আরিফুজ্জামান তুহিন
গত দেড় দশকে পাঁচটি বড় ধরনের গ্রিড বিপর্যয় ঘটেছে। এর মধ্যে দুটি হয়েছে প্রাকৃতিক কারণ ঝড়ের কবলে পড়ে। বাকি তিনটি বিপর্যয়ের সুনির্দিষ্ট কারণ ও উৎস জানতে পারেনি সঞ্চালন লাইনের দায়িত্বে থাকা পিজিসিবি, বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), পাওয়ার সেল ও এ-সংক্রান্ত গঠিত তদন্ত কমিটি।
এর মধ্যে জাতীয় গ্রিড সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়ে ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর। তখন এ বিষয়ে গঠিত কমিটি ৩২টি সুপারিশ দেয়। এর আগে ২০০৭ সালের সিডরের কবলে পড়ে বিপর্যয় ঘটে, সেবারও কমিটি সুপারিশ দেয়। তবে কোনো কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করা যায়নি। ফলে ঝুঁকিমুক্ত করা যাচ্ছে না জাতীয় গ্রিডকে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি), পিডিবি ও পাওয়ার সেলের সাবেক এবং বর্তমান প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত মঙ্গলবার বেলা ২টা ৫ মিনিটে জাতীয় গ্রিডের ইস্টার্ন গ্রিড ট্রিপ করে বা বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। এতে চট্টগ্রাম, ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা অঞ্চল বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। বিপর্যয়ের ১০ ঘণ্টা পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনায় তিনটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠনের কথা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। একটি বিদ্যুৎ বিভাগের সমন্বয়ে, দ্বিতীয়টি পিজিসিবির পক্ষ থেকে আর তৃতীয়টি কোনো পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করা হবে। এর একটি পিজিসিবির ছয় সদস্যের কমিটি গতকাল গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শনে যায়।
পিজিসিবির প্রকৌশলীরা জাতীয় গ্রিডের কোথায় বিপর্যয় হয়েছে তার উৎস সম্পর্কে প্রকাশ্যে কিছু না বললেও দৈনিক বাংলাকে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে দুজন প্রকৌশলী বলেছেন, নিয়মিত বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র ও সঞ্চালন লাইনের সংস্কারকাজ না করায় এসব উপকেন্দ্র ও গ্রিড এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বলেও তাদের মত।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে যেভাবে দ্রুত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে, সেভাবে বিদ্যুতের সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়নি। ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সব তথ্য ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টারের (এনএলডিসি) কাছে থাকে না। অনেকটা অ্যানালগ পদ্ধতিতে ফোন করে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কাছ থেকে তথ্য নিতে হয়। ফলে কোন এলাকায় কতখানি বিদ্যুতের প্রয়োজন, সেই অনুযায়ী ওই অঞ্চলের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দেশ দেয়া সম্ভব হয় না। ফোনে অনেকটা আন্দাজনির্ভর হয়ে বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ানো বা কমানোর নির্দেশ দেয়া হয়। এই পদ্ধতি গোটা বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে যেকোনো সময় বিপদে ফেলতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বিদ্যুতের উৎপাদন, সঞ্চালন, বিতরণ ও গ্রাহক পর্যায় আধুনিক নেটওয়ার্কে আনা না গেলে ফের বিপর্যয় ঘটতে পারে। বিদ্যুতের এই আধুনিকায়নকেই স্মার্ট সিস্টেম বা আধুনিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বলা হচ্ছে।
প্রকৌশলীরা আরও বলছেন, আধুনিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থার মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র, জাতীয় গ্রিড, বিদ্যুতের বিতরণ ব্যবস্থা ও গ্রাহক পর্যায়ের ব্যবহারের পদ্ধতি বোঝানো হয়। গোটা ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন করতে ৪০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ দরকার। তবে সরকার ইতোমধ্যে পিজিসিবি ও ঢাকার একাংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিকে (ডিপিডিসি) স্মার্ট ব্যবস্থা আনার জন্য একটি করে আলাদা প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এগুলোর কাজ চলছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ টেলিফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, আধুনিক বিদ্যুৎ সঞ্চালন, উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারলে প্রাকৃতিক কারণেও গ্রিড বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে পারে। এ জন্য বড় ধরনের বিনিয়োগ দরকার। ইতোমধ্যে পিজিসিবি ও ডিপিডিসির আধুনিকায়নে কাজ চলছে।
১৫ বছরে ৫টি বড় বিপর্যয়, কোনো সুপারিশ আমলে নেয়নি!
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডরের কারণে উপকূলীয় অঞ্চল ছাড়াও দেশের বড় অংশের গ্রিড বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। এই সময় একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। সরকারের ওই তদন্ত কমিটি বুয়েটের ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষকদের কাছে বিপর্যয় রোধে পরামর্শ চেয়েছিল। বুয়েটের শিক্ষকরা তখন বিদ্যমান গ্রিডকে দুর্বল বলে জানিয়েছিলেন। পরামর্শে সরকারকে তারা বলেছিলেন, দেশজুড়ে বিস্তৃত গ্রিডকে বিচ্ছিন্ন করে কয়েকটি এলাকায় ভাগ করার কথা। সম্ভব। এটাকে বলা হয় আইল্যান্ডিং, যার অর্থ গ্রিডকে খণ্ডিত করে কয়েকটি দ্বীপের মতো করে রক্ষা করা। এতে দেশের কোথাও জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় হলে অন্য এলাকায় বিদ্যুৎ যাবে না। সে ক্ষেত্রে জাতীয় গ্রিডকে ছয়টি ভাগে ভাগ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দেয়া ওই পরামর্শ অনুযায়ী দেশের গ্রিডকে ঢেলে সাজানো যায়নি। এরপরের বিপর্যয়টা আসে ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর। ওই দিন সকালে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার উচ্চক্ষমতার গ্রিড উপকেন্দ্র (এইচভিডিসি) বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। সে ঘটনার পর দেশের একটি অংশে বিদ্যুৎ চালু করতে এক দিন লেগেছিল। পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে সময় লেগেছিল প্রায় ৩৮ ঘণ্টা।
প্রথমে এইচভিডিসির পরিচালনার দায়িত্বশীলরা জানিয়েছিলেন, ভারত থেকে আসা বিদ্যুৎ কয়েক সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হয়ে যায়, এতে আশুগঞ্জ-ভোড়ামারা গ্রিড ট্রিপ করে, তার পরই সারা বাংলাদেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে যায়। পরে অবশ্য সরকারের গঠিত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে গ্রিড বিপর্যয়ে কারণ বের করতে পারেনি।
ওই কমিটির দুজন সদস্য দৈনিক বাংলাকে গতকাল বলেন, আমরা কারণ বের করতে না পারলেও ৩২টি সুপারিশ দিয়েছিলাম এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদি সুপারিশ ২২টি এবং মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশ ছিল ১০টি।
তারা বলেন, সুপারিশগুলো হলো গ্রিড নির্ভরশীল অক্সিলারি পাওয়ার নির্ভরশীলতা কমিয়ে বড় বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রকে সেলফ অক্সিলারি পাওয়ারে চালু করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, সমগ্র গ্রিড নেটওয়ার্ককে ৯ ভাগে ভাগ করে পরিচালনা করা এবং প্রতিটি এলাকায় ন্যূনতম একটি সেলফ অক্সিলারি পাওয়ার স্টার্টিংয়ের ব্যবস্থা করা, ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা বিবেচনায় নিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফ্রিকোয়েন্সি এবং ভোল্টেজ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রাখা এবং পিডিবি ও পিজিসিবিতে যৌথভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্র শনাক্তের ব্যবস্থা করে কার্যক্রম বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়া।
অক্সিলারি পাওয়ার হলো, গ্রিড বিপর্যয়ের ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে যায়। ফের কেন্দ্রগুলোকে চালু করতে গেলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাইরে থেকে বা অক্সিলারি বিদ্যুতের দরকার হয়। পরামর্শে বলা হচ্ছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো নিজে চলতে পারে এমন বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা বা সক্ষমতা সেখানেই থাকতে হবে।
এ ছাড়া সুপারিশের মধ্যে ছিল বিদ্যুৎ সিস্টেমকে পূর্ণাঙ্গ আইসিটিভিত্তিক আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসার।
আট বছর আগে হওয়া ওই বিপর্যয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করা গেলে মঙ্গলবারের মতো বড় বিপর্যয়ে পড়তে হতো না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশের পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর প্রতি সেকেন্ডের তথ্য এনএলডিসির কাছে থাকে না। এ ছাড়া নতুন করে স্থাপিত রেন্টাল, কুইক রেন্টাল ও এমনকি কিছু আইপিপি (ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার) কেন্দ্রের মানও ভা্লো না। ফলে এসব কেন্দ্রের তথ্য সব এনএলডিসির কাছে যেতে সময় নেয়, এটা অ্যানালগ পদ্ধতিতে টেলিফোনে জানতে হয়। সে কারণে কোনো একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র, উপকেন্দ্র বা জাতীয় গ্রিডে ভোল্টেজ কমে গেলে বা বেড়ে গেলে অথবা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেলে তা গোটা গ্রিডকে বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেয়।
২০১৭ সালের ১ মে ঝড়ে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ জাতীয় গ্রিড লাইনের টাওয়ার ভেঙে পড়ে। এতে গ্রিড বিপর্যয় ঘটে। এর পরের দিন ২ মে ফের গ্রিড বিপর্যয় ঘটে, তবে ঝড়ে নয়, এটি যান্ত্রিক ত্রুটিতে। রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ৩৮টি জেলার অনেক এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। ওই অঞ্চলের প্রায় ২৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে ১০ ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছিল।
এ তো গেল প্রাকৃতিক বিপর্যয়, গত ৬ সেপ্টেম্বর ভেড়ামার একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে নিয়মিত সংস্কারের অভাবে ব্রেকার পুড়ে ট্রিপ করে জাতীয় গ্রিড। এতে খুলনা, যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলো দেড় ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল।
বিদ্যুৎ বিভাগের নীতি প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন গতকাল টেলিফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, অতীতে জাতীয় গ্রিডে যেসব বিপর্যয় হয়েছে তার কারণ আমরা জানতে পেরেছি, কিন্তু ঠিক কোথায় কী কারণে হয়েছে সেটা জানা সম্ভব হয়নি। জাতীয় গ্রিডের বিপর্যয় নির্দিষ্টভাবে জানতে গেলে বিদ্যুতের উৎপাদন, সঞ্চালন, পরিবহন ও গ্রাহক পর্যায়ে স্মার্ট ব্যবস্থায় রূপান্তর করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রতি সেকেন্ডে সারা দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভোল্টেজ এনএলডিসিকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জানতে হবে। কোথাও কোনো ফল্ট বা চ্যুতি দেখা দিলে সেটা মনিটরে রেড লাইট জ্বলে উঠবে। সেটা ভোল্টেজ কমে যাক বা বেড়ে যাক কিংবা বিদ্যুৎ সঞ্চালন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাক। এটি প্রতি সেকেন্ডে জানতে পারলে সেই অংশটুকুকে গোটা গ্রিড থেকে আলাদা করে ফেলা যাবে। তবে এসব করতে গেলে আমাদের গ্রিড ব্যবস্থাকে স্মার্ট গ্রিড করতে হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, পিজিসিবির সব সঞ্চালন ব্যবস্থা বা দেশের সব জাতীয় গ্রিড একসঙ্গে স্মার্ট গ্রিডে নিতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন। সেটার দরকারও নেই। এটা ধাপে ধাপে করতে হবে। পিজিসিবি ও ডেসকোর একটি অংশে এ রকম দুটি কাজ চলছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ স্মার্ট বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও পরিবেশনের আওতায় আসবে।
ছোট বিপর্যয় অসংখ্য!
পিজিসিবির দুজন প্রকৌশলী দৈনিক বাংলাকে বলেছেন, বড় বিপর্যয়েরই শুধু খবর আসে, কারণ তাতে সারা বাংলাদেশ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। কিন্তু এনএলডিসি সব সময় বিপর্যয়ের আতঙ্কে থাকে। সেখানে কর্মরত প্রকৌশলীরা তাদের ৮ ঘণ্টা কর্মসময়ে এক সেকেন্ডের জন্যও অমনোযোগী থাকার সুযোগ থাকে না। এনএলডিসিতে দিন-রাত পালা করে ৮ ঘণ্টা করে তিন শিফটে কাজ করেন প্রকৌশলীরা। পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র, রেন্টাল, কুইক রেন্টাল ও কিছু আইপিপি কেন্দ্রে তারা অনবরত ফোন করে ভোল্টেজ সমস্যা ঠিক রাখেন। এর পরও জাতীয় গ্রিডে ট্রিপ বা বিপর্যয় পুরোপুরি রোধ করা যায় না।
পিজিসিবির হিসাবে ২০১৭ সালে মোট ১৪ বার বিপর্যয় হয়েছিল, এতে মোট ২০ ঘণ্টা ১০ মিনিট বিদ্যুৎ ছিল না। ২০১৮ সালে ১৪ বার ট্রিপ হয়, এতে ১৬ ঘণ্টা ৩২ মিনিট বিদ্যুৎ ছিল না, ২০১৯ সালে ১৯ বার ট্রিপ হয়, এতে ৩২ ঘণ্টা ৫১ মিনিট বিদ্যুৎ ছিল না। ২০২০ সালে ১৩ বার ট্রিপ হয়, এতে ১৫ ঘণ্টা ২৭ মিনিট বিদ্যুৎ ছিল না। আর ২০২১ সালে ১১ বার ট্রিপ, তাতে ১১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট বিদ্যুৎ ছিল না।
প্রকৌশলীরা বলছেন, গড়ে এসব ট্রিপে সামান্য সময় নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে বিদ্যুৎ বিপর্যয়কে সীমাবদ্ধ রাখা সম্ভব হয়েছিল সে কারণে দেশজুড়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হয়নি। সে কারণে মানুষ এসব জানতেও পারেনি।
পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক বিডি রহমাত উল্লাহ গতকাল রাতে দৈনিক বাংলাকে বলেন, বেসরকারি এমন কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে যা অত্যন্ত নিম্নমানের। এসব কেন্দ্রের তথ্য এনএলডিসি কোনোভাবেই প্রতিক্ষণে পায় না। এসব কারণে গ্রিড ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়া সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের দিকে। কারণ ওখানে প্রচুর টাকা। নিয়মিত যে উপকেন্দ্র ও সঞ্চালন লাইন সংস্কার করতে হবে তাতে নজর নেই, কারণ ওখানে টাকা নেই তেমন। ট্রিপ হবেই, সেটাকে প্রতিরোধ করা এবং নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে ঠেকিয়ে রাখাই হলো মূল কথা। এনএলডিসিকে আধুনিককরণ করার পাশাপাশি পিজিসিবির অসাধু কর্মকর্তাদের বড় রকম শাস্তি না দিলে আগামীতেও এসব ঘটতেই থাকবে।
মাগুরার আলোচিত নিহত শিশু আছিয়ার পরিবার কে কেন্দ্রীয় জামায়াতে আমির ডা: শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে দুটি গাভী বাছুর সহ একটি গোয়ালঘর উপহার দেয়া হয়েছে।
বুধবার বিকেলে মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়ার পরিবারে আনুষ্ঠানিকভাবে কেন্দ্রীয় জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন উপস্থিত হয়ে গরু প্রদান করেন। এ সময় জেলা জামায়াতের আমির এমবি বাকের, সাবেক আমির কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আব্দুল মতিন সহ জামাতের স্থানীয় এবং জেলা পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৬ মার্চ মাগুরা নিজনান্দুয়ালী বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে আট বছরের শিশু আছিয়া তার বোনের শ্বশুর দ্বারা ধর্ষিত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এ ঘটনায় সারাদেশে ব্যাপক বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশে ধর্ষকের ফাঁসি দাবি উঠে। গত ১৭ ই মে ধর্ষক হিটু শেখের ফাঁসির রায় ঘোষণা হয়।
দরিদ্র আছিয়ার পরিবারকে সান্তনা দিতে গত ৫ই মার্চ জামায়াতের কেন্দ্রীয় আমির ডা: শফিকুর রহমান আছিয়ার মাকে স্বাবলম্বী করতে একটি গোয়াল ঘর এবং দুটি গরু দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
রাজশাহীতে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব বিষয়ক মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধান মূলক সমীক্ষা শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নগরীর জিরোপয়েন্টে একটি রেস্তোরায় এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে যে গবেষণা পত্র উপস্থাপিত হয়েছে তাতে দাবি করা হয়, দেশের চারটি এলাকায় নিষিদ্ধ কীটনাশকের ভয়াবহ প্রভাব পড়তে দেখা গেছে। সেখানে বলা হয়, শুধু রাজশাহীর ৮ জেলায় ১৯ টি গ্রামে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করে দেখা গেছে দেশে নিষিদ্ধ বালাইনাশক ব্যবহার করে শতকরা ৬৮ শতাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শতকরা ৯৩.৩৭ শতাংশ ব্যবহারকারী জানেনা এটি নিষিদ্ধ বিপজ্জনক কীটনাশক। বারসিকের আয়োজনে এ সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজারে অহরহ এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে, যেটি দেখার জন্য সরকারের কোন তদারকি নেই। গবেষণায় বলা হয়, এসব নিষিদ্ধ কিটনাশক ব্যবহার করে কৃষক ও সাধারন মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। আয়োজকরা বলেন,কীটনাশকের সহজলভ্য ও অনিয়ন্ত্রিত বিক্রয় শুধু জনস্বাস্থ্য নয় আত্মহত্যার একটি প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে দেখা যায় ৩২ জনের মধ্যে তিনজনায় আত্মহত্যা করার জন্য কীটনাশক পান করেছিল। গবেষণা এলাকা রাজশাহী জেলার আটটি উপজেলা থানার সকল ১৯ টি গ্রামে কীটনাশক ব্যবহারের কারণে গবাদি পশু পাখি যেমন হাঁস মুরগি কবুতর গরু ছাগলের মৃত্যু হয়েছে। কীটনাশকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার শুধু মানব সাস্থ্য নয় বরং পরিবেশের প্রতি মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে ফুরাডন, প্যারাকয়েট ও ক্লোরোপাইরিফ জাতীয় কীটনাশক মাটি-পানি ও প্রাণী বিচিত্র ধ্বংসের বড় ভূমিকা রাখছে। কীটনাশক প্রয়োগের পরপর পুকুরের মাছ ব্যাঙ ও মৌমাছি বা মৌ পতঙ্গ জাতীয় কমেছে এবং কিছু বিলুপ্ত হয়েছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও জাতিসংঘের ও খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) বিপদজনক কীটনাশক যেমন প্যারাকোয়েট,ফুরাডন, মনোকটোপাস এসব কীটনাশক ত্বক, চোখ ও শ্বাসনালী মাধ্যমে দিয়ে দেহে প্রবেশ করে ক্যান্সার মাথাব্যথা বমি, বুক ধরফরানি কিডনি বিকলতা, এবং অনেক ক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে। তাই উক্ত মালের মাধ্যমে নিষিদ্ধ কীটনাশক বিপণন ও ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করার আহবান জানানো হয়েছে। নিষিদ্ধ কিটনাশকও ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে। কিটনাশক আইন ও বিধির প্রয়োগ করতে হবে। কিটনাশক সম্পর্কিত স্বাস্থ্য তথ্য নিবন্ধন করতে হবে। কিটনাশকের ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপুরণ তহবিল গঠন করতে হবে। শিঘ্রই এ সকল বিষয় নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করা হবে বলেও জানান আয়োজকরা।
পটুয়াখালীর লোহালিয়া নদীর বগা ফেরিতে যাত্রী ও যানবাহন থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ফেরির ইজারা বাতিল করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। গত ২৪ জুলাই ফেরিঘাটের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সওজকে বুঝিয়ে দিয়ে ইজারাদার দায়িত্ব ছাড়েন। প্রতিদিন সহস্রাধিক যানবাহন এ ফেরি দিয়ে পারাপার হয়।
সওজ সূত্র জানায়, বাস ও মিনিবাসের জন্য নির্ধারিত ভাড়া ছিল যথাক্রমে ৪৫ ও ২৫ টাকা, যা থেকে নেওয়া হতো ৩০০ ও ২০০ টাকা। ভারী ট্রাকের ১০০ টাকার স্থলে ৫০০ টাকা, প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসের ১৫ ও ২৫ টাকার জায়গায় ১০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হতো। মোটরসাইকেল ও তিন চাকার যানবাহন থেকেও দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ উঠে।
জানা যায়,এনসিপি যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা জাকির হোসেন প্রথমে পটুয়াখালী সড়ক বিভাগে মৌখিক অভিযোগ এবং পরে সওজর উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগের পর পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইজারাদারকে তিন দফা নোটিশ ও কারণ দর্শানোর চিঠি দেন। কোনো জবাব না পাওয়ায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পাশাপাশি চিফ ইঞ্জিনিয়ারের দপ্তর থেকেও আলাদা তদন্ত হয়। দুই দফাতেই অভিযোগের সত্যতা মেলে।
পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জামিল আক্তার লিমন বলেন, ইজারাদারকে সংশোধনের জন্য একাধিকবার চিঠি দেওয়া হলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। তদন্তে প্রমাণ মেলায় চিফ ইঞ্জিনিয়ারের দপ্তরের নির্দেশে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ইজারাদার শিবু লাল দাস বলেন,আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। আগের ইজারাদারের মতোই ভাড়া নিয়েছি। সরকার ভুল ভাড়া নির্ধারণ করেছে। আদালতে আছি, আশা করি ফের দায়িত্ব ফিরে পাব।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন যদি ডিসেম্বরের মধ্যে হয়, তাহলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে ফেনীর গ্র্যান্ড সুলতান কনভেনশন হলে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
মিন্টু বলেন, ফেনীর নির্বাচনী ইতিহাস সবার জানা। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ইনশাআল্লাহ বিএনপি এখানে জয়ী হবে। আমাদের নেত্রী (খালেদা জিয়া)ও নির্বাচন করবেন। তিনি এখন সুস্থ আছেন। ফেনীতে নির্বাচন নিয়ে কোনো চিন্তা নেই।
তিনি আরও বলেন, লন্ডনে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যৌথ বিবৃতি দিয়েছিল। আমরা আশা করি, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে তা আগেও হতে পারে, এমনকি জানুয়ারিতেও। সুপ্রিম কোর্টে কেয়ারটেকার সরকার সংক্রান্ত মামলা চলছে। যদি কেয়ারটেকার সরকার পুনর্বহাল হয়, তবে তাদের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে।
সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ না থাকলে ভালো কাজ করবে না উল্লেখ করে আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, বিগত ১৯ বছর আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে আসছি। কেউ যদি বলে আমরা হঠাৎ করে নির্বাচন চাচ্ছি বিষয়টি সঠিক নয়।
২০০৬ সাল থেকেই আমরা নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছি। সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ না হলে উন্নয়ন সম্ভব নয়। একটি দেশের সরকার যদি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ না থাকেন তাহলে তারা কখনো ভালো কাজ করবে না। তাই আমরা চাচ্ছি নির্বাচনটি হোক।
তিনি আরো বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। গত দুই যুগে প্রকৃত নির্বাচিত সরকার না থাকায় জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যাহত হয়েছে।
এসএসসি -২০২৫ এর জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার সকাল সাড়ে নয়টায় সরকারি সতীশ চন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, আ. খ. ম ফারুক আহমেদ।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( শিক্ষা ও আইসিটি ) তাপস শীল, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম। শিক্ষকদের পক্ষ বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র শিক্ষক রতন কুমার রায়, তাপস রায় চৌধুরী, মো. মফিজুর রহমান, অসীম চন্দ্র বর্মণ।
শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন, ফাতিমা ইসলাম রিচি, সিলভিয়া রউফ, মিতিলা দাস মিলি, সাহিবা রহমান সাহেরী প্রমুখ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে কৃতী শিক্ষার্থীদেরকে সম্মাননা সহ ক্রেস্ট তুলে দেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া এবং অতিথিবৃন্দ।
এসএসসি -২০২৫ সালে সরকারি সতীশ চন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭৬ জন শিক্ষার্থী জিপিএ- ৫ পেয়ে জেলায় সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জন করতে সক্ষম হয়।
পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের শরীফবাড়ী ষ্ট্যান্ডে যাত্রীবাহী জেএইচ ক্লাসিক নামের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ১৫ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত ছয়জনকে বরিশাল ও আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে বুধবার বিকেলে।
জানাগেছে, কুয়াকাটা থেকে জেএইচ ক্লাসিকের যাত্রীবাহী বাস পটুয়াখালী যাচ্ছিল। পথিমধ্যে পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের শরীফবাড়ী ষ্ট্যান্ডে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে খাদে পড়ে যায়। এতে ওই বাসে থাকা ১৫ জন যাত্রী আহত হয়। গুরুতর আহত অপরাজিতা (খুলনা), সুলতানা পারভীন (কুমিল্লা) , নাহিদা সুলতানা (জয়পুরহাট), নুসরাত জাহান (খুলনা), রনজিৎ ও দুলাল চন্দ্রকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক অপরাজিতা, রনজিৎ ও সুলতানাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম ) হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। অপর আহতদের স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
আহত যাত্রী সুলতানা পারভীন বলেন, কুয়াকাটা ভ্রমণ শেষে গ্রামের বাড়ী যেতে কুয়াকাটা থেকে গাড়ীতে ওঠি। পথিমধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস সড়কের পাশে খাদে পড়ে গেছে। এতে বাসের অনেক যাত্রী আহত হয়েছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, আহত তিনজনতে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল পাঠানো হয়েছে। অপর আহতদের চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছি।
আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) আমির হোসেন সেরনিয়াবাত বলেন, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস সড়কের পাশে খাদে পড়ে গেছে। এতে বেশ কয়েকজন মানুষ আহত হয়েছেন।
টানা বৃষ্টি ও পাহাড় থেকে নেমে আসা উজানের পানিতে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাঙামাটির আইকন খ্যাত পর্যটকদের আকর্ষণীয় ঝুলন্ত সেতু ডুবে গেছে। কতৃপক্ষ জানায় কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বাড়তে থাকায় গতকাল মঙ্গলবার থেকে সেতুর পাটাতনে পানি ছুই ছুই করছিলো। আজ বুধবার সকালে সেতুর পাটাতন ৪ ইঞ্চি পানির নিচে তলীয়ে যায়।
এদিকে সেতুটি পানিতে তলীয়ে যাওয়ায় রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশন কতৃপক্ষ নিরাপত্তা ও সেতু সংরক্ষণের কথা বিবেচনা করে সেতুতে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন পরিচালিত রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, এই বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টির কারনে উজানের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লেকের পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারনে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুর পাটাতনে পানি উঠে যাওয়ায় পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সেতুতে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুতে ঘুরতে আসা পর্যটক রাশেদা বেগম বলেন, বর্ষা মৌসুমে রাঙামাটির প্রকৃতি অনেক সুন্দর তাই ঘুরতে এসেছি কিন্তু এসে দেখি ব্রীজের উপর পানি।
রাঙামাটি পর্যটন বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রমজান আলী বলেন, কাপ্তাই লেকের পানি বৃদ্ধি পেলে প্রতি বছর ঝুলন্ত সেতু পানিতে ডুবে যায়। আজকে সকাল থেকে সেতুর পাটাতনে পানি উঠে গেছে। তিনি বলেন, সেতু ডুবে গেলে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যায় ,পর্যটকরা আর ঝুলন্ত সেতুতে বেড়াতে আসেনা। পর্যটন ব্যবসায় ধ্বস নামে।
কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তথ্য মতে, এ সময় হ্রদে পানি থাকার কথা ৮৯ এমএসএল। কিন্তু হ্রদে পানি রয়েছে ১০৫.৫৪ এমএসএল। ৫টি ইউনিট দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ২২২ মেগাওয়াট।
উল্লেখ্য, কাপ্তাই হ্রদের পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল হলেও ১০৮ এমএসএল হলেই প্রতি বছর ঝুলন্ত সেতুটি ডুবে যায়। বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগের কথা বললেও কার্যকর কোনও ভূমিকা চোখে পড়েনি।
কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার রসুলপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ৯৫ লাখ টাকা মূল্যের অবৈধ ভারতীয় আতশবাজি জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) ভোররাতে কুমিল্লা ব্যাটালিয়ন (১০ বিজিবি)-এর একটি বিশেষ টহল দল এ অভিযান পরিচালনা করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ১০ বিজিবির অধিনায়ক লে কর্নেল মীর আলী এজাজ।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত টহল ও চোরাচালানবিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়। বুধবার ভোরে সীমান্ত পিলার ২০৮০/এম হতে সদর দক্ষিণ উপজেলার রসুলপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় বিপুল পরিমাণ ভারতীয় আতশবাজি জব্দ করা হয়।
জব্দকৃত বাজির সংখ্যা ৪,৭৫,৮৪০ পিস, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৯৫,৬৭,২০০ টাকা। বাজিগুলো বিভিন্ন প্রকার ও আকারের ছিল বলে জানিয়েছে বিজিবি।
বিজিবি আরও জানিয়েছে, আটককৃত মালামাল যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়ায় কুমিল্লা কাস্টমসে জমা করা হয়েছে।
জামালপুর পৌরসভার ১০নং ওয়ার্ডের হাট চন্দ্রা পলাশ তলা ও কাজির আখ এলাকায় জলবদ্ধতা নিরসনের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে হাটচন্দ্রা পলাশ তলা ও কাজির আখ এলাকার ভুক্তভোগীদের ব্যানারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে স্থানীয় এলাকাবাসী। ঘন্টাব্যাপী মানব বন্ধনে বক্তব্য রাখেন মো: হারেজ আলী, জয়বানু,শহিদুল্লাহ আব্দুর রহিম,মহসিন আলী সহ আরো অনেকে।
এ সময় বক্তারা জানান, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টির কারণে জামালপুর পৌরসভার হাটচন্দ্রা কাজির আখ ও পলাশ তলা এলাকা পানিতে তলিয়ে যায় পুরো এলাকা। বছর জুড়ে জলাবদ্ধতার কারনে পৌর নাগরিকদের দুর্ভোগ এখন চরমে। পানিতে তলিয়ে কারনে গত ৪/৫ বছর যাবৎ অনাবাদি রয়েছে ৩শ একর জমি। জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌর সভায় বার বার অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি তারা। অনতিবিলম্বে পানি নিষ্কাশনের জোর দাবী জানান বক্তারা।
মাত্র কয়েক মিনিটের বৃষ্টিতেই মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার হরগজ নয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জমে হাটু পানি। এ অবস্থায় পানি মাড়িয়ে ক্লাসে যেতে হচ্ছে শতাধিক শিক্ষার্থীকে। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষকদেরও। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে এমন পরিস্থিতি চললেও এখনো স্থায়ী কোনো সমাধান হয়নি।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্তমানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮১ জন। মাঠে পানি নিষ্কাশনের কোনো সুব্যবস্থা না থাকায় একটু বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কাবিখা প্রকল্প থেকে ড্রেন নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হলেও তা কোন কাজে আসেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৪৬ হাজার টাকার বরাদ্দে মাঠে কিছু মাটি ফেলা হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য শাজাহান মোল্লা এ কাজের দায়িত্বে থাকলেও অভিযোগ রয়েছে, তিনি প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ কাজ না করেই কাজ শেষ বলে দাবি করেছেন।বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায় ,স্কুল মাঠজুড়ে পানি জমে আছে। নেই কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীদের পানি মাড়িয়ে ক্লাসে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে।
৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুমাইয়া বলেন, পানি জমে থাকলে প্রায়ই আমাদের বই খাতা পানিতে পড়ে যায়। পানি জমে থাকার সময় আমরা কোন খেলাধুলা করতে পারি না। আমরা এ পরিবেশ চাই না। পড়ালেখার পাশা পাশি নিয়মিত মাঠে খেলাধুলা করতে চাই।
বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র নিরবের বাবা রাসেল মিয়া জানান, বাচ্চারা স্কুলে গেলে আমাদের সবসময় দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়-কখন যে পানিতে পড়ে যায় কে জানে।
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সোহানার মা শিখা আক্তার অভিযোগ করেন, শুনেছি টাকা এসেছে মাঠে কাজের জন্য, কিন্তু কাজের চেয়ে দুর্নীতিই বেশি হয়েছে। আমরা এর সঠিক তদন্ত চাই।
এ বিষয়ে হরগজ ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শাজাহান মোল্লার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সীমা রানী সরকার বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৮১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। স্থানীয় মেম্বার কিছু মাটি ফেলেছেন, ভবিষ্যতে আবার ফেলবেন বলেছেন। তবে মাঠে পাইপ লাগানো হয়েছে।
হরগজ ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসেন বলেন, হরগজ নয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাঠে পানি জমে থাকে।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কার্যালয় থেকে কাবিখা ২৪-২৫ অর্থ বছরে বরাদ্ধ দেওয়া হয় একটি ড্রেন নির্মাণ করার জন্য। আমার জানামতে কাজটি সঠিকভাবে করা হয়নি বলে পানি সমস্যা রয়েই গেছে।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে থাকা এবং কাবিখা প্রকল্পে অনিয়মের বিষয়ে আমার দপ্তরে কেউ জানায়নি। লিখিত আকারে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ঐক্য পরিষদ (বিকপ) এর উদ্যোগে ১৭ জুলাই ২০২৫ জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের প্রতিবাদে কিন্ডারগার্টেন ও সমমানের বিদ্যালয়সমূহকে বৃত্তি পরীক্ষায় অন্তর্ভূক্ত করার দাবিতে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে নরসিংদী প্রেসক্লাবের সামনে নরসিংদী জেলা কিন্ডারগার্টেন ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নরসিংদী জেলা কিন্ডারগার্টেন ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা: রমজান আলী প্রামাণিক ও সাধারণ সম্পাদক মো: মুজিবুর রহমানসহ নরসিংদী জেলা উপজেলা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বক্তাগণ বলেন, নরসিংদী জেলায় ৬ শতাধিক কিন্ডারগার্টেন স্কুলে প্রায় ১,২৫,০০০ জন শিক্ষার্থী, ৬৫০০ জন শিক্ষক-কর্মচারী, ৩০০০ জন উদ্যোগক্তা বা পরিচালক কর্মরত রয়েছে। এছাড়া সমগ্র বাংলাদেশে প্রায় ৫০ হাজার কিন্ডারগার্টেনে ১,০০,০০,০০০ জন শিক্ষার্থী শিক্ষা লাভের সুযোগ পাচ্ছে। তাতে ৬৫ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ৫০ হাজার কর্মচারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। যা প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে বে-সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবদান নি:সন্দেহে সর্বমহলে প্রশংসার দাবী রাখে।
বক্তাগণ আরো বলেন, শিক্ষা শিশুদের মৌলিক অধিকার। কোন শিশুকে তার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা আমাদের কারোরই কাম্য নয়। জুলাই বিপ্লবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে অনেক শিক্ষার্থীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত বর্তমান বৈষম্য বিরোধী সরকার। বিধায় বর্তমান সরকারের সময়ে কিন্ডারগার্টেনের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আবার সেই বৈষম্যের শিকার হোক এটা অপ্রত্যাশিত।
বিগত ১৭.০৭.২৫ইং তারিখে জারিকৃত পরিপত্রটি বাতিল করে ২০২৫ইং এ অনুষ্ঠিতব্য প্রাথমিক বৃত্থি পরীক্ষাসহ প্রাথমিক শিক্ষার জন্য গৃহীত অন্যান্য যে কোনো কার্যক্রমে প্রাথমিক শিক্ষার অংশীজন হিসেবে কিন্ডারগার্টেন ও বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সমঅধিকার যেন অক্ষুন্ন থাকে, তার প্রতি সদয় দৃষ্টি দানের জোর দাবী জানানো হয়।
মাগুরা শহরে স্কুল ও হাসপাতালের সামনে ফেলা হচ্ছে বাসা বাড়ির ময়লা আবর্জনা, মানা হচ্ছে না কোন বিধি নিষেধ। ফলে বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়েছে কোমলমতি শিশুসহ সাধারণ মানুষ।
মাগুরা শহরের পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয় , পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালের সামনে মহাসড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে এসব ময়লা আবর্জনা। এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলার কারণে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে। প্রতিদিন শতশত ছেলে মেয়েরা এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে ।বিশেষ করে, পিটিআই স্কুলের সামনে ময়লার স্তূপ থেকে বেশি দুর্গন্ধ ছড়ায় যার কারনে আশেপাশের মানুষ নানা রকম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ।
পি টি আই স্কুলের এক অভিভাবক তামান্না তাবাসসুম বলেন , প্রতিদিন বাচ্চাকে নিয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় নাকে কাপড় চেপে ধরেও এই দুর্গন্ধ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় না।
এরকম শত শত অভিভাবকের দাবি এইখানে ময়লা ফেলা বন্ধ করা হোক।
দীর্ঘদিন ধরে একই স্থানে ময়লা ফেলার কারণে সেটা এখন ভাঙারে পরিণত হয়েছে , একটু বৃষ্টি নামলেই ময়লাগুলো মহাসড়কের উপর চলে আসে ফলে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচলেও অসুবিধা হয়।
এ ব্যাপারে মাগুরা পৌরসভার প্রশাসক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ আব্দুল কাদের দৈনিক বাংলা কে জানান , পৌরসভার ময়লা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট ভ্যান গাড়ি এবং ড্রামের ব্যবস্থা আছে কিন্তু শহরের কিছু ভদ্র সমাজের লোকজন টাকা খরচের ভয়ে নিজেরাই পলিথিনের ব্যাগে করে এই ময়লা গুলো ফেলেন, ফলে জনসাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। এটা বন্ধ করা পৌর কর্তৃপক্ষের একার দ্বারা সম্ভব নয় ,আগে জনসাধারণকে সচেতন হতে হবে ।সবাইকে একসঙ্গে এটাকে প্রতিরোধ করতে হবে ।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এসব স্থান থেকে দ্রুত ময়লা অপসারণ ও ময়লা ফেলা বন্ধ করতে পৌর কর্তৃপক্ষকে মাইকিং ও জরিমানা সহ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে বলেন । অন্যথায় মানববন্ধন সহ নানা কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পারফরম্যান্স বেজড গ্রান্টস ফর সেকেন্ডারি ইনস্টিটিউশনস স্কিমের (পিইডিপি) আওতায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বুধবার পঞ্চগড় সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
সদর উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন স্টিভ, জেলা শিক্ষা অফিসার খায়রুল আনাম মো. আফতাবুর রহমান হেলালী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লুৎফুল কবির মো. কামরুল হাসান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশপ্রেম ও সততার সাথে জীবন যাপন করতে হবে। যত্ন এবং সহমর্মিতা দিয়ে শিক্ষার্থীদের আপন করতে হবে। পরচর্চা পরিহার করতে হবে। শুধু নম্বরের জন্য নয়, বুঝে পড়তে হবে। তিনি সকলকে গাছ লাগানোর আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে ফুটকিবাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ এমদাদুল হক, জগদল দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট দেলোয়ার হোসেন, করতোয়া কালেক্টরেট শিক্ষা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক নাসিমুল গণি, অভিভাবকদের মধ্যে কিশোয়ার জাহান, ২০২২ সালে দাখিল পরীক্ষার সেরা শিক্ষার্থী আহসানউল্লাহ ২০২২ সালে আলিম পরীক্ষার সেরা শিক্ষার্থী আফরিনা সুরাইয়া অনন্যা বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে ২০২২ ও ২০২৩ শিক্ষা বর্ষে ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমিক ও সমমান ও উচ্চমাধ্যমিক সমমান পরীক্ষায় সবোর্চ্চ নম্বর প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৮ জন করে ৩৬ জন শিক্ষার্থীর মাঝে পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়।
এছাড়া এসএসসি ও সমমান শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকে ১০ হাজার এবং উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ২৫ হাজার করে টাকা নিজ নিজ ব্যাংক হিসেবে পাঠানো হয়েছে।