রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

যুক্তরাজ্য থেকে টাকা আসত আনসার আল ইসলামের কাছে

বাম থেকে দেলোয়ার হোসেন,সাইফুল ইসলাম ও রেজাউল আলম। ছবি: সংগৃহীত
নুরুজ্জামান লাবু
প্রকাশিত
নুরুজ্জামান লাবু
প্রকাশিত : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১০:১৩

নুরুজ্জামান লাবু

বাংলাদেশে জঙ্গি কার্যক্রমে অর্থায়ন নিয়ে নতুন তথ্য পাওয়া গেছে। যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত এক বাংলাদেশি নানা কৌশলে অনুদান সংগ্রহ করে তা বাংলাদেশের জঙ্গি কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য পাঠাচ্ছেন। গত চার বছরে ওই ব্যক্তি প্রায় ৮০ লাখ টাকা পাঠিয়েছেন।

সম্প্রতি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর জঙ্গিবাদে অর্থায়নের চাঞ্চল্যকর এ তথ্য পেয়েছে ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট-সিটিটিসি।

দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে কাজ করে আসা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, শুরু থেকে যুক্তরাজ্যসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে এনজিওর মাধ্যমে জঙ্গিবাদে অর্থায়ন করা হতো। বর্তমানে এনজিওগুলোকে কড়া নজরদারির মধ্যে আনার কারণে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় জঙ্গিবাদে অর্থায়ন করা হচ্ছে। সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে যারা বিভিন্ন দেশে অবস্থান করেন, তারা ইসলামী কর্মকাণ্ডের কথা বলে অর্থ সংগ্রহের পর হুন্ডির মাধ্যমে তা দেশে পাঠান। জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধ করতে না পারলে দেশের জঙ্গিদের কার্যক্রমও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে না।

সিটিটিসির স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের (এসএজি) উপকমিশনার মিশুক চাকমা দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আনসার আল ইসলামের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর জঙ্গিবাদে অর্থায়নের বিষয়ে যেসব তথ্য পেয়েছি তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। বিদেশ থেকে যারা অর্থায়ন করছেন তাদের বিষয়েও খোঁজখবর করা হচ্ছে। বিদেশে অবস্থানরত জঙ্গিবাদে অর্থায়নকারীদের ধরতে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সহায়তাও নেয়া হবে।’

সিটিটিসি সূত্র জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকা থেকে সাইফুল ইসলাম ওরফে শাকিল ও রেজাউল আলম ওরফে টিংকু নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি। এরপর তাদের দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল ওরফে শাকিল জানান, তিনি পেশায় একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। গুলশানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ২০১৪ সাল থেকে তিনি আনসার আল ইসলামের সঙ্গে যুক্ত। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হওয়ায় সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে তাকে আনসার আল ইসলামের ‘ভল্ট’ বা অ্যাকাউন্ট্যান্ট বানানো হয়।

শাকিল জানিয়েছেন, ২০১৮ সাল থেকে সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে তিনি রেজাউল আলম ওরফে টিংকুর কাছ থেকে প্রায় ৮০ লাখ টাকা নিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে তিনি মাসুল ও মাজমুয়া মাসুল সাইফ ওরফে মুরাদ ওরফে এহসান ওরফে হারুন, সাঈদ ওরফে তৌফিক ও সুজন ওরফে ফরিদের নির্দেশে সাংগঠনিক কাজে ব্যয় করেছেন।

সিটিটিসির এক কর্মকর্তা জানান, রেজাউল আলম টিংকু মোবাইলে আর্থিক সেবাদানকারী এজেন্ট হিসেবেও কাজ করেন। টিংকুর কাছে যুক্তরাজ্য থেকে এসব অর্থ পাঠাতেন শাহীন নামে এক প্রবাসী। ইতিমধ্যে শাহীনের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর শুরু করা হয়েছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, শাহীন ২০০৮ সালে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে গিয়ে পড়াশোনা শেষ করে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।

সিটিটিসি সূত্র জানায়, রিমান্ডে টিংকু জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত শাহীনের নির্দেশনা অনুযায়ী শাকিল ছাড়াও সুমন, দেলোয়ার, সোবাহান, শাহ আলম, মকবুল, সিলেটের বাসিন্দা জাবেদ ও লিটনের কাছে টাকা পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। এরা সবাই আনসার আল ইসলামের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য বলে জানা গেছে। এসব তাদের সাংগঠনিক নাম। টিংকু ও সাইফুলের ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ফরেনসিক পরীক্ষা করে তাদের বিস্তারিত তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্য থেকে শাহীন ছাড়াও সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে পল্টন এলাকার একজন গাড়ি ব্যবসায়ীও তাকে গত কয়েক বছরে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। তার সাংগঠনিক নাম তুহিন। এসব টাকাও তিনি সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে ব্যয় করেছেন। সিটিটিসির কর্মকর্তারা জানান, তুহিন নামের ওই গাড়ি ব্যবসায়ীর বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর করা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে তার প্রকৃত নাম-পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি সংশ্লিস্ট কর্মকর্তারা।

এদিকে যুক্তরাজ্য থেকে রেজাউল আলম টিংকুর মাধ্যমে অর্থ গ্রহণকারী মাওলনা কারি দিলওয়ার হোসাইন নামে আনসার আল ইসলামের আরেক সদস্যকে গত মঙ্গলবার গ্রেপ্তারের পর এক দিনের রিমান্ডে নিয়েছে সিটিটিসি। সিটিটিসির কর্মকর্তারা জানান, দিলওয়ার আনসার আল ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। সাইফুল ও টিংকুকে গ্রেপ্তারের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তিনি ওমান যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তার কাছ থেকেও আনসার আল ইসলামের অর্থায়নসহ সাংগঠনিক বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত উদ্ধার করা হয়েছে।

সিটিটিসির অতিরিক্ত উপকমিশনার আহমেদুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘হঠাৎ করেই আনসার আল ইসলাম আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। তারা দেশ-বিদেশ থেকে অর্থ সংগ্রহ করছে। আমরা এ-সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পেয়েছি। এই সংগঠনের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে নিয়োজিত কর্মকর্তারা জানান, সম্প্রতি আনসার আল ইসলাম কথিত হিজরতের নামে তাদের সদস্যদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে কথিত জিহাদের জন্য প্রস্তুত করা শুরু করেছে। কুমিল্লা, ঢাকা, পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ২০ জন কথিত হিজরতের নামে ঘর ছেড়েছেন। অজ্ঞাত কোনো স্থানে নিয়ে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে বলে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ জন্য তাদের অর্থায়নকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি গ্রেপ্তার শাকির বিন ওয়ালী নামে এক চিকিৎসকের সঙ্গেও যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি সংগঠনের যোগাযোগের তথ্য পাওয়া যায়।


বরিশালে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই শিশুসন্তানসহ মায়ের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বরিশাল প্রতিনিধি

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়নের ঢালমাড়া গ্রামে পল্লি বিদ্যুতের ছিঁড়ে পড়ে থাকা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই শিশুসন্তানসহ মায়ের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত ব্যক্তিরা হলেন- ওই গ্রামের বাসিন্দা মো. রিয়াজ মোল্লার স্ত্রী সোনিয়া বেগম (৩০), মেয়ে রেজবি আক্তার (৯) ও ছেলে সালমান মোল্লা (৫)।

স্থানীয়রা জানান, বসতঘরের পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে বিদ্যুৎ লাইনের তার ছিঁড়ে গেলে প্রথমে শিশু সালমান বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তাকে বাঁচাতে গিয়ে প্রথমে সোনিয়া ও পরে রেজবি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। আশপাশের লোকজন বাকেরগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিসে খবর দিলে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করা হলেও, তার আগেই মৃত্যু হয় ৩ জনের।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।

বাকেরগঞ্জ থানার ওসি মো. আফজাল হোসেন বলেন, ছিঁড়ে পড়া তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মা ও তার দুই শিশুসন্তানের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এর সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পানির মধ্যে পড়ে রয়েছে। পাশে লেবুগাছ রয়েছে। প্রথমে শিশু ছেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তাকে রক্ষা করতে মা ও বোন গিয়ে তারাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। দায়িত্বে অবহেলায় এ ঘটনা ঘটলে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা জানান, বিদ্যুতের লোকদের বলা হয়েছিল লেবু বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়া তার যেকোনো সময় ছিঁড়ে পড়তে পারে; কিন্তু তারা গুরুত্ব দেয়নি।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ বাকেরগঞ্জ জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার সুবাস চন্দ্র দাস বলেন, ঘটনা তদন্তে আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের আজ রোববারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সখীপুর শাল-গজারি বনে এক মাসে ২৫ স্থানে আগুন! 

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

শাল-গজারির বনে ঘেরা অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি টাঙ্গাইলের সখীপুরের বনাঞ্চলে এক মাসে অন্তত ২৫/৩০ টি জায়গায় আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে গজারিয়া বিটে সখীপুর-সিডস্টোর সড়কের কীর্ত্তনখোলা এলাকায় দেখা যায়, সেখানে একটি বনে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, গত এক সপ্তাহে অন্তত চারটি শাল-গজারির বনে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

এর আগে গত বুধবার বিকেলে উপজেলার বহেড়াতৈল বিটের আওতায় ছাতিয়াচালা সাইনবোর্ড এলাকায় একটি গজারির বনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে প্রায় পাঁচ একর গজারির বন আগুনে পুড়ে যায়। এছাড়া কৈয়ামধু বিটের বেতুয়াতেও গজারি বনে কয়েক দফায় আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।

বনবিভাগের অনুমতি ছাড়া যেখানে প্রবেশ নিষেধ, সেখানে ঘটছে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা। প্রতিবছর এ মৌসুমে বনে আগুন দেওয়ার কারণে পুড়ে যায় ছোট ছোট গজারি গাছ, ঝোপঝাড়, পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গ। বিনষ্ট হয় বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল। বন পোড়ানোর কারণে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। বাসা হারাচ্ছে পাখিরা। ফলে প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য নিদারুণভাবে নষ্ট হচ্ছে।

গত এক মাসে সখীপুরের বনাঞ্চলের ২৫টি জায়গায় আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের মধ্যেও সর্বশেষ গত সপ্তাহে উপজেলার বহেড়াতৈল বিটের আওতায় ছাতিয়াচালা সাইনবোর্ড এলাকায় একটি গজারি বনে আগুন দেয়। এতে প্রায় পাঁচ একর গজারির বন আগুনে পুড়ে গেছে।

ডিবি গজারিয়া বিট কার্যালয়ের আওতাধীন অন্তত চারটি স্থানে শাল-গজারির বনে আগুন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কালিয়ানপাড়া, গজারিয়া, কীর্ত্তনখোলা, বংকী এলাকায় শাল-গজারির এসব বনে আগুন দেওয়া হয়। এতে প্রায় ৮ থেকে ১০ একর বন পুড়ে যায়।

স্থানীয় বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সখীপুরে ৪টি রেঞ্জের আওতায় ১৩টি বিট কার্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার একর জমিতে শাল-গজারির বন রয়েছে। বসন্তকালে শাল-গজারির পাতা ঝরে পড়ে। বনাঞ্চলের আশপাশের বাসিন্দারা জমি দখল ও লাকড়ি সংগ্রহের উদ্দেশ্যে রাতের আঁধারে বা কখনো দিনের বেলাতেও বনে আগুন দেন। ঝরা পাতাগুলো শুকনা থাকার কারণে মুহূর্তেই বনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

তুহিন আহমেদ নামের স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, বনের কাছাকাছি নিম্নআয়ের মানুষের বসবাস বেশি। তারা লাকড়ি সংগ্রহের উদ্দেশ্যে অনেক সময় গজারি বনে আগুন দিয়ে থাকেন। আবার কেউ বনের জমি দখলের উদ্দেশ্যে বন পোড়ানোর সঙ্গে জড়িত থাকেন। বনের ভেতরের সড়ক দিয়ে চলাচলকারীরাও অনেক সময় বনে আগুন দেন। মূলত জমি দখল আর লাকড়ি সংগ্রহ করতেই আগুন দিয়ে থাকে দুর্বৃত্তরা।

স্থানীয় বাসিন্দা জুলহাস আহমেদ বলেন, গজারির বনে মাদক সেবীদের আনগোনা থাকে, মাদক সেবনের পর তারা অনেক সময় গাছের পাতায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া কিছু অসচেতন বাসিন্দারাও পাতা পুড়ে সার হবে বলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এ প্রসঙ্গে নলুয়া বিট কর্মকর্তা সাফেরুজ্জামান বলেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে বেশ কয়েকটি গজারির বনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আমরা খুবই সতর্ক অবস্থায় আছি। জনবল কম থাকায় দেখভাল করতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা টাঙ্গাই‌ল শাখার সভাপতি ও মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এএসএম সাইফুল্লাহ বলেন, এক শ্রেণীর অসাধু লোকজন অযথা শাল-গজারি বনে আগুন দিয়ে বন ধ্বংস করছে। এর ফলে পশু-পাখি বিলুপ্ত হতে চলছে। হুমকির মুখে পড়েছে এ অঞ্চলটির বন্যপ্রাণী।

উপজেলা বনায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হোসেন পাটওয়ারী বলেন, এ জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে সচেতনতামূলক সভা করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান বলেন, সখীপুর উপজেলায় বন বিভাগের জনবল কম। তবে স্বল্প জনবল দিয়েই গণসচেতনতা বাড়ানোর কাজ করা হচ্ছে, যাতে লোকজন শাল-গজারি বনে আগুন না দেয়।


ভারতীয় চিনি ফ্রেশ ব্র্যান্ডের লগো দিয়ে বাজারজাতের চেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১৯:৩৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট এলাকার একটি কাঠের কারখানা থেকে অবৈধভাবে মজুদ করা ৬০০ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এই চিনি মেঘনা গ্রুপের ফ্রেশ ব্র্যান্ডের লগোর বস্তায় মজুদ করা হয়। এ ব্যাপারে কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

শনিবার দুপুরে বহদ্দারহাট এলাকায় জেলা প্রশাসনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত সিদ্দিকী এই অভিযান চালান।

তিনি জানান, ৩০ টন ভারতীয় চিনি ফ্রেশ কোম্পানির নামে প্যাকেট করে এখানে মজুদ করা হয়। যা কয়েকদিনের মধ্যে বাজারে ছাড়া হতো। চিনিগুলো কোথা থেকে কীভাবে ভারত থেকে এসেছে তার কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি গুদাম মালিক।

গুদাম মালিক আব্দুর রব্বানীর দাবি, কাঠ ব্যবসায়ী সমিতি সাবেক নেতা জাহিদ বিন জয়নাল গুদামটি ভাড়া নেন। তিনি গত বৃহস্পতিবার এসব চিনি মজুদ করেন। তবে এগুলোর কোনো আমদানীর কাগজ নেই।

ভ্রাম্যমান আদালতের ধারণা চিনি গুলো চোরাই পথে অবৈধভাবে দেশে আনা হয। পুরো চক্রটিকে গ্রেপ্তার করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ বিষয়ে নিয়মিত মামলা রুজুর সিদ্ধান্ত হয়েছে চাঁন্দগাঁও থানায়।


চট্টগ্রামে কাল থেকে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘট

চুয়েট শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া একটি বাস। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১৭:১৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামে আগামীকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদে এ ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

গণপরিবহন মালিক শ্রমিক-ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে আমাদের তিনটি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গাড়ি পোড়ানো ও সড়কে নৈরাজ্যের প্রতিবাদসহ চার দফা দাবি আদায়ে আগামীকাল সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাকা হয়েছে। এই ধর্মঘট পালিত হবে চট্টগ্রাম মহানগর, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এবং কক্সবাজার জেলায়।’

গত সোমবার চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত হন। এ ঘটনার পর থেকেই ১০ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বাসে আগুন দেওয়া হয়।

গত বুধবার বাসচালককে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে শিক্ষার্থীরা কিছুটা শান্ত হয়। পরের দিন বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে তিন ঘণ্টা বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেখানে আলোচনার প্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনের সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে আগামী ১১ মে পর্যন্ত চুয়েট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে চুয়েট সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস ত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই সময়ে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাসে অবস্থান করতে পারবেন। যদিও জরুরি সিন্ডিকেট সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে দাবি আদায়ে আবারও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

বিষয়:

সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে এসে পর্যটকের মৃত্যু

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে এসে হঠাৎ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সী-সেইফ লাইফ গার্ডের সুপারভাইজার মো. ওসমান গণি।

মৃত পর্যটকের নাম মতিউর রহমান (৪০)। তিনি কুমিল্লা জেলার বুড়িশ্চং এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

ওসমান গণি বলেন, শনিবার সকাল থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে সী-সেইফ লাইফ গার্ডের কর্মীরা গোসলরত পর্যটকদের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। সকাল পৌনে ৯টার দিকে সৈকতের বালিয়াড়িতে ওই পর্যটক পায়চারি করছিলেন। একপর্যায়ে ফোনে কথা বলার সময় ওই পর্যটক মাটিতে পড়ে অবচেতন হয়ে যান।

তিনি আরও বলেন, এসময় সেখানে কর্তব্যরত লাইফ গার্ড কর্মীরা তাৎক্ষণিক ওই পর্যটককে উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘সকাল ৯টার পরপরই সৈকতের লাইফ গার্ড কর্মীরা একজন পর্যটককে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কিন্তু হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আকস্মিক হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওই পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক নাকি অন্য কোনো রোগে মারা গেছেন তা ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

মারা যাওয়া পর্যটকের মৃতদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে বলেও এসময়ে জানান তিনি।


ব্ল্যাকে টিকিট কিনে বিপাকে ১৩ যাত্রী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাসুম বিল্লাহ, গাইবান্ধা

দ্বিগুণ দামে টিকিট কিনেও যাত্রীদের পড়তে হয় চরম বিপাকে। হাতে টিকেট থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষের কাছে সাব্যস্ত হতে হয় বিনা টিকিটের অবৈধ যাত্রী হিসেবে। হজম করতে হয় নানা ধরনের কটু কথা। শুধু কী তাই? সিনেমার সুটিংয়ের মতো যেন অভিনয় দেখতে থাকেন অন্য যাত্রীরা। আর দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা পালন করে সাংবাদিকের ভূমিকা।

মঙ্গলবার দিনগত রাতে এমনই ঘটনা ঘটেছে বুড়িমারী (লালমনিরহাট) থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তনগর ট্রেন বুড়িমারী এক্সপ্রেসে। এদিন ওই ট্রেনে নাটোর যাচ্ছিলেন দৈনিক বাংলার গাইবান্ধার এই প্রতিবেদক। সেদিন এই ট্রেনের একটি বগির ১৩ যাত্রীকে দ্বিগুন মূল্য দিয়ে টিকিট কিনেও পড়তে হয়েছে তোপের মুখে।

সেদিনের ট্রেনে দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টদের প্রশ্নের কোনো সদোত্তর দিতে পারেনি পাঁচ টিকিটে থাকা ওই ১৩ যাত্রী। তাদের মধ্যে দুই সন্তানসহ যেন দুমরে-মুচরে গেছেন এক নারীও। কারণ তাদের টিকিটগুলো ছিল কালোবাজারিতে ক্রয় করা। কোথায় আর কিভাবে পেয়েছেন এসব টিকিট? এমন প্রশ্নের উত্তরে কেবল এক নারী ছাড়া অপর ১১ যাত্রীর প্রত্যেকের মুখে ছিল একটিই নাম বোনারপাড়ার ‘জসিম’। প্রশ্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক কে এই জসিম?

ব্ল্যাকে ক্রয় করা টিকিটগুলো বিশ্লেষন করে দেখা যায়, একই তারিখে ক্রয় করা ওই সব টিকিটে আসন সংখ্যা ছিল ১৩ টি। যার দুটি টিকেট ৮ যাত্রী, একটিতে ২ যাত্রী এবং অপর দুটি টিকিটে আসন সংখ্যা ৭ টি দেওয়া থাকলেও যাত্রী ৩ জন। যাত্রীদের মধ্যে পাঁচ যাত্রী কেউ কাউকেই চেনেন না। এছাড়া টিকিট ক্রয়ে যে এনআইডি, মোবাইল নম্বর, এবং যাদের নামে ক্রয় করা হয়েছে তাদেরকে যাত্রীদের কেউই চেনেন না।

এসব টিকিটে ঢাকাগামী যাত্রীদের মধ্যে একজন শাহিন (৫৫)। তার বাড়ি বোনারপাড়ায়। তিনি ফার্নিচারের ব্যবসা করেন, জরুরি কাজে ঢাকায় যাচ্ছেন তিনি। তার কাছে থাকা টিকিটের আসন নম্বর ঞ-৫, ৬, ৭ ও ১১। টিকিট দেওয়ার সময় তাকে বলা হয়েছে তার আসন নম্বর ঞ-৭। এখন প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে অপর তিনটি আসন কার? এছাড়া তার এই টিকিটে টিকিট ক্রয়কারীর নাম আব্দুর রাজ্জাক।

এ সময় জানতে চাইলে যাত্রী শাহিন বলেন, কয়েকদিন চেষ্টা করেও টিকিট পাইনি। পরে জসিমের থেকে বাধ্য হয়ে দ্বিগুন দামে টিকিট কিনেছি। কিছু করার নাই সবখানেই একই অবস্থা। যেতে হবে তো!

আপনার হাতের টিকিটে আব্দুর রাজ্জাক কে? এনআইডি আর এই মোবাইল নম্বরইবা কার? এমন প্রশ্নের উত্তরে যাত্রী শাহিন বলেন, মোবাইল নম্বর এবং এনআইডি কার জানিনা। আর আব্দুর রাজ্জাক কেও আমি চিনিনা।

এছাড়া যাত্রীদের মধ্যে ওই নারীর বাড়ি সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়ার শিমুলতাইর গ্রামে। স্বামী দুলু মিয়া ঢাকায় বেসরকারি চাকরি করেন। মেয়ে মাহমুদা (১১) ও ছেলে মামুনকে (৬) সাথে নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন তিনি।

ওই নারীর হাতে যে টিকিটটি ছিল তাতে আসন নম্বর ছিল ঞ-৫, ৭, ও ১১ নম্বর। ওই নারীর দাবি তাকে বলা হয়েছে তার আসন নম্বর ৫ ও ৭। তাহলে কোচের ১১ নম্বর আসনের যাত্রী কে?

এ সময় জানতে চাইলে ওই নারী বলেন, ঢাকা যাওয়ার জন্য আমার স্বামী দুটি টিকিট ১৭০০ টাকা দিয়ে কিনেছে। স্টেশন থেকে নয়। তবে, কার থেকে কিনেছে টিকিট তা জানা নেই বলে জানান ওই নারী।

তিনি বলেন, টিকিট থাকার পরেও এমন ঘটনা খুব কষ্টের। এসময় পুলিশের নেওয়া ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দিবে কি না-এমন প্রশ্ন করে আতঙ্কগ্রস্ত ছিলেন তিনি।

ব্লাকে টিকিট ক্রয় করা আরেক যাত্রীর নাম শাকিল (২৩) । তবে, শাকিলের কাছে একটি নয় রয়েছে দুটি টিকিট। ওই দুই টিকিটে আসন সংখ্যা ৮টি। তারাও ঢাকা যাচ্ছেন শাকিলসহ ৮জন।

শাকিলের হাতে থাকা দুটি টিকিটই কাউন্টার থেকে প্রিন্ট করা। যার মধ্যে ১, ৪,২৮ ও ৩০ নম্বরের ৪ টি আসনের একটি টিকিটে যাত্রীর নাম দেখাচ্ছে হাওয়া বেগম।

হাওয়া বেগম কে? শাকিলের কাছে টিটিইর এমন প্রশ্নে শাকিল বলেন, চিনিনা। তাহলে তার নামের টিকিটটি তোমার হাতে এলো কিভাবে? শাকিল বলে বোনারপাড়ার জসিম ভাইয়ের থেকে প্রতিটি টিকিট ৮০০ টাকা করে কিনেছি। এসময় জসিমের নাম শুনে ক্ষিপ্ত হন টিটিই। তখন টিটিই সহ ট্রেন সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তির মুখে এসব কালোবাজারিতে টিকিট ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে বোনারপাড়া স্টেশনের বর্তমান স্টেশন মাস্টার খলিলও জড়িত আছে বলে অভিযোগ তোলেন।

এ সময় টিকিট কালেক্টর গোলাম হাফিজ রিজু বলেন, এই ঞ বগির পাঁচটি টিকিটে থাকা ১৩ যাত্রীর প্রত্যেকেই ব্ল্যাকে টিকিট কিনেছেন। বিধি মোতাবেক তারা প্রত্যকেই অবৈধ যাত্রী। কেননা, তাদের কাছে থাকা টিকিট ক্রয়ে যে এনআইডি ব্যবহার করা হয়েছে সেই নামের বা সেই এনআইডিধারী ব্যক্তি মূলত যাত্রী নয়।

কে এই জসিম?

সেদিনের একটি বগির ১৩ যাত্রীর কাছে ব্ল্যাকে টিকেট বিক্রেতা কে এই জসিম? তার পরিচয় সনাক্তের চেষ্টা করেছে দৈনিক বাংলার গাইবান্ধা এই প্রতিবেদক। খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে,

সাঘাটা উপজেলার রাঘবপুর গ্রামের বীর মুক্তযোদ্ধা মৃত হায়দার আলীর ছেলে 'জসিম'। তিনি এক সময় বোনারপাড়া স্টেশনে ব্যবসা করতেন। জসিম ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর টিকিট কালোবাজারে বিক্রির সময় বোনারপাড়া থেকে তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে বোনারপাড়া রেলওয়ে পুলিশ। সে সময় তার (জসিম) কাছ থেকে ট্রেনের চারটি টিকিট উদ্ধার করা হয়। পরে একই তারিখে রেলওয়ে পুলিশ বাদি হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত জসিম মুঠোফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এখন টিকিট সব অনলাইনে, আর টিকিটে আমার নাম বা আমার নম্বর নাই। বোনারপাড়াতে মানুষকে ভালবেসে কিছু করতে যায়া (গিয়ে) আমার নামে একটা ঘটনা ঘটে গেছে। তারপর থেকে আমি অনেকটাই দূরে।

এ সময় তিনি বলেন, বোনারপাড়া স্টেশন মাস্টার থেকে শুরু করে সবাই এই ব্যবসার সাথে জড়িত। মূলত তারাই এসব টিকিট বিক্রি করে যদি কোনো সমস্যা হয় তারা আমার (জসিম) নামটা তাদেরকে বলতে বলে দেয়।

বোনারপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার খলিল মোবাইল ফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, টিকিট কালোবাজরীর বিষয়টি দেখার দায়িত্ব জিআরপি এবং আরএমপি পুলিশের। তারা কী করে? টিকিট এখন শতভাগ অনলাইনে। যদি কেউ আমার কথা বলে থাকে তা মিথ্যা বলেছে। আমি জসিমকে সেরকমভাবে চিনিও না।

এ ব্যাপারে গাইবান্ধা রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযুক্ত জসিমকে ২০১৯ সালে কালোবাজারে টিকিট বিক্রিকালে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় রেলওয়ে পুলিশ। এই অভিযোগের বিষয়টিও অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।’

এ বিষয়ে ডিভিশনাল ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট (লালমনিরহাট) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি বন্ধ করতে শতভাগ টিকিট এখন অনলাইনে।

তিনি বলেন, অনেক সময় সিন্টিকেটেরা এক সিটের টিকিট একাধিক ব্যক্তিকে দিয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে ট্রেনে থাকা সংশ্লিরা যাদের টিকিটের সঙ্গে নাম বা এনআইডির মিল পায় তাদের ওই সিটে বসিয়ে দেয় এবং অন্যজনকে জরিমানাসহ নতুন টিকিট করে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে সৈয়দপুর রেলওয়ে পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ বলেন, বিষয়টি জানলাম, অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


ময়মনসিংহে বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে ২ জন নিহত

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ময়মনসিংহ ব্যুরো

ময়মনসিংহ সদরে বাস ও সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন চারজন। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে সদরের আলালপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, ‘জেলার তারাকান্দা থেকে যাত্রীবাহী একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ময়মনসিংহের দিকে যাচ্ছিল। ময়মনসিংহ সদরের আলালপুর এলাকা পর্যন্ত আসতেই বিপরীত দিক থেকে আসা শেরপুরগামী একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে দুজন মারা যান। এসময় আশপাশের লোকজন আহত অবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।’

তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনার পর বাসটি আটক করা হয়েছে। তবে বাসচালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছে। নিহতদের নাম-পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।’

বিষয়:

দাবদাহে পাটখেত ফেটে চৌচির, বিপাকে কৃষকরা

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাদারীপুর প্রতিনিধি

দাবদাহ আর বৃষ্টিহীনতায় পুড়ছে মাদারীপুরের পাটখেত। বৈশাখের তপ্ত রোদে পাটখেত নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। পাটের জমিতে ঘন ঘন সেচ দেওয়ায় যেমন উৎপাদন খরচ বাড়ছে, তেমনি প্রচণ্ড খরায় জমির আগাছা পরিষ্কার করতে পারছেন না কৃষকরা।

এমনটা চলতে থাকলে উৎপাদন অনেকটা হুমকির মুখে পড়বে বলেও আশঙ্কা কৃষকদের। আর কৃষি বিভাগের দাবি, সেচ ব্যবস্থায় উৎপাদন বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন চাষিরা।

সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের মধ্যচক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কয়েক দিনের তীব্র দাবদাহে পাট গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। খেতেই মরে যাচ্ছে পাট গাছ। কোথাও শুকিয়ে মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। ফলে ঘন ঘন সেচ দিয়েও গাছের আশানুরূপ পরিবর্তন আনতে পারছেন না কৃষকরা। অনাবৃষ্টির কারণে পাট গাছের বৃদ্ধি না হওয়ায় জমিতে আগাছার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্বিগুণ হারে। এবার প্রতি বিঘা পাট চাষ করতে খরচ হয়েছে ১৯ হাজার ৫০০ টাকার মতো। যা গতবারের চেয়ে অন্তত ২ হাজার টাকা বেশি। এরপরে গাছ শুকিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য সেচ দিচ্ছেন চাষিরা। ফলে আরও বাড়তে পারে উৎপাদন ব্যয়। এতে হিমশিম খাচ্ছেন চাষিরা।

খোয়াজপুরের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কয়েকদিনের প্রচণ্ড গরমে মাঠ ফেটে চৌচির। পাটগাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। একটুখানি বড় হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন চললে এবার পাট আবাদ ধসে পড়বে। অনেকেই সেচ দিলেও এক-দুই দিন পরে আবার শুকিয়ে যায়। এতে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে উঠছে।’

আর মাদারীপুর জেলা কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় এবার ৩৭ হাজার ৪০২ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এরই মধ্যে অধিকাংশ জমিতে বপন কাজ শেষ হয়েছে এবং অনেক স্থানে চারা বড় হয়ে গেছে। কিন্তু রোগের কারণে পাটের ক্ষতি হওয়ায় চাষিদের বিকেলে পানি সেচ দেওয়ার পরামর্শ দেন কর্মকর্তারা।

এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক আব্দুল মতিন বিশ্বাস বলেন, এই গরমে পাটের কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে, সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে কৃষকদের বলছি, যেন বিকেলে সেচের মাধ্যমে পাট গাছ জীবিত রাখে। এতে গাছ মরবে না। যদি পানি না দেওয়া হয়, তাহলে ক্ষতি হবেই। অন্যদিকে এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পাটের দাম বাড়ার সম্ভাবনাকে হিসাবে দেখছেন। তাই সাময়িক ক্ষতি মেনে নিতে তার আহ্বান।

মাদারীপুর জেলায় অন্যতম অর্থকরী ফসল হিসেবে পাটের অবস্থান শীর্ষে। গতবছর পাটের মূল্য ভালো পাওয়ায় কৃষকরাও এবার বেশি জমিতে পাট চাষ করেছেন।

বিষয়:

বাগেরহাটে ট্রাকের চাপায় প্রাণ গেল তিন ভ্যানযাত্রীর

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় খুলনা-মোংলা মহাসড়কের চেয়ারম্যানবাড়ী মোড় এলাকায় ট্রাক চাপায় তিনজন ভ্যানযাত্রী নিহত হয়েছেন।

আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মোংলাগামী একটি ট্রাক তার বিপরিত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী ভ্যানকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলে একজন নিহত ও দুইজন গুরুত্বর আহত হন।

আহতদের উদ্ধার করে রামপাল উপজেলা হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদেরও মৃত্যু হয়।

নিহতরা হলেন- বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ঝনঝননিয়া গ্রামের রেজ্জাক মোড়লের ছেলে সাঈদ মোড়ল (৪৫), একই গ্রামের ইকলাস মোড়লের ছেলে মো. আজাদ (৩৫) ও কুমরাই গাববুনিয়া গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে মো. মনি (৪৫)।

বাগেরহাট জেলা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল আক্তার জানান, দুর্ঘটনার পরপরই পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যার দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত সাঈদ মোড়রের মরদেহসহ আহতদের ট্রাকের চাকার নিচ থেকে উদ্ধার করে রামপাল উপজেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। এসময়ে ঘাতক ট্রাকটির চালক গাজী সাফায়েত হোসেনকে (১৮) আটক ও ট্রাকটি জব্দ করা হয়।

বর্তমানে খুলনা-মোংলা জাতীয় মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান তিনি।

বিষয়:

এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন নয়: গণপূর্তমন্ত্রী

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ছবি: সংগৃহীত


গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, ‘আবাসন মানুষের কাঙ্ক্ষিত বিষয়। দেশের সব জনগণকে আবাসনের ব্যবস্থা করে দিতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।’

আজ শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাউজিং প্রকল্প প্রাঙ্গণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সমবায় সমিতি লিমিটেডের উদ্যোগে দেওয়া সংবর্ধনা ও সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, নতুন নতুন ভবন নির্মাণের সময় এসটিপি (সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট) যারা করবে, তারাই শুধু ভবন নির্মাণের অনুমোদন পাবেন। এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না।

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘ঢাকা দূষিত শহরের তালিকায় বিশ্বের এক থেকে তিন নম্বরের ভেতরে থাকে। এই অবস্থায় আমরা কেউই শান্তিতে থাকতে পারব না। আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যেও একটি বড় অংশ মধ্যবিত্ত। এই মধ্যবিত্তের সুবিধাও চিন্তা করতে হবে। দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী চিন্তা করছেন। যার কারণে তিনি আশ্রয়ণ প্রকল্প গড়ে তুলেছেন।’

তিনি বলেন, তিতাসের পূর্বপাড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরকে সম্প্রসারিত করা হবে। করুলিয়া খালের দক্ষিণপাড়ে অ্যাপার্টমেন্ট করা হবে। পৌর এলাকাকে বর্ধিত করা হবে। পরিকল্পিত নগরায়ণ করা হবে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমির রেক্টর (সচিব) মো. সহিদ উল্যাহ, সাবেক সচিব গোলাম রব্বানী, বিয়াম ফাউন্ডেশনের সাবেক মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান, সমবায় অধিদপ্তরের অতিরিক্ত নিবন্ধক আহসান কবীর, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন ও পৌর মেয়র নায়ার কবির।


পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় কারাগারে ৩ 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পাবনা প্রতিনিধি

পাবনার সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখার ভোল্ট থেকে ১০ কোটি ১৩ লক্ষ ৬২ হাজার ৩শ’ ৭৮ টাকা উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই ব্যাংকের প্রধান তিন কর্মকর্তা শাখা ম্যানেজারসহ ৩ অফিসারকে আটকের পর কারাগারে পাঠিয়েছেন‌ আদালত।

শুক্রবার বিকেলে সাড়ে ৫টার দিকে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর। এর আগে গতকাল দুপুরে তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করে সাঁথিয়া থানা পুলিশ।

আটককৃতরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) সুজানগর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকার মৃত জান বক্সের ছেলে আবু জাফর এবং ক্যাশিয়ার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের মৃত শুশীল চক্রবর্তীর ছেলে সুব্রত চক্রবতী।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের জিআরও এএসআই মাহবুবুর রহমান জানান, বিকেলে সাঁথিয়া থানা থেকে এনে তাদের আদালতে তোলা হয়। এসময় কেউ তাদের জন্য জামিন আবেদন করেননি। ফলে আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় অফিস থেকে ৫ সদস্য অডিট টিম কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে যায়। দিনভর অডিট করে তারা ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩’শ ৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম পায়। তারপরই অগ্রণী ব্যাংকের ওই শাখায় টাকা গড়মিলের খবর জানাজানি হয়ে যায়।

এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানায় ওই শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম জানান, ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী ও সিনিয়র অফিসার আবু জাফরকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দিলে পুলিশ বৃহস্পতিবার দিনগত গভীর রাতে তাদের তিনজনকে আটক করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, অডিটে অনিয়ম ধরা পড়লে তাদের আটক করে সাঁথিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। গতকাল শুক্রবার দুপুরে জিডির ভিত্তিতে আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি দুদুক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।


পঞ্চগড়ের চাওয়াই নদীতে ডুবে ফুপু-ভাতিজির মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড় সদর উপজেলায় চাওয়াই নদীতে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে আলমি আক্তার (১২) ও ইসরাত জাহান সিফাত (৯) নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহত আলমি ওই এলাকার আব্দুল আজিজের মেয়ে এবং সিফাত সাইফুল ইসলামের মেয়ে। তারা দুজনে সম্পর্কে ফুপু-ভাতিজি। আজ শুক্রবার দুপুরে জেলার সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নেট চাওয়াই নদীর চৈতন্যপাড়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে আলমি ও সিফাত বাড়ির পাশে চাওয়াই নদীতে গোসল করতে যায়৷ নদীতে গোসল করতে গিয়ে সিফাত পানিতে ডুবে যেতে থাকলে তাকে বাঁচাতে পানিতে এগিয়ে আসে আলমি৷ পরে দুজনে পানিতে ডুবে যায়। নদীর পাড়ে থাকা অন্য আরেক শিশু বিষয়টি দেখে দৌড়ে তাদের পরিবারের লোকজনকে জানালে তারা ঘটনাস্থলে দ্রুত গিয়ে মৃত অবস্থায় পানির নিচ থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করে।

পঞ্চগড় সদর থানার উপপরিদর্শক পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, দুই শিশুর মধ্যে একজন সাঁতার জানত আরেকজন জানত না। একজন আরেকজনকে বাঁচাতে গিয়ে দুজনেই একসঙ্গে ডুবে মৃত্যু হয়েছে বলে স্থনীয়রা বলছে। ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে মরদেহ সুরতহাল শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।


চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি

আপডেটেড ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১৬:১৬
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

চুয়াডাঙ্গায় অব্যাহত রয়েছে অতি তীব্র তাপদাহ। এতে ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে এখানকার মানুষের জনজীবন। গরমে অস্বস্তি বেড়েছে কয়েকগুণ।

চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙলো চুয়াডাঙ্গা। আজ শুক্রবার বিকেলে জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি চলতি মৌসুমে জেলা ও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।

গরমে একটু স্বস্তি পেতে গাছের ছাঁয়ায় আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ। কেউ আবার পান করছেন ফুটপাতের অস্বাস্থ্যকর পানীয়। তীব্র গরমে জেলার হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা। চলমান দাবদাহে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে সেচ কার্যক্রমও। নষ্ট হচ্ছে ধান, আম, লিচু ও কলাসহ মাঠের অন্যান্য ফসল।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তালতলা গ্রামের কৃষক আবু তালেব বলেন, ‘এই তাপে মাঠে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। ভ্যাপসা গরমে কৃষি কাজ করা যাচ্ছে না। ধানের জমি শুকিয়ে যাচ্ছে। ধানে বেশি সেচ লাগছে। কিন্তু সেচ পাম্পে ঠিকমত পানিও উঠছে না।’ চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘গতকাল থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলার উপর দিয়ে অতি তীব্র তাপদাহ অব্যাহত রয়েছে। আগামী তিন দিন এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে।’

এদিকে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

এতে আরও বলা হয়, দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এসময়ে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজ করতে পারে।

এছাড়া, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলাসমূহের ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলাসহ খুলনা বিভাগের অন্যান্য জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং ঢাকা, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, বগুড়া, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।


banner close