শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫
১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

বন্ধ হয়নি ইয়াবা আসা, সংকটে জেলেজীবন

ছবি : দৈনিক বাংলা
শাহরিয়ার হাসান
প্রকাশিত
শাহরিয়ার হাসান
প্রকাশিত : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১০:৩৪

শাহরিয়ার হাসান, টেকনাফ থেকে ফিরে

‘আমরা জলদাস, নোনা জল খেয়েই বেঁচে থাকি। কিন্তু সে বেঁচে থাকা আমাদের জন্য দিনকে দিন কঠিন হয়ে পড়ছে। একবেলা খাবার পাই তো অন্য বেলায় উপোস থাকি। ক্ষুধার জ্বালায় স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দিয়েছি। কিস্তির টাকা শোধ করতে ভিটামাটিও বিক্রি করেছি। তার পরও আমাদের দিকে কারো চোখ পড়ছে না। এক ইয়াবার বিষে গোটা জেলেপাড়া আক্রান্ত।’

কথাগুলো নিজের ভাষায় বলেছিলেন টেকনাফের নাফ নদীর তীরে জেলেপাড়ার নন্দলালের স্ত্রী কাজলী দাশ। তিনি বলেন, দুই ছেলে আর তিন মেয়ের পরিবার নিয়ে তাদের মরে যাওয়া আর বেঁচে থাকা একই হয়ে গেছে।

সম্প্রতি নাফ নদীর পাড়ে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় কাজলী দাশের। তার গল্পে শুধু তার পরিবারের কথা না ফুটে ওঠে আরও ১০ হাজার জেলে পরিবারের কথা। যাদের কেউই ভালো নেই। দু’বেলা দু’মুঠো ভাত তাদের জুটছে না।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ও ইয়াবা পাচার বন্ধে ২০১৭ সালে নাফ নদীতে মাছ শিকারসহ সব ধরনের যাতায়াত বন্ধ করে দেয় সরকার। নিষেধাজ্ঞায় নাফ নদীকেন্দ্রিক জীবন-জীবিকা নির্বাহ করা টেকনাফ উপজেলার ছয় ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার তিনটি ইউনিয়ন এবং এক পৌরসভার ১০ হাজার জেলে পরিবারে নেমে এসেছে অন্ধকার। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে এ নদীতে মাছ শিকার করে নিজেদের জীবন-জীবিকা, সংসার, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে আসছিলেন নদী পারের মানুষেরা। যদিও এই নিষেধাজ্ঞার ৫ বছর পরও থেমে নেই নাফ দিয়ে ইয়াবা পাচার। উল্টো বেড়েছে কয়েক গুণ। প্রশাসনের এই ব্যর্থতার দায় গুনতে হচ্ছে সেখানকার জেলেদের।

যাদের সুপারিশে জেলেদের জন্য এই নাফ নদী বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল, সেই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল ফয়জুল রহমান বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, নাফ নদীতে মাছ ধরা নিয়ে আগের মতো তেমন কঠোরতা নেই। চাইলে জেলেরা নাফ নদীতে নামতে পারে। তবে সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা বা অন্য যেকোনো মাদক চালান পাচার বন্ধে যা যা করার প্রয়োজন তা বিজিবি করে আসছে। কিন্তু টেকনাফের জেলেপাড়ায় গিয়ে বিজিবি পরিচালকের কথার মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।

টেকনাফে বেশ কয়েকটি জেলেপাড়া আছে। এর মধ্যে হোয়াইক্যংয়ের উত্তরপাড়া, খারাইংগ্যাঘোনা, বালুখালী লম্বাবিল, হ্নীলার হোয়াব্রাং, নাটমুড়ার জেলেপাড়া, জাদীমুরা, খারাংখালী, টেকনাফের জাইল্যাপাড়া, কায়ুকখালীপাড়া, নাজিরপাড়া, সাবরাংয়ের চৌধুরীপাড়া, নয়াপাড়া, শাহপরীর দ্বীপের জাইল্যাপাড়া, খারিয়াখালী এবং মাঝেরপাড়া অন্যতম।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘদিন নাফ নদীর তীরে নোঙর করে রাখা মাছ ধরার কয়েক হাজার নৌকা ও জাল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ক্ষতি কোটি কোটি টাকা। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে জীবন চালাতে যারা নৌকা ও জাল কিনেছিলেন, নদীতে যেতে না পেরে সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে পারেননি। ঋণের টাকার জন্য বাড়ি পাড়িয়ে নামাচ্ছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। আবার অসহায়ত্বের কারণে অনেক জেলে নিজেদের ভিটেমাটি বিক্রি করে পথে বসেছেন। চাপ সামলাতে না পেরে কয়েকটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

জীবিকার একমাত্র পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকে আবার বিকল্প আয়ের উৎস খুঁজেছেন। কিন্তু স্থানীয় বিভিন্ন প্রকল্পে রোহিঙ্গারা শ্রমিক হিসাবে কাজ করায় সে কাজ পেতেও জেলেদের অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের অনেকেই বলছেন, যদি জেলেদের মাধ্যমে ইয়াবা পাচার হয়ে থাকে, তাহলে রাতের বেলায় না হলেও অন্তত দিনের বেলায় নাফ নদীতে মাছ শিকারের অনুমতি দেয়া হলে জেলেরা খেয়ে-পরে বাঁচতে পারত।

টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেলে সমিতির সভাপতি আব্দুল গনি মাঝি বলেন, ‘নাফ নদী আমাদের একমাত্র জীবন-জীবিকার ঠিকানা। সেখানে জাল ফেলতে পারছি না আমরা। নদী বন্ধের পাঁচ বছরে জেলেপল্লির হাজার হাজার মানুষ কী কষ্ট করে সংসার চালাচ্ছে তা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না।’

হ্নীলার জেলেপল্লির বগির দাশ বলেন, ব্রিটিশ আমল থেকে এ নদীতে মাছ আহরণ করে চলছে আমাদের সংসার। কিন্তু এ রকম সংকট কখনো দেখিনি। শুকনো খাবার খেয়ে দিন যাচ্ছে আমাদের। কিন্তু সেটা কত দিন। শরীরের ভারে এখন আর কষ্ট করেও খেতে পারি না।

শামপদ দাসের বসবাস শাহপরীর দ্বীপ বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকায়। তিনি বলেন, প্রায় পাঁচ বছর সময় ধরে নাফ নদীতে মাছ শিকার করতে পারছি না। হাজার হাজার টাকা ঋণ নিয়ে নৌকা ও জাল তৈরি করেছিলাম। ওই টাকাও শোধ করতে পারছি না। নৌকা ও জাল অর্ধেক নষ্ট হয়ে গেছে। রুজি-রোজগারের উপকরণ নষ্ট হলে আত্মহত্যা ছাড়া কোনো পথ থাকবে না।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী দৈনিক বাংলাকে জানান, রোহিঙ্গা আসাকে কেন্দ্র করে নাফ নদী বন্ধ হওয়ায় আমার এলাকার হাজার হাজার জেলে পরিবার সীমাহীন দুর্ভোগে দিন পার করছে। অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের কারণে পাহাড়েও যেতে পারছে তারা না। তাই প্রয়োজনবোধে বিজিবির সহায়তায় নির্দিষ্ট একটি পয়েন্টে চেকিংয়ের মাধ্যমে নাফ নদীতে মাছ শিকারের অনুমতি দিয়ে নদীকেন্দ্রিক জীবিকা হারানো জেলেদের বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করছি।

স্থানীয় এই জনপ্রতিনিধি আরও বলেন, এই জেলেদের যে সরকার খুব সহায়তা করতে পারছে সেটাও না। মাছ ধরা বন্ধ থাকার মৌসুমে তাদের বছরে ৩০ কেজি চাল দিতে পারি। এর বাইরে আমারও কিছু করার থাকে না।

নাফ নদীতে যেভাবে ইয়াবা

১৯৯৭ সালে নাফ নদী দিয়ে বাংলাদেশে প্রথম ইয়াবার চালান ঢোকে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সূত্রের বরাতে জানা যায়। সেই চালানটি আনেন ইয়াবা সাম্রাজ্যের অন্যতম গডফাদার হিসেবে পরিচিত সাইফুল করিম। তার তৈরি ইয়াবা নেটওয়ার্কটি নাটকীয়ভাবে বাড়তে থাকে। তিনি বনে যান ইয়াবা সাম্রাজ্যের অধিপতিদের দলে। যদিও ২০১৯ সালে কথিত এক বন্দুকযুদ্ধে মারা যান সাইফুল।

সরকারি বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসা শুরুর পর থেকে তাদের সঙ্গে অবাধে আসতে শুরু করে ইয়াবা। পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। অভিযান ছাড়াই চেকপোস্ট বসিয়ে ২০১৭ সালে কক্সবাজারে প্রায় ৮৬ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়, যার সবগুলো প্রবেশ করেছিল নাফ নদী দিয়ে। মাদকের দেশীয় গডফাদাররা বহনকারী হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন রোহিঙ্গাদের। এরপর সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে নাফ নদীতে চলাচল বন্ধ কেরে দেয়।

তারপরও ইয়াবার চালান আসা কমেনি। উল্টো বছর বছর বেড়েছে। ইয়াবা উদ্ধারের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিশেষ অভিযান শুরুর পরে ২০১৮ সালে উদ্ধার করা হয় ১ কোটি ২৮ লাখ ইয়াবা বড়ি। সর্বশেষ গত বছর উদ্ধার হয় আড়াই কোটির বেশি ইয়াবা। সব মিলিয়ে পাঁচ বছরে ৭ কোটি ৮৫ লাখের বেশি ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে। পাঁচ বছরে মাদক উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়েছে ১০ হাজার ৪৭৮টি। গ্রেপ্তার ১৪ হাজার ১৭৩ জন।

মাদকবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রমে যুক্ত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নোঙরের কক্সবাজার জেলার নির্বাহী পরিচালক দিদারুল আলম বলেন, মাদকের ব্যবসার শিকড়ে হাত না দেয়া এবং শীর্ষ কারবারিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় মাদক চোরাচালান কমছে না, বরং বেড়েছে।

যে কারণে ইয়াবা ব্যবসায় ঝুঁকেছেন কারবারিরা

কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও র্যাবে দেয়া তথ্য বলছে, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে বেশির ভাগ ইয়াবা আসে টেকনাফ হয়ে। টেকনাফে মাদক ঢোকার অন্যতম পথ হিসেবে পরিচিত নাফ নদীর তীরবর্তী হ্নীলা, দমদমিয়া, জাদিমোড়া এবং বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন টেকনাফ সদরের মহেশখালিয়া পাড়া, তুলাতলী, হাবিবছড়া ও নোয়াখালী পাড়া।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তালিকাভু্ক্ত এক মাদক ব্যবসায়ী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ইয়াবা ব্যবসায় কাঁচা টাকা। লাভও অনেক। শুরুর দিকে শুধু টাকার জন্যই এই কারবারে নেমেছিলাম। তারপর ফিরতে চাইলেও পরিনি এ কারবার থেকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিয়ানমার থেকে গড়ে ২৫ থেকে ৪০ টাকায় কিনে প্রতিটি ইয়াবা ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয় টেকনাফে। যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ব্যাপক নজরদারির মধ্যেও টেকনাফ দিয়ে দেশের ভেতরে মাদক ঢুকছে। আমরা মাদকের চালান ঠেকাতে চেকপোস্ট বাড়াচ্ছি।

যেভাবে সমাধানের পথ দেখছে সরকার

নাফ নদী জেলেদের জন্য খুলে দেয়ার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক বরাবর একাধিকবার আবেদন করেছিলেন স্থানীয় জেলেরা। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো এ প্রস্তাবে রাজি হয়নি। সম্প্রতি বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত জাতীয় কমিটির পঞ্চম সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বাংলাদেশে মাদক আনা-নেয়ার রুট হিসেবে নাফ নদী ব্যবহৃত হওয়ায় এই নদীতে মাছ ধরার ট্রলারের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে অন্য দেশের নৌযান বাংলাদেশের জলসীমায় এসে মাছ আহরণ করলে সহজেই তাদের শনাক্ত করা যাবে।

সম্প্রতি মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সমুদ্রে যত নৌযান মাছ ধরে, সেগুলোকে শিগগিরই নিবন্ধনের আওতায় আনা কঠিন হবে। তাই নৌযানগুলোকে রং করে নম্বর দিয়ে দেয়া হবে, যাতে নৌযানগুলো চিহ্নিত করা যায়। এটা দ্রুত করতে বলা হয়েছে, না হলে মিয়ানমারের কিছু নৌকা আমাদের মধ্যে ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সমুদ্রে মাছ ধরার নৌযানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এসব প্রযুক্তির মাধ্যমে জানা যাবে নৌযানের সার্বিক তথ্য। এমনকি কোনো নৌযান দুর্ঘটনায় পড়লে তার অবস্থান শনাক্ত করে দ্রুত উদ্ধার করা যাবে জেলেদের। প্রথম পর্যায়ে ১০ হাজার নৌযানে বসানো হবে এসব প্রযুক্তি। চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে এসব ডিভাইসের কার্যকারিতা।

মানবাধিকারকর্মী আইন সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিচালক নীনা গোস্বামী দৈনিক বাংলাকে বলেন, কয়েক পুরুষ ধরে এই পেশায় আছেন ওই সব জেলেরা। ওনারা এই কাজ ছাড়া আর কিছুই জানেন না। দীর্ঘদিন নদী বন্ধ করে রাখলে তাদের জন্যও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা উচিত ছিল। এত দিনেও সেটা হয়নি, আর ইয়াবা আসাও বন্ধ করা যায়নি। সরকারের উচিত তাদের জন্য কিছু ভাবা। স্বাধীন দেশে তারা নিজেদের যেন পরাধীন মনে না করেন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক বুধবার দৈনিক বাংলাকে বলেন, আমরা এর আগেও অনেকবার চেষ্টা করেছি আমাদের জেলেদের জন্য নাফ নদী সম্পূর্ণভাবে খুলে দিতে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। গত ৫ বছরে জেলা প্রশাসন থেকেও মনে হয় সেভাবে সুপারিশ করা হয়নি। তবে সম্প্রতি আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি আগামীতে যেকোনো মিটিংয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে এই বিষয়টি সমাধান করা হবে।


জীবন ইয়ুথ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিজয় ধর, রাঙামাটি
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জীবন ইয়ুথ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শুক্রবার (১লা আগস্ট) রাঙামাটি আসামবস্তি-রাঙ্গাপানি সংযোগ সড়কের দু'পাশে কাপ্তাই হ্রদের তীরবর্তী পার ঘেঁষে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে সংগঠনটি।
বার্ষিক বৃক্ষরোপণ-২০২৫ উপলক্ষ্যে সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ ইমন ও দুর্যোগ ও ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ মনির গাজী এর নেতৃত্বে দুইটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আসামবস্তি-রাঙাপানি সংযোগ সড়ক ও আসামবস্তি মহিউছ সুন্নাহ ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বৃক্ষরোপণ করা হয়।
এসব গাছের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বনজ, ফলদ, ঔষধীসহ সড়কে শোভাবর্ধনকারী বিভিন্ন গাছ।
“গাছ লাগাই, আগামীকে বাঁচাই”প্রতিপাদ্যকে ঘিরে কদম, কৃষ্ণচূড়া, হরতকি, বকুল, কাঠবাদাম, সোনালু, মহুয়া, নাগেশ্বরসহ বিভিন্ন গাছের চারা রোপণ করেন সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবীরা।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয় সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যবস্থাপনা ও অর্থায়নে তাদের এই উদ্যোগ। বৃক্ষ নিধন রোধ এবং পাহাড়ের সজীবতা ফিরাতে স্বেচ্ছাশ্রমে তারা কাজ করছে বলে জানান সংগঠনের সদস্যরা।


রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর ও পোর্ট অব প্রটোকল পরিদর্শনে নৌপরিবহন উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আমিনুল ইসলাম বনি-রাজশাহী

দেশের নৌপথ উন্নয়নে সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে। নদীবন্দরগুলোর কার্যকারিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আঞ্চলিক বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন। রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর ও পোর্ট অব প্রটোকল পরিদর্শন করে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন এ কথা বলেন।
নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রি জে: অব: ড. এম সাখাওয়া হোসেন বলেন, সুলতানগঞ্জ নৌবন্দরের অবকাঠামো গত উন্নয়ন করতে উচ্চ পর্যায়ে আলাপ করতে হবে। এটা আমি পজিটিভলি দেখবো।
শুক্রবার বেলা ১১টায় রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর ও পোর্ট অব প্রটোকল পরিদর্শন ও স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় করেছেন।
এ সময় তিনি বলেন, নৌবন্দরের কার্যক্রম শুরু করার জন্য এনবিআরের অনুমোদনসহ অবকাঠামো উন্নয়ন ও রাস্তাঘাট প্রয়োজন। এই কার্যক্রমের সাথে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা জড়িত। কাজেই সকল পক্ষের ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলে অচিরেই নদীবন্দরের কার্যক্রম শুরু হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ।এর আগে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন সরেজমিনে সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর ও কোর্ট অব কল ঘুরে দেখেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।


জুলাই গ্রাফিতি এঁকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে দ্বিতীয় আনোয়ারার বখতিয়ারপাড়া চারপীর আউলিয়া মাদ্রাসা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আনোয়ারা(চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি

ছোট্ট সিয়াম(১১)বাসার হেলিকপ্টারের আওয়াজ শুনে জানালার পাশে গিয়ে বাবাকে ডেকে দেখাচ্ছে বাবা দেখ হেলিকপ্টার অমনি একটি বুলেট এসে লাগল রায়হানের বুকে, বাবার চিৎকার! শাহবাগ উত্তাল,ছাত্র জনতার শ্লোগানে শ্লোগানে মুখর রাজপথ,উত্তপ্ত রোধে হাঁপিয়ে উঠেছে সবাই,এসময় পানির বোতল নিয়ে হাজির মুগ্ধ,পানি লাগবে পানি...মুহুর্তেই বুলেটে ঝাঝড়া হয়ে গেলে মুগ্ধের বুক, মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মুগ্ধ। রংপুরে ছাত্র জনতার মিছিলে নির্বিচারে গুলি ছুড়ছে পুলিশ,মিছিলের সামনে গিয়ে বুক পেতে দিয়ে বুলেট বুকে নিয়ে সবাইকে রক্ষা করল আবু সাঈদ। আবু সাইদের বুকে বুলেট আটকে বেঁচে গেল গণতন্ত্র,রক্ষা পেল দেশ আর এতেই পালাতে হল ১৬ বছরের স্বৈরাশাসককে।

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের অংগ্রহণে চট্টগ্রামে ২৪ এর রঙে গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় এভাবেই তোলে ধরেন আনোয়ারা উপজেলার বখতিয়ার পাড়া চারপীর আউলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। আর এতেই চট্টগ্রাম অঞ্চলে কলেজ পর্যায়ে ১৯৩ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে মাদ্রাসাটি। এতে প্রথম স্থানে ব্রাক্ষ¥ণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজ পেয়েছে১৯৭ নম্বর ও তৃতীয় স্থান অধিকারী খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ পেয়েছে ১৯০ নম্বর।

গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়ালে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১১ জেলা ৩৩ টি কলেজ ও মদ্র্রাসার শিক্ষার্থী দল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা চেতনায় জুলাই ধারণ করে গ্রাফিতি তুলে ধরে।

পরে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা মায়া, উম্মে জান্নাতুল মাওয়া সাইমা,নুসরাত শাহীন জেরিন,সুমাইয়া আক্তার মাহি ও মেহেরন্নেসা। প্রতিযোগী সকলেই খুবই স্বত:স্ফুর্ত অনুভূতি প্রকাশ করেন। তাদের ভাষায়,গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জুলাই শহীদদে প্রতি শ্রদ্ধা ও তাঁদের স্মরণ করতে পেরে আমরা গর্বিত।

উম্মে হাবিবা মায়া বলেন,জুলাই গণঅভ্যুথানের চেতনা আগামী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে গ্রাফিতি ও চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা অসাধারণ ভূমিকা রাখছে। গত বছর এই সময় যে সংগ্রামী যোদ্ধারা রক্তা দিয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে, আন্দোলন করেছে, জীবন দিয়েছে তাদেরকে স্মরণ করি। আর সেই চিত্রই এই গ্রাফিতিতে ফুটে তোলার চেষ্ঠা করেছি।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কাজী আবদুল হান্নান বলেন,প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকরা সব ধরণের সহযোগিতা করেছে। আমার আনন্দিত।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌস হোসেন বলেন, বখতিয়ার পাড়া চারপীর আউলিয়া মাদ্রাসার এই অর্জনে পুরো উপজেলা গর্বিত। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে জুলাই চেতনা ধারণ করে রাখতে বিশেষ ভুমিকা রাখবে।


নওগাঁয় ১টাকায় একবেলা খাবারের ১৫০তম সপ্তাহ পালন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মো. সবুজ হোসেন নওগাঁ
নওগাঁর সামাজিক সংগঠন ফ্রেন্ডস প্যানেলের উদ্যোগে সমাজের দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মাঝে ১টাকায় একবেলা ভরপেট খাবার আয়োজনের ১৫০তম সপ্তাহ উদযাপন অনুষ্টিত হয়েছে।

আজ (১আগষ্ট) শুক্রবার দুপুরে শহরের মরছুলা উচ্চবিদ্যালয়ে ১৫০তম সপ্তাহ পূর্তি উপলক্ষে এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিকী।

আলোচনাসভা শেষে ১টাকায় প্রায় ২০০জন এতিম, দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মাঝে ভরপেট খাবার খাওয়ার অনুষ্ঠান হয়।
নওগাঁ ফ্রেন্ডস ক্লাবের সভাপতি রিমন আলী মৃধার সভাপতিত্বে এসময় সংগঠনটির উপদেষ্টা মানষ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন, ছাত্র প্রতিনিধি ফজলে রাব্বি, আরমান হোসেন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

ফ্রেন্ডস প্যানেল নওগাঁর সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন বলেন- আমরা দেখি রাস্তায় অনেক অসহায় মানুষ খাবার পায়না। বিশেষ করে শুক্রবারে শহরের অধিকাংশ দোকানপাট হোটেল বন্ধ থাকে। এতে করে গরিব অসহায় মানুষ গুলো সেদিন দুপুরে খাবার পায়না। সে উপলব্ধি থেকে আমরা ফ্রেন্ডস প্যানেলের উদ্যোগে প্রতি শুক্রবার দুপুরে ১টাকায় খাবার বিতরন করে থাকি।
১টাকা দিয়ে কেন ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেক মানুষ আছে যারা সাহায্য নিতে চাননা বা অনেকে ফ্রি তে খাবার খেতে চাননা। যার ফলে আমরা ১টাকা মূল্যের বিনিময়ে খাবার দিয়ে থাকি।
সমাজের বিত্ত্ববানদের সহযোগিতা পেলে আগামিতে আরো বড় পরিসরে সপ্তাহে ৩-৪দিন খাবার বিতরণের এমন কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে বলে জানান সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক।

“মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারেনা” এমন স্লোগানে নওগাঁর ফ্রেন্ডস প্যানেলের সদস্যরা ১শ ৫০সপ্তাহ ধরে নিয়মিত ভাবে প্রতি সপ্তাহে ১টাকায় একবেলা ভরপেট খাবার আয়োজন করে আসছে।


পাঁচ শতাধিক ইয়াবাসহ দুই যুবক ডিবির জালে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হাসনাইন তালুকদার দিবস -ঝালকাঠি
ঝালকাঠি জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অভিযানে ৫৩০ পিচ ইয়াবা ট্যবলেটসহ দুই যুবক গ্রেফতার। পহেলা আগষ্ট রাতভর দু'ফায় মাদক উদ্ধার অভিযানের নেতৃত্ব দেন ডিবির এসআই মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।
পুলিশ জানায়, প্রথম পর্যায়ে রাত দেরটার দিকে পৌর শহরের পালবাড়ী এলাকা থেকে আব্দুল্লাহ আল জোবায়ের নামের ২১ বছর বয়সী এক যুবককে আটক করা হয়। পুলিশের ভাষ্যমতে ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রয়ের জন্য জোবায়ের একটি গলির মুখে অবস্থান করছিলো।
পুলিশ আরো জানায়, ব্যপক জিজ্ঞাসাবাদের পর জোবায়ের তাদেরকে জানায় সে ইয়াবা ট্যাবলেট পাইকারী দরে ক্রয় করে এলাকায় খুচরা মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রয় করেন। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর তার বন্ধু মো. তাসিন কাজী নামের ২৩ বছর বয়সী আরেক যুববকের নাম বলে দেয়। সে তাসিনের কাছে ইয়াবা রেখে এসেছে বলেও স্বিকার করেন।
রাতেই জোবায়েরকে সাথে নিয়ে শহরের কাপুরিয়া পট্টি এলাকায় তাসিন কাজীর বাসায় অভিযান চালনো হয়। তখন রাত সোয়া ২টা। ভেতর থেকে গেইট না খোলায় পুলিশ দুই ঘন্টা অপেক্ষা করেন। ভোর রাত চারটার পর গেইট খুললে জোবায়েরকে সাথে নিয়ে ফ্লাটে প্রবেশ করেন ডিবি পুলিশ।
ততক্ষণে জোবায়েরের রেখে যাওয়া ইয়াবা ট্যাবলেটের পোটলাটি জানালা দিয়ে ভবনের বাইরে ফেলে দেয় তাসিন। পুলিশের ভয়ে বন্ধু জোবায়ের রেখে যাওয়া ইয়াবা ফেলে দেয়ার কথা স্বিকার করার পরে তাসিন নিজেই বাহিরে গিয়ে ফেলে দেয়া ইয়াবার পোটলাটি কুড়িয়ে এনে দেয়।
পোটলাটি খোলা হলে দেখাযায় তার ভিতরে ৫৩০ পিচ ইয়াবা ট্যবলেট রয়েছে। যা জব্দ করছে ডিবিপুলিশ। এসময় তাসিন এবং জোবায়েরকে মাদক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
গ্রেফতারকুত আব্দুল্লাহ আল জোবায়ের পালবাড়ি এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে। এবং গ্রেফতারকৃত অপর যুবক তাসিন কাপুরিয়া পট্টি এলাকার কাজী আবুল কালামের ছেলে।
ঝালকাঠি ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সেলিম উদ্দিন গনমাধ্যমকে জানান, দুই মাদক কারবারির বিরুদ্ধে ঝালকাঠি সদর থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। ঝালকাঠিতে মাদক উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে।'


পটুয়াখালীতে এবি পার্টির উদ্যোগে চিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এইচ এম মোজাহিদুল ইসলাম নান্নু, পটুয়াখালী প্রতিনিধি
জুলাই গনঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আমার বাংলাদেশ পার্টি পটুয়াখালী জেলা শাখার উদ্যেগে চিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের ড. আতহার উদ্দীন মিলনায়তনে চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন দলটির কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক ব্যারিষ্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। আমার বাংলাদেশ পার্টি পটুয়াখালী জেলা শাখার আহবায়ক প্রফেসর ড. এ এস এম ইকবাল হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডাঃ মেজর আব্দুল ওহাব মিনার ও সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী নাসির। আলোচনা শেষে জুলাই আন্দোলনের প্রদর্শিত চিত্র ঘুরে দেখেন উপস্থিত সকলে।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এবি পার্টির সাধারন সম্পাদক ব্যারিষ্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, জুলাই ২৪ কে নিয়ে যেন ৭১ এর মত চেতনা ব্যাবসা না হয়। জুলাই থেকে শিখে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়বো। যারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না তাদের বাস্তবতা অওয়ামী লীগের মতো হবে। যারা নিজেদের বদলে নতুন বাংলাদেশের জন্য নতুন ভাবে কাজ করবেন তারা সকলের কাছে সমাদৃত হবেন।


মাগুরায় ৪ আগস্ট ছাত্র জনতার মিছিলে গুলি ও টিয়ারশেলের সামনে উর্মি ছিলেন এগিয়ে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শিউলি আফরোজ সাথী, মাগুরা :-
জুলাই -আগস্ট রক্তাক্ত আন্দোলনে মাগুরার ফ্যাসিস্ট পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলি ও টিয়ারসেলের সামনে ৪ আগস্ট জীবন বাজি রেখে রাজপথের মিছিলে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন নারী নেত্রী উমবিয়া কুলসুম উর্মি ।
ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের এক দফা দাবিতে নারীদের সংগঠিত করে একের পর এক রাজপথে ছাত্র জনতার সাথে মিছিল পিকেটিং এ অংশ নিয়ে আলোচনায় উঠে আসেন মাগুরা জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী ও সাবেক নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর এই উর্মি। ৬০ উর্ধ্ব এই নারী তার নিজের বয়স ও শারীরিক অবস্থা চিন্তা না করে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে এবং তার সন্তানদের কথা চিন্তা করে তাদেরকে সাথে নিয়েই রাজপথে নেমে পড়েন । মিছিল এবং সংঘর্ষে নেতৃত্ব দেওয়ার ভিডিও ও ছবি তার প্রমাণ।
তার সাথে কথা হলে তিনি আন্দোলনে কিভাবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তা নিজ মুখে বর্ণনা করেন - "ফ্যাসিস্ট সরকার যেদিন তার দোসর ও পুলিশ বাহিনী দিয়ে একের পর এক ছাত্রদের গুলি করে হত্যা করছিল আমি সেদিন ঘরে বসে থাকতে পারিনি ।অন্যদের মতো ঝাঁপিয়ে পড়লাম রাজপথে ।আমাদের একটাই দাবি ছিল "হাসিনা হটাও দেশ বাঁচাও' ৪ আগস্ট আমি আমার মহিলা কর্মীদের ফোন দিয়ে ডেকে আনি ।সেদিন আমার সাথে যোগ দেয় স্মৃতি, ইতি, সুমা ,জান্নাত , বিউটি ,পাপিয়া ,শারমিন এবং আমার কলেজ পড়ুয়া নাতনি জান্নাতুল মনিরা শর্মী সহ আরো অনেকে। ছাত্রসহ সাধারণ জনতার সাথে সেদিন আমরাও একটি মিছিল নিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী দোসরদের হাত থেকে পারনান্দুয়ালী এলাকা দখল করি। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ঐদিন আমারই সামনে আমার মহল্লার ছোট ভাই ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান রাব্বি গুলিবিদ্ধ হয় , হাসপাতালে নিয়েও তাকে বাঁচানো যায়নি। যা আমাকে এখনো ব্যথিত করে। ও গুলিতে আমিও মারা যেতে পারতাম। এছাড়াও শেষ বিকেলে রায় নগরের ফরহাদ নামে আরো একজনকে আমরা হারাই ।সেও আমার চোখের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। দুজন যুবককে যখন চোখের সামনে মারা যেতে দেখি তখন অনেকটাই ভেঙে পড়েছিলাম ,আর ভাবছিলাম হে আল্লাহ এর শেষ কোথায় ? আল্লাহ আমাদেরকে নিরাশ করেননি ।পরের দিন ৫ আগস্ট খুনি হাসিনার পতন হলো যা ছিল আমাদের একটা অর্জন আমরা পেলাম আরো একটি স্বাধীনতা।
শুধু তাই নয়, হাসিনা পতনের পরপরই সারা দেশের ন্যায় মাগুরাতেও ব্যাপকহারে শুরু হয়ে গেল ভাঙচুর ও লুটতরাজ। সেটা বন্ধ করার জন্য আমি জেলার সিনিয়র নেতাকর্মীদের সাথে রাস্তায় নেমে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক করতে সক্ষম হই।
সবশেষে নতুন বাংলাদেশ ফিরে পেলাম হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে। ।
আমার প্রত্যাশা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হোক যেখানে সব ধর্ম বর্ণের মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবে এবং মত প্রকাশ করতে পারবে।
এরকম হাজারো নারীর গল্প আছে, যারা পুরুষের পাশাপাশি দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছে কিন্তু তা অনেকটাই অজানা রয়ে যায় ।


ছাত্র-জনতার জুলাই গণ-অভ্যুত্থান উদযাপন উপলক্ষ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে সাইকেল র‍্যালি অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান উদযাপন উপলক্ষ্যে জুলাই মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) কর্তৃক আজ শুক্রবার সাইকেল র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাইকেল র‍্যালিটি ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর থেকে শুরু হয়ে ঢাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নগর ভবনে এসে শেষ হয়। ডিএসসিসির মাননীয় প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া এঁর উপস্থিতিতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মোঃ মাহবুব-উল-আলম র‍্যালির উদ্বোধন করেন।

সকাল ০৭:৩০ ঘটিকায় রবীন্দ্র সরোবর থেকে শুরু হওয়া এ র‍্যালিতে ১৯০ জন সাইক্লিস্টস এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নগরবাসী অংশগ্রহণ করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মোঃ মাহবুব-উল-আলম বলেন, "জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সাথে জনগণকে সম্পৃক্ত করে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।" বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য করার জন্য তিনি সরকারের পাশাপাশি প্রত্যেক নাগরিককে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানান।


ডিএসসিসি প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, "এই ঢাকাকে আগামী প্রজন্মের বাসযোগ্য করার জন্য পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই।" পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন সিটি কর্পোরেশনের একার পক্ষে সম্ভব নয় উল্লেখ করে প্রশাসক এ বিষয়ে নাগরিকদের সম্পৃক্ততা ও সহযোগিতা কামনা করেন।

র‍্যালি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো: জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ সকল বিভাগীয় প্রধান এবং ঢাকা ব্যাংকের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।


বিআরটি প্রকল্প ও ঢাকা আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প পরিদর্শন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষ সহকারী (উপদেষ্টা পদমর্যাদা) লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবঃ) আব্দুল হাফিজ মহোদয় বিআরটি প্রকল্পের আওতাধীন টঙ্গী ফ্লাইওভারে ওঠা-নামার র‌্যাম্পসহ সড়কের বিভিন্ন অংশ এবং ঢাকা আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ উপস্থিত ছিলেন।

পরিদর্শন শেষে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষ সহকারী (উপদেষ্টা পদমর্যাদা) লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবঃ) আব্দুল হাফিজ মহোদয়ের সভাপতিত্বে আব্দুল্লাহপুর ক্রসিং, উত্তরা, ঢাকায় ঢাকা এলিভেটেড, ঢাকা আশুলিয়া এলিভেটেড, বিআরটি ও অন্যান্য সড়ক অবকাঠামো ও ঢাকার বিভিন্ন অংশের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মতবিনিময় সভায় মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে বাস ওঠা-নামার র‍্যাম্প নির্মাণ, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিএফডিসি গেইট থেকে কুতুবখালী অংশে কাজের অগ্রগতি, আশুলিয়া হতে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অসমাপ্ত কাজের অগ্রগতি, টঙ্গী ফ্লাইওভারের আব্দুল্লাহপুর পয়েন্টে ওঠা-নামার র‍্যাম্পের অবশিষ্ট কাজের অগ্রগতি, আব্দুল্লাহপুর, আজমপুর ও এয়ারপোর্ট রোড (উত্তরা) এলাকায় বিআরটি প্রকল্পের অধীন রাস্তাসমূহের মেরামত কাজ বিষয়াবলীসমূহ আলোচনা হয়। মতবিনিময় সভায় মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষ সহকারী মহোদয় আবদুল্লাহপুর ক্রসিং-এ সড়কের জরুরি মেরামতসহ প্রকল্পের চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলা করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ সম্পন্নের জন্য বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

সভায় সেতু বিভাগের সচিব বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জনজীবনে যাতায়াতের ক্ষেত্রে স্বস্তি, সময় সাশ্রয় ও সেবা সহজিকরণ করার বিষয়ে সদয় নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তাছাড়া সভায় সচিব প্রকল্পের গুণগতমান নিশ্চিত করে সমস্যাসমূহ দ্রুত নিরসনের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারগণের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে প্রকল্পের কাজ সম্পন্নের জন্য গুরুত্ব আরোপ করেন।

এছাড়াও সভায় বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী, সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালকগণ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, ঢাকা বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট পিএলসি, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ট্রাফিক)সহ সংশ্লিষ্টগণ উপস্থিত ছিলেন।


সিলেট সীমান্তে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার ভারতীয় চোরাচালান পণ্য জব্দ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সিলেট প্রতিনিধি

সিলেটের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকার ভারতীয় চোরাচালান পণ্য জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি) পরিচালিত এক সমন্বিত অভিযানে এসব পণ্য জব্দ করা হয়।

বিজিবি জানায়, জেলার সীমান্তবর্তী সংগ্রাম, প্রতাপপুর, পান্থুমাই, বিছনাকান্দি, তামাবিল ও দমদমিয়া বিওপি'র আওতাধীন এলাকায় একযোগে অভিযান চালিয়ে এসব মালামাল জব্দ করা হয়।

জব্দ করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে— সানগ্লাস, গরু, অ্যালোভেরা জেল, শাড়ি, বাসমতি চাল, সুপারি, জিরা, সাবান, আদা, কিসমিস, বডি স্প্রে, শ্যাম্পু, হেয়ার অয়েল, ফেসওয়াশ, লবণ, আইবল ক্যান্ডি, নিভিয়া সফ্ট ক্রিম, চা-পাতা ও নাইসিল পাউডার। এসব পণ্যের আনুমানিক বাজারমূল্য ১ কোটি ২০ লাখ ৩৩ হাজার ১৫০ টাকা বলে জানিয়েছে বিজিবি।

সিলেট ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হক জানান, সীমান্ত নিরাপত্তা রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির আভিযানিক কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে তারা।

তিনি আরও জানান, জব্দ করা পণ্যের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।


পঙ্গুত্বকে জয় করে জীবন যুদ্ধে এগিয়ে চলছেন বাছির

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হাবিবুর রহমান শান্ত, ভালুকা (ময়মনসিংহ)

জন্ম থেকেই দুটি অঙ্গের অভাব—ডান পা নেই, ডান হাতও নেই কবজি থেকে আঙুল পর্যন্ত। ফলে স্ট্রেচারে ভর দিয়েও হাটতে পারে না। চলতে হয় এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে। তবুও ভিক্ষা নয়, এক পা আর এক হাতে জীবনের কঠিন লড়াই লড়ে যাচ্ছেন ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার দক্ষিণ রাংচাপড়া গ্রামের হতদরিদ্র বাছির কুমার(৩৭)। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তার জীবন থামাতে পারেনি। সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে তিনি নিজের মতো করে গড়ে তুলেছেন চায়ের ছোট একটি দোকান।

বাছির জানান, পাঁচ বছর বয়সে তার বাবা আব্দুল কুমার মারা যান। রেখে যান শুধু বাড়ি ভিটার জমি টুকু। মা হাজেরা খাতুন অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনোমতে আট সন্তানকে লালন-পালন করেন। ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবচেয়ে ছোট এবং জন্ম থেকেই শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। শারীরিক অক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ভিক্ষাবৃত্তিতে না গিয়ে মাত্র ১০ বছর বয়সে বড় ভাইয়ের সঙ্গে চায়ের দোকানে কাজ শুরু করেন। পরে নিজেই ভালুকা-গফরগাঁও সড়কের পাশে দক্ষিণ রাংচাপড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একটি ছোট চায়ের দোকান দেন। প্রায় ২২ বছর ধরে এক পায়ে লাফিয়ে ও এক হাতে দোকান চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

১৪ বছর আগে আকলিমা নামের এক নারীকে বিয়ে করেন বাছির। তাদের দুই ছেলে তানভীর (১২) ও রানা (১০) বর্তমানে স্কুলে পড়ে। দৈনিক আয় থেকে খরচ বাদ দিয়ে হাতে থাকে তিন থেকে চারশ টাকা। এই টাকায় সংসার চালানো, ছেলে-মেয়ের পড়ালেখা ও খাওয়া-দাওয়া মেটাতে হিমশিম খেতে হয়।

চায়ের দোকানের ছাউনি জংধরা টিনে ভরা, সামান্য বৃষ্টিতেই পানি পড়ে দোকানের ভেতর। নিজের মতো করে তা মেরামতের সামর্থ্যও নেই। আরও দুঃসহ তার চলাচল। বাড়ি থেকো দোকান প্রায় দেড় কিলোমিটার। প্রতিদিন দীর্ঘ এই পথ পাড়ি দিতে হয় এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে।

বাছিরের ইচ্ছা একটি ব্যাটারিচালিত হুইল চেয়ার। সেটি হলে বাম হাতে চালিয়ে তিনি বাড়ি থেকে দোকানে যেতে পারতেন সহজে। কিন্তু সেই চেয়ার কেনার সামর্থ্য তার নেই।

এলাকাবাসী বাছিরের চলাচল সহজ করার জন্য সমাজের বিত্তশালীদের কাছে একটি ব্যাটারি চালিত হুইল চেয়ারের দাবি জানিয়েছেন।


নানান অজুহাতে দাম বাড়ানো ইলিশের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মো. সাইফুল ইসলাম, চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি 

মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে জেলেদের জালে বিভিন্ন আকারের ইলিশ ধরা পড়ছে। ভোলার চরফ্যাশনের মৎস্যঘাটগুলোতে জেলে ও পাইকারদের হাঁকডাকে কিছুটা সরগরম হলেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। যা, সাধারণ মানুষে ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। বিক্রেতারা বলছেন, গত সপ্তাহের বৈরী আবহাওয়ার কারণে জেলেরা নদী ও সমুদ্রে যেতে না পারায় ইলিশের সরবরাহ কমেছে, এজন্য দাম বেশি। তবে ক্রেতারা জানিয়েছেন, আড়তদাররা কমিশন বাণিজ্যের পাশাপাশি দাম হাঁকিয়ে মাছ বিক্রি করছেন।

চরফ্যাশনের বড় মৎস্যঘাটগুলোর মধ্যে সামরাজ, নতুন স্লুইসগেট, খেজুরগাছিয়া, মাইনউদ্দি ঘাট, ঢালচর, বকসীরঘাট, ঘোষেরহাট, চরকচ্ছপিয়া ও কুকরি মুকরি অন্যতম। কাকডাকা ভোর থেকে প্রতিদিন কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয় এসব ঘাটে।

চরফ্যাশন উপজেলায় প্রায় ৯০ হাজার জেলে রয়েছে। উপজেলার নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৪ হাজার ২৮১জন। অনিবন্ধিত জেলে রয়েছে প্রায় ৪৬ হাজার। এসব জেলেরা নদী ও সাগরে মাছ শিকার করে। এদের মধ্যে বেশিরভাগ জেলে সামরাজ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছ বিক্রি করেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চরফ্যাশন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু।

কয়েকটি মৎস্যঘাট ঘুরে দেখা গেছে, কেউ ট্রলার থেকে ঝুড়িতে করে মাছ নিয়ে আসছে। কেউ আবার পাইকার ডাকছে, কেউ মাছ ক্রয় করে মোকামে যাচ্ছেন। এর মধ্যে সব থেকে বেশি বেচাকেনা হয় ইলিশের। এখানে ইলিশের পাশাপাশি কাউয়া, ঢেলা, লইট্টা, পোয়া, জাবা কই, মেইদ, টেংরা, রূপচাঁদাসহ প্রায় ২৫ প্রজাতির মাছ বিক্রি হয়। সাগরের ইলিশের থেকে নদীর ইলিশের দাম তুলনামূলক বেশি। দেড় কেজি ওজনের ইলিশের হালি ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা। এক কেজি ওজনের ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। পাঁচশ গ্রাম থেকে আটশো গ্রাম ওজনের হালি ৫ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাইনউদ্দি মৎস্যঘাটে ইলিশ কিনতে আসা সাইফুল ইসলাম মুকুল নামে এক ক্রেতা বলেন, 'ভরা মৌসুমেও ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া। আমি এক থেকে সাতশো গ্রাম ওজনের (আকারভেদে) এক হালি ইলিশ মাছ কিনেছি সাত হাজার টাকায়। যা স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুন। নানান অযুহাতে চড়া দামে ইলিশ বিক্রি করছেন আড়তদাররা। তারা তাদের ইচ্ছে মতো দাম হাঁকিয়ে ইলিশ মাছের ডাক তোলেন। এছাড়াও শতকরা সাত টাকা ইলিশে এবং শতকরা পনেরো টাকা অন্যান্য প্রজাতির মাছে কমিশন বাণিজ্য করেন আড়তদাররা। ক্রেতারাতো দাদন গ্রহণ করেননি, তাহলে কমিশন কেন দিবে? তাদের মনগড়া নিয়মে বাধ্য হয়েই ক্রেতারা মাছ কিনেন। তাদের এমন অনিয়মের নিয়ন্ত্রণ নেই কারো হাতে।'

সামরাজ ঘাটের জেলে কাসেম মাঝি (৫৬), কবির মাঝি (৪৫) বলেন, ‘নদীতে আগের তুলনায় ইলিশ ধরা পড়ছে। তবে প্রতিদিন দুই-তিন হালি ইলিশ পাওয়া যায়। তবে ধার-দেনা শোধ করার সুযোগ নেই। কারণ দৈনন্দিন খরচ বাদ দিলে বাড়তি টাকা থাকে না।'

নৌকায় বসে ইলিশ জাল সেলাইয়ের কাজ করছিলেন সামরাজ মৎস্যঘাটের দাদনভুক্ত কয়েকজন জেলে। জাল সেলায়ের কাজ সেরে জেলে আবদুল (৩২) বলেন, '৪ দিন আগে ৫ জন মাঝি-মাল্লা নিয়ে নদীতে গিয়েছিলাম। যে পরিমান মাছ পেয়েছিলাম, তাতে ৩৬ হাজার টকার মাছ বিক্রি করে কিছু টাকা মহাজনকে দিয়েছি। কোনমতে সংসার চালাতে হচ্ছে। দেনা করে পরিবারের জন্য চাল-ডাল কিনতে হয়েছে।' জেলে আবদুল এর মতো একই প্রসঙ্গ তুলে কথা বলেছেন সেখানে থাকা রফিক মাঝি (৪২), ইদ্রিস (৩৭), আব্বাস উদ্দিন (২৩) ও রত্তন মাঝি (৪৪)।

সামরাজ মৎস্যঘাটের আড়তদার হেলাল উদ্দিন টিপু বলেন, 'বৈশাখের মাঝামাঝি মৌসুম শুরু হয় এবং শেষ হয় আশ্বিনের শেষ দিকে। গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টির কারনে নদীতে কিছুটা ইলিশ ধরা পড়ছে। প্রত্যেক নৌকায় আশানুরুপ মাছ না পেলেও যে পরিমান পাচ্ছে, তাতে তেলের খরচ তুলতে পারছে। ইলিশের পরিমাণটা বাড়লে জেলেরা ট্রলার মালিক-মহাজনের দাদন পরিশোধ করতে পারবে।'

সামরাজ মৎস্যঘাট জেলে সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, 'অধিক ঝুঁকি জেনেও মাছের ব্যবসা করছি। দীর্ঘ বছর ধরে এ ব্যবসার সাথে আমি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। চরফ্যাশন উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তর মৎস্যঘাট হলো সামরাজ ঘাট। ইলিশের ভরা মৌসুমে এ ঘাটে দৈনিক ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়। এ বছরের শুরুর দিকে যে খারাপ অবস্থা ছিলো, তা গত ৯-১০ বছরেও দেখিনি। বৃষ্টি-বাতাসে কারনে নদীর পানি বেড়েছে। একারনে নদীতে ইলিশ ধরা পড়েছে তা-ও আশানুরূপ না। জেলেরা তেলের খরচ উঠাতে পারলেও আড়তদারদের দাদন পরিশোধ করার মতো সুযোগ হয় না। এই মৎস্যঘাটে ৯৮ জন মৎস্য আড়তদার রয়েছে। এসব আড়তদাররা প্রায় দেড়শ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।'

চরফ্যাশন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, 'বৃষ্টিপাত হওয়ায় নদীতে লবনাক্ততা কমেছে। এতে নদীতে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে জেলেরা নদী ও সমুদ্রে যেতে পারেনি। একারনে ইলিশের সরবরাহ কম। বর্তমানে ইলিশের দাম স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি। আড়তদারদের কমিশন বাণিজ্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জেলেদেরকে আড়তদারগণ দাদন দিয়ে থাকেন, হয়তো জেলেদের কাছ থেকে এজন্য কমিশন নেন। তবে ক্রেতাদের থেকেও কমিশন নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নাই। কমিশনের বিষয়ে আড়তদারদের সাথে যোগাযোগ করবো।'


নওগাঁ সীমান্তে ১০ বাংলাদেশিকে পুশইন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্ত এলাকা দিয়ে ১০ জন বাংলাদেশিকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য (বিএসএফ)। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন সীমান্ত পিলার ২৫৬/৭ এস এর নিকট দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইন করলে বিজিবির সদস্যরা তাদের আটক করেন। এদের মধ্যে ২জন পুরুষ এবং ৮জন মহিলা। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পত্নীতলা ১৪ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।

আটকরা হলেন, আছমা বেগম (৪০), খাদিজা বেগম (৩৪), পাখি বেগম (২৪), রুমা বেগম (২৫), কাকলি আক্তার (২৭), রুজিনা আক্তার (৩৩), কোহিনুর বেগম (২৬), নাসরিন বেগম (৩৩), মঞ্জুরুল ইসলাম (৩৬), সুমন হোসেন (২৭)। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের নাগরিক।

বিজিবি আরও জানান, আগ্রাদ্বিগুন বিওপির টহল কমান্ডার জেসিও সুবেদার মো. জিহাদ আলীর নেতৃত্বে একটি টহলদল সীমান্তের শূন্য লাইন হতে আনুমানিক ০১ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মহেষপুর নামক স্থান হতে বাংলাদেশী ১০ জনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে আটক করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে বোম্বাই শহরে ২জন পুরুষ রাজমিস্ত্রী এবং ৮জন মহিলা বাসা বাড়ীতে কাজ করার নিমিত্তে গমণ করে। পরবর্তীতে তাদেরকে ভারতীয় পুলিশ (সিআইডি) কর্তৃক আটক করা হয়। গত ২৯ জুলাই ভারতের হরিবংশীপুর বিএসএফ ক্যাম্পের নিকট তাদের হস্তান্তর করেন। পরবর্তীতে বিএসএফ কর্তৃক বৃহস্পতিবার ভোর রাতে সীমান্ত পিলার ২৫৬/৭ এস এর নিকট দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইন করলে বিজিবি টহলদল তাদের আটক করেন। উক্ত আটককৃত বাংলাদেশী নাগরিকদেরকে বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।


banner close