নানা হিসেব-নিকেশ ও জল্পনা-কল্পনার পর গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জিতে বিজয়ের হাসি হেসেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। এই পদে হেভিওয়েট প্রার্থী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে পরাজিত করে নগর ভবনের চাবি পেলেন তিনি। ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ব্যক্তি ইমেজ ও সাধারণ মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থনের কারণেই জায়েদার বিজয় সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন তার অনুসারীরা।
বিপরীতে আলোচনা চলছে নৌকার প্রার্থীর পরাজয় নিয়ে। নানা বিচার-বিশ্লেষণ আর আলাপ-আলোচনার মধ্যে মোটাদাগে উঠে আসছে আওয়ামী লীগের অন্তঃকোন্দল, দলীয় বিভাজন, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী মনোভাবের পাশাপাশি বিএনপি সমর্থক ভোটারদের বড় ভূমিকার কথা। শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষ, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলাপে উঠে এসেছে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লার পরাজয়ের নেপথ্যের নানা কারণ।
অন্তঃকোন্দল ও বিভাজন
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মতে, গাজীপুর মহানগরে আওয়ামী লীগের দলীয় বিভাজন শুরু হয়েছে এক যুগ আগে। দীর্ঘদিনেও এর রেশ টানা যায়নি। উল্টো এক পক্ষ অপরপক্ষকে ঘায়েল করতেই ব্যস্ত থাকতো অধিকাংশ সময়। এর রেশ পড়েছে এবার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় দল থেকে বহিষ্কার হন মেয়র পদে থাকা জাহাঙ্গীর আলম। এক পর্যায়ে তাকে মেয়র পদ থেকেও বরখাস্ত করা হয়। এসময় বিপুলসংখ্যক কর্মী-সমর্থক ছিলেন জাহাঙ্গীরের সঙ্গে। বহিষ্কারের পর জাহাঙ্গীরের সঙ্গে তাদের ওপরও খড়গ নেমে আসে। শোকজ করা হয় পদধারী দুই শতাধিক নেতাকে। পরে জাহাঙ্গীরের অনুসারী কারও আর স্থান হয়নি দলের কোথাও। দলের বহু ত্যাগী নেতা-কর্মীও রয়েছেন এমন তালিকায়। দলীয় কোন্দল আঘাত করে তৃণমূল পর্যন্ত।
এমন অবস্থায় নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের তৃণমূলের একটি অংশ জাহাঙ্গীরের পক্ষে চলে আসে। তারা ছদ্মবেশ ধারণ করে নৌকার ‘ব্যাজ’ পড়লেও গোপনে জাহাঙ্গীরের মা জায়েদা খাতুনের পক্ষে কাজ করেন। এমন অভিযোগে নির্বাচনের প্রচারণার সময়ও দলের তিনজন নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শোকজ করা হয়েছে আটজন নেতা-কর্মীকে। এছাড়া পুলিশ দিয়ে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে হয়রানি ও গ্রেপ্তার করার অভিযোগও পাওয়া যায়।
দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পরাজয়ের অন্যতম কারণ ছিল এই দলীয় কোন্দল ও বিভাজন।
ব্যাজ নৌকার, ভোট ঘড়িতে
স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যবেক্ষকদের ভাষ্যে, নির্বাচনের দিন কেন্দ্রগুলোতে নৌকার কর্মীদের আধিক্য থাকলেও দিনশেষে সেখানে জয়ী হয় সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনের ঘড়ি প্রতীক। মূলত আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীই নৌকার লোক বেশে ভোট দেন জায়েদা খাতুনকে। ভোটের আগে অভিযোগ ওঠে, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের অনুসারীরা যেন ভোটকেন্দ্রে যেতে না পারেন, সেজন্য ভোটের এক সপ্তাহ আগে থেকেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার ও ঘরছাড়া করা হয় অনেককে। তবে ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে আসার জন্য জায়েদা খাতুনের ভোটার ও কর্মী সমর্থকরা কৌশল হিসেবে গলায় নৌকার ব্যাজ ও হাতে নৌকার ভোটার স্লিপ নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। আর এই কৌশলের কাছে হেরে যান আজমত উল্লা খান।
অতি আত্মবিশ্বাস
জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষের কতিপয় আওয়ামী লীগ নেতার মতে, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে পড়েন। তারা নিশ্চিত ছিলেন চাপের মুখে জাহাঙ্গীর নির্বাচনী মাঠ ছেড়ে যাবেন, তবে শেষ পর্যন্ত নানা চাপ থাকা সত্ত্বেও মাঠ ছাড়েননি জাহাঙ্গীর। এছাড়া ভোটারদের ওপরও নৌকার বাইরে ভোট না দিতে হুমকির অভিযোগ পাওয়া যায়। এতে সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। দলীয় মনোনয়নন পেলেই জয় নিশ্চিত—এমন ধারণায় আত্মতুষ্টিতে ভুগতে থাকেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা। যার প্রভাব পড়ে ব্যালট বাক্সে।
প্রচারণায় পরিকল্পনার অভাব
নগরের বাসিন্দাদের মতে, আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লা খানের নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো পরিকল্পনার ছাপ ছিল না। মহানগরের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের কাজে না লাগিয়ে কেন্দ্র ও বিভিন্ন জেলা-উপজেলার নেতা-কর্মীদের নিয়ে আসা হয় নির্বাচনী প্রচারণার কাজে। বিচ্ছিন্নভাবে তারা প্রচার-প্রচারণা চালান। রাস্তা-ঘাটে দায়সারা প্রচারণা চালালেও ভোটারদের ঘরে পৌঁছায়নি নৌকার বার্তা। এতে স্থানীয় ভোটারদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। ৫৭টি ওয়ার্ডে দলের একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী থাকায় তারা নিজেদের প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। অনেকেই বিএনপির ভোট পেতে নৌকার পক্ষে সরাসরি ভোট চাওয়া থেকে বিরত ছিলেন। এসব কর্মকাণ্ডও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয়ের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কয়েকজন পর্যবেক্ষক বলছিলেন, একাই নানা পথসভায় বক্তব্য দিয়ে গেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খান। তিনি জাহাঙ্গীর আলমের দুর্নীতি, নগর ভবনের দুর্নীতি নিয়ে একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। এ নগরে সরকারের নেয়া নানা উন্নয়ন প্রকল্প তিনি ভোটারদের সামনে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন। নগরীর উন্নয়ন নিয়ে তার ভাবনায় ছিল না কোনো পরিকল্পনার ছাপ, শুধু বিরোধী দল ও মতের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়েছেন। তার একই ধরনের বক্তব্যে নাখোশ ছিলেন নগরীর অনেক মানুষ। প্রচারণায় ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহারেও তিনি পিছিয়ে ছিলেন। তরুণ প্রজন্ম ও নারীদের আকৃষ্ট করতেও কোনো ভূমিকা নিতে পারেননি আজমত উল্লা খান।
আবেগী ভোট জায়েদার পক্ষে
নারী প্রার্থী জায়েদা খাতুন প্রচারণায় নেমে আজমত উল্লা খানের এলাকা টঙ্গীতে প্রবেশে বারবার বাধার শিকার হয়েছেন। তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে, কর্মীদের রক্তাক্ত করা হয়েছে। এভাবে প্রচারণায় বাধা ভোটারদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করে। নন্দিত বাংলা সিনেমা ‘আম্মাজান’র শিরোনাম গান চালিয়ে বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালান জাহাঙ্গীর আলম ও তার মা জায়েদা খাতুন। অনেকেই মনে করেন, এই গানে আবেগতাড়িত হয়েছেন অনেক ভোটার, বিশেষ করে নারীরা। তাই আবেগী ভোটাররা রায় দেন জায়েদা খাতুনের পক্ষে।
নারীদের ভোট জায়েদার ভোট বাক্সে
নগরের ভোটারদের মতে, সিটি করপোরেশনের মোট ভোটার প্রায় ১২ লাখ। এর অর্ধেক ভোটারই নারী। প্রথমবারের মতো এই সিটিতে একজন বয়স্ক নারী মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ায় এবং ছেলের জন্য মায়ের সংগ্রামে আকৃষ্ট হন নারী ভোটাররা। বিভিন্ন স্থানে প্রচারণায় গিয়ে নারী ভোটারদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হন জায়েদা খাতুন। এছাড়া নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় নারী ভোটারদের আকৃষ্ট করতে তেমন কোনো ব্যতিক্রম কার্যক্রম চোখে পড়েনি। ফলে অধিকাংশ নারী ভোটার রায় দিয়েছেন জায়েদা খাতুনের পক্ষে।
আওয়ামীবিরোধী ও বিএনপির ভোট
দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট এবার গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী দেয়নি। দলীয় সরকারের ওপর অনাস্থা জানিয়ে তারা ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়। যদিও বিএনপি ঘরানার স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনূর ইসলাম রনি নির্বাচনে অংশ নেন, তবে বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাকে মেনে নেয়নি। ভোটের আগে রনির চাচা গত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার ভোটারদের ভোট বর্জনের ডাক দিয়ে খোলা চিঠি দেন।
পর্যবেক্ষকদের মতে, বিএনপির সমর্থকরা ভোট কেন্দ্রে গিয়েছেন। বিভিন্ন ওয়ার্ডেও কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের ভোট বাড়াতে কেন্দ্র পর্যন্ত নিয়েছেন এসব ভোটারকে। বিভিন্ন সময় বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা পাওয়ায় ওই দলের সমর্থক ভোটাররাও রায় দিয়েছেন নৌকার বিপক্ষে, জায়েদার ব্যালটে।
এছাড়া আওয়ামী লীগবিরোধী বিচ্ছিন্ন ভোটও পড়েছে নৌকার বিপক্ষে।
কেন্দ্র কমিটি নিয়ে তৃণমূলের অসন্তোষ
নির্বাচনে পরাজয়ের পেছনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্র কমিটি নিয়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের অসন্তোষ বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন দায়িত্বশীল অনেকে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ও কেন্দ্রগুলোর কমিটিতে যাদের রাখা হয়েছে তাদের অধিকাংশই গত ২০১৮ সালের নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলমের নির্বাচনী কেন্দ্র কমিটিতে ছিলেন। এ নিয়ে কমিটি গঠনের পরই অনেক নেতা-কর্মী অভিযোগ করেন। অনেকেই অভিযোগ করেন, তৃণমূলের পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের কেন্দ্র কমিটিতে রাখা হয়নি। এছাড়া কেন্দ্র কমিটির জন্য বরাদ্দ খরচের টাকারও সুষম বণ্টন হয়নি। লিফলেট, ব্যানার, পোস্টার এনে না টানিয়ে ফেলে রাখারও প্রমাণ পাওয়া যায়। পরিশ্রমী তরুণদেরও মূল্যায়ন করা হয়নি। কমিটির আহ্বায়ক-যুগ্ম আহ্বায়করা অন্য সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করেননি। এসব বিষয়ে গত ১৯ মে দৈনিক বাংলায় ‘আওয়ামী লীগের কেন্দ্র কমিটি নিয়ে তৃণমূলে অসন্তোষ’ শিরোনামে সংবাদও প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদের পর কেন্দ্র কমিটি নিয়ে অসন্তোষ কাটাতে তোড়জোড় চলে। তবু হার এড়াতে পারেননি আজমত উল্লা খান।
যা বলছেন প্রার্থী ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক
গাজীপুর সিটিতে পরাজয়ের বিষয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘দলের অনেকেই প্রকাশ্যে নৌকার পক্ষে কাজ করেছে, গোপনে অবস্থান নিয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে। এছাড়া বিরোধী দলের ভোটও গিয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীর বাক্সে। নানা কারণে এখানে আমাদের পরাজয় হয়েছে। তবে পরাজয়ের পেছনে মূল কারণ কী, তা আমরা তদন্ত করে বের করবো।’
শুক্রবার সকালে টঙ্গীর নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খান বলেন, ‘আমি যেহেতু দলীয় প্রার্থী ছিলাম, দলের সবাই বসে পর্যালোচনা করে নির্বাচনে পরাজয়ের কারণ খুঁজে বের করা হবে। দলীয় নেতা-কর্মীরা আমার সঙ্গে গাদ্দারি করেছেন। নিশ্চয়ই দল এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।’
গাজীপুরে টানা দুই ঘণ্টা ধরে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছেন ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা। বুধবার দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদ নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দুপুর ১২টার দিকে জয়দেবপুর শিমুলতলী সড়কের ডুয়েট গেটের পাশে এমআইএসটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে জড়ো হন ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা। পরে মিছিল সহকারে ভুরুলিয়া রেলগেট, শিববাড়ি হয়ে চন্দনা চৌরাস্তায় এলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। গাজীপুর ডিপ্লোমা প্রকৌশলী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সদস্যদের সড়কপথ অবরোধের ফলে ঢাকা-জয়দেবপুর, শিমুলতলীগামী সড়ক, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা জানান, যারা কারিগরি শিক্ষা এবং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে অব্যাহত ষড়যন্ত্র ও অযৌক্তিক দাবি নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
কর্মসূচিতে গাজীপুর শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা অংশ নেন। এছাড়া এমআইএসটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, রয়েল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, ভাওয়াল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন।
ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা জানান, দেশের ৪০ লক্ষাধিক ডিপ্লোমা প্রকৌশলী ও প্রায় চার লাখ পলিটেকনিক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বিএসসি প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা যে তিন দফা দাবি উত্থাপন করেছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক। তাদের প্রতিটি দাবি দেশের চালিকাশক্তি ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের ক্যারিয়ারে আঘাত হানে। এই দাবি জাতীয় কর্মক্ষেত্রে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে এবং শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবীদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়াবে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, দাবি মানা না হলে পরবর্তী সময়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, মীমাংসিত কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ নেই।
এদিকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম দুটি মহাসড়ক অবরোধের ফলে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। দুই মহাসড়কের উভয়দিকে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে গন্তব্যগামী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। অনেকে বাস থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওয়ানা দেন।
বাসন থানার ওসি শাহীন খান জানান, দুপুর ১টা থেকে থেকে শিক্ষার্থীরা চন্দনা চৌরাস্তা থেকে শিববাড়ি পর্যন্ত সড়ক বন্ধ করে রাখেন। বিকেল ৩টার দিকে তারা চলে যান।
উত্তরা ইপিজেডে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিক সাইফুল ও তার বাবা শফিকুল ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে নীলফামারীতে সড়ক অবরোধ করে পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে ‘এভারগ্রীন প্রোডাক্টস বিডি লিমিটেডের’ বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কয়েক শত শ্রমিক বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ডিসি অফিস-সার্কিট হাউজ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
জানা যায়, গত ১২ সেপ্টেম্বর স্ত্রীকে আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন ইপিজেডের এভারগ্রীন প্রোডাক্ট বিডি লিমিটেডের শ্রমিক ছাইদুল ইসলাম সাইফুল। ওই দিনই তার বাবা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরদিন ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে সৈয়দপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাকে কর্দমাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, শ্রমিক অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে মালিকপক্ষের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশে আত্মগোপনে ছিলেন। পরে ডিবি পুলিশ সাইফুল ও তার বাবা শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে মামলা দায়েরসহ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। ওই খবর ছড়িয়ে পড়লে বুধবার সকাল থেকেই এভারগ্রীণ কারখানার শ্রমিকরা ইপিজেডের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিলে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ডিসি অফিসের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে কারাগারাবন্দী শ্রমিক ছাইদুল ইসলাম সাইফুল ও তার বাবাকে আদালত জামিনে মুক্তি দিলে দুই ঘন্টা পর দুপুর দেড়টায় শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নিলে ওই সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এরপর জেলা প্রশাসকের সম্মেলণ কক্ষে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে এক বৈঠকে তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার থেকে শ্রমিকরা কাজে ফিরতে সম্মত হন।
বৈঠক শেষে জেলা পুলিশ সুপার এ.এফ. এম তারিক হোসেন খান বলেন, ‘সাইফুল সবার সামনেই স্বীকার করেছে যে সে নিজেই আত্মগোপনের মাধ্যমে আজকের এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। আমরা শ্রমিকদের প্রতি সহনশীল হয়ে তাদের দাবির প্রেক্ষিতে সাইফুল ও তার বাবার জামিনের ব্যবস্থা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছি। আশা করি আগামীকাল থেকে উত্তরা ইপিজেডে আর কোনো বিশৃঙ্খলা থাকবে না। সুন্দরভাবে ইপিজেড পরিচালনা হবে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, ‘শ্রমিকদের প্রধান যে দাবি ছিল সাইফুল ও তার বাবার নামে যে মামলা হয়েছে সেটি থেকে তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া ও শ্রমিকদের আরও কিছু দাবি ছিল। বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা ছিল তাদের সঙ্গে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ইপিজেডে শ্রমিকদের স্বার্থ ও দাবি রক্ষায় আগামী ৭ দিনের মধ্যে কারখানা শ্রমিক ও মালিকপক্ষের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে পিসি কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।’
আনারস, কলা, চালা বাইদ, শাল গজারির অবারিত বন, মধুপুরের লাল মাটির গর্বের ধন। দেশের বিভিন্ন কৃষি অঞ্চলের মধ্যে লাল মাটির মধুপুর গড় অন্যতম। গড় এলাকার মাটি ভূ-প্রকৃতিক বৈশিষ্ট্য বৈচিত্র্যে রয়েছে অন্যসব কৃষি এলাকা থেকে ভিন্নতর। এক দিকে উর্বর মৃত্তিকা, অম্লত্ব, উঁচু বন্যা মুক্ত। রস-কষ শক্তি সামর্থ্যে বৈচিত্র্যময়। কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু। কোথাও বাইদ, কোথাও চালা। মধুপুরের মাটি পরিবেশ প্রতিবেশ প্রকৃতি সব মিলে যেন এক কৃষির নৈসর্গিক লীলা ভূমি। বলছিলাম মধুপুর গড়ের কৃষি রাজ্য কথা।
সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এক সময় মধুপুরে আনারস আর দেশি জাতের কিছু কলা আদা হলুদ কচু পেঁপেসহ নানা কৃষি ফসল চাষ হতো। বাণিজ্যিক চাষাবাদ ছিল না। বেশির ভাগ স্থলে ছিল শাল গজারির বন। দিন দিন বন উজাড়ের ফলে সংকুচিত হয় ইতিহাস ঐতিহ্যখ্যাত সমতল এলাকার পাতা ঝরা শাল গজারি, সেগুণ, আজুলি, বহেড়া, হরিতকি, নিম, নিশিগন্ধা, সর্পগন্ধা, শিমুল, জারুল, খাড়াঝরা, অর্জুন, সিদা, মেহগুনি, বানর নড়ি, আনাইগোটা, তিতিজাম, ঢাকি জাম,আমলকীর রাজ্য ক্ষীন হতে থাকে। বাড়তে শুরু করে বাণিজ্যিক কৃষি চাষাবাদ।
এখন লাল মাটির চারদিকেই দিগন্ত জোড়া কৃষি ফসলের বৈচিত্র্যেভরা। মাঠে মাঠে শোভা আনারস কলা হলুদ পেপে কচু কফি কাজু বাদাম কাসাভা ড্রাগনসহ নানা ফসল। হাট বাজারে এ সময় কলা আনারসের মৌ মৌ গন্ধ বিরাজ করছে। সারা বছরই বাজারে নানা ধরনের শাকসবজি ফলমূল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সমাগম ঘটে।
গারো বাজার মহিষমারা গেলে ছানোয়ার হোসেন নামের এক কৃষক তার কফি বাগান ঘুরে ঘুরে দেখান। চমৎকার বাগান। তিনি এ চাষে সাড়া জাগিয়েছে। শুধু জানোয়ার হোসেনই নয় তার মতো ছোট বড় কৃষক কফি করেছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। গোবুদিয়া ও ইদিলপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান নামের কৃষক কাজু বাদাম কফি চাষ করেছে। তার মতো অনেক কৃষক কাজু বাদামের গাছ লাগিয়েছে কৃষি বিভাগ জানায়।
সরজমিনে গারো বাজারের ছানোয়ার হোসেন তার বাগান ঘুরে দেখালেন একখণ্ড কৃষির রাজ্য। মাল্টা, ড্রাগন, পেয়ারা, আনারস, কফি, বাতাবি লেবু (জাম্বুরা), লেবুসহ নানা ফল ফসলে গড়ে তোলেছেন তার কৃষি একখণ্ড রাজ্য। সব মিলে গারো বাজারের এ কৃষক ছানোয়ার পেয়েছে অনেক পদক ও সম্মাননা।
কৃষকরা জানান, এভাবে দিন দিন মধুপুরের লাল মাটিতে আবাদ হচ্ছে নতুন নতুন ফল ফসল। কৃষি ফসলের বহরে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন ফসল। সুদুর ফিলিপাইনের উন্নত জাতের আনারস চাষের নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন হচ্ছে । এ আনারসের জাতের নাম এমডি-২। কৃষি ও কৃষকের আশা এ জাতের আনারসের ফলন ভালো হলে লাল মাটির মধুপুর কৃষি অঞ্চলে নতুন মাত্রা যোগ হবে।
মধুপুরে এখন উচ্চ ফলনশীল জাতের নানা ফসলের বাণিজ্যিক বাগান গড়ে উঠেছে। এ অঞ্চল জামাল পুর জেলার কিছু অংশ জুড়ে গাজীপুর পর্যন্ত লাল মাটি। বন আলু, বনের নানা ভেষজ বৃক্ষ গারোদের প্রিয় খাবারের অংশ ও ভেষজ চিকিৎসার উপকরণ। শুধু ৩৭০.৮৪ বর্গমাইল আয়তনের মধ্যে ১১ টি ইউনিয়নে রয়েছে ছোট বড় মাঝারি প্রান্তিক চাষি। কৃষক পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৫৪ হাজার ৯৫০ এর মতো।
এ কৃষি রাজ্যের উৎপাদিত কৃষি পণ্য বিদেশে রপ্তানি করতে পারলে যেমন কৃষকরা লাভবান তেমনি দেশ পাবে বৈদেশিক মুদ্রা। সমৃদ্ধ হবে মধুপুর এমনটাই মনে করছে স্থানীয়রা।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রকিব আল রানা বলেন, মধুপুর মাটি আবহাওয়া ভূপ্রকৃতি কৃষি ফসলের জন্য উপযোগী। এ মাটিতে প্রায় সব ধরনের ফসলের চাষ হয়ে থাকে। এ এলাকার অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি কৃষি। তারা কৃষকদের সহযোগিতা পরামর্শ দিয়ে থাকে বলে জানান।
একটি নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন উর্মী খাতুন (২৫)। কিন্তু সেখানেই তিনি হারিয়েছেন তার শেষ সম্বল, সম্মান ও মানসিক শান্তি। প্রতারণা, যৌন হয়রানি ও জোরপূর্বক উচ্ছেদের হুমকিতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন এই নারী। বুধবার শহরের একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উর্মী খাতুন জানান, পারিবারিক কিছু জটিলতার কারণে গত মার্চ মাসে শহরের ফরিদ হোসেন নামের এক ব্যক্তির বাসায় ভাড়া ওঠেন। বাসা ভাড়া নেওয়ার পুরো বিষয়টি তদারকি করেন ফরিদের ভাগ্নে ইদ্রিস আলী। চুক্তি অনুযায়ী তিন বছরের অগ্রীম ভাড়ার পরিবর্তে উর্মী তার মায়ের দেওয়া শেষ স্মৃতি ৪ ভরি ওজনের একটি সোনার চেইন তোলে দেন ইদ্রিসের হাতে। কিন্তু চেইন হাতে পেয়েই বদলে যেতে থাকে ইদ্রিস ও তার মামা ফরিদের আচরণ। ভাড়া দেওয়ার কথা অস্বীকার করে উর্মীকে বাসা থেকে জোর করে বের করে দেওয়ার পাঁয়তারা শুরু করে তারা। শুধু তাই নয়, ইদ্রিস একাধিকবার উর্মীর একাকিত্বের সুযোগ নিয়ে তাকে কুপ্রস্তাব দেয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উর্মী বলেন, ‘এই শহরে আমি কাউকে চিনতাম না। বিশ্বাস করে শেষ সম্বলটা তুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন বোঝতে পারছি, কত বড় ভুল করেছি। ইদ্রিস শুধু প্রতারণাই করেনি, সে আমাকে বারবার মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। থানায় জানিয়েছি, কিন্তু এখনো কোনো সুবিচার পাইনি। আজ আমি শঙ্কিত, আতঙ্কিত প্রাণনাশের ভয়ে দিন কাটাচ্ছি।
বাড়ির মালিক ফরিদ হোসেন ও তার ভাগিনা ইদ্রিস আলী বলেন, অভিযোগুলো সঠিক নয়। উর্মীর কয়েক মাসের ভাড়া বাকি রয়েছে। যার কারণে এমনটা মিথ্যা ছড়াতে পারে। চেইন নেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এসব মিথ্যা রটানোর কোনো মানে হয় না।
গোপালগঞ্জ জেলা জামায়াত ইসলামীর আমীর ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়া) সংসদীয় আসনের জামায়াতের প্রার্থী অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, আমরা সবাই বাংলাদেশি। এখানে কেউ সংখ্যালঘু নই। দুর্গাপূজায় আমরা প্রত্যেকটা মণ্ডপে যাব। আপনারা নির্দ্বিধায় নির্বিঘ্নে ও শঙ্কামুক্তভাবে ধর্ম-কর্ম পালন করবেন। আমরা আপনাদের পাশে থাকব।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার রাতে কোটালীপাড়া পৌরসভা এলাকায় সনাতন ধর্মালম্বীদের সাথে গণসংযোগকালে তিনি একথা বলেন।
কোটালীপাড়া সরকারি ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশন মসজিদে গত মঙ্গলবার আসরের নামাজ শেষে মুসল্লিদের সাথে মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে গণসংযোগ। এ সময় দেরানীবাজার, বালিয়াভাঙ্গা, আলিঠাপাড়া, পশ্চিমপাড়, কয়খা-ফেরধারা ও ঘাঘর বাজারের বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তি পথচারী ও শ্রমজীবী মানুষদের আগামী নির্বাচনে দাড়িপাল্লা মার্কায় ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। একই সাথে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন ধর্মালম্বীদের সাথে মতবিনিময় করেন।
গণসংযোগকালে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা জামায়াতের আমীর তিতাস আহমেদ, কোটালীপাড়া উপজেলা জামায়াতের আমীর ছোলায়মান গাজী, সেক্রেটারি মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, নায়েবে আমীর সেকেন্দার আলী, গোপালগঞ্জ পৌর সেক্রেটারি শওকত আলম, কোটালীপাড়া পৌর সভাপতি আক্তার দাড়িয়া, পৌর সেক্রেটারি শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রতিনিধি এবং স্থানীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিচয় দেন ডাক্তার। প্যাডে লিখেন ডাক্তার। দিয়েছেন চেম্বার, নিয়মিত দেখেন রোগী। সঙ্গে রয়েছে ফার্মেসি। সেই ফার্মেসির দোকানের টেবিলের সামনে ডিজিটাল ব্যানারে পরিচালনায় লেখা চিকিৎসক। প্রেসক্রিপশনে লেখেন উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ। অথচ তিনি কোনো এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রীধারী কেউ নয়। এমনই ভুয়া চিকিৎসকের দেখা মিলেছে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পুনটে।
জানা যায়, উপজেলার পুনট ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের তছলিম উদ্দিন বাচ্চুর ছেলে জাহাঙ্গীর হোসাইন (৩৮)। তিনি কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ছয় মাস মেয়াদি প্যারামেডিকেল কোর্স করেই ডাক্তার ও চিকিৎসক পদবি ব্যবহার করছেন। বর্তমানে এ ধরনের কোনো প্যারামেডিকেল কোর্স হাসপাতালে হয় না।
সরেজমিনে দেখা যায়, সোনালী ব্যাংক পিএলসি পুনটহাট শাখার নিচে তামিম মার্কেটে দুটি দোকান ঘর নিয়েছেন জাহাঙ্গীর হোসাইন। একটিতে দোকান ঘরে ফার্মেসি। সেখানে তাকে তাকে সাজানো অ্যান্টিবায়োটিকসহ নানা ধরনের ওষুধ। ফার্মেসির সঙ্গে লাগানো আরেক দোকানে দিয়েছেন চেম্বার। সেই চেম্বারে দেখেন নিয়মিত রোগী। ওষুধ দেন ফার্মেসি থেকে, পরামর্শ ফি নেন প্রতি রোগী থেকে ৫০ টাকা। বুধবার সকালে তার চেম্বারে মাসুদুল ইসলাম নামে এক রোগী চিকিৎসা নিতে যান। তিনি চিকিৎসাপত্র সাদা কাগজে দিতে চাইলেও প্রেসক্রিপশন প্যাডে লিখে দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
অথচ এ বিষয়ে ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্ত ছাড়া অন্য কেউ তাদের নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না বলে নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত ১২ মার্চ বিচারপতি রাজিক আল জলিল এবং বিচারপতি সাথীকা হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের শুনানি শেষে এ রায় দেন।
গোবিন্দপুর গ্রামের আক্কাস আলী বলেন, ‘জাহাঙ্গীরের বাপের বেশি জমি-জমা ছিল না। এক-দেড় বিঘা। এই চার বছরে চার বিঘা জমি কিনেছে, দুই তলা ফ্ল্যাট বাড়ি করিছে। বড় বড় গেরস্থরাই জমি কি না পারুছে না। আর জাহাঙ্গীর প্রতি বছর জমি কিনে। আগে চলতো ছোট হোন্ডায়। এখন চলায় বড় হোন্ডা। এছাড়া ব্যাংকে তার অনেক টাকাও আছে। ব্যক্তিগত ক্লিনিক দেওয়ার জন্য এখন পুনট বাজারে জায়গা খুঁজতেছে।’
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, নামের আগে এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রী ছাড়া ডাক্তার বা চিকিৎসক লেখা যাবে না। হাইকোর্টের এ রায় সম্পর্কে অবগত আছি। আগে প্রেসক্রিপশন প্যাড বানানো হয়েছিল এজন্য সেসব প্যাডে ডাক্তার পদবি লেখা ছিল। এছাড়া রোগীদের চিকিৎসার প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দেওয়া হয়। ডিজিটাল ব্যানারে চিকিৎসক লেখার উত্তরে বলেন, আমি যেখানে থেকে ট্রেনিং নিয়েছি তারা এভাবে লিখতে বলেছেন। আমার ভুল হয়েছে। আজকে দিনের মধ্যে সব সরিয়ে ফেলব।
জয়পুরহাট সিভিল সার্জন ডা. মো. আল মামুন বলেন, এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রীধারী ছাড়া কেউ ডাক্তার বা চিকিৎসক পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না। যদি কেউ এ পদবি ব্যবহার করেন। তবে, সেটি দণ্ডনীয় অপরাধ। এ বিষয়ে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।
কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মাহবুব উল আলম বলেন, আপনার তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারলাম। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের আধুনিক চাষাবাদ মালচিং পদ্ধতিতে আগাম টমেটো চাষ করে লাখ লাখ টাকা আয় করে বাজিমাত করেছেন কৃষক আব্দুল মান্নান। তার অভাবনীয় সাফল্যে অন্যান্য কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। তার এমন সাফল্যে এলাকার নতুন আরও ৫-৬ জন চাষি টমেটো চাষ করেছেন। মূলত মালচিং পদ্ধতির টমেটোতে এ অঞ্চলের কৃষকের সুদিন এসেছে। এ টমেটোর চারা বা ফল প্রাকৃতিকভাবে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও অনেক কম। তাই এ এলাকার কৃষকরা টমেটো চাষে মনোযোগী বেশি। এই পদ্ধতি এলাকায় জনপ্রিয় হলে উৎপাদন বৃদ্ধিসহ কৃষকরা বেশ লাভবান হবেন বলে আশাবাদ কৃষি বিভাগের।
কৃষি বিভাগ জানায়, এই পদ্ধতির চাষাবাদে জমি রোগ-বালাই থেকে মুক্ত থাকে। এতে পানি, সার, ওষুধ খরচ সাশ্রয়ী হয়, পাশাপাশি ফলন হয় বেশি এবং গাছ দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে। বেডগুলো মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দিতে হয়। মালচিং পেপার হলো বিশেষ ধরনের পলি পেপার (পলিথিন)। বীজগুলো থেকে চারা গজানোর পর চারার স্থানগুলো থেকে মালচিং পেপার ছিঁড়ে দিতে হয়। যাতে করে চারাগুলো মাথা তুলে বড় হতে পারে। এই মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে জমিতে আগাছা জন্মাতে পারে না। সেচের অতিরিক্ত পানি জমে জমি বিনষ্ট হয় না। অতিরিক্ত সারের প্রয়োজন হয় না। ফলে জমি চাষাবাদে শ্রম কমে যাওয়ায় কৃষি শ্রমিক কম লাগে। উৎপাদন খরচ কমে যায়। জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলন অনেক বেশি হয়। গাছের আয়ু বৃদ্ধি পাওয়ায় দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। এতে করে কৃষক সবদিক থেকে লাভবান হয়।
জানা যায়, মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের শুকুর উল্লার গ্রামের তরুণ কৃষক আব্দুল মান্নান এ বছর সাড়ে ১২ বিঘা জমিতে আগাম টমেটো আবাদ করেছেন। ৫৫-৬০ দিনের ভেতরে টমেটো বাজারজাত করা যায়। এবার তার উৎপাদন খরচ হয়েছে ১৩ লাখের ওপরে। আরও ১০-১২ লাখ টাকা খরচ হবে বলে জানা যায়। বর্তমান বাজারে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে টমেটো বিক্রি হচ্ছে। ফলন ভালো হওয়ায় ও বাজারদর গত বছরের তুলনায় বেশি হওয়ায় এবার প্রায় ৫০-৬০ লাখ টাকার মতো বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। খরচ বাদে ৩০-৩৫ লাখ টাকা আয় হবে।
কৃষক আব্দুল মান্নান গত বছর ১০ বিঘা জমিতে আগাম জাতের টমেটোর আবাদ করেন। তার উৎপাদন খরচ হয় ২০-২২ লাখ। খরচ বাদে তার লাভ হয় ২৫-২৬ লাখ টাকা। নতুন এই পদ্ধতিতে আগাম টমেটো চাষ করে কৃষক আব্দুল মান্নানের ব্যাপক সাফল্যে ও অধিক লাভবান হওয়ায় ইতোমধ্যে এলাকায় বেশ সাড়া ফেলে, প্রতি বছর তাকে দেখে উৎসাহিত হয়ে গ্রামে আরও ৫-৬ জন কৃষক ৩০-৩৫ বিঘা জায়গায় টমেটোর আবাদ করেছেন। তারাও সাফল্য পেয়েছেন। চারিদিকে সুনাম ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার কৃষক এসে খোঁজ-খবর ও পরামর্শ নিচ্ছেন। তারাও আগামীতে এই পদ্ধতিতে আগাম টমেটোর আবাদ ব্যাপকভাবে করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
কৃষক আব্দুল মান্নান জানান, ‘মালচিং পদ্ধতিতে খরচ কমেছে কয়েকগুণ অপরদিকে অসময়ে টমেটো চাষ করে বাড়তি আয় এর সুযোগ হয়েছে। খরচ বাঁচাতে এবং উৎপাদন বাড়াতে মালচিং পদ্ধতিতে টমোটো চাষ করেছি। তা ছাড়া মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে জমিতে আগাছা জন্মাতে পারে না। সেচের অতিরিক্ত পানি জমে চারা বিনষ্ট হয় না। অতিরিক্ত সারের প্রয়োজন হয় না। ফলে জমি চাষাবাদে শ্রম কমে যাওয়ায় কৃষি শ্রমিক কম লাগে। উৎপাদন খরচ কমে যায়। জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলন অনেক বেশি হয়। গাছের আয়ু বৃদ্ধি পাওয়ায় দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়।’
তিনি আরও বলেন, আমার বাগানে বর্তমানে কাজের লোক আছে ১২-১৫ জন। পুরুষদের দৈনিক ৪৫০ টাকা ও মহিলাদের দেওয়া হয় ৩০০ টাকা।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার রায় জানান, ‘কমলগঞ্জ উপজেলায় ৬০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের টমেটোর উৎপাদন হয়েছে। এই পদ্ধতিতে টমেটোর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং মালচিং পদ্ধতিতে করায় আর্দ্রতা বেশি থাকা সত্ত্বেও শেকড় অক্ষত থাকে, যা গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে সফলতা এনেছে এবং কৃষকদের আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। পাশাপাশি কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ঘাটিয়ারপাড়া গ্রামে গত ১১ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টার দিকে নিজ বাড়ির সামনে কোদালের আঘাতে নৃশংসভাবে খুন হন স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহ আলম। ঘটনার ছয় দিন পেরিয়ে গেলেও মূল আসামি লাবলু এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। এ ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন এলাকাবাসী। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের আধুনগর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আধুনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এবং সঞ্চালনায় ছিলেন এনসিপি লোহাগাড়া শাখার প্রধান সমন্বয়ক মো. জহির উদ্দিন। আরো উপস্থিত ছিলেন, আধুনগর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু মুছা মুহাম্মদ খালিদ জামিল, বড়হাতিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান এমডি জোনাঈদ চৌধুরী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন লোহাগাড়া শাখার সিনিয়র সহসভাপতি মো. রফিক দিদার, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন লোহাগাড়া সভাপতি অধ্যাপক হামিদুর রহমান, সহসভাপতি মুহাম্মদ নুরুচ্ছফা, আধুনগর সমাজ উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি সর্দার মাওলানা নুরুল আলম এবং শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন আধুনগর ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মো. শহিদুল ইসলামসহ প্রমুখ। বক্তারা বলেন, দিনের আলোয় প্রকাশ্যে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড সমাজকে আতঙ্কিত করেছে। দ্রুত ঘাতক লাবলুকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা। তারা আরও উল্লেখ করেন, শাহ আলম ছিলেন পরিশ্রমী ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক। তার হত্যার বিচার বিলম্বিত হলে জনগণের ক্ষোভ ও অসন্তোষ আরও বাড়বে। সমাবেশ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘাতক লাবলুকে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। বক্তারা সতর্ক করে বলেন, দাবি আদায় না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি ও কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউপি সদস্য ফরিদুল আলম, শাহাজাহান চৌধুরী পারভেজ, সাবেক সদস্য ডা. হায়াত মাহমুদ, যুবদল নেতা রেজাউল করিম, এনসিপি লোহাগাড়া যুগ্ম-সমন্বয়কারী রিদওয়ান আর রায়হান, ছাত্র প্রতিনিধি মির্জা তামিম এবং ছাত্রদল নেতা ইমতিয়াজ আহমদ।
কিশোরদের মোবাইল আসক্তি কমিয়ে খেলার মাঠে ফিরিয়ে আনতে নীলফামারীর সৈয়দপুরে বুধবার দুপুরে খেলা সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এসব সামগ্রীর মধ্যে ছিলো মিনি ফুটবল বার, ফুটবল ও ফুটবল বার নেট। উপজেলার ১৫টি মাঠের কর্মকর্তাদের হাতে এসব সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। খেলা সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-ই-আলম সিদ্দিকী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী এম.এম আলী রেজা রাজু, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষন রায়, আইসিটি কর্মকর্তা আজিফার রহমান, উপ-সহকারি প্রকৌশলী শওকত কবির প্রমুখ। ভোরের শিশির স্পোর্টিং ক্লাবের পরিচালক মুসা ও সৈয়দপুর কিশোর ফুটবল একাডেমির খেলোয়ার সিজান বলেন, উপজেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ খেলা সামগ্রী সরবরাহ করায় আমরা ফের খেলার মাঠে ফিরতে পারছি। এতে করে কিশোর ও তরুণদের কমবে মোবাইল প্রেম। বর্তমান যুগের উঠতি তরুণরা মোবাইল পেয়ে লেখাপড়া বিমুখ হয়ে পড়েছে। খেলার মাধ্যমে অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আসবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উপজেলা প্রকৌশলী এমএম আলী রেজা রাজু বলেন, কিশোর ও যুবকদের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে খেলার বিকল্প নেই। তবে মোবাইলের খেলা বাদে মাঠের খেলায় তাদের ফিরতে হবে। এজন্য সরকারি অর্থে এই কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
তুলনামূলক শ্রম ও ব্যয় কম হওয়ায় জমিতে মাচা পদ্ধতিতে উন্নত জাতের লাউ চাষে বেশি ফলন ও দাম ভাল পাওয়ায় খুশি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রামের কৃষক শাহজাহান আলী।
লাউয়ের বাম্পার ফলন হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে লাউ যাচ্ছে ঢাকাসহ সারাদেশে। খাদ্যশষ্য উৎপাদনে মাটি ও পরিবেশ রক্ষার্থে জৈব সার ব্যবহার করে ব্যাপক সাফল্যের সাথে সাড়া ফেলেছেন এলাকায় তিনি।
উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রামের কৃষক শাহজাহান আলী। তিনি এক একর জমিতে মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ শুরু করেন। উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে নবাব জাতের লাউ বীজ রোপন করেন। উন্নত জাতের লাউ চাষ করে ভালো ফলন হওয়ায় প্রতিমাসে প্রায় ৮০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করছেন তিনি। কীট নাশকের পরিবর্ততে খেতে জৈব নাশক ব্যবহার করায় বাজারে তার লাউয়ের চাহিদাও ব্যাপক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তার প্রতিটি মাচায় পর্যাপ্ত পরিমান লাউ ধরেছে। লাউয়ের ভারে মাচা হেলে পড়েছে। জুলাই মাস থেকে পরিপক্ষ লাউ বাজারে বিক্রী শুরু করেছেন তিনি।
চারা লাগানোর মাত্র সঠিক পরিচর্যা আর ক্ষেতে ফেরোমন ফাঁদ ও জৈব বালাই নাশক ব্যবহার করায় ৫০-৫৫ দিনের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে। প্রতিটি লাউয়ের ওজন ২ থেকে ৩ কেজি হয়। তিনি প্রতিমাসে লাউ বিক্রি করেন ৮০ হাজার টাকা।
লাউ চাষি শাহজাহান আলী জানান, এক একর জমিতে লাউ চাষ করতে সার, বীজ, মাচা তৈরি ও অন্যান্য খরচ বাবদ ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। জুলাই মাসেই প্রায় ৮০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছি। সেপ্টেম্বর মাসে এর চেয়ে বেশি বিক্রি করেছি। প্রতি দিন গড়ে ২ থেকে ৩ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করি। চলতি মাস পর্যন্ত আমি লাউ বিক্রি করতে পারব।
আমাকে বাজারে যেতে হয় না। আশপাশের বাজারগুলো থেকে পাইকাররা এসে খেত থেকে কিনে নিয়ে যায়। শুধু স্থানীয় বাজার না এমনকি ঢাকায়ও যাচ্ছে। লাউ বিক্রি করে খরচ বাদে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি জৈব বালাই নাশক ও ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করায় তার লাউ নিরাপদ সবজি হিসেবে ভোক্তাদের চাহিদাও ব্যাপক। অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ বাড়ছে এই উপজেলায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার লোকমান আলম বলেন, মাচা পদ্ধতিতে উন্নত জাতের লাউ চাষে বেশি ফলন ও দাম ভাল পাওয়ায় খুশি কৃষকেরা। মাচা পদ্ধতিতে উন্নত জাতের লাউ চাষ করলে আসলেই লাভবান হওয়া সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, লাউ উত্তোলনের পর একই মাচা ব্যবহার করে আরও ২টি ফসল চাষ করে লাভবান হচ্ছেন এই এলাকার কৃষকরা।
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় এবার স্মরণকালের সবচেয়ে বড় শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে। ৭১টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে পূজা। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গোৎসব সম্পন্ন করতে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
কাপাসিয়া প্রতিটি মণ্ডপেই এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। দিন-রাত এক করে শেষ মুহূর্তের রঙের তুলির আঁচড়ে প্রাণ দিচ্ছেন দেবী দুর্গার প্রতিমায়।
গত বছরের তুলনায় এবার রেকর্ড সংখ্যক-৭১টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। যা কাপাসিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আয়োজন বলে জানিয়েছেন পূঁজা উদযাপন পরিষদের নেতারা।
কাপাসিয়া উপজেলার রাওনাইট বাজার সংলগ্ন পানবরাইদ রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নিতাই বর্ধন বলেন, রাধা গোবিন্দ মন্দিরে প্রতিমা রং করা হচ্ছে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর আমাদের পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এই দুর্গাপূজায় আমাদের পরিবেশ অত্যন্ত সুন্দর, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে, তারা প্রতিনিয়ত আমাদের সাথে যোগাযোগ করছেন, এমনিতেও আমাদের গ্রামের পরিবেশ ভালো। এবার কাপাসিয়ায় ৭১টি পূজা মণ্ডপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত বছর ৫ আগস্ট এর পর মানুষের মনের ভেতর যে একটা ভীতি কাজ করেছে, এই বছর সেই ভীতি নেই। আমাদের কাপাসিয়ার জনমানুষের নেতা রিয়াজুল হান্নান হিন্দু সম্প্রদায়কে নিয়ে প্রতি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক করছেন। হিন্দুদের যাতে মনোবল ভালো থাকে তিনি সাহস দিচ্ছে, পূজায় কোনো সমস্যা যাতে না হয় এবং সাম্প্রদায়িকতা বলতে কাপাসিয়া কোনো জিনিস থাকব না। সাম্প্রদায়িকতা তিনি পছন্দ করেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ভালো।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট কাপাসিয়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ চন্দ্র পাল জানান, এ বছর কাপাসিয়া উপজেলায় ৭১টি মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ এবং প্রশাসনিক দিক দিয়ে নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন, থানা থেকে পুলিশ প্রত্যেকটি মণ্ডপ পরিদর্শন করেছে। উপজেলা পূজা কমিটির নেতারা মণ্ডপগুলো পরিদর্শন করেছে। মন্দিরে কোনো যাতায়াতের অসুবিধা আছে কি না বা তাদের সার্বিক কোনো অসুবিধা আছে কি না আমরা তা নিয়মিত খোঁজ-খবর নিচ্ছি। সমস্যা থাকলে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সমাধানের ব্যবস্থা করছি।
ইতোমধ্যে মন্দিরগুলোতে সাজসজ্জার কাজ শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ যেন থাকে সে ব্যাপারে প্রশাসনের সাথেও কথা হয়েছে। পাশাপাশি গাজীপুর জেলা থেকে ডিসি স্যার এবং এসপি স্যার কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। মন্দিরগুলো যেন রাতে আমরা পাহারা দেই, প্রত্যেকটি মন্দিরে যেন সিসি ক্যামেরা লাগানো হয় এবং কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে এগুলো বিষয়ে সকল মন্দিরে সতর্ক করা হয়েছে। সার্বিকভাবে আমরা আশা করছি অতীতের যেকোনো সময় থেকে এবারের পূজা হবে উৎসবমুখর, শান্তিপূর্ণ।
এছাড়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে কাপাসিয়ার গণমানুষের নেতা শাহ রিয়াজুল হান্নান, খন্দকার আজিজুর রহমান পেরাসহ নেতারা বিভিন্ন মণ্ডব পরিদর্শন করেছেন, পাশাপাশি অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা মন্দির পরিদর্শন করেছেন, খোঁজ-খবর নিচ্ছেন কোনো অসুবিধা আছে কি না। আশা করছি যেকোনো সময় থেকে এবার আমরা ভালো পূজা উদযাপন করব।
কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা বলেন, আপনারা জানেন হিন্দু সম্প্রদায় এবং মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে যে একটা ব্যবধান সৃষ্টি হয়েছিল, তা তৎকালীন সরকার হিন্দুদের একটা স্লোগানের মাধ্যমে তাদের কনভার্ট করার জন্য, তাদের ভোটব্যাংক বাড়ানোর জন্য, সমর্থন বাড়ানোর জন্য, এই ধরনের একটি উক্তি করা হয়েছিল। তারা বলেছিল বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তাদের পূজা করতে দেওয়া হয় না, শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকে না।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় গাজীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহ রিয়াজুল হান্নানের নেতৃত্বে কাপাসিয়া উপজেলা হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে উঠান বৈঠক করেছি, তাদের অভাব- অভিযোগ কী সম্পূর্ণ কিছু শুনে নেতা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, কোনোক্রমেই সনাতন ধর্মালম্বীদের বাক স্বাধীনতা হরণ করা হবে না।
কাপাসিয়া থানার তদন্ত ওসি রবিউল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে প্রত্যেকটি পূজা মণ্ডপ ভিজিট করেছি। পূঁজা মণ্ডপগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের তাগাদা দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ পূজা মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
এদিকে পূজা উপলক্ষে স্থানীয় বাজারে বেড়েছে কেনাকাটার চাপ। সাধারণ মানুষও ব্যস্ত শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে।
শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনের প্রস্তুতিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডা. তামান্না তাসনীম বলেন, এটা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ একটি উপজেলা। এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মাধ্যমে সবাই একত্রে বসবাস করছেন।
গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ‘ইসরাইলি গণহত্যা’ বন্ধে জরুরি ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বুধবার ভোরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি গাজায় চলমান সহিংসতার নিন্দা জানান। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক নীতির ভিত্তিতে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপের দাবিও জানান।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বকে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক নীতিতে সুরক্ষিত পথেই ইসরাইলি গণহত্যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
তারেক রহমান জানান, বিশ্ব শক্তিগুলোকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে অবিলম্বে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি তিনি অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করার আহ্বানও জানান।
তিনি দাবি করেন, গাজায় ইসরাইলের কর্মকাণ্ড ‘জাতিসংঘের গণহত্যা প্রতিরোধ ও শাস্তি বিষয়ক কনভেনশন (১৯৪৮)’-এর আইনি সংজ্ঞার সঙ্গে মিলে যায়। ওই আইনে আছে, একটি জাতি, নৃতাত্ত্বিক, বর্ণ বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ বা আংশিক ধ্বংস করার অভিপ্রায়কে গণহত্যা বলে।
তিনি জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক কমিশন রিপোর্টের কথা উল্লেখ করেন। সেখানে বলা হয়েছে, গাজার মানবিক সংকট ও ব্যাপক প্রাণহানির সরাসরি দায় ইসরাইলি সরকারের ওপর বর্তায়।
তারেক রহমান বলেন, ‘প্রচারণার আড়ালে লুকানোর দিন শেষ। কোনো অজুহাত আর চলবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে, নৈতিকতা ও সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করতে হয়। পথ কঠিন হলেও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যখন ফিলিস্তিনিদের অস্তিত্বই হুমকির মুখে, তখন আমরা চুপ থাকতে পারি না।’
তারেক রহমান বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বাংলাদেশিদেরও ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াতে এবং নিজেদের জাতীয় নেতাদের ইসরাইলের এই ‘নৃশংস ধ্বংসযজ্ঞ’-এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে চাপ দেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রগুলোর হাতে পরিবর্তন আনার ক্ষমতা আছে। সবসময়ই থাকে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখনই বিশ্বনেতৃত্বের দায়িত্ব আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রয়োজন।’
ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের প্রতি প্রকাশ্য অবমূল্যায়ন এবং সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে গঠিত অসম কমিটির প্রত্যাখ্যান ও ডিগ্রি প্রকৌশলীদের অযৌক্তিক তিন দফা দাবি রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রত্যাখ্যানের দাবিতে নওগাঁয় বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার দুপুর ১২টায় শহরের মুক্তির মোড় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে নওওগাঁর সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট শিক্ষার্থীদের আয়োজনে এ কর্মসূচি অংশ শিক্ষার্থীরা।
নওগাঁ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে এতে নেতৃত্ব দেন আবু হুরায়রা হাসিব ,আশরাফুল হক, এস এম তাহিয়াতুল ইসলাম জিহাদ,আরাফাত জনি, আব্দুল বারী ,রিয়াউল রাহাদ এবং মোঃ রেদোওয়ান।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা আমাদের দাবি আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। সরকারকে বলবো এই সমস্যার যৌক্তিক সমাধান করুন। তা নাহলে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। তখন এর দায় কিন্তু সরকারকে নিতে হবে। যে দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন সেগুলো হলো, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন থেকে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের প্রকাশ্যে গুলি করা ও জবাই করে হত্যার হুমকি প্রদানকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের অযৌক্তিক তিন দফা দাবির পক্ষে পরিচালিত সকল কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশের উত্থাপিত যৌক্তিক ছয় দফা দাবির রূপরেখা ও সুপারিশ অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে। ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ান-চ্যানেল এডুকেশন চালু করতে হবে।
দাবিগুলো দ্রুত সরকার মেনে না নিলে আগামীতে আরও কঠোর আন্দোলনের হুশিযারি দেয় শিক্ষার্থীরা।