বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

গাজীপুরে কেন হারল নৌকা

বৃহস্পতিবার গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একটি কেন্দ্রে ভোটারদের ভিড়। ছবি: ফোকাস বাংলা
আপডেটেড
২৬ মে, ২০২৩ ২২:১৫
ইফতেখার রায়হান, গাজীপুর
প্রকাশিত
ইফতেখার রায়হান, গাজীপুর
প্রকাশিত : ২৬ মে, ২০২৩ ২২:০৮

নানা হিসেব-নিকেশ ও জল্পনা-কল্পনার পর গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জিতে বিজয়ের হাসি হেসেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। এই পদে হেভিওয়েট প্রার্থী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে পরাজিত করে নগর ভবনের চাবি পেলেন তিনি। ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ব্যক্তি ইমেজ ও সাধারণ মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থনের কারণেই জায়েদার বিজয় সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন তার অনুসারীরা।

বিপরীতে আলোচনা চলছে নৌকার প্রার্থীর পরাজয় নিয়ে। নানা বিচার-বিশ্লেষণ আর আলাপ-আলোচনার মধ্যে মোটাদাগে উঠে আসছে আওয়ামী লীগের অন্তঃকোন্দল, দলীয় বিভাজন, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী মনোভাবের পাশাপাশি বিএনপি সমর্থক ভোটারদের বড় ভূমিকার কথা। শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষ, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলাপে উঠে এসেছে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লার পরাজয়ের নেপথ্যের নানা কারণ।

অন্তঃকোন্দল ও বিভাজন
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মতে, গাজীপুর মহানগরে আওয়ামী লীগের দলীয় বিভাজন শুরু হয়েছে এক যুগ আগে। দীর্ঘদিনেও এর রেশ টানা যায়নি। উল্টো এক পক্ষ অপরপক্ষকে ঘায়েল করতেই ব্যস্ত থাকতো অধিকাংশ সময়। এর রেশ পড়েছে এবার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে।

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় দল থেকে বহিষ্কার হন মেয়র পদে থাকা জাহাঙ্গীর আলম। এক পর্যায়ে তাকে মেয়র পদ থেকেও বরখাস্ত করা হয়। এসময় বিপুলসংখ্যক কর্মী-সমর্থক ছিলেন জাহাঙ্গীরের সঙ্গে। বহিষ্কারের পর জাহাঙ্গীরের সঙ্গে তাদের ওপরও খড়গ নেমে আসে। শোকজ করা হয় পদধারী দুই শতাধিক নেতাকে। পরে জাহাঙ্গীরের অনুসারী কারও আর স্থান হয়নি দলের কোথাও। দলের বহু ত্যাগী নেতা-কর্মীও রয়েছেন এমন তালিকায়। দলীয় কোন্দল আঘাত করে তৃণমূল পর্যন্ত।

এমন অবস্থায় নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের তৃণমূলের একটি অংশ জাহাঙ্গীরের পক্ষে চলে আসে। তারা ছদ্মবেশ ধারণ করে নৌকার ‘ব্যাজ’ পড়লেও গোপনে জাহাঙ্গীরের মা জায়েদা খাতুনের পক্ষে কাজ করেন। এমন অভিযোগে নির্বাচনের প্রচারণার সময়ও দলের তিনজন নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শোকজ করা হয়েছে আটজন নেতা-কর্মীকে। এছাড়া পুলিশ দিয়ে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে হয়রানি ও গ্রেপ্তার করার অভিযোগও পাওয়া যায়।

দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পরাজয়ের অন্যতম কারণ ছিল এই দলীয় কোন্দল ও বিভাজন।

নির্বাচন চলাকালে একটি ভোটকেন্দ্র পরির্দশন করেন আজমত উল্লা খান। ছবি: ফোকাস বাংলা

ব্যাজ নৌকার, ভোট ঘড়িতে
স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যবেক্ষকদের ভাষ্যে, নির্বাচনের দিন কেন্দ্রগুলোতে নৌকার কর্মীদের আধিক্য থাকলেও দিনশেষে সেখানে জয়ী হয় সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনের ঘড়ি প্রতীক। মূলত আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীই নৌকার লোক বেশে ভোট দেন জায়েদা খাতুনকে। ভোটের আগে অভিযোগ ওঠে, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের অনুসারীরা যেন ভোটকেন্দ্রে যেতে না পারেন, সেজন্য ভোটের এক সপ্তাহ আগে থেকেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার ও ঘরছাড়া করা হয় অনেককে। তবে ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে আসার জন্য জায়েদা খাতুনের ভোটার ও কর্মী সমর্থকরা কৌশল হিসেবে গলায় নৌকার ব্যাজ ও হাতে নৌকার ভোটার স্লিপ নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। আর এই কৌশলের কাছে হেরে যান আজমত উল্লা খান।

অতি আত্মবিশ্বাস
জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষের কতিপয় আওয়ামী লীগ নেতার মতে, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে পড়েন। তারা নিশ্চিত ছিলেন চাপের মুখে জাহাঙ্গীর নির্বাচনী মাঠ ছেড়ে যাবেন, তবে শেষ পর্যন্ত নানা চাপ থাকা সত্ত্বেও মাঠ ছাড়েননি জাহাঙ্গীর। এছাড়া ভোটারদের ওপরও নৌকার বাইরে ভোট না দিতে হুমকির অভিযোগ পাওয়া যায়। এতে সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। দলীয় মনোনয়নন পেলেই জয় নিশ্চিত—এমন ধারণায় আত্মতুষ্টিতে ভুগতে থাকেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা। যার প্রভাব পড়ে ব্যালট বাক্সে।

প্রচারণায় পরিকল্পনার অভাব
নগরের বাসিন্দাদের মতে, আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লা খানের নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো পরিকল্পনার ছাপ ছিল না। মহানগরের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের কাজে না লাগিয়ে কেন্দ্র ও বিভিন্ন জেলা-উপজেলার নেতা-কর্মীদের নিয়ে আসা হয় নির্বাচনী প্রচারণার কাজে। বিচ্ছিন্নভাবে তারা প্রচার-প্রচারণা চালান। রাস্তা-ঘাটে দায়সারা প্রচারণা চালালেও ভোটারদের ঘরে পৌঁছায়নি নৌকার বার্তা। এতে স্থানীয় ভোটারদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। ৫৭টি ওয়ার্ডে দলের একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী থাকায় তারা নিজেদের প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। অনেকেই বিএনপির ভোট পেতে নৌকার পক্ষে সরাসরি ভোট চাওয়া থেকে বিরত ছিলেন। এসব কর্মকাণ্ডও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয়ের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কয়েকজন পর্যবেক্ষক বলছিলেন, একাই নানা পথসভায় বক্তব্য দিয়ে গেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খান। তিনি জাহাঙ্গীর আলমের দুর্নীতি, নগর ভবনের দুর্নীতি নিয়ে একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। এ নগরে সরকারের নেয়া নানা উন্নয়ন প্রকল্প তিনি ভোটারদের সামনে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন। নগরীর উন্নয়ন নিয়ে তার ভাবনায় ছিল না কোনো পরিকল্পনার ছাপ, শুধু বিরোধী দল ও মতের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়েছেন। তার একই ধরনের বক্তব্যে নাখোশ ছিলেন নগরীর অনেক মানুষ। প্রচারণায় ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহারেও তিনি পিছিয়ে ছিলেন। তরুণ প্রজন্ম ও নারীদের আকৃষ্ট করতেও কোনো ভূমিকা নিতে পারেননি আজমত উল্লা খান।

আবেগী ভোট জায়েদার পক্ষে
নারী প্রার্থী জায়েদা খাতুন প্রচারণায় নেমে আজমত উল্লা খানের এলাকা টঙ্গীতে প্রবেশে বারবার বাধার শিকার হয়েছেন। তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে, কর্মীদের রক্তাক্ত করা হয়েছে। এভাবে প্রচারণায় বাধা ভোটারদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করে। নন্দিত বাংলা সিনেমা ‘আম্মাজান’র শিরোনাম গান চালিয়ে বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালান জাহাঙ্গীর আলম ও তার মা জায়েদা খাতুন। অনেকেই মনে করেন, এই গানে আবেগতাড়িত হয়েছেন অনেক ভোটার, বিশেষ করে নারীরা। তাই আবেগী ভোটাররা রায় দেন জায়েদা খাতুনের পক্ষে।

নারীদের ভোট জায়েদার ভোট বাক্সে
নগরের ভোটারদের মতে, সিটি করপোরেশনের মোট ভোটার প্রায় ১২ লাখ। এর অর্ধেক ভোটারই নারী। প্রথমবারের মতো এই সিটিতে একজন বয়স্ক নারী মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ায় এবং ছেলের জন্য মায়ের সংগ্রামে আকৃষ্ট হন নারী ভোটাররা। বিভিন্ন স্থানে প্রচারণায় গিয়ে নারী ভোটারদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হন জায়েদা খাতুন। এছাড়া নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় নারী ভোটারদের আকৃষ্ট করতে তেমন কোনো ব্যতিক্রম কার্যক্রম চোখে পড়েনি। ফলে অধিকাংশ নারী ভোটার রায় দিয়েছেন জায়েদা খাতুনের পক্ষে।

গাজীপুর সিটির নতুন মেয়র জায়েদা খাতুন ও তার ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: দৈনিক বাংলা

আওয়ামীবিরোধী ও বিএনপির ভোট
দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট এবার গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী দেয়নি। দলীয় সরকারের ওপর অনাস্থা জানিয়ে তারা ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়। যদিও বিএনপি ঘরানার স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনূর ইসলাম রনি নির্বাচনে অংশ নেন, তবে বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাকে মেনে নেয়নি। ভোটের আগে রনির চাচা গত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার ভোটারদের ভোট বর্জনের ডাক দিয়ে খোলা চিঠি দেন।

পর্যবেক্ষকদের মতে, বিএনপির সমর্থকরা ভোট কেন্দ্রে গিয়েছেন। বিভিন্ন ওয়ার্ডেও কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের ভোট বাড়াতে কেন্দ্র পর্যন্ত নিয়েছেন এসব ভোটারকে। বিভিন্ন সময় বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা পাওয়ায় ওই দলের সমর্থক ভোটাররাও রায় দিয়েছেন নৌকার বিপক্ষে, জায়েদার ব্যালটে।

এছাড়া আওয়ামী লীগবিরোধী বিচ্ছিন্ন ভোটও পড়েছে নৌকার বিপক্ষে।

কেন্দ্র কমিটি নিয়ে তৃণমূলের অসন্তোষ
নির্বাচনে পরাজয়ের পেছনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্র কমিটি নিয়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের অসন্তোষ বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন দায়িত্বশীল অনেকে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ও কেন্দ্রগুলোর কমিটিতে যাদের রাখা হয়েছে তাদের অধিকাংশই গত ২০১৮ সালের নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলমের নির্বাচনী কেন্দ্র কমিটিতে ছিলেন। এ নিয়ে কমিটি গঠনের পরই অনেক নেতা-কর্মী অভিযোগ করেন। অনেকেই অভিযোগ করেন, তৃণমূলের পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের কেন্দ্র কমিটিতে রাখা হয়নি। এছাড়া কেন্দ্র কমিটির জন্য বরাদ্দ খরচের টাকারও সুষম বণ্টন হয়নি। লিফলেট, ব্যানার, পোস্টার এনে না টানিয়ে ফেলে রাখারও প্রমাণ পাওয়া যায়। পরিশ্রমী তরুণদেরও মূল্যায়ন করা হয়নি। কমিটির আহ্বায়ক-যুগ্ম আহ্বায়করা অন্য সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করেননি। এসব বিষয়ে গত ১৯ মে দৈনিক বাংলায় ‘আওয়ামী লীগের কেন্দ্র কমিটি নিয়ে তৃণমূলে অসন্তোষ’ শিরোনামে সংবাদও প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদের পর কেন্দ্র কমিটি নিয়ে অসন্তোষ কাটাতে তোড়জোড় চলে। তবু হার এড়াতে পারেননি আজমত উল্লা খান।

যা বলছেন প্রার্থী ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক
গাজীপুর সিটিতে পরাজয়ের বিষয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘দলের অনেকেই প্রকাশ্যে নৌকার পক্ষে কাজ করেছে, গোপনে অবস্থান নিয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে। এছাড়া বিরোধী দলের ভোটও গিয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীর বাক্সে। নানা কারণে এখানে আমাদের পরাজয় হয়েছে। তবে পরাজয়ের পেছনে মূল কারণ কী, তা আমরা তদন্ত করে বের করবো।’

শুক্রবার সকালে টঙ্গীর নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খান বলেন, ‘আমি যেহেতু দলীয় প্রার্থী ছিলাম, দলের সবাই বসে পর্যালোচনা করে নির্বাচনে পরাজয়ের কারণ খুঁজে বের করা হবে। দলীয় নেতা-কর্মীরা আমার সঙ্গে গাদ্দারি করেছেন। নিশ্চয়ই দল এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।’


বরিশালে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষেধাজ্ঞার দাবিতে বিক্ষোভ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বরিশাল অফিস

বরিশাল নগরীর নির্দিষ্ট সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন প্যাডেল রিকশা চালকরা। বুধবার দুপুরে দিকে নগরীর অশ্বিনী কুমার টাউন হলের সামনে জড়ো হয়ে তারা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। পরে রিকশা নিয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্যাডেল রিকশা বরিশাল নগরীর ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ। কিন্তু ব্যাটারিচালিত রিকশার অনিয়ন্ত্রিত গতি ও দৌরাত্ম্যের কারণে সদর রোডসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে প্যাডেল রিকশা চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। দ্রুতগতির এসব রিকশার কারণে দুর্ঘটনার সংখ্যাও বাড়ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

চালকরা জানান, বরিশাল নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এতে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে এবং নিয়মিত দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। নগরীর সদর রোডসহ আটটি সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও তা বাস্তবে মানা হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের কাছে একাধিকবার লিখিত আবেদন করেও কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন রিকশা শ্রমিকরা।

তারা আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দাবির বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত না হলে আগামীতে আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এ সময় চালকরা সদর রোড, জিলা স্কুল মোড়, লাইন রোড, গির্জা মহল্লা ও কাটপট্টি রোডে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। সমাবেশে বক্তব্য দেন মো. চান মিয়া, দুলাল, আলমগীর হোসেন, শাজাহান মিয়া প্রমুখ।


৫ ডিসেম্বর সারাদেশে মশাল মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবেশ মুখে অবরোধ থেকে আগামী ৫ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয়ভাবে সারাদেশে মশাল মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। চট্টগ্রাম নগরীর পুরাতন রেলস্টেশন চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করা হবে। বুধবার দুপুরে নগরীর বড়পোল এলাকায় অবরোধ কর্মসূচির সমাবেশ থেকে এ কর্মসূচির বিষয়টি জানান স্কপ নেতারা।

এর আগে, বুধবার সকাল ১০টা থেকে নগরীর বড়পোল ও ইছহাক ডিপো সংলগ্ন বন্দরের টোলপ্লাজার সামনে বন্দরমুখী সড়কে অবস্থান নেন স্কপভুক্ত শ্রমিক সংগঠন, বাম গণতান্ত্রিক জোট ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা। সেখানে অবরোধের সমর্থনে মিছিল-সমাবেশ করা হয়েছে। এছাড়া নগরীর সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায় সীম্যান্স হোস্টেলের সামনে পরিবহণ শ্রমিকরা মিছিল করেন।

টোল প্লাজা পয়েন্টে অবরোধ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন স্কপ নেতা তপন দত্ত, কাজী শেখ নরুল্লাহ বাহার, তসলিম হোসেন সেলম ও ইব্রাহীম খোকন। আর বড়পোল পয়েন্টে নেতৃত্ব দেন এস কে খোদা তোতন, খোরশেদুল আলম, মছিউদ দৌলা, কাজী আনোয়ারুল হক হুনি, রিজওয়ানুর রহমান খান, ফজলুল কবির মিন্টু, নুরুল আবসার তৌহিদ, জাহিদ উদ্দিন শাহিন, আব্দুল বাতেন, শফি উদ্দিন কবির আবিদ, আবু বক্কর সিদ্দিকী, হাসিবুর রহমান বিপ্লব, মো. সোহাগ।

বড়পোলের সমাবেশে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে স্কপ নেতা তপন দত্ত বলেন, ‘বন্দরকে ইজারা দেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন হবে এবং শ্রমিকদের জীবিকার ওপর সরাসরি আঘাত আসবে। তাই দেশ বাঁচাতে এবং শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষার জন্য এই আন্দোলন শুরু হয়েছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। দেশ রক্ষা এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় স্কপ সর্বদা ঐক্যবদ্ধ থাকবে।

কাজী নুরুল্লাহ বাহার বলেন, ‘বন্দর ইজারা মানে দেশের অর্থনীতিকে বিদেশি স্বার্থের হাতে তুলে দেওয়া। আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই এই সিদ্ধান্ত জনগণ মেনে নেবে না। শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ জনগণের স্বার্থে রাস্তায় নেমেছে, প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেবে।

বড়পোলের সমাবেশে উপস্থিত হয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতাকর্মী অবরোধ কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানান। সেখানে সমাবেশে বক্তব্য দেন- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহআলম, সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অশোক সাহা প্রমুখ।


বাউল আবুল সরকারের বাড়িতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

বাউল সম্রাট মহারাজ আবুল সরকারকে কেন্দ্র করে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া, ঘিওর ও আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। তওহীদি জনতা ও আলেম সমাজ যেখানে তার ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন করছে, অন্যদিকে বাউল শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো তার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থান উদ্বেগ বাড়িয়েছে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ প্রশাসন আবুল সরকারের সাটুরিয়ার চরতিল্লি গ্রামের বাড়ির নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে। এপিবিএন ও স্থানীয় পুলিশ টহল জোরদার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

৪ অক্টোবর ঘিওর উপজেলার জাবরা এলাকায় খালা পাগলীর ওরস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক গানের আসরে আবুল সরকার পালা গানের অংশ হিসেবে আল্লাহকে নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা ছড়িয়ে দিলে বিষয়টি ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করে। তওহীদি জনতা অভিযোগ করে তিনি ধর্ম অবমাননা করেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে মানববন্ধন, পরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে তারা ফাঁসির দাবি তোলে। এরপর মুফতি মো. আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে ঘিওর থানায় মামলা করলে ১৯ অক্টোবর গভীর রাতে মাদারীপুরের এক গান অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে ২৩ অক্টোবর মানিকগঞ্জ শহরে আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে বাউলদের কর্মসূচিতে তওহীদি জনতা ও বাউলদের মধ্যে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া হয়। এ ঘটনায় তওহীদি জনতার পক্ষের মামলা নিলেও বাউল শিল্পীদের মামলা প্রথমে গ্রহণ না করায় পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠে। পরে সমালোচনার মুখে পুলিশ মামলা নেয়। আবুল সরকারের ভক্ত আব্দুল আলীম অজ্ঞাত ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

এদিকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া বাউল শিল্পী আবুল সরকারের মেয়ে ইনিমা রোশনি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছে। তিনি তার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া স্ট্যাটাসে লিখেছেন, আমি ও আমার পরিবার এখন কঠিন সময় পার করছি। যারা এই দুঃসমকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছেন তাদের কাছে কিছুই বলার নেই। শুধু চাই কারও জীবনে যেন এরকম দুঃসময় না আসে।

চরতিল্লি গ্রামে গিয়ে দেখা যায় স্থানীয়দের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ এটিকে পালা গানের স্বাভাবিক যুক্তিতর্ক হিসেবে দেখছেন, কেউ আবার পুরো ঘটনাকে চক্রান্ত বলে দাবি করছেন।

বাড়ির নিরাপত্তায় দায়িত্বে থাকা এসআই সুব্রত কুমার বিশ্বাস জানান, গত সোমবার রাত থেকে এপিবিএনের ১৬ জন সদস্য বাড়ির নিরাপত্তা দিচ্ছেন। পাশাপাশি সাটুরিয়া থানা পুলিশও সর্তক অবস্থায় টহল দিচ্ছে।


রাঙামাটিতে ৩ দিনব্যাপী ডিজিটাল মিডিয়াবিষয়ক প্রশিক্ষণ শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিজয় ধর, রাঙামাটি

সাংবাদিকদের সংবাদ তৈরির প্রচলিত কর্মকৌশলে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিসহ বহুমুখী প্লাটফর্মের জন্য সংবাদ তৈরিতে পারদর্শী করার লক্ষ্যে রাঙামাটিতে শুরু হয়েছে ৩ দিনব্যাপী ডিজিটাল মিডিয়াবিষয়ক প্রশিক্ষণ। বুধবার সকালে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের আয়োজনে রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাকক্ষে এই প্রশিক্ষণ শুরু হয়।

অনুষ্ঠানে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের প্রশিক্ষক জিলহাজ উদ্দিন নিপুন, রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি আনোয়ার আল হক, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস, সিনিয়র সহসভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেলসহ প্রেসক্লাবের বিভিন্ন সদস্য এবং জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রশিক্ষণে সাংবাদিকদের মোবাইল সেটিংস, ক্যামেরা সেটিংস এবং ভিডিও ধারণের নিয়মাবলী, মোবাইল শুটিং, মোবাইল সাংবাদিকতা, ডিজিটাল সাংবাদিকতা ও এআইয়ের ব্যাবহার, ফ্যাক্ট চেকিংসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবে প্রশিক্ষকেরা। আর এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সাংবাদিকদের মাল্টিটাস্কার দক্ষ পেশাশক্তিতে রুপান্তর করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ।

প্রথম দিনে প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন, বাংলা নিউজ ২৪ ডট কমের চিফ মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার মো. মিনহাজুল আবেদীন। তিনি ডিজিটাল মিডিয়াবিষয়ক বিভিন্ন কলাকৌশল উপস্থাপন করেন এবং সাংবাদিকদের যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সাথে আপডেট থাকার আহ্বান জানান। কাল শুক্রবার বিকালে প্রশিক্ষণের মূল্যায়ন শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের সনদপত্র দেওয়া হবে।


বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বরগুনা প্রতিনিধি

বরগুনার আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের কুতুবপুর মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা জানান, কুকুয়াহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন ও তার ভাই আমিনুল ইসলাম বাঁধের প্রায় ৫০টির বেশি গাছ বিক্রি করেছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বাঁধা দিলেও তারা তা উপেক্ষা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৫ সালে কুকুয়া গ্রামের পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করে। বাঁধের রিভার ও কান্ট্রি সাইটে বোর্ডের প্রায় ২০০ ফুট জমি রয়েছে। ২০০০ সালে ওই জমিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড মেহগনি, চাম্বল ও শিশুসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করে।

সম্প্রতি সহকারী শিক্ষক জসিম উদ্দিন ও তার ভাই আমিনুল ইসলাম ওই গাছগুলো ৮৫ হাজার টাকায় স্থানীয় গাছ ব্যবসায়ী বেল্লাল মিয়ার কাছে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৩ দিন ধরে বেল্লাল মিয়া বাঁধের গাছ কেটে নিচ্ছেন। বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাটা গাছ স্তুপ আকারে রাখা হয়েছে এবং বেল্লাল মিয়া সেগুলো ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছেন।

গাছ ব্যবসায়ী বেল্লাল মিয়া বলেন, জসিম মাস্টার ও তার ভাই আমার কাছে ৮৫ হাজার টাকায় গাছ বিক্রি করেছেন। গাছগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের কি না, তা আমি জানি না।

অভিযুক্ত শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আমার রেকর্ডীয় জমিতে রোপণকৃত গাছ আমি বিক্রি করেছি। এখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন গাছ নেই।

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যসহকারী মো. আলমগীর হোসেন বলেন, বোর্ডের জমির গাছ দুই ভাই বিক্রি করেছেন। আমরা বাঁধা দিলেও তারা শোনেননি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আজিজুর রহমান সুজন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে রোপিত গাছ কাটা হয়েছে।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হান্নান প্রধান বলেন, বাঁধের গাছ কেটে নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


রাঙামাটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ১

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিজয় ধর, রাঙামাটি

চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের বেতবুনিয়া চেয়ারম্যান ঘাটা এলাকায় কাভারভ্যান-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত ও অপর একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। বুধবার দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। কাউখালীর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. ইসহাক এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

নিহত সিএনজি ড্রাইভার নাম হাসান মিয়া (২২), বাবার নাম মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। তার গ্রামের বাড়ি বরিশাল লালমোহন। সে রাঙামাটি থেকে কাঁচামাল নিয়ে চট্টগ্রাম যাচ্ছিল। আহত সিএনজি যাত্রীর নাম গিয়াস উদ্দিন। বাবার নাম আব্দুল কাদের। তার গ্রামের বাড়ি কৃষ্ণপুর, চকরিয়া, কক্সবাজার।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা এসিআই গ্রুপের মালিকানাধীন ওষুধ বহনকারী কাভারভ্যান (ঢাকা মেট্রো-ম)- ১৪- ১৩৭০ দ্রুতগতিতে বেতবুনিয়া চেয়ারম্যান ঘাটা অতিক্রম করছিলে। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা চট্টগ্রাম-থ- ১২-৮৩৬৭ সিএনজির সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

মুহূর্তেই সিএনজি অটোরিকশা দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ সময় সিএনজিতে থাকা চালক হাসান (২২) ও যাত্রী গিয়াস উদ্দিন গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা আশংঙ্কাজনক অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে রাউজান হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক চালক হাসানকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত গিয়াস উদ্দিন বর্তমানে রাউজান জে কে মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি আছেন। দুর্ঘটনা কবলিত কাভার ভ্যানটি আটক করেছে পুলিশ। তবে কাভার্টভ্যানের ড্রাইভার চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর। তার নাম শিব বড়ুয়া। দুর্ঘটনার পর ড্রাইবার পালিয়ে গেছে। বেতবুনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির এস আই মো. ইসহাক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন এ ব্যাপারে থানায় মামলার পক্রিয়া চলছে।


কালিগঞ্জ থেকে ভেটখালী পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্ত করার দাবিতে মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে কালিগঞ্জ থেকে ভেটখালী পর্যন্ত রাস্তা ২৪ ফুট থেকে ৩৪ ফুট পর্যন্ত প্রশস্ত করার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলা প্রেসক্লাবের সামনে শ্যামনগরের সর্বস্তরের জনগণ এ কর্মসূচি পালন করে। এতে বক্তব্য রাখেন খাঁন আব্দুস সালাম, পল্লী চিকিৎসক গ.ম আব্দুস সালাম, প্রভাষক মাহবুব আলম, প্রভাষক মনিরুজ্জামান বিপ্লব, মো. মনিরুল ইসলাম, ঠিকাদার মো. জাবের হোসেন, পল্লী চিকিৎসক মো. ফারুক হোসেন, শেখ জাকির হোসেন প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সওজ ও জনপদ বিভাগ রাস্তার দুপাশের সকল অবৈধ স্থপনা উচ্ছেদ করেছে তাহলে এই জন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি কেনো ৩৪ ফুটের পরিবর্তে ২৪ করা ফুট হবে? এই বৈষম্য আমরা মানতে পারি না। তাদের দাবি না মানলে সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারী দেন বক্তারা। এ সময় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতারা, বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠনের নেতারা, সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।


অপরাধীদের সংশোধনে প্রবেশন বিধান একটি কার্যকর ব্যবস্থা: চট্টগ্রাম সিএমএম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

সিএমএম কোর্ট চট্টগ্রামের উদ্যোগে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সম্মেলন কক্ষে প্রবেশন অধ্যাদেশ ১৯৬০-এর এক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রবেশন কার্যালয়ে প্রশিক্ষণে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চট্টগ্রাম কাজী মিজানুর রহমান প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। জেলা সমাজসেবা কার্যালয়, চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো. ফরিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল, মো. আবু বকর সিদ্দিক, মোহাম্মদ মোস্তফা ও নুসরাত জাহান জিনিয়া।

সিএমএম কোর্টের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট নাছিমুল আবেদীন চৌধুরী, সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আয়েশা আক্তার সানজি, সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. খুরশেদুল আলম, সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শাহেদুল হক শাহেদসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় কর্মরত উপজেলা সমাজসেবা অফিসাররা প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণের শুরুতে সঞ্চালক প্রবেশন অফিসার, সিএমএম কোর্ট মনজুর মোরশেদ চট্টগ্রাম মহানগর অধিক্ষেত্রে আদালতসমূহে গত দুই বছরে প্রবেশন মামলার সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয় তুলে ধরেন।

তিনি জানান প্রবেশন অফিসে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মোট ২টি প্রবেশন মামলা থাকলেও বর্তমানে প্রবেশন মামলার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১৭টিতে। এ জন্য তিনি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মিজানুর রহমান ও অন্যান্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চট্টগ্রাম কাজী মিজানুর রহমান প্রবেশন অধ্যাদেশ ১৯৬০-এর গুরুত্বপূর্ণ আইনি দিক এবং তার বাস্তব প্রয়োগসমূহ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আগে আদালতসমূহ প্রবেশন আদেশ কম দিলেও সুপ্রিম কোর্টের ২০১৯ সালের একটি সার্কুলার ও সুপ্রিম কোর্টে মতি মাতবর বনাম রাষ্ট্র মামলার রায়ের পর সারাদেশে প্রবেশন মামলার সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি তার বিচারিক জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বাংলাদেশে প্রবেশন অধ্যাদেশের প্রয়োগ আলোচনা করেন। চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চট্টগ্রাম কাজী মিজানুর রহমান প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে বলেন, প্রবেশন অফিসসমূহে বাজেট ও জনবল সংকট থাকা সত্ত্বেও বিচারক ও প্রবেশন অফিসারদের প্রচেষ্টায় চট্টগ্রামসহ সারাদেশে প্রবেশন মামলার সংখ্যা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রধান প্রশিক্ষকের বক্তব্যে কাজী মিজানুর রহমান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রবেশন কার্যক্রমের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশে প্রবেশন কার্যক্রম আরও কীভাবে বেগবান করা যায় সে সম্পর্কিত সুপারিশমালা তুলে ধরেন।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়, চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো. ফরিদুল আলম চট্টগ্রামে প্রবেশন কার্যক্রম বেগবান ও দৃশ্যমান করার জন্য চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চট্টগ্রাম কাজী মিজানুর রহমানকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি জানান, চট্টগ্রামের প্রবেশন কার্যক্রম স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদ মাধ্যমেও বর্তমানে আলোচিত হচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রবেশন ব্যবস্থায় আরও গতিশীলতা আসবে মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।


দৌলতপুরে তুলা চাষে কৃষকের সাফল্য

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আতিয়ার রহমান, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া)

সাম্প্রতিককালে হাইব্রিড ও উচ্চফলনশীল জাতের তুলাচাষ প্রবর্তনের ফলে তুলার ফলন বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে তুলার বাজার মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষিদের তুলা এখন একটি লাভজনক ফসল হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। তুলা উন্নয়ন বোর্ড অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে চাষিদের সঙ্গে নিয়ে তুলা উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এবং দিন দিন এর সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হতে চলেছে। বাংলাদেশে বর্তমানে যে সকল অর্থকরী ফসল রয়েছে লাভের দিক দিয়ে তুলা অন্যতম।

দৌলতপুর উপজেলায় একসময় ব্যাপকভাবে হতো তামাকের চাষ। উপজেলার ১৪ ইউপির বিভিন্ন স্থানে তামাকের জায়গায় তুলার চাষ হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউপি-তে এখন তুলার সমারোহ। এতে আর্থিকভাবে লাভবানও হচ্ছেন চাষিরা।

তুলাচাষ বাড়াতে চাষিদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি উন্নত জাতের বীজ ন্যায্যমূল্যে সরবরাহ করে সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে। এবারে উপজেলার বিভিন্ন ইউপি-তে ব্যাপকভাবে বেড়েছে তুলার চাষ। হাইব্রিড জাতের রুপালি-১, হোয়াইট গোল্ড-১, হোয়াইট গোল্ড-২ তুলার বীজ উচ্চ ফলনশীল হওয়ায় বিঘা প্রতি ১৫-১৭ মন উৎপাদনের আশা দৌলতপুরের অনেক তুলা চাষিদের।

উপজেলার ধর্মদহ গ্রামের তুলাচাষি মোস্তাক আহমেদ বলেন, এ বছর অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে কয়েকবার তুলার বীজ বপন করতে হয়েছে। এরপরও সার ও কীটনাশকের দাম গত বছরের তুনায় এবার দ্বিগুন বেশি। প্রতিবিঘা জমিতে তুলা চাষ করতে প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।

আরেক চাষি নাহারুল ইসলাম বলেন, তুলার আবাদ একটি দীর্ঘমেয়াদি আবাদ। প্রায় ৭-৮ মাস লেগে যায় এই আবাদ শেষ করতে। প্রতিবিঘা জমিতে ১৫-১৭ মন তুলা হওয়ার সম্ভবনা আছে এ বছর। গত বছর প্রতিমন ৪ হাজার টাকা দরে বিক্রি করতে পেরেছি তবে এবার দাম বাড়ানোর দাবি জানান এই তুলাচাষি।

কুষ্টিয়া জেলার প্রধান তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ আল মামুন বলেন, কুষ্টিয়া অঞ্চলে তিনটা উপজেলায় তুলাচাষ হয়। দৌলতপুর, মিরপুর এবং ভেড়ামারা উপজেলায় তুলা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪৫০ হেক্টর জমি, ২৪৩৪ হেক্টর অর্জন করতে পেরেছি। ২০৫০ জন চাষিকে কৃষি প্রণোদনার আওতায় এনেছি। এর মধ্যে দৌলতপুরেই তুলাচাষির সংখ্যা জেলার সবচেয়ে বেশি। হাইব্রিড জাতের উচ্চ ফলনশীল তুলাচাষে আগ্রহী কৃষকরা ন্যায্য দামেও সন্তুষ্ট যার কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছরে বেড়েছে তুলা চাষির সংখ্যা।


নরসিংদীতে আমন ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নরসিংদী প্রতিনিধি

আবহাওয়া চাষের অনুকূলে থাকায় নরসিংদীতে এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রোপা আমনের ফলন হয়েছে। গুণগত মান বিবেচনায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা ব্যাপক আনন্দ-উৎসাহ নিয়ে আধুনিক যন্ত্র (কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন) ব্যবহার করে ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে ভালো খড় পেতে প্রায় ৮০-৮৫ ভাগ কৃষক হাতে ধান কেটে মাড়াই করছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, এবার ২০২৫-২৬ মৌসুমে সারাদেশে ৫৭ লাখ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৭৮ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমন চাষ হয়েছে। এর মধ্যে দিনাজপুর, সুনামগঞ্জ, চট্টগ্রাম, নেত্রকোনা অন্যতম।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গত কয়েক বছর ধরে দেশে ধারাবাহিকভাবে হেক্টর প্রতি আমনের গড় উৎপাদন বাড়ছে। গত ২০২৪- ২৫ মৌসুমে হেক্টর প্রতি আমনের গড় ফলন হয়েছে ২.৯৫ টন, যা আগের বছরের ২০২৩-২৪-এর গড় ২.৮১ টন থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া, ২০২২-২৩ অর্থবছরে হেক্টর প্রতি ২.৬৯ টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ২.৬১ টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ২.৫৫ টন উৎপাদন হয়েছে।

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার রাধানগর, লোচনপুর, মনোহরদীর চর বেলাবো এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সোনালি ধানের সমারোহ। অগ্রহায়ণের বাতাসে দুলছে পাকা ধানের শীষ, যা দেখে আনন্দে উচ্ছ্বসিত কৃষকরা। সরকারের বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্বুদ্ধকরণে এ বছর নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে রোপা আমন আবাদ হয়েছে।

নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছর অনুকূল আবহাওয়ার কারণে প্রতি হেক্টরে গড় উৎপাদন হয়েছে ৫ মেট্রিক টন। মাঠ পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, কৃষকরা কাস্তের পাশাপাশি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন ব্যবহার করে দ্রুত ধান কাটা ও মাড়াই করছেন। ইতোমধ্যে প্রায় ১৮-২০ শতাংশ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। মাঠজুড়ে পাকা ধানের আভা। স্বল্প সময়ে পুরো ফসল উঠবে কৃষকের ঘরে। এদিকে স্বল্প সময়ের ধান ঘরে তুলে অনেক কৃষক সরিষা চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যদিও আমনের ভালো ফলনে কৃষকরা খুশি, তবুও উৎপাদন খরচ উঠানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার কৃষক আমিনুল ইসলামসহ কথা হয় আরও কয়েকজনের সঙ্গে।

তারা জানান, এবার প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হওয়া এবং মাঝে মধ্যে আমন চাষ উপযোগী বৃষ্টি হওয়ায় সামগ্রিকভাবে ফলন ভালো হয়েছে। তবে ধান বিক্রি করে খরচ ওঠানো নিয়েই বেশি চিন্তিত কৃষকরা। আমিনুল ইসলাম জানান, তার এক বিঘা জমি থেকে প্রায় ২০-২১ মণ ধান ঘরে তুলেছেন।

রায়পুরা উপজেলার নয়াহাটি এলাকার কৃষক আব্দুল আজিজ জানান, ধানের পচন রোগ এবং ইঁদুর কিছুটা ভুগিয়েছে এবার আমন চাষিদের। এছাড়া সামগ্রিক বিবেচনায় ফলন ভালো হয়েছে। ধানের গুণগত মানও ভালো এবার।

নরসিংদী সদর উপজেলা শীলমান্দী গ্রামের কৃষক মতিউর রহমান জানান, তিনি এক একর জমিতে আমন ধান ফলিয়েছিলেন। জমিতে ফসলের উৎপাদন হওয়ার কথা ছিল ১৫ মণ। ধানও খুব ভালো হয়েছিল। কিন্তু ইঁদুর তার জমির ধান কেটে সর্বনাশ করে দিয়েছে। এখন তিনি ১০-১২ মণ পাবেন কি না, সন্দেহ রয়েছে।

পলাশ উপজেলার পারুলিয়া গ্রামের কৃষক বাচ্চু মিয়া জানান, তিনি প্রায় দুই একর জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। ধান খুবই ভালো হয়েছে। সময়মতো তুলতে পারলে তিনি লাভবান হবেন।

শিবপুর উপজেলার কৃষক তোফাজ্জল আহমেদ জানান, তার প্রায় সাত একর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমন ধান চাষ হয়েছে। প্রতি একর জমিতে ৪০ থেকে ৫২ মণ ফলনের আশা করছেন তিনি।

এ বিষয়ে নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) সালাউদ্দিন টিপু জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়া এবং সরকারের সার্বিক সহায়তায় এ বছর ধানের ভালো ফলন সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘প্রতি বছরই কৃষকরা ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ার অভিযোগ করেন, তাই ধান ভালোভাবে শুকিয়ে নিরাপদে সংরক্ষণ করে পরে দাম বাড়লে বিক্রির পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, এ বছর নরসিংদী জেলায় রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪০ হাজার ৯৪১ মেট্রিক টন। বাস্তবে উৎপাদন হয়েছে ৪০ হাজার ৮৮৩ মেট্রিক টন ধান।


সর্বোচ্চ শাস্তি দুই বছরের কারাদণ্ড

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দিনে ও রাতে এলাকাভিত্তিক শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়ে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা জারি করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে।

২০০৬ সালের বিধিমালা বাদ দিয়ে এবার নতুন করে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা জারি করল সরকার। এ বিধি লঙ্ঘনে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের সঙ্গে জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

বিধিমালায় বলা হয়েছে, ভোর ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সময় ‘দিবাকালীন’ সময় হিসেবে চিহ্নিত হবে। রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত বিবেচিত হবে ‘রাত্রিকালীন সময়’ হিসেবে। কোন সময়ে কত মাত্রার শব্দকে মান ধরা হবে, বিধিমালায় তা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

>> নীরব এলাকা: দিনে ৫০, রাতে ৪০ ডেসিবল

>> আবাসিক এলাকা: দিনে ৫৫, রাতে ৪৫ ডেসিবল

>> মিশ্র এলাকা: দিনে ৬০, রাতে ৫০ ডেসিবল

>> বাণিজ্যিক এলাকা: দিনে ৭০, রাতে ৬০ ডেসিবল

>> শিল্প এলাকা: দিনে ৭৫, রাতে ৭০ ডেসিবল

যানবাহনের হর্ন সংক্রান্ত বিধিনিষেধে বলা হয়েছে, নির্ধারিত মানমাত্রা অতিক্রমকারী হর্ন, হাইড্রোলিক হর্ন, মাল্টি টিউন হর্ন ও সহায়ক যন্ত্রাংশ প্রস্তুত, আমদানি, মজুদ, বিক্রয়, বিক্রির জন্য প্রদর্শন, বিতরণ, বাজারজাতকরণ, বাণিজ্যিক উদ্দেশে পরিবহন ও ব্যবহার করা যাবে না।

কোনো ব্যক্তি মোটরযান বা নৌযানে অননুমোদিত শব্দের মানমাত্রা অতিক্রমকারী হর্ন স্থাপন ও ব্যবহার করতে পারবে না।

নীরব এলাকায় যানবাহনে কোনো প্রকার হর্ন বাজানো যাবে না। আবাসিক এলাকায় রাত ৯টার পর থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত হর্ন বাজানো যাবে না।

নীরব এলাকায় দিনে ও রাতে এবং অন্যান্য এলাকায় রাতে পটকা, আতশবাজি ও অনুরূপ শব্দ সৃষ্টিকারী কোনো কিছুর বিস্ফোরণ ঘটানো যাবে না। তবে রাষ্ট্রীয়, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও উৎসবে অনুমতি নিয়ে সীমিত আকারে পটকা, আতশবাজি ব্যবহার করা যাবে।

বিধিমালায় বলা হয়েছে, সব ধরনের শিল্প কারখানাকে শব্দের মানমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

আবাসিক, বাণিজ্যিক, মিশ্র, শিল্প ও নীরব এলাকার সকল জেনারেটর ব্যবহারকারীকে জেনারেটর থেকে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলে বনভোজন নিষিদ্ধ। প্রাকৃতিক বনাঞ্চলে উচ্চ শব্দ উৎপন্ন হয় এমন শব্দের উৎস ব্যবহার করা যাবে না।

বনভোজন ও সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহৃত যানবাহনে উচ্চ শব্দ উৎপন্নকারী মাইক, লাউড স্পিকার, এমপ্লিফায়ার, সুরযন্ত্র (মিউজিক সিস্টেম) বা অন্য কোনো উচ্চ শব্দ উৎপন্নকারী যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে ন।

শাস্তি কী

বিধিমালায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত মানমাত্রা অতিক্রমকারী হর্ন, হাইড্রোলিক হর্ন, মাল্টি টিউন হর্ন ও সহায়ক যন্ত্রাংশ প্রস্তুত, আমদানি ও বাজারজাত করলে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড দেওয়া যাবে।

মোটরযান বা নৌযানে অননুমোদিত শব্দের মানমাত্রা অতিক্রমকারী হর্ন ব্যবহার করলে এবং নীরব এলাকায় যানবাহনের হর্ন বাজালে সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদণ্ড বা দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড হেতে পারে। চালকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসেবে ১ পয়েন্ট কাটা যাবে।

এছাড়া অন্যান্য বিধি ভঙ্গের জন্য সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

তবে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা বা অন্য কোনো ধর্মীয় উপাসনালয়ে; ঈদের জামাত, জানাজা, নাম-সংকীর্তন এবং শবযাত্রাসহ অন্যান্য আবশ্যিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে; সরকারি বা সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রচারকালে; প্রতিরক্ষা, পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের দাপ্তরিক কাজ সম্পাদনকালে; স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, বিজয় দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারি, পহেলা বৈশাখ, মহররম বা সরকার ঘোষিত অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে; আকাশযান ও রেলগাড়ি চলাচলের ক্ষেত্র এই বিধিমালা প্রযোজ্য হবে না।

ভোটের প্রচারেও মানতে হবে শব্দের বিধি

ভোটের প্রচারে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে বিধিমালায় বলা হয়েছে, সব নির্বাচনে নীরব এলাকায় নির্বাচনী প্রচারে মাইক, লাউড স্পিকার, পাবলিক অ্যাড্রেসিং সিস্টেম বা অন্য কোনো উচ্চ শব্দ উৎপন্নকারী যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।

নীরব এলাকা ছাড়া অন্যান্য এলাকায় নির্বাচনী প্রচারাভিযানে নির্বাচন কমিশনের আচরণ বিধিমালা মেনে চলতে হবে। তবে শব্দের মানমাত্রা অতিক্রম করা যাবে না।

এদিকে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালায় মাইক ও লাউড স্পিকার ব্যবহারের বিষয়ে বলা হয়েছে- কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো ব্যক্তি কোনো নির্বাচনী এলাকায় একইসঙ্গে ৩টির বেশি মাইক্রোফোন বা লাউড স্পিকার ব্যবহার করতে পারবেন না।

>> দল, প্রার্থী বা তার পক্ষে প্রচারের সময় কোনো নির্বাচনী এলাকায় মাইক বা শব্দের মাত্রা বর্ধনকারী অন্য যন্ত্রের ব্যবহার দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখবেন।

>> নির্বাচনী প্রচার কাজে ব্যবহৃত মাইক বা শব্দ বর্ধনকারী যন্ত্রের শব্দের মানমাত্রা ৬০ ডেসিবেলের বেশি হতে পারবে না।

>> কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের তিন সপ্তাহের আগে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে পারবেন না এবং ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার ৪৮ (আটচল্লিশ) ঘণ্টা আগে নির্বাচনি প্রচার শেষ করতে হবে।

এ আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের দণ্ড ও দেড় লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। সর্বোচ্চ প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে ইসির।


কর্ণফুলী টানেলের মেইনটেন্যান্স কাজের জন্য ট্রাফিক ডাইভারসন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাধীন কর্ণফুলী টানেলের রুটিন রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য ২৫ নভেম্বর হতে ৩০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ দিবাগত রাত ১১:০০টা হতে ভোর ০৫:০০টা পর্যন্ত প্রয়োজন অনুযায়ী 'পতেঙ্গা হতে আনোয়ারা' অথবা 'আনোয়ারা টু পতেঙ্গা' টিউবের ট্রাফিক ডাইভারসনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিতভাবে যানচলাচল অব্যাহত রাখা হবে। এসময় বিদ্যমান ট্রাফিকের পরিমাণ অনুযায়ী সর্বনিম্ন ০৫ (পাঁচ) হতে সর্বোচ্চ ১০ (দশ) মিনিট টানেলের উভয়মুখে সম্মানিত যাত্রীদের অপেক্ষমাণ থাকার প্রয়োজন হতে পারে। কর্ণফুলী টানেলের নিরাপদ ও কার্যকর রুটিন রক্ষণাবেক্ষণ কাজে আপনার আন্তরিক সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ।


‘‘অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদে তিতাস গ্যাস কর্তৃক অভিযান, জরিমানা আদায়’’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ২৫ নভেম্বর (মঙ্গলবার) ২০২৫ তারিখে জনাব সুমি রানী দাস,সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, গাজীপুর -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ- চন্দ্রা, জোনাল বিক্রয় অফিস-চন্দ্রা আওতাধীন বারেন্ডা, মোল্লা মার্কেট,কাশিমপুর, গাজিপুর মহানগর, গাজীপুর এলাকার ৩টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, ২৫ টি বাড়ির ১৫০ ডাবল চুলার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ ৩/৪ ইঞ্চি ব্যাসের ৫০ ফুট জি আই পাইপ, ৩/৪ ইঞ্চি ব্যাসের ২০০ ফুট প্লাস্টিক কয়েল পাইপ, ৩/৪ ইঞ্চি ব্যাসের ৩০ ফুট প্লাষ্টিক থ্রেড পাইপ ও সম্পুর্ন অবৈধ ৬ টি রেগুলেটর জব্দ/অপসারণ করা হয়েছে। উক্ত অভিযানে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারের কারনে ০৩ জন অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারী হতে মোট-২,২০,০০০/- জরিমানা তাৎক্ষণিক আদায় করা হয়েছে।

একই দিনে, অবৈধ গ্যাস ব্যবহার প্রতিরোধ ও সিস্টেম লস হ্রাসকল্পে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর মেট্রো ঢাকা বিক্রয় বিভাগ -৬ ও মেট্রো ঢাকা রাজস্ব বিভাগ -৬ -এর যৌথ উদ্যোগে পল্লবী বিক্রয় শাখা ও কাফরুল বিক্রয় শাখার আওতাধীন এলাকায় অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, হেভেন ইন্টারন্যাশনাল ডাই প্রসেসিং, নর্থ বেঙ্গল স্ট্রিম/ ওয়াশিং, নিউ ফোর স্টার ওয়াশিং ও জাকি ডাইং এন্ড এক্সেসরিজ নামক প্রতিষ্ঠানের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ইব্রাহীমপুর বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পিছনের রাস্তায় ২” ডায়া বিশিষ্ট বৈধ বিতরণ লাইনে লিকেজ থাকায় বৈধ গ্রাহকগণ অফিসের অনুমোদন ব‍্যতীত নিম্নমানের ফিটিংস দিয়ে নিজস্ব উদ্যোগে উক্ত রাস্তায় বিদ্যমান বৈধ ২” ডায়া বিশিষ্ট বিতরণ লাইনের পাশাপাশি অবৈধভাবে আনুমানিক দৈর্ঘ্য ৪০০ ফুট অন্য একটি ২” ডায়া বিশিষ্ট বিতরণ পাইপলাইন উত্তোলনের জন্য রাইজার টিমের মাধ্যমে মাটি খননের কিছুক্ষণের মধ্যে এলাকার কিছু লোকজন/ মহিলা ও পুরুষ মিলে মাটি গুলো দিয়ে ভরাট করে ঢেকে দেয় এবং লাইন বিচ্ছিন্ন করতে বাধা দেয় যার ফলে অবৈধভাবে স্থাপিত বিতরণ লাইন বিচ্ছিন্ন/অপসারণ করা সম্ভব হয়নি, যা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। উক্ত অভিযানে, বিভিন্ন ব্যাসের ৪৮ ফুট লাইন পাইপ, ২টি রেগুলেটর, ১টি লক উইং কক, ২টি বার্নার ও ১টি বল ভাল্ব অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে।

এছাড়া, জনাব সায়মা রাইয়ান, সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, নারায়ণগঞ্জ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর জোবিঅ-সোনারগাঁও আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুরের সোনারগাঁও ইকোনোমিক জোনের গেট সংলগ্ন এলাকা এবং ঝাউচর এলাকার ৫টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, ৪টি চুনা কারখানা ও ২০০টি অবৈধ আবাসিক চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময়, বিভিন্ন ব্যাসের ৩৮৪ ফুট লাইন পাইপ, এয়ার মিক্স বার্ণার- ১টি, পাথর ওজন করার মেশিন- ১টি, কারখানার কাজে ব্যবহৃত বেলচা- ৪টি অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। চুনা কারখানাগুলোর স্থাপনা এক্সক্যাভেটর মেশিনের সাহায্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে ও ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে৷
এছাড়াও, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ-সাভার, জোবিঅ-আশুলিয়া আওতাধীন ডেবনিয়ার গার্মেন্টস সংলগ্ন, গোরাট, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা, ও ধনাইদ, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা এলাকার ২টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, আনুমানিক ৩ কিলোমিটার বিতরণ লাইনের আনুমানিক ৭০০ টি অবৈধ আবাসিক গ্যাস বার্নারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময়, বিভিন্ন ব্যাসের ৬০০ মিটার লাইন পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এতে মাসিক ১৭,৯৮,২৩৬ টাকার গ্যাস চুরি রোধ করা সম্ভব হয়েছে।

অধিকন্তু, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ-চন্দ্রা, জোবিঅ -টাঙ্গাইল আওতাধীন নাজিরপাড়া,গন্ধব্যপাড়া গোড়াই, মির্জাপুর, টাঙ্গাইল এলাকার ৪টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, অতিরিক্ত চুলা ব্যবহারের জন্য ০৪ টি রাইজারের ৫ ডাবল অতিরিক্ত চুলা, ০২ টি বহুতল ভবনের সম্পূর্ণ অবৈধ ৩৫ টি ডাবল ও সম্পূর্ণ অবৈধ ২৭ টি আধাপাকা বাড়ির ৯০ টি ডাবল চুলাসহ মোট ১৩০ টি ডাবল চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময়, ৩/৪ ইঞ্চি পাইপ ২০০ ফুট লাইন পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও, জোবিঅ-কিশোরগঞ্জ, রাজস্ব উপ শাখা- কিশোরগঞ্জ -এর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বকেয়ার জন্য ০৭ টি রাইজারের ৮টি ডাবল চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর, ২০২৪ হতে গত ২০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে ৪৩১টি শিল্প, ৫৪৬টি বাণিজ্যিক ও ৭৬,৬৬১টি আবাসিকসহ মোট ৭৭,৬৩৮টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ ও ১,৬৬,৬৯৫টি বার্নার বিচ্ছিন্ন সহ উক্ত অভিযানসমূহে ৩১৭ কিলোমিটার পাইপলাইন অপসারণ করা হয়েছে।


banner close