রাজবাড়ীর কালুখালীতে নিখোঁজের ১২ দিন পর পাটক্ষেত থেকে এক নারীর কঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গত সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের পাতুরিয়া গ্রামের পাটখেত থেকে এ কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। স্বামী পরিত্যক্তা ওই নারীর নাম জান্নাতি বেগম (২২)। তিনি ওই গ্রামের আবুল কাশেম ব্যাপারীর মেয়ে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ৪-৫ বছর আগে বালিয়াকান্দি উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের কুদ্দুছ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে জান্নাতির বিয়ে হয়। তার তিন বছর বয়সী এক ছেলে রয়েছে। প্রায় আট মাস আগে স্বামীর সঙ্গে জান্নাতির বিয়েবিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের সময় ছেলেকে তার স্বামী নিয়ে যায়। এরপর থেকে তিনি পাতুরিয়া গ্রামে বাবার বাড়িতে থাকতেন।
গত ৫ জুলাই রাতের খাবার খেয়ে তিনি শুয়ে পড়েন। এর পর থেকে তাকে আর দেখতে পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর গত ১১ জুলাই পরিবারের লোকজন কালুখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
সোমবার দুপুরে পাতুরিয়া গ্রামের পূর্বপাড়া মাঠের পাটখেতে ঘাস কাটতে গিয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তি মানুষের কঙ্কাল দেখতে পান। মরদেহটি শেয়াল অথবা কুকুরে খেয়ে কয়েক টুকরো করেছে। কঙ্কালের পাশেই একটি ব্যাগ ছিল। জান্নাতির বাবা-মা ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ব্যাগ দেখে মরদেহটি জান্নাতির বলে শনাক্ত করেন। এরপর থানায় খবর দেয়া হলে পুলিশ দুপুরেই ঘটনাস্থলে আসে। পরে সন্ধ্যায় হাড়গোড় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইফতেখারুজ্জামান জানান, হাড়গোড় উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ওই নারীর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পিরোজপুরে মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়েছেন ১৫ জন প্রার্থী।
বৃহস্পতিবার পিরোজপুর জেলা পুলিশ লাইনস ড্রিল সেডে জেলা পুলিশ সুপার ও টিআরসি নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি খাঁন মুহাম্মদ আবু নাসের, পুলিশ কনস্টবল রিক্রুটমেন্ট-২০২৫ এর ফলাফল ঘোষণা করেন।
এতে পুলিশ কনস্টেবল পদে ১৫ জন চাকরির সুযোগ পেয়েছেন।
এ সময় ফলাফলে নিজেদের নাম শুনে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন ঘোষিত ও ভবিষ্যৎ পুলিশ কনস্টেবল ও তাদের অভিভাবকরা। কোনো ধরনের ঘুষ, সুপারিশ ও হয়রানি ছাড়াই ১২০ টাকায় চাকরি পেয়ে জেলা পুলিশ সুপারসহ নিয়োগ কমিটির সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
নিয়োগপ্রাপ্তদের ফুল দিয়ে ও মিষ্টিমুখ করিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এ সময় টাকা-পয়সা ছাড়া যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি হওয়ায় সবাইকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
পিরোজপুর পৌর এলাকার ৮ নং ওয়ার্ডে বাসিন্দা ও কনস্টেবল এর নিয়োগপ্রাপ্ত মো: শিহাব উদ্দিন সিকদার বলেন, চাকরির আশায় প্রথমে অনলাইনে আবেদন করেছি। এরপর মাঠে এসে যাবতীয় পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। শারীরিক, লিখিত, মৌখিক সবগুলো পরীক্ষায় ভালোভাবে উত্তীর্ণ হয়েছি, চাকরিও হয়ে গেছে। কারও সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করিনি। আমার কাছে এ চাকরিটা এখনও স্বপ্নের মতো লাগছে।
মোঃ শিহাব উদ্দিনের আম্মা বলেন, মাত্র ১২০ টাকায় আবেদন করে আমার ছেলের চাকরি হয়েছে। কোনো ধরনের ঘুষ, সুপারিশ কিছুই লাগেনি। আমরা খুব খুশি হয়েছি।
পিরোজপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) খান মুহাম্মদ আবু নাসের বলেন, নিয়োগপ্রাপ্তরা শতভাগ স্বচ্ছতা, দুর্নীতিমুক্ত ও ঘুষমুক্ত পরিবেশে উত্তীর্ণ হয়েছেন। সব মিলিয়ে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার সঙ্গে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে হয়েছে। এখানে কোনো প্রকার অবৈধ লেনদেন বা স্বজনপ্রীতি হয়নি।
এ সময় টিআরসি নিয়োগ বোর্ডের সম্মানিত সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, বরগুনা সদর সার্কেল মোঃ আবদুল হালিম,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বরিশাল(গৌরনদী সার্কেল)মোসাঃ শারমিন সুলতানা রাখী সহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তাবৃন্দ।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় দ্বীপজেলা ভোলায় বুধবার মধ্যরাত থেকে বওয়া ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টির প্রভাবে ভোলা থেকে ঢাকা সহ অভ্যন্তরীন রুটের সকল যাত্রীবাহী লঞ্চ ও ফেরী চলাচল বন্ধ ঘোষনা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন বিআইডব্লিউটিসি।
ভোলা নদী বন্দর সূত্রে জানা যায়, সাগরে নিম্নচাপের কারণে সমুদ্রবন্দর এলাকায় ৩ নম্বর বিপদসংকেত দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করায় চরফ্যাশন বেতুয়া-ঢাকা, ভোলা-লক্ষ্মীপুর, ভোলা-আলেকজান্ডার, ভোলা-তজুমদ্দিন-মনপুরা, হাতিয়া মনপুরাসহ সকল রুটের নৌযান চলাচল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
নিম্নচাপের প্রভাবে মেঘনা ও তেতুলিয়া নদী উত্তাল থাকায় বুধবার রাত থেকে ভোলার ইলিশা থেকে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরী ঘাট ও ভোলার ভেদুরিয়া থেকে বরিশালের লাহার হাট ঘাটে কোনো ফেরি চলাচল করেনি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ দুইটি রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানা গেছে।
এদিকে ভোলার সব রুটে নৌযান ও ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। জরুরি প্রয়োজনে পারাপারের অপেক্ষায় ঘাটে গিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে অনেককে। এতে করে বেশি বিপাকে পড়েছে অসুস্থ রোগী ও তাদের স্বজনদের।
মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী উত্তাল থাকায় মাছ ধরার কোনো নৌকা ও ট্রলার নিয়ে জেলেদের নদীতে যেতে দেখা যায়নি। জেলে ও নৌকার মাঝিদের মাছঘাটে বসে লুডু খেলে ও পরিবারের সাথে সময় কাটাতে দেখা গেছে।
এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে দূর্যোগপূর্ন আবহাওয়া বিরাজমান থাকায় ভোলায় সকাল থেকেই ঝড়ো হাওয়ার সাথে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি আবার কখনো ভাড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। জোয়ারে স্বাভাবিক পানির চেয়ে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বোরহানউদ্দিন উপজেলার মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে আলিমুদ্দিন বাংলাবাজার, হাকিমুদ্দিন, খাঁসমহল, কাজীরহাট এলাকায় জোয়ারের পানিতে কিছু অংশ প্লাবিত হয়েছে।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ভোলার ২৫০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে জোয়ারের পানিতে ভোলার তজুমদ্দিনের নির্মাণাধীন রিং বেড়িবাঁধ কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়লে রাতে ব্লক ও জিও ব্যাগ দিয়ে সেটি সংস্কার করা হয়েছে। এখন মোটামুটি ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় আরিফ মন্ডল (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত যুবক দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের পাকুড়িয়া ভাঙ্গাপাড়া গ্রামের মুর্শিদ মন্ডলের ছেলে।
নিহতের পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, আরিফ মন্ডল আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে মোটরসাইকেল যোগে দ্রুতগতিতে কুষ্টিয়ার যাওয়ার পথে ডাংমড়কা এলাকায় মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সে রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। পরে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজনকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন গুরুতর আহত আরিফ মন্ডলকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. হোসেন ইমাম জানান, দূর্ঘটনায় আহত একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।
সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হওয়ার বিষয়ে দৌলতপুর থানার ওসি মো. নাজমুল হুদা জানান, মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে একজন মোটরসাইকেল চালক গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া হাসপাতালে ভর্তি করার পর সে মারা যায়।
কোরবানির জন্য পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় প্রস্তুত করা হয়েছে রাঙ্গা দুদু, কালা পাহাড় এবং রাজা মানিক নামে তিনটি বিশাল ষাঁড়। কুয়াকাটা ডেইরি ফার্ম নামের একটি খামারে ষাঁড় তিনটি সবার নজর কেড়েছে।
ষাঁড় তিনটি একসঙ্গে কিনলে রয়েছে বিশেষ অফার। একসঙ্গে কিনলে ক্রেতাকে নিজ খরচে পবিত্র ওমরাহ করানোর ঘোষণা দিয়েছেন খামারটির স্বত্বাধিকারী মুফতি হাবিবুর রহমান মিছবাহ।
তিনি বলেন, ‘আমি দেশজুড়ে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে বেড়াই। খামার এবং কৃষিকাজ করা আমার শখ ছিল, যা এখন পেশায় পরিণত হয়েছে। ৪-৫ বছরের কঠোর পরিশ্রমের পর আমরা শাহিওয়াল এবং ফ্রিজিয়ান জাতের তিনটি ষাঁড় প্রস্তুত করেছি।’
‘বড় জাতের এই পশু তৈরি করতে আমরা কোনো প্রকার মেডিসিন বা ক্ষতিকারক খাবার ব্যবহার করিনি, শুধু স্বাভাবিক খাবার খাওয়ানো হয়েছে। বড় ষাঁড় তিনটি একসঙ্গে কিনলে তাকে আমার পক্ষ থেকে ওমরাহ করানো হবে,’ যোগ করেন তিনি।
খামারের দায়িত্বে থাকা বাদল জানান, ‘আমরা দুজন লোক সার্বক্ষণিক গরুগুলোর পরিচর্যা করছি। নিজ হাতে বানানো সাইলেজ (বায়ুরোধক অবস্থায় সংরক্ষিত সবুজ ঘাস), ঘাস ও খড় খাওয়ানো হয়। এছাড়া, এই ষাঁড় তিনটিকে গোসল করানো হয় দিনে তিনবার।’
খামার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথম দিকে শখের বশে শাহিওয়াল ও ফ্রিজিয়ান জাতের দুটি গাভি কিনে খামার শুরু করেন হাবিবুর। বর্তমানে তার খামারে রয়েছে অর্ধশতাধিক গরু। এর মধ্যে কিছু দেশীয় জাতের পশু থাকলেও বেশিরভাগই শাহিওয়াল ও ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়। তবে কোরবানি উপলক্ষে বিশেষভাবে তিনটি বিশাল ষাঁড় প্রস্তুত করেছেন তিনি।
২০ মণের রাঙ্গা দুদুর দাম হচ্ছে ১৬ লাখ টাকা। রাঙ্গা দুদুর চেয়েও বেশি ওজন নিয়ে প্রস্তুত কালা পাহাড়ের দাম ১৭ লাখ টাকা। তবে ওজন ও বয়সে কিছুটা কম হলেও রাজা মানিকের দাম ১২ লাখ টাকা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মারুফ বিল্লাহ খান বলেন, ‘চলতি বছরে উপজেলায় ২২ হাজারের বেশি গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুতি করা হয়েছে। কেউ যাতে এসব পশুর শরীরে ক্ষতিকারক উপাদান ব্যবহার করতে না পারে, সেজন্য প্রাণিসম্পদ বিভাগ সবসময় নজরদারি করছে।’
উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের প্রভাবে বাড়তে শুরু করেছে বরিশাল বিভাগের নদ-নদীর পানি। এরই মধ্যে এ বিভাগের চারটি নদীর ৬টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাকি কীর্তনখোলাসহ অন্য নদীর পানিও এখন বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই। ফলে উপকূলের লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে পানি।
গতকাল বুধবার বিকালে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি অনুসন্ধান বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলোর ১২টি পয়েন্টের মধ্যে ৬টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে বিষখালী নদীর পানি বরগুনা সদর উপজেলা পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার, পাথরঘাটা উপজেলা পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার, বেতাগী উপজেলা পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার, ভোলা জেলায় মেঘনা নদীর তজুমদ্দিন উপজেলা পয়েন্টে ৬৭ সেন্টিমিটার, পিরোজপুর সদর উপজেলার বলেশ্বর নদীর পানি ১৩ সেন্টিমিটার, উমেদপুর পয়েন্টে কঁচা নদীর পানি ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর বাইরে ভোলা খেয়াঘাট এলাকায় তেঁতুলীয়া নদী, বরিশালের কীর্তনখোলা, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা পয়েন্টে পায়রা এবং বরগুনার আমতলী উপজেলা পয়েন্টে বুড়িশ্বর নদীর পানিও বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।
তাজুল ইসলাম বলেন, বর্ষা মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। আশা করা যাচ্ছে অল্প কদিনের মধ্যে পানি স্বাভাবিক স্তরে চলে আসবে। পানি বৃদ্ধিতে বেড়িবাঁধ, মাছের ঘের, ফসলের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলেও মনে করেন তিনি।
বরিশাল আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মো. মিলন হাওলাদার বলেন, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বরিশালসহ তার আশপাশ অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তা ছাড়া সন্ধ্যা থেকে বাতাসের গতিবেগ বেড়ে যাওয়ায় নদীর পানিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ জন্য পায়রা সমুদ্র বন্দরকে-৩ ও নদী বন্দরে-১ নম্বর সর্তক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আবাসিক হলের কক্ষে ঢুকে হামলা চেষ্টার অভিযোগে শেখ ফাকাব্বির সিন নামে এক ছাত্রদলকর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
বুধবার (২৮ মে) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোখলেসুর রহমান বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফাকাব্বির সিন শাবিপ্রবির সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাঈম সরকারের সমর্থক হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন সুরমা আবাসিক এলাকার একটি মেসে থাকেন ফাকাব্বির।
প্রক্টর মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শৃঙ্খলা কমিটিতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ফাকাব্বিরের বিরুদ্ধে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়। এরপর গত ১৭ মে সিন্ডিকেটের ২৩৬তম সভায় তাকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
এর আগে, গত ৫ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলের ৪৩৬ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করে সেখানে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের গলায় ছুরি ধরার অভিযোগ ওঠে ছাত্রদলকর্মী ফাকাব্বিরের বিরুদ্ধে। পরে অভিযোগের তদন্ত করার লক্ষ্যে ৯ জানুয়ারি ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক মো. এছাক মিয়াকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ।
পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে রাজশাহীতে জমতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর হাট। রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার ৩০২টি হাটে কোরবানির পশু কেনাবেচা হবে, যার মধ্যে ১৬১টি স্থায়ী ও ১৪১টি অস্থায়ী। তবে এখনও আশানুরূপ বিক্রি শুরু হয়নি বলে জানাচ্ছেন খামারিরা। আগামী দু-একদিনের মধ্যেই হাটগুলোতে জমজমাট বেচাকেনা শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিক্রেতারা।
রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ডা. আনন্দ কুমার অধিকারী বলেন, রাজশাহী বিভাগ প্রাণী সম্পদে সমৃদ্ধি একটি বিভাগ। এ অঞ্চলের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। সারা দেশে ১ কোটি ২৬ লক্ষ পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত থাকলে রাজশাহী বিভাগেই এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে প্রায় ৪৩ লাখ পশু, যা সারাদেশের এক-তৃতীয়াংশ এবং দেশের আটটি বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর স্থানীয়ভাবে পশুর চাহিদা প্রায় ২৬ লাখ। ফলে প্রায় ১৭ লাখ পশু রাজধানী, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ দেশের অন্যান্য জেলায় পাঠানো হবে। শুধু রাজশাহী জেলাতেই চাহিদা ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪৩৭টি। তবে প্রস্তুত রয়েছে ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৮৯৩টি পশু। চাহিদার তুলনায় ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৬টি অতিরিক্ত পশু অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা হবে।
বিভাগের আট জেলায় কোরবানির পশু উৎপাদন ও চাহিদার পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাজশাহীতে চাহিদা ৩ লাখ ৮১ হাজার; উৎপাদন ৪ লাখ ৭৩ হাজার, নাটোরে চাহিদা ২ লাখ ৭৩ হাজার; উৎপাদন ৫ লাখ ১৪ হাজার, নওগাঁয় চাহিদা ৩ লাখ ৮৬ হাজার; উৎপাদন ৭ লাখ ৮৮, চাঁপাইনবাবগঞ্জে চাহিদা ১ লাখ ৩৪ হাজার; উৎপাদন ২ লাখ, পাবনায় চাহিদা ৩ লাখ ১২ হাজার; উৎপাদন ৬ লাখ ৪৮ হাজার, সিরাজগঞ্জে চাহিদা ২ লাখ ৫৯ হাজার; উৎপাদন ৬ লাখ ৫৫ হাজার, বগুড়ায় চাহিদা ৭ লাখ ৯ হাজার; উৎপাদন ৭ লাখ ৪৬ হাজার, জয়পুরহাটে চাহিদা ১ লাখ ৯৭ হাজার; উৎপাদন ৩ লাখ ১৬ হাজার।
খামারিরা বলছেন, গোখাদ্যের লাগামছাড়া দাম এবার পশুর বাজারে বড় প্রভাব ফেলবে।
পবা উপজেলার হজুরীপাড়া ইউনিয়নের খামারি ইসরাফিল ইসলাম সুমন বলেন, ‘তিনটি কোরবানিযোগ্য গরু খামারে আছে। সব খাবার কিনে দিতে হয়, খরচ বেড়েছে অনেক। প্রতিবছরই আমরা অন্তত ৮-১০টি গরু পালন করি। গোখাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পশুর লালনপালন খরচও বেড়েছে। এবারও ৩টি গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করছি। তাই প্রত্যাশিত দাম না পাওয়া পর্যন্ত বিক্রি করছি না। ঈদ আসতে আরও বেশ কিছুদিন সময় আছে। এর মধ্যে কিছুটা লাভ পেলেই বিক্রি করে দেব।’
গরু ব্যবসায়ী হযরত আলী বলেন, ‘খামারের গরুর চেয়ে বাড়িতে লালনপালন করা গরুর চাহিদা বেশি। তাই পাড়া-মহল্লায় ঘুরে ঘুরে গরু দেখছি। তবে এবার দাম অনেক বেশি চাচ্ছেন খামারিরা। ফলে আগের বছরগুলোর চেয়ে এবার বেশি দামে পশু কিনতে হবে ক্রেতাদের।’
রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আতোয়ার রহমান জানান, জেলায় এ বছর কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে তিন লাখ ৮৪ হাজার ৪৩৭টি। এর বিপরীতে চার লাখ ৯৬ হাজার ৮৯৩টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় এক লাখ ১২ হাজার ৪৫৬টি পশু বেশি রয়েছে। অতিরিক্ত এসব পশু বিক্রির জন্য নেওয়া হবে দেশের অন্যান্য জেলায়।
রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ডা. আনন্দ কুমার অধিকারী বলেন, সীমান্ত দিয়ে পশু আমদানি বন্ধ থাকায় দেশি গরুর চাহিদা ও দাম বাড়ছে। পর্যাপ্ত গবাদিপশুর মজুদ আমাদের নিজেদেরই আছে। বাইরের গরু আসে না বলে দাম কিছুটা বাড়তে পারে। আবার চাহিদার তুলনায় মজুদ বেশি থাকায় দাম খুব বেশি বাড়বেও না। ফলে ধরে নেওয়া যায় যে বাজারে এমন দাম হবে যেটা ক্রেতা-বিক্রেতা সবার জন্যই ভালো হবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক ডা. অনন্দ কুমার অধিকারী বলেন, গ্রামাঞ্চলে এখনও অনেক খামারি নিজ নিজ ঘরে এক থেকে দুটি করে দেশি জাতের পশু লালনপালন করছেন। পাশাপাশি বড় খামারগুলোতে শাহীওয়াল, সিন্ধি, রেট চিটাগাং, পাবনা ব্রিড এবং মীর কাদিম জাতের গরু কোরবানির জন্য মোটাতাজা করা হয়েছে। এখন বেশিরভাগ ক্রেতা হাটে না গিয়ে বিভিন্ন খামার ও বাসাবাড়িতে পালন করা স্বাস্থ্যসম্মত গরু কিনছেন। কয়েকদিনের মধ্যেই হাটগুলো জমে উঠবে। বিভাগের সবচেয়ে বড় পশুহাট রাজশাহীর সিটি হাট। এটা ইতোমধ্যেই জমে উঠতে শুরু করেছে।
হাটগুলোতে পশুর স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধান ও রোগনির্ণয়ের জন্য ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। এ ছাড়া, জাল টাকা শনাক্তকরণ ব্যবস্থা, ব্যাংকের বুথ ও ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরাও রাখা হয়েছে হাটগুলোতে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, মহাসড়কের পাশে কোনও পশুর হাট বসানো যাবে না। প্রতিটি পশুরহাটে সিসি ক্যামেরা, জেনারেটর, নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক রাখার জন্য ইজারাদার, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি এবং বাজার কমিটি ও পরিবহন সংশ্লিষ্ট নেতাদের বলা হয়েছে। পশু রাখার জন্য শেড তৈরি করা, আগত ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের জন্য পানি ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা রাখার জন্যও বলা হয়েছে। হাটে হাসিল নিয়ে যেন দ্বন্দ্ব না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে তাদের।
জাল টাকা শনাক্তকরণ ও লেনদেন-সংক্রান্ত বুথ স্থাপনে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানানো হয়েছে উল্লেখ করে আবু সুফিয়ান বলেন, ‘হাটে চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি প্রতিরোধে টহল বৃদ্ধির পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হবে। সার্বিক নিরাপত্তায় হাটকেন্দ্রিক পুলিশের কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। কোনো পশুবাহী গাড়ি জোরপূর্বক হাটে আনা যাবে না। কাঁচা চামড়া পাচার রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মহাসড়কে পশু লোডিং বা আনলোডিং করা যাবে না। যানজট রোধে ট্রাফিক ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।’
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের এলাকাগুলোতে গত দুই দিন ধরে থেমে থেমে মাঝারী বৃষ্টি হচ্ছে।
লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হতে পারে এবং উপকূলীয় এলাকা দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ কারণে দেশের চার সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার (২৭ মে) আবহাওয়া অধিদপ্তরের সামুদ্রিক সতর্কবার্তায় এ খবর জানানো হয়েছে।
সতর্কবার্তায় বার্তায় বলা হয়েছে, লঘুচাপের কারণে উপকূলীয় এলাকা দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া, উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত মাছধরা ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
এদিকে, লঘুচাপের কারণে আজ (বুধবার) ভোর থেকে পটুয়াখালিতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউএনবির পটুয়াখালীর প্রতিনিধি।
তিনি আরও জানান, পটুয়াখালীর আকাশ আজ ঘন মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। বাতাসের চাপ না বাড়লেও অমাবশ্যার জোয়ারের প্রভাবে নদ-নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়েছে উঠেছে।
তাছাড়া, ঢাকাসহ দেশের সব বিভাগে অন্তত পাঁচ দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এ সম্পর্কিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি জানায়, দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়ে তা বর্তমানে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ঢাকা বিভাগের পূর্বাঞ্চলসহ বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে।
এর ফলে ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো কিংবা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেই সঙ্গে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আজ (বুধবার) সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১–২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। পাশাপাশি রাতের তাপমাত্রাও সামান্য কমার আভাস দেওয়া হয়েছে।
পরের তিন দিন একই ধরনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়ে জানানো হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো কিংবা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
দ্বিতীয় দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরের ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে, তবে পরের দুদিন প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
এছাড়াও পঞ্চম দিন রবিবারও বৃষ্টিপাতের পর এই প্রবণতা কমে ফের গরম বাড়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি।
নাটোরের লালপুর উপজেলার কেশবপুর গ্রামে খলশিডাঙ্গা নদীর পাড় ভাঙন রোধে কোটি টাকা ব্যয়ে গাইড ওয়াল নির্মাণ করেছিল বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। তবে নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ও রড-সিমেন্ট কম দেওয়ায় ছয় মাসের মধ্যেই দেয়ালে ফাটল ও ধস দেখা দিয়েছে। এতে ওই এলাকার দুই শ পরিবার নদী ভাঙনের শঙ্কায় রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের গাফিলতি ও যোগসাজশের কারণে এমন দুরবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। গাইড ওয়াল ও সড়কের মাঝে ফাঁকা জায়গা ভরাটের জন্য নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, বর্ষা শুরু হলে ক্ষতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নদীতে অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে পানি সেচের মাধ্যমে খননযন্ত্র (ভেকু) ব্যবহার করে অবৈধভাবে মাটি তোলা হচ্ছে এবং সেটি ওয়াল ও সড়কের ফাঁকা জায়গায় দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে কেশবপুর গ্রামের আঞ্চলিক রাস্তা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে এবং বাড়িঘরও ভাঙনের শঙ্কায় রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আকরাম আলী ও মাহফুজুর রহমান জানান, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার আমলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও বিএমডিএ প্রকৌশলীদের যোগসাজশে অনিয়ম করে এসব কাজ করা হয়। কাজের কিছুদিন পরই সেটি বন্ধ হয়ে যায়। এতে নদী ভাঙন বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি রাস্তা বিলীন হয়ে গেছে। তারা দ্রুত ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার গোলাপ আলী জানান, এই প্রকল্পে কাজটি বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ঠিকাদার দ্বারা সম্পন্ন করা হয়েছে। বাইরে থেকে মাটি কেনা সম্ভব না হওয়ায় প্রকৌশলীর নির্দেশনা অনুযায়ী নদী থেকে মাটি উত্তোলন করে ব্যবহার হচ্ছে।
বিএমডিএর বড়াইগ্রাম জোনের লালপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল বাসার জানান, গত বর্ষায় সময় স্বল্পতার কারণে ওয়ালের ব্যাক সিলিংয়ে মাটি দেওয়া হয়নি, যা বর্তমানে দেওয়া হচ্ছে। সরকারি প্রকল্পের জন্য নদী থেকেই মাটি সংগ্রহ করা হচ্ছে। ওয়ালের কিছু মাটি সরার ফলে ফাটল দেখা দিয়েছে। তবে এসব প্রকল্পের বরাদ্দ কত সেটা জানা নেই।
এ বিষয়ে বিএমডিএর বড়াইগ্রাম জোনের সহকারী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়গুলো সরাসরি উপ-সহকারী প্রকৌশলী দেখে থাকেন, তাই তিনিই এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন। তবে অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী ও দৌলতপুরে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২৮ মে) সকালে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান।
নিহতরা হলেন, দৌলতপুর ইউনিয়নের গরবপাড়া এলাকার মৃত নাহারুল ইসলামের ছেলে কালু হালসানা (৩৫) ও কুমারখালীর জগন্নাথপুর ইউনিয়নের কৃষক কামরুজ্জামান প্রমানিক (৫০)।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) হোসেন ইমাম জানান, একজনের মৃত্যু রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে নিশ্চিত হলেও অপরজনের ক্ষেত্রে তা এখনো নিশ্চিত নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘দেরি করে হাসপাতালে আনায় কাউকেই এন্টিভেনম দেওয়া সম্ভব হয়নি। তাদের লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা হিউম্যান কনসার্ন ইন্টারন্যাশনালের অর্থায়নে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সুশীলনের বাস্তবায়নে টাঙ্গাইলের যমুনা নদীর দুর্গম শুশুয়া চরে এবং কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৪ সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের ঈদ উপলক্ষে পোশাক ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
শুশুয়া চরের ৮৯জন এবং উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৪ এর ২৫৫ জন শিশুদের মাঝে এসব উপহার বিতরণ করা হয়।
২৮মে বুধবার ও ২৭মে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ক্যাম্প-৪ দরবার হলে এবং শুশুয়া ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন সংলগ্ন মাঠে এই বিতরন অনুষ্ঠান চলে।
প্রত্যেকটি মেয়ে শিশুকে থ্রি পিস, জুতা , ফ্রক, স্যালোয়ার,স্কার্ফ এবং ছেলে শিশুদের শার্ট, প্যান্ট ও জুতা দেয়া হয়। এছাড়াও প্রত্যেকজনকে ১কেজি সেমাই,১কেজি চিনি, ১কেজি পাউডার দুধ, ২৫০গ্রাম কিসমিস, ৫০০গ্রাম বাদাম, গরম মসলা ৩০গ্রাম, শুকনা মরিচ ৫০০গ্রাম, আদা ৫০০গ্রাম , পেঁয়াজ ২কেজি, রসুন ১কেজি, লবণ ১কেজি, পোলাও চাল ২কেজি, নুডুলস ২প্যাকেট, শুকনো ছোলা ২কেজি এবং প্রতিদিনের স্ন্যাকস হিসাবে পাইনাপেল ক্রীম বিস্কুট ২১ প্যাকেট, ড্রাই কেক ২১ প্যাকেট ও এনার্জি বিস্কুট ২১ প্যাকেট করে দেওয়া । এছাড়াও ১২৫ জন কিশোরীকে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উখিয়ায় ক্যাম্প-৪ ইনচার্জ সুরাইয়া আক্তার সুইটি, হিউম্যান কনসার্ন ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধি নাইমুল হাসান মিশু, সুশীলন এর প্রজেক্ট কো অর্ডিনেটর মোঃ আরিফুল ইসলাম, ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর আঁখি পারভিন, রুমা খাতুন, শুশুয়া ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন সভাপতি মোমিনূর রহমান, সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন প্রকল্পের ফোকাল পার্সন মোস্তফা বকলুজ্জামান, মনিটরিং অফিসার কাজী ফয়সাল কবির এবং অ্যাকাউন্টস অফিসার মো: দেলোয়ার হোসেন।
মানিকগঞ্জের শান্ত, স্নিগ্ধ জনপদ সাটুরিয়া, যেখানে ধলেশ্বরী নদীর রূপালী ঢেউ আছড়ে পড়ে তীরের সবুজ প্রান্তরে। এই মনোরম প্রকৃতির বুকেই ঘটে গেছে এক নীরব অর্থনৈতিক বিপ্লব। উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের গোপালপুর নামের একটি বাজার, যা এখন দুগ্ধ অর্থনীতির এক প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় আট থেকে দশ লাখ টাকার তরল সম্পদ দুধ এখানে হাতবদল হয়। আর দুধের ব্যবসা এ অঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষের জীবনযাত্রায় এনেছে পরিবর্তন।
উপজেলার রাজৈর, বরাইদ, ধুনট, কাকরাইদসহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা কৃষিকাজের পাশাপাশি গাভী পালন করেন। প্রতিটি পরিবারে গড়ে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩৫ কেজি দুধ উৎপাদিত হয়। এই দুধই গোপালপুর বাজারে চলে আসে বিক্রির জন্য।
নদীর দুই কুলের প্রায় ১৫টি গ্রামের কৃষক-কৃষাণীর দৈনন্দিন জীবন আবর্তিত হয় দুধকে কেন্দ্র করে। সকাল হলেই কেউ মাথায় দুধের ভারী কলসি, কেউবা হাতে ছোট বালতি নিয়ে গোপালপুর বাজারের দিকে এগিয়ে চলেন। খেয়া নৌকার দোলানিতে নদী পার হয়ে, সবুজ মাঠের বুক চিরে তাদের গন্তব্য একটাই ধলেশ্বরীর পূর্বপাড়ের গোপালপুর বাজার।
এ বাজারে প্রতিদিন বিক্রি হয় ২৫০ থেকে ৩০০ মণ দুধ, যা এই অঞ্চলের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হয়ে ওঠেছে। মাসে এই বাজারে প্রায় আড়াই থেকে তিন কোটি টাকার দুধের বেচাকেনা হয়।
এই দুধের প্রবাহ শুধু স্থানীয় অর্থনীতিকেই সচল রাখছে না, বরং তা ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানী ঢাকা এবং তার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলায়, যেখানে গোপালপুরের খাঁটি দুধ পৌঁছে দিচ্ছে মিষ্টির স্বাদ আর পুষ্টির সম্ভার।
গোপালপুর বাজারের ইতিহাস
গোপালপুর বাজারটি গড়ে ওঠে ১৯৮৫ সালে। আশির দশকের শুরুতে গোপালপুর বাজারের আশে পাশে কোনো বাজার ছিল না। স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করার জন্য উপজেলা সদর অথবা পার্শ্ববর্তী দরগ্রাম বাজারে যেতে হতো। এতে কৃষকদের বিড়ম্বনার শেষ ছিল না। ১৯৮৫ সালে গোপালপুর বাজারে বরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আব্দুল হাই ব্যক্তিগত উদ্যোগে জমি কিনেন। একই বছরের ডিসেম্বর মাসে এখানে তিনি বাজার বসানোর ব্যবস্থা করেন। প্রথমে গ্রামীণ কৃষিপণ্য ও দুধের লেনদেন সীমিত থাকলেও নব্বই দশক থেকে দুধের ব্যবসা বড় পরিসরে শুরু হয়। আশে পাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষকরা দুধ আনতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে এ বাজারে পরিধি বাড়তে শুরু করে। বর্তমানে বাজারটি দেশব্যাপী ‘দুধের বাজার’ নামে পরিচিত।
বরাইদ ইউপি চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আবদুল হাই স্মৃতিচারণ করে বলেন, নিজের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে জমি কিনে তিনি এই বাজার স্থাপন করেছিলেন এবং পরবর্তীতে তা জনগণের কল্যাণে দান করে দেন। আজ গোপাল পুরের দুধের বাজার শুধু মানিকগঞ্জ নয়, সারা দেশে এক বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছে।
গাভী পালন: আয়ের উৎস
সাটুরিয়া উপজেলার রাজৈর, বরাইদ, ধুনট, কাকরাইদ, গালাসহ আশেপাশের গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল। ধান, গম, ভূট্টাসহ বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজির আবাদ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। তবে এই এলাকার মানুষের অন্যতম আয়ের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে গবাদিপশু পালন। প্রায় প্রতিটি পরিবারে ২ থেকে ১০টি গাভী রয়েছে। বর্তমানে দুধ বিক্রি করে এই এলাকার বেশিরভাগ পরিবারের জীবিকা চলে। সকাল ৮টার মধ্যে দেশীয় পদ্ধতিতে দুধ সংগ্রহ করে গোপালপুর বাজারে নিয়ে যান তারা।
গোপালপুর বাজারে একদিন
সম্প্রতি সরেজমিনে গোপালপুর বাজারে সকাল সাড়ে ৭টায় গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষকরা দুধ বিক্রি করার জন্য আসতে শুরু করেছেন। তখনো বাজার ভরে ওঠেনি। ধলেশ্বরী নদীর পশ্চিম পাড়ে আসতে শুরু করেছেন কিষাণ- কিষাণিরা। অপেক্ষা করছেন খেয়া পার হয়ে গোপালপুর বাজারে আসার। খেয়া নৌকায় নদী পারাপার হওয়ার পর নদীর পাড় ঘেঁষা পথে ছুটতে থাকেন তারা। প্রায় ১০-১৫ মিনিট হাঁটার পর গোপালপুর বাজারে পৌছান।
সকাল ৮টার মধ্যে আশেপাশের গ্রামের শত শত কিষাণ-কিষাণির পদচারণায় ভরে ওঠে বাজার। দুধের পাইকারি ব্যবসায়ীরা দুধ পরখ করে দেখেন। দামদর মিলে গেলে দুধ কিনে নিচ্ছেন। কেনার পর দুধ বড় বড় গ্যালনে ভরে পিকআপ ভ্যানে করে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই শেষ হয় এই বাজার। কৃষক দুধ বিক্রি করার পর গরুর জন্য কিনছেন খাবার। লাভের টাকা দিয়ে পরিবারের জন্য মাছ, বিভিন্ন সবজিসহ দৈনন্দিন বাজার।
কথা হয় গোপালপুর বাজারে দুধ বিক্রি করতে আসা বরাইদ গ্রামের কৃষক মো. আক্কাস আলীর সঙ্গে। তিনি জানান, তার চারটি গাভী থেকে প্রতিদিন ২৫ কেজি দুধ পান। প্রতি কেজি দুধ বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৭০ টাকায়।
কাকরাইদ গ্রামের কৃষক মো. সিরাজ মিয়া বলেন, ‘আমার বাড়িতে মোট ৮টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি গাভী ও ২টি ষাঁড় গরু। আমি প্রতিদিন প্রায় ৩৫-৪০ কেজি দুধ পাই। সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার গরুকে খাওয়ানো হয়। তাই দুধের মান ভালো থাকে। আমার মতো অনেকেই রয়েছে দুধ বিক্রি করে সংসার চালায়।’
সমস্যা: একটি সেতুর অভাব
ধলেশ্বরী নদীর দুই পাড়ের স্থানীয়রা নদীতে একটি সেতু নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছেন। সেতু না থাকায় নৌকায় নদী পার হতে হয়, যা সময়সাপেক্ষ ও ঝুঁকিপূর্ণ। আবার উৎপাদিত কৃষি পণ্য নিয়ে আসতে প্রতিনিয়ত বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
বরাইদ গ্রামের কৃষক রাসেল মিয়া বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে একটি ব্রিজের (সেতু) দাবি জানিয়ে আসছি। ব্রিজটি হলে দুধ নিয়ে বাজারে যেতে এত কষ্ট করতে হতো না।’
গোপালপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন বলেন, প্রতিদিন গোপালপুর বাজারে ২৫০ থেকে ৩০০ মণ দুধ বিক্রি হয়, যার বাজারমূল্য আনুমানিক ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার বেশি। পাইকাররা এই দুধ কিনে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করেন। ধলেশ্বরী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করা হলে নদী পাড়ের মানুষের কষ্ট অনেকটাই লাঘব হবে এবং বাজারের কার্যক্রম আরও সহজ হবে।
ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাট এলাকায় তাসরিফ-১ লঞ্চে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ঢাকায় হরিণের মাংস পাচারকালে ৪৫ কেজি মাংসসহ ২ পাচারকারীকে আটক করেছে কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোন।
বুধবার (২৮ মে) মধ্যরাতে ভোলার ইলিশা থেকে ঢাকাগামী যাত্রীবাহি লঞ্চ তাসরিফ-১ থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন-রাফেজ আহমেদ (৪১) ও মাকসুদুর রহমান (৩৫)। তারা দু'জন ভোলার বাসিন্দা।
আজ সকালে কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সাংবাদিকদেরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাত ২টার দিকে ভোলার মনপুরা-হাতিয়া থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী লঞ্চ তাসরিফ-১ এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় লঞ্চটিতে তল্লাশি করে ৪৫ কেজি হরিণের মাংসসহ দুই পাচারকারীকে আটক করা হয়। পরে জব্দকৃত মাংস এবং আটককৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভোলা বন বিভাগের নিকট তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়েছে।