রোববার, ৩ আগস্ট ২০২৫
১৮ শ্রাবণ ১৪৩২

কানাডা যাচ্ছেন রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লার পরিবারের আরও ১৪ সদস্য

ছবি: সংগৃহীত
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৩:২৫

কক্সবাজারে শরণার্থী ক্যাম্পে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহর মাসহ তার দুই ভাইয়ের পরিবারের আরও ১৪ সদস্য জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) তত্ত্বাবধানে কানাডায় যাচ্ছেন।

গত রোববার তারা ঢাকার উদ্দেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছাড়েন বলে আজ মঙ্গলবার জানান রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-৮ এর সহকারী পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ।

তিনি আরও জানান, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর’র তত্ত্বাবধানে মুহিবুল্লাহর পরিবারের ১৪ সদস্যকে তাদের ব্যাটালিয়নের অধীনে ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।

এপিবিএন জানিয়েছে, সোমবার গভীর রাতে পরিবারের ১৪ সদস্যের দলটির কানাডার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা। এই ১৪ সদস্যের মধ্যে রয়েছেন, মুহিবুল্লাহর মা উম্মে ফজল (৬০), ছোট ভাই হাবিব উল্লাহর স্ত্রী আসমা বিবি (৩৫), সন্তান কয়কবা (১৫), বয়সারা (১৩), হুনাইসা (৯), আইমন (৮), ওরদা বিবি (৫), আশরাফ (৫) ও আরেক ভাই আহমদ উল্লাহর স্ত্রী শামছুন নাহার (৩৭), সন্তান হামদাল্লাহ (১১), হান্নানা বিবি (৯), আফসার উদ্দীন (৭), সোহানা বিবি (৫) ও মেজবাহ উল্লাহ (১)।

এর আগে, গত ৩১ মার্চ রোহিঙ্গা নেতার স্ত্রী ও সন্তানসহ পরিবারের ১১ জন সদস্য কানাডার উদ্দেশে বাংলাদেশ ছাড়েন।

ক্যাম্প ছেড়ে যাওয়ার সময় সেখানে পুলিশসহ শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি), এবং জাতিসংঘের শরণার্থী হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট, মিয়ানমারের রাখাইন থেকে সর্বশেষ রোহিঙ্গা নির্বাসনের দুই বছর পর্যবেক্ষণ উপলক্ষে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা সদস্য নিয়ে সমাবেশ করার পর নেতা হিসেবে লাইমলাইটে আসেন মুহিবুল্লাহ।

গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে কুতুপালং-১ (ইস্ট) লম্বাশিয়া ক্যাম্পের ডি-৮ ব্লকে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহ (৪৬)। মিয়ানমারের মংডুতে স্কুলে শিক্ষাকতা করতেন বলে রোহিঙ্গাদের কাছে তিনি ‘মুহিবুল্লাহ মাস্টার’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পরদিন তার ভাই হাবিব উল্লাহর অভিযোগে হত্যা মামলা দায়ের করে পুলিশ।

পরে ২০২১ সালের অক্টোবরে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন-১৪) সদস্যরা মহিবুল্লাহ হত্যাকারী দলের সদস্যসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে।

এদের মধ্যে আসামি আজিজুল হক পরদিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বাকি ৩ আসামি হলেন- কুতুপালং ক্যাম্পের ডি-ব্লকের মুহাম্মদ রশিদ ওরফে মুর্শিদ আমিন, ক্যাম্পের বি-ব্লকের মুহাম্মদ আনাস ও নুর মুহাম্মদ।


রাঙামাটিতে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষ রোপন অভিযান ও বৃক্ষ মেলা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিজয় ধর, রাঙামাটি প্রতিনিধি

রাঙামাটিতে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষ রোপন অভিযান ও বৃক্ষ মেলা। আজ শনিবার রাঙামাটি জিমনেশিয়াম মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।

জেলা প্রশাসক মো: হাবিব উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সচিব এমএ আকমল হোসেন আজাদ, রাঙামাটি সার্কেলের বন সংরক্ষক আব্দুল আওয়াল সরকার, পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন, সিভিল সার্জন ডাঃ নুয়েন খীসা, ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা ড. জাহিদুর রহমান মিয়া, পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগের বন কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন, ঝুম নিয়ন্ত্রণ বনবিভাগের রেনজ অফিসার মোঃ মিজানুর রহমান, দক্ষিণ বন বিভাগের মোঃ আব্দুল হামিদ, উত্তর বন বিভাগের কামরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন,

"প্রকৃতির কাছে আমরা সবাই কোনো না কোনোভাবে দায়ী। মানুষের অবিবেচিত কার্যকলাপের ফলেই আজ প্রাকৃতিক পরিবেশ ক্রমাগত ধ্বংসের মুখে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাব দৃশ্যমান হচ্ছে। এই অবস্থায় পরিবেশ রক্ষায় আমাদের এখনই সচেতন হতে হবে। সবুজ বাংলাদেশ গড়তে পরিকল্পিত ও টেকসই বনায়নের বিকল্প নেই।

আলোচনা সভার আগে বৃক্ষমেলা উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মেলা প্রাঙ্গনে শেষ হয়।

আলোচনা সভা শেষে শিক্ষার্থীদের মাঝে গাছের চারা বিতরণ করা হয়।


আড়াইহাজারে পুলিশ পরিচয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী অপহরণের ৯ ঘণ্টা পর উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এম এস ডালিম- নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী দুলাল রায় (৫০) কে অপহরণ করে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। অপহরণের প্রায় ৯ ঘণ্টা পর শনিবার (২ আগস্ট) ভোর ৫টায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ অভিযানে তাকে উদ্ধার করা হয়।

ভুক্তভোগী দুলাল রায় উপজেলার উচিৎপুরা ইউনিয়নের ভৈবরদী গ্রামের ননী গোপাল রায়ের ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে আড়াইহাজারের মাহমুদপুর ইউনিয়নের সালমদী বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুলাল রায়কে অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে একটি হাইয়েস গাড়িতে তাকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর দুলালের মোবাইল ফোন থেকে তার স্ত্রীর কাছে কল দিয়ে মুক্তিপণ হিসেবে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। এ ঘটনার পর দুলালের স্ত্রী ঘটনাটি পুলিশকে অবহিত করলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মো. সোহেল রানার টিম, ডিবির ওসি খন্দকার জহির উদ্দিন আহাম্মদ এর নেতৃত্বে অভিযান শুরু করে।

পরবর্তীতে শনিবার ভোর ৫টার দিকে রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা এলাকায় দুলাল রায়কে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা। সেখান থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদি হাসান বলেন, অপহরণকারীদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন চালু থাকায় প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হয়। পুলিশি তৎপরতা বুঝতে পরে তারা দুলাল রায়কে ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তা শনাক্ত করতে কাজ করছে পুলিশ।


রাস্তার অনিয়ম অস্বীকার করায় এলজিইডি কর্মচারীকে গণপিটুনি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হোসেন রায়হান, পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় রাস্তার কাজের অনিয়মের কথা অস্বীকার করায় বোদা উপজেলা এলজিইডির কার্য-সহকারী জাহিদুল ইসলামকে গণপিটুনি দিয়েছেন স্থানীয়রা।
আজ শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়নের গাইঘাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গাইঘাটা এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রাস্তার নির্মাণ কাজ চলছিল। কাজের মান খারাপ হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। শনিবার দুপুরে বিক্ষুব্ধ জনতা কাজ বন্ধ করে দিলে ঘটনাস্থলে পৌঁছান উপজেলা এলজিইডির কার্য-সহকারী জাহিদুল ইসলাম। তিনি কাজের অনিয়ম অস্বীকার করলে উত্তেজিত জনতা তাকে গণপিটুনি দেয়। পরে তিনি একটি ধানক্ষেতে আশ্রয় নিয়ে কোনোমতে প্রাণ রক্ষা করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন বলেন,এই রাস্তার কাজ দীর্ঘদিন ধরে চলছে। পাশের আরেকটি রাস্তায় কাজ শেষ হলেও এই রাস্তায় বারবার কাজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনিয়মের কারণে। এবারও স্থানীয়রা অভিযোগ করলে আমি নিজে গিয়ে দেখি, সত্যিই কাজের মান অত্যন্ত খারাপ। আমি স্থানীয়দের সহযোগিতায় কাজ বন্ধ করে দিই।”
স্থানীয় ইউসুফ আলী বলেন, “আমি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দেখি সামান্য ব্যবহারে কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। মিস্ত্রিরা তখন হাতুড়ি দিয়ে সেটা ঠিক করার চেষ্টা করেন।”
স্থানীয় যুবক মাসুদ রানা বলেন, “আমাদের বাড়ির পাশে এই রাস্তায় কাজ চলছিল। দেখি কাদা ও ধুলাবালির ওপরেই কার্পেটিং চলছে। প্রতিবাদ করলে আমাকে হুমকি দেওয়া হয়।”
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মিস্ত্রি আবুল কালাম কাজের অনিয়ম স্বীকার করে বলেন, “বৃষ্টির কারণে কিছু জায়গায় বালু ছিলো, তবুও কার্পেটিং করা হয়েছে। রাস্তার ময়লা না সরিয়ে কাজ শুরু করায় কার্পেটিং উঠে গেছে।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কার্য-সহকারী জাহিদুল ইসলাম বলেন,অফিস থেকে আমাকে বলা হয় কাজ দেখতে যেতে। গিয়ে দেখি স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। আমি সাংবাদিকদের বলি যে, অনিয়ম হয়নি। তখনই লোকজন উত্তেজিত হয়ে আমাকে মারধর করে। কোনোমতে পালিয়ে বাঁচি।”
তিনি আরও জানান,১০ দিন আগে বিটুমিনাস প্রাইম কোট দেওয়া হয়েছিল। বৃষ্টির কারণে কিছু বালু পড়ে গিয়েছিল। পরিষ্কার না করেই কার্পেটিং করায় সমস্যা হয়েছে।”
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমআর ট্রেডার্সের প্রতিনিধি মিজানুর ইসলাম জানান, “এটি ২০২০-২১ অর্থবছরের কাজ। আমি সাব-ঠিকাদার হিসেবে যুক্ত ছিলাম, বিস্তারিত এখন মনে নেই।
এদিকে বোদা উপজোলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার নজির বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। কাজের অনিয়ম হলে সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ জামান বলেন, “রাস্তার কাজের অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তবে কেউ গণপিটুনির শিকার হয়েছেন, এমন খবর এখনও পাইনি।”


কাঁচা রাস্তা পাকা করণের দাবিতে মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হাসনাইন তালুকদার দিবস, ঝালকাঠি প্রতিনিধি

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া ইউনিয়ন। সেখানকার উত্তর তারাবুনিয়া গ্রামের একটি কাঁচা রাস্তা ৫০ বছর ধরে ভোগাচ্ছে। এলাকাবাসী বলছেন, কত সরকার বদল হলো কিন্ত আমাদের দুর্ভোগের কথা শোনেননি কেউ।

শনিবার ২ আগস্ট সকালে ঐ রাস্তায় কচুগাছ রোপন করে ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ জানায় স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। একই সময় চার কিলোমিটার দৈর্ঘের এই কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরণের দাবিতে সেখানে মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা। এ মানববন্ধনে অংশ নেন সাতুরিয়া ইউনিয়নের ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ সমাজসেবীরা।

কচুগাছ রোপন এবং মানববন্ধন শেষে গনমাধ্যম কর্মীদের সাথে কথা বলেন স্থানীয় আব্দুল লতিফ মোল্লা, আবুল বাশার, ইয়াসিন, মাওলানা আনোয়ার হোসেন, নাজমিন বেগম এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লাবিদ ও মাহিম।

তারা বলেন, সাতুরিয়া ইউনিঢনের মোল্লাবাড়ি থেকে জোড়াপোল হয়ে গোয়ালবাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার কাঁচা সড়কটি স্বাধীনতার পর নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ৫০ বছরের অধিক সময় পেড়িয়ে গেলেও এই সরকটি অদ্যাবধি পাকা করা হয়নি। বর্ষা মৌসুমে এই রাস্তা পানি ও কাদায় একাকার হয়ে যায়।'

দ্রুততম সময়ের মধ্যে মোল্লাবাড়ি থেকে জোড়াপোল হয়ে গোয়ালবাড়ি পর্যন্ত কাঁচা সড়কটি প্রশস্ত করে পাকা করার আহ্বান জানিয়েছেন মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।


ইবিতে ৫৩৭ কোটি ৭ লক্ষ টাকার প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ে পর্যালোচনা সভা 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাকিব আসলাম, ইবি. কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উন্নয়ন (তৃতীয় পর্যায়)-১ম সংশোধিত শীর্ষক প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ে পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের কনফারেন্স কক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ’র সভাপতিত্বে উন্নয়ন (তৃতীয় পর্যায়)-১ম সংশোধিত শীর্ষক ৫৩৭ কোটি ৭ লক্ষ টাকার প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ে পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সভায় উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) এ.কে.এম শরীফ উদ্দীন, প্রকল্প পরিচালক ড. মোঃ নওয়াব আলী, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া, উপ-পরিচালক রোকসানা লায়লা, সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোশারফ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া, সভায় ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (পরিকল্পনা অধিশাখা) মীর্জা মোহাম্মদ আলী রেজা, যুগ্মসচিব (পরিকল্পনা-৩) আহমেদ শিবলী, একনেক বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব স্নিগ্ধা তালুকদার, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের উপ-পরিচালক নাহিদ ফারজানা সিদ্দিকী, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কার্য্যক্রম বিভাগের ডেপুটি চীফ বাবুলাল রবিদাস প্রমুখ।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে প্রকল্পের বিভিন্ন সাইট সরেজমিন পরিদর্শনে করেন। প্রতিনিধি দল প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁরা কাজের সময় শ্রমিকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া, উপ-পরিচালক রোকসানা লায়লা এবং সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোশারফ হোসেন।


ফরিদপুরে মাদার অফ জুলাই উপলক্ষে আলোচনা সভা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরে মাদার অফ জুলাই উপলক্ষে আলোচনা সভা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার বেলা বারোটার দিকে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন ও মহিলা অধিদপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মহিলা অধিদপ্তর ফরিদপুরের উপ-পরিচালক মাশউদা হোসেন । অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রামানন্দ পাল. বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুল আজম ‌।

এসময় বক্তব্য রাখেন এডভোকেট মেহেরুন নেছা স্বপ্না । জুলাই গণ অভ্যুত্থানে শহীদ জান শরিক মিঠুর মা হানুফা আলম ‌, শহীদ সিরাজুল বেপারীর মা ‌‌তার স্ত্রী , শহীদ শামসু মোল্লার স্ত্রী ‌ মেঘলা বেগম। জুলাই যোদ্ধা আহত সজীব ইসলামের মাতা, কাজী রিয়াজের মাতা, জুলাই যোদ্ধা জাকিয়া ফারজানা, কাজী জেবা তাহসিন আর এম হৃদয়, সোহেল রানা

কাজি রিয়াজ, সাব্বির হোসেন খান, রাফিউল ইসলাম সিয়াম , জান্নাতি খানম ‌ প্রমুখ।

সভায় বক্তারা তুলাই গণঅভ্যুত্থানের কথা তুলে ধরেন । তাতে অংশগ্রহণকারী ‌ তাদের পরিবারের সদস্যদের হারানোর দুঃখ দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। বক্তারা বলেন, পরিবারের একজন সদস্য হারানো যে কতখানি কষ্টর তা পরিবারের ‌ বাকি সদস্যরা বুঝতে পারেন।

একজন মা তার সন্তানের না থাকার অভাব বুঝতে পারেন। ।

তারা বলেন, যে প্রত্যাশা করে আমাদের ছেলেরা জুলাই গণ অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিল তা পূরণ হয়নি। আমরা আমাদের ‌ সন্তানদের হত্যার বিচার এখনো পাইনি, তাদের উপর মারধর করারও বিচার পাইনি ‌ ‌। বক্তারা অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে সরকারের নিকট জোড় দাবি জানান।


তিন দফা দাবিতে বরিশালে কফিন মিছিল, মেডিকেল গেটে অবস্থান কর্মসূচি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তারিকুল ইসলাম তুহিন, বরিশাল প্রতিনিধি

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের সকল সরকারি হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিন দফা দাবিতে কফিন নিয়ে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ ছাত্র-জনতা।

শনিবার (২ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নগরীর সদর রোডস্থ অশ্বিনী কুমার হলের সামনে বরিশালের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার ব্যানারে এই প্রতীকী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, শুধু শের-ই-বাংলা মেডিকেল নয়, দেশের সব সরকারি হাসপাতালেই দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসার অপ্রতুলতার কারণে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছেন। এই অবস্থার পরিবর্তন না হলে, সাধারণ মানুষের চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার চরমভাবে হুমকির মুখে পড়বে।

সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে পরবর্তীতে লাগাতার কর্মসূচি দেওয়া হবে।

তাদের তিন দফা দাবি হলো:

১. সরকারি হাসপাতালগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন,

২. পর্যাপ্ত দক্ষ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ,

৩. আধুনিক চিকিৎসা যন্ত্রপাতি, প্রয়োজনীয় ওষুধ ও দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ।

বিক্ষোভ শেষে অংশগ্রহণকারীরা কফিন নিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়কে মিছিল করে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের সামনে অবস্থান নেন। পরে তারা হাসপাতাল প্রাঙ্গণের ভেতরে গিয়েও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। বিক্ষোভে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজের শিক্ষার্থীসহ সচেতন নাগরিকরা অংশ নেন।


সুনামগঞ্জে অর্ধ-বার্ষিক বিচার বিভাগীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জাহাঙ্গীর আলম, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অর্ধ-বার্ষিক বিচার বিভাগীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে জেলা ও দায়রা জজ আদালত সম্মেলন কক্ষে সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সুনামগঞ্জ জেলার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেমায়েত উদ্দিন।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন কবির, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তেহসিন ইফতেখার, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ কামাল খাঁন, ২৮ বিজিবির সিও লেফটেন্যান্ট কর্ণেল একেএম জাকারিয়া কাদির, পুলিশ সুপার তোফায়েল আহাম্মেদ, সিভিল সার্জন ডা. মো. জসিম উদ্দিন, পুলিশ সুপার (পিবিআই) মুহাম্মদ খালেদ উজ জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) তাপস শীল সহ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজবৃন্দ, অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক, সিনিয়র সহকারী জজ ও সহকারী জজবৃন্দ, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ, সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বিজ্ঞ জিপি ও পিপি, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।

সম্মেলনে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেমায়েত উদ্দিন স্বাগত বক্তব্যে ১৯৫২, ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের স্মরণ করেন। তিনি উপস্থিত সকলকে প্রাণবন্ত আলোচনার মাধ্যমে সুনামগঞ্জ বিচার বিভাগের কার্যক্রমকে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে বেগবান করার অনুরোধ জানান।

এরপর বিগত জানুয়ারি থেকে জুন ২০২৫ পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জাজশিপে মামলা দায়ের ও নিষ্পত্তি সংক্রান্তে পরিসংখ্যান উপস্থাপন করেন যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আকবর হোসেন। ম্যাজিস্ট্রেসির পরিসংখ্যান উপস্থাপন করেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আলমগীর। পরবর্তীতে দেওয়ানি মামলা নিষ্পত্তিতে চিহ্নিত প্রতিবন্ধকতা সংক্রান্ত মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিনিয়র সহকারী জজ মো. জুনাইদ এবং এ বিষয়ে ফৌজদারি মামলা সংক্রান্ত মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম। প্রতিবন্ধকতা হিসেবে আদালতের অপর্যাপ্ততা, অপ্রতুল লোকবলসহ বেশ কিছু দিক চিহ্নিত করা হয়।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন পর্যায়ের বিজ্ঞ বিচারকবৃন্দসহ সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক, পুলিশের জেল সুপার, জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের জেলা পরিদর্শক ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। বক্তারা আন্তঃবিভাগীয় সহযোগিতার মাধ্যমে বিচারপ্রার্থী জনগণের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

সম্মেলনের সভাপতির বক্তব্যে সুনামগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোঃ হেমায়েত উদ্দিন বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ ও কার্যকর সমন্বয় অপরিহার্য।


৯জনের জন্য ৪শ’ বছর আগে নির্মিত যে মসজিদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা প্রতিনিধি

দিঘিরপাড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। প্রায় চারশ’ বছর আগে মুঘল স্থাপত্যের আদলে নির্মিত হয় মসজিদটি। ইয়েমেন দেশ থেকে আসা তিনজন ইসলাম ধর্মের প্রচারক এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। এক গম্বুজ বিশিষ্ট মূল মসজিদটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে নানা কারুকার্য। এটি নির্মাণে কেবল চুন-সুরকির ব্যবহার করা হয়েছে। মসজিদটিতে শুরুতে কেবল নয়জন ব্যক্তি নামাজ আদায় করতেন। তবে এর ধারণ ক্ষমতা তখন ছিলো ২৭ জনের। পুরনো মসজিদের স্থাপত্য ঠিক রেখে ২০০৬ সালে মসজিদটির পূর্বপাশ ধরে এর ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সংস্কারের পর এটি দুই গম্বুজ ও চার মিনার বিশিষ্ট করা হয়েছে। এখানে দুই শতাধিক মানুষ এক সাথে নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদের পূর্ব পাশে রয়েছে বিশাল পুকুর। এর পাশে নির্মাণ করা নান্দনিক ঘাট। এটি দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ ছুটে আসেন।

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার দিঘিরপাড় গ্রামে মসজিদটি অবস্থিত। কথিত আছে, মসজিদের সামনের বিশাল দিঘির নামেই এই গ্রামের নামকরণ করা হয়েছে।

মসজিদের খাদেম মাওলানা রুকুন উদ্দিন বলেন, ’শেখ রহিম, শেখ সুমন, শেখ মঙ্গল নামে তিনজন ইসলাম ধর্মের প্রচারক ইয়েমেন দেশ থেকে এখানে আসেন। তারা এই অঞ্চলে ইসলামের প্রচার করেন। এই ধর্ম প্রচারকরা মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদের পাশে বর্তমানে ভূইয়া বাড়িতে তারা বসতি স্থাপন করেন। এটি যখন নির্মাণ করা হয় আশেপাশের গ্রাম গুলোতে মসজিদ ছিলো না। জন বসতিও ছিলো অনেক কম। তাই ২৭ জন মানুষের ধারণ ক্ষমতা থাকলেও নামাজ পড়তেন নয়জন মানুষ।’

প্রজাপতি বাজার হতে লাড়ুচৌ গ্রামের পথ ধরে কিছু পথ হাঁটলেই দিঘিরপাড় গ্রাম। সড়কের পশ্চিম পাশে দিঘিরপাড় খেলার মাঠ ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। বয়ে চলা খালের উপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো পার হলেই চোখে পড়বে নান্দনিক এই মসজিদটি। নানান গাছের ছায়ায় গ্রামীণ পরিবেশে মসজিদটি অবস্থিত। দেবিদ্বার উপজেলার মুগসাইর গ্রাম থেকে মাসুক মিয়া, আদিল আহনাফ রবি ও পশ্চিম পোমকাড়া গ্রাম থেকে আনোয়ার পারভেজ নিলয় মসজিদটি দেখতে এসেছেন। তারা জানান, ‘গ্রামীণ পরিবেশে এত সুন্দর একটি মসজিদ দেখে ভালো লাগছে। এর নির্মাণ শৈলী একেবারে আলাদা। মসজিদে নামাজ আদায় করে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। পুকুর ও ঘাট মসজিদের সৌন্দর্যকে পূর্ণতা দিয়েছে। এটি নির্মাণের ইতিহাস জেনে অবাক হয়েছি। এমন প্রত্যন্ত গ্রামে ইসলাম ধর্মের প্রচারকরা সুদূর ইয়েমেন দেশ থেকে এসেছেন।’

ইয়েমেন থেকে আসা ধর্ম প্রচারকদের বংশদূত ও প্রজাপতি উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষক মো ইউনুস ভূইয়া বলেন, ‘মূল মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে চুন-সুরকি দিয়ে। এর দেয়ালের পুরুত্ব ৪৩ ইঞ্চি। মূল মসজিদটি এক গম্বুজ বিশিষ্ট হলেও দুই গম্বুজ বিশিষ্ট হয়েছে। যারা মসজিদটি নির্মাণ করেছেন তাদের বংশধরেরা এখনো এই গ্রামে আছেন। এখানে দর্শনার্থীরা মসজিদটি দেখতে নানা জায়গা থেকে আসেন।’

মসজিদের ইমাম মাওলানা মুফতি আবদুস ছাত্তার বলেন, ‘১৬'শ শতাব্দীতে ইয়েমেন থেকে আসা আপন তিন ভাই মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদ নির্মাণের পাশাপাশি একটি সুবিশাল পুকুর খনন করেন। এখানে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত ও জুমার নামাজ আদায় করা হয়। এটি গ্রামের কেন্দ্রীয় মসজিদ। দুই শতাধিক মানুষ মসজিদটিতে এক সাথে নামাজ আদায় করতে পারেন।


শহিদ পরিবার ও যোদ্ধাদের পাশে সরকার সবসময় আছে : রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আমিনুল ইসলাম বনি -রাজশাহী

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ বলেছেন, শহিদ পরিবার ও যোদ্ধাদের পাশে সরকার সবসময় আছে এবং আমরাও পাশে থাকবো। সরকার জুলাই সনদের কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছে পাঁচ আগস্ট হয়তো ঘোষণা হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর ছোটখাটো দ্বিমত থাকলেও তারা ঐক্যমতে পৌঁছেছে। এই ঐক্যমত বাংলাদেশের জন্য একটি শুভ সংবাদ।

গতকাল রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের যৌথ আয়োজনে ‘জুলাইয়ের মায়েরা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অভিভাবক সমাবেশ ও জুলাই নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, গত বছর জুলাইয়ে কী হয়েছিল তা আমাদের সকলের স্মৃতিতে সংরক্ষিত আছে। আজ আপনারা সেই স্মৃতিগুলো শেয়ার করে আবার জাগিয়ে তুললেন। এখন আমাদের করণীয় হচ্ছে দেশকে সংস্কার করে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, সে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

তিনি বলেন, জুলাই যোদ্ধাদের একটা পরিচয় হওয়া দরকার এবং সে পরিচয়ে সকলে এক থাকবে। সে পরিচয়ের বিভিন্ন নাম দিলে তা আবার বিভিন্ন রকম মনে হবে। নামটা যদি হয় জুলাইযোদ্ধা তাহলে সবাই এক প্লাটফর্মে থাকবে। একেক জনের দল মত ভিন্ন হতেই পারে কিন্তু নাম একটা হওয়া দরকার বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক শবনম শিরিন উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্যের মধ্যে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, জুলাই আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই শহিদদের আত্মার মাগফেরাত ও গুরুতর আহতদের দ্রুত সুস্থতা এবং আরোগ্য কামনা করে দোয়া করা হয়। দোয়া শেষে জুলাই নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র প্রদর্শনী করা হয়। এসময় জুলাই আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।


জুলাই গ্রাফিতি এঁকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে দ্বিতীয় আনোয়ারার বখতিয়ারপাড়া চারপীর আউলিয়া মাদ্রাসা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আনোয়ারা(চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি


ছোট্ট সিয়াম(১১)বাসার হেলিকপ্টারের আওয়াজ শুনে জানালার পাশে গিয়ে বাবাকে ডেকে দেখাচ্ছে বাবা দেখ হেলিকপ্টার অমনি একটি বুলেট এসে লাগল রায়হানের বুকে, বাবার চিৎকার! শাহবাগ উত্তাল,ছাত্র জনতার শ্লোগানে শ্লোগানে মুখর রাজপথ,উত্তপ্ত রোধে হাঁপিয়ে উঠেছে সবাই,এসময় পানির বোতল নিয়ে হাজির মুগ্ধ,পানি লাগবে পানি...মুহুর্তেই বুলেটে ঝাঝড়া হয়ে গেলে মুগ্ধের বুক, মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মুগ্ধ। রংপুরে ছাত্র জনতার মিছিলে নির্বিচারে গুলি ছুড়ছে পুলিশ,মিছিলের সামনে গিয়ে বুক পেতে দিয়ে বুলেট বুকে নিয়ে সবাইকে রক্ষা করল আবু সাঈদ। আবু সাইদের বুকে বুলেট আটকে বেঁচে গেল গণতন্ত্র,রক্ষা পেল দেশ আর এতেই পালাতে হল ১৬ বছরের স্বৈরাশাসককে।

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের অংগ্রহণে চট্টগ্রামে ২৪ এর রঙে গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় এভাবেই তোলে ধরেন আনোয়ারা উপজেলার বখতিয়ার পাড়া চারপীর আউলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। আর এতেই চট্টগ্রাম অঞ্চলে কলেজ পর্যায়ে ১৯৩ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে মাদ্রাসাটি। এতে প্রথম স্থানে ব্রাক্ষ¥ণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজ পেয়েছে১৯৭ নম্বর ও তৃতীয় স্থান অধিকারী খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ পেয়েছে ১৯০ নম্বর।

গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়ালে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১১ জেলা ৩৩ টি কলেজ ও মদ্র্রাসার শিক্ষার্থী দল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা চেতনায় জুলাই ধারণ করে গ্রাফিতি তুলে ধরে।

পরে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা মায়া, উম্মে জান্নাতুল মাওয়া সাইমা,নুসরাত শাহীন জেরিন,সুমাইয়া আক্তার মাহি ও মেহেরন্নেসা। প্রতিযোগী সকলেই খুবই স্বত:স্ফুর্ত অনুভূতি প্রকাশ করেন। তাদের ভাষায়,গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জুলাই শহীদদে প্রতি শ্রদ্ধা ও তাঁদের স্মরণ করতে পেরে আমরা গর্বিত।

উম্মে হাবিবা মায়া বলেন,জুলাই গণঅভ্যুথানের চেতনা আগামী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে গ্রাফিতি ও চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা অসাধারণ ভূমিকা রাখছে। গত বছর এই সময় যে সংগ্রামী যোদ্ধারা রক্তা দিয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে, আন্দোলন করেছে, জীবন দিয়েছে তাদেরকে স্মরণ করি। আর সেই চিত্রই এই গ্রাফিতিতে ফুটে তোলার চেষ্ঠা করেছি।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কাজী আবদুল হান্নান বলেন,প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকরা সব ধরণের সহযোগিতা করেছে। আমার আনন্দিত।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌস হোসেন বলেন, বখতিয়ার পাড়া চারপীর আউলিয়া মাদ্রাসার এই অর্জনে পুরো উপজেলা গর্বিত। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে জুলাই চেতনা ধারণ করে রাখতে বিশেষ ভুমিকা রাখবে।


বাকৃবি গবেষকদলের জৈব ছত্রাকনাশক উদ্ভাবন, রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমায় ২৫% 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাকৃবি প্রতিনিধি

বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়লেও বালাইনাশকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিপদে পড়েছে। বিষাক্ত এসব বালাইনাশক মানব স্বাস্থ্য, মাটি, পানি ও পরিবেশের ক্ষতি করছে। দেশে বালাইনাশকের মধ্যে ছত্রাকনাশকের ব্যবহার সর্বাধিক ৪৫-৪৬ শতাংশ, এরপর কীটনাশক ৩৩ শতাংশ এবং আগাছানাশক ২০-২১ শতাংশ। এগুলোর বেশির ভাগই মাটি, পানি ও বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। এই সমস্যা সমাধানে দেশে প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তি ও অনুজীব দিয়ে ফসলের উৎপাদন বর্ধক ও পরিবেশবান্ধব ছত্রাকনাশক উদ্ভাবনের দাবি করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক।

বাকৃবির উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহজাহান মঞ্জিলের নেতৃত্বে গবেষক দলটি ট্রাইকোডার্মা এসপেরেলাম নামক ছত্রাক ব্যবহার করে একটি নতুন ছত্রাকনাশক উদ্ভাবন করেছেন যার নাম পি.জি. ট্রাইকোডার্মা। অধ্যাপক মঞ্জিল ছত্রাকটি আইসোলেট ও বায়োফর্মুলেশন উন্নয়ন করেন। গবেষক দলের অন্য দুই গবেষক- কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কে. এম. মহিউদ্দিন এর গুণগত মান ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করেন এবং ফার্ম স্ট্রাকচার ও এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আলী আশরাফ উৎপাদন ও পরিবেশগত মূল্যায়ন পরিচালনা করেন। গবেষণাটি বাকৃবির মাইক্রোবায়োলজি ও বায়োকন্ট্রোল ল্যাবে সম্পন্ন হয়।

পরিবেশবান্ধব এই ছত্রাকনাশক সম্পর্কে গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহজাহান মঞ্জিল বলেন, ছত্রাকনাশকটির মূল উপাদান ট্রাইকোডার্মা এস্পেরেলাম যা আমাদের দেশের মাটি থেকে গবেষণার মাধ্যমে শনাক্ত ও আলাদা করা হয়েছে। অর্থাৎ এটি সম্পূর্ণ স্থানীয় উৎস থেকে সংগ্রহ করা এবং বাংলাদেশের জলবায়ুতে অনুজীবটি ভালোভাবে অভিযোজিত। গবেষণার শুরুতে দেশের বিভিন্ন কৃষি পরিবেশ অঞ্চল থেকে কয়েক হাজার মাটি ও রাইজোস্ফিয়ারের (শিকড়ঘেঁষা) মাটির নমুনা সংগ্রহ করে শতাধিক ট্রাইকোডার্মা ছত্রাক পৃথক করা হয়েছে। ট্রাইকোডার্মার শতাধিক প্রজাতি থাকলেও আমরা ট্রাইকোডার্মা এস্পেরেলাম বেছে নিয়েছি কারণ এটি আমাদের দেশের পরিবেশের সঙ্গে সবচেয়ে ভালোভাবে অভিযোজিত এবং অধিক কার্যকর। এছাড়া দেশীয় অণুজীব থেকে এই ছত্রাকনাশকটির উন্নয়ন করা হয়েছে বিধায় বাজারে প্রাপ্ত অন্যান্য আমদানিকৃত ট্রাইকোডার্মার চেয়ে এটি বেশি কার্যকর।

ট্রাইকোডার্মা এস্পেরেলাম সম্পর্কে অধ্যাপক শাহজাহান মঞ্জিল আরও বলেন, ট্রাইকোডার্মা এস্পেরেলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এটি একযোগে ছত্রাকনাশক এবং জৈব সার হিসেবে কাজ করে। এটি একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন জৈব ছত্রাকনাশক যা এনজাইম, উদ্বায়ী যৌগ ও সেকেন্ডারি মেটাবোলাইটসহ বিভিন্ন জৈব উপাদান উৎপাদনে সক্ষম। এই উপাদানগুলো উদ্ভিদের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়, শিকড়ে বসবাস করে পুষ্টি গ্রহণ ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং তাপ, অম্লতা ও লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে। আমাদের এই গবেষক দলই দেশে প্রথমবারের মতো স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা ট্রাইকোডার্মা এস্পেরেলাম প্রজাতির জিন সিকুয়েন্সিং করতে সক্ষম হয়েছে এবং আন্তর্জাতিকভাবেও তা নথিভুক্ত হয়েছে। NCBI Gene Bank-এ এটি সংরক্ষণ করা হয়েছে (এর একসেশন নম্বর: OR125623)।

পি.জি. ট্রাইকোডার্মা ব্যবহারে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি সম্পর্কে অধ্যাপক শাহজাহান মঞ্জিল বলেন, ছত্রাকনাশকটির প্রয়োগে আমরা ছত্রাকজনিত রোগ প্রতিরোধের পাশাপাশি বিভিন্ন ফসলের উল্লেখযোগ্য ফলন বৃদ্ধি লক্ষ্য করেছি। টমেটো, আলু ও বেগুনে ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২০-২৫ শতাংশ, পালং ও পুঁইশাকে ফলন বেড়েছে ৪০-৫০শতাংশ, পানে ফলন বেড়েছে প্রায় ৪৫-৫০ শতাংশ, চা গাছে ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে ৮০-১০০ শতাংশ, ঢেঁড়স, মরিচ ও শসায় ফলন বেড়েছে ১৫-২০ শতাংশ। ডাল, ধান ও ফলগাছে রোগ দমন ও গাছের স্বাস্থ্য ভালো থাকায় ফলন স্থিতিশীল বা ধীরে ধীরে বৃদ্ধির ধারা দেখা যাচ্ছে। অধ্যাপক মঞ্জিল আরও বলেন, পি.জি.ট্রাইকোডার্মা গোড়াপচা, কান্ডপচা, পাতাপচা ও ব্লাইট দমনে কার্যকর, শিকড়ের বৃদ্ধি ও পুষ্টি গ্রহণ বাড়িয়ে ফসলের উৎপাদন ২০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ায়। এটি ছাদ কৃষি ও মৎস্য চাষেও উপযোগী যা কৃষকের আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক।

অধ্যাপক মহিউদ্দিন বলেন, ছত্রাকনাশকটি জৈব সার হিসেবেও কাজ করার কারণে মাঠ পর্যায়ের পরীক্ষায় দেখা গেছে ফসল উৎপাদনে রাসায়নিক সার প্রায় ২০-২৫ শতাংশ কম ব্যবহার করেও প্রায় একই বা বেশি ফলন পাওয়া সম্ভব হয়েছে। জৈব সার হিসেবে এটি ফসফেট দ্রাব্যকরণ করে, নাইট্রোজেন ব্যবহারের দক্ষতা বাড়ায়, মাটির অম্লতা ও লবণাক্ততা নিয়ন্ত্রণ করে। শিশা, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম ইত্যাদি ভারী ধাতু সম্বলিত দূষিত মাটিতে নিরাপদ ফসল উৎপাদন সংক্রান্ত গবেষণায় ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। তাই নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিতকরণে এটি টেকসই ও বিজ্ঞানসম্মত জৈবিক বিকল্প হতে পারে।

গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক শাহজাহান মঞ্জিল বলেন, পরিবেশবান্ধব ছত্রাকনাশকটি জলজ পরিবেশের জন্যও নিরাপদ। এটি কোনো বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান বহন করে না এবং প্রয়োগের পর পানিতে পড়ে গেলে মাছ, ব্যাঙ, শামুক বা অন্যান্য জলজ প্রাণীর উপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না। আমাদের গবেষণায়ও এ পর্যন্ত জলজ প্রাণীতে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

এই বিষয়ে তিনি আরও বলেন, বাকৃবির অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের সহযোগিতায় তেলাপিয়া মাছের ওপর একটি যৌথ গবেষণা পরিচালনা করেছি। এই গবেষণায় পি.জি. ট্রাইকোডার্মা-এর প্রয়োগ শুধুমাত্র জমির ফসল নয়, বরং জলজ পরিবেশ ও মাছের চাষেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে প্রমাণিত হয়েছে। নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে ফিড সাপ্লিমেন্ট হিসেবে পি.জি. ট্রাইকোডার্মার প্রয়োগে মাছের ওজন ও আকার বৃদ্ধি, পানির গুণমান উন্নয়ন, ক্ষতিকর রাসায়নিক ও প্যাথোজেনিক ছত্রাক কমেছে এবং দূষণ হ্রাস পেয়েছে। বড় পরিসরে ব্যবহারের আগে মাছ চাষের ধরন ও পুকুর পরিস্থিতি বিবেচনা জরুরি। আমাদের গবেষণা চলছে, আশা করি ভবিষ্যতে এটি টেকসই অ্যাকুয়াকালচারের সমাধান হতে পারে।

গবেষকবৃন্দ বলেন, এই উদ্যোগটি ২০০১ সাল থেকে শুরু হয়। তখন থেকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ছোট ছোট অনুদানের মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। গত বছর বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) এর মাধ্যমে এই প্রযুক্তির প্রসার ও প্রচারের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে। বর্তমানে এটি পরীক্ষামূলক উৎপাদন পর্যায়ে রয়েছে এবং বাণিজ্যিক নিবন্ধন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহৃত হওয়ায় এটি সহজলভ্য ও কম মূল্যে কৃষকদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে। পর্যাপ্ত গবেষণা বরাদ্দ পেলে ভবিষ্যতে আমাদের বায়ো-ইনসেক্টিসাইড এবং বহুমুখী কার্যক্ষমতা সম্পন্ন জৈব বালাইনাশক তৈরির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে।

ইতোমধ্যে ছত্রাকনাশকটির বেশ কয়েকটি পরীক্ষামূলক ব্যবহার করা হয়েছে। ছত্রাকনাশকটির ব্যবহারকারীদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা এটির বাস্তবিক সুফলতা সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছেন।

মৌলভীবাজারের ফুলতলা টি এস্টেটের এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শিহাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমি আমার চা বাগানে পিজি ট্রাইকোডার্মা ব্যবহার করে পূর্বের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি ফলন পেয়েছি। আগে যেসব রাসায়নিক ছত্রাকনাশক ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ব্যবহার করতাম সেগুলোর ব্যবহার অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছি। ট্রাইকোডার্মা একদিকে যেমন ছত্রাকনাশক হিসেবে কাজ করে, অন্যদিকে গাছের শুটিং বিহেভিয়ারও (নতুন কুঁড়ি আসার প্রবণতা) বাড়িয়ে দেয়। আমি সাধারণত প্রতি লিটারে ৩ গ্রাম ব্যবহার করি, তবে ৫ গ্রাম দিলে ফল আরও ভালো হয়। এছাড়া এটি তুলনামূলকভাবে সস্তা।

নরসিংদীর পান চাষি কৃষিবিদ শফিকুল ইসলাম বলেন, পান চাষে গোড়া পচা মারাত্মক একটি রোগ। এর আক্রমণে গাছ মারা যায়। এই সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহার করতাম। তবে এই ছত্রাকনাশক ব্যবহারের পরে গাছ আর ওই রোগে মারা যায় নি বিধায় ব্যাপক লাভবান হয়েছি। প্রায় অর্ধেক খরচ সাশ্রয় করে ফলন অনেক বেড়েছে।

ময়মনসিংহ বিভাগীয় কৃষি অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক ড. সালমা লাইজু বলেন, পরিবেশবান্ধব ছত্রাকনাশক উদ্ভাবিত হলে তা মানুষের স্বাস্থ্য, পরিবেশ, গবাদিপশু সকলকিছুর জন্যই উপকারী হবে। এটি দেশের জন্য বিশাল এক সম্ভাবনা হতে পারে। যদি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহজাহান মঞ্জিলের উদ্ভাবিত ছত্রাকনাশকটি সাশ্রয়ীমূল্যে পাওয়া গেলে আমাদের কৃষি অফিস থেকে সেটি কিনে সাধারণ কৃষকদের সাহায্য করতে পারবো।


জলবায়ু সংক্রান্ত আইসিজে'র মতামত বৈশ্বিক জলবায়ু নীতি পরিবর্তনে অনেক নৈতিক সাহস যোগাবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রগুলোর বাধ্যবাধকতা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) উপদেশমূলক মতামত বাধ্যতামূলক না হলেও বর্তমান বৈশ্বিক বৈরি রাজনৈতিক বাস্তবতার বিপরীতে জলবায়ু নীতি পরিবর্তনে অনেক নৈতিক সাহস যোগাবে। এটি আন্তর্জাতিক নীতিনির্ধারণে চাপ সৃষ্টি করবে। এ চাপ বিবেচনায় নিয়ে রাষ্ট্রগুলোকে নীতিমালায় পরিবর্তন আনতেই হবে।”

আজ পরিবেশ অধিদপ্তরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রগুলোর বাধ্যবাধকতা সংক্রান্ত উপদেশমূলক মতামত বিষয়ে আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন এমন একটি ইস্যু যেখানে শুধু সুশীল সমাজ নয়, তরুণ প্রজন্মকেও সম্পৃক্ত করতে হবে। আজকের প্রজন্ম হয়তো টিকে যাবে, কিন্তু ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আমরা যদি এখনই পদক্ষেপ না নিই, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনবে।”

উপদেষ্টা তার বক্তব্যে নদীভাঙন, অবকাঠামোগত দুর্বলতা, জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা, এবং স্থানীয় সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, “নদীভাঙনপ্রবণ এলাকায় পুনর্বাসন ছাড়া টেকসই সমাধান সম্ভব নয়। ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ডকে আরও কার্যকর করতে হবে, যেখানে সরকার এবং এনজিও একসাথে কাজ করবে।”

তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ‘ন্যাচারাল রিসোর্স প্রটেকশন’ ও 'মরাল অবলিগেশন'-এর দৃষ্টিভঙ্গির কথাও তুলে ধরেন এবং উপদেষ্টা সবার প্রতি আহ্বান জানান—“আসুন, ১০-১২টি পরিবেশবান্ধব বার্তা তৈরি করে তরুণদের মাধ্যমে দেশের জন্য শক্তিশালী জলবায়ু বার্তা পৌঁছে দিই।”

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইনজীবী ও জলবায়ু পরিবর্তন নিগোশিয়েটর অ্যাডভোকেট হাফিজ খান। অধ্যাপক পায়াম আখভান, অধ্যাপক মেরি-ক্লেয়ার এবং নিকোল অ্যান ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ; পরিবেশ অঅধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড মো: কামরুজ্জামান ; ন্যাকমের নির্বাহী পরিচালক এস.এম. মুনজুরুল হান্নান খান; অ্যাকশনএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির; পিকেএসএস এর পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডঃ ফজলে রাব্বী সাদেক আহমেদ; পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো: জিয়াউল হক ও মির্জা শওকত আলী ; ব্রাকের পরিচালক লিয়াকত আলী ; সিপিআরডির প্রধান নির্বাহী মোঃ শামসুদ্দোহা; ফ্রেন্ডশিপের সিনিয়র পরিচালক কাজী আমদাদুল হক এবং ইয়ুথ নেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান প্রমুখ।

গোলটেবিল আলোচনায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, তরুণ প্রতিনিধি, পরিবেশবাদী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।


banner close