বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট ২০২৫
৩০ শ্রাবণ ১৪৩২

পানি থইথই স্কুলের মাঠ

মেহেরপুরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জলাবদ্ধতা। ছবি: দৈনিক বাংলা
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০৯:০৬

দেশজুড়ে প্রচণ্ড গরমে জনজীবন যখন অতিষ্ঠ, ঠিক তখনই স্বস্তির নিশ্বাস এনে দিয়েছে বৃষ্টি। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে দেশের আবহাওয়া শীতল হয়েছে। তবে টানা বৃষ্টির কারণে অসুবিধায়ও পড়তে হয়েছে অনেক মানুষকে। টানা বৃষ্টিতে মেহেরপুরের দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। পানি থইথই করছে প্রতিষ্ঠান দুটির প্রবেশপথসহ খেলার মাঠ। বছরের পর বছর আলোচনা হলেও এ সমস্যা নিরসনে মেলেনি স্থায়ী কোনো সমাধান। এর ফলে ওই সব প্রতিষ্ঠানে প্রায়ই পাঠদান ব্যাহত হয়।

গত মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার গাংনী উপজেলার ৩০ নম্বর বামন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয় ও বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে পানি থইথই করছে। একটু ভারী বর্ষণেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুটির মাঠে হাঁটু পানি জমে যায়। এর ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ে শিক্ষার্থীরা। আবার বামন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ের স্কুল মাঠের সঙ্গেই রয়েছে গভীর গর্তের একটি পুকুর। প্রতিষ্ঠানটির সীমানাপ্রাচীর না থাকায় বৃষ্টির পানিতে মাঠ যখন একাকার হয়ে যায়, তখন কোনটি খেলার মাঠ আর কোনটি পুকুর, তা বোঝা যায় না। বিদ্যালয়ের ছোট ছোট শিক্ষার্থীর জন‍্য এটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ।

মঙ্গলবার বামন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া শিরান নামের একজন শিক্ষার্থীই কেবল উপস্থিত হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে বিদ‍্যালয়ের বাকি শিক্ষার্থীদের কেউ-ই আসতে পারেনি। তবে এর মধ্যেও উপস্থিত হয়েছেন সব শিক্ষক। শিক্ষার্থীরা না আসায় বসে বসে অলস সময় পার করছেন তারা। অন্যদিকে একই দিনে বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৩০ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হাঁটু পানি পার হয়ে বইপত্র নিয়ে শ্রেণিকক্ষ পর্যন্ত পৌঁছাতে তাদের পোশাক ভিজে যায়।

অভিভাবকদের দাবি, প্রতিষ্ঠানের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন‍্য আর্থিক বরাদ্দ এলেও তার সঠিক ব‍্যবহার হয় না। আর প্রতিষ্ঠানপ্রধানরা বলছেন, তারা এ সমস্যা নিরসনে উপজেলা শিক্ষা অফিসে অনেকবার লিখিত আবেদন করেও কোনো ইতিবাচক সাড়া পাননি।

বামন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্র রাইয়ানের অভিভাবক নিলিমা পারভীন বলেন, ‘বিদ্যালয়ের পাশেই আমার বাড়ি। অথচ ছেলেকে আজ স্কুলে পাঠাতে পারিনি। স্কুল মাঠে এক হাঁটু পানি। আবার মাঠের পাশেই গর্ত। এখনকার ছেলেরা খুব চঞ্চল। তাই স্কুলে থাকাকালীন যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’ একই কথা জানালেন প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রী নূর বিশ্বাসের মা সুইটি আক্তার। দৈনিক বাংলাকে তিনি বলেন, যেহেতু মেয়েটা ছোট, হাঁটু জলের মধ‍্যে স্কুলে পাঠালে ঠাণ্ডা-জ্বরসহ অন্য যেকোনো সমস্যা হতে পারে।

বিদ‍্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমি এক বছরের বেশি সময় হবে এই প্রতিষ্ঠানে এসেছি। বর্ষা এলেই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক থেকে শুরু করে সবাই খুব আতঙ্কের মধ‍্যে থাকি। বিপদের আশঙ্কায় ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা পানির মধ‍্যে ক্লাসে আসে না। আমি স্কুলের পানি নিষ্কাশন ও মাটি ভরাটের জন‍্য স্থানীয় চেয়ারম্যান, সংসদ সদস‍্য, উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ সবার কাছেই লিখিতভাবে অনুরোধ জানিয়েছি। বিভিন্ন সময়ে তারা আশ্বাস দিলেও এখনো কোনো সুরাহা হয়নি।’

নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক ছাত্র ও বর্তমানে একজনের অভিভাবক রাশিদুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, একটা সময় এ প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ আশপাশের তিনটি জেলার মধ‍্যে সেরা ছিল। বছর সাতেক আগে স্কুল কর্তৃপক্ষ মাঠের পাশ দিয়ে দেড় শতাধিক দোকান তৈরি করে। ওই সময় তারা পানি নিষ্কাশনের ব‍্যবস্থা রাখেনি। এর ফলে এখানে অনেক আগেই খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে। আর বর্তমানে মাঠে চলাচল করাটাই তো একটা ঝামেলা। আবার বিভিন্ন সময় শুনি, স্কুল মাঠ সংস্কারের জন‍্য লাখ লাখ টাকা আসছে। পাশাপাশি এ প্রতিষ্ঠানের দোকান ভাড়াই ওঠে অনেক টাকা। এরপরও স্কুল মাঠের কোনো উন্নয়ন হয় না।

কলেজের সভাপতি মাসুম আহমেদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমি এ প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব নেয়ার পর এখনো এক বছর হয়নি। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের চলাফেরার জন‍্য কলেজের অভ্যন্তরে রাস্তা ঢালাইয়ের কাজ শেষ করেছি। এ ছাড়া স্কুল মাঠ ও ড্রেনের সংস্কারের জন‍্য স্থানীয় সংসদ সদস‍্যসহ শিক্ষা অধিদপ্তরকে জানিয়েছি। তারা আমাকে এ ব্যাপারে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন।’

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মীর হাবিবুল বাশার বলেন, ‘আমি সম্প্রতি নতুন এসে এ উপজেলায় যোগদান করেছি। বিদ‍্যালয় মাঠে জলাবদ্ধতার কথা শুনেছি। এ বিষয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব।’

এদিকে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা সামাদুল হক জানিয়েছেন, এ অঞ্চলে মঙ্গলবার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৩৯ মিলিমিটার, যা চলতি মৌসুমে এক দিনের সর্বোচ্চ।


সাদা পাথর লুটকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ পর্যটন স্পট থেকে সাদা পাথর লুটের ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে করা রিটের শুনানি হবে আগামী রোববার।

এ সংক্রান্ত রিটটি শুনানির জন্য আজ (বৃহস্পতিবার) উপস্থাপন করা হলে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ শুনানির দিন ধার্য করে আদেশ দেন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মীর একেএম নূরুন নবী বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করেন।

রিটে ভোলাগঞ্জ থেকে সাদা পাথর লুটের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও প্রভাবশালীদের লাগামহীন লুটপাটে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্থান সাদা পাথরসহ সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলো।


কেশবপুরের পৌরসভার স্থায়ী জলবদ্ধতা নিরসনে পৌর বাড়ি মালিক সমিতির মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি

যশোরের কেশবপুর পৌরসভার প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষ প্রতি বছর ছয় মাস পানি বন্দি থাকে। পৌর বাসির দীর্ঘদিনের সমস্যা জলবদ্ধতা। এই স্থায়ী জলবদ্ধতার নিরসনে পৌর বাড়ি মালিক সমিতির পক্ষ থেকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

কেশবপুর পৌর বাড়ি মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ আশরাফুজ্জামানের নেতৃত্বে, বুধবার(১৩ আগস্ট) বিকাল পাঁচ টায় ত্রিমোহিনমোড়ে পানি সরাও, মানুষ বাঁচাও, এই প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে কেশবপুর পৌর বাড়ি মালিক সমিতির পক্ষ থেকে উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে উপস্থিত সকলের একটাই স্লোগান, কেশবপুর পৌরসভার সকল ঘের বন্ধ করো, স্থায়ী পানির সমস্যার সমাধান করো। পৌর সভা এলাকায় অপরিকল্পিত ভাবে মাছের ঘের করার কারণে প্রতি বছর এই জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। একটু বৃষ্টি হলেই পৌর শহরের অধিকাংশ আবাসিক এলাকা, শহরের মাছ বাজার, তরকারি বাজার, ধানের বাজার, চাউল পট্টি, সহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন কেশবপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ, মহিলা ফাজিল মাদ্রাসার মাঠে দুই / তিন ফুট পানি উঠে যায়। যার ফলে শহরের পাইকারী কাঁচা বাজার মেইন রোড উপর বসে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা ঘুকতে পারে না। বিষয় টি উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বার বার বলা শর্তেও গুরুত্ব দেন না। তাই মানববন্ধনে বক্তারা স্পষ্ট ভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং প্রশাসন কে জানিয়ে দেন অপরিকল্পিত ঘের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন ও স্থায়ী জলবদ্ধতা নিরসনে যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে কেশবপুর পৌর বাসিকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলনে মাঠে নামবে পৌর বাড়ি মালিক সমিতি। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কেশবপুর পৌর বাড়ি মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলাম শহিদ,

সহ-সভাপতি কেশবপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ওয়াজেদ খান ডবলু, পৌর বাড়ি মালিক সমিতির সহ-সভাপতি কেশবপুর নিউজ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুনার রশীদ বুলবুল, ঔষধ ব্যবসায়ী আলহাজ্ব ডাঃ মোঃ আনোয়ার হোসেন, হাবিবুর রহমান হাবিব, প্রভাষক মোঃ শাহাজাহান কবীর, সোহেল হাসান আইদ,আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডঃ কামরুল ইসলাম, সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক, এ্যাডঃ রাসেল, আরও উপস্থিত ছিলেন প্রদীপ কুমার মোদক, শাহাজাহান কবীর, আব্দুল জলিল, আবু সালেহ মাসউদ হাসান, মোঃ আব্দুল মোমিন, আব্দুল হালিম মোস্তাফিজুর রহমান মিন্টু প্রমুখ ।


তামাকে প্রতিদিন ৪৪২ জনের মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ তামাকজনিত রোগে মারা যায় এবং ৪ লাখের বেশি মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করে। প্রতিদিন গড়ে মারা যাচ্ছে ৪৪২ জন মানুষ।

গতকাল বুধবার পল্টনের একটি হোটেলে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সহযোগিতায় বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত এক কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়।

‘জনস্বার্থ বনাম তামাক কোম্পানির প্রভাব: তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন তরান্বিতকরণে সাংবাদিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক এ কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।

মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, তামাক হৃদরোগ, ক্যান্সার ও শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগের অন্যতম প্রধান কারণ। বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ তামাকজনিত রোগে মারা যায় এবং ৪ লক্ষাধিক মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করে। পাশাপাশি বিভিন্ন জনসমাগমস্থল ও গণপরিবহনে প্রতিদিন প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে এখনই প্রয়োজন বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত সংশোধন।

বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি বলেন, তামাকজাত পণ্যের ব্যবহারজনিত কারণে প্রতিদিন গড়ে ৪৪২ জন মানুষ অকালে মারা যাচ্ছে। এই প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু কমাতে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত সংশোধন করা অত্যন্ত জরুরি।

কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের উপদেষ্টা নাইমুল আজম খান, সমন্বয়ক ডা. অরুনা সরকার, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল প্রমুখ।


ছাগল পালনে স্বাবলম্বী শিক্ষিত বেকার মোহসিনসহ অনেকেই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ

রূপগঞ্জে ছাগল পালনে স্বাবলম্বী হয়েছেন মোহসিন মিয়া। কিনেছেন মালবাহী ২ টি পিকআপ, একটি সিএনজি ও নিজেদের থাকার বাড়ি। নিজে গড়ে তুলেছেন বিশাল একটি দেশি জাতের ছাগলের খামার। তিনি উপজেলার উত্তরপাড়ার কানাবাড়ি গ্রামের বাছে মিয়ার ছেলে।
আজ থেকে বিশ বছর আগে ছাত্রজীবনে সখের বশেই দুটি ছাগল কিনে নিজ বাড়িতে পালন শুরু করেন মোহসিন। কয়েক মাস পর ৪ টি করে বাচ্চার জন্ম হয়। ছাগল পালনের এক বছরের মাথায় তিনি লাভ পেতে শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে ৫০টি ছাগল রয়েছে। যার বাজার মূল্যে ৫ লক্ষাধিক টাকা। ছাগল পালন করেই মোহসিন মাস্টার ডিগ্রি পাস করেন। চাকরির পেছনে না দৌড়িয়ে এখনও ছাগল পালনেই ব্যস্ত মোহসিন।
মোহসিন বলেন, প্রতিদিন ছাগলগুলোকে আমি সকাল বিকাল ঘাস খাওয়াই এবং দুপুরে ভুসি কিনে খাওয়াই। তাতে প্রতিদিন আমার ৫০০ টাকার ভুসি লাগে। দেশি জাতের এই ছাগলগুলো প্রতি বছর দুইবার বাচ্চা দেয়। একটি এক বছর বয়সের ছাগলের ওজন ১০০ কেজির মতো হয়ে থাকে। প্রতি মাসে ৫-১০টি ছাগল বিক্রি করি। আমার ফার্ম দেখাশুনা করার জন্য কোনো সহকারী রাখিনি। আমার পরিবারের সবাই দেখাশুনা করি। আমার এই খামার গড়ে তুলতে এখন পর্যন্ত কোথাও থেকে কোনো ঋণ নেইনি।
পাঁচ বছর আগের কথা মনে পড়লেও গা হিম হয়ে যায় গৃহবধু হালিমা খাতুনের। অভাব ছিলো তার নিত্য সঙ্গী। তিন ছেলে মেয়ের ভরণ পোষণ আর লেখা পড়ার খরচ বহন করতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হতো তার। মানুষের কাছে হাত পেতে সংসার চালাতে হতো। এখন আর কারোর কাছে হাত পাততে হয় না তার। ছাগল পালনে বদলে গেছে তার জীবন চিত্র। তিনটি ছাগল দিয়ে তার ফার্মের যাত্রা শুরু হলেও এখন তার খোয়াড়ে আছে ৩৩টি বিভিন্ন প্রজাতির ছাগল। শুধু হালিমা নয় তার মতো অনেক স্বামীপরিত্যাক্তা বিধবা ও শিক্ষিত যুবক ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছে। বিশেষ করে ব্লাক বেঙ্গল জাতের ছাগল পালন করছেন তারা।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের হিসেব মতে উপজেলায় ছোট বড় ৪৩২৮টি ছাগলের খামার আছে। খামার গুলিতে বেশ কয়েকটি জাতের ছাগল রয়েছে। তার মধ্যে ব্লাকে বেঙ্গল জাতের ছাগল বেশি। এছাড়াও রয়েছে বারবারি, ব্রম্মা ও রাম ছাগল।
উপজেলার নগর পাড়া গ্রামের ছালিমা বেগমের জীবনটা ছিল সংগ্রামের আর হতাশার গল্প। অষ্টম শ্রেণী পাশ করার পর দারিদ্র্যের কারণে থেমে যায় তার পড়াশোনা। স্বামী মোস্তফা মিয়ার দিনমজুরের আয়ে কোনোমতে চলত সংসার। জমিজমা না থাকায় চাষাবাদ করার সুযোগও ছিল না। এর মধ্যে স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়লে হালিমার জীবনে নেমে আসে আরেক দফা বিপর্যয়। পরিবার চালানোই যেখানে কঠিন, সেখানে নতুন কোনো উদ্যোগ নেয়া ছিল অকল্পনীয়।
তবে হাল ছাড়েননি ছালেমি। মানুষের কাছ থেকে ছাগল বর্গা নিয়ে লালন পালন শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে রয়েছে ১৮টি ছাগল, ২০টি দেশি মুরগি, ১৫টি হাঁস। সবজি বাগানও গড়ে তুলেছেন। প্রতিমাসে হাঁস-মুরগি ও সবজি বিক্রি করে আয় করছেন ৭-৯ হাজার টাকা। ছাগলগুলোর বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। উৎপাদন ব্যয় বাদে লাভ হবে ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা। এখন তার স্বামী মোস্তফা মিয়াও সুস্থ হয়ে খামারের কাজে হালিমাকে সহযোগিতা করছেন।
অক্তার, মাজহারুল, হাসিনা, মিনারাসহ খামারিরা জানান, ছাগলই একমাত্র প্রাণী যার বছরে দু’বার প্রজনন ক্ষমতা রয়েছে। প্রতিবার প্রজননে একাধিক বাচ্চা দেয়। রোগ-বালাইও কম হয়। ছাগলের সবচেয়ে বড় শত্রু ঠান্ডা। বছরে একবার পিপিআর, এফএমডি, গডপক্স ভ্যাকসিন দিলেই আর কোনও ওষুধ লাগে না। তবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিলে কোন সমস্যাই হয় না।
কায়েতপাড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন বলেন, মোহসিন শিক্ষিত বেকার যুবকদের মডেল। তাঁর পথ অনুসরণ করে অনেকেই ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। মোহসিন একজন আদর্শ খামারি। তিনি শুধু নিজেই নন, এলাকার অন্তত ১০টি পরিবারকে নিজের ছাগল বর্গা দিয়ে ছাগল পালনে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তাঁর দেখানো পথে এলাকার অনেকেই হাঁটছেন। তাঁর কর্মকা- অনুকরণীয়।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সজল কুমার দাস বলেন, প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে খামারিদের সাধ্যমত সব সময় সহযোগিতা করা হচ্ছে।ওষুধ সরবরাহ না থাকলে অনেক সময় শুরু প্রেসকিপশন দেয়া হয়। কোন সময় খামারে গিয়েও চিকিৎসা দেয়া হয়।


কুলাউড়ায় ২০ আগস্টের পর নিয়ম ভাঙলেই ব্যবস্থা: ইউএনও

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুলাউড়া প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় শহরের যানজট নিরসনে সিএনজি অটোরিকশা নেতৃবৃন্দের সাথে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওমর ফারুক এবং ট্রাফিক ইন্সপেক্টর হাসান আল মামুন, উপজেলা জামায়াতের আমির সহকারী অধ্যাপক আব্দুল মুন্তাজিম, কুলাউড়া প্রেসক্লাব সভাপতি এম শাকিল রশীদ চৌধুরী, ভূকশিমইল ইউপির চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির, সাংবাদিক এম মছব্বির আলী, ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আখই, সাংবাদিক ময়নুল হক পবন, নাজমুল বারী সোহেল, মাহফুজ শাকিল, মহিউদ্দিন রিপন, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের (২৩৫৯) সভাপতি সেলিম আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম রুহেলসহ বিভিন্ন লাইন কমিটির নেতৃবৃন্দ।

বৈঠকে ইউএনও মহিউদ্দিন জানান, শহরের অভ্যন্তরে কোনো স্থায়ী সিএনজি স্ট্যান্ড রাখা হবে না। তবে আপাতত উত্তরবাজার ও দক্ষিণবাজারের চলমান সাতটি অস্থায়ী স্ট্যান্ডে দুটি করে সিএনজি রাখার এবং বাকিগুলো নির্ধারিত স্ট্যান্ডে রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অটোরিকশা নেতৃবৃন্দ ২০ আগস্ট পর্যন্ত সময় নেন। এরপর থেকে কেউ নিয়ম ভঙ্গ করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


টিফিনের টাকায় গাছের চারা বিতরণ শিক্ষার্থীদের

আপডেটেড ১৪ আগস্ট, ২০২৫ ০১:১৭
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে গাছের চারা হাতে নিয়ে মাদক ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেছে ৫শত শিক্ষার্থী।
বুধবার (১৩ আগষ্ট) উপজেলার রায়পুর কৈলাশ চন্দ্র রায় চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই ব্যতিক্রমী আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘ।
সংগঠনের সদস্যদের এক দিনের টিফিনের জমানো টাকায় গাছের চারা কিনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ আনোয়ার হোসেন আনন্দের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন দাউদকান্দি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুনায়েত চৌধুরী।
এসময় সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদ ভূইয়ার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোমেন ভূইয়া, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সভাপতি কাওসার আলম সোহেল, কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা সফিকুল ইসলাম, সাবেক সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান তালুকদার, সাংবাদিক লিটন সরকার বাদল, সাংবাদিক আলমগীর হোসেন, প্রভাষক রতন চন্দ্র দেবনাথ, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ডাঃ আশরাফ উদ্দিন নিলয়, আনসার ভিডিপি কুমিল্লা রেঞ্জ (মেডিকেল অফিসার) ডাঃ রবিউল হোসেন পাটোয়ারী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন দেবিদ্বার শাখার সভাপতি ইয়াছিন মুন্সী, প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ হোসাইন, দাউদকান্দি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, অর্থ সম্পাদক মেহেদী হাসান মারুফ, রাব্বি ভূইয়া প্রমুখ।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সভাপতি কাওসার আলম সোহেল জানান, সংগঠনটির সব সদস্যই শিক্ষার্থী। তারা সারাদেশে পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতা বাড়াতে গাছের চারা বিতরণ করছে। এবছর তাদের লক্ষ্য ৫০ হাজার গাছের চারা বিতরণ। শিক্ষার্থীদের গাছের চারা হাতে নিয়ে মাদক, বাল্যবিয়ে ও সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার বার্তা দেন সংগঠনের সদস্যরা। এসময় বিদ্যালয়ের ৫০০ শিক্ষার্থী গাছের চারা হাতে নিয়ে সবুজ উৎসবে মেতে উঠেন।


ভারতে আটক ৫ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল বিএসএফ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাব্বিউল হাসান রমি, জয়পুরহাট
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কয়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে একই পরিবারের ৫ সদস্যকে ফেরত পাঠালো ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের সদস্যরা।
বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে কয়া সীমান্তের ২৭১/৫৪ পিলার এলাকায় বাংলাদেশি এসব নাগরিকদের বিজিবির হাতে তুলে দেয় বিএসএফ।
দেশে ফেরত আসা ব্যাক্তিরা হলেন, খুলনা সদর উপজেলার দক্ষিণ টুটপাড়া গ্রামের পরান মোড়লের ছেলে মুরাদ মোড়ল, মুরাদের স্ত্রী সাগরিকা বেগম, মুরাদের দুই ছেলে রমজান মোড়ল ও মুসকান মোড়ল এবং মেয়ে আমেনা মোড়ল।
জয়পুরহাট ব্যাটালিয়নের (২০ বিজিবি) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আরিফুরদৌলা জানান, গত ১২ আগস্ট রাতে জয়পুরহাট ২০ বিজিবির কয়া বিওপির বিপরীতে ভারতের বালুপাড়া এলাকায় সীমান্ত পিলার ২৮২/৪৩-এস থেকে প্রায় ৮শ গজ ভেতরে ওই ৫ জনকে আটক করে বিএসএফ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, ২০২০ সালে ভারতের কেরালা রাজ্যের এন্নাকুলাম নামক স্থানে একটি ভাংগাড়ি দোকানে দিন মজুরের কাজ করতে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি দেশে ফেরার পথে বিএসএফ তাদের আটক করে।
পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, বিজিবি নারী-পুরুষ, শিশু সহ ৫ জনকে থানায় হস্তান্তর করেছে।তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা জানায়, ভারতে চিকিৎসা শেষে দেশে আসার সময় বিএসএফ তাদের আটক করে বিজিবির হাতে তুলে দেয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের নিকট তাদেরকে হস্তান্তর করা হবে।


ইবিতে মীর মুগ্ধ সরোবরে পূবালী ব্যাংকের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাকিব আসলাম, ইবি প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মীর মুগ্ধ সরোবর ঘিরে পূবালী ব্যাংকের উদ্যােগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।

বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে পূবালী ব্যাংক পিএলসি কুষ্টিয়া শাখার উদ্যোগে এ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আওতায় নারকেল, মৌচন্দ্রা, রঙ্গন, চেরি, পবনঝাউ, রাধাচূড়া, চন্দ্রপ্রভা ইত্যাদি গাছের মোট ১৫০টি চারা রোপন করা হয়।

অফিস সূত্র, ব্যাংকিং কার্যক্রমের-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সাদ্দাম হোসেন হলে টিভি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যাত্রী ছাউনি ও পানীয় সুব্যবস্থা করবে। একই সাথে আইটি সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করার প্রস্তাবনা দিয়েছে বলে জানা যায়।

এসময় পূবালী ব্যাংক পিএলসি’র ফরিদপুর অঞ্চলপ্রধান ও উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. জহিরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া শাখার প্রধান মো. ইসমাইল হাওলাদার, বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য, প্রকাশনা ও জনসংযোগ অফিসের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. সাহেদ হাসান, ইবি উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) গোলাম মাহফুজ মঞ্জু, ব্যাংকের কুষ্টিয়া শাখার কর্মকর্তা নাজমুল হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


মাগুরায় সবুজ উৎসব -২০২৫ এর বিজয়ীদের মাঝে পদক প্রদান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শিউলি আফরোজ সাথী, মাগুরা প্রতিনিধি

মাগুরায় জুলাই পূনর্জাগরণে সবুজ উৎসবে বৃক্ষরোপন পদক-২০২৫ প্রদান করা হয়েছে। বুধবার মাগুরা জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মাগুরা ও ‘পরিবর্তনে আমরাই’ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সার্বিক মোঃ হুসাইন শওকত প্রধান অতিথি হিসেবে সবুজ উৎসব-২০২৫ এর বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোঃ অহিদুল ইসলাম । এ সময় আরও ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক )আব্দুল কাদের, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব মাহবুবুল হক,জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার শামীম কবির, মাগুরা সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী অফিসার হাসিবুল হাসান, জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আলমগীর হোসেন, মাগুরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ সাইদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক ও 'পরিবর্তনে আমরাই ' সংগঠনের পরিচসলক নাহিদুর রহমান দুর্জয় প্রমুখ ।

অনুষ্ঠানে সাতটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়। সেরা প্রতিষ্ঠান সরকারি সিভিল সার্জন অফিস, সেরা প্রতিষ্ঠান বেসরকারি মাগুরা প্রেস ক্লাব, সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (প্রাথমিক) কুমার কোটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান( মাধ্যমিক) আড়পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়,সেরা সংগঠন প্রতিশ্রুতি উন্নয়ন সংস্থা,ব্যক্তি পর্যায়ে সেরা বৃক্ষপ্রেমী আশীষ কুমার দে মন্ডল ও সেরা কন্টেন্ট ক্রিয়েটার মোঃ সাজ্জাদ হোসেন কে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

এ অনুষ্ঠানের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সবাইকে বেশি বেশি গাছ লাগানোর প্রতি উদ্বুদ্ধ করা।


মাদরাসা শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মো. আল- আমিন, ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় মাদরাসা পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও শিক্ষক মাওলানা জসিম উদ্দিন (৩৫) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৩ আগস্ট) অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে ময়মনসিংহ বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবার ও অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, লম্পট ওই নারীলোভী শিক্ষক উপজেলার রঘুনাথপুর মধ‍্যেপাড়া এলাকায় রঘুনাথপুর জামিয়া খাদিজাতুল কুবরা (রাঃ) মহিলা মাদ্রাসা নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। সেখানে মেয়েদের ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব বুজিয়ে অভিভাবকদের আকৃষ্ট করে তার প্রতিষ্ঠিত মাদরাসায় মেয়েকে ভর্তি নেন।

এমতাবস্থায় মাদরাসা আসা যাওয়ার পথে একা পেলেই ওই শিক্ষার্থীকে কুপ্রস্তাব দেন মাওলানা জসিম উদ্দিন। পরে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তার প্রতিষ্ঠানে চাকুরি নেওয়া আরেক নারীর সহায়তায় ওই শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সময় মাদরাসার অফিস কক্ষে ডেকে এনে ধর্ষণ করেন।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন।

স্থানীয়রা জানান, জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিকবার যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের অভিযোগ উঠে, যা গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়। তবে এবার ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেন ও তার উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।

ফুলবাড়িয়া থানার ওসি মোহাম্মদ রুকনুজ্জামান বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে জসিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।


স্বাধীনতা পুরষ্কার প্রাপ্ত অধ্যাপক যতিন সরকার আর নেই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এ বি চৌধুরী নাদিম, নেত্রকোনা প্রতিনিধি

স্বাধীনতা ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত অধ্যাপক যতীন সরকার মারা গেছেন। বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেল পৌনে ৩টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। যতীন সরকার (৯৯) দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন এর মধ্যে গত জুন মাসে পড়ে গিয়ে উরুর হাড়ে আঘাত পান পরে তাকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।গত সপ্তাহে ময়মনসিংহে নেয়ার পর সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। যতীন সরকার দুই মেয়াদে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ছিলেন। শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ উদীচীর ময়মনসিংহ কার্যালয়ে নেয়া হবে। তবে শেষকৃত্যের বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন সিপিবির ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সভাপতি এমদাদুল হক মিল্লাত। প্রসঙ্গত,যতীন সরকার ১৯৩৬ সালের ১৮ আগস্ট নেত্রকোণার কেন্দুয়ার চন্দপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক এই শিক্ষক সুদীর্ঘকাল ধরে মননশীল সাহিত্যচর্চা, বাম রাজনীতি এবং প্রগতিশীল আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। লেখক হিসেবে যতীন সরকার ২০১০ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার, ২০০৭ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পদক, ২০০৫ সালে পাকিস্তানের জন্ম-মৃত্যু দর্শন গ্রন্থের জন্য প্রথম আলো বর্ষসেরা গ্রন্থপুরস্কার,ড. এনামুল হক স্বর্ণপদক, খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার, মনিরুদ্দীন ইউসুফ সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা লাভ করেন।

৪২ বছরের বেশি সময় শিক্ষকতা পেশায় থেকে ২০০২ সালে অবসর গ্রহণের পর যতীন সরকার স্ত্রী কানন সরকারকে নিয়ে শিকড়ের টানে চলে যান নিজ জেলা নেত্রকোণায়। তার প্রথম গ্রন্থ সাহিত্যের কাছে প্রত্যাশা প্রকাশিত হয় ১৯৮৫ সালে। এরপর একে একে প্রকাশিত হয় বাংলাদেশের কবিগান বাঙালির সমাজ তান্ত্রিক ঐতিহ্য সংস্কৃতির সংগ্রাম মানবমন,মানবধর্ম ও সমাজবিপ্লব। এ প্রবন্ধ গ্রন্থগুলোর পাশাপাশি শিশুদের জন্য সুপাঠ্য একটি ব্যাকরণ গ্রন্থও রচনা করেন তিনি। বাংলা একাডেমি থেকে ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত গল্পে গল্পে ব্যাকরণ’ বাংলাদেশের শিশুসাহিত্যে এবং ব্যাকরণ গ্রন্থের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন। বাংলা একাডেমির জীবনী গ্রন্থমালার মধ্যে চারটি গ্রন্থ রচনা করেন তিনি। যথাক্রমে-কেদারনাথ মজুমদার চন্দ্রকুমার দেহরিচরণ আচার্য সিরাজউদ্দিন কাসিমপুরী। তার সম্পাদিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে রবীন্দ্রনাথের সোনার তরী প্রসঙ্গ মৌলবাদ ও জালাল গীতিকা সমগ্র। এ ছাড়া তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে আরও রয়েছে পাকিস্তানের জন্মমৃত্যু দর্শন দ্বিজাতিতত্ত্ব, নিয়তিবাদ ও বিজ্ঞান-চেতনা সংস্কৃতি ও বুদ্ধিজীবী সমাচার সাহিত্য নিয়ে নানাকথা।


কুমিল্লা মহানগরের অধিকাংশ সড়কই যেন একেকটি মরণফাঁদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তরিকুল ইসলাম তরুন, কুমিল্লা দক্ষিণ

কুমিল্লা নগরীতে প্রবেশ পথের প্রধান সড়কগুলো যেন এখন মরণফাঁদে রূপ নিয়েছে। কান্দিরপাড়-আলেখারচর, টমছমব্রিজ-বাখরাবাদ, কান্দিরপাড়-ধর্মপুর এবং টমছমব্রিজ-কোটবাড়ি,

সড়কে জায়গায় জায়গায় বিশাল গর্ত, উঠে যাওয়া কার্পেটিং, ভাঙাচোরা পিচ ও জলাবদ্ধতা জনদুর্ভোগের নতুন নাম হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন হাজারো যাত্রী, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, অটোরিকশা ও ভারী যানবাহন এসব ঝুঁকিপূর্ণ পথে চলাচল করছে চরম ঝুঁকি নিয়ে। বৃষ্টির পানিতে গর্ত ঢেকে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বাড়ছে। স্থানীয়রা বলছেন, এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর এমন করুণ দশা কর্তৃপক্ষের অবহেলারই প্রমাণ। দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন জনসাধারণ। যদিও বর্ষার দোহাই দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সড়কগুলোর সংস্কার নিয়ে দায়সারা কথা বলছেন।

সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় থেকে শহরতলীর শাসনগাছা হয়ে আলেখারচর বিশ্বরোডের অন্তত এক কিলোমিটার জুড়ে বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত, উঠে যাওয়া পিচ ঢালাই, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পাথর সব মিলিয়ে সড়ক নয়, যেন মরণফাঁদে রূপ নিয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন গণপরিবহনের চালক ও যাত্রীরা। মাঝেমধ্যে ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও। অথচ এই সড়কটি নগরের অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক। এখানে রয়েছে কুমিল্লা নগরের বৃহত্তম বাসস্ট্যান্ড 'শাসনগাছা বাস স্ট্যান্ড'। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রায় হাজার হাজার মানুষের চলাচল৷

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, কুমিল্লা নগরে প্রবেশের অন্যতম এই ব্যস্ত সড়কটির কথা ভুলেই গিয়েছেন প্রশাসন। দীর্ঘদিন ধরে এই গর্তগুলো সড়কে ভোগান্তি ও দুর্ঘটনার সৃষ্টি করছে। এক সময় গর্তগুলো ছোট ছোট থাকলেও এখন সেগুলো বড় হয়ে রূপ নিয়েছে ভয়ংকর।

দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সড়কের সর্বত্র সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। বর্ষার পানিতে সেই ক্ষত আরও বেড়ে ভয়াবহ রূপ নেয়। পানিতে গর্তগুলো ঢেকে যাওয়ায় না বুঝে গাড়ি সেখান দিয়ে চলাচল করলেই ঘটে দূর্ঘটনা।

বুধবার সকালে সরেজমিনে কুমিল্লা নগরী থেকে শহরতলীর শাসনগাছা হয়ে দুর্গাপুর এলাকার দিঘীরপাড় বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারটির প্রবেশমুখেই সড়কের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্তই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা,

দুরবস্থার কারণে চালকরা গর্ত এড়িয়ে এঁকেবেঁকে গাড়ি চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। এছাড়াও, গর্ত থাকায় হেলে দুলে চলছে গাড়িগুলো। এতে গাড়ির ভিতরে থাকা যাত্রীরা পোহাচ্ছেন ভোগান্তি। রোগী বহনের ক্ষেত্রেও এই সড়ক প্রায় অচল। অথচ এটি কুমিল্লার উত্তরাঞ্চলের প্রায় ৩০ লাখ মানুষের অন্যতম যোগাযোগপথ।

এই সড়কের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পাসপোর্ট অফিস পার হয়ে ওষুধ মার্কেট এলাকা, শাসনগাছা ফ্লাইওভারের দুই পাশে, দুর্গাপুর দিঘিরপার বাজার ও আলেখারচর এলাকায়। প্রতিদিন গড়ে এক হাজারের বেশি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, শত শত বাস, ট্রাক, পণ্যবাহী গাড়ি ও তেলের লরি এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

যাত্রীদের অভিযোগ, এত গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় বর্ষায় তা মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এতে কর্মজীবীদের কর্মস্থলে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এই সড়ক দিয়ে চলাচলে ভোগান্তির শিকার হওয়া অন্তত পাঁচজন পথচারী ক্ষুদ্ধ হয়ে বলেন, বড় যানবাহন কষ্ট করে চললেও অটোরিকশা নিয়ে চলা প্রায় অসম্ভব। অধিকাংশ সময় অটোরিকশা হেলে পড়ে, এতে যাত্রীরা আহত হন। কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। মালামাল নিয়ে যাতায়াত এখন অনেকটাই অসম্ভব। এগুলো দেখার কি কেউ নেই?

স্থানীয়দের দাবি, যাত্রী ও যানবাহনের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত সড়কটির সংস্কার করা। টমসমব্রীজ-বাখরাবাদ সড়ক। বড় বড় গর্তে জমে থাকা পানি দেখে মনে হয় সড়ক নয়, যেন জলাশয়। প্রতিদিন অসংখ্য অ্যাম্বুলেন্স, রোগীবাহী যান, পোশাককর্মী ও শিক্ষার্থী এ পথে চলাচল করেন। পথে রয়েছে ইবনে তাইমিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইপিজেড, পিবিআই, সদর উপজেলা পরিষদ, বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড,সহ বহু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এই সড়ককে নগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও বলা চলে।

এই সড়কে কাজ শুরু হয়েছে এমন আশার দৃশ্য সিটি কর্পোরেশন থেকে দেখানো হলেও বর্ষার দোহাই দিয়ে সেটিও বন্ধ হয়েছে বেশ কিছুদিন আগে। এতে খানাখন্দ যেন আরো বেড়ে গিয়েছে। যদিও সিটি কর্পোরেশন বলছে আগের তুলনায় এই সড়ক অনেক বেশি চলাচল উপযোগী হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা।

বুধবার সকালে সরেজমিনে এই সড়কে গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা ইবনে তাইমিয়া স্কুল এন্ড কলেজের সামনে থেকে শুরু হয়ে ইপিজেড ১ নং গেইট পর্যন্ত সড়ক যেন দাঁড়িয়েছে মরণফাঁদ হয়ে। এই সড়ক দিয়ে গাড়িগুলো চলছে একপ্রকার বাধ্য হয়ে। বড় বড় গর্তে পড়ে মাঝে মাঝে বন্ধ হয়ে যায় গাড়ির ইঞ্জিন। এতে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। এছাড়াও রোগীবাহী এম্বুলেন্স সাইরেন বাজিয়েও সঠিক সময়ে রোগী নিয়ে পৌঁছাতে পারেন না মেডিকেলের জরুরী বিভাগের সামনে। এতে অনেক সময় রোগীর জীবনের ঝুঁকির কারণও হয়ে দাঁড়ায়।

টমসমব্রীজ-মেডিকেল সড়কে প্রতিদিন চলাচল করা অন্তত ১০ জন যাত্রী এই বলেন, এই সড়কে রোগী নিয়ে গেলে গর্তে ধাক্কা খেয়ে অনেক সময় রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। বৃষ্টির সময় তো গর্ত দেখা যায় না, তখন দুর্ঘটনার ঝুঁকি দ্বিগুণ। পানি ময়লা, আবার সড়ক পিচ্ছিল। এতে যাত্রীদের অনেক সময় পড়ে যাওয়ারও ভয় থাকে। এই সড়ক দিয়ে মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে রোগী আসলে রোগীর সাথে যারা আসে তারাও অসুস্থ হয়ে যায়। দ্রুত এই সড়ক পূর্ণাঙ্গ সংস্কার প্রয়োজন।

হেলে দুলে গাড়ি চলছে নগরীর কান্দিরপাড়-ধর্মপুর সড়কে

দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে ভোগান্তী চরমে কুমিল্লা নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড় থেকে রাণীর বাজার হয়ে ধর্মপুর সড়ক। নগর বাসীর দাবি দ্রুত সড়ক গুলো মেরামত করা হোক, এবং অবৈধ দখল, পার্কিং,অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করে স্বস্তি দেওয়া হোক।


দুর্নীতির আখড়া রাণীনগরের মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিস

আপডেটেড ১৩ আগস্ট, ২০২৫ ২২:১৫
মো. সবুজ হোসেন, নওগাঁ প্রতিনিধি
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিস অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এই ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তাসহ অফিসে কর্মরতদের চাহিদা মত ঘুষ দিলেই হয় সব কাজ, না দিলেই হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সেবাগ্রহীতাদের।

সরেজমিন অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সেবাপ্রত্যাশীদের অভিযোগ- ঘুস বাণিজ্যে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা দুরুল হুদা, প্রসেস সার্ভার কুদ্দুস ও পিওন সোহাগ। তারা তিনজন জন মিলেমিশে এই ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে যেন ঘুসের স্বর্গরাজ্য বানিয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার কাশিমপুর ও মিরাট ইউনিয়নের ইউনিয়ন ভূমি অফিস ছিল একটি কাশিমপুরে। ভূমিসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে প্রত্যন্ত এলাকা মিরাট ইউনিয়নের জন্য গত প্রায় সাত মাস আগে মিরাট ইউনিয়নের হামিদপুর বাজার এলাকায় নতুন করে মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিস করা হয়। ওই ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন দুরুল হুদা। আর প্রসেস সার্ভার কুদ্দুস ও পিওন সোহাগ।

অভিযোগ উঠেছে খাজনার অনুমোদন, খাজনার চেক করে দিতে, খারিজের প্রতিবেদন-প্রস্তাব, হোল্ডিং এন্ট্রিসহ বিভিন্ন প্রতিবেদন দিতে দুই হাজার থেকে শুরু করে ১০ হাজার, ২০ হাজার, এমনকি লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেন মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা দুরুল হুদা। সেবাপ্রত্যাশীরা তাকে চাহিদা মত ঘুস দিলেই মিলে কাজ, না দিলেই সেবাপ্রত্যাশীদের মাসের পর মাস হয়রানিতে পরতে হয়। তার বিরুদ্ধে রয়েছে অফিসে দালাল সিন্ডিকেট গড়ে তোলার অভিযোগ। তার মদদে অফিসের স্টাফদের মতো দুইজন দালাল থাকেন সব সময় অফিসে। দালালদের মধ্যস্ততায় সেবাপ্রত্যাশীদের কাছ থেকেও হাজার হাজার টাকা ঘুষ হাতিয়ে নেন তারা।

অফিসের প্রসেস সার্ভার কুদ্দুস ও পিওন সোহাগের বিরুদ্ধেও যেন অভিযোগের শেষ নেই। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ- জায়গা-জমির খারিজ (নামজারী) করিয়ে দিতে তারা সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে ৭ হাজার থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকা ঘুষ নেন। খারিজের জন্য কেউ ঘুষ দিয়েও ঘুরছে দিনের পর দিন। আবার নিয়ম না থাকলেও টাকার বিনিময়ে তারা দু’জন গোপনে দেন প্রস্তাবিত খতিয়ান। খারিজ শেষে কেউ হোল্ডিং খুলতে গেলে বা কেউ খাজনা দিতে গেলে সেবাপ্রত্যাশীদের মাসের পর মাস হয়রানি করেন। পরে তাদের কব্জায় ফেলে প্রসেস সার্ভার কুদ্দুস ও পিওন সোহাগ মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে কাজ সম্পন্ন করে দেন।

উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের ধনপাড়া গ্রামের মোছা. মেঘনা নামে ভুক্তভোগী এক নারী জানান, জমি খারিজের পর খাজনা দেওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করেছি। কিন্তু অফিসের নায়েব অনুমোদন দেননি। আবার আবেদন করেছি। প্রায় ৬ মাস ধরে অফিসে ঘুরছি। অফিসের পিওন সোহাগের কাছেও ঘুরেছি। এখনো অনুমোদন মেলেনি, খাজনাও দিতে পারিনি।

জালালাবাদ গ্রামের রায়হান রাফু জানান, আমাদের একটি জমির খারিজের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ মিসকেস করেছে। এই মিসকেস থেকে কিভাবে উদ্ধার হওয়া যায় সেজন্য মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েবের কাছে যাই। এরপর নায়েব দুরুল হুদা ও তার সাথে থাকা একজন দালাল আমাদের জমির সকল সম্যসা সমাধান করে দেওয়ার জন্য টাকা দাবি করেন। পরে তারা দুইজন মিয়ে প্রথমে ১৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এরপর নায়েব দুরুল হুদা ও দালাল বলে এই সাম্যান্য টাকা দিয়ে কাজ হবে না। পরে তারা দুইজন আমাদের সাথে ৯৭ হাজার টাকা চুক্তি করেন। কয়েক ধাপে নায়েব ও তার দালাল ৯৭ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত ওই কাজের কোন সমাধান হয়নি বা নায়েব আমাদের টাকাও ফেরত দিচ্ছেনা। তার পিছনে তিন মাস ধরে ঘুরছি। আমি এর প্রতিকার চাই।

পার্শবতী মান্দা উপজেলার তুরুকবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ জানান, জমির খাজনা দিতে মিরাট ভূমি অফিসে নায়েবের কাছে গেলে তার একজন দালাল আমার কাছ থেকে জমির কাগজপত্র নিয়ে নেয়। পরে কিজানি ইন্টি করতে হবে এজন্য ২ হাজার টাকা দিতে হবে বলে জানায়। আমি তাদের চাহিদামত টাকা দিইনি তাই খাজনা দেওয়া হয়নি। এছাড়া চলতি বছরে আমার কয়েক দাগে জমির খারিজ করে নিয়েছি। সেই খাজিরের ৪৬ শতাংশ জমির খাজনা দিতে অফিসে গেলে নায়েব দুরুল হুদা আমার কাছে ৩১ হাজার ৮১৮ টাকা দাবি করেন। সেই টাকা তাকে না দেওয়ায় আর খাজনা দেওয়া হয়নি। পরে নায়েবের কাছে আবার গেলে তিনি আমার জমির হোল্ডিং বের করে জমির নানা সমস্য তুলে ধরেন। এরপর টাকা না পেয়ে হোল্ডিংয়ে লাল কালির চিহ্ন দিয়ে দেয়।

হরিশপুর গ্রামের সোলাইমান জানান, আমার ৪৫ শতাংশ জমির খাজনা দেওয়ার জন্য পিওন সোহাগ খাজনার চেক করে দিবে বলে ১৩ হাজার টাকা দাবি করেন। সেইদিন চাহিদামত টাকা দিইনি দেখে খাজনা করে দেননি।

মিরাট উত্তরপাড়া গ্রামের ফাহাদ জানান, জমির খাজনা দিতে মিরাট ভূমি অফিসে গেলে অফিসের কুদ্দুস ও সোহাগ ১০ হাজার টাকা চায়। এরপর তারা আমাকে বেশ কয়েকদিন ঘুরিয়ে ১০ হাজার টাকা নিয়ে মাত্র ৭৭২ টাকার খাজনার চেক করে দিয়েছে।

মিরাট গ্রামের আরেক ভুক্তভোগী ছাত্তার জানান, আমার তিন দলিলে ৮ শতাংশ জমি খারিজের জন্য অফিসের সোহাগ প্রথমে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে ৭ হাজার টাকা নিয়ে বেশ কয়েক মাস ঘুরিয়ে খারিজ করে দিয়েছে। এখন হোল্ডিং খোলার জন্য অফিসে ঘুরতে হচ্ছে। হয়রানির কথা জানালেন ফজলু সরদার ও মজনু সরদার দুই ভাই। তারা কয়েক মাস আগে পৃথক দলিলে ৬ শতাংশ জমির খারিজের জন্য সোহাগের হাতে ঘুষ দিয়েছিলেন ৫ হাজার টাকা। কাজ হওয়ার পর চুক্তি অনুযায়ী আরও ৭ হাজার টাকা দেওয়ার কথা আছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ঘুরেও কোন সমাধান পাচ্ছে না অসহায় ওই দুই ভাই।

স্থানীয় ইয়াকুব নামের এক লোকের কাছে প্রস্তাবিত খতিয়ান দিয়ে দুই হাজার দুইশ’ টাকা ঘুষ নিয়েছে কুদ্দুস ও সোহাগ। ইয়াকুব জানালেন, কুদ্দুস ও সোহাগ দুজনেই খুব খাইখোর। তারা ঘুষ ছাড়া কিছুই বোঝে না।

এসব অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলে অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা দুরুল হুদা কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া সাংবাদিকদের সাথে আমি কোন কথা বলবো না।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে প্রসেস সার্ভার কুদ্দুসের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পিওন সোহাগও ফোন রিসিভ করেনি।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ নওশাদ হাসান বলেন, বিষয়গুলো আমার জানা নেই। কেউ কোন মৌখিক বা লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তাদের বিরুদ্ধে যদি কোন অভিযোগ থাকে, তাহলে প্রমাণ সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


banner close