সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২

যুবককে পিটিয়ে হত্যা: ৯ মাস পর মরদেহ ফেরত দিল ভারতীয় পুলিশ

কফিনবন্দি হয়ে নয় মাস পর দেশে এল আব্দুস সালামের মরদেহ। ছবি: দৈনিক বাংলা
প্রতিনিধি, পঞ্চগড়
প্রকাশিত
প্রতিনিধি, পঞ্চগড়
প্রকাশিত : ২১ মে, ২০২৩ ১১:৩১

পঞ্চগড় সীমান্তের ওপারে ভারতীয় ভূখণ্ডে গরু চোরাকারবারি সন্দেহে আব্দুস সালাম (৩৫) নামে এক বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যার দীর্ঘ নয় মাস পর মরদেহ ফেরত দিয়েছে সেদেশের পুলিশ।

শনিবার সন্ধ্যায় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি সীমান্তের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে মরদেহটি দেশে আনা হয়। প্রথমে তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ মরদেহটি গ্রহণ করে আইনি প্রক্রিয়া শেষে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এরপর রাতেই মরদেহটি বুঝে পায় পরিবার।

সালাম পঞ্চগড় জেলা সদরের সাতমেরা ইউনিয়নের কাহারপাড়া এলাকার মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে। তার মরদেহ গ্রামে নেয়া হলে সেখানে হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। স্বজনরা শেষবারের মতো তাকে দেখতে ছুটে আসেন বাড়িতে।

রোববার আব্দুস সালামের জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফনের কথা রয়েছে।

গত বছরের ২৩ আগস্ট রাতে আব্দুস সালাম কয়েকজন যুবকের সঙ্গে ভারতের জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের সীমান্ত এলাকার চাউলহাটি সংলগ্ন বড়ুয়াপাড়া গ্রামে ঢোকেন। তখন গরু চোরাকারবারি সন্দেহে স্থানীয়রা তাকে গণপিটুনিতে হত্যা করে। পরদিন বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে জানতে পারে সালামের পরিবার। তখন ভারতীয় পুলিশ মরদেহটি স্থানীয় একটি হাসপাতালের হিমঘরে রেখে দেয়।

ঘটনার পর থেকে মরদেহ ফেরত আনতে প্রশাসনের সহায়তায় উভয় দেশের হাইকমিশন ও মানবাধিকার কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। অবশেষে প্রায় নয় মাস পর ভারতীয় পুলিশ তাদের সব প্রক্রিয়া শেষে সালামের মরদেহ ফেরত দিল।

তবে নির্মম এ হত্যাকাণ্ডের পর এতদিন মরদেহ আটকে রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সালামের পরিবার ও স্থানীয়রা। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানায় তারা।

আব্দুস সালামের বড় ভাই আলিম হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে ছোট ভাইয়ের মরদেহ নিতে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। সবাই অপেক্ষায় ছিলাম কবে তার মরদেহ দেশে আনা সম্ভব হবে। দীর্ঘ নয় মাস পর ভারতের সাড়া পেয়ে ছোট ভাইয়ের মরদেহ দেশে আনতে আমি একজন ইউপি সদস্যকে (মেম্বার) সঙ্গে নিয়ে গত ১৬ মে দেশটিতে যাই। শনিবার তার মরদেহ দেশে আনা সম্ভব হয়েছে।’

পঞ্চগড় সদরের সাতমেরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তর ও হাইকমিশনে যোগাযোগ করে আসছিলাম। অবশেষে নয় মাস পর মরদেহটি প্রশাসনের সহায়তায় দেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে।’

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা দৈনিক বাংলাকে জানান, আব্দুস সালামের মরদেহ পাওয়ার পর সব আইনি ব্যবস্থা শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বিষয়:

‘‘অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদে তিতাস গ্যাস কর্তৃক অভিযান’’

‘‘অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদে তিতাস গ্যাস কর্তৃক অভিযান’’
আপডেটেড ১৪ জুলাই, ২০২৫ ১৭:৪৫

তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ১৩ জুলাই (রবিবার) ২০২৫ তারিখে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব সৈকত রায়হান, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -জয়দেবপুর, জোবিঅ -টংগী -এর আওতাধীন দাউদপুর, রুপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এলাকার ১টি স্পটে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে আনুমানিক ৪০০ টি বাড়ির ৫০০ টি আবাসিক ডাবল চুলার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় ২" ব্যাসের আনুমানিক ১,০০০ ফুট লাইন পাইপ ও ১/২" ব্যাসের আনুমানিক ৩০০ ফুট হোস পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে।

একই দিনে, জনাব হাসিবুর রহমান, সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ-এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -সোনারগাঁও, জোবিঅ -সোনারগাঁও -এর আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুরের সোনারগাঁও ইকোনোমিক জোনের পার্শ্ববর্তী এলাকার ৩টি স্পটে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে ৩ টি অবৈধ চুনা কারখানার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় ১.৫" ব্যাসের আনুমানিক ১২০ ফুট লাইন পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও ১.৫" পিভিসি পাইপ উৎসস্থলে বিনষ্ট করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় পানি স্প্রে করে চুনা ভাট্টির মালামাল নষ্ট করা হয়েছে এবং এক্সকেভেটরের মাধ্যমে মালামাল গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি অবৈধ বিতরণ লাইন উৎস পয়েন্ট হতে কিলিং/ ক্যাপিং করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর, ২০২৪ হতে গত ১৩ জুলাই, ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে ২৭৪টি শিল্প, ২৭৩টি বাণিজ্যিক ও ৪৬,৬১৯টি আবাসিকসহ মোট ৪৭,১৬৬টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ ও ১,০০,৬৬৭টি বার্নার বিচ্ছিন্ন সহ উক্ত অভিযানসমূহে ১৯৩ কিলোমিটার পাইপলাইন অপসারণ করা হয়েছে।


বিজিবি’র অভিযানে জুন-২০২৫ মাসে ১৩৬ কোটি ৯ লক্ষাধিক টাকার চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গত জুন-২০২৫ মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ১৩৬ কোটি ৯ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।

জব্দকৃত চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ৪ কেজি ৩৩৮ গ্রাম স্বর্ণ, ১৩,৩৭২টি শাড়ী, ৩,৫০০টি থ্রিপিস/শার্টপিস/চাদর/কম্বল, ৫৪৮টি তৈরী পোশাক, ২,১৪৭ মিটার থান কাপড়, ২,২৫,০৯৬টি কসমেটিক্স সামগ্রী, ৪,৫৭৮টি ইমিটেশন সামগ্রী, ৬,৬৪,৫০৮টি আতশবাজি, ৬,৩৪৫ ঘনফুট কাঠ, ৪,৯০৩ কেজি চা পাতা, ৩১,৯৭৪ কেজি সুপারি, ১৭,৭৬৯ কেজি সার, ১০,৫৪০ কেজি কয়লা, ১৯,২০৪ কেজি সুতা/কারেন্ট জাল, ১,৩২৮টি মোবাইল, ১,৮৫০টি মোবাইল কভার, ৩৭,৫৪১টি মোবাইল ডিসপ্লে, ১৫,৫১৯টি চশমা, ২,১৮২ কেজি বিভিন্ন প্রকার ফল, ৫,৮৪৪ কেজি ভোজ্য তেল, ১,০০০ লিটার ডিজেল, ৩,১৮২ কেজি জিরা, ১,৩৩৬ প্যাকেট বিভিন্ন প্রকার বীজ, ৭,৪৯২ পিস চিংড়ি মাছের পোনা, ১,১৫০ কেজি কফি, ৫,৪৭,২৪৬ পিস চকোলেট, ৭৭৭টি গরু/মহিষ, ১টি কষ্টি পাথরের মূর্তি, ৩টি বাস, ১০টি ট্রাক/কাভার্ড ভ্যান, ৩টি পিকআপ/মাহেন্দ্র, ৭টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ১৩৮টি নৌকা, ২৭টি সিএনজি/ইজিবাইক, ৬৪টি মোটরসাইকেল এবং ৩৯টি বাইসাইকেল।

উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ২টি দেশীয় পিস্তল, ১টি বিদেশী পিস্তল, ২টি দেশীয় একনাল বন্দুক, ৩টি শটগান, ৩টি মর্টার শেল, ১৯টি গুলি এবং ৪টি হ্যান্ড গ্রেনেড।

এছাড়াও গত মাসে বিজিবি কর্তৃক বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ১২,৬৮,০১৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৭ কেজি ৯২৫ গ্রাম হেরোইন, ১ কেজি ৪৩০ গ্রাম কোকেন, ৮,২৭২ বোতল ফেনসিডিল, ১০,৯৪০ বোতল বিদেশী মদ, ৩৯৩.৫ লিটার বাংলা মদ, ১,৪৩৫ বোতল ক্যান বিয়ার, ১,৬৯৮ কেজি ৭০৭ গ্রাম গাঁজা, ১,২৪,৫৮৭ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ২,৬৪৯ কেজি তামাক পাতা, ৫৩,৯৩৫টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট/ইনজেকশন, ৪,৭৭০ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ১৭ বোতল এলএসডি, ১২,৩৭৬টি এ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট এবং ৯,৬১,০৩৩ টি বিভিন্ন প্রকার ঔষধ ও অন্যান্য ট্যাবলেট।

সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯৭ জন চোরাচালানী এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ১৫৫ জন বাংলাদেশী নাগরিক ও ৭ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৩৩৫ জন মায়ানমার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত প্রদান করা হয়েছে।


ভৈরবে বাস চাপায় নিহত ১,  আহত ৩ জন 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি 

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে শ্যামল ছায়া বাসের চাপায় জুয়েল মিয়া (৪৫) নামের অটোরিকসার যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় চালকসহ ৩ জন আহত। নিহত ব্যক্তি উপজেলার বাশঁগাড়ি গ্রামের জালাল মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় একজন নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন।

সোমবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের পান্নাউল্লাহচর এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ।

স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, সকালের দিকে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের বাঁশগাড়ী এলাকা থেকে একটি ব্যাটারি চালিত অটোরিকসায় চড়ে কাজে যাচ্ছিলেন নির্মাণ জুয়েল মিয়াসহ আরো ২ জন শ্রমিক। অটোরিকসাটি যখন ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে উঠবে ঠিক সে মুহুর্তে ময়মনসিংহগামী শ্যামল ছায়া নামের ( ঢাকা মেট্রো -ব -১১৪১১৭) একটি বাস চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই একজনের মৃত্যু হয়। এসময় গুরুতর আহতদের উদ্ধারর করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিতসরা তাদেরকে ঢাকায় রেফার্ড করেন।

এ বিষয়ে ভৈরব থানার এসআই রুকনুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল থেকে জুয়েল মিয়া নামের একজন নির্মাণ শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে অটোরিকসাটি আঞ্চলিক সড়কে উঠার সময়ে সামনের দিক থেকে আসা দ্রুত গতির বাসের চাপায় অটোরিকসার যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় নিহতের স্বজনের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।


মাগুরায় বাসের ধাক্কায় ভ্যানচালকসহ নিহত ৩, আহত ১৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

মাগুরায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় সাগর হোসেন (৩০) নামে এক ভ্যানচালক ও রেশমা খাতুন (৩৫) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।

রবিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে মাগুরা সদর উপজেলার আলমখালী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের মাগুরা ও ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহতদের মধ্যে ভ্যানচালক সাগর মাগুরা সদর উপজেলার গৌরিচরণপুর গ্রামের আওয়াল মোল্ল্যার ছেলে।

নিহত রেশমা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে মারা যান। তিনি মাগুরা সদর উপজেলার রাঘবদাইড় ইউনিয়নের দোড়ামতনা গ্রামের আনিসুর রহমানের স্ত্রী। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অপর নিহত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়নি।

আহতদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন— তানিয়া (২০), সোহাগ (২৭), সামসুল (৩৪) এবং সামিহা (৩০)। তাদের মাগুরা সদর হাসপাতাল ও ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, গতকাল (রবিবার) সকালে মাগুরার আলমখালী বাজার থেকে একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান যাত্রী নিয়ে হাটগোপালপুর বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। পথে ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের রামনগর এলাকার ঢালব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ভ্যানটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ভ্যানচালক সাগর ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

দুর্ঘটনার পর বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের খাদে উল্টে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আহতদের উদ্ধার করে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

মহাসড়কের গর্ত এড়িয়ে চলতে গিয়ে ভ্যানটি রাস্তার মাঝখানে উঠে যায়, যার ফলে এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে হাইওয়ে পুলিশ।

এ বিষয়ে রামনগর হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুব হোসেন জানান, রবিবার সকালে মেহেরপুর থেকে যাত্রীবাহী গোন্ডেন লাইন পরিবহনের একটি বাস ঢাকার উদ্দ্যেশে ছেড়ে আসে। পথে মাগুরা-ঝিনাইদহ সড়কের রামনগর পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী বাস ব্যাটারিচালিত ভ্যানটিকে ধাক্কা দেয়। এ সময় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে উল্টে যায়। পরে এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে মাগুরা ও ঝিনাইদহ হাসপাতালে পাঠান।

তিনি আরও জানান, এ দুর্ঘটনায় বাসটিকে পুলিশ আটক করেছে। তাছাড়া, মাগুরা থানায় একটি মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান এসআই মাহবুব।


হাঁস-মুরগির বাচ্চা ফুটিয়ে সফল সরিষাবাড়ীর রঞ্জু    

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সরিষাবাড়ী (জামালপুর) সংবাদদাতা

প্রাকৃতিক উপায়ে হাঁস, দেশি মুরগি, রাঁজহাস, টাইগার মুরগি, তিতির, কোয়েল পাখি, টার্কি, মিশরী ফাউমি, সোনালি মুরগির ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা বিক্রি করে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন জামালপুরের সরিষাবাড়ীর রাশেদুল ইসলাম রঞ্জু। তার হাত ধরে বহু বেকার নারী-পুরুষ এখন হাস মুরগির খামার গড়ে তুলেছেন। রাশেদুল ইসলাম রঞ্জু উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বয়ড়া বাজারের মৃত গিয়াস উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে। এগুলো মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনেও সহায়ক বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

সরেজমিনে দেখা যায়, নিজ বাড়িতে টিনের ঘরেই বসিয়েছে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ডিম ফোটানোর যন্ত্র ইনকিউবেটর। প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী-পুরুষরা ডিম নিয়ে আসে হ্যাচারিতে বাচ্চা ফোটানোর জন্য। প্রতি সপ্তাহের সোমবার ও শুক্রবার ক্রেতারা ভিড় জমান হ্যাচারি পল্লিতে বাচ্চা সংগ্রহের জন্য। প্রতিটি ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাতে নেওয়া হয় মাত্র ৫ টাকা। আবার ফোনের মাধ্যমে অর্ডার করলেই নির্ধারিত ঠিকানায় পৌঁছে যায় হাঁস বা মুরগির বাচ্চা। প্রাকৃতিক উপায়ে ডিমে তাপ দিয়ে বাচ্চা ফোটানো হয়। ব্যবসার জন্য একসঙ্গে অধিক পরিমাণে ডিম ফোটানোর ক্ষেত্রে ইনকিউবেটরের বিকল্প নেই। আবার যদি কেও ডিম না দিয়ে বাচ্চা কিনতে চায় সেটারও ব্যবস্থা আছে এই হ্যাচারিতে। প্রকারভেদ অনুযায়ী স্বল্পমূল্যে এক দিন বয়সের প্রতিটি হাঁস, মুরগির বাচ্চা ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়।

এছাড়া বিক্রি করা হয় হাঁস, দেশি মুরগি, রাঁজহাস, টাইগার মুরগি, তিতির মুরগি, কোয়েল পাখি, টার্কি, মিসরী ফাউমি, সোনালি মুরগির বাচ্চা। সেক্ষেত্রে ভালো জাতের হাঁস, মুরগি, রাঁজহাস, কোয়েল পাখি, টার্কি, মিসরী ফাউমি, সোনালি মুরগির ডিম সংগ্রহ করেন হ্যাচারি মালিক ও কর্মচারীরা। সেগুলো পানিতে পরিষ্কার করে বাছাই করে কাঠ দিয়ে বিশেষভাবে বানানো ডিম রাখার পাত্রে সারিবদ্ধভাবে রেখে ফ্যানের বাতাশে রাখা হয়। ২৮ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়।

হ্যাচারি থেকে বাচ্চা নিয়ে খামার করা রনি আহমেদ বলেন, আমি রাশেদুল ইসলাম রঞ্জুর হ্যাচারির কথা জানতে পারি। সেখানে গিয়ে বিভিন্ন জাতের হাঁস মুরগির বাচ্চা দেখি। সেখান থেকে প্রথমে ২০টি মিসরী ফাউমি মুরগির বাচ্চা কিনে এনে বাড়িতে পালন শুরু করি। কিছুদিন পর মুরগিগুলো ডিম দেওয়া শুরু করে। সেই ডিমগুলো জমিয়ে হ্যাচারিতে গিয়ে আবার বাচ্চা ফুটিয়ে আনি। বর্তমানে আমি বাণিজ্যিকভাবে মিসরী ফাউমি জাতের মুরগি পালন করছি। প্রতিদিন ডিম বিক্রি করে আমার বাড়তি টাকা আসছে।

বয়ড়া কুলঘাট এলাকার কবির মাহমুদ নামে খামার মালিক বলেন, আমি আগে টিনের দোকান করতাম। এই হ্যাচারি হওয়ার পর ৭ মাস আগে আমি প্রথম আমার স্ত্রীকে ২০০ হাস ও মুরগির বাচ্চা কিনে দেই। সেগুলো বাড়িতে পালন করি। সেগুলো বড় হলে বাজারে বিক্রি করে ভালো টাকা লাভ হয়। সেখান থেকেই আমার হাস, মুরগি পালন শুরু।

ডিম নিয়ে বাচ্চা ফোটাতে আসা আব্দুল মান্নান, রহিমা বেগম, মারিয়া আক্তার বলেন, আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হাঁস মুরগির ডিম সংগ্রহ করে মণ্ডল হ্যাচারিতে নিয়ে আসছি ফোটানোর জন্য। আমাদের বাড়িতে ডিম ফোটানোর জন্য কোনো মুরগি নেই। তা ছাড়া হাঁস কখনো বাচ্চা ফোটায় না। আগে মুরগি দিয়ে হাঁসের বাচ্চা ফোটানো হতো। এখন আর সেই ঝামেলা নেই। বাড়ির কাছে হ্যাচারি আর এখানে কম খরচে ঝামেলা বিহীনভাবে ডিম ফোটানো যায়।

মণ্ডল হ্যাচারির মালিক রাশেদুল ইসলাম রঞ্জু বলেন, আমি এলাকার বেকার নারী ও পুরুষের স্বাবলম্বী করা জন্য ব্যতিক্রমধর্মী একটি হ্যাচারি আমি তৈরি করেছি। ডিম থেকে কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়া স্বল্পখরচে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে লালন-পালন করে ভালো লাভবান হতে পারবে। আমি এটাতে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। এছাড়া বাচ্চা ফুটিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে তা বিক্রি করি। লাভজনক হওয়ায় উৎপাদন দিন দিন বাড়াতে থাকে। পরে পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা এসে আমার কাছ থেকে এক দিন বয়সের হাঁসের বাচ্চা কিনে তা দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান জানান, বয়ড়া বাজারের রঞ্জু মিয়া একটি ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। তার এমন উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। তার এই উদ্যোগের কারণে সরিষাবাড়ীর খামারিরা উপকৃত হবে এছাড়া এলাকার বেকার যুবক ও নারীরা স্বাবলম্বী হবে। বাচ্চা ফোটানো, মুরগি লালন-পালন করার ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন, চিকিৎসাসহ সরকারি যত সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন সবই উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে প্রদান করা হচ্ছে।


দৃষ্টিনন্দন বাতিতে বদলে গেছে মান্দা শহরের চিত্র

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মান্দা (নওগাঁ) সংবাদদাতা

নওগাঁর মান্দা ইউএনও শাহ আলম মিয়া দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সামান্য চেষ্টা আর সুন্দর মনোভাব, সেই সঙ্গে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে বদলে গেছে নওগাঁ মান্দা উপজেলার চিত্র। উপজেলা সদর থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত অন্ধকার সড়কে যোগ হয়েছে আধুনিক সড়কবাতি, সেই সঙ্গে নওগাঁ রাজশাহী মহাসড়কের ফেরিঘাট ব্রিজের ওপরে যোগ হয়েছে আধুনিক রঙিন বাতি। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে আত্রাই নদীর পাশ দিয়ে বয়ে চলা অন্ধকার রাস্তাটি আধুনিক এলইডি স্ট্রিট লাইটের আলোতে আলোকিত হয়ে গেছে। এখন সন্ধ্যার পর রাস্তাটি দিয়ে নির্বিঘ্নে গাড়ি-ঘোড়া ও হেঁটে চলাচল করেছে মানুষ। নদীর ওপাশ থেকে দেখলে মনে হয় এযেন এক অন্য রকম আলোর নগরী। উপজেলা সদরের চৌরাস্তাসহ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাটেও রয়েছে স্ট্রিট লাইটের ব্যবস্থা। মান্দার ইউএনও শাহ আলম মিয়ার উদ্যোগ ও তদারকির কারণে পুরোনো জরাজীর্ণ ভবণ টেন্ডারের মাধ্যমে ভেঙে উপজেলার নতুন ভবনে দপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে, চলছে ৫ তলা নির্মাণসহ উপজেলা কমপ্লেক্সের ভেতরের রাস্তা নির্মাণের কাজ। ৫০০ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক কুসুম্বা মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নির্মিত হয়েছে সীমানা প্রাচীর, রাস্তা নির্মাণ, দিঘিতে নামার সিঁড়ি, ছাগল-মুরগি জবায়ের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে জবাইখানা, সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে লাগানো হয়েছে টাইলস, মসজিদে আসা মানতকারীদের রান্নার স্থান সংস্কার করা হয়েছে, এছাড়া দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বেশকিছু নিরাপত্তা কর্মী।

স্থানীয় সরকার ও পিআইও অফিসের সহায়তায় করা হয়েছে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তাঘাট সংস্কার কাজ, অচল ব্রিজ ব্যবহারের উপযোগী।

মোবাইল আসক্তি ও মাদক থেকে যুব সমাজকে দূরে রাখতে ১৪টি ইউনিয়নকে সংগঠিত করে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন ও প্রথম পুরস্কার মোটরসাইকেল পুরস্কার বিতরণ করেছেন। বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাজের উৎসাহ জোগাতে কাজের মূল্যায়ন ও পুরস্কারকের ব্যবস্থা করেছেন ইউএনও।

মান্দাকে বাংলাদেশ সকল মানুষের কাছে তুলে ধরতে তার লেখনিতে মান্দার নাম করণ করেছেন ‘মনোহরা মান্দা’ মান্দাকে ঘিরে লিখেছেন অনেক ছোট গল্প, কবিতা।

ইউএনও শাহ আলম মিয়ার বলেন, আমার কখনো মনে হয়নি মান্দা আমার না। আমি সব সময় চিন্তা করেছি মানুষের সঙ্গে মিশে তাদের কথা শুনে কাজ করার। মান্দাকে আধুনিকভাবে সাজাতে যেটুকু সম্ভব চেষ্টা করেছি। এমন কেউ নেই যে আমার অফিসে এসে আমার সঙ্গে দেখা না করে গিয়েছে। রাজনৈতিক ব্যক্তিরা, সাংবাদিক, সাধারণ মানুষ সকলকে সঙ্গে নিয়ে আমি কাজ করেছি। মান্দা পথপ্রান্তর, নদী, বিল গ্রামের আকাবাঁকা রাস্তা আমাকে মুগ্ধ করেছে। মান্দাতে দেখার মতো যা কিছু আছে তা অন্য কোথাও নেই। আমি যেখানেই থাকব মান্দার খবর রাখব।


মধুপুর শালবনের ঐতিহ্য ফেরাতে নানা উদ্যোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হাবিবুর রহমান, মধুপুর (টাঙ্গাইল)

এক সময় দেশের তৃতীয় বৃহত্তর মধুপুর গড়ের শালবন ছিল ইতিহাস ঐতিহ্য খ্যাত। পত্র ঝরা এ বন ছিল সমৃদ্ধ বনাঞ্চলের মধ্যে অন্যতম। প্রাকৃতিক নানা বৈচিত্র্য আর অভয়ারণ্যে বন্যপ্রাণী পাখি ভেষজ গুল্মলতায় দুর্ভেদ্য ছিল। প্রায় ৪৫ হাজার একরের এ বনে ছিল বুনো খাদ্যের বিশাল ভান্ডার। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বুনোখাদ্য, নানা ফরমূলসহ বিরল ও দেশি প্রজাতির জানা অজানা বৃক্ষ লতার সমাহারে সজ্জিত এ বনটি নানা কারণে তার আয়তন সংকুচিত হয়ে গেছে। হারাচ্ছে তার অতীত ঐতিহ্য। খাদ্য ভান্ডার, জীব বৈচিত্র্যেও বিরূপ প্রভাবের দেখা দিচ্ছে। বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে অনেক বৃক্ষ লতা। কমে যাচ্ছে বনের প্রাণীকূল। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বুনোখাদ্যের ভান্ডারে দেখা মেলে না আগের মতো বাহারি আলু লতা পাতাসহ নানা খাদ্য।

বন সংকোচনের ফলে বেড়েছে সামাজিক বনায়ন। শাল গজারি মানানসই বৃক্ষ না বেড়ে, সামাজিক বনায়নে বেড়েছে বিদেশি প্রজাতির আগ্রাসীর দাপুটে বাগান। আর এসব বাগানে বাণিজ্যিক চাষাবাদের ফলে জীব বৈচিত্র্য যেমন কমে যাচ্ছে, তেমনি ঐতিহ্যও হারাচ্ছিল বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।

বনের ঐতিহ্য ফেরাতে সরকার বিদেশি প্রজাতির আগ্রাসী গাছ নিষিদ্ধের পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাসহ শালবন পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শালগজারিসহ দেশি প্রজাতির গাছের চারা বীজ রোপণ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এ কার্যক্রমের ফলে স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও প্রথাগত বনবাসীদের নিয়ে মধুপুর শালবন পুনঃপ্রতিষ্ঠা পাবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা। সে লক্ষ্যে মধুপুর বনাঞ্চলে শালবন পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর গৃহ জরিপ ও জনশুমারি, বনের সীমানা চিহ্নিতকরণ, হারিয়ে যাওয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও মত বিনিময় সভার কার্যক্রম করে যাচ্ছে বন বিভাগ।

জানা গেছে, ২০১০ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)’র সহায়তায় মধুপুর জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ ও উত্তর বঙ্গের জাতীয় আদিবাসী পরিষদের যৌথ উদ্যোগে জনস্বার্থে ১৮৩৪/২০১০ নং রিট পিটিশন দায়ের করে। ২০১৯ সালের ২৮ আগস্ট প্রদত্ত রায়ে ৯টি ইস্যু গঠন করে উচ্চ আদালত কর্তৃক মামলাটি নিষ্পত্তি করে রায়ে বাদীগণের সমন্বয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গঠন করে আদালতের নির্দেশনা সমূহ বাস্তবায়ন করে বিস্তাারিত প্রতিদেন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। সে প্রেক্ষিতে ইস্যুগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রধান বন সংরক্ষকের সভাপতিত্বে বন ভবন ও মধুপুর জাতীয় উদ্যানে পৃথক দুটি সভা করে বন বিভাগ।

সভাসমূহের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আইন অনুযায়ী নিষ্পত্তি করতে মধুপুর শালবন ও শালবন সংলগ্ন এলাকায় বসবাসরত বন নির্ভর জনগোষ্ঠীর প্রতিটি গৃহে জরিপ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য ২০ জনের জরিপসহকারিদের একদিনের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। সে লক্ষ্যে ৯ জুলাই বন বিভাগের দোখলা রেঞ্জের বাংলোতে টাঙ্গাইল বন বিভাগের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অংশ গ্রহণে মধুপুর শালবন পুনঃপ্রতিষ্ঠা প্রকল্প আয়োজিত মতবিনিময় সভা সহকারী বন সংরক্ষক মো. আবু সালেহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন, উপজেলা পরিসংখান কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র, রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন, সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন,কারিতাসের বাঁধন চিরানসহ বন বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারি,সাংবাদিক ও জরিপসহকারী দল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের মাধ্যমে এ প্রকল্প শুরু হয়েছে। বনের সীমানা চিহ্নিত, হারিয়ে যাওয়া বন্য প্রাণীর ব্যবস্থা করা, গৃহ জরিপ করাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম করা হচ্ছে।

মধুপুর বনের শাল গজারি পুনঃপ্রতিষ্ঠা পেলে এ বন তার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে। সামাজিক বনায়নে শাল গজারিসহ দেশি পরিবেশ সম্মত বনজে ভরে উঠবে লাল মাটির এ শালবন। এমনটাই আশা স্থানীয়দের।

অ্যাপসের মাধ্যমে এ ডাটা সংগ্রহে থাকবে খানার লোকসংখ্যা, জমির পরিমান,আনারস কলা পেঁপেসহ চাষবাদকৃত কৃষি পরিমান, জমি অন্যত্র লিজ দেয়া থাকলে লিজকৃত ব্যক্তির নাম, শালবনে কিকি গাছ লাগাতে পছন্দ এসব তথ্যে সমৃদ্ধ করা হবে। জরিপ শেষে শাল গজারি ও শাল লাগসই গাছ লাগানো হবে। এভাবে শালবন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে। অশিংদার যারা হবে তারা প্লটের গাছের পরিমাণ প্রভৃতি গাছ ঠিক করবে। লেজারে হিসাব কষে অংশিদার পাবে আবৃতের মূল্য ৪৫% অর্থ। তবে বনায়নের গাছ কাটা হবে না। এভাবে প্রতি আর্বতে একইভাবে টাকা পাবে।

তিনি বলেন, এভাবে বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে বন উদ্ধার হবে। জীববৈচিত্র্যও রক্ষা পাবে। আগের প্রকল্পগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকে বন বিভাগ এভাবেই কাজ করবে।


জনবল সরঞ্জাম সংকটে সেবা বঞ্চিত গাইবান্ধার মানুষ

আপডেটেড ১৩ জুলাই, ২০২৫ ২২:৩৪
মাসুম বিল্লাহ, গাইবান্ধা

স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা যেন এখনো এক অসমাপ্ত স্বপ্ন। ৪১ বছর আগে যাত্রা শুরু করা এ হাসপাতালটি আজও পরিপূর্ণ রূপে দাঁড়াতে পারেনি। ২৫০ শয্যার মর্যাদা পেলেও হাসপাতালটি চলছে ১০০ শয্যার জনবল, যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামো নিয়ে। এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন মানুষ। এ জেলার ২৭ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট সকলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল।

জানা গেছে, ১৯৮৪ সালে ৫০ শয্যা নিয়ে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের যাত্রা শুরু হলেও সময়ের প্রয়োজনে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হয় একাধিকবার। সর্বশেষ ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর ২৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। শয্যা উন্নীত হলেও হাসপাতালে কর্মরত জনবল, অবকাঠামো এবং যন্ত্রপাতি সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে ১০০ শয্যার কাঠামোতেই। জনবল সংকট এতটাই প্রকট যে, ১০০ শয্যার হিসেবেও যেখানে ৪৩ জন চিকিৎসকের প্রয়োজন, সেখানে আছেন মাত্র ১৮ জন।

সিনিয়র ও জুনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন, চক্ষু, কার্ডিওলোজি, অ্যানেস্থেসিয়া, শিশু, চর্ম ও যৌন এছাড়া সিনিয়র কনসালটেন্ট ইএনটি, অর্থ সার্জারি ও জুনিয়র কনসালটেন্ট অর্থপেডিক্সসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসকদের পদগুলো দীর্ঘদিন শূন্য পড়ে আছে। নেই পর্যাপ্ত নার্স, ওয়ার্ডবয়, ল্যাব টেকনিশিয়ান বা পরিচ্ছন্নতাকর্মী। প্রশাসনিক ও সহকারী পদগুলোতেও শূন্যতা ৬৩টি।

সরেজমিন দেখা যায়, নারী-পুরুষ একাকার হয়ে টিকিট কাউন্টারের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে রোগী ও রোগীর স্বজনরা। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা শিশুসহ, নারী-পুরুষ গাদাগাদি করে নিচতলায় ও দ্বিতীয়তলায় চিকিৎসকের চেম্বারের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। চিৎকার আর গুমট পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে সেখানে। চিকিৎসা নিতে এসে দীর্ঘসময় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থেকে চমর ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা। পৃথক ফার্মেসি থাকলেও অব্যবস্থাপনার অভাবে নারী-পুরুষ একাকার হয়ে ওষুধও নিচ্ছেন একটি ফার্মেসি থেকেই।

এছাড়া আন্তবিভাগে শয্যা সংকটে নিচতলা ও দ্বিতীয় তলার বারান্দার মেঝেতে শয্যা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতালের ভেতরে, বাহিরে এমনকি ওর্য়াড গুলোর মেঝেতে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জানা। নিচতলা ও দোতলার শৌচাগারগুলো অপরিচ্ছন্ন। সেখানে দুর্গন্ধে নিশ্বাস নেওয়া দায়।

আরও জানা যায়, গাইবান্ধা জেলার স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মনোযোগের অভাব দীর্ঘদিনের। যদিও মাঝে মধ্যে পর্যবেক্ষণ টিম আসে, কিন্তু কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা কমিটি কার্যত নিষ্ক্রিয়।

সম্প্রতি প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫০ শয্যার নয়তলা হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করা হয় এবং তা ২০২২ সালের এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে গণপূর্ত বিভাগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেন। অথচ ভবন বুঝে পাওয়ার ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও চালু হয়নি। কারণ- প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও জনবল না থাকায় আধুনিক এই অবকাঠামো পড়ে আছে অলসভাবে।

আন্তঃবিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত গত ৬ মাসে গাইনি, শিশু, স্ক্যানু, মহিলা, পুরুষ ও ডাইরিয়া-এই ছয়টি বিভাগ থেকে রেফার্ড করা হয়েছে ১ হাজার ৫৬৮ জন ভর্তি রোগীকে।

আর জরুরি বিভাগ বলছে, জনবল সংকটের কারণে প্রায় প্রতিদিন গড়ে ৮-১০ জন রোগীকে রেফার করা হচ্ছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তবে, জরুরি বিভাগের তথ্য বিভ্রাটের চিত্র ভয়াবহ- কত রোগী রেফার্ড হচ্ছে, কোনো রোগে রেফার্ড হচ্ছে, তার কোনো সুনির্দিষ্ট রেকর্ড নেই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে।

জরুরি বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্স ইনচার্জ মোজাম্মেল হক সরকার বলেন, যেসব রোগীকে বাহিরে রেফার্ড করারা হয়। তাদের কোনো তথ্য সংরক্ষণ করা হয় না বা সুযোগ থাকে না।

এদিকে, রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালের আশপাশে গড়ে ওঠা অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে রোগীদের টেনে নিয়ে যাচ্ছে দালাল চক্র। সেবা না পেয়ে রোগীরা যখন দিশেহারা, তখনই দালালদের দৌরাত্ম্যে নিঃস্ব হচ্ছেন গরিব মানুষগুলো। মাঝে মধ্যে কিছু দালাল ধরা পড়লেও শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কারণে তারা আবার মুক্ত হয়ে ফিরে আসে আরও বেপরোয়া হয়ে।

হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজি ইনচার্জ ফজলুল বারী বলেন, চারটি এক্সরে মেশিনের মধ্যে এখন শুধু একটি এক্সরে মেশিন চালু আছে। আর বাকি তিনটি নষ্ট। এছাড়া আলট্রাস্নোগ্রামের চারটির মধ্যে চারটিই নষ্ট।

গাইবান্ধার সচেতন নারী সংগঠক নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পি বলেন, চিকিৎসাসেবাকে গাইবান্ধায় স্থায়ী করতে হবে। দালাল নির্মূল, নিয়মিত ডাক্তার নিয়োগ, পর্যাপ্ত নার্স ও ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। ৩ বছর ধরে ভবন তৈরি হলেও চালু হয়নি। ডাক্তার নেই, নার্স নেই- এটা সরকারের চরম অবহেলা। আমরা চাই দ্রুত চালু করা হোক।

হাসপাতালের আরএমও আসিফ উর রহমান নানা সংকটের কথা উল্লেখ করে দৈনিক বাংলাকে বলেন, চিকিৎসক সরঞ্জাম যথেষ্ট ঘাটতি। তবুও আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।

আরও বলেন, বহুতল ভবনটি আমরা বুঝে নিলেও জনবল এবং সরঞ্জমাদির প্রয়োজনীয় কোনটিই এখনো দেওয়া হয়নি। আমরা নিয়মিত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখছি।


চাঁদাবাজি নয়, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বেই সোহাগকে হত্যা করা হয়েছে

সহায়তা প্রদানকালে নূরুল ইসলাম মণি 
বরগুনার পাথরঘাটায় কাকচিড়া হাইস্কুল মাঠে রোববার এক পথসভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম মণি। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্যে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ হত্যাকাণ্ড চাঁদাবাজির কারণে নয় বরং ভাঙ্গারি দোকানের মালিকানা ও আয়-ব্যয় নিয়ে বিরোধের ফলাফল বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ নূরুল ইসলাম মণি। তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক অংশীদার ও তার ভাড়াটে লোকজনই পৈশাচিকভাবে সোহাগকে হত্যা করেছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তেও এমন তথ্য উঠে এসেছে।

এই নৃংশস হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নূরুল ইসলাম মণি সরকারের কাছে এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। রোববার বিকালে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়ায় নিহত সোহাগের পরিবারের খোঁজখবর নিতে এসে একথা বলেন তিনি।

এ সময়ে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে নিহত সোহাগের স্ত্রীকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন এবং সোহাগের পরিবারের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। এছাড়া, এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে আইনি সহায়তাসহ সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

পরে স্থানীয় কাকচিড়া হাইস্কুল মাঠে এক পথসভায় নূরুল ইসলাম মণি বলেন, একটি মহল অত্যন্ত সুকৌশলে মিটফোর্ডের একটি ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বকে চাঁদাবাজি বলে প্রচার করার অপচেষ্টা করছে। মহলটি অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে, অত্যন্ত সুচারুভাবে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের দায় বিএনপির ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে। যারা এটি করছে, তারা দেশে সময়মতো একটি নির্বাচন হোক তা চায় না। দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসুক তা চায় না।

তিনি বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি গোষ্ঠী আনুপাতিকহারে নির্বাচনের কথা বলছে। সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ আমেরিকা, ইংল্যান্ডসহ পৃথিবীর বহু উন্নত রাষ্ট্রে আনুপাতিকহারে নির্বাচন হয় না। এমনকি যারা তাদের মাথায় এই ভূত চাপিয়ে দিয়েছে সেই ভারতেও আনুপাতিক হারে নির্বাচন হয় না। এটি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের একটি অপচেষ্টা মাত্র।

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা আরও বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল হচ্ছে বিএনপি। এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে বিএনপির রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এটা জেনেও আমার নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের এই অবস্থায় একটি জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে থাকা সবাইকে নিয়ে দেশ পরিচালনা করতে চান।

দেশবিরোধী সব চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে নূরুল ইসলাম মণি বলেন, তারেক রহমান সবার মেধাকে কাজে লাগিয়ে দরিদ্র এই দেশটাকে এগিয়ে নিতে চান। তিনি দক্ষ জনশক্তি তৈরি করে বেকারত্বের হাত থেকে দেশকে বাঁচতে যে চান। অভাবি মানুষের অভাব মোচন করতে চান।

সভায় নিহত সোহাগের স্ত্রী লাকি আক্তার বক্তব্য রাখেন। তিনি তার স্বামীর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তার স্বামীর মৃত্যু নিয়ে যারা নোংরা রাজনীতি করছেন তাদের তীব্র নিন্দা জানান।

মামলার বাদী নিহত সোহাগের বোন অভিযোগ করেন, মামলার এফআইআর-এ পুলিশ নাম পরিবর্তন করেছে। বেশ কয়েকজনের নাম বাদ দিয়ে নতুন লোকের নাম দেওয়া হয়েছে যাদের আমরা চিনি না, জানি না।

কাকচিড়া হাই স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বরগুনা বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফজলুল হক মাস্টার, পিপি এডভোকেট নুরুল আমিন, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদ শফিকুজ্জামান মাহফুজ, হুমায়ুন হাসান শাহীন, পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির সভাপতি চৌধুরী মহম্মদ ফারুক, সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, বামনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ রানা, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম জুয়েল ও জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম নাভিল প্রমুখ।


রংপুরে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ইফতেখারুল শুভ গ্রেফতার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যা চেষ্টা মামলায় রংপুর মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতেখারুল ইসলাম শুভকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (১৩ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আরপিএমপি কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান।

এর আগে শনিবার (১২ জুলাই) রাত ১১টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরীর সিও বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত ইফতেখারুল ইসলাম শুভ রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ ধুমখাটিয়া এলাকার আশরাফুল ইসলামের ছেলে। তার বিরুদ্ধে গত বছরের জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।

আরপিএমপি কোতোয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে ছিলেন শুভ।

তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত শুভর বিরুদ্ধে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ এনে আহত মামুনুর রশিদ মামুন, আহত জয়নাল আবেদীন বাপ্পী, আহত রমজান আলী ও আহত শহিদুল ইসলাম পৃথক চারটি মামলা করেছেন।

এসব মামলায় শুভকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।


ঘরে ঢুকে বৃদ্ধ ও নারীকে খুন: সড়ক অবরোধ করে ডুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আপডেটেড ১৩ জুলাই, ২০২৫ ১৪:৪৩
ইউএনবি

ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) এমএসসি শিক্ষার্থী প্রকৌশলী শাহাব উদ্দিন শিহাবের বাবা ও ভাবীকে সন্ত্রাসী হামলায় হত্যার প্রতিবাদে গাজীপুরে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (১৩ জুলাই) সকালে ডুয়েট ক্যাম্পাস ও গেটে ঢাকা-শিমুলতলী সড়কে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

ডুয়েট ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে গিয়ে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিল নিয়ে এ সময় তারা প্রায় ১৫ মিনিট ধরে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে সমাবেশ করে তাদের দাবি সমূহ তুলে ধরেন।

কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন ডুয়েট শিক্ষার্থী লিকুনুজ্জামান, রাশেদুল ইসলাম সিফাত, মো. শাহ আলমসহ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী।

বক্তারা বলেন, ‘গত ৮ জুলাই গভীর রাতে শিহাবের বগুড়ার গ্রামের বাড়িতে মুখোশধারী একদল সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এ সময় তারা ঘরে ঢুকে শিহাবের বাবা আফতাব উদ্দিন ও ভাবীকে রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ঘুমন্ত মানুষের ওপর এমন বর্বর হামলায় শিক্ষার্থী শিহাব ও তার পরিবার আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এই ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দায়ীদের সঠিক শাস্তির দাবিসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে শিক্ষার্থীরা।’


পাবনা-ঢাকা দ্রুত সরাসরি এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর দাবি পাবনাবাসীর 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পাবনা প্রতিনিধি

পাবনা থেকে ঢাকায় সরাসরি ট্রেন সার্ভিস চালু, ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালু, শহরে চার লেন সড়ক নির্মাণ, আরিচা-কাজিরহাট ফেরিঘাট খয়েরচরে স্থানান্তরের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশনের ব্যানারে পাবনাবাসী। যেকোন মূল্যে ট্রেন সার্ভিস চালু করতে হরে এই সরকারকে। এসব চারদফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে চরম মূল্য দিতে হবে সংশ্লিষ্টদের বলে হুঁশিয়ারী দেওয়া হয়।

রোববার (১৩ জুলাই) সকাল ১১ টা থেকে ঘন্টাব্যাপী আব্দুল হামিদ সড়কের শহীদ চত্ত্বর থেকে পুরো শহরজুড়ে বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পাবনার রাজনৈতিক সংগঠনের চরম ব্যর্থতায় আমরা ট্রেনের দাবিতে রাজপথে নেমে এসেছি। এটাতো রাজনৈতিক দলের কাজ। পাবনা থেকে মাঝ পাড়া পর্যন্ত অকার্যকর একটি রেল লাইন চালু করা হয়েছে। সেটি কার্যকর করে দ্রুত পাবনা-ঢাকা ট্রেন সার্ভিস চালু করে ঢাকায় যাতায়াত সহজীকরণ করতে হবে। কাজিরহাটের ফেরিঘাট খয়েরচরে স্থানান্তর করা হলে দু'ঘন্টার পথ ১৫ মিনিটে পারাপার হওয়া যাবে। ঈশ্বরদী ইপিজেড, রপপুর প্রকল্পের জন্য বিমানবন্দর চালু করা হোক। যানজট নিরসনে পাবনা শহরে চার লেন সড়ক নির্মাণ করতে হবে। পাবনা আটঘরিয়া হয়ে মাঝপাড়া দিয়ে ৩০ কিলোমিটার ঘুড়ে ট্রেন ঢাকায় যাওয়ার কথা শুনতেছি। এটা আমরা কোনভাবেই মেনে নেবোনা।

যেকোন মূল্যে পাবনা ঢাকা ট্রেন চালু করতেই হরে। তাছাড়া এটার জন্য সংশ্লিষ্টদের চরম মূল্য দিতে হবে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের আন্দোলন শেষে সরকার পতনের আন্দোলনে পরিনত হয়েছিল। আমাদের এই দাবি যেন অন্য দাবিতে পরিনত না হয়। আমরা সবদিক থেকেই বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার।

বক্তারা আরও বলেন, পাবনাবাসীর প্রাণের দাবি ছিল নগরবাড়ি আরিচায় নতুন যমুনা সেতু নির্মাণ করা। দ্বিতীয় যমুনা সেতু এখান দিয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন করা হলে এ অঞ্চলের মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন তরান্বিত হবে। ইছামতী নদী উদ্ধারে অনেক জটিলতা ছিল। এখন নদী খনন হচ্ছে। যারা মামলা করেছেন দ্রুত মামলা তুলে নিয়ে নদী খননের কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে সহযোগীতা করুন। এটা হলে পাবনাবাসীর জন্য স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। এছাড়াও পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আধুনিকায়ন করা, মানসিক হাসপাতাল সংস্কার করতে হবে। এটা জুলাইয়ের মাস। এই চত্বরেই দুজন শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছিল। এখনো ওসব খুনি গ্রেফতার হয়নি। দ্রুত গ্রেপ্তার করতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।

শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশনের সভাপতি খান হাবিব মোস্তফার সভাপতিত্বে ও আতাইকুলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক রাজু ইসলাম ওলির সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, পাবনা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মো: ইকবাল হোসাইন, পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতার, সাবেক সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান, জামায়াতের পৌর আমীর আব্দুল লতিফ, দেশ বরেণ্য শিল্পী ওবায়দুল্লাহ তারেক, সাইদুল ইসলাম, কিন্ডার গার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি মাহফুজুর রহমান, আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল আলিম, এডভোকেট রানা, রোটারিয়ান বিনয় জ্যোতি কুন্ডু, সমন্বয়ক শাওন হোসাইন, আইডিয়াল গ্রুপের পরিচালক সিরাজুল ইসলাম সহ পাবনার সর্বস্তরের জনগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও মানবন্ধনে পাবনা শহরের বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও নার্সিং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।


হাজতখানায় ডাকাত শাহীনের ‘ফোন’ ব্যবহার, ৫ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কক্সবাজার প্রতিনিধি

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ত্রাস খ্যাত শাহীনুর রহমান ওরফে শাহীন ডাকাতকে কক্সবাজার আদালতের হাজতে মুঠোফোন সুবিধা দেয়ার ঘটনায় দুই টিএসআই সহ ৫ জনকে দায়িত্ব অবহেলার দায়ে পুলিশ লাইন্স এ সংযুক্ত করা হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যায় জেলা পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এছাড়া কোর্ট হাজতে আসামিদের সাথে সাক্ষাৎতের বিষয়ে আরও সর্তক হওয়ার কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

ক্লোজড হওয়াদের দুই টিএসআই, তিনজন কনস্টেবল। তারা হলেন টিএসআই সুরেন দত্ত, আবদুল ওয়াহেদ, কনস্টেবল নাজম হায়দার, গোলাম।মোস্তফা ও ইয়াছিন নূর।

এর আগে এই ঘটনা নিয়ে শুক্রবার কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরীকে প্রধান করে তিন সদস্যোর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

গত বুধবার (৯ জুন) আদালতে হাজিরা দিতে কোর্ট পুলিশের হেফাজতে হাজতখানা থেকে বের করে আনা হয় শাহীনকে। ঠিক তখনই তার পকেটে থাকা মোবাইল ফোন নজরে আসে কক্সবাজারের গণমাধ্যমকর্মী দের চোখে। এনিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে গঠিত হয় তদন্ত কমিুট।

জানা গেছে, গত ৫ জুন সকালে কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য শাকের আহমদের বাড়ি থেকে সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয় শাহীন ডাকাতকে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, অস্ত্র, মাদকসহ অন্তত ২০টি মামলা রয়েছে।

কক্সবাজার আদালতের কোর্ট পরিদর্শক মো. গোলাম জিলানী ক্লোজড'র বিষয়টি স্বীকার করেন।


banner close