লালমনিরহাট এয়ারপোর্ট এলাকায় এক কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার মূল আসামি ফারুক হোসেনকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার দুপুরে আসামিকে আদালতে তোলা হলে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠান আদালত।
পুলিশ জানায়, গত ১৭ জুন বিকেলে ওই কলেজছাত্রী তার প্রেমিক ফারুকের সঙ্গে ঘুরতে লালমনিরহাট এয়ারপোর্টের রানওয়ে এলাকায় যান। ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে সন্ধ্যা নামলে তিন সহযোগীর সহায়তায় পাশের ভুট্টাক্ষেতে নিয়ে গিয়ে ফারুক তাকে ধর্ষণ করেন। পরে তার দুই সহযোগীও ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। ওই অবস্থায় সেই ছাত্রী তার মোবাইল ফোন থেকে বড় বোনকে কল দিলে ধর্ষকরা বিষয়টি টের পেয়ে যায়। তারা ওই কলেজছাত্রীর মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
পরে গুরুতর অবস্থায় পার্শ্ববর্তী এভিয়েশন অ্যান্ড এরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের মহাসড়কে এসে এক পথচারীর মোবাইল ফোন থেকে ছাত্রীটি তার পরিবারের কাছে ফোন করেন। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্য ও কয়েকজন সংবাদকর্মী ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ছাত্রীটিকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পরদিন ১৮ জুন ওই কলেজছাত্রীর বোন বাদী হয়ে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় ফারুক ও তার সহযোগীদের আসামি করা হয়।
আসামিদের মধ্যে প্রথমে সোয়াইব সরকার সজীব (১৯), আনছার আলী ওরফে গাঠু আনছার ওরফে সোহাগ (৫০) ও মাসুদ (৩০) নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর লালমনিরহাট সদর থানার ওসি (তদন্ত) স্বপন কুমার সরকার তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তার করেন।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওমর ফারুক দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘কলেজছাত্রী গণধর্ষণের ঘটনায় আমরা মূল আসামি ফারুকসহ সব আসামিকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছি। দুই-চার দিনের মধ্যে আমরা এ মামলায় চার্জশিটও আদালতে দাখিল করব।’
নরসিংদীতে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে শিল্পী আক্তার নামে এক তরুণী তার স্বামীর বাড়িতে অনশন করছে। ঘটনাটি ঘটেছে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের সাতপাখিয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের বাড়িতে। অনশনরত শিল্পী আক্তার নরসিংদীর পলাশ উপজেলার দড়িহাওলা গ্রামের জালাল মিয়ার মেয়ে। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে সাতপাখিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে তরুণী অবস্থান করছে। এ খবর পেয়ে শিল্পী আক্তারের স্বামী ও তার পরিবারের লোকেরা ঘরে তালা দিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। অনশনরত শিল্পী আক্তারের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান আজ থেকে ৬ বছর পূর্বে লেবালন প্রবাসী মো: ইমরান মোল্লার সাথে মোবাইল ফোনে তার পরিচয় ঘটে। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রায় ২ মাস পূর্বে ইমরান মোল্লা প্রেমের টানে লেবালন থেকে নিজ বাড়িতে চলে আসে। অতপর গত ১২.০৬.২৫ইং তারিখে তাদের পরিবারের সম্মতি না নিয়ে ৩ লাখ টাকা কাবিনমুলে ইসলামী শরিয়ত মতে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। পরবর্তীতে স্বামী-স্ত্রী নরসিংদী শহরের তরোয়া মহল্লায় একটি ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকে। সুখেই চলছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। কিন্তু শিল্পী আক্তারের পরিবার গরিব বিধায় তার শ্বশুর-শাশুরী বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি।
প্রায় দেড় মাস ঘর সংসার করার পর শিল্পী আক্তারের স্বামী ইমরান মোল্লা পরিবারের চাপ সহ্য করতে না পেরে সে তার স্ত্রী শিল্পী আক্তারকে ফেলে রেখে পিত্রালয়ে চলে যায়। এদিকে অসহায় শিল্পী আক্তার কোন উপায়ন্তর না দেখে তার স্বামীর বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর দাবি নিয়ে অনশন করতে থাকে। পরে শিল্পী আক্তারের স্বামী ইমরান মোল্লা ও তার পরিবারের লোকেরা এসে শিল্পী আক্তারকে মারধর করতে থাকে। এ সময় শিল্পী আক্তার ত্রিপল ৯৯৯ এ খবর দিলে শিবপুর থানা পুলিশ অনশনরত শিল্পী আক্তারকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পুলিশের সহযোগিতায় তার পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দেয়। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা ইমরান মোল্লাকে জিজ্ঞাসা করতে গেলে সে দৌড়ে পালিয়ে যায়। বর্তমানে সবকুল হারিয়ে শিল্পী আক্তার এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। না পারছে পিত্রালয়ে থাকতে, না পাচ্ছে স্বামীর স্বীকৃতি। সে স্থানীয় প্রশাসনের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
শিবপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আফজাল হোসাইন জানান, এব্যাপারে কোন পক্ষ থেকে অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কুমিল্লা দেবিদ্বারে গাছের চারা হাতে নিয়ে মাদককে লাল কার্ড দেখিয়ে দেশপ্রেমের শপথ নিয়েছে ২০০ শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) উপজেলার বরকামতা নলিণী শিক্ষা নিকেতন বিদ্যালয় মাঠে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘের উদ্যোগে সংগঠনের সদস্যদের জমানো টিফিনের টাকায় গাছের চারা কিনে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।
লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘের প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সভাপতি কাওসার আলম সোহেলের সভাপতিত্বে গাছের চারা বিতরণে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জ্যোৎস্না রানী কর, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদ ভূইয়া, দেবিদ্বার শাখার সভাপতি ইয়াছিন মুন্সী, সাধারণ সম্পাদক রাগীব মাহতাব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন বিন জামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ সরকার, প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ হোসাইন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক সাহেদ ইসলাম, সদস্য ফারহান, শাকিল, সোলাইমান, ফাহাদ প্রমুখ।
লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাওসার আলম সোহেল জানান, সংগঠনটির সব সদস্য শিক্ষার্থী। তারা এক দিনের টিফিনের জমানো টাকায় গাছের চারা কিনে সারাদেশে বিতরণ করছেন। দেশের বিভিন্ন জেলায় গাছের চারা বিতরণ কর্মসূচি চলমান। তাঁরা এবছর বিনামূল্যে ৫০ হাজার গাছের চারা বিতরণ করবেন। তিনি শিক্ষার্থীদের গাছের চারা হাতে নিয়ে মাদক, বাল্য বিবাহকে না ও দেশপ্রেমে জাগ্রত হওয়ার শপথ পাঠ করান।
পঞ্চগড়ের বিভিন্ন সীমান্ত নদ নদী গুলোতে ক্ষতিকর গ্যাস ট্যাবলেট বা রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করছে এক শ্রেণীর অসাধু জেলে এবং নদী পাড়ের মানুষ। এতে মাছ সহ জীব বৈচিত্র হুমকির মুখে পড়ছে। এসব মাছ বিক্রী হচ্ছে হাট বাজারে। বিষাক্ত জীবানু আক্রান্ত এসব মাছের ক্ষতিকর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ছে মানুষের দেহে। পঞ্চগড় জেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে প্রায় ৪৫ টি নদ নদী। এসব নদ নদীতে রয়েছে নানা প্রজাতির দেশী মাছ। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, নদীতে পানি না থাকা এবং নদ নদীতে বোরো ধানের আবাদের কারণে অনেক নদীতে আগের মতো আর মাছ পাওয়া যায়না। অনেক প্রজাতির মাছ এখন বিলুপ্তের পথে। এসব নদ নদীর মাছ মুলত: এ অঞ্চলের মানুষের আমিষের চাহিদা মিটাতে বিরাট ভূমিকা রাখে। মাছ ধরেই জেলায় প্রায় ৫ সহ¯্রাধিক জেলে জীবীকা নির্বাহ করে থাকেন। এসব নদী থেকে পয়া, গচি, মাগুর, শিং, শোল, বৈরালী, চিতল, চিলি,পুঁুটি,শাটি সহ আরও বিভিন্ন প্রকার মাছ পাওয়া যায়। অনন্য স্বাদের এসব মাছ হাট বাজারে উচ্চ মুল্যে বিক্রী হয়। করোতোয়া, মহানন্দা, ডাহুক, চাওয়াই, তালমা,পাথরাজ হচ্ছে এই জেলার সবচেয়ে বড় নদী। এসব নদীতে সারা বছর দেশী মাছ পাওয়া যায়। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে এসব নদীতে রাতের অন্ধকারে গ্যাস ট্যাবলেট বা বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করা হয়। জেলে এবং স্থানীয় অসাধুরা এভাবে মাছ শিকার করছেন। অনেকে বলছেন জেলেরা রাতের বেলা প্রান্তিক এলাকায় গিয়ে নদীর একটি বিশেষ স্থানের পানিতে গ্যাস ট্যাবলেট অথবা বিষ মিশিয়ে দেয়। ১ থেকে দু ঘন্টা পর মাছেরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। অনেক মাছ মারাও যায়। মাছেরা অসুস্থ হয়ে পানিতে ভেসে বেড়ায়। এসময় জাল দিয়ে অসুস্থ এবং মৃত মাছগুলোকে তুলে আনেন তারা। এই বিষ বা গ্যাস ট্যাবলেট কয়েক কিলোমিটার জুড়ে নদ নদীর পানিতে মিশে যায়। নদীর মৎস্য অভয়াশশ্রমগুলোর আশে পাশেই বেশি বিষ প্রয়োগ করা হয়। স্থানীয় সচেতন মহল এবং পরিবেশ কর্মীরা বলছেন বিষ প্রয়োগে নদ নদীতে মাছ শিকারের ফলে এর নানা ধরনের খারাপ প্রভাব পড়ছে। নদ নদীর মাছ সহ জীব বৈচিত্র হুমকির মুখে পড়েছে। এসব মাছ জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রী করে স্থানীয় জেলে এবং মাছ ব্যাবসায়িরা। বিষ আক্রান্ত এসব মাছ খেলে স্বাস্থ্যগত সমস্যার আশংকাও করছেন তারা। বোদা উপজেলার ফুলতলা গ্রামের শামসুল ইসলাম জানান, সরকারী ভাবে করতোয়া নদীর বিভিন্ন স্থানে মাছের অভয আশ্রম গড়ে তোলা হয়েছে। মৎস্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে এসব আশ্রমে দেশী মাছ সংরক্ষন করার কথা থাকলেও সমিতির অন্তর্ভুক্ত জেলেরা যোগসাজশে রাতের আঁধারে আশ্রমের মা মাছ শিকার করে পাশ্ববর্তী জেলায় বিক্রি করছে। প্রাণ প্রকৃতি পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা কারিগরের নির্বাহী পরিচালক সরকার হায়দার জানান, পঞ্চগড়ের ৫০ নদ নদী থেকে কয়েকশটন মাছ উৎপাদিত হয়। যা এই জেরার আমিষের চাহিদার একটি বড় অংশ পুরন করে। কিন্তু সচেতনতার অভাবে অবৈধ পন্থায় মাছ শিকারের কারণে ধীরে ধীরে দেশী মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় জেলে এবং নদীপাড়ে বসবাসরত মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এটা ভয়ংকর অপরাধ। এই মাছ খেয়ে মানুষের ক্যানসার সহ নানা রকম ভয়ংকর রোগ হতে পারে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) পঞ্চগড় শাখার সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম খায়ের বলেন নদ নদীতে বোরো আবাদে সার কিটনাশক প্রয়োগ করা হয়। অন্যদিকে রাতের অন্ধকারে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন করা হচ্ছে। এটা অপরাধ। এ বিষয়ে সরকারের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। আমাদের সংস্থার পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসন কে অবহিত করা হয়েছে। তারপরও অবৈধ ভাবে মাছ শিকার থামেনি। এ বিষয়ে জেলে এবং নদী পাড়ের মানুষদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কে এম হালিম বলেন বিষয়টি সম্পর্কে আমরা জেনেছি। উপজেলা মৎস্য অফিসে বিষয়টি জানানো হয়েছে। জেলেদের কাছে বার্তা পৌছে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় টিনশেড ঘরে আগুন লেগেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
সোমবার রাত ১১ টার দিকে ফতুল্লার ইসদাইর এলাকায় এ ঘটনায় ঘটে। আগুনে অন্তত ২০টি টিনশেড ঘর পুড়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইসদাইর এলাকার তারা মিয়ার টিনশেড ঘরের ভাড়াটিয়াদের বাসায় আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। খবরপেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে প্রায় একঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। তবে আগুনে বাড়ির মালামাল পুড়ে গেছে। আগুনে অন্তত ২০টি টিনশেড ঘর পুড়ে গেছে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহজাহান বলেন, মন্ডলপাড়া ও হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ ঘটনায় হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত্র হয়ে। তদন্ত করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।
পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে টানা বৃষ্টি ও পাহাড় থেকে নেমে উজানের পানিতে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে, হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাঙামাটির আইকন খ্যাত ঝুলন্ত সেতুর পাটাতনে পানি ছুই ছুই। মঙ্গলবার দুপুর ২ টা দিকে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সেতুর পাটাতনের অনেক স্থানে ২-৩ ইঞ্চি পানি উঠতে শুরু করেছে।
রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুতে ঘুরতে আসা পর্যটক নাসির বলেন, বর্ষা মৌসুমে রাঙামাটির প্রকৃতি অনেক সুন্দর তাই ঘুরতে আসলাম কিন্তু এসে কিছুটা মন খারাপ হয়ে গেলো ব্রীজের উপর পানি আসতে শুরু করেছে।
রাঙামাটি পর্যটন বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রমজান আলী বলেন, কাপ্তাই লেকের পানি বৃদ্ধি পেলে প্রতি বছর ঝুলন্ত সেতু পানিতে ডুবে যায়। আজকে সকাল থেকে সেতুর পাটাতনে পানি ছুই ছুই অবস্থা। যেকোন সময় সেতু পানিতে তলিয়ে যাবে। তিনি বলেন, সেতু ডুবে গেলে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যায় ,পর্যটকরা আর ঝুলন্ত সেতুতে বেড়াতে আসেনা।
এ প্রসঙ্গে রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, এই বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টির কারনে উজানের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লেকের পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারনে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুর পাটাতনে পানি প্রায় ছুই ছুই।মনে হচ্ছে শীঘ্রই পাটাতন ডুবে যাবে। তিনি বলেন,যদি সেতু ডুবে যায় নিরাপত্তার স্বার্থে কতৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে দর্শনার্থীদের চলাচল সাময়িক বন্ধ রাখবো।
কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তথ্য মতে, এ সময় হ্রদে পানি থাকার কথা ৮৯ এমএসএল। হ্রদে পানি রয়েছে ১০৫.২৪ এমএসএল। ৫টি ইউনিট দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ২২২ মেগাওয়াট।
উল্লেখ্য, কাপ্তাই হ্রদের পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল হলেও ১০৫ এমএসএল হলেই প্রতি বছর ঝুলন্ত সেতুটি ডুবে যায়। বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগের কথা বললেও কার্যকর কোনও ভূমিকা চোখে পড়েনি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেছেন, “জুলাই বিপ্লব আমাদের একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের পথ দেখিয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কিছু পদক্ষেপের কারণে এ অর্জন বিতর্কিত করার প্রচেষ্টা চলছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”
আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের আয়োজনে এবং সোশ্যাল ওয়ার্ক ডিবেটিং ক্লাবের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত “জুলাই স্মৃতি প্রথম আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৫”-এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
উপাচার্য বলেন,“যে প্রজন্ম ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক আন্দোলনে যুক্তি, বুদ্ধিমত্তা এবং ত্যাগের মাধ্যমে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিল আজকের এই বিতার্কিক তরুণরাই সেই চেতনার ধারক। আমরা চাই, যুক্তির চর্চা ও মুক্তবুদ্ধির আলোয় শিক্ষার্থীরা গড়ে উঠুক মানবিক ও সাহসী নেতৃত্বে।”
এর আগে ফার্মেসি বিভাগ ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মধ্যকার ফাইনাল প্রতিযোগিতায় ফার্মেসি বিভাগ চ্যাম্পিয়ন এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ রানার আপ হয়। তানজিম পাটোয়ারী ‘ডিবেটার অব দ্য ফাইনাল’ এবং আশিকুর রহমান আকাশ ‘ডিবেটার অব দ্য টুর্নামেন্ট’ নির্বাচিত হন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির মডারেটর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নূরুল্লাহ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ক্লাবের মডারেটর ড. বুশরা জামান। সভাপতিত্ব করেন ক্লাব সভাপতি নাহিদ হাসান রাসেল এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক ইসরাত জাহান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অতিথিরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ২৮ জুলাই (সোমবার) ২০২৫ তারিখে জনাব মনিজা খাতুন, সিনিয়র সহকারী সচিব ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ-এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি-এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -সোনারগাঁও, জোবিঅ-সোনারগাঁও আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার বেইলর এবং নয়াপুর এলাকার বিভিন্ন স্থানে ০৪ টি স্পটে অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, আনুমানিক ৬.৫ কি.মি এলাকার প্রায় ২০০০ টি আবাসিক বার্ণারের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময়ে, ২”ডায়া বিশিষ্ট ২১৫ ফিট, ১.৫" ডায়া বিশিষ্ট ৫০ ফিট, ১.২৫" ডায়া বিশিষ্ট ৭০ ফিট এমএস লাইন/পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও প্লাস্টিক পাইপ উৎসস্থলে বিনষ্ট করা হয়। অবৈধ বিতরণ/সার্ভিস লাইন উচ্ছেদপূর্বক উৎস পয়েন্ট হতে কিলিং/ ক্যাপিং করা হয়েছে।
একই দিনে, আঞ্চলিক ভিজিল্যান্স বিভাগ-নারায়ণগঞ্জ এর সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ টীম কর্তৃক আবিবি-নারায়ণগঞ্জ এর অধীনস্থ জোবিঅ-মুন্সীগঞ্জ এবং আবিবি-সোনারগাঁও এর আওতাধীন জোবিঅ-মেঘনাঘাট এলাকায় ভোর ৬.০০ টা থেকে পর্যায়ক্রমে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযান পরিচালনাকালে ১. আপন বোর্ড মিলস (৩৭০-০০০০২৯) (হাউস লাইনে অতিরিক্ত পোর্ট পরিলক্ষিত হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে পোর্টগুলো কিলিং এবং ওয়েল্ডিং করা হয়)। ২.স্টার ফিশিং এন্ড টুয়াইন ফ্যাক্টরী (৮৭০-০০০০৪৬) পরিদর্শনকালে পরিলক্ষিত অতিরিক্ত পাজিং পয়েন্ট কেটে ওয়েল্ডিং করে স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়। ৩. আইডিয়াল টেক্সটাইল মিলস লিঃ (৩৭০-০০০০০৯) (হাউস লাইনে অতিরিক্ত পোর্ট পরিলক্ষিত হওয়ায় পোর্টগুলা কেটে ওয়েল্ডিং করে স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়। ৪. এভারেস্ট পাওয়ার জেনারেশন লিঃ-এর গ্রাহক আঙ্গিনা পরিদর্শনকালে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়নি এবং ৫. মেসার্স তন্ময় ফিসিং নেট ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ পূর্বের বিচ্ছিন্নকৃত গ্রাহক। পরিদর্শনের লক্ষ্যে গ্রাহক আঙ্গিনায় প্রবেশ করলে গ্রাহক প্রতিনিধি কর্তৃক বাধা প্রদান করায় পরিদর্শন করা সম্ভব হয়নি।
১২ দফা মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যকে ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবিলম্বে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা করে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পথ সুগম করার আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ভালো কিছু ঘটছে। আমি আজ (মঙ্গলবার) পত্রিকায় দেখেছি, সব রাজনৈতিক দল ১২ দফা সংস্কার প্রস্তাবে একমত হয়েছে। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।’
তিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ ও তার দলের কঠোর পরিশ্রমের জন্য প্রশংসা করেন, যারা সংস্কার ইস্যুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে কাছাকাছি আনতে কাজ করেছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই—সংস্কারগুলো বিলম্ব না করে সম্পন্ন করুন এবং অবিলম্বে (জুলাই জাতীয়) সনদ ঘোষণা করুন। দয়া করে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যে তারিখে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, সেই অনুযায়ী নির্বাচন দিন। জাতি সেখানে আশার আলো দেখেছে, অনুপ্রেরণা পেয়েছে। জনগণকে তাদের ভোটাধিকারসহ অন্যান্য অধিকার ফিরিয়ে দিন।’
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শফিউল বারী বাবুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শফিউল বারী বাবু স্মৃতি সংসদ এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
ফখরুল বলেন, অনেকে বিএনপিকে সমালোচনা করে বলেন, দলটি নাকি সংস্কার চায় না। ‘কিন্তু সংস্কারের ধারণা আমাদের কাছ থেকেই এসেছে—আমরাই এটা শুরু করেছি।’
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বাকশালের একদলীয় শাসনব্যবস্থা বিলুপ্ত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেন এবং গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন, যা ছিল তার রাজনৈতিক সংস্কারের অংশ।
অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ হিসেবে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান রুদ্ধ ও ব্যর্থ অর্থনৈতিক মডেল থেকে বেরিয়ে এসে মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু করেন, যার ফলে মাত্র সাড়ে তিন বছরে দেশের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি শাসনব্যবস্থার পরিবর্তে সংসদীয় গণতন্ত্র চালু করেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাও প্রবর্তন করেন এবং নারী ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়ন করেন।
‘তাই বিএনপি কখনো সংস্কারকে ভয় পায়নি—আমরা সবসময় সংস্কারকে স্বাগত জানিয়েছি,’ বলেন ফখরুল।
১২টি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ঐকমত্য গঠনে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তবে কিছু প্রস্তাব নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে, যেমন—আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি। এটি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে অপরিচিত।’
তিনি বলেন, ‘সংসদের নিম্নকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের মতো প্রস্তাব এসেছে—যা আমাদের জনগণ বোঝে না। তারা এখনো ইভিএম ভোটিং নিয়ে বিভ্রান্ত—তাহলে পিআর পদ্ধতি কীভাবে বুঝবে?’
কিছু রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার শর্ত দেওয়ায় ফখরুল সমালোচনা করে বলেন, ‘এই ধরনের বিভ্রান্তিকর ধারণা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। জনগণকে এমন একটি ভোটিং ব্যবস্থা দিতে হবে, যা তারা বোঝে এবং যা তাদের যথার্থ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতা ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিদেশি ধারণা দিয়ে দেশের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা উচিত নয়।
নওগাঁর নিয়ামতপুরে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে খাটিয়া (গরু বা ছাগল বেঁধে রাখার খুটিতে আঘাত করার বস্তু) দিয়ে আঘাত করে হত্যার দায়ে মোস্তাফিজুর রহমান (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থ দন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসাইন এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইকবাল জামিল চৌধুরী লাকি রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ওই গৃহবধুর নাম রানী বেগম। তিনি জেলার মান্দা উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের আনিসুর রহমান সাকিদারের মেয়ে।
রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী মোস্তাফিজুর রহমান (৫০) নিয়ামতপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে।
আদলত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১০ আগস্ট রাত সাড়ে ১০ টার দিকে মোস্তাফিজুর তার নিজ বাড়িতে স্ত্রী রানী বেগমের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা যৌতুকের দাবীতে কাঠের খাটিয়া দ্বারা মাথায় আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত এবং জখম করে হত্যা করেন। উক্ত ঘটনায় রানীর বাবা আনিসুর রহমান বাদী হয়ে নিয়ামতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১৪ জন সাক্ষী এবং আসামি পক্ষ থেকে ২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।
সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দীর্ঘদিন ধরে চলা এ মামলায় মামলায় আসামি মোস্তাফিজুর রহমানের উপস্থিতিতে বিচারক তাকে মৃত্যুদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের রায় প্রদান করেন। এ রায়ে বাদী পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ।
পাবনার সাঁথিয়ায় খেলনা পিস্তল নিয়ে ডাকাতি করতে গিয়ে জনতার হাতে দুই ডাকাত আটক হয়েছে।আটককৃতরা হলেন সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের পুণ্ডুরিয়া গ্রামের সুজন (২২) ও একই গ্রামের বেলানন ব্যাপারীর ছেলে রাজীব হোসেন (২০)।
তাদের সাঁথিয়া থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করেছে জনতা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,সোমবার (২৮ জুলাই) রাত ৮টার দিকে উপজেলার কাশিনাথপুর বাজারের চাউল পট্টিতে হানা দেয় দুই যুবক। তারা চাউল পট্টিতে খান রাইস মিলের মালিক শামসুর রহমানের দোকানে ঢুকে তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেবার চেষ্টা করেন। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ী ও জনতা এগিয়ে এসে ডাকাতদের হাতেনাতে খেলনা পিস্তলসহ আটক করে। আটকৃত ডাকাতদের জনতা সাঁথিয়া থানা পুলিশর কাছে হস্তান্তর করেছে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,ডাকাত দুইজনকে সাঁথিয়া থানা পুলিশের হাতে হস্তান্তর করেছে।
তাদের বিরুদ্ধে আইননানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মাগুরা শহরে স্কুল ও হাসপাতালের সামনে ফেলা হচ্ছে বাসা বাড়ির ময়লা -আবর্জনা, মানা হচ্ছে না কোন বিধি নিষেধ। ফলে বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়েছে কোমলমতি শিশুসহ সাধারণ মানুষ।
মাগুরা শহরের পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয় , পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালের সামনে মহাসড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে এসব ময়লা- আবর্জনা। এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলার কারণে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে। প্রতিদিন শতশত ছেলে মেয়েরা এই সড়ক দিয়ে স্কুলে যায় এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে।
বিশেষ করে, পিটিআই স্কুলের সামনে ময়লার স্তূপ থেকে বেশি দুর্গন্ধ ছড়ায় যার কারনে আশেপাশের মানুষ নানা রকম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ।
পি টিআই স্কুলের এক অভিভাবক তামান্না তাবাসসুম বলেন , প্রতিদিন বাচ্চাকে নিয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় নাকে কাপড় চেপে ধরেও এই দুর্গন্ধ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় না।
এরকম আরও অনেক অভিভাবকের দাবি স্কুলের পাশে ময়লা ফেলা বন্ধ করা হোক।
দীর্ঘদিন ধরে একই স্থানে ময়লা ফেলার কারণে সেটা এখন ভাঙারে পরিণত হয়েছে , একটু বৃষ্টি নামলেই ময়লাগুলো মহাসড়কের উপর চলে আসে ফলে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচলেও অসুবিধা হয়। এছাড়াও ময়লার স্তুপের পাশ দিয়েই পিটিআই পাড়া ঢোকার রাস্তা মহল্লা বাসীরাও পড়েছেন বিপাকে।
এ ব্যাপারে মাগুরা পৌরসভার প্রশাসক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ আব্দুল কাদের দৈনিক বাংলা কে জানান , পৌরসভার ময়লা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট ভ্যান গাড়ি এবং ড্রামের ব্যবস্থা আছে কিন্তু শহরের কিছু ভদ্র সমাজের লোকজন টাকা খরচের ভয়ে নিজেরাই পলিথিনের ব্যাগে করে এই ময়লা গুলো ফেলেন, ফলে জনসাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। এটা বন্ধ করা পৌর কর্তৃপক্ষের একার দ্বারা সম্ভব নয় ,আগে জনসাধারণকে সচেতন হতে হবে ।সবাইকে একসঙ্গে এটাকে প্রতিরোধ করতে হবে ।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এসব স্থান থেকে দ্রুত ময়লা অপসারণ ও ময়লা ফেলা বন্ধ করতে পৌর কর্তৃপক্ষকে মাইকিং ও জরিমানা সহ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে বলেছেন ,অন্যথায় মানববন্ধন সহ নানা কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন।
গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির নিয়মিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৯ জুলাই মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জনাবা তনিমা আফ্রাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) জনাবা নূরী তাসমিন উর্মি, কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা।
সভায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, চলমান সামাজিক সমস্যা এবং সমাধানের উপায় নিয়ে আলোচনা হয়। সকলের অংশগ্রহণে আগামী দিনে অপরাধ দমন, সামাজিক সম্প্রীতি ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে করণীয় নির্ধারণ করা হয়।সভায় বক্তারা বলেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সাধারণ জনগণকে আরও বেশি সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। মাদক, কিশোর গ্যাং, ইভটিজিং, বাল্যবিবাহসহ সামাজিক অপরাধ রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
সকলে সম্মিলিতভাবে একটি নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও সচেতন সমাজ গঠনে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সভা শেষে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা উপজেলা প্রশাসনের এই কার্যক্রমকে স্বাগত জানান এবং ইতিবাচক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।
গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি পাইপ কারখানায় ডাকাতির সময় স্থানীয়দের সহায়তায় ধাওয়া করে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (২৮ জুলাই) রাত পৌনে ১১টার দিকে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর গ্রামের পিপিএস নামক পাইপ কারখানায়।
গ্রেপ্তাররা হলেন— ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানার ভাঘটিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. সোহেল মিয়া (৩২), একই জেলার তারাকান্দা থানার এমদাদুল হক (৪৫), বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম থানার কামুলা গ্রামের ফারুক (৩২), নওগা জেলার রাণীনগর থানার রাজাপুর গ্রামের আরিফ (৩০), নরসিংদী জেলার মাধবদি থানার বালুর মাঠ এলাকার শিমান্ত (২১) ও চাঁদপুর জেলার মতলবপুর গ্রামের ইব্রাহীম (২৩)।
পুলিশ জানিয়েছে, একটি ট্রাক নিয়ে ৯ থেকে ১০ জনের একটি ডাকাত দল ওই কারখানায় ডাকাতি করতে যায়। এ সময় তিন ডাকাত ট্রাক নিয়ে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করে। বাকি ছয়জন কারখানার ফটক টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় ডাকাতরা নিরাপত্তা প্রহরী মকুবল হোসেনকে হাত-পা বেঁধে মারপিট করে ফেলে রাখে।
কারখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের কমকর্তা আব্দুস ছালাম তিনতলা থেকে ডাকাতির ঘটনাটি প্রথমে দেখতে পান। এসময় তিনি কারখানা কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও স্থানীয়দের বিষয়টি জানান। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এসে স্থানীয়দের সহায়তায় ছয় ডাকাতকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
স্থানীয়রা জানান, কারখানাটি দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। রাত পৌনে১১টার দিকে কয়েকজন অপরিচিত লোক প্রধান ফটক টপকে পিপিএস পাইপ কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে। বিষয়টি জেনে স্থানীয়রা জড়ো হয়ে কারখানার ভেতেরে প্রবেশ করেন। এরপর নিরাপত্তা প্রহরীকে বেঁধে ডাকাতির বিষয়টি টের পান তারা।
এ সময় পুলিশ ও স্থানীয়দের দেখে ডাকাতরা কারখানার পেছন দিক দিয়ে দেওয়াল টপকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে তাদের ধাওয়া করে ছয়জনকে ধরতে করতে সক্ষম হন স্থানীয়রা। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ট্রাক নিয়ে অপেক্ষমান তিন ডাকাত পালিয়ে যায়। পরে আহত ছয় ডাকাতকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
কারখানার নিরাপত্তা প্রহরী মকবুল হোসেন বলেন, ‘অপরিচিত কিছু লোক গেটের উপর দিয়ে ভেতরে ডুকে আমার হাত-পা বেঁধে মারপিট করে। আমাকে ফেলে রেখে তারা ডাকাতি করতে শুরু করে। লোকজন চলে এলে ডাকাতরা সীমানা দেওয়াল টপকে বাহিরে চলে যায়।’
আব্দুস ছালাম বলেন, ‘তিনতলা থেকে দেখতে পাই নিরাপত্তা প্রহরীকে কারা যেন মারছে। পরে বুঝতে পারি যে কারখানায় ডাকাত ডুকেছে। তাৎক্ষণিক স্থনীয়দের, পুলিশ এবং কর্তৃপক্ষকে জানাই। দ্রুত সময়ে স্থানীয়দের পাশাপাশি পুলিশও এসে পড়ে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাক ডা. আজগর হোসেন সোহাগ জানান, রাত বারোটার দিকে পুলিশ আহত ছয় ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গুরুতর আহত সোহেল ও এমদাদুলকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল বারিক জানান, ডাকাতরা কারখানাটির মালপত্র লুট করতে এসেছিল। খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।