টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মো. শহিদুল আলম খান (৬৫) নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে কিল-ঘুষি মেরে আহত করার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। কাগজপত্র ছাড়া সরকারের ১০ টাকা কেজি দরের চাল না দেয়ায় আনোয়ার ইসলাম ছারু (৪৫) নামে ওই বিএনপি নেতা ক্ষিপ্ত হয়ে ডিলার শহিদুল আলমকে আহত করেন।
সোমবার উপজেলার উয়ার্শী বাজার সংলগ্ন খেয়াঘাট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল আলম খান উপজেলার উয়ার্শী গ্রামের মৃত ওয়াজেদ খানের ছেলে। তাকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি মির্জাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, সোমবার সকাল ৯টার দিকে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আনোয়ার ইসলাম ছারু উয়ার্শী বাজারে সরকারের ১০ টাকা কেজি দরে হতদরিদ্রদের চালের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল আলম খানের দোকানে যান। এ সময় দোকান কর্মচারী মোস্তাক মিয়া প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া তাকে চাল দিতে পারবেন না বলে জানান। এতে ছারু মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে কর্মচারী মোস্তাক মিয়াকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, সকাল ১০টার দিকে উয়ার্শী বাজার ঘাটপার এলাকায় ডিলার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল আলমের সঙ্গে ছারু মিয়ার দেখা হলে তিনি তার ওপরও ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। এ ব্যাপারে নিষেধ করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে শহিদুল আলমকে কিল ঘুষি ও লাথি মারতে থাকেন। কিল-ঘুষির আঘাতে শহিদুল আলমের বাম চোখের চশমা ভেঙে তিনি রক্তাক্ত জখম হন। আহত শহিদুল আলমের চিৎকারে আশপাশের লোকজন, স্থানীয় ইউপি সদস্য আমিনুর রহমান খান ও জাহাঙ্গীর রহমান এসে তাকে উদ্ধার করেন। পরে তাকে উপজেলার জামুর্কী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়।
ইউপি সদস্য আমিনুর রহমান খান জানান, তার সামনেই এই ঘটনা ঘটেছে।
এ ব্যাপারে বিএনপি নেতা আনোয়ারুল ইসলাম ছারুর সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম দৈনিক বাংলাকে জানান, তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দেশের নৌপথ উন্নয়নে সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে। নদীবন্দরগুলোর কার্যকারিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আঞ্চলিক বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন। রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর ও পোর্ট অব প্রটোকল পরিদর্শন করে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন এ কথা বলেন।
নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রি জে: অব: ড. এম সাখাওয়া হোসেন বলেন, সুলতানগঞ্জ নৌবন্দরের অবকাঠামো গত উন্নয়ন করতে উচ্চ পর্যায়ে আলাপ করতে হবে। এটা আমি পজিটিভলি দেখবো।
শুক্রবার বেলা ১১টায় রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর ও পোর্ট অব প্রটোকল পরিদর্শন ও স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় করেছেন।
এ সময় তিনি বলেন, নৌবন্দরের কার্যক্রম শুরু করার জন্য এনবিআরের অনুমোদনসহ অবকাঠামো উন্নয়ন ও রাস্তাঘাট প্রয়োজন। এই কার্যক্রমের সাথে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা জড়িত। কাজেই সকল পক্ষের ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলে অচিরেই নদীবন্দরের কার্যক্রম শুরু হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ।এর আগে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন সরেজমিনে সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর ও কোর্ট অব কল ঘুরে দেখেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
ছোট্ট সিয়াম(১১)বাসার হেলিকপ্টারের আওয়াজ শুনে জানালার পাশে গিয়ে বাবাকে ডেকে দেখাচ্ছে বাবা দেখ হেলিকপ্টার অমনি একটি বুলেট এসে লাগল রায়হানের বুকে, বাবার চিৎকার! শাহবাগ উত্তাল,ছাত্র জনতার শ্লোগানে শ্লোগানে মুখর রাজপথ,উত্তপ্ত রোধে হাঁপিয়ে উঠেছে সবাই,এসময় পানির বোতল নিয়ে হাজির মুগ্ধ,পানি লাগবে পানি...মুহুর্তেই বুলেটে ঝাঝড়া হয়ে গেলে মুগ্ধের বুক, মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মুগ্ধ। রংপুরে ছাত্র জনতার মিছিলে নির্বিচারে গুলি ছুড়ছে পুলিশ,মিছিলের সামনে গিয়ে বুক পেতে দিয়ে বুলেট বুকে নিয়ে সবাইকে রক্ষা করল আবু সাঈদ। আবু সাইদের বুকে বুলেট আটকে বেঁচে গেল গণতন্ত্র,রক্ষা পেল দেশ আর এতেই পালাতে হল ১৬ বছরের স্বৈরাশাসককে।
গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের অংগ্রহণে চট্টগ্রামে ২৪ এর রঙে গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় এভাবেই তোলে ধরেন আনোয়ারা উপজেলার বখতিয়ার পাড়া চারপীর আউলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। আর এতেই চট্টগ্রাম অঞ্চলে কলেজ পর্যায়ে ১৯৩ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে মাদ্রাসাটি। এতে প্রথম স্থানে ব্রাক্ষ¥ণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজ পেয়েছে১৯৭ নম্বর ও তৃতীয় স্থান অধিকারী খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ পেয়েছে ১৯০ নম্বর।
গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়ালে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১১ জেলা ৩৩ টি কলেজ ও মদ্র্রাসার শিক্ষার্থী দল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা চেতনায় জুলাই ধারণ করে গ্রাফিতি তুলে ধরে।
পরে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা মায়া, উম্মে জান্নাতুল মাওয়া সাইমা,নুসরাত শাহীন জেরিন,সুমাইয়া আক্তার মাহি ও মেহেরন্নেসা। প্রতিযোগী সকলেই খুবই স্বত:স্ফুর্ত অনুভূতি প্রকাশ করেন। তাদের ভাষায়,গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জুলাই শহীদদে প্রতি শ্রদ্ধা ও তাঁদের স্মরণ করতে পেরে আমরা গর্বিত।
উম্মে হাবিবা মায়া বলেন,জুলাই গণঅভ্যুথানের চেতনা আগামী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে গ্রাফিতি ও চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা অসাধারণ ভূমিকা রাখছে। গত বছর এই সময় যে সংগ্রামী যোদ্ধারা রক্তা দিয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে, আন্দোলন করেছে, জীবন দিয়েছে তাদেরকে স্মরণ করি। আর সেই চিত্রই এই গ্রাফিতিতে ফুটে তোলার চেষ্ঠা করেছি।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কাজী আবদুল হান্নান বলেন,প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকরা সব ধরণের সহযোগিতা করেছে। আমার আনন্দিত।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌস হোসেন বলেন, বখতিয়ার পাড়া চারপীর আউলিয়া মাদ্রাসার এই অর্জনে পুরো উপজেলা গর্বিত। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে জুলাই চেতনা ধারণ করে রাখতে বিশেষ ভুমিকা রাখবে।
ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান উদযাপন উপলক্ষ্যে জুলাই মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) কর্তৃক আজ শুক্রবার সাইকেল র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাইকেল র্যালিটি ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর থেকে শুরু হয়ে ঢাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নগর ভবনে এসে শেষ হয়। ডিএসসিসির মাননীয় প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া এঁর উপস্থিতিতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মোঃ মাহবুব-উল-আলম র্যালির উদ্বোধন করেন।
সকাল ০৭:৩০ ঘটিকায় রবীন্দ্র সরোবর থেকে শুরু হওয়া এ র্যালিতে ১৯০ জন সাইক্লিস্টস এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নগরবাসী অংশগ্রহণ করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মোঃ মাহবুব-উল-আলম বলেন, "জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সাথে জনগণকে সম্পৃক্ত করে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।" বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য করার জন্য তিনি সরকারের পাশাপাশি প্রত্যেক নাগরিককে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানান।
র্যালি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো: জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ সকল বিভাগীয় প্রধান এবং ঢাকা ব্যাংকের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষ সহকারী (উপদেষ্টা পদমর্যাদা) লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবঃ) আব্দুল হাফিজ মহোদয় বিআরটি প্রকল্পের আওতাধীন টঙ্গী ফ্লাইওভারে ওঠা-নামার র্যাম্পসহ সড়কের বিভিন্ন অংশ এবং ঢাকা আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শন শেষে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষ সহকারী (উপদেষ্টা পদমর্যাদা) লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবঃ) আব্দুল হাফিজ মহোদয়ের সভাপতিত্বে আব্দুল্লাহপুর ক্রসিং, উত্তরা, ঢাকায় ঢাকা এলিভেটেড, ঢাকা আশুলিয়া এলিভেটেড, বিআরটি ও অন্যান্য সড়ক অবকাঠামো ও ঢাকার বিভিন্ন অংশের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে বাস ওঠা-নামার র্যাম্প নির্মাণ, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিএফডিসি গেইট থেকে কুতুবখালী অংশে কাজের অগ্রগতি, আশুলিয়া হতে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অসমাপ্ত কাজের অগ্রগতি, টঙ্গী ফ্লাইওভারের আব্দুল্লাহপুর পয়েন্টে ওঠা-নামার র্যাম্পের অবশিষ্ট কাজের অগ্রগতি, আব্দুল্লাহপুর, আজমপুর ও এয়ারপোর্ট রোড (উত্তরা) এলাকায় বিআরটি প্রকল্পের অধীন রাস্তাসমূহের মেরামত কাজ বিষয়াবলীসমূহ আলোচনা হয়। মতবিনিময় সভায় মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষ সহকারী মহোদয় আবদুল্লাহপুর ক্রসিং-এ সড়কের জরুরি মেরামতসহ প্রকল্পের চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলা করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ সম্পন্নের জন্য বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
সভায় সেতু বিভাগের সচিব বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জনজীবনে যাতায়াতের ক্ষেত্রে স্বস্তি, সময় সাশ্রয় ও সেবা সহজিকরণ করার বিষয়ে সদয় নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তাছাড়া সভায় সচিব প্রকল্পের গুণগতমান নিশ্চিত করে সমস্যাসমূহ দ্রুত নিরসনের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারগণের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে প্রকল্পের কাজ সম্পন্নের জন্য গুরুত্ব আরোপ করেন।
এছাড়াও সভায় বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী, সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালকগণ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, ঢাকা বাস র্যাপিড ট্রানজিট পিএলসি, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ট্রাফিক)সহ সংশ্লিষ্টগণ উপস্থিত ছিলেন।
সিলেটের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকার ভারতীয় চোরাচালান পণ্য জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি) পরিচালিত এক সমন্বিত অভিযানে এসব পণ্য জব্দ করা হয়।
বিজিবি জানায়, জেলার সীমান্তবর্তী সংগ্রাম, প্রতাপপুর, পান্থুমাই, বিছনাকান্দি, তামাবিল ও দমদমিয়া বিওপি'র আওতাধীন এলাকায় একযোগে অভিযান চালিয়ে এসব মালামাল জব্দ করা হয়।
জব্দ করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে— সানগ্লাস, গরু, অ্যালোভেরা জেল, শাড়ি, বাসমতি চাল, সুপারি, জিরা, সাবান, আদা, কিসমিস, বডি স্প্রে, শ্যাম্পু, হেয়ার অয়েল, ফেসওয়াশ, লবণ, আইবল ক্যান্ডি, নিভিয়া সফ্ট ক্রিম, চা-পাতা ও নাইসিল পাউডার। এসব পণ্যের আনুমানিক বাজারমূল্য ১ কোটি ২০ লাখ ৩৩ হাজার ১৫০ টাকা বলে জানিয়েছে বিজিবি।
সিলেট ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হক জানান, সীমান্ত নিরাপত্তা রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির আভিযানিক কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে তারা।
তিনি আরও জানান, জব্দ করা পণ্যের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
জন্ম থেকেই দুটি অঙ্গের অভাব—ডান পা নেই, ডান হাতও নেই কবজি থেকে আঙুল পর্যন্ত। ফলে স্ট্রেচারে ভর দিয়েও হাটতে পারে না। চলতে হয় এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে। তবুও ভিক্ষা নয়, এক পা আর এক হাতে জীবনের কঠিন লড়াই লড়ে যাচ্ছেন ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার দক্ষিণ রাংচাপড়া গ্রামের হতদরিদ্র বাছির কুমার(৩৭)। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তার জীবন থামাতে পারেনি। সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে তিনি নিজের মতো করে গড়ে তুলেছেন চায়ের ছোট একটি দোকান।
বাছির জানান, পাঁচ বছর বয়সে তার বাবা আব্দুল কুমার মারা যান। রেখে যান শুধু বাড়ি ভিটার জমি টুকু। মা হাজেরা খাতুন অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনোমতে আট সন্তানকে লালন-পালন করেন। ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবচেয়ে ছোট এবং জন্ম থেকেই শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। শারীরিক অক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ভিক্ষাবৃত্তিতে না গিয়ে মাত্র ১০ বছর বয়সে বড় ভাইয়ের সঙ্গে চায়ের দোকানে কাজ শুরু করেন। পরে নিজেই ভালুকা-গফরগাঁও সড়কের পাশে দক্ষিণ রাংচাপড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একটি ছোট চায়ের দোকান দেন। প্রায় ২২ বছর ধরে এক পায়ে লাফিয়ে ও এক হাতে দোকান চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
১৪ বছর আগে আকলিমা নামের এক নারীকে বিয়ে করেন বাছির। তাদের দুই ছেলে তানভীর (১২) ও রানা (১০) বর্তমানে স্কুলে পড়ে। দৈনিক আয় থেকে খরচ বাদ দিয়ে হাতে থাকে তিন থেকে চারশ টাকা। এই টাকায় সংসার চালানো, ছেলে-মেয়ের পড়ালেখা ও খাওয়া-দাওয়া মেটাতে হিমশিম খেতে হয়।
চায়ের দোকানের ছাউনি জংধরা টিনে ভরা, সামান্য বৃষ্টিতেই পানি পড়ে দোকানের ভেতর। নিজের মতো করে তা মেরামতের সামর্থ্যও নেই। আরও দুঃসহ তার চলাচল। বাড়ি থেকো দোকান প্রায় দেড় কিলোমিটার। প্রতিদিন দীর্ঘ এই পথ পাড়ি দিতে হয় এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে।
বাছিরের ইচ্ছা একটি ব্যাটারিচালিত হুইল চেয়ার। সেটি হলে বাম হাতে চালিয়ে তিনি বাড়ি থেকে দোকানে যেতে পারতেন সহজে। কিন্তু সেই চেয়ার কেনার সামর্থ্য তার নেই।
এলাকাবাসী বাছিরের চলাচল সহজ করার জন্য সমাজের বিত্তশালীদের কাছে একটি ব্যাটারি চালিত হুইল চেয়ারের দাবি জানিয়েছেন।
মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে জেলেদের জালে বিভিন্ন আকারের ইলিশ ধরা পড়ছে। ভোলার চরফ্যাশনের মৎস্যঘাটগুলোতে জেলে ও পাইকারদের হাঁকডাকে কিছুটা সরগরম হলেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। যা, সাধারণ মানুষে ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। বিক্রেতারা বলছেন, গত সপ্তাহের বৈরী আবহাওয়ার কারণে জেলেরা নদী ও সমুদ্রে যেতে না পারায় ইলিশের সরবরাহ কমেছে, এজন্য দাম বেশি। তবে ক্রেতারা জানিয়েছেন, আড়তদাররা কমিশন বাণিজ্যের পাশাপাশি দাম হাঁকিয়ে মাছ বিক্রি করছেন।
চরফ্যাশনের বড় মৎস্যঘাটগুলোর মধ্যে সামরাজ, নতুন স্লুইসগেট, খেজুরগাছিয়া, মাইনউদ্দি ঘাট, ঢালচর, বকসীরঘাট, ঘোষেরহাট, চরকচ্ছপিয়া ও কুকরি মুকরি অন্যতম। কাকডাকা ভোর থেকে প্রতিদিন কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয় এসব ঘাটে।
চরফ্যাশন উপজেলায় প্রায় ৯০ হাজার জেলে রয়েছে। উপজেলার নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৪ হাজার ২৮১জন। অনিবন্ধিত জেলে রয়েছে প্রায় ৪৬ হাজার। এসব জেলেরা নদী ও সাগরে মাছ শিকার করে। এদের মধ্যে বেশিরভাগ জেলে সামরাজ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছ বিক্রি করেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চরফ্যাশন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু।
কয়েকটি মৎস্যঘাট ঘুরে দেখা গেছে, কেউ ট্রলার থেকে ঝুড়িতে করে মাছ নিয়ে আসছে। কেউ আবার পাইকার ডাকছে, কেউ মাছ ক্রয় করে মোকামে যাচ্ছেন। এর মধ্যে সব থেকে বেশি বেচাকেনা হয় ইলিশের। এখানে ইলিশের পাশাপাশি কাউয়া, ঢেলা, লইট্টা, পোয়া, জাবা কই, মেইদ, টেংরা, রূপচাঁদাসহ প্রায় ২৫ প্রজাতির মাছ বিক্রি হয়। সাগরের ইলিশের থেকে নদীর ইলিশের দাম তুলনামূলক বেশি। দেড় কেজি ওজনের ইলিশের হালি ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা। এক কেজি ওজনের ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। পাঁচশ গ্রাম থেকে আটশো গ্রাম ওজনের হালি ৫ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাইনউদ্দি মৎস্যঘাটে ইলিশ কিনতে আসা সাইফুল ইসলাম মুকুল নামে এক ক্রেতা বলেন, 'ভরা মৌসুমেও ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া। আমি এক থেকে সাতশো গ্রাম ওজনের (আকারভেদে) এক হালি ইলিশ মাছ কিনেছি সাত হাজার টাকায়। যা স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুন। নানান অযুহাতে চড়া দামে ইলিশ বিক্রি করছেন আড়তদাররা। তারা তাদের ইচ্ছে মতো দাম হাঁকিয়ে ইলিশ মাছের ডাক তোলেন। এছাড়াও শতকরা সাত টাকা ইলিশে এবং শতকরা পনেরো টাকা অন্যান্য প্রজাতির মাছে কমিশন বাণিজ্য করেন আড়তদাররা। ক্রেতারাতো দাদন গ্রহণ করেননি, তাহলে কমিশন কেন দিবে? তাদের মনগড়া নিয়মে বাধ্য হয়েই ক্রেতারা মাছ কিনেন। তাদের এমন অনিয়মের নিয়ন্ত্রণ নেই কারো হাতে।'
সামরাজ ঘাটের জেলে কাসেম মাঝি (৫৬), কবির মাঝি (৪৫) বলেন, ‘নদীতে আগের তুলনায় ইলিশ ধরা পড়ছে। তবে প্রতিদিন দুই-তিন হালি ইলিশ পাওয়া যায়। তবে ধার-দেনা শোধ করার সুযোগ নেই। কারণ দৈনন্দিন খরচ বাদ দিলে বাড়তি টাকা থাকে না।'
নৌকায় বসে ইলিশ জাল সেলাইয়ের কাজ করছিলেন সামরাজ মৎস্যঘাটের দাদনভুক্ত কয়েকজন জেলে। জাল সেলায়ের কাজ সেরে জেলে আবদুল (৩২) বলেন, '৪ দিন আগে ৫ জন মাঝি-মাল্লা নিয়ে নদীতে গিয়েছিলাম। যে পরিমান মাছ পেয়েছিলাম, তাতে ৩৬ হাজার টকার মাছ বিক্রি করে কিছু টাকা মহাজনকে দিয়েছি। কোনমতে সংসার চালাতে হচ্ছে। দেনা করে পরিবারের জন্য চাল-ডাল কিনতে হয়েছে।' জেলে আবদুল এর মতো একই প্রসঙ্গ তুলে কথা বলেছেন সেখানে থাকা রফিক মাঝি (৪২), ইদ্রিস (৩৭), আব্বাস উদ্দিন (২৩) ও রত্তন মাঝি (৪৪)।
সামরাজ মৎস্যঘাটের আড়তদার হেলাল উদ্দিন টিপু বলেন, 'বৈশাখের মাঝামাঝি মৌসুম শুরু হয় এবং শেষ হয় আশ্বিনের শেষ দিকে। গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টির কারনে নদীতে কিছুটা ইলিশ ধরা পড়ছে। প্রত্যেক নৌকায় আশানুরুপ মাছ না পেলেও যে পরিমান পাচ্ছে, তাতে তেলের খরচ তুলতে পারছে। ইলিশের পরিমাণটা বাড়লে জেলেরা ট্রলার মালিক-মহাজনের দাদন পরিশোধ করতে পারবে।'
সামরাজ মৎস্যঘাট জেলে সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, 'অধিক ঝুঁকি জেনেও মাছের ব্যবসা করছি। দীর্ঘ বছর ধরে এ ব্যবসার সাথে আমি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। চরফ্যাশন উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তর মৎস্যঘাট হলো সামরাজ ঘাট। ইলিশের ভরা মৌসুমে এ ঘাটে দৈনিক ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়। এ বছরের শুরুর দিকে যে খারাপ অবস্থা ছিলো, তা গত ৯-১০ বছরেও দেখিনি। বৃষ্টি-বাতাসে কারনে নদীর পানি বেড়েছে। একারনে নদীতে ইলিশ ধরা পড়েছে তা-ও আশানুরূপ না। জেলেরা তেলের খরচ উঠাতে পারলেও আড়তদারদের দাদন পরিশোধ করার মতো সুযোগ হয় না। এই মৎস্যঘাটে ৯৮ জন মৎস্য আড়তদার রয়েছে। এসব আড়তদাররা প্রায় দেড়শ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।'
চরফ্যাশন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, 'বৃষ্টিপাত হওয়ায় নদীতে লবনাক্ততা কমেছে। এতে নদীতে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে জেলেরা নদী ও সমুদ্রে যেতে পারেনি। একারনে ইলিশের সরবরাহ কম। বর্তমানে ইলিশের দাম স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি। আড়তদারদের কমিশন বাণিজ্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জেলেদেরকে আড়তদারগণ দাদন দিয়ে থাকেন, হয়তো জেলেদের কাছ থেকে এজন্য কমিশন নেন। তবে ক্রেতাদের থেকেও কমিশন নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নাই। কমিশনের বিষয়ে আড়তদারদের সাথে যোগাযোগ করবো।'
নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্ত এলাকা দিয়ে ১০ জন বাংলাদেশিকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য (বিএসএফ)। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন সীমান্ত পিলার ২৫৬/৭ এস এর নিকট দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইন করলে বিজিবির সদস্যরা তাদের আটক করেন। এদের মধ্যে ২জন পুরুষ এবং ৮জন মহিলা। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পত্নীতলা ১৪ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।
আটকরা হলেন, আছমা বেগম (৪০), খাদিজা বেগম (৩৪), পাখি বেগম (২৪), রুমা বেগম (২৫), কাকলি আক্তার (২৭), রুজিনা আক্তার (৩৩), কোহিনুর বেগম (২৬), নাসরিন বেগম (৩৩), মঞ্জুরুল ইসলাম (৩৬), সুমন হোসেন (২৭)। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের নাগরিক।
বিজিবি আরও জানান, আগ্রাদ্বিগুন বিওপির টহল কমান্ডার জেসিও সুবেদার মো. জিহাদ আলীর নেতৃত্বে একটি টহলদল সীমান্তের শূন্য লাইন হতে আনুমানিক ০১ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মহেষপুর নামক স্থান হতে বাংলাদেশী ১০ জনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে আটক করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে বোম্বাই শহরে ২জন পুরুষ রাজমিস্ত্রী এবং ৮জন মহিলা বাসা বাড়ীতে কাজ করার নিমিত্তে গমণ করে। পরবর্তীতে তাদেরকে ভারতীয় পুলিশ (সিআইডি) কর্তৃক আটক করা হয়। গত ২৯ জুলাই ভারতের হরিবংশীপুর বিএসএফ ক্যাম্পের নিকট তাদের হস্তান্তর করেন। পরবর্তীতে বিএসএফ কর্তৃক বৃহস্পতিবার ভোর রাতে সীমান্ত পিলার ২৫৬/৭ এস এর নিকট দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইন করলে বিজিবি টহলদল তাদের আটক করেন। উক্ত আটককৃত বাংলাদেশী নাগরিকদেরকে বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।