সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
১৩ শ্রাবণ ১৪৩২
সিলেটের জনপ্রিয় তিন পর্যটন স্পট

সুন্দর কিন্তু প্রাণঘাতী

সিলেটের গোয়াইঘাট উপজেলার বিছানাকান্দিতে প্রতিদিনই ভিড় করেন পর্যটকরা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
১৯ জুলাই, ২০২৩ ১৪:৪১
দেবাশীষ দেবু, সিলেট
প্রকাশিত
দেবাশীষ দেবু, সিলেট
প্রকাশিত : ১৯ জুলাই, ২০২৩ ১৩:৪৮

সবুজ পাহাড় থেকে গড়িয়ে আসার নদীর স্বচ্ছ জলে নানা রঙের পাথর। পাশেই বিস্তীর্ণ বালুরাশি। সিলেটের জাফলং, বিছানাকান্দি ও সাদা পাথরে মিলবে এমনই নয়নাভিরাম দৃশ্য। আর তার টানেই এসব স্থানে প্রতিদিনই ভিড় করেন অসংখ্য পর্যটক। তবে স্বচ্ছ আর শীতল জলে সাঁতার কাটতে নামলেই বাধে বিপত্তি। নদীর স্রোতে হারিয়ে যান অনেকে। জনপ্রিয় এই তিনটি পর্যটন স্পটেই প্রাণহানির খবর প্রায় নিয়মিত। এই স্পটগুলোকে তাই অনেকেই বলে থাকেন ‘ভয়ংকর সুন্দর’।

পর্যটকদের অভিযোগ, এসব স্থানে নেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা। পর্যটকদের সচেতন করার তেমন উদ্যোগও নেই। অন্যদিকে স্থানীয় প্রশাসন ও ট্যুরিস্ট পুলিশ বলছে, জনবলের সংকটের কারণে তারা চাইলেও অনেক কিছু করতে পারেন না। তবে ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ থেকে পর্যটকদের বিরত থাকার কথা বললে তারা সেটি কানে তোলেন না বলেও অভিযোগ এসব কর্তৃপক্ষের।

সিলেটের এই তিন পর্যটন স্পটের মধ্যে সর্বশেষ দুর্ঘটনাটি ঘটে গত ৬ জুলাই, জাফলংয়ে। পিয়াইন নদে বাবার সঙ্গে গোসলে নেমে নিখোঁজ হয় ঢাকার রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র মো. আল ওয়াজ আরশ। ৮ জুলাই সকালে পাশের একটি স্থানে ভেসে ওঠে আরশের মরদেহ। এর আগে ১ জুলাই কোম্পানীগঞ্জের সাদা পাথর এলাকায় গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হন আবদুস সালাম (২৩)। তাঁর মরদেহও দুই দিন পরে ভেসে ওঠে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা-পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিলেটের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র জাফলং। মেঘালয় পাঁহাড়ঘেঁষা জাফলংয়ের নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে পাথর ও বালু উত্তোলনের ফলে অনেক স্থান মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। গত দুই দশকে জাফলংয়ে বেড়াতে এসে মারা গেছেন ৫৯ জন পর্যটক।

অন্যদিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তঘেঁষা ধলাই নদের সাদা পাথর পর্যটকদের কাছে পরিচিতিই পেয়েছে পাঁচ-ছয় বছর আগে। এই সময়ের মধ্যেই এখানে প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন পর্যটক। এ ছাড়া গোয়াইনঘাট এলাকার পাথুরে নদীর আরেক পর্যটনকেন্দ্র বিছানাকান্দিতে এই সময়ে মারা গেছেন চারজন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্ষায় নদীর তীব্র স্রোত, চোরাবালি, নৌকাডুবি ও সাঁতার না জানার কারণে পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছেন পর্যটকরা। পর্যটকদের নিরাপত্তায় গাইডলাইন না থাকা এবং তাঁদের সচেতনতায় তেমন উদ্যোগ না থাকাকেও দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির কারণ বলছেন তারা।

সিলেট হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমাত নুরী জুয়েল বলেন, সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। কোনো গাইডলাইনও নেই। পর্যটকরা নিজেদের ইচ্ছামতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ইচ্ছামতো পানিতে দাপাদাপি করছেন। অনেকে না বুঝে সীমানা পেরিয়ে ভারতেও ঢুকে যাচ্ছেন।

নুরী জুয়েল বলেন, জাফলংয়ে পর্যটকদের জন্য সতর্কতামূলক নির্দেশনা দিয়ে দু-একটি সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। তবে এসব নির্দেশনা মানা হচ্ছে কি না, তা দেখভাল করার কেউ নেই। ফলে দুর্ঘটনা এড়ানো যাচ্ছে না।

সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো নিয়ন্ত্রণে একক কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রের উন্নয়নসহ নানা দিক দেখাশোনা করে। তাদের পক্ষে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো পরিচালনা করছে পর্যটন উন্নয়ন কমিটি, যার সভাপতি জেলা প্রশাসক। এ কমিটিতে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারাও রয়েছেন।

উপজেলা প্রশাসন বলছে, তাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে কিছু স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেয়া হয়েছে, লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। তবে এ উদ্যোগ প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের নিরপত্তার দিকটি যে ট্যুরিস্ট পুলিশের দেখভাল করার কথা, জনবলসংকটে ভুগছে তারাও।

গত মঙ্গলবার সাদা পাথরে ঘুরে যাওয়া হবিগঞ্জের বাসিন্দ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা প্রায় তিন ঘণ্টা সেখানে ছিলাম। কিন্তু ট্যুরিস্ট পুলিশের কোনো সদস্যকে দেখিনি। আর পর্যটকরা কোথায় ঘুরবেন, কোথায় সাঁতার কাটা যাবে না- এসব দেখার কেউ নেই।’

পর্যটকদের কোনো গাইডলাইন নেই জানিয়ে কোম্পানীগঞ্জ ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সভাপতি ফখর উদ্দিন বলেন, সাদা পাথরে ট্যুরিস্ট পুলিশের কোনো স্থায়ী ক্যাম্প নেই। এখানে পর্যটকরা যে যার মতো ঘুরে বেড়ান। কেউ বাধা দেন না। পানিতে থাকা পাথর শ্যাওলা জমে পিচ্ছিল হয়ে গেছে। এতে পানিতে নেমে অনেকে পা পিছলে স্রোতের ভেসে যাচ্ছেন।

জানতে চাইলে লোকবলসংকটের কথা বললেন জাফলংয়ের ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ। তিনি বলেন, ‘ছুটির সময়ে এখানে পর্যটকের যে ভিড় হয়, তা ট্যুরিস্ট পুলিশের অল্প লোকবল দিয়ে তা সামলানো কঠিন। তবু আমরা সচেতন করার চেষ্টা করি। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে সাইনবোর্ড টাঙানো আছে। মাইকিংও করা হয়। তবে অনেকে তা শুনতে চান না।’ পর্যটকদের অসচেতনতা ও নির্দেশনা না মানার কারণেই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে বলে মনে করছেন তিনি।

জাফলং ও বিছানাকান্দি পর্যটনকেন্দ্রের অবস্থান গোয়াইনঘাট উপজেলায়। এই দুই স্থানে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিলুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার পর্যটনকেন্দ্রে সতর্কতামূলক বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছিল। তবে বন্যার পানি সেগুলো ভাসিয়ে নিয়ে যায়। আর পর্যটকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু মানুষের মধ্যে এসব নিষেধাজ্ঞা শোনার প্রবণতা কম থাকে। স্রোতের পানিতে না নামার পাশাপাশি পানিতে নামলে লাইফ জ্যাকেট পরার দিকে নজর রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

সাদা পাথরে পর্যটকদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও লুসিকান্ত হাজং বলেন, বর্ষা মৌসুমে হ্যান্ডমাইক নিয়ে দুজন স্বেচ্ছাসেবী সার্বক্ষণিক পর্যটনকেন্দ্রে থাকেন। তাঁরা পর্যটকদের স্রোতের পানিতে না নামার আহ্বান জানান। ঘাটে সাইনবোর্ড দিয়ে পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পানিতে না নামতে নির্দেশনা দেয়া রয়েছে। এরপরও মানুষ এগুলো শুনতে চান না।

এ প্রসঙ্গে জেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান বলেন, ‘আমরা সাধ্যমতো পর্যটকদের নিরাপত্তাসহ সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকি। তবে এ ব্যাপারে সবার আগে পর্যটকদের সচতেন হতে হবে। স্থানীয় মানুষজনকেও পর্যটকদের নিরাপত্তায় আন্তরিক হতে হবে।’

বিষয়:

জুলাইয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার জাতিসংঘের স্মরণানুষ্ঠান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

২০২৪ সালের জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘স্মরণ ও সংলাপ’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করতে যাচ্ছে জাতিসংঘের মানবাধিকার মিশন।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠেয় এ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস।

সোমবার (২৮ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এ আয়োজনে অংশ নেবেন দেশের জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, তরুণ প্রতিনিধি ও আন্তর্জাতিক অংশীদাররা।

প্রধান উপদেষ্টার অনুরোধে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ঘটনাবলি নিয়ে একটি স্বাধীন তথ্য-উদ্ধার মিশন পরিচালনা করে।

২০২৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে ঘটনাগুলোর বিস্তৃত অনুসন্ধান তুলে ধরা হয় এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়।


‘জুলাইয়ের আত্মত্যাগ আমাদের মুক্তির প্রেরণা’ প্রতিপাদ্যে রাজশাহীতে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আমিনুল ইসলাম বনি, রাজশাহী প্রতিনিধি

রাজশাহী হাজী মুহাম্মদ মহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে জুলাইয়ের ‘আত্মত্যাগ আমাদের মুক্তির প্রেরণা’ এই প্রতিপাদ্যে- জুলাই শহিদ দিবস, গণঅভ্যুত্থানদিবস ও জুলাই পুনর্জাগরণ উপলক্ষ্যে দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিঅনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাজশাহী সির্ভিল সার্জন কার্যালয় আয়োজিত এ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. হাবিবুর রহমান।
কর্মসূচি উদ্বোধনকালে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আত্মদানকারী শহিদ ও আহতদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, সবাইকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করতে হবে। এই চেতনার মাধ্যমে দুর্নীতিমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন জাতি গঠনে আমাদের সকলের প্রত্যয় থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, রক্তদান কর্মসূচি ও রক্তগ্রুপিং সেবায় আজকে যেসব রোগীরা আসবে তাদের আমরা সীমিত আকারে স্বাস্থ্যসেবা দিব। তবে আমাদের প্রধান উদ্দেশ্যে হচ্ছে ব্লাড গ্রুপিং। ভবিষ্যতের যেকোনো প্রয়োজনে যেন আমরা রক্ত সংগ্রহ করতে পারি। অতীতে আমরা বলতাম পরিবারের মধ্যে হতে রক্ত দিলে ভালো, এখন আমরা বলি পরিবার ছাড়া অন্য কেউ রক্ত দিলে সেটাই বেশি নিরাপদ। এই জন্য প্রয়োজন ডেটা, সেই ডেটা তৈরি করতেই আমরা কাজ করছি।
রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. এস আই এম রাজিউল করিম এর সভাপতিত্বে মেডিকেল ক্যাম্পে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোসা. মাহবুবা খাতুন, মেডিকেল অফিসার বায়োজীদ-উল ইসলাম ও ডা. আব্দুর রাকিবসহ জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। এসময় সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মেডিকেল টিম, বিভিন্ন স্তরের জনগণ ও গণমাধ্যমকর্মীবৃন্দউপস্থিত ছিলেন।
পরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘জুলাইয়েরআত্মত্যাগ আমাদের মুক্তির প্রেরণা’ প্রতিপাদ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় বক্তাগণবলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানেরবিরূপ পরিস্থিতিতে চিকিৎসক সমাজসাহসী পদক্ষেপ নিয়েছিল। শহিদ আবু সাঈদের মেডিকেল রির্পোটটির অনেক বাধা-বিপত্তি ছিল। তারপরও আমাদের মেডিকেল সমাজ সঠিক রিপোর্ট দিতে সক্ষম হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের হেলথ কার্ড করে দেয়া হয়েছে। এই কার্ডের মাধ্যমে দেশের সকল সরকারি স্বাস্থ্যসেবাদান প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাঁরা খুব সহজে ও আন্তরিকতার সাথে স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
আলোচনা সভার শুরুতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ওপরে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শণ করা হয়।


ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা আইন শৃঙ্খলা উন্নতির লক্ষে মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
 কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিমাসের ন্যায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির লক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা উপজেলা সম্মেলন কক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিসেস মাহমুদা জাহানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন থানা তদন্ত অফিসার ট্রমার্স বড়ুয়া,সাংবাদিকদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য দিক নির্দেশনা মূলক বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি সৈয়দ আহম্মেদ লাভলু, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইসমাইল নয়ন,সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইদ্রিস মিয়া,দুলালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রিপন, ছাত্রপ্রতিনিধি মোঃমাসুদ আলম,মোঃ ইথার,জামাতের আমীর মোঃ রেজাউল করিম, এছাড়া বিজিবির প্রতিনিধি,উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা,উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রমূখ।সভাপতির বক্তব্য বলেন ময়লা অপসারণের কমিটি গঠন করা হয়েছে, জায়গা নির্ধারনের কাজ চলমান, সিএনজি ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে অভিযান অব্যাহত আছে, লাইসেন্স বিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে এবং ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।


জোয়ারের চাপে রাস্তা ভেঙে গেছে, জনদুর্ভোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঢালচর ইউনিয়নের ৪ কিলোমিটার রাস্তা জোয়ারের পানির চাপে ভেঙে গেছে। ওই রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। গতকাল ‎রোববার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত শুক্রবার সকালে‎ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বেশকিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে তীব্র জোয়ারের স্রোতে উপজেলার ঢালচর ইউনিয়নের একমাত্র ইটের রাস্তাটি ভেঙে যায়। ফলে এক প্রান্তের মঙ্গে অন্য প্রান্তের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। স্কুলগামী শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ, রোগী ও জরুরি সেবার ওপর প্রভাব পড়েছে। এর আগে গত ২৯ মে নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের স্রোতে ঢালচর ইউনিয়নের মাঝের চর খাল এলাকার কাঠের ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে চর তারুয়া সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত রাস্তার প্রায় ২ কিলোমিটার ভেঙে গেছে।
‎উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের দিকে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ কিলোমিটার দৈঘ্যের একটি ইটের রাস্তা (এইচবিবি করন) করা হয়।
‎ঢালচরের স্থানীয় বাসিন্দা ইউসুফ হোসেন বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে ঢালচর নদীভাঙন চলছেই, কাউকে উদ্যোগ নিতে দেখছি না। এছাড়া জোয়ার ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অবকাঠামোগত সমস্যা বেড়েই চলেছে এই চরে। কয়েকবারের জোয়ারের চাপে আমাদের ঢালচরের একমাত্র ইটের রাস্তাটির ভেঙে গেছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভাঙন স্থানটিতে খালে পরিণত হবে।’ ঢালচর ইউনিয়নের আরেক বাসিন্দা জোবায়ের হোসেন বলেন, ‘২০১৩ সালে নির্মাণ করা ঢালচরের এই ইটের রাস্তাটি। বেড়িবাঁধ না থাকায় বারবার জলোচ্ছ্বাসের কারণে রাস্তাটি ভেঙে যায়। কোনো সরকারের আমলে এই চরে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। চরে প্রয়োজন একটি আশ্রয়কেন্দ্র, একটি কিল্লা, একটি হাসপাতাল। কিছুই নেই, মানুষের দুর্ভোগেরও শেষ নেই। বিশেষ করে এই চরের চারপাশে বেড়িবাঁধ করে দিলে মানুষের আর দুর্ভোগ পোহাতে হতো না। রাস্তাটি আর ভাঙত না।’ চরফ্যাশন উপজেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জি.এম. ওয়ালিউল ইসলাম বলেন, ‘বেড়িবাঁধ না থাকায় নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানির স্রোতে ঢালচরের একমাত্র ইটের রাস্তাটির অনেকস্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা রাস্তাটি মেরামত করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পেলে খুব দ্রুত রাস্তাটি মেরামত করা হবে।’ চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাশনা শারমিন মিথি বলেন, ‘জোয়ারের স্রোতে ঢালচরের মাঝের চর কাঠের সেতুর দুপাশের মাঠি সরে যায় এবং চরবাসীর চলাচলের একমাত্র ইটের রাস্তাটি ভেঙে গেছে। রাস্তাটি মেরামত করার জন্য দুই প্রকল্পের কাছে আবেদন জানিয়েছি। আশা করি শিগগিরই রাস্তাটি মেরামত করা হবে।’


ভোলায় নামতে শুরু করেছে জোয়ারের পানি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভোলা প্রতিনিধি 

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ভোলায় অতি জোয়ারে প্লাবিত হওয়া নিম্নাঞ্চলের জোয়ারের পানি নেমে যেতে শুরু করায় স্বস্তি ফিরেছে পানিবন্ধী মানুষদের মাঝে। তবে থেমে থেমে চলছে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত।

রবিবার থেকে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় মাছের পুকুর-ঘের তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

পানিবন্ধী স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানাগেছে ২৫ ও ২৬ জুলাই দুইদিনের জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক হলেও ভাটা শুরু হওয়ার পরপরই পানি নেমে যেতে শুরু করেছে।

ভোলায় সবচেয়ে বেশি পানিবন্ধী ছিল মনপুরার উপজেলার কলাতলি চরসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম।এছাড়া চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর, কুকরি মুকরি, চরপাতিলা, ভোলা সদরের রাজাপুর, নাছিরমাঝি, মাঝেরচর, দৌলতখানের মদনপুর, ভবানীপুর। বোরহানউদ্দিনের হাসাননগর, আলিমুদ্দিন বাংলাবাজার, তজুমদ্দিন ও লালমোহনের অন্তত অর্ধশতাধিক গ্রাম। এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছিল বেড়িবাঁধের বাইরে ও চরাঞ্চলে বসবাসকারী বাসিন্দারা

ভোলা সদরের ধনিয়া নাছিরমাঝি গ্রামের মো.সোহাগ, বোরহানউদ্দিনের হান্নান সর্দার ও মনপুরার কলাতলি চরের বাসিন্দা মো.হোসাইন জানান,শুক্রবার দুপুরের তুলনায় শনিবার দুপুরের জোয়ারের পানির পরিমাণ কম হয়েছে। গত দুইদিন পথঘাট ও বাড়ির আশপাশ সব তলিয়ে ছিল। গতকাল থেকে জোয়ার স্বাভাবিক থাকায় পানি নেমে যেতে শুরু করেছে।

এ বিষয়ে ভোলা আবহাওয়া অফিসের প্রথম শ্রেণির পর্যবেক্ষক মো.মনিরুজ্জামান দৈনিক বাংলাকে জানান, হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত চলছে। এ অবস্থা আগামী ৩০ তারিখ পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। নদীতে ১নম্বর সতর্কতা সংকেত রয়েছে।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন,অতিজোয়ারের পানিতে মৎস্য খাতের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিরুপণ করা সম্ভব হয়নি,কাজ চলছে।


ফটিকছড়িতে এলাকাবাসীর টাকায় সড়ক নির্মাণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মুহাম্মদ দৌলত,  ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম)

ফটিকছড়িতে সড়ক নির্মাণে এগিয়ে এসেছে এলাকার সাধারণ মানুষ। নিজেদের টাকায় আধা কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ করে নজির স্থাপন করলো উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের ভাঙ্গাদিঘীর পাড়স্থ ছিলা গাজী বাড়ির বাসিন্দারা।

"নিজেদের টাকায় নিজেদের সড়ক" - এ স্লোগান সামনে রেখে স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রবাসী থেকে সংগৃহীত প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এ সড়কটি নির্মাণ করে তারা।

এদিকে, সরকারী বরাদ্দের দিকে না থাকিয়ে সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করায় এলাকার সর্বস্থরের মানুষের কাছে প্রশংসিত হচ্ছেন উদ্যোগতারা।
২৮ জুলাই (সোমবার) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মূল সড়কের উপর বালি ফেলে অন্তত দুই ফুট উঁচু করা হয়েছে। রাস্তা থেকে বালিগুলো যাতে সরে না যায় সে জন্য সড়কের দুই পাশে দেয়া হচ্ছে গার্ডওয়াল। এছাড়া, সড়কের ব্রীক সলিন কাজে নিয়োজিত রয়েছে একদল শ্রমিক। তারা নিপুন হাতে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

এ সময় উদ্যোগতাদের কেউ কেউ কাজ দেখাশুনায় ব্যস্ত থাকলেও কেউবা শ্রমিকদের কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছেন। আবার অনেককে মনের আনন্দে কাজে শামিল হয়েছেন।

এ বিষয়ে সড়ক সংস্কার কাজের অন্যতম উদ্যোগতা মফিজুল আলম বলেন সড়কটি অ়ভ্যন্তরীন হলেও নিজেদের যোগাযোগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে শত শত মানুষ ও যানবাহন যাতায়ত করে থাকে। বিশেষ করে কৃষি নির্ভর এলাকা হওয়ায় এর গুরুত্ব অপরীসিম। অথচ যুগ যুগ ধরে সড়কটি অবহেলায় পড়ে ছিল। শেষ পর্যন্ত সরকারের দিকে না থাকিয়ে নিজেরা টাকা সংগ্রহ করে উন্নয়ন কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।

জানতে চাইলে ব্যক্তি উদ্যোগে সড়ক নির্মাণকে মহৎ কাজ উল্লেখ করে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নাজিরহাট পৌরসভার প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, যে কাজটি আমাদের পৌরসভার করার কথা সে কাজটি স্থানীয়দের অর্থায়নে হচ্ছে। এটি আমাদের জন্য এক রকম ব্যর্থতা। ভবিষ্যতে সড়কটি কার্পেটিংয়ের আওতায় আনা হবে বলে জানান প্রশাসনের এ কর্মকর্তা।


গাইবান্ধায় বিদ্যুৎচালিত কাঠের ঢেঁকিতে খুঁজছে নতুন সম্ভাবনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাসুম বিল্লাহ, গাইবান্ধা

একসময় গ্রামবাংলার উঠোনজুড়ে ধান ভানার ঢেঁকির কটকটে শব্দ ছিল অতি পরিচিত দৃশ্য। যুগের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে সেই সনাতন পদ্ধতি। তবে সেই পুরনো ঐতিহ্যকে নতুনভাবে ফিরিয়ে এনেছেন গাইবান্ধার উদ্যমী যুবক শফিকুল ইসলাম। আধুনিক প্রযুক্তির সংমিশ্রণে তৈরি করেছেন বিদ্যুৎচালিত কাঠের ঢেঁকি, যা দিয়ে ভেজালমুক্ত ও পুষ্টিসমৃদ্ধ লাল চাল উৎপাদন করে ছড়িয়ে দিচ্ছেন দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে। স্বপ্ন দেখছেন বিশ্ববাজারে এই চাল রপ্তানির।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের খামার বোয়ালী গ্রামের ছেলে শফিকুল ইসলাম শফিক পলিটেকনিক থেকে ডিপ্লোমা এবং অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি সম্পন্ন করেন। পরে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে এমএসসি ডিগ্রি নিয়ে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চার বছর চাকরি করেন। কিন্তু উদ্যোক্তা হওয়ার তাগিদে ২০২০ সালে চাকরি ছেড়ে আবিষ্কার করেন বৈদ্যুতিক কাঠের ঢেঁকি।

সরেজমিনে দেখা যায়, নিজ বাড়ির উঠানে রেল আকারের একটি ঘরে দুটি ইলেকট্রিক ঢেঁকি। ঢেঁকির শব্দে চলছে ধান ভানা, উৎপাদন হচ্ছে আঁশযুক্ত লাল চাল। স্থানীয় চারজন নারী শ্রমিক কাজ করছেন ধান দেওয়া, চাল ঝাড়াই-বাছাইসহ নানা পর্যায়ে। পাশে অফিসঘরে এক ম্যানেজার নিচ্ছেন অনলাইনের অর্ডার।

শফিকুল জানান, প্রতি জোড়া ঢেঁকি থেকে প্রতিদিন ১৫০ কেজি চাল উৎপাদন সম্ভব, যা মাসে ১০০ মণ চাহিদা পূরণে সক্ষম। বর্তমানে পাঁচজন স্থায়ী এবং সাতজন মৌসুমি শ্রমিক কাজ করছেন। পরিকল্পনা রয়েছে আরও পাঁচটি ঢেঁকি চালু করার, যার মাধ্যমে দৈনিক উৎপাদন ৫০০ কেজিতে উন্নীত হবে এবং কর্মসংস্থান হবে ১৫-২০ জনের।

তিনি বলেন, ‘আমার উৎপাদিত ঢেঁকি ছাঁটা লাল চালে কোনো কেমিক্যাল নেই। রাইস মিলের চেয়ে ঢেঁকির চাল বেশি স্বাস্থ্যকর। ফাইবার থাকে অক্ষুণ্ণ, তাই এটি বেশি পুষ্টিকর। বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন অসুখে ভুগছেন বা স্বাস্থ্য সচেতন, তাদের কাছে এই চালের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে।’

দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিনিয়ত আসছে অর্ডার। এমনকি ভারত, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকেও পেয়েছেন রপ্তানির আগ্রহ। তবে ট্রেড লাইসেন্স ও এক্সপোর্ট পারমিশনের অভাবে এখনো বিদেশে চাল পাঠাতে পারছেন না।

শফিকুল জানান, তার ব্যবহৃত প্রধান ধান প্রজাতি হচ্ছে ‘গানজিয়া’। এই ধান থেকে উৎপন্ন লাল চাল প্রতি মণ বিক্রি করছেন ৪০০০ থেকে ৪৮০০ টাকায়। গানজিয়া ধানের এই লাল চালের যে চাহিদা তৈরি হয়েছে তা পরিকল্পিত অনলাইন মার্কেটিংয়ের বদলে। ব্যাপক সম্ভবনা রয়েছে এই সংক্রিয় ঢেঁকি ও লাল চালে। বর্তমানে এই লাল চাল খুব বেশি ক্রয় করছেন দুই শ্রেণির মানুষ-এক যারা বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত, দুই যারা স্বাস্থ্য সচেতন।

এ সময় অপর এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল জানান, সহজলভ্যে দেশের প্রত্যেক মানুষের দোড়গোড়ায় এই চাল সরবরাহ করতে প্রয়োজন জেলায় জেলায় আউটলেট (বিপণন কেন্দ্র)।

এসময় তিনি প্রতিটি জেলায় বিপণন কেন্দ্র স্থাপনে সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমার যথেষ্ট প্রস্তুতি এবং পলিসি রয়েছে। বৃহৎ সাপোর্ট পেলে এখনই ২৫ জোড়া অর্থাৎ ৫০ টি ঢেঁকি বসিয়ে চাল উৎপাদন করলেও তা সরবরাহ করতে কোনো সমেস্যাই হবেনা, দেশে-বিদেশে এই চালের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। ২৫ জোড়া ঢেঁকিতে অন্তত ২০০ জনের কর্মসংস্থানও হবে। যাদের ঘুচবে দারিদ্রতা, বাড়বে জাতীয় আয়।

তিনি আরও দাবি করেন, ‘দেশে তিনিই প্রথম ইলেকট্রিক কাঠের ঢেঁকি আবিষ্কার করেছেন। এটি আমার নিজস্ব প্রযুক্তি ও প্যাটার্ন। সরকারি স্বীকৃতি ও পেটেন্ট না পেলে অন্য কোনো দেশ হয়তো এটি নিজেদের নামে নিবন্ধন করে নেবে। তাই দ্রুত প্যাটার্ন ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরের মাধ্যমে স্বীকৃতি দেওয়া জরুরি।’

ম্যানেজার আখতার হোসেন বলেন, ‘অনলাইনে প্রচুর অর্ডার আসছে। চালের দাম কিছুটা বেশি হলেও খরচ বিবেচনায় তা ন্যায্য। প্রতিটি জেলায় আউটলেট থাকলে দাম অনেকটাই কমানো সম্ভব।’

গাইবান্ধা বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ আল ফেরদৌস বলেন, ‘শুরুর দিকেই শফিকুলকে ঋণসহ সবধরনের সহায়তা দিয়েছি। তার এই শিল্প এখন অনেক দূর এগিয়েছে। এটিকে পূর্ণতা দিলে হাজারো বেকারের কর্মসংস্থান সম্ভব।’

গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন আখতার দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘উদ্যোক্তা সৃষ্টি মানেই কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শফিকুলের এই শিল্পের সম্প্রসারণে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।’


পাহাড়ে অর্থনৈতিক মুক্তির পথ দেখাচ্ছে কপি ও কাজুবাদাম

পরিবেশ বিধ্বংসী সেগুন ছেড়ে বিকল্পে ঝুঁকছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের চাষিরা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামালুদ্দিন হাওলাদার, চট্টগ্রাম

কপি ও কাজুবাদাম চাষে অর্থকষ্ট থেকে মুক্তির আশা দেখছে পার্বত্য চট্টগ্রামের চাষিরা। ইতোমধ্যে এই বিষয়ে বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির পাহাড়ি-বাঙালি চাষিদের জাগিয়ে তুলেছে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে এই বিষয়ে কাজ করছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডসহ পার্বত্য তিন জেলা পরিষদ ও স্থানীয় কৃষি বিভাগ। সংশ্লিষ্টরা জানান, পাহাড়ের কৃষকদের কপি ও কাজুবাদাম চাষের আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি প্রতিবেদকের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমা জানিয়েছেন, অনগ্রসর পাহাড়বাসীদের ভূপ্রকৃতি রক্ষাসহ তাদের আর্তসামাজিক উন্নয়নে পার্বত্যাঞ্চলে তিনি জানান, সম্প্রতি পাহাড়ে কপি ও কাজুবাদাম গাছ লাগানোর ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এই লক্ষ্যে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের অধীন উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা পরিষদগুলোসহ স্থানীয় কৃষি অফিসগুলোর মাধ্যমে পাহাড়ের কৃষকদের কপি ও কাজুবাদামের চারা বিতরণসহ এই কপি ও কাজুবাদাম বিষয়ে স্থানীয় কৃষক-কৃষাণিদের ব্যাপক ভিত্তিতে প্রশিক্ষণ ও মতবিনিময় করার নির্দেশনা দিয়েছি।

পার্বত্য উপদেষ্টা বলেন, কপি-কাজুবাদাম শুধু ১ বছরের জন্য নয়; এটি একবার শুরু করলে আগামী অন্তত ৪০-৫০ বছর লাগাতার অর্থনৈতিক সাপোর্ট দেবে। এতে করে আমাদের প্রার্ন্তিক জনগোষ্ঠী খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যেই তাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশীলতায় পৌঁছাবে।

জানা গেছে, দেশের ১ হাজর ৮০০ হেক্টর জমিতে-২০২১ জুন মাসে কপি-কাজুবাদাম চাষ প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রকল্পের শুরুতে কাজুবাদাম চাষ হতো। প্রকল্প কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে বর্তমানে প্রায় ৪ হাজর ২০০ হেক্টর জমিতে কাজুবাদাম চাষ হচ্ছে। সেই সঙ্গে কফি চাষ ৬৫ হেক্টর থেকে বেড়ে ১ হাজর ৮০০ হেক্টরে উন্নীত হয়েছে। পাহাড়ে বর্তমানে উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে তিন পার্বত্য জেলার ১২ উপজেলায় প্রায় ২ হাজার কপি ও কাজুবাদামের বাগান সৃজন করা হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের কপি ও কাজু বাদাম চাষের মাধ্যমে দারিদ্র হ্রাসকরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করা কৃষিবিদ মো. জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পার্বত্য চট্টগ্রামের অনাবাদি জমিতে কাজুবাদাম ও কফি চাষ সম্প্রসারিত প্রকল্প কার্যক্রম পরিচালনা করছে উন্নয়ন বোর্ড।

বাংলাদেশের তিন পার্বত্য জেলায় প্রায় ৫ লাখ হেক্টর অব্যবহৃত জমি রয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ হেক্টরে কফি চাষ করলে ২ লাখ টন কফি উৎপাদন সম্ভব।’ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৯২ শতাংশ উঁচু ভূমি, তাই এখানে পানি জমে না যা কফি চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এ কফি গাছ চাষ করতে বাড়তি জমিরও প্রয়োজন হয় না। পাহাড়ি অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া কফি চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড পাহাড়ে বর্তমানে প্রায় ২ হাজার কপি-কাজুবাদামের বাগান সৃজিত করেছে স্থানীয়দের মাধ্যমে।

এ প্রকল্পে দেশে উৎপাদিত কাজুবাদাম ও কফির মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন। পাহাড়ে এই প্রকল্পের শুরু থেকেই এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য কাজ চলমান রয়েছে। তিনি জানান, দেশের পার্বত্য অঞ্চলের ২ লাখ হেক্টর অনাবাদি জমিকে কাজুবাদাম ও কফি চাষের আওতায় আনার কাজ চলমান রয়েছে। এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে উৎপাদিত কাজুবাদাম ও কফির মাধ্যমে দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ১ বিলিয়ন ডলার এর রপ্তানি করা সম্ভব।

ইতোমধ্যে কাজুবাদামের ২২টি প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা গড়ে উঠেছে। দেশে বর্তমানে কাজুবাদামের বাজার প্রায় ৭০০ কোটি টাকার। প্রতি বছর গড়ে ২ হাজর ৫০০ থেকে ৩ হাজার টন প্রক্রিয়াজাতকৃত কাজুবাদাম আমদানি হয়। দেশে কফির চাহিদা প্রায় ২ হাজার টন। গত এক দশকে গড়ে কফির চাহিদার প্রবৃদ্ধি প্রায় ৫৬ শতাংশ। বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার কফি দেশের অভ্যন্তরে বিক্রি হয়। ভোক্তা পর্যায়ে গত ৫ বছরে এ দুটি পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

এদিকে বিএসআরএম ও কাজী গ্রুপের মতো প্রতিষ্ঠান রপ্তানির উদ্দেশ্যে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা স্থাপন করছে। এসব কারখানায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জনের মতো লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া বিদ্যমান প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাগুলোতে প্রায় ২ হাজার জন শ্রমিক কাজ করছে। এসব শ্রমিকের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হলো- নারী শ্রমিক।

এদিকে রাঙামাটির কৃষি বিভাগ বলছে ‘সঠিক পরিকল্পনায় পাহাড়ি এলাকায় কপি ও কাজুবাদাম চাষ শুরু করা গেলে তা একদিকে অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দেবে, অন্যদিকে পাহাড় রক্ষা পাবে।’


ভোলায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ আট ডাকাত গ্রেপ্তার  

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভোলা প্রতিনিধি

ভোলায় অভিযান চালিয়ে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল পরিমানে দেশীয় অস্ত্রসহ ৮ জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে কোস্টগার্ড দক্ষিন জোনের ভোলা বেইস।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন,মো.সুজন (৩৫),মো.জাকির (৪৮),মোঃ সোহাগ (২৪),মোঃ আল আমিন (৪০),মো.শাহ আলী (৬০),মো.হানিফ ফরাজী (৬১), মো,শামসুদ্দিন (৪৮) ও আব্দুল হক (৫৬)। তারা সকলে ভোলা সদর ও চরফ্যাশন উপজেলার বাসিন্দা।

রোববার (২৭ জুলাই) সকালে কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর রশিদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, বেশ কিছুদিন যাবত ভোলার দৌলতখান উপজেলার চরবৈরাগী এবং তৎসংলগ্ন চর এলাকায় একটি ডাকাত দল স্থানীয় জনসাধারণ এবং জেলেদের জিম্মি করে চাঁদাবাজি, জমি দখল ও বিভিন্ন অপকর্ম পরিচালনা করে আসছিলো বলে জানা যায়।

প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ধনিয়া তুলাতুলি ঘাট এলাকায় স্থানীয় জনসাধারণের সহযোগিতায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন ওই এলাকা থেকে ১টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র (পিস্তল) সহ ৩ জন ডাকাতকে আটক করা হয়।

পরবর্তীতে আটককৃত ডাকাত সদস্যদের দেওয়া তথ্যানুসারে শনিবার (২৬ জুলাই) ভোর থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত দৌলতখানের চরবৈরাগী এলাকায় স্থানীয় জনসাধারণের সহযোগিতায় আরও একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকা হতে ৭টি দেশীয় অস্ত্র ২ টি মেটাল স্টিকসহ আরও ৫ জন ডাকাতকে আটক করা হয়।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর রশিদ আরও বলেন,পরবর্তীতে জব্দকৃত অস্ত্র ও আটককৃতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভোলা সদর ও দৌলতখান থানায় হস্তান্তর করা হয়। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।


৩ দিন বন্ধ থাকার পর, ভোলার নৌপথে লঞ্চ চলাচল শুরু  

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মো: ইউসুফ হোসেন অনিক,ভোলা

বৈরী আবহাওয়ায় নদী উত্তাল থাকায় টানা ৩দিন বন্ধ থাকার পর ভোলার ১০টি অভ্যন্তরীণ নৌপথে যাত্রীবাহি লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে।

লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকা ১০টি রুটের মধ্যে ছিল,ইলিশা-মজুচৌধুরী ঘাট,হাতিয়া-ঢাকা,হাতিয়া-মনপুরা,চরফ্যাশন-ঢাকা,তজুমদ্দিন-মনপুরা,দৌলতখান- আলেকজান্ডার, তজুমদ্দিন-ঢাকাসহ অন্যান্য রুট। তবে স্বাভাবিক ছিল ইলিশা-ঢাকা রুটে লঞ্চ চলাচল।

রোববার (২৭ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ভোলা নদী বন্দরের ট্রাফিক কর্মকর্তা মো.জসিম উদ্দিন।

তিনি বলেন,বৈরী আবহাওয়ার কারণে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে নদী উত্তাল থাকায় ভোলার ১০টি রুটে যাত্রীবাহি নৌযান চলাচল বন্ধ ছিল। আবহাওয়া পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় রোববার (২৭ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে ভোলার এসব রুটে যাত্রীবাহি লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক ঘোষণা করা হয়েছে। তবে সাবধানে চলাফেরা করতে হবে।


মেহেন্দিগঞ্জে মেঘনার উজানে ধসে পড়লো কোটি টাকার সড়ক, ভরসা এখন বাঁশের সাঁকো

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তারিকুল ইসলাম তুহিন,বরিশাল ব্যুরো

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে মেঘনা নদীর পানি হু হু করে বেড়ে প্লাবিত করেছে বিস্তীর্ণ জনপথ। তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, পুকুর-ঘের ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙিনা।

এরই মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন আলিগঞ্জ-উলানিয়া চার লেনের গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি। ধসে পড়া সড়কের উপরই স্থানীয়ভাবে তৈরি করা হয়েছে বাঁশের সাঁকো যা এখন হাজারো মানুষের একমাত্র ভরসা।

রবিবার (২৭ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, জোয়ারের পানিতে রাস্তাটির অন্তত ১০টি স্থানে ভয়াবহ গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পুরো সড়ক এখন চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকার অন্তত ৫/৬টি গ্রামের ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ, যারা প্রতিদিন এই সড়ক ব্যবহার করে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও হাটবাজারে যাতায়াত করতেন। উত্তর উলানিয়া ইউনিয়নের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিএনপির সহযোগিতায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তায় আপদকালীন চলাচলের জন্য তৈরি করা হয়েছে কয়েকটি বাঁশের সাঁকো। ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আসাদুল হক মিল্টন চৌধুরী বলেন,এভাবে গাইডওয়াল ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় রাস্তা নির্মাণের কারণে কোটি টাকার সরকারি প্রকল্প এখন ধ্বংসের মুখে। আগে গাইডওয়াল নির্মাণ, তারপর রাস্তা এই নীতিতে কাজ করতে হবে। স্থানীয়রা জানান, অপরিকল্পিতভাবে রাস্তা নির্মাণ হওয়ায় জোয়ারের পানিতে সড়ক ভেঙে পড়েছে। বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য আকবর চৌধুরী বলেন, এভাবে কোটি টাকার প্রকল্প ধসে যাওয়া গভীর উদ্বেগজনক। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা দায় এড়াতে পারে না। বরিশাল মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রিয়াজুর রহমান জানান,উপজেলা প্রকৌশলীকে ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে পুনঃনির্মাণে কাজ করবে বলে আশা করছি।


কেরানীগঞ্জে বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠানে পুরাতন-নবাগত কর্মকর্তাদের মিলনমেলা

আপডেটেড ২৭ জুলাই, ২০২৫ ১১:৪৪
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি

ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের বদলি, পদোন্নতি ও অবসরজনিত বিদায় এবং নবাগতদের বরণ উপলক্ষ্যে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা অফিসার্স ক্লাব

শনিবার (২৬ জুলাই) কেরানীগঞ্জ উপজেলা অডিটোরিয়ামে এই 'শুভাশিস অহর্নিশ' নামক অনুষ্ঠানে মিলিত হন পুরাতন ও নতুন কর্মকর্তারা।

জুলাই মাসের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রেক্ষাপটে সময়মতো বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করতে না পারায় কিছুটা দেরিতে হলেও এই আয়োজনকে ঘিরে ছিল উচ্ছ্বাস ও হৃদয় ছোঁয়া অনুভূতি। অনুষ্ঠানে বিদায়ী কর্মকর্তারা যেমন নিজেদের কর্মজীবনের স্মৃতি তুলে ধরেন, তেমনি নবাগতরা কেরানীগঞ্জ উপজেলায় দায়িত্ব পালনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে সাবেক কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সহকারী কমিশনার রইস আল রেদোয়ান, মনিষা রানী কর্মকার, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সেলিম রেজা, উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল্লাহ, সহকারী প্রকৌশলী আসিফ উল্লাহ, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজুল হক, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: তানভীর হোসেন, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মনসুর আহমেদসহ আরও অনেকে।

তাছাড়া নতুন যোগদান করা কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল মাওয়া, , উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুর রহমান, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার বেগ, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মোক্তাদ্দেস হোসেন, মৎস্য কর্মকর্তা কারিশা আহমেদসহ অনেকে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কর্মকর্তারা বলেন, কর্মস্থল বদল হলেও হৃদয়ের বন্ধন ছিন্ন হয় না। আবার নতুন জায়গায় নতুনভাবে কাজ শুরু করার সুযোগও সৃষ্টি হয়। কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের এমন হৃদয়বান আয়োজন প্রত্যেক কর্মকর্তার জন্যই এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।

অনুষ্ঠানের শেষ অংশে বিদায়ী ও নবাগতদের হাতে সম্মাননা স্মারক ও ফুলের তোড়া তুলে দেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তার রিনাত ফৌজিয়া।

দীর্ঘদিন পর পুরোনো সহকর্মীদের দেখা পাওয়া এবং নবাগতদের আন্তরিক বরণে এক উষ্ণ ও হৃদয়স্পর্শী পরিবেশের সৃষ্টি হয় পুরো অডিটোরিয়াম জুড়ে। কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের এমন আয়োজনকে সংশ্লিষ্টরা প্রশংসনীয় উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন।


মাগুরায় ব্যবসায়ীকে গলা কেটে হত্যা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
 মাগুরা প্রতিনিধি

শনিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে মাগুরা শহরের ছায়াবীথি সড়কে গলা কেটে ভজন গুহ (৫৫) নামে এক কলা ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আবির হাসান নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ ,তার বাড়ি থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।

মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: মিরাজুল ইসলাম জানান, রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে শহরের ছায়াবিথী সড়কের ভাড়াটিয়া কলা বিক্রেতা ভজন গুহ কে তার বাসার সামনের রাস্তার উপর গলা কেটে হত্যা করে কে বা কারা ফেলে রেখেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ঐ এলাকার হান্নান বিশ্বাস এর পুত্র নেশাগ্রস্থ আবির হাসান কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তার বাড়ি থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যার কারণ সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করা হবে।


banner close