নরসিংদীর রায়পুরায় ট্রাকের চাপায় চারজন নিহত হয়েছেন। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মাহমুদাবাদ এলাকায় রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভৈরব হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, একটি গ্যাস পাম্প থেকে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা গ্যাস নিয়ে রায়পুরার বারৈচারের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা সিলেটগামী একটি ট্রাক ওই অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। তখনই ট্রাকটি উল্টে পাশে থাকা একটি বাজারে ঢুকে পড়ে।
এতে ঘটনাস্থলে দুজন নিহত হন। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান আরও দুজন। আহত আরও পাঁচজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় ও ভৈরবের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহতরা হলেন উপজেলার মাহমুদাবাদ মেশিনঘর এলাকার আলাউদ্দিন মিয়া ছেলে সিদ্দিক মিয়া, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর নগর গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে মো. সিদ্দিক মিয়া, বেলাব উপজেলার পুরাদিয়া এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে আবুল কালাম (অটোরিকশার যাত্রী)। তাৎক্ষণিক অপর নিহতের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
তাদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে নেয়া হয়েছে।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে নিজের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া রায়হান মিয়া (২৭) নামের এক যুবক মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। রায়হান উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের উত্তর ধোপাডাঙ্গা গ্রামের মো. চান মিয়ার ছেলে।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মো. আবদুল হাকিম আজাদ জানান, গত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে পারিবারিক কলহের জেরে ক্ষোভে নিজের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন রায়হান। পরে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
প্রায় আট-নয় বছর আগে রায়হান বিয়ে করেন। তাদের সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে। তবে রায়হান অনলাইন জুয়ায় আসক্ত ছিলেন এবং অন্য নারীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। কয়েক মাস আগে এক নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িত থাকার অভিযোগে এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়েন তিনি। পরে শাশুড়ির চাপে স্ত্রী আদুরী বেগম নিজের গহনা বিক্রি করে টাকা দিয়ে স্বামীকে ছাড়িয়ে আনেন।
এরপরও রায়হান আরও এক নারীকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিলে দাম্পত্য কলহ চরমে ওঠে। এতে স্ত্রী আদুরী বেগম নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান।
এর মধ্যেই রায়হানের বাবার ১ লাখ টাকা হারিয়ে যায়। টাকা চুরির অভিযোগে বাবা চান মিয়া ছেলেকে দোষারোপ করলে আবারও পারিবারিক বিরোধ দেখা দেয়। একপর্যায়ে ক্ষোভে রায়হান নিজের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গেলে তিনি পাশের পুকুরে ঝাঁপ দেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
দুই দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন রায়হান মিয়া।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ভিক্ষুককে রিকশা ও ভ্যান প্রদান করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের আয়োজনে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাদের অনুদানের চেক প্রদান এবং ভিক্ষুক পুনবার্সন ও বিকল্প কর্মসংস্থান শীর্ষক কর্মসূচি বাস্তবায়নে এই উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে ।
বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা হল রুমে অনুষ্ঠিত ওই অনুষ্ঠানে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলার ৭টি রেজিস্ট্রেশনকৃত সমাজ উন্নয়ন সংস্থার মধ্যে এককালীন ২ লাখ ৭০ হাজার টাকার চেক বিতরণ এবং উপজেলা ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের আওতায় চারজন ভিক্ষুকের মধ্যে ভ্যান-গাড়ি বিতরণ করা হয়েছে ।
উপজেলা সমবায় অফিসার লুৎফর নেছা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফখরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ড. মো. হাবিবুল্লাহ, সমবায় অফিসার মানজুমান আরা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফারুক, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রণোদেশ মহাজন, সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কাইয়ূম চৌধুরী ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নেতারা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
রাঙামাটির রাজবন বিহারে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ৪৯তম কঠিন চীবর দানোৎসব। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজবন বিহারের বেইন ঘর উদ্বোধন ও পঞ্চশীল গ্রহণের মধ্য দিয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজবন বিহার অধ্যক্ষ শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবীর, বিহারের আবাসিক ভিক্ষু সংঘ ও উপাসক-উপাসিকারা।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় আয়োজন হিসেবে পরিচিত এই কঠিন চীবর দানোৎসবে এবারও দেশ-বিদেশের লাখো পুণ্যার্থী অংশ নিচ্ছেন।
বৌদ্ধধর্মে দানের মধ্যে কঠিন চীবর দানকে শ্রেষ্ঠ দান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা কাটা, রং করা, চীবর বোনা এবং সেলাই সম্পন্ন করে ভিক্ষু সংঘকে দান করা হয়। এই কঠোরতা ও সন্নিবিষ্ট শ্রমের কারণেই এর নাম ‘কঠিন চীবর দান’।
উদ্বোধনী দিনে রাজবন বিহার চত্বরে স্থাপিত প্রায় ২০০টি বেইন ঘরে চীবর প্রস্তুতের কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিটি ঘরে ৪ জন করে মোট ৮ শতাধিক নারী-পুরুষ এ কাজে অংশ নিচ্ছেন। এ সময় বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত পার্বত্যাঞ্চলের বিশিষ্ট নারী উদ্যোক্তা মঞ্জুলিকা চাকমা চরকা কেটে বেইন উদ্বোধন করেন।
রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অমিয় খীসা জানান, ‘গত বছর পারিপাশ্বিক পরিস্থিতির কারণে কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হয়নি। এ বছর নতুন উদ্যমে উৎসব আয়োজন করেছি। আমরা সকলেই ভগবান গৌতম বুদ্ধের বাণীর আলোকে বিশ্ব শান্তি কামনা করি।’
উৎসবকে ঘিরে লোকজ মেলা উৎসব উপলক্ষে রাজবন বিহার এলাকায় বসেছে গ্রামীণ মেলা। সারাদিন ধরে চলছে ভক্ত-দর্শনার্থীদের ভিড়, প্রার্থনা, পূজা, অর্ঘ্য নিবেদন ও দর্শন।
রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদুল ইসলাম জানান, ‘উৎসবকে ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও সার্বক্ষণিক নজরদারিতে আছেন, যাতে পুণ্যার্থীরা নির্বিঘ্নে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে পারেন।’
পৌর শহরের পারলা এলাকায় অবস্থিত নেত্রকোনা আন্তজেলা বাস টার্মিনালটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। ফলে নেত্রকোনাবাসীর বহু দিনের প্রত্যাশাকে বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা ও ভগ্নদশার অবসান ঘটছে জানিয়ে আন্তজেলা বাস টার্মিনাল পরিদর্শনকালে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ্ আল মাহমুদ জামান বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যেই বাসস্ট্যান্ডের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার কার্যক্রম শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, যাত্রীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে এখানে দুটি আধুনিক টয়লেট, ছাউনি প্ল্যাটফর্ম, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, বিদ্যুৎতায়নসহ নানা উন্নয়নমূলক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা চাই মানুষ যেন স্বস্তিতে, নিরাপদে, আনন্দে সুশৃঙ্খলভাবে ভ্রমণ করতে পারে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও নেত্রকোনা পৌর প্রশাসক আরিফুল ইসলাম সরদার, নেত্রকোনা জেলা প্রেসক্লাব সম্পাদক মাহবুবুল কিবরিয়া চৌধুরী হেলিম, জেলা বিএনপি নেতা আব্দুল্লাহ্ আল মামুন খান রনি, এস.এম.শফিকুল কাদের সুজা, জেলা মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল জলিল, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও নেত্রকোনা পৌর প্রশাসক আরিফুল ইসলাম সরদার বলেন, সিআরডিপি প্রকল্পের আওতায় বাসস্ট্যান্ডটি একটি আধুনিক টার্মিনালে রূপান্তরের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ভঙ্গুর অবকাঠামো ও যানজটের কারণে যাত্রীদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ এখন অতীত হতে চলেছে। সংস্কার শেষ হলে নেত্রকোনা পরিবহন ব্যবস্থার এক নতুন অধ্যায় সূচিত হবে। দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা, ভাঙা-চোরা রাস্তা ও নোংরা পরিবেশে অতিষ্ঠ ছিল সাধারণ যাত্রীরা। অবশেষে এই সংস্কার কার্যক্রমে নেত্রকোনাবাসীর মনে ফিরছে আশার আলো। তারা বিশ্বাস করেন, নতুন রূপে গড়ে উঠবে এক পরিচ্ছন্ন, সুশৃঙ্খল ও আধুনিক বাস টার্মিনাল। যা জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে ভ্রমণযাত্রীদের জন্য হয়ে উঠবে স্বস্তির ঠিকানা।
নড়াইলের জেষ্ঠ্য সাংবাদিক এনামুল কবির টুকু একজন ভুযা মুক্তিযোদ্ধা। তার গেজেট (নম্বর-২৬৪)বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, গত ২৬ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির আদেশে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হরিদাস ঠাকুর স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তার গেজেট বাতিল করা হয়েছে। টুকু নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পাচগ্রাম ইউনিয়নের মহিষখোলা গ্রামের আবু বক্কার সিদ্দিকীর ছেলে। সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে জড়িত থাকায় তিনি দীর্ঘদিন নড়াইল পৌরসভার কুড়িগ্রাম এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। বিষয়টি ২৮ অক্টোবর রাতে সোশ্যালমিডিয়া ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এনামুল কবির টুকু জাতীয় একটি দৈনিক পত্রিকার নড়াইল প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে নড়াইলের আরও তিনজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার গেজেটও বাতিল করা হয়েছে।
জানা গেছে, নড়াইলের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট বাতিল প্রসঙ্গে সর্ব প্রথম ভূমিকা নেন নড়াইল পৌরসভার মহিষখোলা গ্রামের আমেরিকা প্রবাসী নেওয়াজ মাহামুদ ভিকু। তিনি দীর্ঘ ৪-৫ বছর তার সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ব্যাপারে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন।
মুঠোফোনে নেওয়াজ আহম্মেদ ভিকু বলেন, কথিত সাংবাদিক এনামুল কবির টুকু টাকার বিনিময়ে তিনি জীবিত হোক কিংবা মৃত হোক এমন স্থানীয় যেকোনো মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে ম্যানেজ করে তার গ্রুপের সদস্য দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়েছেন। তাকে আইনের আওতায় আনা হলে বিস্তারিত সব তথ্য বেরিয়ে আসবে। তিনি বলেন, টুকু নড়াইল প্রেসক্লাবের কখনো সভাপতি আবার কখনো সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। সাংবাদিক তকমা আর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সেজে বেশিরভাগ সময় স্থানীয় প্রশাসন এবং জনগণকে চাপের মধ্যে রাখেন। তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারিসহ চাদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।
নড়াইল মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তরিবর রহমান বলেন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট বাতিলের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। তিনি বলেন, ভুয়া এই সমস্ত কথিত মুক্তিযোদ্ধাদের গুতোয় পথে-ঘাটে চলা যেত না।
নড়াইল জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান বলেন, নড়াইল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এনামুল কবির টুকুর মুক্তিযোদ্ধা-সংক্রান্ত নানা অভিযোগ বিষয়ে তার কাগজপত্র যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করে তদন্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তার মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের থাকা প্রায় ৬ হাজার কয়েদিকে খাওয়ানো হচ্ছে কলেরা, টাইফয়েড, অ্যামিবিক আমাশয়, হেপাটাইটিস এ ও শিগেলোসিসসহ জীবাণুবাহিত পানি। আবার এই পানিই ব্যবহার হচ্ছে এসব কায়েদিদের জন্য রান্না, গোসল ও পয়ঃনিষ্কাশণের কাজে। বিষয়টি জানার পরও পানি সংকটের অজুহাতে বছরের পর বছর কারা কর্তৃপক্ষ এসব পানি খাইয়ে চলেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সম্প্রতি কারাগারের ১০টি পাম্পের পানির নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি পাম্পের পানি খাওয়া ও ব্যবহার অনুপযোগী বলে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে কারা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছে। তবে কারা কর্তৃপক্ষ এত বিশালসংখ্যক কয়েদির জন্য বিকল্প কোনো পানির উৎস নেই অজুহাতে কলেরা, টাইফয়েড, অ্যামিবিক আমাশয়, হেপাটাইটিস এ ও শিগেলোসিসর’ জিবাণুবাহিত এই পানিই খাওয়াচ্ছে। ব্যবহার করা হচ্ছে কয়েদিদের রান্না, গোসল ও পয়ঃনিষ্কাশণের কাজে।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র কারা পরিদর্শক (জেল সুপার) মো. ইকবাল হোসেন বিষয়টি দৈনিক বাংলাকে স্বীকার করেন। ইকবাল হোসেনের ভাষ্য, ব্যকটেরিয়া (কলেরা, টাইফয়েড, অ্যামিবিক আমাশয়, হেপাটাইটিস এ ও শিগেলোসিসর’ জিবাণুবাহিত) এই পানি গত ৪ বছর কয়েদিদের খাওয়া, গোসল ও পয়ঃনিষ্কাশণে ব্যবহার হচ্ছে। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল রেডক্রস কর্তৃক পরীক্ষা করা প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরপরই সমস্যাটি সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে পত্র দেওয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সমাধান হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ইকবাল হোসেন জানান, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৫ হাজার ৭০০ বন্দি রয়েছে এই কারাগারে। তবে সময়ে সময়ে এই বন্দির সংখ্যা ১০-১২ হাজার পর্যন্ত পৌঁছে। তাদের খাওয়া, রান্না ও ব্যবহারের জন্য ১০টি পাম্প রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রিসেন্টের প্রতিনিধিদল এসব পাম্প থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে পাঁচটি পাম্পের পানিতে ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদন দিয়েছে। তবে এসব পাম্পের পানি খাওয়া বা ব্যবহার বন্ধ করার কোনো পরামর্শ আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আন্তর্জাতিক একটি সংস্থা কারাগারের ১০টি পাম্পের নমুনা পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। তার মধ্যে ৯টি পাম্পের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে সংস্থাটি। প্রতিবেদন হাতে পাওয়া এই নয় পাম্পের মধ্যে পাঁচটি পাম্পের পানি খাওয়া ও ব্যবহার অনুপযোগী। কারণ এসব পানির মধ্যে কলেরা, টাইফয়েড, অ্যামিবিক আমাশয়, হেপাটাইটিস এ ও শিগেলোসিস জিবানু পাওয়া গেছে। ওই পাঁচটি পাম্পের পানি খাওয়া ও ব্যবহার থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা কারা কর্তৃপক্ষকে এবং পাম্পগুলো সংস্কার করার ব্যবস্থা গ্রহণে চট্টগ্রাম জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে পত্র দিয়েছি।
ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ওয়াসার পানির লাইন ও টয়লেটের স্যুয়ারেজ লাইন কোথাও লিক (ফুটো হয়ে) এক হয়ে গেছে। যার কারণে ওয়াসার লাইনে সরাসরি যুক্ত হয়ে যাওয়ায় খাওয়া ও ব্যবহারের পানিতে মল মিশে একাকার হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, মল মিশানো তথা এই অপরিষ্কার পানীয় বা খাবার খাওয়ার মাধ্যমে কলেরা, টাইফয়েড, অ্যামিবিক আমাশয়, হেপাটাইটিসে ও শিগেলোসিসসহ’ পানিবাহিত নানা রোগের উৎপত্তি হয়ে থাকে। ভয়ংকর এসব জীবাণুযুক্ত দূষিত পানি দীর্ঘসময় পান করলে মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন- পানিশূন্যতা, অঙ্গহানি, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। কলেরা এবং টাইফয়েডের মতো ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগের কারণে মারাত্মক ডায়রিয়া এবং পানিশূন্যতা দেখা দেয়। দীর্ঘমেয়াদিভাবে এই জীবাণুযুক্ত পানি পান করলে তা আরও জটিল স্বাস্থ্য সমস্যা এমনকি কিডনি ও লিভার নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ চন্দ্র দাস বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ, সিভিল সার্জন বা অন্য কোনো সংস্থা থেকে এ ধরনের কোনোপত্র আমি এখন পর্যন্ত পাইনি। লিখিত পত্র পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি দৈনিক বাংলাকে বলেন, সম্প্রতি বিষয়টি জানার পর পানি দূষণের কারণ ও উৎপত্তিস্থল উদঘাটনের কাজ শুরু করা হয়েছে। তিনি বলেন, যেহেতু কারাগারের ভেতরের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জন এবং স্যানিটেশনেরবিষয় জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর তদারকের দায়িত্বে রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিষয়টি জানার পর এই বিষয়টি দ্রুত সমাধান করার জন্য তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নাজিম উদ্দীন হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় উপজেলা চাষিরহাট বাজারে নোয়াখালী-ঢাকা মহাসড়কে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে সোনাইমুড়ী উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা, জনপ্রতিনিধি, এলাকার পুরুষ-মহিলা মানববন্ধনে অংশ নেন।
নিহত নাজিম উদ্দিনের পিতা ওবায়দুল্লাহ বলেন, উপজেলার বাটরা আল মাদ্রাসাতুল ইসলামীয়া মাখফুনুল উলুম মাদ্রাসার আবাসিক বিভাগে থেকে নাজিম ২২ পারা ও ছায়েদ ২৩ পারা পবিত্র কোরআন হেফজ সম্পন্ন করে। গত ১০-১৫ দিন আগে টুপি পরা নিয়ে নাজিম ও আবু ছায়েদের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে মাদ্রাসার এক শিক্ষক বিষয়টি জানতে পেরে তাদের মধ্যে মিটমাট করে দেয়। কিন্ত এ ঘটনার জের ধরে নাজিমের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে সোনাইমুড়ী বাজার থেকে ৩০০ টাকা দিয়ে একটি ধারালো ছুরি কিনে নিয়ে আসে ছায়েদ। প্রতিদিনের ন্যায় রোববার রাতে মাদ্রাসার আবাসিক কক্ষে ঘুমিয়ে যায় ১৪ জন ছাত্র ও একজন শিক্ষক। রাত আড়াইটার দিকে অন্য ছাত্রদের অগোচরে ছায়েদ ঘুম থেকে উঠে ঘুমের মধ্যে নাজিমকে জবাই করে দেয়।
সোনাইমুড়ী চাষেরহাট বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন বলেন, নাজিম উদ্দিনকে মাদ্রাসায় তার সহপাঠী নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। এই ঘটনা ন্যক্কারজনক। তিনি এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। হত্যাকারী তার সহপাঠী ছায়েদকে পুলিশ আটক করেছে। এই ঘটনার সাথে অন্য কোনো ইস্যু জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখার দাবি জানান।
সোনাইমুড়ীর চাষির হাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হানিফ মোল্লা বলেন, মাদ্রাসার ছাত্ররা-শিক্ষকদের কাছে নিরাপদ থাকার কথা। কিন্তু তাদের কাছে থেকে শিক্ষার্থীরা কীভাবে খুন হয়। শিক্ষার্থী নাজিম উদ্দিনকে পরিকল্পভাবে হত্যা করা হয়েছে। সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনার উন্মোচনের দাবি জানান।
স্ট্রোকের মৃত্যুকে হত্যা বলে প্রচারণা এবং ঘরবাড়ি লুটপাট অগ্নিসংযোগ এবং কৃষি খামার লুটপাটের বিরুদ্ধে বিচার প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাগুরায় স্বামী ও সন্তানকে জড়িয়ে মিথ্যা হত্যা মামলা ও ঘরবাড়ি খামার ভাঙচুরের অভিযোগে মাগুরায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন হালিমা খাতুন নামে এক গৃহবধূ। গত বুধবার সকালে মাগুরা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে গত ২৪ অক্টোবর শুক্রবারে সদর উপজেলার বলুগ্রামে জমিজমা নিয়ে সালিশের একপর্যায়ে বাদশা মোল্লা নামে এক ব্যক্তি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বলে দাবি করেন তিনি। প্রতিপক্ষরা আনোয়ার হোসেন (৪৫) ও তার ছেলে আবীর হোসেনসহ (১৭) তাদের পক্ষের ১৩ জন মিলে হাতুড়ি পেটা করে বাদশা মোল্লাকে মেরে ফেলেছে বলে মিথ্যা মামলা করেছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী হালিমা খাতুন।
এই ঘটনার পর প্রতিপক্ষরা তাদের ১২০ বিঘার জমির উপরে স্থাপিত এগ্রোফার্ম ও ঘরবাড়ি ভাঙচুর লুটপাট করেছে বলে দাবি করেন হালিমা। এ ব্যাপারে মাগুরা জেলা জজ আদালতে একটি মামলা করেছেন বলে তিনি জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, প্রায় ১০ বছর ধরে সদর উপজেলার বলুগ্রামে নিজের ক্রয়কৃত ও লিজ নেওয়া ১২০ বিঘা জমির উপরে এম ইন এগ্রো নামে একটি কৃষি মৎস্য ও হাঁস-মুরগির খামার গড়ে তোলেন তার স্বামী। শহরের বাড়ি থেকে দূর সম্পর্কের আত্মীয়দের গ্রামে গিয়ে তিনি খামারটি পরিচালনা করতেন। গত ২৩ অক্টোবর ওই গ্রামের হাসেম আলী, আসাদ মোল্লা, হাফিজার মোল্লা, সাঈদ মোল্লা ও আকাশ মোল্লাসহ একাধিক ব্যক্তি তাদের কেটে রাখা ধান জোর করে তুলে নিয়ে যায়।
এ সময় হঠাৎ প্রতিপক্ষরা আনোয়ার হোসেনসহ তার লোকজনের উপরে হামলা চালায়। একপর্যায়ে তাদের আত্মীয় বাদশা মোল্লা স্ট্রোক করে মারা যায় বলে তারা জানতে পারেন। এ ঘটনার পর খামারে থাকা ৩০০ মণ ধানসহ কয়েক লাখ টাকার সম্পদ লুটপাট ও খামারে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করে প্রতিপক্ষরা। উপরন্ত তার স্বামী আনোয়ার হোসেন ও বড় ছেলে আবির হোসেনসহ ১৩ জনকে আসামি করে একটি মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের করেছে প্রতিপক্ষরা।
আনোয়ার হোসেনের মা রহিমা খাতুন জানান, ওই দিন যে ব্যক্তি নিহত হন বাদশা মোল্লা তিনি আমার মামাতো ভাই। ভাগ্নের (আনোয়ারের) পক্ষেই তিনি সালিশ মীমাংসা করতে উপস্থিত হয়েছিলেন। হঠাৎ মারামারি বেধে যাওয়ায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত আসামিদের খুঁজে বের করার দাবি জানাচ্ছি।
খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়িতে সেনাবাহিনীর অভিযানে প্রায় ৪ হাজার ঘনফুট অবৈধ কাঠ উদ্ধার করা হয়েছে। উপজেলার বর্মাছড়িমূখ বাজার সংলগ্ন দেওয়ানপাড়া এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। উদ্ধার কাঠের বাজারমূল্য আনুমানিক ১ কোটি ২০ লাখ টাকা।
নিরাপত্তা বাহিনী সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার (২৯ অক্টোবর) নিয়মিত টহল অভিযানের অংশ হিসেবে সেনা সদস্যরা এলাকাটিতে অভিযানে যান।
এতে টহলের উপস্থিতি টের পেয়ে কাঠ পাচারকারীরা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে পরিত্যক্ত অবস্থায় বিপুল পরিমাণ কাঠ উদ্ধার করা হয়। যা পরে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেনাবাহিনীর গুইমারা রিজিয়নের অধীন লক্ষীছড়ি জোনের সেনাসদস্যরা এই অভিযান পরিচালনা করে।
সূত্র আরো জানায়, বর্মাছড়িমুখ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফের প্রভাব বিস্তারের সুযোগে অবৈধ কাঠ পাচারসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড চলে আসছে। সেনাবাহিনীর এই অভিযান সেই অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে বড় ধরনের পদক্ষেপ।
নিরাপত্তা বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, জনগণের নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় এবং অবৈধ চোরাচালান বন্ধে সেনাবাহিনী সর্বদা বদ্ধপরিকর। এই ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরো বলেন, ‘এলাকাটিতে ইউপিডিএফ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেনা অভিযানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসব অপপ্রচারের মাধ্যমে তারা নিজেদের বেআইনি কর্মকান্ড আড়াল করার চেষ্টা করে থাকে।’
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ের উদ্যোগে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। ৩০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে আনুষ্ঠানিক ভাবে এসব সহায়তা প্রদান করা হয়।
২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রবি মৌসুমে গম, সরিষা ও মুগ ফসলের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়। কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করেন উপজেলা কৃষিপূনর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ডাঃ তামান্না তাসনীম।
এসময় সুবিধাভোগী কৃষকদের উপস্থিতিতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আউলিয়া খাতুন।
অন্যান্যের মাঝে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মোঃ আশরাফুল্লাহ্, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার সৈয়দ শাকিল আহমেদ, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার অলি ভৌমিক, সুরাইয়া আক্তার, কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এফ এম কামাল হোসেন, কৃষি উপ-সহকারী ও উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ মোখলেছুর রহমান, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (ব্লক সুপারভাইজার) মনজুরুল আলম, আয়নাল হক, সফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মোট ৭'শ জন প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়। এদের মধ্যে ৬শ' জন কৃষকের মাঝে বিঘা প্রতি ১ কেজি সরিষা বীজ, ডিএপি ১০ কেজি ও ১০ কেজি এমওপি সার দেয়া হয়। ৪০ জন কৃষকের মাঝে বিঘা প্রতি ২০ কেজি করে গম বীজ এবং ডিএপি ১০ কেজি ও ১০ কেজি এমওপি সার দেয়া হয়। ৬০ জন কৃষকের মাঝে বিঘা প্রতি ৫ কেজি মুখ বীজ এবং ডিএপি ১০ কেজি ও ৫ কেজি এমওপি সার দেয়া হয়।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রাঙ্গিয়ার পোতা গ্রামের মাঠ থেকে পা ও গলা বাঁধা অবস্থায় ইসাহাক আলী (৬৫) নামের এক কৃষকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকালে বংকিরা- রাঙ্গিয়ার পোতা সড়কের বটদাড়ির মাঠ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত ইসাহাক আলী রাঙ্গিয়ার পোতা গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, সকালে রাস্তার পাশে ধান ক্ষেতে আইলে ইসাহাক আলীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে স্বজনদের খবর দেয়। স্বজনরা এসে ইসাহাক আলীকে শনাক্ত করলে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের এস আই আনিছুর রহমান বলেন, পাঁ বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে ইসাহাক আলীকে হত্যা করে ওই স্থানে ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা। কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা দ্রুত শনাক্ত করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার কাজ চলছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় ট্যাংক লরির চাপায় আয়েশা আক্তার (২২) নামে এক তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন মো. খালেদ হোসেন (২৭) নামে এক যুবক।
নিহত আয়েশা আক্তার পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার উত্তর তাপাল বাড়িয়া গ্রামের মো. জাকির হোসেনের মেয়ে। আহত যুবক খালেদ হোসেন সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি মুজিববাগ এলাকার হাসান আলীর ছেলে।
আহত খালেদ হোসেন বলেন, তিনি ও আয়েশা সোনারগাঁও থেকে পঞ্চবটীর দিকে যাচ্ছিলেন। মৌচাক এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে একটি বেপরোয়া গতির ট্যাংক লরি তাদের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে তারা দুজনই সড়কে ছিটকে পড়েন। সে সময় লরিটি আয়েশাকে চাপা দেয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, একটি ট্যাংক লরি পেছন দিক থেকে মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিলে আরোহী তরুণী গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুর্ঘটনাকবলিত মোটরসাইকেল ও ট্যাংক লরিটি জব্দ করি। তবে লরিচালক দুর্ঘটনার পরপরই পালিয়ে যায়। তাকে শনাক্ত ও আটক করার চেষ্টা চলছে। আহত যুবককে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ পশ্চিম বিশারামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন মেয়াদে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে অবসরে যাওয়া তিন প্রজন্মের তিনজন প্রধান শিক্ষককে অবসরজনিত বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
বিদায়ী সংবর্ধনা গ্রহণকারী তিন প্রজন্মের তিনজন প্রধান শিক্ষক হলেন, সন্তোশ কুমার, মো: ফজলুল আমিন, মো: সোহরাওয়ার্দী।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১০টায় উপজেলার টবগী ইউনিয়নে পশ্চিম বিশারামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মিলনায়তনে এ বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকদের বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র, সাইফুল ইসলাম কামরুছ, পরিচালক, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রনজিৎ চন্দ্র দাস, সহকারী কমিশনার (ভূমি), বোরহাউদ্দিন।
বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাখাওয়াত হোসাইন হাওলাদার, উপদেষ্টা সম্পাদক, দৈনিক বাংলাদেশ বানী, কাজী শহীদুল আলম নাসিম, যুগ্ন আহ্বায়ক, বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপি, কাজল মিয়া হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক, টবগী ইউনিয়ন বিএনপি, বশির আহমেদ, সভাপতি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি, মানসুর হাওলাদার, জাকারিয়া আজম, অধ্যক্ষ, হাফিজ ইব্রাহিম মহাবিদ্যালয়, জসিমউদ্দিন হাওলাদার, চেয়ারম্যান, টবগী ইউনিয়ন পরিষদ, কামাল হাওলাদার, সাবেক চেয়ারম্যান, টবগী ইউনিয়ন পরিষদ, আঃ হান্নান মিঠু, সভাপতি, হাকিমুদ্দিন ফাজিল মাদ্রাসা, তন্ময় শিকদার, সাধারণ সম্পাদক মলংচড়া ইউনিয়ন বিএনপি। এছাড়াও বিদ্যালয়টির প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।