আরিফুজ্জামান তুহিন
গত দেড় দশকে পাঁচটি বড় ধরনের গ্রিড বিপর্যয় ঘটেছে। এর মধ্যে দুটি হয়েছে প্রাকৃতিক কারণ ঝড়ের কবলে পড়ে। বাকি তিনটি বিপর্যয়ের সুনির্দিষ্ট কারণ ও উৎস জানতে পারেনি সঞ্চালন লাইনের দায়িত্বে থাকা পিজিসিবি, বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), পাওয়ার সেল ও এ-সংক্রান্ত গঠিত তদন্ত কমিটি।
এর মধ্যে জাতীয় গ্রিড সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়ে ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর। তখন এ বিষয়ে গঠিত কমিটি ৩২টি সুপারিশ দেয়। এর আগে ২০০৭ সালের সিডরের কবলে পড়ে বিপর্যয় ঘটে, সেবারও কমিটি সুপারিশ দেয়। তবে কোনো কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করা যায়নি। ফলে ঝুঁকিমুক্ত করা যাচ্ছে না জাতীয় গ্রিডকে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি), পিডিবি ও পাওয়ার সেলের সাবেক এবং বর্তমান প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত মঙ্গলবার বেলা ২টা ৫ মিনিটে জাতীয় গ্রিডের ইস্টার্ন গ্রিড ট্রিপ করে বা বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। এতে চট্টগ্রাম, ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা অঞ্চল বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। বিপর্যয়ের ১০ ঘণ্টা পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনায় তিনটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠনের কথা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। একটি বিদ্যুৎ বিভাগের সমন্বয়ে, দ্বিতীয়টি পিজিসিবির পক্ষ থেকে আর তৃতীয়টি কোনো পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করা হবে। এর একটি পিজিসিবির ছয় সদস্যের কমিটি গতকাল গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শনে যায়।
পিজিসিবির প্রকৌশলীরা জাতীয় গ্রিডের কোথায় বিপর্যয় হয়েছে তার উৎস সম্পর্কে প্রকাশ্যে কিছু না বললেও দৈনিক বাংলাকে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে দুজন প্রকৌশলী বলেছেন, নিয়মিত বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র ও সঞ্চালন লাইনের সংস্কারকাজ না করায় এসব উপকেন্দ্র ও গ্রিড এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বলেও তাদের মত।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে যেভাবে দ্রুত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে, সেভাবে বিদ্যুতের সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়নি। ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সব তথ্য ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টারের (এনএলডিসি) কাছে থাকে না। অনেকটা অ্যানালগ পদ্ধতিতে ফোন করে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কাছ থেকে তথ্য নিতে হয়। ফলে কোন এলাকায় কতখানি বিদ্যুতের প্রয়োজন, সেই অনুযায়ী ওই অঞ্চলের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দেশ দেয়া সম্ভব হয় না। ফোনে অনেকটা আন্দাজনির্ভর হয়ে বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ানো বা কমানোর নির্দেশ দেয়া হয়। এই পদ্ধতি গোটা বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে যেকোনো সময় বিপদে ফেলতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বিদ্যুতের উৎপাদন, সঞ্চালন, বিতরণ ও গ্রাহক পর্যায় আধুনিক নেটওয়ার্কে আনা না গেলে ফের বিপর্যয় ঘটতে পারে। বিদ্যুতের এই আধুনিকায়নকেই স্মার্ট সিস্টেম বা আধুনিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বলা হচ্ছে।
প্রকৌশলীরা আরও বলছেন, আধুনিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থার মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র, জাতীয় গ্রিড, বিদ্যুতের বিতরণ ব্যবস্থা ও গ্রাহক পর্যায়ের ব্যবহারের পদ্ধতি বোঝানো হয়। গোটা ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন করতে ৪০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ দরকার। তবে সরকার ইতোমধ্যে পিজিসিবি ও ঢাকার একাংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিকে (ডিপিডিসি) স্মার্ট ব্যবস্থা আনার জন্য একটি করে আলাদা প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এগুলোর কাজ চলছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ টেলিফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, আধুনিক বিদ্যুৎ সঞ্চালন, উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারলে প্রাকৃতিক কারণেও গ্রিড বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে পারে। এ জন্য বড় ধরনের বিনিয়োগ দরকার। ইতোমধ্যে পিজিসিবি ও ডিপিডিসির আধুনিকায়নে কাজ চলছে।
১৫ বছরে ৫টি বড় বিপর্যয়, কোনো সুপারিশ আমলে নেয়নি!
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডরের কারণে উপকূলীয় অঞ্চল ছাড়াও দেশের বড় অংশের গ্রিড বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। এই সময় একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। সরকারের ওই তদন্ত কমিটি বুয়েটের ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষকদের কাছে বিপর্যয় রোধে পরামর্শ চেয়েছিল। বুয়েটের শিক্ষকরা তখন বিদ্যমান গ্রিডকে দুর্বল বলে জানিয়েছিলেন। পরামর্শে সরকারকে তারা বলেছিলেন, দেশজুড়ে বিস্তৃত গ্রিডকে বিচ্ছিন্ন করে কয়েকটি এলাকায় ভাগ করার কথা। সম্ভব। এটাকে বলা হয় আইল্যান্ডিং, যার অর্থ গ্রিডকে খণ্ডিত করে কয়েকটি দ্বীপের মতো করে রক্ষা করা। এতে দেশের কোথাও জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় হলে অন্য এলাকায় বিদ্যুৎ যাবে না। সে ক্ষেত্রে জাতীয় গ্রিডকে ছয়টি ভাগে ভাগ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দেয়া ওই পরামর্শ অনুযায়ী দেশের গ্রিডকে ঢেলে সাজানো যায়নি। এরপরের বিপর্যয়টা আসে ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর। ওই দিন সকালে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার উচ্চক্ষমতার গ্রিড উপকেন্দ্র (এইচভিডিসি) বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। সে ঘটনার পর দেশের একটি অংশে বিদ্যুৎ চালু করতে এক দিন লেগেছিল। পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে সময় লেগেছিল প্রায় ৩৮ ঘণ্টা।
প্রথমে এইচভিডিসির পরিচালনার দায়িত্বশীলরা জানিয়েছিলেন, ভারত থেকে আসা বিদ্যুৎ কয়েক সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হয়ে যায়, এতে আশুগঞ্জ-ভোড়ামারা গ্রিড ট্রিপ করে, তার পরই সারা বাংলাদেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে যায়। পরে অবশ্য সরকারের গঠিত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে গ্রিড বিপর্যয়ে কারণ বের করতে পারেনি।
ওই কমিটির দুজন সদস্য দৈনিক বাংলাকে গতকাল বলেন, আমরা কারণ বের করতে না পারলেও ৩২টি সুপারিশ দিয়েছিলাম এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদি সুপারিশ ২২টি এবং মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশ ছিল ১০টি।
তারা বলেন, সুপারিশগুলো হলো গ্রিড নির্ভরশীল অক্সিলারি পাওয়ার নির্ভরশীলতা কমিয়ে বড় বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রকে সেলফ অক্সিলারি পাওয়ারে চালু করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, সমগ্র গ্রিড নেটওয়ার্ককে ৯ ভাগে ভাগ করে পরিচালনা করা এবং প্রতিটি এলাকায় ন্যূনতম একটি সেলফ অক্সিলারি পাওয়ার স্টার্টিংয়ের ব্যবস্থা করা, ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা বিবেচনায় নিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফ্রিকোয়েন্সি এবং ভোল্টেজ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রাখা এবং পিডিবি ও পিজিসিবিতে যৌথভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্র শনাক্তের ব্যবস্থা করে কার্যক্রম বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়া।
অক্সিলারি পাওয়ার হলো, গ্রিড বিপর্যয়ের ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে যায়। ফের কেন্দ্রগুলোকে চালু করতে গেলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাইরে থেকে বা অক্সিলারি বিদ্যুতের দরকার হয়। পরামর্শে বলা হচ্ছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো নিজে চলতে পারে এমন বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা বা সক্ষমতা সেখানেই থাকতে হবে।
এ ছাড়া সুপারিশের মধ্যে ছিল বিদ্যুৎ সিস্টেমকে পূর্ণাঙ্গ আইসিটিভিত্তিক আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসার।
আট বছর আগে হওয়া ওই বিপর্যয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করা গেলে মঙ্গলবারের মতো বড় বিপর্যয়ে পড়তে হতো না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশের পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর প্রতি সেকেন্ডের তথ্য এনএলডিসির কাছে থাকে না। এ ছাড়া নতুন করে স্থাপিত রেন্টাল, কুইক রেন্টাল ও এমনকি কিছু আইপিপি (ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার) কেন্দ্রের মানও ভা্লো না। ফলে এসব কেন্দ্রের তথ্য সব এনএলডিসির কাছে যেতে সময় নেয়, এটা অ্যানালগ পদ্ধতিতে টেলিফোনে জানতে হয়। সে কারণে কোনো একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র, উপকেন্দ্র বা জাতীয় গ্রিডে ভোল্টেজ কমে গেলে বা বেড়ে গেলে অথবা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেলে তা গোটা গ্রিডকে বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেয়।
২০১৭ সালের ১ মে ঝড়ে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ জাতীয় গ্রিড লাইনের টাওয়ার ভেঙে পড়ে। এতে গ্রিড বিপর্যয় ঘটে। এর পরের দিন ২ মে ফের গ্রিড বিপর্যয় ঘটে, তবে ঝড়ে নয়, এটি যান্ত্রিক ত্রুটিতে। রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ৩৮টি জেলার অনেক এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। ওই অঞ্চলের প্রায় ২৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে ১০ ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছিল।
এ তো গেল প্রাকৃতিক বিপর্যয়, গত ৬ সেপ্টেম্বর ভেড়ামার একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে নিয়মিত সংস্কারের অভাবে ব্রেকার পুড়ে ট্রিপ করে জাতীয় গ্রিড। এতে খুলনা, যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলো দেড় ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল।
বিদ্যুৎ বিভাগের নীতি প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন গতকাল টেলিফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, অতীতে জাতীয় গ্রিডে যেসব বিপর্যয় হয়েছে তার কারণ আমরা জানতে পেরেছি, কিন্তু ঠিক কোথায় কী কারণে হয়েছে সেটা জানা সম্ভব হয়নি। জাতীয় গ্রিডের বিপর্যয় নির্দিষ্টভাবে জানতে গেলে বিদ্যুতের উৎপাদন, সঞ্চালন, পরিবহন ও গ্রাহক পর্যায়ে স্মার্ট ব্যবস্থায় রূপান্তর করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রতি সেকেন্ডে সারা দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভোল্টেজ এনএলডিসিকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জানতে হবে। কোথাও কোনো ফল্ট বা চ্যুতি দেখা দিলে সেটা মনিটরে রেড লাইট জ্বলে উঠবে। সেটা ভোল্টেজ কমে যাক বা বেড়ে যাক কিংবা বিদ্যুৎ সঞ্চালন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাক। এটি প্রতি সেকেন্ডে জানতে পারলে সেই অংশটুকুকে গোটা গ্রিড থেকে আলাদা করে ফেলা যাবে। তবে এসব করতে গেলে আমাদের গ্রিড ব্যবস্থাকে স্মার্ট গ্রিড করতে হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, পিজিসিবির সব সঞ্চালন ব্যবস্থা বা দেশের সব জাতীয় গ্রিড একসঙ্গে স্মার্ট গ্রিডে নিতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন। সেটার দরকারও নেই। এটা ধাপে ধাপে করতে হবে। পিজিসিবি ও ডেসকোর একটি অংশে এ রকম দুটি কাজ চলছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ স্মার্ট বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও পরিবেশনের আওতায় আসবে।
ছোট বিপর্যয় অসংখ্য!
পিজিসিবির দুজন প্রকৌশলী দৈনিক বাংলাকে বলেছেন, বড় বিপর্যয়েরই শুধু খবর আসে, কারণ তাতে সারা বাংলাদেশ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। কিন্তু এনএলডিসি সব সময় বিপর্যয়ের আতঙ্কে থাকে। সেখানে কর্মরত প্রকৌশলীরা তাদের ৮ ঘণ্টা কর্মসময়ে এক সেকেন্ডের জন্যও অমনোযোগী থাকার সুযোগ থাকে না। এনএলডিসিতে দিন-রাত পালা করে ৮ ঘণ্টা করে তিন শিফটে কাজ করেন প্রকৌশলীরা। পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র, রেন্টাল, কুইক রেন্টাল ও কিছু আইপিপি কেন্দ্রে তারা অনবরত ফোন করে ভোল্টেজ সমস্যা ঠিক রাখেন। এর পরও জাতীয় গ্রিডে ট্রিপ বা বিপর্যয় পুরোপুরি রোধ করা যায় না।
পিজিসিবির হিসাবে ২০১৭ সালে মোট ১৪ বার বিপর্যয় হয়েছিল, এতে মোট ২০ ঘণ্টা ১০ মিনিট বিদ্যুৎ ছিল না। ২০১৮ সালে ১৪ বার ট্রিপ হয়, এতে ১৬ ঘণ্টা ৩২ মিনিট বিদ্যুৎ ছিল না, ২০১৯ সালে ১৯ বার ট্রিপ হয়, এতে ৩২ ঘণ্টা ৫১ মিনিট বিদ্যুৎ ছিল না। ২০২০ সালে ১৩ বার ট্রিপ হয়, এতে ১৫ ঘণ্টা ২৭ মিনিট বিদ্যুৎ ছিল না। আর ২০২১ সালে ১১ বার ট্রিপ, তাতে ১১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট বিদ্যুৎ ছিল না।
প্রকৌশলীরা বলছেন, গড়ে এসব ট্রিপে সামান্য সময় নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে বিদ্যুৎ বিপর্যয়কে সীমাবদ্ধ রাখা সম্ভব হয়েছিল সে কারণে দেশজুড়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হয়নি। সে কারণে মানুষ এসব জানতেও পারেনি।
পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক বিডি রহমাত উল্লাহ গতকাল রাতে দৈনিক বাংলাকে বলেন, বেসরকারি এমন কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে যা অত্যন্ত নিম্নমানের। এসব কেন্দ্রের তথ্য এনএলডিসি কোনোভাবেই প্রতিক্ষণে পায় না। এসব কারণে গ্রিড ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়া সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের দিকে। কারণ ওখানে প্রচুর টাকা। নিয়মিত যে উপকেন্দ্র ও সঞ্চালন লাইন সংস্কার করতে হবে তাতে নজর নেই, কারণ ওখানে টাকা নেই তেমন। ট্রিপ হবেই, সেটাকে প্রতিরোধ করা এবং নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে ঠেকিয়ে রাখাই হলো মূল কথা। এনএলডিসিকে আধুনিককরণ করার পাশাপাশি পিজিসিবির অসাধু কর্মকর্তাদের বড় রকম শাস্তি না দিলে আগামীতেও এসব ঘটতেই থাকবে।
দেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে কোনো ধরনের সংশয়ের কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, কোনো প্রার্থী যদি ব্যক্তিগতভাবে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন, তবে তা তার একান্তই নিজস্ব মতামত, এর সঙ্গে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির কোনো সম্পর্ক নেই।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জের বিকেএমইএ ভবনে জেলা পুলিশ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের কাছে ছয়টি টহল গাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কোনো প্রার্থী কেন নির্বাচনে অংশ নেবেন না, তা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। নিরাপত্তার অজুহাতে যিনি সরে দাঁড়িয়েছেন, তিনি আসলে কী ধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তা তিনিই ভালো বলতে পারবেন। তবে সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিতে এমন স্বাভাবিক পরিবেশে কেউ নিরাপত্তাহীনতার কথা বললে সেটি তার ব্যক্তিগত অনুভূতির বিষয় হতে পারে; কিন্তু সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। এ সময় তিনি সাম্প্রতিক হামলায় আহত শরিফ ওসমান হাদির সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন।
বিকেএমইএর পক্ষ থেকে পুলিশকে ছয়টি লেগুনা ভ্যান উপহার দেওয়ার উদ্যোগকে প্রশংসনীয় ও দৃষ্টান্তমূলক বলে অভিহিত করেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি উল্লেখ করেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় পুলিশের অনেক যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এমতাবস্থায় ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর এমন সহায়তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের গতিশীলতা বাড়াবে এবং দায়িত্ব পালনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এবং বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় অভিযান চালিয়ে ১ হাজার ৯২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে বিভিন্ন মামলা ও ওয়ারেন্টে ৫২৩ জন। অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ ২-তে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১ হাজার ৩৯৮ জন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অভিযানে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান শ্যুটার গান, একটি বন্দুক, ৩ রাউন্ড গুলি, একটি ফায়ার করা গুলি, ৩ রাউন্ড কার্তুজ, ১১টি দেশীয় অস্ত্র এবং ১২টি ককটেল।
পুলিশ আরও জানায়, পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২১ হাজার ৬৩০টি মোটরসাইকেল ও ১৯ হাজার ৯৪টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে একটি একনলা বন্ধুক, দুটি ধারালো ছুরি, একটি বার্মিজ চাকু, এক রাউন্ড গুলি ও একটি ফায়ার করা গুলি উদ্ধার করা হয়।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় থানা ভাংচুরের মামলায় শাহজাহান মিয়া (৫২) নামে এক ইউপি মেম্বারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ফুলবাড়িয়া থানার ওসি সাইফুল্লাহ সাইফ জানান, শাহজাহান মিয়া পুটিজানা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বৈলাজান গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ইউপি সদস্য।
পুলিশ জানায়, গত ৪ আগস্ট থানা ভাংচুরের মামলার অন্যতম আসামি শাহজাহান মেম্বারকে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত ১১ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি টিম উপজেলার শিবগঞ্জ বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করেন। শাহজাহান মেম্বার দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
১৯৭১ সালে নওগাঁ ছিল তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর)-এর ৭ নম্বর উইংয়ের গুরুত্বপূর্ণ হেডকোয়ার্টার। ১৮ মার্চ পর্যন্ত এখানে কমান্ডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পাঞ্জাবি মেজর আকরাম বেগ। তার অধীনে দুজন ক্যাপ্টেন ছিলেন পাঞ্জাবি ক্যাপ্টেন নাভেদ আফজাল এবং বাঙালি ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন।
২৫ মার্চের পূর্বে মেজর আকরাম বেগের স্থলে বাঙালি মেজর নাজমুল হক নওগাঁয় ইপিআরের নতুন কমান্ডিং অফিসার হিসেবে বদলি হয়ে আসেন। তবে দেশের উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে মেজর আকরাম বেগ তার কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরে অসম্মতি জানান। পরবর্তীতে কৌশলে ২৪ মার্চ মেজর আকরাম বেগ ও ক্যাপ্টেন নাভেদ আফজালকে গ্রেপ্তার করা হয়।
একই সঙ্গে পশ্চিম পাঞ্জাবের ঝিলামের অধিবাসী নওগাঁ মহকুমা প্রশাসক নিসারুল হামিদকেও গ্রেপ্তার করা হয়। বন্দিদশায় সপরিবারে তারা নিহত হন।
এর ফলে নওগাঁ মহকুমা সদ্য ঘোষিত স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের মুক্ত এলাকায় পরিণত হয় এবং এ সময় নওগাঁর প্রশাসনিক দায়িত্বভার গ্রহণ করে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ।
২৫ মার্চ পাক হানাদার বাহিনীর আক্রমণের শিকার হলেও নওগাঁ প্রায় এক মাস মুক্ত ছিল। তবে ২২ এপ্রিল নওগাঁ পুনরায় পাক বাহিনীর দখলে চলে যায়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়।
৭ নম্বর সেক্টরের আওতায় ছিল নওগাঁ, নবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, হিলি, রাজশাহী, পাবনা ও নাটোর অঞ্চল। এই সেক্টরের প্রথম অধিনায়ক ছিলেন ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন, পরবর্তীতে মেজর নাজমুল হক এবং তার মৃত্যুর পর মেজর নুরুজ্জামান দায়িত্ব পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১১টি সেক্টর থেকে মোট ১১৪ জন যোদ্ধাকে সি অ্যান্ড সি স্পেশাল প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ভারতের দেরাদুনের কবুলিয়া নামক স্থানে এই প্রশিক্ষণ হয়। নওগাঁ থেকে মাত্র দুজন কৃতি সন্তান এই দুর্লভ প্রশিক্ষণ গ্রহণের গৌরব অর্জন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল হোসেন চৌধুরী ও আখতার আহমেদ সিদ্দিকী।
এছাড়া স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনালগ্নেই নওগাঁর বহু ছাত্র-যুবক মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন মোখলেসুর রহমান রাজা, আফজাল হোসেন, মুনির আহমেদ, আব্দুল মালেক, আবু রেজা বিশু, আনিসুর রহমান তরফদার, মোজাম্মেল হক, মকলেসার রহমান চৌধুরী, শামসুল হক, ওহিদুর রহমান, হাসেম আলী, ময়নুল ইসলাম ময়েন, ময়নুল হক মুকুল, খায়রুল আলম, শফিকুল ইসলাম খান, আব্দুস সাত্তার মল্লিক, হাফিজুর রহমান, আব্দুল ওহাব, আব্দুর রাজ্জাক, মোয়াজ্জেম হোসেন, হারুন-অল-রশিদ, আখতারুজ্জামান রঞ্জু, অনিমেশ চন্দ্র দাস, সিরাজুল ইসলাম আনসারী, মোরশেদ তরফদার, আলমগীর নাব সিদ্দিকী, ইব্রাহিম তারা, আবু তাহের, আব্দুস সালাম, মনিরুজ্জামান, জাহাঙ্গীর হোসেন, খন্দকার ওয়ালিউল ইসলাম টুকু, জুলফিকারুল ইসলাম নার্গিস, আজাদ, জহুরুল ইসলাম স্বপন, এ বি এম ফারুক, গোলাম সামদানী, মকছেদ আলী, ডা. শাহ আব্দুল খালেক, হাবিলদার গোলাম রাব্বানী মুকুল, এস এম সিরাজুল ইসলাম, এ এফ এম নুরুজ্জামান নান্টু, আবু তালেব, খলিলুর রহমান, আবুবকর সিদ্দিক, আবুল হোসেনসহ আরও অনেকে।
১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের সংবাদ পাওয়ার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল হোসেন চৌধুরী নওগাঁ আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। তার আগে নদীকূল এলাকায় তিনি গ্রুপ কমান্ডারদের ব্রিফিং দেন। তিনি জানান, নওগাঁ তখনো অবাঙালিদের নিয়ন্ত্রণে এবং সমগ্র শহর মেজর সাঈদের নেতৃত্বে শক্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সুরক্ষিত। পাঞ্জাব, বেলুচ, সিন্ধি ও পাঠান রেজিমেন্টকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছিল।
১৭ ডিসেম্বর শীতল সকালে বিশাল মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী নওগাঁ আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনী জগৎসিংহপুর ও খলিশাকুড়ি গ্রামে অবস্থান নিলে দুই বাহিনীর মধ্যে দূরত্ব কমে আসে। মাঝখানে ছিল শাখা যমুনা নদী। এ অবস্থায় জালাল হোসেন চৌধুরীর নির্দেশে শুরু হয় গোলাগুলি, যা রাত পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
নওগাঁ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম সিরাজুল ইসলাম জানান, ১৮ ডিসেম্বর শনিবার সকালে বগুড়া থেকে অগ্রসরমান ভারতীয় বাহিনীর মেজর চন্দ্রশেখর এবং পশ্চিম দিনাজপুরের বালুরঘাট থেকে পিবি রায়ের নেতৃত্বে অগ্রসরমাণ মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী একযোগে নওগাঁয় প্রবেশ করে। তখন পাক হানাদার বাহিনীর আর প্রতিরোধের সক্ষমতা ছিল না।
ফলে প্রায় দুই হাজার পাকসেনা কেডি সরকারি স্কুল, পিএম গার্লস স্কুল, সরকারি গার্লস স্কুল, পুরাতন থানা চত্বর ও এসডিও অফিসসহ বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র ফেলে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে নতমস্তকে আত্মসমর্পণ করে। এ সময় নওগাঁর বিহারী সম্প্রদায়ের লোকজন সপরিবারে কেডি সরকারি স্কুলে আশ্রয় নেয়।
তৎকালীন নওগাঁ মহকুমা প্রশাসক সৈয়দ মার্গুব মোরশেদ মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীকে স্বাগত জানান। এসডিও অফিস চত্বরে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা পতাকার প্রতি সালাম জানিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর মধ্য দিয়েই ১৮ ডিসেম্বর নওগাঁ চিরতরে হানাদারমুক্ত হয়।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে এবং ব্যান্ডবাদনে মনোমুগ্ধকর নৈপুণ্যময় পরিবেশনা প্রদর্শন করেন বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ের কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী কোয়ান্টারা। লামায় এবারও তারা কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লেতে ১ম এবং ব্যান্ডবাদনে বিশেষ সম্মাননা স্মারক পুরস্কার অর্জন করেছে।
এতে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের প্যারেড বড় (৩৫জন) ও প্যারেড ছোট দল (৩৫জন) প্রাথমিক ও মাধ্যমিক ক্যাটাগরিতে অংশ নেয়। লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে প্রতিযোগিতা হয়।
এ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ছিলেন- লামা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মঈন উদ্দিন, থানার ওসি শাহাজাহান কামাল, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মোস্তফা নাদিম ও পৌরসভার সাবেক মেযর মো. আমির হোসেন প্রমুখ।
কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লেতে প্রথম ও ব্যান্ডবাদনে বিশেষ সম্মাননার অর্জনের সত্যতা নিশ্চিত করে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ ছালেহ আহমেদ জানান, ‘এবারে তিনটি কুচকাওয়াজ, দুইটি ডিসপ্লে ও দুইটি ব্যন্ডবাদন মিলে সর্বমোট ৪৭৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়।’
গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি গুদামে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভেজাল সার জব্দ করা হয়েছে। পরে গুদামটি সিলগালা করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিভিন্ন ব্যান্ডের নামে বস্তাভর্তি করে ভেজাল সার গুদামজাত করা হচ্ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ী গ্রামে ডালের ভিটা এলাকায় ভেজাল সার উৎপাদন কারখানার সন্ধান পেয়েছে কৃষি অফিস। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে সারগুলো জব্দ করা হয়। তবে এ সময় কাউকে আটক করা যায়নি।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা জানান এখানে প্রায় ১৮ টন সার ও কাঁচামাল জব্দ করা হয়েছে যার বাজারজাত মূল্য প্রায় ১৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সজীব আহমেদ অভিযান পরিচালনা করে গুদাম সিলগালা করে কারখানার মেশিন জব্দ করেছেন। তিনি জানান ভেজাল সারগুলো নষ্ট করে দেওয়া হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহবুব আলম ও আফরোজা আক্তার।
সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামেও ডেভিল হান্ট ফেজ-২ এর অভিযানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ’লীগের পৌর সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন পাটোয়ারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের পাঁচড়া পাটোয়ারীর বাড়ীর মৃত হাফেজ মিয়ার ছেলে।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার সানা উল্লাহ।
পুলিশ জানায়, চৌদ্দগ্রাম পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন পাটোয়ারী বিগত আ’লীগ সরকারের সময় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর হামলা মামলা চালিয়েছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আত্মগোপনে চলে যায়। তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলা রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। বুধবার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ পাঁচরা রাস্তার মাথা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জাকির হোসেন পাটোয়ারীকে জেলহাজতে প্রেরন করা হয়।
চৌদ্দগ্রাম মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার সানা উল্লাহ বলেন, ‘কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ’লীগের চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন পাটোয়ারীকে গ্রেফতার শেষে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে’।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাইয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে সবজিবাহী ট্রাকের ধাক্কায় শামসুল আলম (৪৫) নামের এক সবজি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ট্রাকচালক রবিউল হোসেন (৩৩) ও তার সহকারী এমরান হোসেন (১৭)। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বারইয়ারহাট পৌরসভার চিনকি আস্তানা এলাকায় ঢাকাগামী লেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। শামসুল আলম বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সুলতান সওদাগরের ছেলে। আহত দুজনের বাড়ি বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলায়।
ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভোরে মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে সবজিবাহী ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা দেয়। এতে সবজিবাহী ট্রাকের চালক, সহকারী ও সবজি ব্যবসায়ী কেবিনে আটকে পড়েন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনাস্থলেই নিহত ব্যক্তিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বারইয়ারহাট ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ জয়নাল আবেদীন তিতাস বলেন, ভোরে কিছু আগে দুর্ঘটনার খবর পাই। তিন মিনিটের মধ্যে দুটি ইউনিট নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আটকে থাকা চালক ও সহকারীকে উদ্ধার করে। পরে তাদের হাসপাতালে পাঠাই এবং নিহত ব্যক্তিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।
জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক বোরহান উদ্দিন বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত দুটি ট্রাক জব্দ করে থানায় আনা হয়েছে। নিহতের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চালকের চোখে ঘুম নিয়ে গাড়ি চালানোর কারণেই দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকটিতে ধাক্কা লেগে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
অস্ট্রেলিয়ার সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ওলাভ মুরলিংক বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেছেন। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এন্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক ড. দিলারা জাহিদ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
সাক্ষাৎকালে তাঁরা বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং শিশু শিক্ষা বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অস্ট্রেলিয়ার সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যৌথ সহযোগিতামূলক শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম চালুসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং কর্মশালা আয়োজনের বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা করা হয়।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় গবেষণার সুফল পৌঁছে দিতে পরিকল্পনানীতি এবং ব্যবহারিক একাডেমিক গবেষণার মধ্যে ব্যবধান কমানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন।
নওগাঁর মান্দায় বাস-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে পালশ আলী নামে এক কারারক্ষী নিহত হয়েছেন। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কের ভোলাবাজার এলাকায় এ দূর্ঘটনা ঘটে।
নিহত পলাশ আলী বগুড়া জেলা কারাগারে কারারক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিলেন তার বাড়ি চাপাইনবয়াবগঞ্জ জেলায় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
মান্দা থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত পলাশ আলী মোটরসাইকেল চালিয়ে রাজশাহীর দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় তার মোটরসাইকেলটি ঘটনাস্থলে পৌঁছালে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা নওগাঁ অভিমুখী একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে। এতে পলাশ আলীর মোটরসাইকেলটি বাসের নিচে চাপা পড়ে এবং বাসের চাপায় সে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।
নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে মান্দা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশীষ কুমার সন্যাল বলেন, বাস চাপায় ঘটাস্থলেই ওই কারারক্ষী নিহত হন। কারা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ঘাতক বাসটিকে শনাক্তে পুলিশ কাজ করছে।
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের সাহেব বাড়ি গেইটের দক্ষিণে তেলে ভাউচারবাহী একটি যান ও আল মোবারক পরিবহনের একটি বাসের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
আজ দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। দুর্ঘটনার পর আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে পাঠানো হয়।
খবর পেয়ে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় দুর্ঘটনায় জড়িত দুটি গাড়িই পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান বলেন, “দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুটি গাড়িই আটক করা হয়েছে। তবে বাসের কোনো লোকজনকে আমরা ঘটনাস্থলে পাইনি। ফলে নিহত ব্যক্তির পরিচয় তবে জানতে পারছি তিনি বাসের সুপারভাইজার ছিলেন। এ বিষয়ে যাচাই-বাছাই চলছে। আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।“
নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিএনপির দোয়া মাহফিলে অংশ নিতে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোরশেদ আলম শিব্বির নামের এক বিএনপি নেতা। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার বদলকোট ইউনিয়নের ইসলামপুর বাজারে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ৪৮ বছর বয়সী মোরশেদ আলম বদলকোট ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিজয় দিবস উপলক্ষে ইসলামপুর বাজারে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত দোয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকাকালীন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন মোরশেদ আলম। উপস্থিত নেতাকর্মীরা দ্রুত তাকে চাটখিলের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেলা সদরের আরেকটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে পৌঁছানোর পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকদের মতে, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়েই তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহত মোরশেদ আলম সৌদি আরব প্রবাসী ছিলেন এবং সেখান থেকেই দলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। কয়েক মাস আগে তিনি দেশে এসেছিলেন এবং ছুটি শেষে পুনরায় প্রবাসে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনের বিএনপি দলীয় প্রার্থী ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। তিনি মরহুমকে দলের একজন ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা হিসেবে উল্লেখ করে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা স্টেডিয়ামে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৪৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
পরে ‘বিজয় দিবসের তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল। তিনি বলেন, “৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। এই স্বাধীনতার সবটুকু কৃতিত্ব জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। দেশের ভূখণ্ড রক্ষায় তাদের অবদান সবচেয়ে বেশি। সরকার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিন্দিতা রানী ভৌমিক। এতে উপস্থিত ছিলেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাজীব সাহা, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. এটিএম ফয়েজুর রাজ্জাক আকন্দ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেনসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও আমন্ত্রিত অতিথিরা।
আলোচনা সভা শেষে ১৪৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের হাতে উপহার সামগ্রী তুলে দেন অতিথিরা।
এর আগে দিবসটির সূচনায় প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান বিজয় দিবসের শুভসূচনা করা হয়। ভোর সাড়ে ৬টায় উপজেলা শহীদদের নামফলকে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, পুলিশ প্রশাসন, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। সকাল ৯টায় উপজেলা স্টেডিয়ামে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন অনুষ্ঠিত হয়।
তবে এই আয়োজনকে ঘিরে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। আয়োজনে সাংবাদিকদের জন্য রাতে দ্বিতীয় সারিতে আসন নির্ধারণ করা হলেও অনুষ্ঠান শুরুর সময় দেখা যায় তাদের তৃতীয় সারিতে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই স্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য শোনা ও ছবি ধারণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
এছাড়া কিছুক্ষণের মধ্যেই সাংবাদিকদের জন্য নির্ধারিত আসনগুলো অন্যদের দখলে চলে যায়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকে সাংবাদিকদের জন্য নির্দিষ্ট আসনের ঘোষণা না দেওয়ায় ঝিনাইগাতীতে কর্মরত কোনো সাংবাদিকই আসন গ্রহণ করেননি। ফলে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার সাংবাদিক গোলাম রব্বানী টিটু, দৈনিক সংবাদের সাংবাদিক হারুনুর রশিদ দুদু, দৈনিক বাংলার সাংবাদিক শান্ত শিফাত, খবর সারাবেলা পোর্টালের সাংবাদিক আতিকুর রহমান খানসহ অন্যান্য সাংবাদিকরা মাঠে দাঁড়িয়েই সংবাদ ও ছবি সংগ্রহ করেন।
এ বিষয়ে সিনিয়র সাংবাদিক গোলাম রব্বানী টিটু বলেন, “এখনো রাজনৈতিক সরকার আসেনি। তাতেই যদি প্রশাসন সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন বৈষম্যমূলক আচরণ করে, তাহলে ভবিষ্যতে প্রশাসনের আচরণ কেমন হবে, তা ভাবনার বিষয়।”
ঘটনাটি স্থানীয় সাংবাদিক মহলে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি করেছে।