আইনজীবীদের সংসদে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির বার ভবনে বুধবার বিকেলে আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই পরামর্শ দেন। পরে তিনি আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মাণাধীন বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
সংসদে আইনজীবীর সংখ্যা বাড়লে সংসদ আরও সমৃদ্ধ হবে মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘স্বাধীনতা সংগ্রামের পর ১৯৭২ সালে ১৫৬টা প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডার জারি হয়। অর্থাৎ প্রতি দুই কর্মদিবসে একটি আইন তৈরি হয়। একটা আইন তৈরি করার পেছনে যে শ্রম, মেধা লাগে সে সম্বন্ধে আপনারা সবাই জানেন। ওই সময়ে পার্লামেন্টে আইনজীবীদের সংখ্যা এখনকার সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। আমি আপনাদের কাছে দাবি করি, আপনারা প্লিজ পার্লামেন্টে আসুন, জনগণের প্রতিনিধিত্ব করুন। এতে পার্লামেন্ট আরও সমৃদ্ধ হবে। বর্তমান পার্লামেন্টে ১৫০ জন আইনজীবী থাকলে পার্লামেন্ট আরও অলংকৃত হতো।’
দ্রুত বিচারে কোনো ম্যাজিক লাগে না, আইনজীবী-বিচারকদের পরিশ্রমই যথেষ্ট বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘অনেক সময় বিচারপ্রার্থীদের ন্যায়বিচার পেতে কষ্ট হয়। আশির দশকের অনেক মামলা নিয়ে এখনো আদালতের বারান্দায় ঘুরতে হচ্ছে। তাদের বিচারকাজটি দ্রুত শেষ করতে পারাটাই সাফল্য। স্বল্প সময়ে সঠিক বিচার নিশ্চিত করার দায়িত্ব শুধু বিচারকের না, আইনজীবীদেরও বড় ভূমিকা আছে। দ্রুত বিচারে ম্যাজিক লাগে না, আইনজীবী-বিচারকদের পরিশ্রমই যথেষ্ট।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিচার বেচাকেনার জিনিস নয়। কোনো বিচারক যদি বিচার বেচাকেনা করে তাহলে সেটা ডাকাতির চেয়ে খারাপ।’
আইনজীবীদের সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব হলো রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আপনারা সহনশীল হবেন, জুডিসিয়াল বিভাগকে সহযোগিতা করেন। বয়কটের মতো সিদ্ধান্তে যাবেন না। কোনো অভিযোগ থাকলে আমাদের বলবেন।’
দেশের চলমান উন্নয়নের ধারা এগিয়ে নিতে বিচার বিভাগকে সব রকম সহযোগিতা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী বিশ-পঁচিশ বছরের মধ্যে আমরা সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার মতো দেশে পরিণত হবো। এ স্বপ্ন আমরা দেখি।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে ফান্ডিং বন্ধ করে দেয়ার কনসিকোয়েন্স তৈরি হয়েছিল ।সেই সম্পর্কে আপনারা জানেন। সেই বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টকে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুর ছবি উপহার দিয়েছেন। এটি জাতি হিসেবে আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল গোলাম রব্বানী, হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার জেনারেল মুন্সি মো. মশিয়ার রহমান, আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার জেনারেল সাইফুর রহমান, জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আসশামস জগলুল হোসেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ফেরদৌস, জেলা জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেলসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ আইনজীবীরা।
‘শিক্ষকতা পেশা, মিলিত প্রচেষ্টার দীপ্তি’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নেত্রকোনায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৫ উদযাপিত হয়। শিক্ষক দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান মহোদয়ের নেতৃত্বে সকালে একটি র্যালি বের হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে শুরু হওয়া এ র্যালি পাবলিক হলে গিয়ে শেষ হয়। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শামীমা ইয়াসমিন, সদরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমা বিনতে রফিক। আয়োজনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার জাহাংগীর কবির আহমেদ।
এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে পাবলিক হল মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান। বক্তব্যে বিশ্ব শিক্ষক দিবসে শিক্ষকদের কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি তাদের দায়িত্ব আরও নিষ্ঠার সাথে পালনের কথা বলেন তিনি। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা এবং শিক্ষকদের সাথে সম্মান বজায় রেখে ব্যবহার করার নির্দেশনা দেন।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে চাষিরহাট ইউনিয়নের রথী গ্রামের ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে একটি ড্রেজার মেশিন জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তারের নেতৃত্বে ওই অভিযান চালানো হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাসরিন আক্তার জানান, উপজেলার চাষিরহাট ইউনিয়নের রথী গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে একটি ড্রেজার মেশিন জব্দ করা হয়। চাষিরহাট ইউনিয়নের শহীদ নামে এক ব্যক্তি এই বালু উত্তোলন করছিল। স্থানীয় লোকজন বাঁধা দিলেও তা উপেক্ষা করে।
নাটোরের বড়াইগ্রামে বাসের ধাক্কায় ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সার চালকসহ তিনজন নিহত হয়েছে। সোমবার দুপরে উপজেলার গুনাইহাটি এলাকায় এই দূর্ঘটনা ঘটে। এসময় আরও তিনজন আহত হয়। নিহতেরা হলো, একই উপজেলার কালিকাপুর পূর্বপাড়ার আনসার আলী (৬০) পাশ্ববর্তী লালপুর উপজেলার ধলা গ্রামের অটোরিক্সা চালক লরু প্রমাণিক (৫৫) এবং ধলা ঢাকাইয়া পাড়ার নয়ন আলী (২৩)। এসময় আহত হন নিহত আনসার আলীর স্ত্রী রাজিয়া বেগম (৪৫) ও তার দুই ছেলে রানা (৩৫) ও রাসেল (২৮)।
বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, বগুড়া থেকে কুষ্টিয়াগামী কল্পনা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহি বাস নাটোরের বড়াইগ্রামের গুনাইহাটি এলাকায় একটি ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সাকে ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিক্সাটি দুমড়ে মুচরে ঘটনাস্থলেই অটোরিক্সার চালকসহ তিনজন মারা যান। এসময় গুরুতর আহত হন আরও তিনজন। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতাল ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেই সাথে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে হাইওয়ে থানায় নিয়ে আসে। পরে পুলিশ নারায়নপুর এলাকা থেকে বাসটি আটক করলেও চালক ও তার সহকারী পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
সমবেত প্রার্থনা, ছোয়াইং দান ও ধর্মীয় দেশনা'র মধ্য দিয়ে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে শুরু হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব প্রবারনা পূর্ণিমা।
সোমবার সকাল থেকে বিহারে বিহারে ছোয়াইং দান সমবেত প্রার্থনা ও ধর্মীয় দেশনায় অংশ নেন বৌদ্ধ ধর্মালম্বী নারী পুরুষ, যুবক-যুবতী, তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সি মানুষ। প্রবারনাকে ঘিরে পাহাড়ী পল্লী গুলোতে চলছে নানা আয়োজন। ফানুষ উড়ানো পিঠা তৈরি রথ টানাসহ নানা আয়োজনে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে ৩ দিনব্যাপী চলবে এ উৎসব। তাই উৎসবকে কেন্দ্র করে পাহাড়ে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। বিকালে উড়ানো হয় প্রবারনা পূর্ণিমার প্রধান আকর্ষণ ফানুস বাতি। এসময় সকল ধর্ম বর্ণ মানুষের অংশগ্রহণে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয় বান্দরবান জেলা। তাই যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ও নির্বিগ্নে উৎসব পালন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
মূলত, আর্শিণী পুর্ণিমা থেকে আষাঢ়ী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিনমাস বর্ষাবাস পালনের পর পালন করা হয় বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব প্রবারনা পূর্ণিমা বা ওয়াগ্যোয় পোয়ে। বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের মতে প্রবারণা পূর্ণিমার দিনই রাজকুমার সিদ্বার্থের মাতৃগর্ভে প্রতিসন্দি গ্রহণ, গৃহত্যাগ ও ধর্মচক্র প্রবর্তন সংঘটিত হয়েছিল তাই প্রতিটি বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের কাছে দিনটি আজো বিশেষভাবে স্মরণীয়। তাই নানা আয়োজনে উৎসবটি পালন করে থাকে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা। পাড়ায় পাড়ায় পিঠা তৈরী, ফানুষ উড়ানো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রথ টানা, হাজার প্রদীপ প্রজ্জলনসহ নানা আয়োজনে ৩ দিন ব্যাপী পালিত হবে প্রবারনা উৎসব। বৌদ্ধ ধর্মে বিশ্বাসী মারমা বয়-বৃদ্ধ, তরুণ-তরুণী ও শিশু-কিশোররা এইদিন সকালে বিহারে বিহারে গিয়ে ধর্মীয় গুরুদের চোয়াইং দান (ভান্তেদের ভাল খাবার পরিবেশন) করেন এবং সকালেই সমবেত প্রার্থনা ও সন্ধ্যায় মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্জলনে অংশ নেবেন। এদিকে উৎসবকে ঘিরে পাড়ায় পাড়ায় চলছে রথ তৈরী ও ফানুষ বানানোর কাজ। মারমা যুবক যুবতীরা দল বেধে তৈরী করছে রঙ বেরঙের ফানুষ। শুধু তাই নয় প্রতিটি বিহারে চলছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও সাজসজ্জার কাজ। শেষ মুহূর্তে নতুন পোশাক কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছে তরুণ-তরুণীরা।
মারমা তরুণ-তরুণীরা বলেন, এই দিনের জন্য আমরা একটি বছর অপেক্ষা করে থাকি। এ বছর আমরা অনেক আনন্দ করবো। সকাল সকাল খেয়াং এ এসেছি, ছোয়াইং দান করেছি, প্রদীপ জালিয়েছি এবং প্রার্থনা করেছি। বিকালে আমরা সবাই মিলে ফানুস বাতি উড়াবো। সব মিলিয়ে এবারের প্রবারনা পূর্ণিমায় বন্ধু-বান্ধব ও স্বজন মিলে আনন্দ বিনিময় করব।
অন্যদিকে প্রবারনা উৎসব শান্তিপূর্ণ ভাবে পালনে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানায় বান্দরবানের পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাউছার। তিনি বলেন, এটি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব। তাই এ উৎসবটি যেন উৎসব মুখর পরিবেশে পালন করতে পারে সেজন্য কয়েক স্তরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পোশাকে এবং সাদা পোশাকে পুলিশের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ডিউটি করবে। আশা করি এ ধর্মীয় উৎসবটি আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন করতে পারবে।
উল্লেখ্য, ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে মারমা বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের প্রাণের উৎসব। আর এই প্রাণের উৎসবে ভগবান বুদ্ধকে মনের আশা পুরণের জন্য কাগজে ফানুস বাতি তৈরি করে তাতে আগুন দিয়ে আকাশে উড়িয়ে নিজেদের ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ ঘটায় বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা। প্রবারণা পুর্ণিমার দিনই রাজকুমার সিদ্বার্থের মাতৃগর্ভে প্রতিসন্দি গ্রহণ, গৃহত্যাগ ও ধর্মচক্র প্রবর্তন সংঘটিত হয়েছিল তাই বুদ্ধের ত্রিশুল বিজড়িত এদিনটি প্রতিটি বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের কাছে বিশেষ স্মরণীয় হয়ে আছে। আগামী ৭ অক্টোবর রথ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে তিনব্যাপী এই প্রবারনা উৎসব।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রায় ৫ লাখ শিশুকে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসার কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে স্বাস্থ্যবিভাগ। সোমবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের অংশগ্রহণে কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়।
জেলা তথ্য কর্মকর্তা রুপ কুমার বর্মনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আগামী ১২ অক্টোবর থেকে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচী শুরু হয়ে চলবে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত, প্রথম দুই সপ্তাহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে, পরের দুসপ্তাহে পাড়া মহল্লায় নির্ধারিত কেন্দ্রের মাধ্যমে টিকা দেওয়া হবে। এছাড়াও জেলায় স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রেও এ টিকা দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নে আশ্রয়ণ কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ১০ পরিবারের মাঝে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ অর্থ সহযোগিতা হিসেবে চেক বিতরণ করা হয়েছে।
সোমবার দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপঁচা ১নং আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৭নম্বর শেডের সামনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি পরিবারের মাঝে প্রত্যেক পরিবারের হাতে সাড়ে ৭ হাজার টাকার চেক তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউওনও মো. নাহিদুর রহমান।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আবু বকর, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো. রুহুল আমিন।
এ সময় ইউএনও নাহিদুর রহমান বলেন, গত ২৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত তিনটার দিকে আশ্রয় কেন্দ্রে হঠাৎ আগুনে পুড়ে ১০ পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে শুকনা খাবার এই পরিবার গুলোর মাঝে পৌছে দিয়েছি। আজকে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ১০টি পরিবারের মাঝে সাড়ে ৭ হাজার টাকার ১০টি চেক পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছি, এটা দিয়ে তাদের জরুরি ভিত্তিতে যেটা প্রয়োজন সেটা কিছুটা হলেও মেটাতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, গোয়ালন্দের অনেক প্রবাসী ভায়েরা বিশ্বের অনেক দেশে আছেন, আপনাদেরকে অনুরোধ করবো আপনারা এই অসহায় পরিবার গুলোর পাশে দাঁড়ান। আপনাদের একটু সহযোগিতা পেলে তারা একটু শান্তিতে থাকতে পারবে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত তিনটার দিকে আগুন লাগলে মুহূর্তের মধ্যে সব পুড়ে যায়। এই শেডের ১০টি কক্ষে ১০টি পরিবার বসবাস করতো। তবে মঙ্গলবার রাতে সাতটি পরিবার ঘুমিয়ে ছিলেন। আগুনের তাপে তাদের ঘুম ভেঙ্গে গেলেও ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারেনি।
আগুনের খবর পেয়ে গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশনের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নেভায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে আগুন লাগতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের দাবি, অন্তত ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে তাদের। এসব অসহায় দরিদ্র পরিবার খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র সেতু দেশের অর্থনীতিতে অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলার পাশাপাশি আঞ্চলিক ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। সময় ও পথ কমে জ্বালানি তেলের আমদানি কমার পাশাপাশি দেশের পরিবেশ রক্ষায় ভারসাম্য রাখবে। ফলে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধি করতে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর একটি সেতুর নির্মাণে দাবি সর্বস্তরের মানুষের।
একটি সেতুর অভাবে মেলবন্ধন হচ্ছে না দেশের রংপুর, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম এবং ঢাকা বিভাগসহ প্রায় ২০টি জেলার। কুড়িগ্রামে চিলমারী-রৌমারী উপজেলা ঘেঁষা ব্রহ্মপুত্র নদের উপর একটি সেতু তৈরি হলে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবধান রাখবে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করবে ব্রহ্মপুত্র নদের সেতুটি। যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কষ্ট-যন্ত্রণা এবং দরিদ্রতা থেকে মুক্তি পেতে দীর্ঘদিন ধরে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর সেতুর নির্মাণের দাবি করে আসছেন সুবিধাবঞ্চিত এ জনপদের মানুষ। জেলা শহরের সাথে ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলা মানুষের দু:খ কষ্ট দীর্ঘদিনের। কয়েক লাখ মানুষের পারাপারে নৌকাই একমাত্র ভরসা। অফিস-আদালতে আসতে পোহাতে হয় হাজারো বিড়াম্বনা। সময়-অর্থ দুটো নষ্ট হচ্ছে এই জনপদের মানুষের। বারবার দাবি উঠেছে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর একটি সেতু নির্মাণের। চিলমারী- রৌমীরী পর্যন্ত সেতুর দাবিতে হয়েছে একাধিকবার আন্দোলনও। তারই ফলশ্রুতিতে কয়েক বছর পূর্বে পরিদর্শন করা হয় সেতু নির্মাণের সম্ভাবনা স্থান। এরপর থেকে মুখ থুবড়ে রয়েছে ব্রহ্মপুত্র সেতু নির্মাণের অগ্রগতি। বর্তমানে কুড়িগ্রাম শহর থেকে ঢাকা-সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ যেতে হয় সিরাজগঞ্জ হয়ে যমুনা সেতু দিয়ে। ব্রহ্মপুত্র সেতু নির্মাণ হলে কুড়িগ্রাম শহর থেকে রৌমারী হয়ে জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ হয়ে সিলেটের দুরত্ব প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার এবং ঢাকার সাথে ১০০ কিলোমিটার পথ কমে আসবে। অপর দিকে গাইবান্ধার তিস্তা নদী উপর সদ্য নির্মিত মাওলানা ভাসানী সেতুটি কোন কাজে আসছে না। কিন্তু ব্রহ্মপুত্র সেতু নির্মাণ হলে বগুড়া, জয়পুরহাট,নওগাঁ জেলার কানেক্টিক সেতু হিসেবে কুড়িগ্রাম, জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট যাতায়াত সহজ হয়ে আসবে।
শিক্ষার্থী রিনি আকতার বলেন, রৌমারী থেকে আসতে ভিষণ কষ্ট হয়। নৌপথে নারী যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ব্রহ্মপুত্র সেতু হলে আমাদের মতো অনেক গরীব শিক্ষার্থী কুড়িগ্রাম এসে পড়ালেখার সুযোগ পাবে।
মজিবর রহমান বলেন, রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলার সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী ও আদালতে বিচার প্রার্থীদের কুড়িগ্রাম এসে অফিসিয়াল কাজ করতে হলে একদিন আগেই আসতে হয়। কেননা নৌকা ছাড়া এ দুটি উপজেলার কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেই। এতে করে আমাদের সময় ও অর্থ দুটোই নষ্ট হচ্ছে। অথচ এই ব্রহ্মপুত্র সেতু করা গেলে আমাদের জেলার অভূতর্পব উন্নয়ন হতো। শুধু তাই নই ঢাকার উপর চাপও কমে আসবে। কেননা কুড়িগ্রাম থেকে রৌমারী হয়ে ঢাকা থেকে দিনে গিয়ে কাজ শেষ করে মানুষ চলে আসতে পারবে। তাই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার অথবা আগামীতে যে সরকার ক্ষমতায় আসবে তারা যেন ব্রহ্মপুত্র নদের উপর একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।
কুড়িগ্রাম চেম্বারস অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি সাবেক সভাপতি আব্দুল আজিজ বলেন,দীর্ঘদিন ধরে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর নির্মিত সেতুর দাবি জানানো হচ্ছে। এই সেতু হলে আন্তঃদেশীয় ও আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি বাড়বে এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসা, বাণিজ্য এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে সম্প্রসারণ ঘটবে। এতে করে কুড়িগ্রামে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
কুড়িগ্রাম মোটর-বাস মালিক সমিতির সভাপতি লুৎফর রহমান বকসী বলেন, ব্রহ্মপুত্র সেতু হলে কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকা ১০০কিলোমিটার কমবে। এরফলে বড় গাড়ি গুলোর ৬৫/৭০ লিটার তেল সাশ্রয় হবে।
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মীর্জা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর সেতু হলে দেশের অর্থনীতিতে আমুল পরিবর্তন আসবে। পাশাপাশি এই সেতু শুধু দেশের জন্য নয়, আন্তর্জাতিক রুট হিসেবে গুরুত্ব অপরিসীম।
‘শিক্ষকতা পেশা: ভবিষ্যতের জন্য মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৫ উপলক্ষে কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত হয়েছে অংশীজনদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার নবাব ফয়েজন্নেসা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে স্কুলে-কলেজ মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও এন্ট্রিপদ নবম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ এবং বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি (বাসমাশিস), কুমিল্লা জেলা শাখা।
সভায় বক্তারা মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষকদের ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, একটি আধুনিক ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকরা হচ্ছেন মূল চালিকা শক্তি। শিক্ষকদের পেশাগত মর্যাদা, পদোন্নতি, বেতন কাঠামো ও প্রশাসনিক কাঠামোর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন ছাড়া মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব নয়।
এ সময় বক্তব্য রাখেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা কুমিল্লা আঞ্চলিক উপপরিচালক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, কুমিল্লা জেলা শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম, নবাব ফয়জন্নেসার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় প্রধান শিক্ষিকা রাশেদা আক্তার, কুমিল্লা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল হাফিজ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কুমিল্লা জিলা স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম। এতে উপস্থিত ছিলেন প্রধান শিক্ষক এ কে এম আমিনুল ইসলাম, শাহিনা আক্তার, শিক্ষক নেতা কামাল উদ্দিন, সুলতান জসিম উদ্দিন, জিয়াউল হক, আব্দুল কাদের, গোপাল দত্ত চৌধুরী, মুখতারুল হক, প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন।
এ সময় মতবিনিময় সভায় বক্তারা সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের পাঁচ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা, সরকারি মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষকদের এন্ট্রিপদ নবম গ্রেডে উন্নীতকরণ ও চার শ্রেণির পদোন্নতি, অনানুষ্ঠানিক আর্থিক উপকারভোগীদের সক্ষমতা সংরক্ষণ, শিক্ষা ও প্রশাসনিক শাখার শূন্যপদে নিয়োগ ও পদায়ন সম্পন্ন করা এবং বেতন বৈষম্য নিরসনসহ টাইম স্কেল ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা প্রদান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক সংকট, প্রশাসনিক জটিলতা ও পদোন্নতিহীনতা শিক্ষার মানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ অবস্থায় স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করলে শিক্ষকদের প্রশাসনিক সমস্যা সমাধান, একাডেমিক তদারকি বৃদ্ধি ও শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে এন্ট্রিপদ নবম গ্রেড বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষকদের আর্থিক ও মানসিক প্রণোদনা বৃদ্ধি পাবে, যা শিক্ষা খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
সভায় অংশগ্রহণকারীরা শিক্ষক সমাজের ঐক্য ও সংগঠিত আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তাদের মতে, মাধ্যমিক শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি পূরণ না হলে শিক্ষাব্যবস্থার অগ্রগতি ব্যাহত হবে।
অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক, শিক্ষা কর্মকর্তাসহ শিক্ষাবিদ ও অংশীজনরা উপস্থিত ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে স্বাস্থ্য সহকারীদের বিভিন্ন দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে শুরু হওয়া অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি সোমবারও অব্যাহত ছিল। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এই কর্মবিরতির সোমবার ষষ্ঠ দিনে গড়িয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন (BHAA) নবীনগর উপজেলা শাখার উদ্যোগে কর্মবিরতি পালন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের উপজেলা শাখার সভাপতি রকিব উদ্দিন খান। এ সময় বক্তব্য দেন সাইফুল ইসলাম ফরহাদ, ফারজানা সুমী এবং মানসুরা মালা।
বক্তারা বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন তৃণমূল পর্যায়ে কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকদের ন্যায্য দাবিগুলো দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত হয়ে আসছে। তাই বাধ্য হয়েই আমরা কর্মবিরতিতে গিয়েছি।’
তারা আরও জানান, তাদের ৬ দফা দাবি হলো: ১. নিয়োগবিধি সংশোধন, ২. শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী সনদ বা সমমান সংযোজন, ৩. ১৪তম গ্রেড প্রদান, ৪. ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ১১তম গ্রেডে উন্নীতকরণ, ৫. টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদান, এবং ৬. ধারাবাহিক পদোন্নতির মাধ্যমে পরবর্তী উচ্চতর গ্রেড প্রদান।
দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা ইপিআই (টিকাদান কর্মসূচি), আসন্ন টাইফয়েড ক্যাম্পেইনসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেন।
কর্মবিরতির সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারীদের শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তারা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলামকে দেখতে আজ ০৬ অক্টোবর ২০২৫ সোমবার রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে যান। তিনি অসুস্থ অধ্যাপকের শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন। উপাচার্য তাঁর দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের রুটিন দায়িত্বে নিয়োজিত সহকারী প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ মাহবুব কায়সার, সহকারী প্রক্টর ড. শান্টু বড়ুয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান মেডিকেল অফিসার ডা: মোহাম্মদ তানভীর আলীসহ ল্যাবএইড হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় হঠাৎ বন্যায় তিস্তাপাড়ের অন্তত সাড়ে চার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তিস্তার উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং অব্যাহত বর্ষণের ফলে নদীর পানি বিপজ্জনকভাবে বৃদ্ধি পায়। এর প্রভাবে কোলকোন্দ, আলমবিদিতর, নোহালী, গঙ্গাচড়া সদর, লক্ষীটারী ও মর্নেয়া ইউনিয়নের একাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
পানিবদ্ধ এলাকায় বাগডোগরা, মিনারবাজার, আনন্দবাজার, বিনবিনা, চর মটুকপুর, চিলাখাল, বাগেরহাট, চর শংকরদহ, কাশিয়াবাড়ী, ইচলি ও চর ছালাপাকসহ শতাধিক বাড়ি, স্কুল ও রাস্তা তলিয়ে গেছে। কৃষি জমি এবং ফসলও পানিতে ডুবে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, গত রোববার বিকেল থেকেই তিস্তার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। রাত ১১টার দিকে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে। সোমবার বেলা ১১টায় তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার নিচে নেমে আসে। পানি নামতে শুরু করায় নদীর তীরে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে।
চর শংকরদহের কৃষক আব্দুল হালিম বলেন, ‘রাতারাতি পানি বেড়ে ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। এখন পানি নামছে, কিন্তু ভাঙনের কারণে কাল সকালে বাড়ি থাকবে কি না তা আমরা জানি না।’
গৃহবধূ রহিমা বেগম জানান, ‘আমরা তিন দিন ধরে স্কুলে আশ্রয় নিয়েছি। বাচ্চা ও গরু নিয়ে পরিস্থিতি খুব কষ্টকর। এখনো ত্রাণ পাইনি।
কোলকোন্দের কৃষক সালাম উদ্দিন বলেন, ‘আমনের খেত দেড় একর ছিল। সব পানিতে তলিয়ে গেছে। গরু খাওয়ানোর ঘাসও নেই।’
উপজেলা ত্রাণ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সজিবুল করীম জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে এবং তাদের সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে প্রায় ২০ হেক্টর আমন ধান, ১ হেক্টর মাসকলাই, ২ হেক্টর বীজবাদাম এবং ০.৫ হেক্টর সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন সক্রিয়। আমরা সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি এবং দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।
স্থানীয়রা দ্রুত ত্রাণ এবং নদীভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
মুন্সিগঞ্জে প্রায় ১৫৪ কোটি টাকা মূল্যের বিপুল পরিমাণ অবৈধ কারেন্ট জাল ও সুতার রিল জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড।
সোমবার ৬ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ বিকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে, গত ৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ রবিবার রাত ১১ টা হতে আজ সকাল ৬ টা পর্যন্ত কোস্ট গার্ড স্টেশন পাগলা কর্তৃক মুন্সিগঞ্জ সদর থানাধীন দয়াল বাজার মাদবর বাড়ি এবং মিরকাদিম উত্তর কাজি কসবা সংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকায় ৩টি গোডাউন ও ৩টি কারখানা তল্লাশি করে প্রায় ১৫৪ কোটি ২৫ লক্ষ ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের ৪ কোটি ৪০ লক্ষ ৫২ হাজার ৫০০ মিটার কারেন্ট জাল এবং জাল তৈরির কাজে ব্যবহৃত ১২ হাজার পিস সুতার রিল জব্দ করা হয়।
পরবর্তীতে জব্দকৃত জাল ও সুতার রিল মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বিনষ্ট করা হয়।
তিনি আরও বলেন, মৎস্য সম্পদ রক্ষায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ৫০০ টাকা বাড়ি ভাড়া বাড়ার প্রজ্ঞাপনকে প্রত্যাখ্যান করেছে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট। একই সঙ্গে ২০ শতাংশ বাড়িভাড়ার দাবিতে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
জানা যায়, গতকাল রোববার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া বাড়ানোর পরিপত্র ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রবিধি শাখার উপসচিব মোসা. শরীফুন্নেসা স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা শর্ত পালন সাপেক্ষে ১ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হলো।
এ নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট সভাপতি এবং বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারী ফোরামের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী।
নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বাড়ার একটি প্রজ্ঞাপন ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা এই প্রজ্ঞাপণের ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি যে প্রজ্ঞাপনটি সঠিক। আমরা ৫০০ টাকা বাড়িভাড়া বাড়ার প্রজ্ঞাপনকে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের পক্ষ থেকে প্রত্যাখ্যান করছি।
তিনি আরো লিখেছেন, ১৩ আগস্ট এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের নেতাদের সঙ্গে শিক্ষা উপদেষ্টার নেতৃত্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১ হাজার ৫০০ টাকা মেডিক্যাল ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপণের দাবিতে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাতাগার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
তিনি উল্লেখ করেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষক কর্মচারীদের ২০ শতাংশ অনুযায়ী বাড়িভাড়ার ফাইল অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব সাইেয়দ এ জেড মোরশেদ আলী।
এর আগে এমপিওভুক্ত শিক্ষায় বৈষম্য নিরসন, সরকারি নিয়মে বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, শতভাগ উৎসব ভাতা ও জাতীয়করণের দাবিতে গত ১৩ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রায় এক লাখ শিক্ষক-কর্মচারী মহাসমাবেশ করেন।