চারা উৎপাদনের ক্ষেত্রে বগুড়ায় স্থানীয়ভাবে পরিচিতি পেয়েছে শাজাহানপুর উপজেলার শাহনগর গ্রাম। এ গ্রামের নার্সারিমালিকরা আগাম সবজির চারা উৎপাদন করে ভালো আয় করলেও মূল মৌসুমে এসে বিপাকে পড়েছেন।
স্থানীয় নার্সারিমালিক সংগঠনের সদস্যদের ভাষ্য, বন্যার শঙ্কায় অনেক কৃষক চারা কিনছেন না। এ কারণে মাঠে অন্তত ৪ কোটি সবজির চারা অবিক্রীত আছে। এটি সময়মতো বিক্রি করতে না পারলে তাদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
শাহনগর ছাড়াও এর আশপাশের খলিশাকান্দি, চোপিনগর, বৃ-কুষ্টিয়া ও খোট্টপাড়া গ্রামে অন্তত ২৫০টি নার্সারি গড়ে উঠেছে। এসব নার্সারিতে ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুন, পেঁপেসহ মরিচের চারা পাওয়া যায়। তবে শাহনগর গ্রামে বেশি উৎপাদন হয় মরিচের চারা। জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত শীতকালীন সবজির চারা নিতে দেশের বিভিন্ন জেলার ক্রেতার সমাগম হয় এ গ্রামে।
খলিশাকান্দি গ্রামে সাড়ে চার বিঘার জমিতে নার্সারি করেছেন জালাল উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘এবার তাদের ব্যবসায় প্রথম আঘাত হানে খরা। বর্ষার মৌসুমে কোনো বৃষ্টি না হওয়ায় অনেকের সবজির চারা নষ্ট হয়ে গেছে।’
জালালের ভাষ্য, তার নার্সারির প্রায় ৩ লাখ সবজির চারা নষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতির পরিমাণও অন্তত ৩ লাখ টাকা। পাশাপাশি বাজারে বীজসহ সারের দামও বেড়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার শ্রমিকদের পেছনে বাড়তি ৩ হাজার করে টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। ফলে উৎপাদন খরচও বেড়েছে।
জালাল উদ্দিন বলেন, এখনো ক্রেতা আসা শুরু হলে তার নার্সারি থেকে অন্তত ১০ লাখ টাকার চারা বিক্রি সম্ভব।
নার্সারিমালিকরা জানান, বর্তমানে ১ হাজার মরিচের চারা বিক্রয় হচ্ছে ৩০০ টাকায়। ফুলকপির চারা ৮০০ থেকে ১ হাজার, পাতাকপি ৭০০ এবং বেগুন ও টমেটোর চারার দাম ৫০০ টাকা। মৌসুমের শুরুতে আগাম সবজি হিসেবে মরিচের চারার দাম আরও বেশি ছিল। প্রতি হাজার চারা বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৪০০ টাকায়।
নার্সারিমালিকদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, বগুড়ার পশ্চিমাঞ্চল নন্দীগ্রাম, কাহালু, দুপচাঁচিয়া ও আদমদীঘি উপজেলার ক্রেতারা সবচেয়ে বেশি আগাম জাতের সবজির চারা কেনেন। এ ছাড়া যমুনা নদীর চরে যেসব কৃষকরা চাষাবাদ করেন তারাও সবজির চারার অন্যতম ক্রেতা।
শাহনগর এলাকায় সবজির চারা-বিক্রেতা মাসুদ রানা বলেন, তিনি চলতি মৌসুমে প্রায় ৪০ লাখ চারা বিক্রি করেছেন। এতে তার আয় হয়েছে অন্তত ২৫ লাখ টাকা।
মাসুদ বলেন, নদনদীতে পানি বাড়ছে। এ সময় কৃষকরা ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। বগুড়ার অল্প কিছু কৃষকরা আসছেন। কিন্তু বাইরের জেলার ক্রেতাদের আনাগোনা নেই।
সবজির চারা ক্রেতাদের একজন সারিয়াকান্দি উপজেলার এজাজুল ইসলাম। মরিচের চারা কেনার পর শাহনগর গ্রামে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। জানান, তিনজন মিলে দুই জাতের ৬০ হাজার মরিচের চারা কিনেছেন। প্রতি হাজার চারার দাম দিতে হয়েছে ৩০০ টাকা।
জামালপুরের মাদারগঞ্জের কৃষক আবু বক্কর বলেন, প্রতিবছর এখান থেকে মরিচের চারা কেনেন। কিন্তু এখন যমুনা নদীতে পানি বাড়ছে। এ জন্য এখন চারা কেনার ঝুঁকি নিচ্ছেন না অনেক কৃষক। পানি না কমলে তার জেলার অন্য কৃষকরা আসবেন না। এটাই স্বাভাবিক।
শাহনগর সবজির চারা নার্সারিমালিক সংগঠনের সভাপতি আমজাদ হোসেন বলেন, এবার নার্সারিমালিকরা সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খেয়েছেন বীজ সংগ্রহে। ভারতে আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় মরিচের বীজের উৎপাদন ভালো হয়নি। এ জন্য দাম বেড়ে গেছে। বিজলী জাতের মরিচের বীজের দাম ছিল প্রতি কেজি ৪৮ হাজার টাকা। এবার তা ৭২ হাজার টাকায় কিনতে হয়েছে। সতেরশ জাতের দাম ছিল প্রতি কেজি ২৮ হাজার টাকা। সেটি কিনতে হয়েছে ৩১ হাজার টাকায়। এভাবে সব জাতের বীজের দাম গড়ে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা বেড়েছে।
আমজাদ হোসেন বলেন, এখন বন্যার শঙ্কা থেকে কৃষকরা সবজির চারা কেনার সাহস পাচ্ছেন না। এতে প্রায় ২৫০ নার্সারির অন্তত ৪ কোটি সবজির চারা পড়ে আছে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান বলেন, জেলায় এ বছর প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে আগাম সবজির চাষ হয়েছে। গত বছর একই পরিমাণ জমিতে প্রায় ৫৪ হাজার টন ফসল উৎপাদন হয়। এ ছাড়া গতবার শীতকালীন সবজি আবাদ হয়েছিল প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে। এবার সে অনুযায়ী, লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করবে জেলা কৃষি দপ্তর।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ ও আড়াইহাজার উপজেলার বিভিন্ন শিল্প কারখানার দূষিত বর্জ্যে ব্রহ্মপুত্র নদ-খাল বিলের পানি দূষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।
রোববার বিকেলে সোনারগাঁয়ে জামপুর ইউনিয়নের মাঝেরচর বাস স্ট্যান্ড এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি মদনপুর-আড়াইহাজার সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
মানববন্ধন কর্মসুচিতে উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আল মুজাহিদ মল্লিক, জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান, জামপুর মাঝেরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নূর মোহাম্মদ মিয়া, জামপুর ইউনিয়ন বিএনপির ৪নং ওয়ার্ড সভাপতি আকরাম আজাদ মিল্টন, ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শরীফুজ্জামান শাহীন, ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. আমানউল্লাহ মিয়া, ৩ নংওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ফারুক মিয়াসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন সোনারগাঁ ও আড়াইহাজার উপজেলার বিভিন্ন শিল্প কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য ব্রহ্মপুত্র নদে ফেলে পরিবেশের মারাতক্তভাবে ক্ষতি করছে। শুধু ব্রহ্মপুত্র নদের পানিই নয়, খাল বিলের পানি দূষণের কবলে পড়েছে। বর্জ্যে মিশ্রিত পানিগুলো কালো আলকাতরার রং ধারণ করেছে। ফলে পরিবেশ ও কৃষকের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। তাছাড়া নদীতে এখন আর দেশী মাছ পাওয়া যায় না। দূষণের ফলে জনর্দূভোগ চরমে পৌঁছেছে। তারা আরো বলেন, কলকারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে পানি দূষণের ফলে বিভিন্ন রোগ বালাই হচ্ছে। কিছু সুবিধাভোগীদের জন্য আজ নদীর এ অবস্থা। নদী বাচাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নদী বাঁচাতে পরিবেশ অধিদপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন বক্তারা।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. রনী খাতুনের বদলির আদেশ ঠেকাতে মানববন্ধন করেছে এলাকার কিছু মানুষ। তাকে শ্যামনগর দায়িত্বে পুনর্বহালের দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।
রোববার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সামনে শ্যামনগরের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এ আয়োজন করা হয়। ইউএনও মানুষের মন জয় করেছেন বলে দাবি তোলেন বক্তারা।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান সাদেম, শ্যামনগর উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি প্রভাষক সামিউল আযম মনির, বিএনপির নেতা প্রভাষক আব্দুল ওহাব, মুনছুর সরদার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ তপন কুমার মন্ডল সহ অনেকে।
চেয়ারম্যান বিএনপির নেতা সাদেকুর রহমান সাদেম বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর ইউএনও দক্ষভাবে শ্যামনগরকে আগলে রেখেছেন। গত শীতে কম্বল নিয়ে মানুষের ঘরে-ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন। তিনি মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন। এ অবস্থায় ইউএনওর বদলি ঠিক হয়নি। এখনই জনগণ তাকে এ উপজেলার দায়িত্ব থেকে যেতে দিতে চায় না। এজন্য জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি তাকে শ্যামনগর পুনর্বহাল করা হোক।
ইউএনও রনী খাতুন বলেন, আমাকে ঝিকিরগাছা উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। এটি সরকারি সিদ্ধান্ত। নির্দিষ্ট সময়ে আমাকে সেখানে যোগদান করতে হবে। অতীত কর্মকাণ্ডে খুশি হয়ে হয়ত এলাকার জনগণ আমাকে শ্যামনগর পুনর্বহাল চেয়ে মানববন্ধন করেছেন।
নাটোরের বড়াইগ্রামে একটি কাভার্ড ভ্যান আটকিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ভ্যানচালক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী চালক মো. মিজান শেখ (২৭), পিতা মো. মোবারক শেখ, নড়াইল সদর উপজেলার বরাশুলা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি নুরজাহান ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির কাভার্ড ভ্যানচালক। ভ্যানটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঢাকা মেট্রো-ট ১৫৮৫৫০।
চালক জানান, ১৩ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি তার সহকারী মো. ওয়াসিমকে (২৪) সঙ্গে নিয়ে ঢাকার বাটারফ্লাই মার্কেটিং লিমিটেডের মালামাল (টিভি, ফ্রিজ, এসি, ওভেন, ওয়াশিং মেশিন) নিয়ে নাটোরের উদ্দেশে রওয়ানা দেন।
১৪ সেপ্টেম্বর ভোর রাত সাড়ে ৩টার দিকে বড়াইগ্রাম থানার মোড় অতিক্রম করার পর ফাঁকা রাস্তায় পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা ৫-৭ জন দুর্বৃত্ত একটি ড্রাম ট্রাক দিয়ে কাভার্ড ভ্যানটির গতিরোধের চেষ্টা করে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় চালক পাশের একটি লোকাল রাস্তায় ঢুকে পড়েন। কিছুক্ষণ পর একটি ছোট পিকআপ ভ্যান কাভার্ড ভ্যানের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
অভিযোগে বলা হয়, দুর্বৃত্তরা চালক ও হেলপারকে হত্যার হুমকি দিয়ে কাভার্ড ভ্যানের পেছনের দরজার তালা ভেঙে ভেতরে থাকা মালামাল লুট করে নেয়। এতে আনুমানিক ১০ লাখ টাকার পণ্য তারা নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে ভ্যানচালক মিজান শেখ বলেন, ঘটনার পর কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে কিছুটা বিলম্বে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি মো. গোলাম সারোয়ার জানান, অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া বাজারসংলগ্ন দুটি ব্রিজ ভেঙে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুই উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ। সবচেয়ে বেশি বিপাকে রয়েছেন নারী, শিশু ও শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খেয়া নৌকায় পারাপার করতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নাচনাপাড়া বাজারের উত্তর পাশে মাঠবাড়িয়া ও পাথরঘাটা উপজেলার সংযোগকারী কাঠের ব্রিজটি অনেক আগেই ভেঙে যায়। পরে এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে একটি সাঁকো তৈরি করলেও সম্প্রতি জোয়ারের চাপে সেটিও ভেঙে পড়ে। ফলে দুই পাড়ের মানুষ বাধ্য হয়ে নৌকায় পারাপার করছেন।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ নূরুল ইসলাম মনি সেখানে একটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু এরপর প্রায় ১৬ বছর টানা ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আর কোনো নতুন ব্রিজ নির্মাণ হয়নি। প্রায় এক দশক আগে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হলেও তা অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় বছরের পর বছর বন্ধ রয়েছে।
অন্যদিকে, নাচনাপাড়া বাজারের দক্ষিণ পাশেও একই চিত্র। এখানে প্রায় ২ বছর আগে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মিলে একটি অস্থায়ী সাঁকো নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু সেটিও গত ১০ সেপ্টেম্বর জোয়ারের পানির তোড়ে ভেঙে পড়ে। এতে কাঠালতলী, চরদুয়ানী ও নাচনাপাড়ার হাজারো মানুষের চলাচল আরও চরম দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, শিক্ষার্থী ও কর্মজীবীদের প্রতিদিনই বড় ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় যাতায়াত করতে হচ্ছে। জরুরি রোগী পরিবহনেও ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। তাদের দাবি- দ্রুত বিকল্প সাঁকো নির্মাণ, স্থায়ী স্লুইসগেট ও অসমাপ্ত ব্রিজ নির্মাণ কাজ চালু করতে হবে।
এলাকাবাসীর ভাষ্য, এক দশকের বেশি সময় ধরে প্রতিশ্রুতি শুনে যাচ্ছেন, কিন্তু বাস্তবে কোনো কাজ হচ্ছে না। তারা আশা করছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন।
নাটোরে দুটি অভিযানে ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস থেকে ১৭৪ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার ভোরে শহরের বনবেলঘরিয়া এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ভগরইল এলাকার মো. ওয়াদুদ আলী (২৫), শিবগঞ্জ উপজেলার কয়লার দিয়ার এলাকার মো. ফসের আলী সোহেল (২৯), শেখটোলা কাশিবাটিপাড়া এলাকার মো. লালন (২৫) এবং একই এলাকার মো. সাবেরুল ইসলাম শহিদ (৩৫)।
পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানান, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভোরে প্রথমে নোয়াখালী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী গ্রামীণ ট্রাভেলসের একটি যাত্রীবাহী বাসে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় যাত্রী সিটের নিচে রাখা দুটি বস্তা থেকে ১৪ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয় এবং এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে একই এলাকায় নারায়গঞ্জ থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী একটি প্লাস্টিক ক্যারেট বহনকারী ট্রাককে থামানো হয়। তল্লাশিতে ক্যারেটের নিচে রাখা ছয়টি চটের বস্তা থেকে ১৬০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এ সময় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
পুলিশ সুপার আরও জানান, মাদকের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। এই অভিযান চলমান থাকবে এবং ভবিষ্যতে আরও জোরদার করা হবে।
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় পিতা ইদ্রিস আলীকে হত্যার দায়ে ছেলে রেজাউল করিম লাবুকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩ এর বিচারক মাহবুবুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
একই মামলায় নিহতের স্ত্রী রেনুকা বেগম এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত লাবুর স্ত্রী ইসমত আরাকে তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ আকন্দ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ৪ মার্চ দুপুরে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার অলিদহ গ্রামের একটি পুকুরে গলা ও পায়ে রশি প্যাঁচানো অবস্থায় ইদ্রিস আলীর মরদেহ ভেসে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয়রা খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। ওই দিনই নিহতের ছেলে রেজাউল করিম লাবু বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তে বেরিয়ে আসে, পিতাকে হত্যা করেছিলেন মামলার বাদী রেজাউল করিম লাবুই। আদালতে তার ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রোববার এ রায় ঘোষণা করা হয়।
ফসলি জমির পানি নিষ্কাশনের দাবিতে মেহেরপুরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকালে গাংনী উপজেলার তেরাইল, মহব্বতপুর, বাদিয়াপাড়া, কামারখালি, ষোলটাকা ও সহড়াবাড়িয়া গ্রামের শতাধিক কৃষক জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন বামুন্দি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার আলী ভুট্টো। এ সময় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বহু বছর ধরে সঠিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি মৌসুমে হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি বা সামান্য প্লাবন হলেই জমি ডুবে যায়। ধান, পাট, শাক-সবজি থেকে শুরু করে সব ধরনের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
কৃষকরা আরও বলেন, সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বহুবার অভিযোগ জানানো হলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে কৃষকরা একদিকে লোকসানের বোঝা বইছেন, অন্যদিকে ঋণের টাকা শোধ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। বক্তারা দ্রুত সেচ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান।
মানববন্ধন শেষে কৃষকরা জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে দ্রুত খাল খনন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নতকরণ এবং টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প হাতে নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
কৃষকদের দাবি, সরকার যদি দ্রুত উদ্যোগ না নেয়, তবে আগামী মৌসুমে আরও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে এ অঞ্চলের কৃষক-সমাজ।
জামালপুরে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে।
রোববার দুপুরে জামালপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এই ফরম বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়।
প্রথম দিনে সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল হকের কাছ থেকে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন হজরত শাহ জামাল (র.) জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল ইসলাম বুলবুল। বুলবুল জানান, বিগত দিনে নির্বাচন ছাড়া কমিটি করা হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে আমরা বঞ্চিত হয়েছিলাম। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে নির্বাচনের যে তফসিল ঘোষণা হয়েছে সেই অনুযায়ী সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেন, একটি মহল নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কেউ যাতে পকেট কমিটি করতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল হক জানান, নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ইতোমধ্যেই সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আজ (রোববার) থেকে মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে এবং জমা দেওয়ার শেষ সময় ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত। আগামী ৪ অক্টোবর ভোট গ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
কেরানীগঞ্জে দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে মানবিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে কেরানীগঞ্জ ব্লাড ডোনার্স ক্লাব। রক্তের অভাবে বিপদে পড়া মানুষদের পাশে দাঁড়ানো থেকে শুরু করে চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেওয়া, সবখানেই তারা পরিচিত এক আস্থার নাম।
২০১৪ সালে সূচনা হওয়ার পর থেকে সংগঠনটি নিয়মিত রক্তদান কর্মসূচি চালিয়ে আসছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১৭ হাজার মানুষকে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার সেবা দেওয়া হয়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও কার্ড প্রদান কার্যক্রম স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।
সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা শুধু রক্তদানেই সীমাবদ্ধ নয়, নানা সময়ে বিনা মূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন করছে। এসব ক্যাম্পে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস, ডায়াবেটিস, রক্তচাপ পরীক্ষা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ করা হয়। অসুস্থ ও অসচ্ছল রোগীদের জন্য তাদের এই উদ্যোগ অনেক পরিবারকে উপকৃত করছে।
সংগঠনের অন্যতম সদস্য সুমন আহমেদ জানান, মানুষের পাশে থাকা এবং মানবিক কাজের ধারা অব্যাহত রাখা আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা মনে করি, সমাজের বিত্তবানরা সহযোগিতার হাত বাড়ালে এই কার্যক্রম আরও বিস্তৃত হবে।
বর্তমানে কেরানীগঞ্জ ব্লাড ডোনার্স ক্লাব তরুণ প্রজন্মকে সামাজিক কাজে সম্পৃক্ত করতে সচেতনতামূলক কার্যক্রমও পরিচালনা করছে। দুর্যোগকালীন ত্রাণ বিতরণ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও চিকিৎসা সহায়তা সব মিলিয়ে এটি কেরানীগঞ্জের মানুষের কাছে একটি নির্ভরযোগ্য সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
সংগঠনের সদস্য শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমরা শুরু থেকেই চেষ্টা করেছি মানুষের বিপদে পাশে থাকতে। রক্তের অভাবে যেন কোনো মানুষ কষ্ট না পায়, সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছি। আজকে সাধারণ মানুষ আমাদের পাশে আছে বলেই কেরানীগঞ্জ ব্লাড ডোনার্স ক্লাব এ পর্যন্ত এতটা পথ এগোতে পেরেছে। আগামীতেও মানবিক সেবা অব্যাহত রাখতে চাই।
সামাজিক সংগঠক মহল বলছে, ব্লাড ডোনার্স ক্লাব ইতোমধ্যে কেরানীগঞ্জে মানবিক কাজের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ভবিষ্যতে এই সংগঠন যদি আরও সহায়তা পায় তবে মানবতার সেবায় বড় ভূমিকা রাখতে পারবে।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলে ভোটগ্রহণ শেষে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়েছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. রেদোয়ান খান এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ জি. কে. গউছ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি এম নাসের রহমান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ুন, সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন, সদস্য অ্যাডভোকেট আবেদ রাজাসহ বিএনপির অন্যান্য নেতারা।
ফলাফলে সভাপতি পদে মো. জয়নাল আবেদীন বাচ্চু ৪৯৩ ভোট, সিনিয়র সহসভাপতি পদে মো. আব্দুল জলিল জামাল ৩৬০ ভোট, সাধারণ সম্পাদক পদে বদরুজ্জামান সজল ৩৯২ ভোট, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে কমর উদ্দিন আহমদ কমরু ৪১৮ ভোট এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মো. আব্দুল মুক্তাদির মনু ৩২৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। দীর্ঘদিন পর হওয়া এ নির্বাচনী কাউন্সিলে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়।
আগামীকাল ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ দুপুর ২:০০ টা থেকে পদ্মা সেতুতে লাইভ পাইলটিং আকারে চালু হচ্ছে আধুনিক নন-স্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ETC) সিস্টেম। এ সিস্টেমের মাধ্যমে গাড়ি থামানো ছাড়াই নির্ধারিত লেন ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টোল পরিশোধ করে সেতু পার হওয়া যাবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান-এর বিশেষ নির্দেশনায় পদ্মা সেতুতে ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ইটিসি) সিস্টেম চালু হচ্ছে।
ইটিসি সিস্টেমে আগ্রহী ব্যবহারকারীগণকে প্রথমে ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড এর TAP অ্যাপ-এ গিয়ে “D-Toll” অপশনে গাড়ি রেজিস্ট্রেশন ও রিচার্জ সম্পন্ন করতে হবে। এরপর পদ্মা সেতুর RFID বুথে শুধু প্রথমবারের মতো RFID ট্যাগ চেক ও রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে গাড়ি ব্যবহারকারীগণ ন্যূনতম ৩০ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতিতে ETC লেন ব্যবহার করতে পারবেন। এ সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যবহারকারীর একাউন্ট থেকে নির্ধারিত টোল কর্তন হবে।
ভবিষ্যতে TAP এর পাশাপাশি অন্যান্য ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাপও এই সেবার সঙ্গে যুক্ত হবে মর্মে আশা করা যায়। TAP সহ বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাপের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য কাজ করছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের a2i (এটুআই)।
আনোয়ারা উপজেলায় লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং কর্ণফুলীর উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি।
রোববার সকালে উপজেলার রায়পুর গাউছিয়া হাশেমীয়া আলিম মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। ক্যাম্পে মাদ্রাসার এক হাজারের অধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের জন্য বিনা মূল্যে বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়।
সেবার মধ্যে ছিল রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, ডায়াবেটিস পরীক্ষা, চক্ষু পরীক্ষা, ক্যান্সার সচেতনতা ও প্রাথমিক পরীক্ষা এবং ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়াবিষয়ক পরামর্শ।
অনুষ্ঠানে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সোলাইমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে লায়ন্স ইন্টারন্যাশনালের জেলা গভর্নর লায়ন মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ অপু, বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রথম সহকারী জেলা গভর্নর লায়ন মো. কামরুজ্জামান লিটন, দ্বিতীয় সহকারী জেলা গভর্নর লায়ন মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক, লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং কর্ণফুলীর সভাপতি লায়ন মো. ইকবাল হোসেন সুমন, রায়পুর গাউছিয়া হাশেমীয়া আলিম মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি লায়ন মোহাম্মদ ফয়সাল মিয়া।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন লায়ন্স ইন্টারন্যাশনালের জেলা গভর্নর লায়ন মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ অপু। তিনি বলেন, লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল বিশ্বব্যাপী ২১২টি দেশে মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশেও আমরা সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করছি। এ স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি তারই অংশ। পাশাপাশি আয়োজনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করা হয়। এই ধরনের সামাজিক ও মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
কুমিল্লা নগরীর শান্ত ভোর মুহূর্তেই পরিণত হচ্ছে ছিনতাই আতঙ্কে। শহর পুরোপুরি ঘুম থেকে জাগার আগেই সকালের পথচারী ও বিভিন্ন পেশাজীবীরা পড়ছেন ছিনতাইকারীদের খপ্পরে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোরের ফাঁকা সড়ককে টার্গেট করছে ছিনতাইকারীরা। মোটরসাইকেলে এসে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মুহূর্তেই লুটে নিচ্ছে সর্বস্ব। কখনো কখনো তারা টার্গেট করা ব্যক্তিকে কুপিয়ে আহতও করছে। এতে নগরবাসীর মধ্যে তীব্র উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে নগরীর কাপ্তান বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. মঈনুল ইসলাম ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হন। পথে একটি সিএনজিতে উঠতেই তিনি ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। সিএনজির ভেতরে থাকা দুই ব্যক্তি ছুরি ধরে মঈনুলের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয় এবং আঘাত করে আহত করে। থানায় গেলেও আশানুরূপ সহযোগিতা পাননি তিনি। শুধু একটি মোবাইল ফোন হারানোর সাধারণ ডায়েরি করতে বলা হয়। এক সপ্তাহ পার হলেও এখনো ছিনতাইকারীরা ধরা পড়েনি।
দেড় মাস আগে কক্সবাজার ভ্রমণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে একইভাবে ছিনতাইয়ের শিকার হন কালীপদ দেবনাথ ও তার বন্ধু পলাশ দে। সালাউদ্দিন মোড়ে অস্ত্রের মুখে তাদের কাছ থেকেও মোবাইল ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। থানায় অভিযোগ করা হলেও সেই চক্রও এখনো ধরা পড়েনি।
গত কয়েক মাস ধরে নগরীতে ভোর হলেই এমন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। থানায় ও গণমাধ্যমে এসব বিষয়ে নিয়মিত মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ আসছে। তবে অনেকেই ঝামেলা এড়াতে ঘটনাগুলো গোপন রাখছেন।
নগরীর ঠাকুরপাড়া বিসিক এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন জানান, ভোর হলেই ঠাকুরপাড়া ও রানীরবাজার এলাকার বিভিন্ন মোড়ে ছিনতাইকারীরা ওৎ পেতে থাকে। রিকশায় বা হেঁটে যাতায়াতকারী কাউকে দেখলেই অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয় তারা।
সম্প্রতি পুলিশ সুপারের বাসভবনের সামনে ছিনতাইয়ের একটি ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রোববার রাত সোয়া ৩টার দিকে মোটরসাইকেলে আসা তিন ছিনতাইকারী এক অটো রিকশা যাত্রীর মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নিচ্ছে।
৭ আগস্ট ভোরে টমছম ব্রিজ সংলগ্ন কাসেমুল উলুম মাদ্রাসার পাশে এক মাদ্রাসার শিক্ষক ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন। দুর্বৃত্তরা তার কাছ থেকেও নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। এর আগে, ৪ আগস্ট ভোরে শাসনগাছা এলাকায় চান্দিনার বাসিন্দা ইব্রাহীম একইভাবে ছিনতাইয়ের শিকার হন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বর্তমানে নগরীতে কুড়িটির বেশি ছিনতাইকারী গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। এদের অধিকাংশই মাদকাসক্ত। মাদকের টাকা জোগাড় করতেই তারা ছিনতাইয়ে জড়াচ্ছে। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রয়েছে।
এদিকে নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বসানো সিসিটিভি ক্যামেরার বেশিরভাগই অকার্যকর। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এসব ক্যামেরা মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. মহিনুল ইসলাম স্বীকার করেছেন- নগরীতে ছিনতাই বেড়েছে এবং ছিনতাইকারী ধরা পড়েছেও। তিনি জানান, গত এক বছরে ৪০ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য, গাড়ি ও কার্যকর সিসিটিভি না থাকায় টহল জোরদার করা যাচ্ছে না। লজিস্টিক সহায়তা বাড়ানো গেলে ছিনতাই প্রতিরোধে আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হতো।