ছয় বছরের শিশু মেঘ। মেঘের জন্ম হৃৎপিণ্ডে ছিদ্র নিয়ে। বগুড়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে মেঘের পরিবার বগুড়া-ঢাকা, ঢাকা-বগুড়া করতে করতে দিশেহারা। একমাত্র সন্তানের এ অবস্থায় সবচেয়ে ভালো চিকিৎসকের চিকিৎসা চান তারা। ঢাকার নামী এক শিশু হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞের সন্ধান পেলেও একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার সিরিয়াল পেতে পরিবারটিকে পোহাতে হয় সীমাহীন ভোগান্তি।
দিনের পর দিন, মাসের পর মাস অপেক্ষার পর সেই চিকিৎসককে দেখাতে সক্ষম হন মেঘের বাবা-মা। তিনি জানান, শিশুটির অতিসত্বর অস্ত্রোপচার দরকার। চিকিৎসকের মন্তব্য উদ্ধৃত করে মেঘের বাবা দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আপা বলেছিলেন, ইমিডিয়েটলি ওর অপারেশন করাতে হবে, তিন সপ্তাহের ভেতরে। কারণ মেঘের হৃৎপিণ্ডের ছিদ্র দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়ে সেটা ভাল্বকে ক্ষতিগ্রস্ত করছিল।’
আর এ জন্য মেঘের বাবা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের এক চিকিৎসককে রেফার করেন। সেই চিকিৎসক মেঘকে দেখেন, তিনিও অস্ত্রোপচার করার পক্ষে মত দেন। কিন্তু বাদ সাধে সিরিয়াল। হার্ট ফাউন্ডেশন থেকে মেঘের পরিবারকে অস্ত্রোপচারের জন্য সময় দেয়া হয় ২০২৩ সালের ১৮ মার্চ।
মেঘের বাবা দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘অস্ত্রোপচারের তারিখ দেখে পরিবারের যে যেখানে আছেন, তাদের কাছে যাই। কারও কোনো যোগাযোগের মাধ্যমে যদি একমাত্র সন্তানের অস্ত্রোপচারটা আগে করাতে পারি, তারিখ পাওয়া যায় জানুয়ারিতে। কিন্তু যে বাচ্চার অপারেশন তিন সপ্তাহের ভেতরে করানোর জন্য বলা হয়েছে, সেটা ছয় মাস অপেক্ষা করার মতো নিষ্ঠুরতা মনে হয়েছে। এরপর ফের মানুষের কাছে ধরনা দিচ্ছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মনে হচ্ছে সময়টা যদি কমিয়ে আনাও যায়, সেটাও আগামী নভেম্বরের আগে হবে বলে মনে হয় না।’
বিশ্বে হাসপাতালে জন্ম নেয়া প্রতি ১ হাজার শিশুর মধ্যে ৮ থেকে ১০টি শিশু জন্মগত হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে জন্ম নেয়। চিকিৎসকরা অবশ্য বলছেন, দেশে মোট কত শিশু হৃদ্রোগী রয়েছে তার পূর্ণাঙ্গ পরিসংখ্যান নেই।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শিশু হাসপাতাল, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল এবং বারডেম হাসপাতালে শিশু হৃদ্রোগীদের চিকিৎসা হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০ থেকে ৬০টি শিশু, জাতীয় হৃদ্রোগ হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে শিশু হৃদ্রোগী আসে আরও বেশি। তাদের সবাইকে এক দিনে ইকো করাও সম্ভব হয় না।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তথ্যমতে, হার্টে ছিদ্র নিয়ে জন্ম নেয়া ১০০ শিশুর মধ্যে ১০ থেকে ২০ শতাংশের ছিদ্র আপনাআপনি বন্ধ হয়ে যায়। বাকি ৮০ শতাংশের চিকিৎসা নিতে হয়। এর মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশের অস্ত্রোপচারের দরকার হয়। বাকিদের বিনা অস্ত্রোপচারে ডিভাইসের মাধ্যমে ছিদ্র বন্ধ করা হয়। অস্ত্রোপচার করা শিশু হৃদ্রোগীদের মধ্যে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশের অস্ত্রোপচার হয় জটিল। সেই সঙ্গে কিছু কিছু নবজাতকের সমস্যা এত প্রকট থাকে যে তাদের জন্মের পরপরই অস্ত্রোপচারের দরকার হয়। কিন্তু ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া এ ধরনের অস্ত্রোপচার কোথাও হয় না। জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে শুরু হলেও এখন আর হচ্ছে না।
এই সংকটের সঙ্গে যোগ হয়েছে চিকিৎসকসংকট। দেশে শিশু কার্ডিয়াক সার্জনের সংখ্যা ৮ জন, শিশু কার্ডিওলজিস্ট রয়েছেন ২০ জনের মতো।
দেশে ১৭ কোটি জনসংখ্যার বিপরীতে শিশু-কিশোরের সংখ্যা ৪০ শতাংশ। সে হিসাবে শিশু-কিশোরের সংখ্যা ৬ কোটি ৪০ লাখ। দেশে জন্মগত হৃদ্রোগীর সংখ্যা ৬ লাখ ৪০ হাজারের মতো বলে ধরা হয়। এই রোগীদের মধ্যে চিকিৎসার ভেতরে আসা শিশুদের ২০ থেকে ৪০ ভাগ বিলম্বিত চিকিৎসার কারণে মারা যায়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে হৃদ্রোগে শতকরা প্রায় ২৭ ভাগ মানুষের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ১০ ভাগই শিশু। দেশে বর্তমানে প্রতি হাজারে ১০ জন শিশু হৃদ্রোগে ভুগছে। আর এমন পরিস্থিতিতেই আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব হার্ট দিবস। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য- ইউজ হার্ট ফর এভরি হার্ট।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, দেশে ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে শিশু কার্ডিওলজি বলতে কোনো বিভাগ নেই, চিকিৎসক নেই। ১৭ কোটি মানুষের দেশে হৃদ্রোগে আক্রান্ত শিশুরা যে পরিমাণে অবহেলার শিকার, এটা ভাবাও যায় না। অথচ এমন অনেক শিশু রয়েছে, যাদের অতিসত্বর অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। কিন্তু মাত্র দুটি হাসপাতালে আর কত চিকিৎসা দেয়া যাবে।
জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের শিশু কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ শাহরিয়ার দৈনিক বাংলাকে বলেন, দেশে দক্ষ কার্ডিয়াক জনবল নেই, পৃথক ক্যাথল্যাব নেই। তাই কার্ডিয়াক সার্জারির জন্য আলাদা করে কোর্স এবং পোস্ট তৈরি করতে হবে। সেই সঙ্গে জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউটে মানসম্মত পৃথক শিশু আইসিইউ বিশেষজ্ঞসহ আইসিইউ দিতে হবে। তাহলে শিশু হৃদ্রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা অনেকখানি কমবে।
দুর্ভোগের আরেক নাম সুন্দরবন সংলগ্ন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী গাবুরা খেয়াঘাটটি। দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে প্রতিদিন শতশত মানুষ ঝুকি নিয়ে খোলপেটুয়া নদীটি পার হচ্ছে। সংস্কারের অভাবে শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী-গাবুরা খেয়াঘাটের বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। এতে স্থানীয়দের দুর্ভোগ দিনে দিনে চরম আকার ধারণ করছে। যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটকে পারে, এমন টি জানিয়েছে ভুক্তভোগী মহল।
খোলপেটুয়া নদীর এই ঘাট দুটি বুড়িগোয়ালিনী ও গাবুরা ইউনিয়নে পারাপারের একমাত্র মাধ্যম।
স্থানীয়রা জানান, খেয়াঘাটের খুব খারাপ অবস্থা। প্রবীণ নারী-পুরুষ, গর্ভবতী নারী বা অসুস্থ রোগী ও শিক্ষার্থীদের পারাপারে খুব দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। বর্ষাকালে তাদের দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
বোট মাঝি আলামিন বলেন, এই ঘাটে আমাদের বোট ধরতে (ঘাটে ভিড়াতে) বেশ সমস্যায় মধ্যে পড়তে হয়। ধরার জন্য ভালো কোন জায়গা নেই। বিশেষ করে ঝড় আর তুফানের সময় বেশ বেগ পেতে হয়। মোটরসাইকেল তোলা খুব কষ্টকর হয়ে যায়। ভুক্তভোগী আনোয়ারা বেগম বলেন, নারীদের নৌকায় উঠতে বেশ সমস্যা হয়। কারো সাহায্য ছাড়া ওঠা সম্ভব নয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, বুড়িগোয়ালিনী পাড়ের খেয়াঘাটটি সম্পুর্ন ভাবে চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এঘাট দিয়ে ওঠা নামা করার সময় প্রায় সাধারন মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। ওই এলাকার শতশত ভুক্তভোগী মহল বুড়িগোয়ালিনী-গাবুরা খেয়াঘাট সংস্কারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে পরিত্যক্ত অবস্থায় দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয় অস্ত্রের বিচ্ছিন্ন অংশ উদ্ধার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার (১৬ জুন) ভোর রাতে এই অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানাগেছে। দৌলতপুর থানার ডিউটি অফিসার এস আই পলাশ প্রতিবেদককে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
আস আই আরও বলেন, উপজেলার হোগলবাড়ীয়া ইউনিয়নের সোনাইকুন্ডি গ্রামে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব রেজাউল হক চৌধুরীর ছোট ভাই মিন্টু চৌধুরীর বাড়ির এরিয়ায় রবিবার দিবাগত ভোর ৪ টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন।
পরিচালিত এ অভিযানে পরিত্যক্ত অবস্থায় এক নলয়ালা বন্দুকের ১টি বাট ও ১টি পাইপ, ৪০টি গুলির ঠোশ, ৬টি ফালা (বল্লভ), ৬টি রামদা, ১টি চাকু ও ১টি বন্দুকের পাইপ পরিষ্কার করার ব্রাশ উদ্ধার করা হয়। পরিচালিত অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধারকৃত অবৈধ দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয় অস্ত্রের বিচ্ছিন্ন অংশ দৌলতপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ঘটনায় দৌলতপুর থানার ডিউটি অফিসার এস আই পলাশ বলেন, পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধারকৃত অবৈধ দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয় অস্ত্রের বিচ্ছিন্ন অংশ দৌলতপুর থানায় জব্দ আছে এবং আইনি প্রক্রিয়ায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রাতের আঁধারে সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরির অভিযোগ ওঠেছে পৌরসভার এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে। পৌরসভার খণ্ডকালীন কর্মচারী (গাড়ি চালক) শ্যামল মিয়ার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠে। গত শুক্রবার রাতের আঁধারে নৈশ প্রহরী আবুল হোসেনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে একটি ময়লা টানার গার্ডেজ পিকআপ ভ্যানের চাকা খুলে নিয়ে যায়। গাড়ির চাকা খুলে নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। পরে গত শনিবার বিকালে খুলে নেওয়া চাকা ফেরত দিয়ে যায় গাড়িচালক শ্যামল মিয়া।
বিভিন্ন সময়ে পৌরসভার বিভিন্ন গাড়ির যন্ত্রাংশ উধাও হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন পৌর কর্মচারীরা। এছাড়া পৌর এলাকার নয়টি ওয়ার্ডে ময়লা আর্বজনা ফেলার ৯টি লোহার তৈরি ডাস্টবিনের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। সেই ডাস্টবিনের রক্ষণাবেক্ষণ গাড়িচালক শ্যামল মিয়া করে থাকেন বলে পৌরসভার একাধিক কর্মচারী জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো.মাশরেকুল আলম।
জানা যায়, সোনারগাঁ পৌরসভার খাস নগর দিঘিরপাড় গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মো. শ্যামল মিয়া দীর্ঘ ৮ বছর ধরে সোনারগাঁ পৌরসভার ময়লার গাড়ি, পানির গাড়ি, ভেকু, রোড রুলারসহ বিভিন্ন গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত আছেন। সেই গাড়িগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তিনিই করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সময়ে পৌরসভার গাড়িগুলোর যন্ত্রাংশ উধাও হয়ে যায়। গত শুক্রবার রাত পৌনে ১১টার দিকে পৌরসভার নৈশ প্রহরী আবুল হোসেনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ময়লার গাড়ি পিকআপ ভ্যানের একটি চাকা খুলে নিয়ে যায়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে পরদিন গত শনিবার বিকালে ফেরত দিয়ে যায়।
সোনারগাঁ পৌর এলাকার লাহাপাড়া গ্রামের আমির হোসেন বলেন, পৌরসভার কর্মকর্তাদের যোগসাজসে গাড়িগুলোর যন্ত্রাংশ চুরি হয়। দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরি হলেও এ বিষয়ে তারা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এছাড়া পৌর এলাকার ময়লা ফেলার ডাস্টবিনগুলো কোথায় গেল? কে নিয়ে গেল? কারও কোনো মাথাব্যথা নেই।
আদমপুর গ্রামের ইমরান খাঁন জানান , তার বাড়ির সামনে একটি লোহার ডাস্টবিন ছিল। সেখানে আশপাশের বাড়ির লোকজন ময়লা ফেলত। এখন সেই লোহার ডাস্টবিন নেই। ডাস্টবিন না থাকায় ময়লাগুলো মাটিতে ফেলে পরিবেশ দূষণ করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার একাধিক কর্মচারী জানিয়েছেন, বিভিন্ন সময়ে গাড়ির যন্ত্রাংশগুলো চুরি হয়ে গেলেও কেউ এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়নি। সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে নৈশ প্রহরীর সামনে গাড়ির চাকা খুলে নিয়ে যায়। বিষয়টিও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। ধারণা করা হচ্ছে লোহার ডাস্টবিনগুলো কারও যোগসাজসে সে চুরি করতে পারে। সোনারগাঁ পৌরসভার নৈশ প্রহরী আবুল হোসেন বলেন, রাত পৌনে ১১টার দিকে গাড়িচালক শ্যামল গাড়ির চাকা খুলে নিয়ে যায়। পরদিন শনিবার বিকালে এলাকার লোকজনের সামনে ফেরত দিয়েছে।
অভিযুক্ত গাড়িচালক শ্যামল মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গাড়ির চাকা ঠিক করার জন্য খুলে নেওয়া হয়েছে। তবে খারাপ কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। সিসিটিভি বন্ধ করার বিষয়ে কোনো উত্তর দেননি তিনি।
সোনারগাঁ পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশরেকুল আলম বলেন, অফিসে এসে চুরির বিয়য়টি জানতে পেরেছি। গাড়িচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সিলেটের জাফলংয়ে দুই উপদেষ্টার গাড়িবহরে গতিরোধ ও বিক্ষোভের ঘটনায় সদ্য বহিষ্কৃত যুবদল নেতা জাহিদ খানকে প্রধান আসামি করে ১৫৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে ৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, বাকিদের অজ্ঞাতনামা হিসেবে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
রবিবার (১৫ জুন) রাতে গোয়াইনঘাট থানার উপপরিদর্শক ওবায়দুল্লাহ বাদি হয়ে মামলাটি করেছেন বলে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সিলেটের পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান বলেন, ঘটনার পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অভিযুক্তদের শনাক্তে কিছুটা সময় লেগেছে। ইতোমধ্যে পুলিশ অভিযানে নেমেছে বলেও জানান তিনি।
এ ছাড়া, গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমেদ জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও অবরোধ সৃষ্টি করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সদ্য বহিষ্কৃত যুবদল নেতা জাহিদ খানকে মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে, দ্বিতীয় আসামি হিসেবে রয়েছেন ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ও আজির উদ্দিন। এ ছাড়াও মামলায় আরও সাতজনের নাম উল্লেখ রয়েছে।’
গত শনিবার (১৪ জুন) জাহিদ খান ও আজিরের নেতৃত্বে জাফলংয়ে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। এতে বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের গাড়িবহরের গতিরোধ করা হয়। ঘটনার প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর এ মামলা দায়ের করে পুলিশ।
সাতক্ষীরার আ.লীগের সংরক্ষিত আসেনের সাবেক এমপি রিফাত আমিনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার করেছে যৌথবাহিনী। এসময় তার ছেলে সাফায়েত সরোয়ার রুমনকে আটক করা হয়েছে।
রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে শহরের আব্দুর রাজ্জাক পার্কস্থ বিলাশবহুল বাড়িতে ২ ঘণ্টাব্যাপী অভিযানে নেতৃত্ব দেন সেনাবাহিনীর সাতক্ষীরা ক্যাম্পের মেজর ইফতেখার আহমেদ।
সাফায়াত সরোয়ার রুমন আশাশুনির কাদাকাটি গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে এবং তার মা রিফাত আমিন সাতক্ষীরা জেলা মহিলা আ.লীগের সাবেক সভানেত্রী ও আ.লীগের সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি ছিলেন।
যৌথবাহিনীর অভিযানের শুরুতেই দুইতলা হতে রুমন লাফিয়ে নিজতলা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। তখন যৌথবাহিনী রুমনকে আটক করে বাড়িতে তল্লাশি করে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার করে।
সেনাবাহিনীর মেজর ইফতেখার আহম্মেদ অভিযান শেষে সাংবাদিকদের বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রিফাত আমিনের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে ৩ শতাধিক ইয়াবা বড়ি ও একটি রাইফেল, একটি তলোয়ার এবং মদ ও খালি মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে এবং সাবেক এমপির ছেলে সাফায়াত সরোয়ার রুমনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড় ঘেরা গজনী পর্যটন কেন্দ্র। এখন পর্যটন কেন্দ্রটি চরম পরিবেশ সংকটে রয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি গারো পাহাড় ও পার্শ্ববর্তী নদী-নালা, খাল-বিল, ঝরনা থেকে দিনের পর দিন পাথর ও বালু লুটপাট করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়েছে পর্যটন শিল্প।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৯৩ সালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গারো পাহাড়ের কোলে গড়ে তোলা হয় ‘গজনী অবকাশ বিনোদন কেন্দ্র’। গজনী মৌজার নামানুসারে এ নামকরণ করা হয়। প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষাধিক ভ্রমণপিপাসু এ পর্যটন কেন্দ্রে ভিড় করেন। সরকারও এখান থেকে রাজস্ব আয় করে থাকে।
তবে সম্প্রতি এই পর্যটন কেন্দ্রের আশেপাশের পাহাড়, নদী ও ঝর্ণা এলাকা অবৈধভাবে দখল করে চলছে পাথর ও বালু উত্তোলন। স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র—যাদের বলা হচ্ছে ‘বালুদস্যু’—তারা দিনের আলো ও রাতের অন্ধকারে ট্রাক, মাহিন্দ্রা ও ট্রলিগাড়ি ব্যবহার করে লাখ লাখ টাকার পাথর ও বালু পাচার করছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের কালঘেষা নদীর হালচাটি, মালিটিলা, গান্ধীগাঁও, বাঁকাকুড়া, দরবেশতলা, মঙ্গল ঝুড়া, পশ্চিম বাঁকাকুড়া, ছোটগজনী, গজনীসহ আশপাশের এলাকা থেকে বালু ও পাথর উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এ অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না কেউ। প্রতিবাদ করলেই হুমকি, গালিগালাজ এমনকি হামলারও শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ ও সাংবাদিকদের।
সম্প্রতি ঈদের আগে এক সপ্তাহে বনবিভাগ পাঁচটি মাহিন্দ্রা গাড়ি আটক করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বালুদস্যুরা রাংটিয়া ফরেস্ট রেঞ্জ কার্যালয়ে হামলা চালায় ও কর্মকর্তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। গত ৪ জুন রাতে উপজেলা সদরের বাজারে বালু ভর্তি মাহিন্দ্রা গাড়ির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করলে এক সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকিও দেয় বালুদস্যুরা।
এমনকি, এর আগেও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বালু শ্রমিকদের শাস্তি দেয়ায় বালুদস্যুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধেও আন্দোলনে নামে। যদিও মাঝে মাঝে অভিযান চালানো হয়, কিন্তু তাতে বন্ধ হচ্ছে না এই অবৈধ কার্যকলাপ।
গজনী ফরেস্ট বিট কর্মকর্তা সালেহীন নেওয়াজ বলেন, ‘লোকবলের অভাব ও নিরাপত্তা জণিত কারণে আমরা রাতে অভিযান চালাতে পারি না। এই কারণে বালুদস্যুরা রাতের অন্ধকারে সুযোগ নিচ্ছে।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়া হবে।’
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবেশবাদী বলেন, ‘গারো পাহাড় শুধু একটি ভূখণ্ড নয়, এটি আমাদের প্রাকৃতিক নিরাপত্তার দেয়াল। এখানকার জীববৈচিত্র্য, জলবায়ু এবং পর্যটন—সবই আজ হুমকির মুখে। এই লুটপাট যদি এখনই বন্ধ না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে পুরো এলাকা মরুভূমিতে রূপ নিতে পারে।’
স্থানীয় সচেতন মহল অবিলম্বে এই অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
কোরবানি ঈদ উপলক্ষে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকার পর আজ রবিবার (১৫ জুন) সকাল থেকে পঞ্চগড়ের চতুর্দেশীয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
তবে এ সময়েও ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বৈধ পাসপোর্টধারী যাত্রীদের পারাপার ছিল স্বাভাবিক। ঈদের ছুটিতেও যাত্রী চলাচলে কোনো বিঘ্ন ঘটেনি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের আহ্বায়ক রেজাউল করিম শাহীন জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে গত ৫ জুন (বৃহস্পতিবার) থেকে ১৪ জুন (শনিবার) পর্যন্ত স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল।% আজ রবিবার থেকে আবারও স্বাভাবিক নিয়মে বাণিজ্য কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে বন্দরে ফের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের সংশ্লিষ্ট কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টদের আগেই এ বিষয়ে চিঠির মাধ্যমে অবহিত করা হয়েছিল।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ব্যবসায়ীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঈদের ছুটিতে ১০ দিন স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছিল। আজ থেকে চার দেশের মধ্যে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু হয়েছে।
ইমিগ্রেশন পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফিরোজ কবীর জানান, বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও ঈদের ছুটিতে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক ছিল। এতে কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।
কক্সবাজারের চকরিয়া-লামা-আলীকদম সড়কের চকরিয়া অংশে গাছ ফেলে পর্যটকের লাশ আনতে যাওয়া স্বজনবোঝাই অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ডাকাতদলের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ সময় অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে থাকা যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা, কয়েকটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয় ডাকাতেরা। তবে পুলিশ দাবি করছে- এটি নিছক ছিনতাইয়ের ঘটনা ছিল।
শনিবার আনুমানিক ভোর সাড়ে ৪টার দিকে চকরিয়া থেকে আলীকদম গিয়ে পর্যটকের লাশ আনতে যাওয়ার পথে আলোচিত করইল্যারশিয়া এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি ডাকাতের কবলে পড়ে।
তবে ডাকাত দলে থাকা আরাফাত নামের এক ডাকাত ঘটনার সময় লুট করে নেওয়া একটি মোবাইল সরিয়ে জঙ্গলের ভেতর লুকিয়ে রাখে। ওই মোবাইল খুঁজতে সকালে ফের ঘটনাস্থলে যায় আরাফাত। এ সময় স্থানীয় জনগণের সন্দেহ হলে তাকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটুনি দিতে থাকে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এ সময় অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে আরাফাত নিজেসহ বেশ কয়েকজন অংশ নেয় বলে স্বীকার করে এবং তাদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে।
আরাফাতের দেওয়া তথ্যানুযায়ী অ্যাম্বুলেন্স ডাকাতিতে আরও যারা অংশ নেয় তারা হলেন- ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছড়ারকূলের ছাদেক, উচিতার বিলের ফারুক, আরিফ, সাগর ছাড়াও বেশ কয়েকজন।
গ্রেফতার আরাফাত (২৮) চকরিয়া পৌরসভার সাত নাম্বার ওয়ার্ডের মোহাম্মদীয়াপাড়ার আবুল কালামের ছেলে।
চকরিয়া থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, চকরিয়া-লামা-আলীকদম সড়কের চকরিয়া অংশে অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি নয়, ছিনতাই হয়েছিল। সেই ঘটনায় স্থানীয় জনতার সহায়তায় আটককৃত একজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে মামলা রুজু করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে দুটি মোবাইল। এ ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণসহ ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ছয় যানবাহনের সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্যসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন।
শনিবার (১৪ জুন) দিবাগত রাতে আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপীনাথপুর এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে পুলিশের সহকারী ট্রাফিক সাব-ইন্সপেক্টর রফিকুজ্জামান এবং খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার দেবেনবাবু রোডের বাসিন্দা আব্দুল হামিদ ব্যাপারীর ছেলে ও আরমান পরিবহনের হেলপার সেলিম হোসেন ব্যাপারী।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মো. সাজেদুর রহমান জানান, রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী আরমান পরিবহনের একটি বাস ঘটনাস্থলে পৌঁছে একটি ট্রাককে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে বাসটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সময় যাত্রীদের উদ্ধারকালে দ্রুতগতিতে আসা আরও তিনটি বাস ও একটি প্রাইভেটকারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
রাত আড়াইটা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত চলা এই সিরিজ সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই এটিএসআই রফিকুজ্জামান ও হেলপার সেলিম হোসেন ব্যাপারী প্রাণ হারান।
তিনি আরও জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে। আহতদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পরে দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহনগুলো সরিয়ে নিলে প্রায় দুই ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ‘ভূমিহীনদের বন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত হলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ।
শনিবার উপজেলার ভূমিহীন পরিবার আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাকে এ উপাধি দেওয়া হয়।
হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘ভূমিহীন পরিবারের নতুন ভোর ও একটি স্বপ্নের যাত্রা’ শীর্ষক সভায় সভাপতিত্ব করেন ওই কলেজের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক মো. মফিজ উদ্দিন।
অধ্যাপক মফিজ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, “স্বাধীনতার পর এই প্রথম আবদুল হান্নান মাসুদ দ্বীপের অবহেলিত ভূমিহীন পরিবারের জীবনে নতুন ভোর এনে দিয়েছেন। এই স্বপ্নযাত্রার সম্মাননা ও স্বীকৃতি হিসেবে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ভূমিহীনদের বন্ধু’ উপাধি দেওয়া হয়েছে।”
সংবর্ধনার জবাবে আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘হাতিয়ার ইতিহাস বহু পুরোনো। কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পরও দ্বীপে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। গত ১৭ বছরে এখনাে শুধু লুটপাট হয়েছে। আমি সবাইকে নিয়ে দ্বীপের উন্নয়নে কাজ করতে চাই। তবে এখনো পতিত স্বৈরাচারদের প্রেতাত্মারা সক্রিয়। জনগণের কল্যাণে কাজ করতে গেলেই তারা পদে পদে বাধার সৃষ্টি করে।’
তিনি বলেন, ‘হাতিয়ার উন্নয়নের কথা বললেই ওই সিন্ডিকেটের গায়ে জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি হয়। যেমন, ফেরির ব্যবস্থা করতে চাইলে স্পিডবোট-ট্রলার মালিকরা, ভূমিহীনদের ভূমি বুঝিয়ে দিতে চাইলে ভূমিদস্যুরা, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করতে চাইলে অপরাজনীতির হোতারা বাধার কারণ হয়ে আসছে।’
হান্নান মাসউদ বলেন, ‘এই এলাকার ভূমিহীনদের মুলা ঝুলিয়ে রাজনৈতিক নেতারা যুগ যুগ ধরে লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। তাদের কষ্টের কথা মিডিয়ায় আসে না, সুশীল সমাজের চোখে পড়ে না, প্রশাসনের দৃষ্টিতে আসে না। অসহায় এসব মানুষের কী অবস্থা সেটি দেখার মতো কোনো লোক পাওয়া যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘হাতিয়ায় নদীভাঙন রোধে গত ৫০ বছরে কেউ একটি জিও ব্যাগও ফেলতে পারেনি। আমি গত ১০ মাসে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা করেছি। এখন হাতিয়ার জনগণ চাইলে স্থায়ী ব্লক বাঁধের ব্যবস্থাও করা হবে।’
স্থানীয় ভূমিহীন পরিবারের সদস্য মো. শরিফ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন হাতিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফিরোজ উদ্দিন, জাতীয় নাগরিক পার্টির সংগঠক মো. ইউসুফ, হাতিয়া নিউ মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের প্রমুখ।
চট্টগ্রামে নতুন করে আরো একজনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গত ছয় দিনে মোট ৯ জনের শরীরে এ ভাইরাসের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। শনিবার (১৪ জুন) সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল আটটা থেকে শনিবার সকাল আটটা) ২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে একজনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। ৪০ বছর বয়সী আক্রান্ত ওই ব্যক্তি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফতেহাবাদ এলাকার বাসিন্দা। তিনি শুক্রবার নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে করোনার পরীক্ষা করান। সেখানেই তার শরীরে করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়।
এদিকে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্ত নয়জনের মধ্যে পুরুষ ৫ জন এবং নারী ৪ জন। এদের মধ্যে ৭ জন নগরের এবং ২ জন উপজেলার বাসিন্দা।
অন্যদিকে, চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত বেসরকারি পর্যায়ে করোনা শনাক্তকরণের পরীক্ষা চালু আছে। তবে শিগগিরই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) আরটি–পিসিআর পরীক্ষা শুরু করা যাবে বলে আশা করছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম।
কুমিল্লার দাউদকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। দূর্ঘটনায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি। তবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রোগীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নেভাতে গিয়ে হাসপাতালের তিনজন কর্মী আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা ছুটে আসে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আহতরা হলেন ইয়াসিন, মেহেদি ও মুছা। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১৪জুন) বেলা ১১টায় দাউদকান্দি উপজেলা গৌরীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩য় তলায় ষ্টোর রুমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে হাসাপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের এবং বহিঃবিভাগে চিকিৎসা সেবা প্রায় দুই ঘন্টা বন্ধ থাকে৷ খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় এবং হাসপাতালে কর্মরত স্টাফদের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা ১১ টার দিকে হাসপাতালের তিনতলার ষ্টোর রুমে আগুনের ধোয়া দেখা যায়। ধোয়া দেখে পাশের ওয়ার্ডের রোগীর স্বজন ও নার্সরা আগুন আগুন বলে চিৎকার শুরু করে। এ সময় হাসপাতালে থাকা রোগী ও তাদের স্বজনরা দৌঁড়াদৌড়ি শুরু করেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পল্লী বিদ্যু ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত ইয়াসিন, মেহেদি ও মুছা নামে তিন কর্মচারী আহত হয়েছেন। আহতদের ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে দাউদকান্দি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মোঃ ইদ্রিস বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসার পর স্থানীয় এবং হাসপাতালে কর্মরত স্টাফদের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। প্রাথমিক ধারনা বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনে সূত্রপাত, পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে মূল কারণ জানা যাবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, হাসপাতালের ৩য় তলায় ডেঙ্গু রোগীদের ওয়ার্ডের পাশের কক্ষে ষ্টোর রুমে ঔষধসহ রোগীদের সেবার কাজে ব্যবহৃত সব ধরনের মালামালের সাথে কিছু দামী সরঞ্জামও ছিল। ওই কক্ষে আগুনে অধিকাংশ মালামালই পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু মালামাল বের করতে পারলেও তা ভালো আছে কিনা পরবর্তীতে যাচাই করে বলেতে পারবো । আগুনে ক্ষতির পরিমান এখন নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। আর আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং মালামাল বিশেষ করে অক্সিজেন সিলিন্ডার বের করতে গিয়ে আমাদের আউটসোর্সিংয়ে কাজ করা তিনজন আহত হয়েছেন। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে হাসপাতালে অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে দাউদকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন৷
ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা মহাসড়কে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদফেরত যাত্রীরা।
শনিবার (১৪ জুন) সকাল থেকে এ যানজটের সৃষ্টি হয়।
যমুনা সেতুর পশ্চিম প্রান্তের গোলচত্বর থেকে কড্ডা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার এবং সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই যানজট সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, যমুনা সেতুর ওপর একটি পিকআপ ও ট্রাকের সংঘর্ষ এবং মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে আরও তিনটি যানবাহন বিকলের কারণে এই দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়।
ঈদ শেষে ঢাকামুখী মানুষের চাপের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে।
এদিকে, শনিবার সকালে কামারখন্দ উপজেলার বাগবাড়ি এলাকায় এনডিপি অফিসের কাছে যমুনা সেতুর পশ্চিম সংযোগ সড়কে দুইটি ট্রাকের সংঘর্ষের ফলে ওই স্থানে গাড়ির চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়, যা যানজটকে আরও দীর্ঘতর করে তোলে।
তবে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী লেনে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে, যদিও গাড়ির চাপ অনেক বেশি বলে জানান ওসি।
সকাল থেকেই আমাদের পুলিশ সদস্যরা মহাসড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা আশা করছি শিগগিরই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে জানান তিনি।
এলেঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শরীফ বলেন, ভোর থেকে যমুনা সেতু থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত ঢাকা-মুখী লেনে গাড়ির চাপ থাকলেও ঢাকা থেকে সেতু-মুখী লেনে কোনো যানজট নেই।
তিনি আরও জানান, হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ যৌথভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। শিগগিরই যানজট নিরসন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।