সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
২৬ কার্তিক ১৪৩২

নৌকায় ভোট দিন, রংপুরের সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বুধবার বিকেলে রংপুর জেলা স্কুল মাঠে দলের রংপুর বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। ছবি: ফোকাস বাংলা
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২ আগস্ট, ২০২৩ ১৯:১৯

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী সাধারণ নির্বাচনে আবারও জনগণকে সেবা করার সুযোগ দিতে তার দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় ভোট চেয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘নৌকায় ভোট দিয়ে জনগণ দেশের স্বাধীনতা পেয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দেশের উন্নয়ন হয়। জনগণের ভাগ্য পাল্টেছে, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে এবং আওয়ামী লীগের সমর্থনে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’

শেখ হাসিনা বুধবার বিকেলে রংপুর জেলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এই সমাবেশের আয়োজন করে। জনসমুদ্রে পরিণত সমাবেশ ও এর আশপাশের এলাকাগুলো নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে মুখরিত হয়ে ওঠে।

প্রধানমন্ত্রী গত সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে উল্লেখ করে বলেন, ‘এই বদলে যাওয়া বাংলাদেশ আরও উন্নত হবে। উন্নয়নশীল দেশ, এরপর উন্নত দেশ। ডেল্টা প্ল্যান করে দিয়েছি। সবক্ষেত্রে দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। আজকের তরুণ প্রজন্মই হবে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তারাই দেশকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং আরও উন্নত করবে।’

তিনি বলেন, ‘একমাত্র নৌকা মার্কা ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নতি হয়। কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। নৌকা মার্কায় ভোট আছে বলে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ গেছে, বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে, এগিয়ে যাবে। কাজেই নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারও আপনারা আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন। সেটাই আমি আপনাদের কাছে চাই।’

সমাবেশে সমবেত জনতার একাংশ। ছবি: ফোকাস বাংলা

এ সময় প্রধানমন্ত্রী সবাইকে হাত তুলে প্রতিশ্রুতি দেয়ার অনুরোধ করলে উপস্থিত জনতা সমস্বরে দুই হাত তুলে নৌকায় ভোট দেয়ার অঙ্গীকার করেন।

শেখ হাসিনা জানান, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তার বাবা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মা ও ভাইদের হারানোর পর থেকে তিনি বাংলাদেশের জনগণকেই তার আপনজন বিবেচনা করেছেন এবং প্রয়োজনে দেশবাসীর জন্য তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করতেও প্রস্তুত।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘বাবা-মা-ভাই সব হারিয়েছি। বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশের জনগণ, এটাই তো আমার সংসার, এরাই আমার আপনজন। আপনাদের মাঝেই আমি খুঁজে পাই- আমার বাবা-মায়ের স্নেহ, ভাই ও বোনের স্নেহ। কাজেই আপনাদের জন্য বাবার মত যদি প্রয়োজন হয়- এই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য বাবার মত জীবন দিতেও আমি প্রস্তুত। সেই কথাটাও আমি আপনাদের জানিয়ে দিয়ে যেতে চাই।’

প্রধানমন্ত্রী বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান। সমাবেশে তিনি দুই হাজার কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে ২৭টি নবনির্মিত উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং অন্য পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

এর আগে তিনি বেলা সোয়া ১টায় হেলিকপ্টারযোগে রংপুর সেনানিবাসের হেলিপ্যাডে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে তাকে রংপুর সার্কিট হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে তিনি রংপুর বিভাগীয় সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক একেএম সায়াদত হোসেন বকুল প্রমুখ।

সভায় সভাপতিত্ব করেন রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ড. দেলোয়ার হোসেন। মঞ্চে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।


ইলিশের বদলে জালে ধরা পড়ছে পাঙাশ-কোরাল-আইর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত ২৫ অক্টোবর মধ্যরাতে শেষ হয়েছে নদী ও সাগরে মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে গেলেও ভোলার জেলেদের জালে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। জালে ধরা পড়ছে পাঙাশ, কোরাল, চিংড়ি, আইর, বোয়াল, পোয়াসহ অন্যান্য মাছ। জেলেদের জালে ইলিশের শূন্যস্থান পূরণ করছে এসব মাছ।

সরেজমিনে সদরের মেঘনা নদী তীরবর্তী কাচিয়া কাঠিরমাথা মাছঘাট, ধনিয়া তুলাতুলি মাছঘাট ও শিবপুরের ভোলারখাল মাছঘাট সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কোনো কোনো জেলে জাল-ট্রলারসহ মাঝিমাল্লা নিয়ে নদীতে ইলিশ শিকারে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ নদী থেকে মাছ ধরে তা বিক্রির জন্য নদী তীরবর্তী আড়ৎগুলোতে নিয়ে আসছেন। যার অধিকাংশই পাঙাশ, কোরাল, চিংড়ি ও পোয়া। এসব মাছ জেলেরা আড়তে নিলামে বিক্রি করার পর খরচের হিসেবে মিলিয়ে কেউ হতাশ, আবার কারও মুখে হাসি ফুটছে।

আড়তে বড় সাইজের প্রতি কেজি কোরাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫০-৭০০ টাকা, পাঙাশ ৭৫০, আড়াইশ গ্রামের প্রতি কেজি চিংড়ি ১৩৫০ টাকা, আইড় ১৩০০ টাকা, বড় সাইজের বোয়াল ১১-১২০০ টাকা প্রতি কেজি। ৫-৬০০ গ্রামের প্রতিকেজি ইলিশ ১৭-১৮০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রামের ২১৫০ টাকা, ৯০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি সাইজের ২৫৫০ টাকা এবং দেড় কেজি ওজনের প্রতিকেজি ইলিশ ৩৫০০ টাকা।

নদী থেকে মাছ ধরে তা আড়তে এনে বিক্রির পর টাকা গুনছেন মাঝি রফিক ও জামাল। এরপর বসলেন খরচের হিসাব মেলাতে। জানতে চাইলে তারা দুজন বলেন, নদীতে মাছ ধরায় ২২ দিনের সরকারি অভিযান শেষ হইছে। ওই সময় আমরা পুরোপুরি বেকার ছিলাম। অভিযান শেষ হওয়ার পর গত কয়েকদিন গাঙ্গে (নদীতে) গিয়ে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছি না। তবে পাঙাশ, কোরাল ও আইরসহ অন্যান্য মাছ কিছু পরিমাণ পাওয়া যাচ্ছে, তা বিক্রি করে কোনোমতে খরচ উঠানোর চেষ্টা করছি। নদীতে মাছ ধরা ছাড়া অন্যকোনো কাজও জানি না। বাধ্য হয়েই নদীতে যেতে হয়।

তারা আরও বলেন, ৪-৬ জন মাঝিসহ রাতের ৩টা বাজে গাঙ্গে গিয়ে জাল ফেলছি। ট্রলারের তেলসহ প্রায় ১৬০০ টাকা খরচ হয়েছে। ৫ পিস ছোট ইলিশ ও ৪ কেজি ওজনের একটা পাঙাশ পেয়েছি। আড়তে এনে বিক্রির পর সব মিলিয়ে সাড়ে ৩ হাজার টাকা পেয়েছি। মোটামুটি জেলেদের হাতখরচ দিতে পারব।

মো. খলিল ও মোশাররফ মাঝি বলেন, আসলে মূল কথা হচ্ছে আমরা নদীতে যাই ইলিশ ধরার আশায়। বড় সাইজের ১ হালি ইলিশ পেলেই হয়। কিন্তু বড় সাইজের ইলিশ তো দূরের কথা ছোট সাইজের ইলিশও তেমন পাই না। বছরের শুরু থেকে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় গত ছরের দেনা এখনো পরিশোধ করতে পারিনি। বছর শেষ হতে যাচ্ছে, জানিনা শোধ করতে পারব কি না। সামনের দিনে যদি কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাই তাহলে দেনা রয়েই যাবে। কবে থেকে আবারও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাব তাও জানা নেই।

তুলাতুলি মাছঘাটের আড়ৎদার ইমতিয়াজ আহমেদ নাসিম ও ভোলারখাল মাছঘাটের আড়ৎদার মো. সুমন বলেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন ২২ দিন জেলেরা বেকার ছিল, আমাদের আড়ৎও বন্ধ ছিল। কিন্তু অভিযান শেষে জেলেরা নদীতে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছে না। মোকাম থেকে দাদন এনে জেলদের দিয়েছি। ইলিশ পাঠানোর জন্য মোকাম থেকে চাপ দিচ্ছে। আশানুরূপ ইলিশ মোকামে পাঠাতে পারছি না। নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় জেলেদের আমরা চাপও দিতে পারছি না। আমরা সব দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত।

মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের পরপরই সাধারণত ইলিশের মৌসুম শেষ হয়ে যায় বলে জানান ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে ইলিশ সমুদ্রে চলে যায়। নদীতে অল্প পরিমাণে ইলিশ আসে। ইলিশের মৌসুম হচ্ছে জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর। এ বছর সরকার ঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সফলভাবে বাস্তবায়নের ফলে মাছের উৎপাদন বেড়েছে। ফলে বেশি পরিমাণে পাঙাশ, কোরালসহ অন্যান্য মাছ পাচ্ছে জেলেরা। এতে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশাবাদী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা।


জেলে নয়, ভিন্ন পেশার মানুষ পেয়েছে বকনা বাছুর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মো. সাইফুল ইসলাম, চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি

ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে বকনা বাছুর বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা মৎস্য বিভাগের বিরুদ্ধে। 'প্রকৃত জেলেরা পায়নি বকনা বাছুর।' এ তথ্যের সূত্র ধরে দীর্ঘ অনুসন্ধান করেছে দৈনিক বাংলা। ওই বিতরণের তালিকায় নাম ছিলো নিরঞ্জন চন্দ্র দাসের (৫০)। তিনি প্রকৃত জেলে না হলেও পেশায় একজন কাকড়া বিক্রেতা ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, বাছুর হাতে পাওয়ার ১ ঘন্টার মধ্যে তারই এলাকার এক রিকশা চালকের কাছে ১৬ হাজার ৫০০ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছেন। এই ঘটনার সত্যতা জানতে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার জিন্নাগড় ৪নং ওয়ার্ডে গিয়ে তার বাড়ীতে ওই বকনা বাছুর সম্পর্কে নিরঞ্জনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বকনা বাছুরটি আমি একজন রিকশা চালকের কাছে পালতে দিয়েছি। বাছুরটি পালন করার মতো কেউ নেই।’ পরক্ষণে তার কাছে ওই রিকশা চালকের নাম ও ঠিকানা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তার নাম জানি না। আপনারা এতো কথা জিজ্ঞাসা করছেন কেনো? এতো ঝামেলা বুঝলে আমি বকনা বাছুর আনতাম না।’

বিতরণের তালিকায় নিরঞ্জনের মতো অন্য পেশার অধিকাংশ মানুষ বকনা বাছুর পেয়েছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই তালিকাটি রাজনৈতিক নেতাদের হাত ধরেই মৎস্য অফিসে লিপিবদ্ধ হয়েছে। জেলে নয়, তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন এমন অনিয়মের খোঁজ নিতে গেলে উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে প্রায় শ’খানেক অপ্রকৃত জেলেদের সন্ধান মিলেছে। একই তালিকায় মিলেছে জিন্নাগড় ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের দাসকান্দি গ্রামের মুদি দোকানী উমেশ তালুকদারের নাম। পেশায় মুদি দোকানী হলেও নাম লেখিয়েছেন জেলে কার্ডে। এই জেলে কার্ড দেখিয়ে পেয়েছেন বকনা বাছুর। সরেজমিনে গিয়ে ওই মুদি দোকানেই তার দেখা মিলেছে।

আপনি জেলে না হয়ে কিভাবে জেলে কার্ড পেলেন ও ওই কার্ড দিয়ে কিভাবে বকনা বাছুর পেলেন? জবাবে উমেশ তালুকদার বলেন, ‘আমি জিন্নাগড় ৪নং ওয়ার্ডের মৎস্যলীগের সভাপতি ছিলাম। তখন আমার নামে এই জেলে কার্ডটি হয়েছে। আমি কখনোই জেলে ছিলাম না। আমার কর্মজীবনের শুরু থেকেই ব্যবসা করে আসছি।’

এদিকে জিন্নাগড় ইউনিয়নের কার্ডধারী জেলে জাকির হোসেন, জামাল হোসেন, মনির হোসেন, নুরে আলম, শাহাবুদ্দিন, আবুল বশার, কামাল হোসেন, মফিজুল ইসলামদের জেলে কার্ড থাকলেও জেলে চাল ও বকনা বাছুর পাননি। এমন বিস্তর অভিযোগ তাদের। তাদের মতো মাদ্রাজ ইউনিয়নের কার্ডধারী জেলে ইয়াছিন, তোফায়েল, মোশাররফ হোসেন, বেল্লাল সিকদার ও আমজাদ হোসেনরাও এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই সাগরে মাছ শিকার করে আসছেন। প্রতিবছরই নিষেধাজ্ঞায় মাছ শিকার থেকে বিরত থাকেন। তাদের জেলে কার্ড থাকলেও অন্য পেশার মানুষ যারা জেলে নয়, এমন কিছু লোক বকনা বাছুর ও নির্দিষ্ট স্লিপে চাল পান।

উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে পৌরসভাসহ ২১ ইউনিয়নে ১৭৪ জন তালিকাভুক্ত জেলেদের মাঝে ৪ কিস্তিতে বকনা বাছুর বিতরণ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট দপ্তর জানায়, মৎস্য অধিদপ্তরের ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে প্রান্তিক জেলেদের মাঝে উপকরণ হিসাবে গরু (বকনা বাছুর) বিতরণ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞায় জেলেরা মাছ ধরা থেকে বিরত থাকে, তখন তারা বেকার হয়ে যায়। পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে সরকার এই উদ্দ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

সুবিধাভোগীর তালিকায় ওয়ার্ড নম্বর উল্লেখ না থাকা ব্যক্তিদের বিষয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধানেও কোন হদিস পাওয়া যায়নি এবং জেলে নয়, ভিন্ন পেশার মানুষ পেয়েছে বকনা বাছুর! এমন প্রশ্নের জবাবে চরফ্যাশন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, ‘এই তালিকা স্থানীয় জনপ্রতিনিধরা দিয়েছে। তবে ওইসব জনপ্রতিনিধিদের নামের তালিকা আমার কাছে সংরক্ষিত নেই।’


প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে স্ত্রীর আত্মহত্যা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোলায় প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে চৈতি রানী (১৯) নামে এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে।

রোববার (৯ নভেম্বর) রাতে ভোলা জেলা শহরের পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের মোনালিসা গলিতে একটি ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। তার স্বামীর নাম শুভ দাস। নিহত চৈতি রানী পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সঞ্জয় দাসের মেয়ে বলে জানা গেছে।

নিহতের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় দেড় বছর আগে পারিবারিকভাবে প্রবাসী শুভ দাসের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন চৈতি রানী দাস, ভালোই চলছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। স্ত্রীকে পরিবারের কাছে রেখে গত দেড় মাস আগে কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশ চলে যান শুভ দাস।

শুভ দাসের ভাগ্নি দিপা বলেন, গতকাল রাতে আমার বড় মামার স্ত্রী ও ছোট মামার স্ত্রী চৈতি রানী দুজনে মিলে মার্কেটে গিয়েছিল এবং তারা দুজন বাড়ি ফিরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হাসিঠাট্টা করছিল এবং কে কি কিনল তা দেখাল, এরপর যে যার রুমে চলে গেল। রাত সাড়ে ১০টার দিকে চৈতি রানীকে ভাত খাওয়ার জন্য ডাকাডাকি করলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি। পরে পার্শ্ববর্তী আরও একজন আত্মীয়কে ডেকে এনে শাবল দিয়ে তার রুমের দরজার ছিটকিনি ভেঙে ভেতরে ঢুকলে তাকে জানালার গ্রিলের সঙ্গে তাকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে নিলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু শাহাদাৎ হাচনাইন পারভেজ বলেন, মোবাইলে স্বামীর সঙ্গে কথা বলার পর অভিমান করে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে শুনেছি, তদন্ত চলছে। মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


এখনও উদ্ধার হয়নি নিখোঁজ নারী পাইলট রিয়ানা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাগেরহাটের মোংলার পশুর নদীতে দ্রুতগামী বোটের স্রোতের তোড়ে জালিবোট উল্টে নিখোঁজ হওয়া নারী পাইলট রিয়ানাকে ৪৮ ঘণ্টা পরও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বন বিভাগ ও স্থানীয় জেলেরা নদীতে তল্লাশি চালালেও ওই নারী প্রবাসীর কোনো খোঁজ মেলেনি।

ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে। রিয়ানা স্বামীসহ পরিবার নিয়ে সুন্দরবন ভ্রমণ শেষে ফেরার পথে ডাংমারী ও পশুর নদীর মিলনস্থলে পৌঁছালে দ্রুতগামী একটি বোটের ঢেউয়ের তোড়ে তাদের জালিবোটটি উল্টে যায়। পরিবারের অন্য সদস্যরা কোনোমতে সাঁতরে কূল পেয়ে গেলেও রিয়ানা নিখোঁজ হয়ে যান।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিখোঁজ রিয়ানা বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সাবেক পাইলট ছিলেন। বর্তমানে স্বামীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতেন। কয়েক দিনের ছুটিতে বাংলাদেশে এসে পরিবারসহ সুন্দরবন ভ্রমণে গিয়েছিলেন তিনি।

স্বজনরা বলেন, “আমরা এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না রিয়ানাকে হারিয়েছি। নদীর দিকে তাকিয়ে আছি চাতক পাখির মতো— হয়তো সে ফিরে আসবে।”

এদিকে, এ দুর্ঘটনার জন্য দ্রুতগামী বোটচালকদের দায়ী করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন রিয়ানার পরিবারের সদস্যরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোংলা রেঞ্জের বন বিভাগের কর্মকর্তা সুরজিৎ চৌধুরী বলেন, “নিখোঁজ নারী পাইলট রিয়ানাকে উদ্ধারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় উদ্ধার কার্যক্রমে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।”

তিনি আরও জানান, নিখোঁজ রিয়ানা আমেরিকা প্রবাসী, একসময় বিমানবাহিনীর পাইলট ছিলেন।

রিয়ানার সন্ধানে এখনো নদীজুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে বন বিভাগ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা।


দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে ধাক্কায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গোপালগঞ্জে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় দুইজন নিহত হয়েছে। রোববার (৯ অক্টোবর) রাত পৌনে ১০টার দিকে গোপালগঞ্জ টেকেরহাট আঞ্চলিক সড়কের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সাতপাড় গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন মোটরসাইকেল আরোহী গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মাঝিগাতী ইউনিয়নের ডালনিয়া গ্রামের সতীশ চন্দ্র ভট্টাচার্যের ছেলে সরোজ ভট্টাচার্য (৬০) ও মোটরসাইকেল চালক একই গ্রামের ত্রিনাথ বিশ্বাসের ছেলে বিজয় বিশ্বাস (২২)।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলতলী পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আফজাল হোসেন মোল্লা দুইজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে জানান, রোববার রাতে মোটরসাইকেলে করে টেকেরহাট থেকে সরোজ ও বিজয় ডালমিয়া গ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন। রাত পৌনে ১০টার দিকে তাদের মোটরসাইকেল সাতপাড় পশ্চিমপাড়া গ্রামে পৌঁছালে সেখানে সড়কের রং সাইডে দাঁড়িয়ে থাকা গ্যাসভর্তি একটি ট্রাকের পিছনে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল চালক বিজয় বিশ্বাস নিহত হয়। আরোহী সরোজ ভট্টাচার্যকে পার্শ্ববর্তী একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে সেখানে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের লাশ উদ্ধার করে বৌলতলী পুলিশ ফাঁড়িতে রাখা হয়েছে।

বিজয় বিশ্বাস ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন বলে জানিয়েছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।


গণমাধ্যম নীতিমালা সংশোধনের দাবি সাংবাদিকদের

আপডেটেড ৯ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:২১
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংবাদিকদের জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রণীত গণমাধ্যম নীতিমালায় বেশ কিছু অসঙ্গতি রয়েছে উল্লেখ করে তা সংশোধনের দাবি জানিয়েছে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) এবং রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসি (আরএফইডি)।

রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিজেসি ও আরএফইডির প্রতিনিধিরা তাদের যৌথ সুপারিশমালা জমা দেন। বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিবসহ শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে বিজেসি চেয়ারম্যান রেজওয়ানুল হক রাজা সাংবাদিকদের জানান, ‘নির্বাচন কমিশন যে গণমাধ্যম আচরণবিধি তৈরি করেছে, তাতে সাংবাদিকদের কাজের ক্ষেত্রে কিছু অপ্রয়োজনীয় সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমরা বিজেসি ও আরএফইডি যৌথভাবে একাধিক সেমিনার আয়োজন করেছি, যেখানে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, অংশীজন ও সংবাদকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে একটি সুপারিশমালা তৈরি করেছি। আজ সেটি কমিশনের হাতে তুলে দিয়েছি।’

বৈঠকে কমিশনের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছি যে, ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের পর প্রিসাইডিং অফিসারকে অবহিত করার যে বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে, তা সাংবাদিকদের জন্য অপ্রয়োজনীয় প্রতিবন্ধকতা। যদি সাংবাদিকদের বৈধ আইডি কার্ড ইস্যু করা থাকে, তাহলে আলাদা অনুমতির প্রয়োজন নেই।’

সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট থাকার যে সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটির ব্যাপারেও আপত্তি জানানো হয়েছে উল্লেখ করে রেজওয়ানুল হক রাজা জানান, ‘কমিশনের কর্মকর্তারা আমাদের জানিয়েছেন, এটি কোনো কঠোর সময়সীমা নয়, বরং কেন্দ্রের জায়গার সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় সাধারণ নির্দেশনা মাত্র। সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা সীমিত করার উদ্দেশে এটি নয়।’

বিজেসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা বুঝতে পেরেছি, কমিশন আন্তরিকভাবে সাংবাদিকদের সহযোগিতা করতে চায়। এমনকি তারা নিজেরাও মনে করেন, সিসি ক্যামেরা না থাকলেও সাংবাদিকদের ক্যামেরা উপস্থিত থাকলে ভোটের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সহজ হয়।’

বৈঠকে সরাসরি সম্প্রচার নিয়েও আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা জানিয়েছি, সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল থাকা উচিত, যেন লাইভ সম্প্রচারে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় কোনো বিঘ্ন না ঘটে। তবে কোনো অনিয়ম বা কেন্দ্র দখলের ঘটনা ঘটলে সাংবাদিকদের দায়িত্ব হবে সেটি তুলে ধরা। এই ধরনের বাস্তব পরিস্থিতিতে কঠোর সম্প্রচার-নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখা সম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, নির্বাচন কমিশন দ্রুত আমাদের প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করে নীতিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধন আনবে। এতে সাংবাদিকরা আরও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবেন, একই সঙ্গে ভোটের স্বচ্ছতা ও জনগণের জানার অধিকারও সুরক্ষিত হবে।’

আরএফইডি সভাপতি কাজী জেবেল বলেন, ‘নীতিমালায় সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। সাংবাদিকদের ওপর হামলা বা ক্যামেরাপারসনের ওপর আক্রমণ হলে দায়ীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সংবাদ সংগ্রহে বাধা দিলে বা হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা নীতিমালায় নির্দিষ্টভাবে যুক্ত করা প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সাংবাদিকদের অবাধ কাজের পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কমিশন যদি আমাদের প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করে, তাহলে নির্বাচনী কাভারেজ আরও বস্তুনিষ্ঠ ও বিশ্বাসযোগ্য হবে।’


নন-এমপিও শিক্ষকদের জলকামান-সাউন্ড গ্রেনেড, আহত ৪

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নন-এমপিও শিক্ষকদের পূর্ব ঘোষিত শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় চার শিক্ষক আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয় বলে জানা যায়।

রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- আসাদুজ্জামান (৪৭), ইকবাল হাসান (৪০), মোস্তাকিম (৪৫) ও বাবু (৩৬)।

আহত আসাদুজ্জামান জানান, পূর্ব ঘোষিত আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশ আমাদের উপর জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ও লাঠিচার্জ করে। পরে আহত অবস্থায় আমাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকা থেকে আহত অবস্থায় চার শিক্ষককে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।

নন-এমপিও শিক্ষকরা জানান, আমরা দীর্ঘদিন থেকে বিনা বেতনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে আসছি। বর্তমানে আমরা বেতন ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। শিক্ষকদের এক দফা হলো- সব স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করতে হবে।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১৮ দিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষকরা।


উত্তরের জেলাগুলোতে শীতের অনুভূত শুরু

*লেপ-তোশকের দোকানে ভিড় বাড়ছে *উপকরণের সঙ্গে বেড়েছে কারিগরদের মজুরি
লেপ-তোশক তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রংপুর ব্যুরো

দেশের উত্তরের জেলাগুলোতে অনুভূত হতে শুরু করেছে শীত। আগাম প্রস্তুতি হিসেবে অনেকে ইতোমধ্যে লেপ-তোশক বানানোর কাজ শুরু করেছেন। তবে লেপ-তোশক বানানোর উপকরণের দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে কারিগরদের মজুরি। ফলে গত বছরের তুলনায় এবার বাড়তি দাম গুণতে হবে ক্রেতাদের।

রংপুর নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিক্রেতারা দোকানে লেপ-তোশকের পসরা সাজিয়ে রেখেছেন। ধুনকররাও লেপ-তোশক বানাতে শুরু করেছেন।

শহরের দেওয়ান বাড়ি রোডের কারিগর মিঠু মিয়া জানান, ৫-৭ ফিট সাইজের জাজিম তৈরিতে মজুরি নিচ্ছেন ৩৫০-৪০০ টাকা, ৬-৭ ফিট সাইজের জাজিমে ৪৫০-৫০০ টাকা, ৪-৫ হাত সাইজের লেপ বানানোর মজুরি ৩০০ টাকা, ৫ হাত বাই ৫ হাত সাইজের ৪০০ টাকা, ৬ ফিট বাই ৭ ফিট সাইজের তোশক ৩০০ টাকা এবং ৫ ফিট বাই ৭ ফিট সাইজের তোশক ২০০ টাকা। যা গত বছরের তুলনায় আইটেম ভেদে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি।

তার কারখানায় এখন দৈনিক ৮-১০টা লেপ তৈরি হচ্ছে। অনেকে আবার পুরোনো লেপ-তোশক ঠিকঠাক করে নিচ্ছেন। শীত বাড়লে ব্যস্ততাও বাড়বে। এখন চারজন কারিগর কাজ করছেন। ভরা মৌসুমে কারিগরদের সংখ্যাও বাড়বে।

এক বছরের ব্যবধানে মজুরি বাড়ার কারণ জানতে চাইলে মিঠু মিয়া বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামত কমে না। আগের মতো ব্যবসাও নেই। এখন অনেকে রেডিমেডের ওপর নির্ভর করেন। বছরের এ সময়টা ধুনকরদের আয়ের একটা সময়। একজন কারিগরের সারাদিনের আয় দিয়ে যদি ঠিকমতো সংসারের খরচ না জোটে তাহলে তো তারা এ পেশা ছেড়ে দেবেন। এছাড়া লেপ-তোশক বানানোর যে উপকরণ তার দাম প্রতি বছর বাড়ছে। এসব কারণে এবার মজুরি কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। তবে মৌসুমি কারিগরদের কাছে কিছুটা কম মজুরিতে মিলছে লেপ-তোশক।’

মেহের নিগার নামের এক কারিগর বলেন, শহরের বিভিন্ন দোকান থেকে তাদের কাছে অর্ডার আসে। শীতের এ সময়টা তাদের ব্যস্ততা বাড়ে। তবে শীত এখনো পুরোপুরি শুরু না হওয়ায় তেমন চাপ নেই। প্রতিদিন ৪-৫টা করে লেপের অর্ডার পাচ্ছেন। ভরা শীতে ১৫-২০টা পর্যন্ত লেপ বানাতে হয়। আগাম প্রস্তুতি হিসেবে জায়গা, সুতা ও শ্রমিকদের তৈরি করা হয়েছে।

মেহের নিগার বলেন, ‘শহরের ধুনকরদের তুলনায় এ এলাকায় মজুরি কিছুটা কম। এখানে পুরুষরা অন্য কাজ করলেও বাড়ির নারীরা বছরের এ সময়টা লেপ-তোশক বানানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন। ঘরে বসে না থেকে এতে তাদের বাড়তি যা আসে তা সংসারের কাজে লাগে। তবে আগের মতো হাঁকডাক নেই এখন। অনেকেই গ্রামে, পাড়া-মহল্লায় লেপ-তোশক তৈরি করছেন।’

এনামুল হক জানান, ‘৫-৭ ফিট সাইজের জাজিম বানাতে খরচ পড়ছে ২,৩০০-২,৫০০ টাকা, ৬ ফিট বাই ৭ ফিট সাইজের জাজিমে পড়ছে ৩,০০০-৩,৫০০ টাকা। পাঁচ বছর আগেও ৪-৫ হাত সাইজের রেডিমেড লেপ বিক্রি হতো ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। এখন সেটা বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকা। অর্ডার দিয়ে বানানো ওই সাইজের লেপ গত বছর ১,২৫০-১,৩০০ টাকা বিক্রি হয়েছে। এবার বিক্রি হচ্ছে ১,৫০০-১,৬০০ টাকা।’

তিনি বলেন, ‘৫ হাত বাই ৫ হাত সাইজের রেডিমেড লেপ ছিল ১,১০০ টাকা, এখন হয়েছে ১,২০০ টাকা। অর্ডার দিয়ে ওই সাইজের লেপ বানালে খরচ পড়বে ১,৮০০-২,০০০ টাকা। আর লেপের কভারসহ সেটা বিক্রি হবে ২,২০০ থেকে ২,৩০০ টাকা। যা গত বছরের তুলনায় ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেশি দাম পড়বে।’

লেপ-তোশক বিক্রেতা রাজা মিয়া বলেন, লেপ বানানোর ভালো মানের লাল শালুর গজ খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা ও মাঝারি মানেরটা ৪৫-৫০ টাকা। যা গত বছর ৫৫ ও ৪০-৪৫ টাকা বিক্রি হয়েছে। তোশক বানানোর কাপড়েও প্রতি গজে দাম বেড়েছে ১ থেকে ২ টাকা। জাজিম বানানোর কাপড়ের দাম বেড়ে ৯০-১০০ টাকা থেকে হয়েছে ১২০-১৫০ টাকা।’

সিও বাজারের লেপ-তোশক বিক্রেতা আরমান হোসেন বলেন, ‘এখন আগের মতো এ ব্যবসায় লাভ নেই। অনেক ফরিয়া ব্যবসায়ী গ্রামে ফেরি করে লেপ-তোশক বিক্রি করছেন। বাড়িতে হাতের কাছে জিনিস পেলে তো কষ্ট করে দোকানে আসতে হচ্ছে না। যদিও নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের বড় ক্রেতা।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গার্মেন্টর ঝুট বিক্রি হচ্ছে ২৮-৩০ টাকা, যা গত বছর ছিল ২২-২৫ টাকা, ভালো মানের কালো ব্লেজার তুলা ৩৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪০ টাকা, লেপের তুলা ৭৫-৮০ টাকা থেকে বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকা।


নজরুল ইসলাম গাইবান্ধার নতুন জেলা প্রশাসক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধা জেলার নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম। গত শনিবার রাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারী করা এক প্রজ্ঞাপনে এ নিয়োগের বিষয়টি জানানো হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম এর আগে সিরাজগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দীর্ঘ প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে গাইবান্ধার ডিসি হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।

অন্যদিকে গাইবান্ধার বিদায়ী জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদকে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তার চাকরি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ন্যস্ত করা হয়েছে।


ফরিদপুরে তিন দিনব্যাপী বিবির মেলার সফল সমাপ্তি

আপডেটেড ৯ নভেম্বর, ২০২৫ ২১:০৪
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর

আন্তর্জাতিক মানের ফ্যাশন মডেল এবং নকশাকার বিবি রাসেলের সম্মানে ফরিদপুরে দ্বিতীয়বারের মতো শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী ‘বিবির মেলার’ সমাপ্তি হয়েছে। ফরিদপুরের অম্বিকা ময়দানে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে শুরু হওয়া এই মেলা শনিবার রাতে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আয়োজকরা জানান, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শৈল্পিক কাজগুলোকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরার এই আয়োজন ছিল পুরোপুরি সফল।

বিবি রাসেলের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। তারই সম্মানে ফরিদপুরসহ দেশের ৩০ জেলার উদ্যোক্তাদের সমৃদ্ধ করতে ‘কৈফিয়া’ আয়োজন করেছিল এই মেলা। এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এই বিবির মেলার অনুষ্ঠিত হলো ফরিদপুরে। দেশীয় পণ্যের প্রসার, নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের আগ্রহী করতে অম্বিকা ময়দানে হাজির হয়েছিলেন বিবি রাসেল নিজে।

বিবি গামছার শাড়ি, ফরিদপুরের নকশি কাঁথা, রাজশাহীর সিল্ক, মৃৎশিল্প, লাইব্রেরিসহ গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠার ৫০ টিরও বেশি স্টল ছিল মেলাজুড়ে। ঐতিহ্যকে ধারণ করে বসা স্টলগুলোতে ছিল দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। মেলা শেষ হয়ে গেলেও, উদ্যোক্তারা তাদের হাতে তৈরি শিল্পকে বিবির মেলায় তুলে ধরতে পেরে উচ্ছ্বসিত।

দর্শনার্থীদের ভিড় বলে দিয়েছে, দেশীয় ঐতিহ্য আর শিল্পকলার প্রতি তাদের টানটা এখনো কতটা গভীর। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিবি রাসেলের নামে আয়োজিত এই মেলা যেন তাদের কাছে ছিল তিন দিনের এক মহোৎসব। নিজ দেশের শিল্পকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার এক আন্তরিক বাসনা নিয়ে তারা মেলায় এসেছিলেন।

মেলাটির আয়োজনে দ্বিতীয়বার সফল হওয়ায় উচ্ছ্বসিত আয়োজক কমিটি। তাদের কথায়, এই ‘বিবির মেলার’ মূল লক্ষ্য একটাই- বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শৈল্পিক কাজগুলোকে, যা এতদিন গ্রামের নিভৃতে ছিল, সেগুলোকে সরাসরি বিশ্বের কাছে তুলে ধরা।

দেশীয় শিল্পের এই শক্তি প্রমাণ করে, গ্রামবাংলার ঐতিহ্য বিশ্ব জয়ের জন্য প্রস্তুত। ফরিদপুরের অম্বিকা ময়দানে তিন দিনব্যাপী এই ‘বিবির মেলা’ গত শনিবার রাতে শেষ হয়েছে; কিন্তু এর প্রেরণা ছড়িয়ে থাকবে আগামী প্রজন্মের উদ্যোক্তাদের মাঝে।


শ্রীমঙ্গলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে ময়লার ভাগাড়, বিপাকে মানুষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত পর্যটননগরী মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল। তবে কলেজ সড়কের একটি বৃহৎ এলাকাজুড়ে থাকা দীর্ঘদিনের ময়লার ভাগাড় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য জনস্বাস্থ্যের বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভাগাড়টির পাশেই রয়েছে শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ, দ্য বাডস রেসিডেনসিয়্যাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসা, দুটি মসজিদ, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ঘনবসতি এলাকা। দুর্গন্ধ ও দূষণে দীর্ঘদিন বিপাকে আছেন সবাই।

দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ না হওয়ায় অবশেষে রোববার ওই ময়লার ভাগাড়ের প্রধান গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, জনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রতিনিয়ত ছড়িয়ে পড়া দুর্গন্ধ ও বর্জ্যের বিষাক্ত উপাদান পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। আমরা অনেক মানববন্ধন করেছি, স্মারকলিপি দিয়েছে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছি, কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি।

স্থানীয়রা আরও বলেন, ১৯৩৫ সালে শ্রীমঙ্গল পৌরসভা প্রতিষ্ঠার সময়। তৎকালীন ভাড়াউড়া চা-বাগান রোড-সংলগ্ন এলাকাকে শহরের ময়লা ফেলার স্থান নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরে সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও জনবসতি তৈরি হলে পরিস্থিতি ঘনীভূত হয়। সমস্যার সমাধানে ২০১৩ সালে শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের জেটি রোড এলাকায় হাইল হাওরের পাদদেশে ২ দশমিক ৪৩ একর জমি ক্রয় করে পৌরসভা। তবে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরোধিতায় ভাগাড় স্থানান্তর কার্যক্রম থেমে যায়।

সম্প্রতি বিগত আওয়ামী সরকার পরিবর্তনের পর শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর আন্দোলন আবারও তীব্র হয়। চোখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভের পর অবশেষে আজ (রোববার) ভাগাড়ে তালা দেওয়া হলো। এলাকাবাসীদের দাবি, ভাগাড়টি দ্রুত স্থায়ীভাবে স্থানান্তর করতে হবে এবং বিকল্প বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিতে হবে।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক ইসলাম উদ্দিন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ময়লার ভাগাড়টি দীর্ঘদিনের সমস্যা। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এটি স্থানান্তরের জন্য আমরা কাজ করছি। প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সবাইকে নিয়ে আমরা সমস্যাটির সমাধান করব।


চুম্বক মামুনের অভিনব পেশা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গোপালপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

‘যেখানে দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখিবে তাই, পাইলে পাইতে পারও অমূল্য রতন’ কবির এই অমর পঙ্গক্তির বাস্তব প্রতিফলন যেন বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার মামুন শেখ। অন্যদের চোখে যা বর্জ্য, তার চোখে সেটাই সোনার খনি। এক টুকরো চুম্বক আর এক দড়ির সাহায্যে তিনি বদলে দিয়েছেন নিজের ভাগ্য।

মাত্র ৫০০ গ্রাম ওজনের বিশেষ এক চুম্বক বেঁধে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরের রাস্তায় ঘুরে বেড়ান মামুন শেখ। রাস্তার পাশে ছড়িয়ে থাকা তারকাঁটা, নাট-বল্টু, পেরেক কিংবা ভাঙা লোহার টুকরো—সবই তার চুম্বকের টানে ধরা পড়ে। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ কেজি পর্যন্ত লোহা সংগ্রহ করেন তিনি। ভাঙারির দোকানে বিক্রি করে মাসে আয় করেন প্রায় ৬০ হাজার টাকারও বেশি। এ কারণেই এখন সবাই তাকে ডাকে ‘চুম্বক মামুন’ নামে। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট এসব দর্শকদের দেখাতে থাকেন।

গত শনিবার টাঙ্গাইলের গোপালপুরে রাস্তায় লোহা সংগ্রহ করতে দেখা যায় তাকে। কৌতূহলী মানুষজন আগ্রহভরে ঘিরে দেখছিলেন তার এই অভিনব কাজ। গোপালপুর পৌর শহরের রাস্তায় ঘণ্টা খানেকের মধ্যে প্রায় ১৩ কেজি লোহা সংগ্রহ করেছেন। কেউ ভিডিও তুলছিল, কেউবা অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন সেই দৃশ্যের দিকে। একটি চুম্বক, এক দড়ি আর এক ইচ্ছাশক্তি এই তিনে ভর করেই মামুন শেখ তৈরি করেছেন জীবিকার নতুন দিগন্ত।

কথা হলে মামুন শেখ বলেন, এই কাজ দেখতে হয়তো একটু অদ্ভুত লাগে; কিন্তু আমি এই কাজটা ভীষণ উপভোগ করি। দেশের নানা জায়গায় ঘুরি, নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হই, নানা খাবারের স্বাদ নেই। এই কাজের মাধ্যমেই জীবনটা উপভোগ করতে পারছি।

তিনি আরও বলেন, ৫ সন্তানকে বাড়িতে রেখে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়েই এই পেশায় নেমেছেন মামুন।

আভুঙ্গী এলাকার অটোভ্যানচালক আব্দুল বাছেদ বলেন, ‘রাস্তায় থাকা তারকাঁটায় গাড়ির টায়ার ফুটো হয়ে যেত। মামুন ভাই এসব লোহা তুলে নেওয়ায় এখন আমাদের অনেক উপকার হচ্ছে।’


লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হতদরিদ্র্য বিধবা অভিরোন বাঁচতে চান

দীর্ঘদিনেও মেলেনি বিধবা ভাতার কার্ড
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের সোরা গ্রামের লিভার ক্যান্সার আক্রান্ত অভিরন বাঁচতে চায়। দীর্ঘদিন ধরে বিধবা হলেও তার ভাগ্যে জোটেনি বিধবা ভাতার কার্ড। অভিরন সোরা গ্রামের মৃত ওয়াজেদের স্ত্রী।

সরজমিনে জানা যায়, অভিরোন বিবি লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পরেও তার শারীরিক অবস্থা ক্রমেই সংকটময় হয়ে উঠেছে। তার স্বামী বহু দিন পূর্বে মৃত্যুবরণ করেন। দীর্ঘদিন স্বামী মৃত্যুবরণ করলেও এখন পর্যন্ত পাননি বিধবা ভাতার কার্ড। একটি মাত্র কন্যা বিবাহিত। অসহায় কষ্টও সীমাহীন। দীর্ঘদিন ধরে লিভার রোগে আক্রান্ত তিনি নিজের চিকিৎসার জন্য সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করছেন। অভিরোন বিবির জীবনটা শুরু থেকে কষ্টের। স্বামীর মৃত্যুর পরে একটি মাত্র কন্যাকে বড় করার জন্য দিনমজুরের কাজ শুরু করে। অনেক কষ্ট করে মেয়েক বড় করে বিয়ে দেন। অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনভাবে তার জীবন অতিবাহিত হচ্ছিল। হঠাৎ অভিরোন বিবি অসুস্থ হয়ে পড়ে অসহায় হয়ে পড়েন। পরে অভিজ্ঞ ডাক্তার দেখিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ধরা পড়ে যে, তার লিভারে ক্যান্সারের জটিল রোগ। চিকিৎসার জন্য অভিরোন বিবিকে বহু থেরাপি নিতে হবে, যার খরচ প্রতি থেরাপি প্রায় ৫০ হাজার টাকা। পুরো চিকিৎসার জন্য প্রায় চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা প্রয়োজন। অভিরোন বিবির উন্নত চিকিৎসা করার জন্য কোন অর্থ সম্পদ নাই। অর্থাভাবে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে। ১/২ দিনের ভেতরে থেরাপি না দিলে তার বেঁচে থাকা অসম্ভব হতে পারে। অভিরোন বিবি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার স্বামী দীর্ঘদিন মৃত্যুবরণ করলেও বেশ কয়েকবার অনলাইনে আবেদন করে এখন পযর্ন্ত বিধবা ভাতার কার্ডটি পেলাম না। বর্তমানে আমি মরণব্যাধি লিভার ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত। এ সময় তিনি শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট বিধবা ভাতার কার্ড ও উন্নত চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা পাওয়ার জন্য আবেদন জানান। সমাজের দানশীল, সমাজসেবক, স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে সাহায্যের আবেদন যাতে তিনি বিবি বাঁচতে পারেন। এ বিষয়ে রমজাননগর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ শেখ আল মামুন বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে যতটুকু পারি আর্থিক সহযোগিতা করব এবং তার বিধবা ভাতার কার্ডটি পাওয়ার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করব।


banner close