৩ বছর আগে পদ্মার প্রবল ভাঙনে বাড়িঘর বিলীন হয় আসিফদের। তখন সে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল। সবকিছু হারিয়ে ওখানেই থেমে যেতে পারত তার লেখাপড়া। জীবনের তাগিদে বাবার সঙ্গে নেমে যেতে পারত ঘাটের হকারি পেশায়। কিন্তু সে তা করেনি। এক মুহূর্তের জন্যও সে মনোবল হারায়নি। চালিয়ে গেছে এক কঠিন সংগ্রাম।
যার ফলস্বরূপ সে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলার দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুলে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। মেধাবী আসিফের এ সাফল্যে তার পরিবার ও শিক্ষকরা খুব খুশি।
আসিফ প্রামাণিক ও তার পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের স্বরূপারচক গ্রামে বসবাস করেন। গ্রামের জনৈক আলাউদ্দিন সরদারের কাছ থেকে বার্ষিক ৪ হাজার টাকায় লিজে নেয়া ৪ শতাংশ জমিতে তাদের মাথাগোঁজার ঠাঁই হয়েছে। নদীতে বাড়িঘর বিলীন হওয়ার আগে উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের লালু মণ্ডলের পাড়ায় তাদের বসতি ছিল।
আসিফের বাবা বাদশা প্রামাণিক দৌলতদিয়া ঘাটে ঝালমুড়ি বিক্রি করেন। চারটি ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে তার ছয় সদস্যের সংসার। আসিফ তার বড় সন্তান। তার সামান্য আয়ে সংসার চলে টানাপোড়েনের মধ্যে। এরই মধ্যে পদ্মার ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে তারা অসহায় হয়ে পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে নিজের পড়াশোনা সামলে আসিফ টিউশন করে পরিবারকে কিছুটা সহযোগিতা করে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আসিফদের বাড়িতে দেখা যায়, জরাজীর্ণ একটি টিনের ছাপরাঘর। ঘরের এক পাশে থাকে আসিফ, আরেক পাশে দুই ভাইবোনকে নিয়ে থাকেন তার মা-বাবা।
আসিফের মা আসমা বেগমের চোখে আনন্দাশ্রু। তিনি জানান, পরিবারের সবার বড় আসিফ। এরপর মেয়ে দীপা। সে দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুলের নবম শ্রেণিতে পড়ে। অভাবের কারণে দৌলতদিয়ার মুন্সিবাজারে তার নানাবাড়িতে থেকে পড়াশোনা করে দীপা। আরেক মেয়ে দিয়া প্রথম শ্রেণিতে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে। সবার ছোট ছেলে আহাদের বয়স আড়াই বছর।
তিনি বলেন, পরীক্ষার আগে আসিফ অনেক কষ্ট করে দিনরাত পড়ালেখা করেছে। অথচ আমি তাকে একটু ভালো খাবারও দিতে পারিনি। অথচ তিন বছর আগেও আমাদের জমিজমা, বাড়িঘর সবই ছিল। নদীভাঙনে সব হারিয়ে আমরা এখন নিঃস্ব। আমার ভাঙা সংসারে ছেলে আসিফই এখন আশার প্রদীপ।
আসিফের বাবা বাদশা প্রামাণিক বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালুর আগে প্রতিদিন লঞ্চ-ফেরি এবং ঘাট এলাকায় ঝালমুড়ি বিক্রি করে যা আয় হতো, তা দিয়ে মোটামুটি ভালোই চলত সংসার। কিন্তু এখন এদিকে যাত্রী ও যানবাহন কমে যাওয়ায় বেচাকেনা একেবারে কমে গেছে। এমতাবস্থায় আসিফ পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করল। এখন তার পরবর্তী পড়ালেখা কীভাবে চালাব, তা নিয়েও অনেক দুশ্চিন্তায় আছি।’
আসিফ জানায়, ‘আমি যেকোনো কষ্ট সইতে প্রস্তুত আছি। লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চাই। আমার স্বপ্ন বড় হয়ে ভালো চিকিৎসক হব। দেশের মানুষকে সেবা করব।’
দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মুহম্মদ সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত ৫ বছর তাকে সম্ভাব্য সকল ধরনের সহযোগিতা দিয়ে পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। সে আমাদেরকে গর্বিত করেছে।’
কুমিল্লা সরকারি কলেজ। ১৯৬৮ সালে জেলার প্রাণকেন্দ্র পুলিশ লাইনে প্রতিষ্ঠা করা হয়। কলেজটি উচ্চ মাধ্যমিকে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড এবং স্নাতক পর্যায়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। এ কলেজে প্রথম নিয়োগপ্রাপ্ত অধ্যাপক ছিলেন আবদুল ওহাব। তিনি ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি সহ কলেজের ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
তবে প্রতিষ্ঠার ৫৭ বছর পরও কলেজটি এখনো নানা দাবি পূরণ হয়নি। যার ফলে কুমিল্লার প্রাণ কেন্দ্রে থাকা কলেজটি শিক্ষা বিস্তারে ব্যাপক পরিসরে অবদান রাখতে পারছে না। কলেজটিতে বর্তমানে স্নাতকে কয়েকটি বিষয়ে পাঠদান চলে। কলেজটিতে স্নাতক করে অন্য কলেজে গিয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করতে হয় শিক্ষার্থীদের। শিক্ষক নিয়োগে এখনো পদ সৃষ্টি হয়নি।
কলেজটির তথ্য উপাত্ত ঘেটে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠার পর থেকে মাত্র ৬ টি বিষয়ে স্নাতক বিষয়ে ভর্তি হতে পারে শিক্ষার্থীরা। যার মধ্যে হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইংরেজি, গণিত ও বাংলা। এখানে রয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট। বর্তমানে ৬শ জন শিক্ষার্থী স্নাতকে ভর্তি হতে পারেন। আসন সংকটের কারনে অনেক শিক্ষার্থী কলেজটিতে ভর্তি হতে পারে না।
আরো যে সমস্যাগুলো রয়েছে সেগুলোর মধ্যে কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত ভবন নেই। প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক না থাকার কারণে শিক্ষার মান কমে যাচ্ছে। অতিথি শিক্ষক দিয়ে ক্লাশ নেয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের তুলনায় শ্রেণিকক্ষ কম, যার ফলে ক্লাস পরিচালনায় সমস্যা হয়। বর্ষাকালে কলেজের ভেতরে জলাবদ্ধতা দেখা যায়, যা শিক্ষা কার্যক্রমকে ব্যাহত করে। শিক্ষার্থীদের কলেজে আসা-যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিবহনের ব্যবস্থা নেই। ছাত্রদের জন্য হোস্টেলের অভাব রয়েছে, যা দূরবর্তী শিক্ষার্থীদের জন্য সমস্যা তৈরি করে। এই সমস্যাগুলো কলেজের সামগ্রিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রমকে প্রভাবিত করছে।
এসব বিষয়ে শিক্ষাবিদ জহিরুল হক দুলাল বলেন, শহরের প্রাণকেন্দ্রে কলেজটির অনেক সমস্যা রয়েছে। এ কলেজটির বার্ষিক বরাদ্দ বাড়ানো হউক। এখানে স্নাতকে আরো কয়েকটি বিষয় যোগ করলে পাশের ভিক্টোরিয়া কলেজ কিংবা সরকারি মহিলা কলেজের উপর চাপ কমবে। পাশাপাশি কলেজটির অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষার মানোন্নয়নেও কর্তপক্ষ নজর দিবে এমনটা আশা করি।
কলেজটির বর্তমান অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ নুরুর রহমান খান জানান, এই কলেজটিতে মাত্র ৬ টি বিষয়ে স্নাতক শেষ করতে পারে শিক্ষার্থীরা। অন্য যেসব বিষয় রয়েছে যেমন অর্থনীতি,দর্শন, ইসলামের ইতিহাস, রসায়ন, পদার্থ ও জীববিজ্ঞানে স্নাতক করার কোন সুযোগ নেই। কারন এসব বিষয়ে এখনো স্নাতকে ভর্তির অনুমতি দেয়নি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়াও এখানে প্রতিটি বিষয়ে একজন অধ্যাপক, দু’জন, সহযোগী অধ্যাপক, দুজন সহকারী অধ্যপক ও দুইজন প্রভাষক প্রয়োজন। আরো বিষয়টি উল্লেখ করার মতো তা হলো কলেজটি স্নাতক শেষ করে অন্য কলেজে গিয়ে স্নাতোকোত্তর শেষ করতে হয় শিক্ষার্থীদের। এখানে শিক্ষার্থীদের আবাসিক থাকার ব্যবস্থা নেই। এই সমস্যাগুলো সমাধান হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা প্রসারে আরো ভূমিকা রাখতে পারবে।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেছেন, শিক্ষার্থীদের দৃঢ়তার সাথে গবেষণায় সম্পৃক্ত হতে হবে। এ গবেষণার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও সহযোগিতা করব।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের গগন হরকরা গ্যালারিতে ইবি গবেষণা সংসদ আয়োজিত দ্য আনভেইলিং: গবেষণা অন্তর্দৃষ্টি ও নেতৃত্বের রূপান্তর" শীর্ষক সেমিনার ও প্যানেল ডিসকাশন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানের মা। উৎপাদনের জন্য দরকার গবেষণা, ভাবনা ও আবিষ্কার। গবেষণা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পর্যায়ে থেকে যায়। রাষ্ট্রের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তার সমাধান খুঁজে বের করাই গবেষণার মূল কাজ।
এ অনুষ্ঠানে আলোচনার মূল বিষয় ছিল — “Navigating the Research and Higher Study Landscape: A Multi-Disciplinary Perspective”। এ অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ বিভাগের প্রভাষক হাবিবুর রহমান স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া, চারটি ভিন্ন ডিসিপ্লিনের আলোচনায় অংশ নেন — বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মনজুর রহমান, ফার্মেসি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান, অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. গাজী মো. আরিফুজ্জামান খান এবং চারুকলা বিভাগের সভাপতি ও আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান।
এসময় ইবি গবেষণা সংসদের সভাপতি সানোয়ার হোসেন বলেন, আজকের কর্মশালাটি আমাদের সংগঠনের জন্য একটি স্মরণীয় মাইলফলক হয়ে থাকবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, গবেষণার মৌলিক বিষয়গুলো আয়ত্ত করা তরুণ গবেষকদের দেশ ও জাতির বৃহত্তর উন্নয়নে সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম করবে। সদিচ্ছা ও সহায়তা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে গবেষণার প্রতি গভীর আগ্রহ সৃষ্টি করবে।
চারুকলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান বলেন, যখন মানুষ গবেষণাকে ভয় পায়, তখনও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল যুবক সেই কাজটি করে যাচ্ছে। গবেষণা ছাড়া একটি দেশ সামনে এগোতে পারে না। ধারণার দাম পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি।
উল্লেখ্য, আলোচনায় প্যানেলিস্টরা গবেষণার সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ, কার্যকর নেতৃত্বের গুরুত্ব, ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং সৃজনশীলতাকে বাস্তব প্রভাবের রূপ দেওয়ার উপায় নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।প্যানেল ডিসকাশন, শ্রোতাদের প্রশ্নোত্তর পর্ব, শিক্ষার্থীদের গবেষণা, নেতৃত্ব ও সৃজনশীলতার বিষয়ে প্রশিক্ষণ শেষে সংগঠনপর ২০২৫-২০২৬ সেশনের কমিটি গঠন করা হয় এবং সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সার্টিফিকেট বিতরণ করা হয়।
সরকারি অফিসে বসে প্রতিনিয়ত ধূমপান করেন চকরিয়া উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রমিজ উদ্দিন। অফিস চলাকালীন সময়ে প্রকাশ্যে এই ধূমপানের ভিডিও ধারণ করেন এই প্রতিবেদক।
সম্প্রতি তিনি তার কর্মস্থল চকরিয়া উপজেলা সমবায় অফিসে বসে প্রকাশ্যে ধূমপান করেন। ৪৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি গোপন ক্যামেরায় ধারণ করেন এই প্রতিবেদক।
ভিডিওতে দেখা যায়, চেয়ারে বসে প্রকাশ্যে ধূমপান করছেন উপজেলার সমবায় অফিসার কর্মকর্তা রমিজ উদ্দিন। এ সময় তার সামনে কয়েকটি ফাইল রয়েছে। ডান হাতে কলম নিয়ে কি যেনো লিখছিলেন। আর বাম হাতে সিগারেট নিয়ে ধূমপান করছিলেন। সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে তড়িঘড়ি করে তাঁর ডেস্কের নিচে থা স্ট্র তে সিগারেট নিভিয়ে দিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিজ কার্যালয়ে বসেই একের পর এক ধূমপান করেন এ কর্মকর্তা। প্রায় সময় তার এক হাতে থাকে সিগারেট, অন্য হাতে সই করেন সেবা গ্রহীতাদের ফাইলে। মূলত অফিসের বড় কর্মকর্তা হিসেবে অফিসে বসেই ধূমপান করেন তিনি।
তবে এ বিষয়ে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রমিজ উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'অভাই এইটা হলো আপনি আমার ভাই। আপনিতো এটা মাইন্ড করলে হবেনা। আপনি আমাকে ফোন যদি এটা বলেন হবে? তবে সরাসরি অফিসে বসে এভাবে ধূমপান করতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। আমি একটা মিটিংয়ে আছি বলেই মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।'
কক্সবাজার জেলা সমবায় কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, ভিডিও দেখে বলতে পারবো এ সংক্রান্ত কি আইন আছে। অফিসে সেবা গ্রহীতারা থাকে। তাছাড়া একজন সরকারি কমকর্তা অফিসে সেটা কখনোই করতে পারেননা। আমরা বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিব।
চাঁদাবাজির অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি’র সব ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে চট্টগ্রাম নগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, তার লিখিত ব্যাখ্যা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দলকে জানানো কথা বলা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার এনসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানো নোটিশ ও বহিষ্কারের এই আদেশ দেওয়া হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমের বরাতে আপনার বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারি ও গুরুতর দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, যা দলের সুনাম ক্ষুন্ন করেছে। এমতাবস্থায়, আপনার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় আপনাকে দলের সব ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে এতদ্ধারা সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো। এই বহিষ্কার আদেশ ১২ আগস্ট তারিখ হতে কার্যকর হবে। একই সঙ্গে, আপনাকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, তার লিখিত ব্যাখ্যা কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান জনাব, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল-আমিনের নিকট আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রদান করার জন্য এতদ্ধারা নির্দেশ দেওয়া হলো।
এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক আন্দোলন বন্ধ করতে পাঁচ লাখ টাকা চাঁঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠে নিজামের বিরুদ্ধে। গত রোববার সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনার আরেক ব্যক্তির সঙ্গে তার কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে আন্দোলন বন্ধে টাকা চাইতে শোনা যায় তাকে (নিজাম উদ্দিন)। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া দেড় মিনিটের ওই ভিডিওতে আফতাব হোসেন রিফাত নামে একজনকে নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে মেসেঞ্জারে কলে কথা বলতে দেখা যায়, যেটি অন্য আরেকটি ফোনে ভিডিও করা হয়। শুরুতে আফতাব হোসেন বলেন, ‘যদি মীর ভাইয়েরা আন্দোলন বন্ধ না করে তখন কী করব?’ জবাবে নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আন্দোলন বন্ধ করাব। তোমারে দিছে, টাকা দিছে?’ এ পাশ থেকে ‘হ্যাঁ’ জবাব দেন আফতাব।
কত লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নে আফতাব বলেন, ‘পাঁচ’। এরপর নিজাম উদ্দিনকে বলতে শোনা যায় ‘আরও বেশি নিতা প্রেশার দিয়ে তোমরা দেখো ওর থেকে আরও পাঁচ লাখ নিতে পারো কি না, নিতে পারলে ওদের আমি এনে, রোহান, মীরদের এসে কিছু দিয়ে দিলাম।’
ওই ঘটনার পর গত সোমবার এনসিপি চট্টগ্রাম মহানগর শাখার যুগ্ম সমন্বয়কারী (দপ্তর) আরিফ মঈনুদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
নিজামের বিরুদ্ধে চাঁদাবজির অভিযোগ নতুন নয়। গত ৫ জুলাই নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দেন এক নারী। চিঠিতে ওই নারী উল্লেখ করেন, দুই কোটি টাকা চাঁদা না পেয়ে তার স্বামীকে মিথ্যা মামলায় পুলিশে দিয়েছেন নিজাম উদ্দিন। নিজাম তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম নগর শাখার সদস্য সচিব ছিলেন। অভিযোগের পর তার পদও স্থগিত করা হয়। পরে তাকে পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে নিষিদ্ধ মাছ ধরার সরঞ্জাম ‘আর্টিসনাল’ ট্রলিং তৈরির অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। গতকাল সোমবার গভীর রাতে উপজেলার শেখেরখীল এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। আটককৃতদের মধ্যে একজন ভারতীয় নাগরিক, যিনি এ ট্রলিং তৈরির মূল কারিগর বলে জানা গেছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার বাসিন্দা পণ্ডিত বিশ্বাস (৩৮), বরগুনার অমল চন্দ্র (৪৫), মোংলার নাথন বিশ্বাস (৬০) এবং সাতক্ষীরার আকাশ বিশ্বাস (৩৮)।
কোস্টগার্ডের তথ্য অনুযায়ী, শেখেরখীল এলাকার একটি গুদামে অবৈধ ট্রলিং তৈরির গোপন কার্যক্রম চলছে—এমন খবর পেয়ে কোস্টগার্ড ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় চারজনকে আটক ছাড়াও গুদাম থেকে ২৫ লাখ টাকা মূল্যের সাতটি অবৈধ জাল, ৩৪টি ইয়াবা, ১০ গ্রাম গাঁজা এবং ৭৩ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট রাফিদ-আস-সামি জানান, আটক ভারতীয় নাগরিক পণ্ডিত বিশ্বাস দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ট্রলিং তৈরি করে আসছিলেন এবং ভারত থেকে নিয়মিত বাংলাদেশের বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় এসে এই কাজ করতেন। জব্দকৃত আলামতসহ আটক ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
উল্লেখ্য, কাঠের তৈরি ছোট ট্রলারকে অবৈধভাবে যান্ত্রিক ‘ট্রলিং ট্রলারে’ রূপান্তর করে তাতে ছোট ফাঁসের ‘বেহুন্দি জাল’ যুক্ত করা হয়, যা আর্টিসনাল ট্রলিং নামে পরিচিত। এই পদ্ধতিতে গভীর ও অগভীর সাগরের রেণু, ডিমওয়ালা মা মাছ এবং মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য ধ্বংস হয়। এজন্য বাংলাদেশে এ ধরনের ট্রলিং সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
‘প্রযুক্তি নির্ভর যুবশক্তি, বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্বে অগ্রগতি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারা দেশের মতো সুনামগঞ্জে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস উদযাপন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসন ও জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভা, সনদপত্র, যুব ঋণের চেক ও ক্রেস্ট বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেজাউল করিম। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। সঞ্চালনায় ছিলেন রূপান্তর আস্থা প্রকল্পের জেলা সমন্বয়কারী লাভলী সরকার লাবণ্য এবং সদর উপজেলা যুব ফোরামের আহ্বায়ক স্বর্ণালি আক্তার রিমা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শাহনুর আলম।
জেলা প্রশাসক ড. ইলিয়াস মিয়া বলেন, যুব সমাজই দেশের অগ্রগতির প্রধান চালিকাশক্তি। দক্ষতা, উদ্ভাবনী শক্তি ও প্রযুক্তি জ্ঞানের মাধ্যমে তারা নিজেদের আত্মকর্মসংস্থানের পাশাপাশি অন্যদেরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের যুবদের প্রযুক্তি নির্ভর হতেই হবে। এ লক্ষ্যে সরকার নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে কিভাবে উদ্যোক্তা তৈরি করা যায়, সে উদ্দেশ্যে লার্নিং, আর্নিং, মোবাইল অ্যাপসসহ নানা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আমরা শুধু প্রযুক্তি ব্যবহার করব তা নয়, বরং প্রযুক্তিতে উদ্ভাবন করতে পারি এমন দিকেও কাজ করছে সরকার।
সভা শেষে ৭ জন প্রশিক্ষিত যুবদের মাঝে ৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার ঋণের চেক বিতরণ করা হয়। জেলায় সফল সংগঠন নির্বাচিত হয়েছে ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের যুব ও সমাজকল্যাণ সংগঠন, সফল উদ্যোক্তা জামালগঞ্জের আরিফ বাদশা এবং সফল সংগঠক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন শহরের বড়পাড়া এলাকার এনামুল হক। উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মঞ্জুর আলী, শেষ্ঠ যুব সংগঠন স্বপ্ন সিড়ি যুব সংঘ, শ্রেষ্ঠ যুব উদ্যোক্তা শাহানা আক্তার এবং শ্রেষ্ঠ যুব আত্মকর্মী হয়েছেন রিনা আক্তার।
এছাড়া প্রশিক্ষিত ও সফল যুব উদোক্তাদের ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়। এর আগে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনের সামনে এসে শেষ হয়। র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ প্রমুখ।
এছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং যুব প্রশিক্ষণের সফল উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভুষন হাওলাদার। তিনি একজন গ্রাম পুলিশ। চাকুরী করেন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ভৈরবপাশা ইউনিয়ন পরিষদে।
ঠাট্টা করে তাকে অনেকে ভুষন চেয়ারম্যান বলেও ডাকেন। কারন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স দেয়া, নাগরিক সনদ দেয়া এবং গুরুত্বপুর্ন কাজ তিনি করিয়ে দেন। বিনিময়ে হাতিয়ে নেয় অর্থ।
সম্প্রতী "সরকারী গভীর নলকুপ" পাইয়ে দেয়ার জন্য ১২ জনের কাছ থেকে ১ হাজার ৭৫০ টাকা করে মোট ২১ হাজার টাকা নিয়েছেন গ্রাম পুলিশ ভৃষন হাওলাদার। ভুক্তভুগিরা জানিয়েছেন, 'জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ থেকে ১২ টি গভীর নলকুপ বরাদ্ধ দেয়া ভৈরবপাশা ইউনিয়েনে। এরজন্য প্রতিটি নলকুপের জন্য অফিস খরচ বাবদ ১৭৫০ টাকা করে দিতে হবে। একথা বলে ভুষন হাওলাদার ১২ জনের কাছ থেকে ২১ হাজার টাকা বিকাশ একাউন্টে নেয়।'
একপর্যায়ে ভুক্তভুগিরা জানতে পারে নলকুপ বরাদ্ধের বিষয়টি ভুয়া। এরপর তারা টিউবওয়েল দেয়ার কথা বলে টাকা আত্মসাৎ প্রসংগে গত ১১ আগষ্ট ভৈরবপাশা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
টাকা ফেরত চেয়ে অভিযোগ পত্রে তারা লিখেছেন, "আমরা নিম্ন ঈশ্বরকাঠী গ্রামের বাসিন্দা। আমাদের কাছ থেকে টিউবওয়েল দেয়ার কথা বলে ১২জনের কাছ থেকে ১৭৫০ টাকা করে নগদ অর্থ নিয়েছে গ্রাম পুলিশ ভুষন হাওলাদার।
ভৈরবপাশা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক নলছিটি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. অহিদুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, 'ঘটনাটি আমি অবগত হয়েছি। ভুষন টাকাটা নিজে গ্রহন করেছে নাকি ভুষন অন্যের প্রতারনার স্বিকার হয়েছে সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর ঐ টাকাগুলো সবাই একটা বিকাশ নাম্বারে দিয়েছে। সেই নাম্বারটি সন্ধানের জন্য থানায় সাধারন ডায়েরী করা হবে।
নির্বাচনী লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এখনো হয়নি, হলে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে পিয়ার পদ্ধতিতে আগামী নির্বাচন চাই ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন। পিয়ার পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে সকল দলের প্রতিনিধি সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে। সন্ত্রাস এবং কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ হবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাগুরা শহরের ঐতিহাসিক নোমানী ময়দানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সমাবেশ বক্তব্যকালে সংগঠনের নায়েবে আমি মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম এসব কথা বলেন।
তিনি শেখ হাসিনা সরকারের দুর্নীতি লুটপাট এবং হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার এবং বিএনপি'র সমালোচনা করে পিয়ার পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি করেন।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মাগুরা ১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা নাজিরুল ইসলাম এবং মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও মাগুরা জেলা শাখার সভাপতি মুফতি মোস্তফা কামাল।
সমাবেশে প্রায় পাঁচ হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় নিখোঁজের ১২দিন পর ধানক্ষেত থেকে এক বাক প্রতিবন্ধীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে তার স্বজনরা।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল পৌনে নয়টার দিকে ভবেরচর ইউনিয়নের নয়াকান্দি গ্রামের পশ্চিম চকের হান্দার বাড়ি এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত বাক প্রতিবন্ধীর নাম রবিউল আউয়াল (৫৪)। সে গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের নয়াকান্দি গ্রামের সোনা মিয়া সওদাগরের ছেলে বলে জানা গেছে।
খবর নিয়ে জানা যায়, ' রবিউল আউয়াল বাক প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে বিয়ে-শাদী করেনি। বড় ভাই জিলানীর বাসায় থাকতো। কৃষিকাজ, দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করতো সে। অন্যান্য দিনের মতো গত ১আগস্ট সকালে বাড়ি থেকে বের হয় রবিউল আউয়াল। সন্ধ্যায় সে বাসায় না ফিরলে আশেপাশে খোঁজাখুঁজি শুরু করে স্বজনরা। দীর্ঘ সময় পরও তার সন্ধান না পাওয়ায় স্থানীয় কবিরাজ ও তান্ত্রিকের দারস্ত হয় তারা। এদিকে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল পৌনে নয়টার দিকে স্থানীয় এক জেলে দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে ধান ক্ষেতে একটি লাশ দেখতে পান। লাশটির অবস্থা দেখে ধারণা করা হচ্ছে ১০/১২দিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে। পরবর্তীতে নিখোঁজ রবিউল আউয়ালের স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে জামাকাপড় থেকে লাশটি তার বলে নিশ্চিত করে।
নিহত রবিউল আউয়ালের বড়ভাই জিলানি বলেন, ' লাশটি যেখানে পাওয়া গেছে সেখানে হাটু পরিমাণ পানি এখানে ডুবে কারো মৃত্যু হওয়ার কথা নয়। আমার ভাই বাক প্রতিবন্ধী ছিল তার অন্য কোন সমস্যা ছিল না। তার সাথে সবসময় ২০/৩০ হাজার টাকা টাকা থাকতো। তাকে
কেউ হত্যা করেছে বলে ধারণা করছি আমরা'।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ' খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। বিস্তারিত পরে জানানো হবে'।
শেরপুর চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন স্থগিত করেছেন শেরপুরের সিনিয়র সহকারী জজ তাহমিনা আফরোজ তানি।
সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে আদালত এ আদেশ দেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২২ আগস্ট শেরপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা ছিলো।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ১০ আগস্ট শেরপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য ও জেলা বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম স্বপন ও জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাসেম আহাম্মেদ ছিদ্দিকি বাবু আদালতে “অন্য প্রকার মামলা” নামে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার মূল আইনজীবী বিএনপি নেতা আখতারুজ্জামান আদালতে অভিযোগ করেন চেম্বারের অধিকাংশ ভোটার ভুয়া এবং একই নামে একাধিক ভোটারের নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বিষয়টি আমলে নিয়ে আদালত ত্রুটিপূর্ণ ভোটার তালিকা সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
রায়ে চেম্বার সভাপতি আরিফ হোসেন, সচিব হারুণ অর রশিদ, প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম রকিব ও বাছাই কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এমকে মোরাদুজ্জামানকে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
শেরপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলসহ চুড়ান্ত প্রার্থীতা ঘোষণা করা হয়েছিলো। তিনটি কেটাগরির প্রার্থীররা প্রচারণা শুরু করেছিলো। এরইমধ্যে আদালত থেকে নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় হতাশ প্রার্থীরা।
অবশেষে পানি ছাড়ার দিন ৭ দিন পর বন্ধ করে দেওয়া হলো রাঙামাটির কাপ্তাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ১৬ টি জলকপাট।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকালে কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান বলেন, সোমবার (১১ আগস্ট) রাত ৯ টায় কাপ্তাই লেকের পানির উচ্চতা ১০৭. ৩৪ ফুট মীনস সি লেভেল এর নীচে নেমে আসায় অথাৎ বীপদ সীমার নীচে নেমে আসায় মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ৮ টায় পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব কটি জলকপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরোও জানান আজ মঙ্গলবার সকাল ৭ টায় কাপ্তাই লেকে পানির উচ্চতা ছিল ১০৭.০৬ ফুট মীনস সি লেভেল। অথাৎ বৃষ্টি না হওয়ায় ধীরে ধীরে লেকে পানির উচ্চতা কমে আসছে।
প্রসঙ্গত: রাঙামাটির কাপ্তাই লেকের পানির উচ্চতা বীপদ সীমার উপর অতিক্রম করায় অথাৎ ১০৯ ফুটের প্রায় কাছাকাছি চলে আসায় গত ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১২ টা ৫ মিনিটে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের( কপাবিকে) ১৬ টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ড ৯ হাজার কিউসেক পানি কাপ্তাই লেক হতে কর্ণফুলি নদীতে নিষ্কাশন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় উজান হতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে লেকের পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় এরপর কেন্দ্রের জলকপাট দেড় ফুট, পরবর্তীতে আড়াই ফুট এবং সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ ফুট পর্যন্ত করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কাপ্তাই লেকের পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ ফুট মীনস সি লেভেল।
নীলফামারী পৌরসভার চার বিভাগের দশজন কর্মীকে একটি করে বাই-সাইকেল প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১২আগস্ট) দুপুরে পৌরসভা প্রাঙ্গণে কর্মীদের হাতে বাই-সাইকেল তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান।
এসময় নীলফামারী পৌরসভার প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাইদুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী ফিরোজ কবির, পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী তারিক রেজা, নির্বাহী কর্মকর্তা মশিউর রহমান, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা উপস্থিত ছিলেন।
পৌর প্রশাসক সাইদুল ইসলাম জানান, কর্মীদের যাতায়াতের সুবিধা এবং পৌরসভার কাজে গতি বাড়ানোর জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কর, পানি সরবরাহ, প্রকৌশল ও স্বাস্থ্য শাখার দশজনের মাঝে একটি করে বাই-সাইকেল প্রদান করা হয়।
আসন্ন প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন রাজশাহী মহানগর শাখা। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকালে রাজশাহী সিটি প্রেসক্লাবে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক রিপন। তিনি বলেন, সারাদেশে প্রায় ৪০ হাজার কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৭০ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এর মধ্যে প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ১৭ জুলাই ২০২৫ তারিখের পরিপত্র অনুযায়ী এ বছরের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না।
আব্দুর রাজ্জাক রিপন বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা ও ২০২২ সালের বৃত্তি পরীক্ষায় এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে সাফল্য অর্জন করেছে। অথচ এবার তাদের বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক। বৃত্তি শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, এটি একটি শিক্ষার্থীর আত্মমর্যাদা ও অনুপ্রেরণার প্রতীক।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, কোনো শিশু শুধুমাত্র বিদ্যালয়ের ধরণ ভিন্ন হওয়ার কারণে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারলে তা মানসিক আঘাত ও হতাশার সৃষ্টি করবে। এটি জাতীয় শিক্ষানীতির সাম্যের নীতির পরিপন্থী। তাঁরা অবিলম্বে পরিপত্রটি বাতিল করে প্রাথমিক শিক্ষায় সমঅধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
বক্তারা আরও জানান, আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও বিভাগীয় উপপরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও এবং “মার্চ ফর ঢাকা”সহ কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, “আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীরাই মূলত বেসরকারি প্রাথমিক প্রতিষ্ঠানে পড়ে। তাদের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হোক, বৈষম্য থেকে মুক্তি দেওয়া হোক।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আছেন বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান, কেন্দ্রীয় পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শাহজাহান আলী, রাজশাহী মহানগর সভাপতি রফিকুল আলম, সহ-সভাপতি ড. ইব্রাহিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ, সাংগাঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান, অর্থ সম্পাদক এম এম রহমান, শিক্ষা সম্পাদক মনোয়ার হোসেন, প্রচার সম্পাদক শিহাব উদ্দিন সহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।