চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে ২০টি স্বর্ণের বারসহ এক চোরাকারবারি আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এই স্বর্ণের ওজন ২.৩৩ কেজি। আনুমানিক বাজারমূল্য দুই কোটি টাকা প্রায়।
সোমবার সকালে ঝিনাইদহ মহেশপুর ৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চোরাচালানের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার রাত ৯টার দিকে বিজিবির ৫৮ ব্যাটালিয়ন সদরের একটি বিশেষ টহলদল জীবননগর এলাকায় অবস্থান নেয়। পরে এক সন্দেহভাজন ভ্যানচালককে জীবননগর অতিক্রম করে সীমান্তের দিকে যেতে দেখে তাকে আটক করা হয়। এ সময় ভ্যানের সিট তল্লাশি করে উদ্ধার করা হয় ২০টি স্বর্ণের বার, যার ওজন ২.৩৩ কেজি। উদ্ধারকৃত স্বর্ণের বারের আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ৯৯ লাখ ৭৭ হাজার ২৯২ টাকা।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আটক ব্যক্তির নাম শাহাবুল মিয়া (৩৫)। তিনি জীবননগর উপজেলার সদরপাড়ার মৃত মোকছেদ মণ্ডলের ছেলে।
ঝিনাইদহ মহেশপুর ৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, স্বর্ণের বারগুলো শুল্ক কর ফাঁকি দিয়ে ভারতে পাচারের জন্য পরিবহন করা হচ্ছিল। আটক আসামির বিরুদ্ধে জীবননগর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। স্বর্ণের বারগুলো চুয়াডাঙ্গা ট্রেজারি অফিসে জমা দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনকে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ ইশতেহার ঘোষণা করেছে। ইশতেহারে ১২ মাসে ৩৩ দফা সংস্কারের প্রতিশ্রতি দিয়েছে তারা। ৩৩ দফার মধ্যে রয়েছে, আবাসন সংকট নিরসন ও উন্নয়ন, শাটল ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি ও আধুনিকায়ন, নিরাপদ বাস সার্ভিস চালু, সুলভ মূল্যে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিতকরণ, সেশনজট নিরসন, কটেজ-মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের সুবিধা নিশ্চিত, নিয়মিত চাকসু নির্বাচন, ফ্যাসিবাদের দোসরমুক্ত ক্যাম্পাস গঠন, মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই বিপ্লবের চেতনা ধারণ, মাতৃত্বকালীন ছুটি ও নারীবান্ধব কমনরুম প্রতিষ্ঠা করা।
ইশতেহারে আরও উল্লেখ রয়েছে, যৌন হয়রানি ও সাইবার বুলিং প্রতিরোধ, শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি, গবেষণায় উৎসাহ ও বরাদ্দ বৃদ্ধি, শিক্ষার্থীবান্ধব লাইব্রেরি, মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা, সাশ্রয়ী চিকিৎসা সুবিধা, নিরাপদ ও গ্রিন ক্যাম্পাস, সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার প্রসার, প্রেয়ার রুম উন্নয়ন এবং সকল জাতিগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতির কথাও রয়েছে। এছাড়া প্রশাসনিক অটোমেশন চালু, উচ্চশিক্ষা ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট সুযোগ বৃদ্ধি, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অধিকার ও বৃত্তি, টিএসসি ও সেন্ট্রাল অডিটোরিয়াম নির্মাণ, শরীর চর্চার সুযোগ সম্প্রসারণ, লিগ্যাল এইড সেল গঠন, অফিসিয়াল ই-মেইল ব্যবস্থার সহজলভ্যতা, অ্যালামনাই সমন্বয়, মেন্টাল হেলথ কাউন্সিল গঠন এবং অন-ক্যাম্পাস জবের ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করা হয় ইশতেহারে।
প্যানেলটি ইশতেহারের মধ্যে নয়টি ফোকাস পয়েন্ট নির্ধারণ করেছে, যেখানে আবাসন, যাতায়াত, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, নিরাপদ ও গ্রিন ক্যাম্পাস, সেশনজট নিরসন, অটোমেশন, শিক্ষা-গবেষণা ও ক্যারিয়ার উন্নয়ন, নারীবান্ধব ক্যাম্পাস এবং ওয়েলফেয়ার কার্যক্রম।
গত মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী ইব্রাহীম রনি এ ইশতেহার ঘোষণা করেন। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদেও ইব্রাহীম রনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা ও বাস্তব সমস্যাকে গুরুত্ব দিয়ে ৩৩টি দফা সংস্কারের ইশতেহার ঘোষণা করেছি। আগামী ১২ মাসের মধ্যেই এসব দফা বাস্তবায়নে কাজ করব।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী সাঈদ বিন হাবিব, এজিএস পদপ্রার্থী সাজ্জাত হোসেন মুন্নাসহ অন্যান্য সদস্যরা।
২০২৫-২৬ অর্থবছরে রবি মৌসুমে কৃষি পুনর্বাসন ও প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বসতবাড়ি ও মাঠে শীতকালীন শাক-সবজি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে শেরপুর সদরের ১৪টি প্রান্তিক ৮০০ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় প্রাঙ্গণে এ সার ও বীজ বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ কর্মসূচির ড়উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মুসলিমা খানম নীলু, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. আব্দুল হান্নান, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার নুসরাত জাহান, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো আনোয়ার হোসেন।
শেরপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিস জানান, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে রবি মৌসুমে কৃষি পুনর্বাসন ও প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বসতবাড়ি ও মাঠে শীতকালীন শাক সবজি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইউনিয়নের প্রান্তিক ৮০০ কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণের উদ্যেগ নেয় জেলা কৃষি বিভাগ। যেখানে বসতবাড়িতে শাক-সবজি চাষের জন্য ৩০০ জন কৃষক বেগুন, পালংশাক, লালশাক, মটরশুটি, লাউ, মুলাসহ রাসায়নিক সার পাবেন। এছাড়া মাঠে উপযুক্ত স্থানে সবজি চাষের জন্য ৮০ জন কৃষক পাবেন লাউ বীজ, ১০ কেজি করে ডিএপি এবং ১০ কেজি এমওপি। পাশাপাশি ১৪০ জন কৃষক ২০ শতাংশ জমির জন্য পাবেন ৪০ গ্রাম হাইব্রিড সবজি বীজসহ রাসায়নিক সার। সদরের চরাঞ্চলের ১৪০ জন কৃষক পাবেন, ২০ শতাংশ জমির জন্য ৬০ গ্রাম মিষ্টি কুমড়া বীজ এবং ১০ কেজি করে ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি। এছাড়া ১৪০ জন কৃষক পাবেন ২০ শতাংশ জমির জন্য ৪০ গ্রাম হাইব্রিড শসার বীজসহ প্রত্যেককে ১০ কেজি এমওপি ও ১০ কেজি ডিএপি সার।
কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে অর্ন্তবর্তী সরকারের বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রালয়ের বর্তমান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আসবে বলে সড়কের পাশে ময়লা আবর্জনার স্তূপ পর্দা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্য চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। বুধবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকা থেকে ট্রেনযোগে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে আসেন। পরে সড়ক পথে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার সরাইলে উদ্যোশে রওনা দেন।
বন্দরনগর ভৈরব একটি বাণিজ্য এলাকা হওয়ায় আশেপাশের কয়েক জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রেনে চড়ে বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে প্রতিদিন হাজারও মানুষ রেলওয়ে স্টেশন সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকে। তা ছাড়া শহরের ঘোড়াকান্দা পলাশের মোড় এলাকায় অবস্থিত ৩টি স্কুল রয়েছে এতে প্রায় হাজারও শিক্ষার্থী প্রতিদিন সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে হয়। শহরের অন্যতম ব্যস্ত স্টেশনে যাওয়ার সড়কটির পাশে ঘোড়াকান্দা পলাশ মোড়ে প্রতিদিন ৩০-৪০ টন ময়লা আবর্জনা ফেলা হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এই সড়ক দিয়েই চলাচল করা ট্রেনের যাত্রী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, আজকে সরকারের একজন উপদেষ্টা আসবে বলে কাপড়ের পর্দা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। তা ছাড়া ময়লার স্তূপ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে ব্লিসিং পাউডার ছড়ানো হয়েছে যেন দুর্গন্ধ না ছড়ায়।
পৌর শহরের ঘোড়াকান্দা এলাকার ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া বলেন, বাড়ি থেকে বের হয়ে আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে যেতে এই সড়ক দিয়ে যেতে হয়। সড়কটির পাশে রেলের পুকুরে অবাধে ময়লা আর্বজনা ফেলে ভরাট করছে। এতে ময়লা আবর্জনা থেকে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়ে জনমনে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
ভৈরব পৌরসভার কনজারভেন্সি ইন্সপেক্টর মো.রফিকুল ইসলাম রোকন জানান, পৌরসভার নির্দিষ্ট ডাপিং ব্যবস্থা না থাকায় শহরের ময়লা আর্বজনা সড়কের পাশে রেলের জায়গায় ফেলতে হয়। আমরা প্রতিদিনই ময়লা আর্বজনা স্তূপে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে থাকি। আজকে সরকারের রেলপথ উপদেষ্টা আসবেন বলে কাপড়ের পর্দা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। যাতে ভৈরবে আগত অতিথিদের চোখে না পড়ে।
মাত্র ১৮ বছর বয়সেই মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন বরিশালের ভাটার খাল এলাকার রাজিয়া। ফুসফুসে পানি জমে যাওয়া ও টিবি যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত এই তরুণী এখন বিছানায় কাতরাচ্ছেন। কিন্তু অর্থের অভাবে চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না।
বরিশাল নগরীর ১০নং ওয়ার্ডের ভাটার খালবস্তি এলাকার দিনমজুর আবদুল রাজ্জাক ফকিরের মেয়ে রাজিয়া। প্রায় পাঁচ মাস আগে হঠাৎ জ্বর ও কাশিতে ভুগতে শুরু করেন তিনি। প্রথমে স্থানীয় ফার্মেসির ওষুধে জ্বর কমলেও কাশি কমছিল না। পরে ডাক্তারের পরামর্শে পরীক্ষা করলে জানা যায়, তিনি টিবিতে আক্রান্ত। চিকিৎসা নিতে নিতে ফুসফুসে পানি জমে যায়। চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিলেও অভাবের কারণে তা করা সম্ভব হচ্ছে না।
যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত রাজিয়া বলেন, ফুসফুসে পানি জমে গেছে। ডাক্তার বলেছেন, অপারেশন করা খুব জরুরি। কিন্তু আমার কাছে কোনো টাকা নেই। আল্লাহ যতদিন বাঁচিয়ে রাখেন, ততদিনই বাঁচব। মাঝে মাঝে কষ্টে মনে হয়, মরে যাই।
রাজিয়া বলেন, রোগে আক্রান্ত শুনে স্বামী আমাকে আর সন্তানকেও ছেড়ে গেছে। এখন মেয়েটার মুখটাও দেখতে পারি না। একজন মায়ের জন্য এর চেয়ে বড় কষ্ট কিছু হতে পারে না।
বাবা রাজ্জাক ফকির বলেন, বয়সের কারণে এখন কাজ করতে পারি না। আগের মতো ভ্যান চালাতে পারি না। আমার মেয়ের টিবি ধরা পড়ার পর তার স্বামী ৩ বছরের সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। মেয়ে এখন আমার কাছে পড়ে আছে, অথচ চিকিৎসার খরচ জোগাতে পারছি না। এটা এক অসহ্য কষ্ট।
অসহায় বাবা রাজ্জাকের চোখে এখন একটাই আকুতি মেয়েটাকে বাঁচাতে দেশের বিত্তশালীদের সহযোগিতা কামনা করেছেন। চিকিৎসায় সাহায্য পাঠাতে বাবা আবদুল রাজ্জাক ফকিরকে ০১৭৬২-৫৫২৮৭৯ এই নম্বরে ফোন করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
পাবনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবু সাইদ চেয়ারম্যানসহ ১৩৬ জনের নামে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে পাবনা সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার সাহা আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। এ মামলায় বিভিন্ন সময় ৩৫ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন। অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা অব্যাহত।
পাবনা জেলা জজ কোর্টের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট গোলাম সরওয়ার খান জুয়েল বলেন, রাতেই তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছেন বলে তদন্ত কর্মকর্তা নিজেই ফোনে জানিয়েছেন। চার্জশিটের কোনো কপি বা অনুলিপি এখনো হাতে পাইনি। এ মামলার এজাহারে ১০৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে সম্ভবত একজনের স্বাভাবিক মৃত্যু ঘটে। এ ক্ষেত্রে তদন্তে আরও ৩৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহার থেকে কারও নাম বাদ যায়নি বলে জেনেছি। এজাহারের কপি হাতে পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে শহরের ট্রাফিক মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলির ঘটনা ঘটে। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা এ হামলা ও গুলি চালান বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ঘটনায় সদরের চর বলরামপুর গ্রামের দুলাল উদ্দিনের ছেলে ও পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম (১৮) এবং হাজিরহাট বেতেপাড়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে ও শহরের সিদ্দিক মেমোরিয়াল স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র মাহবুব হোসেন নিলয় (১৬) নিহত হন।
ফেনীতে শিশু কিশোর-কিশোরী ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের আর্থিক সহায়তায় সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে ‘টাইফয়েড ভ্যাকসিনেশনবিষয়ক’ দিনব্যাপী কনসালটেশন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে ফেনী সিভিল সার্জন অফিসের সম্মেলন কক্ষে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালিযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন গণযোগাযোগ অধিদপ্তর তথ্য ও সম্প্রচার মন্তনালয়ের মহাপরিচালক ফয়জুল হক।
ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ রুবাইয়াত বিন করিম সভাপতিত্বে ও জেলা তথ্য অফিসার এস এম আল আমিনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী ফাউন্ডেশন ফেনীর উপপরিচালক নাজমুস সাকিব, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. রাসেদুল হাসান। টাইফয়েড টিকাদান বিষয় নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. প্রনয় কুমার চক্রবর্তী।
এছাড়া জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।
ওরিয়েন্টেশনে সভাপতি ডা. মোহাম্মদ রুবাইয়াত বিন করিম তার বক্তব্যে বলেন, টাইফয়েড টিকা রেজিস্ট্রেশনে বাংলাদেশের মধ্যে ২য় স্থানে রয়েছে ফেনী জেলা। জেলায় ৪ লাখ ২৫ হাজার শিশুর টিকা দেওয়ার লক্ষে ইতোমধ্যে ৩ লাখ ৮ হাজার শিশুর রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। রেজিস্ট্রেশনের কার্যক্রম চলছে।
প্রধান অতিথি গণযোগাযোগ অধিদপ্তর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ফয়জুল হক বলেছেন, ব্যক্তিগতভাবে কেউ টাইফয়েডের টিকা নিতে চাইলে টিকার মান নিশ্চিত হবে না। তা ছাড়া এই টিকার জন্য অনেক টাকা খরচ করতে হবে। কিন্তু সরকার যে টিকা দিচ্ছে তা নিরাপদ, হালাল এবং বিনামূল্যে পাওয়া যাচ্ছে।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে ৭ বছর ধরে এক্স-রে মেশিন বন্ধ থাকার পর আবার রোগীদের নির্ভুল চিকিৎসাসেবা দিতে চালু হলো ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি অত্যাধুনিক ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনের কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার ইশরাত জাহান এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
উপজেলা হেলথ কেয়ার প্রকল্পের অর্থায়নে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আর এম ও ডাক্তার রিয়াজ উদ্দিন, ডাক্তার শফিকুর রহমান, তাহামিনা আলম, সোনাইমুড়ী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম, এক্সরে টেকনোলজিস্ট মোহাম্মদ সেলিম, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ইপিআই ইলিয়াস মামুন প্রমুখ।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ১৯৯২ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স-রে ব্যবস্থা চালু হয়। কিন্তু চালুর পর থেকেই মেশিনটি কয়েকবার মেরামত করা হয়। গত ৭ বছর ধরে এক্সরে মেশিন বিকল হাওয়ায় বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে অতিরিক্ত ফি দিয়ে এক্সে-রে করাতে বাধ্য হন রোগীরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইশরাত জাহান বলেন, এক্স-রে মেশিন চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পত্র পাঠানোর পরে এই আধুনিক (৫০০ এম এম) মেশিনটি হাসপাতালে দিয়েছেন। নোয়াখালীর অন্য কোনো সরকারি হাসপাতালে এ উন্নত মানের এক্সরে মেশিন নেই। রোগীরা সরকারি ফি দিয়ে এখানে এক্সেরে করতে পারবেন। তবে ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনে রোগীদের রোগ নির্ণয়ে সুবিধা হবে।
মৃত্যুর নাম শুনলেই শিউরে ওঠে মানুষ। কবরের পাশ দিয়ে হাঁটতে গিয়েও অনেকে ভয় পান। কিন্তু সেই কবরই হয়ে উঠেছে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার নূঠুর চর গ্রামের এক বৃদ্ধের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি আ. খালেক, বয়স এখন সত্তর। জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন কবর খুঁড়ে, খুঁড়েছেন দুই হাজারেরও বেশি কবর।
আ. খালেকের চোখেমুখে নেই কোনো ক্লান্তি, নেই অনুতাপও। বরং গর্বের সুরে বলেন, প্রায় ৩৫ বছরের বেশি সময় ধরে এ কাজ করে যাচ্ছি। আল্লাহ যতদিন শক্তি দেবেন, ততদিন কবর খুঁড়েই জীবন কাটাব।
মৃত্যুর সংবাদ যেন আ. খালেকের কানে পৌঁছে যায় সবার আগে। গ্রামের কোনো মানুষ মারা গেলে অন্যরা জানুক বা না জানুক, তিনি খবর পেয়ে দৌঁড়ে যান কবরস্থানে। নিজ গ্রাম নুঠুরচর, ঘাটাইল উপজেলার নরজনা কবরস্থান ছাড়াও কয়েকটি কবরস্থানের দায়িত্ব তার কাঁধেই। কোন জায়গায় কবর খোঁড়া হবে, কীভাবে হবে সবটা একাই সামলান এবং কবরস্থানগুলো নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখেন। তিনি মনে করেন, এটি তার দায়িত্ব, মানুষের শেষ আশ্রয় ঠিক করার দায়িত্ব।
তবে কাজের শুরুটা ছিল সহজ নয়। প্রথম দিকে কবর খুঁড়তে গিয়ে হাড়, মাথার খুলি কিংবা পুরোনো কাফনের কাপড় বেরিয়ে এলে আঁতকে উঠতেন তিনি। সাপ, শিয়ালের সাথেও হয়েছে মুখোমুখি। কিন্তু ধীরে ধীরে ভয় কাটিয়ে নিয়েছেন। এখন এসব তার কাছে আর অস্বাভাবিক লাগে না।
গ্রামের মানুষ আ. খালেককে ডাকে গোরস্থানের অভিভাবক। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত এ কাজ চালিয়ে যেতে চান তিনি। তার কাছে মৃত্যু ভয় নয়, বরং মানবসেবার একটি পথ।
কবরের নীরব নিস্তব্ধতার মাঝেই আ. খালেক খুঁজে পান জীবনের শান্তি। অন্যেরা যেখানে কবরকে এড়িয়ে চলেন, তিনি সেখানে খুঁজে পান নিজের অস্তিত্বের মানে।
রংপুর ও গাইবান্ধা জেলায় অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণের উৎস ও বর্তমান পরিস্থিতি মূল্যায়নে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উচ্চপর্যায়ের তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান দল মাঠে নেমেছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. বয়জার রহমানের নেতৃত্বে অনুসন্ধান দলটি গঠিত হয়েছে।
অন্য দুই সদস্য হলেন, অধিদপ্তরের এপিডেমিওলজি সেলের ডা. ফয়সাল তালুকদার এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার ডা. তায়ফুর রহমান।
গতকাল মঙ্গলবার প্রতিনিধি দলটি রংপুরের কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার কয়েকটি এলাকায় অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত খামারি ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে পীরগাছা, কাউনিয়া ও মিঠাপুকুরের পর এবার রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলাতেও দুই ব্যক্তির শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ পাওয়া গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, মর্ণেয়া ইউনিয়নের মৌভাষা গ্রামের ওই দুই রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে।
গঙ্গাচড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবু মো. আলেমুল বাসার বলেন, মৌভাষা এলাকা কাউনিয়ার হারাগাছ সংলগ্ন। হারাগাছে যেহেতু অ্যানথ্রাক্স রোগী শনাক্ত হয়েছে, তাই এই দুই রোগীকেও সন্দেহভাজন হিসেবে নমুনা পাঠানো হয়েছে।
এদিকে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রতিনিধি দলটি সোমবার (৬ অক্টোবর) রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালী ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শন করেন। সেখানে খামারি আমিনুল ইসলামের তিনটি গরু মারা যাওয়ার পর সেগুলো পুঁতে ফেলা হয়েছে। মৃত গরুগুলো যে গাছের পাতা খেয়েছিল, তারও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দলটি কাউনিয়ার ঠাকুরদাস, পীরগাছার আনন্দী ধনীরাম ও মাইটাইল গ্রাম পরিদর্শন করেন। পীরগাছার এসব এলাকায় দুই নারী-পুরুষ অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। স্থানীয়ভাবে বেশ কিছু গবাদিপশুও আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলেও জানা গেছে।
প্রতিনিধি দলের প্রধান ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. বয়জার রহমান বলেন, গবাদিপশুর সংগৃহীত ১১টি মাংসের নমুনার মধ্যে ১০টিতেই অ্যানথ্রাক্স পজিটিভ পাওয়া গেছে। আরও কিছু নমুনা পরীক্ষাধীন রয়েছে। আমরা ঘাস ও মাটির নমুনাও সংগ্রহ করেছি, সেগুলো পরীক্ষার পর উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ডা. বয়জার রহমান আরও বলেন, আমরা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ও সুপারিশ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানান, জাতীয় চাহিদা অনুযায়ী গবাদিপশুকে অ্যানথ্রাক্সের টিকা দেওয়া হয়। আক্রান্ত এলাকা শনাক্ত হলে ‘রিং মডেল’ অনুসারে ওই অঞ্চল ও আশপাশে টিকাদান কর্মসূচি চালানো হয়, যাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে। তবে সিরাজগঞ্জের পর এবার এত বিস্তৃত এলাকায় অ্যানথ্রাক্স ছড়ানো উদ্বেগজনক। আক্রান্ত সব এলাকার গবাদিপশুকে টিকাদান নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনুসন্ধান দল বুধবার (৮ অক্টোবর) রংপুরের মিঠাপুকুর ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় পরিদর্শনে যাওয়ার কথা রয়েছে।
উজানের পাহাড়ী ঢল ও টানা ভারী বর্ষণে কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি কয়েক দিন বাড়ছিল। এতে জেলার ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার নদ-নদীতে দেখা গেছে ভারত থেকে ভেসে আসা গাছের গুঁড়ি। যা ছিল বেশিরভাগই বাকল ও শিকড়বিহীন এবং লালচে রঙের। দেখতে লালচে হওয়ায় অনেকেই এগুলোকে ‘রক্ত চন্দন’ বা ‘লাল চন্দন কাঠ’ ভেবে বিক্রি করছেন।
রোববার (৫ অক্টোবর) ভোর থেকেই কালজানি নদী হয়ে দুধকুমার নদী ও চিলমারীর ব্রক্ষ্মপুত্র নদে আসাম থেকে এসব কাঠ ভেসে আসতে শুরু করে। উৎসুক জনতা ভোর থেকেই নৌকা ও বাঁশের ভেলায় নেমে পড়ে কাঠ ধরার প্রতিযোগিতায়। কেউ সাঁতরে, কেউ বাঁশের ভেলা বানিয়ে কাঠগুলো নদীর স্রোত থেকে ধরে তীরে তুলতে শুরু করেন। তীরে তুলেই অনেকে বিক্রি শুরু করে।
এসব গাছের গুঁড়ি ২০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও দাম আরও চড়া।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নে একটি বড় লালচে গাছের গুঁড়ি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দাম চাওয়া হয়েছে। তবে মালিক পক্ষ জানিয়েছে, ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিলে বিক্রি করবে।
নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জের দামাল গ্রামের আব্দুল মোতালেব (৬০) বলেন, চারজন মিলে ৫০ ফুটের মতো একটা লাল গাছ তুলেছি। এটা দেখতে একদম চন্দন কাঠের মতো। আমরা দাম চেয়েছি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, তবে ১ লাখ ২০ হাজারে দিলে বিক্রি করে দেব।
এদিকে অনেকে এই কাঠের গুঁড়িগুলো জ্বালানি হিসেবেও কিনছেন। কালজানি নদীর পাড়ের বাসিন্দা আজাদ হোসেন (৫৫) বলেন, আমার খড়ির গোলা আছে। একেকটা গাছের গুঁড়ি ১২ হাজার টাকায় কিনেছি। কেটে বিক্রি করব জ্বালানি কাঠ হিসেবে।
ছিটমাইলানী গ্রামের সবুজ মিয়া (৬২) বলেন, রোববার রাত থেকে পরিবার নিয়ে প্রায় ৫০০ মণ কাঠ তুলেছি। কিছুটা রাখব রান্নার করার জন্য। আর বাকিটা বিক্রি করব।
জেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাদিকুর রহমান বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে কাঠগুলো দেখেছি। এগুলো দীর্ঘদিন পানিতে থাকার কারণে রঙ পরিবর্তিত হয়ে লালচে হয়েছে। প্রকৃত চন্দন কাঠ নয়। শ্বেত বা রক্ত চন্দনের কোনো নমুনাই এসব কাঠে পাওয়া যায়নি। বেশিরভাগই পচা কাঠ।
তিনি আরও বলেন, বনাঞ্চল পরিষ্কার করতে ভারতে নদীতে ফেলে দেওয়া কাঠগুলো স্রোতের টানে কুড়িগ্রামের দিকে ভেসে এসেছে। মানুষ না বুঝেই এগুলো চন্দন ভেবে কিনছে।
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ উদ্ভিদবিদ মির্জা নাসির উদ্দিন বলেন, প্রায় সব কাঠেই ট্যানিন ও ফেনলিক যৌগ থাকে। কাঠ দীর্ঘদিন পানিতে ভেজা থাকলে এই যৌগগুলো পানিতে দ্রবীভূত হয়ে বাতাসের অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে জারণের মাধ্যমে লালচে বা বাদামি রঙ তৈরি করে। এ কারণে সাধারণ কাঠও চন্দন কাঠের মতো রঙ ধারণ করে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এগুলোর সঙ্গে চন্দনের কোনো সম্পর্ক নেই।
তিনি বলেন, চন্দন কাঠের বিশেষ গন্ধ থাকে, যা শুকনো কাঠ কেটে ঘষলে বোঝা যায়। কিন্তু এসব কাঠে কোনো ধরনের গন্ধ বা তেলীয় উপাদান নেই যা প্রমাণ করে এগুলো সাধারণ গাছের কাঠ।
চট্টগ্রামের রাউজানে সড়ক দুর্ঘটনায় মাওলানা সোহেল চৌধুরী (৫০) নামের এক হেফাজত নেতার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় বুধবার (৮ অক্টোবর) সকাল থেকে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক ও চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন হেফাজতের নেতাকর্মীরা। এতে সকাল থেকে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে, আটকা পড়েছে শত শত গাড়ি।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, ‘তারা (হেফাজত নেতাকর্মীরা) সড়ক অবরোধ করে রেখেছে। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।’
এর আগে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকেলের দিকে রাউজান উপজেলার নবীন সেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়কে দুর্ঘটনায় হেফাজত নেতার মৃত্যু হয়।
সোহেল চৌধুরী মোটরসাইকেল চালিয়ে রাউজান উপজেলার নবীন সেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকা অতিক্রম করার সময় পেছন থেকে আসা একটি বাস তাকে বহনকারী মোটরসাইকেলের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে গুরুতর আহত হন মাওলানা সোহেল। পরে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, নিহত সোহেল চৌধুরী জন্মস্থান সন্দ্বীপ উপজেলায় হলেও তিনি দীর্ঘ বছর ধরে রাউজান পৌরসভার মেডিকেল গেট এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। তিনি হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
আমরা আমাদের প্রতিদিনের সময়ের একটা বড় অংশ পার করি মোবাইলের সাথে। আর মোবাইলকে দেয়া সময়ের সবচেয়ে বড় অংশ কাটাই সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে। এবার একটু ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে দেখেন তো, গত এক সপ্তাহে আপনি কয়টা থট প্রভোকিং বা গভীর চিন্তাকে জাগ্রত করে এমন কিছু দেখেছেন বা পড়েছেন? হয়তো আপনি কিছুক্ষণ ভেবে দু’একটা বিষয়ের কথা মনে করতে পারছেন। এবার আরেকটু গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে হয়তো দেখবেন সেগুলাও ঠিক প্রকৃত থট প্রভোকিং বিষয় ছিল না। অথচ খেয়াল করলে দেখতে পাবেন যে গত এক সপ্তাহে অনেক ভাইরাল বিষয় ছিল যেগুলো আপনাকে সত্যিই আন্দোলিত করেছে। কারো স্ট্যাটাস, কারো উপদেশ বাণী, আবার কারো জ্ঞানগর্ভ ভিডিও লাখ লাখ ভিউ বা হাজার হাজার রিয়েকশান পেয়েছে। অনেকে হয়তো ভাবছেন, এতে সমস্যাটা কি? আমরা আজকে সেটা নিয়েই আলোচনা করব যে এসবে আসলেই সমস্যা কোথায় হচ্ছে।
বিখ্যাত ইংলিশ কবি জন কীটসের ‘লামিয়া’ নামের একটা বর্ণনামূলক কবিতা আছে যেটা না পড়ে থাকলে পড়ার অনুরোধ রইলো।কবিতাটি মূলত স্যাড রোম্যান্টিক হলেও কিছু ফিলোসফিক্যাল দিক আছে যেটা উপেক্ষা করা অসম্ভব। লিসিয়াস নামের এক তরুন এক দারুণ সুন্দরীর প্রেমে পড়ে যার নাম লামিয়া। লামিয়াকে একটা জঙ্গলে দেখে লিসিয়াস এতটাই মসগুল হয়ে যায় যে লামিয়ার পরিবার বা বৃত্তান্ত জানার আর প্রয়োজন খুঁজে পায় না। এরপর ওরা সংসার করার সিদ্ধান্ত নেয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে অনেকেই আমন্ত্রিত হয় এবং তারা আনন্দে অনুষ্ঠান উদযাপন করতে থাকে। এর মধ্যে একজন ছিল বিজ্ঞ এপলোনিয়াস যে কিনা জানতো যে লামিয়া আসলে একটা রূপধারী সার্পেন্ট বা সাপ। এপলোনিয়াস যখন এটা জানিয়ে দেয় তখন লামিয়া মানুষ থেকে আবার সাপ হয়ে যেয়ে মারা যায়। তখন লিসিয়াস আক্ষেপ করে বলেছিল, ‘ডু নট অল চার্মস ফ্লাই এট দা মেয়ার টাচ অফ কোল্ড ফিলোসফি?’ আসলেই আমাদের জীবনের অনেক আনন্দ, মজা, ফুর্তি যখন দৃঢ় এবং ‘শীতল ফিলোসফির সামনে পরীক্ষা দিতে আসে তখন ফ্যাকাসে হয়ে যায়। এ কারণেই আমরা কখনো কখনো ইচ্ছা করেই জীবনের জটিল ফিলোসফিকে দূরে সরিয়ে রাখতে পছন্দ করি।
গত এক বছরে বেশ কিছু সিনেমা, ওয়েব সিরিজ এবং নাটক দেখেছি। যেগুলো হিট হয়েছে বা বেশি ভিউ পেয়েছে তার বেশিরভাগই থট প্রভোকিং না। এমনকি কিছু কিছু কন্টেন্ট এতটাই দুর্বল যে ভাবতেও অবাক লাগে এসব এত ভিউ পায় কিভাবে। আবার দারুণ থট প্রভোকিং এবং ম্যাসেজ নির্ভর অনেক কন্টেন্ট মুখ থুবড়ে পড়েছে। আমি জানি এখন অনেকেই বলবেন যে বিনোদনের জন্যে নাটক, সিনেমা দেখি; এখানে দর্শন বা ম্যাসেজ থাকার প্রয়োজনীয়তা নেই। সোশ্যাল মিডিয়াতেও একই সমস্যা। দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যে কেউ গালাগাল করছে, কেউ ভাত খাচ্ছে, কেউ পানিতে লাফালাফি করছে, কেউ বা ভুলে ভরা জিবন দর্শন দিচ্ছে। সবার একই লক্ষ্য’ অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং ভিউ, রিয়েকশান পাওয়া। আমি অনেক শিক্ষিত মানুষকেও বলতে শুনেছি, ‘এমনিতেই আমাদের জীবনে অনেক জটিলতা, তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটু বিনোদন খুঁজলে দোষের কি? দোষের কিছু কি না জানিনা তবে ভালো জিনিসকে প্রমোট না করে ভুল জিনিসকে প্রমোট করলে সেটা সমাজেরই ক্ষতি। এবং সেই ক্ষতির পরিমানটা যে কত বেশি সেটা সাধারণত আমরা উপলব্ধিই করতে পারি না।
ডিপ থিংকিং বা থট প্রভোকিং কোন কিছু সমাজে নিগৃহীত হয় কিন্তু বাই চান্স না। বরং এটা একটা সিস্টেম্যাটিক এরেঞ্জমেন্ট যেটা প্রভাবশালীরা যুগ যুগ ধরে করে যাচ্ছে। এই মানব সভ্যতার ইতিহাস ঘাটলে দেখবেন যুগে যুগে জ্ঞানী মানুষেরা নিগৃহীত হয়েছেন এমন কি তাদের জীবনটা পর্যন্ত দিতে হয়েছে। আমাদের সমাজে মূলত দুই ধরনের মানুষ বাস করে। বুদ্ধিমান যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে শাসন করে এবং সাধারণ যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে শোষিত হয়। এর বাইরে আরেক শ্রেণির মানুষ আছে যারা সংখ্যায় খুবই কম কিন্তু তারা হচ্ছে প্রকৃত মেধাবী। এই শ্রেণির মানুষ শাসক বা শোষক কোনোটাই হয় না বরং সমাজের বিবেক হিসেবে কাজ করতে চায়। সমস্যা হচ্ছে এই মেধাবী গ্রুপটাকে চতুর শাসকেরা খুব টেকনিক্যালি নিষ্ক্রিয় করে রাখে অথবা তাদের বিপক্ষে আরেক দুষ্টু বুদ্ধিমান চক্রকে সক্রিয় করে দেয়। এই দুষ্টু বুদ্ধিমানেরা জাতির বিবেক হিসেবে কাজ না করে গৃহপালিত বুদ্ধিজীবী বা সুশীল সমাজের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। আবার এই শাসক মানে কিন্তু শুধু রাজনৈতিক বা দেশ শাসককে আমি বুঝাইনি।যারা প্রবল অর্থ, ক্ষমতা এবং বুদ্ধিমত্তার সাথে সমাজকে ডমিনেট করছে তাদেরকেও বুঝিয়েছি। একটা উদাহরণ দেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় কেন ষ্টুপিড এবং নেগেটিভ কনটেন্ট ভালো এবং থট প্রভোকিং কন্টেন্টের চেয়ে অনেক বেশী প্রোমোশন পায় সেটা কি কখনো ভেবে দেখেছেন? এখানে ডিস্ট্রিবিউশান এলগারিদমের একটা রহস্যজনক ভূমিকা রয়েছে। সমাজ যত ষ্টুপিড বিষয়ে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারবে তত প্রভাবশালীরা নিজেদের শোষণ এবং অন্যায়কে ঢেকে রাখতে পারবে।
ইলেকট্রনিক, প্রিন্টিং বা সোশ্যাল মিডিয়া যেখানেই হোক না কেন যারা নিজের জ্ঞানকে উপস্থাপন করার জন্যে ব্যাস্ত থাকে তারা দ্বিতীয় স্তরের জ্ঞানী মানুষ। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তারা নিজের বুদ্ধির বিনিময়ে আর্থিক, সামাজিক সুবিধা বা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে চায়। এটার একটা বড় নেগেটিভ দিক আছে। প্রকৃত জ্ঞানী মানুষের সান্নিধ্যে এসে সাধারণ মানুষ ইলিউশান অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং থেকে নিজেকে বের করতে পারে না। আমাদের চতুর সমাজ কিছু দুষ্টু বুদ্ধিমানদের সহায়তা নিয়ে আমাদেরকে একটা ভুল উপলব্ধির মধ্যে নিয়ে যায়, আমাদের মধ্যে একটা ইলিউশান তৈরি করে। এই ইলিউশনের প্রভাবে আমরা ভুল জিনিসকে ঠিক মনে করে জিবন পার করে দেই। এখন হয়তো ভাবছেন তাহলে প্রকৃত জ্ঞানী মানুষেরা সাধারণ মানুষকে ইলিউশান অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং থেকে বের করে আনে না কেন? এর প্রধান কারণ আমি আগেই উল্লেখ বলেছি। মিডিয়া, সমাজ, শাসক এরা তাদের প্রমোট করে না। এছাড়া আরেকটা সমস্যা হচ্ছে প্রকৃত জ্ঞানী মানুষেরা ফেইমের পিছনে তো ছুটেই না বরং নিজেদের সমাজ থেকে যথাসম্ভব দূরে সরিয়ে রাখে। এটা নিয়ে অনেক বড় বড় ইউনিভার্সিটি এবং প্রতিষ্ঠান রিসার্চ করেছে। তাদের ফাইন্ডিং হচ্ছে প্রকৃত মেধাবীরা নিজেদের ইন্টারনাল এনালাইসিস এবং উপলব্ধি নিয়ে এত বেশি ব্যস্ত থাকে যে অন্যকে দেয়ার মতো সময় বের করতে পারে না। এছাড়া আরেকটা বড় কারণ হচ্ছে সাধারণ মানুষের স্টুপিডিটি সেসব জ্ঞানীদের জন্যে এত বেশি বিরক্তির কারণ হয় যে তারা নিজেকে গুটিয়ে রাখাকেই শ্রেয় মনে করে। এটা পড়ে হয়তো অনেকেই অসন্তুষ্ট হয়ে গেছেন এবং ভাবছেন যে তারা অহংকারী। আসলে সেটা না। তাদের চিন্তা এবং এনালাইসিস এত বেশি সুক্ষ্ম এবং শক্তিশালী যে স্টুপিডিটি নেয়াটা তাদের জন্যে খুব বেশি ক্লান্তিকর হয়ে যায়। আইনস্টাইন একবার বলেছিলেন, ‘টু থিংস আর ইনফিনিট; ইউনিভার্স এন্ড হিউম্যান স্টুপিডিটি; এন্ড আই এম নট শিওর এবাউট দা ইউনিভার্স’। অর্থাৎ, আইনস্টাইনের মতে এই মহাবিশ্ব এবং মানুষের স্টুপিডি হচ্ছে অসীম যদিও তিনি মহাবিশ্বের অসীমতা নিয়ে সন্দিহান থাকলেও মানুষের অসীম স্টুপিডি নিয়ে কোন রকমের সন্দিহান ছিলেন না।
প্রকৃত জিবন দর্শন কুল বা চার্মিং কিছু না।যেকোন কিছুতে আপনি যখন লজিক এবং রিজনিং খুঁজতে যাবেন তখন দেখবেন অনেক সো কল্ড চার্মিং জিনিস ফ্যাকাসে হয়ে যাচ্ছে। এই সত্য জানার ভয় থেকেও অনেকে বাস্তবতার মুখোমুখি হতে চায় না। কিন্তু নিজের আত্মার শান্তির জন্যে সত্যকে জানতে হবে। ‘কোল্ড ফিলোসফিকে’ মেনে নিতে হবে। নাহলে সত্য এসে যখন লামিয়ার সাপ রূপ উন্মোচন করবে তখন আর মেনে নিতে পারবেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ঢোল নিজে বাজানো না বরং আপনার আশে পাশে যেসব প্রকৃত জ্ঞানী নিজেকে আড়াল করে রেখেছে তাঁদেরকে খুঁজে বের করুন। তাঁদের কাছ থেকে জীবনের প্রকৃত মানে খুঁজে নেন। যেসব কথা, কাজ এবং ক্রিয়েটিভিটি আপনার গভীর চিন্তাকে জাগ্রত করতে পারে সেসবে মনোনিবেশ করেন। কিছু সময়ের হালকা বিনোদনের আশায় আপনার ভিতরের রিজনিং ক্ষমতাকে মেরে ফেলবেন না।যারা আমাদেরকে শোষণ করে তাদের চাওয়াই হচ্ছে আমাদের ভিতরের এনালাইটিক্যাল ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়া।
‘দা গ্রেটেস্ট এনিমি অফ নলেজ ইয নট ইগনোরেন্স, ইট ইয দা ইলিউশান অফ নলেজ’।– স্টিফেন হকিংস।
লেখক : কথাশিল্পী ও নাট্যকার।
বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে জার্মানি আগ্রহী বলে জানিয়েছেন ঢাকায় দেশটির নবনিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোটজ।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে বাণিজ্য বহুমুখীকরণ প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে জার্মানি বাংলাদেশের সঙ্গে চলমান কার্যক্রম গতিশীল রাখবে।
এ সময় তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধিরও প্রশংসা করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
জার্মানিকে আরও বেশি পরিমাণে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, হোম টেক্সটাইল, ওষুধ, প্লাস্টিক পণ্য, পাদুকা, সাইকেল এবং চামড়াজাত পণ্য আমদানির আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বাংলাদেশ এবং জার্মানির মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে। এ সম্পর্ক জোরদার করতে উভয় দেশের বাণিজ্যকে বহুমুখী করা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে উভয় দেশের লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে জার্মানি বাংলাদেশি পণ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য, যা আমাদের মোট রপ্তানি আয়ের ১০.৯৬ শতাংশ। এ সময় উপদেষ্টা জার্মানির আমদানিকারকদের প্রতি আরও বেশি পরিমাণে এ দেশের তৈরি পোষাক, হোম টেক্সটাইল, ওষুধ, প্লাস্টিক পণ্য, পাদুকা, সাইকেল এবং চামড়াজাত পণ্য আমদানির আহ্বান জানান।
জার্মানির রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজ বলেন, বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নে জার্মানি একসাথে কাজ করতে আগ্রহী। অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে বাণিজ্য বহুমুখীকরণ প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে তার দেশ বাংলাদেশের সাথে চলমান কার্যক্রম গতিশীল রাখবে।এ সময় তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধিরও প্রশংসা করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে জার্মানিতে ৪ হাজার ৮৫০ দশমিক ৮৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে এবং আমদানি মূল্য পরিশোধ করেছে ৯৪০ দশমিক ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান ও জার্মান দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন এনজা ক্রিস্টেন উপস্থিত ছিলেন।