বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

বাগেরহাটে যুবককে কুপিয়ে হত্যা, ঘাতকের বাড়িতে আগুন দিল জনতা

বিক্ষুব্ধ জনতা হামলাকারী গোড়া নালুয়া এলাকার ডাবলু মুন্সির ছেলে দেলোয়ার মুন্সীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে
প্রতিনিধি, বাগেরহাট
প্রকাশিত
প্রতিনিধি, বাগেরহাট
প্রকাশিত : ৬ মে, ২০২৩ ১৩:১০

বাগেরহাটের চিতলমারীতে আব্দুল জব্বার শেখ (২৬) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়ছে। ঘাতকদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রাজীব শেখ (২৬) নামে আরও একজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

শুক্রবার রাত পোনে ১০টার দিকে উপজেলার গোড়া নালুয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহত রাজীবকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আব্দুল জব্বার শেখ চিতলমারী উপজেলার বড়বাক এলাকার আব্দুল হক শেখের ছেলে। আর রাজিব শেখ উপজেলার গোড়া নালুয়া এলাকার মো. তৈয়ব শেখের ছেলে।

চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মো. মুক্তি বিশ্বাস জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা আব্দুল জব্বার শেখ ও রাজীব শেখ নামে দুই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এর মধ্যে আব্দুল জব্বার শেখ মারা যান এবং রাজীব শেখকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, মাদরাসাছাত্রীকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় আব্দুল জব্বার ও রাজীবের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা হামলাকারী গোড়া নালুয়া এলাকার ডাবলু মুন্সির ছেলে দেলোয়ার মুন্সীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গোটা এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান জানান, নারীঘটিত বিষয়ে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষুব্ধ জনতা হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।


এয়ারপোর্ট মিনি ফায়ার এক্সারসাইজ-২০২৫ অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আজ বেবিচক এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক, বিএসপি, জিইউপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, এসিএসসি, পিএসসি এর নির্দেশনায় “Airport Mini Fire Exercise 2025” সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এই মহড়ার মূল উদ্দেশ্য হলো আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (ICAO) নির্দেশিকা অনুযায়ী বিমানবন্দরে দূর্ঘটনাপ্রবণ পরিস্থিতিতে সার্বিক অগ্নি নিরাপত্তা, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা, অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলোর পারস্পরিক সমন্বয় এবং প্রতিক্রিয়া সময় মূল্যায়নের উদ্দেশ্যে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।

এই মহড়াটি বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। মহড়ায় বিমানবন্দর এর বিভিন্ন সংস্থা: এয়ার পোর্ট ফায়ার সার্ভিস (ফায়ার ভেহিকেল ও অ্যাম্বুলেন্স), এভসেক, বেবিচক ফ্লাইট সেফটি (এজিএ ডিপার্টমেন্ট), এপিবিএন, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল, এয়ারপোর্ট থানা, ডিরেক্টর ফায়ার, এয়ারপোর্ট স্বাস্থ্য বিভাগ এর সদস্য ও অ্যাম্বুলেন্স সহ সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলো অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ফায়ার ইউনিট (ফায়ার ভেহিকেল ও অ্যাম্বুলেন্স), ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর ০২ ইউনিট (দিয়াবাড়ি ও উত্তরা), অ্যাম্বুলেন্স (জাহানারা ক্লিনিক, উত্তরা, ওমেনস মেডিকেল কলেজ, উত্তরা, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল) এজেন্সিগুলো অংশগ্রহণ করে।

মহড়াটি ছিল ড্রাই এক্সারসাইজ, যেখানে আগুন প্রজ্বলন না করে শুধুমাত্র অগ্নিনির্বাপণ প্রতিক্রিয়া, সমন্বয়, যোগাযোগ এবং অপারেশনের গতিশীলতা যাচাই করা হয়। বিশেষভাবে বিমানবন্দরের General Aviation এলাকাকে মহড়ার স্থান হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং নিয়মিত ফ্লাইট অপারেশন স্বাভাবিকভাবেই রেখেই মহড়াটি সম্পন্ন করা হয়।

ঘটনার ধারাবাহিকতায় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (ATC) টাওয়ারে আগুন সংক্রান্ত কল জানার পরে তাৎক্ষণিকভাবে Emergency Operation Center (EOC) সক্রিয় করা হয়। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে জানানোর পর ফায়ার টেন্ডার ও অ্যাম্বুলেন্স দ্রুত ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়ে অগ্নিনির্বাপক গাড়িগুলোর সর্বপ্রকার কার্যকারিতা নিরীক্ষা করা হয়।

মহড়াটি সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সকল অংশগ্রহণকারী সংস্থাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। নিরাপদ, কার্যকর এবং সমন্বিতভাবে বিমানবন্দর পরিচালনা নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতেও এ ধরনের মহড়া অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।


কেশবপুরে বসতভিটা দখলের অভিযোগ ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি

যশোরের কেশবপুর উপজেলার কাকিলাখালী গ্রামের অশোক কুমার দাশের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার কেশবপুরের একটি সাংবাদিক সংগঠনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে ভুক্তভোগী অশোক দাশ তার পরিবারের ওপর হামলা, ভাঙচুরও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, ঘটনার পর থেকে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অশোক দাশ (৬০) জানান, পারিবারিক পূর্ববিরোধের জেরে তার ছোট ভাই অসীম দাশ (৪৮) ও ভাইয়ের স্ত্রী ডলি দাশ (৪২) গত ২ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে লাঠিসোটা নিয়ে তার বসতবাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে। বাড়িতে ঢুকেই তাকে অশ্লীল গালিগালাজ ও বসতভিটা থেকে উচ্ছেদের হুমকি দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে প্রতিবাদ করলে অসীম দাশ তাকে এলোপাথাড়ি মারধর করেন এবং ডলি দাশ হাতে থাকা কাঠের লাঠি দিয়ে হামলার চেষ্টা করেন। এতে অশোক দাশের বাম হাত গুরুতর জখম হয়।

হামলা থেকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তার স্ত্রী স্মৃতি রানী দাশ এবং ছেলে একইভাবে মারধরের শিকার হন। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, হামলাকারীরা বাড়ির দরজা ভেঙে ফেলে, বারান্দার বিভিন্ন সামগ্রী ভাঙচুর করে এবং সেচ মটরের তার, পানি সরবরাহের পাইপ ও মোটরসাইকেলের মিটার ভেঙে প্রায় ৩৫ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে।

শোরগোল শুনে প্রতিবেশী মলয় দাশ, কনক দাশসহ স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। তারা জানান, পুরো বাড়িতে আতঙ্কজনক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল।

পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহত অশোক দাশকে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। বর্তমানে তিনি আংশিক সুস্থ হলেও পরিবারসহ নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে দাবি করেন।

ভুক্তভোগীরা যশোর জেলা প্রশাসনের তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন। তা না হলে যে কোন সময়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

এ বিষয়ে কেশবপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন বলে ভুক্তভোগীরা জানান।


ময়নুল হক মুকুলের স্মরণে নওগাঁয় শোকসভা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নওগাঁ জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ময়নুল হক মুকুলের প্রয়াণে নওগাঁয় শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সংগঠনের নেতারা তার জীবন, সংগ্রাম ও আদর্শকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নওগাঁ জেলা কমিটির উদ্যোগে গত বুধবার শহরের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার মুক্তির মোড়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গণমানুষের নেতা ময়নুল হক মুকুলের শোকসভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবি নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহসীন রেজা।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য জলি তালুকদার।

স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে সামনের সারির নেতা হিসেবে তার ভূমিকা স্মরণ করে বক্তারা বলেন, ‘ মুকুল ছিলেন সততা, সাহস ও আদর্শের প্রতিচ্ছবি; তার মৃত্যু নওগাঁর প্রগতিশীল আন্দোলনের জন্য বিরাট ক্ষতি।’

সিপিবি নওগাঁ জেলার সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিপিবির জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি প্রদ্যুৎ ফৌজদার, বাসদ নওগাঁ জেলা কমিটির আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন মুকুল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা, ‘সোনালী অতীত’ সংগঠনের সদস্য আবুল কালাম আজাদ, আদিবাসী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেবেকা সরেন, একুশে পরিষদের সভাপতি ডিএম আব্দুল বারী, নওগাঁ জেলা জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি আমিন কুজুর এবং জহির রায়হান চলচ্চিত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক রহমান রায়হান বাহাদুর প্রমখ।

উল্লেখ্য গত ৯ সেপ্টেম্বর ময়নুল হক মুকুল ৮০ বছর বয়সে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।


কক্সবাজার সৈকতে পরিবেশ দূষণ সচেতনতায় এবার প্লাস্টিকের দৈত্য

*সচেতনতার আহ্বানে দৈত্যটি নজর কেড়েছে পর্যটকদের *দৈত্যটি বানাতে ব্যবহৃত হয়েছে ৬ মেট্রিক টন প্লাস্টিক
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এস এম জাফর, কক্সবাজার

বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টর বালিয়াড়িতে দাঁড়িয়ে আছে এক বৃহদাকার দৈত্য! আকস্মিক দেখায় অনেকে বিভ্রম হতে পারে- এটা আসল নাকি নকল দৈত্য! পরিবেশ দূষণকারী ক্ষতিকর প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম এই দৈত্যটি। দৈত্যটি নজর কেড়েছে পর্যটকদের। মূলত পরিবেশে প্লাস্টিক বর্জ্যর দূষণ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে প্রতীকী হিসেবে এ প্লাস্টিক দৈত্যটি তৈরি করা হয়েছে।
গত বুধবার সন্ধ্যায় পর্যটকসহ জনসাধারণকে প্রদর্শনের জন্য এই কৃত্রিম দৈত্যটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. আ. মান্নান এটির উন্মোচন করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোহাম্মদ শহীদুল আলম, বিচ ম্যাজিস্ট্রেট আজিম উদ্দিন, বিদ্যানন্দের গভর্নিং বডির সদস্য জামাল উদ্দিন প্রমুখ।
জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এই প্লাস্টিক বর্জ্যের দৈত্যটি তৈরি করেছে। ইতোমধ্যে বিগত কয়েক বছর ধরে পর্যটন মৌসুমে এই প্লাস্টিক দানবটি তৈরি করেছে সংস্থাটি।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা জানান, সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতা সমন্ধে মানুষকে সচেতন করতে সমুদ্র সৈকতে তৈরি করা হয়েছে প্লাস্টিকের দৈত্যটি। যে দানবটি রক্ত-মাংসহীন প্রতীকী হলেও যার হিংস্র থাবায় প্রতিনিয়ত ক্ষত-বিক্ষত মানবদেহ, প্রকৃতি ও প্রাণবৈচিত্র্য। এই দানব প্লাস্টিক দূষণে প্রাণ-প্রকৃতির বিরূপতার সাক্ষ্য দিচ্ছে। দানবটির দেহে বয়ে বেড়ানো প্লাস্টিক দূষণে প্রাণ-প্রকৃতির ক্ষতির মাত্রা দেখানো এবং পরিবেশে ক্ষতির এই বোধটি মানুষের মনে জাগাতে এই উদ্যোগ। এটি প্রদর্শনের সাথে আগামী তিন মাসব্যাপী একটা চিত্র প্রদর্শনীও থাকবে।
দৈত্যটির অবয়বে দেখানো হয়েছে, দেখা গেছে, একটা অতি বিশাল দৈত্য পৃথিবীকে দুভাগ করে ফেলেছে। পৃথিবীর বুক চিরে প্লাস্টিক বের হয়ে যাচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে, পৃথিবী এক বুক প্লাস্টিক নিয়ে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছে।
আয়োজক সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই সমাগম ঘটে লাখো পর্যটকের। যারা সৈকতের বালিয়াড়ি ও সাগরের পানিতে ফেলছে প্লাস্টিক পণ্যসামগ্রীর বর্জ্য। এতে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে দূষণ এবং হুমকির মুখে পড়ছে সামুদ্রিক জীব ও মানবজীবন। আর প্রাণ-প্রকৃতির দূষণ রোধে এবং সচেতনতা সৃষ্টিতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন নিয়েছে প্লাস্টিক বর্জ্যে তৈরি দানব ভাস্কর্যের প্রদর্শনীর মতো ভিন্নধর্মী এ উদ্যোগের।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবক মুহাম্মদ মুবারক জানান, প্রায় চার মাস ধরে কক্সবাজার, ইনানী ও টেকনাফের সমুদ্র সৈকত থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে অন্তত ৮০ মেট্রিক টন সামুদ্রিক প্লাস্টিক বর্জ্য। এসব বর্জ্যের একটা অংশ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিল্পী এই ভাস্কর্যটি তৈরি করেন। আর এটি পুরো পর্যটন মৌসুম সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এটাকে কেন্দ্র করে এখানে প্লাস্টিক দূষণবিরোধী সচেতনতামূলক পথ নাটক ও সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের গভর্নিং বডির সদস্য জামাল উদ্দিন বলেন, সরকারের পরিবেশ মন্ত্রণালয় প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। সরকারের পলিসির সাথে সমন্বয় করে আমরা সারাদেশ থেকে স্বেচ্ছাশ্রমে ৫০০ মেট্রিক টন পরিত্যক্ত প্লাস্টিক রিসাইকেল করেছি। এতে করে প্লাস্টিক বর্জ্য ম্যানেজমেন্টে সরকারি খরচ যেমন কমবে তেমনি মানুষও জানতে পারবে কীভাবে রিসাইকেলের মাধ্যমে বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করা যায়।
দেশব্যাপী এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে কক্সবাজারে আমরা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ছয় মাসব্যাপী প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে কাজ করে যাব। প্লাস্টিক বর্জ্য রিসাইকেলের পাশাপাশি এখানে সচেতনতামূলক ভাস্কর্য প্রদর্শনীর আয়োজনও করছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ভাস্কর ও শিল্পী আবীর কর্মকার জানান, বিদ্যানন্দের ভিন্নধর্মী উদ্যোগ প্লাস্টিক দানবটি তৈরি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের একদল শিল্পী। এতে তারা প্লাস্টিক বর্জ্যের পাশাপাশি ব্যবহার করেছেন কাঠ, পেরেক ও আঁটা (গাম)-সহ আরও কয়েকটি উপকরণ। ভাস্কর্য শিল্পীদের দাবি, এটি ওসান প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি বিশ্বের সর্ব বৃহৎ ‘প্লাস্টিক দৈত্য’। এটি বানাতে প্রায় ৬ মেট্রিক টন প্লাস্টিক ব্যবহৃত হয়েছে।
উন্মোচনকালে জেলা প্রশাসক মো. আ. মান্নান বলেন, সমুদ্র সৈকতকে প্লাস্টিক দূষণের হাত থেকে বাঁচাতে এই উদ্যোগ খুবই কার্যকর ও টেকসই। সমুদ্র বিচরণ করা পর্যটককে সচেতন করতে ভাস্কর্য ও চিত্র প্রদর্শনী অবদান রাখবে। তাতেই উদ্যোগের সফলতা আসবে।
প্লাস্টিক বর্জ্যে নির্মিত এই দানবটি দেখতে ভিড় করেছেন সৈকতে ঘুরতে আসা পর্যটকরা। তারা বলছেন, এটি দেখতে এসে মানুষ দৈত্য-দানবের ভয়ংকর রূপের মতো প্লাস্টিক বর্জ্যের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন হবেন। পাশাপাশি নিজেরাও প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহারে সজাগ থাকবেন।
এই প্লাস্টিক দৈত্য নিয়ে পরিবেশকর্মী ইসলাম মাহমুদ বলেন, বর্তমান সময়ে নদী ও সমুদ্র দূষণের প্রধান নিয়ামক প্লাস্টিক। অপচনশীল এই বর্জ্য মানবজাতিকে এক ভয়াবহ পরিণতির দিকে ধাবিত করছে। এই প্রেক্ষাপটে মানুষকে এ ব্যাপারে গুরুত্বের সাথে সচেতন হতে হবে। সমুদ্র সৈকতে তৈরি করা প্লাস্টিক দৈত্যটি মানুষকে সচেতনতা সৃষ্টিতে অবদান রাখতে পারে।


শেষ বয়সে নির্যাতনের শিকার, ১৫ দিন গৃহবন্দী বৃদ্ধ দম্পতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বড়াইগ্রাম প্রতিনিধি

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় মাদকাসক্ত ভাতিজা ও চাচাতো ভাইয়ের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে এক বৃদ্ধ দম্পতি প্রায় ১৫ দিন নিজ বাড়িতেই গৃহবন্দী অবস্থায় জীবন কাটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ১ নম্বর জোয়ারী ইউনিয়নের কুমরুল গ্রামের বাসিন্দা আলহাজ্ব মোসলেম উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী খাদিজা বেগম এই নির্যাতনের শিকার হন।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিনের ভয় ও আতঙ্কে তাঁরা ঘরের ভেতরেই অস্থির অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, গত ২২ নভেম্বর সকালে বাড়িতে একা পেয়ে মাদকাসক্ত দুই ভাতিজা তৌকির ও তারেক এবং চাচাতো ভাই ফিরোজ পরিকল্পিতভাবে মোসলেম উদ্দিনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। তার চিৎকারে খাদিজা বেগম এগিয়ে এলে তাকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। পরে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে তাঁরা প্রাণে রক্ষা পান।

এরপর থেকেই অভিযুক্তরা তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিলেন বলে দাবি করেন বৃদ্ধ দম্পতি। এতে ভয়ে তারা ঘর থেকে বের হতে পারেননি। গুরুতর অসুস্থ হয়েও চিকিৎসা নিতে পারেননি তারা।

ঘটনার পর ২৪ নভেম্বর বৃদ্ধ দম্পতির জামাতা, অবসরপ্রাপ্ত নৌ-বাহিনীর এক কর্মকর্তা, বড়াইগ্রাম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে তাঁদের একমাত্র ছেলে মাসুম আহমেদও একই থানায় পৃথকভাবে অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা সিনিয়র সিটিজেন হওয়ায় আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ সহায়তা নিশ্চিত করা হবে, বলেনও জানান তিনি।


গজারিয়ায় ৮ হাজার পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

আপডেটেড ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৩:৫৩
গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের বাউশিয়া পাখির মোড় এলাকা থেকে ৮ হাজার পিস ইয়াবাসহ এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি নোহা স্কয়ার গাড়ি জব্দ করা হয়।

বুধবার ( ৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত তিনটায় পরিচালিত এই অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আনোয়ার আলম আজাদ।

আটককৃত মাদক ব্যবসায়ীর নাম মোঃ ইব্রাহিম (৩৫)। সে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার লম্বাবিল হোয়াইকং গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে বলে জানা গেছে।

গজারিয়া থানা সূত্রে জানা যায়, ইয়াবার বড় একটি চালান কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে রাজধানী ঢাকায় যাচ্ছে এরকম একটি খবরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের বাউশিয়া পাখির মোড় এলাকায় অবস্থান নেয় পুলিশ। বুধবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে টেকনাফ থেকে ঢাকাগামী কালো রংয়ের একটি নোহা স্কয়ার গাড়ি তল্লাশি করে ৮ হাজার পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী ইব্রাহিমকে আটক করা হয়। এ সময় মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত গাড়িটিও জব্দ করা হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ' একটি সফল অভিযানে ৮ হাজার পিস ইয়াবাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী আটক হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।


ফ্যাসিস্ট চক্রের অগ্নিসন্ত্রাস, টেলিগ্রামে নাশকতার ছক

আপডেটেড ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০০:২৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

টেলিগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপে পরিকল্পনা করে ঢাকায় অগ্নিসন্ত্রাস ও ককটেল বিস্ফোরণের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করে আসছিল কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাসে অগ্নিসংযোগসহ একাধিক নাশকতার ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততা শনাক্ত করার পর বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার চারজনকে গ্রেপ্তার করেছেন।
গতকাল বুধবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার ডিসি মো. মাসুদ আলম গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।
গত ৩০ অক্টোবর বিকেলে ধানমন্ডিতে ২৮ নম্বর সড়কের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইনস্টিটিউটের গলির মুখে নিষিদ্ধ সংগঠনের ব্যানারে মিছিলের প্রস্তুতি চলছিল। ওই সময় ধানমন্ডি থানা পুলিশ আকস্মিক অভিযান চালিয়ে দুজনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— হাজারীবাগ-ধানমন্ডি এলাকার পরিচিত যুবলীগ নেতা শওকত ওসমান বাবু ও মিলন খান। গ্রেপ্তার বাবু ধানমন্ডি ২২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মিলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি।
পুলিশ জানায়, শওকত ওসমান বাবু দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীর ওপর দমন-পীড়ন চালানোর অভিযোগে কুখ্যাত। ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর সশস্ত্র হামলাকারীদের অন্যতম ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে সরকার পতনের সময় বিদেশে পালিয়ে গেলেও সম্প্রতি মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে আসেন বহু মামলার এই আসামি। দেশে ফিরে তিনি নতুন করে নাশকতার পরিকল্পনা করেন। এ সংক্রান্ত বিভিন্ন ভিডিও, ককটেল বিস্ফোরণের ছবি, বাসে অগ্নিসংযোগের লাইভ ফুটেজসহ নাশকতার নির্দেশনা তার মোবাইল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
হাজারীবাগ বেড়িবাঁধ এলাকায় ১৬ নভেম্বর বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও শওকত ওসমান বাবুর প্রত্যক্ষ নির্দেশনা ও অর্থায়নে সংঘটিত হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
গ্রেপ্তার হওয়া আরেক আসামি মিলন খান নড়াইলের জয়নগর ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় নাশকতা সংগঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন বলে তদন্তে জানা গেছে। তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি স্বপন ও যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির শেখের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। মিলন নড়াইল ও গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এনে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকার লায়ন টাওয়ারের পেছনের একটি টিনশেড বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে দিতেন আর সেখান থেকেই তারা ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় নাশকতা ও ঝটিকা মিছিল পরিচালনা করতেন।
গ্রেপ্তার হওয়া আরেক ব্যক্তি সাব্বির শেখ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। সাব্বির মহানগর যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি স্বপনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত। সাব্বির শেখ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যুবলীগ-ছাত্রলীগ কর্মীদের ডেকে এনে ঢাকায় নাশকতায় যুক্ত করতেন। বিভিন্ন টেলিগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সক্রিয় থেকে বাসে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের নির্দেশনা দিতেন। গত ২৮ নভেম্বর ধানমন্ডিতে নিষিদ্ধ সংগঠনের ব্যানারে মিছিলের প্রস্তুতিতেও তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। যদিও সেদিন পালিয়ে যান। পরে পুলিশ ও রমনা বিভাগের টেকনিক্যাল টিম যৌথ অভিযান চালিয়ে কামরাঙ্গীরচর কোম্পানি ঘাট ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মোবাইল ফোন বিশ্লেষণ করে পুলিশ ‘আস্থায় শেখ হাসিনার যুবলীগ ঢাকা দক্ষিণ’, ‘দরবার হল গ্রুপ’, ‘বাঙালি বাংলাদেশ’, ‘২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ’সহ বিভিন্ন অনলাইন গ্রুপে নাশকতার পরিকল্পনা, ককটেলের ছবি, বিস্ফোরকের তথ্য, অর্থ লেনদেনের প্রমাণ এবং ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বাসে আগুন দেওয়ার ভিডিও উদ্ধার করেছে। রাজধানীর রূপনগর, হাজারীবাগ, ধানমন্ডিসহ কয়েকটি এলাকায় অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাতেও তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততার তথ্য মিলেছে।


অচল অবস্থায় পড়ে আছে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাস টার্মিনাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল প্রতিনিধি

আট বছর আগে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত যশোরের বেনাপোল পৌরবাস টার্মিনালটি কোন কাজে আসছে না। সেখানে যাত্রীবাহী কোন বাস না থাকায় টার্মিনালটি খাঁখাঁ করছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৭ সালে বাস টার্মিনালটি নির্মাণের পর ২ বার উদ্বোধন করা হলেও এখান থেকে কোন বাস ছাড়া হয় না, কোন বাস দাঁড়ায়ও না। যে কারণে কাজে আসছে না মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নির্মিত এই টার্মিনাল।

আর এই টার্মিনালটি চালু না হওয়ায় মাদকসেবীরা ও মাদক ব্যবসায়িরা এই ভবনটিকে নিরাপদ স্থান করে নিয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে সন্ধ্যার পর পর চলে এই টার্মিনালের মধ্যে চলে মাদক সেবন ও মাদক বিক্রি। এখানে দূর-দূরান্ত থেকে মাদকসেবীরা এসে সেবন করে যায়। এর সাথে স্থানীয় অনেক উঠতি বয়সের তরুণরাও ঝুঁকে বসেছে মাদক সেবনে। বাস চালু হলে এখানে রাত-দিন লোক সমাগম থাকলে মাদকসেবীরা ও মাদক ব্যবসায়িরা হয়ত আর আড্ডা দিতে পারত না।

বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে কাগজপুকুর পর্যন্ত ভয়াবহ যানজট মুক্ত রাখতে টার্মিনালটি নির্মাণ করেছিল বেনাপোল পৌরসভা। কিন্তু বাস মালিক ও শ্রমিকসহ স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সার্থের কারণে সফল হচ্ছে না। ফলে যাত্রী ও সাধারণ নাগরিকের সীমাহীন ভোগান্তি রয়েই গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রধান স্থলবন্দর ও ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট বেনাপোলে অবস্থিত। এই ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দিনে হাজার হাজার মানুষ বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াত করে। প্রধান সড়কের শেষ প্রান্তে নোম্যান্সল্যান্ড-সংলগ্ন স্থানে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট হওয়ায় যাত্রী ও পরিবহনের চাপে সেখানে এবং যশোর রোডের বেনাপোল বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেনাপোল পৌরসভা শহরের প্রবেশমুখে কাগজপুকুর এলাকায় মহাসড়কের ধারে নতুন টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন টার্মিনালটি ২০১৭ সালে উদ্বোধন করেন তখনকার সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু সেই থেকে এখনও পর্যন্ত টার্মিনালটি ব্যবহৃত হয়নি।

মালিক-শ্রমিকরা তাদের যানবাহন আগের মতোই নোম্যান্সল্যান্ডের কাছাকাছি চেকপোস্ট বাস টার্মিনাল পর্যন্ত নিয়ে যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বেনাপোল পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. কাজী নাজিব হাসান। যশোর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আজাহারুল ইসলামের নির্দেশনায় তিনি গত বছর ৭ নভেম্বর টার্মিনালটি নতুন করে চালুর উদ্যোগ নেন। কিন্তু এ দফায়ও মাত্র ৭ দিনের মতো সচল ছিল টার্মিনালটি। পরে যানবাহন মালিক-শ্রমিকরা টার্মিনালে গাড়ি না ঢুকিয়ে আগের মতো ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট এলাকায় নিয়ে যান। মালিক-শ্রমিকরা কৌশলের আশ্রয় নিয়ে সবসময় টার্মিনালে দু-একটি বাস রাখছেন।

অভিযোগ রয়েছে, নতুন টার্মিনালটি যাতে ব্যবহৃত না হয়, ‘তার পেছন থেকে যারা কলকাঠি নাড়েন, তাদের শীর্ষে আছেন বেনাপোল এর এক শ্রেণির প্রভাবশালী ব্যবসায়ি সংগঠন’। এসব সংগঠন কারণ দেখিয়ে বলছে পৃথিবীর কোন দেশের সীমান্তের চেকপোস্ট থেকে তিন-চার কিলোমিটার দূরে টার্মিনাল নেই। এত দূরে টার্মিনাল নির্মাণ করা অবাস্তব চিন্তা। সে কারণে টার্মিনালটি ব্যবহৃত হচ্ছে না।’

স্থানীয় অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চেকপোস্ট থেকে দূরবর্তী স্থানে টার্মিনাল করার সিদ্ধান্তটি কতটা যুক্তিপূর্ণ ছিল- তা নিয়ে তাদের মধ্যে সন্দেহ আছে।

শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বেনাপোল পৌরসভার প্রশাসক ডা. কাজী নাজিব হাসান বলেন, ‘গত বছর এর ৭ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা নতুন বাসটার্মিনালটি চালু করেছি। সেখানে নামাজের স্থান, ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার, আনসারদের থাকার ব্যবস্থাসহ আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও বাসমালিকরা এই টার্মিনাল ব্যবহার না করে নোম্যান্সল্যান্ডের কাছে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ পরিচালিত টার্মিনালে বাস নিয়ে যাচ্ছেন। অথচ ওই টার্মিনালটি শুধু আন্তঃদেশীয় বাস প্রবেশের জন্য নির্ধারিত।’


নওগাঁয় অনুমতি ছাড়াই স্কুল মাঠে মেলা, ক্ষোভে ফুঁসছেন মানুষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁয় প্রশাসনের কোন ধরনের অনুমোদন ছাড়াই স্কুল মাঠ দখল করে শীতবস্ত্র ও শিল্পপণ্যের মেলা চালু করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার থেকে শহরের আবাসিক এলাকা হাট-নওগাঁ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই মেলার কার্যক্রম শুরু হয়। স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলমান থাকা সত্ত্বেও আবাসিক এলাকায় মেলা বসানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়রা। ইতোমধ্যে এ মেলা ঘিরে নানা ধরনের বিতর্কও দেখা দিয়েছে। মেলার কাজে জেলা পুলিশের নাম ব্যবহার করা হলেও পুলিশ প্রশাসন এ সম্পর্কে কিছুই জানে না।

জানা যায়, আবাসিক এলাকা হওয়ায় হাট-নওগাঁ স্কুল মাঠটি দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা, পরীক্ষা ও ক্রীড়া কার্যক্রমের মূল জায়গা। দুই সপ্তাহ আগে থেকেই মেলার অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু হয়। পুরো মাঠ টিনের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলায় স্কুলের প্রধান গেট বন্ধ হয়ে যায়। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিকল্প দরজা ব্যবহার করতে হচ্ছে। চলমান পরীক্ষার সময় বাড়তি শব্দ ও ভিড়ের কারণে শিক্ষার্থীরা মনোযোগ হারাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার দুপুরে দেখা যায়, বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার ফাঁকে মেলায় ঘুরতে এসেছে।

এক মাসব্যাপী এই মেলার আয়োজন করেছে রাজশাহী শিল্ক অ্যান্ড বেনারসি জামদানি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি। বিনোদনের জন্য বসানো হয়েছে নাগরদোলা, নৌকা ও ড্রাগন রাইড। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মেলা খোলা থাকে এবং প্রবেশ মূল্য রাখা হয়েছে ২০ টাকা।

হাট-নওগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম ও নবম শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থী জানান, গেট বন্ধ থাকায় প্রবেশে সমস্যা হচ্ছে এবং পরীক্ষায় মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। মাঠে খেলাধুলাও বন্ধ হয়ে গেছে।

হাট নওগাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, তাদের পরীক্ষায় তেমন সমস্যা হয়নি, তবে অবকাঠামো নির্মাণের সময় কিছু অসুবিধা হয়েছে।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির স্বত্বাধিকারী রহিদুল ইসলাম জানান, এখনও আনুষ্ঠানিক অনুমতি মেলেনি। আগামী ১২ ডিসেম্বর পরীক্ষার পর মেলা পুরোপুরি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এ নিয়ে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রশাসক এবং হাট-নওগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি জান্নাত আরা তিথি বলেন, প্রধান শিক্ষক স্কুল মাঠে মেলা চালানোর অনুমতি দেওয়ার অধিকার রাখেন না। আমাকে বিষয়টি জানানোও হয়নি। একটি আবেদন পেয়েছি।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম বলেন, নওগাঁয় অনুষ্ঠিতব্য শিল্প এবং বাণিজ্যিক মেলার সাথে জেলা পুলিশের কোন সম্পর্ক নেই। এই মেলায় জেলা পুলিশ, অথবা পুলিশ নারী কল্যাণ সংঘের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। কতিপয় মহল বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

নওগাঁর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, মেলা সংক্রান্ত একটি আবেদন পাওয়া গেছে, অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছে।


ফেনীতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য কৃষি পণ্যে বিতরণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফেনী প্রতিনিধি

ফেনী সদর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও ক্রীড়া সামগ্রী এবং মাছের পোনা ও কীটনাশক বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে উপজেলা মিলনায়তনে বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মনিরা হক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, উপজেলা পর্যায়ে রাজস্ব উদ্বৃত্ত উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে সকল সেক্টরের মাঝে প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এটা প্রশংসনীয় উদ্যোগ। রাজস্ব আয় বাড়লে এ বিতরণ কার্যক্রম আরও বাড়ানো সম্ভব।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ফাতিমা সুলতানা, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ফেনী সদরের উপজেলা প্রকৌশলী দীপ্ত দাশ গুপ্ত । সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নুরুল আমিন, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাইফুল ইসলাম, জেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি শামসুল ইসলাম চৌধুরী।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুলতানা নাসরিন কান্তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান অনগ্রসর ১৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬০ টি মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী, স্বাস্থ্য বিভাগের স্বাস্থ্য পরিদর্শকদের মাঝে ৮০টি ছাতা, কমিউনিটি ক্লিনিক এর জন্য ৩৫টি বিপি মেশিন, মৎস্য চাষিদের মাঝে ২ লাখ টাকার মাছের পোনা, কৃষকদের মাঝে কিছুই উপকরণ হিসেবে ৮০টি স্প্রে মেশিন, প্রাণিসম্পদের জন্য ২ লাখ টাকার, প্রজনন বীজ, কৃমিনাশক ওষুধ ও ভিটামিন ওষুধ বিতরণ করা হয়। জানা গেছে, বিতরণকৃত এসব মালামালের আনুমানিক মূল্য ২৩ লাখ টাকা।


টেকনাফে অপহরণ বন্ধে ও সেনাঘাঁটি স্থাপনের দাবিতে ব্লকেড কর্মসূচি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

শিশুসহ অপহৃত ব্যক্তিদের দ্রুত উদ্ধারের দাবিতে কক্সবাজারের টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের শামলাপুর এলাকায় সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। বুধবার বিকেলে বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর মেজর সিনহা চত্বরে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে ছাত্র, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন হাতে অংশ নেন। এ সময় পর্যটকবাহী ও যাত্রীবাহী যান চলাচল কিছু সময় বন্ধ থাকে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত বাহারছড়া এলাকায় সাম্প্রতিক সময়ে অপহরণ বেড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বশেষ গত রোববার শিশুসহ ৪ জনকে পাহাড়ি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা অপহরণ করে। তাদের দাবি, গত এক বছরে টেকনাফে ২৬৪ জন অপহৃত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই মুক্তিপণের বিনিময়ে ফিরে এসেছেন।

মানববন্ধনে উপস্থিত টেকনাফ মডেল থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূর বলেন, ‘অপহরণ বন্ধের দাবিতে এ কর্মসূচির যৌক্তিকতা রয়েছে, আমরা একে সমর্থন করি। পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ না করার জন্য স্থানীয়দের অনুরোধ জানাই।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব উখিয়া–টেকনাফ (ডুসাট) সভাপতি জয়নাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা আর কোন অপহরণ চাই না। আমাদের ভাইদের ফিরিয়ে দিন। দিন দিন এ এলাকায় বসবাস অনিরাপদ হয়ে উঠছে। আমরা সেনাবাহিনীর চৌকি স্থাপন ও বিশেষ অভিযানের দাবি জানাই; না হলে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হবো।

শামলাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও টেকনাফ উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি এম এ মন্জুর বলেন, একদিকে পাহাড়, অন্যদিকে সাগর- বাহারছড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন এলাকা। কিন্তু অপহরণকারীদের তৎপরতায় এখন পর্যটকরাও আসতে ভয় পায়। পাহাড়পাদে থাকা মানুষ নিদ্রাহীন রাত কাটাচ্ছে, কেউ কেউ স্কুল–মাদ্রাসায় রাতযাপন করছে। ছাত্র-ছাত্রীরাও আতঙ্কে স্বাভাবিক পড়াশোনা করতে পারছে না। সব বাহিনীর নিয়মিত অভিযান ছাড়া আমরা মুক্তি পাব না।’

বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন বলেন, ‘২৫ কিলোমিটারের এ ইউনিয়নে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের বসবাস। অথচ অপহরণকারী সর্বোচ্চ ১০০ জন। জনগণ সচেতন হলে তারা কোনোভাবেই রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম চালাতে পারবে না। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করলে কেউ অপহরণের সাহস দেখাতে পারবে না।’

এলাকাবাসীর ৬ দফা দাবি:

১. আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপহৃত ৪ জনকে অক্ষত অবস্থায় বিনা মুক্তিপণে ফিরিয়ে দিতে হবে। ২. অপহরণচক্রের সহযোগী স্থানীয় এজেন্টদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।

৩. অপহরণে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি- ‘আমৃত্যু কারাদণ্ড’ নিশ্চিত করতে হবে। ৪. পাহাড়ে সপ্তাহব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান ও সার্বক্ষণিক সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করতে হবে।

৫. নাটকীয় অভিযান ও মুক্তিপণের বিনিময়ে উদ্ধার পরবর্তী ভিকটিম নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। ৬. নির্দিষ্ট সময়ে ভিকটিম উদ্ধার করতে ব্যর্থ হলে দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও টেকনাফ থানার পুরো টিমকে অপসারণ করে দক্ষ বাহিনী নিয়োগ দিতে হবে।


বন্দরে পড়ে থাকা শত কোটি টাকার ড্রেজিং-পাইপ নিলামে

দুই লটে বিশেষ নিলামে উঠবে ২ হাজার ৭৮৩ টন সরঞ্জাম
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আহসান হাবিবুল আলম, চট্টগ্রাম

অবশেষে চট্টগ্রাম বন্দরের অকশন শেডে পড়ে থাকা শত কোটি টাকার ড্রেজিং পাইপ উঠল নিলামে। ২ হাজার ৭৮৩ টন ড্রেজিং পাইপ ও অন্যান্য সরঞ্জাম দুই লটে বিশেষ নিলামে তুলেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তবে ড্রজিং পাইপ ও অন্যান্য সরঞ্জাম বিক্রির জন্য কোনো ধরনের সংরক্ষিত মূল্য নির্ধারণ করেনি কাস্টমস। গত ২০ নভেম্বর থেকে বিডারদের (নিলামে অংশগ্রহণকারী) কাছ থেকে অনলাইনে প্রস্তাবিত দরপত্র গ্রহণ শুরু হয়েছে। দরপত্র নেয়া হবে আগামী ১৫ ডিসেম্বর বিকাল ৪টা পর্যন্ত। আগ্রহী বিডাররা পণ্য পরিদর্শন করতে পারবেন ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, ড্রেজিং কাজে ব্যবহারের জন্য ২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর ২০ ফুট এবং ৪০ ফুট সাইজের ১ হাজার ৯০০টি পাইপ আমদানি করেছিল চ্যাঞ্জিং ড্রেজিং প্রাইভেট লিমিটেড নামে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান। একই চালানে ছিল পাইপ ফিটিংসের নানা উপকরণসহ আরও ৮ কনটেইনার পণ্য। কিন্তু নতুনের পরিবর্তে ব্যবহৃত পাইপ আমদানি করায় পাইপগুলোর ডেলিভারি আটকে দেয় চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ। পাইপগুলো থাকার কারণে বন্দরে অন্যান্য মালামাল রাখতে অসুবিধা হচ্ছিল। এ অবস্থায় ২০২০ সালেই নিলামে বিক্রি করতে এসব পাইপ বাই পেপার চট্টগ্রাম কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় গত ৬ বছর ধরে চট্টগ্রাম বন্দরের শেডে পড়ে থাকে বিশাল আকৃতির এসব পাইপের লট। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি সনদ (এনওসি) না পাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে নিলাম প্রক্রিয়া আটকে থাকে। অবশেষে গত ১০ নভেম্বর মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় এনওসি ইস্যু করে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই অনাপত্তিপত্রে সরকারের রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে এসব পণ্য দুই লটে নিলামের মাধ্যমে নিষ্পত্তির অনুমোদন দেওয়া হয়। অনাপত্তিপত্রে আমদানি নীতি মেনে চলা, প্রযোজ্য শুল্ক-কর পরিশোধ ও পণ্যগুলো ব্যবহারযোগ্য কি না, তা নিশ্চিত করার শর্ত দেওয়া হয়েছে। এ অনুমোদন কেবল নির্দিষ্ট এই চালানের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

কাস্টমসের কর্মকর্তারা জানান, চীন থেকে আমদানিকৃত ২ হাজার ৭০০ টন ওজনের পাইপের আমদানিমূল্য ছিল ৮০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এছাড়া ৮৩টন ওজনের অন্যান্য পণ্যের দাম ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয় চালানে। গত ২০২০ সালেই নিলামে বিক্রি করতে এসব পাইপ চট্টগ্রাম কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করেছিল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাাম কাস্টমসের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনা মো. রাসেল আহমেদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেনারের জট নিরসনে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নিয়মিত বিরতিতে নিলাম কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে এবার বিশেষ নিলামে দুই লট ড্রেজিং পাইপ ও সরঞ্জাম তোলা হয়েছে। আগ্রহী বিডারদের কাছে অনলাইনে প্রস্তাবিত দর মূল্যে নেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, যেহেতু ২০১৯ সালের পণ্য, তাই কাস্টমস বিধি অনুযায়ী এসব পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করা হয়নি। বিডারদের (নিলামে অংশগ্রহণকারী) মধ্যে যিনি সর্বোচ্চ দরদাতা হবেন। তিনি পণ্যগুলো পাবেন।

এদিকে চট্টগ্রাম কাস্টমস নিলাম ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. এয়াকুব চৌধুরী বলেন, এসব পাইপ এতদিন চট্টগ্রাম কাস্টমসের জন্য এক প্রকার বোঝা ছিল। অবশেষে নিলামে তোলার কারণে সরকার এসব পাইপ বিক্রি করে রাজস্ব আয় করতে পারবে। তবে একটি ট্রলিতে তিনটির বেশি পাইপ উঠানো যাবে না। চট্টগ্রামের বাইরের বিডারদের জন্য অনেক ব্যয়বহুল হয়ে যাবে। ফলে এটি স্ক্র্যাপ হিসেবেও দর উঠতে পারে।

প্রসঙ্গত; আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। ফলে আমদানিকৃত পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেওয়ায় বন্দরে প্রায়ই কন্টেনার জট লেগে থাকে। এদিকে দিনের পর দিন কন্টেনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো চার্জ পায় না। তবে ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার যে নিয়ম তা নানা জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।


ফরিদপুরে ৩ দফা দাবিতে সহকারী শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি পালন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর 

দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফরিদপুর সদর উপজেলা শিক্ষক সমিত ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। বুধবার বেলা ১২টায় ফরিদপুর সদর উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি সুশান্ত কুমার সরকারের সভাপতিত্বে এবং শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়ক ও উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেনের সঞ্চালনায় ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন ফুসরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হাসান আহমেদ, ডোমরাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সেলিনা জানান, সহকারী শিক্ষক মলি আক্তার, গোলাপবাগ লতিফুন্নেসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, মধ্য চরটেপাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দেবাশীষ ব্যানার্জি।

এছাড়াও এ সময় বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম, দয়ারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ ফরহাদ শেখ, মুরারীদাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমি হায়দার, মোতালেব হোসেন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শামীম ইকবাল, খালিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি শিক্ষক মোহাম্মদ ফরিদ শেখ, টেপাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাজমুল হোসেনসহ ফরিদপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

অবস্থান কর্মসূচি থেকে শিক্ষকরা জানান তাদের ন্যায্য দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। এবং কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।


banner close