সংকটাপন্ন রোগীদের জন্য খুলনার অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় অপরিশোধিত ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ উঠেছে, মেডিকেল অক্সিজেনের তুলনায় দাম কম হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জেনেবুঝেই বেশি লাভের আশায় রোগীদের এই অক্সিজেন দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরিশোধিত অক্সিজেন গ্রহণের ফলে রোগীদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে।
খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. তাহেরুল ইসলাম বলেন, ‘মেডিকেল অক্সিজেনের মধ্যে কার্বন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড ও পানির মিশ্রণের মাত্রা একেবারে কম বিধায় তা শরীরের জন্য সহনীয়। অন্যদিকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেনে বিশুদ্ধতার মাত্রা অনেক কম থাকে। অক্সিজেনের সঙ্গে মিশ্রিত বিভিন্ন ধরনের গ্যাস শরীরের রক্ত, ফুসফুস ও মস্তিষ্কসহ বিভিন্ন কোষকে ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন স্বাস্থ্যের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ।’
খুলনা মহানগরীর কেডিএ এভিনিউ রোডের রাশিদা মেমোরিয়াল হাসপাতালে গত সোমবার গিয়ে দেখা যায়, এক ব্যক্তি সেখানে অক্সিজেন সরবরাহ করতে এসেছেন। তিনি যে সিলিন্ডার নিয়ে এসেছেন, সেটা কোন কোম্পানির, তার তথ্য সিলিন্ডারের গায়ে নেই।
জানতে চাইলে আনোয়ার হোসেন নামের ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আমি নিজে অক্সিজেন বিক্রি করি না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার সঙ্গে মৌখিক চুক্তি করেছে। তাদের ফাঁকা সিলিন্ডারগুলো আমি রিফিল করে নিয়ে আসি।’ তিনি জানান, খুলনা নগরীর কয়লাঘাট এলাকায় অবস্থিত ‘রকি অক্সিজেন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এই অক্সিজেন রিফিল করা হয়। শহরের এমন ১০টি হাসপাতালে এই অক্সিজেন তারা সরবরাহ করেন।
রাশিদা মেমোরিয়াল হাসপাতালের পাশেই রয়েছে কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল। সেখানে গিয়েও দেখা যায়, সিলিন্ডারের গায়ে কোনো কোম্পানির ট্যাগ নেই। কোথা থেকে এই অক্সিজেন নিয়ে এসেছেন জানতে চাইলে সেখানে কর্মরত কেউ কথা বলতে চাননি।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, কোথা থেকে হাসপাতালে বা ক্লিনিকগুলোয় অক্সিজেন আসে তা মালিকপক্ষ জানে না। কিছু ব্যক্তি আছেন, যারা হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ করেন। তাদের সঙ্গে মৌখিক চুক্তি করলে নিয়মিত সিলিন্ডারগুলো রিফিল করে দিয়ে যান। তারা মেডিকেল অক্সিজেন দিলেন নাকি ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন দিলেন, তা কেউ খোঁজ নেন না। শহরের অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালে এভাবেই চলছে।
খুলনায় প্রতি ঘনমিটার (১ ঘনমিটার সমান ১ হাজার লিটার) মেডিকেল অক্সিজেনের দাম হলো ৫২ থেকে ৫৫ টাকা। আর ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেনের দাম প্রতি ঘনমিটার ২০-২৫ টাকা। মেডিকেলের চেয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেনে লাভ বেশি বলে ব্যবসায়ীরা হাসপাতালগুলোয় এই অক্সিজেন বিক্রি করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনায় ছয়টি প্রতিষ্ঠান থেকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠানের বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। সেগুলো হলো খুলনা অক্সিজেন কোম্পানি, লিন্ডে বাংলাদেশ ও স্পেকট্রা অক্সিজেন লিমিটেড। খুলনা অক্সিজেন কোম্পানি নামের প্রতিষ্ঠানটি খুলনায়ই মেডিকেল অক্সিজেন উৎপাদন করে। অন্যদিকে লিন্ডে ও স্পেকট্রার খুলনায় ডিপো রয়েছে।
এ ছাড়া বাকি তিনটি কোম্পানির বৈধ কাগজপত্র নেই বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এগুলো হলো মহানগরীর জয় বাংলার মোড়ে অবস্থিত এসবি অক্সিজেন, কয়লাঘাট এলাকায় অবস্থিত রকি অক্সিজেন ও বাগেরহাটের ফকিরহাটে গ্যাস অ্যান্ড গিয়ার বাংলাদেশ। এদের মধ্যে ফকিরহাটের প্রতিষ্ঠানটি প্রাথমিকভাবে চালু করেছে আর্গন গ্যাস প্লান্ট।
সংশ্লষ্ট সূত্র বলেছে, খুলনার বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোয় সব থেকে বেশি অক্সিজেন সরবরাহ করে রকি অক্সিজেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাদের শুধু ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন রয়েছে। তবে ওষুধ প্রশাসন ও বিস্ফোরক অধিদপ্তরসহ অন্যান্য দপ্তরের অনুমোদন নেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই প্রতিষ্ঠানটি করা হয়েছে একেবারেই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়। ৩০০ গজ দূরেই রকি ডকইয়ার্ড। সেখানে প্রতিনিয়ত কাজ চলে জাহাজ নির্মাণের। অক্সিজেন কোম্পানির ঠিক বিপরীত পাশে ১০০ গজ দূরেই একটি ভাতের হোটেল। ১০ হাত দূরে একটি কাঠগোলা ও স-মিল। অবশ্য এসবি অক্সিজেনের আশপাশে ঘনবসতি নেই। তবে তারাও অনুমতি ছাড়াই সিলিন্ডার রিফিল করছে।
জানতে চাইলে রকি অক্সিজেনের মালিক মো. খুরশিদ আলম বলেন, ‘আমার সব প্রতিষ্ঠানের অনুমতি রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস, ওষুধ প্রশাসন, বিস্ফোরক অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থার লাইসেন্স রয়েছে। যেখানে কোম্পানি করেছি সেখানে কোনো ধরনের সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’
তবে বিস্ফোরক পরিদপ্তর খুলনার পরিদর্শক ড. মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘মেডিকেল ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেনের কিছু কিছু উপাদানের মাত্রা একেবারেই ভিন্ন। ফলে দুটির উৎপাদন ও পরিশোধন পদ্ধতি ভিন্ন। মেডিকেল অক্সিজেন পরিশোধনে বিশুদ্ধতার মাত্রা থাকে ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশের ওপরে। এতে দশমিক ৫ শতাংশের মতো কার্বন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড ও পানির মিশ্রণ থাকে। আর ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন পরিশোধনে বিশুদ্ধতার মাত্রা ৯০ শতাংশের নিচে থাকে। এই অক্সিজেনের সঙ্গে বায়ুমণ্ডলের অন্যান্য গ্যাসের মিশ্রণের মাত্রা থাকে বেশি। যা দিয়ে ভারী লোহা ও ধাতব পদার্থ গলানো ও কাটা হয়। এটি মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এসবি বা রকি অক্সিজেনের কোনো লাইসেন্স বা অনুমোদন নেই।’
দুয়ারে কড়া নাড়ছে খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) নির্বাচন। নিজেদের বাক্সে ভোট টানতে ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে ছুটছেন প্রার্থীরা। একদিকে যেমন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ও নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির আশ্বাস দিচ্ছেন, অন্যদিকে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে রটাচ্ছেন নানা রকমের কথা।
শনিবার সকালে ভোটের মাঠে প্রচারের সময়ে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে কালোটাকা ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু। তবে এ অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে পাল্টা মধুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন খালেক।
নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকায় গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় মধু বলেন, ‘আগে তালুকদার খালেকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোঁজ করুন, তার কোথায় কী আছে? আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শূন্য। আমার কোনো টাকা নেই। অনেক দলের (আওয়ামী লীগের) লোক দেখছি প্রতিটি ওয়ার্ডে ২০০-৩০০ লোক নির্বাচনী কাজ করছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন যে টাকা বাজেট করে দিয়েছে, তাতে করে এত লোক কাজ করানো সম্ভব না। তাহলে এই টাকার উৎস কোথায়, নাকি তারা আলাদিনের চেরাগ খুঁজে পেয়েছে। কালোটাকার ছড়াছড়ি হচ্ছে খুলনা সিটিতে। এটার সঠিক তদন্ত করা উচিত।’
নগরবাসীর কাছে ভোট চেয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বড় ভাই তালুকদার ভাই। সে তো গত তিনবার কেসিসি নির্বাচন করেন এবং দুবার মেয়র হিসেবে জয়ী হন। তাইলে এবার আমার হাতে মেয়রের সিট ছেড়ে দিক, আমি খুলনাবাসীকে দেখিয়ে দেব যে উন্নয়ন কাকে বলে। আমিও অনেক কিছু জানি এবং বুঝি। খুলনা সিটিকে একটি আধুনিক সিটি হিসেবে গড়ে তুলব ইনশাআল্লাহ।’
এদিকে এই অভিযোগের প্রমাণ দাবি করে তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ‘কালোটাকা ছড়ানো মধুর মতো প্রার্থীর পক্ষে সম্ভব। খুলনায় আমাদের কোনো কালোটাকা ছড়াছড়ি হচ্ছে না। তারা পারলে এটার প্রমাণ দেখাক। তাদের টাকা থাকলে তারা ছড়াতে পারে।’
খুলনা শহরের উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলে খালেক বলেন, ‘তাদের এরশাদ তো ৮-১০ বছর ক্ষমতায় ছিল। তারা এই শহরে কী উন্নয়ন করেছে, আমরা আমি কী করেছি, তা মানুষ জানে।’
উল্লেখ্য, আগামী ১২ জুন খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে স্টিলের পাইপ পড়ে সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সেনাসদস্য কর্পোরাল দেলোয়ার হোসেন এ সময় নগর ভবনের পার্শ্ববর্তী সিটি সুপার মার্কেটে ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় নগর ভবনের নির্মাণকাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ৯ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। তবে তাৎক্ষণিক তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের ১২ তলার ছাদ থেকে হঠাৎ করেই একটি স্টিলের পাইপ সিটি মার্কেটের ভেতরে থাকা ওই সেনাসদস্যের মাথায় এসে পড়ে। এতে তিনি সঙ্গে সঙ্গেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। পরে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, নগর ভবনের ১১ ও ১২ তলার নির্মাণকাজ চলছে। আজ (গতকাল) দুপুরে নির্মাণকাজ চলাকালেই এ দুর্ঘটনা ঘটে। অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনা তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে আর যাতে এ রকম ঘটনা না ঘটে সে ব্যবস্থাও নেয়া হবে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, নিরাপত্তাব্যবস্থা ছাড়াই নগর ভবনের নির্মাণকাজে জড়িত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভাটিয়ারী থেকে এক কেজি হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। আর ওই হেরোইন খুঁজে বের করেছে একটি কুকুর।
শনিবার সকালে ভাটিয়ারীর ওয়েল ফুড রেস্টুরেন্টের সামনে কুষ্টিয়া থেকে চট্টগ্রাম শহরের উদ্দেশে ছেড়ে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস থেকে এসব হেরোইন উদ্ধার করা হয়। তবে এসময় হেরোইনের মালিক পাওয়া না গেলেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসের চালক ও সহযোগীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘বিজিবির কাছে ওই বাসে করে হেরোইন পাচারের গোপন তথ্য ছিল। সকালে পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে বিজিবি। আমরাও অভিযানে ছিলাম। এসময় বিজিবির প্রশিক্ষিত একটা কুকুরের সাহায্যে বাসে যাত্রীদের মালামাল রাখার স্থান থেকে ১ কেজি হেরোইনের একটি ব্যাগ উদ্ধা করা হয়। উদ্ধার হেরোইনের মূল্য ১ কোটি টাকা প্রায়।’
চট্টগ্রাম ৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকী বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাসে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে হেরোইনের মালিক পাওয়া যায়নি, তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসের চালক ও চালকের সহযোগীকে আটক করা হয়েছে।’
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় ৯ নেতাকে আজীবন বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাদের বহিষ্কার করা হয়।
শনিবার রাতে ওই নেতাদের নামে বহিষ্কারের চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিল্টন।
যাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে তারা হলেন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ সাজ্জাদ হোসেন তোতন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আশফাকুর রহমান কাকন, মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক
মো. মাহবুব কায়সার, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি কর্মী ও সাবেক কাউন্সিলর মুহা. আমান উল্লাহ আমান, সংরক্ষিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মাজেদা খাতুন, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাজী ফজলুল কবির টিটো ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে মুশফিকুস সালেহীন পাইলট, মহানগর তাঁতী দলের যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার মাতুব্বর, সাবেক ছাত্রদল নেতা ইমরান হোসেন। তারা কেসিসির বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন।
প্রত্যেকটি পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, বিএনপি এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অথচ আপনি দলের একজন সদস্য হয়ে ব্যক্তি স্বার্থ চিন্তা করে এ সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করেছেন। ১ জুন আপনাদের কারন দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হলেও নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হলেও নোটিশের জবাব দেননি-যা গুরুতর অসাদাচারণ। এমন অবজ্ঞা ঔদ্ধত্যের জন্য বিএনপির গঠনতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলের সকল পদ থেকে আপনাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হলো।
ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন (ইডিসি) প্রকল্পের আওতায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় জয় সেট (স্ম্রাট সার্ভিস অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট ট্রেনিং সেন্টার) সেন্টার স্থাপনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
শনিবার দুপুরে ভিত্তি স্থাপন শেষে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের সরকারি সেবা এ সেন্টারের মাধ্যমে দ্রুত জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে। সেই সঙ্গে ই-লানিং, ফ্রিলান্সিং প্রশিক্ষণসহ তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এখানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ, সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, ফেরদৌসি ইসলাম জেসি, জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রহুল আমিনসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
প্রথম পর্যায়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা ছাড়াও নাচোল ও শিবগঞ্জ উপজেলায় স্থাপন করা হবে জয় সেট সেন্টার।
এর আগে নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের আয়োজনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ টাউন ক্লাব মিলনায়তনে রাজশাহী বিভাগীয় উদ্যোক্তা সম্মেলন ও আম মেলায় প্রধান অতিথি হিসাবে অংশ নেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে পাঁচ হাজার পিস ইয়াবাসহ ২ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন।
পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাঁশখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১১নং পুঁইছড়ি ইউপিস্থ প্রেমবাজারের ফুটখালী ব্রিজের দক্ষিণ পাশে পেকুয়া-বাঁশখালী আঞ্চলিক মহসড়ককে পুলিশ অবস্থান নেয়। সেখানে বেশ কয়েকটি যাত্রীবাহী যান তল্লাশি চালানোর পর একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় যাত্রীবেশে চট্টগ্রামে রওনা হওয়া মো. আবুল আলম ও জাহাঙ্গীর আলম নামে দুইজনকে পাঁচ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়। আটক আবুল কালাম কক্সবাজারের উখিয়া থানার বালুখালী এলাকার মো. শফির ছেলে এবং জাহাঙ্গীর আলম বাঁশখালী উপজেলার দীঘির পাড়া, গুনাগরি, ১নং ওয়ার্ডের মৃত আজিজুল হকের ছেলে।
বাঁশখালী থানার ওসি কামাল উদ্দিন জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। রোববার তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
আসন্ন রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচন উপলক্ষে ইশতেহার ঘোষণা করেছেন মেয়র পদে আওয়ামী লীগ-মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। ১০ দফা ইশতেহারে ১০৫টি উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ অডিটোরিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন।
মেয়র প্রার্থী লিটন বলেন, ‘আগামীতে নির্বাচিত হলে ব্যাপক কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব হ্রাস ও উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে চাই। অর্থনৈতিক-সামাজিক-মানবিক শান্তিময় ও সমৃদ্ধ মহানগরী গড়ে তুলতে চাই। এই মহানগরীকে সমগ্র বরেন্দ্র অঞ্চলভিত্তিক আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। শিক্ষা ও সংস্কৃতিসমৃদ্ধ মহানগরীর বিশেষত্ব অর্জন করতে চাই।’
পদ্মার চরে রিভার সিটি নির্মাণের পাশাপাশি রাজশাহীতে পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গার্লস ক্যাডেট কলেজ স্থাপন, পূর্ণাঙ্গ কারিগরি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, ভাষা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ললিতকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা, একটি আর্কাইভ, আর্ট গ্যালারি ও সিটি মিউজিয়াম স্থাপনের কথাও বলেন তিনি।
এ ছাড়া হাসপাতালগুলোর আধুনিকায়ন, আধুনিক বর্জ্য রিসাইকেলিং প্লান্ট স্থাপন, নগরীতে আরও পাঁচটি ফ্লাইওভার নির্মাণ, ট্যানারি শিল্প ও লেদার ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপনের কথাও বলেছেন লিটন।
রাসিকের সদ্য সাবেক মেয়র বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে রাজশাহী সিটি করপোরেশন ও পার্শ্ববর্তী এলাকার গণকবরসমূহ চিহ্নিত করে গণকবর সংরক্ষণ ও জাতীয় নেতা শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামানের সমাধি কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।
সামাজিক সুরক্ষা ও নারী উন্নয়নে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে ওয়ার্ডভিত্তিক সামাজিক উদ্যোগ গ্রহণ করে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত, আত্মকর্মসংস্থান ও স্বনির্ভরতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সিডিসি ও সমাজকল্যাণ দপ্তরের সহায়তায় নারীদের কারিগরি প্রশিক্ষণ, আইটিভিত্তিক উদ্যোগ, কুটিরশিল্প ও হস্তশিল্প স্থাপন ও বিপণনের জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাল্যবিবাহ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার প্রতিশ্রুতি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর।
নৌকার মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন জানান, গতবার দেয়া প্রতিশ্রুতির ৬০ ভাগই তিনি বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন। বাকিগুলো করোনা সংকট এবং বৈশ্বিক মন্দার কারণে করতে পারেননি। আগামীতে মেয়র পদে নির্বাচিত হতে পারলে ঘোষিত নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি শতভাগ বাস্তবায়ন করবেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল খালেক, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সহসভাপতি শফিকুর রহমান বাদশা, তবিবুর রহমান শেখসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
আগামী ২১ জুন ইভিএমের মাধ্যমে রাসিক নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে।
বিএনপির আন্দোলন নিয়ে জনগণের ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। তিনি বলেছেন, ‘২০১২ সাল থেকেই বিএনপি ঘোষণা দিয়ে সরকার পতনের আন্দোলন করে আসছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখনও ক্ষমতায় আছেন। তাই বিএনপির আন্দোলন নিয়ে কথা বলার কিছু নেই। নির্বাচন যথা সময়ে সংবিধান অনুযায়ী হবে। যারা নির্বাচনে অংশ নেবে না তারাই সংকটে পড়বে। বিএনপি প্রতিষ্ঠিত সন্ত্রাসী-দুর্নীতিবাজ দল। এই দলের নেতাকর্মীরা কি বললো সেটা নিয়ে জনগণ ভাবে না।’
শনিবার বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের শেষ পর্যায়ের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘বিএনপি নেতারা বাজেট না পড়েই গণবিরোধী আখ্যা দিয়েছে। মিথ্যাচার করা যাদের অভ্যাস, সেই বিএনপি না বুঝেই বাজেট নিয়ে মিথ্যাচার করছে। করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে বিশ্বে যে অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এই বাজেট হলো সেই সংকট কাটিয়ে অর্থনৈতিক চাকাকে সচল রাখার বাজেট।’
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে হাসপাতাল কার্যক্রম চালু প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, সীমানা নির্ধারণসহ বিভিন্ন কারণে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের নির্মাণকাজ ধীরগতি হয়েছে। তবে আগামী জুনের মধ্যে সীমিত পরিসরে হাসপাতালে বহিঃ বিভাগে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হবে। চলতি বছরের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গভাবে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম চালু হবে।’
এ সময় সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. দেলদার হোসেনসহ চিকিৎসক, শিক্ষার্থী ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাজেট পরবর্তী আলোচনায় বলপয়েন্ট কলমের দাম না বাড়ানোর দাবি তোলা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। শনিবার দুপুরে চাঁদপুরের আল আমিন অ্যাকাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নতুন শিক্ষাক্রম তৈরি করেছি, প্রযুক্তি ও অবকাঠামো উন্নয়ন করা হয়েছে। সবচেয়ে জরুরি যেটি, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। আরও সব মিলিয়ে যেটি আমাদের বেশি দরকার, সেটি হলো গবেষণা। আর এবারও গবেষণায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিশ্বাস করি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিগত দিনে যে বরাদ্দগুলো কাজে লাগাতে পারেনি, এবার তা কাজে লাগাতে পারবে। আমরা গবেষণা ও উদ্ভাবনে আরও এগিয়ে যাব।’
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেটে বলপয়েন্ট কলমের ওপর উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এরফলে বলপয়েন্ট কলমের দাম বাড়বে।
আরও পড়ুন: দাম বাড়বে কলমের
আল আমিন অ্যাকাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার (এসপি) মিলন মাহমুদ, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ইউসুফ গাজী, ডা. জেআর ওয়াদুদ টিপু, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরন দাশ, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, অ্যাড. মজিবুর রহমান ভূইয়া, আল আমিন অ্যাকাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম ও চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ।
চট্টগ্রামে সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যা মামলার পলাতক আসামি খাইরুল ইসলাম কালুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মিতু হত্যা মামলায় আদালতে পিবিআইয়ের জমা দেয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্ত আসামি কালু।
শুক্রবার গভীর রাতে নগরীর আকবরশাহ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পিবিআই জানিয়েছে।
পিবিআই পুলিশ সুপার (চট্টগ্রাম মেট্রো) নাঈমা সুলতানা বলেন, ‘এই মামলার তদন্ত শেষ যেহেতু, তাকে আমরা রাঙ্গুনিয়া থানায় হস্তান্তর করেছি। তারা আদালত তুলেছে তাকে।’
২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়ে নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় খুন হন তৎকালীন এসপি বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু।
এ ঘটনায় জঙ্গিরা জড়িত দাবি করে বাবুল আক্তার মামলা করেন পাঁচলাইশ থানায়। তদন্ত শেষে পিবিআই গত বছরের ১২ মে এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
হত্যায় ‘বাবুল জড়িত’ বলে সন্দেহ হলে একই দিন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন আরেকটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় বাবুলসহ আটজনকে আসামি করা হয়। পুলিশ এ মামলায় বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখায়।
বাবুলের করা মামলায় পিবিআইয়ের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৪ অক্টোবর আদালতে নারাজি দেন বাবুলের আইনজীবী। আদালত ৩ নভেম্বর চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি গ্রহণ না করে পিবিআইকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেয়। পরে আদালত বাবুলকে নিজের করা মামলাতেই গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেয়।
এর মধ্যে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি পিবিআই মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের করা মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এতে ওই মামলায় গ্রেপ্তার আসামি বাবুলসহ অন্যদের অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়। মামলাটিতে পাওয়া সব তথ্য-উপাত্ত বাবুল আক্তারের করা মামলায় একীভূত করতেও আবেদন জানানো হয়।
বর্তমানে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
পিবিআইয়ের অধিকতর তদন্তে বাবুল আক্তারের করা মামলায় তাকেই আসামি করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১৩ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই।
গেল ৯ এপ্রিল এই মামলায় বাবুলসহ অন্যান্য আসামিদের বিচার শুরু হয়। বর্তমানে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
মুন্সীগঞ্জের মাওয়া সংলগ্ন পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজের ঘটনায় নুরুল হক নাফিউ (২৪) নামে আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর শনিবার বেলা ১১টার দিকে লৌহজং তেউটিয়া বর্ণপাড়া সংলগ্ন নদী থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
এর আগে শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে সব্যসাচী সৌম্য দাস (২৯) নামে এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এদিন দুপুর ১২টার দিকে পদ্মা সেতুর ১৬ নম্বর পিলারের কাছে জেগে ওঠা চর থেকে নদীতে নেমে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা দুইজনই ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিপল-ই বিভাগের ছাত্র। এরমধ্যে নাফিউ রাজধানীর বাড্ডা নতুন বাজার এলাকার শরিফুল হকের ছেলে এবং সব্যসাচী তেজগাঁও এলাকার সরোজ দাসের ছেলে।
নৌপুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকা থেকে পাঁচ বন্ধু মিলে মাওয়া এলাকায় ঘুরতে আসেন। পরে দুপুর ১২টার তারা একটি স্পিডবোটযোগে পদ্মাসেতুর ১৬ নম্বর পিলারের কাছে জেগে ওঠা চরে গিয়ে নদীতে গোসল করতে নামে। এসময় স্রোতের কবলে পড়ে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ হন নাফিউ ও সব্যসাচী।
মাওয়া নৌপুলিশের ইনচার্জ মাহবুব জানান, দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজের ঘটনাস্থল থেকে ৮ কিলোমিটার ভাটিতে বর্ণপাড়া এলাকা সংলগ্ন নদীতে একটি মরদেহ ভাসছে খবর পেয়ে তা উদ্ধার করা হয়। মরদেহটি নিখোঁজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর নাফিউর বলে শনাক্ত করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে সরকারি খাল থেকে অবৈধভাবে মাটি তুলে ইটভাটাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এ ক্ষেত্রে অভিযোগের আঙুল উঠেছে উপজেলার ফরদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মানিক মিয়ার বিরুদ্ধে।
স্থানীয়রা বলছেন, তারা একাধিকবার বাধা দিলেও মাটি তোলা বন্ধ হয়নি। এখন অপরিকল্পিতভাবে মাটি তোলার কারণে খালের তীরবর্তী ফসলি জমিতে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফরদাবাদ ইউনিয়নের কলাকান্দি, চরলহনিয়া, তিলককান্দি ও গাওড়াটুলী গ্রাম দিয়ে একটি সরকারি খাল প্রবাহিত হয়েছে। খালটির দৈর্ঘ্য প্রায় এক কিলোমিটার, প্রস্থ ২০ থেকে ৩০ ফুট। খালটি ইউনিয়নের গাওড়াটুলী গ্রামের তিতাস নদী থেকে উৎপন্ন হয়ে কলাকান্দি গিয়ে শেষ হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষার শুরু থেকেই পানি এই খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়, বর্ষা শেষ হলে পানি বের হয়ে যায়। বর্ষাকালে চার গ্রামের পানিও এই খালে মেশে। খালের পানির ওপর নির্ভর করে প্রতিবছর বিভিন্ন এলাকার বিপুল পরিমাণ বোরো ধান আবাদ হয়। ইউপি সদস্য মানিক মিয়ার বিরুদ্ধে সপ্তাহখানেক ধরে এই খালের কয়েকটি অংশে বাঁধ দিয়ে এক্সাভেটরের (ভেকু) সাহায্যে মাটি কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসী বলেন, খালের পাড় থেকে লম্বালম্বিভাবে মাটি কাটা হচ্ছে। খালের বিভিন্ন অংশ থেকে গত এক সপ্তাহে প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ ফুট মাটি কেটে নেয়া হয়েছে। এসব মাটি কৃষকের ফসলি জমির ওপর দিয়ে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং অন্য জায়গায় নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।
এদিকে অব্যাহতভাবে মাটি কেটে নেয়ায় এরই মধ্যে খালপাড়ের কয়েকটি অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, এক সপ্তাহ ধরে খাল থেকে নিয়মিত ট্রাক চলাচলের কারণে তিলকাকান্দি আশ্রয়ণ প্রকল্পের রাস্তা ভেঙে গর্ত তৈরি হয়েছে।
চরলহনিয়া গ্রামের শফিক মিয়া বলেন, মানিক মেম্বার খালের মাটি কেটে মেসার্স মিতালী ব্রিকসের কাছে প্রতি ঘনফুট ১২ টাকা দরে বিক্রি করছেন। তিনি আমাদের জমিও কেটে ফেলছেন। বাধা দিলেও ‘ইউএনও সাহেবের অনুমতি আছেন’ বলে আমাদের জানিয়েছেন।
মেসার্স মিতালী ব্রিকসের মালিকপক্ষের একজন আমির হোসেন বলেন, ‘আমরা ইউপি সদস্যের কাছ থেকে কোনো মাটি কিনিনি। আমরা ছয়জন ইটভাটার মালিক। একটি নিজস্ব জমি থেকে মাটি তুলে ইটভাটায় আনতেছি।’
ফরদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মানিক মিয়া বলেন, ‘খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশন হয় না। আবার আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য মাটি লাগবে। তাই ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ট্রাকে করে তিলককান্দি আশ্রয়ণ প্রকল্পে নিয়ে ফেলছি।’
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী আতিকুর রহমান জানান, রয়্যালটি জমা দিয়ে খালের মাটি বিক্রি করা যায়। তবে সেটি অনুমোদিত হতে হবে। এ বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি ইউএনও স্যারের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানতে পারব।
বাঞ্ছারামপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একি মিত্র চাকমা বলেন, উপজেলা মাসিক সভায় খাল খননের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেউ মাটি বিক্রি করছেন না। সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই দুই শতাধিক ওয়েল্ডিং কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানার শিখা, শব্দ ও বিষাক্ত ধোঁয়া জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়কের দুই পাশে যত্রতত্র গড়ে ওঠা এসব ওয়েল্ডিং কারখানায় অনেক শিশুশ্রমিকও নিয়োজিত রয়েছে। কারখানা নির্মাণে পরিবেশ আইন ও কলকারখানা অধিদপ্তরের আইন অমান্য করার অভিযোগও রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওয়েল্ডিং কারখানায় ঝালাইয়ের সময় তির্যক অতি বেগুনি রশ্মির বিচ্ছুরণ ও উচ্চশব্দ শিশু, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, পথচারী, গর্ভবতীসহ বয়স্কদের জন্য ক্ষতিকর। সার্বিকভাবে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকির কারণ। পরিবেশের ওপরও পড়ছে বিরূপ প্রভাব।
স্থানীয়রা বলছেন, সড়ক দখল করে ওয়েল্ডিং কারখানাগুলোর কাজ চলমান থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এ ক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসনের ভূমিকা নেই বললেই চলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রূপগঞ্জে এসব কারখানার সংখ্যা ২৩৫টি। এর মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটির অনুমোদন রয়েছে। উপজেলার প্রধান স্টেশন রোড ও প্রধান সড়কে দীর্ঘদিন ধরে এসব কারখানা থাকলেও এখন বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। ওই সব এলাকার অধিকাংশ কারখানার লাইসেন্স নেই। তা সত্ত্বেও প্রশাসন ও আইনের তোয়াক্কা না করে এসব কারখানায় তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে নিয়ম অনুযায়ী কারখানার ভেতরে ও পেছন দিকের বর্ধিত অংশে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করার কথা। কিন্তু কারখানাগুলো ছোট পরিসরে হওয়ায় সড়কের ওপরই ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করা হয়। এতে পথচারী ও শিক্ষার্থীদের চলাফেরায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কারখানাগুলোর লোহা পেটানো ও স্টিলের ড্রামশিট তৈরির শব্দ এবং লোহা গলানোর অ্যাসিডের বিষাক্ত ধোঁয়া পরিবেশের ক্ষতি করছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কারখানা চালু রাখার নিয়ম থাকলেও এসব কারখানা কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ চলে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আইভি ফেরদৌস বলেন, ‘ওয়েল্ডিং থেকে বিচ্ছুরিত অতি বেগুনি রশ্মি চোখের কর্নিয়া নষ্ট করে দিতে পারে। তা ছাড়া বিভিন্ন লৌহজাত উপাদান গলানোর কাজে নাইট্রিক অ্যাসিডের বর্জ্য, বিষাক্ত ধোঁয়া শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগের কারণ হতে পারে। এ ছাড়া চোখের পানি পড়া, যন্ত্রণা ও জ্বালাপোড়া সমস্যা হতে পারে।’
ব্যবসায়ী কুদ্দুস মিয়াসহ আতলাপুর এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ওয়েল্ডিং কারখানার কারণে প্রতিনিয়ত মানুষ ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। বাজার এলাকায় এসব কারখানা থাকায় শব্দদূষণের শিকার হচ্ছেন মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব কারখানায় ছয় শতাধিক শিশু কাজে নিয়োজিত। এসব কারখানায় খোলা স্থানে সড়কের পাশে দিন-রাত ওয়েল্ডিংয়ের কাজ চলে। এ ছাড়া সড়কের দুই পাশ দখল করে বাস-ট্রাকের জোড়াতালি ও ওয়েল্ডিং, গাড়ির পার্টস কাটাছেঁড়া, জোড়া লাগানোর কাজ ও ঝালাই দেয়া, পুরোনো আনফিট গাড়ি জোড়াতালি, ঝালাই ও রং করার কাজ চলে।
সড়কের দুই পাশে গড়ে ওঠা এসব দোকানের বাক্স, দরজা, জানালার গ্রিল ও রড ফুটপাত দখল করে রাখায় পথচারীদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। আবাসিক এলাকার প্রধান সড়কগুলোর দুই পাশে খোলামেলাভাবে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করায় বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছেন এলাকাবাসী। এতে পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি পথচারীদের চলাচলে দুর্ভোগ হচ্ছে।
দেখা গেছে, ওয়েল্ডিং কারখানায় নিয়োজিত তরুণ বা শিশুদের কেউই চোখে কালো গ্লাস ব্যবহার করছে না। অন্যদিকে ওয়েল্ডিংয়ের সময় তীব্র তির্যক আলো বিচ্ছুরণের ফলে অতি বেগুনি রশ্মি যেন বাইরে যেতে না পারে, এ জন্য ঘরের ভেতর আড়াল করে ও কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে কাজ করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এখানকার শ্রমিকরা এসব নিয়মও মানছেন না।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে রূপগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল হক দৈনিক বাংলাকে বলেন, অনুমোদন ছাড়া এসব কারখানা চললে অবশ্যই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।