রোববার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পদ্মায় নেমে নিখোঁজ দুই বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্র, একজনের মরদেহ উদ্ধার

এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধারের পর আরেকজনের সন্ধানে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: দৈনিক বাংলা
প্রতিনিধি, মুন্সিগঞ্জ
প্রকাশিত
প্রতিনিধি, মুন্সিগঞ্জ
প্রকাশিত : ২ জুন, ২০২৩ ১৬:৫১

মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়ায় পদ্মা সেতু সংলগ্ন এলাকায় পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ দুই বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থীর মধ্যে একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌপুলিশ।

শুক্রবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সৌম্য নামে ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে নিখোঁজ রয়েছেন নুরুল হক নাফিউ নামে অপরজন।

সৌম্য ঢাকার তেজগাঁওয়ের সরোজ দাসের ছেলে। আর নাফিউ নতুন বাজার এলাকার শরিফুল হকের ছেলে। দুজনেই ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ছিলেন।

মাওয়া নৌপুলিশ জানায়, ঢাকা থেকে সৌম্য-নাফিউসহ পাঁচ বন্ধু সকাল ৯টার দিকে মাওয়া এলাকায় আসেন। পরে স্পিডবোট নিয়ে তারা মাঝ পদ্মায় গোসল করতে যান। পদ্মা সেতুর ১৬ নম্বর পিলারের কাছাকাছি গিয়ে পাঁচ বন্ধু নদীতে নামলে দুইজন পদ্মার স্রোতের তোড়ে নিখোঁজ হন।

মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন জানান, দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে নৌপুলিশের একটি টিম পদ্মা নদীতে উদ্ধার কাজ শুরু করে। সোয়া ৪টার দিকে নিখোঁজ একজনের মরদেহ উদ্ধার হয়। অপরজনের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান চলছে।

লৌহজং ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন জানান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছেন। এছাড়া প্রশিক্ষিত ডুবুরি দল পথে রয়েছে, তারাও এসে উদ্ধার কাজে অংশ নেবে।


সিরাজগঞ্জে অটোরিক্সা ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে নিহত ৫

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে রোববার দুপুরে সিএনজিচালিত অটোরিক্সা ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে সিএনজিচালিত অটোরিক্সা ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছে। আজ রোববার বেলা ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ-নলকা আঞ্চলিক সড়কের ভদ্রঘাট কুঠিরচর এলাকায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। এঘটনায় অন্তত আরও দুজন আহত হয়েছেন বলে জানা যায়।

নিহতদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় জানা গেছে; তারা হলেন- রায়গঞ্জ উপজেলার ব্রাক্ষবয়রা গ্রামের রাসেদুল ইসলাম, তাড়াশ উপজেলার ভাটড়া গ্রামের নুরুজ্জামান ও তারেক রহমান।

কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, রোববার বেলা ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ থেকে নলকাগামি একটি সিএনজি অটোরিক্সা সিরাজগঞ্জ-নলকা আঞ্চলিক সড়কের কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট কুঠিরচর এসিআই মিলের সামনে পৌঁছলে বিপরীতমুখী একটি মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ বাধে। এতে ঘটনাস্থলেই রাসেদুল, নুরুজ্জামান ও তারেক নিহত হয়। আহত হয় আরও দুই জন। পুলিশ ও ফায়ার ব্রিগেডের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে আরও দুইজন নিহত হয়।


যমুনা নদীতে রেলসেতুর ৯৪ শতাংশের কাজ শেষ

*চলছে ঘষামাজা ও রঙয়ের কাজ *ডিসেম্বরেই উদ্বোধনের সম্ভাবনা
নির্মাণাধীন রেলসেতু পুরো দৃশ্যমান। ছবি:  দৈনিক বাংলা।
আপডেটেড ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০৮
ফরমান শেখ, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের প্রমত্তা যমুনা নদীর ওপর নির্মিত যমুনা সেতু থেকে ৩০০ মিটার অদূরে দেশের দীর্ঘতম নির্মাণাধীন রেলসেতু এখন পুরোটাই দৃশ্যমান। নির্মাণাধীন এই সেতুটিতে বসানো হয়েছে সব কটি স্প্যান। ইতোমধ্যে সেতুটির ৯৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানা গেছে। বাকি রয়েছে মাত্র ৬ শতাংশ কাজ। এ কাজ শেষ হলেই ডিসেম্বরে হবে উদ্বোধন। এতে বিরতিহীনভাবে ৮৮টি ট্রেন দ্রুতগতিতে পারাপার হতে পারবে।

খবর নিয়ে জানা গেছে, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের সেতুর পূর্ব প্রান্তে কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে এবং সিরাজগঞ্জের পশ্চিম প্রান্তেও পুরোপুরি কাজ শেষের দিকে বলে জানা যায়। এ ছাড়া সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম স্টেশন আধুনিকায়নের কাজও শেষ পর্যায়ে।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিডি) আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান দৈনিক বাংলাকে জানান, ‘নির্মাণাধীন রেলসেতুর কাজ ইতোমধ্যে ৯৪ শতাংশ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া নির্মাণ ব্যয়ও বাড়ছে না। চলছে ঘষামাজা ও রঙের কাজ। আশা করছি, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে উদ্ধোধন করা যাবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে দ্রুত গতিতে রাতদিন কাজ করা হচ্ছে।’

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, নির্মাণাধীন সেতু দিয়ে সাধারণ ট্রেন ছাড়াও দ্রুতগতির (হাইস্পিড) ট্রেনও চলাচলের উপযুক্ত করে নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে সেতুতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে। তবে শুরুতে (উদ্বোধনের ১ বছর) সাধারণত ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে।

এই প্রকল্পে খবর নিয়ে জানা গেছে, ২০২১ সালে মার্চ মাসে সেতুটির ৩০০ মিটার উজানে পাইলিংয়ের মাধ্যমে রেলসেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে নির্মাণকাজের ব্যয় প্রথমে ধরা হয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। পরবর্তীতে এ প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয়। এতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে দেশীয় অর্থায়ন ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। অবশিষ্ট ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।

ডব্লিউডি-১ ও ডব্লিউডি-২ নামে দুটি প্যাকেজে জাপানি ৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। নির্মাণাধীন এ সেতুটির সবকটি স্প্যান এরই মধ্যে বসানো হয়েছে। যমুনা নদীর পূর্ব টাঙ্গাইলের অংশের পুরোপুরি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অপরদিকে পশ্চিম প্রান্ত সিরাজগঞ্জে পুরোপুরি কাজ শেষের দিকে রয়েছে। এ ছাড়া সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের স্টেশন আধুনিকায়নের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে নেওয়া প্রকল্পে চূড়ান্ত নকশা প্রণয়নসহ রেল সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ধরা হয়েছিল। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) দেশের বৃহত্তর এ রেলসেতু নির্মাণে ৭ হাজার ৭২৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। প্রথম দফা ডিপিপি সংশোধনের পর সেতুর নির্মাণ ব্যয় ৭ হাজার ৪৭ কোটি টাকা বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় দাঁড়ায়।

এই রেল সেতুর সমান্তরাল ডুয়েলগেজ ও ডাবল ট্র্যাকসহ প্রায় ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার রেলসেতুর দুই পাশে ০.০৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, ৭ দশমিক ৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট এবং লুপ ও সাইডিংসহ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পে রেলপথের পাশাপাশি সেতুর গ্যাস সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে।

১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতিসীমা। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সেতুটি নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। এরপর ২০২১ সালের মার্চে রেল সেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়।


নেত্রকোনায় যৌথবাহিনীর অভিযানে পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার, আটক ৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নেত্রকোনা প্রতিনিধি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গাড়ি থেকে লুট হওয়া ১০টি আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে আরও একটি ৯ এম এম পিস্তল ও আরেকটি অস্ত্রের অর্ধাংশ উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনী। এ ঘটনায় পূর্বধলা থেকে এক নারীসহ ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এ নিয়ে লুট হওয়া ১০টি অস্ত্রের ৯টি পুরোপুরি ও একটি আংশিকভাবে উদ্ধার হলো।

গত ৪ আগস্ট নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার শ্যামগঞ্জ বাজারে পুলিশের গাড়িতে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার সময় পুলিশকে মারধর করে ১০টি ৯ এম এম পিস্তল, ২৬টি ম্যাগাজিন, ৪২০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ৪০ রাউন্ড রাইফেলের গুলি এবং ৩২টি সক্রিয় কাঁদানে গ্যাস শেল লুট করে দুর্বৃত্তরা। এরপর গত এক মাসে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে দফায় দফায় অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার একটি অস্ত্র উদ্ধার হয় মসজিদের ভেতর পরিত্যক্ত অবস্থায়। আর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পূর্বধলার সোয়াই নদী থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার হয় আরেকটি অস্ত্রের অর্ধাংশ।

অস্ত্র লুটের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটকরা হলেন- পূর্বধলা উপজেলার জামাইকোণা গ্রামের মৃত হাজী তালেব আলী সরকারের ছেলে মো. আতাউর রহমান (৩৯), জালশুকা গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম (২৩), গোহালাকান্দা গ্রামের আসাদুজ্জামানের ছেলে মো. সাব্বির হোসেন খান (১৮), মো. আব্দুল কাদেরের ছেলে মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম (২৫), এবং ময়মনংসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মহিলাকান্দা গ্রামের মোছা. জান্নাতুল ফেরদৌস (২৬)। তার স্বামীর নাম ছোটন সরকার।

নেত্রকোনা অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পের মেজর জিসানুল হায়দার জানান, এই অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে নেত্রকোনা সেনা ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন সাজিদ বিন রওশনের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালনা করেন পূর্বধলা ক্যাম্পের কমান্ডার ক্যাপ্টেন এ এম এন আকিব। এ সময় নেত্রকোনা জেলা প্রশাসনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জীত সরকার।

মেজর জিসানুল হায়দার আরও জানান, লুটকরা অস্ত্র, গোলা-বারুদসহ অন্যান্য অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে গত মঙ্গলবার থেকে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে বিজিবি, পুলিশ, র‍্যাব এবং আনসার সদস্যের সমন্বয়ে যৌথবাহিনীর অভিযান শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার পূর্বধলা থানাধীন শ্যামগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন স্থানে রাতভর যৌথবাহিনীর অভিযান চলে। এতে সেখানে ব্যাপক জনমত এবং সচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং এর ফলে গত শুক্রবার গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও স্থানীয়দের সহায়তায় জালশুকা কুমুদগঞ্জ জামে মসজিদের ভেতরে পাওয়া এক শপিং ব্যাগে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় একটি ৯ এম এম পিস্তল এবং একটি পিস্তলের ম্যাগাজিন উদ্ধার করে সেনা সদস্যরা। অস্ত্র লুটের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গতকাল শনিবার দুপুরের দিকে নেত্রকোনা পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ জানান, মোট দুটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। একটি সেনাবাহিনী যৌথ অভিযানের মাধ্যমে উদ্ধার হয়েছে এবং আরেকটি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পূর্বধলা উপজেলার সোয়াই নদী থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়। সেখানে একটি অস্ত্রের অর্ধেক অংশ পাওয়া গেছে। বাকি অর্ধেক অংশ এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।


সংসদ ভবন থেকে হারিয়েছে পলকের ২ আগ্নেয়াস্ত্র

জুনাইদ আহমেদ পলক। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ২০:৫৮
নাটোর প্রতিনিধি

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র জমা না দেওয়ায় সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের দুটি আগ্নেয়াস্ত্র এখন অবৈধ অস্ত্র হিসেবে বিবেচিত হবে বলে জানিয়েছে নাটোরের পুলিশ। তবে জানা গেছে, পলকের নামে লাইসেন্স করা অস্ত্র শেখ হাসিনার সরকার পতনের দিনই খোয়া গেছে।

সরকার পতনের পর সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। তার নামে লাইসেন্স করা দুটি আগ্নেয়াস্ত্র রাখা ছিল জাতীয় সংসদ ভবনে।

শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর গণভবন ও সংসদ ভবন নিয়ন্ত্রণে নেয় হাজারো মানুষ। বিজয় উদযাপনের পাশাপাশি লুটপাটও চলে ভবন দুটিতে। সে সময় অন্যান্য মালামালের সঙ্গে পলকের সংসদ ভবনের অফিস কক্ষে রাখা তার আগ্নেয়াস্ত্র দুটিও লুট হয়।

নাটোরের পুলিশ সুপারের কার্যালয় জানিয়েছে, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া সময় ৩ সেপ্টেম্বর পার হয়েছে। অস্ত্র দুটি নাটোর প্রশাসনের কাছে বা থানায় কেউ জমা দেয়নি। ফলে আগ্নেয়াস্ত্র দুটি এখন অবৈধ অস্ত্র হিসেবে বিবেচিত হবে এবং তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন।

নাটোরের পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন গণমাধ্যমকে জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় লাইসেন্স দেওয়া ৯৫টি অস্ত্রের মধ্যে নির্ধারিত সময়ে ৮৯টি অস্ত্র জমা পড়েছে। যে ছয়টি জমা পড়েনি, তার মধ্যে দুটি সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলকের ও দুটি এমপি শিমুলের। এখন এগুলো অবৈধ বলে ঘোষিত হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথবাহিনী কাজ করছে।


সিরাজগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলেসহ নিহত ৩

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সিরাজগঞ্জ জেলায় বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর ট্রাকের পেছনে বাসের ধাক্কায় বাবা-ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন বাসযাত্রী। আজ শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতুর ১৩ নং পিলারের উপর এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ধানবান্ধি এলাকার রহিজ উদ্দিন ও তার ছেলে শাহরিয়ার রিপু ও সদর উপজেলার বনবাড়িয়া এলাকার বাবু শাহার ছেলে চন্দ্র শেখর।

বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী ঢাকা এক্সপ্র্রেস পরিবহণের একটি যাত্রীবাহী বাস ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সেতুর ১৩নং পিলারের কাছে এসে পৌঁছলে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনে থাকা একটি পাথর বোঝাই ট্রাককে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে বাসটির সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনযাত্রী। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের উদ্ধার করে। আহতদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ওসি আরও বলেন, দুর্ঘটনা কবলিত বাসটিকে রেকার দিয়ে সরিয়ে সেতুর উপর যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। ট্রাকটি নিয়ে চালক পালিয়ে গেছে।


চমেকের ক্যান্টিনে বকেয়া রেখে আত্মগোপনে ছাত্রলীগ নেতারা

৫০ নেতা-কর্মীর বাকি ৪ লাখ টাকা!
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো

মো. রফিকুল ইসলাম। ২০০৭ সালে দায়িত্ব নিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান ছাত্রাবাসের ‘বেলাল স্মৃতি মেস’ নামক ক্যান্টিনের; কিন্তু এ ক্যান্টিন (মেস) থেকে আয় করে লাভের চেয়ে ক্ষতির পাল্লাই ভারী হয়েছে তার। এ পর্যন্ত তার বাকির খাতায় উঠেছে চার লাখ টাকারও বেশি। গত পাঁচ বছরেই বেড়েছে বাকি খাতার টাকার পরিমাণ। আর এসব টাকা ছাত্রলীগ নেতাদের কাছ থেকে পাওনা তিনি।

রফিকুলের ভাষ্য, বিভিন্ন সময়ে খাবার খেয়ে টাকা না দিয়ে চলে যেতেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। টাকা চাওয়ায় ছাত্রলীগ নেতাদের হাতে তিনি মারধরের শিকার হয়েছেন। তবে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর ছাত্রলীগ নেতারা আত্মগোপনে চলে গেছেন। রফিকুলের বাকি টাকা আদায়ও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। রফিকুল জানান, বাকিখোরদের দলে ছিল প্রায় ৫০ জন। তবে নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের নাম বলতে চাননি তিনি।

তিনি বলেন, ২০০৭ সালে তিনি ক্যান্টিন পরিচালনার দায়িত্ব নেন। গ্রাহক ছিল এমবিবিএস ৪৬তম ব্যাচ থেকে ৬২তম ব্যাচ এ সময়ের ছাত্ররা। এই ১৭ বছরে ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা খেয়ে বিল পরিশোধ না করায় বকেয়া জমেছে ৪ লাখ টাকার ওপরে।

রফিক বলেন, এর মধ্যে ২০২৩ সালে বকেয়া বিলের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। ওই এক বছরে ছাত্রলীগের বাকির খাতায় লিখিয়েছে আড়াই লাখ টাকা।

জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা প্রতিদিন খাওয়ার বিল পরিশোধ না করলেও সব ভালো খাবার তারা রুমে নিয়ে যেত। ৪৫ থেকে ৫০ জন বাকিখোরের দলে ছিল। প্রতিদিন সকালে খিচুড়ি, ডিম ওমলেট পাওয়া যায় ক্যান্টিনে, দাম ৪৫ টাকা। দুপুরের মেন্যুতে ফার্মের মুরগি, ভাত, ডাল, সবজির প্যাকেজ দাম নির্ধারিত ছিল ৮০ টাকা। দেশি মুরগি থাকলে দাম ৯০ টাকা। আর প্যাকেজে গরুর মাংস থাকলে দাম পড়ে ১০০ টাকা। সপ্তাহে পোলাও শুক্রবার ও খিচুড়ি নির্ধারিত রয়েছে মঙ্গলবার। এর সঙ্গে মাছ, সবজি, ভাত মিলে প্যাকেজ ৭০ টাকা।

আরও জানা গেছে, ক্যান্টিনে খাবার দেওয়া শুরু হয় সকাল ৭টা থেকে ১০টা, দুপুরে সাড়ে ১২টা থেকে আড়াইটা ও রাতে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতারা নির্ধারিত সময়ের আগেই মেসে এসে রান্নাঘর থেকেই রান্না করা ভালো খাবারগুলো নিয়ে রুমে চলে যেতেন। পোলাও, গরুর মাংস কখনোই ছাত্রাবাসের সাধারণ ছাত্রদের কপালে জুটত না। বিল চাইলে ছাত্রলীগ নেতারা বলত, ‘টাকা তো দিবই। না দিয়ে থাকব নাকি?’ দুই-তিন মাস পরপর এক-দেড় হাজার টাকা দিয়ে আবার বাকির খাতায় নাম লিখাত তারা। বাকি টাকা আদায় প্রসঙ্গে ক্যান্টিনের ব্যবস্থাপক রফিক বলেন, ‘যারা বাকি খেয়েছে, তারা জানে কত টাকা বাকি খেয়েছে। আমি গরিব মানুষ। ক্যান্টিনে ব্যবসা করে সংসার চালাই। আমার টাকা যদি পরিশোধ করে আলহামদুলিল্লাহ। না দিলেও আলহামদুলিল্লাহ। কারণ আমি প্রতিবাদ করতে পারব না। আমাকে রাস্তাঘাটে মেরে ফেলে রাখবে। তাই আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে রাখছি।’

টাকা চাইলে করত মারধর

জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই ছাত্রলীগের একাংশের নেতা আসেফ বিন তাকির বেধড়ক পেটান রফিককে। বাকি টাকা চাওয়ার কারণেই এভাবে মারধর করা হয় তাকে। তবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তারের কাছে লিখিত অভিযোগে রফিক ‘চাঁদা না দেওয়ায়’ তাকে মারধর করা হয় বলে উল্লেখ করেন। তাকির তখন হাসপাতালের ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। এভাবে আরও দুবার টাকা চাইতে গিয়ে মারধরের শিকার হন রফিকুল। আজ সরেজমিন ছাত্রাবাসে দেখা গেছে, সাধারণ ছাত্ররা তাদের পছন্দমতো খাবার নিয়ে খেতে পারছেন। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বাকি খাওয়া বন্ধ ঘোষণা করেছে কলেজ প্রশাসন। কলেজ থেকে ছাত্রাবাসে ভর্তুকির ব্যবস্থা করা হবে। এতে খাবারের মূল্য তালিকা কম রাখা হবে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিব হাসান বলেন, ‘আমরা ছাত্র ও ক্যান্টিন ব্যবস্থাপক রফিককে নিয়ে একটা কমিটি করে দিয়েছি। প্রতি সপ্তাহে কমিটির একেকজন রফিকের সঙ্গে বাজার করতে যাবে। তাহলে বাজারদরের প্রকৃত চিত্র বোঝা যাবে। কমিটির সুপারিশ মোতাবেক খাদ্য তালিকায় থাকা খাবারের দাম নির্ধারণ করা হবে। কলেজ থেকে ক্যান্টিনে ভর্তুকি দেওয়া হবে। যাতে খাবারের মান ভালো হয়। আর কোনোভাবেই ছাত্ররা ক্যান্টিনে বাকি খেতে পারবে না।


চট্টগ্রামে বন্যায় এক লাখ ৫৩ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট

বিরূপ প্রভাব পড়ছে দেশের খাদ্য নিরাপত্তায়
ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো

দেশে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় কৃষি সেক্টরে মারাত্মক রকমের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে, যা কৃষি উৎপাদনসহ খাদ্য নিরাপত্তায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জমিতে লাগানো আমন ধান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে বীজতলাও। আবার নতুন করে বীজতলা তৈরি করে চারা গজিয়ে চাষাবাদ করা আদৌ সম্ভব হবে কি না তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বৃহত্তর চট্টগ্রামের কৃষি অঞ্চলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালীসহ ৫টি জেলা, ৪২টি উপজেলা ও ৩টি মেট্রোথানার সমন্বয়ে গঠিত। ১৪ হাজার ৪২৩ দশমিক ২২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বিস্তৃত এই অঞ্চলে প্রায় দুই কোটি মানুষের বসবাস। এ অঞ্চলের প্রধান ফসল ধান। এ ছাড়া চা, ভুট্টা, গোলআলু, বাদাম, তরমুজসহ বিভিন্ন ফলমূল ও শাকসবজি উৎপাদিত হয়। ফেনী ও কক্সবাজার জেলা মূলত ধান উৎপাদন এলাকা। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, ফটিকছড়ি অঞ্চলেও প্রচুর ধানচাষ হয়ে থাকে। চট্টগ্রাম খাদ্য ঘাটতির একটি অঞ্চল। এখানে প্রচুর বাইরের লোকের বসবাস হওয়ায় এই অঞ্চলটিতে খাদ্য ঘাটতি রয়েছে। যা দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে এনে জোগান দিতে হয়।

চট্টগ্রামে ধানচাষের একটি বড় অংশ দখল করে থাকে আমন। প্রচুর ফলন আসে এই মৌসুমের চাষ থেকে। কৃষকেরা তাদের জমিতে একটু আগেভাগে আমন লাগিয়ে দ্রুত ফসল ঘরে তুলতে চান। এবারও প্রচুর জমিতে আমনের চাষ হয়েছিল চট্টগ্রাম কৃষি অঞ্চলের এলাকাগুলোতে। চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, হাজার হাজার একর আমন চাষ সম্পন্ন করে কৃষকেরা উৎসবমুখরভাবে ঘরে ফিরলেন, তখনই ভয়াল বন্যা সব তছনছ করে দিল।

শুধু চট্টগ্রামেই প্রায় ৫শ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা বলেন, আসলে টাকার অংকে এই ক্ষতি নিরূপণ করা যাবে না। ফসলপ্রাপ্তি নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হল তা সামাল দেওয়া কঠিন হবে। তিনি বলেন, একজন কৃষক তার সর্বস্ব খরচ করে চাষাবাদ করলেন। তা ধ্বংস হয়ে গেল। এখন নতুন করে আবার চাষ করার মতো অবস্থা ওই কৃষকের নেই। হয়তো দেখা যাবে জমিটি খালি পড়ে রয়েছে। কোন ফসলই ওই জমি থেকে এই মৌসুমে আর পাওয়া যাবে না। এই ক্ষতির প্রভাব ব্যাপক বলেও তিনি মন্তব্য করেন। কৃষি বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম কৃষি অঞ্চলে এবারকার বন্যায় সর্বমোট ১ লাখ ৫৩ হাজার ১০৩ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে অনেক জমিই খালি পড়ে থাকবে বলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন।

কৃষি বিভাগের কাছ থেকে প্রাপ্ত হিসেব মতে, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, ফটিকছড়ি, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, চন্দনাইশ ও বাঁশখালী উপজেলার ধানি জমিতে বন্যা মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলেছে। ওই সাত উপজেলায় বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ১ হাজার ৯২২ হেক্টর সবজি বাগান। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আউশ ও আমন খেত। আমন ধানের উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রায় অর্জিত না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করে বলেছেন, টাকার অংকে চট্টগ্রামে আমনের ক্ষতি ২৫২ কোটি টাকা উল্লেখ করে সরকারের কাছে রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এই ক্ষতি অপূরণীয় বলেও তারা মন্তব্য করেছেন।

মাঠ কর্মকর্তারা জানান, আমনের ক্ষয়ক্ষতি এত ব্যাপক হয়েছে যে বহু কৃষকই নিঃস্ব হয়ে গেছেন। চট্টগ্রাম জেলায় এবার ১ লাখ ২ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হয়। এর মধ্যে বন্যায় তলিয়ে গেছে ৪৩ হাজার ৫শ হেক্টর জমির ফসল। তলিয়ে যাওয়া আমন ক্ষেতের মধ্যে ১৩ হাজার ৮৩১ হাজার হেক্টর জমির ধান সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চট্টগ্রামে এই বন্যায় মোট ১ লাখ ৬১ হাজার ৩৭১ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যাদের অনেকেরই আর চাষাবাদ করার মতো সামথ্য নেই।

আবার চলতি মাসেই আউশ ধান ঘরে তোলার কথা ছিল কৃষকদের; কিন্তু বন্যায় তাও নষ্ট করে দিয়েছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় ৩৩ হাজার ১ হেক্টর জমিতে আউশের চাষ হয়েছিল। এরমধ্যে ৮ হাজার ৩৮৩ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে কোটি কোটি টাকার ফসলহানি হয়েছে বলেও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। চট্টগ্রামে আমন এবং আউশ ধানের যে ক্ষতি হয়েছে তা খাদ্য ঘাটতির এই জেলাটিতে মারাত্মক রকমের প্রভাব ফেলবে বলে মন্তব্য করে বলা হয়েছে, এই ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের বেশ বেগ পেতে হবে। চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবদুচ ছোবহান বলেন, ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক। তবে আমরা কিছুটা আশাবাদী যে, চট্টগ্রামে আমন ধান কিছুটা দেরিতে লাগানো হয়। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমন লাগানো যাবে। তবে চারার যেই সংকট তা কাটিয়ে উঠা গেলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।


ফেনীতে ‘স্ট্রাইক ফর ওয়াটার জাস্টিস’ কর্মসূচি পালিত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ফেনীর পরশুরাম সীমান্তে মুহুরী নদীর উজানে ভারতীয়রা বাঁধ কেটে ফেনীতে ভয়াবহ বন্যা সৃষ্টি এবং বৈষম্যের প্রতিবাদে ‘স্ট্রাইক ফর ওয়াটার জাস্টিস’ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে ট্রাঙ্ক রোডে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘আমরা ফেনীবাসী’ ব্যানারে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়।

কর্মসূচিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম-সম্পাদক পরিবেশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদারের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ, বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের আহবায়ক ও বাপার যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, বাপার যুগ্ম-সম্পাদক হুমায়ুন কবির সুমন, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, ফেনী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আব্দুর রহিম, দৈনিক ফেনীর সম্পাদক আরিফুল আমিন রিজভী, নারী নেত্রী নুর তানজিলা রহমান, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসাইন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ফেনীর সমন্বয়ক আব্দুল আজিজ, সমাজকর্মী ফজলুল হক, আমের মক্কি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক ইমাম হোসেন, কবি ও সমাজকর্মী আলাউদ্দিন আদর।

আমরা ফেনীবাসীর উদ্যোক্তা বুরহান উদ্দিন ফয়সালের সঞ্চালনায় আবদুল্লাহ হাসানের ব্যবস্থাপনায় ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন- সুজন ফেনী জেলার সম্পাদক ও সাংবাদিক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন পরিবেশ সাংবাদিক কেফায়েত শাকিল।

কর্মসূচিতে আন্তঃসীমান্তীয় সব নদী থেকে ড্যাম-ব্যারেজ অপসারণ করা, ইচ্ছাকৃতভাবে বাঁধ কেটে দেওয়ায় জাতিসংঘের সহায়তায় ভারতকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা, কেটে দেওয়া বাঁধটি অবিলম্বে পুনঃনির্মাণ করা, বাংলাদেশের পানির ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত, ফেনী নদী থেকে অবৈধভাবে পানি উত্তোলন বন্ধ করা, বন্যায় কৃষি, মৎস্য, পোল্ট্রিসহ অন্যান্য খাতে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ, প্রণোদনা ও সহজ শর্তে ঋণের সুযোগ সৃষ্টি, মুছাপুর ক্লোজার পুনঃনির্মাণে পদক্ষেপ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ভরাট করা খাল ও নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিশ্চিতসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে।

কর্মসূচিতে ইয়ুথ নেট গ্লোবাল, ফেনী জেলা স্বেচ্ছাসেবক পরিবার, মির্জা ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, লস্করহাট ব্লাড ডোনেশন ক্লাব, প্রয়াস, ফেনী ফ্লাড রেসপন্স টিম, মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, গ্রিন ভয়েস, ইকো রিভোলুশন, মিশন গ্রিন বাংলাদেশ বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ) আমরাই আগামীসহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


চৌদ্দগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ নিহত ৪

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৬:৩৫
বাসস

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে স্টার লাইন পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় একটি মাইক্রোবাসের চারজন যাত্রী নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা-নানকরা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে একজন শিশুও রয়েছে। তাৎক্ষণিক নিহতদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।

চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইস উদ্দিন জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনের চৌদ্দগ্রামের বাতিসা-নানকরা এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যান দাঁড়ানো ছিল। এ সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি মাইক্রোবাস পিকআপ ভ্যানটিকে ধাক্কা দেয়। মাইক্রোবাসের পেছনে ছিল ফেনী থেকে ঢাকাগামী স্টার লাইন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস। ওই বাসটি ধাক্কা দেয় মাইক্রোবাসটিকে। এতে ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়।

ওসি রইস উদ্দিন আরও বলেন, নিহত ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। মরদেহ এবং দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে।


যৌথ বাহিনীর অভিযান: কক্সবাজারে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক ৮

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৬:২৮
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার সদরের পিএমখালী এলাকা থেকে অস্ত্র ও গুলিসহ ৮ জনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। আজ শুক্রবার ভোরে যৌথ বাহিনীর পরিচালিত এক অভিযানে তাদের কাছ থেকে এই অস্ত্রগুলো জব্দ করা হয়। এছাড়াও ২টি বিদেশী পিস্তল, ৩টি ওয়ানশুটার গান, ২টি এলজি পিস্তল, ৪৮ রাউন্ড কার্তুজ, ৩টি ম্যাগাজিন, ৫টি দামা, ২টি কিরিচ, ১টি চাইনিজ কুড়াল এবং ১টি চেইন উদ্ধার করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওশের ইবনে হালিমের উপস্থিতিতে কক্সবাজার সদরের পিএমখালী ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব এবং বিজিবির সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনী এ অভিযান পরিচালনা করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারস্থ র‌্যাব ১৫-এর সিনিয়র সহকারি পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম চৌধুরী।

গ্রেপ্তাররা হলেন, ওই এলাকার কলিম উল্লাহ (৩৪), মো. খোরশেদ আলম (৩৭), মো. হাসান শরীফ লাদেন (২০), মো. শাহিন (২৩), মো. মিজান (২০), আব্দুল মালেক (৪৮), আব্দুল হাই (২৪) ও আব্দুল আজিজ (২৫)।

মো. আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠি। পিএমখালীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল মর্মে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে মামলা করে কক্সবাজার সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।


কুমিল্লায় শোবার ঘরে ঢুকে মা ও শিশুসহ ৩ জনকে ‘হত্যা’

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সারাবাংলা ডেস্ক

কুমিল্লায় নিজ ঘরে মা-ছেলেসহ তিনজনকে শ্বাসরোধ ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার বড় ঘাগুটিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন।

নিহতদের মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করেছেন বলেও জানান তিনি। নিহতরা হলেন- ওই গ্রামের শাহপরানের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার (৩৫), তাদের ছেলে শাহাদ (৯) এবং শাহপরানের মামাতো ভাইয়ের মেয়ে তিশা (১৪)। মো. শাহপরান ঢাকায় চাকরি করেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ওসি জানান, শাহ পরান ঢাকায় চাকরি করেন। বুধবার রাতে তার স্ত্রী, শিশু সন্তান এবং প্রতিবেশী মামাতো ভাইয়ের কিশোরী মেয়ে তিশা ঘুমিয়েছিল। রাতের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা তাদের হত্যা করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে খাটের ওপর রেখে পালিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয়রা তিন জনের মরদেহ একই কক্ষে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ মরদেহগুলো উদ্ধার করেছে। মরদেহগুলোর মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে। ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান তিনি।

কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (হোমনা সার্কেল) মীর মহসিন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে তিনজনের মরদেহ একই কক্ষে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ সদস্যরা মরদেহগুলো উদ্ধার করেছে। তিনটি মরদেহের মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে। প্রাথমিক তদন্তে তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করছি। মরদেহগুলো উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’


কক্সবাজার বারে মদপানে পারমিটের প্রয়োজন পড়ে না!

* উঠতি বয়সী যুবকদের হাতে মদের গ্লাস * বারে মদ পানে প্রয়োজন পড়ে না পারমিটের * দিন দিন বাড়ছে সামাজিক অবক্ষয় * প্রশাসন নিরব
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ২১:০৩
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের বিলাসবহুল হোটেল সায়মন। যেখানে রয়েছে অনুমোদিত মদের বার। বারে সুন্দর করে সাজানো রয়েছে দেশি ও বিদেশি মদ। যে কেউ বারে গিয়ে অর্ড়ার করলে টেবিলে চলে আসছে যেকোন ব্রান্ডের মদ বা অ্যালকোহল। শুধু হোটেল সায়মনই নয়, কক্সবাজারের যতগুলো বার রয়েছে দেশের প্রচলিত আইনকে তোয়াক্কা না করে এভাবে বার চালাচ্ছেন মালিকরা। তাদের ব্যবসা বাড়াতে দেখছে না কার কাছে মদপানের পারমিট আছে আ কার কাছে নেই!

আর এভাবে অ্যালকোহল বা মদ পান করার পারমিট না থাকলেও কক্সবাজার এলেই অনায়াসে এই অ্যালকোহল বা মদ পাওয়া যাবে হাতের নাগালেই। মদের বার নিয়ে বসে আছে পর্যটন শহরে প্রায় ১০টি মদের বার। ব্যবসায়িরা তাদের ব্যবসা বাড়াতে পারমিটবিহীন উঠতি বয়সি যুবক, ছাত্র ও স্থানীয়দের হাতে তুলে দিচ্ছে এই অ্যালকোহল বা মদের গ্লাস। যার কারণে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের উঠতি বয়সি ছেলেরা মদ্যপানের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। এব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন কোন এক অদৃশ্য কারণে নিরব ভুমিকা পালন করছে বলে জানা গেছে। তারা বলছে, এটি পর্যটন নগরী কিছুটা শীতলতা থাকা দরকার। পর্যটন এলাকায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটক আসে তাদের আনন্দ যেন মলিন না হয়, সেদিকে খেয়াল রেখে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন না সবসময়।

স্থানীয়রা মনে করছে, প্রশাসনের এমন অবহেলার কারণে মানা হচ্ছে না দেশের প্রচলিত আইন। অ্যালকোহল বা মদ ব্যবসায়িরা এমনভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছে। যার কারণে সমাজ দিন দিন অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এদিকে ট্যুরিষ্ট এলাকায় দিনে চুরি ছিনতায়ও বেড়েছে বলে জানা গেছে। বিধিমালায় আছে, ২১ বছরের নিচে কোনো ব্যক্তিকে মদ্যপানের পারমিট বা অনুমতি দেয়া যাবে না। এর বেশি বয়সি যে কেউ পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে মুসলিমদের ক্ষেত্রে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পদমর্যাদার কোনো ডাক্তারের সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে। একজন পারমিটধারীর কাছে এককালীন সর্বোচ্চ তিন ইউনিট এবং মাসে সর্বোচ্চ সাত ইউনিটের বেশি অ্যালকোহল বিক্রি করা যাবে না। তবে বিশেষ পারমিটধারীর কাছে এই পরিমাণ অ্যালকোহল এককালীন বিক্রি করা যাবে। একই ব্যক্তির নামে একই মেয়াদে বিদেশি এবং দেশি অ্যালকোহলের পারমিট ইস্যু করা যাবে না। পারমিটধারী ক্লাব মেম্বাররা ক্লাবের নির্ধারিত স্থানে বসে মদ্যপান করতে পারবেন। এই বিষয়টা কক্সাবাজরের ক্ষেত্রে ভিন্নতায় রূপ নিয়েছে। প্রশাসন অদৃশ্য কারণে নিরব থাকায় যে কেউ গেলে অ্যালকোহল বা মদ কিনে নিয়ে আসতে পারবে বা বারে বসে পান করতে পারে এমনটা নজরে এসেছে।

কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেল এলাকার বারগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, বেশিভাগ ২০ থেকে ২৫ বছর উঠতি বয়সি তরুণ-তরণীরা তাদের মদ পানের পারমিট না থাকলেও বারে বসে তা পান করছে। অ্যালকোহল বা মদ উৎপাদন, কেনাবেচা, পান করা, পরিবহন, আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে নিয়মনীতি স্পষ্ট করে প্রথমবারের মতো বিধিমালা করেছে সরকার। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগ থেকে ‘অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ২০২২ জারি করা হয়েছে। ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর আওতায় বিধিমালাটি করা হয়েছে। এতদিন ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮’, ‘অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ (লাইসেন্স ও পারমিট ফিস) বিধিমালা ২০১৪’, ‘মুসলিম প্রহিবিশন রুল ১৯৫০ও ‘এক্সাইজ ম্যানুয়াল (ভল্যুম-২)’ ও বিভিন্ন নির্বাহী আদেশ দিয়ে অ্যালকোহল সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রিত হতো। অনেক ক্ষেত্রেই ছিল অস্পষ্টতা। এতে বিভিন্ন সময়ে নানা জটিলতার সৃষ্টি হতো।

বিধিমালা অনুযায়ী, মদ কেনাবেচা, পান, পরিবহনের ক্ষেত্রে নিতে হবে লাইসেন্স, পারমিট ও পাস। কোথাও কমপক্ষে ১০০ জন মদের পারমিটধারী থাকলে ওই এলাকায় অ্যালকোহল বিক্রির লাইসেন্স দেওয়া হবে। এদিকে বিধিমালার ৩য় অধ্যায়ে অ্যালকোহল পান, ইত্যাদি সম্পর্কে বিধি-নিষেধ সম্পর্কে বলা হয়েছে, পারমিট ব্যতীত কোনো ব্যক্তি অ্যালকোহল পান করিতে পারিবেন না এবং চিকিৎসার প্রয়োজনে সিভিল সার্জন অথবা সরকারি মেডিক্যাল কলেজের কোনো সহযোগী অধ্যাপকের লিখিত ব্যবস্থাপত্র ব্যতীত কোনো মুসলমানকে অ্যালকোহল পান করার জন্য পারমিট প্রদান করা যাবে না বলে উল্লেখ আছে। কিন্তু এমনটা মানা হচ্ছে না পর্যটন শহর কক্সবাজারে।

সম্প্রতি ককক্সবাজারের হোটেল সায়মন এর বারে গিয়ে দেখা গেছে, চেয়ারে অধিকাংশ ছাত্র ও উঠতি বয়সি যুবক, যাদের কাছে কোন ধরণের পারমিট নেই । তারপরেও হোটেল কর্তৃপক্ষ তাদের মদ সরবরাহ করছে পান করার জন্য।

একইদিন ট্যুরিষ্ট পুলিশ কার্যালয়ের পাশে কয়লার একটি বারে দেখা যায় এটি বার নয় যেন ভাতের দোকান। তিল পরিমাণ ঠাই নেই। মানুষে ভরা বারটিতে যারা বসেছে তাদের মদ পানের অনুমতি আছে কিনা ঐ বারের এক কর্মচারির কাছে জানতে চাইলে তিনি এই বিষয়ে কিছু বলতে নারাজ বলে পাস কাঠিয়ে চলে যান।

এদিকে কক্সবাজার মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারে একটি দেশিয় মদ বিক্রি দোকান রয়েছে যারা শুধু দেশিয় মদ বিক্রি করতে পারবে আর হোটেল এলাকায় ১০টির মতো বারের অনুমতি রয়েছে যেখানে দেশির মদসহ মদপানে পারমিটধারিদের বিক্রি করা ও বসে পান কার যাবে। ১০টি বারগুলো হলো রেনেসা, কয়লা, সিগ্যাল হোটেল বার, ওশান প্যারাডাইস হোটেল বার, হোটেল সায়মন বার, সি প্যালেস হোটেল বার, সি ক্রাউনসহ আরও কয়েকটি।

এই পর্যটন শহরে মদ বিক্রি করার জন্য কোন বৈধ পারমিটধারির প্রয়োজন পড়েনা। কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররাও রাতে এসে পর্যটন শহরের বিভিন্ন বারে বসে মদ পান করলেও প্রশাসনের কোন ধরনের খবর নেই। যার কারণে সামাজিক অবস্থার দিন দিন অবক্ষয় হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় সচেতন মহল।

কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের সভাপতি আ ন ম হেলাল উদ্দিন জানান, সমাজ অবক্ষয়ের একমাত্র মাধ্যম এই মাদক। কক্সবাজার শহরে মদ বিক্রির বার রয়েছে, যারা বিক্রি করেন তাদের সচেতন হওয়া দরকার। এ মদ কাকে বিক্রি করবে তা নির্ধারণ করে তাদের পারমিট প্রদান করেছে। কিন্তু স্থানীয় বারগুলো এখন তা অমান্য করে ছাত্র থেকে শুরু করে যাদের পারমিট নেই সবাইকে মদ বিক্রি করছে তাদের ব্যবসা বাড়াতে। যার কারণে দিন দিন সামাজিক অবক্ষয় বাড়ছে।

সি প্যালেসের বার দায়িত্বরত কর্মকর্তা বাবুল হোসেন বলেন, আমরা বারে যারা পারডমটধারি যারা রয়েছে তাদের বিক্রি করে থাকি। যাদের পারমিট নাই তাদের আমরা মদ বা অ্যালকোহল বিক্রি করি না। যারা উঠতি বয়সি যুবকদের হাতে মদের গ্লাস ধরিয়ে দিচ্ছে তারা সমাজ বিনষ্ট করছে। আর এই বিষয়ে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের খেয়াল রাখা উচিৎ।

কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সিরাজুল মোস্তফা জানান, কক্সবাজার শহরে ১টি দেশিয় মদ বিক্রি অনুমোধনসহ ১০টি বারে অনুমতি আছে। বারে যারা পারমিটধারি তারা বসে মদ পান করতে পারবেন। কিন্তু যাদের পারমিট নাই তাদের কোনভাবে মদ বিক্রি করা উচিৎ নয়। আবার আরেকটি বিষয় বলা যায় যেহেতু কক্সবাজার পর্যটন নগরী তাই এখানে কিছুটা ক্ষেত্রে শীতলতা রয়েছে। কারণ এখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটক আসে। তাদের যেন কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়তে না হয় সেই বিষয়টিও খেয়াল রাখা হয়। আবার বিদেশী পর্যটক রয়েছেন, যারা তাদের পাসপোর্ট দেখিয়ে বারে মদ পান করতে পারবেন।


পাবনায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত ২

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পাবনা প্রতিনিধি

পাবনার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে দু’জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আজ বুধবার সকালে বাস টার্মিনালের হালিম হোটেলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, পাবনা শহরের পূর্ব শালগাড়িয়ার মুজাহিদ ক্লাবের বাংলা বিড়ির গলির আরমান শেখের ছেলে মিলন হোসেন মধু (৪৫) ও পূর্ব রাঘবপুর এলাকার নুর আলীর ছেলে মঞ্জু প্রামাণিক (৪৪)।

নিহতদের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, সকালে বাস টার্মিনালের ভেতর স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে নিহত ব্যক্তিদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায় তাদের ছুরিকাঘাত করলে সামনের একটি খাবার হোটেলে এসে তারা পড়ে যায়। এ সময় আশপাশের লোকজন তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, দুটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে আপাতত রাখা হয়েছে। তাদের একজন শ্রমিক অপরজন পরিবহনের চাঁদা তুলতেন।

তিনি আরও বলেন, ঠিক কি কারণে এ ঘটনা ঘটছে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি তারপরে বিস্তারিত বলা যাবে।

বিষয়:

banner close