রাঙামাটি প্রতিনিধি
রাঙামাটির তিন সাংবাদিকসহ ছয় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন রাঙামাটির সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনুর মেয়ে নাজনীন আনোয়ার। গত বুধবার চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলাটি করেন তিনি। সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ জহিরুল কবির মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) আগামী ১৩ নভেম্বরে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
যে ছয়জনকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এই মামলায় আসামি করা হয়েছে তারা হলেন— ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের প্রতিবেদক অনির্বাণ শাহরিয়ার, রাঙ্গামাটির দৈনিক পার্বত্য চট্টগ্রাম ও পাহাড় টোয়েন্টিফোর ডটকম সম্পাদক ফজলে এলাহী, জাগো নিউজের রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি সাইফুল হাসান, দীপ্ত টিভির বিশেষ প্রতিনিধি বায়েজিদ আহমেদ, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি দিদারুল আলম ও বণিক বার্তার রাঙামাটি প্রতিনিধি প্রান্ত রনি। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করার কারণে বাদী ও তার মা (সাবেক সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু) সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে অপদস্থ হয়ে মানসিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ কারণে মামলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর ২৩, ২৫, ২৬, ২৯, ৩১, ৩৪, ৩৫ ও ৩৭ ধারার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনলাইন দৈনিক পাহাড় টোয়েন্টিফোর ডটকমে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের ডিসি বাংলো পার্কে অবস্থিত ‘পাইরেটস’ রেস্টুরেন্ট নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের জের ধরে সাংবাদিক ফজলে এলাহীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনুর মেয়ে নাজনীন আনোয়ার। এই মামলায় গত ৭ জুন ফজলে এলাহীকে গ্রেপ্তার করে রাঙামাটি কোতোয়ালি থানা পুলিশ। পরদিন ৮ জুন রাঙামাটির আদালতে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান তিনি। এরপর ১৪ জুন চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত থেকে তিনি স্থায়ী জামিন পান। ফজলে এলাহীকে গ্রেপ্তারের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার ও জামিনের দাবিতে সরব থাকার জের ধরেই এবার ফজলে এলাহীসহ আরও পাঁচ সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করে নাজনীন আনোয়ার মামলা করেছেন বলে ধারণা করছেন অভিযুক্তরা।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থান দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) কর্তৃক আজ জুলাই র্যালি, বৃক্ষরোপন, বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ডিএসসিসির মাননীয় প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া উপর্যুক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ডিএসসিসির সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে জুুলাই র্যালিটি নগর ভবন থেকে আরম্ভ করে বঙ্গবাজার মোড় প্রদক্ষিণ করে নগর ভবনে এসে শেষ হয়। র্যালি শেষে ৩টি কাঠবাদাম গাছের চারা রোপণ করা হয়। আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে মাননীয় প্রশাসক বলেন, "৩৬শে জুলাই বিশ্বের অন্য কোনো ক্যালেন্ডারে নেই, কেবল আমাদের আছে; এই অর্জনকে ধরে রাখতে হবে।" তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর সৃষ্ট নাগরিক প্রত্যাশা পূরণে জুলাইয়ের চেতনা ধারণ করে নাগরিক সেবা প্রদানের জন্য ডিএসসিসিতে কর্মরত সকলকে আহ্বান জানান।
এ সময় প্রশাসক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদের স্মরণে ডিএসসিসি কর্তৃক প্রকাশিত "অগ্নিঝরা জুলাই, অতঃপর... নাগরিক প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির ১ বছর" শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থান দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো: জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
পাকিস্তানের ইসলামাবাদের বাংলাদেশ হাইকমিশনে আজ জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস, ২০২৫ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকাল পৌনে ৯টায় ইসলামাবাদের ডিপ্লোমেটিক এনক্লেভে নবনির্মিত বাংলাদেশ চ্যান্সেরি কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান মিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
এ সময় মিশনের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী, বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্য ও স্থানীয় পাকিস্তানি নাগরিকসহ চার শতাধিক অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
পরে দূতালয়ের সম্মেলনকক্ষে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ সময় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে উপজীব্য করে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
পরে মিশনের কর্মকর্তা ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা আলোচনায় অংশ নেন। আলোচকগণ জুলাই পুনর্জাগরণে ছাত্র-জনতার সাহসী ভূমিকার স্মৃতিচারণ করেন। আলোচকরা বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনের আহ্বান জানান।
হাইকমিশনার রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানকে বৈষম্যমুক্ত করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সুসংহত করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
আলোচনা শেষে ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে শীদ ছাত্র-জনতার আত্মার মাগফেরাত এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
হাইকমিশনার অতিথিদের সাথে নিয়ে দূতালয়ে স্থাপিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে ঘুরে দেখেন।
'জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস ২০২৫' উদযাপন উপলক্ষ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আয়োজনে মঙ্গলবার (৫ আগষ্ট) বাদ যোহর ঢাকার তেজগাঁওস্থ সড়ক ভবন সংলগ্ন মসজিদে সকল শহিদের আত্মার মাগফেরাত এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. শেখ মইনউদ্দিন, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে সড়ক ভবনের সামনে প্রধান অতিথি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। এসময় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো: এহছানুল হক সহ মন্ত্রণালয় ও সওজ অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন ও সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো: এহছানুল হক জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫ এর অংশ হিসেবে ঢাকার তেজগাঁওস্থ ডিটিসিএ ভবনে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) কর্তৃক আয়োজিত রক্তদান কর্মসূচি পরিদর্শন করেন। এসময় ডিটিসিএ’র নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) নীলিমা আখতার উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বরিশাল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম. জহির উদ্দিন স্বপন বলেছেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে হামলা চালিয়ে যারা আন্দোলনকারী ও সাধারন মানুষকে হত্যা করেছে তাদেরকে কোন ছাড় দেয়া হবে না। হত্যাকারীদের রক্ষা করতে যারা চেষ্টা চালাবে তাদেরকেও আমরা ছাড়বো না। বিচার বিভাগ যদি আমাদের কাছে রশি চায় তাহলে আমরা বিচার বিভাগকে রশি সরবরাহ করব। কেননা স্লোগান উঠেছে, রশি লাগলে রশি নে, জুলাই হত্যাকারীদের ফাঁসি দে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় বরিশালের গৌরনদী উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় ঈদগা মাঠে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপি আয়োজিত ফ্যাসিবাদ মুক্তির বছর পূর্তির আনন্দ র্যালি পূর্ব জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা কালে তিনি এ কথা বলেন।
হাজার হাজার জনতা ও দলীয় নেতাকর্মীদের মূহু মূহু স্লোগানে মুখর ওই জনসমাবেশে জহির উদ্দিন স্বপন আরো বলেন, জাতিকে আমরা একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের পথ দেখাতে পারছি তারেক রহমানের নেতৃত্বে রাষ্ট্র মেরামত করে।
এখন জাতির মুক্তির জন্য একটাই কাজ, পলাতক শেখ হাসিনা এবং সমস্ত খুনিদেরকে বিচার করা আর অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
আমরা বড় বড় কথা বলি কিন্তু যদি দেখা যায় আমাদের দলের মধ্যেই মাদক ব্যবসায়ী, যদি দেখা যায় আমাদের দলের মধ্যেই গডফাদার। আমাদের দলের মধ্যেই নতুন নতুন হারিছ, আপনারা কি তার মানবেন।
সময় হাজার হাজার জনতা সমস্বরে উত্তর দেন না।
এ পর্যায়ে স্বপন বলেন, কিন্তু গডফাদাররা যদি বিরাট শক্তি নিয়ে ১০-১২-২০ জনের বাহিনী নিয়ে আক্রমণ করে আপনারা কি করবেন, ৫ আগস্ট যেভাবে গডফাদারের রানী শেখ হাসিনাকে মোকাবেলা করেছি গৌরনদী আগৈলঝাড়ায় যে কোন গডফাদার, সে বিএনপি হোক আর আওয়ামী লীগ হোক তার বিরুদ্ধে আমরা গণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।
গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ সরোয়ার আলম বিপ্লবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ মিজানুর রহমান খান মুকুল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন, নিউ ইংল্যান্ড বিএনপি’র সভাপতি সৈয়দ বদরে আলম।
বক্তব্য রাখেন, আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সিকদার হাফিজুর রহমান, গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীর জহির সাজ্জাদ হান্নান, আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোল্লা বশির আহমেদ পান্না, গৌরনদী পৌর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শরীফ শফিকুর রহমান স্বপন, বরিশাল উত্তর জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক মোঃ সাইয়েদুল আলম খান সেন্টুসহ ফ্যাসিবাদ বিরোধী ১৭ বছরের আন্দোলন সংগ্রাম ও জুলাই বিপ্লবে নিহত শহীদের স্বজনরা।
সমাবেশ ও র্যালিতে গৌরনদী আগৈলঝাড়ার উপজেলা ও পৌর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, ছাত্রদলসহ দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা আলাদা আলাদা মিছিল নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের আয়োজনে আজ ২৪-এর ছাত্রজনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে 'জুলাই গণ অভ্যুত্থান দিবস’ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করা হয়। স্বৈরাচারী শাসন থেকে মুক্তি এবং গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক আন্দোলনকে স্মরণ করতে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর অংশগ্রহণে ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে’ পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর, বিকেলে সেগুনবাগিচায় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সম্মলেন কক্ষে এক আলোচনা সভা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব মো: আব্দুর রহমান তরফদার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোসা: ফেরদৌসী বেগম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন) জনাব আলমগীর হুছাইন। আলোচনা সভায় বক্তারা জুলাই গণ অভ্যুত্থানের তাৎপর্য, এর প্রেক্ষাপট এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এর গুরুত্ব তুলে ধরেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত, যা স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে দেশে জনগণের শাসন ফিরিয়ে এনেছে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম তাদের সাহসিকতা ও দৃঢ়তার প্রমাণ দিয়েছে।
আলোচনা ও স্মৃতিচারণের পাশাপাশি ‘জুলাই ৩৬’ নিয়ে কবিতা আবৃত্তি ও একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও জুলাই আহতদের সুস্থতা কামনা করে একটি বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মাগুরায় পালিত হয়েছে ঐতিহাসিক জুলাই -আগস্ট গণঅভ্যুত্থান দিবস। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে মঙ্গলবার শহীদদের কবরে ফুল দিয়ে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে দোয়া করা হয়।
মাগুরা সদর উপজেলার বরুনাতৈল গ্রামে শহীদ ছাত্রনেতা মেহেদী হাসান রাব্বি'র কবর জিয়ারত ও অন্যান্য শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
দোয়া মাহফিল শেষে বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক মোঃ ওহিদুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। এ সময় আরো ছিলেন, পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা, সিভিল সার্জন ডা. মোঃ শামীম কবির,গণপূর্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা। এছাড়াও দোয়া মাহফিলে অংশ নেয়, শহীদ রাব্বির পরিবারের সদস্য, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও বরুনাতৈল এলাকার শত শত মানুষ ।
এর পর জেলা অডিটোরিয়ামের সামনে জুলাই -আগস্ট গণঅভ্যুত্থান দেয়ালিকা উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন শেষে জেলা অডিটোরিয়ামে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাই শহীদদের স্বজনরা তাঁদের বেদনা, ত্যাগ ও আবেগঘন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। তারা অবিলম্বে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণার দাবি জানান এবং শহীদদের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
জামালপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে জুলাই আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত এবং জুলাই যোদ্ধা সম্মিলন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ আগষ্ট) সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়। সকাল ১১ টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির বীর মুক্তিযোদ্ধা গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবু মিলনায়তনে শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হারুন অর রশিদ, সিভিল সার্জন ডাঃ আজিজুল হক, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো: ওয়ারেছ আলী মামুন, শহীদ পরিবারের সদস্যগণ ও আহত জুলাই যোদ্ধাবৃন্দ। এর আগে সকালে সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামে শহীদ সাফওয়ান আক্তার সদ্য এর কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে জেলার সকল শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ ছাড়াও সকল মসজিদ, মন্দির, গীর্জায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
মাদারীপুরে জুলাই গনঅভ্যুত্থান দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে মাদারীপুর জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন, মানবাধিকার সংগঠন ও সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে ব্যাপক কর্মসূচী নেয়া হয়। ৫ আগষ্ট মঙ্গলবার সকাল ৯ টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্বৈরাচারী ফ্যাসিষ্টদের হাতে নিহত মাদারীপুরের সুচিয়ারভাঙ্গা গ্রামের তাওহীদ সান্ন্যামতের বাড়ীর কবরে পুষ্পমাল্য অর্পন ও তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন জেলা প্রশাসক মোছাম্মৎ ইয়াসমিন আক্তার, মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাঈম হাসান সহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা। এসময় শহীদ তাওহীদ সান্ন্যামতের পিতা, মাতা ও বড় ভাই, মানবাধিকার সংস্থা, আসক ফাউন্ডেশনের জেলার সভাপতি সাংবাদিক ফায়েজুল শরীফ, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, এনটিভির সাংবাদিক এম,আর মর্তুজা ও সময় টিভির সাংবাদিক সঞ্জয় চক্রবর্তী অভিজিৎ সহ উক্ত এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, সেদিনগুলোর ঘটনায় আরো যারা মাদারীপুরের ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছেন প্রশাসন থেকে তাদের জন্য ভিন্ন-ভিন্নভাবে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাদের সমন্বয়ে তাদের কবরেও পুষ্পমাল্য অর্পণ ও দোয়া করা হয় ।
উক্ত কর্মসূচীর পরে সকাল ১১ টায় জেলা সমন্বিত সরকারী অফিস ভবনের হলরুমে জুলাই গনঅভ্যুত্থান দিবস-২০২৫ এর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোছাম্মৎ ইয়াসমিন আক্তার, বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মোঃ হাবিবুল আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাঈম হাসান, জেলা বিএনপি'র সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কাজী হুমায়ুন কবির (কবির কাজী), জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলার সাবেক আমীর মাওলানা আবদুস ছোবহান, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ শরিফুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডল, তথ্য অফিসার মোঃ দেলোয়ার হোসেন, মাদারীপুর সদর উপজেলার ইউএনও ওয়াদিয়া শাবাব সহ জেলার অন্যান্য ৪ টি উপজেলা- কালকিনি, শিবচর, রাজৈর ও ডাসার উপজেলার ইউএনও বৃন্দ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, টিভি, ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া, পত্র-পত্রিকার সাংবাদিকবৃন্দ ও প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ।
এছাড়াও মাদারীপুরে শহীদ হওয়া পরিবারগুলো পক্ষে বক্তব্য রাখেন ছাত্রবৈষম্য আন্দোলনের জেলার আহবায়ক মোঃ নেয়ামতুল্লাহ, যুগ্ম আহবায়ক আশিক আহম্মেদ সহ নিহত ও আহতের পরিবারের অভিভাবকগণ। নিহত ও আহত পরিবারের অনেকেই তাদের বক্তব্যে বলেন, জুলাই-আগস্ট/২০২৪ এ পতিত স্বৈরাচারী ফ্যাসিষ্ট সরকার কর্তৃক ছাত্র-জনতার উপর সেদিনগুলোর ভয়াবহ নির্মম গণহত্যা, গুম, খুন ও আহত করার স্মৃতিগুলো আমাদের এখনো ভীতসন্তস্ত্র করে তোলে। তারা বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, আজ ৫ ই আগষ্ট/'২৫ তারিখ ১টি বছর অতিবাহিত হলো, অথচ একটি হত্যাকান্ডের বিচার এখনো আলোর মুখ দেখেনি, বিচারের রায় হয় নি। তারা মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে অনতিবিলম্বে সেদিনের সকল হত্যাকান্ডের দ্রুত দৃশ্যমান বিচারের রায় ঘোষণা, সর্বোচ্চ সাজা এবং তা কার্যকর করে শহীদের বিদেহী আত্মাগুলোর, শান্তি দেয়ার আহবান জানান। নইলে তারা আবারো রাজপথে নেমে জীবন দেয়ার ঘোষনা দেন। তারা এদেশ থেকে সকল স্বৈরাচারী, মব জাষ্টিস, ঘুষ-দূর্ণীতি বন্ধ সহ নিহত ও আহত পরিবারকে সম্পূর্ণরূপে সরকারী সুযোগ-সুবিধা, হ ক্ষতিপূরণ সহ ভাতার আওতায় নেয়ার আহবান জানান।
বরিশালে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস ২০২৫। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা ২০২৫-এর অংশ হিসেবে পুষ্পস্তবক অর্পণ, গ্রাফিতি উদ্বোধন, শহিদ পরিবার ও যোদ্ধাদের সংবর্ধনা এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে কর্মসূচির সূচনা হয় বাকেরগঞ্জ উপজেলার চড়াদী ইউনিয়নে। ৭টায় শহিদ মোঃ শাওন শিকদারের কবরে বিভাগীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অন্যান্য সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধিরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে সকল জুলাই শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।
এরপর সকাল সাড়ে ৯টায় সিএনবি রোড সংলগ্ন আমতলা মোড়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে আঁকা একটি বিশেষ গ্রাফিতি উদ্বোধন করেন বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ রায়হান কাওছার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথিরাও উপস্থিত ছিলেন। সকাল ১০টায় বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় জুলাই শহিদ পরিবার ও যোদ্ধাদের সংবর্ধনা এবং আলোচনা সভা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মোঃ রায়হান কাওছার এবং সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ মঞ্জুর মোর্শেদ আলম, ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ শরফুদ্দিন, বরিশালের পুলিশ সুপার মোঃ শরিফ উদ্দীনসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ। অনুষ্ঠানে শুরুতে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর জুলাই যোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি, তাৎপর্য এবং ইতিহাস নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন অতিথিরা। পরে বরিশাল জেলার ৩০ জন শহিদ পরিবারের সদস্য এবং ৩৮৯ জন জুলাই যোদ্ধাকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সংবর্ধনার পরপরই জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নির্মিত একটি চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটে। এই আয়োজন বরিশালবাসীর মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা ছড়িয়ে দেয় এবং মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী প্রজন্মকে ইতিহাসচেতনায় উজ্জীবিত করে।
'জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস ২০২৫' উদযাপন উপলক্ষে সেতু বিভাগ ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আয়োজনে সেতু ভবন মসজিদে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসে বে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ, সচিব, সেতু বিভাগ ও নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।
আলোচনা সভায় সেতু সচিব সকল প্রকার বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং জুলাই যোদ্ধাদের পাশে থাকার জন্য সবাইকে আহবান জানান। এছাড়াও সচিব সেতু বিভাগ তাঁর বক্তব্যে সবাইকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
২০২৪ সালের আজকের এইদিনে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয় এবং ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে সরকার প্রধান দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়।
আজ বাদ যোহর সেতু ভবন মসজিদে ও কর্তৃপক্ষের আওতাধীন সকল স্থাপনার মসজিদে সকল শহিদের আত্মার মাগফেরাত এবং আহতদের দ্রুত সুশ্রুষা কামনা করে বিশেষ দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়। দোয়া মাহফিলে সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও সেতু বিভাগ, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এবং আওতাধীন প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ আলোচনা সভা এবং বিশেষ দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদ্যাপনের আনন্দ মিছিলে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এক বিএনপি নেতার মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা সদরের পাটমহল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃত আল আমিন (৪৫) উপজেলার বুরুদিয়া ইউনিয়নের কন্দরপদী গ্রামের লিটন মিয়ার ছেলে। তিনি পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য।
পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দীন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ সকালে পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপি, পৌর বিএনপি ও সকল অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ও পলায়ন দিবস পালন উপলক্ষে আনন্দ মিছিলের আয়োজন করা হয়।
বেলা সাড়ে ১১টার সময় উপজেলার বুরুদিয়া ইউনিয়ন থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা একটি মিছিল নিয়ে পাটমহলে উপজেলা বিএনপির অফিসের সামনে আসেন। এ সময় বিএনপি নেতা আল আমিন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. নূর-এ-আলম খান জানান, আল আমিন নামে একজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। হাসপাতালে আসার আগেই তিনি মারা গেছেন। অতিরিক্ত গরমের কারণে তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে ধারণা এই চিকিৎসকের।
ভোলার বোরহানউদ্দিনে ৫ই আগস্ট জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে বিজয় মিছিল করেছে বোরহানউদ্দিন উপজেলা ও পৌর বিএনপি।
বিজয় মিছিলকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকা জনসমুদ্রে পরিনত হয় ।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে ভোলা ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য আলহাজ্ব হাফিজ ইব্রাহিমের নির্দেশে'বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মাফরুজা সুলতানার নেতৃত্বে বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপি কার্যালয় থেকে বিজয় মিছিল বের হয়ে পৌর বাজার,বোরহানউদ্দিন থানার মোড়,বোরহানউদ্দিন উপজেলা,উত্তর বাস স্ট্যান্ড সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক গুলো প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়।
বিজয় মিছিল শেষে বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপির আয়োজনে শহীদদের স্মৃতির স্মরণে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মাফরুজা সুলতানা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন,দীর্ঘ ১৭ বছর আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা গত বছরের আজকের এই দিনে আওয়ামী লীগের সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী ও ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে বাংলাদেশের জনগণকে মুক্ত করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি একটি নতুন স্বাধীনতা এদেশের মানুষকে উপহার দিয়েছে। বিএনপি'র অবদান মানুষ মনে রাখবে।
এ সময় তিনি পাঁচ ই আগস্ট স্মরণ করে বলেন,জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আমাদের শিক্ষার্থীরা ঝাঁপিয়ে পড়েছে,শিক্ষার্থীদের অবদান এ জাতী মনে রাখবে,তিনি বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দিনমজুর,শ্রমিক,কৃষক,রিক্সা চালক সকল পেশার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন জুলাই আগস্ট-গণঅভ্যুত্থানে,যারা স্বৈরাচার সরকারের নির্দেশে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তিনি বলেন,সেই শহীদদের স্মৃতি আমাদের ভোলার নয়,আমরা তাদের স্মরণ করব আজীবন।
এ সময় তিনি আরো বলেন,বোরহান উদ্দিন ও দৌলতখানে যারা শহীদ হয়েছে আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি,যারা আহত হয়েছে তাদেরও সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছি,আমরা তাদেরকে সকল প্রকার সহযোগিতা করব।
তিনি আরো বলেন,বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি গণমানুষের দল,বিএনপি জনগণের কথা বলে,আমরা সব সময় জনগণের পাশে ছিলাম এবং ভবিষ্যতেও থাকবো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন,উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক সরোয়ার আলম খান,উপজেলা বিএনপি'র সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কাজী মোহাম্মদ আজম,যুগ্ন আহবায়ক শহিদুল আলম নাসিম কাজী,মনজুরুল আলম ফিরোজ কাজী,পৌর বিএনপি সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান কবির,উপজেলা যুবদলের আহবায়ক শিহাব উদ্দিন হাওলাদার,সদস্য সচিব মোঃ জসিম উদ্দিন খান,পৌর বিএনপি'র সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান লিটন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল,ছাত্রদল,শ্রমিক দল,তাঁতিদল,মৎস্যজীবী দল সহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে প্রতি মাসে প্রায় ১০ কোটি টাকার গ্যাস চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে অবৈধভাবে গড়ে তুলা ২৩টি চুনা ও ঢালাই কারখানা থেকে। ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে তুলছে অবৈধ চুনা ও ঢালাই কারখানা। তিতাস গ্যাসের অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে আঁতাত করে এসব করাখানা গড়ে তুলেছে। ফলে সরকারের রাজস্ব চুরির পাশাপাশি পরিবেশের মারাক্তকভাবে ক্ষতি হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন যেন দেখেও না দেখার ভান করে আছেন। স্থানীয়রা দাবি করে জানান পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে এসব চুনা ও ঢালাই কারখানা বন্ধের জন্য। তবে এসব অবৈধ গ্যাস ব্যবহারের ক্ষেত্রতে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ অভিযান চালানোর ঘোষনা দিলেও তা বাস্তবায়নে ঘড়িমসি করছেন।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ শিমরাইল এলাকায় গ্যাসের মাধ্যমে পাথর গলিয়ে চুনা তৈরি করা হতো। স্থানীয় প্রশাসন পরিবেশ বিপর্যয়ের কারনের সেখানকার চুনা কারখানা গুলো উচ্ছেদ করে। উচ্ছেদের পর সোনারগাঁয়ে এসে তারা চারটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় অবৈধ গ্যাস ব্যবহার করে চুনা কার্যখানা গড়ে তোলে। উপজেলার পিরোজপুর, মোগরাপাড়া, কাঁচপুর, সাদিপুর ইউনিয়ন ও সোনারগাঁ পৌরসভায় এসব অবৈধ কারখানা ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে তোলা হচ্ছে। এসব কারখানায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি বিগত ১৭ বছর শেখ হাসিনার শাসন আমলে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করে এসব কারখানা গড়ে তুলেছেন। তারা পালিয়ে যাওয়ার পর বর্তমানে তারা তিতাস কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে এসব কারখানা গড়ে তুলছেন।
সূত্র জানায়, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের আষাঢ়িয়ারচর এলাকায় সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রউফ ও তার ভাই পিরোজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল জলিল অবৈধ গ্যাসে চুনা কারখানা গড়ে তুলেছেন। সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আশরাফ প্রধানের নেতৃত্বে গঙ্গানগর এলাকায় তার ভাগিনা মো. মামুন মিয়া এম এম গার্মেন্টের পরিত্যক্ত ফ্যাক্টুরিতে সিন্ডিকেট চুনা কারখানা গড়েছেন, পিয়ার নগর গ্রামে দুটি ঢালাই কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। ইসলামপুর এলাকায় আরো একটি কারখানা গড়ে তোলার সময় স্থানীয়রা হামলা করে চুনের ভাট্টি ভেঙ্গে দেয়। এছাড়াও প্রতাপেরচর আরো একটি চুনা কারখানা রয়েছে। একই ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামে মোজাফফর আলী ফাউন্ডেশনের পাশে ডালিম ও ইউনিয়ন পরিষদের বিপরিত দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের এক বিএনপি নেতা মুনসুর হোসেনের দুটি কারখানা গড়ে তুলেছেন। পিরোজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি শফিউল আলম বাচ্চু ও তার ভাই নেয়ামতউল্লাহ নেমা তাদের বাড়ির পাশে দুটি ঢালাই কারখানা গড়ে তুলেছেন। রতনপুর এলাকায় নুরে আলমের দুটি ঢালাই কারখানা, সোনারগাঁ পৌরসভার পৌর ভবনাথপুর গ্রামে রফিকুল ইসলামের পরিত্যাক্ত বাড়িতে অবৈধ গ্যাসে ঢালাই কারখানা, দুলালপুর এলাকায় সুরুজ মেম্বারের বাড়ির পাশে গড়ে উঠেছে চুনা কারখানা, কাঁচপুর ইউনিয়নের চেঙ্গাইন এলাকায় ৭টি ঢালাই কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। সাদিপুর ইউনিয়নের দুটি কারখানায় গড়ে উঠেছে। জামপুর ইউনিয়নের মিরেরটেক বাজার এলাকায় ঢালাই কারখানা গড়ে তোলা হয়। মোগরাপাড়া ইউনিয়নে দুটি কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব প্রতিটি কারখানায় অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে প্রতি মাসে এসব কারখানায় প্রায় ১০কোটি টাকার গ্যাস ব্যবহারে সরকারী রাজস্ব চুরি করছেন।
স্থানীয়দের দাবি, চুনা ও ঢালাই কারখানা গুলোতে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারের কারনে বৈধ আবাসিক গ্রাহকরা পর্যাপ্ত গ্যাস পায় না। ফলে রান্নাবান্নায় সমস্যার সৃষ্টি হয়। চুনা কারখানায় পাথর গলানোর কারনে পরিবেশ দুষণ হচ্ছে। ফলে আশপাশের ফসল ও ফল উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায়। পরিবেশের মারাক্তক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চুনা কারখানার মালিক জানিয়েছেন, তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আঁতাত করে তারা এসব কারখানা গড়ে তোলেন। প্রতি মাসে তাদের মাসোহারা দিয়ে থাকেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করার আগে তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়। অভিযানের আগে গুরুত্বপূর্ন সরঞ্জাম তারা সরিয়ে নেন। ভেঙ্গে দেওয়ার দু’ তিনদিন পর পুনরায় ভাট্টি গড়ে তোলা হয়।
রতনপুর এলাকার মো. আলাউদ্দিন জানান, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় জনস্বাস্থ্যর ক্ষতিকর চুনাভাট্টির মালিকরা দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালনা করে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না স্থানীয় প্রশাসন। প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করার পরও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না।
পিরোজপুর এলাকার আক্কেল আলী জানান, স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে এসকল চুনা কারখানা অবৈধভাবে পরিচালনা করে। বর্তমান সরকার এসকল অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহন না করায় আমরা হতাশ হয়ে পড়েছি।
সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রউফ অবৈধ চুনা কারখানা গড়ে তোলেননি বলে দাবি করেন।
সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আশরাফ প্রধান বলেন, চুনা কারখানার গড়ে সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করেন। এলাকার কিছু কর্মী অবৈধ গ্যাস ব্যবহার করে চুনা কারখানা গড়েছেন ।
অভিযুক্ত মো. মামুন মিয়ার দাবি, বিগত ১৭ বছর শেখ হাসিনার শাসন আমলে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করে এসব কারখানা গড়ে তুলেছেন। তারা পালিয়ে যাওয়ার পর বর্তমানে তারা এসব কারখানা গড়ে তুলছেন।
তিতাস গ্যাস ট্্রান্সমিসন এন্ড ডিস্ট্রিউিশন কোম্পানির উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী রাজীব কুমার সাহা বলেন, চুনা ও ঢালাই কারখানায় অবৈধ গ্যাস ব্যবহারের বিষয়টি মন্ত্রনালয়ের বিভিন্ন সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। সেগুলো ভেঙে দেওয়ার পরও গড়ে তোলা হচ্ছে। তিতাসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।