নির্বাচনের চিরচেনা আমেজে দেখা যায়নি ‘ছক্কা ছয়ফুর’ কিংবা ‘শাহ্জাহান মাস্টার’কে। তাদের পক্ষে কোনো পোস্টার, লিফলেট, মিছিল-শোডাউন ছিল না। ছিল না কোনো কর্মী বাহিনীও। তবে এসব না থাকলেও তাদের ঝুলিতে ভোট কিন্তু কম পড়েনি। বলা হচ্ছে, ১৯৯০ সালে সিলেট সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী ছয়ফুর রহমান বা ‘ছক্কা ছয়ফুর’ এবং সদ্য সমাপ্ত সিলেট সিটি নির্বাচনে তৃতীয় হওয়া সাধারণ শ্রমজীবী মেয়র প্রার্থী শাহ্জাহান মিয়া বা ‘শাহ্জাহান মাস্টারের’ কথা।
১৯৯০ সালে সিলেট সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছিলেন ছয়ফুর রহমান। যিনি পেশায় সড়কের পাশের একটি ভাঙা রেস্টুরেন্টের বাবুর্চি ছিলেন। মাঝেমধ্যে ঠেলাগাড়িও চালাতেন। একেবারে অপরিচিত সাধারণ এই শ্রমজীবীকে সেবার বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছিলেন সিলেট সদর উপজেলাবাসী।
হেভিওয়েট প্রার্থীদের হারিয়ে ভোটের মাঠে এমন ছক্কা হাঁকানো ছয়ফুর রহমানের নাম হয়ে যায় ‘ছক্কা ছয়ফুর’। এই নামেই তিনি পরিচিতি পান সারা দেশে। তার জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে সিলেটের বাইরেও।
জিততে না পারলেও সদ্য সমাপ্ত সিলেট সিটি নির্বাচনেও চমক সৃষ্টি করেছেন শাহ্জাহান মিয়া। তিনি পেশাগত জীবনের শুরুর দিকে ছাপরা রেস্টুরেন্টের কর্মচারী ছিলেন। ‘শাহ্জাহান মাস্টার’ নামেই তিনি পরিচিত।
মেয়র পদে জিততে না পারলেও প্রায় ৩০ হাজার ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন শাহ্জাহান মাস্টার। ছক্কা ছয়ফুরের মতো শাহ্জাহান মাস্টারেরও কোনো পোস্টার, লিফলেট, মিছিল-শোডাউন ছিল না। ছিল না কোনো কর্মী বাহিনীও। জনগণের দেয়া অর্থ সহায়তায় বাইসাইকেল চড়ে একা প্রচার চালিয়েই ২৯ হাজার ৬৮৮ ভোট পেয়েছেন তিনি। গত বুধবারের এ নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল পেয়েছেন ৫০ হাজার ৮৬২ ভোট।
মাত্র সাড়ে ৩ হাজার টাকা ভাড়ার বস্তিসদৃশ একটি আধা পাকা দুই কক্ষের ঘরে পরিবার নিয়ে থাকেন শাহ্জাহান মিয়া। ঘরে আসবাব বলতে তেমন কিছু নেই। সামনের কক্ষে একটি বিছানা, জীর্ণ আলনা ও সেলাই মেশিন, আর একটি ভাঙা সোফা আছে বটে, তবে সেটিতে একের অধিক লোক বসলেই ভেঙে পড়ার হুমকি আছে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুরমা নদী লাগোয়া নগরের ঘাসিটুলা মজুমদারপাড়া এলাকার এই বাসায় গিয়ে আলাপ হয় মেয়র পদের আলোচিত এই প্রার্থীর সঙ্গে। তখন তিনি বিছানায় বসে ভাত খাচ্ছিলেন, ডিম আর আলুর তরকারি দিয়ে। ঘরের দুই কক্ষ মিলিয়ে বৈদ্যুতিক লাইট মাত্র একটি। আর এটির আলো এতই ক্ষীণ যে, সামনের লোকটির মুখও ভালো দেখা যায় না।
আলাপ করে জানা যায়, ময়মনসিংহ থেকে অভাবের তাড়নায় ২০০২ সালে সিলেট আসেন শাহ্জাহান। তখন তিনি নিতান্ত কিশোর। সিলেটে এসে নগরের কানিশাইল এলাকার একটি ছাপরা রেস্টুরেন্টের ‘গ্লাস বয়ের’ চাকরি নেন। গ্লাস বয় মানে গ্লাস ধোয়ামোছার কাজ করা।
রেস্টুরেন্টে কাজ করলেও পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ ছিল তার। তাই কাজের পাশাপাশি ভর্তি হন নগরের ভোলানন্দ নৈশ উচ্চবিদ্যালয়ে। এরপর ময়মনসিংহ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। আর ২০১৮ সালে সিলেটের মদন মোহন কলেজ থেকে স্নাতক উত্তীর্ণ হন এই অদম্য তরুণ।
এই সময়কালে সিলেটের প্রায় ৮০টির মতো রেস্টুরেন্টে কাজ করেন শাহ্জাহান। কাজ করেছেন মোমবাতি কারখানায়ও। এতে একটা বিরাট লাভ হয় শাহ্জাহানের।
তিনি বলেন, ‘অনেক রেস্টুরেন্ট ও কারখানায় কাজ করার ফলে শ্রমিক শ্রেণির সঙ্গে আমার ভালো পরিচয় হয়। তারাও আমাকে পছন্দ করেন। এই নির্বাচনে তারা আমাকে অনেক সহায়তা করেছেন।’
মেয়র পদে ৮ প্রার্থীর মধ্যে ‘অর্থে ও সামাজিক মর্যাদায়’ সবচেয়ে পিছিয়ে থাকলেও ব্যতিক্রমী প্রচারের কারণে নজর কাড়েন তিনি।
ছক্কা ছয়ফুরের মতো ব্যতিক্রমী নির্বাচনী প্রচারের মাধ্যমেই প্রথম দৃষ্টি কাড়েন শাহ্জাহান। সকালেই নিজের বাইসাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন তিনি। একা একা সাইকেল নিয়েই চষে বেড়াতেন নগর। যেতেন ভোটারদের কাছে। প্রচারসামগ্রী বলতে শুধু লিফলেট, তাও অন্যের টাকায় ছাপানো। সেগুলো তুলে দিতেন ভোটারদের হাতে। ভোট ও দোয়া চাইতেন। এই নিঃসঙ্গ প্রচার চালিয়েই প্রথম নজর কাড়েন শাহ্জাহান।
নিজের প্রচার সম্পর্কে শাহ্জাহান মিয়া বলেন, ‘সকালে সাইকেল নিয়ে বের হতাম আর সন্ধ্যায় ফিরতাম। এই সময়ে যতটা সম্ভব মানুষের কাছে যেতাম। আমার চা-নাস্তা বা খাওয়ার চিন্তা করতে হতো না, প্রায় সব রেস্টুরেন্টের শ্রমিকরাই পরিচিত। তারা খাওয়াতেন।’
তিনি বলেন, ‘টাকা-পয়সা না থাকায় ব্যানার, পোস্টার করতে পারিনি। লিফলেটও অন্যরা করে দিয়েছেন। নির্বাচনে আমার পকেট থেকে সবমিলিয়ে ২-৩ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে।’
এখন স্থায়ী কোনো পেশা নেই তার। যখন যা পান তা করেন। বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধ সাপ্লাই দিয়ে থাকেন। নিজের একটা ফার্মেসিও ছিল। তবে এখন আর নেই।
নিজেরই নুন আনতে পান্তা ফুরায়, তবু মানুষের সেবায় সব সময়ই অগ্রণী শাহ্জাহান। কানিশাইল এলাকার ফ্রি চিকিৎসাকেন্দ্র খুলে গরিব শ্রমজীবীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন। কোচিং সেন্টার খুলে গরিব বাচ্চাদের ফ্রি পড়িয়েছেন। করোনার সময় ২০০ মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন বলে জানান শাহ্জাহান।
নিজের নামের সঙ্গে মাস্টার শব্দ যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে শাহ্জাহান বলেন, ‘সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার একটি আধা সরকারি প্রাইমারি বিদ্যালয়ে কিছুদিন শিক্ষকতা করেছি। এ ছাড়া কোচিং সেন্টারে ফ্রি পড়াই। তাই সবাই শাহ্জাহান মাস্টার ডাকে।’
প্রায় ৩০ হাজার ভোট পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মানুষ মায়া থেকে ভালোবেসে ভোট দিয়েছেন। তারা আমাকে পছন্দ করেছেন। এই ঋণ শোধ হওয়ার নয়।’
শাহ্জাহান বলেন, ‘আমার প্রতীক মানুষে জানতেন না। আমি একা মানুষ। সবার কাছে যেতে পারিনি। না হলে আরও ভোট পেতাম।’
‘ছক্কা ছয়ফুরের’ মতো শাহ্জাহান মাস্টারেরও ভোটের নেশা। ছয়ফুর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছিলেন। আর শাহ্জাহান গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসনের এমপি পদে মনোনয়ন কিনেছিলেন। কিন্তু জমা দিতে পারেননি। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়। তখন তা জোগাড় করতে পারেননি।
তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় পরিকল্পনা ছিল জনপ্রতিনিধি হওয়ার। আমি ছোটবেলায় পড়ালেখার খাতা-কলম কিনতে পারিনি। তাই মানুষের সেবা করার ইচ্ছা আমার সব সময়ের। এ কারণে নির্বাচনে প্রার্থী হই।’ জনসমর্থন থাকলে আগামীতেও নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ রয়েছে বলে জানান শাহ্জাহান মিয়া।
ছক্কা ছয়ফুরের মতো শাহ্জাহান মিয়াও জনগণের ক্ষোভের ভোট পেয়েছেন জানিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন- সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘১৯৯০ সালের উপজেলা নির্বাচনে বড় দলগুলোর প্রার্থী পছন্দ হয়নি ভোটারদের। তা ছাড়া নিরীহ প্রার্থী ছয়ফুরের ওপর হামলা মেনে নিতে পারেননি তারা। এই ক্ষোভ থেকে জনগণ ভোট দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছিলেন ছয়ফুরের বাক্স।’
ফারুক মাহমুদ বলেন, ‘এবারও শাহ্জাহান সম্ভবত ক্ষোভের ভোট পেয়েছেন। পছন্দের প্রার্থী না পেয়ে ক্ষুব্ধ ভোটাররা তাকে ভোট দিয়ে থাকতে পারেন। এ ছাড়া বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ভোট বর্জন করলেও তাদের অনেক কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন। ফলে কাউন্সিলর পদে ভোট দিতে এসব দলের অনেকে ভোটকেন্দ্রে এসেছেন। তাদের অনেক ভোটও শাহ্জাহান মিয়া পেয়ে থাকতে পারেন।’
ইসলামী বিশ্ববিদ্যায়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেছেন, জুলাই আমাদের অস্তিত্ব, আদর্শ এবং প্রেরণা। জুলাই আগস্টের বিপ্লব'ই হলো আগামী দিনের পথ নির্দেশিকা। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সুন্দর বাংলাদেশ গড়ব, ফ্যাসিস্টকে আর ফিরতে দেব না। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে ও সুশিক্ষিত সমাজ গড়তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্টেকহোলডারকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
সোমবার (৪ আগস্ট) সকাল ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের থিওলজি এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ ভবনের নিচে জুলাই-আগস্ট ১ম বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটি আয়োজিত ডিজিটাল প্লাটফর্ম ডকুমেন্টেশন প্রদর্শনী উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি। জানা যায়, এটি সকাল ৯ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত প্রদর্শন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আজকে জুলাই বিপ্লব এই ডিজিটাল ডকুমেন্টেশন আমাদের হৃদয়ে সংগ্রহশালার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালায় আজীবন থাকবে যা বিশ্ববিদ্যালয় সকল শিক্ষার্থী এবং নতুন যারা আসবে সবাই জুলাই বিপ্লবকে উপলব্ধি ও ধারণ করবে। ফ্যাসিস্ট রিজ্যম নির্মুল করার জন্য ছাত্রজনতা যে অবদান রেখেছিল সে সম্পর্কে জানবে।
উল্লেখ্য, এসময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম ও জুলাই প্রথম বার্ষিকী বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড.মো. শাহিনুজ্জামান ও কমিটির উপদেষ্টা সদস্য অধ্যাপক ড. আ.ব.ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, অধ্যাপক ড. মো. এমতাজ হোসেন,অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
‘পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে নওগাঁয় সপ্তাহ ব্যাপী বৃক্ষ মেলা শুরু হয়েছে।
সোমবার (৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের নওজোয়ান মাঠে ফিতা কেটে ও ফেষ্টুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল।
এরআগে শহরের এটিম মাঠ থেকে একটি র্যালী বের হয়ে নওজোয়ান মাঠে এসে শেষ হয়। নওগাঁ বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসন সপ্তাহ ব্যাপী এই বৃক্ষ মেলার আয়োজন করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান শাহ্ এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাদিয়া আফরিন, নওগাঁর সহকারি বন সংরক্ষক মেহেদীজ্জামান, নার্সারি মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তাক আহম্মেদসহ অন্যান্যরা।
অনুষ্ঠানে বন বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর, কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে গাছের চারা বিতরণ করা হয়।
পরে অতিথিরা মেলার স্টল গুলো ঘুরে দেখেন। এবারে মেলায় ফলজ, বনজ, ভেষজ এবং বাহারি ফুলের চারার সমাহার নিয়ে ৪০টির বেশি স্টল অংশগ্রহণ করেছে।
পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে নেপালে ২৩১ মেট্রিক টন এস্টারিক্স জাতের আলু রপ্তানি করা হয়েছে। এর আগেও কয়েক দফায় আলু রপ্তানি করা হয় নেপালে।
এ নিয়ে এ বন্দর দিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত কয়েক ধাপে ২২ হাজার ৫০ মেট্রিক টন আলু নেপালে রপ্তানি করা হলো।
রোববার (৩ আগস্ট) এ আলুগুলো রপ্তানি করে থিংকস টু সাপ্লাই, মা আইশা কোল্ডস্টোরেজ, জাফরিন এগ্রো, এগ্রোটার্চ বিডি এবং মিয়ামি ট্রেডি নামে দেশের পাঁচটি প্রতিষ্ঠান।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের কোয়ারেন্টিন পরিদর্শক উজ্জ্বল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও বগুড়া জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আলুগুলো সংগ্রহ করে নেপালে পাঠায়।
তিনি আরও জানান, রপ্তানিকৃত আলুগুলো বন্দর ইয়ার্ডে প্রবেশের পর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় অনুমোদন পাওয়ার পর এগুলো রপ্তানির ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
এই চালানে মোট ১১টি বাংলাদেশি ট্রাকে করে প্রতিটিতে ২১ মেট্রিক টন করে আলু পরিবহন করা হয়। ট্রাকগুলো নেপালের মোরাং বিরাটনগরের উদ্দেশে যাত্রা করে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে নেপালে মোট ২২ হাজার ৫০ মেট্রিক টন আলু রপ্তানি হয়েছে। এর আগে গত ৩১ জুলাইও সমপরিমাণ আলু এ বন্দর দিয়ে নেপালে রপ্তানি করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের একটি সড়কে দুইটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন চারজন।
রবিবার (৩ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার রামপুর এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মৈন্দ গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে তুহিন হাসান, একই গ্রামের মকবুল আলীর ছেলে লোকমান হোসেন, জেলার সরাইল উপজেলার বাড়িউড়া গ্রামের আল আমিন মিয়ার ছেলে সুমন মিয়া ও জেলার বিজয়নগর উপজেলার সাতগাঁও গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে আকরাম এবং রংপুর জেলার গংগাচড়া উপজেলার খামারমোহনা গ্রামের ফজু মিয়ার ছেলে মনিরুজ্জামান (৩০)। তিনি বিজয়নগরের সাতগাঁও গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন।
বিজয়নগর থানার ওসি শহীদুল ইসলাম জানান, বিকেলে রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এসময় পেছন থেকে আসা সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি দুইটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেল দুইটির পাঁচ আরোহী নিহত হন।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল কুরআন বিভাগের ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ'র হত্যাকাণ্ডের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি। এবং উচ্চতর তদন্তের জন্য সুপারিশ করেছে বলে নিশ্চিত করেছে ফাইন্ডিং কমিটি।
রবিবার (৩ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে কলা অনুষদ ভবনে সংবাদ সম্মেলনে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি বিষয়টি নিশ্চিত করে।
সাজিদের রহস্যজনক মৃত্যুর বিষয়ে গঠিত ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানান, ভিসেরা রিপোর্ট, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও সুরতহাল রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে তদন্ত রিপোর্ট সাবমিট করা হয়েছে।
ফ্যাক্টস উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, পুকুরে পানিতে পড়ার মৃত্যু আমরা পাইনি। অনুমিত করে বলা যায় পৌনে পাচঁটার আগ পর্যন্ত পুকুর পাড়ে সাজিদকে পাওয়া যায়নি।
ফোনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, সাজিদের ফোন নাম্বার দুইটা। ১৫ তারিখ রাত ১১ টা ৩০ মিনিটে সাজিদ আব্দুল্লাহ শেষ কল করে যার স্থায়িত্ব ৩ মিনিট ২০ সেকেন্ড। এরপর আর কোন আউট গোইনং কল পাওয়া যায়নি। ১৬ তারিখে ৮ টা ৩০ মিনিটে সাজিদে ফোন কল দেখতে পাই যেটার স্থায়িত্ব ৯ সেকেন্ড এবং অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তির সাথে কথা হয়নি (সাজিদের বন্ধু ও রিপন আলী নামক ব্যক্তির কল ছিল)। এরপরে আবার সাজিদের বন্ধু রাত ৮ টা ৪৯ মিনিটে কল দেয় এবং কলের স্থায়িত্ব ছিল ২০ সেকেন্ড তবে অপর প্রান্ত থাকা ব্যক্তির সাথে কথা হয়নি। এবং কলগুলো কোন টাওয়ারে ম্যাচ করেছে সে সকল তথ্যসমূহ দিয়েছি। মেসেঞ্জার ও ওয়াটসআপ আমাদের হস্তগত হয়নি।
তিনি আরও বলেন, সরকারের উচ্চতর তদন্ত সংস্থার দ্বারা এটা ঘটনার তদন্তের জন্য সুপারিশ করেছি। আমাদেরকে যে ১০ দিন সময় দেয়া হয়েছে সেই ১০ দিনের মধ্যে শেষ করেছি। এ কাজের সাথে ডাক্তার, পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী, সাজিদের সাথে সংযুক্ত ব্যক্তি, সংগঠন, জেলা কল্যাণ সকলের সাথে কথা বলা হয়েছে। তবে ক্রস ম্যাচিং এর জন্য আমাদের পর্যাপ্ত সময় অতিবাহিত হয়েছে। আমার টিম দিনরাত পরিশ্রম করে এ কাজটা সম্পন্ন করেছে। আমাদের কাজ ছিল ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং করা সেই কাজ সম্পন্ন করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।
এর আগে ফরেনসিক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। তথ্য মতে, সাজিদের শরীরে কোনো বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। রিপোর্টে শ্বাসরোধের (asphyxia) ফলে সাজিদের মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। পোস্টমর্টেমের সময় থেকে আনুমানিক ৩০ ঘণ্টা আগে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই বিকেল সাড়ে ছয়টায় শাহ আজিজুর রহমান হলের পুকুর থেকে সাজিদের মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়। সাজিদ আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এদিকে সাজিদের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বাংলাদেশ অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশনকে (বাহা) লাল কার্ড প্রদর্শন করলো বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৩ আগষ্ট) সকালে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনরত বাকৃবির পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা অনুষদের ফটকে তালা দিয়ে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরবর্তীতে তারা সকাল সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন করিডোরে এসে বাহা'কে লাল কার্ড প্রদর্শন করে।
এসময় শিক্ষার্থীরা 'মানতে হবে কম্বাইন্ড', 'দিতে হবে কম্বাইন্ড', 'এক দফা, এক দাবি, কম্বাইন্ড কম্বাইন্ড' সহ নানান স্লোগান দিতে থাকেন।
এর আগে গত ৩১ জুলাই বাংলাদেশ অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশন (বাহা) এবং অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অনুষদ যৌথ এক বিবৃতিতে জানান, "অদ্য ৩১ জুলাই বেলা ১১টায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মহাসচিবসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অনুষদের ডিন মহোদয়সহ শিক্ষক মন্ডলী ও ছাত্র-ছাত্রীদের সমন্বয়ে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অনুষদের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ কর্তৃক ক্লাস-পরীক্ষাসহ অনুষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্ন ঘটার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। শিক্ষার্থীদের এহেন কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন ও শান্তি-শৃঙ্খলা পরিপন্থী। এই কার্যক্রমে অনুষদের সকল শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নেই। অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্রফেশনকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য একটি বিশেষ মহলের প্ররোচনায় কতিপয় বিপথগামী শিক্ষার্থী উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে প্রফেশনকে হেয় করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। উপস্থিত সকলে এ কার্যক্রমের তীব্র নিন্দা জানায় এবং এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের আহবান জানায়। সভায় অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্রফেশনের বিরাজমান সমস্যাসমূহ সমাধানে আশু পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্বান্ত গৃহীত হয়।"
এ বিষয়ে বাকৃবির পশুপালন অনুষদের আন্দোলনরত শিক্ষার্থী হিমেলের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, 'গত ৩১ জুলাই বাহা কম্বাইন্ড ডিগ্রীর দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের 'কতিপয় বিপথগামী' এবং 'চলমান আন্দোলনটি কয়েকজন শিক্ষার্থীর কুপ্ররোচনায় হচ্ছে এবং এই আন্দোলনে সকল শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ নেই' বলে আখ্যায়িত করে একটি বিবৃতি প্রদান করে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে কুরুচিপূর্ণ শব্দচয়নের মাধ্যমে বিবৃতি প্রদানের প্রতিবাদে আমরা পশু পালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা বাহা'কে লাল কার্ড প্রদর্শন করেছি এবং বাহার বিবৃতি প্রত্যাখান করেছি।'
উল্লেখ্য, গত ২৮ এপ্রিল থেকে ভেটেরিনারি সায়েন্স ও পশু পালন অনুষদকে একসঙ্গে করে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বাকৃবির পশু পালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
নওগাঁ জেলা শাখা বিএনপির কাউন্সিল উপলক্ষে গঠিত নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। এবারের নির্বাচন শুধুমাত্র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক পদে তিনটিতে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
রবিবার (৩ আগষ্ট) রাতে তফসিল ঘোষণা করেন নওগাঁ জেলা বিএনপির নির্বাচন প্রধান সমন্বয়ক নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ও বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি মো. রেজাউল করিম বাদশা।
নির্বাচনী তফসিলে জানানো হয়, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ ৪ আগষ্ট, মনোনয়ন ফরম বিক্রি হবে ৪ আগষ্ট সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা।
জমা নেওয়া হবে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৩টা। মনোনয়ন ফরম যাচাই বাছাই হবে ৪ আগষ্ট বিকাল ৩ টা থেকে ৪টায়।
মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ৪ আগষ্ট বিকেল ৪টা থেকে বিকাল ৫টা। প্রতীক বরাদ্দ সন্ধ্যা ৬টায়। ভোট গ্রহণের তারিখ ১১ আগষ্ট বেলা ২টা হতে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
তফসিলে আরও উল্লেখ করা হয়, একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী একটি পদে মনোনয়ন জমা দিতে পারবেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এসএম রেজাউল ইসলাম রেজু। তিনি জানান, কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছেন। তফসিল অনুযায়ী সবকিছু হবে।
প্রায় ১৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ কাউন্সিল। তাই কাউন্সিলকে ঘিরে রয়েছে ব্যাপক উদ্দীপনা। এরমধ্যে কাউন্সিলকে সফল করতে গঠন করা হয়েছে উপ-কমিটি। কাউন্সিলে ১৪১৪ জন কাউন্সিলর ভোট দেবেন ও বিভিন্ন ইউনিট এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ১০০০ ডেলিগেট উপস্থিত থাকবেন।
কাউন্সিলে আমন্ত্রণ জানানো হবে- বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার অন্তত ১০০ জন অতিথিকে।
এর আগে, ২০১০ সালে শহরের নওগাঁ শহরের নওযোয়ান মাঠে দলের কাউন্সিলে ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন সামসুজ্জোহা খান, সাধারণ সম্পাদক হন জাহিদুল ইসলাম ধলু,সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রহমান রিপন।সর্বশেষ ২০২২ সালে আহ্বায়ক কমিটি গঠন হয়। সেখানে আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু ও বায়েজিদ হোসেন পলাশকে সদস্য সচিব হিসেবে ৩১ সদস্য অনুমদিত হয় ।
এবারের কাউন্সিলকে ঘিরে লাখো নেতাকর্মীর সমাগম হবে বলে ধারণা আয়োজকদের।
গত বছর জুলাই আন্দোলনে সাভারে পুলিশের সাঁজোয়া যান (এপিসি) থেকে ফেলে শিক্ষার্থী শাইখ আস-হাবুল ইয়ামিনকে হত্যার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পুলিশের সাবেক এএসআই মোহাম্মদ আলীকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার (৩ আগস্ট) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরিকুল ইসলাম।
এর আগে সকালে রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে এএসআই মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার করে সাভার থানা পুলিশ। পরে তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে পলাতক পুলিশের সাবেক উপপরিদর্শক (এএসআই) মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলায় আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ছিল।
২০২৪ সালের ১৮ জুলাই সাভারে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে পুলিশের এপিসি থেকে ফেলে দেয়ার পর গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন রাজধানীর মিরপুরের মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাইখ আস-হাবুল ইয়ামিন। ওই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে আন্দোলন আরও জোরদার হয়।
ইয়ামিনের বাড়ি সাভারের ব্যাংক টাউন আবাসিক এলাকায়। তিনি থাকতেন এমআইএসটির ওসমানী হলে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে রেল পথে পণ্য আমদানি বানিজ্যে বড় ধরনের ধবস নেমেছে। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেলপথে আমদানি হয়েছে মাত্র ১২ হাজার মেট্রিক টন পণ্য, সেখানে গত বছর এর পরিমাণ ছিল ৪১ হাজার মে:টন। অর্থাৎ এক বছরে আমদানি বানিজ্যে ঘাটতি হয়েছে ২৯ হাজার মে:টন।
বেনাপোল বন্দরের সাথে ভারতের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় একমাত্র বেনাপোল বন্দর দিয়েই রেল ও সড়কপথে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে আগ্রহী ব্যবসায়ীরা। রেলপথে পন্য আমদানি করলে সময় ও অর্থ কম লাগে পাশাপাশি নিরাপদে পন্যটি খালাশ করা যায়। তবে ২৪ সালের ৫ আগস্টের পর ভারত সরকার একের পর এক বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় অনেক আমদানিকারক রেল পথে তাদের পণ্য আমদানি করতে পারছেন না।
রেলযোগে বাংলাদেশী পণ্য ভারতে রপ্তানীর নির্দেশনা থাকলেও আজ পর্যন্ত তা চালু কার সম্ভব হয়নি। রেলে আমদানি করা পন্যগুলি খালাস করার জন্য বেনাপোল স্টেশনে এখনো নির্মাণ করা হয়নি কোনো সেড বা ইয়ার্ড । নানা প্রতিবন্ধকতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারত থেকে মাত্র ১ হাজার ২৯৬টি ওয়াগনে ১২ হাজার মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছে। অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেলে আমদানি পণ্যের পরিমাণ ছিল ৪১ হাজার মেট্রিক টন। বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনের তথ্য মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমদানির পরিমাণ কমে দাড়িয়েছে ২৯ হাজার মেট্রিক টনে। সংকট কাটিয়ে বাণিজ্য পরিস্থিতির উন্নয়নে দুই দেশের সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বেনাপোল বন্দর দিয়ে সাধারনত খাদ্য শস্য, সার, কাগজ, মোটর গাড়ি, ট্রোক ও বাস চেসিস, তুলা আমদানি হয়ে থাকে।
রেলে আমদানি করা আমদানি কারকের প্রতিনিধি মেসার্স এম এম ইন্টারন্যাশনাল এর স্বত্বাধিকারী মেহের উল্লাহ জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে রেলে প্রচুর পরিমাণে আমদানি রয়েছে। পরবর্তীতে ডলার দেশে ডলার সংকট থাকায় এল সি কমে যায় এবং রেলে র মাধ্যমে আমদানি বাণিজ্য কমে যায়। এরপর ৫ আগস্টের পরে দু'দেশের সরকারের মধ্যে সম্পর্ক কেমন ভালো না থাকায় রেলে বাণিজ্য আস্তে আস্তে কমে গেছে। দু'দেশের সরকারের সম্পর্ক ভালো হলে আশা করা যাচ্ছে আগামীতে রেলে আমদানি বাণিজ্য বাড়বে। বেনাপোল এর বিশিষ্ট সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী হবিবর রহমান হবি জানান, গত এক বছর আগেও রেল পথে বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিবছর ১৫ থেকে ২০ ওয়াগণ আমদানি হয়েছে। তবে বর্তমান সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে রেলে আমদানি অনেকটাই কমে গেছে। রেলে আমদানি হলে আমদানিকারকের খরচ অনেকটাই কম লাগে। দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন হলে আবারও দু'দেশের মধ্যে রেলের ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু হবে। রেলের আমদানি রপ্তানি শুরু হলে হয়রানীর কমার সাথে সাথে অর্থনৈতিকভাবে ব্যবসায়ীরা লাভবান হবে বলে আমি মনে।
বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সাইদুর রহমান জানান,জুলাই, আগস্ট আন্দোলনের ফলে এবং পরবর্তীতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে ট্রেন যোগে ভারত থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যেখানে প্রতি মাসে ১০ থেকে ১৫ টি ট্রেন আসতো পরবর্তীতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সেখানে ২ থেকে ৩ টি ট্রেনে এসে দাড়িয়েছে। এর ফলে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছর থেকে ২৪-২৫ অর্থ বছরে প্রায় ২৯ হাজার মেট্রিক টন মালামাল কম এসেছে। এর ফলে রেলওয়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে আড়াই কোটি টাকা।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় এক কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে মডেল থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই ) সকাল ৭টার দিকে উপজেলার তেঁতুলিয়া মিনি স্টেডিয়ামের পূর্ব পাশে মাগুড়া গ্রামের পাকা রাস্তা থেকে তাঁদেরকে আটক করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন,পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার কসাল বাড়ি গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে (২৪) ও অপরজন ঠাকুরগাঁও জেলার ভূল্লিবাজার থানার ভূল্লিবাজার গ্রামের
মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে মো. হারুনুর রশিদ (৩২)।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তেঁতুলিয়া মডেল থানার এসআই আসাদুজ্জামান ও এসআই মোশারফ হোসেন এবং সঙ্গীয় ফোর্স এ অভিযানে তেঁতুলিয়া মিনি স্টেডিয়ামের পূর্ব পাশে মাগুড়া গ্রামের পাকা রাস্তা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ১ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয় । আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে এবং তারা বর্তমানে থানা হেফাজতে রয়েছে।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মূসা মিয়া জানান, তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মাদক নির্মূলে পুলিশের নিয়মিত এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
টাঙ্গাইলের সখীপুরে সন্তানদের সামনে স্ত্রীকে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়া স্বামী মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। রবিবার (৩ আগস্ট) রাতে ঘাতক মেহেদী হাসানকে গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গত রবিবার সকালে টাঙ্গাইলের সখীপুর পৌরসভার জেলখানা মোড় এলাকায় স্ত্রী কাকুলি আক্তারকে ছুরি দিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান স্বামী মেহেদী হাসান। অভিযুক্ত স্বামী মেহেদী হাসান উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ইছাদীঘি গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে। তিনি স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে পৌরসভার জেলখানা মোড় এলাকার একটি ভাড়াবাসায় বসবাস করছিলেন।
র্যাব-১৪ এর সিপিসি-৩ কোম্পানি কমান্ডার কাওছার বাঁধন বলেন, স্ত্রীকে হত্যার পর মেহেদী পালিয়ে যায় এলাকা ছেড়ে। পরে সে গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় আত্মগোপন করে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় কোনাবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লিজেন্ডসে (ডব্লিউসিএল) রানার্সআপ হয়েছে পাকিস্তান। এই আসরেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সঙ্গে কথাই লড়াইয়ে জড়াতে হচ্ছে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটারদের। এসব কারণেই এরপর থেকে আর এই আসরে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
এবার পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ বর্জন করেছিল ভারত লিজেন্ডস। গ্রুপ পর্বে ম্যাচ বর্জনের পর সেমি ফাইনালেও ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হওয়ায় খেলতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত। ফলে সেমিতে না খেলেই ফাইনালের টিকিট পায় পাকিস্তান। আর এমন কাণ্ডে সমালোচনার মুখোমুখি হয় দুই দলই।
টুর্নামেন্টে এমন পরিস্থিতি হওয়ায় আয়োজকদের নিয়ে সমালোচনা করেছে পিসিবি। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, আয়োজকদের কয়েকটি সিদ্ধান্ত তাদের অংশগ্রহণের পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
পিসিবি বলেছে, ম্যাচ বাতিলের সিদ্ধান্ত কোনো ক্রিকেটীয় কারণে হয়নি, বরং সুনির্দিষ্ট জাতীয়তাবাদী ধারণাকে তুষ্ট করে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের ক্রিকেটারদের আমরা এমন আসরে অংশ নিতে দিতে পারি না, যেখানে খেলাধুলার চেতনাকে ছাপিয়ে যায় বিকৃত রাজনীতি, স্পোর্টসম্যানশিপ ও ভদ্রলোকের খেলার ধারণাটিকেই যা খাটো করে তোলে।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাসে জুলাই মাসে ২.৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। যা আগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই মাসের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি।
২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জুলাই মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে ১.৯১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাথে আলাপকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সরকার অনাবাসী বাংলাদেশিদের (এনআরবি) দেশে অর্থ প্রেরণে উৎসাহিত করতে আইনি চ্যানেলকে সহজতর করায় দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মতে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য সরকারি এবং অনানুষ্ঠানিক বিনিময় হারের মধ্যে ব্যবধান হ্রাস, অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের মধ্যে দেশপ্রেমের নতুন অনুভূতির মতো কারণগুলো অন্যতম।