মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায় টাকার জন্য আনোয়ারা বেগম (৫০) নামে এক নারীকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে তার ছেলে রাসেল হাওলাদার ও পুত্রবধূ পলি বেগমের বিরুদ্ধে।
বুধবার বিকেলে উপজেলার ছোট বনগ্রাম এলাকার মৃত আলমগীর হাওলাদারের স্ত্রী আনোয়ারা বেগমের বসতঘরে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত আনোয়ারা বেগমকে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আনোয়ারা বেগম নিজেই বাদী হয়ে ডাসার থানায় বুধবার রাতে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এতে রাসেল ও তার স্ত্রী পলি ছাড়াও আরও কয়েকজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
আনোয়ারা বেগমের ভাষ্য ও মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, মৃত্যুর আগে তার বাবা ১০ লাখ টাকা মায়ের কাছে রেখে গেছে দাবি করে রাসেল এ ঘটনা ঘটিয়েছে। বাবা কোনো টাকা-পয়সা রেখে যায়নি, আনোয়ারা বেগম বারবার এ কথা বোঝানোর চেষ্টা করলেও রাসেল ও তার স্ত্রী মিলে তাকে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় মেজো ছেলে নাসির হাওলাদার বাঁচাতে এলে তাকেও মারধর করে বলে জানিয়েছেন আনোয়ারা বেগম। পরে নাসির স্থানীয়দের সহযোগিতায় মাকে উদ্ধার করে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। রাসেল আর আগেও তাকে মারধর করেছেন বলে দাবি করেন আনোয়ারা বেগম।
আনোয়ারার মেজো ছেলে নাসির হাওলাদার বলেন, 'সামান্য টাকার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তারা মাকে কুপিয়েছে এবং আমাকে হত্যার হুমকি। আমি আমার ভাই, তার স্ত্রী ও সহযোগীদের বিচারের দাবি জানাই।'
তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রাসেল ও তার স্ত্রীর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘এটা দুঃখজনক ঘটনা। ছেলে তার মায়ের সঙ্গে কেমন করে এ রকম ঘটনা ঘটাতে পারে? অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বজ্রপাতে এক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান। সোমবার দুপুরে সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ইউনিয়নে মোকাবিল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বজ্রপাতে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবু আব্দুল্লা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কৃষি জমিতে তিনি ধানের মধ্যে ঘাস কাটতে গেছেন, তখন প্রচুর বৃষ্টি ও বজ্রপাত হয়। তখন কোনো একসময় তিনি মারা যান।
ইউপি সদস্য আবু আব্দুল্লা জানান, সকাল থেকে অনেক খুজাঁখুজি হয় ফজলুর রহমানকে। পরিবারের সদস্যরা জানান ধানি জমিতে গেছেন। পরে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে কৃষি জমির মধ্যে ওনার লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে আমরা বাড়িতে নিয়ে আসি।
মৃত্যুট কীভাবে হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুখের পুরো অংশ কালো হয়ে গেছে। বজ্রপাতে তিনি মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন এ প্রতিবেদককে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর জানান, ‘মৃত্যুর বিষয়টি শুনে আমি রওয়ানা হয়েছি। তবে কি কারণে মৃত্যু হয়েছে আমি এখনও নিশ্চিত না।’
দেশের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে রাঙামাটি জেলায় যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার ও শাখা বন বিহারগুলোতে উদযাপিত হয়েছে বৌদ্ধধর্মালম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা।
সোমবার জেলার রাজ বনবিহারসহ বৌদ্ধ বিহারগুলোতে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানসহ দানানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
রাঙামাটির সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির রাজবন বিহার প্রাঙ্গণে বুদ্ধ পতাকা উত্তোলন, ভিক্ষু সংঘের পিণ্ডদান ও প্রাতরাশ, মঙ্গল সূত্র পাঠ, বুদ্ধ পুজা, পঞ্চশীল প্রার্থনা, মহাসংঘ দান, প্রদীপ পুজা, হাজার বাতি দান, ফানুস দানসহ বিভিন্ন দানানুষ্ঠানের অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দায়ক-দায়িকাদের উদ্দেশ্যে ধর্মীয় দেশনা প্রদান করেন, রাজবন বিহারের র র আবাসিক প্রধান ও বনভান্তের প্রধান শিষ্য প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির।
রাজবন বিহারের র র উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সহসভাপতি নিরুপা দেওয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ধর্মীয় অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপিরসহ ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ানসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।
এ সময় হাজার হাজার পূর্ণার্থীর সাধু-সাধু ধ্বণিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো রাজবন বিহার প্রাঙ্গণ। শুভ প্রবারণা পুর্ণিমা উপলক্ষে ওইদিন রাজবন বিহার প্রাঙ্গণে পূর্ণার্থীর ঢল নামে।
এছাড়া প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে সন্ধ্যায় রাজবন বিহারে হাজার বাতি প্রজ্জ্বলণ ও ফানুষ উত্তোলনের মধ্যদিয়ে প্রবারণা পূর্ণিমা অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হবে।
রাজবন বিহার ছাড়াও প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে সন্ধ্যা নামলেই জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিহারগুলোতে ধর্মীয় নানা অনুষ্ঠানসহ ফানুস ওড়ানো হবে।
উল্লেখ্য, আড়াই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধ নির্বাণ লাভের পর আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পুর্ণিমা তিথি পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাস শেষে প্রবারণা উৎসব পালন করেন। সেই থেকে বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুরা বর্ষাবাস শেষে দিনটি পালন করে আসছেন। আজকের (সোসবার) এই দিন থেকে পার্বত্য অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারগুলোতে শুরু হবে কঠিন চীবর দানোৎসব।
কঠিন চীবর দানোৎসব উপলক্ষে আগামী ৩০ ও ৩১ অক্টোবর দুই দিনব্যাপী রাজবন বিহারের দেশের সর্ববৃহৎ কঠিন চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
রাজবন বিহারের র এই কঠিন চীবর দানোৎসবে দেশ, বিদেশ ও পার্বত্য অঞ্চলের প্রায় লক্ষাধিকেরও বেশি মানুষ সমাগম ঘটবে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটি রাজবন বিহারের র র উপসক-উপাসিকা পরিষদের সহসভাপতি নিরুপা দেওয়ান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেছেন, আমরা আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করব, কিন্তু প্রতিহিংসায় যাব না। জনগণের ভোটে যারাই নির্বাচিত হয়ে আসবে আমরা ফ্যাসিবাদ বিরোধী সবাই মিলে তাদেরকেই স্বাগত জানাব।
দেবীগঞ্জ উপজেলা জামায়াত আয়োজিত আসন ভিত্তিক নির্বাচনী দায়িত্বশীলদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সোমবার দুপুর ৩ টায় দেবীগঞ্জ উপজেলা মডেল মসজিদের হল রুমে দেবীগঞ্জ উপজেলা জামায়াত আয়োজিত আসনভিত্তিক নির্বাচনী দায়িত্বশীলদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি- ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন এবং বামপন্থি দলগুলোসহ সব দলের নেতারা একসঙ্গে বসেছে। আগামীর বাংলাদেশটা এমন হবে। সবার রাজনৈতিক আদর্শ নিজ নিজ দলের কাছে থাকবে। দেশের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদ মুক্ত বাংলাদেশের প্রশ্নে আমরা সবাই এক থাকবো। আমরা ফ্যাসিবাদ বিরোধী সকল দলকে বলেছি- আমরা সবাই মিলে ফ্যাসিবাদ তারিয়েছি, আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি।
মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, ফ্যাসিস্ট ভারতে চলে গেছে, কিন্তু ফ্যাসিজমের যেসব রং, রূপ রয়ে গেছে- এগুলো সব বিচ্ছিন্ন করে দিতে হবে। এজন্য মানুষকে বুঝাতে হবে, তাদের কাছে আমাদের আবেদন থাকবে- ন্যায় ও ইনসাফের প্রতিক হলো দাঁড়িপাল্লা।
তিনি আরো বলেন, মানুষের মধ্যে আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত হয়েছে- জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে অতীতের তোকমা কেউ আর বিশ্বাস করে না। এই বিশ্বাসের রেজাল্ট পেয়েছি- ডাকসু এবং জাকসুতে। এই বিশ্বাসের রেজাল্ট আগামীর বাংলাদেশে আসবে। এজন্য অহমিকা শতভাগ বর্জন করতে হবে।
পঞ্চগড়-২ আসনের জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন পরিচালক মাওলানা আব্দুল বাসেত এর সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জামায়াতের রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের টিম সদস্য আব্দুর রশিদ, পঞ্চগড়-২ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী সফিউল্লাহ সুফি, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সভাপতি আবুল বাশার বসুনিয়া, দেবীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি বেলাল হোসেন প্রমুখ।
‘পরিকল্পিত উন্নয়নের ধারা, নগর সমস্যায় সাড়া’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে মাগুরায় বিশ্ব বসতি দিবস পালিত হয়েছে।
সোমবার মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের আয়োজনে জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালি শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বসতি দিবসের মূল প্রতিপাদ্য উপস্থাপন করেন মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদ পারভেজ। সভাই প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মাগুরা জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলাম। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডাক্তার শামীম কবির, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহ শিবলী সাদিক, মাগুরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. সাইদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক।
এ সময় বক্তারা বলেন, নিরাপদ আবাসন তৈরিতে সরকারি নীতিমালা মেনে চলা উচিত।
সোমবার সকাল থেকেই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রূপগঞ্জ অংশে ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। কাচঁপুর থেকে গাউছিয়া পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটে দুর্ভোগ পোয়াচ্ছেন যাত্রী সাধারণ ও পরিবহন শ্রমিকরা।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজোলার যাত্রামুড়া সংলগ্ন মহাসড়কে বড় একটি মালবাহী কাভার্ড ভ্যান বিকল হয়ে যানজট শুরু হয়। দুপুর গড়িয়ে বিকেল ৪টার দিকে যানজট বেড়ে ১০ কিলোমিটারে বিস্তৃত হয়।
যাত্রী, পরিবহন শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারাব বিশ্বরোড গোলচত্বর থেকে বরাবো বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়কে খানাখন্দ, ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাটি দিয়ে যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানটি অতিক্রম করার সময় চালকদের অধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে।
মাঝে মধ্যেই মালবাহী গাড়ি বিভিন্ন স্থানে বিকল হয়ে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যদিকে দূরপাল্লার যানবাহন এখানে এসে ধীরগতিতে থেমে থেমে চলাচল করতে হচ্ছে। এতেই সকাল থেকেই যানজটের সূত্রপাত ঘটে।
দুপুরের পর থেকে যানজট দীর্ঘ হয়ে কাচঁপুর থেকে গাউছিয়া পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। যানবাহনের দীর্ঘ সারিতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের। শত শত যাত্রীকে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। এতে উপজেলার অভ্যন্তরীণ এবং দূরপাল্লার যানবাহনের হাজারও মানুষ পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী যাতায়াত পরিবহন বাসের চালক কামাল হোসেন বলেন, ৩টা বাজে বরপা বাসস্ট্যান্ড পার হয়েই যানজটে আটকা পড়ি। এখন বিকেল সাড়ে ৪টা বাজে আছি তারাবো বিশ্ব রোড এলাকায়।
প্রতিনিয়ত এ সড়কে সমস্যায় ভুগছি। কিছু পরিমাণ রাস্তা ঠিক করে দিলে ভালো করে চলতে পারি; কিন্তু তা হচ্ছে না।
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মালবাহী ট্রাকের চালক আব্দুল মালেক বলেন, ‘আমাদের কপাল খারাপ। না হলে যখনই এ রাস্তায় আসি এইখানে এ দশা কেন অইবে! এইখানে আসলেই আমাদের যানজটে পড়তে অয়।’
কর্ণগোপ এলাকার বাসিন্দা নাছিমা আক্তার বলেন, ‘আমি ঢাকা থেকে মাল আনতে যাব; কিন্তু রুপসি বাসস্ট্যান্ডের পর ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করে আবার বাড়িতে ফিরে এসেছি।’
শিমড়াইল ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক জুলহাস উদ্দিন বলেন, ‘ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যাত্রামুড়া এলাকার কাছাকাছি বেলা ১১টার দিকে মালবাহী একটি বড় কভার্ট ভ্যান সড়কের প্রায় মাঝামাঝি অংশে বিকল হয়ে পড়ে। এতে উভয় পাশের গাড়ির স্বাভাবিক গতি বাধাগ্রস্ত হয়। এতেই যানজটের সৃষ্টি হয়। বিকল হওয়া গাড়িটি দ্রুত মেরামতের কাজ চলছে। মহাসড়ককে স্বাভাবিক রাখতে হাইওয়ে পুলিশ নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
মা ইলিশ রক্ষায় সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীতে তৃতীয় দিনের অভিযানে জাল ও নৌকা জব্দ করে উন্মুক্ত নিলাম করেছে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার সকালে পদ্মা নদীর দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ছাত্তার মেম্বার পাড়া ও কলাবাগান এলাকায় ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নিয়ে অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল ও একটি নৌকা জব্দ করেন গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাহিদুর রহমান।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম পাইলট, দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ওসি ত্রিনাথ সাহা, মা ইলিশ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের দাড়িত্বে থাকা পেটি অফিসার শাহিন আলমসহ পুলিশ ও কোস্ট গার্ডের দল।
এ বিষয়ে ইউএনও মো. নাহিদুর রহমান বলেন, ‘মা ইলিশ রক্ষায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে কঠোর অবস্থানে থেকে অভিযান পরিচালনা চলছে এবং এ অভিযান প্রতিদিনই পরিচালনা করা হবে। এ সময় নদীতে থাকা জেলেদের আটকসহ জাল ও অন্যান্য সামগ্রী জব্দ এবং আটকৃতদের মৎস্য আইন অনুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হবে। সরকার ঘোষিত নিষিদ্ধ সময় পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, তৃতীয় দিনের মতো পদ্মা নদীতে অভিযান চালিয়ে আনুমানিক ৫০ হাজার মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, মাছ শিকারে ব্যবহৃত একটি ট্রলার ও ৫ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত জাল ফেরিঘাটে এনে পুড়িয়ে ফেলা, মাছগুলো নদীর তীরবর্তী অসহায় মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয় এবং জব্দকৃত নৌকাটি উন্মুক্ত নিলামে ৩৬ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।
পঞ্চগড় জেলার স্বাস্থ্যসেবার কেন্দ্রবিন্দু ১০০ শয্যার আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রতিদিন শত শত রোগীর ভিড় লেগেই থাকে। জেলার পাঁচটি উপজেলার হাজারও মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে ছুটে আসে এই হাসপাতালে।
ভর্তি ও বহির্বিভাগ মিলে প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজারেরও বেশি রোগী চিকিৎসা নিতে আসলেও, পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় বিপাকে পড়ছেন রোগীরা।
জরুরি সেবা সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ১৫০ থেকে ২০০ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসাসেবা নেন এই হাসপাতালে।
আধুনিক সদর হাসপাতাল, পঞ্চগড় এ চিকিৎসকের পদ সংখ্যা ৩৭টির বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন ২২ জন। ১৫টি পদ শূন্য।
এর মধ্যে মেডিসিন কনসালটেন্ট, গাইনি কনসালটেন্টের পদ ও শূন্য রয়েছে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো- আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পদও শূন্য রয়েছে, একজন মেডিকেল অফিসারকে সাময়িকভাবে আবাসিক মেডিকেল অফিসারের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাই মেডিকেল অফিসারেরও সংকট প্রকট। প্রায় ১০টির মতো মেডিকেল অফিসারের পদ শূন্য রয়েছে।
বহির্বিভাগে প্রতিদিনই প্রায় ১২০০-১৪০০ রোগী সেবা নিচ্ছে, এর মধ্যে মহিলা রোগী সবচেয়ে বেশি প্রায় ৬০০-৮০০, পুরুষ প্রায় ৩০০-৪০০, শিশু প্রায় ৩০০।
চিকিৎসককে একাধিক ওয়ার্ড, বহির্বিভাগ এবং জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালন করতে হয়, যা বাস্তবে অত্যন্ত কঠিন। বিশেষ করে শিশু বিভাগ, মেডিসিন, গাইনি ও সার্জারি বিভাগে রোগীর চাপ সবচেয়ে বেশি থাকায় সেখানে চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অন্যদিকে হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হলেও, নার্স ও সেবা চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। চিকিৎসক না থাকায় অনেক সময় জটিল রোগীদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে।
ডা. মো. রহিমুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালে ডাক্তার সংকট বহুদিনের সমস্যা। আমাদের এখানে ৩৭ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ২২ জন। তা ছাড়া স্পেশালাইজড ডাক্তারও খুব কম। ফলে আমাদের চিকিৎসকদের একাধিক বিভাগে কাজ করতে হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত নতুন ডাক্তার নিয়োগ হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’
পঞ্চগড় জেলার অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও একই সমস্যা বিরাজ করছে। জেলার দেবীগঞ্জ, বোদা, আটোয়ারী, তেঁতুলিয়া ও সদর উপজেলায় সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার সংখ্যা খুবই সীমিত। ফলে সেবার মান স্বাভাবিকভাবেই কমে যায়।
স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশের প্রত্যন্ত জেলা হিসেবে পঞ্চগড়ে চিকিৎসক নিয়োগে অনীহা দেখা যায়। অনেকে পদায়ন পেলেও যোগ দিতে চান না, আবার কেউ যোগ দিয়ে কিছুদিন পর বদলি হয়ে যান। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই এ জেলায় ডাক্তার সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে।
এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন নাগরিকরা বলছেন, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের মৌলিক অধিকার। কিন্তু পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকলে আধুনিক হাসপাতাল থাকার কোনো সুফলই জনগণ পাচ্ছে না। দ্রুত ডাক্তার নিয়োগ এবং পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি সরবরাহের দাবি তুলেছেন তারা।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে এখনকার বাস্তব চিত্র- দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা অসহায় রোগী, ব্যস্ত নার্স ও সেবিকারা, আর একদিকে হিমশিম খাওয়া স্বল্পসংখ্যক চিকিৎসক।
স্বাস্থ্যসেবার এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সরকার ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দ্রুত পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি। যদিও ২৫০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণ হয়েছে; কিন্তু ডাক্তারও সরঞ্জাম নেই। এসব না থাকায় এ পর্যন্ত হাসপাতাল চালু হয়নি।
‘শিক্ষকতা পেশা, মিলিত প্রচেষ্টার দীপ্তি’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নেত্রকোনায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৫ উদযাপিত হয়। শিক্ষক দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান মহোদয়ের নেতৃত্বে সকালে একটি র্যালি বের হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে শুরু হওয়া এ র্যালি পাবলিক হলে গিয়ে শেষ হয়। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শামীমা ইয়াসমিন, সদরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমা বিনতে রফিক। আয়োজনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার জাহাংগীর কবির আহমেদ।
এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে পাবলিক হল মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান। বক্তব্যে বিশ্ব শিক্ষক দিবসে শিক্ষকদের কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি তাদের দায়িত্ব আরও নিষ্ঠার সাথে পালনের কথা বলেন তিনি। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা এবং শিক্ষকদের সাথে সম্মান বজায় রেখে ব্যবহার করার নির্দেশনা দেন।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে চাষিরহাট ইউনিয়নের রথী গ্রামের ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে একটি ড্রেজার মেশিন জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তারের নেতৃত্বে ওই অভিযান চালানো হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাসরিন আক্তার জানান, উপজেলার চাষিরহাট ইউনিয়নের রথী গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে একটি ড্রেজার মেশিন জব্দ করা হয়। চাষিরহাট ইউনিয়নের শহীদ নামে এক ব্যক্তি এই বালু উত্তোলন করছিল। স্থানীয় লোকজন বাঁধা দিলেও তা উপেক্ষা করে।
নাটোরের বড়াইগ্রামে বাসের ধাক্কায় ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সার চালকসহ তিনজন নিহত হয়েছে। সোমবার দুপরে উপজেলার গুনাইহাটি এলাকায় এই দূর্ঘটনা ঘটে। এসময় আরও তিনজন আহত হয়। নিহতেরা হলো, একই উপজেলার কালিকাপুর পূর্বপাড়ার আনসার আলী (৬০) পাশ্ববর্তী লালপুর উপজেলার ধলা গ্রামের অটোরিক্সা চালক লরু প্রমাণিক (৫৫) এবং ধলা ঢাকাইয়া পাড়ার নয়ন আলী (২৩)। এসময় আহত হন নিহত আনসার আলীর স্ত্রী রাজিয়া বেগম (৪৫) ও তার দুই ছেলে রানা (৩৫) ও রাসেল (২৮)।
বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, বগুড়া থেকে কুষ্টিয়াগামী কল্পনা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহি বাস নাটোরের বড়াইগ্রামের গুনাইহাটি এলাকায় একটি ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সাকে ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিক্সাটি দুমড়ে মুচরে ঘটনাস্থলেই অটোরিক্সার চালকসহ তিনজন মারা যান। এসময় গুরুতর আহত হন আরও তিনজন। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতাল ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেই সাথে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে হাইওয়ে থানায় নিয়ে আসে। পরে পুলিশ নারায়নপুর এলাকা থেকে বাসটি আটক করলেও চালক ও তার সহকারী পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
সমবেত প্রার্থনা, ছোয়াইং দান ও ধর্মীয় দেশনা'র মধ্য দিয়ে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে শুরু হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব প্রবারনা পূর্ণিমা।
সোমবার সকাল থেকে বিহারে বিহারে ছোয়াইং দান সমবেত প্রার্থনা ও ধর্মীয় দেশনায় অংশ নেন বৌদ্ধ ধর্মালম্বী নারী পুরুষ, যুবক-যুবতী, তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সি মানুষ। প্রবারনাকে ঘিরে পাহাড়ী পল্লী গুলোতে চলছে নানা আয়োজন। ফানুষ উড়ানো পিঠা তৈরি রথ টানাসহ নানা আয়োজনে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে ৩ দিনব্যাপী চলবে এ উৎসব। তাই উৎসবকে কেন্দ্র করে পাহাড়ে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। বিকালে উড়ানো হয় প্রবারনা পূর্ণিমার প্রধান আকর্ষণ ফানুস বাতি। এসময় সকল ধর্ম বর্ণ মানুষের অংশগ্রহণে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয় বান্দরবান জেলা। তাই যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ও নির্বিগ্নে উৎসব পালন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
মূলত, আর্শিণী পুর্ণিমা থেকে আষাঢ়ী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিনমাস বর্ষাবাস পালনের পর পালন করা হয় বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব প্রবারনা পূর্ণিমা বা ওয়াগ্যোয় পোয়ে। বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের মতে প্রবারণা পূর্ণিমার দিনই রাজকুমার সিদ্বার্থের মাতৃগর্ভে প্রতিসন্দি গ্রহণ, গৃহত্যাগ ও ধর্মচক্র প্রবর্তন সংঘটিত হয়েছিল তাই প্রতিটি বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের কাছে দিনটি আজো বিশেষভাবে স্মরণীয়। তাই নানা আয়োজনে উৎসবটি পালন করে থাকে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা। পাড়ায় পাড়ায় পিঠা তৈরী, ফানুষ উড়ানো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রথ টানা, হাজার প্রদীপ প্রজ্জলনসহ নানা আয়োজনে ৩ দিন ব্যাপী পালিত হবে প্রবারনা উৎসব। বৌদ্ধ ধর্মে বিশ্বাসী মারমা বয়-বৃদ্ধ, তরুণ-তরুণী ও শিশু-কিশোররা এইদিন সকালে বিহারে বিহারে গিয়ে ধর্মীয় গুরুদের চোয়াইং দান (ভান্তেদের ভাল খাবার পরিবেশন) করেন এবং সকালেই সমবেত প্রার্থনা ও সন্ধ্যায় মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্জলনে অংশ নেবেন। এদিকে উৎসবকে ঘিরে পাড়ায় পাড়ায় চলছে রথ তৈরী ও ফানুষ বানানোর কাজ। মারমা যুবক যুবতীরা দল বেধে তৈরী করছে রঙ বেরঙের ফানুষ। শুধু তাই নয় প্রতিটি বিহারে চলছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও সাজসজ্জার কাজ। শেষ মুহূর্তে নতুন পোশাক কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছে তরুণ-তরুণীরা।
মারমা তরুণ-তরুণীরা বলেন, এই দিনের জন্য আমরা একটি বছর অপেক্ষা করে থাকি। এ বছর আমরা অনেক আনন্দ করবো। সকাল সকাল খেয়াং এ এসেছি, ছোয়াইং দান করেছি, প্রদীপ জালিয়েছি এবং প্রার্থনা করেছি। বিকালে আমরা সবাই মিলে ফানুস বাতি উড়াবো। সব মিলিয়ে এবারের প্রবারনা পূর্ণিমায় বন্ধু-বান্ধব ও স্বজন মিলে আনন্দ বিনিময় করব।
অন্যদিকে প্রবারনা উৎসব শান্তিপূর্ণ ভাবে পালনে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানায় বান্দরবানের পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাউছার। তিনি বলেন, এটি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব। তাই এ উৎসবটি যেন উৎসব মুখর পরিবেশে পালন করতে পারে সেজন্য কয়েক স্তরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পোশাকে এবং সাদা পোশাকে পুলিশের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ডিউটি করবে। আশা করি এ ধর্মীয় উৎসবটি আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন করতে পারবে।
উল্লেখ্য, ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে মারমা বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের প্রাণের উৎসব। আর এই প্রাণের উৎসবে ভগবান বুদ্ধকে মনের আশা পুরণের জন্য কাগজে ফানুস বাতি তৈরি করে তাতে আগুন দিয়ে আকাশে উড়িয়ে নিজেদের ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ ঘটায় বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা। প্রবারণা পুর্ণিমার দিনই রাজকুমার সিদ্বার্থের মাতৃগর্ভে প্রতিসন্দি গ্রহণ, গৃহত্যাগ ও ধর্মচক্র প্রবর্তন সংঘটিত হয়েছিল তাই বুদ্ধের ত্রিশুল বিজড়িত এদিনটি প্রতিটি বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের কাছে বিশেষ স্মরণীয় হয়ে আছে। আগামী ৭ অক্টোবর রথ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে তিনব্যাপী এই প্রবারনা উৎসব।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রায় ৫ লাখ শিশুকে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসার কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে স্বাস্থ্যবিভাগ। সোমবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের অংশগ্রহণে কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়।
জেলা তথ্য কর্মকর্তা রুপ কুমার বর্মনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আগামী ১২ অক্টোবর থেকে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচী শুরু হয়ে চলবে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত, প্রথম দুই সপ্তাহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে, পরের দুসপ্তাহে পাড়া মহল্লায় নির্ধারিত কেন্দ্রের মাধ্যমে টিকা দেওয়া হবে। এছাড়াও জেলায় স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রেও এ টিকা দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নে আশ্রয়ণ কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ১০ পরিবারের মাঝে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ অর্থ সহযোগিতা হিসেবে চেক বিতরণ করা হয়েছে।
সোমবার দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপঁচা ১নং আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৭নম্বর শেডের সামনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি পরিবারের মাঝে প্রত্যেক পরিবারের হাতে সাড়ে ৭ হাজার টাকার চেক তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউওনও মো. নাহিদুর রহমান।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আবু বকর, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো. রুহুল আমিন।
এ সময় ইউএনও নাহিদুর রহমান বলেন, গত ২৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত তিনটার দিকে আশ্রয় কেন্দ্রে হঠাৎ আগুনে পুড়ে ১০ পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে শুকনা খাবার এই পরিবার গুলোর মাঝে পৌছে দিয়েছি। আজকে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ১০টি পরিবারের মাঝে সাড়ে ৭ হাজার টাকার ১০টি চেক পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছি, এটা দিয়ে তাদের জরুরি ভিত্তিতে যেটা প্রয়োজন সেটা কিছুটা হলেও মেটাতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, গোয়ালন্দের অনেক প্রবাসী ভায়েরা বিশ্বের অনেক দেশে আছেন, আপনাদেরকে অনুরোধ করবো আপনারা এই অসহায় পরিবার গুলোর পাশে দাঁড়ান। আপনাদের একটু সহযোগিতা পেলে তারা একটু শান্তিতে থাকতে পারবে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত তিনটার দিকে আগুন লাগলে মুহূর্তের মধ্যে সব পুড়ে যায়। এই শেডের ১০টি কক্ষে ১০টি পরিবার বসবাস করতো। তবে মঙ্গলবার রাতে সাতটি পরিবার ঘুমিয়ে ছিলেন। আগুনের তাপে তাদের ঘুম ভেঙ্গে গেলেও ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারেনি।
আগুনের খবর পেয়ে গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশনের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নেভায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে আগুন লাগতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের দাবি, অন্তত ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে তাদের। এসব অসহায় দরিদ্র পরিবার খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।