রুদ্র রুহান, বরগুনা
১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বরগুনা বিসিক শিল্পনগরী এখন কাশবনে পরিণত হয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার প্রায় দুই বছর হতে চললেও প্লট বরাদ্দ নিতে শিল্পোদ্যোক্তাদের আগ্রহ নেই। ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, প্লটের যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ওই দামে বিসিকে প্লট নিলে লাভ হবে না। যে কারণে খালি পড়ে থাকা প্লটগুলোতে এখন কাশবন তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া রাতের বিসিক মাদকাসক্তদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।
বিসিক শিল্পনগরী স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, ২০১১ সালে শিল্প মন্ত্রণালয় বরগুনায় বিসিক শিল্পনগরী স্থাপনের সাত কোটি আট লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয়। ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে বরগুনা সদরে ১০ দশমিক ২০ একর জমি অধিগ্রহণ করে বিসিককে জমি বুঝিয়ে দেয় জেলা প্রশাসন। এরই মধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ২০১৬ সাল পর্যন্ত মেয়াদ ও বরাদ্দ প্রায় চার কোটি টাকা বাড়িয়ে ১১ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির সংশোধনী অনুমোদন দেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। কিন্তু ঠিকাদারের সঙ্গে ঝামেলায় নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে কাজ শেষ হয়নি। পরে ব্যয় না বাড়ালেও ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়ে দ্বিতীয় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
আমিনুল ইসলাম আরও জানান, নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং মেয়াদ শেষ হওয়ায় তৃতীয় দফায় প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়। এবার ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ রেখে প্রকল্পটির ব্যয় অনুমোদন দেয়া হয় ১৮ কোটি ৮ লাখ টাকা। শেষ পর্যন্ত এই মেয়াদে প্রকল্পটি সমাপ্ত হয় এবং উদ্যোক্তাদের মধ্যে বরাদ্দের জন্য বিসিকের প্লট প্রস্তুত হয়।
‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’- এই তিন শ্রেণির মোট ৬১টি প্লট রয়েছে বরগুনার এই শিল্পনগরীতে। কিন্তু প্লট প্রস্তুত হওয়ার পর গত প্রায় দুই বছরে মাত্র আটটি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন বরগুনার ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোক্তারা। বাকি প্লটগুলো খালি পড়ে রয়েছে। কোনো ধরনের কার্যক্রম না থাকায় সেই জায়গা পরিণত হয়েছে কাশফুলের জঙ্গলে।
স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যার পরে বিসিকের দেয়াল টপকে মাদকাসক্তরা কাশবনে প্রবেশ করে অবাধে মাদকদ্রব্য সেবন করছে। বিসিক শিল্পনগরী এখন মাদকাসক্তদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।
বিসিক বরগুনা কার্যালয়ের উপব্যবস্থাপক কাজী তোফাজ্জেল হক জানান, বিসিকে ছয় হাজার বর্গফুটের ‘এ’ টাইপের ২৭টি, ৪ হাজার ৫০০ বর্গফুটের ‘বি’ টাইপের ১৯টি ও ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ বর্গফুটের ‘সি’ টাইপের ১৫টিসহ মোট ৬১টি প্লট তৈরি করা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর এখন পর্যন্ত এ বছরের জানুয়ারি মাসে ২০ জনকে ২০টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু জুন মাসের মধ্যে প্লটের ডাউন পেমেন্ট দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ১৬ জনের বরাদ্দ বাতিল করা হয়। বাকি চারজন মূল্য পরিশোধ করায় তাদের প্লট দিয়ে আরও ১৩ জনকে ১৬টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনজন চারটি প্লটের মূল্য পরিশোধ করেছে। বাকিদের প্লট বাতিল করা হবে।
বরগুনা শহরের বাসিন্দা মীর খায়রুল আহসান, ইকবাল হোসেন ও ওয়ালী উল্লাহ নামের তিনজন প্লট বরাদ্দ নিয়েও টাকা পরিশোধ করেননি। ফলে তাদের প্লট বাতিল করেছে বিসিক কর্তৃপক্ষ। মীর খায়রুল আহসান বলেন, প্লটের দাম মাত্রাতিরিক্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি শতাংশ জমির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে দুই লাখ টাকা। ‘এ’ টাইপের একটি প্লট কিনতেই দাম পড়বে প্রায় ২৭ লাখ টাকা। এত টাকা দিয়ে জমি নিয়ে তারপর আবার ভবন নির্মাণ করতে হবে। এরপর শিল্পকারখানা স্থাপন, উৎপাদন ও কর্মচারী খরচ দিয়ে আমাদের ব্যবসা হবে না।
তবে ভিন্নমত পোষণ করছেন প্লট বরাদ্দ নেয়া বরগুনা চাষিপল্লির সাব্বির হোসেন। তিনি বলেন, ‘প্লট নেয়ার পর আমি অবকাঠামো নির্মাণ করেছি। এখানে ব্যয় করলে নির্বিঘ্নে উৎপাদন করা যাবে। আমি আশা করি বিসিকে কারখানা স্থাপন করে আমি ব্যবসায় লাভবান হব।’
বিসিক কর্মকর্তা কাজী তোফাজ্জেল হক বলেন, ‘প্রকল্প ব্যয়ের ওপর প্লটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। বিসিকের প্লটগুলোতে প্রতি শতাংশ জমির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ টাকা।’ প্লট কেনায় শিল্পোদ্যোক্তাদের আগ্রহ না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শিল্পোদ্যোক্তাদের মধ্যে প্লট কিনতে আগ্রহ তৈরি ও তাদের সুবিধা দিতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক, বরগুনা চেম্বার অব কমার্স ও জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতির (নাসিব) সঙ্গে বারবার বৈঠক করছি। আশা করছি এ বছরের মধ্যে অর্ধেক প্লট বিক্রি হয়ে যাবে।’
জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতির বরগুনা সভাপতি আবদুর রশীদ বলেন, বিসিক নির্মাণের পর আমরা ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোক্তাদের নিয়ে বৈঠক করেছি। বিসিকে শিল্পকারখানা স্থাপনে ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোক্তাদের আগ্রহ তৈরির জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি। আশা করি প্লটগুলো দ্রুত বরাদ্দ নিয়ে ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোক্তারা কারখানা স্থাপন করে উৎপাদন শুরু করবেন।
বরগুনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, বরগুনা জেলার মানুষের জীবিকার মাধ্যম কৃষি ও মৎস্য। এখানে তেমন কোনো শিল্পকারখানা এখনো গড়ে ওঠেনি। যদি জেলার বাইরের কোনো উদ্যোক্তা এগিয়ে আসেন, আমরা তাদের সহায়তা দেব। বিষয়টি নিয়ে চেম্বার অব কমার্স বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা চালিয়ে আসছে।
জেলা প্রশাসক ও বিসিক শিল্পনগরী বরগুনার সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণসহ নানা প্রতিবন্ধকতার পর ২০২০ সালের ডিসেম্বরে বিসিকের প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে প্লট প্রস্তুত করা হয়। এরপর থেকে আমরা ব্যবসায়ীদের সংগঠন, জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি বরগুনার নেতাদেরসহ শিল্পোদ্যোক্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছি। এরই মধ্যে আটটি প্লট বরাদ্দও হয়েছে। আশা করছি এ বছরের শেষে আরও কিছু প্লট বরাদ্দ হবে।’
‘করব, সুন্দর বাংলাদেশ গড়ব’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নীলফামারীতে ৮ম জেলা কাব ক্যাম্পুরী হয়েছে। গত রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে নীলফামারী সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ক্যাম্প ফায়ার ও সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ক্যাম্পুরীর আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান। এতে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, স্বাগত বক্তব্য রাখেন, জেলা সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান।
এ সময় বক্তারা বলেন, কাব স্কাউটদের নৈতিকতা, শৃঙ্খলা ও নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশে এ ধরনের ক্যাম্পুরী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। স্কাউটিং কার্যক্রম শিশু-কিশোরদের দেশপ্রেম, সামাজিক দায়িত্ববোধ ও মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করে।
অনুষ্ঠানে জেলা স্কাউটসের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা, শিক্ষক, কাব স্কাউট লিডার ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাব স্কাউটরা উপস্থিত ছিলেন।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর মডেল প্রেসক্লাবের দ্বিবার্ষিক (২০২৫-২৭) নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এতে সভাপতি মো. ইমারত হোসেন (দৈনিক জনকণ্ঠ) ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর (দৈনিক আজকালের খবর) ও সাংগঠনিক সম্পাদক (দৈনিক বাংলা) কালিয়াকৈর উপজেলা প্রতিনিধি আফসার খাঁন বিপুল নির্বাচিত হয়েছেন। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কালিয়াকৈর মডেল প্রেসক্লাব কার্যালয়ে এ নির্বাচন হয়। নির্বাচন পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম ফখরুল হোসাইন।
সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ হয়। পরে ভোট গণনা শেষে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কালিয়াকৈর পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল আলম তালুকদার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- নির্বাচন কমিশনার ও উপজেলা ভূমি অফিসের কানুনগো আব্দুল আলীম, অপর নির্বাচন কমিশনার ও দীপ্ত টেলিভিশনের গাজীপুর প্রতিনিধি, প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারসহ বিভিন্ন প্রেসক্লাবের সাংবাদিক ও নেতারা। নবগঠিত প্রেসক্লাবের ১৫ সদস্য কার্যনির্বাহী কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সহসভাপতি মাসুদ রানা, যুগ্ম সম্পাদক সাগর আহম্মেদ, অর্থ সম্পাদক ফজলুল হক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মনির হোসেন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মাসুদুর রহমান, যুব ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক লুৎফর রহমান, আইন ও সাহিত্য সসম্পাদক কামরুল ইসলাম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোরশেদুল আলম পালন, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মনির হোসেন, নির্বাহী সদস্য মোশারফ সিকদার ও জাকির হোসেন।
কমলা, মালটাসহ মিশ্র ফলের বাগান করে সফলতা এসেছে মাগুরা সদর উপজেলার দ্বারিয়াপুর গ্রামের সাদমান সাকির সোহাগের ঘরে।
সোহাগ সদর উপজেলার আলাইপুর আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক। বাবা দেলোয়ার মণ্ডলের রেখে যাওয়া সাতশ শতাংশ জমিতে তিনি গড়ে তুলেছেন মিশ্র ফলের বাগান।
শিক্ষকতা করে যা অর্জন করতেন তাই দিয়ে এখনকার সমাজে সংসার চালানো খুবই কঠিন। এছাড়া গাছ লাগানোর প্রতি তার আগ্রহটা ছিল একটু বেশি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাগান করার চিন্তাটা তার মাথায় আসে।
২০২০ সাল থেকে বাগান করার উদ্যোগ নেন। যে বয়সে তরুণরা টাকা আয় করার জন্য শহরে পাড়ি জমায়, সে বয়সে সাদমান সাকির কষ্টকে তুচ্ছ করে নিজ গ্রামেই গড়ে তুলেছেন এই বাগান। যেখানে স্থান পেয়েছে নানা প্রজাতির দেশি-বিদেশি ফলের চারা। তার বাগানে আছে বিভিন্ন প্রজাতির বারোমাসি কমলা, মাল্টা, পেয়ারা, পেঁপে, সফেদা, কদবেল, ডালিম, আমড়া এবং আমসহ বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ।
এছাড়া বাগানের একপাশে পুকুর কেটে তাতে বিভিন্ন ধরনের মাছের চাষ করছেন। সেখানে আছে রুই, কাতলা, মৃগেলসহ নানা প্রজাতির মাছ।
এর মধ্যে বেশি সফলতা অর্জন করেছেন কমলার চাষ করে। প্রথমে চারশত কমলা গাছের চারা লাগিয়ে শুরু করেছিলেন বাগান। বেশ সুস্বাদ, রসালো এবং ভালো ফলন হওয়ায় তার আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। তার বাগানে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের বারোমাসি কমলালেবুর গাছ রয়েছে যেমন, দার্জিলিং, ভুটান, পাকিস্তান এবং থাই-টু। বর্তমানে তার বাগানে ১৪ শত কমলার গাছ রয়েছে। ভরা মৌসুমে সব খরচ বাদ দিয়েও তার লাভ থাকে এক থেকে দেড় লাখ টাকা। ১৩০ টাকা কেজি দরে প্রতিদিন বাছাই করে ৪ থেকে প্রায় ৫ শত কেজি কমলা ক্যারেটে করে ট্রাকযোগে আড়তে বিক্রি করা হয়। যা খুচরা বাজারে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। সারা বছরই কোনো না কোনো ফল থাকে তার বাগানে। তবে বিদেশি ফল হলেও মাগুরার মাটিতে কমলার ফলন ভালো হওয়ায় এই কাজে উৎসাহিত হচ্ছেন অন্য তরুণরা। মিশ্র ফলবাগানে আরও ৮-১০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে।
জমিতে নিয়মিত পানি সরবরাহের জন্য বাগানের এক পাশে ১৪ হাজার ৪ শত ওয়ার্ডের সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে। যার দ্বারা ১১ হর্স পাওয়ারের মটর চলে। শুধু নিজের জমিতেই নয় আশেপাশের আরও ২০০ বিঘা জমিতে পানির চাহিদা পূরণ করে বাড়তি আয় করছেন তিনি।
তরুণ উদ্যোক্তা সাদমান সাকির সোহাগ বলেন, ‘শিক্ষকতা আমার পেশা আর গাছ লাগানো আমার শখ। সেই শখ এবং গাছের প্রতি ভালোবাসার কারণেই গড়ে তোলা আমার এই মিশ্র ফল বাগান। এই বাগানকে ঘিরে আরও কয়েকজন যুবকের কর্মসংস্থান করতে পেরেছি এটা আমার একটি বড় পাওয়া। আমি চাই আমার মতো আরও শিক্ষিত বেকাররা স্বাবলম্বী হোক। বসে না থেকে বাড়ির আশেপাশে যার যতটুকু জায়গা আছে ততটুকু জায়গার মধ্যেই কিছুনা কিছু গাছ লাগাক। এতে পরিবেশের ভারসাম্য যেমন রক্ষা পাবে তেমনি দেশের বেকারত্ব অনেকটাই কমে আসবে।’
কমলার বাগানে কর্মরত ইকরামুল জানান, প্রতিদিন আমরা কমলা গাছসহ অন্যান্য গাছের যত্ন নেই। এছাড়া গাছ থেকে ফল ছিড়ে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করি। এ কাজের জন্য সোহাগ ভাই আমাদের প্রতিদিনের মজুরি দিয়ে দেন। এতে আমাদের সংসার মোটামুটি চলে যায়। এই ফল বেশ সুস্বাদু এবং রসালো হওয়ায় মাগুরায় এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
সোহাগের বাগানের কমলা বহনকারী গাড়ির ড্রাইভার জানান, আমরা প্রতি বছর সোহাগ ভাইয়ের মিশ্র ফলবাগান থেকে কমলা ক্যারেটে ভরে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর নিয়ে যায়। সেখান থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যাপারীরা এসে কিনে নিয়ে যায়।
মাগুরা সদর উপজেলার নবাগত কৃষি অফিসার মাসুদ রানা বলেন, ‘মাগুরার একজন তরুণ উদ্যোক্তা সাদমান সাকিব সোহাগ তার মিশ্র ফল বাগানের মাধ্যমে তরুণ সমাজকে উৎসাহিত করছে। আমরা তার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। এই ধরনের কাজ আমাদের দেশের সম্পদ। কৃষি বিভাগ এই ধরনের উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সর্বদা সাহায্য করে থাকে। এবং কৃষি বিভাগ সব সময় এইসব উদ্যোক্তাদের পাশে থাকবে।’
এলএসটিডি প্রকল্পের অর্থায়নে এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) স্যাটেলাইট স্টেশন পঞ্চগড় তত্ত্বাবধানে পঞ্চগড় সদর উপজেলার ঘাটিয়ারপাড়া প্রযুক্তি গ্রামে (ব্রি) উদ্ভাবিত আধুনিক ধানের জাত ও প্রযুক্তির জনপ্রিয়করণের লক্ষ্যে প্রায়োগিক পরীক্ষণ ও মূল্যায়নের বীজ বিতরণ কার্যক্রম হয়েছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১ ঘটিকায় এ অনুষ্ঠান শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, ব্রি-স্যাটেলাইট স্টেশন, পঞ্চগড়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা। তিনি জানান, বোরো ২৫-২৬ মৌসুমে চাষাবাদের জন্য কৃষকদের মাঝে ব্রি-উদ্ভাবিত বিভিন্ন জাতের ধানের বীজ বিতরণ করা হয়।
বিশেষ অতিথি এলএসটিডি প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রিফা তানজিম বলেন, বিতরণ করা জাতগুলোর মধ্যে ছিল ব্রি-ধান-৮৯, ব্রি-ধান-১০২, ব্রি-ধান-১০৪ এবং ব্রি-হাইব্রিড ধান-৮। যেখানে ব্রি-হাইব্রিড ধান-৮-এর বীজ প্রথমবারের মতো পঞ্চগড় জেলায় প্রদান করা হয়।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পঞ্চগড় সদরের কৃষি কর্মকর্তা হরি নারায়ণ রায় উপসহকারী। তিনি বলেন, কৃষকদের উদ্দেশ্য বিভিন্ন জাতের জীবনকাল উন্নত পদ্ধতিতে চারা তৈরি সঠিক সময়ে চারা রোপণ, সুষম সার ব্যবস্থাপনা এবং উৎপাদন ব্যতিক কৌশল বিশ ধরনের মাঝে বিধান বৃদ্ধির কৌশল বিষয়ে ধারণা দেন।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার ঘাটিয়ারপাড়া এলাকার কৃষক মো. আফিজ উদ্দীনের উঠানে প্রায় ৫০ জন কৃষকের মাঝে ব্রি-ধান বীজ বিতরণ করা হয়।
সংশোধিত কাবিটা নীতিমালা -২০২৩ এর আলোকে ২০২৫-২০২৬ অর্থ বৎসরে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃক হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ মেরামত ও সংস্কার কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরি ইউনিয়ন এর আঙ্গুরউলি হাওরে ডুবন্ত বাঁধের ব্রীচ উদ্ভোদনের মাধ্যমে হাওড় রক্ষা বাঁধের কাজের উদ্ভোদন করা হয়।
তাহিরপুর উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী পাউবো মনির হেসেন এর সঞ্চালনায় এবং তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান মানিকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে কাজের উদ্ভোদন করেন,পানি উন্নয়ন বোর্ড ঢাকার অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাউবো সিলেটের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ কাইছার আলম, তাহিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) শাহরুখ আলম শান্তনু, সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জুনাব আলী।
উপস্থিত ছিলেন তাহিরপুর উপজেলা প্রেসক্লাব দপ্তর সম্পাদক রোকন উদ্দিন, সদর ইউনিয়নের সদস্য তোজাম্মিল হক নাসরুম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশের সকল জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় সুনামগঞ্জ জেলাকে। অন্য জেলা থেকে টেকনিক্যাল সাপোর্ট সুনামগঞ্জে বেশি দিচ্ছি। আমরা আশা করি নির্দিষ্ট সময়ের ভিতরে বাঁধের কাজ সম্পূণ© করতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ হলে মার্চ মাসের মধ্যেই সব টাকা পরিশোধ করা হবে।
উল্লেখ্য, বালিজুরি ইউনিয়ন এর আঙ্গুরালী হাওরের উপপ্রকল্পের আওতায় ১.১৫ কিলোমিটার বাঁধের কাজের উদ্বোধন করা হয়।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় দেওয়া ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে- এই ধারণা রীতিমতো অবান্তর’ এ বক্তব্যের জেরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খানের পদত্যাগ দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছে ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠন। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন।
ভবনে তালা লাগানো শেষে চবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনায় সভায় উপউপাচার্য শামীম উদ্দিন খান স্যার পাকিস্তানিদেও যোদ্ধা বলেছে। অথচ এই পাকিস্তানি বাহিনী এদেশের জনগণকে হত্যা করেছে। আমাদের মা বোনদের ইজ্জত নষ্ট করেছে। তার এ বক্তব্যর জন্য ক্ষমা চেয়ে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। পদত্যাগ ছাড়া আমরা তালা খুলব না।
ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে চবি উপউপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে সংহতি জানিয়ে এসময় গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়া, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির, প্রচার সম্পাদক মুশরেফুল হক রাকিব, সদস্য ও অতীশ দীপংকর হল সংসদের ভিপি রিপুল চাকমা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবিদ শাহরিয়ার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সংগঠক চন্দনা রানী, ছাত্র ইউনিয়নের দফতর সম্পাদক শেখ জুনায়েদ কবির ও নারী অঙ্গনের সংগঠক সুমাইয়া শিকদার উপস্থিত ছিলেন।
গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, ‘শামীম স্যারের বক্তব্যকে আমরা ঘৃণাভরের প্রত্যাখ্যান করেছি। তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে বুঝা যায় তিনি ১৯৭১ সালে যদি তিনি থাকতেন, তাহলে রাজাকারের ভূমিকায় পালন করতেন। আমরা অবশ্যই তার পদত্যাগ দাবি করছি।
এর আগে, গত রোববার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে চবি প্রশাসনের আলোচনা সভায় অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের দিন নির্ধারিত ছিল। তারা (পাকিস্তান সেনাবাহিনী) ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তারা জীবিত না মৃত অবস্থায় ফিরবে- সে বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে- এই ধারণা রীতিমতো অবান্তর। এটি একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। এই দেশকে অন্য একটি দেশের করদরাজ্যে পরিণত করার লক্ষ্যেই বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে বলে বক্তব্যে বলেন তিনি।
সকালের নরম রোদে বোয়ালখালীর খিতাপচর গ্রামের মাটির পথ ধরে এগোতেই চোখে পড়ে সারি সারি সবুজ গাছ। গাছে গাছে ঝুলছে থোকা থোকা কুল। বাতাসে দুলছে ডালপালা, আর সেই সঙ্গে দুলছে দুই তরুণ ভাইয়ের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন।
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের এই গ্রামেই বাবার ফেলে রাখা অনাবাদি জমিকে আঁকড়ে ধরে নতুন পথ খুঁজে নিয়েছেন তানভিরুল হক ইমন ও সাইদুল হক তুহিন। চাকরির পেছনে না ছুটে তারা বেছে নিয়েছেন মাটি আর গাছের সঙ্গ।
এই যাত্রার শুরু ২০২০ সালে। তখন মাত্র ৭০টি কুল গাছ। উপজেলা কৃষি অফিসের দেওয়া সেই চারা দিয়েই শুরু হয় তাদের বাগানের গল্প। চারদিকে তখন অনেকেই সন্দেহে তাকিয়েছিলেন- পতিত জমিতে ফলের বাগান কতটা সফল হবে?
পাঁচ বছর না যেতেই সেই প্রশ্নের উত্তর মিলছে গাছের ডালে ডালে।
এখন তাদের বাগানে কুল গাছের সংখ্যা ৪৬৫টি। বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী, কাশ্মীরি ও আপেল কুল- চার জাতের কুলে ভরে উঠেছে তিন একর জমি। শুধু কুল নয়, আশপাশে ছড়িয়ে আছে আম, লিচু, পেয়ারা আর মাল্টার বাগান। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ একর জমিতে গড়ে উঠেছে একটি পরিকল্পিত ফলের খামার।
গত ৯ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে কুল তোলা। প্রতিদিন ভোর থেকে দুই ভাইয়ের ব্যস্ততা। ঝুড়ি ভরে কুল নামছে গাছ থেকে। দিনে বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ কেজি কুল। প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে স্থানীয় বাজারে।
তানভিরুল হক ইমন বলছিলেন, ‘ছাত্র থাকতেই ভাবতাম- বাবার এই জমিগুলো পড়ে থাকবে কেন? কৃষি অফিসে গিয়ে কথা বললাম। ওদের পরামর্শে সাহস পেলাম। প্রথমে ছোট পরিসরে শুরু করি, এখন আল্লাহর রহমতে বাগানটাই আমাদের জীবনের ভরসা।’
তিনি জানান, বাইরে থেকে রাসায়নিক সার না কিনে নিজেরাই জৈব সার তৈরি করেন। এতে খরচ কমে, মাটিও ভালো থাকে। এ বছর কুল বাগানে খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। অথচ দুই মাসে কুল বিক্রি করে আসতে পারে ১২ লাখ টাকারও বেশি।
এই সাফল্যের গল্পে রয়েছে পরিশ্রমের ছাপ, আছে ধৈর্য আর বিশ্বাসের শক্তি।
ভাই সাইদুল হক তুহিনের কণ্ঠে শোনা যায় আত্মবিশ্বাস, আমরা দুই ভাই অনেক কষ্ট করেছি। কিন্তু গাছ কখনো বেঈমানি করে না। যত্ন নিলে সে ফিরিয়ে দেয়।
বোয়ালখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শাহানুর ইসলাম মনে করেন, এই বাগান শুধু দুই ভাইয়ের সাফল্য নয়, এটি একটি উদাহরণ।
তিনি বলেন, এই এলাকায় জোয়ার-ভাটার লবণাক্ত পানির কারণে অনেক জমি অনাবাদি থাকে। সরজন পদ্ধতিতে ফলের বাগান করে পতিত জমি চাষের আওতায় আসে।
খিতাপচরের এই বাগান তাই শুধু কুলের গল্প নয়- এটি সম্ভাবনার গল্প। যেখানে মাটির সঙ্গে লেগে থাকা দুই ভাই দেখিয়ে দিচ্ছেন, গ্রামেই লুকিয়ে আছে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ।
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে একজনের নিকট থেকে ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছেন ভ্রাম্যমান আদালেতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
গত রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার চন্দনবাইশা ইউনিয়নে এবং কুতুবপুর ইউনিয়নে অভিযানটি পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতিকুল রহমান। এ সময় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে একজনকে ১লাখ টাকা জরিমানা এবং বালু উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত পাইপ ভেঙে ফেলা হয়।
অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলাধীন চন্দনবাইশা ইউনিয়নের ঘুঘুমারি ও কুতুবপুর ইউনিয়নের ধলিরকান্দি নামক স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ৫(১) ধারা অনুযায়ী ধরিরকান্দি এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অপরাধে জড়িত লিটন আহমেদকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতিকুল রহমান বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে সংশ্লিষ্ট সকলকে কঠোর সতর্কবার্তা প্রদান করা হয়। ভবিষ্যতেও এ ধরণের অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।
‘গরু পালনে তুলনা নাই, চলো আমরা এগিয়ে যাই’ প্রতিপাদ্যে বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের (বিএনএফ) অর্থায়নে এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উন্নত জীবনের সন্ধানের (ঊষা) বাস্তবায়নে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার কামদেব বাড়ি ও জাংগালিয়া গ্রামের ৭টি হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে ৭টি বকনা গরু বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পক্ষ থেকে বিতরণকৃত গরুগুলোকে বিনামূল্যে ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজের টিকা প্রদান করা হয়।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় টাঙ্গাইলের গোপালপুর পৌর শহরের মধুপুর ভট্ট কার্যালয়ে এ উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা ও গরু বিতরণ করা হয়।
উন্নত জীবনের সন্ধানের (ঊষা) নির্বাহী পরিচালক মো. ইব্রাহীম খলিলের সভাপতিত্বে এবং সুতী নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. জামিল হোসেনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মোর্শেদ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. এখলাছ মিয়া, সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার জাহাঙ্গীর আলম রুবেল এবং পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রিপন মিয়া। এছাড়া এলাকার বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তি, উপকারভোগী পরিবার এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা ছিলেন।
বক্তারা বলেন, গরু পালনের মাধ্যমে হতদরিদ্র পরিবারগুলো আত্মনির্ভরশীল হতে পারবে এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নে এ উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প বিকাশের লক্ষ্যে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০ একর জমির ওপর নির্মিত বিসিক শিল্পনগরী আজও কার্যত অচল পড়ে আছে। ২০১২ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে ২০১৯ সালে সব অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হলেও উদ্বোধনের ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো শিল্পকারখানা গড়ে ওঠেনি। ফলে এলাকাজুড়ে জঙ্গল গজিয়ে উঠেছে। পিচঢালা সড়ক ফেটে ঘাস ও গাছ জন্মেছে।
শিল্পনগরীতে ১২২টি প্লটের মধ্যে ৫৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হলেও এ পর্যন্ত কোনো উদ্যোক্তা কারখানা স্থাপনের কাজ শুরু করেননি। নিরাপত্তার ঘাটতি ও পর্যাপ্ত তদারকির অভাবে গ্যাস সাবস্টেশন ও বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারসহ মূল্যবান যন্ত্রপাতি চুরি হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, বিসিকের মূল উদ্দেশ্য ছিল, স্থানীয় উদ্যোক্তাদের শিল্প স্থাপনে উৎসাহিত করা। কিন্তু প্লটের উচ্চমূল্য ও প্রয়োজনীয় সুবিধার অভাবে উদ্যোক্তারা আগ্রহ হারাচ্ছেন। তাদের মতে, আশপাশের জমির তুলনায় এখানে প্লটের দাম অনেক বেশি হওয়ায় ঝুঁকি নিতে চাইছেন না কেউ।
বিসিক সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে শ্রীমঙ্গল উপজেলার উত্তরসুর এলাকায় ২০ একর জমি অধিগ্রহণ করে শিল্পনগরী নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৬ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়ে ২০১৯ সালে শেষ হয়। দীর্ঘদিন প্লট খালি থাকায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ দিকে জেলার বাইরের কয়েকজন উদ্যোক্তার নামে ৫৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবুও এখনো কোনো স্থাপনা নির্মাণ শুরু হয়নি।
এ শিল্পনগরীতে তিন ধরনের প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে- এ ক্যাটাগরি (৬০×১০০ ফুট), বি ক্যাটাগরি (৪৫×৯০ ফুট) এবং এস ক্যাটাগরি (৩,৮০০×৮,১০০ বর্গফুট)। ৯৯ বছরের জন্য প্রতি বর্গফুটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৯৯ টাকা ৫১ পয়সা।
সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, প্রশাসনিক ভবন ছাড়া শিল্পনগরীর প্রায় পুরো এলাকাজুড়ে জঙ্গল গজিয়ে উঠেছে। পিচঢালা সড়ক ফেটে সেখানে ঘাস ও গাছ জন্মেছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা দ্বিতীয় প্রবেশ গেটটি গাছপালায় ঢেকে গেছে। বৈদ্যুতিক খুঁটিতে নেই কোনো ট্রান্সফরমার। ভবনের ভেতরে পড়ে আছে কিছু খোলা যন্ত্রাংশ, মিটারগুলো ঢেকে গেছে লতাপাতায়। এলাকাটি এখন সাপ, বোলতা, মৌমাছিসহ নানা প্রাণীর আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। দিনের বেলাতেও একা চলাচল করা কঠিন বলে জানান স্থানীয়রা।
শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামাল মিয়া বলেন, ‘এখানকার প্লটের দাম আশপাশের এলাকার তুলনায় অনেক বেশি। তার ওপর বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকায় উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’
প্লট বরাদ্দপ্রাপ্ত রাহুল গুড়া মসলার মালিক রঞ্জিত দাশ জানান, শিল্পকারখানা স্থাপনের ইচ্ছা থাকলেও বর্তমানে পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘মৌলভীবাজার বিসিক শিল্পনগরীতে আমি কারখানা করেছি। শ্রীমঙ্গলে আনার ইচ্ছে ছিল; কিন্তু এখানকার প্লটের দাম অত্যাধিক এবং নিরাপত্তাও দুর্বল। তাই ঝুঁকি নিতে চাইনি।’
শিল্পনগরীর নৈশপ্রহরী বিশ্বজিৎ সরকার দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘চারদিকে জঙ্গল হয়ে গেছে। বিশাল এলাকা একা পাহারা দেওয়া প্রায় অসম্ভব। ট্রান্সফরমার চুরির পর থেকে বিদ্যুৎ নেই। একাধিকবার চোর-ডাকাতের ঝুঁকির মুখে পড়েছি।’
শ্রীমঙ্গল বিসিক শিল্পনগরীর কর্মকর্তা মো. মুনায়েম ওয়ায়েছ জানান, ২০১৯ সালে বরাদ্দ পাওয়া ৫৬টি প্লটের কোনো উদ্যোক্তাই এখনো কাজ শুরু করেননি। গত অক্টোবরের শেষ দিকে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে- ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু ও বকেয়া পরিশোধ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘ট্রান্সফরমার চুরি হওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পুনঃসংযোগের জন্য পল্লী বিদ্যুৎকে জানানো হয়েছে। গ্যাস সাবস্টেশনের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পুনঃস্থাপনে খরচের হিসাব করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা বরাদ্দ পাওয়ার পরও কাজ শুরু করেননি, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের প্রক্রিয়া চলছে।’
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বহুসাংস্কৃতিক সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে পরিচিত ‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’ আয়োজন করা হলেও এবার উৎসবটি স্থগিত করা হয়েছে। অনিবার্য কারণ দেখিয়ে আগামী ১৮, ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য হারমোনি ফেস্টিভ্যাল সিজন–২ স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় শহরে এক বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র্যালিতে খাসি, গারো, ত্রিপুরা, মনিপুরীসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারী-পুরুষ নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী পোশাকে অংশগ্রহণ করেন, যা শহরজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি করে।
র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহিবুল্লাহ আকনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
র্যালি শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন জানান, শ্রীমঙ্গলে বসবাসরত ২৬টি গেজেটভুক্ত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ঐতিহ্য দেশ-বিদেশে তুলে ধরার লক্ষ্যে প্রতিবছর হারমোনি ফেস্টিভ্যাল আয়োজন করা হয়। গত বছর সফলভাবে ফেস্টিভ্যালের প্রথম আসর অনুষ্ঠিত হলেও চলতি বছর অনিবার্য কারণে দ্বিতীয় আসর স্থগিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) নুজহাত ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ১৮-২০ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ফুলছড়া চা বাগান মাঠে অনুষ্ঠিতব্য ‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’ অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হয়েছে। উৎসবটির পরবর্তী তারিখ যথাসময়ে জানানো হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এ সিদ্ধান্ত যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে গ্রহণ করা হয়েছে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মাদকবিরোধী অভিযানে ৪ জন মাদকসেবিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এ অভিযান পরিচালিত হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন দৌলতপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রদীপ কুমার দাশ।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কামালপুর গ্রামের মৃত ওয়ারেশ মল্লিকের ছেলে সালাম হোসেন (৫০) কে মাদকদ্রব্য সেবনের দায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ২৭ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করা হয়। একই গ্রামের মৃত কালু মণ্ডলের ছেলে শফিকুল ইসলামের ছেলে (৪৩) কে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ১০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া দৌলতপুর এলাকার মৃত আকসেদ আলীর ছেলে জামরুল ইসলাম (৫০) এবং একই এলাকার এসকেন্দারের ছেলে মেহেদী হাসান (২৮) কে ১৫ দিনের কারাদণ্ড ও ৫০ টাকা করে জরিমানা প্রদান করেন আদালত।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, “ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে উপজেলার বিভিন্ন স্থানের ৪ মাদক সেবিকে জরিমানা ও কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
এসময় তিনি বলেন সমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে এ ধরনের অভিযান নিয়মিত অব্যাহত থাকবে।”
রাজবাড়ী জেলায় পদ্মার তীরে বন্যা পরবর্তিতে জেগে ওঠা চরে চাষ করা হয়েছে উন্নত জাতের টমেটো। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগাম চাষ করা এই টমেটোর এবার বাম্পার ফলন ফলেছে। দামও ভালো পাওয়ায় লাল সবুজ টমেটো হাসি ফুটিয়েছে কৃষকের মুখে। ক্ষেতে উৎপাদিত এই টমেটো স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার চরাঞ্চলে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও সঠিক দিক নির্দেশনায় উন্নত জাতের বীজ ব্যবহারের কারণে টমেটোর ভালো ফলন হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের টমেটো বিউটি প্লাস বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকার মত। হাইব্রিড জাতের টমেটো যেমন বিউটি প্লাস আবাদ করে কৃষকের প্রতি বিঘায় টমেটোর ফলন পাচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ মন করে। এছাড়াও বাজারে টমেটোর ব্যাপক চাহিদা থাকায় ভালো দামও পাচ্ছে কৃষকেরা।
কৃষক শুকুর আলি জানান, এবার মাচা পদ্ধতিতে হাইব্রিড বিউটি প্লাস টমেটো চাষ করেছি ফলন ভালো হয়েছে আর বাজারে ভালো দামও পাচ্ছি। প্রতি কেজি টমেটো বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। এবার আমি আধুনিক পদ্ধতিতে পাঁচ বিঘা জমিতে হাইব্রিড টমেটো আবাদ করেছি। হাইব্রিড টমেটো আবাদে খরচ কম লাভ বেশি।
আরেক কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, এ বছরে ৭ বিঘা জমিতে হাইব্রিটি বিউটি প্লাস আগাম জাতের টমেটো আবাদ করেছি এবং ভালো ফলনও হয়েছে। স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে টমেটোর ফলন হচ্ছে প্রায় ১ শত থেকে ১২০ মন করে। দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা অনেক লাভবান হচ্ছে। ক্ষেতের৷ খরচ বাদ দিয়ে এবার অনেক টাকা লাভ হবে আশা করা যাচ্ছে।
গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাওয়াজানি গ্রামের চাষি সোবান শেখ বলেন, ‘এ বছর টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়াও আলোর ফাঁদ ব্যবহার করে পোকা দমন করা হয়েছে। আমরা ভালো দাম পেয়ে খুশি।’
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রায়হানুল হায়দার জানান, চলতি বছরে এই উপজেলায় ২১৬ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের টমেটো আবাদ হয়েছে এছাড়াও টমেটোর ফলনও ভালো হয়েছে, বাজারে দামও বেশি পাচ্ছে কৃষককেরা।
তিনি আরও বলেন, কৃষকদের সেক্স ফরোমোন ফাঁদ দ্বারা ক্ষতিকর পোকা দমন, টমেটোর বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই, উন্নত জাত সম্পর্কে ধারণা ও সুষম মাত্রায় সার, কীটনাশক ব্যাবহারে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যে কারণে কৃষক লাভের মুখ দেখছেন। এতে তাদের জীবনমান উন্নত হবে। স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করছেন কৃষকরা।