বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

সাগরে ইলিশের সংকট, দাদন-ফাঁদে জেলেরা

ঘাটে অলস সময় পার করছেন জেলেরা। সম্প্রতি ভোলার চরফ্যাশনের ঢালচরে। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
৩ আগস্ট, ২০২৩ ১৫:৫৬
প্রতিনিধি, চরফ্যাশন (ভোলা)
প্রকাশিত
প্রতিনিধি, চরফ্যাশন (ভোলা)
প্রকাশিত : ৩ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০

গত মৌসুমে মহাজনের কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা দাদন নিয়ে সাগরে ট্রলার পাঠিয়েছিলেন দেলোয়ার মাঝি। কিন্তু ইলিশের তেমন দেখা মেলেনি। দাদনের টাকাও শোধ করতে পারেননি। প্রতি যাত্রায় (ট্রিপ) লোকসান বাড়তে বাড়তে দেলোয়ারের নেয়া দাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ টাকায়। এ মৌসুমেও নদী ও সাগরে ইলিশের দেখা মিলছে না। তারপরও আরও তিন লাখ টাকা দাদন নিয়ে সাগরে ট্রলার পাঠিয়েছেন দেলোয়ার।

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ ঘাটে কথাগুলো বলছিলেন চর মাদ্রাজ ইউনিয়নের চর মাদ্রাজ গ্রামের দেলোয়ার। চার সদস্যের সংসার তার। দিন দিন দাদনের বোঝা ভারী হওয়ার জন্য তিনি দায়ী করছেন ইলিশের সংকটকে। তবু কঙ্ক্ষিত পরিমাণে ইলিশ পেয়ে দাদনের বোঝা হালকা করে সুদিন ফিরবে– এমন প্রত্যাশা নিয়েই তিনি ও তার মতো অন্য মৎস্যজীবীরা চলতি মৌসুম শুরু করেছেন বলে জানালেন দেলোয়ার।

আগের বছরগুলোতে দাদন শোধ করে মুনাফা থাকলেও বছরদুয়েক হলো সেই ধারাবাহিকতায় ভাটা পড়েছে বলে জানালেন দেলোয়ার। তিনি বলেন, ‘দাদনের টাকা মহাজনকে শোধ দিয়ে যা থাকত তা ট্রলারের ১৩ মাঝিমাল্লার মধ্যে ভাগ করে দিতাম। নিজেরও কিছু থাকত। দুই মৌসুম ধরে আমাদের সবাইকে চলতে হচ্ছে ধারদেনা করে।’

সরকারের হিসাব বলছে, চরফ্যাশনের উপকূলীয় জেলেপল্লিতে বসবাস লক্ষাধিক ইলিশ শিকারির। তাদের প্রায় ৩২ শতাংশ সারা বছর এবং প্রায় ৫০ শতাংশ খণ্ডকালীন ইলিশ ধরার কাজে নিয়োজিত থাকেন। ইলিশ কেনাবেচা ও পরিবহনসহ সংশ্লিষ্ট কাজগুলোতে যুক্ত বাকিরা, তাদের সংখ্যাই প্রায় সাড়ে চার লাখ। বেসরকারি হিসাবে ইলিশ শিকারির সংখ্যা আরও বেশি।

জেলেরা বলছেন, একটা সময় নদী ও সাগর থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইলিশ মিলত বলে ইলিশ শিকারে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত সবাই সচ্ছল জীবনযাপন করতেন। এখন ইলিশসংকটে সবাই বিপদে পড়েছেন। এ ছাড়া ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞার সময়ে সরকারি সহায়তা পাওয়া নিয়েও বিস্তর অভিযোগ জেলেদের। এই সহায়তার পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি প্রকৃত জেলেদের সহায়তাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করার দাবিও জানান জেলেরা।

একই উপজেলার আরেকটি বড় ঘাট ঢালচর। মৌসুমে দিনে বিভিন্ন এলাকার ৩০০ থেকে ৪০০ ট্রলারের আনাগোনা থাকে এই ঘাটে। এবার তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। ওই ঘাটে কয়েকজন জেলে জানালেন, প্রতিবার সাগরযাত্রায় ট্রলারে অন্তত সোয়া লাখ টাকার পণ্য প্রয়োজন হয়। ১০-১৫ দিন পর মাছ নিয়ে ফেরেন তারা। অনেক সময়ই জেলেরা কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে মাছ সংগ্রহে ব্যর্থ হন। এ রকম হলে সাগরযাত্রার খরচের দায়ও তাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেন মহাজন। প্রাথমিক দাদনের সঙ্গে তখন যুক্ত হয় খরচের টাকা।

জেলেরা বলছেন, এভাবে যতবার লোকসান হয়, ততবারই জেলে ও মাঝিমাল্লাদের দাদনের বোঝা বাড়তে থাকে। এর মধ্যে কোনো কোনো জেলে দাদন শোধ করতে এনজিও থেকে ঋণ নেন। তখন সেই কিস্তির চাপও ঘাড়ে চেপে বসে। গত মৌসুমের মতো এ মৌসুমেও প্রত্যাশা অনুযায়ী মাছ পাচ্ছেন না উল্লেখ করে জেলেরা বলছেন, এখন খেয়ে-পরে বাঁচাই কঠিন হয়ে পড়েছে।

ঢালচর ঘাটে কথা হয় জেলে আবদুর রবের সঙ্গে। ঢালচর গ্রামের এই বাসিন্দা পাঁচ সদস্যের সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। আগের বছর ৩০ হাজার টাকার সঙ্গে এ বছর ২৫ হাজার টাকা দাদন নিয়েছেন। সেই টাকা শোধ করতে না পেরে বাড়ি যেতে পারছেন না। এর মধ্যে স্থানীয় একটি এনজিও থেকে তিনি ৪০ হাজার টাকা ঋণ নেন। এখন সপ্তাহে এক হাজার টাকা করে কিস্তি টানছেন।

আবদুর রব বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। তবু নদী ও সাগরে ইলিশ মিলছে না। এ কারণে ট্রলারের মালিক, জেলেসহ সবার মাথায় ঋণের বোঝা। সামান্য যতটুকু মাছ মিলছে, তা দিয়ে ঋণ শোধ করে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে একেবারে খালি হাতে।

সরকারি সহায়তা নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে চর মাদ্রাজের চর নাজিমুদ্দিনের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম মাঝি বলেন, জেলেদের খাদ্য-সহায়তা হিসেবে বিপুল পরিমাণ চাল বরাদ্দ দেখানো হয়। তবে এসব চাল প্রকৃত জেলেরা পান না। সমাজের নানা পেশার লোকজন নানা কৌশলে এই চালে ভাগ বসান। ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা এই চাল বিতরণ করেন নিজেদের ঘনিষ্ঠদের মধ্যে। ফলে প্রকৃত জেলেদের বড় অংশ এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন।

তবে দাদন ছাড়া মাছের ব্যবসা সম্ভব নয় বলে মনে করেন সামরাজ মৎস্যঘাটের আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মো. জয়নাল আবেদিন মিয়া। তিনি বলেন, প্রত্যেক মাঝিমাল্লাকেই দাদন দিতে হয়। নদ-নদীতে মাছের সংকট না থাকলে মৌসুমেই দাদন শোধ করতে পারেন জেলেরা। এক মৌসুমে পরিশোধ না হলে ওই দাদনের হিসাব পরের বছরে যোগ হয়। এ বছরে ইলিশের সংকট আছে। এ কারণে জেলেদের মতো বিপাকে আড়ত মালিকরাও।

মহাজনদের দাদনের চাপে জেলেরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন– এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জয়নাল আবেদিন বলেন, দাদনের টাকার জন্য জেলেদের তেমন চাপ দেয়া হয় না। নদীতে মাছ ভালো থাকলে ইচ্ছামতো প্রতিটি ট্রিপের লভ্যাংশ থেকে দাদনের টাকা পরিশোধ করেন জেলেরা।

চরফ্যাশন উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার সরকারি সহায়তায় অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করলেও বরাদ্দের সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, চরফ্যাশনে জেলের সংখ্যা বেশি। কিন্তু বরাদ্দের পরিমাণ সীমিত। উপজেলায় তালিকাভুক্ত জেলের সংখ্যা ৬০ হাজার। তাদের মধ্যে ৪৯ হাজার জেলে পুনর্বাসনের আওতায় সুবিধা পাচ্ছেন।

বিষয়:

নওগাঁয় ৩৫ মাসে সড়কে প্রাণ হারাল ১৩০

নওগাঁয় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনার ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মো. সবুজ হোসেন, নওগাঁ

সকালবেলা পত্রিকার পাতা, টেলিভিশন কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম- দৃষ্টি পড়লেই সামনে আসে দেশের কোনো না কোনো স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি আর আহতের খবর। এ খবরে কারও পরিবারে শুরু হয় শোকের মাতম আবার কারও কাছে তা খুবই সাধারণ। যে পরিবার হারায়, তার স্বজন ও সে পরিবারের সদস্যরাই কেবল বুঝতে পারে সে যন্ত্রণার ভার কতটা দুঃসহ, বদলে যাওয়া জীবনের পথ কতটা কঠিন।

দেশের বিভিন্ন জেলার মতো নওগাঁ জেলায়ও সড়ক দুর্ঘটনায় আহত আর নিহতের তালিকা বেশ লম্বা। নওগাঁর পুলিশ কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য মতে, গত ৩৫ মাসে নওগাঁ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোট প্রাণহানির সংখ্যা ১৩০, আহত ১১২। এ সবের মধ্যে মামলা হয়েছে ১০৮টি।

এর মধ্যে ২০২২ সালে নিহতের সংখ্যা ১৫, আহত ১৩। রুজুকৃত মামলা ৯টি। ২০২৩ সালে নিহত ৬৪, আহত ৬৭। মামলা ৫২টি। চলতি বছরে নিহত ৫১, আহত ৩২। রুজুকৃত মামলা ৪৭টি।

এসব তথ্যের ভিত্তিতে জরিপ করলে দেখা যায়, ২০২২ এবং ২০২৪ সালের চেয়ে ২০২৩ সালে মৃত্যুর হার বেশি (৬৪) জন আর ২০২২ সালে মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম ১৫ জন। তবে নিহত এবং আহত তুলনা করলে প্রায় সমপরিমাণ হলেও ২০২২ এবং ২০২৩ সালে নিহতের চেয়ে আহতের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। নিহত এবং আহতের ঘটনায় রুজুকৃত মামলার সংখ্যা দাঁড়ায় ১০৮ আটটি। ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনের ৯৫, ৯৮, ৯৯ ও ১০৫-এর বিভিন্ন ধারায় এসব মামলা রুজু হয়েছে। এসব মামলা থেকে কিছু আসামি জেল-জরিমানার মধ্য দিয়ে মুক্ত হয়েছে আবার কিছু মামলা এখনো চলমান।

বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষা উওরের জেলা নওগাঁ। এ জেলার মোট ১১টি উপজেলায় ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ৩৫ মাসে সড়কে যারা প্রাণ হারিয়েছে এবং আহত অবস্থায় আজও হাসপাতালের বেডে রয়েছে, আবার অনেকে পঙ্গুত্বের অভিশাপে ধুঁকে ধুঁকে মরছেন।

কথা হয় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত এক কলেজ ছাত্রের বাবার সঙ্গে। ২০২২ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় শহরের দয়ালের মোড় এলাকার পলাশ হোসেনের। তার বাবা আইয়ুব আলী বলেন, ‘আমি ফুটপাতে ব্যবসা করলেও আমার অনেক স্বপ্ন ছিল আমার ছেলে পড়াশোনা শেষ করে ভালো চাকরি করবে। আমার সেই স্বপ্ন আর পূর্ণ হলো না। আল্লাহ! যেন আর কোনো বাবাকে সন্তানের এমন লাশ দেখতে না হয়।’

সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়া শহরের কাজীর মোড় এলাকার বাসিন্দা দুলাল হোসেন বলেন, ‘২০২৩ সালে চৌমাশিয়া মোড় এলাকায় ট্রাকের সঙ্গে আমার মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। সে যাত্রায় প্রাণে বেঁচে গেলেও দীর্ঘদিন হাসপাতাল আর বাসায় কেটেছে। আমি পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি হওয়ায় পুরো পরিবারটাই অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।’

পুলিশের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলার পুনর্বিবরণে কারণ হিসেবে দেখা যায়, বিভিন্ন ধরনের পরিবহন দুর্ঘটনা কবলিত হলেও অধিকাংশ দুর্ঘটনা মোটরসাইকেলকেন্দ্রিক। তার পরেই রয়েছে ট্রাক, বাস, সিএনজি, ইজিবাইকসহ অন্যান্য পরিবহন। সেই সঙ্গে জেলার সড়ক দুর্ঘটনাপ্রবণ কিছু এলাকা রয়েছে, যেগুলোতে বেশি দুর্ঘটনা হয় তার মধ্যে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের জলিল চত্বর থেকে হাঁপানিয়া, চকগৌরী, নওহাটা চৌমাশিয়া মোড় উল্লেখযোগ্য।

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলে প্রতিদিন ছাত্র, যুবক, বৃদ্ধ এমনকি বাদ নেই মায়ের কোলের নিষ্পাপ শিশুটিও।

নওগাঁর পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. কুতুব উদ্দিন বলেন, ‘সড়কে দুর্ঘটনার অনেক কারণ রয়েছে। তার মধ্যে যদি মোটা অঙ্কে বলি, বেশি গতিতে গাড়ি চালানো, স্কুল, কলেজ, বাজার, রাস্তার বাঁক এমন ধরনের জায়গায় গাড়ির গতি না কমানো, ট্রাফিক সিগন্যাল অমান্য করে বিপজ্জনকভাবে ওভারটেক করা। ফিডার রোড থেকে মেইন রোডে অসতর্কভাবে বিভিন্ন যানবাহনের প্রবেশ। অধিক আয়ের আশায় বিশ্রাম ছাড়াই বাস-ট্রাক চালকের বিরতিহীন গাড়ি চালানোসহ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হওয়া।’

তিনি আরও বলেন, প্রতিকার হিসেবে প্রথমেই উল্লেখিত কারণগুলো থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। সেই সঙ্গে দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানগুলোকে চিহ্নিত করে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড দেওয়াসহ হাইওয়ে সড়কের বাঁকে ২০ ডিগ্রির বেশি কৌণিক অবস্থানে থাকবে না এমনটা নিশ্চিত করতে হবে। সড়ক নিরাপত্তা আইন ও ট্রাফিক আইনের বিধিবিধান অমান্যকারীকে জরিমানাসহ বিভিন্ন ধরনের সচেতনতা প্রোগ্রাম ও প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। যেকোনো পরিবহনের চালক বিশেষ করে বাস বা ট্রাকের চালকদের গাড়ি চালানোর আগে পর্যাপ্ত বিশ্রামসহ শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে হবে।

বিআরটিএ নওগাঁ সার্কেলের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক আফতাবুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্ঘটনা এড়াতে চাইলে অবশ্যই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালক হতে হবে, ট্রাফিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। সেই সঙ্গে গাড়ির ফিটনেসসহ নানামুখী জনসচেতনতা কার্যক্রম বাড়াতে হবে। আমি নওগাঁতে নতুন, তবে বিআরটিএর সব বিধিমালা অনুযায়ী আমার কার্যক্রম অব্যাহত আছে এবং থাকবে।’

নওগাঁ জেলা বাস-ট্রাক শ্রমিকের সাধারণ সম্পাদক এস এম মতিউজ্জামান মতি বলেন, ‘আমাদের বড় গাড়ির সব চালক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তবে অনেক অল্প শিক্ষিত আছে। কিন্তু বর্তমানে ইজিবাইক (চার্জার) তথা ছোট গাড়িগুলোর চালকদের কোনো প্রশিক্ষণ না থাকার কারণে বড় গাড়িগুলোর সঙ্গে দুর্ঘটনা হয়।’

‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর নওগাঁ জেলা সভাপতি এ এস এম রায়হান আলম বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনারোধে চালক-পথচারী থেকে শুরু করে সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে হাইওয়ে সড়কে বিভিন্ন ধরনের গাড়ির ভিন্ন গতিবিধি দুর্ঘটনার একটা কারণ। আমাদের সবাইকে ট্রাফিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হলে কিছুটা হলেও দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে।’


৭৯৫ রোহিঙ্গাকে জন্মনিবন্ধন দেওয়ার অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

তদন্ত কমিটি গঠন
আপডেটেড ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১৩:৩৭
জালাল উদ্দিন ভিকু, দৌলতপুর (মানিকগঞ্জ)

মানিকগঞ্জে টাকার বিনিময়ে ৭৯৫ জন রোহিঙ্গার জন্মনিবন্ধন ও সনদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের এক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত চেয়ারম্যান হচ্ছেন জেলার দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মো. আইয়ুব আলী। এ ঘটনায় তার সচিবসহ সংশ্লিষ্টরাও জড়িত বলে অভিযোগে জানা গেছে। ঘটনাটি প্রকাশ পাওয়ায় এর সত্যতা যাচাইয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ঘটনাটি প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন ওই জনপ্রতিনিধি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত)আহসানুল আলম। তিনি জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে । ইতোমধ্যে এই অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবের সরকারি নিবন্ধন আইডি বন্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে অভিযোগের তদন্ত চলমান থাকায় সাময়িক ভাবে ওই পরিষদের সরকারি নিবন্ধন অ্যাকাউন্ট বন্ধ রাখা হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যমুনা নদীর তীর ঘেঁষে দুর্গম চরাঞ্চল চরকাটারী ইউনিয়ন পরিষদ। এই দুর্গমতার সুযোগ নিয়ে এলাকার বাসিন্দা না হওয়ার পরেও গোপন আর্থিক চুক্তির বিনিময়ে মিয়ানমার থেকে আসা বাস্তুচ্যুত ৭৯৫ জন রোহিঙ্গাকে ওই এলাকার বাসিন্দা হিসেবে প্রত্যয়ন দিয়ে তাদের জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়েছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী।

ইউপি সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ চেয়ারম্যান, ইউপি সচিব ও সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গা নাগরিকদের অবৈধ জন্মনিবন্ধন করেছেন। তবে ইউপি চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এসব সনদ দেওয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

ইউনিয়ন পরিষদের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, এই অবৈধ কাজে সহায়তাকারী পরিষদের উদ্যোক্তা মো. জলিল মন্ডল নিজের দোষ স্বীকার করে জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে চেয়ারম্যানের কাছে দিয়েছেন। জেলা প্রশাসকের স্থানীয় সরকার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ফেরুয়ারি মাস থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চরকাটারী ইউনিয়নে ৭৯৫ জনের অবৈধ জন্মনিবন্ধন দেওয়া হয়। ১০ মাসের মধ্যে হওয়া ওই জন্মনিবন্ধনগুলো বাতিলের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে সম্প্রতি চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং জন্ম নিবন্ধনগুলো বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

এদিকে চরকাটারী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কম্পিউটারের কাজ তেমন বুঝি না। পরিষদের উদ্যোক্তা মো. জলিল মন্ডলের কাছে আমার ইউপির জন্মনিবন্ধনের আইডির পাসওয়ার্ড থাকত। সেই সুযোগেই উদ্যোক্তা জলিল এ রকম অবৈধ জন্মনিবন্ধন করেছে। বিষয়টি নিয়ে আমিও খুব বিপদে আছি । তবে দায় এড়াতে না পেরে পলাতক আছেন চরকাটারী ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা মো. জলিল মণ্ডল। তাকে ইউনিয়ন পরিষদে পাওয়া যায়নি । তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, উদ্যোক্তা জলিলকে কয়েক দিন ধরেই এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল জলিল, ওয়াজ উদ্দিন ও রহিম মিয়া বলেন, ৭৯৫ জনের জন্মনিবন্ধন হয়েছে, তারা কেউ আমাদের এলাকার বাসিন্দা না। চেয়ারম্যান, সচিব ও উদ্যোক্তারা টাকার বিনিময়ে অবৈধ জন্মনিবন্ধন করেছেন।

ইউপি সদস্য মো. জয়েদ আলী মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, ৭৯৫ জনের অবৈধ এ জন্মনিবন্ধন হওয়ায় আমাদের চরাঞ্চলের মানুষের ক্ষতি হবে। এর দায় চেয়ারম্যান, সচিব ও উদ্যোক্তার। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চরকাটারী ইউনিয়নে দীর্ঘদিন কোনো সচিব ছিল না। উপজেলার পার্শ্ববর্তী বাচামারা ইউনিয়নের সচিব আলমগীর হোসেন এই ইউনিয়নের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ২০ অক্টোবর নতুন সচিব মো. সেলিম দায়িত্ব গ্রহণের পরই অবৈধ জন্মনিবন্ধনের বিষয়টি তার নজরে আসে পরে তিনি ইউএনওকে অবগত করেন।

এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আহসানুল আলম বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই চেয়ারম্যান ও সচিবের নিবন্ধন আইডি বন্ধ করে দিয়েছি। চরকাটারী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৭৯৫ জনকে জন্মনিবন্ধন দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি তদন্ত চলমান আছে। এ বিষয়টি লিখিত আকারে বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে আরো একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি শিগগিরই তদন্ত কাজ শুরু করবে।


বিমানবন্দরে অভিনেত্রীসহ দুই যাত্রী থেকে ৬৯ লাখ টাকার সোনা জব্দ           

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক অভিনেত্রীসহ দুই যাত্রীর কাছ থেকে ৭৩৩ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার উদ্ধার করেছেন কর্মকর্তারা। এসব স্বর্ণালংকারের বাজার মূল্য প্রায় ৬৮ লাখ ৯৬,৪৬২ টাকা। শনিবার সকালে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর (এনএসআই) ও শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা উড়োজাহাজে তল্লাশি চালিয়ে এসব স্বর্ণালংকার জব্দ করেন।

আটক দুই যাত্রী হলেন- নাট্য অভিনেত্রী অনামিকা জুথি ও চট্টগ্রামের রাউজানের মোহাম্মদ রায়হান ইকবাল। তারা বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজে করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন। বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা জানান, অনামিকা জুথি দুই হাতে স্বর্ণের চুড়ি স্কচটেপ দিয়ে আটকে কৌশলে বহন করছিলেন। এছাড়াও দুইজনই স্বর্ণের চেনগুলো গলায় সুকৌশলে লুকিয়ে রেখেছিলেন।

তাদের হাতব্যাগ থেকেও স্বর্ণালংকার জব্দ করা হয়েছে। বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ বিমানের ‘বিজি-১৪৮’ ফ্লাইটে দুবাই-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে দুবাই থেকে সকালে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সকাল ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই চট্টগ্রাম বিমানবন্দর টিম ও শুল্ক গোয়েন্দা যৌথভাবে বিমানের ভেতরে ঢুকে দুই যাত্রীকে তল্লাশি করে।

এ সময় অনামিকা ও রায়হানের কাছ থেকে ৭৩৩ গ্রাম স্বর্ণালংকার জব্দ করা হয়। তারা মূলত ঢাকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রী। এ কারণে অ্যাভিয়েশন রুল অনুযায়ী তাদের একই বিমানযোগে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এনএসআই ও শুল্ক গোয়েন্দারা দুইজনকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টিমের কাছে হস্তান্তর করেন।

এদিকে এই বিষয়ে অনামিকা জুথি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আটক করার মতো ঘটনা ঘটেনি। ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। তবে কিছু স্বর্ণ আমার সঙ্গে ছিল তবে সেটার জন্য ট্যাক্স দিতে হয়। অলরেডি আমি ট্যাক্স দিয়েছি। যেভাবে নিউজ হয়েছে তা দেখে আমি বিব্রত। পরিচিত সবাই ফোন করেছেন। কীভাবে এত বড় ভুল একটি তথ্য ছড়িয়েছে আমার বোধগম্য নয়। এটা আমার জন্য সম্মানহানিকর।’


৭৯ নাবিকসহ দুই নৌযান ভারতে ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো

বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা থেকে ৭৯ নাবিকসহ দুটি নৌযান ভারতীয় কোস্টগার্ড ধরে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার দুপুরে খুলনার হিরণ পয়েন্ট এলাকার ভারতের জলসীমার কাছ থেকে এফভি মেঘনা-৫ ও এফভি লায়লা-২ নামে মাছ ধরার নৌযান দুটিকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে মালিক এবং নৌপরিবহন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।

এর মধ্যে এফভি মেঘনা-৫ এর মালিক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের সিঅ্যান্ডএ অ্যাগ্রো লিমিটেড, আর এফভি লায়লা-২ এর মালিক প্রতিষ্ঠান এস আর ফিশিং। সিঅ্যান্ডএ অ্যাগ্রো লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক সুমন সেন গণমাধ্যমকে জানান, জাহাজ দুটি খুলনা বেল্টের হিরণ পয়েন্ট এলাকায় গভীর সমুদ্রে মাছ ধরছিল। সোমবার দুপুরের দিকে ভারতের কোস্টগার্ড নাবিকসহ আটক করে নিয়ে গেছে বলে জানতে পারি। এ সংবাদ পাওয়ার পর কোস্টগার্ড, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে যোগাযোগ করেছেন বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, এর মধ্যে এফভি মেঘনাতে ক্রু ও জেলে মিলিয়ে মোট ৩৭ জন এবং লায়লাতে ৪২ জন ছিল। তাদের সঙ্গে সোমবার রাতে এবং মঙ্গলবার সকালে কথা হয়েছে। তারা ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন।

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডোর মাকসুদ আলম জানান, তিনি বিষয়টি জেনেছেন। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমরা এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।


গোলার শব্দে ফের অশান্ত টেকনাফ সীমান্ত

অনুপ্রবেশের শঙ্কা, মানুষের মাঝে আতঙ্ক
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মংডুতে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্য চলমান যুদ্ধে গতকাল শুক্রবার রাত থেকে গোলার বিকট শব্দ আজ শনিবার ভোর পর্যন্ত চলছিল। এতে নতুন করে অনুপ্রবেশের শঙ্কার পাশাপাশি সীমান্ত মানুষের মাঝে আতঙ্ক কাজ করে।

সীমান্তের বসবাসকারীরা বলছে, কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এবং সাবরাং এর পূর্বে নাফনদীর ওপারে রাখাইনে মংডু টাউনশীফ বিপরীতে মংডু শহরের অবস্থান। ওই সীমান্ত এলাকায় প্রচন্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

দীর্ঘ চলমান যুদ্ধে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী বিদ্রোহী আরাকান আর্মি অধিকাংশ এলাকা তাদের দখলে নেয়। এসব জায়গা পূর্ণ-উদ্ধারে কয়েকদিন ধরে ব্যাপক হামলা চালায় দেশটির জান্তা সরকার। যার কারনে সেদেশের গোলার শব্দে এপারের সীমান্ত কেঁপে উঠেছে।

টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দা ওমর ফারুক বলেন, ‘রাতভর মিয়ানমারের গোলার কারনে নির্ঘুম রাত কেটেছে। সকাল পর্যন্ত বড় ধরনের গোলার বিকট শব্দ পাওয়া গেছে। তাই আমরা রাত জেগে বসে ছিলাম। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা ভয়ে ছিল।'

সীমান্তের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, মিয়ানমারের এখনো কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বসবসা করছে। বর্তমানে মংডুতে হামলা হচ্ছে, সেখানে অধিকাংশ রোহিঙ্গা নাগরিকের বসবাস। এভাবে যুদ্ধ চলমান থাকলেও ফের নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে।’

তবে সীমান্তে অনুপ্রবেশে রোধে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর ইশতিয়াক মুর্শেদ।

এদিকে খারাংখালী,টেকনাফ, পৌরসভা, হ্নীলা, জাদিমুড়া, দমদমিয়া, নাইট্যংপাড়া, পৌরসভার জালিয়াপাড়া, নাজিরপাড়া, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ, নাফ নদীর মোহনায় থেকে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। ফলে মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেপেঁ উঠছে টেকনাফ সীমান্ত।

সীমান্তেরর বাসিন্দা গফুর আলম বলেন, ‘সীমান্তের রাতভর গোলার বিকট শব্দে মানুষ ঘুমাতে পারেনি। একটু পর পরই মুহুমুহু গোলার বিকট শব্দ ভেসে আসছে এপারে। যার কারনে ভয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পরি। রাতের মতো এমন গুলির শব্দ আগে কখনো শুনেনি। এ পরিস্থিতিতে যে-কোন মূর্হতে সীমান্তে আবারও অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে।'

ক্যাম্পের বসবাসকারী এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, ‘রাখাইনে কয়েকদিন ধরে ফের যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে। যার কারনে সেদেশে থাকা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে পালিয়ে আসার জন্য। কিন্তু তাদের এদেশে না আসতে নিরুসাহিত করছি। তবু মানুষ প্রাণে ভয়ে পালিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছে।’

মিয়ানমার মংডুও শহরের মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীরদ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফনদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা দিনরাত নাফনদী ও সীমান্ত সড়কে টহল বৃদ্ধি করেছে। সেটি চলমান এবং যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সব সময় প্রস্তুত বিজিবি ও কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরার সদস্যরা।

এ বিষয়ে সদ্য যোগদানকারী টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, 'আমি গুলির বিকট শব্দ শুনেছি। মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারনে এ ধরনের বিকট শব্দ পাওয়া যায়। আমরা সীমান্তের বসবাসকারী মানুষের খোঁজ খবর রাখছি। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আমাদের বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা সর্তক অবস্থানে রয়েছে।'


পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত, তাপমাত্রা নামল ১২ ডিগ্রিতে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হোসেন রায়হান, পঞ্চগড়

ফজরের নামাজ পড়ে শুক্রবার অটোভ্যান নিয়ে শহরে আসেন পঞ্চগড়ের মীরগড় গ্রামের নুরুল্লাহ। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কোনো ভাড়া পাননি। এর মধ্যে হঠাৎ এদিন থেকে বেড়েছে কুয়াশা, সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়া। বিপর্যস্ত এই পরিস্থিতিতে কিছুটা হতাশ তিনি। কারণ এক দিন পর ঋণের আড়াই হাজার টাকা জোগাড় করতে আরও ১৩০০ টাকা দরকার তার।

একই রকম সমস্যা ফুলতলা গ্রামের আকবর আলী, শরিফুল আলম ও মিজানুর রহমানের। ভোর থেকেই শহরের সিনেমা রোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে কাজের সন্ধান করছেন তারা। ডিসেম্বর থেকে শীত-কুয়াশা বেড়ে যাওয়ায় কাজ একেবারেই কমে গেছে তাদের। আগে নদীর পাথর তুলে সংসার চালালেও ঠাণ্ডা পানিতে পাথর সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়ায় অন্য কাজের সন্ধ্যান করছেন তারা।

বিরূপ আবহাওয়ার কারণে এভাবেই সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকায় টান পড়েছে। গত ২ সপ্তাহ ধরে পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে ১০ থেকে ১২ ডিগ্রির ঘরে।

বিকেল থেকে ভোর রাত পর্যন্ত ঠাণ্ডা বাতাস, সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত শিশির কণা জেলার শীত কবলিত মানুষের জীবনে পরিবর্তন এনেছে। দিনভর সূর্যের আলো থাকলেও তেমন তেজ নেই। রয়েছে খণ্ড খণ্ড মেঘের মেলা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে হালকা বৃষ্টির আভাস রয়েছে। ডিসেম্বরে তাপমাত্রা এক অঙ্কের ঘরে নেমে যাবে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস রয়েছে।

অব্যাহতভাবে পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা কমতে থাকায় শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। রাতে তাপমাত্রা কমতে থাকায় মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। দিনের তাপমাত্রাও থাকছে ২৮-২৯ ডিগ্রির ঘরে। গ্রাম-গঞ্জের হাটবাজারে সন্ধ্যার পর লোক সমাগম কমছে। শহরের মানুষও তাড়াতাড়ি ঘরমুখী হচ্ছেন। তবে পাড়া-মহল্লা এবং শহরের বিভিন্ন স্থানে শীতের নানা রকমারি পিঠা-পুলির দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে।

শুক্রবার সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কার্যালয়। সকালে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভোরের সূর্য উঠলেও কুয়াশা ঝরা প্রকৃতি। সবুজ ঘাসের ডগায় টলমল করছে ভোরের শুভ্র শিশির। বৃষ্টির ফোঁটার মতো ঝরছে শিশির কণা। শিশির মাড়িয়ে কাজে যেতে দেখা যায় চাষিদের। শীত ঘিরে বাংলার ঘরে ঘরে চলছে নবান্নের আয়োজন।

উত্তরের এ জেলা বরফের পাহাড় হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘার বিধৌত এলাকা হওয়ায় অন্যান্য জেলার আগেই শীতের আগমন হয়। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতের দাপট বেশি হয়ে থাকে। তবে নভেম্বর থেকেই শুরু হয় শীতের আমেজ। শীতকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের ভিড় বাড়তে থাকে তেঁতুলিয়ায়। এ সময় আকাশ কিছুটা পরিষ্কার থাকায় দেখা মেলে শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘার বর্ণালি লাবণ্য।

এদিকে শীতকে কেন্দ্র করে ব্যস্ততা বেড়েছে লেপ-তোশক কারিগরদের। বিক্রি বেড়েছে মৌসুমি শীতবস্ত্রের দোকানগুলোতে। শীতের প্রস্তুতি হিসেবে শীত আসার দুয়েক মাসের আগে থেকেই কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায় কারিগরদের। এ ছাড়া ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানে শীতের কাপড় আনতে শুরু করেছেন। শীতের আগেই শীতের কাপড় এবং লেপ-তোশক তৈরি করে আগাম প্রস্তুতি নিতে দেখা যায় অনেককে।

শীতজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধি এরই মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের পরিচালক রাজিউর রহমান জানান, শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। লোকবল, চিকিৎসকসহ জায়গার অভাবে শিশুদের মেঝেতে থাকতে হচ্ছে। বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করে চিকিৎসা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

পঞ্চগড়ের প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, এই দুই মাস তাপমাত্রা কমতে থাকবে। রয়েছে মৃদু এবং মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস। তাপমাত্রা দাঁড়াবে এক অঙ্কের ঘরে। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে গিয়ে দেখা দেবে শৈত্যপ্রবাহ। চলতি মাসে একাধিক মৃদু এবং মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে।

জেলায় ভারী কোনো শিল্প-কারখানা না থাকায় পাথর শ্রমিকসহ নদীকেন্দ্রিক মানুষের কাজের ক্ষেত্র করে গেছে। মহানন্দা নদীর হিম জলরাশি থেকে কষ্ট করে পাথর সংগ্রহ করছে শ্রমজীবী মানুষ।

জেলা প্রশাসক মো. সাবেদ আলী দৈনিক বাংলাকে জানান, শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। শীত মোকাবিলা করতে আগাম প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে পাঁচ উপজেলায় দুই হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত বরাদ্দসহ খাদ্য সহায়তা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে।


স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রশ্নে কোনো আপস নয়: রিজভী

রাজশাহী নগরীর ভুবন মোহন পার্কে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বক্তব্য রাখেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজশাহী প্রতিনিধি

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আজগুবি অপপ্রচার করছে। তাদের উদ্দেশ্য ভয়ংকর খারাপ। তারা চট্টগ্রাম দাবি করলে, আমরা বাংলা-বিহার-ওড়িশা দাবি করব। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে গোটা জাতি এখন ঐক্যবদ্ধ। এ ব্যাপারে কোনো আপস নেই।

মঙ্গলবার সকালে ‘দেশীয় পণ্য, কিনে হও ধন্য’ ব্যানারে রাজশাহী নগরীর ভুবন মোহন পার্কে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ায় ভারতের শাসকগোষ্ঠী মনকষ্টে আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, মমতা ব্যানার্জি বাংলাদেশে শান্তি বাহিনী পাঠাতে বলেছে। একটি সার্বভৌমত্বের দেশে কীভাবে অন্য একটি বাহিনী পাঠায়। এ থেকে প্রমাণ হয় শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন, এতে ভারতের রাজ্য থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত প্রত্যেক জনপ্রতিনিধির মন খারাপ। আদতে ভারতের রাজনীতিবিদদের গোড়া রসুনের মতো একই জায়গায়। তারা এ দেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে না; বন্ধুত্ব করে শেখ হাসিনার সঙ্গে।

রিজভী দাবি করেন, বাংলাদেশ পেঁয়াজ উৎপাদনেও স্বয়ংসম্পূর্ণ। সিন্ডিকেট করে সংকট তৈরি করা হয়েছে টাকা লুটপাট করার জন্য। তিনি বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসকরা বেশ দক্ষ। একসময় ভারত থেকে চিকিৎসা নিতে রাজশাহীতে লোক আসত।’

রিজভী বলেন, বাংলাদেশিদের ভারত থেকে শাড়ি, সাবান, বিছানা, চাদর বা অন্য কিছু কেনা উচিত নয়। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা এবং আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা ডা. রফিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকার, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী এশা, সদস্য সচিব মামুনুর রশীদ, ছাত্রদলের সহসভাপতি ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল প্রমুখ।

বক্তব্য শেষে রুহুল কবির রিজভী স্বল্প মূল্যে দেশি লুঙ্গি, শাড়ি, সাবান ও পাঞ্জাবি বিক্রি করেন প্রান্তিক মানুষের মধ্যে। পরে তিনি ভারতীয় একটি জয়পুরী বিছানার চাদর পোড়ান।


সিলেটে বিমানের সিটের নিচ থেকে আবারও স্বর্ণ জব্দ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সিলেট ব্যুরো

দুই দিনের ব্যবধানে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসা একটি ফ্লাইট থেকে আবারও ১ কেজির বেশি স্বর্ণালংকার জব্দ করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সকাল ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে দুবাই থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট বিজি-২৪৮ থেকে স্বর্ণগুলো জব্দ করা হয়। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি।

সিলেট বিমানবন্দর ও এয়ারফ্রেইট বিভাগের সহকারী কমিশনার মো. সোহানুর রহমান বলেন, স্বর্ণালংকারগুলো যাত্রীবিহীন অবস্থায় বিমানের ২৬ সি নং সিটের নিচে কালো মোড়ক দিয়ে আবৃত ছিল।

তিনি আরও বলেন, জব্দ করা স্বর্ণের মধ্যে ১৮টি চুড়ি ও তিনটি চেইন রয়েছে। স্বর্ণের ওজন এক কেজি ১৬৬ গ্রাম। এর বাজার মূল্য প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ টাকা।

সোহানুর রহমান আরও বলেন, চোরাচালানে জড়িত যাত্রী কাস্টমস কর্মকর্তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে স্বর্ণ ফেলে রাখে। ওই ঘটনায় কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। সিলেটের কাস্টমস কমিশনার মো. তাসনিমুর রহমানের নির্দেশনায় বিমানবন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এ অভিযান চালিয়েছে জানিয়ে সোহানুর রহমান বলেন, স্বর্ণ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা করা হবে।

এর আগে গত বুধবার বাংলাদেশের বিমানের একটি ফ্লাইট থেকে ১ কেজি ২৮৩ গ্রাম ওজনের ১১টি স্বর্ণের বার জব্দ করেছিল ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।


বগুড়ায় কারা হেফাজতে আ.লীগ নেতার মৃত্যু 

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বগুড়া প্রতিনিধি

বগুড়া কারাগারে অসুস্থ হয়ে আব্দুল মতিন মিঠু (৬৫) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আব্দুল মতিন মিঠু বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বৈইঠা দক্ষিণপাড়া এলাকার মোজাহার আলীর ছেলে ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং দুর্গাহাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ছিলেন।

বগুড়া জেল সুপার ফারুক আহমেদ জানান, সদর থানায় দায়ের করা মামলায় গত ৩ নভেম্বর বগুড়া জেলা কারাগারে আনা হয় তাকে। রোববার রাত সাড়ে ৩টার দিকে বুকে ব্যথা অনুভব করলে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার সকালে সেখানেই মারা যান তিনি।


সড়ক দুর্ঘটনায় উপ-সচিব নিহত

নিহত ড. মো. ফরহাদ হোসেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-১) উপ-সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বরিশাল ব্যুরো

বরিশালের মুলাদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ড. মো. ফরহাদ হোসেন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে মুলাদী উপজেলার প্যাদারহাট সংলগ্ন এলাকায় ওই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ড. মো. ফরহাদ হোসেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-১) উপ-সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মুলাদী থানার ওসি জহিরুল আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নিহত ফরহাদ হোসেন মুলাদী সদর ইউনিয়নের চর লক্ষীপুর এলাকায় মাওলানা আব্দুল কাদেরের ছেলে।

উপজেলার চরলক্ষীপুর নন্দীরবাজার মাহফিল আয়োজক কমিটির সদস্য জয়নুল আবেদীন জানান, শুক্রবার নন্দীর বাজারে একটি মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন উপ-সচিব ড. ফরহাদ। মাহফিলে অংশ নিতে তিনি ঢাকা থেকে বরিশালে আসেন তিনি। বিকেলে মীরগঞ্জ ফেরিঘাট থেকে একটি থ্রি-হুইলারের (আলফা-মাহিন্দ্রা) যাত্রী হয়ে মুলাদী সদরে চরলক্ষীপুরে যাচ্ছিলেন ফরহাদ হোসেন। পথে থ্রি হুইলারটি প্যাদারহাট পার হয়ে হাওলাদার ব্রিজের কাছে এলে হঠাৎ একটি কুকুর সামনে এসে পড়ে। তখন চালক ব্রেক করলে থ্রি হুইলারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়।

ওসি বলেন, চালকের যে পাশে ফরহাদ হোসেন বসা ছিলেন মাহিন্দ্রাটি সেই পাশেই উল্টে যায়। এতে ফরহাদ হোসেন মাথায় গুরুত্বর আঘাতপ্রাপ্ত হন। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে দুর্ঘটনায় থ্রি-হুইলার চালক ও অন্য যাত্রীরা তেমন আহত হয়নি।

মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সাইদুর রহমান জানান, হাসপাতালে আসার আগেই ড. ফরহাদ হোসেনের মৃত্যু হয়।


পঞ্চগড়ে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশির মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। তার নাম আনোয়ার হোসেন (৪০)।

শুক্রবার ভোরে উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের মোমিনপাড়া ও ভারতের শিংপাড়া সীমান্তের মেইন পিলার ৭৫১-এর ৮-৯ নম্বর সাব পিলারের মাঝামাঝি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আনোয়ারের বাড়ি জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের দেবনগড় ইউনিয়নের আমজুয়ানী এলাকায়।

নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে কয়েকজন বাংলাদেশিসহ ভারতে গরু আনতে যান আনোয়ার হোসেন। পরে ভোরের দিকে গরু নিয়ে ফেরার পথে বিএসএফ ৯৩ ব্যাটালিয়নের চানাকিয়া ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে। বিএসএফের দাবি ওই বাংলাদেশিরা তাদের ওপর দেশীয় দা ও বাঁশের লাঠি দিয়ে হামলা করতে গেলে আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়। এ সময় ঘটনাস্থলে নিহত হন আনোয়ার। পরে তার মরদেহ নিয়ে যায় বিএসএফ সদস্যরা। সেই সঙ্গে চোরাচালানের দুটি গরুও জব্দ করে বিএসএফ সদস্যরা।

এদিকে গুলির শব্দ পেয়ে চোরাকারবারীদের প্রতিহত করার জন্য আটটি ফাঁকা গুলি করেন ঘাগড়া বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে নিহতের মরদেহ ফেরত আনা ও এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা। ঘটনার পরে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা থেকে চোরাচালানের একটি গরু জব্দ করেছে বিজিবি।


ভারতের অপতথ্য প্রচারে আমাদের ক্ষতি নেই: ড. এম সাখাওয়াত 

বেনাপোল বন্দর পরিদর্শনে নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতীয় গণমাধ্যম যে অপতথ্য প্রচার করছে তাতে বাংলাদেশের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না।’

আজ শুক্রবার যশোরের বেনাপোল কার্গো ইয়ার্ড ও ইমিগ্রেশন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ভারতের অপতথ্য প্রচারে আমাদের কোনো ক্ষতি নেই, আমাদের এখানে চিকিৎসা ও বাজার সবই আছে।’

তিনি বলেন, ‘সমস্ত পৃথিবী থেকে ভারতে ভ্রমণকারীর সংখ্যার মধ্যে বাংলাদেশিদের অবস্থান দ্বিতীয় বৃহত্তম। এ খাত থেকে অর্থনৈতিকভাবে প্রতিবেশী দেশটি বিশাল লাভবান হয়। তারা বাংলাদেশিদের ভারতে যেতে না বললে বাংলাদেশিরাও ভারতে যাবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মধ্যে মেজরিটি-মাইনরিটি কোনো বিভাজন নেই। এখানে আমরা সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে বসবাস করি।’ কোনো ধরনের উসকানিতে কান না দিতে সবার প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমি গতবার কার্গো ভেহিকল টার্মিনাল উদ্বোধন করে গিয়েছিলাম। কিন্তু বন্দরের কিছু সমস্যা ছিল যেমন- স্ক্যানার মেরামত করতে বলেছিলাম এবং আরও অন্যান্য বিষয়ের কাজ দিয়েছিলাম। তাই সেগুলো সচল আছে কি না এবং বন্দরের বাণিজ্য বন্ধ আছে কি না ও সার্বিক প্রস্তুতি ঘুরে দেখলাম।’

এসময় বেনাপোল চেকপোস্ট পরিবহন ব্যবসায়ীরা উপদেষ্টার কাছে পুরাতন বাস টার্মিনাল চালুর কথা জানালে ১৯টি পরিবহনের কার্যক্রম চালানোর আশ্বাস দেন তিনি। পরে স্থলবন্দরের সার্বিক বিষয় নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন। সবশেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান উপদেষ্টা। এ সময় আব্দুল্লাহর মা-বাবা এবং পরিবারের খোঁজ-খবর নেন ও তার কবর জিয়ারত করে যশোরের উদ্দেশ্য রওনা দেন। আগামীকাল শনিবার ভোমরা স্থলবন্দর পরিদর্শনের জন্য তিনি সাতক্ষীরা যাবেন।

বেনাপোল বন্দর পরিদর্শনকালে যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামসহ পুলিশ প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


আইনজীবী আলিফ হত্যা, প্রধান আসামি চন্দন ভৈরবে গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো ও ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত আসামী চন্দন (৩৮) গ্রেপ্তার হয়েছে। গতকাল বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে ভৈরব থানার ওসি মো. শাহিনে নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃত চন্দন ট্রেন থেকে নেমে ভৈরবের মেথরপট্টিতে অবস্থিত তার শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। তিনি আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলার ১নং আসামি বলে জানায় পুলিশ।

এদিকে চন্দনকে গ্রেপ্তারের পর কোতোয়ালি থানার নিকট চন্দকে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর রুবেল আফরাদের নিকট তাকে হস্তান্তর করা হয়।

ভৈরব থানার ওসি মো. শাহিন মিয়া জানান, ভৈরব থানার একটি বিশেষ টিম রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চট্রগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত আসামী চন্দনকে গ্রেপ্তার করার পর সকালের দিকে কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর রুবেল আফরাদ এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।জানা যায়, প্রধান আসামি চন্দনকে ধরতে চট্টগ্রাম ডিবি গত দুদিন ধরে ভৈরবে অবস্থান করছিল। ডিবি জানতে পারে আসামি চন্দনের শ্বশুরবাড়ি ভৈরব এলাকায়। কিন্তু ডিবি তার খোঁজ পাচ্ছিল না। বুধবার তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জানতে পারে তিনি ভৈরবে অবস্থান করছেন। পরে এ খবর ভৈরব পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ সন্ধ্যার পর থেকে ভৈরব রেলস্টেশনে অবস্থান নেয়। বুধবার রাত ১১টার দিকে ওসি শাহিন মিয়ার নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে রেলস্টেশন এলাকা থেকে আটক করা হয়।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (এডিসি) কাজী মো. তারেক আজিজ জানায়, গ্রেপ্তার চন্দন দাস বান্ডেল রোডের সেবক কলোনির মেথরপট্টি এলাকার মৃত ধারীর ছেলে।

গ্রেপ্তারের বিষয়ে এডিসি কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, রেলওয়ে স্টেশনে ঘোরাঘুরি করা অবস্থায় চন্দনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে তিনি ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে রওনা হয়ে বুধবার সন্ধ্যা রাড়ে ৭টার দিকে ভৈরব রেলস্টেশনে পৌঁছান। তার শ্বশুরবাড়ি ভৈরবের মেথরপট্টিতে।

গত ২৯ নভেম্বর আলিফ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত অন্তত ১৫ জনকে আসামি করে মামলা হয়। মামলা করেন আলিফের বাবা জামাল উদ্দীন। গত ২ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালত ৯ আসামিকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়েছিলেন।

মামলার আসামিরা হলেন- কোতোয়ালি থানা এলাকার বান্ডেল রোড সেবক কলোনি এলাকার বাসিন্দা চন্দন, আমান দাস, শুভ কান্তি দাস, বুঞ্জা, রনব, বিধান, বিকাশ, রমিত, রুমিত দাশ, নয়ন দাস, গগন দাস, বিশাল দাস, ওমকার দাস, বিশাল, রাজকাপুর, লালা, সামির, সোহেল দাস, শিব কুমার, বিগলাল, পরাশ, গণেশ, ওম দাস, পপি, অজয়, দেবী চরণ, দেব, জয়, দুর্লভ দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য্য।

গত ২৬ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করার পর কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। এসময় তার অনুসারীরা বিক্ষোভ করলে পুলিশ ও বিজিবি লাঠিপেটা এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালে এদিন বিকেলে রঙ্গম কমিউনিটি হল সংলগ্ন এলাকায় কুপিয়ে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়।


banner close