শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪

টাকা দেয়ার কথা স্বীকার করছেন না এমপি-পুলিশ

মেঘনার ২ নম্বর মাইনকারচরের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
নুরুজ্জামান লাবু
প্রকাশিত
নুরুজ্জামান লাবু
প্রকাশিত : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০৭:৫৫

নুরুজ্জামান লাবু

এমপি-পুলিশের টাকার রক্ষক হয়ে ভক্ষক হওয়া কুমিল্লার মেঘনার ২ নম্বর মাইনকারচরের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন গ্রেপ্তার হওয়ার পর সাধারণ ভুক্তভোগীরা ভিড় করতে শুরু করেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, জাকির অন্তত তিন শতাধিক ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতে সানোয়ার হোসেন লিটন নামে প্রতারণার শিকার আরেক ব্যক্তি জাকিরের নামে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন।

তবে জাকিরের কাছে টাকা রাখা এমপি বা পুলিশের কর্মকর্তারা কেউ অভিযোগ করতে চাইছেন না। জাকির স্বীকার করলেও অনেকেই তার কাছে কোনো টাকা পান না বা বিনিয়োগ করেননি বলে জানিয়েছেন।

এদিকে জাকিরের কাছে তিন এমপি ও পুলিশের শতাধিক কর্মকর্তার টাকা বিনিয়োগ নিয়ে খোদ পুলিশেই তোলপাড় চলছে। সাব-ইন্সপেক্টর থেকে শুরু করে ডিআইজি পদমর্যাদার শতাধিক কর্মকর্তার এত টাকা বিনিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাকির নিজে বিনিয়োগের কথা স্বীকার করলেও প্রশাসনের অনেকেই অবৈধ অর্থের বিষয়টি ফাঁস হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করছেন না।

গতকাল শুক্রবার সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, জাকির অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছেন। তিনি এমপি, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ অনেকের কাছ থেকেই টাকা নিয়েছেন। তিনি ঊর্ধ্বতন দুই-একজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতেন। এ কারণে ছোট পর্যায়ের কর্মকর্তা বা সাধারণ মানুষ তার কাছে টাকা ফেরত চাইলে উল্টো ভয়-ভীতি দেখাতেন।

জাকিরের বিরুদ্ধে করা নতুন মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বাদী জাকিরের কাছে ২৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে মাইক্রোবাস কেনার নামে প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, এই মামলায়ও জাকিরকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, জাকির প্রায় আড়াই থেকে তিন শ ব্যক্তির সঙ্গে রেন্ট-এ কারের ব্যবসার নামে প্রতারণা করেছে বলে তারা জানতে পেরেছেন। সাধারণত ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ১৫ লাখ টাকা ডিপোজিট করলে মাসে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা পাওয়া যেত। জাকিরের কাছে গাড়ি ভাড়ার নামে বিনিয়োগে অধিক লাভের আশায় অনেকেই বিনিয়োগ করেছেন।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, প্রথমদিকে জাকির তার রেন্ট-এ কারের প্রতিষ্ঠানে এক শ মাইক্রোবাস রাখেন। পরে ধীরে ধীরে গাড়ির সংখ্যা কমিয়ে একই গাড়ির নামে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে ভাড়ার চুক্তিনামা করে নগদ টাকা নিতেন।

বিনিয়োগের কথা অস্বীকার এমপি-পুলিশ কর্মকর্তাদের

এদিকে জাকিরকে গ্রেপ্তারের পর তার মাধ্যমে বিনিয়োগের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে বিষয়টি অনেকেই অস্বীকার করেছেন। গ্রেপ্তারের আগে জাকির নিজেই এই প্রতিবেদকের কাছে পিবিআইয়ের দুই পুলিশ সুপার তার কাছে এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন বলে স্বীকার করেন। শুক্রবার পিবিআইয়ে কর্মরত এক পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন।

জাকির এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে জানান, এমপি ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও ওসি, এসআই, সার্জেন্ট পর্যায়ের অনেকেই তার কাছে ৩০ লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করেছিলেন। এদের প্রত্যেককেই তিনি মাসে মাসে লভ্যাংশ দিতেন। পুলিশের লোকজনের গাড়ি হিসেবে গত কয়েক বছরে তার রেন্ট-এ কারের কোনো গাড়ির বিরুদ্ধে দেশের কোথাও কোনো মামলাও হয়নি।

গ্রেপ্তারের আগে জাকির চেয়ারম্যান জানান, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার এসআই মোস্তফা তার কাছে ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। তবে যোগাযোগ করা হলে এসআই মোস্তফা দৈনিক বাংলাকে বলেন, তিনি জাকিরকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে একটি গাড়ির জন্য ২২ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। এ ছাড়া তার পরিচিত কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও ব্যবসায়ীও জাকিরকে গাড়িভাড়া বাবদ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি এক টাকাও ফেরত পাননি।

এত অর্থের উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে এসআই মোস্তফা জানান, তিনি গ্রামের জমি বিক্রি ও কমিউনিটি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে এই অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন।

এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে জাকির যে তিনজন সংসদ সদস্যের কথা বলেছিলেন, কুমিল্লা এলাকার ওই তিন সংসদ সদস্যের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কল ও খুদেবার্তা পাঠিয়েও তাদের কোনো ভাষ্য পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত ডিআইজি পদমর্যাদার যে কর্মকর্তা জাকিরের কাছে ২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, তার সঙ্গেও একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কুমিল্লার একটি সূত্র জানিয়েছে, জাকিরের এই প্রতারণা ব্যবসার সঙ্গে ওই এলাকার সংরক্ষিত আসনের একজন নারী সংসদ সদস্য ও মেঘনা উপজেলার একজন ভাইস চেয়ারম্যানও জড়িত আছেন। ওই নারী সংসদ সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার বোন পরিচয়ে একজন এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জাকির চেয়ারম্যানের প্রসঙ্গ শুনেই মোবাইল কেটে দিয়ে বন্ধ করে দেন।

ছেলে যুক্তরাষ্ট্রে, জাকিরও পালাতে চেয়েছিলেন

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, সম্প্রতি জাকির তার বড় ছেলেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছেন। টাকা-পয়সা নিয়ে জাকিরও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ জানান, আগামী নভেম্বরে জাকিরের যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা ছিল।


রিমান্ড শেষে কেএনএফের ১৬ নারী সদস্য ফের কারাগারে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংক ডাকাতি, ম্যানেজারকে অপহরণ, পুলিশের অস্ত্র লুট, মসজিদে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া সন্দেহভাজন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ১৬ নারী সদস্যকে দুদিনের রিমান্ড শেষে আদালতে তোলা হলে শুনানি শেষে তাদের ফের কারাগারে পাঠিয়েছেন বিচারক।

শুক্রবার দুপুরে বান্দরবানের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের (আমলি আদালত) বিচারক মোহাম্মদ নাজমুল হোছাইনের আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কোর্ট পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রিয়েল পালিত বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রুমা থানার মামলায় ১৬ নারী আসামিকে দুদিনের রিমান্ড শেষে দুপুরে আদালতে হাজির করা হয়েছে এবং আদালত ১৬ জন ১৮ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত, গত ২ এপ্রিল বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংক ডাকাতি, ম্যানেজারকে অপহরণ, মসজিদে হামলা ও পুলিশের অস্ত্র লুটের ঘটনায় রুমা থানায় পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে ৩ এপ্রিল দুপুরে বান্দরবানের থানচি উপজেলার সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে, আর এই ঘটনায় আরও চারটি মামলা দায়ের হওয়ায় পর যৌথবাহিনীর সদস্যরা অভিযান শুরু করে এ পর্যন্ত মোট নয়টি মামলায় ৮১ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে।


গাজীপুরে দুই ট্রেন সংঘর্ষ: উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে ট্রেন চলাচল শুরু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজীপুরের ছোট দেওড়া এলাকায় তেলবাহী ও যাত্রীবাহী দুই ট্রেনের সংঘর্ষের প্রায় দুই ঘণ্টা পর ঢাকা থেকে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেন যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে।

জয়দেবপুর রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার মো. হানিফ আলী গণমাধ্যমকে জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সংঘটিত এ দুর্ঘটনার পর উভয় ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হলে ঢাকাসহ দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়।

স্টেশন মাস্টার জানান, জয়দেবপুর আউটার সিগন্যালের কাজীবাড়ি ছোট দেওড়া এলাকায় তেলবাহী ও যাত্রীবাহী দুই ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। দুর্ঘটনার ফলে ওই ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। প্রায় দুই ঘণ্টা পর ডাবল লাইনের ডাউন লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।

ইতোমধ্যে ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস জয়দেবপুর স্টেশন হয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। এর কিছু সময় পর একইভাবে একতা এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে জয়দেবপুর স্টেশন হয়ে পঞ্চগড়ের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এখন এক লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। বাকি লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করার জন্য কাজ চলছে।

গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের আউটার সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা তেলের মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে কমিউটার ট্রেনের সংঘর্ষে ৪ জন আহত হয়েছেন।

বেলা ১১টার দিকে সংঘটিত এ দুর্ঘটনার পর উভয় ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হলে ঢাকাসহ দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়।

জয়দেবপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক সেতাফুর রহমান বলেন, ‘সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে স্টেশনের দক্ষিণ প্রান্তে সিগন্যালম্যানের ভুলের কারণে ঢাকাগামী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি গাজীপুরগামী মালবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।


গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনায় ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ

ছবি: ইউএনবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের আউটার সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা তেলের মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে কমিউটার ট্রেনের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

বেলা ১১টার দিকে সংঘটিত এ দুর্ঘটনার পর উভয় ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হলে ঢাকাসহ দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়।

জয়দেবপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক সেতাফুর রহমান বলেন, সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে স্টেশনের দক্ষিণ প্রান্তে সিগন্যালম্যানের ভুলের কারণে ঢাকাগামী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি গাজীপুরগামী মালবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় কমিউটার ট্রেনের চারটি বগি এবং মালবাহী ট্রেনের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে কমিউটার ট্রেনের লোকোমাস্টারসহ চারজন আহত হন।

তিনি বলেন, লাইনচ্যুত বগিগুলো রেললাইন থেকে সরানোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।


চাঁপাইনবাবগঞ্জ: খরায় পুড়ছে আম, ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কায় চাষীরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

আমের রাজধানী হিসেবে পরিচিত চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার প্রচণ্ড দাবদাহে আম চাষে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। তীব্র তাপপ্রবাহে বোঁটা শুকিয়ে গাছ থেকে ঝরে পড়ছে আম। পরিস্থিতি সামাল দিতে চাষীরা আমগাছে সেচ ও বালাইনাশক স্প্রে দিলেও তেমন কাজে আসছে না। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে এবার জেলায় আমের মারাত্মক ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন চাষীরা।

আম উৎপাদনে এ বছর এমনিতেই অফ ইয়ার, অর্থাৎ কম ফলনের বছর। তার উপর বিরূপ আবহাওয়া যেন পিছু ছাড়ছে না আম চাষীদের। মৌসুমের শুরুতেই অতিরিক্ত শীতের কারণে আমের মুকুল এসেছে দেরিতে; মুকুল ফোটার সময় হয়েছে বৃষ্টি। তাতে অনেক মুকুল নষ্ট হয়ে আম এসেছে কম। এ নিয়ে এমনিতেই মুখে হাঁসি ছিল না চাষী ও বাগান মালিকদের। আর এখন তীব্র দাবদাহে ঝরে পড়ছে আম। ফলে আমের ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা। যাদের সেচ দেয়ার সুবিধা আছে তারা বাড়তি টাকা খরচ করে বাগানে সেচ দিয়ে ও স্প্রে করে আমের ঝরে পড়া রোধের চেষ্টা করছেন।

জেলার বেশ কয়েকটি এলাকার আম বাগান ঘুরে দেখা গেছে, গাছের নিচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ঝরে পড়া ছোট ছোট আম। অন্যান্য বছর এ সময়ে আমের আকার অনেকটা বড় হয়ে যায়, কিন্তু বৃষ্টির অভাবে এবার আমগুলো তেমন বড় হয়নি। কোনো কোনো বাগানে ডিজেলচালিত সেচযন্ত্র বসিয়ে গাছের গোড়ায় পানি দেওয়া হচ্ছে। আবার অনেক বাগানে সে সুযোগ নেই। বৈরী আবহাওয়ার কারণে আম ঝরে পাড়া অব্যাহত থাকায় চাষীদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই।

জেলা শহরের আমচাষী আব্দুল অহিদ বলেন, এবার আমের মুকুল এমনিতেই কম হওয়ায় গুটিও খুব কম ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে বৃষ্টির দরকার থাকলেও এখন পর্যন্ত বৃষ্টির দেখা নেই, চলছে খরা। বৃষ্টির অভাবে বোটা শুকিয়ে প্রতিদিন ঝরে পড়ছে আম। গাছের গোড়ায় পানি দিয়ে সেচ দিচ্ছি, স্প্রে করছি, কিন্তু তারপরও আমের ঝরে পড়া বন্ধ হচ্ছে না। এছাড়া বৃষ্টি না হওয়ায় আমের আকারও বড় হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

আজাইপুর এলাকার আম চাষী আবদুর রাকিব বলেন, ‘আম নিয়ে মন ভালো নেই। প্রচণ্ড খরায় আম ঝরে পড়ছে। গাছে সেচ দিচ্ছি, ছত্রাকনাশক স্প্রে করছি, কিন্তু কাজ হচ্ছে না। প্রচণ্ড দাবদাহে আম ঝরছে তো ঝরছেই। এ পর্যন্ত তিনবার স্প্রে করলাম, উপাদন খরচ বাড়তেই আছে। তার উপর যদি আমের ফলনে মার খাই তাহলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ব।’

শিবগঞ্জ এলাকার আমচাষী আহসান হাবিব বলেন, ‘এবার শীতের কারণে মুকুল দেরিতে এসেছে। তারপর গত ২০ মার্চ যে বৃষ্টি হয়েছিল, তাতে মুকুলের ক্ষতি হয়েছিল। এখন যে তাপদাহ চলছে এর ফলে গাছে যে আম আছে সেগুলোও ঝরে পড়ছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় অনেকে গাছে সেচ দিতে পারছে না। আবার কেউ সেচ দিচ্ছে তো খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় আমরা শঙ্কায় আছি যে আমের উৎপাদন কমে যাবে এবং আমরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে যাব।’

একই এলাকার আরেক আমচাষী শামীম বলেন, ‘সামগ্রিক দিক বিবেচনা করলে আমাদের জেলায় এবার আমের অবস্থা খুবই খারাপ। কারণ আমরা যে লক্ষ্য নিয়ে বাগানের পরিচর্যা করেছি বা করে যাচ্ছি, সেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এবার আমরা পৌঁছাতেই পারব না। কারণ আমার কাছে মনে হচ্ছে, এবার আমের উৎপাদনে বিপর্যয় ঘটবে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, ‘আমাদের চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার আমের মুকুল কম হয়েছে। দেখা গেছে, ফেব্রুয়ারি মাসে ও মার্চ মাসে সকালের দিকে ঘন কুয়াশা পড়েছে; সেটা ক্ষতি করেছে। আবার বৃষ্টি হয়েছে, হালকা ঝড়ও হয়েছে; এতে যে আম গাছগুলোতে মুকুল ফুল পর্যায়ে ছিল বৃষ্টিতে সে ফুল নষ্ট হয়ে গেছে। তারপর এখন তীব্র তাপদাহ চলছে। এতে আম ঝরে পড়ছে। সামনে শিলাবৃষ্টি, কালবৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কাও থাকছে। ফলে আমরা যে কাঙ্ক্ষিত ফলন চাচ্ছি সেটা হয়তো নাও হতে পারে।’

কৃষি বিভাগের হিসেবে চলতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৩৭ হাজার ৬০৪ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। আর এ থেকে এবার জেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিকটন। গত মৌসুমে জেলায় আম উৎপাদন হয়েছিল ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৬২৫ মেট্রিকটন।


গাজীপুরে তেলবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৩ মে, ২০২৪ ১২:০৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজীপুরের জয়দেবপুর জংশন এলাকায় যাত্রীবাহী ও তেলবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। জয়দেবপুর স্টেশনের কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। জানা গেছে, দুর্ঘটনায় অন্তত ৫০ জনের মতো আহত হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে।'

এদিকে দুর্ঘটনায় ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে বলে জানা গেছে। দুর্ঘটনার পর থেকে ওই রুটে কোনো ট্রেন চলছে না বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ঢাকা রেলওয়ের স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারোয়ার।

তিনি বলেন, ‘এখন ওই রুটে ট্রেন নেই। আর শুধু জয়দেবপুরে কোনো ট্রেন যাবে না। দুপুরের পরে ওই রুট দিয়ে ট্রেন চলাচল করবে।’


পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে নারীসহ ১১ জনের মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে কুমিল্লায় চার, রাঙামাটিতে তিন, কক্সবাজারে দুই এবং খাগড়াছড়ি ও সিলেটে একজন করে মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকে থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।

কুমিল্লা জেলার চান্দিনা, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, বুড়িচং ও দেবিদ্বার উপজেলায় বজ্রপাতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বিকাল ও সন্ধ্যায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে বলে সংশ্লিষ্ট থানার ওসি জানিয়েছেন।

নিহতরা হলেন- কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার সূর্যনগর গ্রামের আতিকুল ইসলাম (৫০), চান্দিনার কিছমত শ্রীমন্তপুর গ্রামের দৌলতুর রহমান (৪৭), বুড়িচংয়ের পাঁচোড়া নোয়াপাড়া গ্রামে আলম হোসেন (৩৫) এবং দেবিদ্বারের ধামতী গ্রামের মোখলেসুর রহমান (৫৮)।

জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আবেদ আলী গণমাধ্যমকে বলেন, বজ্রপাতে মারা যাওয়া প্রত্যেক ব্যক্তির পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার দুই ইউনিয়নে বৃষ্টি থেকে লবণ রক্ষা করতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই চাষির মৃত্যু হয়েছে।

নিহতরা হলেন- উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের কোদাইল্লাদিয়া এলাকার জমির হোসেনের ছেলে মো. দিদার হোসেন (২৫) এবং রাজাখালী ইউনিয়নের ছড়িপাড়ার জামাল উদ্দিনের ছেলে আরাফাতুর রহমান (১৩)।

স্থানীয়দের বরাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম জয় গণমাধ্যমকে বলেন, ভোর থেকে পেকুয়ায় থেমে থেমে বজ্রপাতসহ গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এ সময় বৃষ্টি থেকে রক্ষা করতে মাঠে থাকা লবণ পলিথিনে ঢেকে রাখতে যান দিদার হোসেনসহ পরিবারের আরও ২-৩ জন। এক পর্যায়ে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান দিদার।

তিনি বলেন, প্রায় একই সময়ে রাজাখালী ইউনিয়নের ছড়িপাড়ায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে বৃষ্টি থেকে লবণ রক্ষা করতে গিয়ে করতে গিয়েছিল কিশোর আরাফাতুর রহমান। তিনিও একইভাবে বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন। মৃতদের লাশ স্বজনরা বাড়ি নিয়ে গেছে বলেও জানান পেকুয়ার ইউএনও।

অন্যদিকে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় বোরো ধান কাটাতে গিয়ে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে; এ সময় আরও দুইজন গুরুত্বর আহত হয়েছেন।

নিহত বাবুল আহমদ (৪৮) উপজেলার দক্ষিণ কুয়রেরমাটি গ্রামের বাসিন্দা। আহতরা হলেন- নিহত বাবুলের ভাতিজা ফাহিম আহমদ (১৭) ও মানিকপুর গ্রামের বাবু বিশ্বাসের ছেলে প্রদীপ বিশ্বাস (২০)।

স্থানীয়দের বরাতে কানাইঘাট থানার ওসি মো. জাবেদ মাসুম গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে ভাতিজা ফাহিম আহমদ ও প্রদীপ বিশ্বাসকে নিয়ে বাবুল আহমদ স্হানীয় শফিক হাওয়রে বর্গা জমিতে বোরো ধান কাটতে যান। এ সময় হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে বজ্রপাতে তারা গুরুত্ব আহত হন।

পরে তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বাবুল আহমদকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাঙামাটির সদর ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে; এ সময় আরো অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন- শহরের সিলেটি পাড়ার বাসিন্দা মো. নজির (৫০) এবং বাঘাইছড়ি উপজেলার রূপাকারী ইউনিয়নের মুসলিম ব্লক এলাকার বাসিন্দা বাহারজান বেগম (৫৫) এবং সাজেকের লংথিয়ান পাড়ার তনিবালা ত্রিপুরা (৩৭)।

রূপকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যাসমিন চাকমা বলেন, ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের মুসলিম ব্লক এলাকার লাল মিয়ার স্ত্রী বাহারজান বেগম গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান ।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে জানান ইউএনও।

খাগড়াছড়িক মাটিরাঙ্গা উপজেলায় বৃষ্টির মধ্যে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ইয়াছিন আরাফাত উপজেলার বড়নাল ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের ইব্রাহিম পাড়ার বাসিন্দা ইউসুফ মিয়ার ছেলে।

স্বজনদের বরাতে বড়নাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, বৃষ্টির সময় উঠানের পাশেই আম কুড়াতে যায় দুই ভাই। এ সময় আকস্মিক বজ্রপাতে ছোট ভাই প্রাণে বেঁচে গেলেও বড় ভাই ইয়াছিন আরাফাত ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডেজী চক্রবর্তী বলেন, নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।


১২ বাংলাদেশি জেলেকে ছেড়ে দিয়েছে আরাকান আর্মি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

নাফ নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ার থাইংখালী রহমতেরবিল সীমান্ত এলাকা থেকে ১২ বাংলাদেশি জেলেকে অপহরণের পর ছেড়ে দিয়েছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

জেলেরা হলেন, পালংখালী ইউনিয়নের রহমতের বিল এলাকার হোসেন আলীর ছেলে জানে আলম (৩৫), মৃত আবদুস ছালামের ছেলে আব্দুর রহিম (৪০), মৃত জালাল আহমদের ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম (৩৭) ও সাইফুল ইসলাম (৩০), মৃত আলী আহমদের ছেলে আয়ুবুল ইসলাম (৩০), আবু তাহেরের ছেলে শাহীন (২০), গৌজঘোনা এলাকার আলী আহমদের ছেলে আবদুর রহিম (৫২), পুটিবনিয়া এলাকার মৃত মিয়া হোসেনের ছেলে ওসমান গণী (৩০), মৃত আবুল শামার ছেলে ওসমান (৩৫), আয়ুব ইসলামের ছেলে আবুল হাশিম (৩৫), টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং লম্বাবিল এলাকার রোমান আলীর ছেলে আব্দুল জলিল (৩২) ও দৈংগ্যাকাটা এলাকার হোসাইন আহমদ (৫৫)। গতকাল রাত ৮টার দিকে ১২ বাংলাদেশিকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অপহরণের শিকার টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং লম্বাবিল এলাকার আব্দুল জলিল নামের এক যুবক।

তিনি বলেন, ‘আরকান আর্মি আমাদেরকে নাফনদীর বাংলাদেশ অংশ থেকে ধরে নিয়ে গেছিল। জাতীয় পরিচয়পত্র চেক করে বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর দুপুরের দিকে ছেড়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সীমান্তের পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরে সন্ধ্যা ৭টায় সীমান্তের নাফ নদীর বাংলাদেশ অংশের বালুখালীর একটি এলাকায় ১২ জনকে ছেড়ে দিয়ে তারা চলে যায়। আমরা সবাই সুস্থ আছি।’

বুধবার সকাল ৮টার দিকে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী রহমতেরবিল সীমান্তে নাফ নদী থেকে তাদেরকে ধরে নিয়ে যায়।

অপহৃতদের ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘জেলেরা নাফ নদীর বাংলাদেশ অংশে মাছ ধরতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাদের ছেড়ে দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আরাকান আর্মির সদস্যরাই আমাদের জেলেদের নিয়ে গিয়েছিল। কারণ রহমতেরবিল সীমান্তে মিয়ানমার অংশে এখন সে দেশের কোনো সরকারি বাহিনী নেই। যারা ছিল তারা সবাই সংঘাতের সময় পালিয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছিল। এখন রহমতেরবিল সীমান্তের ওপারে মিয়ানমানের ওই এলাকাটি আরাকান আর্মির দখলেই আছে।’

এছাড়া বিভিন্ন সূত্রে এম গফুর উদ্দিন খবর পেয়েছেন আরাকান আর্মিই জেলেদের নিয়ে গিয়েছিল বলে জানান তিনি।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর হোসেন বলেন, যেহেতু সীমান্ত এলাকা থেকেই অপহরণের শিকার হয়েছে তারা, তাই বিষয়টি বিজিবিকে জানানো হয়েছে এবং তাদেরকে উদ্ধারের জন্য ইতোমধ্যে বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে জানানো হয়েছে।

আরাকান আর্মির নাম সরাসরি না বললেও তানভীর হোসেন বলেন, তিনিও শুনেছেন মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনই জেলেদের অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছিল। এ বিষয়ে বিজিবির বক্তব্য পাওয়া যায়নি।


সেচ সংকটে শতবিঘা জমি অনাবাদি, বিপাকে কৃষক

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ৩ মে, ২০২৪ ০৫:১০
মো. সবুজ হোসেন, নওগাঁ

নওগাঁ সদর উপজেলায় কৃষিকাজে ব্যবহৃত একটি গভীর নলকূপ বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে পানির অভাবে ওই সেচযন্ত্রের আশপাশের প্রায় ১০০ বিঘা জমি অনাবাদি পড়ে আছে। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে স্থানীয় কৃষকদের। এ অবস্থা দেখা গেল নওগাঁ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপাড়া, মাদ্রাসা পাড়া, সরদার পাড়া, শেখপুরা ও মন্ডলপাড়া এলাকায়। কৃষকদের দাবি, পৌরসভার হাজীপাড়া মহল্লা সংলগ্ন মাঠে একটি গভীর নলকূপ রয়েছে। সেটি পরিচালনা করেন মকবুল হোসেন ওরফে গ্যাদো নামের এক ব্যক্তি।

ওই এলাকায় প্রায় ২০০ বিঘা জমি রয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমের শুরুতে নলকূপটির মালিক মকবুল হোসেন কৃষকদের কাছ থেকে বোরো ধান আবাদের জন্য প্রতি বিঘা জমিতে সেচের জন্য ২ হাজার টাকা করে দাবি করেন। আশপাশের অন্যান্য নলকূপের সেচ খরচের তুলনায় বেশি টাকা দাবি করায় কৃষকেরা ওই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এদিকে চাহিদা অনুযায়ী সেচ খরচ দিতে রাজি না হওয়ায় সেচযন্ত্রটি বন্ধ রাখেন গভীর নলকূপের মালিক মকবুল হোসেন। এ নিয়ে জেলা প্রশাসন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেও কৃষকরা কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।

গত ১৯ মার্চ ৬০ জন কৃষক স্বাক্ষরিত ওই লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ পৌরসভার হাজীপাড়া, সরদারপাড়া ও মাদ্রাসাপাড়া মহল্লার মধ্যবর্তী মাঠে প্রায় ৩০০ বিঘা ফসলি জমি আছে। এসব জমিতে প্রতি মৌসুমে কয়েক হাজার মণ ধান হয়। বোরো মৌসুমে ওই এলাকার কৃষকদের কথা মাথায় রেখে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ওই মাঠে দুটি গভীর নলকূপ স্থাপন করে দিয়েছে। ওই দুটি সেচযন্ত্রের মধ্যে মকবুল হোসেন পরিচালিত গভীর নলকূপের অধীনে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ হয়ে থাকে। গত তিন বছর ধরে মকবুল হোসেনের ছেলে সবুজ কৃষকদের জিম্মি করে সেচ বাবদ বেশি টাকা আদায় করে আসছেন।

পার্শ্ববর্তী বোয়ালিয়া, শেখপুরা এলাকায় গভীর নলকূপে প্রতি বিঘা জমিতে সেচ খরচ বাবদ যেখানে ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা আদায় করা হয়, সেখানে সবুজ দাবি করে ২ হাজার টাকা। অধিকাংশ কৃষক এই পরিমাণ টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় সবুজ সেচযন্ত্র থেকে পানি তোলা বন্ধ করে দেন।

এদিকে ধানের বীজতলায় সেচ দিতে না পারায় কৃষকদের চারা নষ্ট হয়ে যায়। জমিতে ধান লাগাতে না পেরে অনেক কৃষক জমিতে তিলের চাষ করেছেন; কিন্তু দীর্ঘ অনাবৃষ্টির কারণে এবং সেচ যন্ত্র বন্ধ থাকায় অধিকাংশ তিল খেতের গাছ মরে যেতে বসেছে। এই দুরবস্থা নিরসনে জেলা ও উপজেলা সেচ কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কৃষকেরা।

হাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা নুরুল আমিন বাশার বলেন, এই জমিতে ইরি-বোরো ও আমন মৌসুমে যে ধান হয়, তা দিয়ে তাদের সংসার চলে। জমিতে এবার ধান লাগানোর জন্য ৭-৮ হাজার টাকা খরচ করে বীজতলা তৈরি করেছিলেন। কিন্তু ডিপ টিউবওয়েল থেকে পানি তোলা বন্ধ রাখায় এবং অন্য কোনো উপায়ে জমিতে সেচের ব্যবস্থা না থাকায় সেই চারা জমিতে লাগাতেই পারেননি তিনি। পরে সেই জমিতে তিনি তিলের বীজ বপন করেন। পানির অভাবে খেতের তিলের গাছও মরে যেতে বসেছে এখন।

হাজীপাড়া মহল্লার আরেক কৃষক আলাউদ্দিন। জমি বর্গা নিয়ে ধান চাষ করেন। এবার ধান চাষের জন্য দেড় বিঘা জমি প্রস্তুত করেছিলেন। কিন্তু সেচযন্ত্র বন্ধ রাখায় পানির অভাবে পরবর্তীতে সেই জমিতে তিনি আর ধান আবাদ করতে পারেননি। আলাউদ্দিন বলেন, ‘আশপাশের কোনো ডিপ টিউবওয়েলেই ২ হাজার টাকা করে সেচ খরচ নেওয়া হচ্ছে না। অথচ মকবুল হোসেনের ছেলে সবুজ কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি বিঘা জমিতে ২ হাজার টাকা করে সেচ খরচ দাবি করেন। কৃষকেরা ১৬০০ টাকা করে দেওয়ার প্রস্তাব দিলেও রাজি হননি সবুজ। উল্টো ডিপ টিউবওয়েল থেকে পানি তোলাই বন্ধ রাখেন। অনেক অনুনয়-বিনয় করার পরেও ডিপ টিউবওয়েল চালু করেননি। ধান আবাদ করতে না পারায় তার মতো কয়েক গ্রামের প্রায় শতাধিক কৃষক পরিবার বিপাকে রয়েছে।

কৃষকদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সেচযন্ত্রের মালিক মকবুল হোসেন ওরফে গ্যাদো বলেন, ‘একটা মৌসুমে একটা ডিপ টিউবওয়েল চালালে তিন থেকে চার লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে। এছাড়া ট্রান্সফরমার বা সেচযন্ত্রের অন্য কোনো অংশ নষ্ট হয়ে গেলেও বাড়তি খরচ হয়ে যায়। মেশিন চালাতে যে খরচ হবে, সেটা তুলতে না পারলে লোকসান গুনতে হবে। তাই পানি তোলা বন্ধ রেখেছি।’

নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি এস এম রবিন শীষ বলেন, ‘বেশ কিছু দিন আগে এ ধরণের একটি অভিযোগ পেয়েছিলাম। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে সম্ভবত এ বিষয়ে তদন্ত করতে বলেছিলাম। কৃষকদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে সেচযন্ত্রটি চালু করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


আরাকান আর্মি ধরে নিয়ে গেছে বাংলাদেশি ১০ জেলেকে

মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত বিভাজক নাফ নদ। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কক্সবাজার প্রতিনিধি

মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্যরা বাংলাদেশি ১০ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে।

বুধবার সকালে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের নাফ নদ অংশের মোদিরখাল থেকে তাদেরকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী।

ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেরা হলেন- পালংখালী ইউনিয়নের রহমতের বিল এলাকার হোসেন আলীর ছেলে জানে আলম, মৃত আবদুস ছালামের ছেলে আব্দুর রহিম, মৃত জালাল আহমদের ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম ও সাইফুল ইসলাম, মৃত আলী আহমদের ছেলে আয়ুবুল ইসলাম, আবু তাহেরের ছেলে শাহীন, গৌজঘোনা এলাকার আলী আহমদের ছেলে আবদুর রহিম, পুটিবনিয়া এলাকার মৃত মিয়া হোসেনের ছেলে ওসমান গণী, মৃত আবুল শামার ছেলে ওসমান ও আয়ুব ইসলামের ছেলে আবুল হাশিম।

পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, খালের মুখে মাছ ধরার সময় আরকান আর্মির সদস্যরা ১০ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। এ পর্যন্ত তাদের কোনো খোঁজ-খবর পাওয়া যায়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানবীর হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ঘটনা জেনেছি। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উচ্চ পর্যায়ে অবহিত করা হয়েছে। বিজিবির হস্তক্ষেপে তাদেরকে ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলছে।


বজ্রাঘাতে পাঁচ জেলায় ৯ প্রাণহানি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সারা দেশে চলমান তীব্র দাবদাহের মধ্যেই সারা দেশে বজ্রাঘাতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বজ্রাঘাতে পাঁচ জেলায় নয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দুজন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল অব্দি এসব প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-

কক্সবাজার

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় বজ্রপাতে দুই লবণচাষির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের কোদাইল্যাদিয়া ও রাজাখালী ইউনিয়নের ছড়িপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মৃত ব্যক্তিরা হলেন- উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের জারুলবুনিয়া এলাকার জমিরের ছেলে দিদারুল ইসলাম (৩৫) ও রাজাখালী ইউনিয়নের ছড়িপাড়া এলাকার জামালের ছেলে মো. আরমান (২৫)। তাদের দুজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুছ চৌধুরী জানান, মগনামার কোদাইল্যাদিয়ায় ভোরে লবণ মাঠ পরিচর্যা করতে গেলে বজ্রাঘাতে ঘটনাস্থলেই দিদারুলের মৃত্যু হয়।

রাজাখালীর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার জানান, বুধবার রাতে প্রচুর বজ্রপাত হয়। ভোরেও বজ্রপাত অব্যাহত থাকে। রাতের বৃষ্টিতে লবণমাঠ ক্ষতিগ্রস্ত হলে চাষি আরমান তা পরিচর্যা করতে যান। ওই সময় বজ্রাঘাতে তার মৃত্যু হয়।

রাঙামাটি

রাঙামাটিতে পৃথক দুই স্থানে বজ্রাঘাতে দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল সকালে জেলার শহরের তবলছড়ির সিলেটিপাড়া এলাকায় এবং বাঘাইছড়ি উপজেলার রুপকারী ইউনিয়নের মুসলিম ব্লক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রপাতের সময় বাঘাইছড়ি উপজেলার রুপকারী ইউনিয়নের মুসলিম ব্লক এলাকার বাসিন্দা বাহারজান (৬০) ঘরের বাইরে অবস্থান করছিলেন। ওই বজ্রাঘাতে তার মৃত্যু হয়। একই সময় বজ্রাঘাতে রাঙামাটি শহরের তবলছড়ির সিলেটি পাড়ায় মো. নাজির হোসেন (৫০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তিনি ঘরের কাজ করছিলেন বলে জানা গেছে।

রাঙামাটি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. শওকত আকবর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করে জানান, নিহত নাজির হোসেনের মরদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাঘাইছড়ি থানার ওসি ইশতিয়াক আহমেদ বজ্রাঘাতে প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সিলেট

সিলেটের কানাইঘাটে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রাঘাতে বাবুল আহমদ (৪৮) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। ওই সময় আরও দুই কৃষক গুরুতর আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে উপজেলার দিঘিরপাড় পূর্ব ইউনিয়নের শফিক হাওরে এ ঘটনা ঘটে। মৃত বাবুল কানাইঘাটের দক্ষিণ কুয়রের মাটি এলাকার মৃত আব্দুস সালামের ছেলে।

ওই সময় বজ্রাঘাতে ঝলসে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন বাবুলের ভাতিজা ফাহিম আহমদ (১৭) এবং মানিকপুর গ্রামের বাবু বিশ্বাসের ছেলে প্রদীপ বিশ্বাস (২০)।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে বাবুল আহমদসহ কয়েকজন স্থানীয় শফিক হাওরে বোরো ধান কাটতে যান। হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঝলসে গিয়ে গুরুতর আহত হন তারা। ওই সময় আশপাশের লোকজন তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক বাবুল আহমদকে মৃত ঘোষণা করেন। ঝলসে যাওয়া দুজনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরী জানান, বজ্রাঘাতে মারা যাওয়া বাবুল পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি ছিলেন।

কুমিল্লা

কুমিল্লার চার উপজেলায় বজ্রাঘাতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পৃথক সময়ে জেলার চান্দিনা, সদর দক্ষিণ, বুড়িচং ও দেবিদ্বারে এ চারজনের মৃত্যু হয়।

মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- চান্দিনা উপজেলার বরকইট ইউনিয়নের কিছমত-শ্রীমন্তপুর গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে দৌলতুর রহমান (৪৭), সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ার ইউনিয়নের উত্তর সূর্যনগর গ্রামের আতিকুল ইসলাম (৫০), কুমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলার ধামতী গ্রামের মোখলেছুর রহমান (৫৮) এবং বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের পাচোরা গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার আলম হোসেন।

সংশ্লিষ্ট থানার ওসি ও স্থানীয় সূত্রে চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।


দেশে কেন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়, জানালেন কৃষিমন্ত্রী

বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ভরাডোবায় নেদারল্যান্ডস সরকারের উদ্যোগে নির্মিত পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেছেন, উদ্বৃত্ত উৎপাদন হওয়া সত্ত্বেও অপর্যাপ্ত মজুদ সুবিধা ও সংরক্ষণাগারের অভাবে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়।

আজ বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ভরাডোবায় নেদারল্যান্ডস সরকারের উদ্যোগে নির্মিত পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত ইরমা ভ্যান ডুরেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মলয় চৌধুরী, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার, জায়ান্ট এগ্রো প্রসেসিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফিরোজ হাসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

আব্দুস শহীদ বলেন, প্রায় প্রতিবছরই পেঁয়াজ নিয়ে আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়। সেজন্য পেঁয়াজ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিগত দুই বছরে পেঁয়াজ উৎপাদন বেড়েছে ১০ লাখ টন। দেশে বর্তমানে বছরে প্রায় ৩৫ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়; যা চাহিদার চেয়েও বেশি। কিন্তু পেঁয়াজ খুবই পঁচনশীল হওয়ায় ও সংরক্ষণাগারের অভাবে আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হয়।

মন্ত্রী বলেন, ‘উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমরা কৃষককে বিনামূল্যে ও ভর্তুকিমূল্যে বীজ, সার প্রদানসহ সব রকমের সহযোগিতা দিচ্ছি। একইসঙ্গে, অপচয় বা পোস্ট হার্ভেস্ট লস কমাতে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। ফসল হার্ভেস্টের পর ২০ থেকে ৩০ শতাংশ নষ্ট বা অপচয় হয়। এতো বিশাল অপচয় কেন হবে। এটি আমাদেরকে কমিয়ে আনতে হবে।’

এ উদ্যোগ গ্রহণ করায় নেদারল্যান্ডস সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ ধরনের পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার আমাদের দেশের কৃষক ও ভোক্তা উভয়ের জন্য খুবই উপকারে আসবে। কৃষকেরা পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারবে। এ সময় নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশের বেসরকারি উদ্যোক্তাদেরকে আরও পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার নির্মাণে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান তিনি।

দেশের জায়ান্ট এগ্রো প্রসেসিং নেদারল্যান্ডসের সহযোগিতায় সংরক্ষণাগারটি নির্মাণ করেছে। প্রযুক্তি নেদারল্যান্ডসের। এর ধারণ ক্ষমতা ৪০০ মেট্রিক টন।


শিবপুরে আওয়ামী লীগ নেত্রী রিমির উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নরসিংদীর শিবপুরে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে উপজেলার বাঘাব দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার পাশে স্মার্ট বুথে 'ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১ মে দিনব্যাপী বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মো: মোশারফ হোসেন ফাউন্ডেশনের আয়োজনে তার কন্যা মেট্রো ওয়াশিংটন মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহসিনা জান্নাত রিমির উদ্যোগে এ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়।

মেডিকেল ক্যাম্পে বিনামূল্যে ডায়াবেটিস পরীক্ষা, ব্লাড প্রেশার পরীক্ষা করা হয়। এতে বিভিন্ন বয়সের ১২০জন অসহায়, দরিদ্র মানুষকে চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ওষুধ এবং খাওয়ার স্যালাইন দেয়া হয়েছে।

এই ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে রোগী দেখেন ডা:কাওসার ফাহিম এমবিবিএস (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ) মেডিসিন এবং পেডিয়াট্রিক মেডিসিনে অভিজ্ঞ বিএমডিসি।

এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে প্রতি সপ্তাহের বুধবার ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্পে সেবা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রিমি।

এছাড়াও প্রচন্ড তাপদাহের কারণে তৃষ্ণার্ত শ্রমিক, পথচারী ও সাধারণ মানুষদের মাঝে প্রশান্তি এনে দিতে রিমির উদ্যোগে বিশুদ্ধ সুপেয় শরবত ও পানি বিতরন কর্মসূচি অব্যাহত রাখছে।

রিমি বলেন,'মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের কল্যাণে, বিপদ আপদে পাশে থাকার চেষ্টা করি। সমাজে অনেক মানুষ আছেন যারা টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেন না। তাদের কথা ভেবে আজকের এই ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে।'


ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মাধবপুর উপজেলার হরিতলা নামক স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৪ জনসহ ৫ জন নিহত হয়েছেন। বুধবার দিবাগত রাত ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে সিলেট থেকে ঢাকাগামী প্রাইভেটকার ও বিপরীত দিক থেকে আসা মালবাহী ট্রাকের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসের চালকসহ ৫ জন ঘটনাস্থলে মারা যান।

নিহতরা হলেন- পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা থানার মো. জামাল (৪০), তার স্ত্রী কামরুন্নাহার (৩৫), ছেলে মো. অনন্ত (১১), তার ছোট ভাই মো. এনামুল (৩৫) ও গাড়িচালক বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানার হারুণ বেপারী (৩৫)।

খবর পেয়ে স্থানীয়রা, মাধবপুর ফায়ার সার্ভিস এবং শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে ও মাধবপুর থানা পুলিশ উদ্ধার তৎপরতা চালায়।

মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাকিবুল ইসলাম খাঁন ও জেলা পুলিশ কন্ট্রোল রুম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মরদেহ শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানা হেফাজতে রয়েছে।

বিষয়:

banner close