রংপুরের তারাগঞ্জে চিকলী নদীর শাইলবাড়ী খেয়াঘাটের বাঁশের সাঁকোটি তীব্র স্রোতে ভেঙে ভেসে গেছে। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন ১২ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ। সাঁকোর অভাবে এখন অতিরিক্ত চার কিলোমিটার পথ ঘুরে রিকশা কিংবা ভ্যানে করে উপজেলা শহরে যাতায়াত করতে হচ্ছে তাদের। স্থানীয়রা বলছেন, নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫২ বছরেও তারা এখানে কোনো সেতু পাননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে সাত কিলোমিটার দূরে শাইলবাড়ী গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে চিকলী নদী। নদীটির শাইলবাড়ী খেয়াঘাটে স্বাধীনতার পর থেকেই সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী। কিন্তু দীর্ঘ এ সময়ের পরিক্রমায় সেখানে কোনো পাকা সেতু নির্মাণ করা হয়নি। দুর্ভোগ কমাতে নদীপাড়ের লোকজন সেখানে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। কিন্তু গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নদীর পানি বেড়ে গেলে স্রোতের তীব্রতাও বেড়ে যায়। এতে দুর্বল ও অস্থায়ী বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে ভেসে গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশের সাঁকোটির মাঝ বরাবর ভেঙে নদীতে পড়ে আছে। সাঁকোর নিচে একটি অকেজো নৌকা পড়ে আছে। জরুরি প্রয়োজনে কেউ কেউ হাঁটুপানি মাড়িয়ে নদী পার হচ্ছেন। অনেকে আবার অতিরিক্ত পথ ঘুরে বিকল্প সড়কে উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করছেন।
শাইলবাড়ী গ্রামের মনোয়ারা বেগম আক্ষেপ করে বলেন, ‘ছবি তোলোছেন, এটা (এখানে) কি নয়া পুল (সেতু) হইবে? পুল না হইলে ভোট দিবার যাইমো না (যাব না)।’
মনোয়ারার সঙ্গে সুর মিলিয়ে দর্জিপাড়া গ্রামের রোকেয়া বেগম বলেন, ‘মোর (আমার) কোনো জমি-জাগা নাই। স্বামীর কোমরোত ব্যথার তকনে কাম কইরার পায় না (কোমরে ব্যথার কারণে কাজ করতে পারে না)। মোর কষ্ট দেখি ইউএনও স্যার শাইলবাড়ী ঘাটের পাশোত উচ্চগ্রামোত (উচ্চগ্রামে) পাকা ঘর (আশ্রয়ণ প্রকল্পের) দিছে। মাইনসের (অন্যের) বাড়িত কাম-কাজ করি আসি শান্তিতে ঘুমাও। কিন্তু বাঁশের সাঁকোর কোনা ভাঙি যাওয়ায় মোর তো যাওয়া-আইসার খুব সমস্যা হওছে।’
ভীমপুর গ্রামের দিনমজুর রহিদুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক কষ্ট করি চাঁদা তুলি এটে (এখানে) সোবায় মিলি সাঁকো কোনা বানাছনো। তাক (সেটি) এবার পানির স্রোতোত (স্রোতে) ভাঙি গেল। এতে হামার (আমাদের) যাতায়াতের খুব কষ্ট হওছে।’
মহেশখোলা গ্রামের আব্দুস সাত্তার (৬৫) বলেন, ‘যুদ্ধের পর থাকি যতোবারে ভোট হইছে, ততোবারে নেতারা কথা দিছে, এটে সেতু বানে (বানিয়ে) দিবে। কিন্তু ভোট শ্যাষ হইলে আর কাকো (কাউকে) পাওয়া যায় না। সবায় হামাক (আমাদের) আশা দেয়, কথা থোয় (রাখে) না। সেতুর আশায় জীবনই শ্যাষ হইল। তাও এটে সেতু হইল না। এটে সেতু বানাইতে কী সমস্যা?’
আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রাসেল বলেন, বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে পড়ায় দর্জিপাড়া, খ্যানপাড়, ডাঙ্গাপাড়া, মহেশখোলা, শাইলবাড়ী, নলুয়ারডাঙ্গা, প্রামাণিকপাড়া, কোরানীপাড়া, ভীমপুর, মৌলভীপাড়া ও বানিয়াপাড়াসহ ১২ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ না থাকায় সাঁকোটি সংস্কার করতে পারছি না। তবে এখানে পাকা সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে দাবি জানানো হয়েছে।
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী আহম্মেদ হায়দার জামান বলেন, সেতুর জন্য বরাদ্দ চেয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলে সেতুটি নির্মাণ করা হবে।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় অবৈধভাবে বালু অপসারণের অভিযোগে সজল পাল নামে এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের সালন এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনিসুল ইসলাম।
তিনি জানান, সজল পাল সরকারি বালু অবৈধভাবে অপসারণ করেছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে বালুগুলো জব্দ করে পুনরায় পূর্বের স্থানে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ সময় বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০-এর আওতায় তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে আদায় করা হয়।
রবিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ সকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ শুক্রবার বিকাল ৫ টায় নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ থানাধীন তারাবো ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে একটি নৌ দুর্ঘটনা ঘটে। বাল্কহেডের সাথে নৌকার সংঘর্ষের ফলে ৮ জন মাদ্রাসার ছাত্রসহ নৌকাটি নদীতে ডুবে যায়। অতঃপর ৮ জনের মধ্যে ৬ জন জীবিত উদ্ধার হলেও ২ জনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। উক্ত বিষয়টি জনৈক এক ব্যক্তি কোস্ট গার্ড কে অবগত করে।
প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কোস্ট গার্ড স্টেশন পাগলা কর্তৃক একটি উদ্ধারকারী দল অতি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান আরম্ভ করে। পরবর্তীতে আজ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ শনিবার বিকাল ৫ টায় কোস্ট গার্ড উদ্ধারকারী দল নিখোঁজ ২ কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার করে।
তিনি আরও বলেন, উদ্ধারকৃত মৃতদেহ ২ টি অভিভাবকদের উপস্থিতিতে ডেমরা নৌপুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
কক্সবাজারে মদ্যপানের পর স্বামীকে হত্যা করে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জনতার সহায়তায় আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে কক্সবাজার শহরের কলাতলী বাইপাস সড়কের উত্তরণ আবাসিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান, জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ট্রাফিক মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী।
তিনি জানান, নিহত রঞ্জন চাকমার মরদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। আটক বিরেল চাকমাকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞেসাবাদ করা হচ্ছে। ধর্ষণের শিকার নারী একই হাসপাতালে চিকিৎসাধিন। তাদের সকলের বাড়ি রাঙ্গামাটি।
মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, বিরেল চাকমা (৫৫) এর সাথে রঞ্জন চাকমার স্ত্রী পূর্ব পরিচিত। পূর্ব পরিচয়ের সূত্রে গত ৩ দিন আগে তার স্বামী রঞ্জন চাকমা কক্সবাজার এসে বিরেলের বাসায় অবস্থান করছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, কক্সবাজার বাস টার্মিনাল এলাকায় জসিম নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে পাওনা টাকা আদায় করার জন্য স্বামী-স্ত্রী বিরেলের বাসায় অবস্থান করছিলেন।
“ নিহতের স্ত্রীর জানিয়েছে, বিরেল চাকমা কয়েকদিন থেকে ওই নারীকে কুপ্রস্তাব দিতে থাকে। রাজি না হওয়ায় বিরেল চাকমা সংক্ষুব্ধ হয়। “
জেলা পুলিশের এ মুখপাত্র বলেন, “ শনিবার দিবাগত রাতে ওই বাসায় বিরেল চাকমা ও রঞ্জন চাকমা মিলে মদ্যপান করে। বিরেল চাকমা মাতাল অবস্থায় রঞ্জন চাকমার স্ত্রীকে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বললে রঞ্জন চাকমা ও বিরেল চাকমা'র বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে বিরেল চাকমা ধারলো দা দিয়ে রঞ্জন চাকমার মাথায় সজোরে কোপ মেরে হত্যা করে। তারপর বিরেল চাকমা ওই নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। “
জসিম উদ্দিন জানান, পরে ওই নারী কৌশলে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় চিৎকার দিয়ে আশপাশের লোকজনের সাহায্য চায়। এতে স্থানীয়রা সেখানে জড়ো হলে বিরেল চাকমাকে শরীরে রক্তমাখী অবস্থায় ব্যাগ হাতে পালিয়ে যেতে দেখতে পায়। এসময় তাকে ধৃত করে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
আটক আসামী বিরেল চাকমার বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রামে দুদিন ব্যাপি জলবায়ু পরিষদের সদস্যগণের সক্ষমতা বৃদ্ধি বিষয়ক প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।
রবিবার সকালে বেসরকারি সংস্থা ইএসডিও এর দাশেরহাট কার্যালয়ের মিলনায়তনে এই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করেন, নাগেশ্বরী উপজেলা জলবায়ু পরিষদের সহসভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক।
এসময় উপস্থিত ছিলেন,কুড়িগ্রাম জেলা জলবায়ু পরিষদের
সহসভাপতি শাহিনুল ইসলাম চঞ্চল, সাধারণ সম্পাদক খাদিজা পারভীন খুশি, উলিপুর জলবায়ু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা পারভীন প্রমুখ।
জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য পদক্ষেপসমূহ নিশ্চিতকরণ টেকসই সমাধান (অ্যাক্সেস) প্রকল্পের আওতায়
কুড়িগ্রাম জেলা জলবায়ু পরিষদ সংগঠনের নাগেশ্বরী, উলিপুর এবং জেলা কমিটির ৪৫জন সদস্যকে নিয়ে এই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
হেলভেটাস সুইস ইন্টার কো অপারেশন, বাংলাদেশের সহযোগীতায় প্রকল্প বাস্তবায়ন করে ইকো-সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও)
ভোলায় চাঞ্চল্যকর এক ঘটনায় নিজ ছেলের হাতে খুন হয়েছেন দারুল হাদীস কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস ও সদর উপজেলা পরিষদ মসজিদের খতিব মাওলানা আমিনুল হক নোমানী। বাবাকে হত্যার অভিযোগে তার ছেলে রেদোয়ানকে (১৭) আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার সকালে ভোলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. শরীফুল হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গেম ও মোবাইলে আসক্ত রেদোয়ানকে প্রায়ই শাসন করতেন নোমানী। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ছেলে বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সে ইন্টারনেটে ‘সাইকো’ ধরনের সিনেমা দেখে হত্যার কৌশল শেখে এবং অনলাইন মার্কেটপ্লেস দারাজ থেকে একটি ছুরি অর্ডার করে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে এশার নামাজ শেষে ঘরে ফেরার পর বাবাকে ছুরিকাঘাত করে রেদোয়ান। এ সময় নোমানী জীবন ভিক্ষা চাইলেও ছেলে থেমে যায়নি। মুভির কৌশল নকল করে পেটে ও ঘাড়ে আঘাত করে নিশ্চিত মৃত্যু ঘটায় সে। হত্যার পর আলামত নষ্ট করতে ছুরিটি পাশের খালে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে উদ্ধার হওয়া আলামতের সূত্র ধরে পুলিশ রেদোয়ানকে আটক করে এবং তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী খুনের অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রেদোয়ান জানায়, বাবার শাসন-শোষণের আক্রোশ থেকেই সে হত্যার পরিকল্পনা করে। হত্যার জন্য আগে থেকেই কালো পোশাক ও ক্যাপ জোগাড় করে রাখে। ঘটনার দিন রাতেই মামার বাড়িতে পালিয়ে গিয়ে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করে।
প্রসঙ্গত, গেল ৬ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে ভোলার চরনোয়াবাদ এলাকায় নিজ বাড়িতে খুন হন মাওলানা আমিনুল হক নোমানী। ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি টি-শার্ট, মাস্ক ও ঘড়ি উদ্ধার করে। এসব আলামতের ভিত্তিতেই রেদোয়ানকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মেহেরপুরের গাংনীর কাজিপুর গ্রামে বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে রাব্বি হোসেন নামের এক স্কুল ছাত্র নিহত হয়েছে।
রাব্বি হোসেন গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের মহব্বত আলীর ছেলে ও স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্র।
ভবানিপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই আব্দুল করিম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আজ রবিবার সকালের দিকে নিজ বাড়িতে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হলে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাব্বি হোসেনের মামা আব্দুস সালাম জানান৷ সকালের দিকে নিজ ঘরের দরজা খুলতে গেলে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয় রাব্বি।
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে র্যাবের অভিযানে ৯৬ গ্রাম হেরোইনসহ মোস্তফা হাওলাদার নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে চুনকুটিয়া চৌধুরীপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র্যাব-১০।
গ্রেফতারকৃত মোস্তফা হাওলাদার (৪৫) বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম রতনপুর গ্রামের মোবারক হাওলাদারের ছেলে। এ সময় তার কাছ থেকে ৯৬ গ্রাম হেরোইন ও ৩টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
র্যাব জানায়, মোস্তফা হাওলাদার পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। সে দীর্ঘদিন ধরে হেরোইনসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছিল।
আটককৃত আসামির বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
জেলার সদর উপজেলায় যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ কাজল (৩৫) এবং আবির আহম্মেদ (২৭) নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে সদর উপজেলার বৈখর এলাকা থেকে দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ তাদের গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত কাজল সদর উপজেলার বৈখর গ্রামের আবু তালেব শিকদারের পুত্র এবং আবির আহম্মেদ নয়াকান্দি গ্রামের শাহীন মাঝির পুত্র।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম সাইফুল আলম জানান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৭ টায় সদর উপজেলার বৈখর এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় অবৈধ মাদক ক্রয় বিক্রির সাথে জড়িত কাজল এবং আবির আহম্মেদকে ১৭টি দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে। মাদক ব্যবসায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় তারা এসব ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করতো।
তিনি জানান, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মাদক আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত কাজলের নামে মাদক আইনে আগে থেকেই মামলা আছে।
ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে অবস্থিত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (কেবি) কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. আতাউর রহমান আমরণ অনশন শুরু করেছেন। তার এই পদক্ষেপে সংহতি জানিয়ে কলেজের অন্যান্য শিক্ষকরা আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। শনিবার কলেজ প্রাঙ্গণে অনশন করেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, কেবি কলেজে বোমা হামলার হুমকি, শিক্ষকদের শারীরিক নির্যাতনের ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক নানা ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে তারা এই আমরণ অনশন কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক বি. এম. আব্দুল্লাহ রনি জানান, দুপুর ১২টার দিকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অধ্যক্ষ ঘোষণা দেন, কলেজ ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে চলমান হুমকি এবং বহিরাগতদের অনুপ্রবেশের প্রতিবাদে তিনি আমরণ অনশনে বসবেন। তখন অন্যান্য শিক্ষকরা একসাথে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুক। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হলে আমরা অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেব।’
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় দিনদুপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় নগদ ৬০ হাজার ৬০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত যুবকের নাম আরকান চৌধুরী (২৫)। তিনি কাঞ্চনা ইউনিয়নের মনুফকিরহাট জাফর চৌধুরীবাড়ি এলাকার মো. জাকির হোসেনের ছেলে। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের মনুফকিরহাট জাফর চৌধুরীবাড়ি এলাকায় এ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
থানার ওসি জাহেদুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আরকান চৌধুরী ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। শনিবার তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে কাঞ্চনা মনুফকিরহাট হাটের জলদাশপাড়া ব্রিজের ওপর গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা অভি চৌধুরীর কাছ থেকে নগদ ৩ লাখ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন ছিনতাইকারীরা। অভি কাঞ্চনা শাখার কেন্দ্র ব্যবস্থাপক। পরে এ ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন ব্যাংক কর্মকর্তা।
নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় ধনু নদে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্পিডবোট উল্টে শিশুসহ ৪ জন নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ২৪ ঘণ্টা পর উষা মনির (৪) তার লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। শনিবার ধনু নদের চরপাড়া এলাকায় ভাসমান অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়।
খালিয়াজুরী থানার ওসি মকবুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল অন্যদের লাশ উদ্ধারের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। নিখোঁজ রয়েছেন, গাজীপুর ইউনিয়নের বয়রা গ্রামের নবাব মিয়ার মেয়ে শিরিন আক্তার (১৮), আন্ধাইর গ্রামের স্বপন মিয়ার মেয়ে লায়লা (৭) ও সামসু মিয়ার মেয়ে সামিয়া (১১)।
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীর সমাজের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ভুলুয়া নদীর তীব্র ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে গেছে কয়েক হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি ও কয়েক একর কৃষি জমি। ভাঙন রোদে ভূলুয়া নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীর সমাজের ভূলুয়া নদীর পাড়ে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন- চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার হুমায়ুন কবির, মীর সমাজ জামে মসজিদের সভাপতি মো. আব্দুল্লাহ, স্থানীয় বাসিন্দা জহির উদ্দীন, শিক্ষার্থী নাহিদুল ইসলাম, আজিমা বেগম, কুলছুম ও রাবেয়া বেগম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার সিমান্তের চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীর সমাজের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ভূলুয়া নদী। নদীটির সুবর্ণচর অংশে চর জেগে ওঠায় রামগতির অংশে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে মীর সমাজের কয়েক হাজার পরিবার নদীভাঙনের মুখে পড়ে। ইতোমধ্যে অন্তত শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখনো ৪০টির মতো বসতবাড়ি হুমকির মুখে আছে। এছাড়া কয়েক একর কৃষি জমি ভূলুয়া নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর পাশেই রয়েছে, উত্তর চর আফজাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরআফজল মীর সমাজ নুরানী মাদ্রাসা, চরআফজল মীর সমাজ জামে মসজিদসহ অন্তত ১০ হাজার মানুষের বসবাস। এসব মানুষগুলো রয়েছে চরম উদ্বিগ্ন উৎকণ্ঠায়। বক্তারা আরও বলেন, ভুলুয়া নদীর ওই স্থানে দ্রুত ব্লক বাঁধ নির্মাণ না করলে অল্প সময়ের মধ্যে মীর সমাজটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাই তারা দ্রুত নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ-জামান খান বলেন, সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে ওই স্থানে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেবেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দিন সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে স্ট্রোক করে মারা যান চ্যানেল এস-এর সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম শিবলী।
নবনির্বাচিত ডাকসু নেতা ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতারা গত শুক্রবার সন্ধ্যায় টঙ্গীর মধুমিতা রোডের শিবলীর বাসায় তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তারা মৃতের পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং তরিকুল শিবলীর পরিবারের হাতে নগদ দুই লাখ টাকা তুলে দেন।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ডাকসুর নব-নির্বাচিত ভিপি ও শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম, ডাকসু জিএস এস এম ফরহাদ, পরিবহন সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহ ও শিবিরের গাজীপুর মহানগর সভাপতিসহ অন্যান্য নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
গত শুক্রবার রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ডাকসুর নবনির্বাচিত জিএস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ লেখেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের দিন সংবাদ কাভার করতে গিয়ে ইন্তেকাল করেছেন তরিকুল শিবলী ভাই। তিনি রেখে গেছেন দুই সন্তান। বড় সন্তান আয়াতের বয়স চার বছর এবং ছোট সন্তান আজমীনের বয়স দেড় বছর।’
ফরহাদ আরও লেখেন, চার বছর বয়সী আয়াত দীর্ঘ আলাপের ফাঁকে আমাকে বলছে- ‘আমার বাবাকে আল্লাহ নিয়ে গেছেন এবং আল্লাহ বাবাকে সুন্দর একটা জায়গায় রেখেছেন। যেহেতু বাবা আসবেন না, তাই আমি ও আমার মা ছোট বোন আজমীনের খোঁজখবর রাখবো, আদর করবো।’ অবুঝ শিশুর মুখে এমন ভারি কথা!
তিনি জানান, আমরা পরিবারের সঙ্গে প্রাথমিক সাক্ষাতে ছোট্ট দুই শিশুর খরচের জন্য ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে আপাতত দুই লাখ টাকা পৌঁছে দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, আমরা সব প্রয়োজনে সাধ্যমতো পরিবারটির পাশে থাকবো। বাবা হারানো ছোট শিশুদের জন্য দোয়া চাই।