রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫
২৮ আষাঢ় ১৪৩২

বয়স্কভাতা চাইতে গিয়ে জানলেন তিনি ‘মারা গেছেন’

ভুক্তভোগী জেলেখা বেগম ও তাকে ‘মৃত’ বলে তৈরি করা প্রত্যয়নপত্র। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
২৯ মে, ২০২৩ ১৭:৩২
প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও
প্রকাশিত
প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও
প্রকাশিত : ২৯ মে, ২০২৩ ১৭:২৮

এক বছরে কয়েকবার বয়স্কভাতার টাকা তুলেছেন। সে টাকা দিয়ে সংসারের কিছু খরচের পাশাপাশি ওষুধ কিনেছেন। এবার আশপাশের ভাতাভোগী সবার মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে টাকা এলেও আসেনি তার। কারণ জানতে যান সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে। সেখানে গিয়ে তার চক্ষু চড়কগাছ। বলা হয়, তিনি নাকি ‘মারা গেছেন’। এমনকি তার ‘মৃত্যুর প্রত্যয়নপত্রও’ রয়েছে।

এমন ঘটনা ঘটেছে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়ন পরিষদের বাসিন্দা জেলেখা বেগমের সঙ্গে। তিনি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সন্ধ্যারই গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী।

জেলেখা বেগম জানান, ইউনিয়নজুড়ে বয়স্কভাতা ও বিধবাভাতা পেতে আগ্রহীদের উদ্দেশে মাইকিং করা হয়। সে সময় বয়স্কভাতার জন্য আবেদন করলে তার নাম চূড়ান্ত হয়। এক বছর ভাতা পেয়েছেন তিনি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশের মাধ্যমে। হঠাৎ ভাতার টাকা আসা বন্ধ হলে তিনি উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে যান। সেখানে তাকে বলা হয়, তিনি ‘মারা গেছেন’ জেনে তার ভাতা বন্ধ করে অন্য একজনকে দেয়া হচ্ছে।

ক্ষুব্ধ জেলেখা বলেন, ‘আমার নাকি মৃত্যুর প্রত্যয়নপত্রও আছে। কিন্তু আমি তো জীবিত।’

আক্ষেপ করে এই বৃদ্ধা বলেন, ‘আমার মতো গরিবের সঙ্গে কেন এমন হলো? আমি মেম্বার (স্থানীয় ইউপি সদস্য) বাদশাকে কয়েকবার বলেছি, সে কেন আমাকে মৃত দেখালো। কোনো উত্তর পাইনি। আমি এর বিচার চাই এবং আমার ভাতা যেন বন্ধ না হয় সেই দাবি জানাই।’

জেলেখাকে মৃত ঘোষণা করে নন্দুয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল বারী স্বাক্ষরিত ওই প্রত্যয়নপত্র দৈনিক বাংলাও হাতে এসেছে। ওই প্রত্যয়নপত্রে চেয়ারম্যান বলেছেন, তিনি জেলেখা বেগমকে চেনেন এবং জানেন। তিনি ৭ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মৃত্যুবরণ করেছেন।

শুধু তাই নয়, জেলেখার বয়স্কভাতা একই ওয়ার্ডের (সন্ধ্যারই গ্রাম) আশরাফ আলী নামের একজনকে যেন দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয় সে ব্যাপারে জোর সুপারিশও করেছেন চেয়ারম্যান। এ প্রত্যয়নে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বাদশার স্বাক্ষরও রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে নন্দুয়ার ইউপি সদস্য মো. বাদশার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় শুনে কল কেটে দেন।

নন্দুয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাণীশংকৈল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, ‘চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত মৃত্যুসনদ পেয়ে আমরা বিধি মোতাবেক তার (জেলেখা) ভাতা বন্ধ করেছি এবং অন্য একজনকে ভাতা দিয়েছি।’

এ বিষয়ে রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে ওই বৃদ্ধার ভাতা চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে কী কারণে এমনটি হয়েছে, কেন তাকে মৃত দেখানো হয়েছে, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’


লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত চার হাজারের অধিক গরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে লাম্পি স্কিন রোগ। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার গরু এই ভাইরাস জনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস। আক্রান্ত গরুগুলোর মধ্যে অনেকটি শরীরে বড় বড় গুটি, ক্ষত ও জ্বর দেখা দিয়েছে। দুধ উৎপাদন কমে যাওয়ার পাশাপাশি কিছু গরুর মৃত্যু ও গর্ভপাতের ঘটনাও ঘটেছে। ফলে কৃষক ও খামারিরা পড়েছেন চরম দুশ্চিন্তায়। খামারিদের অভিযোগ, টিকার সরবরাহ নেই এবং অনেক ক্ষেত্রে মাঠপর্যায়ে সরকারি সেবা পৌছায় না।
জানা যায়, লাম্পি স্কিন এক ধরনের সংক্রামক ভাইরাসজনিত রোগ, যা গবাদিপশু বিশেষ করে গরুর জন্য মারাত্মক হুমকি। এটি মূলত ভাইরাস এবং মাছি, মশাসহ বিভিন্ন বাহকের মাধ্যমে পশুর শরীরে প্রবেশ করে। ভাইরাসটি এক পশু থেকে অন্য পশুতে দ্রুত ছড়ায়। গরুর শরীরে গুটি উঠা, জ্বর, দুর্বলতা, চোখ ও নাক দিয়ে পানি পড়া, খাওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়া এই রোগের প্রধান লক্ষণ।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, চরফ্যাশনে এ পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার ৩৭১ গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, কারণ অনেক গৃহস্থ এ বিষয়ে এখনো রিপোর্ট করেননি। এর মধ্যে ৩ হাজার ৪৪টি গরুকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। উপজেলার চর কুকরীমুকরী, চর মানিকা, নজরুল নগর, আড়ালিয়া, ওসমানগঞ্জ, শশীভূষণসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে ব্যাপকহারে গরু আক্রান্ত হয়েছে।

নজরুল নগর ইউনিয়নের কৃষক মাহে আলম জানান, তার দুটি গরুতে প্রথমে জ্বর দেখা দেয়, এরপর গরুর শরীরে গুটি দেখা যায়। তিনি স্থানীয় ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাওয়ালেও অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। অবশেষে প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করে চিকিৎসা শুরু করেছেন। গরুগুলো এখন আর খাবার গ্রহণ করে না। কৃষক খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমার খামারে ১০ টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে ৩টি গরুর গায়ে গুটি দেখা দিয়েছে। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছ থেকে ওষুধ নিয়েছি তবে কোন উন্নতি দেখিনি। পরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ ও ভেটেনারী হাসপাতালে নিয়ে আসি। ডাক্তার বলছে এটা এক ধরনের ভাইরাস। এই ভাইরাসের কোন টিকা নেই। সরকারের কাছে অনুরোধ দ্রুত এই টিকার ব্যবস্থা না করলে গরু লালন-পালনকারীরা ক্ষতির মুখে পড়বে।’

চরফ্যাশন উপজেলায় প্রায় ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৩৫০টি গরু রয়েছে। এদের একটি বড় অংশ কৃষক পরিবারগুলোর জীবিকা ও আয়ের প্রধান উৎস। এই অবস্থায় লাম্পি স্কিন রোগ বিস্তার রোধে জরুরি ভিত্তিতে ভ্যাকসিন সরবরাহ, ফিল্ড ভেটেরিনারি টিম গঠন, ওয়ার্ড পর্যায়ে মনিটরিং এবং ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য সহায়তা প্যাকেজ চালুর আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

উপজেলা ভেটেনারি সার্জন ডা. মো. রাজন আলী বলেন, ‘লাম্পি স্কিন ডিজিজ এই রোগের ভেকসিন এখনো বাজারে আসেনি। আমরা গরু লালন-পালনকারীদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি। ভেকসিন তৈরিতে সরকার চেষ্টা চালাচ্ছে। ভেকসিন তৈরি হলে অধিদপ্তর আমাদেরকে সরবরাহ করলে আমরা লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরুকে ভেকসিন দিতে পারবো।’


অতিবৃষ্টির কারণে পাটের ফলন ভালো না হওয়ার আশঙ্কা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কার্ত্তিক দাস, নড়াইল

দক্ষিণাঞ্চলের জেলা নড়াইল। পাট চাষের জন্য এ জেলার মাটি খুবই উপযোগী। খুলনা বিভাগের মধ্যে এখানেই সবচেয়ে উন্নতমানের পাট উৎপাদন হয়ে থাকে। বোরো ধান কাটার পর পরই হাসি মুখে কৃষকরা জমিতে পাট চাষ করেন। গত বছরের মত এবারো পাটের ভালো দাম পাবার আশায় বুক বেধে আছে কৃষকরা। কৃষি বিভাগের দাবি গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে বেশি জমিতে পাট চাষ হয়েছে, পাটের ফলনও ভালো। কিন্তু কৃষকদের অভিমত অতিবৃষ্টির কারণে এ বছর পাটের ফলন ভালো না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

নড়াইল সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নের সীতারামপুর গ্রামের কৃষক পাগল বিশ্বাস গত বছর পাটে ভালো দাম পাওয়ায় বোরা ধান ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ৫০ শতক জমিতে পাট চাষ করেন । জমিতে পাটের চারাগাছ এক হাতের মত লম্বা হওয়ার কিছু দিন পর হঠাৎ করে অতিবৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির পানি জমিতে জমে থাকার কারণে পাটগাছ আর বাড়তে পারেনি। যে কারণে পরিবারকে (স্ত্রীকে) সঙ্গে নিয়ে পাটগাছের চারা কেটে ফেলেন। এতে তার ১০/১৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত (২০২৪-২০২৫) অর্থ বছরে জেলায় ২৩ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। আবাদ হয় ২৩ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমি । পাট উৎপাদন হয় ৩ লাখ ১৬ হাজার ১৮২ বেল।

চলতি অর্থ বছরে (২০২৫-২০২৬) জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ২৩ হাজার ৯০০ হেক্টর জমি। আবাদ হয়েছে ২৩ হাজার ৪৯৮ হেক্টর জমি। পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ২১ হাজার ৯২৩ বেল।

নড়াইল সদর উপজেলার সলুয়া গ্রামের পাটচাষি বাচ্চু মোল্যা বলেন, জুন মাস শুরু থেকেই অতিরিক্ত বৃষ্টি হচ্ছে । জমিতে পানি জমে থাকায় পাটের অনেক চারা মারা গেছে । অবশিষ্ট চারাগুলো স্বাভাবিকভাবে বাড়তে পারেনি । ফলে এ বছর উৎপাদন কম হতে পারে । তিনি বলেন, গত বছর বাজারে প্রথম দিকে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকায় প্রতি মণ পাট বিক্রি হয়েছে। ভালো মানের পাট তিন হাজার টাকা দরেও বিক্রি হতে দেখা গেছে। গত বছরের মত এ বছরও পাটের দাম অব্যাহত থাকলে আগামীতে আরো বেশি জমিতে পাট চাষ হবে বলে আশা করেন।

লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের সরুশুনা গ্রামের মেহেদী শেখ বলেন, এক সময় পাট চাষ করে উৎপাদন খরচই উঠতো না । এখন সুদিন ফিরে এসেছে । গত বছর পাটের বেশ ভালো দাম পেয়েছি। তিনি মনে করেন সরকারিভাবে প্রতি মণ পাটের দাম তিন হাজার টাকা করে নির্ধারণ করে দিলে পাটের সোনালী দিন টিকে থাকবে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, নড়াইলের মধ্যে সবচেয়ে ভালোমানের পাট উৎপাদিত হয় নলদী, নোয়াগ্রাম ইউনিয়ন ও আশপাশের উচু এলাকায়।

নলদী বাজারের পাট ব্যবসায়ী মো.শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘নড়াইলের মধ্যে নলদী ও নোয়াগ্রাম ইউনিয়ন ও তার আশপাশের উচু এলাকায় উৎপাদিত পাটের মান অনেক ভালো। গত বছর এসব এলাকার পাট সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে।’

ব্রাম্মণডাঙ্গা বাজারের পাট ব্যবসায়ী লাবলু মোল্যা বলেন, নড়াইলের পাটের চাহিদা সারাদেশে রয়েছে । বিগত বছরগুলোতে ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা দাম উঠলেও এ বছরের হিসাব বলা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, গত বারের মত পাটের দাম অব্যাহত থাকলে আগামিতে কৃষকরা আরো বেশি জমিতে পাট চাষ করবে।

নড়াইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সৌমিত্র সরকার বলেন, গত অর্থ বছরে (২০২৪-২৫)জেলায় ২৩ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। আবাদ হয়েছিল ২৩ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমি। পাট উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ১৬ হাজার ১৮২ বেল।

চলতি অর্থ বছরে (২০২৫-২০২৬) জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৩ হাজার ৯০০ হেক্টর জমি। আবাদ হয়েছে ২৩ হাজার ৪৯৮ হেক্টর জমি। পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ২১ হাজার ৯২৩ বেল।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে পাটের আবাদ বেশি হয়েছে । আশা করছি বাজার মূল্যও বিগত বছরের তুলনায় এবার বেশি হবে। তিনি মনে করেন সোনালী আশখ্যাত পাটের সুদিন ফিরে এসেছে । গত বারের মত বাজার দর অব্যাহত থাকলে আগামিতে কৃষকরা পাট চাষের প্রতি ঝুকে পড়বে।


পুরান ঢাকায় লাল চাঁদকে হত্যা বিচারের দাবিতে ঢাকায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি পণ্যের ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (১২ জুলাই) বেলা একটার দিকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে বিক্ষোভে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। ‘ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থী সমাজ’ ব্যানারে এই বিক্ষোভ হয়। দুপুর ১২টার দিকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ করেছেন। ইডেন কলেজ, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ করেন।

বিক্ষোভ চলাকালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘কণ্ঠে আবার লাগা জোর, চাঁদাবাজের কবর খোঁড়, ‘চাঁদাবাজ চাঁদা তোলে, ইন্টেরিম কী করে?’, ‘চব্বিশের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘কে দিল রে জানোয়ার মানুষ মারার অধিকার’ বলে স্লোগান দেন।

কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল্লাহ সাকিব বলেন, ‘বিপ্লব–পরবর্তী সময়ে সবাই মিলেমিশে কাজ করার যেই মানসিকতা তৈরি হয়েছিল, সেটা নষ্ট হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সহিংসতা বেড়ে গেছে। একজন মানুষকে এভাবে নৃশংসভাবে হত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

গত বুধবার রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় ভাঙারি পণ্যের ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯)। হত্যার আগে ডেকে নিয়ে তাকে পিটিয়ে এবং ইট-পাথরের টুকরা দিয়ে আঘাত করে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তাকে বিবস্ত্র করা হয়। তার শরীরের ওপর উঠে লাফায় কেউ কেউ।

এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।


নোয়াখালীতে পানি নামছে ধীর গতিতে

প্রায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহবুবুর রহমান,নোয়াখালী প্রতিনিধি

টানা চার দিনের মুষলধারে বৃষ্টিপাতের পর টানা দুদিন নোয়াখালীতে রোদ্রৌউজ্জ্বল আবহাওয়া বিরাজ করছে। এতে অধিকাংশ উপজেলায় জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর, দুর্গাপুর ও লক্ষীনারায়ণপুর গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামে পানি বেড়েছে। স্থানীয়দের ধারণা ফেনীর পানি ঢুকে বৃষ্টি না থাকলে এ অঞ্চলে পানি বেড়েছে।

শনিবার (১১ জুলাই) সকালে জেলার সদর, সুবর্ণচর, কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলার বাসিন্দারা জানায় তাদের এলাকায় পানি নামছে ধীর গতিতে। এজন্য বেশিরভাগ এলাকায় এখনো বন্যার পানি জমে থাকায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলার ছয়টি উপজেলার ৫৭টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়েছে। এতে ৪৬ হাজার ৭০টি পরিবারের প্রায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৫০৩ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। কবিরহাট ও সুবর্ণচর উপজেলায় আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৫টি বসতঘর। সুবর্ণচরে একটি বসতঘর সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ,পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব এবং পানি নিষ্কাশনের নালা ও জলাশয় গুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় শহরবাসীর এ দুর্ভোগ। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন অনেকে। হালকা বৃষ্টিতেই নোয়াখালী পৌরসভা এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এদিকে মাইজদীর লক্ষ্মীনারায়ণপুর, সেন্ট্রাল রোড, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা শিল্পকলা একাডেমিসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় এখনো রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে রয়েছে। আশপাশের অনেক বাসাবাড়িতেও পানি জমে রয়েছে। টানা বৃষ্টির বিরতিতে মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেলেও জলাবদ্ধতা ও বন্যা পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি।

জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে তেমন কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। আপাতত ভারী বৃষ্টিরও সম্ভাবনা নেই। তবে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে।

জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, পাঁচটি উপজেলায় ৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ১ হাজার ৮৫০ জন মানুষ এবং ১৭১টি গবাদি পশু। দুর্গতদের চিকিৎসায় ৫১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে, যার মধ্যে ২৯টি কাজ শুরু করেছে। বন্যার ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, পানি নিষ্কাশনে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বৃষ্টি না হলে জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে।


বন্যার পর ফেনীতে সাপ আতঙ্ক, গৃহবধূর মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।


সমবায় সমিতির শত কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাৎ

‘দুর্নীতিবাজ’ কর্মকর্তার জড়িত থাকার অভিযোগ
আপডেটেড ১২ জুলাই, ২০২৫ ১০:২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

এ যেন মগের মুল্লুক। ইচ্ছে করলেই বিক্রি করা যায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) লে-আউটভুক্ত রাস্তা, গ্রীনজোন, ইদগাঁ, স্কুলের মাঠ এমনকি খোদ মসজিদের জায়গাও। দেশের প্রচলিত আইনানুযায়ী বিক্রিত জমি হস্তান্তরে সাব কবলা দলিল লাগলেও এ মগের মুল্লুকে সম্পাদক স্বাক্ষরিত পাওয়ারই মালিকানার প্রমাণ। এক দেশে দুই আইন, কল্পনার নবাবী সাম্রাজ্য। ফলে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবাসী পরিবারসহ অনেকেই এখন বাস্তুচ্যুত। আর এ সমিতির সকল অপকর্মের সহযোগী খোদ চট্টগ্রাম সমবায় অফিসের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। তারা টাকার বিনিময়ে বছর বছর অনিয়ম-দুর্নীতির ছাড়পত্র দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ মগের মুল্লুকের নাম চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বেস্তামী থানার চৌধুরীনগর আবাসিক এলাকা। আর অপকর্মের হোতা চৌধুরীনগর বহুমুখী সমবায় সমিতি লি:, রেজিস্ট্রেশন নং ৭২৯৮।

তথ্য প্রমাণে জানা যায়, ১৯৯০ সালে সাব কবলা দলিলে জমির মালিক স্থানীয় অধিবাসীরা এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে প্রতিষ্ঠা করেন এ সমিতি। পরবর্তীতে সমিতিও কিছু জায়গা ক্রয় করে ২৫ একর জায়গার উপর সিডিএ লে-আউট প্ল্যান পাশ করে। পরবর্তীতে সমিতির ক্রয়কৃত জায়গা দলিলমূলে নিজেদের দাবি করেন কতিপয় ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি জাতীয় গ্রিডের বিদুৎ লাইন ও পাহাড় রক্ষায় সরকারও উদ্যেগ নেয়। ফলশ্রুতিতে ১৯৯৮ সালে হাইকোর্ট উক্ত জায়গা ক্রয়-বিক্রয় ও হস্তান্তরে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

বার্ষিক অডিট রিপোর্টে জানা যায়, চৌধুরী নগর বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক মামলা নিস্পত্তি সংক্রান্ত ব্যয়ের অজুহাতে ভুয়া ভাউচারে ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। আর সমিতির দখলে থাকা জায়গার নামজারি খতিয়ান তৈরির জন্য অজ্ঞাত ভূমি কর্মকর্তাকে ঘুষ দেয়ার নামে ৭০ লাখ টাকা এবং ওয়াসার পানির লাইন সংযোগে অজ্ঞাত ইঞ্জিনিয়ারকে ঘুষ বাবদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা পারস্পরিক যোগসাজসে আত্মসাত করে। কিন্তু এখনো ওয়াসার পানির লাইনের সংযোগ ও জমির নামজারি হয়নি।

এদিকে সমিতির সভাপতি শামসুল হুদা নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের গডফাদার হিসাবে পরিচিত। গত ১৫ বছর স্থানীয় পর্যায়ে অবৈধ ভূমি দখল, পাহাড়কাটা, বালু বিক্রি, কিশোর গ্যাং, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন তিনি। তার স্ত্রী মাহমুদা হুদা মহিলা আওয়ামী লীগ, ছেলে নাজমুল হুদা যুবলীগ, পুত্রবধূ তানজিয়া সুলতানা যুব মহিলা লীগ, কনিষ্ঠ সন্তান মইনুল হুদা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অভিযোগ আছে, শামসুল হুদা দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে আবাসিকের পাশ্ববর্তী পাহাড় পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব ও পাইপ ফ্যাক্টরি সমিতির সদস্য মোহাম্মদ কালামের কাছ থেকে দখল করে নেন। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার মামলাও হয়েছে। অবৈধভাবে পাহাড় কাটার অপরাধে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম শামসুল হুদাকে অর্থদণ্ড প্রদান করে। সমিতির অর্থ সম্পাদক মো. আবদুল হান্নান ছাত্র হত্যা মামলায় কারাগারে। আর সাবেক সম্পাদক হারুনুর রশিদ নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নগরীর ২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ড নেতা। অভিযোগ রয়েছে, জুলাই গণআন্দোলনে নগর আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতার নির্দেশে বহদ্দারহাট ও নিউমার্কেটে ছাত্র-জনতার উপর হামলাকারীদের আর্থিকভাবে পৃষ্টপোষাকতা করেন এই হারুনুর রশীদ। ৫ আগস্ট হারুনুর রশীদ ও তার ছেলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা অনয় এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন চৌধুরী জানান, ‘সদস্যদের ওই টাকা সভাপতির সম্মতিতে ভাউচার দিয়ে নিয়েছি। এ টাকা সমিতির পক্ষ থেকে খরচ করা হয়েছে, এটা আমার একার কোনো বিষয় নয়।’

সমিতির সভাপতি শামসুল হুদার মোবাইল ফোনে কল দিলে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর তিনি নিজের নাম মহসিন উল্লেখ করে কথা বলতে অস্বীকার করেন। এরপরও এ প্রতিবেদক অভিযোগসমূহ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যা ইচ্ছা লিখে যান। আমরা (আওয়ামী লীগ) আবার ক্ষমতায় আসলে কড়ায়-গন্ডায় উসুল করব।’

দৈনিক বাংলার অনুসন্ধানে জানা যায়, সমিতির সব অপকর্মে প্রশাসনিকভাবে সহায়তা করেছে পাঁচলাইশ থানা সমবায় অফিসার (বর্তমানে পটিয়া উপজেলা অফিসার) মো. শফিউল আলম ও জেলা সমবায় অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তার সঙ্গে সমিতির সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা শামসুল হুদা ব্যক্তিগত সম্পর্ক সর্বজনবিদিত। সমিতির সকল অপকর্ম সহায়তার পুরস্কার হিসাবে সমিতির সভাপতি হুদা সমবায় অফিসার শফিউলকে কখনো ক্যাশ কখনো বিকাশে ঘুষের টাকা, পারিবারিক অনুষ্ঠানে ছাগল পাঠানো, ঈদ উপহার প্রদানসহ- নানান মুখরোচক গল্প স্থানীয় পর্যায়ে প্রচারিত আছে।

এছাড়া শফিউল আলম সমিতির সম্পাদকের জাল স্বাক্ষর সৃজন, ৯০ লাখ টাকার সম্পত্তি এবং ১২ লাখ টাকার অর্থ পাচার ও আত্মসাতের তথ্য গোপন, মামলা হতে সভাপতিকে দায়মুক্তির সুযোগ সৃষ্টি, পেশাগত অযোগ্যতা ও গুরুতর অসাধারচারণ, তদন্ত কার্যক্রমে অভিজ্ঞতা, সক্ষমতা ও প্রজ্ঞার অভাবের পরিচয় দিয়ে অপেশাদার ও অযোগ্য কর্মকর্তার পরিচয় দিয়েছেন। অনিয়মের মতো জাতীয় ইস্যু, অর্থপাচার ও আত্মসাতের মতো রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা এবং দুর্নীতির মতো বৈষয়িক সমস্যার সঙ্গে তিনি প্রবলভাবে সম্পৃক্ত। পেশাগত অক্ষমতার কারণে ৬ মাস পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত মো. শফিউল আলমকে ‘শো কজ’ করা হয়। পাশাপাশি দুর্নীতির তদন্তও চলছে।

বৈষম্যের শিকার বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সমিতির সদস্য উম্মে আয়মন দৈনিক বাংলাকে বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গডফাদার সমিতির সভাপতি শামসুল হুদা এতদিন দলীয় সন্ত্রাসীদের নিয়ে অত্র এলাকায় সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য কায়েম করে। শত শত পাওয়ার অব এটর্নীর নামে বেআইনিভাবে জমি বিক্রি ও দখল করে। সিডিএ লে-আউট প্ল্যানভুক্ত রাস্তা, ইদগাঁ, গ্রিন জোন, স্কুল এমনকি মসজিদের জায়গাও এ ভুমিদস্যুদের হাত থেকে রেহাই পায়নি।

ভুক্তভোগী প্রবাসী পরিবারের সদস্য কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম ৫ আগস্টের পর সকল অনিয়ম-দুর্নীতির অবসান ঘটবে, আমরা ন্যায় বিচার পাব। কিন্তু সমবায়ে অভিযোগ করার পরও আমরা ন্যায়বিচার হতে বঞ্চিত।’

অপর ভুক্তভোগী ইফতেখার উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘আমার মা মরহুমা জাহানারা বেগম সমিতির সদস্য ছিলেন। মায়ের মৃত্যুর পর সমিতির সভাপতি আর্থিক সুবিধা নিয়ে ভুয়া নমিনির কাগজ সৃষ্টি করে তার নামে বরাদ্দকৃত জমি ৬ ওয়ারিশের মধ্যে আমমোক্তারনামা না করে একজনের নামে দিয়েছে। এ ব্যাপারে আমি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্বায়িত্ব গ্রহণের পরপরই সমবায় দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করি। কিন্ত তদন্তের নামে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে।’

উল্লেখিত অভিযোগের বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমবায় দপ্তরের যুগ্ম নিবন্ধক (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মাহবুবুল হক হাজারী বলেন, চৌধুরীনগর সমিতির অনিয়ম-দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ পেয়ে ৪৯ ধারায় তদন্তে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। আমরা দ্রততম সময়ের মধ্যে এ ভুক্তভোগীর সমস্যা সমাধানের উদ্যেগ নিচ্ছি।


টানা বৃষ্টি আর কম সরবরাহে কাঁচা মরিচের দাম চড়া

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সারা দেশের বাজারে আবারও কাঁচামরিচের ঝাঁজে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের। মাঠে ফলন কম, টানা বৃষ্টি আর সরবরাহের অপ্রতুলতায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচামরিচের দাম ৪-৫ গুণ বেড়ে গেছে মেহেরপুর ও মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া, নওগাঁসহ বিভিন্ন এলাকায়। দৈনিক বাংলার প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত;

জুলফিকার আলী কানন, মেহেরপুর থেকে জানান, মেহেরপুরের বাজারগুলোতে সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ২০০ থেকে ২২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত বছরের এই সময়ে কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল বলে চাষি ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, চাহিদার চেয়ে বাজারে কাঁচামরিচের সরবরাহ কম। কৃষকদের কাছ থেকেই বেশি দামে কাঁচামরিচ কিনতে হচ্ছে। এতে প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও।

আর মরিচ চাষিরা বলছেন, এবার বৃষ্টিতে গাছের পাতা কুঁকড়ে যাওয়ায় কাঁচামরিচের ফলন আশঙ্কাজনকহারে কমে গেছে। বেশি দামে কাঁচামরিচ বিক্রি করলেও ফলন কম হওয়ায় লোকসানে পড়েছেন তারা

শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে গাংনী উপজেলা কাঁচামাল আড়তের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে মরিচের সরবরাহ কম। এ কারণে খুচরা বাজারেও কাঁচামরিচ কম। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ১৯০ থেকে ২২৫ টাকায় বিক্রি করা হয়। আর খুচরা বাজারে তা ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মৌসুমে মরিচের এমন দামে অস্বস্তির মধ্যে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। এক সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি মরিচ ৩০ থেকে ৪০ টাকায় কিনেছেন তারা।

গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী শাহাবুল ইসলাম শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে কাঁচামরিচ ১৯০ টাকা থেকে ২৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছর এই সময়ে মরিচ প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় কিনছি।

গাংনী কাঁচাবাজারের আড়ত মালিক হাফিজুর রহমান ভিজা বলেন, এখন কাঁচামরিচের সরবরাহ কম, তাই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। মাঠের অধিকাংশ মরিচ ক্ষেত শুকিয়ে গেছে। এখন যে দুয়েক জায়গায় মরিচ ক্ষেত অবশিষ্ট আছে সেগুলোর দাম বেশি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রবীআহ সামসুল আলম বলেন, অতিরিক্ত খরা ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের কারণে মরিচগাছের পাতা কুঁকড়ে যেতে পারে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে জমিতে সেচের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এ ছাড়া ব্যাকটেরিয়ানাশক ওষুধ ছিটানোর মাধ্যমে মরিচগাছের এ রোগ দূর করা সম্ভব।

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় গত এক সপ্তাহে কাঁচামরিচের দাম অস্বাভাবিকহারে বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা বিপাকে পড়েছেন। মাত্র সাত দিনের ব্যবধানে কাঁচামরিচের দাম প্রায় তিন গুণ বেড়ে গিয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে কাঁচা মরিচের সরবরাহ মারাত্মকভাবে কমে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য সবজির দামেও। এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ২০০-২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সাটুরিয়ার ইউএনও মো. ইকবাল হোসেন বলেন, পণ্যের দাম অস্বাভাবিক এবং অতিরিক্ত মুনাফার আশায় বেশি দামে ব্যবসায়ীরা পণ্য বিক্রি বন্ধে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি।

নওগাঁ প্রতিনিধি জানান, নওগাঁয় হঠাৎ বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ৫ থেকে ৬ গুন দাম বেড়েছে এই কাঁচা পণ্যটির। বর্তমানে খুচরা বাজারে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ। শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে নওগাঁ পৌর খুচরা বাজার ও সিও অফিস ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগেও নওগাঁর বিভিন্ন হাটবাজারে কাঁচামরিচ পাইকারি বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা আর খুচরা বাজারে ৩০ থেকে ৪০টাকা কেজি দরে। বর্তমানে সেই কাঁচামরিচ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা আর খুচরা বাজারে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে। এদিকে কাঁচা মরিচের দাম হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় অস্বস্থিতে পড়েছেন ক্রেতারা।
শহরের সিও অফিস বাজার করতে আসা রায়হান আলম বলেন, যে মরিচ এক সপ্তাহ আগে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে কিনেছি, সেই মরিচ শুক্রবার (১১ জুলাই) ২৪০ টাকা কেজি দরে কিনেতে হচ্ছে। কালকেও ১২০টাকা কেজি নিয়ে গেছি অথচ আজকে দ্বিগুন দাম। বাজারের যে অবস্থা মনে হচ্ছে কাল পর্যন্ত ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি হবে।
নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর ৯৬৫ হেক্টর জমিতে কাঁচামরিচের চাষ হয়েছে।


শ্রমিক আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র বেলতলা এখন স্মৃতি চত্বর

আপডেটেড ১১ জুলাই, ২০২৫ ১৯:৫০
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি

দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে কারখানা সৈয়দপুরের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের শ্রমিক আন্দোলনের গৌরবময় ইতিহাস। ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত এই কারখানায় একসময় কাজ করতেন প্রায় ১৬ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী। পাকিস্তান আমলেও এই কারখানা ছিল উত্তরের মানুষের অন্যতম কর্মসংস্থান, যেখানে তখনও ১০ হাজার ৫০০ জনের বেশি শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তা কর্মরত ছিলেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সেই সময় প্রতিদিন কাকডাকা ভোরে দূর-দূরান্ত থেকে শ্রমিকরা সৈয়দপুর কারখানায় আসতেন। পার্বতীপুরসহ আশপাশের এলাকা থেকে শ্রমিকদের জন্য চলতো বিশেষ ‘সাটল ট্রেন’। শ্রমিকদের বসবাসের জন্য সৈয়দপুরের পাশের সংগলশী ইউনিয়নে অধিগ্রহণ করা হয় কয়েকশ একর জমি, যেখানে বর্তমানে গড়ে উঠেছে উত্তরা ইপিজেড।

শুধু কর্মস্থলই নয়, এই কারখানা ছিলো শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের অন্যতম শক্ত ঘাঁটি। ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলন থেকে শুরু করে পাকিস্তানি শাসক আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, এমনকি স্বাধীনতার পরও সরকার বিরোধী নানা আন্দোলনে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার শ্রমিকরা রেখেছে অগ্রণী ভূমিকা। আর এসব আন্দোলন-সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু ছিল রেলওয়ের ঐতিহাসিক বেলতলা।

সেই সময়ে রেলওয়ের প্রধান প্রবেশদ্বার সংলগ্ন বেলতলায় সকাল-বিকাল সমাবেশ হতো। হাজার হাজার শ্রমিক কর্মচারী যোগ দিতেন এসব জনসভায়। মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীসহ জাতীয় ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের পদচারণায় মুখর ছিল এই চত্বর। একসময় প্রশাসনও শ্রমিক আন্দোলনের তাপে সৈয়দপুরেই বসাতে বাধ্য হতো কার্যালয়।

কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই ঐতিহাসিক বেলতলা আজ আর আন্দোলনের চত্বরে নেই—পরিণত হয়েছে শুধুই স্মৃতিচারণের স্থানে। বেলতলায় আর নেই শ্রমিকদের ব্যানার, নেই হাজারো মানুষের গর্জন। সেখানে এখন শুধু ঘাস আর নিরবতা।

বর্তমানে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মঞ্জুরিকৃত পদের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার হলেও কর্মরত আছেন মাত্র ৮০০ জনের মতো। বছরের পর বছর নতুন নিয়োগ না হওয়ায় শ্রমিক সংকট প্রকট হচ্ছে। এক সময়কার ২২টি উপকারখানার মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে ৯টি। যেখানে একসময় টুলরুম ও মেশিন সপে সাত হাজারের বেশি যন্ত্রাংশ উৎপাদিত হতো, সেগুলো এখন লোকাল মার্কেট থেকে কিনে আনতে হচ্ছে—যার ফলে কর্মকর্তাদের আর ঠিকাদারদের পকেটই মোটা হচ্ছে বলে অভিযোগ শ্রমিকদের।

শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বলছেন, একসময় সক্রিয় ট্রেড ইউনিয়ন থাকায় কর্মকর্তারা শ্রমিক স্বার্থের বিরোধিতা করতে সাহস পেতেন না। অথচ এখন কার্যকর আন্দোলন না থাকায় সবকিছুই হচ্ছে আমলাদের ইচ্ছেমতো।

বাংলাদেশ রেল শ্রমিক ইউনিয়ন কারখানা শাখার সভাপতি প্রবীণ শ্রমিক নেতা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে স্থানীয় রেলওয়ে শ্রমিক লীগের বাধায় আমরা বিরোধী ট্রেড ইউনিয়ন নেতারা বেলতলায় কোনো মিটিং-মিছিল করতে পারিনি।’

জাতীয়তাবাদী রেলওয়ে শ্রমিক কর্মচারী দল ওপেন লাইন শাখার যুগ্ম সম্পাদক মো. দুলাল প্রামানিক বলেন, ‘একনায়ক হাসিনার পদলেহনকারী রেল শ্রমিক লীগের বাধার কারণে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি আদায়ের সুযোগই মেলেনি। তবে এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটতে চলেছে।’

জাতীয়তাবাদী রেল শ্রমিক ও কর্মচারী দল কারখানা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বলেন, ‘দীর্ঘ ১৬-১৭ বছর ধরে স্থানীয় শ্রমিক লীগের নেতারা বিরোধী শ্রমিক সংগঠনকে বেলতলায় দাঁড়াতে দেয়নি। সভার ব্যানার ছিঁড়ে, মাইক কেড়ে নিয়ে মারধরও করেছে। ফলে আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র বেলতলা এখন স্মৃতি চত্বরে পরিণত হয়েছে।’

তবে শ্রমিক নেতাদের প্রত্যাশা, অচিরেই এই ঐতিহাসিক চত্বরে আবারও স্লোগানে মুখর হবে রেলশ্রমিকদের অধিকার আদায়ের লড়াই।


রাজধানীর মিরপুর থেকে ৫০টি দেশীয় বন্যপ্রাণী উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মিরপুর-১ এলাকার কাঁচাবাজার ও পাখির দোকানগুলোতে অভিযান চালিয়ে ৫০টি দেশীয় বন্যপ্রাণী জব্দ করেছে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট (ঢাকা) শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে এ অভিযান চালানো হয়।

উদ্ধারকৃত প্রাণীগুলোর মধ্যে রয়েছে- তিনটি পাহাড়ি ময়না, দু’টি ঝুঁটি শালিক, দু’টি টি গাঙ শালিক, দু’টি তিলা ঘুঘু, ১৪টি শালিক, দু’টি হিরামন তোতা, ২৩টি টিয়া, একটি বাজপাখি ও একটি কড়ি কাইট্টা।

বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নার্গিস সুলতানার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি অভিজ্ঞ দল সকাল থেকে বাজারের একাধিক দোকান ও স্থানে অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানে সহযোগিতা করে পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে নিবেদিত সংগঠন ‘সোয়ান’।

অভিযানে উদ্ধারকৃত অধিকাংশ বন্যপ্রাণীকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী পরে নিরাপদ ও উপযুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে অবমুক্ত করা হয়েছে। তবে অসুস্থ বন্যপ্রাণীদের আপাতত অফিসে নিরাপদভাবে সংরক্ষণে রাখা হয়েছে এবং পরে তাদেরকেও মুক্ত প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হবে।

বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী, দেশীয় যেকোনো বন্যপ্রাণী সংগ্রহ, লালনপালন, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন আইনত নিষিদ্ধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে পাখিবাজারে এ ধরনের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রাখার জন্য অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।


আমরা ইতিহাসের বিশেষ একটি সময় অতিবাহিত করছি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আমরা ইতিহাসের বিশেষ একটি সময় অতিবাহিত করছি। আমাদের ত্রয়োদশ নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করতে হবে। শহীদের রক্তস্নাত বাংলায় ইসলামী পতাকা উত্তোলন এবং ইসলামী ঐক্যের কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ সবার চাওয়া-পাওয়া।

শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত বিশেষ সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমার জীবন, চিন্তা-চেতনা, অনুভূতি সবই আল্লাহর জন্য। সব কিছুর মালিক আল্লাহ। সব কিছু আল্লাহর নিয়ম-বিধিতে চলবে, এটাই চিরন্তন বাস্তবতা। আর শপথের মাধ্যমে আমাদের জীবনকে সেই মহান সত্তার কাছে সোপর্দ করেছি। মহান আল্লাহর নির্দেশের বাইরে যাওয়া যাবে না।

সব জনশক্তিকে ১৯ জুলাই জাতীয় সমাবেশ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় সমাবেশ হলো তার টার্নিং পয়েন্ট। তার সফল বাস্তবায়নে এখন থেকে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। সমাবেশে ১০ হাজার পুরুষ ও মহিলা রুকন অংশ গ্রহণ করবেন।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগর সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন— কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগর উত্তরের নায়েবে আমির আ. রহমান মুসা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মহানগর সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিমুদ্দিন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দিন মানিক ও ইয়াসিন আরাফাত।


অস্ত্র মামলায় রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

রাজধানীর বনানী থানার অস্ত্র আইনের মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।

আজ দুই দিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসিবুজ্জামান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে ৭ জুলাই এ মামলায় তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুল ইসলাম।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত বছরের ২৫ আগস্ট জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য প্রদত্ত সকল আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়। স্থগিতকৃত লাইসেন্সভুক্ত আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ ২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমা দানের নির্দেশ প্রদান করা হয়। এ তারিখের মধ্যে কোনো অস্ত্র ও গোলাবারুদ থানায় জমা না দেওয়া হলে তা অবৈধ অস্ত্র হিসেবে গণ্য করে অস্ত্র আইনে মামলা হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আসামি আনিসুল হক তার একটি আগ্নেয়াস্ত্র নিজে অথবা অন্য কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে বনানী থানায় বা অন্য কোনো থানায় জমা দিয়েছেন কিনা সে বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে থানাকে অবহিতও করেননি। তার অস্ত্রের লাইসেন্সে উল্লেখিত ঠিকানায় উপস্থিত হয়ে বাসায় কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় গত ২৪ মে অস্ত্র আইনের ১৯(১) ধারায় আনিসুল হকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন বনানী থানার এসআই (নিরস্ত্র) মো. জানে আলম দুলাল।

উল্লেখ গত ১৩ আগস্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেফতার করা হয়।


আকাশচুম্বী মূল্য নিয়ন্ত্রণে হিলি স্থলবন্দরে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

দীর্ঘ আট মাস পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কাঁচামরিচ আমদানি শুরু হয়েছে। এদিকে ঢাকায় ৩০০ টাকা এবং জেলা শহর দিনাজপুরে ১৫০ টাকা কেজিতে উঠেছে কাঁচা মরিচের দাম।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাতে হিলি স্থলবন্দরে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ নিয়৷ দুটি ট্রাক প্রবেশ করেছে। গঙ্গেস্বরি ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি ভরাতীয় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ঝাড়খান রাজ্য থেকে মরিচ বাংলাদেশে রপ্তানি করেছে বলে জানা গেছে। আমদানিকারক বাংলাদেশের হিলি বন্দরের এনপি ইন্টারন্যাশনাল।

কয়েকদিনের মধ্যে দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের সংকট দেখা দেওয়ায় ৪০ টাকা কেজির কাঁচা মরিচের দাম রাজধানী ঢাকায় ৩০০ এবং জেলা শহরে দেড়শ টাকায় উঠেছে।

জানা গেছে গত বছরের ১৫ নভেম্বর এই বন্দর দিয়ে সর্বশেষ কাঁচা মরিচ আমদানি করা হয়েছিল। দেশী মরিচ বাজারে উঠায় দাম কমে যাওয়ায় আমদানি বন্ধ করা হয়েছিল।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী জানান, চলতি বর্ষা মৌসুমে দেশে অতিবৃষ্টি এবং কোথাও কোথাও ও বন্যার কারণে মরিচ খেত নষ্টের কারণে সংকট দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে দাম নিয়ন্ত্রণহীণ হয়ে পড়েছে। তাই ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে আমদানি শুরু করেছে। আগামী সপ্তাহ থেকে পুরোদমে আমদানি শুরু হবে। এতে দেশের বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করছেন তারা।


কবি আল মাহমুদের ৯০তম জন্মদিন আজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বায়ান্ন’র ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তর হয়ে রক্তক্ষয়ী জুলাই গণ-অভ্যুত্থান, বিপ্লবী এ পথপরিক্রমায় যার কবিতা মুক্তিকামী গণমানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে, তিনি সবুজের কবি আল মাহমুদ। দ্রোহ, প্রেম, প্রকৃতি ও প্রার্থনার কবি আল মাহমুদের ৯০তম জন্মদিন আজ শুক্রবার ।

১৯৩৬ সালের এদিন ব্রাক্ষণবাড়িয়ার মৌরাইলে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। আর সাহিত্যের ষোলোকলা পূর্ণ করে ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় মারা যান এ কবি।

কবি আল মাহমুদের ৯০ তম জন্মদিন উপলক্ষে পৃথক আয়োজনে দিনটি পালন করবেন ভক্ত-অনুরাগীরা। এ দিন বিকেল ৪ টায় রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে কবিকে ঘিরে আলোচনা, স্মরণ ও আবৃত্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কালের কলস ও কালের ধ্বনি আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে শিল্প-সাহিত্যের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থাকবেন। একই দিন সকালে ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদ, ময়মনসিংহে আয়োজন করেছে 'আমাদের আল মাহমুদ' শীর্ষক সেমিনার।

আগামী ১২ জুলাই শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ ভবনে বিকেল ৪ টায় কবিতা, স্মৃতিচারণ ও আড্ডার আয়োজন করা হয়েছে।

এদিকে, রাষ্ট্রীয়ভাবে কবির জন্মবার্ষিকী পালনের দাবি জানিয়েছে কবি ভক্তরা। তারা জানিয়েছেন, ‘বিগত স্বৈরাচারী সময়ে আল মাহমুদকে তুমুল অবজ্ঞা ও উপেক্ষা করা হয়েছে। জুলাই বিপ্লবে আল মাহমুদের অনেক কবিতা ছাত্র-জনতাকে দারুণভাবে উদ্বুব্ধ করেছে। তিনি বাংলা ভাষার ফসলি জমিনকে জাদুকরী দক্ষতায় উর্বর করে গেছেন। জুলাই বিপ্লবের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের পাশাপাশি তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্মরণ করার দাবি জানিয়েছেন কবি ভক্তবৃন্দ। অবিলম্বে তার লেখনী পাঠ্যপুস্তকে পুনর্বহালসহ সাহিত্য গবেষণায় কবি আল মাহমুদ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠারও দাবি জানানো হয়।


banner close