হাঁটুর ওপর থেকে কাটা পা। সাদা ব্যান্ডেজে মোড়ানো পুরোটা। শরীরের যন্ত্রণার সঙ্গে আছে মনের ক্ষত। দুইয়ে মিলিয়ে মোহাম্মদ নূরুল আলালের চোখের কোণ চিকচিক করছিল জলে। এর মধ্যেই দাদা-দাদির কাছে থাকা দুই বছর বয়সী মেয়ে তাসনিয়া আলাল ভিডিও কলে দেখতে চাইল বাবাকে! পা-হারানো বাবাকে দেখেই অস্ফুট স্বরে ছোট্ট মেয়ের প্রশ্ন- ‘বাবা তুমি আর হাঁটতে পারবে না? আমাকে কোলে নিতে পারবে না?’ মেয়ের কথায় কোনো উত্তর দিতে পারেন না আলাল। চোখের কোণে আটকে থাকা সেই জল গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে নিচে। পাশে বসে থাকা জীবনসঙ্গী হিনুয়ারা কোথায় স্বামীকে সান্ত্বনা দেবেন, তা না করে নিজেই যে, ‘আমার সাজানো-গোছানো সংসারটা আর রইল না’ বলে কাঁদছিলেন।
কয়েক দিন আগেও ঢাকার একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত এই আলালের সব ছিল। দুই সপ্তাহ আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় কেড়ে নিয়েছে তার ডান পাসহ অপার সুখ, আর পরিবারের ভবিষ্যৎ।
‘আলালের ঘরের দুলাল’ হয়ে জন্ম হয়নি এই তরুণের। নিজের একান্ত প্রচেষ্টায় টেনে তুলেছেন পুরো পরিবারকে। ভাই-বোনদের দিয়েছেন উচ্চশিক্ষার দিশা। সম্প্রতি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় থিতু হয়ে দেখছিলেন পরিবারের জন্য আরও ভালো কিছুর স্বপ্ন। এত বছর ধরে গ্রামে থাকা স্ত্রী ও মেয়ে আর ১০ মাসের ছেলেকে তাই নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন নিজের কাছে। সে জন্য ঢাকায় একটি বাসাও ভাড়া নেন।
গত ১ জুন ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি মহেশখালীর উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন স্ত্রী-সন্তানদের নিতে। সে দিন শেষ রাতে আলালদের সৌদিয়া পরিবহনের দ্রুতগতির গাড়িটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জের সোনাপাহাড় এলাকায় একটি মালবোঝাই ট্রাককে ধাক্কা দিয়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। চালকের কয়েক আসন পেছনে বসা আলালের ডান পা আটকে যায়, মুচড়ে যাওয়া অংশে। অনেক কষ্টে তাকে বের করে আনার পর দেখা যায় ডান পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ পুরো থেঁতলে গেছে। পরে হাসপাতালে নিলেও রক্ষা করা যায়নি পা। প্রাথমিকভাবে হাঁটুর নিচের অংশ কেটে ফেলা হয়। সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় হাঁটুর উপরের অংশও কেটে ফেলতে হয় পরে। বর্তমানে হাটহাজারীর নজু মিয়াহাট এলাকায় এক বন্ধুর বাসায় শুয়ে বিষণ্নচিত্তে অপেক্ষা করছেন কখন শুকাবে ক্ষত? কখন দাঁড়াবেন কৃত্রিম পায়ে ভর দিয়ে।
গতকাল বিকেলে কখনো শুয়ে, কখনো বসে ছটফট করতে করতে আলাল দৈনিক বাংলার কাছে খুলে দেন মনের আগল। জানান, তার বাবা একজন দিনমজুর। মা-ও তেমন পড়াশোনা করেননি। সংসারে তাই নুন আনতে পান্তা ফুরানো দশা লেগে থাকত ১২ মাস। সে জন্য পরিবারের হাল ধরার বিষয়টি সেই ছোটবেলায়ই ভাবতে শুরু করেন তিনি। ভালোভাবে পড়ালেখার উদ্দেশ্যে সপ্তম শ্রেণিতে থাকতেই তিনি চলে আসেন চট্টগ্রাম শহরে। টিউশনিসহ নানা কাজ করে নিজের পড়াশোনার খরচ চালানোর পাশাপাশি পরিবারের কাছেও পাঠাতেন অর্থ। আইন বিভাগে স্নাতকোত্তর শেষে চাকরি নিয়ে পরিবারের হাল ধরেন। ভাই-বোনদের পড়াশোনারও দায়িত্ব নেন। তার দুই বোন এখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করছেন। এক ভাই পড়ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।
আলাল কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘নিজের প্রচেষ্টায় একটা নিম্নবিত্ত পরিবারকে খাদের কিনারা থেকে উঠিয়ে দাঁড় করিয়েছি। আর এখন আমিই কি না দাঁড়ানোর সব শক্তি হারিয়েছি। এখন আমার দুই মাছুম বাচ্চার কী হবে? আমিই বা কি করব সামনে- বুঝে উঠতে পারছি না।’
দুর্ঘটনার পেছনে সৌদিয়া পরিবহনের চালকের ঘুমিয়ে পড়াকেই দায়ী করছেন সবাই। কিন্তু এখন পর্যন্ত সৌদিয়া পরিবহনের মালিকপক্ষের কেউ খবর নেয়নি আলালের।
সেটিই বেশি পোড়াচ্ছে আলালকে। বলেন, ‘আমার বন্ধুরা এগিয়ে না এলে হয়তো আমি বাঁচতাম না। কেননা, আমার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। চার ব্যাগ রক্ত দিতে হয়েছে। আর হাসপাতালে এখন পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আমার বন্ধু আর কর্মস্থলের সহায়তায় চিকিৎসা করাচ্ছি। কিন্তু একবারও আমার খোঁজ নেয়নি সৌদিয়া পরিবহন কর্তৃপক্ষ। সে জন্য আমি কিছুটা সুস্থ হলে ঘটনার বিচার চেয়ে উচ্চতর আদালতে যাব।’
বলতে বলতে আবার আলালের কথা হারিয়ে যায় কান্নায়। খেলা ভুলে ১০ মাসের ছেলে তাসনিম আলাল ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে তাকে অসহায় বাবার দিকে। সে-ও হয়তো বুঝে গেছে বাবা তার কষ্ট পাচ্ছে।
মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে নীলফামারী জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নির্বাচিত হলেন প্রীতম সাহা। তিনি কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
গত রোববার জেলা প্রশাসন হলরুমে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় নীলফামারীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান এ সম্মাননা সনদ প্রদান করেন।
বাল্যবিবাহ, মাদক, অবৈধ বালু উত্তোলন ও অসাধু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ বিশেষ অবদান রাখায় তিনি জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নির্বাচিত হয়। তিনি বিসিএস ৩৫তম ব্যাচের (প্রশাসন) ক্যাডার মেধাবী কর্মকর্তা। ২০২৫ সালের ০১ জুলাই তিনি কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র তিন মাসের মধ্যেই তিনি নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে উপজেলাবাসীর কল্যাণে কাজ করে তাদের মনে জায়গা অর্জন করেছেন।
জানাগেছে এর আগে তিনি যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে তিন বছর সঠিভাবে দায়িত্ব পালন করে জেলার শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা নির্বাচিত হয়ে শুদ্ধাচার পুরস্কার পান।
এরপর দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে দিনাজপুর জেলার শ্রেষ্ঠ এসিল্যান্ড নির্বাচিত হয়ে পুরস্কার পেয়েছেন।
তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে কৃষিতে স্নাতক ও স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা বলেন, যোগদানের পর থেকেই উপজেলাবাসীর সহযোগিতা পেয়েছি। জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট,উপজেলার সকল দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সাধারণ মানুষের ঐকান্তিক সহযোগিতায় প্রতিটি কাজ সহজ হয়েছে। এজন্য আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে উপজেলাকে কিভাবে রোল মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলা যায় সেজন্য টিম গঠন করে কাজ করে যাচ্ছি। আগামী দিনেও যেন এরকম আরও সাফল্য অর্জন করতে পারি সেজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি প্রচারে দৌলতপুরে লিফলেট বিতরণ ও উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার বিকেলে উপজেলার কলিয়া ইউনিয়নের বহড়া, বালিতা ও মুকন্দবাড়ি এলাকায় সাধারণ ভোটার ও মহিলাদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন উপজেলা বিএনপি নেতারা।
উঠান বৈঠকে বক্তারা বলেন, মানিকগঞ্জ-১ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী এস.এ জিন্নাহ কবির দুঃসময়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে রাজপথে ছিলেন। তারা আশা প্রকাশ করেন, আগামী নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পেয়ে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
বক্তারা আরও বলেন, তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফায় মা-বোন, কৃষক-শ্রমিক ও খেটে খাওয়া মানুষের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে জানান তারা। এসময় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক ও দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ফেরদৌস রহমান, ওলামা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাবিবুল্লাহ নোমানী, কলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম হোসেন নাসির, ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি মুজিবুর রহমান, সহসভাপতি বিল্লাল মাতাব্বর প্রমুখ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে এবার ৪১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। যার মধ্যে ভিপি পদে ২৩ জন, জিএস পদে ২১ জন ও এজিএস পদে ২১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। বাকিরা অন্যান্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। সোমবার সকালে চাকসুর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে চাকসু নির্বাচন কমিশনের প্রকাশ করা তালিকায় এ তথ্য জানা যায়।
চাকসুর ওয়েবসাইটের তথ্য মতে, চাকসু নির্বাচনে ভিপি, জিএস ও এজিএস ছাড়াও খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১১ জন, সহ-খেলাধুলা ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১২ জন, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ১৬ জন, সহ-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা পদে ১৬ জন, দফতর সম্পাদক পদে ১৮ জন, সহদপ্তর সম্পাদক পদে ১৩ জন, ছাত্রী কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক পদে ১২ জন, সহছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক পদে ১১ জন, বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
এছাড়া গবেষণা ও উদ্ভাবনবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৩ জন, সমাজসেবা ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক পদে ২০ জন, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৭ জন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৭ জন, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৬ জন, যোগাযোগ ও আবাসনবিষয়ক সম্পাদক পদে ২০ জন, সহযোগাযোগ ও আবাসনবিষয়ক সম্পাদক পদে ১৪ জন, আইন ও মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন, পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক ম্পাদক পদে ১৯ জন এবং নির্বাহী সদস্য পদে ৮০ জনসহ মোট ৪১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
অন্যদিকে সইয়ের ভুল, তথ্যের অসংগতি থাকা ও অন্যান্য কারণে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা থেকে ১৯ জনকে বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে নির্বাচন কমিশনের কাছে সংশোধনের জন্য আপত্তি জানাতে পারবেন তারা।
চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বিভিন্ন তথ্যের ভুলের জন্য ১৯ জনের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। তবে তারা নির্বাচন কমিশনের কাছে সংশোধনের জন্য আপত্তি জানাতে পারবেন। আগামী ২৫ তারিখ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।
গত ২৮ আগস্ট ঘোষিত হয় চাকসু নির্বাচন তফসিল। সে অনুযায়ী গত ২১ সেপ্টেম্বও চাকসুর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। বহুল আকাঙ্খিত চাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে আগামী ১২ অক্টোবর। সকাল নয়টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাধীন কর্ণফুলী টানেলের রুটিন রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর হতে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ দিবাগত রাত ১১:০০টা হতে ভোর ০৫:০০টা পর্যন্ত প্রয়োজন অনুযায়ী 'পতেঙ্গা হতে আনোয়ারা' অথবা 'আনোয়ারা টু পতেঙ্গা' টিউবের ট্রাফিক ডাইভারসনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিতভাবে যানচলাচল অব্যাহত রাখা হবে। এসময় বিদ্যমান ট্রাফিকের পরিমাণ অনুযায়ী সর্বনিম্ন ০৫ (পাঁচ) হতে সর্বোচ্চ ১০ (দশ) মিনিট টানেলের উভয়মুখে সম্মানিত যাত্রীদের অপেক্ষমাণ থাকার প্রয়োজন হতে পারে। কর্ণফুলী টানেলের নিরাপদ ও কার্যকর রুটিন রক্ষণাবেক্ষণ কাজে আপনার আন্তরিক সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু বলেছেন— বর্তমানে দেশের অবস্থা ভালো না, তাই যতদ্রুত সম্ভব নির্বাচন হওয়া উচিত। আমরা আশা করছি আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে শহীদ জিয়া মহিলা কলেজ মাঠে আয়োজিত উপজেলার ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের সাথে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
পিআর প্রসঙ্গে সালাম পিন্টু বলেন— বাংলাদেশে যে অবস্থাতে নির্বাচন হয়ে আসছে সে অবস্থাতেই নির্বাচন হবে এবং জনগণ এ নির্বাচনের পক্ষ। এছাড়া দেশের মানুষ পিআর পদ্ধতি বুঝেও না, তারা চিনেও না। মানুষ তার নিজ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে চায়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন— উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তাফা, সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান তালুকদার সেলু, পৌর শাখা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান রহমান গিয়াস, ইমাম ও খতিব শহীদুল ইসলাম আন্দিপুরী, মাজহারুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার ভক্ত রাসেল মোল্লা হত্যা মামলায় নুরাল পাগলার দরাবার থেকে গরু নিয়ে যাওয়ার দায়ে মো. সজিব শেখ (২৬) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত সজিব শেখ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নতুনপাড়া এলাকার উজ্জল শেখ এর ছেলে।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে তার নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার দুপুর ১টার দিকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শরীফ আল রাজীব।
তিনি জানান, ভিডিও ফুটেজ দেখে ও পর্যালোচনা করে দেখা গেছে সজিব শেখ নুরাল পাগলার দরবার থেকে একটি গরু নিয়ে যাচ্ছে। ফুটেজের উপর ভিত্তি করে তাকে শনাক্ত করা হয়। পরে তাকে নুরাল পাগলার দরবারের ভক্ত রাসেলের পিতা আজাদ মোল্লার দায়ের করা মামলায় চুরি ও লুটের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত সজিব শেখকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, যে গরুটি তিনি নিয়েছিলেন ৫-৭ দিন আগে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে গরুটি গোয়ালন্দ ঘাট থানায় পাঠিয়ে দেয়। পরে গরুটি দেখাশোনার জন্য একজনের হেফাজতে রাখা হয়। দুটি মামলায় এ পর্যন্ত মোট ২৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১০ জন আসামিকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
পথের বেওয়ারিশ কুকুরগুলো যেন খুঁজে পেয়েছে আপন ঠিকানা। মানুষের মতো ৩ বেলা মিলছে খাবার। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে একসাথে জড়ো হয় ২৫ থেকে ৩০ টি কুকুর। আর এই কুকুরগুলোকে খাবারের ব্যবস্থা করছেন গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার ঘাঘর বাজারের মোবাইল মেকানিক জি এম রনি। কুকুরের জন্য খাবারের তালিকায় থাকে দুধ মাখানো ভাত, পাউরুটি ও বিস্কুট। তবে বাড়িতে যেদিন মাংস রান্না হয় সেদিন কুকুরের জন্য রান্না করা মাংস আনতে ভুলেন না জি এম রনি।
স্বামী বিবেকানন্দের একটি অমর বাণী ‘জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর‘। এই বাণীটি যেন সত্যি হয়ে উঠেছে কুকুরের প্রতি রনির ভালোবাসায়। প্রায় ৫ বছর ধরে এভাবে কুকুরকে প্রতিদিন ৩ বেলা খাবার দিয়ে ভালোবাসার এক অন্যরকম নজির স্থাপন করে মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছেন রনি। যা স্থানীয়দের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।
রনি উপজেলার দক্ষিণ কয়খা গ্রামের আবুল হোসেন গাজীর ছেলে। তিনি স্থানীয় ঘাঘর বাজারে প্রায় ৭ বছর ধরে মোবাইল মেকানিকের কাজ করে আসছেন। ছোট বেলা থেকেই পশুপাখির প্রতি রনির ছিল অন্যরকম ভালবাসা। সেই ভালবাসা থেকেই তার চলার পথে কখনো কুকুর-বিড়ালের দেখা পেলে খাবার কিনে খাওয়াতেন।
করোনাকালীন সময়ে লকডাউনে ঘাঘর বাজারের দোকানপাট, হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে গেলে খাদ্যের অভাবে বিপাকে পড়ে যায় বাজারে থাকা কুকুরগুলো। এসময় ভালোবাসার টানে কুকুরগুলোর জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেন রনি। এই লকডাউনে যখন প্রশাসনের চাপ ও মৃত্যুভয়ে মানুষ ঘরবন্দি, তখন বাড়ি থেকে রান্না করে কুকুরগুলোর জন্য খাবার নিয়ে আসেন রনি। প্রথমে ৫ থেকে ৭ টি কুকুর থাকলেও ক্রমেই এই সংখ্যা বাড়তে থাকে। বর্তমানে ২৫ থেকে ৩০ টি কুকুরকে ৩ বেলা খাবারের ব্যবস্থা করছেন রনি।
শুধু যে কুকুরগুলোকে ৩ বেলা খাবারই নয়, কোন একটি কুকুর অসুস্থ হলে বা কেউ আঘাত করলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন রনি। নিজ হাতে ওষুধও খাইয়ে দেন অসুস্থ কুকুরগুলোকে। কোন কুকুরের গায়ে ক্ষত বা ঘাঁ হলে নিজ হাতে তা পরিস্কার করে মলম লাগিয়ে দেন।
প্রথম দিক দিয়ে জি এম রনির আশপাশের ব্যবসায়ীরা ও পরিবারের লোকজন তাঁর এই কাজে বিরাগভাজন হলেও এখন সবাই প্রংশসা করছেন। এই কুকুরগুলোর জন্য নিয়মিত ৩ বেলা ভাত রান্না করে দিয়ে রনিকে রনিকে সহযোগিতা করছেন তার স্ত্রী। শুধু স্ত্রীই নয়, মা-বাবা ও তার বন্ধুরাও নিয়মিত সহযোগিতা করছেন বলে জানিয়েছেন এই প্রাণীপ্রেমী জি এম রনি।
তিনি বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই পোষা প্রাণীদের খুব ভালবাসী। সেই ভালবাসা থেকেই করোনাকালীন সময়ে ঘাঘর বাজারে খাদ্যসংকটে থাকা কুকুরগুলোকে খাবার খাওয়ানো শুরু করি। যা আজও চলমান রেখেছি। এখন এসব কুকুরের প্রতি অন্য রকম ভালবাসা তৈরি হয়েছে। কুকুরগুলোর প্রতি আমার ভালবাসা এমন হয়েছে যে, আমি এখন কোথাও বেড়াতে গিয়ে থাকতে পারি না। ওদেরকে কে খাওয়াবে? সবসময় এই ভাবনায় থাকি। কুকুরের প্রতি আমার এই ভালবাসা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। তবে কুকুরের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে এভাবে কতদিন ধরে রাখতে পারবো সেটি এখন চিন্তার বিষয়।
ব্যবসায়ী উজ্জ্বল সাহা বলেন, রনি আমার দোকানে ৬/৭ বছর ধরে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ করে। সে করোনার সময় থেকে ঘাঘর বাজারে থাকা কুকুরগুলোকে খাবার দিয়ে আসছে। প্রথম দিকে তার এই কাজ নিয়ে উপহাস করলেও পরে বুঝতে পারি সে যা করছে তা অত্যন্ত মানবিক। এখন আমরা তাকে এই কাজে উৎসাহ দিচ্ছি।
চায়ের দোকানদার আক্কেল আলী বলেন, রনি ভাই প্রতিদিন বাড়ি থেকে ভাত এনে আমার দোকান থেকে দুধ কিনে সেই ভাত দুধ দিয়ে মেখে কুকুরকে খাওয়ায়। কোনদিন ব্যস্ততার ভাত না আনতে পারলে আমার দোকান থেকে রুটি ও বিস্কুট কিনে কুকুরকে খেতে দেয়।
ইলেকট্রোনিক্স ব্যবসায়ী সংকর সাহা বলেন, প্রায় প্রতিদিনই আমরা শুনতে পাই উপজেলার কোন না কোন এলাকায় কুকুরে কামড়ানোর সংবাদ। তবে সেই থেকে আলাদা রনির সানিধ্যে থাকা কুকুরগুলো। কোনদিন শুনিনি ঘাঘরবাজারে কোন কুকুর কাউকে কামড় দিয়েছে। রনির ভালোবাসায় কুকুরগুলো যেন শান্তির ঠিকানা পেয়েছে।
কোটালীপাড়া কল্যাণ সংঘের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মাসুম মৃধা বলেন, রনির এমন মানবিক উদ্যোগ আমাদের মনে করিয়ে দেয়-মানুষ শুধু মানুষের জন্য নয়, অন্য জীবের জন্যও মানুষ। রনি যে কাজটি করছে তাহা অত্যন্ত প্রশংসার দাবী রাখে। রনির মতো আমরা যদি সকলে এভাবে প্রাণীকে ভালবাসতাম তাহলে পৃথিবীটি খুব সুন্দর হতো। আমাদের উচিত রনির মতো যারা প্রাণীদের ভালোবাসে তাদের পাশে দাড়ানো।
ময়মনসিংহের ত্রিশালের রফিক তার আড়াই একর জমিতে বিদেশি জাতের পেঁপে চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে মোক্ষপুর ইউনিয়নের কইতর বাড়ি ( খলাবাড়ি) এলাকায় আড়াই একর জমিতে বিদেশি রেড লেডি জাতের পেঁপে চাষ করেছেন কৃষক রফিকুল ইসলাম।
জানাগেছে, পেঁপে একটি উচ্চ ফলনশীল ফসল, যা সারা বছরই ফলন দেয়। বিদেশি জাতের পেঁপে চাষের কিছু বিশেষ সুবিধা আছে, যা রফিককে সফল হতে সাহায্য করেছে।
এই জাতের পেঁপের স্বাদ, রং এবং আকার ভালো হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা অনেক বেশি এবং দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে।
এছাড়াও বিদেশি জাতের পেঁপেতে রোগবালাইয়ের আক্রমণ কম তাই ফলন নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি নেই। রফিক বলেন, পেঁপে চাষের সময় জমিতে যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে পাশাপাশি চারা রোপণের আগে জমি ভালোভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে। তাহলেই জমিতে পেঁপের ভাল ফলন হবে।
ত্রিশাল উপজেলা কৃষি কমকর্তা তানিয়া রহমান বলেন, রফিকের বাগানে বাম্পার ফলন হয়েছে। এক একটি গাছে ৪০ কেজির মতো করে পেঁপে এসেছে। তার ১৪ থেক ১৫ লাখ টাকা লাভ হবে বলে আমাকে কৃষক জানিয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা তার বাগানের নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছি।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের আগস্ট মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মোট আদায়ের পরিমান ২৭,১৭৪ কোটি টাকা। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২৩,০৮৯.৩৭ কোটি টাকা। আগস্ট-২০২৫ মাসে বিগত আগস্ট-২০২৪ মাসের তুলনায় ৪০৮৪.৫ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে, অর্জিত প্রবৃদ্ধির হার ১৮%।
২০২৫ সালের জুলাই-আগস্ট এই দুই মাসে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫৪,৪২৩.০০ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের একই সময়ে মোট রাজস্ব আদায়ের পরিমান ছিল ৪৫,০০৫.১৬ কোটি টাকা। এ বছরের জুলাই-আগস্ট এই দুই মাসের রাজস্ব আদায়ে ২১% হারে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
আগস্ট'২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মুসক খাত থেকে সবচেয়ে বেশি ১১,০৮৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। গত অর্থ বছরের আগস্ট'২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,২৮৩.১৫ কোটি টাকা। আগস্ট-২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মুসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩৩.৮৩%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে আগস্ট'২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৮,৪৪২ কোটি টাকা যা আগস্ট'২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৬,৭৯৮.৭৩ কোটি টাকার চাইতে ১,৬৪৩ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে আগস্ট- ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.১৭%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের আগস্ট মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭,৬৪৭ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের আগস্ট'২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,০০৭.৬২ কোটি টাকা। আইবাস প্লাস প্লাস সিস্টেমে অর্থনৈতিক কোড পরিবর্তনজনীত কারণে কাস্টমস হাউসসমূহের উল্লেখযোগ্য পরিমান রাজস্ব সেপ্টেম্বর’২০২৫ মাসে জমা হবার কারণে এই খাতে আগস্ট ২০২৫ মাসে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধির এ ধারাকে আরও জোরালো করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীগণ কর নেট সম্প্রসারণ, কর পরিপালন নিশ্চিতকরণ এবং কর ফাঁকি উদঘাটন কার্যক্রম বেগবান করতে নিরলসভাবে কাজ করছে। সম্মানিত করদাতাগণ আইনের সুষ্ঠু পরিপালনের মাধ্যমে সময়মত যথাযথ পরিমান কর পরিশোধ করে দেশ গড়ার কাজের গর্বিত অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
মেহেরপুরের গাংনীতে অভিনব কায়দায় মটরসাইকেল করে ফেনসিডিল পাচারকালে ৪৫ বোতল ফেনসিডিলসহ লিপন হোসেন নামের এক মাদক কারবারিকে আটক করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে জেলার গাংনী উপজেলার ছাতীয়ান ব্রিক ফিল্ড বাজারের তিন রাস্তার মোড় থেকে এই মাদক পাচারকারিকে আটক করে পুলিশ।
আটক সাইত্রিশ বছর বয়সি লিপন হোসেন কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার তেকালা পশ্চিম পাড়ার ফরজ আলীর ছেলে।
গাংনী থানা পুলিশের এসআই শিমুল বিশ্বাস এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি ছাতীয়ান ব্রিক ফিল্ড বাজার দিয়ে এক মাদক কারবারি মাদক পাচার করছে।
আমরা এমন সংবাদ শুনে আমরা সিভিল ড্রেসে আগে থেকেই সেখানে অবস্থান করি।
পরে ওই সড়ক দিয়ে একটি TVS metro মটরসাইকেল যার নম্বর কুষ্টিয়া হ-১৩২৭৬০ সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় বেরিকেড দিয়ে আটকিয়ে তল্লাশি করে মটরসাইকেলের সিট কভারের নিচে থরে থরে সাজানো ৪৫ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করি।
সেই সাথে মাদক পাচারের কাজে ব্যাবহৃত মটরসাইকেলটি জব্দ করে আসামি গাংনী থানায় নিয়ে আসি।
আটকৃতর বিরুদ্ধে আইনিপ্রক্রিয়া শেষে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সবধরনের সবজির দামই নাগালের বাইরে চলে গেছে।
বর্তমানে নবীনগর সদর বাজারে শিম প্রতি কেজি ২২০-২৩০ টাকা, কাঁচামরিচ ২০০-২২০ টাকা, টমেটো ১১০-১২০ টাকা, উস্তে ৯০-১০০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, পটল ৮০-৮৫ টাকা, বরবটি ৬৫-৭০ টাকা, কাকরোল ৮০-৯০ টাকা, শসা ৫০-৬০ টাকা, মুলা ৬০-৬৫ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬৫-৮০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, কচুর মুখি ৪০ টাকা এবং আলু ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম কাঁচামরিচ ও শিমের।
সবজির দাম আকস্মিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো দিশেহারা হয়ে পড়েছে। নবীনগর সদর বাজারে আসা ক্রেতা আলম মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের আয় সীমিত। এত দামে বাজার করা অসম্ভব। বাজেট ভেঙে গেছে।’ তবে স্বস্তির বিষয় হলো- আলুর দাম এখনো সাধারণ মানুষের নাগালে রয়েছে।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, পাইকারি বাজার থেকেই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ফলে খুচরায়ও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাদের দাবি- মূলত পাইকারি বাজারের উপর নির্ভর করেই সবজির দাম ওঠানামা করে।
অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে মরিচ ও সিমের উৎপাদন কমেছে। তাই সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কিছু কাঁচামরিচ ভারত থেকেও আমদানি করা হচ্ছে।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, সরবরাহ চেইনে ত্রুটি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সবজির দাম বেড়েছে। তারা মনে করেন, এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো জরুরি।
আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস উপলক্ষ্যে ফেনী শহরে আনন্দমুখর শান্তির পদযাত্রা হয়েছে। ‘সংঘাত নয়, শান্তি ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রোববার শহরের ভাষা শহীদ সালাম কমিউনিটি সেন্টারের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয়।
সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ফেনীর সময় সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বেলুন উড়িয়ে পদযাত্রার উদ্বোধন করেন।
পিএফজি সমন্বয়ক মোরশেদ হোসেনের পরিচালনায় বর্ণাঢ্য আয়োজন করে পিস ফ্যাসিলেটেটর গ্রুপ (পিএফজি) ও ইয়ুথ পিস অ্যাম্বাসেডর গ্রুপ (ওয়াইপিএজি)। পদযাত্রার অগ্রভাগে নারী নেত্রী নুর তানজিলা রহমান, মাওলানা আরফান উদ্দিন, পুরোহিত নারায়ন চক্রবর্তী, ফেনী ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সভাপতি দিলু সরকার, বৌদ্ধধর্মের গুরু প্রীতিময় ভিক্ষুর অংশগ্রহণ সম্প্রীতির বাংলাদেশের চিত্র ফুটে উঠে।
পদযাত্রায় নোয়াখালী মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মলয় কান্তি সাহা, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক ও পৌরসভার প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান মেহেবুব, জামায়াতের জেলা আমির মুফতি আবদুল হান্নান, ফেনী ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সচিব ও সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক জেলা কমিটির সদস্য ডা. তবারক উল্যাহ চৌধুরী বায়েজীদ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নুরুল আমিন খান, জেলা মহিলা দল সভাপতি জুলেখা আক্তার ডেইজী, জামায়াতের জেলা প্রচার সম্পাদক আ.ন.ম আবদুর রহীম, এবি পার্টির বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম বাদল, জেলা সভাপতি আহসান উল্যাহ, সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক, ফেনী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ আবু তাহের ভূঁইয়া ও একেএম আবদুর রহীম, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সভাপতি শুকদেব নাথ তপন ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি অ্যাডভোকেট পার্থ পাল চৌধুরী প্রমুখ।
উদ্বোধনী বক্তব্যে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস শান্তি-সম্প্রীতির। আবহমানকাল থেকে দেশের মানুষ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একত্রে বসবাস করছে। আমরা চাই সকল শ্রেণি-পেশার সকল ধর্মের এবং সকল স্তরের মানুষ একত্রিতভাবে কাজ করুন। নাগরিকের যে দায়িত্ব বা অধিকার সবাই পালন করুন।’
শারদীয় দুর্গাপূজার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। পূজার আমেজ ঘনিয়ে আসতেই মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শুরু হয়েছে উৎসবের কেনাকাটার ধুম। শহরের বড় বড় বিপণিবিতান থেকে শুরু করে ফুটপাতের অস্থায়ী দোকান পর্যন্ত এখন জমজমাট কেনাবেচা চলছে। পূজাকে ঘিরে বাজারগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
রোববার সরেজমিনে শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিভিন্ন বিপণীবিতানগুলো ঘুরে দেখা যায়, পোশাক, জুতা, কসমেটিকস, ইমিটেশনের গয়না ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার জন্য ক্রেতাদের ভিড় লেগেই আছে। বিপণিবিতানের পাশাপাশি ফুটপাতের দোকানগুলোতেও ছিল নিম্নবিত্ত মানুষের চোখে পড়ার মতো আনাগোনা।
ক্রেতাদের মধ্যে তরুণ-তরুণীর উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি। তারা জানান, শেষ সময়ে ভিড় এড়াতে আগেভাগেই কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ।
ভুড়ভুড়িয়া চা-বাগান থেকে শপিং করতে আসা দিপা ভৌমিক জানান, ‘দুর্গাপূজা আমাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। প্রতিবছরই পরিবারের সবার জন্য নতুন পোশাক ও উপহার কিনি। এবারও পরিবারের সবাইকে নিয়ে মার্কেটে এসেছি।’
কেনাকাটা করতে আসা রুপন নামের এক ক্রেতা জানান, ‘পূজাকে ঘিরে তার রয়েছে বিশেষ উচ্ছ্বাস। শেষ মুহূর্তের ভিড় আর হুড়োহুড়ি এড়াতেই এখনই কেনাকাটা সেরে নিচ্ছি। আসলে পূজার আনন্দ কেবল মণ্ডপে ঘোরাঘুরিতেই সীমাবদ্ধ নয়, কেনাকাটার মধ্যেও থাকে উৎসবের আসল রঙ। এ মুহূর্তে বাজারে ভিড় তুলনামূলক কম, তাই স্বাচ্ছন্দ্যে পছন্দমতো জিনিস কেনা যাচ্ছে। তবে কয়েকদিন পর যখন মানুষের ঢল নামবে, তখন এভাবে নিশ্চিন্তে কেনাকাটা করা আর সম্ভব হবে না।’
অন্যদিকে শহরের স্বর্ণ অলঙ্কারের দোকানগুলোতেও বিক্রি বাড়ছে সমানতালে। নারীরা পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কিনছেন চুড়ি, মালা, আংটি, গলার হার ও প্রসাধনী সামগ্রী। বিক্রেতা পঞ্চম হাজরা জানান, পোশাকের পাশাপাশি মেয়েদের স্বর্ন অলঙ্কার, সিঁদুর ও অন্যান্য অনুষঙ্গের চাহিদাও বেড়েছে।
স্টেশন রোডের মদিনা মার্কেটের ‘গীতাশ্রী বস্ত্রালয়ের বিক্রেতা লিটন অধিকারী জানান, ‘এবার ক্রেতাদের চাহিদা মাথায় রেখে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ডিজাইনের কামিজ, কুর্তি, থ্রি পিছ, ঘের দেওয়া জামা, বিভিন্ন ধরনের থানকাপড় ও নারীদের জন্য জামদানীসহ বিভিন্ন ধরনের বেনারশী সফট কাতান, তসর, বিভিন্ন ধরণের সিল্ক শাড়ি, জর্জেট শাড়ি, হাফসিল্ক, দুপিয়ান শাড়ি এবং দেশি তাঁতের শাড়িও এনেছি। আজ ক্রেতা সমাগম অনেক বেশি। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। আশা করছি, এ বছর ব্যবসা বেশ সফল হবে।’
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের বালিশিরা ভ্যালি সভাপতি বিজয় হাজরা বলেন, ‘আমাদের চা শ্রমিকদের পূজার কেনাকাটা এখনও শুরু হয়নি। আজ সোমবারে চা বাগানগুলোতে উৎসব ভাতা-বোনাস পাওয়ার পর চা শ্রমিকরা পূজার কেনাকাটা করবেন।’
শহরের বিপণিবিতান ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে এখন বইছে উৎসবের হাওয়া। পূজার দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। জমে উঠেছে শ্রীমঙ্গলের শারদীয় দুর্গাপূজার কেনাকাটা।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের জন্য ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পূজামন্ডপ, বিপণিবিতান ও জনসমাগমস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। আমরা চাই, পূজা ঘিরে যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অশান্তির ঘটনা না ঘটে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসলাম উদ্দিন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আসন্ন দুর্গাপূজাকে ঘিরে শহরের মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলোতে উপজেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ নজরদারি রয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসন সর্বদা তৎপর। পূজার সময় যাতে সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে কেনাকাটা ও উৎসব পালন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।’