কৃষকদের কৃষি আবহাওয়াবিষয়ক পূর্বাভাস জানাতে রাজবাড়ীর ৪২টি ও হবিগঞ্জের মাধবপুরের পাঁচটি ইউনিয়নে তথ্যবোর্ড, বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র ও সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে। তবে এসবের কোনো উপকারিতা পাচ্ছেন না কৃষকরা। কারণ বেশির ভাগ ইউনিয়নে এগুলো সচলই করা হয়নি। আবার অনেক ইউনিয়নে কৃষকরা এসব যন্ত্রপাতি সম্পর্কে জানেনই না।
উপজেলা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে কৃষি আবহাওয়া, নদ-নদীর সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কিত উন্নতমানের পরিষেবা ও নির্ভরযোগ্য তথ্য কৃষকের কাছে পৌঁছাতে এবং আবহাওয়াসংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে উন্নত পদ্ধতি ব্যবহারে কৃষি বিভাগের সক্ষমতা বাড়াতে ‘কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করেছে সরকার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় দেশের ৪৯২ উপজেলার ৪ হাজার ৫১টি ইউনিয়ন পরিষদে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে শুরু হয়ে প্রকল্পটি ২০২১ সালের জুনে শেষ হয়।
এই প্রকল্পের আওতায় রাজবাড়ী জেলার ৫ উপজেলার ৪২টি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে স্থাপন করা হয় তথ্যবোর্ড, স্বয়ংক্রিয় বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র ও সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কিছু যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়েছে। আবার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদ ঘুরে দেখা গেছে, এগুলোর কোনোটিতে এসব যন্ত্রপাতি চালুই হয়নি।
সরেজমিনে রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায়, পরিষদের প্রধান ফটকের সিঁড়ির পাশেই লাগানো আবহাওয়া তথ্যবোর্ড। এর মাধ্যমে কৃষকদের জানার কথা আগামী তিন দিনের বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বায়ুপ্রবাহ, আলোক ঘণ্টাসংক্রান্ত নানা তথ্য। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। বোর্ডটি লাগানোর পর গত পাঁচ বছরে সচলই করা হয়নি। বোর্ডের নিচে দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তার নাম ও ফোন নম্বর থাকার কথা থাকলেও সেটি নেই।
জেলার অন্যান্য ইউনিয়ন পরিষদের আবহাওয়া যন্ত্রপাতির অবস্থাও একই। কোথাও ভেঙে পড়ে আছে স্বয়ংক্রিয় বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র বা রেইন গেজ মিটার, কোথাও ভেঙে গেছে সৌর প্যানেল। জেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদ ঘুরে আবহাওয়া বোর্ডের একটিও সচল পাওয়া যায়নি। এসব পরিষদে কোনো কৃষি কর্মকর্তারও দেখা পাওয়া যায়নি। শুধু তাই নয়, যাদের জন্য কৃষি বিভাগের এত আয়োজন, সেই কৃষকরা এসবের কিছুই জানেন না।
রামকান্তপুর ইউনিয়নের কৃষক নেকবার আলী বলেন, ‘আমরা ইউনিয়ন পরিষদে শুধু তথ্য বোর্ডটিই দেখেছি। কিন্তু এর কোনো কাজ কখনো দেখিনি।’
রতনদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের কৃষক খবির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা আজ পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের এই আবহাওয়া তথ্যবোর্ড থেকে আবহাওয়াবিষয়ক কোনো তথ্য বা খবর পাইনি।’
রামকান্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজিব মোল্লা বাবু বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে সঠিক কিছু জানি না। ওই মেশিনগুলো ভালো আছে কি না বা কারা এর দায়িত্বে আছেন, তাও বলতে পারব না। তবে আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে আবহাওয়া তথ্যবোর্ড দেখছি।’
রতনদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসিনা পারভীন নিলুফা বলেন, ‘কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে রাজবাড়ী জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাসের জন্য তথ্যবোর্ড লাগানো হয়। এর দায়িত্বে ইউনিয়ন কৃষি কর্মকর্তা থাকলেও তাদের কখনো দেখা যায়নি।’
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদেই আবহাওয়া বোর্ডে নিয়মিত তথ্য দেয়া হচ্ছে। কিছু কিছু ইউনিয়ন পরিষদে অটোমেটিক রেইন গেজ নষ্ট হয়ে আছে। সেগুলো মেরামত করতে চিঠি দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া কিছু কিছু ইউনিয়ন পরিষদে যন্ত্রপাতি ভেঙে গেছে। সেগুলো খুব দ্রুত মেরামত করা হবে।’
এদিকে হবিগঞ্জের মাধবপুরেও কৃষকের কোনো কাজে আসছে না এই প্রকল্প। কৃষকরা বলছেন, কৃষি কার্যালয়ের কেউ তাদের আবহাওয়া বিষয়ে কোনো পরামর্শ দেন না। উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে স্থাপন করা কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাস বোর্ড, স্বয়ংক্রিয় বৃষ্টিপাত পরিমাপক যন্ত্র রয়েছে। কিন্তু তারা কোনো বার্তা পান না। সচল বোর্ডগুলোতেও নিয়মিত তথ্য হালনাগাদ করা হয় না।
মাধবপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হাসান আল মামুন দৈনিক বাংলাকে জানান, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন বাগাসুরা, নোয়াপাড়া, বহড়া, বুল্লা ও আন্দিউড়ায় স্বয়ংক্রিয় বৃষ্টিপাত পরিমাপক যন্ত্র ও কৃষি আবহাওয়া তথ্যবোর্ড এবং প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে কিয়স্ক সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি ইউপি ভবনের ছাদে স্থাপন করা হয়েছিল রেইন গেজ ও সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল।
এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিতে প্রতিটি ইউপি ভবনের দর্শনীয় স্থানে স্থাপন করা হয়েছিল তথ্যবোর্ড। অ্যানালগ এই বোর্ডগুলো হাত দিয়ে ঘুরিয়ে প্রতিদিন হালনাগাদ করতে হয়। এই বোর্ডে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বায়ুপ্রবাহ, ঝড়ের পূর্বাভাস, আলোক ঘণ্টাসহ ১০টি বিষয়ে তথ্য প্রকাশের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু এই বোর্ড কখনোই সচল হয়নি বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। বৃষ্টিপাত পরিমাপক যন্ত্র ও সৌরবিদ্যুৎ প্যানেলও অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। কোথাও কোথাও যন্ত্রাংশও খোয়া গেছে।
কৃষক আমির হোসেন, আব্দুল আউয়াল ও আবুল বাশার জানান, ইউনিয়ন পরিষদে কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাস বোর্ড আদৌ আছে কি না, তাদের জানা নেই। এ বোর্ডের উপকার কী, তাও অনেক কৃষক জানেন না। সরকার এত টাকা খরচ করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও তা কৃষকের কাজে লাগছে না। ৫ ইউনিয়নের অন্তত ৪০ থেকে ৪৫ জন কৃষকের বক্তব্যও একই।
জানতে চাইলে আন্দিউড়া ইউনিয়নের কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘আমাদের এ যন্ত্রটি সচল নেই। স্থাপনের পর থেকেই এটি কাজ করে না।’
বাঘাসুড়া ইউনিয়নের কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা সালেহা বেগম বলেন, ‘আমি যোগদানের পর থেকেই দেখছি এসব যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে আছে। এটি কোনো রকম কাজই করে না।’ নোয়াপাড়া ইউনিয়নের কৃষি উপসহকারী সোহাগ মিয়া এবং বহড়া ইউনিয়নের উপসহকারী কর্মকর্তা সজিব দেবও বলেন একই কথা।
টাঙ্গাইলের কালিহাতীর এলেঙ্গায় রাজকীয় দ্বিতল খাট বানিয়ে মানুষের কৌতূহল সৃষ্টি করেছেন হারুন অর-রশিদ নামে এক ফার্নিচার ব্যবসায়ী। তার এই খাটটি এক নজর দেখতে প্রতিদিনই আশপাশসহ দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন ছুটে আসছেন। খাটটি ৫ লাখ টাকা দাম চাইলেও ইতোমধ্যে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দাম উঠেছে। তবে, সাড়ে ৪ লাখ টাকায় মানুষের নজর কেড়ে নেওয়া এই খাটি বিক্রি করার ইচ্ছে পোষণ করেছেন ওই ফার্নিচার ব্যবসায়ী।
জানা যায়, এলেঙ্গা পৌর শহরের মেসার্স হারুন ‘স’ মিল অ্যান্ড ফার্নিচার হাউজের স্বত্বাধিকারী হারুন অর-রশিদ দীর্ঘ ৬ মাসের পরিশ্রমে সুদক্ষ কারিগর দিয়ে এই দ্বিতল খাটটি তৈরি করেছেন। এতে ব্যবহার করা হয়েছে সেগুন ও আকাশমনি কাঠ। চার ধরনের নকশায় নান্দনিক রুপে দেওয়া হয়েছে এটিতে। এছাড়াও খাটটির সিঁড়ির ডিজাইন করা হয়েছে বক্স আকারে। প্রয়োজনীয় কাপড়চোপড়ও রাখা যাবে এই সিঁড়ির বক্সে।
রাজকীয় খাট তৈরির কারিগররা বলেন, তারা দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে খাটটি নিপুণভাবে তৈরি করেছেন তারা। আকর্ষনীয় ডিজাইন, নকশা ও বার্নিশে নান্দনিকতা ফুটিয়ে তুলেছেন তারা। এর আগে কখনও এত বড় খাটের কাজ তারা করেনি। এবারই প্রথম দ্বিতল বিশিষ্ট খাট তৈরি করতে পেরে খুশি তারা।
স্বত্বাধিকারী হারুন অর-রশিদ বলেন, তিনি কয়েক বছর আগে এমন ডিজাইনে একটি সিঙ্গেল খাট তৈরি করেছিলেন। তখন বেশ ভালো দামেই বিক্রি করেন সেটি। সে থেকে তার মনে ইচ্ছে জাগে দ্বিতীয় তলা বিশিষ্ট একটি খাট তৈরি করার। সে থেকেই প্রায় ৬/৭ মাসে পাবনার এক কারিগর দিয়ে তিনি এই রাজকীয় খাটটি তৈরি করছেন। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি খাটটির দাম আড়াই লাখ টাকা করেছেন।
হারুন অর-রশিদ আরও বলেন, খাটটির দাম ৫ লাখ টাকা চাইলেও আলোচনা সাপেক্ষে কমানোর সুযোগ রয়েছে এবং যে ব্যক্তি তার খাটটি কিনে নেবেন তাকে আরও একটি ছোট উপহার দেওয়া হবে।
পঞ্চগড়ের অধিকাংশ পেট্রোল পাম্প গুলোতে ভেজাল এবং নিম্ন গ্রেডের জ্বালানী তেল বিক্রি হচ্ছে। পরিমাপে কারচুপির করে এসব নিম্ন গ্রেডের জালানী ব্যবহার করে নানা রকমের যান্ত্রিক ত্রুটিতে পড়েছে ভোক্তাদের যানবাহন। মাঝে মধ্যে অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করা হলেও থামছে না এসব অনৈতিক কর্মকান্ড। জেলা শহর বাদেও উপজেলা গুলোতেও বিধি বহিভূত ভাবে বিস্ফোরক লাইসেন্স ছাড়াই যত্রতত্র খোলা বাজারে এসব ভেজাল জ্বালানি বিক্রি হচ্ছে। জেলা শহরের করতোয়া, কাঞ্চনজঙ্ঘা এস বি মাহি,মৈত্রী পঞ্চগড় ফিলিং এসব পাম্পের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ভোক্তাদের। নির্ধারিত দরে জ্বালানীর দাম গ্রহন করে বিক্রি করছে নিম্ন গ্রেডের জ্বালানি। যা ব্যবহার অনুপযোগী। বিকোট দূর্গন্ধযুক্ত এসব জ্বালানি ব্যবহার করা গাড়ি বাসায় রাখাও দুরহ হয়ে পড়েছে।
অভিযোগ উঠেছে আটোয়ারী এলাকায় প্রতিষ্ঠিত মাহি প্রেট্রোল পাম্প থেকে এসব ভেজাল জ্বালানী তেল সমগ্র উপজেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন দীর্ঘ এক যুগ থেকে এই পাম্প থেকে ভেজাল তেলের রমরমা ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রেট্রোল, ডিজেল থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। এই তেল ব্যবহার করে অনেকের যানবাহন অল্প সময়ে বিকল হয়ে গেছে। অনেকে বলছেন জ্বালানী তেল মাপেও কম দেয়া হয়। বিগত সরকারের ঠাকুরগাঁও ২ আসনের সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলামের ছত্রছায়ায় এই পাম্পে অবৈধভাবে পরিচালিত হতো। ৫ আগষ্টের পরে এই পাম্পে ভেজাল তেলের অভিযোগে স্থানীয়রা তাদেরকে সংশোধন হওয়ার তাগাদা দেয়। গত জুন মাসে ভেজাল তেল বিক্রীর অভিযোগে ভোক্তা অধিকারও পাম্মটিকে জরিমানা করে। কিন্তু তারপরও ভেজাল জ্বালানী তেল বিক্রী বন্ধ হয়নি। পাম্পটির বিস্ফোরক ছার পত্রও নেই। নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছারপত্র। পাম্প কতৃপক্ষ বলছেন তারা পদ্মা ওয়েল কোম্পানীর পার্বতিপুর ডিপো থেকে স্যাম্পল সহ ভেজাল মুক্ত জ্বালানী তেল ক্রয় করেন। পরে তা আটোয়ারী এলাকার বিভিন্ন যানবাহন এবং খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রী করেন। শুক্রবারে তেল কেনার নিয়ম না থাকলেও গভীর রাতে পাম্পের রিজার্ভ ট্যাংকে তেল ভরানো হয়। সরেজমিনে দেখা যায় মাহি পাম্পে পদ্মা ওয়েলের কোন স্যাম্পল পাম্পে নেই। পাম্প স্থাপনের অধিকাংশ শর্ত পুরন না করেই পাম্পটি স্থাপন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পদ্মা ওয়েল কোম্পানীর এ অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিএমও আবু সাকিল জানান, পদ্মাওয়েলের কাছে জ্বালানী ক্রয় করার সময় কাঁচের বোতলে স্যাম্পল দেয়া হয় এবং তা পাম্পে রাখার নির্দেশনাও দেয়া হয়। যাতে কোন ভাবে পদ্মা ওয়েলের সুনাম নষ্ট না হয়। শুক্রবারে ডিপো থেকে কোন জ্বালানী তেল সরবরাহ করা হয়না। স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ি রফিকুল ইসলাম জানান, আর কোন পাম্প না থাকায় সব সময় এই পাম্প থেকে জ্বালানী তেল নিতে হয়। দীর্ঘদিন থেকে এই পাম্পে অবৈধভাবে ভেজাল জ্বালানী তেল বিক্রী হয়। গাড়ি খুব তাড়াতাড়ি বিকল হয়ে যায়। প্রেট্রোল, ডিজেল, অকটেন থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। এই পাম্পের ভেজাল তেলে বাজার সয়লাব হয়ে উঠেছে। তেল নিতে আসা মোটরসাইকেল চালক মির্জাপুর এলাকার আব্দুল জব্বার জানান, তেলে অত্যন্ত দুর্গন্ধ। প্রেট্রোলে তো প্রেট্রোলের গন্ধ থাকার কথা । এগুলে ভেজাল তেল। পুরাতন আটোয়ারী এলাকার গোপাল চন্দ্র সরকার একই অভিযোগ করেন।
পাম্পের ম্যানেজার আল আমিন জানান,একই মালিকানার আরেকটি পাম্প ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গি উপজেলায় রয়েছে। আলি ফিলিং স্টেশন নামের ওই পাম্প থেকে এই পাম্পে তেল পাঠানো হয়। দুুটি পাম্পের মালিকই আওয়ামীলীগ নেতা দবিরুল এমপির ছোট ভাই মোহম্মদ আলী। সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলাম ও তার ছেলে কারাগারে রয়েছে। ভাই মোহম্মদ আলীর নামেও একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি পলাতক রয়েছেন। মোহম্মদ আলীর মেয়ে রুনা আক্তার বর্তমানে পাম্প দুটি দেখা শোনা করছেন। তার স্বামী একজন পুলিশ কর্মকর্তা। রুনা আক্তার জানান, ৫ আগষ্টের পর আমার পাম্পগুলি ভাংচুর হয়েছে। তেল লুটপাট করা হয়েছে। স্থানীয় বিএনপি নেতা শাহাজাহান আলী আমার মামা। আমি মাসে একবার পাম্পে যাই। বালিয়াডাঙ্গিতে আমাদের আরেকটি পাম্প আছে। সেখানে সকল কাগজ পত্র আছে। ভেজাল তেল বিক্রী করা হয়না। যারা অভিযোগ করেছেন তারা মিথ্যা বলেছেন।
ভোক্তারা অভিযোগ করেছে, ভেজাল জ্বালানী তেলে সারা জেলা উপজেলা সয়লাব হয়ে উঠেছে। তারা ভেজাল বিরোধী অভিযানে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ২২ জুলাই (মঙ্গলবার) ২০২৫ তারিখে মনিজা খাতুন, সিনিয়র সহকারী সচিব ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর ঢাকা বিক্রয় বিভাগ-৫ এর আওতাধীন কামরাঙ্গীরচর এলাকার ১টি স্পটে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে শাহ্জালাল মেটাল নামক ১টি খানাডুলি কারখানায় বাণিজ্যিকভাবে গ্যাস ব্যবহারের জন্য গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ কিলিং করা হয়েছে। এ সময় ৩/৪’’ জি আই পাইপ ১০ ফুট, পিভিসি পাইপ ৩০ ফুট, বুস্টার ০১ টি, হুইজ পাইপ ১০ ফুট ও পাইপ বার্ণার ০২ টি অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। উক্ত কারখানা মালিককে ৫০,০০০/- টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
একই দিনে, জনাব হাসিবুর রহমান, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (সিনিয়র সহকারী সচিব) জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর জোবিঅ -বন্দর এর আওতাধীন জাঙ্গাল, বারপাড়া, বন্দর, নারায়ণগঞ্জ এলাকার ১টি স্পটে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে আনুমানিক ৬ কিলোমিটার এলাকার আনুমানিক ১০০০ চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন ব্যাসের লাইন পাইপ ২৩০ ফুট, রেগুলেটর ২৪ টি ও লকউইং কক ৬টি অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে।
এছাড়া, জনাব মো: শহীদ উল্লাহ (সহকারী কমিশনার) জেলা প্রশাসন, গাজীপুর কর্তৃক নিয়োজিত বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -চন্দ্রা, জোবিঅ -চন্দ্রা এর আওতাধীন পূর্ব বারেন্ডা, কাশিমপুর, গাজীপুর এলাকার ২টি স্পটে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে আনুমানিক ৩২ টি বাড়ির ৩০০ ডাবল চুলার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন ব্যাসের ৪৫০ ফুট লাইন পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। সম্পুর্ন অবৈধ ৪টি বাড়ির মালিকের নিকট হতে মোট ২,৭৫,০০০/- জরিমানা তাৎক্ষনিক আদায় করা হয়েছে।
এছাড়াও, জনাব সিমন সরকার, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়োজিত বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর মেট্রো ঢাকা বিক্রয় বিভাগ-১
-এর আওতাধীন ঠুলঠুলিয়া, ডেমরা এলাকার ৩টি স্পটে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে শ্রাবণ ওয়াশিং, ব্রাদার্স ওয়াশিং, নিউ কালার ওয়াশিং ও নিউ জিন্স ওয়াশিং ( আবাসিক হতে বাণিজ্যিক ব্যবহার, গ্রাহক সংকেত : ১০১-১৬৮৬৯) নামক প্রতিষ্ঠানের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন ব্যাসের ৫৯০ ফুট লাইন পাইপ, আবাসিক রেগুলেটর ১১টি, কম্প্রেসার ২ টি, আবাসিক চুলা ২ টি, পাইপ বার্নার ৪ টি, হোস পাইপ ১০০ ফুট ও ১" প্লাস্টিক পাইপ ৬০ফুট অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। নিউ কালার ওয়াশিং ও নিউ জিন্স ওয়াশিং নামক প্রতিষ্ঠানের মালিক'কে যথাক্রমে ১ লক্ষ ও ৫০ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ১,৫০.০০০/- অর্থদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়া, সম্পূর্ণ অবৈধ ২০ টি আবাসিক সংযোগসমূহ বিচ্ছিন্নকরত: কিল করা হয়েছে এবং জনাব আজিজুল হক (১০১২৪৭১৪) -এর সংযোগটি বকেয়ার কারনে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় স্থগিত হওয়া ২২ ও ২৪ জুলাইয়ের এইচএসসি পরীক্ষা যথাক্রমে ১৭ ও ১৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার (২৩ জুলাই) ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও আন্তশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার স্বাক্ষরিত এইচএসসির স্থগিত পরীক্ষার পরিবর্তিত সূচি প্রকাশ সংক্রান্ত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, লিখিত পরীক্ষার তারিখ পিছিয়ে যাওয়ায় ব্যবহারিক পরীক্ষাও পেছানো হয়েছে। ২১ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে এবং ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ব্যবহারিক নম্বর অনলাইনে এন্ট্রি সম্পন্ন করে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অথবা তার প্রতিনিধিকে হাতে হাতে ব্যবহারিক উত্তরপত্র, স্বাক্ষরলিপি ও অন্যান্য কাগজপত্রাদি রোল নম্বরের ক্রমানুসারে সাজিয়ে এই বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের নির্দেশনা অনুযায়ী জমা দিতে হবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংবাদিক বা গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য গণমাধ্যমকর্মী নীতিমালা- ২০২৫ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, ইসি থেকে দেওয়া বৈধ কার্ডধারী সাংবাদিক সরাসরি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের পর প্রিজাইডিং অফিসারকে অবহিত করে ভোটগ্রহণ কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ, ছবি তোলা এবং ভিডিও ধারণ করা যাবে। তবে কোনোক্রমেই গোপন কক্ষের ভিতরের ছবি ধারণ করতে পারবেন না গণমাধ্যমকর্মীরা।
আজ বুধবার ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য এ নীতিমালা জারি করা হয়েছে বলে ইসির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আশাদুল হক জানিয়েছেন।
নীতিমালায় আরো বলা হয়েছে, ‘একইসাথে দুইয়ের অধিক মিডিয়ার সাংবাদিক একই ভোটকক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন না এবং ১০ মিনিটের বেশি ভোটকক্ষে অবস্থান করতে পারবেন না। তারা ভোটকক্ষে নির্বাচনী কর্মকর্তা, নির্বাচনী এজেন্ট বা ভোটারদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে পারবেন না। ভোটকক্ষের ভিতর থেকে কোনোভাবেই সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না। তবে ভোটকেন্দ্রের ভিতর থেকে সরাসরি সম্প্রচার করতে হলে ভোটকক্ষ থেকে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে তা করতে হবে। কোনোক্রমেই ভোটগ্রহণ কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি করা যাবে না।’
এছাড়া সাংবাদিকরা ভোটগণনা কক্ষে ভোট গণনা দেখতে পারবেন, ছবি নিতে পারবেন তবে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবেন না। অপরদিকে ভোটকক্ষ থেকে ফেসবুকসহ কোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি প্রচার করা যাবে না।
একই সাথে গণমাধ্যমকর্মীরা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ কার্যক্রম ব্যাহত হয় এমন সকল কাজ থেকে বিরত থাকবেন। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাজে কোনরূপ হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোনো প্রকার নির্বাচনী উপকরণ স্পর্শ বা অপসারণ করতে পারবেন না। এছাড়া নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহের সময় প্রার্থী বা কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে যেকোনো ধরনের প্রচারণা বা বিদ্বেষমূলক প্রচারণা থেকে বিরত থাকবেন। নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়তার জন্য নির্বাচনী আইন ও বিধিবিধান মেনে চলবেন।
এই নীতিমালা নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ, উপজেলা পরিষদ, সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচন ও উপনির্বাচনের জন্য প্রযোজ্য হবে।
নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে আবেদনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের সাংবাদিক পাস কার্ড, গাড়ি ও মোটরসাইকেলের স্টিকার দেবে ইসি সচিবালয় ও রিটার্নিং অফিসার। এছাড়া সাংবাদিকদের যাতায়াতে মোটরসাইকেলও ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘সাংবাদিকদের যাতায়াতের জন্য যৌক্তিক সংখ্যক গাড়ির স্টিকার প্রদান করা হবে। প্রয়োজনীয়তার নিরিখে ও বাস্তবতার আলোকে স্থানীয় প্রশাসন সাংবাদিকদেরকে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে সংবাদ সংগ্রহের লক্ষ্যে সীমিত পর্যায়ে মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের নিয়োগপত্র, প্রেস আইডির কপি, এনআইডির কপি এবং যে মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হবে সেই মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশনের কাগজপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট জমা দিলে যাচাই করে রিটার্নিং অফিসার বা রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি দেবেন।’
সংসদ ও স্থানীয় নির্বাচনের জন্য এ সাংবাদিক নীতিমালা অনুযায়ী দেশের অনুমোদিত প্রিন্ট, টেলিভিশন, অনলাইন নিউজন পোর্টাল, আইপিটিভি, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিদেশি সাংবাদিকদের কার্ড ও গাড়ির স্টিকার দেবে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতার অংশ হিসেবে চীনের দূতাবাস এক নতুন চালান কোভিড-১৯ পরীক্ষার কিট উপহার দিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে দেওয়া এই সহায়তার লক্ষ্য দেশের কোভিড-১৯ পরীক্ষা ও চিকিৎসায় নিয়োজিত স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর চাপ কমানো। আজ (মঙ্গলবার) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস।
রাজধানীতে আয়োজিত এক সংক্ষিপ্ত হস্তান্তর অনুষ্ঠানে চীনা দূতাবাসের কাউন্সেলর লি শাওপেং এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) লাইন ডিরেক্টর মো. হালিমুর রশিদ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কাউন্সেলর লি শাওপেং বলেন, এই জরুরি সহায়তা দুই দেশের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার প্রতিফলন।
তিনি বলেন, ‘সব মানুষের জন্য একটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসম্পর্কিত সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে চীন বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাতে উভয় দেশের জনগণ এই যৌথ উদ্যোগের সুফল পায়।’
কোভিড-১৯ মহামারির সূচনালগ্ন থেকেই চীনের দূতাবাস বাংলাদেশকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছে, যার মধ্যে রয়েছে চিকিৎসা সরঞ্জাম, টিকা এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)'র দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, "কুমিল্লা হবে এনসিপির ক্যান্টনমেন্ট,বিএনপি জামাতে আপত্তি নেই আ.লীগের সাথে সখ্যতা মানবো না।
বুধবার বিকেলে কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় টাউন হল মাঠে জেলা ও মহানগর এনসিপি আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ ঘোষণা দেন। এটি ছিল জুলাই পদযাত্রার ২৩তম দিনের কর্মসূচি।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, "হাসিনা একসময় বলেছিলেন—‘কুমিল্লার নামের আগে কু রয়েছে, তাই এ নামে বিভাগ হবে না’। আমরা এখন তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছি। কুমিল্লা নামেই বিভাগ হবে।"
তিনি অভিযোগ করে বলেন, "রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের শিকার হয়েছে কুমিল্লা। এখানকার মানুষ আত্মনির্ভরশীল, রেমিটেন্স নির্ভর। কুমিল্লায় যে উন্নয়ন হয়েছে, তা কুমিল্লাবাসীর টাকায়। কিন্তু এই অঞ্চলে অবকাঠামো উন্নয়ন এখনো পিছিয়ে। ক্যান্টনমেন্ট থেকে সিলেট সড়কে দুইটি বাস একসঙ্গে চলতে পারে না, অথচ এটিকে বলা হয় মহাসড়ক!"
উত্তরবঙ্গের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, "আমরা আগে ভাবতাম, শুধু উত্তরবঙ্গই বঞ্চিত। কিন্তু কুমিল্লায় এসে দেখি, এখানেও টানা দুই কিলোমিটার ভালো রাস্তা নেই। সরকার ব্যবস্থা না নিলে আমরা নিজেরা টাকা তুলে রাস্তাঘাট ঠিক করবো।"
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, "কুমিল্লায় বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদের নির্যাতিত হতে হয়েছে। এখনো আমাদের লড়াই শেষ হয়নি। কুমিল্লাবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কারণ, আওয়ামী লীগ আবার ফিরে এলে চার কোটি সন্তানের নিরাপত্তা থাকবে না।"
তিনি আরো বলেন, "আপনি বিএনপি করেন, জামায়াত করেন তাতে আমাদের সমস্যা নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগের সঙ্গে সখ্যতা আমরা কখনো মেনে নেব না।"
এসময় সভাপতিত্ব করেন এনসিপির উত্তরবঙ্গের মুখ্য সমন্বয়ক সার্জিস আলম। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিপা, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ, যুগ্ম সদস্য সচিব আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, জয়নাল আবেদীন শিশির, জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক এডভোকেট তরিকুল ইসলাম, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক নাভিদ নওরোজ, কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাফসা জাহান, কেন্দ্রীয় নেতা সালাউদ্দিন জামিল সৌরভ এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম।
সমাবেশের শুরুতে ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং সভাটি শোকসভা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
এর আগে বিকেল ৫টায় কুমিল্লার পদুয়ারবাজার বিশ্বরোড থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে টাউন হল মাঠে এসে শেষ হয়। এতে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে এনসিপি-সমর্থক শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে অংশ নেয়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের ১৮তম দিনের আলোচনায় নির্বাচন কমিশনের প্রধান এবং অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগ বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে
আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দিনব্যাপী আলোচনা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারের নিয়োগের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিদ্যমান সংবিধানের ১১৮ (১) সংশোধন করে নতুন সংশোধিত প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। সংশোধিত প্রস্তাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং আইনে নির্ধারিত সংখ্যক নির্বাচন কমিশনার সমন্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন কমিশন থাকবে।
তিনি আরও বলেন, স্পিকারের নেতৃত্বে ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি বাছাই কমিটি গঠিত হবে। এই কমিটি বিদায়ী নির্বাচন কমিশনের প্রধান এবং অন্যান্য কমিশনারগণের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিন পূর্বে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য কমিশনারগণকে নিয়োগ করার উদ্দেশ্যে সংসদে প্রণীত আইনের দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ‘ইচ্ছাপত্র’ ও প্রার্থীর সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি আহ্বান করাসহ নিজস্ব উদ্যোগে উপযুক্ত প্রার্থী অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, স্পিকারের নেতৃত্বে বাছাই কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হবেন বিরোধী দলীয় ডেপুটি স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেতা ও প্রধান বিচারপতির প্রতিনিধি হিসেবে আপীল বিভাগের একজন বিচারপতি।
তিনি জানান, এই কমিটি আইনের দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে অনুসন্ধানে প্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গের জীবনবৃত্তান্তসমূহ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যাচাই-বাছাই করে, সর্বসম্মতিক্রমে তাদের মধ্য থেকে একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্ধারিত প্রতিটি পদের বিপরীতে একজন করে নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট প্রেরণ করবেন এবং রাষ্ট্রপতি তাদেরকে কার্যভার গ্রহণের তারিখ হতে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য নিয়োগ দান করবেন।
এ সময় তিনি আরও জানান যে, স্পিকারের তত্ত্বাবধানে জাতীয় সংসদ সচিবালয় এই কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবে। বিদায়ী কমিশনের মেয়াদ শেষ হলে অথবা অন্য কোনো কারণে পদ শূন্য হলে পরবর্তী দিন হতে নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারগণ দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, এ ছাড়া, আজকের আলোচনার পর জাতীয় সংসদ কর্তৃক নির্বাচন কমিশনের ওপর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পৃথক আইন ও আচরণ বিধি প্রণয়নের বাধ্যবাধকতা সংযুক্ত করা হয়েছে।
তবে, বিদ্যমান সংবিধানের উপানুচ্ছেদ ২, ৩, ৪, ৫ ও ৬ অপরিবর্তিত থাকবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।
এ আলোচনায় কমিশনের সদস্য হিসেবে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দ্রুত জুলাই সনদ প্রণয়নের লক্ষ্যে রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অমীমাংসিত সকল বিষয়ে ঐকমত্য গড়তে আগামী কিছুদিন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা চলমান থাকবে।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, বিমান দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত সকল পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সিঙ্গাপুর থেকে একটি বিশেষায়িত মেডিকেল টিম ঢাকায় এনে গুরুতর দগ্ধ ও আহত রোগীদের উন্নত আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উপদেষ্টা আজ বুধবার রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)-এ চিকিৎসাধীন উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধ রোগীদের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে গিয়ে এ কথা বলেন।
তিনি দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করেন।
আহতদের মধ্যে স্কুলের ছাত্র, শিক্ষক ও উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা সিএমএইচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
উপদেষ্টা হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং চিকিৎসকদেরকে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন।
এ সময় তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় আহত চিকিৎসাধীন ছাত্রদের শারীরিক অবস্থারও খোঁজখবর নেন।
উত্তরায় সংঘটিত এ বিমান দুর্ঘটনাকে সমগ্র জাতির জন্যই অত্যন্ত বেদনাদায়ক হিসেবে উল্লেখ করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা।
তিনি নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
উপদেষ্টা নিহত ও আহতদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি দুর্ঘটনায় দগ্ধ সকল রোগীর দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন উপদেষ্টা।
ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে সরকারের পক্ষ থেকে করণীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে নৌপরিবহন উপদেষ্টা জানান।
পরিদর্শনকালে হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ উপস্থিত ছিলেন।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় গোয়ালঘর থেকে চুরি হওয়া চারটি গরু ও একটি পিকআপ ভ্যান উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ভোরে উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের উত্তর হিঙ্গাজিয়া এলাকা থেকে এসব উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গরুর মালিক আলমাস মিয়া ওইরাতে তার গোয়ালঘর তালাবদ্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েন। ভোরে ঘুম থেকে উঠে তিনি দেখতে পান গোয়ালঘরের তালা ভাঙা এবং গরুগুলো চুরি হয়ে গেছে। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, ভোরের দিকে উত্তর হিঙ্গাজিয়া এলাকায় রাস্তার পাশে একটি পিকআপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সন্দেহ হলে স্থানীয়রা ধাওয়া দিলে গাড়িতে থাকা লোকজন পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পিকআপ ভ্যান, চুরি যাওয়া চারটি গরু ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওমর ফারুক জানান, এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। চোরচক্রকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বোন নাজিয়া তাবাসসুম নিঝুম (১৩) মৃত্যুর ১দিন পর মৃত্যু হয়েছে তার ভাই আরিয়া নাশরাফ নাফির (৯)। সে উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল। বোনের মৃত্যুর ১দিন পরে ভাই চলে গেলো না ফেরার দেশে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মৃত্যু হয় নাজিয়ার ছোট ভাই আরিয়া নাশরাফ নাফির। এরআগে সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে মৃত্যু হয় নাফির বড় বোন নাজিয়ার। এরপর মঙ্গলবার দুপুরে নিঝুমের জানাজা নামাজ শেষে উত্তরার একটি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
নাজিয়া ও নাফি ভোলার দৌলতখান উপজেলার দক্ষিণ জয়নগর ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের আশরাফুল ইসলাম নিরবের কন্যা ও পুত্র। দুই সন্তানের মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বাবা-মা ও পরিবারের স্বজনরা।
নাজিয়া ও নাফি বাবা-মায়ের সঙ্গে উত্তরার কামারপাড়ায় থাকত। নাজিয়া তাবাসসুম নিঝুম মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ও তার ভাই আরিয়া নাশরাফ নাফি ওই প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিলেন।
তাদের স্বজনরা জানান, সোমবার দুপুরে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে আগুন লাগার সময় স্কুল চত্বরেই ছিল নাজিয়া ও নাফি। আগুনে তারা গুরুতর দগ্ধ হওয়ার পর তাদের জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে নেয়া হয়। নাজিয়ার শরীরের ৯০ শতাংশ ছোট ভাই নাফির শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় তাদের হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। সোমবার রাত ৩টার দিকে নাজিয়া চলে যায় আর মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নাফি চলে যান না ফেরার দেশে।
তারা আরো জানান, নাজিয়া মারা যাওয়ার পর তার লাশ গ্রামের বাড়ি ভোলায় নেওয়ার কথা থাকলেও তার ভাই চিকিৎসাধীন থাকায় লাশ ভোলায় আনা হয়নি। জানাযা শেষে উত্তরায় দাফন করা হয়েছে।
এদিকে নাজিয়া ও নাফির মৃত্যুর খবরে ভোলায় তাদের গ্রামের বাড়িতে স্বজন ও স্থানীয়দের মধ্যে চলছে শোকের মাতম কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে আকাশ বাতাস। নাতি নাতনীর শোকে গ্রামের বাড়িতে কান্নায় বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন তাদের দাদা। বিলাপ করে কাদঁছেন খেলার সাথী চাচাতো ভাই বোনগুলো। একটি সুন্দর পরিবারে হঠাৎ ঝড়ের মতো নেমে আসা এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউ। দুই শিশু সন্তান হারিয়ে এক মুহূর্তেই যেন থেমে গেছে বাবা- মায়ের হাজারো স্বপ্ন ও সংসারের সমস্ত চলার গতি।
নাজিয়ার চাচা হাসান জানান, সন্তানদের ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বানানোর জন্য ভালো স্কুলে পড়ালেখা করাবেন বলে ১৫-১৬ বছর আগে ভোলা ছেড়ে ঢাকায় চলে যান নিরব। বাসা ভাড়া নেন উত্তরার কামারপাড়া এলাকায়। ছেলেমেয়েকে ভর্তি করেছিল উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। তাদের বাবার সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। শেষ হয়ে গেলো একটি সুন্দর সংসার।
নাজিয়া তাবাসসুম নিঝুম ও তার ভাই আরিয়া নাশরাফ নাফি সর্বশেষ ২০২২ সালে বাবা মায়ের সঙ্গে ভোলায় দাদার বেড়াতে এসেছিলেন।
নওগাঁর পোরশায় নিজ বাড়ি থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৩ জুলাই) সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নের শীতলি ফকিরপাড়া গ্রাম থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন, শীতলী ফকিরপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে হাই বাবু (৪৭) এবং তার স্ত্রী মোমেনা বেগম (৩৫)।
স্থানীয় এবং থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের মতোই স্বামী-স্ত্রী এবং তার ছোট দুই মেয়েকে নিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন তারা। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে তার মেয়ে দেখেন তার মা বিছানায় পড়ে রয়েছেন এবং তার বাবা গলায় রশি দিয়ে তীরের সঙ্গে ঝুলছেন। ঘরের দরজা খুলে তার ছোট মেয়ে আশেপাশের প্রতিবেশীদেরকে বিষয়টি জানায়। প্রতিবেশীরা ঘরে এসে তাদের দুজনকেই মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ গুলোকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, স্থানীয়রা খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। মরদেহ গুলোকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে।
নাটোরের বড়াইগ্রামে ট্রাক ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে অন্তত ৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের সকলেই মাইক্রোবাসের যাত্রী ছিলেন।
বুধবার (২৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সিরামপুর আইড়মারী ব্রিজ এলাকায় বনপাড়া- হাটিকুমরুল মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে ৫ জন নারী এবং একজন পুরুষ। তবে এখন পর্যন্ত তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
এ বিষয়ে বরাইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, নাটোর থেকে ঢাকাগামী মাইক্রোবাসের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৫ জন নিহত হন।
এ ছাড়া চালকসহ আহত ২ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে নিলে সেখানে আরও একজনের মৃত্যু হয়। আহত চালকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন ওসি গোলাম সারোয়ার।