কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সম্পত্তির ভাগ নিয়ে বাকবিতণ্ডায় আপন ভাইয়ের হাতে বোন সোমা বেগম (২২) নামে এক তরুণী খুন হয়েছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম বাবুল মিয়া (৪৪)।
শনিবার উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ রোববার সকালে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। পাশাপাশি মধ্যরাতেই অভিযুক্ত বাবুল মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে।
সোমা বেগম ও অভিযুক্ত বাবুল মিয়া ওই এলাকার মোতালিব মিয়া ও আয়েশা বেগমের সন্তান। সোমা বিবাহিত এবং দুই শিশু সন্তানের মা ছিলেন। তার স্বামীর বাড়ি কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর এলাকায়।
পুলিশ, নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানায়, অভিযুক্ত বাবুল মাদকাসক্ত। তিনি প্রায়ই নেশার টাকা এবং নিজের সম্পত্তির ভাগ চেয়ে মা-বাবার সঙ্গে ঝগড়া করতেন। শনিবার বিকেল ৪টার দিকে মা আয়েশা বেগমের সঙ্গে সম্পত্তির ভাগ ও নেশার টাকা নিয়ে ফের বাকবিতণ্ডা হয় বাবুল মিয়ার। এক ফাঁকে মা আয়েশা বেগমকে আঘাতও করেন বাবুল।
বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসা সোমা এতে বাধা দিলে তার ওপরও ক্ষিপ্ত হন বাবুল। এক পর্যায়ে গাছের ডাল দিয়ে বোনের মাথায় একাধিক আঘাত করেন বাবুল। এতে রক্তাক্ত জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সোমা। তখন আরেক ছোট বোন বিউটি আক্তার এগিয়ে এলে তাকেও মারধর করেন বাবুল। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান বাবুল।
পরে আহতাবস্থায় সোমাকে নিকটস্থ একজন পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তিনি ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ বেঁধে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেন। বাড়ি এসে সোমা ভাত খেয়ে ওষুধ খান। রাত ৯টার দিকে বমি শুরু হলে ভৈরবের স্টেডিয়াম পাড়ার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। তখন তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে নিলে চিকিৎসক তাকে দ্রুত ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন। ঢাকায় নেয়ার প্রস্তুতিকালে রাত ১০টার দিকে সোমার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে সোমার ছোট বোন বিউটি আক্তার দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমার বড় ভাই বাবুল মাদকসেবী। সে নেশা করে এসে আমার মা-বাবাকে অত্যাচার করত এবং আমার মাকে প্রায়ই মারধর করত। এজন্য ভাইকে কয়েক বছর আগে বাবা-মা বাড়ি থেকে বের করে দেন। সে পরিবার নিয়ে শম্ভুপুর রেল গেইট এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকে। প্রায় সময় মায়ের কাছে এসে নেশার টাকা দেয়ার জন্য বলতো ও সম্পত্তির ভাগ চাইতো সে। মাকে মেরে ফেলার হুমকিও দিত।’
বিউটি আক্তার বলেন, ‘শনিবার বিকেল ৪টার দিকে মাকে নেশার টাকা ও সম্পত্তির জন্য চাপ দেয় ভাই। এক পর্যায়ে মাকে মারধর করে। পরে আমার বড় বোন সোমা বেগম বাধা দিলে তাকে গাছের ডাল দিয়ে মাথায় আঘাত করে। তখন প্রতিবেশীরা ছুটে এলে ভাই পালিয়ে যায়।’
তিনি জানান, ঘটনার দিন সকালে তার বোন শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। বিকেলেই তার শ্বশুরবাড়ি চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে এই ঘটনা ঘটে যায়। সোমার তিন বছর ও দেড় বছর বয়সী দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। তার স্বামীর নাম শাহীন মিয়া।
‘আমি আমার ভাই বাবুল মিয়ার ফাঁসি চাই’, বলেন বিউটি আক্তার।
এ বিষয়ে ভৈরব সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) দেলোয়ার হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘বাবুল সম্পত্তি ভাগের জন্য প্রায় সময় তার মাকে মারধর করতেন। তিনি এর আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন। ঘটনার দিন বাবুল যখন তার মাকে মারতে যান, তখন তার বোন বাধা দিলে তিনি তার বোনকেও আঘাতে আহত করেন। পরে তার মৃত্যু হয়। ঘটনার খবর পেয়ে আমিসহ ওসি ও শহর ফাঁড়ির ইনচার্জ ঘটনাস্থলে যাই। আসামিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই।’
২০ শিক্ষার্থীর জীবন বাচিয়ে নিজে দ্বগ্ধ হওয়া শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরীর স্বামী মনসুর আলী হেলাল দাফনকার্য শেষ করে চোখ ভেজা কান্না জড়িত কণ্ঠে সংবাদকর্মীদের বলেন,“ মৃত্যুর আগে আমি ওকে (মাহেরীনকে) জিজ্ঞেস করেছিলাম, তুমি তোমার নিজের দুই সন্তানের কথা একবারও ভাবলে না? সে বলেছিল, ‘ওরাও তো আমার সন্তান। ওদের একা রেখে আমি কী করে চলে আসি?’ আমি আমার সবকিছু দিয়ে চেষ্টা করেছি ওকে বাঁচাতে, কিন্তু পারিনি। আমার দুইটা ছোট ছোট বাচ্চা এতিম হয়ে গেল।”
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ২০ শিক্ষার্থীর জীবন বাঁচিয়ে চিরবিদায় নেয়া সেই শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে গ্রামের বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকার বগুলাগাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
মাহেরীনের স্বামী বলেন, “শেষ রাতে হাসপাতালে ওর সঙ্গে আমার শেষ দেখা। আইসিইউতে শুয়ে শুয়ে ও আমার হাত নিজের বুকের সঙ্গে চেপে ধরেছিল। বলেছিল আমার সঙ্গে আর দেখা হবে না। আমি ওর হাত ধরতে গিয়েছিলাম, কিন্তু শরীরটা এমনভাবে পুড়ে গিয়েছিল যে ঠিকভাবে ধরতেও পারিনি।”
মনসুর হেলাল বলেন, “ও অনেক ভালো মানুষ ছিল। ওর ভেতরে একটা মায়া ছিল সবাইকে ঘিরে। আগুন লাগার পর যখন অন্যরা দৌড়াচ্ছিল, ও তখন বাচ্চাদের বের করে আনছিল। কয়েকজনকে বের করার পর আবার ফিরে গিয়েছিল বাকি বাচ্চাদের জন্য সেই ফেরাটা আর শেষ হয়নি। সেখানেই আটকে পড়ে, সেখানেই পুড়ে যায় আমার মাহেরীন।”
জানা যায়, সোমবার দুপুরে প্রতিদিনের মতো শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেয়ার দায়িত্ব পালন করছিলেন মাহরিন। হঠাৎ করেই প্রশিক্ষণ বিমানটি ভবনে আছড়ে পড়ে, মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। দগ্ধ শরীর নিয়েও তিনি ২০ শিক্ষার্থীকে নিরাপদে বের করে দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যান। পরে তাকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে নেয়া হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
মাহরিন চৌধুরী নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বগুলাগাড়ি চৌধুরীপাড়ার মরহুম মুহিত চৌধুরীর মেয়ে। মাহরিন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা মিডিয়াম শাখার তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির কো-অর্ডিনেটর। সম্প্রতি গ্রামের বগুলাগাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজে উন্নয়নমূলক কাজের স্বপ্ন নিয়ে তিনি সেখানে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন বলে জানান তার স্বামী মনসুর হেলাল।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর উত্তরায় বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে বিধ্বস্ত হলে স্কুলের একটি ভবনে আগুন ধরে যায়। এ সময় ওই ভবনে ক্লাস করছিলেন শিক্ষার্থীরা। তাদের মধ্যে অন্তত ২০ জনকে আগুন থেকে উদ্ধার করেন মাহেরীন চৌধুরী। তিনি নিজে আর বের হতে পারেননি।
তিস্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চীনা প্রতিনিধি দল তিস্তা নদী পরিদর্শন করেছেন। কী উপায়ে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যাবে তার সম্ভবতা যাচাই করেছেন তারা। পরে প্রতিনিধি দল রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) চীনের প্রতিনিধি দলটি তিস্ত নদী পরিদর্শন করেন।
প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের ডিরেক্টর অব দ্য পলিটিক্যাল সেকশন, জং জিং। রাজনৈতিক নেতাদের পক্ষে নেতৃত্ব দেন জাগো বাহে তিস্তা বাছাই আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক আসাদুল হাবিব দুলু।
আজ সকালে রংপুর জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব মাহফুজ-উন নবী ডন, রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু এবং কাউনিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এমদাদুল হক ভরসাসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
মতবিনিময় শেষে প্রতিনিধি দলটি সরেজমিনে জেলার গঙাচড়া উপজেলার তিস্তা নদীর পাড় এবং লক্ষিটারী ইউনিয়নে নদীভাঙন কবলিত এলাকাসমূহ পরিদর্শন করেন। সেখানে চীনা প্রতিনিধি দল বিএনপি নেতাদের সঙ্গে তিস্তাপাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ঘরবাড়ি ঘুরে দেখেন এবং মানুষের মুখে তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শোনেন।
চীনা প্রতিনিধি দল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে উপহার সামগ্রীও বিতরণ করেন, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে আশার আলো জাগায়।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু জানান, ‘তিস্তা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নই একমাত্র টেকসই সমাধান, যা এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’ আমরা চাই এই বছরই তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হোক। এই অঞ্চলের দুই কোটি মানুষের দাবি এই নদী খনন ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হউক।
তিস্তাপাড়ের মানুষও প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ব্যাপারে গভীর আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং চীন সরকারের এমন সরাসরি সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানান।
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের ডিরেক্টর অব দ্য পলিটিক্যাল সেকশন, জং জিং বলেন, আমরা এর আগেও এসেছি, এবারও তিস্তাপাড়ের মানুষের দুঃখ দুর্দশা দেখে গেলাম। আমরা আশা করছি, দ্রুতই তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে। তিস্তা নিয়ে চায়না সরকার অত্যন্ত আন্তরিক।
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে ২১/০৭/২০২৫ খ্রি. তারিখে বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক, দুঃখ ও সমবেদনা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পল্লী | বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
এই ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য মহান আল্লাহ তায়া'লা এর কাছে বর্ণিত সংস্থা দোয়া প্রার্থনা করছে।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড।
পরীক্ষা শেষে শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলছিলেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ফারহান হাসান। এর মধ্যে স্কুলটির একটি ভবনে আছড়ে পড়ে আগুন ধরে যাওয়া বিমানটি। আর এ ঘটনায় ঝরে যায় ২৭টি প্রাণ, যার প্রায় সবাই শিক্ষার্থী।
ফারহান বলে, ‘আগুন ধরা প্লেনটা আমার চোখের সামনেই বিল্ডিংয়ে আঘাত করছে। আমার একটা বেস্ট ফ্রেন্ড, যে পরীক্ষার হলে আমার সঙ্গেই ছিল। আমার চোখের সামনেই ও মারা গেছে।’
এ দুর্ঘটনায় ১৭১ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ওই ঘটনার কিছু ভিডিওতেও স্কুলটির একটি দোতলা ভবনের নীচতলায় বিধ্বস্ত বিমাটিতে আগুন জ্বলতে ও ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। সেইসঙ্গে চলতে থাকে উদ্ধার তৎপরতা।
বিবিসিকে প্রত্যক্ষদর্শী ফারহান বলে, ‘স্কুল গেটের ভেতরে অনেকগুলো গার্ডিয়ান দাঁড়ায়ে ছিল, আর ছোটরা বের হচ্ছিল ছুটির টাইমে। তখন গার্ডিয়ানদেরসহ প্লেনটা নিয়ে গেছে।’
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘স্কুল ছুটি হবে হবে—এমন সময় বিমানটা সরাসরি জুনিয়র সেকশনের বিল্ডিংয়ে আঘাত করে।’
আরেক শিক্ষক মাসুদ তারিক বলেন, ‘আমি বিস্ফোরণের শব্দ শুনে যখন পিছনে ঘুরে তাকালাম, কেবল আগুন আর ধোঁয়া দেখছিলাম… সেখানে অনেক গার্ডিয়ান ও শিশুরা ছিল।
দুর্ঘটনার পর হতাহতদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীসহ সেচ্ছাসেবীরা এগিয়ে আসেন।
এক নারী বিবিসিকে বলেন, তার ছেলে স্কুলের ভেতরেই ছিল। তবে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে তিনি আর তার ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।
জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে জানানো হয়েছে, শিশুসহ প্রায় ৫০ জনের বেশি মানুষকে দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এ সময় হাসপাতালের ভেতর ও বাইরে স্বজনদের ভিড় দেখা যায়। শাহ আলম নামে এক ব্যক্তি তার ভাইকে জড়িয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন, ‘আমার ভাইপো এখন মর্গে।’
তার ভাইয়ের আট বছর বয়সী ছেলে তানভীর আহমেদ মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় হতাহতের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু, যাদের বয়স ১৪ বছরের মধ্যে।
দুর্ঘটনায় আহতদের জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটসহ ঢাকার আরও সাতটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার (২২ জুলাই) পালিত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় শোক। এ উপলক্ষে বাংলাদেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রয়েছে।
এর আগে, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বিমানের দুর্ঘটনার পর দেওয়া এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণহানি ও আহতের ঘটনায় আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি।’
তিনি বলেন, ‘এই ঘটনা শুধু বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জন্য নয়, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষক, কর্মচারী ও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জন্যও একটি অপূরণীয় ক্ষতি। এটি জাতির জন্য গভীর শোকের মুহূর্ত।’
দুর্ঘটনার পর এক বিবৃতিতে আন্তঃবাহিনী সংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি ছিল বিমানবাহিনীর এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান। প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহৃত চীনের তৈরি এই যুদ্ধবিমান যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে উত্তরার ওই স্কুল ভবনে আছড়ে পড়েছিল।
তারা আরও জানিয়েছে, সোমবার (২১ জুলাই) গতকাল দুপুর ১টা ৬ মিনিটে রাজধানীর কুর্মিটোলার বিমানবাহিনী ঘাঁটি এ কে খন্দকার থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বিমানটি স্কুল ভবনের ওপর এসে বিধ্বস্ত হয়। দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে এই খবর পায় বাংলাদেশের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। ওই ঘটনায় পাইলট লেফটেন্যান্ট তৌকির আহমেদও নিহত হয়েছেন।
ঘটনাটি তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার চৌধুরীর পদত্যাগের দাবিতে দুপুর থেকে সচিবালয়ের সামনে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীরা গেট ভেঙে ও দেওয়াল টপকে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লাঠিচার্জ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর ফাইটার জেট বিধ্বস্তের ঘটনার প্রতিবাদে এবং এইচএসসি পরীক্ষা দেরিতে স্থগিতের নিন্দা জানিয়ে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে মঙ্গলবার শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে সচিবালয়ের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের বাধা দিতে লাঠিচার্জ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।
সচিবালয়ের কয়েকজন কর্মচারী-কর্মকর্তা জানান, সচিবালয়ে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীরা ভেতরে থাকা গাড়ি ভাঙচুর করেছেন। স্বরাষ্ট্র ও এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের সামনেও ভাঙচুর চালিয়েছেন তারা।
তবে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাদেরই বলা হয়েছে সচিবালয়ে গিয়ে নিজেদের দাবি জানাতে। সচিবালয়ে তারা গেট ভেঙে প্রবেশ করেননি, এক নম্বর গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। ভেতরে প্রবেশের পর উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তারা একটি গাড়ি ভাঙচুর করেন।
লালবাগ মডেল কলেজের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব বলেন, 'হাসিনা সরকারের আমলে যেভাবে পুলিশ ছাত্রদের পিটিয়েছে, আজকেও সেই একইভাবে আমাদের পেটানো হয়েছে। আমাকে বন্দুকের বাট দিয়ে পিটিয়েছে পুলিশ। পা থেঁতলে দেওয়া হয়েছে।'
ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের শিক্ষার্থী সাইমুন বলেন, ‘সচিবালয়ের গেটের ভেতরে সুকৌশলে ছাত্রদের ঢুকিয়ে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে। সচিবালয়ের কর্মচারীরা পর্যন্ত ছাত্রদের পিটিয়েছেন। অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।’
ইম্পেরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী আসিফ বলেন, ‘ছাত্রদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। আলোচনার জন্য ডেকে নিয়ে অমনাবিকভাবে পিটিয়েছে পুলিশ।’
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, সচিবালয়ের সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একটু পরপর টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করছে।
তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ২১ জুলাই (সোমবার) ২০২৫ তারিখে মনিজা খাতুন, সিনিয়র সহকারী সচিব ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর জোবিঅ -বন্দর -এর আওতাধীন কুড়িপাড়া, মদনপুর, বন্দর, নারায়ণগঞ্জ এলাকার ১টি স্পটে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে ১টি চুন ফ্যাক্টরির (মোট ৫ ভাট্টি বিশিষ্ট) অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে । এ সময় বিভিন্ন ব্যাসের লাইন পাইপ ৫৭ ফুট, ২" ভাল্ব- ২ টি, ২" সার্ভিস টি-২ টি, বার্নার ৩ টি ও বেলচা-১৫ টি অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। চুন কারখানা মালিককে স্পটে না পাওয়ার কারণে জেল/জরিমানা করা সম্ভব হয়নি তবে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর মৌখিক নির্দেশনার প্রেক্ষিতে চুন ফ্যাক্টরির মালিক ও জায়গার মালিক এর বিরুদ্ধে আঞ্চলিক লিগ্যাল বিভাগ-নারায়ণগঞ্জ কর্তৃক থানায় FIR এর উদ্দেশ্যে অভিযোগ দায়ের করা হবে । অবৈধ চুন কারখানার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এক্সক্যাভেটর মেশিনের মাধ্যমে স্থাপনা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে এবং ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণ ও চুন ভিজিয়ে নষ্ট করা হয়েছে। মদনপুর থেকে আকিজ সিমেন্ট গামী ৮"x১৪০ পিএসআজি বিতরণ লাইন হতে অবৈধ ভাবে স্থাপিত ২" লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ অবৈধ বিতরণ লাইনের সংযোগ উৎসে কিলিং করা হয়েছে।
একই দিনে, জনাব হাসিবুর রহমান, বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ-এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -রুপগঞ্জ, জোবিঅ - আড়াইহাজার -এর আওতাধীন মাহনা, টেকাপাড়া, রুপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এলাকার ২টি স্পটে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, ১.৮ কি.মি. এলাকার আনুমানিক ৩৫০ টি বাড়ির ৫৫০ টি আবাসিক চুলার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে । এ সময়, ২" ডায়া বিশিষ্ট ৩০০ ফুট (প্রায়) লাইন পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া বিসমিল্লাহ ফিলিং এন্ড সিএনজি স্টেশন (গ্রাহক সংকেত:৭৩৭-০০০২২, ৮৩৭-০০০৫০১), সাওঘাট, ভুলতা, রুপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এর গ্যাস বিল বকেয়ার কারণে উভয় রানের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। প্রতিটি বিতরণ লাইন উৎস পয়েন্ট থেকে কিলিং/ ক্যাপিং করা হয়েছে।
এছাড়া, জনাব মিল্টন রায়, বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ-এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ - সাভার, জোবিঅ - সাভার -এর রাজফুলবাড়ীয়া, দক্ষিণ রামচন্দ্রপু, তেঁতুলঝোড়া, হেমায়েতপুর, সাভার এলাকার ৪টি স্পটে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, আলহামদুলিল্লাহ ফ্যাশন হাউজ ও মেসার্স আল আকসা ওয়াশিং প্ল্যান্ট নামক
২টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময়, ৪৮০ ফুট লাইন পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এতে মাসিক ১৩,৭৪,২৬০/- টাকার গ্যাস চুরি রোধ করা সম্ভব হয়েছে। উক্ত ০২ টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের উপর মোট ২,০০,০০০/- টাকা অর্থদন্ড আরোপ করা হয়েছে।
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া হাটিকুমরুল মহাসড়কে পরপর দুটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ছিনতাইকারীরা নিজেদের ডিবি পুলিশের সদস্য পরিচয় দিয়ে পথরোধ করে ওষুধ কোম্পানির দুই প্রতিনিধি’র কাছ থেকে নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয়।
প্রথম ঘটনার শিকার হন ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস-এর প্রতিনিধি মোঃ জমির উদ্দিন (৪৩)সোমবার (২১ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে তিনি পাটোয়ারী তেল পাম্প থেকে জ্বালানি তেল সংগ্রহ করে লক্ষীকোল বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে একটি পালসার মোটরসাইকেল যোগে তিন যুবক তার গতিরোধ করে নিজেদের ডিবি সদস্য পরিচয় দেয়। তারা দাবি করে, তার কাছে অবৈধ মাদকদ্রব্য রয়েছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে দেহ তল্লাশি শুরু করে।
জমির উদ্দিন জানান, “তল্লাশিতে কিছু না পেয়ে তারা আমার কাছে থাকা ৯৬০০ টাকা কৌশলে নিয়ে নেয় এবং একটি থাপ্পড় দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।” তিনি আরও বলেন, “ঘটনাস্থল ছিল ফাঁকা ও অন্ধকারাচ্ছন্ন, তাই জীবন বাঁচাতে আমি প্রতিরোধ করতে পারিনি।”
পরবর্তীতে তিনি সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে বনপাড়া তদন্ত কেন্দ্রে যান এবং থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ পান। ঘটনাস্থলের নিকটস্থ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এর মাত্র ১৫ মিনিট পর, সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটের দিকে একই কায়দায় স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস-এর প্রতিনিধি মোঃ সাইদুর রহমান (৩৫), এর কাছ থেকে ১০২০ টাকা ছিনতাই করে একই চক্র। ঘটনাটি ঘটে মাঝগাঁও ইউনিয়নের সুতিরপাড় বটতলা এলাকার কাছাকাছি, পুলিশ বক্সের সামনে থেকে।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় সচেতন মহল এসব ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছে।
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তে নিহত রজনী ইসলামের লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল দশটায় কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের সাদিপুর গ্রামের গোরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
রজনী কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের সাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা জহুরুল ইসলামের স্ত্রী। তাদের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেনীতে পড়ে এস এম জুমজুম। মেয়ে জুমজুম আনতেই স্কুলে গিয়েছিলেন রজনী খাতুন। তাদের আরেক ছেলে একই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেনীর শিক্ষার্থী এস এম রোহান অসুস্থ থাকায় সেদিন স্কুলে যায়নি। বড় ছেলে এস এম রুবাই অন্য একটি কলেজ থেকে এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছেন।
পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,প্রায় দুই দশক ধরে জহুরুল ইসলাম ঢাকায় থাকেন। জহুরুল ইসলাম পেশায় গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার সকাল নয়টায় জানাজা শেষে দশটার দিকে গ্রামের গোরস্থানে রজনীর লাশ দাফন করা হয়েছে। জানাজাতে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কমর্কর্তা আবদুল হাই সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রজনীর লাশ ঢাকার সামরিক হাসপাতাল থেকে রাত সাড়ে নয়টার দিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। রাত দশটার দিকে পরিবার লাশ নিয়ে দৌলতপুরের গ্রামের বাড়ির দিকে রওনা দেয়। ভোরে মেহেরপুরের গাংনি উপজেলার বাওট গ্রামে রজনীর বাবার বাড়িতে লাশ নেওয়া হয়। সেখানে কিচ্ছুক্ষণ রাখার পর লাশ সকাল সাতটার দিকে দৌলতপুরের বাড়িতে রাখা হয়।
পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেল, বেলা একটার দিকে ক্লাশ শেষ করে জুমজুম ক্যান্টিনে ছিল। স্কুলে মায়ের সাথে তার দেখা হয়নি। কথাও হয়নি। বিমান দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে জুমজুমের খোজে পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্য স্কুলে ছুটে যান।
জহুরুল ইসলাম জানান, তিনি ব্যবসার কাজে চট্ট্রগ্রাম ছিলেন। বিমান দুর্ঘটনার খবর জানার সাথে সাথে করে ঢাকায় আসেন। এরমধ্যে পরিবারের সদস্যরা জুমজুমকে স্কুল থেকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে। কিন্তু তার মায়ের কোন খোজ মেলে না। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন হাসপাতালে খোজ করতে থাকে। একপর্যায়ে এক আত্বীয় ফোন করে জানায় রজনীর লাশ সামরিক হাসপাতালে রয়েছে। দ্রুত সেখানে ছুটে যান। একটু দূর থেকে শাড়ী দেখে চিনতে পারেন রজনীর নিথর দেহ সেটি।
তিনি আরও বলেন,‘যতটুকু দেখেছি তাতে রজনীর মাথার পেছনে আঘাত। শরীরের কোথাও পোড়া চিহৃ নেই। ধারণা করা হচ্ছে বিমান দুর্ঘটনার সময় বিমানের কোন অংশ তার মাথায় আঘাত লেগেছে। এটা অনাকাঙ্খিত ঘটনা। মেনে নেওয়া যায় না। আবার না মেনেও উপায় নেই।’
জহুরুল ইসলামের বড় ভাই আহসানুল ইসলাম বলেন,রজনী তিন ছেলেমেয়ের পড়াশোনার বিষয়ে খুবই আন্তরিক ছিল। মেয়েকে(জুমজুম) ক্লাশ থেকে আনতে গিয়েই দুর্ঘটনার পড়ে যায়। তার মাথার পেছনে খত দেখা গেছে।
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কমর্কর্তা আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন,‘সকাল দশটার দিকে লাশ দাফন হয়েছে। নিহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়েছে। রাষ্ট্রীয় শোক চলছে। একটা পরিবারে যে ক্ষতি হল সেটা কখনোই পুরণ হবার না। মায়ের কোন বিকল্প হতে পারে না। সন্তানেরা যাতে ভালো থাকে সেই দোয়া করা হয়েছে।’
ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি ফের বাড়ছে। এতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একাধিক ভাঙ্গন স্থান দিয়ে পানি ঢুকে পরশুরাম উপজেলার অলকা গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) স্থানীয়রা জানান, বিগত কয়েক ৩/৪ দিন ফেনীতে বৃষ্টিপাত না হলেও ভারতের ত্রিপুরায় ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ফলে ভারতের উজানের পানিতে এখানে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। সোমবার (২১ জুলাই) সকাল থেকে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, টানা বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গত ৮ জুলাই থেকে পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলায় তিনটি নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৪১টি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দেয়। তারমধ্যে ৬টি ভাঙ্গন স্থানে মেরামত কাজ শেষ হয়েছে। ২৮টি স্থানে কাজ চলমান রয়েছে। বাকি ৭টি ভাঙ্গন স্থান বড় হওয়ায় সেগুলোর কাজ শুরু করা যায়নি।
ভারতের উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রোববার রাত থেকে নদীর পানি আবারও দ্রুত গতিতে বাড়তে শুরু করে। এতে ভাঙ্গন স্থানগুলো দিয়ে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, গেল বছরের (২০২৪ সালের) ভয়াবহ বন্যায়ও ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১০৪টি স্থানে ভেঙ্গেছিল। পরে ২০ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দে বাঁধগুলো মেরামত করা হলেও বছর না পেরোতে আবারও ভেঙ্গেছে। এসব ভাঙ্গন স্থান দিয়ে পানি প্রবেশ করে সোমবার সকাল থেকে পরশুরামের পশ্চিম অলকা, পূর্ব অলকা, নোয়াপুর, চিথলিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম ও ফুলগাজীর কিছু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পাউবোর যথাযথ তদারকি ও অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বাঁধ ভেঙে প্রতিবছর এমন দুর্ভোগে পড়তে হয় বলছেন তারা।
পরশুরামের পশ্চিম অলকার বাসিন্দা আবদুর রহমান বলেন, আমরা শুনেছি এখানে তেমন বৃষ্টি না হলেও ভারতে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এজন্য গত কয়েকদিন আগে বাঁধের যেসব স্থান ভেঙ্গেছে তা দিয়ে নতুন করে পানি ঢুকে ফের আমরা পানিতে ডুবছি। আমাদের এ দুর্ভোগ কখনো শেষ হবে না।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, ভারতের উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে মুহুরী নদীর পানি ৯.৬৪ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিপৎসীমার ২.৮৬ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পূর্বের ভাঙ্গন স্থান দিয়ে পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। সম্প্রতি বন্যার পর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর ছোট ছোট বাঁধগুলো মেরামত করলেও বড়গুলো করা যায়নি।
ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, এখানে বৃষ্টিপাত না হলেও ভারতের উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পূর্বের ভাঙ্গনস্থান দিয়ে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। সম্প্রতি বন্যার পর তিনটি নদীর ছোট বাঁধগুলো মেরামত করলেও বড়গুলো করা যায়নি।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গৃহবধু নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে আপন ননদের স্বামী বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর গতকাল রোববার রাতে পৌর শহরের চন্ডিবের এলাকা থেকে অভিযুক্ত আসামী মো.বাবুল মিয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে ১ ঘন্টা পর টাকার বিনিময়ে আসামী ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।
সোমবার (২১ জুলাই) বেলা ১২টায় ভৈরব থানার সামনে গ্রেপ্তারকৃত আসামী ছেড়ে দেয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, গত ১৭ জুন পৌর শহরের কালিপুর মধ্যপাড়া পশ্চিম পাড়া এলাকায় আপন ননদের স্বামী মো.বাবুল মিয়া বাড়িতে লোকজন না থাকার সুযোগে গৃহবধূ নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। এসময় তার গায়ে জামা কাপড় ছিড়ে ফেলেন। পরে গৃহবধূর শ্বাশুরি এসে তাকে উদ্ধার করে। এসময় আসামী বাবুল দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। এঘটনায় ভুক্তভোগী নারী ভৈরব থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পরবর্তীতে ভিকটিম ১৯ জুন কিশোরগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ এ মামলা দায়ের করেন। ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত পৌর শহরের কালিপুর মধ্যপাড়া পশ্চিম বন্দ এলাকার মৃত আতর মিয়ার ছেলে বাবুল মিয়া (৩৫)। এঘটনায় পুলিশ বাবুল মিয়াকে রোববার (২০ জুলাই) রাত ১০টার দিকে কালিপুরের তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করলেও অর্থের বিনিময়ে ভৈরব থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাকিব বিন ইসলাম আসামীকে ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবার।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ নারী জানান, আমার ঘরের পাশে আসামী বাবুলের একটি পরিত্যক্ত ঘর রয়েছে। সে প্রায় সময় সেখানে বিভিন্ন মানুষজন নিয়ে আড্ডা ও নেশা করতে আসতো। এছাড়া আসামী আমার আপন ননদের স্বামী হওয়ায় সেই সুবাধে আমাদের ঘরেও মাঝেমধ্যে আসা যাওয়া করতো। গত ১৭ জুন সকালে আমার বসত ঘরে আমি কাজ করছিলাম। তখন আমার অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া ছেলে স্কুলে ছিল এবং আমার স্বামী ভৈরব থানার একটি মামলায় জেল হাজতে ছিলো। এই সুবাদে আসামী আমাকে একা পেয়ে আমার বসত ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। পরে আমি কোনো রকম আমার শ্বাশুড়িকে ফোন করলে তিনি স্থানীয়দের নিয়ে এসে আমাকে রক্ষা করে।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী গৃহবধূর শ্বাশুড়ি নাজমা বেগম বলেন, আসামি বাবুল আমার মেয়ের জামাই। আমার ছেলের ঘরের সাথে তার একটি ঘর রয়েছে। সেখানে সে প্রতিদিন এসে মাদক বিক্রি করে এবং নিজেও খাই। এমনকি সে অনেক সময় রাতে সেখানে মেয়েও নিয়ে আসে। সে আমার ছেলেকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়ে আমার ছেলের বউকে নির্যাতনের করার জন্য অনেক চেষ্টা করে যাচ্ছিল। আমি আমার ছেলের বউ এর সাথে থাকছি বলে সে সুযোগটা নিতে পরছিলো না। একদিন আমার ছোট ছেলে হঠাৎ অসুস্থ হলে আমি আমার বাড়িতে চলে যায়। ঐদিন আমার নাতিও স্কুলে ছিলো। এই সুযোগে বাবুল আমার ছেলের বউকে ঘরে একা পেয়ে তাকে পিছন থেকে জাপ্টে ধরে তার কাপড় চাপড় ছিড়ে ফেলে এবং তারা শরীরে বিভিন্ন জায়গায় শারীরিক আঘাত করে। এই অবস্থা আমার ছেলের বউ আমাকে ফোন দিলে আমি স্থানীয় আরো লোকজন নিয়ে ঐ স্থানে উপস্থিত হয়। তখন গিয়ে দেখি আমার ছেলের বউ অনেক কান্নাকাটি করছে আর বাবুল আলাদা আরেকটা ঘর থেকে আরেকজন লোক নিয়ে বের হয়ে চলে যাচ্ছে। তখন আমি বাবুলকে জাপ্টিয়ে ধরে জিজ্ঞাসা করতে চাইলে সে দৌঁড়িয়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনাটি এলাকার আরো অনেকেই দেখেছে। তাই আমি প্রশাসনের কাছে এর সঠিক বিচাই চাই।
এই বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী জানান, গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে এসআই রাকিবের নেতৃত্বে একটি টিম নারী নির্যাতন মামলার আসামী বাবুল মিয়াকে আটক করে। পরবর্তীতে আসামী বার্থরুমে যাওয়ার কথা বলে পালিয়ে যায়। এতে পুলিশের অসাবধানতার কারণেই এই ঘটনাটি ঘটেছে। তবে টাকা নিয়ে যদি কেউ আসামী ছেড়ে দেয় তা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের চড়িলাম গ্রামে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ভাতিজার হাতে চাচার কব্জি বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রায়ই ১ মাস অতিবাহিত হলেও আসামিদের এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এতে ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলামের পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। উল্লেখ্য গত ২৬ জুন এই হামলার পর ২৭ জুন রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে নবীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন। বাদী আরিফুল ইসলাম বলেন- "আমি মামলা করেছি বলে আসামিরা আমাদের হুমকি দিচ্ছে,আতঙ্কে আমারা দিন কাটাচ্ছি। মামলার প্রধান আসমি মো. বায়েজিদ ইসলামসহ অন্যান্য আসামিরা এখনো অধরা"। তাই বাধ্য হয়ে বাধ্য হয়ে গত ১৩/৭/২৫ ব্রাহ্মণবাড়িয়া নির্বাহী মাজিস্ট্রেট আদালতে আরেকটি ফৌজদারি কার্যবিধি নং- ১০৭/১১৪/১১৭(গ) এর ধারায় মামলা করেছি। মামলা নাম্বার- পি-১২১৩. প্রত্যক্ষদর্শী ইকবাল হোসেন বলেন-"আমার বাড়িতে রফিকুল ভাইয়ের দাওয়াত ছিল। তিনি আমার বাড়িতে আসছিলেন। তখনই তার উপর হামলা হয়। আমি তার চিৎকারে ছুটে এসে দেখি তার হাত নেই। আমি তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই"।
রফিকুল ইসলাম বলেন- "আমাকে হত্যা করতে চেয়ে ছিল। আল্লাহর রহমতে আমি বেঁচে গেছি। কিন্তু এখন আমার হাত নেই, আমি স্বাভাবিক জীবনে আর ফিরতে পারব না। আমি কেবল ন্যায় বিচার চাই"।
এ বিষয়ে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনূর ইসলাম বলেন-“আমরা মামলাটি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য র্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্রে তৎপরতা অব্যাহত আছে ও সংশ্লিষ্ট ইউনিট গুলোকে ও অবহিত করা হয়েছে"।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে দরিদ্র অসহায় মানুষের মাঝে ঢেউটিন ও চেক বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার উপজেলা প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উদ্যোগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়/দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কর্তৃক ঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত দুঃস্থ অসহায় পরিবারকে মানবিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ৫৯ পরিবারে বিনামূল্যে ঢেউটিন ও চেক বিতরণ করা হয়। সোনাইমুড়ী উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে পরিবার প্রতি এক বান ঢেউটিন ও তিন হাজার টাকার চেক বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার। উপস্থিত ছিলেন,উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিশকাতুর রহমান, প্রকৌশলী ইমদাদুল হক, কৃষি কর্মকর্তা নূরে আলম সিদ্দিকী, চাষীর হাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ,দৈনিক বাংলার নোয়াখালী উত্তর প্রতিনিধি খোরশেদ আলম প্রমূখ।
নীলফামারীতে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে বৃক্ষরোপণ ও শিক্ষার্থীদের মাঝে গাছের চারা বিতরণ করা হয়েছে নীলফামারী প্রেসক্লাবের উদ্যোগে।
সোমবার সকালে (২১ জুলাই) নীলফামারী প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে প্রধান অতিথি থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে চারা বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক সাইদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, নীলফামারী প্রেসক্লাবের সভাপতি(ভারপ্রাপ্ত) আতিয়ার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক নুর আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে ছাত্র-জনতার ত্যাগ কোনদিন ভুলবার নয়। ২৪’র গণঅভ্যুত্থানে যারা শহিদ ও আহত হয়েছেন তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নই এখন মুল বিষয়।
নীলফামারী প্রেসক্লাব শহিদদের স্মরণে এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদার।
নীলফামারী প্রেসক্লাবের সভাপতি(ভারপ্রাপ্ত) আতিয়ার রহমান জানান, শহরের শাহীপাড়া, নীলফামারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পুলিশ লাইন্স একাডেমির তিন’শ শিক্ষার্থীর মাঝে ফলদ গাছের চারা বিতরণ করা হয়।