কুড়িগ্রামে পানিতে ডুবে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে নাগেশ্বরী উপজেলায় বন্যার পানিতে ভেলা চালাতে গিয়ে একজন ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় বৃষ্টির পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলো, নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভেরখাস ইউনিয়নের ফান্দের চরের শাজাহান মিয়ার ছেলে সজিব (৭) এবং ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের খামার বেলদহ গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হামিদ বাবুর ছেলে জাবির (২) ও একই এলাকার আনোয়ার হোসেন ভুট্টুর ছেলে আদিব। জাবির ও আদিব সম্পর্কে চাচাতো ভাই।
সজিব ভেলা চালানোর সময় পানিতে পড়ে মারা যায়। বাকি দুই শিশু বৃষ্টির জমে থাকা পানিকে ডুবে মারা যায়।
বল্লভেরখাস ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক ও বল্লভেরখাস ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সরকার এসব তথ্য জানিয়েছেন।
সজিবের চাচা আনোয়ার হোসেন জানান, কয়েকজন শিশু মিলে কলাগাছের ভেলায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল। এর এক পর্যায়ে অন্য শিশুরা উপরে ওঠলেও সজিব ভেলা থেকে পানিতে পড়ে মারা যায়।
অপরদিকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বেলদহ গ্রামে নিচু জমিতে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে খেলতে গিয়ে শিশু জাবির ও আদিব ডুবে মারা গেছে।
ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি ফের বাড়ছে। এতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একাধিক ভাঙ্গন স্থান দিয়ে পানি ঢুকে পরশুরাম উপজেলার অলকা গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) স্থানীয়রা জানান, বিগত কয়েক ৩/৪ দিন ফেনীতে বৃষ্টিপাত না হলেও ভারতের ত্রিপুরায় ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ফলে ভারতের উজানের পানিতে এখানে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। সোমবার (২১ জুলাই) সকাল থেকে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, টানা বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গত ৮ জুলাই থেকে পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলায় তিনটি নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৪১টি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দেয়। তারমধ্যে ৬টি ভাঙ্গন স্থানে মেরামত কাজ শেষ হয়েছে। ২৮টি স্থানে কাজ চলমান রয়েছে। বাকি ৭টি ভাঙ্গন স্থান বড় হওয়ায় সেগুলোর কাজ শুরু করা যায়নি।
ভারতের উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রোববার রাত থেকে নদীর পানি আবারও দ্রুত গতিতে বাড়তে শুরু করে। এতে ভাঙ্গন স্থানগুলো দিয়ে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, গেল বছরের (২০২৪ সালের) ভয়াবহ বন্যায়ও ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১০৪টি স্থানে ভেঙ্গেছিল। পরে ২০ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দে বাঁধগুলো মেরামত করা হলেও বছর না পেরোতে আবারও ভেঙ্গেছে। এসব ভাঙ্গন স্থান দিয়ে পানি প্রবেশ করে সোমবার সকাল থেকে পরশুরামের পশ্চিম অলকা, পূর্ব অলকা, নোয়াপুর, চিথলিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম ও ফুলগাজীর কিছু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পাউবোর যথাযথ তদারকি ও অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বাঁধ ভেঙে প্রতিবছর এমন দুর্ভোগে পড়তে হয় বলছেন তারা।
পরশুরামের পশ্চিম অলকার বাসিন্দা আবদুর রহমান বলেন, আমরা শুনেছি এখানে তেমন বৃষ্টি না হলেও ভারতে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এজন্য গত কয়েকদিন আগে বাঁধের যেসব স্থান ভেঙ্গেছে তা দিয়ে নতুন করে পানি ঢুকে ফের আমরা পানিতে ডুবছি। আমাদের এ দুর্ভোগ কখনো শেষ হবে না।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, ভারতের উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে মুহুরী নদীর পানি ৯.৬৪ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিপৎসীমার ২.৮৬ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পূর্বের ভাঙ্গন স্থান দিয়ে পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। সম্প্রতি বন্যার পর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর ছোট ছোট বাঁধগুলো মেরামত করলেও বড়গুলো করা যায়নি।
ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, এখানে বৃষ্টিপাত না হলেও ভারতের উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পূর্বের ভাঙ্গনস্থান দিয়ে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। সম্প্রতি বন্যার পর তিনটি নদীর ছোট বাঁধগুলো মেরামত করলেও বড়গুলো করা যায়নি।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গৃহবধু নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে আপন ননদের স্বামী বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর গতকাল রোববার রাতে পৌর শহরের চন্ডিবের এলাকা থেকে অভিযুক্ত আসামী মো.বাবুল মিয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে ১ ঘন্টা পর টাকার বিনিময়ে আসামী ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।
সোমবার (২১ জুলাই) বেলা ১২টায় ভৈরব থানার সামনে গ্রেপ্তারকৃত আসামী ছেড়ে দেয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, গত ১৭ জুন পৌর শহরের কালিপুর মধ্যপাড়া পশ্চিম পাড়া এলাকায় আপন ননদের স্বামী মো.বাবুল মিয়া বাড়িতে লোকজন না থাকার সুযোগে গৃহবধূ নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। এসময় তার গায়ে জামা কাপড় ছিড়ে ফেলেন। পরে গৃহবধূর শ্বাশুরি এসে তাকে উদ্ধার করে। এসময় আসামী বাবুল দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। এঘটনায় ভুক্তভোগী নারী ভৈরব থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পরবর্তীতে ভিকটিম ১৯ জুন কিশোরগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ এ মামলা দায়ের করেন। ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত পৌর শহরের কালিপুর মধ্যপাড়া পশ্চিম বন্দ এলাকার মৃত আতর মিয়ার ছেলে বাবুল মিয়া (৩৫)। এঘটনায় পুলিশ বাবুল মিয়াকে রোববার (২০ জুলাই) রাত ১০টার দিকে কালিপুরের তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করলেও অর্থের বিনিময়ে ভৈরব থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাকিব বিন ইসলাম আসামীকে ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবার।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ নারী জানান, আমার ঘরের পাশে আসামী বাবুলের একটি পরিত্যক্ত ঘর রয়েছে। সে প্রায় সময় সেখানে বিভিন্ন মানুষজন নিয়ে আড্ডা ও নেশা করতে আসতো। এছাড়া আসামী আমার আপন ননদের স্বামী হওয়ায় সেই সুবাধে আমাদের ঘরেও মাঝেমধ্যে আসা যাওয়া করতো। গত ১৭ জুন সকালে আমার বসত ঘরে আমি কাজ করছিলাম। তখন আমার অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া ছেলে স্কুলে ছিল এবং আমার স্বামী ভৈরব থানার একটি মামলায় জেল হাজতে ছিলো। এই সুবাদে আসামী আমাকে একা পেয়ে আমার বসত ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। পরে আমি কোনো রকম আমার শ্বাশুড়িকে ফোন করলে তিনি স্থানীয়দের নিয়ে এসে আমাকে রক্ষা করে।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী গৃহবধূর শ্বাশুড়ি নাজমা বেগম বলেন, আসামি বাবুল আমার মেয়ের জামাই। আমার ছেলের ঘরের সাথে তার একটি ঘর রয়েছে। সেখানে সে প্রতিদিন এসে মাদক বিক্রি করে এবং নিজেও খাই। এমনকি সে অনেক সময় রাতে সেখানে মেয়েও নিয়ে আসে। সে আমার ছেলেকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়ে আমার ছেলের বউকে নির্যাতনের করার জন্য অনেক চেষ্টা করে যাচ্ছিল। আমি আমার ছেলের বউ এর সাথে থাকছি বলে সে সুযোগটা নিতে পরছিলো না। একদিন আমার ছোট ছেলে হঠাৎ অসুস্থ হলে আমি আমার বাড়িতে চলে যায়। ঐদিন আমার নাতিও স্কুলে ছিলো। এই সুযোগে বাবুল আমার ছেলের বউকে ঘরে একা পেয়ে তাকে পিছন থেকে জাপ্টে ধরে তার কাপড় চাপড় ছিড়ে ফেলে এবং তারা শরীরে বিভিন্ন জায়গায় শারীরিক আঘাত করে। এই অবস্থা আমার ছেলের বউ আমাকে ফোন দিলে আমি স্থানীয় আরো লোকজন নিয়ে ঐ স্থানে উপস্থিত হয়। তখন গিয়ে দেখি আমার ছেলের বউ অনেক কান্নাকাটি করছে আর বাবুল আলাদা আরেকটা ঘর থেকে আরেকজন লোক নিয়ে বের হয়ে চলে যাচ্ছে। তখন আমি বাবুলকে জাপ্টিয়ে ধরে জিজ্ঞাসা করতে চাইলে সে দৌঁড়িয়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনাটি এলাকার আরো অনেকেই দেখেছে। তাই আমি প্রশাসনের কাছে এর সঠিক বিচাই চাই।
এই বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী জানান, গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে এসআই রাকিবের নেতৃত্বে একটি টিম নারী নির্যাতন মামলার আসামী বাবুল মিয়াকে আটক করে। পরবর্তীতে আসামী বার্থরুমে যাওয়ার কথা বলে পালিয়ে যায়। এতে পুলিশের অসাবধানতার কারণেই এই ঘটনাটি ঘটেছে। তবে টাকা নিয়ে যদি কেউ আসামী ছেড়ে দেয় তা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের চড়িলাম গ্রামে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ভাতিজার হাতে চাচার কব্জি বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রায়ই ১ মাস অতিবাহিত হলেও আসামিদের এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এতে ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলামের পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। উল্লেখ্য গত ২৬ জুন এই হামলার পর ২৭ জুন রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে নবীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন। বাদী আরিফুল ইসলাম বলেন- "আমি মামলা করেছি বলে আসামিরা আমাদের হুমকি দিচ্ছে,আতঙ্কে আমারা দিন কাটাচ্ছি। মামলার প্রধান আসমি মো. বায়েজিদ ইসলামসহ অন্যান্য আসামিরা এখনো অধরা"। তাই বাধ্য হয়ে বাধ্য হয়ে গত ১৩/৭/২৫ ব্রাহ্মণবাড়িয়া নির্বাহী মাজিস্ট্রেট আদালতে আরেকটি ফৌজদারি কার্যবিধি নং- ১০৭/১১৪/১১৭(গ) এর ধারায় মামলা করেছি। মামলা নাম্বার- পি-১২১৩. প্রত্যক্ষদর্শী ইকবাল হোসেন বলেন-"আমার বাড়িতে রফিকুল ভাইয়ের দাওয়াত ছিল। তিনি আমার বাড়িতে আসছিলেন। তখনই তার উপর হামলা হয়। আমি তার চিৎকারে ছুটে এসে দেখি তার হাত নেই। আমি তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই"।
রফিকুল ইসলাম বলেন- "আমাকে হত্যা করতে চেয়ে ছিল। আল্লাহর রহমতে আমি বেঁচে গেছি। কিন্তু এখন আমার হাত নেই, আমি স্বাভাবিক জীবনে আর ফিরতে পারব না। আমি কেবল ন্যায় বিচার চাই"।
এ বিষয়ে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনূর ইসলাম বলেন-“আমরা মামলাটি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য র্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্রে তৎপরতা অব্যাহত আছে ও সংশ্লিষ্ট ইউনিট গুলোকে ও অবহিত করা হয়েছে"।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে দরিদ্র অসহায় মানুষের মাঝে ঢেউটিন ও চেক বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার উপজেলা প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উদ্যোগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়/দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কর্তৃক ঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত দুঃস্থ অসহায় পরিবারকে মানবিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ৫৯ পরিবারে বিনামূল্যে ঢেউটিন ও চেক বিতরণ করা হয়। সোনাইমুড়ী উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে পরিবার প্রতি এক বান ঢেউটিন ও তিন হাজার টাকার চেক বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার। উপস্থিত ছিলেন,উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিশকাতুর রহমান, প্রকৌশলী ইমদাদুল হক, কৃষি কর্মকর্তা নূরে আলম সিদ্দিকী, চাষীর হাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ,দৈনিক বাংলার নোয়াখালী উত্তর প্রতিনিধি খোরশেদ আলম প্রমূখ।
নীলফামারীতে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে বৃক্ষরোপণ ও শিক্ষার্থীদের মাঝে গাছের চারা বিতরণ করা হয়েছে নীলফামারী প্রেসক্লাবের উদ্যোগে।
সোমবার সকালে (২১ জুলাই) নীলফামারী প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে প্রধান অতিথি থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে চারা বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক সাইদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, নীলফামারী প্রেসক্লাবের সভাপতি(ভারপ্রাপ্ত) আতিয়ার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক নুর আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে ছাত্র-জনতার ত্যাগ কোনদিন ভুলবার নয়। ২৪’র গণঅভ্যুত্থানে যারা শহিদ ও আহত হয়েছেন তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নই এখন মুল বিষয়।
নীলফামারী প্রেসক্লাব শহিদদের স্মরণে এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদার।
নীলফামারী প্রেসক্লাবের সভাপতি(ভারপ্রাপ্ত) আতিয়ার রহমান জানান, শহরের শাহীপাড়া, নীলফামারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পুলিশ লাইন্স একাডেমির তিন’শ শিক্ষার্থীর মাঝে ফলদ গাছের চারা বিতরণ করা হয়।
বিভিন্ন সময় হারিয়ে যাওয়া ২০ মোবাইল ফোন উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছেন ঠাকুরগাঁও পুলিশ।
সোমবার (২১ জুলাই) পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সভা কক্ষে অপরাধ পর্যালোচনা সভা শেষে মোবাইল ফোনগুলো মালিকদের বুঝিয়ে দেন পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় বিভিন্ন কারণে মোবাইল ফোন হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় মোবাইল মালিকদের সাধারণ ডায়েরির প্রেক্ষিতে ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশের তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় গত কয়েকদিনে ২০ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার পূর্বক প্রকৃত মালিকদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
পুলিশ আরও জানায় এ ধরণের ঘটনায় বিচলিত না হয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশকে জানালে ও প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে পুলিশের কাজ করতে সহজ হয়। জনস্বার্থে পুলিশের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
এ সময় মোবাইল ফোন ফেরৎ পেয়ে আনন্দিত মালিকরা পুলিশকে সাধুবাদ জানান।
জামালপুরের ইসলামপুর সরকারি জে.জে.কে.এম.গার্লস হাইস্কুল এন্ড কলেজের নারী কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ (বরখাস্তকৃত) আব্দুস সালামকে স্বপদে পূর্ণঃবহাল না করে চূড়ান্তভাবে অপসারণ চেয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (২০ জুলাই) ইসলামপুর সরকারি জে.জে.কে.এম.গার্লস হাইস্কুল এন্ড কলেজে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও ইসলামপুরের সর্বস্তরের জনগণ। ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এ সময় বক্তারা বলেন, গত ২০২০ সালের ২ ফেব্রুয়ারী দেওয়ানগঞ্জগামী তিস্তা ট্রেনের কেবিনে আপত্তিকর অবস্থায় এক ছাত্রীসহ কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস সালামকে যৌন মিলনের সরঞ্জামাদিসহ রেলওয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ইসলামপুরের ঐতিহ্যবাহী নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সাথে ট্রেনে নারী কেলেঙ্কারি ঘটনার সাথে জড়িত সাবেক অধ্যক্ষ আবারো আইনের মারপেচে নিজেকে অধ্যক্ষ দাবি করে যোগদান করার পায়তারা করছে। তার বিরুদ্ধে গত ১৭ জুলাই একটি মানববন্ধন হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপি'র বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন সরকার, ইসলামপুর সরকারি জে.জে.কে.এম.গার্লস হাইস্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, অভিভাবক মহাবুবুল আলম, সাঈদ খান লোহানী, ইসলামপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ও অভিভাবক মোরাদুজ্জামান, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনির খান লোহানী, অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রৌদশীসহ আরো অনেকে।
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় কোস্টগার্ডের অভিযানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় হামলাকারীদের আঘাতে মো.শাহরিয়ার (২৬) নামে এক কোস্টগার্ড সদস্যসহ ২জন গুরুত্বর আহত হয়। পরে শাহরিয়ারকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বরিশাল সিএমএইচ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
সোমবার (২১ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার চেয়ারম্যান ঘাটের নীল বয়া এলাকার মেঘনা নদীতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চেয়ারম্যান ঘাট এলাকায় অবৈধ জাল উদ্ধারে অভিযান চালায় হাতিয়া কোস্টগার্ডের একদল সদস্য। অভিযানে বিপুল পরিমাণ অবৈধ মাছ ধরার কারেন্ট জালসহ একটি ট্রলারকে থামার জন্য সংকেত দেয় কোস্টগার্ড সদস্যরা। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে মাছ ধরার ট্রলার থেকে কোস্টগার্ড সদস্যদের উদ্দেশ্য করে ইট,পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। একপর্যায়ে হামলাকারীদের বাঁশের আঘাতে শাহরিয়ারের মাথা ফেটে যায়। ওই সময় হামলাকারীরা তাকে নদীতে ফেলে দেয়।
হাতিয়া কোস্টগার্ডের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো.আশরাফুল আলম বলেন, একদল জেলের কাছে অবৈধ কারেন্ট জাল আছে শুনে মেঘনা নদীর নীল বয়া এলাকায় অভিযান চালায় কোস্টগার্ড। ওই সময় তাদের মাছ ধরার ট্রলারকে থামতে বললে তারা উল্টো আমাদের ওপর ইট,পাটকেল ও বাঁশ নিক্ষেপ করে। এর মধ্যে একটি বাঁশের আঘাতে কোস্টগার্ড সদস্য শাহরিয়ার মাথায় জখম পায়। পরিস্থিতি ঘোলাটে দেখে দ্রুত অভিযান শেষ করে আমরা চলে আসি।
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে সংর্ঘষের ঘটনায় নিহত তিনজনের লাশ আদালতের নির্দেশে কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে জেলার মিয়াপাড়া পৌর কবরস্থান হতে ইমন তালুকদার ও রমজান কাজির লাশ উত্তোলন কার্যক্রম শুরু হয়। পরে তাদের লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। অন্যদিকে, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার কবরস্থান থেকে সোহেল রানা মোল্লার লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
লাশ কবরস্থান থেকে উত্তোলন কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল মুন্সী ও রন্টি পোদ্দার। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় গোপালগঞ্জ এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইমএন্ড অপস) সহ গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর সাজেদুর রহমান, এস আই মুরাদ, এস আই শহিদুল ইসলাম, এপিবিএন পুলিশ ও বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত বুধবারের সংঘর্ষে নিহত চারজনের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন ও সৎকার করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় মারা যান রমজান মুন্সি। পরদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে তার লাশের ময়নাতদন্ত হয়। ময়না তদন্ত শেষে আপনজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গোপালগঞ্জ সদর থানার এসআই মুরাদ হোসেন ও এস আই শহিদুল ইসলাম উক্ত রমজান কাজী ও ইমন তালুকদার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠান। ময়না তদন্ত শেষে লাশ পুনরায় দাফন কর হবে। অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা এড়াতে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে। বর্তমানে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিবেশ স্বাভাবিক আছে।
ময়নাতদন্ত শেষে আজ পুনরায় তাদের কবরস্থানে কবর দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে এ রিপোট লেখা পর্যন্ত ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়নি বলে জানা গেছে।
গোপালগঞ্জে কাটেনি জনমনের আতঙ্ক
গোপালগঞ্জে বুধবার (১৬ জুলাই) সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ জন নিহত হন। নিহত ৫ জনের মধ্যে ৪ জনের নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সদর থানায় পৃথক ৪টি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এসব মামলার প্রতিটিতে অজ্ঞাত দেড় হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। মামলাগুলোয় মোট আসামি ৬ হাজার।
সদর থানার ৪ উপপরিদর্শক পৃথক পৃথকভাবে মামলার বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন।
গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় গোটা জেলায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ফলে জনমনে কাটেনি আতঙ্ক। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ও পড়েছে ঘটনার রেশ। সোমবার কারফিউ বা ১৪৪ না থাকলেও দোকানপাট খোলেনি। নেই তেমন লোকজনের আনাগোনা। তবে অন্যান্য দিনের চেয়ে আজ লোকজনের চলাচল কিছুটা বেড়েছে।
তিন জেলায় পলিথিনবিরোধী অভিযান চালিয়ে ৮১০ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় কয়েকটি কারখান বন্ধও করে দেওয়া হয়।
সোমবার (২১ জুলাই)পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা দীপংকর বরের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত-২০১০) এর ৬(ক) ধারা লঙ্ঘনের দায়ে পিরোজপুর, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন উৎপাদন, বিক্রয়, সরবরাহ ও বাজারজাতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযানে তিন জেলায় ৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২টি মামলায় সর্বমোট ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। পাশাপাশি ৮১০ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন, ২টি ওজন মাপার যন্ত্র, ৩টি পলিথিন উৎপাদন মেশিন এবং ১টি বৈদ্যুতিক মিটার জব্দ করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, গাজীপুরে অভিযানে একটি অবৈধ পলিথিন কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
অভিযানের অংশ হিসেবে কয়েকটি সুপারশপসহ স্থানীয় দোকানমালিক ও সাধারণ জনগণকে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন করা হয় এবং ভবিষ্যতে আইন লঙ্ঘন না করার জন্য সতর্ক করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে পলিথিন দূষণ রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশবান্ধব বিকল্প ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া হয়।
রাজধানীর উত্তরায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে বহু হতাহতের ঘটনায় ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ স্থগিত করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
সোমবার (২১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে এনসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইহসানুল মাহবুব জোবায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘উত্তরায় মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার পর পুরো জাতি শোকাহত। আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা খাগড়াছড়ির কর্মসূচি শেষে ফেনীর উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। ইতোমধ্যে অনেক নেতাকর্মী ফেনীর সমাবেশস্থলে পৌঁছেও গিয়েছিলেন। তবে এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করা সমীচীন নয়।’
তিনি আরও জানান, কেন্দ্রীয় নেতারা এরমধ্যে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। আগামীকাল নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে অনুষ্ঠিতব্য কর্মসূচিও স্থগিত করা হয়েছে।
আন্তঃবাহিনীর জনসংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৯ জন নিহত ও ১৬৪ জন আহত হয়েছেন। বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম মারা গেছেন।
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে সত্তরের অধিক আহত ভর্তি আছেন। ক্রমাগত অ্যাম্বুলেন্সে করে রোগী আসছে। হাসপাতালের সামনে ভিড় করেছেন দগ্ধদের স্বজনেরা। পাশাপাশি উৎসুক জনতার ভিড় রয়েছে চোখে পড়ার মতো।
এ ছাড়া, হাসপাতালে চলছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কার্যক্রম। বর্তমানে, হাসপাতালে পর্যাপ্ত পজিটিভ ডোনার থাকলেও নেগেটিভ ব্লাডের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাসপাতালে ক্রমাগত রোগী আসছেন। এজন্য অনেক রক্ত প্রয়োজন।
তানভীর হাসান সিক্ত নামের একজন স্বেচ্ছাসেবক বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে রক্তদাতারা ছুটে আসছেন। পর্যাপ্ত ডোনার মজুত থাকায় আপাতত পজিটিভ রক্ত প্রয়োজন নেই। তবে, নেগেটিভ রক্ত সংকট। তাই, আমরা নেগেটিভ ব্লাড ডোনারদের রক্ত দিতে আহ্বান জানাই। এছাড়াও, অনেক ডোনার নাম্বার দিয়ে গেছেন বলে জানান তিনি।
ইনস্টিটিউটের ভর্তি তালিকায় এই ৭০ জনের মধ্যে কয়েকজনের নাম হাতে এসেছে। তারা হলেন—শামীম ইউসুফ (১৪), মাহিন (১৫), আবিদ (১৭), রফি বড়ুয়া (২১), সায়েম (১২), সায়েম ইউসুফ (১৪), মুনতাহা (১১), নাফি (১০), মেহেরিন (১২), আয়মান (১০), জায়েনা (১৩), ইমন (১৭), রোহান (১৪), আবিদ (৯), আশরাফ (৩৭), ইউশা (১১), পায়েল (১২), আলবেরা (১০), তাসমিয়া (১৫), মাহিয়া, অয়ন (১৪), ফয়াজ (১৪), মাসুমা (৩৮), মাহাতা (১৪), শামীম, জাকির (৫৫), নিলয় (১৪), সামিয়া।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রোগীদের ওয়ার্ডে পাঠানো হচ্ছে। সেখানেও অনেক ভিড়। ভিড়ের কারণে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
দগ্ধদের দেখতে হাসপাতালে ছুটে আসেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানও দগ্ধদের দেখতে হাসপাতালে আসেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের সামনে পুলিশ, র্যাব, আনসার ও ফায়ার সার্ভিসের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে, এই হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেছেন, এখন পর্যন্ত এখানে ৬০ জনের মতো ভর্তি করা হয়েছে, আরও ১০–১৫ জন ভর্তি করার মতো সক্ষমতা এখানে আছে। এরপর ঢাকা মেডিকেল প্রস্তুত আছে। এরপর যারা আসবেন, সেসব রোগীদের ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়া হবে।
আইএসপিআর-এর তথ্য অনুযায়ী, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিহত এবং ১৬৪ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
রাজধানীর উত্তরায় বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমানের দুর্ঘটনায় ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম মারা গেছেন। এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।
সোমবার (২১ জুলাই) বিকালে ফায়ার সার্ভিসের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর শাহজাহান শিকদার এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, উদ্ধার কাজে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট ও ৬টি অ্যাম্বুলেন্স কাজ করছে।
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আন্তঃবাহিনীর জনসংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর)। তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহীতে।
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির বিমানটিকে ঘনবসতি থেকে জনবিরল এলাকায় নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
আইএসপিআর বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে আজ সোমবার (২১ জুলাই) বেলা ১টা ৬ মিনিটে ঢাকার কুর্মিটোলাস্থ বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি এ কে খন্দকার থেকে উড্ডয়নের পর যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হয়। দুর্ঘটনা মোকাবিলায় এবং বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ওই বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম বিমানটিকে ঘনবসতি এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যাবার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বিমানটি ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল এবং কলেজের দোতালা একটি ভবনে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়েছে।
এই আকস্মিক দুর্ঘটনায় তৌকিরসহ ১৯ জন নিহত এবং ১৬৪ জন আহত হয়েছেন। আহত সকলকে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারসহ অ্যাম্বুলেন্সের সহায়তায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) এবং নিকটস্থ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য দ্রুত স্থানান্তর করা হচ্ছে।
অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে হতাহতদের সর্বাত্মক চিকিৎসাসহ সার্বিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে জানানো হয়।
এতে আরও বলা হয়, বিমান বাহিনীপ্রধান সরকারি সফরে দেশের বাইরে থাকায়, সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (প্রশাসন), বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও উদ্ধারকারী দল দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন।
সেনাবাহিনী প্রধান, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগসহ সামরিক বাহিনীর এবং ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন ।
সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, র্যাব এবং ফায়ার সার্ভিস দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে এবং পরিস্থিতি উত্তরণের সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।
দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে ইতোমধ্যে বিমান বাহিনীর একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।