শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫
১৮ শ্রাবণ ১৪৩২

সম্পত্তি দখলে নিতে হত্যা, মৃতদেহ ধর্ষণের পর সাজানো হয় ডাকাতির নাটক

হত্যা ও মৃতদেহ ধর্ষণে অভিযুক্ত আ. রহমান জুয়েল ডিবির হাতে গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
৩০ জুন, ২০২৩ ১৭:৪১
প্রতিনিধি, বরগুনা
প্রকাশিত
প্রতিনিধি, বরগুনা
প্রকাশিত : ৩০ জুন, ২০২৩ ১৭:৩৮

বিলকিস বেগম (৫৫) ঢাকায় সন্তানদের সঙ্গে থাকতেন। ঈদের আগে বরগুনার বেতাগী উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের মাছুয়াখালী গ্রামের বাড়িতে আসেন। বাড়িটি দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন ভাড়াটিয়া এবং স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক আ. রহমান জুয়েল (৩৩)। তিনি সপরিবারেই ওই বাড়িতেই থাকছিলেন।

বিলকিস বাড়ি এসে ঘরদোর নোংরা দেখে জুয়েলকে বকাবকি করেন। এ নিয়ে দুজনের ঝগড়া হয়। জুয়েল বিষয়টিতে ক্ষুব্ধ হন এবং তার ঘনিষ্ঠ দুজনের সঙ্গে আলাপ করেন। তাদের মধ্যে একজন জুয়েলকে পরামর্শ দেন, ওই নারীকে হত্যা করে বাড়িটি দখলে নিতে। জুয়েলকে ওই ব্যক্তি বলেন, বিলকিসের ছেলেরা ঢাকা থেকে এই বাড়িতে আসবেন না। মেরে ফেললে তিনিই সহায়-সম্পত্তির মালিক হবেন। জুয়েল সেই পরামর্শ ধরে ওই দুজনেরই সহায়তায় বিলকিসকে হত্যা করেন। এমনকি তারা চলে যাওয়ার পর তিনি মৃতদেহ ধর্ষণও করেন। পরে সাজান ডাকাতির নাটক। নিজেরাই খবর দেন বিলকিস বেগমের সন্তান-স্বজনদের।

উল্লেখযোগ্য কোনো ক্লু (আলামত) না থাকা সত্ত্বেও এই নারকীয় হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে বরগুনা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। শুক্রবার জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম খান দৈনিক বাংলাকে লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডটির বিস্তারিত জানিয়েছেন।

তিনি জানান, গত ২৩ জুন রাতে ওই হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনায় ডাকাতির নাটক সাজিয়ে জুয়েল এলাকাবাসী ও বিলকিসের স্বজনদের কাছে দাবি করেন, তিনি ও তার পরিবার ঘুমিয়ে ছিলেন। তারা কিছুই জানেন না। পরে জুয়েলের স্ত্রীকে ডিবির কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায়ে তিনিই সব ঘটনা বলে দেন।

শহিদুল ইসলাম খান বলেন, বিলকিস বেগম ঈদ উদযাপন করার জন‍্য ঘটনার দুই দিন আগে ঢাকা থেকে গ্রামে আসেন। তার স্বামী আ. মান্নান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে চাকরিরত অবস্থায় ২০২০ সালে করোনায় মারা যান। তার দুই ছেলেও সিটি করপোরেশনে চাকরি করেন। ছেলে ও তাদের স্ত্রী এবং নাতিরা ঈদ করতে গ্রামের বাড়িতে আসবেন বলে বাড়িঘর গোছাতে বিলকিস আগেই চলে আসেন।

বাড়ি এসে ঘর নোংরা দেখে ভাড়াটিয়া ও দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা জুয়েলকে (৩৩) বকাবকি করেন। এ নিয়ে দুজনের কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। জুয়েল তখন জানান, তার স্ত্রী অসুস্থ থাকায় বাড়িঘর নোংরা হয়েছে। পরে ঝগড়ার বিষয়টি জুয়েল তার ঘনিষ্ঠ নির্মাণশ্রমিক হিরুকে (৩৮) জানান। তাকে বলেন, ‘প্রতিবার ঢাকা থেকে এসে ঝগড়াঝাটি করবে, তা আর ভালো লাগে না।’ তখন হিরু বলেন, ‘ওপরে পাঠিয়ে দাও। মহিলা মরলে জমিজমা তোমার হয়ে যাবে। তার ছেলেরা ঢাকায় থাকে, ঢাকায় চাকরি করে। চাকরি ছেড়ে তারা আর জমিজমা খেতে গ্রামে আসবে না। এই জমিজমা তোমার হয়ে যাবে।’

ডিবির ওসি বলেন, হিরুর ওই পরামর্শে তখনই বিলকিস বেগমকে হত‍্যার পরিকল্পনা নেন জুয়েল। ছক কষেন, হত‍্যা শেষে বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে বলে প্রচার করে দেবেন, যাতে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে পারেন। কিলিং মিশন সফল করতে তারা তাদের আরেক ঘনিষ্ঠ স্থানীয় মুদি দোকানদার মাসুদ মিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। তাকেও মিশনে জড়িত করেন। কিন্তু ওই বাড়িতে ঢোকার আগে কেউ কাউকে মোবাইলে কল করা এড়িয়ে যান, এ সতর্কতা তারা নেন মোবাইল ট্র্যাকিং এড়াতে। তবে যোগাযোগের জন্য তারা বেছে নেন বিলকিস বেগমের বাড়ির উঠোনে থাকা টিউবওয়েল। সেটিতে কয়েকটি চাপ দিলে একে-অপরের উপস্থিতি সংকেত বোঝার সিদ্ধান্তে আসেন।

এরপর পরিকল্পনা অনুসারে ২৩ জুন রাতে জুয়েল তার অসুস্থ স্ত্রীকে জ্বরের ওষুধের পাশাপাশি লম্বা সময় ঘুম পাড়িয়ে রাখতে আরেক ওষুধ খাইয়ে দেন এবং জোরে সিলিং ফ‍্যান ও চার্জার ফ‍্যান ছেড়ে দেন। মধ‍্যরাতে হিরু এসে টিউবওয়েলে জোরে জোরে কয়েকটি চাপ দিলে জুয়েল দরজা খুলে হিরুকে নিয়ে বাড়িতে ঢোকেন। বাইরে পাহারায় থাকেন মাসুদ। ঘরে ঢুকে জুয়েল বিলকিস বেগমের বুকের ওপরে উঠে গলাটিপে ধরেন আর হিরু পা চেপে ধরেন। এসময় ধস্তাধস্তির শব্দ যেন না হয় সেজন্য বিলকিস বেগমের মুখে তোয়ালে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত‍্যা নিশ্চিত করেন।

ডিবির এই কর্মকর্তা জানান, জুয়েল ও হিরু কিলিং মিশন শেষে ঘরের মালপত্র তছনছ করে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখেন। একই সঙ্গে জানালার গ্রিল কেটে মেঝেতে রাখেন, যেন সবাই মনে করে বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। ঘটনা শেষে জুয়েল বিলকিস বেগমের স্বর্ণালঙ্কার হিরুকে দিয়ে দেন। হিরু চলে যাওয়ার পর জুয়েল ঘরে ঢুকে বিলকিসের মৃতদেহকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণ করার পর বিলকিসের মরদেহে আঘাত করেন, যেন সবাই মনে করে ডাকাতরা বিলকিসকে মারধর ও ধর্ষণ করেছে।

পরে জুয়েল এসে অসুস্থ স্ত্রীর পাশে ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল সাড়ে ৭টায় ঘুম থেকে উঠে জুয়েল তার স্ত্রী বিলকিস বেগমকে ডাকাডাকি করেন এবং হিরুকে ফোন দেন। হিরু এলে তারা প্রথমে বিলকিস বেগমের মেয়ে জামাই বেতাগী স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাকে তাকে খবর দেন। পরে ঢাকায় তার ছেলেদের খবর দেয়া হয়। সবাইকে বলা হয়, বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে এবং বিলকিস বেগমকে হত্যা করা হয়েছে।

শহিদুল ইসলাম খান বলেন, বরগুনা ডিবির ওপর ক্লুলেস এই হত‍্যা মামলা তদন্তের নির্দেশ এলে ২৪ ঘণ্টার মধ‍্যেই ঘটনার রহস‍্য উন্মোচন করতে সক্ষম হই। জুয়েলের স্ত্রীর তথ্য ধরে জুয়েলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনিও স্বীকারোক্তি দেন।

ডিবির ওসি জানান, হত‍্যা মামলায় জুয়েলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বরগুনা চিফ জুডিসিয়াল আদালতে সোপর্দ করা হয়। সেখানে ১৬৪ ধারায় তিনি জবানবন্দি দিলে আদালত জেলহাজতে পাঠান।

অন্যদিকে দুদিনের মাথায় ২৫ জুন রাতেই অভিযান চালিয়ে মামলার অন‍্যতম সহযোগী হিরুকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। হিরুর তথ্য মতে, ২৭ জুন রাতে অভিযান চালিয়ে মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাসুদের ট্রাংক থেকে বিলকিস বেগমের কানের দুল জব্দ করা হয়। হিরু ও মাসুদও চিফ জুডিসিয়াল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাদের জেলহাজতে পাঠান আদালত।


জুলাই গ্রাফিতি এঁকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে দ্বিতীয় আনোয়ারার বখতিয়ারপাড়া চারপীর আউলিয়া মাদ্রাসা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আনোয়ারা(চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি


ছোট্ট সিয়াম(১১)বাসার হেলিকপ্টারের আওয়াজ শুনে জানালার পাশে গিয়ে বাবাকে ডেকে দেখাচ্ছে বাবা দেখ হেলিকপ্টার অমনি একটি বুলেট এসে লাগল রায়হানের বুকে, বাবার চিৎকার! শাহবাগ উত্তাল,ছাত্র জনতার শ্লোগানে শ্লোগানে মুখর রাজপথ,উত্তপ্ত রোধে হাঁপিয়ে উঠেছে সবাই,এসময় পানির বোতল নিয়ে হাজির মুগ্ধ,পানি লাগবে পানি...মুহুর্তেই বুলেটে ঝাঝড়া হয়ে গেলে মুগ্ধের বুক, মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মুগ্ধ। রংপুরে ছাত্র জনতার মিছিলে নির্বিচারে গুলি ছুড়ছে পুলিশ,মিছিলের সামনে গিয়ে বুক পেতে দিয়ে বুলেট বুকে নিয়ে সবাইকে রক্ষা করল আবু সাঈদ। আবু সাইদের বুকে বুলেট আটকে বেঁচে গেল গণতন্ত্র,রক্ষা পেল দেশ আর এতেই পালাতে হল ১৬ বছরের স্বৈরাশাসককে।

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের অংগ্রহণে চট্টগ্রামে ২৪ এর রঙে গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় এভাবেই তোলে ধরেন আনোয়ারা উপজেলার বখতিয়ার পাড়া চারপীর আউলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। আর এতেই চট্টগ্রাম অঞ্চলে কলেজ পর্যায়ে ১৯৩ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে মাদ্রাসাটি। এতে প্রথম স্থানে ব্রাক্ষ¥ণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজ পেয়েছে১৯৭ নম্বর ও তৃতীয় স্থান অধিকারী খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ পেয়েছে ১৯০ নম্বর।

গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়ালে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১১ জেলা ৩৩ টি কলেজ ও মদ্র্রাসার শিক্ষার্থী দল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা চেতনায় জুলাই ধারণ করে গ্রাফিতি তুলে ধরে।

পরে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা মায়া, উম্মে জান্নাতুল মাওয়া সাইমা,নুসরাত শাহীন জেরিন,সুমাইয়া আক্তার মাহি ও মেহেরন্নেসা। প্রতিযোগী সকলেই খুবই স্বত:স্ফুর্ত অনুভূতি প্রকাশ করেন। তাদের ভাষায়,গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জুলাই শহীদদে প্রতি শ্রদ্ধা ও তাঁদের স্মরণ করতে পেরে আমরা গর্বিত।

উম্মে হাবিবা মায়া বলেন,জুলাই গণঅভ্যুথানের চেতনা আগামী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে গ্রাফিতি ও চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা অসাধারণ ভূমিকা রাখছে। গত বছর এই সময় যে সংগ্রামী যোদ্ধারা রক্তা দিয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে, আন্দোলন করেছে, জীবন দিয়েছে তাদেরকে স্মরণ করি। আর সেই চিত্রই এই গ্রাফিতিতে ফুটে তোলার চেষ্ঠা করেছি।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কাজী আবদুল হান্নান বলেন,প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকরা সব ধরণের সহযোগিতা করেছে। আমার আনন্দিত।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌস হোসেন বলেন, বখতিয়ার পাড়া চারপীর আউলিয়া মাদ্রাসার এই অর্জনে পুরো উপজেলা গর্বিত। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে জুলাই চেতনা ধারণ করে রাখতে বিশেষ ভুমিকা রাখবে।


বাকৃবি গবেষকদলের জৈব ছত্রাকনাশক উদ্ভাবন, রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমায় ২৫% 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাকৃবি প্রতিনিধি

বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়লেও বালাইনাশকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিপদে পড়েছে। বিষাক্ত এসব বালাইনাশক মানব স্বাস্থ্য, মাটি, পানি ও পরিবেশের ক্ষতি করছে। দেশে বালাইনাশকের মধ্যে ছত্রাকনাশকের ব্যবহার সর্বাধিক ৪৫-৪৬ শতাংশ, এরপর কীটনাশক ৩৩ শতাংশ এবং আগাছানাশক ২০-২১ শতাংশ। এগুলোর বেশির ভাগই মাটি, পানি ও বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। এই সমস্যা সমাধানে দেশে প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তি ও অনুজীব দিয়ে ফসলের উৎপাদন বর্ধক ও পরিবেশবান্ধব ছত্রাকনাশক উদ্ভাবনের দাবি করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক।

বাকৃবির উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহজাহান মঞ্জিলের নেতৃত্বে গবেষক দলটি ট্রাইকোডার্মা এসপেরেলাম নামক ছত্রাক ব্যবহার করে একটি নতুন ছত্রাকনাশক উদ্ভাবন করেছেন যার নাম পি.জি. ট্রাইকোডার্মা। অধ্যাপক মঞ্জিল ছত্রাকটি আইসোলেট ও বায়োফর্মুলেশন উন্নয়ন করেন। গবেষক দলের অন্য দুই গবেষক- কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কে. এম. মহিউদ্দিন এর গুণগত মান ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করেন এবং ফার্ম স্ট্রাকচার ও এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আলী আশরাফ উৎপাদন ও পরিবেশগত মূল্যায়ন পরিচালনা করেন। গবেষণাটি বাকৃবির মাইক্রোবায়োলজি ও বায়োকন্ট্রোল ল্যাবে সম্পন্ন হয়।

পরিবেশবান্ধব এই ছত্রাকনাশক সম্পর্কে গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহজাহান মঞ্জিল বলেন, ছত্রাকনাশকটির মূল উপাদান ট্রাইকোডার্মা এস্পেরেলাম যা আমাদের দেশের মাটি থেকে গবেষণার মাধ্যমে শনাক্ত ও আলাদা করা হয়েছে। অর্থাৎ এটি সম্পূর্ণ স্থানীয় উৎস থেকে সংগ্রহ করা এবং বাংলাদেশের জলবায়ুতে অনুজীবটি ভালোভাবে অভিযোজিত। গবেষণার শুরুতে দেশের বিভিন্ন কৃষি পরিবেশ অঞ্চল থেকে কয়েক হাজার মাটি ও রাইজোস্ফিয়ারের (শিকড়ঘেঁষা) মাটির নমুনা সংগ্রহ করে শতাধিক ট্রাইকোডার্মা ছত্রাক পৃথক করা হয়েছে। ট্রাইকোডার্মার শতাধিক প্রজাতি থাকলেও আমরা ট্রাইকোডার্মা এস্পেরেলাম বেছে নিয়েছি কারণ এটি আমাদের দেশের পরিবেশের সঙ্গে সবচেয়ে ভালোভাবে অভিযোজিত এবং অধিক কার্যকর। এছাড়া দেশীয় অণুজীব থেকে এই ছত্রাকনাশকটির উন্নয়ন করা হয়েছে বিধায় বাজারে প্রাপ্ত অন্যান্য আমদানিকৃত ট্রাইকোডার্মার চেয়ে এটি বেশি কার্যকর।

ট্রাইকোডার্মা এস্পেরেলাম সম্পর্কে অধ্যাপক শাহজাহান মঞ্জিল আরও বলেন, ট্রাইকোডার্মা এস্পেরেলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এটি একযোগে ছত্রাকনাশক এবং জৈব সার হিসেবে কাজ করে। এটি একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন জৈব ছত্রাকনাশক যা এনজাইম, উদ্বায়ী যৌগ ও সেকেন্ডারি মেটাবোলাইটসহ বিভিন্ন জৈব উপাদান উৎপাদনে সক্ষম। এই উপাদানগুলো উদ্ভিদের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়, শিকড়ে বসবাস করে পুষ্টি গ্রহণ ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং তাপ, অম্লতা ও লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে। আমাদের এই গবেষক দলই দেশে প্রথমবারের মতো স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা ট্রাইকোডার্মা এস্পেরেলাম প্রজাতির জিন সিকুয়েন্সিং করতে সক্ষম হয়েছে এবং আন্তর্জাতিকভাবেও তা নথিভুক্ত হয়েছে। NCBI Gene Bank-এ এটি সংরক্ষণ করা হয়েছে (এর একসেশন নম্বর: OR125623)।

পি.জি. ট্রাইকোডার্মা ব্যবহারে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি সম্পর্কে অধ্যাপক শাহজাহান মঞ্জিল বলেন, ছত্রাকনাশকটির প্রয়োগে আমরা ছত্রাকজনিত রোগ প্রতিরোধের পাশাপাশি বিভিন্ন ফসলের উল্লেখযোগ্য ফলন বৃদ্ধি লক্ষ্য করেছি। টমেটো, আলু ও বেগুনে ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২০-২৫ শতাংশ, পালং ও পুঁইশাকে ফলন বেড়েছে ৪০-৫০শতাংশ, পানে ফলন বেড়েছে প্রায় ৪৫-৫০ শতাংশ, চা গাছে ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে ৮০-১০০ শতাংশ, ঢেঁড়স, মরিচ ও শসায় ফলন বেড়েছে ১৫-২০ শতাংশ। ডাল, ধান ও ফলগাছে রোগ দমন ও গাছের স্বাস্থ্য ভালো থাকায় ফলন স্থিতিশীল বা ধীরে ধীরে বৃদ্ধির ধারা দেখা যাচ্ছে। অধ্যাপক মঞ্জিল আরও বলেন, পি.জি.ট্রাইকোডার্মা গোড়াপচা, কান্ডপচা, পাতাপচা ও ব্লাইট দমনে কার্যকর, শিকড়ের বৃদ্ধি ও পুষ্টি গ্রহণ বাড়িয়ে ফসলের উৎপাদন ২০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ায়। এটি ছাদ কৃষি ও মৎস্য চাষেও উপযোগী যা কৃষকের আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক।

অধ্যাপক মহিউদ্দিন বলেন, ছত্রাকনাশকটি জৈব সার হিসেবেও কাজ করার কারণে মাঠ পর্যায়ের পরীক্ষায় দেখা গেছে ফসল উৎপাদনে রাসায়নিক সার প্রায় ২০-২৫ শতাংশ কম ব্যবহার করেও প্রায় একই বা বেশি ফলন পাওয়া সম্ভব হয়েছে। জৈব সার হিসেবে এটি ফসফেট দ্রাব্যকরণ করে, নাইট্রোজেন ব্যবহারের দক্ষতা বাড়ায়, মাটির অম্লতা ও লবণাক্ততা নিয়ন্ত্রণ করে। শিশা, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম ইত্যাদি ভারী ধাতু সম্বলিত দূষিত মাটিতে নিরাপদ ফসল উৎপাদন সংক্রান্ত গবেষণায় ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। তাই নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিতকরণে এটি টেকসই ও বিজ্ঞানসম্মত জৈবিক বিকল্প হতে পারে।

গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক শাহজাহান মঞ্জিল বলেন, পরিবেশবান্ধব ছত্রাকনাশকটি জলজ পরিবেশের জন্যও নিরাপদ। এটি কোনো বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান বহন করে না এবং প্রয়োগের পর পানিতে পড়ে গেলে মাছ, ব্যাঙ, শামুক বা অন্যান্য জলজ প্রাণীর উপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না। আমাদের গবেষণায়ও এ পর্যন্ত জলজ প্রাণীতে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

এই বিষয়ে তিনি আরও বলেন, বাকৃবির অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের সহযোগিতায় তেলাপিয়া মাছের ওপর একটি যৌথ গবেষণা পরিচালনা করেছি। এই গবেষণায় পি.জি. ট্রাইকোডার্মা-এর প্রয়োগ শুধুমাত্র জমির ফসল নয়, বরং জলজ পরিবেশ ও মাছের চাষেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে প্রমাণিত হয়েছে। নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে ফিড সাপ্লিমেন্ট হিসেবে পি.জি. ট্রাইকোডার্মার প্রয়োগে মাছের ওজন ও আকার বৃদ্ধি, পানির গুণমান উন্নয়ন, ক্ষতিকর রাসায়নিক ও প্যাথোজেনিক ছত্রাক কমেছে এবং দূষণ হ্রাস পেয়েছে। বড় পরিসরে ব্যবহারের আগে মাছ চাষের ধরন ও পুকুর পরিস্থিতি বিবেচনা জরুরি। আমাদের গবেষণা চলছে, আশা করি ভবিষ্যতে এটি টেকসই অ্যাকুয়াকালচারের সমাধান হতে পারে।

গবেষকবৃন্দ বলেন, এই উদ্যোগটি ২০০১ সাল থেকে শুরু হয়। তখন থেকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ছোট ছোট অনুদানের মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। গত বছর বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) এর মাধ্যমে এই প্রযুক্তির প্রসার ও প্রচারের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে। বর্তমানে এটি পরীক্ষামূলক উৎপাদন পর্যায়ে রয়েছে এবং বাণিজ্যিক নিবন্ধন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহৃত হওয়ায় এটি সহজলভ্য ও কম মূল্যে কৃষকদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে। পর্যাপ্ত গবেষণা বরাদ্দ পেলে ভবিষ্যতে আমাদের বায়ো-ইনসেক্টিসাইড এবং বহুমুখী কার্যক্ষমতা সম্পন্ন জৈব বালাইনাশক তৈরির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে।

ইতোমধ্যে ছত্রাকনাশকটির বেশ কয়েকটি পরীক্ষামূলক ব্যবহার করা হয়েছে। ছত্রাকনাশকটির ব্যবহারকারীদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা এটির বাস্তবিক সুফলতা সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছেন।

মৌলভীবাজারের ফুলতলা টি এস্টেটের এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শিহাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমি আমার চা বাগানে পিজি ট্রাইকোডার্মা ব্যবহার করে পূর্বের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি ফলন পেয়েছি। আগে যেসব রাসায়নিক ছত্রাকনাশক ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ব্যবহার করতাম সেগুলোর ব্যবহার অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছি। ট্রাইকোডার্মা একদিকে যেমন ছত্রাকনাশক হিসেবে কাজ করে, অন্যদিকে গাছের শুটিং বিহেভিয়ারও (নতুন কুঁড়ি আসার প্রবণতা) বাড়িয়ে দেয়। আমি সাধারণত প্রতি লিটারে ৩ গ্রাম ব্যবহার করি, তবে ৫ গ্রাম দিলে ফল আরও ভালো হয়। এছাড়া এটি তুলনামূলকভাবে সস্তা।

নরসিংদীর পান চাষি কৃষিবিদ শফিকুল ইসলাম বলেন, পান চাষে গোড়া পচা মারাত্মক একটি রোগ। এর আক্রমণে গাছ মারা যায়। এই সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহার করতাম। তবে এই ছত্রাকনাশক ব্যবহারের পরে গাছ আর ওই রোগে মারা যায় নি বিধায় ব্যাপক লাভবান হয়েছি। প্রায় অর্ধেক খরচ সাশ্রয় করে ফলন অনেক বেড়েছে।

ময়মনসিংহ বিভাগীয় কৃষি অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক ড. সালমা লাইজু বলেন, পরিবেশবান্ধব ছত্রাকনাশক উদ্ভাবিত হলে তা মানুষের স্বাস্থ্য, পরিবেশ, গবাদিপশু সকলকিছুর জন্যই উপকারী হবে। এটি দেশের জন্য বিশাল এক সম্ভাবনা হতে পারে। যদি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহজাহান মঞ্জিলের উদ্ভাবিত ছত্রাকনাশকটি সাশ্রয়ীমূল্যে পাওয়া গেলে আমাদের কৃষি অফিস থেকে সেটি কিনে সাধারণ কৃষকদের সাহায্য করতে পারবো।


জলবায়ু সংক্রান্ত আইসিজে'র মতামত বৈশ্বিক জলবায়ু নীতি পরিবর্তনে অনেক নৈতিক সাহস যোগাবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রগুলোর বাধ্যবাধকতা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) উপদেশমূলক মতামত বাধ্যতামূলক না হলেও বর্তমান বৈশ্বিক বৈরি রাজনৈতিক বাস্তবতার বিপরীতে জলবায়ু নীতি পরিবর্তনে অনেক নৈতিক সাহস যোগাবে। এটি আন্তর্জাতিক নীতিনির্ধারণে চাপ সৃষ্টি করবে। এ চাপ বিবেচনায় নিয়ে রাষ্ট্রগুলোকে নীতিমালায় পরিবর্তন আনতেই হবে।”

আজ পরিবেশ অধিদপ্তরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রগুলোর বাধ্যবাধকতা সংক্রান্ত উপদেশমূলক মতামত বিষয়ে আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন এমন একটি ইস্যু যেখানে শুধু সুশীল সমাজ নয়, তরুণ প্রজন্মকেও সম্পৃক্ত করতে হবে। আজকের প্রজন্ম হয়তো টিকে যাবে, কিন্তু ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আমরা যদি এখনই পদক্ষেপ না নিই, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনবে।”

উপদেষ্টা তার বক্তব্যে নদীভাঙন, অবকাঠামোগত দুর্বলতা, জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা, এবং স্থানীয় সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, “নদীভাঙনপ্রবণ এলাকায় পুনর্বাসন ছাড়া টেকসই সমাধান সম্ভব নয়। ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ডকে আরও কার্যকর করতে হবে, যেখানে সরকার এবং এনজিও একসাথে কাজ করবে।”

তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ‘ন্যাচারাল রিসোর্স প্রটেকশন’ ও 'মরাল অবলিগেশন'-এর দৃষ্টিভঙ্গির কথাও তুলে ধরেন এবং উপদেষ্টা সবার প্রতি আহ্বান জানান—“আসুন, ১০-১২টি পরিবেশবান্ধব বার্তা তৈরি করে তরুণদের মাধ্যমে দেশের জন্য শক্তিশালী জলবায়ু বার্তা পৌঁছে দিই।”

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইনজীবী ও জলবায়ু পরিবর্তন নিগোশিয়েটর অ্যাডভোকেট হাফিজ খান। অধ্যাপক পায়াম আখভান, অধ্যাপক মেরি-ক্লেয়ার এবং নিকোল অ্যান ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ; পরিবেশ অঅধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড মো: কামরুজ্জামান ; ন্যাকমের নির্বাহী পরিচালক এস.এম. মুনজুরুল হান্নান খান; অ্যাকশনএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির; পিকেএসএস এর পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডঃ ফজলে রাব্বী সাদেক আহমেদ; পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো: জিয়াউল হক ও মির্জা শওকত আলী ; ব্রাকের পরিচালক লিয়াকত আলী ; সিপিআরডির প্রধান নির্বাহী মোঃ শামসুদ্দোহা; ফ্রেন্ডশিপের সিনিয়র পরিচালক কাজী আমদাদুল হক এবং ইয়ুথ নেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান প্রমুখ।

গোলটেবিল আলোচনায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, তরুণ প্রতিনিধি, পরিবেশবাদী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।


মদনপুর-মদনগঞ্জ সড়ক সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বন্দর ( নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনপুর-মদনগঞ্জ সড়কের দীর্ঘদিনের বেহাল অবস্থার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় জনতা। গত শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্দর নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

বিক্ষোভকারীরা জানান, সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে প্রায়ই যানবাহন উল্টে দুর্ঘটনা ঘটে, এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। তারা দ্রুত এই সড়ক সংস্কারের দাবি জানান এবং এ বিষয়ে দায়িত্বে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান জানান। বিক্ষোভে একাত্মতা প্রকাশ করে যাত্রীরা এবং পরিবহন শ্রমিকরাও অংশগ্রহণ করেন।

গণঅধিকার পরিষদের নারায়ণগঞ্জ জেলার সহ-সভাপতি মেহেবুবা আক্তার বলেন, “বহুবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জেলা প্রশাসকের (ডিসি) দপ্তরে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সাবেক সদস্যসচিব হৃদয় ভূইয়া বলেন, “এই সড়কে অতিরিক্ত ওজনের পরিবহন চলাচলের ফলে দ্রুত সড়কটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনুমোদনবিহীন এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার দাবি জানাচ্ছি।”

বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, “সকাল ১০টা থেকে স্থানীয় ছাত্র-জনতা সড়ক অবরোধ করে। খবর পেয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে আশ্বাস দেন যে, আগামী রবিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। এরপর অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।”


নওগাঁয় ‘জুলাইয়ের মায়েরা’ শীর্ষক অভিভাবক সমাবেশ ও আলোচনা সভা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি 

জুলাই পুনর্জাগরণ উদযাপনের অংশ হিসেবে নওগাঁয় ‘জুলাইয়ের মায়েরা’ শীর্ষক চলচ্চিত্র প্রদর্শণ, অভিভাবক সমাবেশ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর নওগাঁর সহযোগিতায় জেলা প্রশাসন এর আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল।

অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাদিয়া আফরিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহেল রানা, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইবনুল আবেদীন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ মাহফুজ আলম শ্রাবণের মা বেবি নাজনীন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বী, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সন্তানদের অনুপ্রেরনা দেওয়া মা হিসেবে তাসলিমা ফেরদৌস, নুর তাজসহ অন্যান্যরা।

এসময় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদের পরিবারের সদস্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সন্তানদের অনুপ্রেরনা দেওয়া মায়েরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্য জেলা প্রশাসক বলেন, জুলাই আগস্টে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে মমতাময়ী মায়েদের অবদান অনস্বীকার্য। আন্দোলনরে সময় মায়ের সামনে থেকে সন্তানকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, মা জানে না সে সন্তানকে মেরে ফেলা হবে কিনা গুম করা হবে। তারপরও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে মায়েরা তাদের সন্তানদের সাহস জুগিয়েছেন, সমর্থন দিয়েছেন এবং প্রয়োজনে আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। যাতে তাদের সন্তানরা একটি বৈষম্যহীন সমাজে বেড়ে উঠতে পারে। মায়েরা শুধু সন্তানদের সাহস ও সমর্থন দেননি, বরং আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে আন্দোলনকে সফল করতে সহায়তা করেছেন। অনেক মা আন্দোলনকারীদের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন এবং তাদেরকে খাবার সরবরাহ করেছেন। এ ঘটনা গুলোকে আমাদের হৃদয়ে পুনর্জাগরণ ও নতুন প্রজন্মের কাছে তোলে ধরতেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন।

এসময় জেলা প্রশাসক পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের সব জায়গায় সমান অংশ গ্রহণ ও সমান মর্যাদা নিশ্চিত করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানান।


দৌলতপুর সীমান্তে বিজেপির অভিযানে ৩২ লক্ষ টাকার মাদক উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে পৃথক তিনটি অভিযানে মাদকদ্রব্য, কারেন্ট জাল ও আতশবাজি জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার ভোরে মহিষকুন্ডি আশ্রায়ন বিওপি এলাকার পুরাতন ঠোটারপাড়া পদ্মা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় ৮ হাজার ৮০ পিস ইয়াবা ও ৭৭ কেজি কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। এসব মালামালের বাজারমূল্য প্রায় ২৭ লাখ ৩২ হাজার টাকা।

এর আগে শুক্রবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় রামকৃষ্ণপুর বিওপির আওতাধীন মোহাম্মদপুর মাঠে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় ২৪ বোতল মদ এবং ২৫৭ পিস ট্যাপেন্ডেবল ট্যাবলেট জব্দ করে বিজিবি। এসবের আনুমানিক বাজারমূল্য এক লাখ ১৩ হাজার ১০০ টাকা।

একইদিন রাত ১১টার দিকে চিলমারী বিওপির আওতাধীন শান্তিপাড়া মাঠ এলাকায় আরও একটি অভিযান চালানো হয়। এ সময় বিজিবি সদস্যরা এক হাজার পিস সিলডিনাফিল ট্যাবলেট এবং ১ হাজার ৮০ পিস আতশবাজি জব্দ করেন। যার বাজারমূল্য প্রায় তিন লাখ ২৭ হাজার টাকা।

বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, মালিক বিহীন এসব জব্দকৃত কারেন্ট জাল তাৎক্ষণিকভাবে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে এবং মাদকদ্রব্যগুলো মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ধ্বংসের জন্য ব্যাটালিয়নের মাদক স্টোরে জমা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, “সীমান্ত নিরাপত্তা রক্ষার পাশাপাশি মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি সর্বদা কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে”


কমলগঞ্জে লেক থেকে বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শমশেরনগর চা বাগান লেক থেকে রামলাল রবিদাস (৭৫) নামে এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে উপজেলার শমশেরনগর দেওছড়া চা বাগানের ১২ নম্বর সেকশনের একটি লেক থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত রামলাল রবিদাস শমশেরনগর চা বাগানের বজ্রনাথ রবিদাসের ছেলে।


পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রামলাল গোসল করতে গিয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুজি করে কোথাও পায়নি। পরে লেকের পাড়ে দেখতে পাওয়া যায় রামলালের গামছা, জুতা ও সাবান। গোসল করতে গিয়ে লেকে ডুবে মারা গেছেন এমন ধারনা থেকে শুক্রবার শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ি ও ফায়ারসার্ভিসের ডুবুরি সিলেট থেকে এসে লেকের পানি থেকে লাশ উদ্ধার করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মাসুদ আহমদ বলেন, ‌‘বৃহস্পতিবার বিকেলে বাগানের লেকে রামলাল গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি।পরে মরদেহ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে জানিয়ে পরিবারের কাছে মরদেহ দেওয়া হয়েছে।’

=====


জীবন ইয়ুথ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিজয় ধর, রাঙামাটি
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জীবন ইয়ুথ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শুক্রবার (১লা আগস্ট) রাঙামাটি আসামবস্তি-রাঙ্গাপানি সংযোগ সড়কের দু'পাশে কাপ্তাই হ্রদের তীরবর্তী পার ঘেঁষে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে সংগঠনটি।
বার্ষিক বৃক্ষরোপণ-২০২৫ উপলক্ষ্যে সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ ইমন ও দুর্যোগ ও ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ মনির গাজী এর নেতৃত্বে দুইটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আসামবস্তি-রাঙাপানি সংযোগ সড়ক ও আসামবস্তি মহিউছ সুন্নাহ ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বৃক্ষরোপণ করা হয়।
এসব গাছের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বনজ, ফলদ, ঔষধীসহ সড়কে শোভাবর্ধনকারী বিভিন্ন গাছ।
“গাছ লাগাই, আগামীকে বাঁচাই”প্রতিপাদ্যকে ঘিরে কদম, কৃষ্ণচূড়া, হরতকি, বকুল, কাঠবাদাম, সোনালু, মহুয়া, নাগেশ্বরসহ বিভিন্ন গাছের চারা রোপণ করেন সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবীরা।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয় সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যবস্থাপনা ও অর্থায়নে তাদের এই উদ্যোগ। বৃক্ষ নিধন রোধ এবং পাহাড়ের সজীবতা ফিরাতে স্বেচ্ছাশ্রমে তারা কাজ করছে বলে জানান সংগঠনের সদস্যরা।


রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর ও পোর্ট অব প্রটোকল পরিদর্শনে নৌপরিবহন উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আমিনুল ইসলাম বনি-রাজশাহী

দেশের নৌপথ উন্নয়নে সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে। নদীবন্দরগুলোর কার্যকারিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আঞ্চলিক বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন। রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর ও পোর্ট অব প্রটোকল পরিদর্শন করে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন এ কথা বলেন।
নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রি জে: অব: ড. এম সাখাওয়া হোসেন বলেন, সুলতানগঞ্জ নৌবন্দরের অবকাঠামো গত উন্নয়ন করতে উচ্চ পর্যায়ে আলাপ করতে হবে। এটা আমি পজিটিভলি দেখবো।
শুক্রবার বেলা ১১টায় রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর ও পোর্ট অব প্রটোকল পরিদর্শন ও স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় করেছেন।
এ সময় তিনি বলেন, নৌবন্দরের কার্যক্রম শুরু করার জন্য এনবিআরের অনুমোদনসহ অবকাঠামো উন্নয়ন ও রাস্তাঘাট প্রয়োজন। এই কার্যক্রমের সাথে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা জড়িত। কাজেই সকল পক্ষের ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলে অচিরেই নদীবন্দরের কার্যক্রম শুরু হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ।এর আগে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন সরেজমিনে সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর ও কোর্ট অব কল ঘুরে দেখেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।


জুলাই গ্রাফিতি এঁকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে দ্বিতীয় আনোয়ারার বখতিয়ারপাড়া চারপীর আউলিয়া মাদ্রাসা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আনোয়ারা(চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি

ছোট্ট সিয়াম(১১)বাসার হেলিকপ্টারের আওয়াজ শুনে জানালার পাশে গিয়ে বাবাকে ডেকে দেখাচ্ছে বাবা দেখ হেলিকপ্টার অমনি একটি বুলেট এসে লাগল রায়হানের বুকে, বাবার চিৎকার! শাহবাগ উত্তাল,ছাত্র জনতার শ্লোগানে শ্লোগানে মুখর রাজপথ,উত্তপ্ত রোধে হাঁপিয়ে উঠেছে সবাই,এসময় পানির বোতল নিয়ে হাজির মুগ্ধ,পানি লাগবে পানি...মুহুর্তেই বুলেটে ঝাঝড়া হয়ে গেলে মুগ্ধের বুক, মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মুগ্ধ। রংপুরে ছাত্র জনতার মিছিলে নির্বিচারে গুলি ছুড়ছে পুলিশ,মিছিলের সামনে গিয়ে বুক পেতে দিয়ে বুলেট বুকে নিয়ে সবাইকে রক্ষা করল আবু সাঈদ। আবু সাইদের বুকে বুলেট আটকে বেঁচে গেল গণতন্ত্র,রক্ষা পেল দেশ আর এতেই পালাতে হল ১৬ বছরের স্বৈরাশাসককে।

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের অংগ্রহণে চট্টগ্রামে ২৪ এর রঙে গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় এভাবেই তোলে ধরেন আনোয়ারা উপজেলার বখতিয়ার পাড়া চারপীর আউলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। আর এতেই চট্টগ্রাম অঞ্চলে কলেজ পর্যায়ে ১৯৩ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে মাদ্রাসাটি। এতে প্রথম স্থানে ব্রাক্ষ¥ণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজ পেয়েছে১৯৭ নম্বর ও তৃতীয় স্থান অধিকারী খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ পেয়েছে ১৯০ নম্বর।

গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়ালে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১১ জেলা ৩৩ টি কলেজ ও মদ্র্রাসার শিক্ষার্থী দল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা চেতনায় জুলাই ধারণ করে গ্রাফিতি তুলে ধরে।

পরে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা মায়া, উম্মে জান্নাতুল মাওয়া সাইমা,নুসরাত শাহীন জেরিন,সুমাইয়া আক্তার মাহি ও মেহেরন্নেসা। প্রতিযোগী সকলেই খুবই স্বত:স্ফুর্ত অনুভূতি প্রকাশ করেন। তাদের ভাষায়,গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জুলাই শহীদদে প্রতি শ্রদ্ধা ও তাঁদের স্মরণ করতে পেরে আমরা গর্বিত।

উম্মে হাবিবা মায়া বলেন,জুলাই গণঅভ্যুথানের চেতনা আগামী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে গ্রাফিতি ও চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা অসাধারণ ভূমিকা রাখছে। গত বছর এই সময় যে সংগ্রামী যোদ্ধারা রক্তা দিয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে, আন্দোলন করেছে, জীবন দিয়েছে তাদেরকে স্মরণ করি। আর সেই চিত্রই এই গ্রাফিতিতে ফুটে তোলার চেষ্ঠা করেছি।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কাজী আবদুল হান্নান বলেন,প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকরা সব ধরণের সহযোগিতা করেছে। আমার আনন্দিত।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌস হোসেন বলেন, বখতিয়ার পাড়া চারপীর আউলিয়া মাদ্রাসার এই অর্জনে পুরো উপজেলা গর্বিত। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে জুলাই চেতনা ধারণ করে রাখতে বিশেষ ভুমিকা রাখবে।


নওগাঁয় ১টাকায় একবেলা খাবারের ১৫০তম সপ্তাহ পালন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মো. সবুজ হোসেন নওগাঁ
নওগাঁর সামাজিক সংগঠন ফ্রেন্ডস প্যানেলের উদ্যোগে সমাজের দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মাঝে ১টাকায় একবেলা ভরপেট খাবার আয়োজনের ১৫০তম সপ্তাহ উদযাপন অনুষ্টিত হয়েছে।

আজ (১আগষ্ট) শুক্রবার দুপুরে শহরের মরছুলা উচ্চবিদ্যালয়ে ১৫০তম সপ্তাহ পূর্তি উপলক্ষে এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিকী।

আলোচনাসভা শেষে ১টাকায় প্রায় ২০০জন এতিম, দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মাঝে ভরপেট খাবার খাওয়ার অনুষ্ঠান হয়।
নওগাঁ ফ্রেন্ডস ক্লাবের সভাপতি রিমন আলী মৃধার সভাপতিত্বে এসময় সংগঠনটির উপদেষ্টা মানষ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন, ছাত্র প্রতিনিধি ফজলে রাব্বি, আরমান হোসেন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

ফ্রেন্ডস প্যানেল নওগাঁর সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন বলেন- আমরা দেখি রাস্তায় অনেক অসহায় মানুষ খাবার পায়না। বিশেষ করে শুক্রবারে শহরের অধিকাংশ দোকানপাট হোটেল বন্ধ থাকে। এতে করে গরিব অসহায় মানুষ গুলো সেদিন দুপুরে খাবার পায়না। সে উপলব্ধি থেকে আমরা ফ্রেন্ডস প্যানেলের উদ্যোগে প্রতি শুক্রবার দুপুরে ১টাকায় খাবার বিতরন করে থাকি।
১টাকা দিয়ে কেন ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেক মানুষ আছে যারা সাহায্য নিতে চাননা বা অনেকে ফ্রি তে খাবার খেতে চাননা। যার ফলে আমরা ১টাকা মূল্যের বিনিময়ে খাবার দিয়ে থাকি।
সমাজের বিত্ত্ববানদের সহযোগিতা পেলে আগামিতে আরো বড় পরিসরে সপ্তাহে ৩-৪দিন খাবার বিতরণের এমন কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে বলে জানান সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক।

“মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারেনা” এমন স্লোগানে নওগাঁর ফ্রেন্ডস প্যানেলের সদস্যরা ১শ ৫০সপ্তাহ ধরে নিয়মিত ভাবে প্রতি সপ্তাহে ১টাকায় একবেলা ভরপেট খাবার আয়োজন করে আসছে।


পাঁচ শতাধিক ইয়াবাসহ দুই যুবক ডিবির জালে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হাসনাইন তালুকদার দিবস -ঝালকাঠি
ঝালকাঠি জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অভিযানে ৫৩০ পিচ ইয়াবা ট্যবলেটসহ দুই যুবক গ্রেফতার। পহেলা আগষ্ট রাতভর দু'ফায় মাদক উদ্ধার অভিযানের নেতৃত্ব দেন ডিবির এসআই মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।
পুলিশ জানায়, প্রথম পর্যায়ে রাত দেরটার দিকে পৌর শহরের পালবাড়ী এলাকা থেকে আব্দুল্লাহ আল জোবায়ের নামের ২১ বছর বয়সী এক যুবককে আটক করা হয়। পুলিশের ভাষ্যমতে ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রয়ের জন্য জোবায়ের একটি গলির মুখে অবস্থান করছিলো।
পুলিশ আরো জানায়, ব্যপক জিজ্ঞাসাবাদের পর জোবায়ের তাদেরকে জানায় সে ইয়াবা ট্যাবলেট পাইকারী দরে ক্রয় করে এলাকায় খুচরা মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রয় করেন। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর তার বন্ধু মো. তাসিন কাজী নামের ২৩ বছর বয়সী আরেক যুববকের নাম বলে দেয়। সে তাসিনের কাছে ইয়াবা রেখে এসেছে বলেও স্বিকার করেন।
রাতেই জোবায়েরকে সাথে নিয়ে শহরের কাপুরিয়া পট্টি এলাকায় তাসিন কাজীর বাসায় অভিযান চালনো হয়। তখন রাত সোয়া ২টা। ভেতর থেকে গেইট না খোলায় পুলিশ দুই ঘন্টা অপেক্ষা করেন। ভোর রাত চারটার পর গেইট খুললে জোবায়েরকে সাথে নিয়ে ফ্লাটে প্রবেশ করেন ডিবি পুলিশ।
ততক্ষণে জোবায়েরের রেখে যাওয়া ইয়াবা ট্যাবলেটের পোটলাটি জানালা দিয়ে ভবনের বাইরে ফেলে দেয় তাসিন। পুলিশের ভয়ে বন্ধু জোবায়ের রেখে যাওয়া ইয়াবা ফেলে দেয়ার কথা স্বিকার করার পরে তাসিন নিজেই বাহিরে গিয়ে ফেলে দেয়া ইয়াবার পোটলাটি কুড়িয়ে এনে দেয়।
পোটলাটি খোলা হলে দেখাযায় তার ভিতরে ৫৩০ পিচ ইয়াবা ট্যবলেট রয়েছে। যা জব্দ করছে ডিবিপুলিশ। এসময় তাসিন এবং জোবায়েরকে মাদক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
গ্রেফতারকুত আব্দুল্লাহ আল জোবায়ের পালবাড়ি এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে। এবং গ্রেফতারকৃত অপর যুবক তাসিন কাপুরিয়া পট্টি এলাকার কাজী আবুল কালামের ছেলে।
ঝালকাঠি ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সেলিম উদ্দিন গনমাধ্যমকে জানান, দুই মাদক কারবারির বিরুদ্ধে ঝালকাঠি সদর থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। ঝালকাঠিতে মাদক উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে।'


পটুয়াখালীতে এবি পার্টির উদ্যোগে চিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এইচ এম মোজাহিদুল ইসলাম নান্নু, পটুয়াখালী প্রতিনিধি
জুলাই গনঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আমার বাংলাদেশ পার্টি পটুয়াখালী জেলা শাখার উদ্যেগে চিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের ড. আতহার উদ্দীন মিলনায়তনে চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন দলটির কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক ব্যারিষ্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। আমার বাংলাদেশ পার্টি পটুয়াখালী জেলা শাখার আহবায়ক প্রফেসর ড. এ এস এম ইকবাল হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডাঃ মেজর আব্দুল ওহাব মিনার ও সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী নাসির। আলোচনা শেষে জুলাই আন্দোলনের প্রদর্শিত চিত্র ঘুরে দেখেন উপস্থিত সকলে।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এবি পার্টির সাধারন সম্পাদক ব্যারিষ্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, জুলাই ২৪ কে নিয়ে যেন ৭১ এর মত চেতনা ব্যাবসা না হয়। জুলাই থেকে শিখে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়বো। যারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না তাদের বাস্তবতা অওয়ামী লীগের মতো হবে। যারা নিজেদের বদলে নতুন বাংলাদেশের জন্য নতুন ভাবে কাজ করবেন তারা সকলের কাছে সমাদৃত হবেন।


banner close