রাব্বিউল হাসান, জয়পুরহাট
দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা চিনির দাম বেশি। আর এদিকে বছরের পর বছর লোকসান গুনছে দেশের সর্ববৃহৎ চিনিকল জয়পুরহাট সুগার মিলস লিমিটেড। অথচ উত্তরবঙ্গের এই ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান চালু থাকলে এই এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটে।
বাজারে বর্তমানে আমদানি করা বিভিন্ন কোম্পানির খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে আর প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকা কেজি দরে। অথচ সরকারি চিনিকলের খোলা চিনি প্রতি কেজি ৭৪ টাকা দরে এবং প্যাকেটজাত চিনি প্রতি কেজি ৭৫ টাকা দরে শুধু ডিলারদের কাছে বিক্রি হচ্ছে।
বর্তমানে সুগার মিলের গুদামে চিনি মজুত রয়েছে ৭৬ দশমিক শূন্য ১৮ মেট্রিক টন। মোলাসেস (চিটাগুড়) মজুত রয়েছে ৩ হাজার ৩৯৩ মেট্রিক টন। জানা গেছে, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের আওতায় ১৯৬২-৬৩ অর্থবছরে জয়পুরহাট সুগার মিল প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথম দিকে দৈনিক ১ হাজার ১৬ মেট্রিক টন আখ মাড়াই ও বার্ষিক ১০ হাজার ১৬০ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে চিনিকলটির যাত্রা শুরু হয়। এরপর থেকে লাভ-লোকসান মিলিয়ে চলছিল মিলটি। কিন্তু ১৯৯৪-৯৫ অর্থবছরে মাড়াই মৌসুমের পর থেকে চিনিকলটি আর লাভের মুখ দেখেনি।
বর্তমানে নতুন বয়লার স্থাপনের (বিএমআরআই) পর দৈনিক আখ মাড়াইক্ষমতা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৩২ মেট্রিক টন ও বার্ষিক চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে ২০ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন। তবে এই মিলের দীর্ঘদিনের পুরোনো যন্ত্রপাতি সংস্কার এবং দক্ষ শ্রমিকের অভাব ও কানামনা (কাজ নাই মজুরি নাই) জনবল দিয়ে কাজ করায় মিলের কর্মদক্ষতা কমেছে। বর্তমানে ১ হাজার ২৩৯ পদের বিপরীতে শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তা রয়েছেন ৮০৪ জন। এ ছাড়া অন্য ছয়টি সুগার মিল থেকে যোগ দিয়েছেন আরও ৪০০ জন।
জয়পুরহাট সুগার মিলের হিসাব বিভাগীয় প্রধান কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির লোকসান হয়েছে ৬০ কোটি ১৩ লাখ টাকা, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭৫ কোটি টাকা ৪০ লাখ টাকা এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে হয়েছে প্রায় ৬৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির ২০৯ জন শ্রমিক-কর্মচারীর অবসরকালীন গ্র্যাচুইটি পাওনা রয়েছে ১৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। বর্তমানে মিলটির শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের গত জুলাই ও আগস্ট মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে।
বর্তমানে চিনিকলের ২১২ কোটি টাকা পুঞ্জীভূত ঋণের বিনিময়ে প্রতিবছর সুদ দিতে হয় ৩৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা। ফলে এখন প্রতি কেজি চিনি উৎপাদনে খরচ হয় প্রায় ৭০১ টাকা। বেশি মূল্যে আমদানি করা চিনির চেয়ে এখানের চিনি ভালো ও বেশি লালচে হওয়া সত্ত্বেও কম দরে বিক্রি হচ্ছে।
লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে এ মিলে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর ফের আখ মাড়াই শুরু হয়। কিন্তু পরের বছরের ১৮ জানুয়ারি সেটি বন্ধ হয়ে যায়। প্রয়োজনীয় আখ না পাওয়ায় সুগার মিলে ২১ হাজার ৪৪৯ মেট্রিক টন আখ মাড়াইয়ে চিনি উৎপাদন হয় মাত্র ১ হাজার ১৬২ মেট্রিক টন। চিনি আহরণের হার ছিল ৫ দশমিক ৪০ শতাংশ, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।
জয়পুরহাট সুগার মিলের কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ রোপণ মৌসুমে ৭ হাজার ৫০০ একর জমিতে আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ৩০ একর জমিতে আখ রোপণ করা হয়েছে।
কৃষকরা বলছেন, আগের বছরগুলোতে আখের কম দাম নির্ধারণ, মূল্য পরিশোধে চিনিকল কর্তৃপক্ষের গড়িমসিসহ নানা হয়রানির কারণে আখের বদলে কৃষকরা ঝুঁকে পড়েছেন বিকল্প ফসল চাষে। পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জী গ্রামের কৃষক আবু তালেব ও আতাউর রহমান জানান, এখন সুগার মিলে আখ দেয়ার পর টাকার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। আবার আখের দামও কম।
আয়মারসুলপুর গ্রামের কৃষক রুহুল আমিন বলেন, গত চার-পাঁচ বছর আগে প্রায় ১৭০ একর আখের মুড়ি উপড়ে ফেলেন কৃষকরা। ফলে জয়পুরহাট চিনিকল এলাকায় আশঙ্কাজনকভাবে আখ চাষ কমে যায়। শ্রীমন্তপুর গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল হক বলেন, সুগার মিল এখন আর আগের মতো আখ কেনে না। মৌসুমে মিল চলে না দু-তিন সপ্তাহ।
মেসার্স নাবহান ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মশিউর রহমান রুবেল বলেন, যদি স্থানীয় বাজারে দেশি চিনি সহজে পাওয়া যেত, তাহলে সাধারণ মানুষ বেশি উপকৃত হতো এবং চিনিকলের লোকসানও কাটিয়ে ওঠা যেত।
জয়পুরহাট সুগার মিল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. আলী আকতার বলেন, সরকার এ বছর আখের মূল্য কুইন্টালপ্রতি ১০০ টাকার বেশি নির্ধারণ করায় আখচাষিদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে।
জয়পুরহাট সুগার মিল আখচাষি কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. খাজা নাজিম উদ্দিন বলেন, প্রণোদনাসহ আখের মূল্য কুইন্টালপ্রতি ৫৫০-৬০০ টাকা নির্ধারণ ও সময়মতো টাকা পরিশোধ করলে অবশ্যই আখ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠবেন চাষিরা। এতে ঘুরে যাবে অর্থনীতির চাকাও।
জয়পুরহাট সুগার মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ আখলাছুর রহমান দৈনিক বাংলাকে বলেন, বর্তমানে সার ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় বর্ধিত আখের মূল্য আরও বৃদ্ধিসহ কেন্দ্রে আখ সরবরাহের পরপরই মূল্য চান চাষিরা। এ ছাড়া আখ চাষাবাদের জন্য আগের মতো গুণগত মানসম্পন্ন সার, কীটনাশক ও ঋণপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা চান তারা।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রগুলোর বাধ্যবাধকতা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) উপদেশমূলক মতামত বাধ্যতামূলক না হলেও বর্তমান বৈশ্বিক বৈরি রাজনৈতিক বাস্তবতার বিপরীতে জলবায়ু নীতি পরিবর্তনে অনেক নৈতিক সাহস যোগাবে। এটি আন্তর্জাতিক নীতিনির্ধারণে চাপ সৃষ্টি করবে। এ চাপ বিবেচনায় নিয়ে রাষ্ট্রগুলোকে নীতিমালায় পরিবর্তন আনতেই হবে।”
আজ পরিবেশ অধিদপ্তরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রগুলোর বাধ্যবাধকতা সংক্রান্ত উপদেশমূলক মতামত বিষয়ে আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন এমন একটি ইস্যু যেখানে শুধু সুশীল সমাজ নয়, তরুণ প্রজন্মকেও সম্পৃক্ত করতে হবে। আজকের প্রজন্ম হয়তো টিকে যাবে, কিন্তু ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আমরা যদি এখনই পদক্ষেপ না নিই, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনবে।”
উপদেষ্টা তার বক্তব্যে নদীভাঙন, অবকাঠামোগত দুর্বলতা, জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা, এবং স্থানীয় সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, “নদীভাঙনপ্রবণ এলাকায় পুনর্বাসন ছাড়া টেকসই সমাধান সম্ভব নয়। ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ডকে আরও কার্যকর করতে হবে, যেখানে সরকার এবং এনজিও একসাথে কাজ করবে।”
তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ‘ন্যাচারাল রিসোর্স প্রটেকশন’ ও 'মরাল অবলিগেশন'-এর দৃষ্টিভঙ্গির কথাও তুলে ধরেন এবং উপদেষ্টা সবার প্রতি আহ্বান জানান—“আসুন, ১০-১২টি পরিবেশবান্ধব বার্তা তৈরি করে তরুণদের মাধ্যমে দেশের জন্য শক্তিশালী জলবায়ু বার্তা পৌঁছে দিই।”
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইনজীবী ও জলবায়ু পরিবর্তন নিগোশিয়েটর অ্যাডভোকেট হাফিজ খান। অধ্যাপক পায়াম আখভান, অধ্যাপক মেরি-ক্লেয়ার এবং নিকোল অ্যান ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ; পরিবেশ অঅধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড মো: কামরুজ্জামান ; ন্যাকমের নির্বাহী পরিচালক এস.এম. মুনজুরুল হান্নান খান; অ্যাকশনএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির; পিকেএসএস এর পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডঃ ফজলে রাব্বী সাদেক আহমেদ; পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো: জিয়াউল হক ও মির্জা শওকত আলী ; ব্রাকের পরিচালক লিয়াকত আলী ; সিপিআরডির প্রধান নির্বাহী মোঃ শামসুদ্দোহা; ফ্রেন্ডশিপের সিনিয়র পরিচালক কাজী আমদাদুল হক এবং ইয়ুথ নেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান প্রমুখ।
গোলটেবিল আলোচনায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, তরুণ প্রতিনিধি, পরিবেশবাদী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনপুর-মদনগঞ্জ সড়কের দীর্ঘদিনের বেহাল অবস্থার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় জনতা। গত শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্দর নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিক্ষোভকারীরা জানান, সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে প্রায়ই যানবাহন উল্টে দুর্ঘটনা ঘটে, এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। তারা দ্রুত এই সড়ক সংস্কারের দাবি জানান এবং এ বিষয়ে দায়িত্বে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান জানান। বিক্ষোভে একাত্মতা প্রকাশ করে যাত্রীরা এবং পরিবহন শ্রমিকরাও অংশগ্রহণ করেন।
গণঅধিকার পরিষদের নারায়ণগঞ্জ জেলার সহ-সভাপতি মেহেবুবা আক্তার বলেন, “বহুবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জেলা প্রশাসকের (ডিসি) দপ্তরে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সাবেক সদস্যসচিব হৃদয় ভূইয়া বলেন, “এই সড়কে অতিরিক্ত ওজনের পরিবহন চলাচলের ফলে দ্রুত সড়কটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনুমোদনবিহীন এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার দাবি জানাচ্ছি।”
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, “সকাল ১০টা থেকে স্থানীয় ছাত্র-জনতা সড়ক অবরোধ করে। খবর পেয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে আশ্বাস দেন যে, আগামী রবিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। এরপর অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।”
জুলাই পুনর্জাগরণ উদযাপনের অংশ হিসেবে নওগাঁয় ‘জুলাইয়ের মায়েরা’ শীর্ষক চলচ্চিত্র প্রদর্শণ, অভিভাবক সমাবেশ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর নওগাঁর সহযোগিতায় জেলা প্রশাসন এর আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল।
অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাদিয়া আফরিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহেল রানা, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইবনুল আবেদীন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ মাহফুজ আলম শ্রাবণের মা বেবি নাজনীন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বী, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সন্তানদের অনুপ্রেরনা দেওয়া মা হিসেবে তাসলিমা ফেরদৌস, নুর তাজসহ অন্যান্যরা।
এসময় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদের পরিবারের সদস্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সন্তানদের অনুপ্রেরনা দেওয়া মায়েরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্য জেলা প্রশাসক বলেন, জুলাই আগস্টে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে মমতাময়ী মায়েদের অবদান অনস্বীকার্য। আন্দোলনরে সময় মায়ের সামনে থেকে সন্তানকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, মা জানে না সে সন্তানকে মেরে ফেলা হবে কিনা গুম করা হবে। তারপরও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে মায়েরা তাদের সন্তানদের সাহস জুগিয়েছেন, সমর্থন দিয়েছেন এবং প্রয়োজনে আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। যাতে তাদের সন্তানরা একটি বৈষম্যহীন সমাজে বেড়ে উঠতে পারে। মায়েরা শুধু সন্তানদের সাহস ও সমর্থন দেননি, বরং আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে আন্দোলনকে সফল করতে সহায়তা করেছেন। অনেক মা আন্দোলনকারীদের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন এবং তাদেরকে খাবার সরবরাহ করেছেন। এ ঘটনা গুলোকে আমাদের হৃদয়ে পুনর্জাগরণ ও নতুন প্রজন্মের কাছে তোলে ধরতেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন।
এসময় জেলা প্রশাসক পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের সব জায়গায় সমান অংশ গ্রহণ ও সমান মর্যাদা নিশ্চিত করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানান।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে পৃথক তিনটি অভিযানে মাদকদ্রব্য, কারেন্ট জাল ও আতশবাজি জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার ভোরে মহিষকুন্ডি আশ্রায়ন বিওপি এলাকার পুরাতন ঠোটারপাড়া পদ্মা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় ৮ হাজার ৮০ পিস ইয়াবা ও ৭৭ কেজি কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। এসব মালামালের বাজারমূল্য প্রায় ২৭ লাখ ৩২ হাজার টাকা।
এর আগে শুক্রবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় রামকৃষ্ণপুর বিওপির আওতাধীন মোহাম্মদপুর মাঠে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় ২৪ বোতল মদ এবং ২৫৭ পিস ট্যাপেন্ডেবল ট্যাবলেট জব্দ করে বিজিবি। এসবের আনুমানিক বাজারমূল্য এক লাখ ১৩ হাজার ১০০ টাকা।
একইদিন রাত ১১টার দিকে চিলমারী বিওপির আওতাধীন শান্তিপাড়া মাঠ এলাকায় আরও একটি অভিযান চালানো হয়। এ সময় বিজিবি সদস্যরা এক হাজার পিস সিলডিনাফিল ট্যাবলেট এবং ১ হাজার ৮০ পিস আতশবাজি জব্দ করেন। যার বাজারমূল্য প্রায় তিন লাখ ২৭ হাজার টাকা।
বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, মালিক বিহীন এসব জব্দকৃত কারেন্ট জাল তাৎক্ষণিকভাবে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে এবং মাদকদ্রব্যগুলো মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ধ্বংসের জন্য ব্যাটালিয়নের মাদক স্টোরে জমা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, “সীমান্ত নিরাপত্তা রক্ষার পাশাপাশি মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি সর্বদা কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে”
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শমশেরনগর চা বাগান লেক থেকে রামলাল রবিদাস (৭৫) নামে এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে উপজেলার শমশেরনগর দেওছড়া চা বাগানের ১২ নম্বর সেকশনের একটি লেক থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত রামলাল রবিদাস শমশেরনগর চা বাগানের বজ্রনাথ রবিদাসের ছেলে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রামলাল গোসল করতে গিয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুজি করে কোথাও পায়নি। পরে লেকের পাড়ে দেখতে পাওয়া যায় রামলালের গামছা, জুতা ও সাবান। গোসল করতে গিয়ে লেকে ডুবে মারা গেছেন এমন ধারনা থেকে শুক্রবার শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ি ও ফায়ারসার্ভিসের ডুবুরি সিলেট থেকে এসে লেকের পানি থেকে লাশ উদ্ধার করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মাসুদ আহমদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে বাগানের লেকে রামলাল গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি।পরে মরদেহ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে জানিয়ে পরিবারের কাছে মরদেহ দেওয়া হয়েছে।’
=====
দেশের নৌপথ উন্নয়নে সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে। নদীবন্দরগুলোর কার্যকারিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আঞ্চলিক বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন। রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর ও পোর্ট অব প্রটোকল পরিদর্শন করে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন এ কথা বলেন।
নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রি জে: অব: ড. এম সাখাওয়া হোসেন বলেন, সুলতানগঞ্জ নৌবন্দরের অবকাঠামো গত উন্নয়ন করতে উচ্চ পর্যায়ে আলাপ করতে হবে। এটা আমি পজিটিভলি দেখবো।
শুক্রবার বেলা ১১টায় রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর ও পোর্ট অব প্রটোকল পরিদর্শন ও স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় করেছেন।
এ সময় তিনি বলেন, নৌবন্দরের কার্যক্রম শুরু করার জন্য এনবিআরের অনুমোদনসহ অবকাঠামো উন্নয়ন ও রাস্তাঘাট প্রয়োজন। এই কার্যক্রমের সাথে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা জড়িত। কাজেই সকল পক্ষের ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলে অচিরেই নদীবন্দরের কার্যক্রম শুরু হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ।এর আগে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন সরেজমিনে সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর ও কোর্ট অব কল ঘুরে দেখেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
ছোট্ট সিয়াম(১১)বাসার হেলিকপ্টারের আওয়াজ শুনে জানালার পাশে গিয়ে বাবাকে ডেকে দেখাচ্ছে বাবা দেখ হেলিকপ্টার অমনি একটি বুলেট এসে লাগল রায়হানের বুকে, বাবার চিৎকার! শাহবাগ উত্তাল,ছাত্র জনতার শ্লোগানে শ্লোগানে মুখর রাজপথ,উত্তপ্ত রোধে হাঁপিয়ে উঠেছে সবাই,এসময় পানির বোতল নিয়ে হাজির মুগ্ধ,পানি লাগবে পানি...মুহুর্তেই বুলেটে ঝাঝড়া হয়ে গেলে মুগ্ধের বুক, মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মুগ্ধ। রংপুরে ছাত্র জনতার মিছিলে নির্বিচারে গুলি ছুড়ছে পুলিশ,মিছিলের সামনে গিয়ে বুক পেতে দিয়ে বুলেট বুকে নিয়ে সবাইকে রক্ষা করল আবু সাঈদ। আবু সাইদের বুকে বুলেট আটকে বেঁচে গেল গণতন্ত্র,রক্ষা পেল দেশ আর এতেই পালাতে হল ১৬ বছরের স্বৈরাশাসককে।
গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের অংগ্রহণে চট্টগ্রামে ২৪ এর রঙে গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় এভাবেই তোলে ধরেন আনোয়ারা উপজেলার বখতিয়ার পাড়া চারপীর আউলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। আর এতেই চট্টগ্রাম অঞ্চলে কলেজ পর্যায়ে ১৯৩ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে মাদ্রাসাটি। এতে প্রথম স্থানে ব্রাক্ষ¥ণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজ পেয়েছে১৯৭ নম্বর ও তৃতীয় স্থান অধিকারী খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ পেয়েছে ১৯০ নম্বর।
গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়ালে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১১ জেলা ৩৩ টি কলেজ ও মদ্র্রাসার শিক্ষার্থী দল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা চেতনায় জুলাই ধারণ করে গ্রাফিতি তুলে ধরে।
পরে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা মায়া, উম্মে জান্নাতুল মাওয়া সাইমা,নুসরাত শাহীন জেরিন,সুমাইয়া আক্তার মাহি ও মেহেরন্নেসা। প্রতিযোগী সকলেই খুবই স্বত:স্ফুর্ত অনুভূতি প্রকাশ করেন। তাদের ভাষায়,গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জুলাই শহীদদে প্রতি শ্রদ্ধা ও তাঁদের স্মরণ করতে পেরে আমরা গর্বিত।
উম্মে হাবিবা মায়া বলেন,জুলাই গণঅভ্যুথানের চেতনা আগামী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে গ্রাফিতি ও চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা অসাধারণ ভূমিকা রাখছে। গত বছর এই সময় যে সংগ্রামী যোদ্ধারা রক্তা দিয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে, আন্দোলন করেছে, জীবন দিয়েছে তাদেরকে স্মরণ করি। আর সেই চিত্রই এই গ্রাফিতিতে ফুটে তোলার চেষ্ঠা করেছি।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কাজী আবদুল হান্নান বলেন,প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকরা সব ধরণের সহযোগিতা করেছে। আমার আনন্দিত।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌস হোসেন বলেন, বখতিয়ার পাড়া চারপীর আউলিয়া মাদ্রাসার এই অর্জনে পুরো উপজেলা গর্বিত। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে জুলাই চেতনা ধারণ করে রাখতে বিশেষ ভুমিকা রাখবে।
ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান উদযাপন উপলক্ষ্যে জুলাই মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) কর্তৃক আজ শুক্রবার সাইকেল র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাইকেল র্যালিটি ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর থেকে শুরু হয়ে ঢাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নগর ভবনে এসে শেষ হয়। ডিএসসিসির মাননীয় প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া এঁর উপস্থিতিতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মোঃ মাহবুব-উল-আলম র্যালির উদ্বোধন করেন।
সকাল ০৭:৩০ ঘটিকায় রবীন্দ্র সরোবর থেকে শুরু হওয়া এ র্যালিতে ১৯০ জন সাইক্লিস্টস এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নগরবাসী অংশগ্রহণ করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মোঃ মাহবুব-উল-আলম বলেন, "জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সাথে জনগণকে সম্পৃক্ত করে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।" বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য করার জন্য তিনি সরকারের পাশাপাশি প্রত্যেক নাগরিককে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানান।
র্যালি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো: জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ সকল বিভাগীয় প্রধান এবং ঢাকা ব্যাংকের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।