শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

লাভের মুখ না দেখা রাবার বাগান এখন ‘পর্যটনকেন্দ্র’

ফেনীর পরশুরামের মির্জানগর ইউনিয়নে গড়ে তোলা হয়েছে রাবার গাছের বাগান। গাছ থেকে কষ সংগ্রহের জন্য বাঁধা হয়েছে পাত্র। ছবি: দৈনিক বাংলা
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১০:২৮

আরিফুর রহমান, ফেনী

ফেনীর পরশুরামে বাণিজ্যিকভাবে রাবার গাছের চাষ শুরু হয়েছে প্রায় ১২ বছর আগে। তবে বাগান মালিকের ব্যবসায়িক লাভের চেয়ে জায়গাটি বেশি পরিচিতি পেয়েছে পর্যটকদের কাছে। এমন অবস্থায় লাভ পেতে রাবার গাছ চাষের পাশাপাশি স্থানটিকে পর্যটনকেন্দ্র করার কথা ভাবছেন বাগান মালিক।

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের জয়ন্তীনগর গ্রামের বিশাল এলাকাজুড়ে রাবার বাগান গড়ে ওঠে ২০০৯ সালে। গত তিন বছর ধরে এ বাগান থেকে রাবার সংগ্রহ করে বাজারজাত করা হচ্ছে।

বাগান মালিক মো. মোস্তাফা বলেন, চট্টগ্রামের মেসার্স আরিফ এন্টারপ্রাইজ ইতিমধ্যে বাগান থেকে রাবার কিনছে। তবে এখনো লাভের মুখ দেখেননি। মাসিক দেড় লাখ টাকা খরচ হলেও তেমন লাভ হচ্ছে না। পুরোদমে রাবার সংগ্রহ শুরু হলে একটি ভালো অবস্থানে যাওয়ার আশা করছেন।

মো. মোস্তাফা বলেন, ২০০৯ সালে ২০ একর জমিতে ১০ হাজার রাবার চারা রোপণ করেন। বর্তমানে বাগানের চার হাজার গাছ থেকে বাণিজ্যিকভাবে রাবার উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। রাবার সংগ্রহের জন্য গাছ পরিপক্ব হতে সময় লেগেছে ১০ বছর। আরও কয়েক বছর পর বাকি গাছগুলো থেকেও রাবার উৎপাদন শুরু হবে।

এদিকে রাবার উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুরোদমে রাবার উৎপাদন শুরু হলে তা দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে।

পরশুরাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, এ অঞ্চল রাবার শিল্পের জন্য উপযোগী। সাধারণত রাবার উৎপাদনের উপযুক্ত পরিবেশ বিবেচনায় পাহাড় বা উচুঁ স্থান যেখান থেকে বৃষ্টির পানি সহজে নেমে যেতে পারে তা বেশি উপযোগী। সে হিসেবে জয়ন্তীনগর গ্রামও রাবার উৎপাদনের উপযুক্ত। এ উপজেলায় এমন আরও অনেক এলাকা আছে। সেখানেও রাবার বাগান হতে পারে।

জয়ন্তীনগর গ্রামের রাবার বাগান মালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একটি গাছ থেকে দৈনিক ৩০০-৪৫০ গ্রাম রাবার পাওয়া যায়। বাজার দর অনুযায়ী প্রতি লিটার রাবার ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। কিন্তু বর্তমানে দাম কমে প্রতি লিটার রাবার ১২০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একটি গাছ থেকে ৩৫ বছর পর্যন্ত রাবার উৎপাদন করা যায়।

বাগান পরিচর্যাকারী চায়ং মারমা বলেন, তিনিসহ এখানে ১২ জন শ্রমিক কাজ করেন। বর্তমানে ৪ হাজার গাছ থেকে রাবারের কষ সংগ্রহ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সব গাছ থেকে রাবার সংগ্রহ শুরু হবে। বিশেষ করে শীত মৌসুমের চার মাস রাবার উৎপাদন বেশ ভালো হয়।

রাবার প্রক্রিয়াজাতকরণ কাজে নিয়োজিত রনু রানী বড়ুয়া বলেন, প্রতি দুই থেকে তিন মাস পরপর বাণিজ্যিকভাবে রাবার বিক্রি হয়। প্রতি লটে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার রাবার বিক্রি হয়। তবে এ বাগান থেকে এখনো লাভ দেখা যাচ্ছে না। আগামী কিছুদিন পর সব গাছ থেকে কষ সংগ্রহ করলে লাভ হতে পারে।

স্থানীয় বাসিন্দা আবু ইউসুফ বলেন, ‘শুরুতে বাইরের লোকজন এ বাগানে কাজ করত। এখন স্থানীয়রা এসব কাজ শিখে নিজেরাই করছেন। এতে গ্রামের বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়েছে।’

পর্যটনকেন্দ্র

রাবার বাগানটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও প্রক্রিয়াজাতকরণের দৃশ্য দেখতে প্রতিদিনই এখানে ভিড় জমান দর্শনার্থীরা। এরই মধ্যে ফেনী জেলার অন্যতম পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে স্থানটি। এক বাগান পরিচর্যাকারী জানান, গত কয়েক বছরে বাগানটি পিকনিক স্পট হিসেবে জেলা ও জেলার বাইরের অনেক মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

রাবার বাগান দেখতে আসা দুলাল তালুকদার বলেন, ফেনীতে পর্যটন স্পট নেই বললেই চলে। বাগানটি সবার জন্য উন্মুক্ত। তবে শর্ত একটাই- কোনো প্রকার ম্যাচ বক্স বা আগুন উৎপন্নকারী দ্রব্য নিয়ে বাগানের ভেতরে প্রবেশ করা যাবে না।

আরেক দর্শনার্থী সোলায়মান হাজারী বলেন, ‘এখানে এলে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। এখানে সারিবদ্ধ গাছ, রাবার প্রক্রিয়াজাতকরণের দৃশ্য, কাছ থেকে ভারত সীমান্তের দৃশ্য ও প্রাকৃতিক সজীবতা মুগ্ধ করে।’

এ বিষয়ে বাগান মালিক মো. মোস্তাফা বলেন, ভবিষ্যতে এখানে শিশুদের জন্য একটি পার্ক করার পরিকল্পনা আছে। বর্তমানে এখানে যাতায়াত সুবিধাসহ পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কর্মচারীদের সার্বক্ষণিক নজরদারি আছে।


সিরাজগঞ্জে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে

আপডেটেড ২২ নভেম্বর, ২০২৫ ২০:২৩
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আয়োজনে মাসিক পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ১০ টায় সিরাজগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের সম্মেলন কক্ষে এ কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠিত কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন, সিরাজগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মো. আব্দুল মতিন।

কনফারেন্সে বক্তারা বলেন- পুলিশসহ অংশীদারী সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেটগণের সেতুবন্ধন সৃষ্টি করে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স। অংশগ্রহণকারী সংশ্লিষ্ট সকলে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে। বিচার বিভাগের সকল অংশীদারদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মানুষের বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা সহজ হবে।

উক্ত কনফারেন্সে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জনাব বুলবুল আহমেদ। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জনাব ইখলাস উদ্দীন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ জনাব কে এম শাহরিয়ার শহীদ বাপ্পী। ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. রিয়াজুল ইসলাম। সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাবলিক প্রোসিকিউটর (পি.পি) রফিক সরকার, অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পি.পি) মো. হুমায়ুন কবির। জেলার সকল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সকল থানার অফিসার ইনচার্জগণসহ বিচার কাজে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধিগণ।

কনফারেন্সের সভাপতি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল মতিন ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার বিভিন্ন বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে গতিশীল ও জনবান্ধব করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকলকে পেশাদারিত্বের সাথে নিজ-নিজ দায়িত্ব পালন করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করে কনফারেন্সের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।


উৎসবমুখর পরিবেশে গাকৃবির ২৮তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গাজীপুর প্রতিনিধি

শ্রেষ্ঠত্বের উল্লাস, গর্বের পথনেতৃত্ব জরুরী প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) নানা আয়োজনে আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ২০২৫।

১৯৯৮ সালের এ দিনে ইনস্টিটিউট অব পোস্টগ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ ইন এগ্রিকালচার (ইপসা) থেকে দেশের ১৩তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে গাকৃবি। যার দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় গাকৃবি টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) র‌্যাঙ্কিং ২০২৫ এবং ২৬ এর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আন্তর্জাতিক পর্যায়েও রাখে গৌরবময় অবস্থান। আবার উরি র‌্যাঙ্কিং ২০২৫ এ জাতীয়ভাবে প্রথম হয়ে ‘ডেভেলপমেন্ট এন্ড অ্যাপ্লিকেশন’ ক্যাটাগরিতে বিশ্বের শীর্ষ ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে গাকৃবির অবস্থান ৭৭তম। সাম্প্রতিক কিউএস র‌্যাঙ্কিয়েও দেশসেরা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের খেতাব অর্জন করেছে ২৮ বছরে পদার্পণকারী এ সেন্টার অব এক্সিলেন্স খ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়টি। টানা তিনবছর ধরে ইউজিসির এপিএ মূল্যায়নেও হয়েছে প্রথম। অন্যদিকে গাকৃবির বিজ্ঞানীগণ এ যাবৎ ৯৩টি ফসলের উন্নত জাত এবং ২০টির বেশি কার্যকরী প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে করেছেন অধিক সমৃদ্ধ। এতসব অর্জনের মহাসড়কে দাঁড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের দিনব্যাপী কর্মসূচির শুরু শনিবার ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান এর নেতৃত্বে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে। সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে বেলুন উড়িয়ে দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধির কামনায় প্রতীকী বার্তা প্রেরণ করে দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন উপাচার্য। পরে সকাল ১০টায় প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন ৩৬ জুলাই চত্বর থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মাঠ কর্মীদের সমবেত অংশগ্রহণে এক বর্ণাঢ্য আনন্দ র‌্যালি বের হয়। র‌্যালিটি পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে পুনরায় ৩৬ জুলাই চত্বরে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে দিবসের উপর এক সংক্ষিপ্ত আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনাসভা পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শরীফ রায়হান। এতে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান, প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. এম. ময়নুল হক, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. সফিউল ইসলাম আফ্রাদ এবং রেজিস্ট্রার মো. আবদুল্লাহ্ মৃধা।


চট্টগ্রামে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলে বহু মানুষের হতাহতের শঙ্কা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আহসান হাবিবুল আলম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে ৭ থেকে ৮ মাত্রার বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে ২ লাখ ৬৭ হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া বহু মানুষের হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, চট্টগ্রামে ৫০ থেকে ১০০ বছরের পুরোনো ভবন। যার প্রায় ৭৫ শতাংশই ঝুঁকিপূর্ণ। নতুন অনেক ভবনও ভূমিকম্প প্রতিরোধী নকশা ছাড়া নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া ইমারত বিধিমালা না মেনে ভবন নির্মাণ ও গুণগত মানসম্পন্ন নির্মাণ উপকরণসামগ্রী ব্যবহার না করায় এ ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। পাশাপশি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) তদারকি নেই।

অন্যদিকে বাংলাদেশের তিনটি প্রধান টেকটনিক প্লেট বার্মিজ-ইন্ডিয়ান, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশ-মিয়ানমার (ইউরেশিয়ান) প্লেটের অত্যন্ত নিকটবর্তী হওয়ায় এ অঞ্চলটি দীর্ঘদিন ধরেই ভূমিকম্প-ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে মাত্র ৬০ বর্গমাইলের পুরো নগরীই এখন ভূকম্পনের উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। ফলে বড়ধরণের ভূমিকম্প হলে চট্টগ্রামে প্রচুর মানুষ হতাহত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘চট্টগ্রামের বহু ভবনের বয়স ৫০ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে। এগুলোর প্রায় ৭৫ শতাংশই ঝুঁকিপূর্ণ। নতুন অনেক ভবনও ভূমিকম্প প্রতিরোধী নকশা ছাড়া নির্মাণ করা হচ্ছে। বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে আড়াই থেকে তিন লাখ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে।

চুয়েটের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চট্টগ্রামের বহু ভবনের বয়স ৫০ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে। এগুলোর প্রায় ৭৫ শতাংশই ঝুঁকিপূর্ণ। নতুন অনেক ভবনও ভূমিকম্প প্রতিরোধী নকশা ছাড়া নির্মাণ করা হচ্ছে। বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে আড়াই থেকে তিন লাখ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) জানায়, নগরীতে বর্তমানে ৩ লাখ ৮২ হাজার ১১১টি ভবন রয়েছে। এর মধ্যে একতলা ভবন রয়েছে ২ লাখ ৭৮ হাজার ৫টি। ২ থেকে ৫ তলাবিশিষ্ট ভবন রয়েছে ৯০ হাজার ৪৪৪টি। ২ থেকে ৫ তলাবিশিষ্ট ভবন রয়েছে ৯০ হাজার ৪৪৪টি। ৬ থেকে ১০ তলা পর্যন্ত ভবনের সংখ্যা ১৩ হাজার ১৩৫। ১০ তলার ওপরে ভবন রয়েছে ৫২৭টি। নগরে এখন ২০ তলার বেশি ভবন রয়েছে ১০টি। এই বিপুলসংখ্যক ভবন নির্মাণ করা হলেও এগুলোর অধিকাংশই ইমারত বিধিমালা মানেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।

চট্টগ্রাম নগরীতে ৭ মাত্রার বেশি ভূমিকম্প হলে ৫০ ভাগের বেশি ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কা করেছেন খোদ সিডিএর ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস।

তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, প্রতিবার চট্টগ্রামে ভূকম্পন হওয়ার পর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের একটি তালিকা আমরা তৈরি করি। সেই তালিকা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে দেওয়া হয়। কিন্তু এসব ভবন ভাঙা বা সরিয়ে ফেলার দায়িত্ব করপোরেশনের।

তিনি আরো বলেন, নগরে ইমারত বিধিমালা না মেনে অনেক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে, এ কথা সত্য। ফলে ৭ থেকে ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে নগরের ৭০ শতাংশ ভবন সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অর্থাৎ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে ২ লাখ ৬৭ হাজার ভবন। তবে বর্তমানে নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে অনেক কিছু যাচাই করা হয়। তাই এখন অনেক ভবন বা অবকাঠামো হচ্ছে নিয়ম মেনে বলেন তিনি।

এদিকে গত শুক্রবারের ভয়াবহ ভূমিকম্পে সারাদেশের মতো কেঁপে ওঠে চট্টগ্রামও। যদিও ৫ দশমিক ৭ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল চট্টগ্রাম থেকে প্রায় আড়াই’শ কিলোমিটার দূরের নরসিংদীর মাধবদী। ভূমিকম্পে নগরের মনসুরাবাদ এলাকার ‘স্টার ভবন’ নামের একটি ছয়তলা ভবন হেলে পড়ে। সরজমিনে দেখা যায়, ভবনের ছাদ পাশের আরেক ভবনের দিকে কিছুটা হেলে পড়েছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে মমনে করেন স্থানীয়রা।

তবে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, শুক্রবারের ভূমিকম্পে চট্টগ্রামে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে ভূমিকম্পে চট্টগ্রামে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মনজারে খোরশেদ আলম বলেন, যেসব ভবন ঝুঁকিমুক্ত করা সম্ভব, সেগুলো করতে হবে। আর যেগুলো টেকনিক্যালি ঝুঁকিমুক্ত করা সম্ভব নয়, সেগুলো ভেঙে ফেলতে হবে। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর উচিত নিয়মিত মানুষকে সতর্ক করা।

আইনবিধির তোয়াক্কা না করে, নকশা অনুমোদনের পরের ধাপগুলো না মেনে চট্টগ্রামে গড়েছে উঠেছে বহুতল ভবনগুলো। ভবনগুলোতে মানহীন উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। তাই বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে নগরের ৭৫ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়া ভূমিকম্প হলে উদ্ধার তৎপরতা চালানো ও পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর যথাযথ প্রস্তুতি ও সুযোগ-সুবিধাও নেই। পাশাপাশি বড় ধরনের ভূমিকম্প মোকাবিলায় যথাযথ প্রস্তুতি না থাকলে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা।


বেনাপোল সীমান্তে শিশুসহ ১০ নারী-পুরুষকে পুশইন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল প্রতিনিধি

ভারতীয় সীমান্ত রক্ষি বাহিনী বিএসএফ সদস্যরা ২ শিশুসহ ১০ বাংলাদেশীকে সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে পুশইন করেছে। শনিবার রাত ৩টার দিকে তাদেরকে বেনাপোল সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে পুশইন করে বলে জানা গেছে। পুশইন হয়ে বাংলাদেশে আসা ইসমাইল হোসেন জানান, গত পাঁচ থেকে সাত বছর আগে তারা পরিবার নিয়ে ভারতে যায় ভালো কাজের আশায়। কলকাতা রাজারহাট নিউটাউন এলাকায় তারা বসবাস করত। তারা জানতে পারে যে সমস্ত বাংলাদেশীরা ভারতে বসবাস করছে তারা আগামী চার মাসের ভিতরে বাংলাদেশ যেতে চাইলে তাদেরকে পাঠিয়ে দেয়া হবে অন্যথায় আটক করে জেলখানায় ভরে দিবে। এ ঘটনায় তারা নিজেরাই সীমন্ত এলাকায় এসে বাংলাদেশে আসার জন্য বিএসএফের কাছে কাগজপত্র জমা দেয় গত সাত দিন আগে। গত রাত আড়াইটা থেকে তিনটার দিকে বিএসএফ সদস্যরা আমাদের ১০ জনকে সীমান্ত এলাকায় এনে আমাদেরকে বলে সামনে বাংলাদেশের বেনাপোল চলে যাও। সেভাবেই আমরা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছি। তবে আমরা যখন প্রবেশ করেছি তখন সীমান্ত এলাকায় কাউকে দেখতে পাইনি এবং সিমান্তের নাম কি সেটাও আমরা জানিনা। ফিরে আসা হলো ইসমাইল হোসেন, আব্দুল হালিম গাজী, রহিমা খাতুন, হাসিনা বেগম, নাজিম উদ্দিন, শিশু নাইমা ও নাজিমসহ আরো তিন জনের বাড়ি খুলনার কয়রা এলাকায়।

সীমান্তে বসবাসরতরা জানান, আমাদের পাশে রয়েছে রঘুনাথপুর এবং সীমান্ত। ফিরে আসারা সম্ভবত কিবা সীমান্ত দিয়েই বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এ ব্যাপারে যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটেলিয়ানের কমান্ডার লে: করনেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকীর কাছে পুশইনের বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেনাপোলে কোন সীমান্ত এলাকা দিয়ে পুশইন হয়েছে এটা আমার জানা নাই বা সে ধরনের কোন তথ্য আমাকে কেউ দেয়নি। খোঁজ নিয়ে জানাতে হবে।


টাঙ্গাইলে ১৫ কিলোমিটার ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে তরুণ প্রজন্মকে মাদকসহ অপরাধ কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখতে অনুষ্ঠিত হলো ১৫ কিলোমিটার হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগিতা। এতে অংশ নিয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলার সাড়ে তিন শতাধিক প্রতিযোগী। শনিবার সকালে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্পোর্টস লাভারস অ্যাসোসিয়েশনের তৃতীয় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ম্যারাথনের উদ্বোধন করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন। ধনবাড়ী নওয়াব এস্টেটের মোতাওয়াল্লী আফিফ উদ্দিন আহমাদ স্মারক উন্মোচন করেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল এডভোকেট মাহফুজ বিন ইউসুফ সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

অংশগ্রহণকারীরা বলছে, প্রতিটি মানুষের শরীর সুস্থ রাখতে অধ্যাবসায়ের বিকল্প নেই। তরুণ প্রজন্মকে মুঠোফোন, অবাধ ইন্টারনেট ব্যবহার, মাদকসহ অপরাধ কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখতে এমন আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়া আশরাফুল আলম কাশেম বলেন, প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে সিলেট এসেছি। প্রথম হয়ে খুব ভালো লাগছে। নিজেকে সুস্থ রাখতে সুশৃঙ্খল সমাজ গড়তে ম্যারাথনসহ খেলাধূলার বিকল্প নেই।

প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হওয়া পাবনার ইমরান হোসেন বলেন, বর্তমানে সমাজে মাদক, সন্ত্রাস ও অপরাধ বেড়েই চলেছে। মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গড়তে ও সুস্বাস্থ্যের জন্য ম্যারাথনে অংশ নেই। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রানারদের যে পরিমাণ প্রাইজমানি দেয়া হয়, তা যতেষ্ঠ নয়। এটি আরো বাড়ানো প্রয়োজন।

স্পোর্টস লাভারস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সোলায়মান হোসেন বলেন, সমাজ থেকে মাদক সন্ত্রাস দূর করতে প্রতি বছরই এ সব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে শিশুদের খেলাধুলা, কাবাডি, রশি টানাটানিসহ নানা খেলার আয়োজন হয়। এছাড়াও সন্ধ্যায় মনোঙ্গ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।


চট্টগ্রাম বন্দরের সব প্রবেশমুখে অবরোধের ডাক স্কপের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

আগামী বুধবার চট্টগ্রাম বন্দরের সব প্রবেশমুখে অবরোধের ডাক দিয়েছে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন স্থাপনা বিদেশিদের ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে এ কর্মসূচির ডাক দেন স্কপ নেতারা।

সরকারের বন্দর নিয়ে কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ‘জুলাই বিপ্লব স্মৃতি হলে’ আয়োজিত দিনব্যাপী কনভেনশনের আয়োজন করা হয়। এছাড়া কনভেনশন থেকে বন্দর রক্ষা ও শ্রমিক অধিকার আদায়ে স্কপের ৯ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে থেকে জেলায় জেলায় বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘোষণা করেন স্কপ নেতারা। কনভেশনে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের জাতীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।

কনভেনশনে বিভাগীয় শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক ও বন্দর সিবিএর সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার বলেন, ‘হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতিরা স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) বিষয় নিয়ে আর অগ্রসর হওয়া যাবে না। তারা (সরকার) কিন্তু হাইকোর্টের কথাও মানছে না। আমরা শুনেছি, আগামী ২৫, ২৬, ২৭ নভেম্বর ঢাকায় বৈঠক ডাকা হয়েছে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল নিয়ে ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে চুক্তি করার জন্য। ২৬ তারিখ ভেটিং করবে, ২৭ তারিখ চুক্তি করবে- এরকম কথা শোনা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা চট্টগ্রামের নেতারা বসেছিলাম। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরের এন্ট্রি পয়েন্ট যেগুলো আছে- আগ্রাবাদ, বড়পোল এবং মাইলের মাথা, এ তিনটি জায়গায় সর্বাত্মক অবরোধ হবে। আমি সমস্ত শ্রমিক-কর্মচারী ভাইদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার এ চক্রান্ত প্রতিহত করার আহ্বান জানাচ্ছি।

কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে এই আন্দোলনে ব্যবসায়ীদেরও এগিয়ে আসতে হবে। বন্দর রক্ষা করার দায়িত্ব ব্যবসায়ীদেরও আছে। যখন রাস্তায় আন্দোলনের প্রশ্ন আসে তখন শ্রমিকদের দায়িত্ব আর যখন আন্দোলন শেষ হয়ে যাবে তখন ব্যবসা করা ব্যবসায়ীদের দায়িত্ব- এটা হতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আহ্বান জানাই, ২৬ তারিখের অবরোধ কমর্সূচির পর আসেন আমরা একবার সবাই মিলে ঢাকায় বসি। স্কপ যে উদ্যোগটা নিয়েছে আমি সাধুবাদ জানাই। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের সকল ইস্যুতে সবাইকে একমত থাকতে হবে এবং দীর্ঘমেয়াদী লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’

চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক ও বন্দর সিবিএ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহারের সভাপতিত্বে কনভেনশনে আরও বক্তব্য রাখেন স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি আব্দুল কাদের হাওলাদার, জাতীয় শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রর সহসভাপতি তপন দত্ত, স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ১৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া চরে টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ৩৩ বছরের চুক্তি করেছে সরকার। এই মেয়াদ আরও ১৫ বছর বাড়ানোর সুযোগ আছে চুক্তিতে।


লোহাগাড়ায় পাহাড় কেটে স্কুলের মাঠ ভরাট, আতঙ্কে এলাকাবাসী

পাহাড় কেটে একটি একটি করে নির্মাণ হচ্ছে বসতঘর
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মোছাদ্দেক হোসাইন, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম)

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় স্কুলের মাঠ ভরাট করার নাম দিয়ে কাটা হচ্ছে পাহাড়। শীতকাল শুরু হতে না হতেই উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের মধ্যে কম বেশি সব ইউনিয়নেই চলছে জমির টপসয়েল এবং পাহাড় কাটার হিড়িক।

প্রায় আট একর এলাকাজুড়ে অবস্থান পাহাড়টির। উচ্চতা ৩০ ফুটের মতো। ‘বাক্করগিয়া কাটা’ নামের এ পাহাড়ের অবস্থান চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের কালুয়ার পাড়া এলাকায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, পাহাড়ের দক্ষিণ পাশে খননযন্ত্র দিয়ে মাটি কাটার ছাপ স্পষ্ট। পাহাড়ের কিছু মাটি কেটে স্তূপ করে রাখা হয়েছে একটি স্থানে। কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, পাহাড়টি ব্যক্তিমালিকানাধীন। এর মালিকানা সাতজনের। পাঁচ বছর আগে পাহাড়টি কেটে বসতঘর নির্মাণ শুরু হয়। এরপর একটি একটি করে বসতঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে পাহাড়ের পূর্ব অংশে আটটি বসতঘর নির্মাণ করা হয়েছে। পাহাড়টির দক্ষিণ অংশে প্রায় ১৫ শতক এরই মধ্যে কেটে ফেলা হয়েছে বসতঘর নির্মাণের জন্য।

পাহাড়ে রোপণকৃত গাছগাছালি কাটায় প্রাকৃতিক পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতির পাশাপাশি ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। এতে পাহাড়ের স্বাভাবিক গঠন নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বেড়ে যাচ্ছে ভূমিধ্বসের ঝুঁকি।

স্থানীয়রা জানান, বিগত এক সপ্তাহ ধরে রাতের আঁধারে পাহাড় কেটে এসব মাটি পার্শ্ববর্তী চরম্বা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটসহ বিভিন্ন এলাকায় পাচার করা হয়েছে।

বর্তমানে পাহাড়টির দক্ষিণের যে অংশ কাটা হচ্ছে, সেটির মালিকানা মো. শফি নামের স্থানীয় এক বাসিন্দার। পাহাড় কেটে তিনি একটি পাকা বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন এক বছর আগে। সেটির নির্মাণকাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি। মো. শফির তিন ছেলের মধ্যে দুজন প্রবাসী। তাদের জন্য আরও দুটি পাকা বাড়ি নির্মাণ করতে চান তিনি। ছয় দিন ধরে নতুন করে পাহাড় কাটা চলছে।

সরেজমিনে মো. শফির সঙ্গে কথা বললে তিনি বসতঘর নির্মাণের জন্য পাহাড় কাটার বিষয়টি স্বীকার করেন। শফি বলেন, ‘পাহাড় কাটলে প্রশাসন সমস্যা করে, সেটি জানি তবে চ্যায়ারম্যান বলেছেন স্কুলের মাঠের জন্য মাটি কাটলে কোনো সমস্যা হবে না। তাই চেয়ারম্যানের কথায় মাটি কাটতে দিয়েছি। ইতোমধ্যে বেশ কিছু মাটি স্কুলের মাঠ ভরাটের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারা বলেছে, আরও ১০০ ট্রাক মাটি লাগবে।

জানতে চাইলে চরম্বা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সৈয়দ হোসেন বলেন, আমি পাহাড় কাটার কথা কাউকে বলিনি। মো. শফি নামে কাউকে চিনিও না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (ছৈয়দ মেম্বার) বিগত সরকারের আমলেও দীর্ঘদিন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসহাব উদ্দিনের সাথে সিন্ডিকেট করে মাটি বালু কাটার সাথে জড়িত ছিল। জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্র জনতার মিছিলে সরাসরি বাঁধা প্রদান ও বিরোধীতা করায় ৫ আগস্টের পরে তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক বিস্ফোরক আইনে মামলাও হয়েছে। সেই মামলায় তিনি বর্তমানে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী। তারপরও তিনি প্রশাসনের নাকের ডগায় কিভাবে (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতেছে এমন প্রশ্ন স্থানীয় ছাত্র জনতার। এছাড়াও তিনি (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার পর বালু মাটি সিন্ডিকেট করে বেপরোয়া হয়ে গেছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ হোছাইন বলেন, স্কুলের মাঠ ভরাটের জন্য মাটি গুলো ছৈয়দ চ্যায়ারম্যান দিয়েছেন, স্কুল উন্নয়নের জন্য দিয়েছেন উনি তবে এটার জন্য কোনো টাকা দেওয়া হয়নি।

ইউপি মেম্বার মোহাম্মদ মিয়া বলেন, ছৈয়দ চ্যায়ারম্যানের নেতৃত্বে পাহাড় কাটা হচ্ছে জানতে পেরেছি। তবে এ বিষয়ে উপজেলা বা পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি।

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ৬(খ) ধারা অনুযায়ী, পাহাড় ও টিলা কাটা যায় না। তবে জাতীয় স্বার্থের প্রয়োজনে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে পাহাড় বা টিলা কাটা যেতে পারে।

লোহাগাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মং এছেন বলেন, কোনোভাবেই পাহাড় কাটা যাবে না। আমরা দ্রুত অভিযান চালিয়ে এ কাজে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, পাহাড় কাটা সম্পূর্ণ নিষেধ। কোনভাবেই পাহাড় অথবা টপসয়েল কাটা যাবেনা । এ ব্যাপারে সরজমিন পরিদর্শন করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


মাদক ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরলো তাহের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগীতায় মাদক ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন আবু তাহের (৪০) নামের এক মাদক কারবারী। তিনি উপজেলার আন্ধারিয়াপাড়া গ্রামের হুকুম চাদা এলাকার হাতেম আলীর পুত্র।

স্থানীয়রা জানান, আবু তাহের মাদকের সাথে এমনভাবে জড়িয়েছিল মাদকই যেনো ছিল তার নেশা, পেশা ও ভরসা। মাদকের কারণে তার ফেরারি জীবন যাপন ছিল নিত্য দিনের সঙ্গী। মাদক কারবারী হিসেবে গ্রামের লোকজন তাকেসহ পরিবারের লোকজনদেরকেও ঘৃণার চোখে দেখতেন। প্রতিনিয়ত সমাজের বঞ্চনাও তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে পারেনি।

অবশেষে গতকাল শুক্রবার (২১ নভেম্বর) রাতে ফুলবাড়িয়া থানার ওসি মোহাম্মদ রুকনুজ্জামান ও স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজনের সহায়তায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন তিনি ।

স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা নিয়ে আবু তাহের জানান, মাদকের কারণে মানুষ আমাকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখতো। আমিসহ পরিবারের লোকজনদেরকেও কটু কথা শুনতে হতো। পরে পুলিশ ও এলাকার লোকজনের কথায় মাদক ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেই।

এ প্রসঙ্গে ফুলবাড়িয়া থানার ওসি মোহাম্মদ রুকনুজ্জামান বলেন, আবু তাহের এলাকায় চিহ্নিত মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। স্থানীয় যুব সমাজকে অনুপ্রাণিত করে মাদক ছাড়ার অনুরোধ জানানো হয়। পুলিশ ও স্থানীয়দের কথায় আবু তাহের মাদক ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাইলে তার কথা বিশেষ বিবেচনা করা হয়। মাদক ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণার পর পুলিশ ও স্থানীয়রা তার পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। মাদকের সাথে জড়িত সবাইকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহবান জানান ওসি।


এছাড়াও কেউ যদি স্বেচ্ছায় মাদক ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায় সেক্ষেত্রে তাদরকেও স্বাগতম জানানোর পাশাপাশি এলাকার লোকজনের সহায়তায় পাশে দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করা হবে।


শীতের সবজিতে ভরা বাজার, তবু দাম চড়া

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শীতের আমেজ এলেও সবজির বাজারে নেই স্বস্তি; বরং বেশিরভাগ পণ্যের দাম আগের তুলনায় ১৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আলুর বস্তা প্রতি ৪০০ টাকা বাড়ায় খুচরায় আলু এখন ৩০ টাকা কেজি। পেঁয়াজের বাজারে অস্বস্তির মধ্যেই ঢেঁড়স, শিম, টমেটো, চায়না গাজর ৮০ থেকে ১৫০ টাকার কমে মিলছে না। ক্রেতাদের অভিযোগ, শীতেও বাজারে স্বস্তি নেই, বিক্রেতাদের দাবি সরবরাহে ঘাটতি থাকায় দাম কমতে সময় লাগবে। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি রায়ের বাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট ঘুরে এমন তথ্য মিলেছে।

দেখা গেছে, সবজির বাজারে স্বস্তি এখনও অধরা। আগের তুলনায় ১৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ঢেঁড়স, শিম, টমেটো, চায়না গাজর, করলা.এসব এখন ৮০ থেকে ১৫০ টাকার ঘরে বিক্রি হচ্ছে। বেগুনেও ২০ থেকে ৩০ টাকার বৃদ্ধি দেখা গেছে। গোল বেগুন ১৩০ থেকে ১৪০ আর লম্বা ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি-বাঁধাকপিও পিস প্রতি ৫০ টাকার নিচে নামেনি।

ক্রেতাদের অভিযোগ, শীত এলেও সবজির দাম কমছে না, উল্টো বাজার করতে কষ্ট বাড়ছে। আর বিক্রেতাদের দাবি, নতুন মৌসুমের সবজি পুরোপুরি না ওঠা ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে এ দাম বাড়তি।

বাজারে মানভেদে ফুলকপি প্রতিপিচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, প্রতি কেজি বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, লতি ৮০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও পটোল ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে আর প্রতি কেজি পেঁপে ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, শিম ১০০ থেকে ১২০ টাকা, শালগম ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। একই সঙ্গে প্রতি কেজি কাঁচামরিচের দাম ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা গুণতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

লালশাকের আঁটি ১০ টাকা, পুঁইশাক ২০-৩০ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, ডাঁটাশাক ১০, কলমি শাক ১০ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতিপিচ লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, লেবু ৬০ টাকা ডজন, আলু ২০ থোকে ২৫ টাকা কেজি, ধনে পাতা ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

সবজি বিক্রেতা আনিসুল হক বলেন, সবজীর দাম কিছুটা কমেছে। এখনো ১০০ টাকার নিচে কম সবজি পাওয়া যায়। কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা প্রতিটি সবজির দাম। ফুলকপি, বাঁধাকপি বাজারে আসার কারণে কিছুটা সবজির দাম কমেছে। বিভিন্ন শাকের দামও কম আছে। আগে ২০ থেকে ৩০ টাকা প্রতি আঁটি বিক্রি হলেও, এখন ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রতিটি বাজারে পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ৯০ থেকে ১০০ টাকা পাইকারি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। তারা বলছেন, বাজারে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ থাকার পরও পাইকারি দাম কমছে না। আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

প্রোটিন বাজারেও পরিবর্তন এসেছে। ব্রয়লার মুরগির দাম গত সপ্তাহের ১৯০ টাকা থেকে ৩০ টাকা কমে এখন ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকার ঘরে, ডিমের ডজনও ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। তবে মাছের দাম গড়ে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। রুই, কাতলা, পাঙ্গাস বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়। মাছের রাজা ইলিশের দাম এখনও হাঁকানো হচ্ছে দুই হাজার ৪০০ থেকে দুই হাজার ৬০০ টাকা।

বিক্রেতা একজন বলেন, ‘টাটকা মাছ খুব কম পাওয়া যায়। যা পাইছি এগুলো ফ্রিজিং মাছ।’


এটি ‘বড় ভূমিকম্পের আগাম বার্তা’: গবেষক আনসারী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গতকাল শুক্রবার ঢাকাসহ সারাদেশে অনুভূত ভূমিকম্পটি ‘বড় ভূমিম্পের আগাম বার্তা’ বলে মনে করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পূরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও ভূমিকম্প গবেষক মেহেদি আহমেদ আনসারী। বিবিসি বাংলার সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ অভিমত দেন।

মেহেদি আহমেদ আনসারী বলেন, সাধারণত একশ থেকে দেড়শ বছর পরপর একটি অঞ্চলে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার শঙ্কা থাকে। বাংলাদেশ ও এর আশপাশের কাছাকাছি এলাকায় গত দেড়শ বছরে একটি বড় ও প্রায় পাঁচটি মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।

বাংলাদেশের আশপাশে সবশেষ বড় ভূমিকম্প সংগঠিত হয়েছিল প্রায় একশ বছর আগে। তাই আরেকটি বড় ভূমিকম্প কাছাকাছি সময়ে হতে পারে এমন শঙ্কা রয়েছে বলে মন্তব্য এই গবেষকের।

বুয়েটের এই অধ্যাপক বলেন, বিল্ডিং কোড না মেনে ভবন তৈরি করলে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হবে এটিই স্বাভাবিক। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

তিনি আশঙ্কার কথা জানিয়ে বলেন, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বড় শহরগুলোতে অপরিকল্পিতভাবে যে ভবনগুলো গড়ে তোলা হচ্ছে তাতে ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা বেড়েই চলেছে।

গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের রেডিও মেকানিক ইকবাল আহমেদ জানান, ঢাকার আগারগাঁওয়ের আবহাওয়া অফিস থেকে ১৩ কিলোমিটার পূর্বে নরসিংদীর মাধবদীতে ভূকম্পনটির উৎপত্তি। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭।

ভূমিকম্পে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজন শিশু। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক। নিহতদের মধ্যে পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় তিনজন, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একজন এবং নরসিংদী সদরে দুজন মারা গেছেন।


ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকবে বিএনপি: মির্জা ফখরুল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভূমিকম্পে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকবে বিএনপি।

গতকাল শুক্রবার এক শোক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। এতে স্বাক্ষর করেন বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক মুহম্মদ মুনির হোসেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের এক ভয়াবহ রূপ হলো ভূমিকম্প। আজ সকালে বাংলাদেশে সংঘটিত বিধ্বংসী ভূমিকম্পে কমপক্ষে ছয়জনের প্রাণহানি ও দুই শতাধিক মানুষ আহত এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিতে দেশবাসীর মতো আমিও গভীরভাবে শোকার্ত। এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে জীবনহানিসহ জানমালের মারাত্মক ক্ষতি হয়।’

মির্জা ফখরুল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতি শোক ও সহমর্মিতা জানান। এ বিপদের সময় তারা যেন ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারেন সেজন্য তিনি মহান আল্লাহর কাছে মোনাজাত করেন। পাশাপাশি এ দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে বিএনপি থাকবে বলেও জানান তিনি।

শোক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করেন।

গতকাল শুক্রবার সকাল ১০.৩৮ মিনিটে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কয়েকশ মানুষ। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫.৭।


শনির আখড়ায় ৩৬ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক কারবারি গ্রেপ্তার 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর শনির আখড়া এলাকা থেকে ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের ৩৬ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১০, সিপিসি-১ যাত্রাবাড়ী ক্যাম্প। গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন–মো. মাসুদ ও মো. রবিউল আলম।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় অভিযানটি পরিচালনা করা হয় বলে জানিয়েছেন র‍্যাব-১০, সিপিসি-১, যাত্রাবাড়ী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার এসএম হাসান সিদ্দিকী সুমন।

তিনি জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এদিন যাত্রাবাড়ী থানাধীন শনির আখড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে আনুমানিক ৩৬ কেজি গাঁজাসহ ২ জন মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদ্বয় পেশাদার মাদক কারবারি। তারা বেশ কিছুদিন যাবৎ দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা হতে অবৈধভাবে গাঁজাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছিল।

উদ্ধারকৃত মাদকসহ গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রুজুর করতে থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।


কালেক্টরেট স্কুলে অস্থিরতা চরমে: আলিউল করিমকে ঘিরে ৫৩ শিক্ষকের অভূতপূর্ব অভিযোগপত্র

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এম এন রাব্বী, রংপুর

রংপুরের কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের বহুল আলোচিত শিক্ষক আলিউল করিম প্রামানিকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও অসদাচরণের কারণে প্রতিষ্ঠানজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

প্রথমবারের মতো প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদমর্যাদার ৫৩ শিক্ষক একযোগে তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। যা রংপুরের শিক্ষা অঙ্গনে নজিরবিহীন ঘটনা।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার, নারী শিক্ষকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, বোরকা পরা শিক্ষিকাকে সালীনতাবিরোধী মন্তব্য, কর্মীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টা, সহকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ, প্রশাসনিক কাজে বাধা এবং প্রতিষ্ঠানে ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে অর্থ আত্মসাৎসহ একাধিক গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ।

অভিযোগ রয়েছে, হাইকোর্টের রায়ে পরাজিত এক বরখাস্ত শিক্ষককে অবৈধভাবে পুনর্বহাল করতেও সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন তিনি।

নিজের ছেলে সেনাবাহিনীর উচ্চপদে কর্মরত থাকার সুবাদে সহকর্মীদের ওপর ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেছেন শিক্ষকরা।

তারা বলেন, যে অপরাধে শাস্তি হওয়ার কথা, সেখানে উল্টো তিনি হঠাৎ ছুটিতে গিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন।

একাধিকবার তাকে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন।

এছাড়াও বরখাস্ত শিক্ষক আলতাপ হোসেন, যিনি শিক্ষাগত ঘাটতি ও জালিয়াতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় পুনরায় কলেজে ফিরে এসেছেন। হাইকোর্টের রায়ের তোয়াক্কা না করে ৩৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা বকেয়া দেখিয়ে সে অর্থ ভাগবাটোয়ারার অভিযোগটিও নিয়ে নানান প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে আটজন সিনিয়র শিক্ষককে অতিক্রম করে নাসিরুল হক মিলনকে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করেছে। আর মিলন দাবি করেছেন সিনিয়রদের সম্মতি নিয়েই তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।

৫৩ শিক্ষক জানান, দীর্ঘ দুই বছর ধরে চলা এ অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার প্রতিষ্ঠানটির শান্ত পরিবেশকে ক্ষত-বিক্ষত করেছে।

শিক্ষকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি, ভয় ও চাপের পরিবেশ, রেষারেষি এবং প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা-সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটি এখন ১০০ বছরের ঐতিহ্যের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ এক দুরবস্থায় পৌঁছেছে।

আলিউল করিমের ২০০৯ সালে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া, ২০১০ সালে কঠোর শর্তে বরখাস্ত প্রত্যাহারের কথাও অভিযোগে বলা হয়।

গত বছরের আগস্ট মাসে অধ্যক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্র আদায়, এরপর নিজেই অধ্যক্ষের ক্ষমতা দখল ও জেলা প্রশাসনের সহায়তায় প্রশাসনিক কো-অর্ডিনেটর ও পরিচালনা পর্ষদ সদস্য পদ দখল করার ঘটনাগুলোও ছিল আলোচিত।

এদিকে, শিক্ষকরা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেছেন। দাবিগুলো হচ্ছে; ১। আলিউল করিমকে অবিলম্বে সব প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব থেকে অপসারণ, ২। তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত, ৩। অভিযোগ সত্য হলে কঠোর শাস্তি, ৪। প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক পরিবেশ পুনরুদ্ধার, এবং ৫। ভবিষ্যতে অনিয়মকারী যেন আর কোনোভাবে দায়িত্বে আসতে না পারে।

স্থানীয় সুধীমহলের মতে, পূর্ববর্তী জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তার প্রশ্রয়ে এক সময়ের সুনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি দুর্নীতি ও বিশৃঙ্খলার কবলে পড়েছে।

প্রতিষ্ঠানটিকে দুর্নীতিমুক্ত ও সুশাসনভিত্তিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনতে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।


banner close