বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫
২২ শ্রাবণ ১৪৩২

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র ১৬ দিন পর আবার চালু

ছবি: দৈনিক বাংলা
মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত
মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৪ আগস্ট, ২০২৩ ২৩:৩৮

কয়লা সংকটে বন্ধের ১৬ দিন পর আবার চালু হয়েছে রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। সোমবার বিকেল ৩টায় এ কেন্দ্রটিতে ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে সেই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। কয়লা সংকটে ৩০ জুলাই ভোরে বন্ধ হয়ে যায় রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। চালুর পর মোট সাতবার বন্ধ হয় এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।

বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড'র (বিআইএফপিসিএল) উপ-মহাব্যবস্থাক (ডিজিএম) মো. আনোয়ার উল আজিম জানান, সোমবার বিকেল ৩টা থেকে ফের উৎপাদন শুরু হয়েছে রামপাল কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের। বিকেল থেকে উৎপাদন হচ্ছে ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। উৎপাদিত এ বিদ্যুৎ ইতিমধ্যেই যুক্ত হয়েছে জাতীয় গ্রীডে।

তিনি আরও বলেন, চলতি মাসেই ইন্দোনেশিয়া থেকে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা নিয়ে আরো দুইটি জাহাজ মোংলা বন্দরে আসার সিডিউল রয়েছে।

এদিকে গত রোববার ৩১ হাজার ৭০০ মেট্টিক টন কয়লা নিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে মোংলা বন্দরে আসা বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এম ভি বসুন্ধরা ইমপ্রেস হতে কয়লা খালাস, পরিবহণ ও সংরক্ষণের কাজ চলছে। কয়লা আসার সঙ্গে সঙ্গেই ফের চালু হয়েছে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।

গত বছরের ১৭ডিসেম্বর উৎপাদন যায় রামপাল কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিট। প্রথম ইউনিট চালু হওয়ার পর গত সাত মাসের ৭বার বন্ধ হয়ে যায় এ কেন্দ্রটি। এরমধ্যে চারবার বন্ধ হয় যান্ত্রিক ত্রুটি ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজে, আর কয়লা সংকটে বন্ধ হয় তিনবার।

অপরদিকে ৬৬০ মেগাওয়াটের দ্বিতীয় ইউনিট আগামী সেপ্টেম্বরে চালু সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ডিজিএম মো. আনোয়ার উল আজিম।

বিষয়:

রূপগঞ্জে জলাবদ্ধতা স্থায়ীরূপ নিয়েছে; চরম ভোগান্তিতে স্থানীয়রা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ প্রতিনিধি

ঢাকার উপকন্ঠের রূপগঞ্জের তিন লাখ বাসিন্দা উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। আকাশে মেঘ জমলেই কাঞ্চন পৌর এলাকাসহ তারব পৌর এলাকার নারায়ণগঞ্জ-নরসিংদী সেচ প্রকল্পের ভেতরে বসবাসকারীদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে এলাকার কোথাও জমেছে হাঁটু সমান পানি। আবার কোথাও কোমর সমান পানি। তারাবো পৌরসভার আভ্যন্তরিণ পানি নিষ্কাশনের খাল সংস্কার করলেই জলাবদ্ধতা নিরসন হবে বলে এলাকাবাসী মনে করছেন

টানা বর্ষণে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ৩০টি এলাকায় লক্ষাধিক মানুষ এখন পানিবন্দি। জলাবদ্ধতা এখানে স্থায়ী রূপ নিতে যাচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে সেচ প্রকল্প নির্মাণ এবং পানি নিষ্কাশনের খালগুলো বেদখল হয়ে ভরাট হওয়ার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রচ- দুর্ভোগে রয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার তারাবো, বরপা, ভুলতা ও গোলাকান্দাইল, মধ্যপাড়া, দক্ষিণপাড়া, নাগেরবাগ, বৌবাজার, বাক্সোর্চা, খালপাড়, ইসলামবাগ, আমলাবো, কালী, আমলাবো মুসলিমপাড়া, ডুলুরদিয়া, গোলাকান্দাইল নতুন বাজার, কান্দাপাড়া, বলাইখা, বিজয়নগর, মদিনানগর, তারাবো পৌরসভার তেঁতলাবো, শান্তিনগর, বাগানবাড়ি, পশ্চিম কান্দাপাড়া, উত্তর মাসাবো, যাত্রামুড়া, রূপসী ও ভুলতা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া, সোনাবো, পাঁচাইখা ও ইসলামপুরসহ আশপাশের এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। পানিবন্দি এসব এলাকার ৫০ হাজার মানুষ। কারো কারো বাড়িতে হাঁটু থেকে কোমরসমান পরিমাণ। রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। গবাদি পশু অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। বাড়িতে পানি ওঠায় কেউ কেউ আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। আবার কেউ কেউ বাঁশের মাচার ওপর বসবাস করছে। কয়েকটি শিল্পকারখানায়ও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো স্থানে টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে গেছে। শিল্পকারখানার নির্গত কেমিক্যাল ও দুর্গন্ধযুক্ত কালো পানিতে সয়লাব অনেক এলাকা। এতে রোগাক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন বয়সি মানুষ।

১৯৮৪ সালে ৯০ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে নারায়রগঞ্জ-নরসিংদী অগ্রনী সেচ প্রকল্প-১ ও পরে ১৯৯৩ সালে ১শ’ ১ কোটি ব্যয়ে শীতলক্ষ্যার পূর্ব পাড়ের ৫ হাজার হেক্টর জমি ঘিরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ হওয়ার ক’বছর বাদেই এখানে শুরু হয় জলাবদ্বতা। জনবসতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে দুর্ভোগও।

৯০ দশকের পর নিয়মবহিভূর্তভাবে অগ্রনীর ভেতরে মিল-কারখানা গড়ে উঠলে অগ্রনী পরিনত হয় আবাসিক ও শিল্প এলাকায়। সেই থেকে দুর্ভোগ চরমে উঠে মানুষের। বসতি আর কারখানার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিবছর বাড়ে জলাবদ্বতাও।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সংস্কারকাজের বর্জ্য ফেলে পানি নিষ্কাশনের খাল বন্ধ করে দেওয়ায় তারাবো আল-ফালাহ জামে মসজিদ ও কবরস্থানেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। নামাজ পড়তে মসজিদে যেতে সমস্যা হচ্ছে। কবরস্থানেও লাশ দাফন করা যাচ্ছে না। তারবো আল-ফালাহ জামে মসজিদেও রাস্তায় হাটু পানি জমে আছে।

গোলাকান্দাইল গ্রামের ইব্রাহিম মিয়া বলেন, খাল খননের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বহু আবেদন নিবেদন করেও কোনো ফল হচ্ছে না।

গোলাকান্দাইল মধ্যেপাড়া গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী নাঈম মিয়া বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে নিম্নআয়ের মানুষদের সমস্যা হচ্ছে বেশি। শিল্পকারখানার নির্গত বর্জ্যে পানি নিষ্কাশন খালগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। শিল্পকারখানা থেকে নির্গত কেমিক্যালযুক্ত পানি জমে থাকা পানিতে এসে মিশছে। আর কুচকুচে কালো বিষাক্ত এই পানিতে হাঁটাচলা করতে গিয়ে মানুষ চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কীটপতঙ্গ, মাছ মরে গিয়ে জীববৈচিত্র্য হুমকির ত্রুখে পড়ছে।

দক্ষিণপাড়া গ্রামের ইউসুফ আলী বলেন, আমাদের বাড়িঘরে হাঁটুসমান পানি উঠেছে। ঘর থেকে বের হতে পারছি না। চুলায় আগুন জ্বালাতে পারি না। বিশুদ্ধ পানি নেই। জলাবদ্ধতার কারণে বাড়ির অনেক ভাড়াটিয়া এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। গোলাকান্দাইল এলাকার শিক্ষক রতন লাল বলেন, শিল্পাঞ্চল হওয়ায় রূপগঞ্জে জমির দাম বেশি। তুলনামূলকভাবে নিচু জমির দাম কম। তাই অনেকেই নিচু অঞ্চলে কম দামে জমি ক্রয় করে ঘরবাড়ি নির্মাণ করছেন। আর সে কারণেই নির্মিত ঘরবাড়িতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তবে জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনে দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

তারাবো পৌরসভার শান্তিনগর গ্রামের রওশন আলী বলেন, ১৪-১৫ বছর ধরে এখানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে আমাদের বাঁচতে হচ্ছে। বানিয়াদী এলাকায় সুইজগেট থাকলেও সেখানে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা সময়মতো মেশিন চালু না রাখায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পাম্পের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

মৈকুলি গ্রামের মোহাম্মদ মেহেদী হাছান বলেন বলেন, বছরের পর বছর ধরে একই সমস্যা চললেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। একের পর এক প্রকল্প ঘোষণা হলেও বাস্তবায়নের কোনো অগ্রগতি নেই। ফলে মানুষ বাধ্য হয়ে দুর্ভোগকে মেনে নিচ্ছে। অনেকেই বলছেন, জলাবদ্ধতা যেন আমাদের নিয়তি হয়ে গেছে।

বরপা গ্রামের মুনছুর আলী বলেন, বৃষ্টি শুরু হলেই দুশ্চিন্তা শুরু হয়। কোমর পানি পার হয়ে বাচ্চাকে স্কুলে পাঠাতে হয়। দোকানে পানি, অফিসে পানি জীবনটা যেন থমকে যায়। কিন্তু সমস্যার কোনো সমাধান নেই।

বরপা বাগানবাড়ি গ্রামের জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা প্রায় প্রতি বর্ষায় পানির নিচে ডুবে থাকি। একটু বৃষ্টি হলেই শান্তি নগর শান্তিতে থাকে না। রাস্তা-ঘাট, ঘরের উঠানসহ সব জলে ভরে যায়। স্কুলগামী শিশু, অফিসগামী মানুষ, রোগী সবাই ভোগান্তিতে পড়ে।

রূপসী কাহিনা গ্রামের মাহমুদুল হাসান ইমন বলেন, জলাবদ্ধতার পানি শুধু চলাচলে অসুবিধা নয়। একেকটা রোগের উৎস হয়ে উঠছে, বিশেষ করে চর্মরোগ, এলার্জি, ঘা, চুলকানি লেগেই থাকে।

রূপগঞ্জে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আক্তার হোসেন বলেন, খাল-বিল ভরাট হওয়া, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ও অচল পাম্পমেশিন এই তিনটি কারণেই মূলত জলাবদ্ধতা হচ্ছে। আপাতত আমরা নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছি জলাবদ্ধতা নিরসনে জন্য আশা করি যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করবো।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, রূপগঞ্জের বিভিন্ন জায়গা থেকে পানি নিষ্কাশনের কাজ চলছে। আমি গত ১১ মাসে ৮টি খাল পুনরুদ্ধার করেছি। জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খনন ও ড্রেন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী দু-তিন দিনের মধ্যেই জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসন করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-পরিচালক রাকিবুল আলম রাজিব বলেন, রূপগঞ্জে জলাবদ্ধতার মূল কারণ হলো এখানকার অধিকাংশ খাল দখল হয়ে গেছে। বিশেষ করে তারাবো পৌরসভার পানি নিষ্কাশনের খালগুলো এখন নানা শিল্প গ্রুপের দখলে। ফলে পানি বের হতে পারছে না, আর জলাবদ্ধতা এখন স্থায়ী রূপ নিচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড চেষ্টা করছে দখল হওয়া খালা উদ্ধার করতে। যাতে স্বাভাবিক পানি নিস্কাশনব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা যায়।


কুমিল্লা সাবেক -৯ নির্বাচনী আসন পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা প্রতিনিধি

জাতীয় সংসদের আসন কুমিল্লা -০৯ পুনর্বহাল রেখে নতুন খসড়ায় ঘোষিত সীমানা বাতিলের দাবিতে ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে বিএনপি নেতা সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরী সমর্থকরা।

বুধবার বিকেল চারটার দিকে কুমিল্লা পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন বিএনপি'র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী সমর্থিত কয়েক হাজার বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় অন্তত এক ঘন্টা ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখা হয়।

গত বুধবার (৩০ জুলাই) কমিশনের আসন পুনর্বিন্যাসের খসড়ায় সারাদেশে যে ৩৯ টি আসনের পরিবর্তিত খরসা প্রকাশ করা হয়েছে তার মধ্যে ছয়টি কুমিল্লা জেলার। এই খসড়া প্রকাশিত হবার পর থেকেই কুমিল্লা-৯ নির্বাচনী এলাকার সাবেক এমপি বিএনপি নেতা মনিরুল হক চৌধুরী ও তার সমর্থকরা বিক্ষোভ ও নানান প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

ইতিমধ্যে কুমিল্লা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ও স্মারকলি বিদায় তারা। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়।

কর্মসূচি শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি আখতার হোসেন, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফারুক চৌধুরী, সাবেক কাউন্সিলর খলিলুর রহমান, ছাত্র সমন্বয়ক নূর মোহাম্মদ, সাবেক উপজেলা সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ঈসমাইল হোসেন, আবুল কালাম আজাদ খোকা, তারিফুল ইসলাম তারিফ, রুবেল হোসেনসহ অন্যান্যরা।


আইসিবি’র বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ ও ‘তারুণ্যের উৎসব-২০২৫’ উপলক্ষ্যে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ও সাবসিডিয়ারি কোম্পানিসমূহের উদ্যোগে ০৬ আগস্ট ২০২৫ তারিখ সকাল ৯.৩০ ঘটিকায় আইসিবি’র মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ এর নেতৃত্বে মতিঝিল পার্কে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়। উক্ত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থমন্ত্রণালয় এর যুগ্মসচিব মিজ্ ফরিদা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও আইসিবি’ র উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোঃ নূরুল হুদা, আইসিবি’র সাবসিডিয়ারি কোম্পানিসমূহের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাগণ এবং মহাব্যবস্থাপকগণ উক্ত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।


মাধবপুরে লাইসেন্স ও ফার্মাসিস্ট ছাড়াই ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ফার্মেসি, তত্ত্বাবধায়ক এর নেই তদারকি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সানাউল হক চৌধুরী, মাধবপুর (হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি

হবিগঞ্জের মাধবপুরে প্রশিক্ষিত ফার্মাসিস্ট ছাড়াই উপজেলার প্রতিটি হাটবাজারের অলিতে-গলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে হবিগঞ্জের প্রায়১২ শত ফার্মেসী। প্রশাসনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে শুধু ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই চালিয়ে যাচ্ছে ওষুধ বিক্রির ব্যবসা। এসব ফার্মেসি চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক, নিষিদ্ধ, নকল, মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের বিভিন্ন ওষুধ বিক্রি করছে অবাধে। এতে আর্থিক, শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন অনেক রোগী ও তাদের পরিবার। এখানকার মানুষ প্রতিনিয়ত অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন। ফলে মাধবপুরের ৬ লাখ বাসিন্দা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন। এ ছাড়া ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে- বেশ কিছু ওষুধের দোকানে ওষুধ বিক্রী নয় রোগীদের প্রেপসিকসন ও করা হয়। সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যমতে, মাধবপুরে প্রায় দের হাজারের উপরে অননুমোদিত ফার্মেসি আছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত কোনো ফার্মেসিতেই ফার্মাসিস্ট কিংবা কেমিস্ট নেই। এর মধ্যে প্রায় হাজার খানেক দোকান আছে, যেগুলো খুবই নিম্নমানের। স্বাস্থ্যসেবা সরঞ্জামসহ বিভিন্ন ওষুধের চাহিদা বাড়ায় এসব দোকানের ব্যবসাও জমজমাট। তদারকি কম থাকায় নকল, মানহীন, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা সরঞ্জাম বিক্রি হচ্ছে এসব দোকানে। তবে এসব ফার্মেসিতে ওষুধ মজুত, প্রদর্শন ও বিক্রয় ১৯৪৬ সালের ড্রাগস রুলস অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আবার লাইসেন্সবিহীন অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের পাশাপাশি আয়ুর্বেদী ওষুধের ফার্মেসি খুলে বসেছেন অনেকে। তবে ফার্মেসি পরিচালনার জন্য যে ন্যূনতম যোগ্যতার প্রয়োজন তাও আবার অনেক ফার্মেসি মালিকদের নেই। উপজেলার কয়েকটি ফার্মেসিতে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, তারা ফার্মেসি ব্যবসা শুরু করার আগে অন্যের ফার্মেসিতে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। সেখান থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করে নিজেই শুরু করেছেন ফার্মেসি ব্যবসা। ফার্মেসি চালু করার জন্য বাধ্যতামূলক হচ্ছে, ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে ড্রাগ লাইসেন্স নেওয়া এবং প্রত্যেক ফার্মেসিতে একজন সনদপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট থাকা। অথচ বেশির ভাগ ফার্মেসিতেই নেই ড্রাগ লাইসেন্স আর সনদপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই রোগীদের অ্যান্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন রোগের স্পর্শকাতর ওষুধ বিক্রিরও অভিযোগ আছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাধবপুরে গ্রামপর্যায়ে ছোটখাটো ফার্মেসিগুলোতে ওষুধ ব্যবসার আড়ালে ইন্ডিয়ান স্টেরোয়েট ট্যাবলেট বেঁচাকেনা করা হয়। এ ছাড়া ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রির ক্ষেত্রে ভালো মানের ওষুধের চেয়ে বেশি কমিশন দেওয়া হচ্ছে। এতে বেশি লাভের আশায় ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রিতে বেশি আগ্রহী হচ্ছে ওষুধ ব্যবসায়ীরা। সাধারণ মানুষও কোন ওষুধটি আসল কোনটি নকল তা চিহ্নিত করতে অপারগ। এর ফলে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধের বাণিজ্য দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। আর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ।

তথ্য সূত্রে জানা যায়, একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট দ্বারা একটি ফার্মেসি পরিচালনার নিয়ম রয়েছে এবং ড্রাগ লাইসেন্স করার আগে ওষুধ বিক্রয় ও প্রদর্শনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিককে অবশ্যই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারসহ অলিতে-গলিতে ওষুধের দোকানে এ আইন অমান্য করা হচ্ছে। যার কারণে প্রশিক্ষণ ও ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন ওষুধের দোকান দিন দিন বেড়েই চলেছে সরেজমিনে একাধিক ফার্মেসি ঘুরে ভিন্ন এক চিত্র দেখা যায়, ডিগ্রিধারী, ডিপ্লোমাধারী ফার্মাসিস্ট ও ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়াই পুরো উপজেলায় চলছে হাজার হাজার ফার্মেসি। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এসব ফার্মেসি থেকে বিক্রি হচ্ছে ওষুধ। এরমধ্যে অধিকাংশ ফার্মেসিগুলোতে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ছাড়পত্র নেই। এ ছাড়া বড় বড় ফার্মেসির ড্রাগ লাইসেন্স থাকলেও সেখানে নেই দক্ষ ফার্মাসিস্ট। কোনো ধরনের কেমিস্ট বা ফার্মাসিস্ট না থাকলেও সব ধরনের রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়।

সিলেট ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক কার্যালয়ের ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক মো: শামীম হোসেনের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে মাধবপুরে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে ফার্মেসি বেশীর ভাগ ফার্মেসিতে নেই ড্রাগ লাইসেন্স ও ফার্মাসিস্ট। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন

আপনি কিভাবে নিশ্চিত হলেন ড্রাগ লাইসেন্স নাই। মাধবপুরে আমরা নিয়মিত কার্যক্রম চালাই।হবিগন্জের মাধবপুরে অন্য উপজেলার তুলনায় অনেক বেশি ড্রাগ লাইসেন্স। মাধবপুরে লাইসেন্স করা ফার্মসী আছে ৩৫০প্লাস। লাইসেন্স বিহীন থাকতে পারে সেটা জানা নাই। যখন ড্রাগ লাইসেন্স দেয়া হয় তখন ফার্মাসিষ্ট এর লিগ্যাল ডকুমেন্ট যাচাই করেই দেওয়া হয়। পরে দেখা যায় ফার্মাসিষ্ট আগে একটায় ছিল পরে অন্যটায় চলে গেছে। আমরা ড্রাগ লাইসেন্জ সহজে দেইনা।মাধবপুর উপজেলা মোট কত টি ফার্মেসি আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এটাতো আমি তথ্য নিয়ে বসে নেই। কোন তথ্য প্রযোজন হলে আমার অফিসে আইসা তথ্য নিয়ে যাবেন।


ডিএসসিসির ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট সফলভাবে বাস্তবায়নে অংশীজনদের সহায়তা চাইলেন প্রশাসক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অনুমোদিত বাজেট প্রকাশের অনুষ্ঠান আজ নগর ভবন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। ডিএসসিসি প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

ডিএসসিসি পরিচালনা কমিটির ৭ম (সপ্তম) কর্পোরেশন সভায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদিত হয়। বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৩২০.৪৩ কোটি টাকা। পরিচালন ব্যয় ৬৩৫.৩৩ কোটি টাকা, ডিএসসিসির নিজস্ব অর্থায়নে উন্নয়ন ব্যয় ৮৭৬.৬৪ কোটি টাকা এবং মোট ডিএসসিসি, সরকারি ও বৈদেশিক সহায়তায় উন্নয়ন ব্যয় বাবদ ১৪৬৯.২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়।

বাজেটের প্রধান খাতসমূহের মধ্যে সড়ক ও ট্রাফিক অবকাঠামো খাতে ৩৬৫.১১ কোটি, খাল উন্নয়ন ও জলাবদ্ধতা নিরসন খাতে ১১৫.০০ কোটি, নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে ৫৭.২০ কোটি, মশক নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্য খাতে ৫৭.৪৪ কোটি, বৃক্ষরোপন ও পরিবেশ উন্নয়ন খাতে ৫.২৬ কোটি এবং কল্যাণমূলক খাতে ১৩.৩৯ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।

বাজেট বক্তৃতায় প্রশাসক বলেন, "ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বাজেট কেবল গাণিতিক সংখ্যা নয়। এটি আমাদের কাছে সম্মানিত করদাতাদের আমানত।" উচ্চাভিলাষী বড় অঙ্কের বাজেট প্রণয়ন না করে বাস্তবায়নযোগ্য যৌক্তিক বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন নগরবাসীর অতিরিক্ত করারোপ বা কর হার বৃদ্ধি না করে ক্ষেত্রমত বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় ব্যয় সংকোচন করা হয়েছে।

বাজেট উপস্থাপন অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো: জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।


ঠাকুরগাঁওয়ের জুলাই যোদ্ধাদের স্মরণে ৩৬ কিলোমিটার ম্যারাথনে ৩ শিক্ষার্থী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সোহেল রানা, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঐতিহাসিক ৩৬ জুলাই স্মরণে শহীদ ও আহতদের উৎসর্গ করে ৩৬ কিলোমিটার ম্যারাথন করেছেন ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষার্থী।

ভোরে পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে ম্যারাথনটি শুরু করে ৩৬ কিলোমিটার ম্যারাথন দৌড়ে আবারো একই স্থানে এসে শেষ করেন তারা।

ম্যারাথনে অংশ নিয়েছেন সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তামিম ইসলাম মিরাজ এবং নবম শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থী সজিব ও মুনতাসির বিল্লা ।

ম্যারাথন শেষে তারা জানান, ৩৬ জুলাই আমাদের কাছে আবেগের। গত বছর ৩৬ জুলাইয়ে স্বৈরাচার খুনি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। ৩৬ জুলাইকে স্মরণীয় করে রাখতে আমরা ৩৬ কিলোমিটার ম্যারাথন সম্পন্ন করেছি। দৌড়ের মধ্যে হাঁটুতে কিছুটা পেইন হলেও সবশেষে ঠিকঠাক সম্পন্ন করতে পেরেছি।

পরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও সকল আহতদের সুস্থতা কামনা করেন তারা।


­বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে নদী দখলের হিড়িক, ৪ হাজারের বেশি অবৈধ দখলদার চিহ্নিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তারিকুল ইসলাম তুহিন, বরিশাল ব্যুরো

বরিশাল ও দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীগুলো আজ দখল ও দূষণের থাবায় অস্তিত্ব সংকটে। নদীর স্বাভাবিক গতি-প্রবাহ, পরিবেশ ও জনজীবনে প্রভাব পড়ছে মারাত্মকভাবে। একদিকে প্রশাসনের নীরবতা, অন্যদিকে প্রভাবশালী দখলদারদের বেপরোয়া দখল সব মিলিয়ে ধীরে ধীরে নিঃশেষ হতে চলেছে নদীমাতৃক বাংলার অস্তিত্ব। বরিশালের প্রাণ কীর্তনখোলা নদী আজ চরম হুমকির মুখে। বিশেষ করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন দপদপিয়া ও চরবাড়িয়া এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধের দুই পাশে চলছে দখলের প্রতিযোগিতা। দোকানপাট, স-মিল, ইট-বালুর ডিপো, অফিস, ঘরবাড়ি এমনকি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে নদীর বুক দখল করে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, অন্তত ৭টি বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান এই নদীদূষণ ও দখলের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। কালিজিরা, কর্নকাঠী, রসুলপুর ও পলাশপুর এলাকায় নদীর দুই তীরে গড়ে উঠেছে ডকইয়ার্ড, গোডাউন ও কারখানা। স্থানীয় প্রভাবশালীরা এসব দখলের পেছনে সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা। ভুক্তভোগী এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন,এখানে আগে মাছ ধরতাম, এখন শুধু বালু আর কংক্রিট দেখি। আমাদের চলাফেরাও বন্ধ হয়ে গেছে।

একটি তালিকায় দেখা গেছে,কীর্তনখোলায় ২১৪ জন,পটুয়াখালী নদীতে ৩৫৫ জন,ভোলার জাঙ্গালিয়া নদীতে ৩৫জন,পিরোজপুরের বেলুয়া নদীতে ৮৮ জন,বরগুনার পায়রা নদীতে ১১০জন,ঝালকাঠির ধানসিঁড়ি নদীতে ২৩ জন দখলদার চিহ্নিত করা হয়েছে।

পিরোজপুরের দামোদর নদের ব্রিজ এলাকাও দখলের কবলে। নদীর জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বলেশ্বরসহ অন্যান্য নদীরও একই দশা ব্রিজ ও স্থাপনা নির্মাণে হারিয়েছে নাব্যতা।এলাকাবাসীর দাবি,নদী বাঁচান, আমাদের ভবিষ্যৎ বাঁচান। প্রশাসনের উচিত এখনই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলো ছিল এক সময়ের প্রাণ। আজ সেই প্রাণ যাচ্ছে নিভে। নদী রক্ষায় প্রয়োজন কঠোর পদক্ষেপ ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা। বিআইডব্লিউটিএ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলমান জরিপ শেষে শুরু হবে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান।

বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের উপ-পরিচালক মো. সেলিম রেজা জানান,আমরা কীর্তনখোলা নদীর ৪ হাজার ৩২০ জন অবৈধ দখলদারের খসড়া তালিকা তৈরি করেছি। জরিপ শেষে দ্রুত উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। বরিশাল জেলার ২৩টি নদীর দুই তীর দখলে নিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। শুধু কীর্তনখোলা নয়, দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য নদ-নদীগুলোর অবস্থাও শোচনীয়।

এ বিষয়ে বরিশাল অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. আহসান হাবীব জানান,আমরা প্রত্যেকটি নদীর দখলদারদের তালিকা তৈরি করছি। উচ্ছেদের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।


ফরিদপুরে "অতঃপর একটি জুলাই " নাটক মঞ্চস্থ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহবুব পিয়াল ,ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরে তারুণ্যের আইডিয়ায় গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহীদদের স্মরনে মঞ্চস্থ হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নাটক "অতঃপর একটি জুলাই "।

জেলা পরিষদ ফরিদপুরের আয়োজনে স্থানীয় কবি জসীমউদ্দীন হল মঞ্চে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নাটক "অতঃপর একটি জুলাই "মঞ্চস্থ করা হয়।

জেলা পরিষদ ফরিদপুরের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা মো:বাকাহীদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহরাব হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রামানন্দ পাল, সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ শামসুল আজম, যুবউন্নয়ন অধিদপ্তর ফরিদপুরের উপ-পরিচালক মো:মউনুল হোসেন,সহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

জুলাই শহীদদের স্মরনে নাটকটি রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন তরুন নাট্যকার নিরব ইমতিয়াজ শান্ত।

নাটকটিতে ৩০ জন নতুন মুখ অভিনয় করেছেন, যারা ফরিদপুরে বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী। নাটকটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিরব ইমতিয়াজ শান্ত। এছাড়া নাটকে অভিনয় করেন মোঃ সোহেল রানা, কাজী জেবা তাহসিন,জান্নাতি খানম, চয়ন সাহা, আরিয়ান শাহ, শাহরিয়ার রাফিন, সিনহা আহমেদ সহ আরো এক ঝাক তরুন অভিনেতা।

জুলাই বিপ্লবের পুরো ঘটনাটিকে সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই নাটকে।স্বৈরাচারী হাসিনার জুলুম ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজের রুখে দাঁড়ানোর ও রক্ত দিয়ে লেখা জুলাই শহীদের নিয়ে নাটক "অতঃপর একটি জুলাই হলভর্তি দর্শকদের মুগ্ধ করেছে।


কোটালীপাড়ায় নতুন ব্যাগ নিয়ে বিদ্যালয়ে এলেন ইউএনও, উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েল, কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ)

বিদ্যালয়ে হঠাৎ শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল ব্যাগ নিয়ে হাজির হলেন ইউএনও। এতে ‎প্রতিটি শিশু শিক্ষার্থীর মুখেই হাসি আর মনে অপার আনন্দ ফুটে উঠলো। ইউএনওর হাত থেকে ব্যাগ উপহার পেয়ে সকলে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন।

আজ বুধবার (৬ আগষ্ট) সকালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মাসুম বিল্লাহ বিদ্যালয়টির ২শত ৫০ জন শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেন নতুন স্কুল ব্যাগ।

এ সময় সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান সিরাজ, পল্লী উন্নয়ন অফিসার আবু তাহের হেলাল, সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা বাসুদেব বিশ্বাস, বিদ্যালয়ের পিটিএ কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েল, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকবৃন্দ।

বিদ্যায়লয়টির দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী শ্রেষ্ঠা রত্ন বলেন, এতোদিন একই রংয়ের শার্ট-প্যান্ট, জুতা, টাই পড়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলে এলেও ব্যাগগুলো ছিল আলাদা আলাদা। আবার কারো কারো স্কুল ব্যাগ ছিলো না। শ্রেণি কক্ষে কেমন যেন বৈষম্য মনে হতো। আমরা ভাবতাম ইস যদি সকলের ব্যাগ একই হতো তাহলে খুব মজা হতো। আজ আমাদের সেই ইচ্ছা পূরণ করেছেন ইউএনও স্যার।

নতুন স্কুল ব্যাগ পেয়ে আনন্দে আত্মহারা তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী রাফি বলেন, ‘আমার পুরনো ব্যাগ ছিঁড়ে গিয়েছিল। আজ নতুন ব্যাগ পেয়েছি। খুব ভালো লাগছে।’

এদিকে,অভিভাবকদের প্রতিক্রিয়া ছিল ইতিবাচক। তারা জানান, গ্রামে অনেক পরিবারই দরিদ্র। স্কুল ব্যাগ বা টিফিন বক্স কেনা অনেকের পক্ষে সম্ভব হয় না। ইউএনও’র এই উদ্যোগে তাদের সন্তানরা নতুন উদ্যমে স্কুলে যাচ্ছে। উপস্থিতিও বেড়েছে।


‎চরকাটিহারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরব আলী বলেন,’এই সহায়তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনন্দের সৃষ্টি করেছে। আগে কেউ কেউ ছেঁড়া ব্যাগ নিয়ে আসত, অনেকের স্কুল ব্যাগও ছিলোনা। এখন তারা গুছিয়ে স্কুলে আসছে।

‎সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা বাসুদেব বিশ্বাস বলেন,’ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে এই উপহার বিতরণ শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করে তুলবে। এতে এ উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা আরও এগিয়ে যাবে।’

ইউএনও মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে এবং পড়ালেখায় আগ্রহ বাড়াতে এই সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, কেউ যেন শুধু অভাবে স্কুলছুট না হয়।

তিনি আরও বলেন’ প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশুদের স্কুল জীবন শুরু হয়। প্রাথমিক শিক্ষাকে এগিয়ে নিতেই আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস। শিক্ষা উপকরণ বিতরণের এই উদ্যোগ একটি চলমান প্রক্রিয়ার অংশ এবং ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত আকারে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।


কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট দিয়ে দেড়ফুট করে পানি ছাড়া হচ্ছে 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাঙামাটি প্রতিনিধি

কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০ টা থেকে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৬ টি জলকপাট দিয়ে ৬ ইঞ্চি থেকে বাড়িয়ে দেড়ফুট করে পানি ছাড়া হচ্ছে।

এতে প্রতি সেকেন্ডে কাপ্তাই হ্রদ থেকে প্রায় ৩০ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশন হচ্ছে।

বুধবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান।

তিনি জানান, গতরাত সাড়ে ১০টায় পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ১৬ টি জলকপাট দিয়ে ৬ ইঞ্চি থেকে বাড়িয়ে দেড়ফুট করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক আরও জানান, কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১টায় ছিল ১০৮ দশমিক ৫৫ ফুট এমএসএল, যা বিপদ সীমা অতিক্রম করেছে। ফলে কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা যাতে বিপদসীমা অতিক্রম না করে সেজন্য ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫ টি ইউনিট সচল থাকায় বর্তমানে মোট ২১৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।


কক্সবাজার পাটুয়ারটেক সৈকতে ভেসে আসা অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানী-পাটুয়ারটেক এলাকায় সমুদ্রসৈকত থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে বুধবার সকাল ৮ টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার বলেন, মেরিন ড্রাইভের ইনানী পাটুয়ারটেক সৈকত থেকে অনুমান ৫০০ মিটার পূর্ব দিকে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত দেহ ভেসে আসে। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন দেখতে পেয়ে ইনানী পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দিলে ঘটনাস্থলে ইনানী ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে মৃত দেহের সুরতহাল প্রস্তুত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন, এখন পর্যন্ত মৃত দেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয় নাই।

পুলিশ জানায়, নিহত ব্যক্তির আনুমানিক বয়স ৩০ বছর। তাঁর পরনে কোনো কাপড় ছিল না। মুখে তিনটি ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। সৈকতের বালিয়াড়িতে লাশটি পড়ে ছিল।

ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ দুর্জয় সরকার বলেন, সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। ওই ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তেরও চেষ্টা করা হচ্ছে।


পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেড় বছরেও শুরু হয়নি দেড় কোটি টাকার সড়ক নির্মাণ কাজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পঞ্চগড়ে প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের সড়ক নির্মাণের কার্যাদেশ পাওয়ার দেড় বছর পার হলেও গাছ কর্তনের অজুহাতে নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। উপজেলা প্রকৌশলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বন বিভাগ নির্মাণ কাজ শুরু করার দায় নিচ্ছেন না। ফলে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত যাওয়ার পথে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, সব মহলে ধর্ণা দিয়েও কাজ শুরু করতে পারেছেনা তারা। উপজেলা প্রশাসন ও প্রকৌশল বিভাগের গাফিলতির কারনেই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এই প্রকল্প। শুধুমাত্র ১৩০টি গাছ কর্তনের কারণে নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। গাছগুলো কর্তনের উদ্যোগ নেয়নি কোনো দপ্তর। দেড় বছর পার হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে, তারা বলছেন সড়ক নির্মাণ হয় কি না সন্দেহ রয়েছে।

তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে তেঁতুলিয়া উপজেলা সদর ইউনিয়নের বুড়িমুটকি গ্রামে তেঁতুলিয়া-বাংলাবান্ধা মহাসড়কের পাশে ১৫২০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১০ ফুট প্রস্থের সড়ক নির্মাণের জন্য এক কোটি উনপঞ্চাশ লাখ পঁচাশি হাজার চারশত আট টাকা চুক্তি মূল্যে গত ১০/০১/২০২৪ তারিখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবু তোয়বুর রহমানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ১১ মাসের মধ্যে অর্থাৎ গত বছর ০৫/১২/২০২৫ তারিখের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেন তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রকৌশলী। কিন্তু কার্যাদেশে নির্মাণ কাজের সময় শেষ হওয়ার আট মাস পেরুলেও অদ্যবধি নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি।

পরবর্তীতে আবু তোয়বুর রহমান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাওজুল করিমের কাছে নির্মাণ কাজটি বিক্রি করে দেন। এ বিষয়ে ঠিকাদার রাওজুল করিম জানান, দেড় বছর থেকে উপজেলা প্রকৌশলী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ঘুরছি, কিন্তু গাছ কর্তন করে না দেওয়ায় কাজ শুরু করতে পারিনি। আমি এই নির্মাণ কাজ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রকৌশলী ঈদ্রিস আলী খান সাংবাদিকদের জানান, তিনি চলতি বছরে জানুয়ারি মাসে সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু করতে ১৩০টি গাছ কর্তনের জন্য বারবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বন বিভাগকে চিঠি দিয়েছেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ২৩/০২/২০২৫ তারিখে দিনাজপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বরাবর গাছ কর্তনের বিষয়ে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু বন বিভাগ গাছ কর্তনের কোনো উদ্যোগ এখন পর্যন্ত নেয়নি। গাছ কর্তনের পর নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজ শাহিন খসরু জানান, আসলে ওই সড়কের গাছগুলো সামাজিক বনায়ন বিভাগের হওয়ায় গাছ কর্তনের উদ্যোগ নিতে পারেননি। তবে তিনি উপজেলা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তাগাদা দিয়েছেন সড়কটির গাছ কর্তনের জন্য। আসলে গাছ কর্তনের বিষয়টি বন বিভাগ উদ্যোগ নেবে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) পঞ্চগড়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ জামান ওই সড়ক নির্মাণ বিষয়ে জানান, গাছ কর্তনের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, খুব শিগগিরই গাছ কর্তন করে বুড়িমুটকি সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু হবে।


কাকার কাঁধে ভর করে পড়াশোনার স্বপ্নে দুই অসহায় শিশু

আপডেটেড ৬ আগস্ট, ২০২৫ ১৩:০৫
নওগাঁ প্রতিনিধি

একদিকে সিঙাড়া নিয়ে গ্রামের যাওয়ার প্রস্তুতি, অন্যদিকে ছোট্ট দুই শিশুকে স্কুলে পাঠানোর চিন্তা। আবার ছোট বোনের কিনতে হবে ওষুধ। হাতে নিয়ে ঘুরছে ভাতিজার প্রেসক্রিপশন। টাকা না থাকায় কিনতে পারেনি ওষুধ। সব দায়িত্ব যেন তার কাঁধে। জীবনের ভারের চেয়ে দায়িত্বের ভারই এখন তার বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অসহায়ের এই এই করুন গল্পটা নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কুজাইল হিন্দু পাড়া গ্রামের পলাশ চন্দ্র প্রামানিক ও দুই ছোট্ট শিশু ১১ বছরের প্রীতম এবং ৭ বছরের প্রিয়সী'র।

জন্মের পর থেকেই তাদের জীবনের পথে শুধু হারের গল্প। ছোট্ট দুই শিশুর মা পূর্ণিমা চিকিৎসার অভাবে গত ১১ এপ্রিল নিজ বাড়িতে মারা গেছে। বাবা থেকেও নেই। মাকে হারিয়ে পৃথিবীটা যেন একেবারে অন্ধকার হয়ে গেছে তাদের জন্য।

অপরদিকে পলাশের জীবনের গল্প আরও করুন। তার ভাগ্যেও কখনও জোটেনি ভালো কিছু খাবার, হয়নি সামর্থ্য নতুন পোশাক কেনার। পলাশের যে ঘরে রাত কাটে হয়তো সেই ঘর থেকে কারো কারো গবাদি পশুর থাকার ঘরও এর চেয়ে ভালো হয়ে থাকে। তবুও রাত কাটছে তার। একই ঘরের মধ্যে খাওয়া, আছে জঙ্গল।

প্রীতম ও প্রিয়সী কম বুদ্ধিসম্পন্ন ডাবলু প্রামাণিকের সন্তান। আর পলাশ প্রামাণিক শিশু দুটির কাকা (চাচা)।

এদিকে প্রীতম গত দুই দিন থেকে জ্বরে ভুগছে। আধা পাগল বাবা ছেলের চিকিৎসার জন্য পাগলপ্রায় হয়ে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছ থেকে করে নিয়েছে প্রেসক্রিপশন। কিন্তু ওষুধ কিনতে না পেরে প্রেসক্রিপশন ধরে দিয়েছে ছোট ভাই পলাশের হাতে। পলাশ হয়তো আজ কিনবে ভাতিজার ওষুধ।

মৃত্যুর একদিন আগেও প্রীতম ও প্রিয়সীর মা'র ইচ্ছে ছিল তার দুই সন্তানকে পড়াশোনা করানোর, তার স্বপ্ন যেন থমকে যেতে বসেছে। এখনই হাত পেতে কিনতে হচ্ছে ছেলের ৭ম শ্রেণির গাইড বই। তবে মৃত বৌদির (ভাবির) স্বপ্ন পূরণের আশায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেবর পলাশ চন্দ্র প্রামাণিক।

তাইতো সংসারের চিন্তায় কাকা পলাশ সাইকেলে ছুটলেন সিঙাড়া নিয়ে। তা বিক্রি করে যা আয় হবে সেটা দিয়েই চলবে সংসারের খরচ।

বুদ্ধির পর থেকেই সুখ নামক শব্দটি তার কপালে জোটেনি। পড়াশোনার পাশাপাশিই কাঁধ তুলে নিতে হয়েছে ব্যবসার ভাড়।

এদিকে মা হারা হয়েও থামেনি ছোট্ট দুই শিশুর স্বপ্ন। সকালে পুরোনো ব্যাগ কাঁধে তুলে নিয়ে তারা স্কুলে যায়। অন্যদের মতো নতুন পোশাক, দামি খাতা কলম নেই। অনেক সময় না খেয়েই ক্লাস করতে হয়। তবুও স্কুলে গিয়ে পড়তে চায়, বন্ধুদের মতো স্বপ্ন দেখতে চায় প্রিতম-প্রেয়সী। তাদের একমাত্র ভরসা কাকা পলাশ, যিনি গ্রাজুয়েশন শেষ করেও চাকরির পিছনে না ছুটে গ্রামে গ্রামে সিঙ্গাড়া বিক্রি করে কোনোমতে সংসার চালান। নিজের সংসারে চাল-চুল না থাকা সত্ত্বেও ছোট্ট দু’ভাই বোনকে আগলে রেখেছেন মায়ের মতো করে। তাই তাদের চোখে আশা—একদিন মানুষ হবো, পরিবার আর সমাজের মুখ উজ্জ্বল করবো।

কিন্তু এই লড়াইয়ে কাকা পলাশ একা। অভাবের ঘূর্ণিপাকে হয়তো যেকোনো সময় থেমে যেতে পারে প্রীতম আর প্রিয়সীর স্কুলে যাওয়ার স্বপ্ন। সমাজের এগিয়ে আসা ছাড়া হয়তো স্বপ্নগুলো স্বপ্নই থেকে যাবে, ঝরে যাবে নিমিষেই।

হতাশা নিয়ে কাকা পলাশ কণ্ঠ কাঁপিয়ে বলেন, "নিজের সংসারও চলে না ঠিকমতো। তবু ওদের চোখের দিকে তাকিয়ে বলি, স্কুলে যেও, মানুষ হইও। ওদের পড়াশোনা থেমে গেলে আমার মন ভেঙে যাবে। কষ্ট হলেও শেষ পর্যন্ত ওদের পাশে থাকবো।" আজ দুই দিন থেকে ভাতিজা জ্বরে ভুগছে, বোনও দুই মাস থেকে অসুস্থ। তাই মনটা খারাপ।

তিনি আরও বলেন, এলাকায় যেকোনো একটা চাকরির সুযোগ পেলে আমার জন্য খুব ভালো হতো। জীবনে নিজের জন্য কখনও পোশাক কিনতে পারিনি। দাদার মাধ্যমে একবার দুই বান্ডিল দিন ও কিছু টাকা পেয়ছিলাম, সেই টিন দিয়ে ঘর ঠিক করেছি। তারপরও স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকা, বেঁচে আছি।

ডাবলু প্রামাণিক বলেন, আমি তেমন কাজ কাম করতে পারিনা। একসময় পেডেল আলা ভ্যান চালাতাম, খুব কষ্ট হতো। এখন মাঝে মাঝে গুড় ও মুড়ি নিয়ে গ্রামে গ্রামে যাই। ব্যাট্যা আমার জ্বরে পড়ে আছে। খুব খারাপ লাগছে। ওষুধই কিনতে পারছি না। পড়াশোনা করামু কেমন করে?

ভাই-বোন প্রীতম ও প্রিয়সীর আজ একটাই আকুতি—"আমরা পড়তে চাই… মানুষ হতে চাই। আমাদের স্বপ্ন যেন না মরে যায়।"

প্রীতম প্রামাণিক বলেন, আমরা দুই ভাই বোন পড়াশোনা করতে চাই। কিন্তু কিভাবে করব জানিনা, আমার একটা গাইড কিনতে হয়েছে সাহায্য নিয়ে। আমার মা বেঁচে থাকলে তেমন চিন্তা হতো না।

একই ওয়ার্ডের মেম্বার হাফিজুর রহমান বলেন, ডাবলু প্রামাণিকের স্ত্রী মারা যাওয়ায় তার দুটো সন্তান অসহায় হয়ে পড়েছে। তার স্ত্রী মানুষের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাতো। আমার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাদের একটা লাট্রিন (পায়খানা) দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে। আর তার দুই ছোট্ট সন্তানের জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিৎ। পাশাপাশি পলাশ খুব ভালো ছেলে। সে পড়াশোনা অবস্থায় একসময় গ্রামে গ্রামে পায়ে হেঁটে গিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করতো। এখনও কষ্ট করছে।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাকিবুল হাসান বলেন, আমি তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নিবো। এরপর তাদের জন্য যেভাবে যতটুকু সহযোগিতা করা যায় আমি চেষ্টা করবো।

পূর্ণিমার মৃত্যুতে পার্শ্ববর্তীদের হৃদয় কেড়েছে ছোট্ট এই দুই ভাই-বোন। প্রতিবেশীরা জানান, এখন ছোট্ট দুই শিশুর কি হবে? কেমনে চলবে তাদের পড়াশোনা। পূর্ণিমা অন্যের বাড়িতে কাজ করেই সংসার ও দুই সন্তানের পড়াশোনা চালাচ্ছিলেন।

তাদের এই গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয় বটবৃক্ষ নামক বাবা-মা কাউকে যেন অল্প বয়সে হারাতে না হয়। তাহলে এরকম হাজার হাজার প্রীতম-প্রিয়সীর জীবন অকালে ঝরে যাবে, থেমে যাবে স্বপ্ন। তারপরও তাদের জীবন সুন্দর হোক এই প্রত্যাশা প্রতিবেশীদের।


banner close