বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২৬ ভাদ্র ১৪৩২

বান্দরবানে বন্যায় কয়েক শ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

বান্দরবানের থানচি সড়কপথের পোড়া বাংলা এলাকায় ধসে পড়া সড়ক
আপডেটেড
২১ আগস্ট, ২০২৩ ২২:৪০
প্রতিনিধি, বান্দরবান ও লামা
প্রকাশিত
প্রতিনিধি, বান্দরবান ও লামা
প্রকাশিত : ২১ আগস্ট, ২০২৩ ২২:১৭

পার্বত্য জেলা বান্দরবানে এবারে বন্যায় কয়েক শ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রশাসনের হিসাব মতে, এবারের বন্যায় ১০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বন্যায় অন্তত ২০ হাজার মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েন।

বন্যার কারণে থানচি ও রুমা উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সেখানে এখনো অন্ধকারে স্থানীয়রা। বান্দরবান বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ আমির হোসেন বলেন, জেলা ও উপজেলার বিদ্যুৎ অফিস পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ শত কোটি টাকা হতে পারে।

এবারের বন্যায় বান্দরবানের ৮ হাজার ৮৫৩ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। জেলা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক (শস্য) হাসান আলী জানান, ফসল নষ্ট হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩১০ কোটি ৭৩ লাখ টাকায় দাঁড়াতে পারে।

বান্দরবানের থানচি সড়কের মিলনছড়ি থেকে চিম্বুক-নীলগিরি সড়কের পোড়া বাংলা ও পাথুইপাড়াসহ বিভিন্ন সড়ক ধসে পড়েছে। জেলার সঙ্গে থানচি ও রুমা উপজেলার সড়ক যোগাযোগ এখন বন্ধ থাকায় উপজেলাগুলোতে যোগাযোগের মাধ্যম এখন নৌপথ। সড়ক মেরামত করে চালু করতে এক মাস সময় লেগে যেতে পারে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন জানান, বান্দরবান জেলায় ৪৬০ কিলোমিটার সড়কপথ রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর (ইসিবি) তত্ত্বাবধানে থাকা ১৮১ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ৫০ কিলোমিটার সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যার ক্ষতির পরিমাণ ৩০ কোটি টাকা।

এদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অভিজিত শীল জানান, মৎস্য বিভাগের ৪৩০টি জলাশয় ও বাঁধ দিয়ে মাছ চাষের ১৬০টি প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩ কোটি টাকা। তিনি বলেন, লামা উপজেলায় ১৫০টি জলাশয় ও ৩০টি লেক ভেসে গেছে ।

বন্যায় বান্দরবানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়, জেলার ১২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ডুবে যাওয়ায় ১ কোটি ৩৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। জেলা গণগ্রন্থাগারের ২৮ হাজার বই ও অফিসের যাবতীয় নথিপত্রসহ সবকিছুই নষ্ট হয়ে গেছে। তা ছাড়া অনেক সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ ছাড়া বন্যায় বান্দরবানের পর্যটন শিল্পের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রুমা ও থানচি উপজেলার প্রধান সড়কে ধস ও বন্যার পানির কারণে হোটেল-মোটেলগুলোর কার্যক্রম অচল হয়ে পড়ে।

লামায় ৪ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত

বান্দরবানের লামা পৌরসভা মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম বলেছেন, প্রবল বর্ষণের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা ও পাহাড়ধসে পৌরসভা এলাকার ৪ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বন্যার পরবর্তী সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের নিয়ে গত শনিবার বিকেলে লামা প্রেসক্লাবে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জহিরুল ইসলাম জানান, পৌরসভার বিভিন্ন সড়ক ভেঙে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ৮৫ ভাগ আবাদি জমির ফসল নষ্ট হয়। বন্যায় সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০০ কোটি টাকা হতে পারে।

মতবিনিময়কালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ কান্তি দাশ, পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন বাদশা, মোহাম্মদ রফিক, মো. সাইফুদ্দিন, উশৈথোয়াই মার্মা, মরিয়ম বেগম, সাকেরা বেগম, প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রিয়দর্শী বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুজ্জামন, পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী জুলকার নাঈম মানিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিষয়:

নওগাঁয় সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলার দায়ে জেল হাজতে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁয় সাংবাদিক এ কে সাজুর ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি কনক এবং ৮ নম্বর আসামি মোকাব্বের হোসেনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার দুপুরে নওগাঁর মহাদেবপুর আমলী আদালতের বিচারক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তারেক আজিজ এই আদেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার প্রধান আসামি কনক ও অপর আসামি মোকাব্বের হোসেন এ দিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে বিচারক তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে এই মামলায় আরও দুইজন আসামির জামিনও নামঞ্জুর করে আদালত তাদের জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক হাদিউল ইসলাম জানান, সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় মোট ১০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। অভিযুক্তদের মধ্যে চারজন ইতোমধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে এবং সবাইকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট বিকেল ৫টার দিকে ডিবিসি নিউজের নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি এ কে সাজু মহাদেবপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে একদল সন্ত্রাসী তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সাংবাদিক সাজু নিজেই বাদী হয়ে মহাদেবপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

সাংবাদিকের ওপর এমন ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিক মহলসহ সচেতন মহলে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।


৪৮ ঘন্টার হরতালের প্রথম দিনেই অচল বাগেরহাট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
‎‎‎বাগেরহাট প্রতিনিধি

‎চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে বুধবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ৪৮ঘন্টা সর্বাত্মক হরতাল, সড়ক-মহাসড়ক অবরোধের প্রথম দিনেই অচল হয়ে পড়ে দেশের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর মোংলাসহ পুরো বাগেরহাট জেলা। বিএনপি জামায়াতসহ সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ডাকা ৪৮ঘন্টার একটানা হরতাল ও সড়ক-মহাসড়ক অবরোধের প্রথম দিন ভোর থেকে বাগেরহাট থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী, রংপুরসহ ৪৮টি দূরপাল্লার ও আন্তজেলার সব রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

মোংলা বন্দরের আমদানী-রপ্তানী পন্য সড়ক পথে পরিবহনও বন্ধ রয়েছে। হরতালকারিরা সকালে জেলা, উপজেলার নির্বাচন অফিস ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়ায় কর্মকর্তা কর্মচারিরা অফিসে ঢুকতে পারেনি। জেলার সব উপজেলা ও পৌর শহরগুলোতে সর্বাত্বক হরতাল পালিত হচ্ছে। হরতালের প্রথম দিনে শহরের দোকানপাট, ব্যবসা, ব্যাংক, বীমা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি অফিসের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। হরতাল ও সড়ক অবরোধে জেলার মোরেলগঞ্জে পানগুছি ও মোংলা নদীতে সড়ক বিভাগের ফেরীসহ খেয়া চলাচলও বন্ধ রয়েছে। জেলার সড়ক-মহাসড়কের অন্তত ৩০টি পয়েন্টে পিকেটাররা টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় মোংলা বন্দরসহ পুরো বাগেরহাট সারাদেশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাগেরহাট বিসিক শিল্প নগরী, মোংলা ইপিজেডসহ শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক না আসতে পারায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। মোংলা বন্দরের পন্য সড়ক পথে আনা নেয়ার কাজও বন্ধ রয়েছে। সব শ্রেনী-পেশার মানুষের অংশ গ্রহনে মোংলা বন্দরসহ বাগেরহাট জেলাজুড়ে ব্যবসা-বানিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ড কার্যত থমকে দাড়িয়েছে।‎প্রথম দিনের হরতাল চলাকালে এখন পর্যন্ত কোন অপ্রতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে, কোন অপ্রতিকর ঘটনা এড়াতে জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বিপুল সংখক পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সদস্য মোতায়েন রয়েছে।


শাস্তি-জরিমানা কম হওয়ায় চট্টগ্রামে বাড়ছে ভেজাল খাদ্য তৈরি ও বিক্রি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আহসান হাবিবুল আলম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে অভিযানেও থামছে না ভেজাল খাদ্যদ্রব্য তৈরি ও বিক্রি। এমনকি মানুষের মরণব্যাধি রোগ প্রতিরোধকারী মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধও বিক্রি হচ্ছে দেদারছে। মুনাফালোভী কিছু অসাধু চক্র ও খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসব ভেজাল খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত করে বাজারজাত করছে। মানহীন এসব খাবার তৈরিতে তারা হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ও সোডাসহ বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহার করে, যা ওই খাদ্যের সাথে মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে লিভার ও কিডনি নষ্টসহ বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে। এছাড়া ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও থাকছে। জরিমানার পরও এসব চক্রের সদস্যরা ফের যুক্ত হচ্ছে এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সকলকে এসব অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। অভিযানের পরে শাস্তি পাওয়া ওই ব্যবসায়িকে ফলোআপে রাখতে হবে। এছাড়া এসব অপরাধের জন্য শাস্তির পরিমানও বাড়াতে হবে।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাবর) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের দৈনিক বাংলাকে বলেন, অতি মুনাফালাভের কারণে ব্যবসায়ীরা বারবার একই অপরাধ করে থাকেন। তাই অভিযানের পর জরিমানা বা শাস্তি পাওয়া প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়িকে ফলোআপে রাখতে হবে। এছাড়া ভোগ্যপণ্যেও পাইকারি ও খুচরা মার্কেটগুলোতে তদারকি বা অভিযান বাড়তে হবে।

তিনি বলেন, অভিযানে কোনো প্রতিষ্ঠানের অপরাধ নজরে আসার পর যে পরিমাণ শাস্তি বা জরিমানা হওয়ার কথা সে পরিমাণ হয় না। যা হয় তা অতি নগণ্য। তাই এসব অতি মুনাফালোভীদের আবারও একই অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। তাই শাস্তি বা জরিমানার পরিমাণও বাড়াতে হবে।

চট্টগ্রাম বিভাগের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ দৈনিক বাংলাকে বলেন, আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। তবে নতুন নতুন কারখানা হলে সেগুলোর সঠিক তথ্য আমরা পাই না। যার কারণে তারা এ অবৈধ ব্যবসা করার সুযোগ নেয়।

জরিমানার পরও এসব চক্রের সদস্যরা ফের যুক্ত হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা এই অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে তারা সুযোগ নেন। তাই প্রশাসনের সকল স্তর থেকে এদেও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলে সাধারাণ ভোক্তারা উপকৃত হবেন।

অন্যদিকে অনুমোদনহীন মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করছে নগরের বড় বড় ফার্মেসিগুলো। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নিয়মিত অভিযানে জরিমানা করেও থামানো যাচ্ছে না এদের ভেজাল খাদ্য তৈরি ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির অপচেষ্টা।

গত সোমবার নগরীর বহদ্দারহাট খাজা রোড, মাইজপাড়া এলাকায় সততা প্যাকেজড ড্রিংকিং ওয়াটার নামে এক প্রতিষ্ঠানে ভোক্তা অধিকার অভিযান চালায়। অভিযানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি বিশুদ্ধ পানি উৎপাদনের আড়ালে নকল স্টারিং পাওয়ার অয়ের তৈরি করছে। ওই প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ টাকা জরিমানা ও প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। একই অভিযানে ওই এলাকায় মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির অপরাধে জয়নাব মেডিকেল হল ও জননী মেডিসিন হলকে পাঁচ হাজার টাকা কওে জরিমানা করা হয়। এছাড়া আল হাসান নামে এক বেকারি প্রতিষ্ঠানে মেয়াদবিহীন মিষ্টান্ন বিক্রির অপরাধে জরিমানা করা হয়।

এর আগে গত ২৯ আগস্ট নগরীর বায়েজিদ থানার চন্দ্রনগর এলাকায় সাদিয়াস কিচেনের কারখানায় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন অভিযান চালায়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য সংরক্ষণ তৈরি, ফ্রিজে কাচা ও রান্নাকৃত খাদ্য একত্রে রাখা, লেবেলবিহীন খাদ্য সংরক্ষণ, রান্নাঘরের পাশে মুরগি পালন, খাদ্যকর্মীদের ইউনিফর্ম না থাকা ও বিভিন্ন লাইসেন্স সনদ দেখাতে না পারায় সাদিয়াস কিচেনকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। গত ৯ জুলাই বুধবার নগরের কোতোয়ালি থানাধীন স্টেশন রোড এলাকায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় গুলিস্তান হোটেল ও আজাদী হোটেল অ্যান্ড বিরিয়ানি রেস্টুরেন্টে অভিযান চালায়। এ সময় তেলাপোকার উপদ্রব ও অস্বাস্থ্যকর রান্নাঘরের পরিবেশ, খাদ্যেপচা ডিম ব্যবহার করার দায়ে এ দুই প্রতিষ্ঠানকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই দিনে ওই এলাকার দুই ফার্মেসিকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির দায়ে জরিমানা করা হয়। তবে ভোক্তার অভিযোগ, অভিযান চালালেও থামাতে পারছে না এসব চক্রকে।


কেশবপুরে মাছের ঘেরের ভেড়িতে তরমুজ চাষ করে সফল কৃষকেরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হারুনার রশীদ বুলবুল, কেশবপুর

যশোরের কেশবপুর উপজেলার বিল খুকশিয়া এলাকায় মাছের ঘেরের ভেড়িতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন চাষিরা। এ আবাদে ভালো ফলন পেয়ে বেশ লাভবান হচ্ছেন তারা। এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে যাচ্ছে গ্রীষ্মকালীন এ তরমুজ। তরমুজ চাষে লাভবান হওয়ায় অনেক কৃষক নতুন করে এ আবাদে ঝুঁকছেন। কৃষি বিভাগসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা তরমুজ আবাদ পরিদর্শন করে চাষিদের এ আবাদে উদ্বুদ্ধ করছেন।

কেশবপুর উপজেলা সদর থেকে ১৮ প্রায় কিলোমিটার দূরে শ্রীহরি নদীর তীরে অবস্থিত বিল খুকশিয়া। এ বিলের ৬ হাজার ৩৭৫ বিঘা ফসলি জমি দীর্ঘ ২০ থেকে ২২ বছর যাবৎ জলাবদ্ধতা থাকায় কৃষকেরা ফসল ফলাতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েন। বিলের জলাবদ্ধতা নিরসন করে ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে ২০০৫ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড শ্রীহরি নদীতে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে এবং বিল খুকশিয়ার তলদেশ উঁচু করার জন্য জোয়ার আঁধার (টিআরএম) প্রকল্প গ্রহণ করলেও সফলতা মেলেনি। প্রকল্প শেষে জমির মালিক কৃষকরা বিলটিতে মাছের ঘের তৈরি করেন এবং মাছের ঘেরের ভেড়িতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করেন। তরমুজ চাষ করে কৃষকরা ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন।

সরেজমিন বিল খুকশিয়ায় গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ ঘেরের বেড়িতে তরমুজ চাষ করা হয়েছে। কৃষক ইকবাল হোসেন দৈনিক বাংলা পত্রিকার প্রতিনিধি হারুনার রশীদ বুলবুল কে বলেন, তিনি ১৩ বিঘা মাছের ঘেরের ভেড়িতে ১ হাজার ৪০০টি তরমুজের মাদা তৈরি করে ফলন পেয়েছেন ২৭৫ মণ। প্রতি মণ তরমুজ ১ হাজার ২০০ টাকা করে বিক্রি করছেন। তিনি সর্বোচ্চ ১৪ কেজি ওজনের তরমুজ পেয়েছেন। একইভাবে আবদুল হালিম খান মাছের ঘেরের ভেড়িতে ১২০টি মাদা তৈরি করে ৩০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। কৃষক আবদুল কুদ্দুস ৭ বিঘা মাছের ঘেরের ভেড়িতে তরমুজ চাষ করেছেন। তার উৎপাদিত তরমুজ আকারেও বেশ বড়। সুফলাকাটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলাম দৈনিক বাংলার প্রতিনিধি কে বলেন , দীর্ঘ ২০ থেকে ২২ বছর বিল খুকশিয়া জলাবদ্ধতা হয়ে থাকায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। ২০০৫ সালে ওই বিলে টিআরএম প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্প শেষে বিলটিতে কৃষকরা মাছের ঘের তৈরি করেন। ওইসব ঘেরের ভেড়িতে এ বছর কৃষকরা তরমুজ চাষ করে ব্যাপক ফলন পেয়েছেন। ধান, মাছ চাষের পাশাপাশি তরমুজ চাষে কৃষকের মুখে হাসি ফিরেছে। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় অনেক শিক্ষিত যুবক গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করায় ব্যাপক সাড়া দেখা দিয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বিল খুকশিয়ায় মাছের ঘেরের ভেড়িতে তরমুজ চাষ ওই এলাকার কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করছে। এশিয়ান-১, পাকিজা সুপার, ব্লাক কিং, ব্লাক কুইন জাতের তরমুজ এখানে বেশি আবাদ করা হয়েছে। এ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ব করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন দৈনিক বাংলা কে বলেন, মাছের ঘেরের ভেড়িতে তরমুজ চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন সবজি চাষ করে এলাকার কৃষকরা অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছে। প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের তরমুজ চাষে উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি আমার পক্ষ থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করবো।


দৌলতপুরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ২

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুষ্টিয়া (দৌলতপুর) প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের বাগোয়ান কান্দিরপাড়া গ্রামে মন্ডল গ্রুপ ও সর্দার গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে সর্দার গ্রুপের দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন।

নিহতরা হলেন ওই গ্রামের মৃত হামের সর্দারের ছেলে সারফান সর্দার (৫০) এবং তাঁর ভাগনে মৃত বিছার সর্দারের ছেলে বাইজিদ সর্দার (৩৫)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাগোয়ান কান্দিপাড়া বাজার এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন সারফান সর্দার। গুরুতর আহত অবস্থায় বাইজিদ সর্দারকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। আহত আরও চারজনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

নিহত সারফান সর্দারের মেয়ে মিম খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ‘রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পাশের একটি বাগানে আমার বাবাকে পা কেটে ও গলা কেটে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা।’

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে সর্দার গ্রুপের দুজন নিহত হয়েছেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে পাশাপাশি সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে। এ ঘটনায় রাতেই তিন থেকে চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।’


নাটোরে বিদেশী মদ ও ইয়াবাসহ দুইজন আটক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরে বিদেশী মদ ও ইয়াবাসহ দুইজনকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। বুধবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে শহরের বনবেলঘড়িয়া এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলো, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কসিম উদ্দিনের ছেলে সোহেল রানা এবং একই উপজেলার পারচোকা গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে আমিন উদ্দিন।

পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানান, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের চোকপোষ্ট বসিয়ে একটি যাত্রীবাহি বাসে তল্লাসী চালানো হয়। তল্লাসীকালে ৪০ বোতল বিদেশী মদসহ বাসযাত্রী সোহেল রানা এবং ২০০পিচ ইয়াবাসহ আমিনকে আটক করা হয়। পরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে তাদের সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়।


কর্ণফুলী নদীতে প্রবল স্রোতের কারনে চন্দ্রঘোনা- রাইখালী নৌ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিজয় ধর, রাঙামাটি 

রাঙামাটির কাপ্তাই লেক হতে কাপ্তাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ১৬ টি জলকপাট দিয়ে ৩ ফুট করে পানি ছাড়ার ফলে কর্ণফুলী নদীতে প্রবল স্রোতের কারনে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর ) দিবাগত রাত ৩ টা হতে চন্দ্রঘোনা - রাইখালী নৌ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে নদীর দুই পাশে যাত্রী সাধারণ চরম দূর্ভোগে পড়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রাঙামাটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী( যান্ত্রিক) রনেল চাকমা বুধবার( ১০ সেপ্টেম্বর) সকালে বলেন, কাপ্তাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্পীল ওয়ের ১৬ টি গেইট ছাড়ার ফলে কর্ণফুলী নদীতে প্রবল স্রোতের কারনে বুধবার দিবাগত রাত ৩ টা হতে এই নৌ রুটে ফেরি চলাচল আপাতত বন্ধ রয়েছে।

এদিকে বুধবার(১০ সেপ্টেম্বর) সকালে কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা ফেরিঘাটের গিয়ে দেখা যায়, নদীর দুই পাশে কিছু যানবাহন অপেক্ষা করছে পারাপারের জন্য।

এসময় চন্দ্রঘোনা ফেরিঘাটে কথা হয়

চন্দ্রঘোনা কদমতলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বাবুর সাথে।

তিনি বলেন, এই নৌ - রুটে প্রাকৃতিক কারনে প্রায়শ ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। যার ফলে জনদূর্ভোগ সৃষ্টি হয়। এখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। সেতু নির্মান হলে জনদূর্ভোগ কমবে।

ফেরি ঘাটে কথা হয়, মোটরসাইকেল আরোহী মো: শহীদুল ইসলাম, মো: সরফুল আলম এবং সুকুমার বড়ুয়ার সাথে৷ তাঁরা বলেন ওপারে যাবার জন্য এসে দেখি ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমাদের কষ্টের শেষ নেই। এখানে সেতু হলে আমাদের দু:খ লাগব হবে।

এসময় কথা হয় বাস চালক মো: শুক্কুর, রাজস্থলীর বাঙ্গালহালিয়া হতে আসা ব্যবসায়ী পুলক চৌধুরী, সিএনজি চালক মো: আরিফ, বিপণন কর্মী মো: নুরনবী এবং যাত্রী মো: ওমর ফারুকের সাথে। তাঁরা বলেন, সকালে এসে দেখি ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের স্পীল ওয়ে ছাড়ার ফলে কর্ণফুলী নদীতে প্রচুর জোয়ার থাকায় ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এদিকে ফেরির ইনচার্জ মো: শাহজাহান এবং ফেরির চালক মো: সিরাজ এর সাথে। তাঁরা বলেন, কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র হতে পানি ছাড়ার ফলে নদীতে অনেক স্রোত। তাই বুধবার দিবাগত রাত ৩ টা হতে আপাতত ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে স্রোত কমলে আমরা ফেরির চালার চেষ্টা করবো।


খাগড়াছড়িতে আধা বেলা সড়ক অবরোধ চলছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

খাগড়াছড়ির তিন সড়কে আজ বুধবার আধা বেলা সড়ক অবরোধ চলছে। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খাগড়াছড়ি-ঢাকা, খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-সাজেক সড়কে এই অবরোধ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

জানা গেছে, জেলার মানিকছড়ির তবলা পাড়ায় অপ্রীতিকর ঘটনার প্রতিবাদ এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও নারী আত্মরক্ষা কমিটি; এই তিনটি পাহাড়ি সংগঠন এই অবরোধের ডাক দিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক স্বপন চাকমার পাঠানো বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।

অবরোধের কারণে তিন সড়কে দুরপাল্লার সব যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে, অবরোধকে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত জেলার কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

খাগড়াছড়ি সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, রাস্তায় দুই একটা আগুন দেওয়া ছাড়া এখনও পর্যন্ত কোথাও কোনো ধরনে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ সর্তক স্থানে রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর সকালে মানিকছড়ির তবলা পাড়ায় সন্দেহভাজন কয়েকজন ব্যক্তিকে গ্রামবাসী আটক করে। তাদেরকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে প্রতিরোধের মুখে পড়েন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তখন লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেছে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ।


দেশের জীব-বৈচিত্রের জন্য হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে ৬৯টি বিদেশি আগ্রাসী প্রজাতি!

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের জীব-বৈচিত্রের জন্য ক্রমশ হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে বিদেশি আগ্রাসী প্রজাতির উদ্ভিদ, মাছ, পাখি, কীটপতঙ্গসহ অন্যান্য প্রাণী।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে এ পর্যন্ত ৬৯টি বিদেশি আগ্রাসী প্রজাতি শনাক্ত হয়েছে; যার মধ্যে রয়েছে ৪৬টি উদ্ভিদ, ১৬টি মাছ, ৫টি কীটপতঙ্গ এবং শামুক ও পাখিসহ অন্যান্য প্রাণী।

আগ্রাসী এসব প্রজাতির অধিকাংশই দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলো থেকে এসেছে। বিজ্ঞানীদের মতে, ব্যবসায়ীক উদ্দেশ্যে, ইচ্ছাকৃত, অনিচ্ছাকৃত অথবা দুর্ঘটনাবশত এসব আগ্রাসী প্রজাতিগুলো দেশে ঢুকেছে, যা এখন স্থানীয় প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য বড় হুমকিতে পরিণত হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) অডিটোরিয়ামে কেয়ার বাংলাদেশ (কেবি) আয়োজিত ‘জার্নালিস্ট ওরিয়েন্টেশন ওয়ার্কশপ অন পেস্টিসাইড রিস্ক রিডাকশন’ -কর্মশালায় উপস্থাপিত তথ্য থেকে এসব চিত্র উঠে আসে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম। সভাপতিত্ব করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) সাবেক মহাপরিচালক আব্দুল মুঈদ।
কর্মশালায় বক্তব্য দেন, কেবির এশিয়া অঞ্চলের ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশন ম্যানেজার আজমত আব্বাস, বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ ড. সালেহ আহমেদ ও প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর ড. দিলরুবা শারমিন। উপস্থিত ছিলেন ডিএই–এর সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক মো. ওবায়দুর রহমান মণ্ডলসহ অনেকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদেশি আগ্রাসী আগাছা পার্থেনিয়াম (Parthenium hysterophorus) বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্যের জন্য নতুন হুমকি হয়ে উঠেছে। মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার এ আগাছা দ্রুত বংশবিস্তার করে মাঠ, রাস্তার ধারে ও পতিত জমিতে ছড়িয়ে পড়ছে।
অন্যদিকে, বিদেশি আগ্রাসী প্রজাতির মাছ স্থানীয় প্রজাতির মাছের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে এবং প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন হ্রাসে এরা মারাত্মক ভূমিকা রাখছে।

গবেষকরা বলছেন, পার্থেনিয়াম কৃষিজমির উর্বরতা কমিয়ে দেয় এবং ধান, গম, ভুট্টা, সবজি ও ডালশস্যসহ বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন হ্রাস ঘটায়। এতে কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। শুধু তাই নয়, এ আগাছা মাটির ভৌত ও রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য বদলে দিয়ে স্থানীয় ঘাস ও গাছপালা জন্মাতে বাধা দেয়। ফলে দেশীয় উদ্ভিদ প্রজাতি ধীরে ধীরে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

মানুষ ও পশুপাখির জন্যও পার্থেনিয়াম সমান ক্ষতিকর। এটি থেকে নির্গত রাসায়নিক উপাদান ত্বক ও শ্বাসতন্ত্রে অ্যালার্জি, হাঁপানি, চুলকানি এবং চোখে প্রদাহের মতো রোগ সৃষ্টি করে। গবাদিপশু যদি এ আগাছা খায় তবে দুধের মান নষ্ট হয় এবং উৎপাদন কমে যায়।

বিদেশি আগ্রাসী প্রজাতির মাছের মধ্যে ১৯৮০-এর দশকে মাছ চাষের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে আনা হয় আফ্রিকান ক্যাটফিশ (Clarias gariepinus)। কিন্তু এই রাক্ষুসে মাছ দেশীয় ছোট মাছ ব্যাপক হারে কমিয়ে দেয়।

২০১৪ সাল থেকে এর চাষ ও বিক্রি নিষিদ্ধ হলেও এখনও অবৈধভাবে বাজারে পাওয়া যায়। আরও ভয়াবহ হলো, এটি দেশীয় হাঁটুয়া মাছের সঙ্গে সংকরায়িত হয়ে ভবিষ্যতে জিনগত বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে, বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞগণ।

একইভাবে পিরানহা, যা বাংলাদেশে নিষিদ্ধ, দেশীয় মাছের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছিল। সাকারমাউথ ক্যাটফিশ (Hypostomus plecostomus) যা স্থানীয়ভাবে সাকার ফিশ, রোহিঙ্গা মাছ নামে পরিচিত। এটি মূলত অ্যাকুয়ারিয়ামের মাছ হলেও এখন নদী-নালায় ছড়িয়ে পড়েছে। এটি দূষিত পানিতেও বেঁচে থাকে, খাবারের জন্য দেশীয় মাছের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে এবং নদীর তলদেশে গর্ত করে পাড় ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

এছাড়া বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য আনা বিদেশি কার্প মাছ, যেমন বিগহেড, সিলভার ও কমন কার্প, এখন প্রাকৃতিক জলাশয়ে স্থায়ীভাবে জায়গা করে নিয়েছে। এগুলো দেশীয় প্রজাতির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকার সুযোগ কেড়ে নিচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, এসব বিদেশি আগ্রাসী প্রজাতির উদ্ভিদ, মাছ ও অন্যান্য প্রাণী দেশে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বাংলাদেশের দেশীয় মাছ ও সামগ্রিক জীববৈচিত্র্য মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়বে।


টেকনাফে মানবপাচারকারী আটক, ২ কিশোর উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

কক্সবাজারে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টেকনাফে এনে মিয়ানমারে পাচারের সময় দুই কিশোরকে উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ ঘটনায় মানবপাচারকারী চক্রের এক সদস্যকে আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তি আশ্রিত রোহিঙ্গা নাগরিক বলে জানিয়েছে বিজিবি। গত সোমবার সন্ধ্যায় টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেরুনতলী এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান। আটক হওয়া রোহিঙ্গা যুবকের নাম মো. রাসেদ (১৮)। তিনি উখিয়ার কুতুপালং ১ নম্বর ক্যাম্পের সি-১৩ ব্লকের বাসিন্দা ছৈয়দ আলমের ছেলে। উদ্ধার হওয়া দুই কিশোর হলো কক্সবাজার শহরের লালদীঘির পাড় এলাকার আইয়ুব খানের ছেলে মো. মাহিম (১৫) এবং একই এলাকার জসিম উদ্দিনের ছেলে মো. সোহেল (১৬)।

লে. কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, সম্প্রতি টেকনাফ সীমান্তে সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী একটি চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। গত সোমবার সন্ধ্যায় নাফ নদী সীমান্ত দিয়ে পাচারের চেষ্টা চলছে- এমন খবর পেয়ে বিজিবি কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে অভিযান চালায়।

তিনি বলেন, ‘বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে কয়েকজন পাচারকারী পালানোর চেষ্টা করে। ধাওয়া দিয়ে একজনকে আটক করা সম্ভব হলেও অন্যরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে দুই কিশোরকে উদ্ধার করা হয়।’

আটক রোহিঙ্গা যুবক মানবপাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।


বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের জমিতে ভবন নির্মাণ, কাজ বন্ধ করল প্রশাসন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বরগুনা প্রতিনিধি

বরগুনার আমতলী উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কোটি টাকার জমি দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ, কাজ বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার বিকেলে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রোকনুজ্জামান খানের নির্দেশে হলদিয়া ইউনিয়নের অফিস বাজার এলাকায় এ অভিযান পরিচালিত হয়।

জানা গেছে, ১৯৬৭ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁশবাড়িয়া নদীর পাড়ে দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া এলাকায় ৫৪/বি পোল্ডারে প্রায় ১০ একর জমি অধিগ্রহণ করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করেন। ওই বাঁধের ওপর ভরসা করে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ, গবাদিপশু ও ফসল প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেয়ে আসছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁধের দুপাশে ইমারত নির্মাণ করায় বাঁধ নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলে বাঁধ ধসে ভয়াবহ প্রাণহানী ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তারা দ্রুত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানান।

দখলদার কবির মল্লিক দাবি করেন, তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি নিয়েই ভবন নির্মাণ করছেন। তবে অনুমতির কোনো কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন তিনি। অন্যদিকে লিবিয়া প্রবাসী লিটন হাওলাদারের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। হলদিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার মো. সাদিক মিয়া বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রোকনুজ্জামান খাঁন জানান, কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি কেউ আইন ভঙ্গ করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হান্নান প্রধান বলেন, বাঁধের জমি দখল করে ভবন নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সফিউল আলম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতি করে কেউ অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলতে পারবে না।


ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সুমাইয়া ও তার মাকে হত্যা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা প্রতিনিধি

ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগমকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। হত্যার মূল আসামি মো. মোবারক হোসেনকে (২৯) গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঢাকায় পালিয়ে যাবার সময় কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও রেলস্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মোবারক হোসেন জেলার দেবিদ্বার উপজেলার কাবিলপুর গ্রামের মৃত. আবদুল জলিলের ছেলে।

পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, ঝাড়-ফুক করার সুবাদে মোবারক হোসেন সুমাইয়া আফরিনদের বাসায় যাতায়াত করতেন। গত রবিবার সকাল সাড়ে ৮টায় সুমাইয়াদের ভাড়া বাসা নগরীর কালিয়াজুরি এলাকায় নেলি কটেজ নামক বাসায় প্রবেশ করেন মোবারক। এরই মধ্যে মোবারক তাদের বাসায় ঝাড়ফুঁক করে পানি ছিটিয়ে বেরিয়ে যান। আবার বেলা সাড়ে ১১ টায় ওই বাড়িতে প্রবেশ করেন। যা সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যায়।

পুলিশ সুপার বলেন, মোবারক তাদের বাসায় থাকাকালীন সময়ে এক পর্যায়ে সুমাইয়া আফরিনকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় সুমাইয়ার মা বাধা দেন। এতে মোবারক ক্ষুব্ধ হয়ে সুমাইয়াকে এক ঘরে আটকে মা তাহমিনা বেগমকে অন্য একটি রুমে নিয়ে বালিশ চাপায় হত্যা করেন। এরপর সুমাইয়াকে তার রুমে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় সুমাইয়া প্রতিরোধ করলে তাকে গলা টিপে হত্যা করেন। হত্যার পর মোবারক সুমাইয়াদের ঘর থেকে ৪টি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ নিয়ে পালিয়ে যান। তিনি আরো বলেন, ধর্ষণ হয়েছে কিনা বিষয়টি ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।

নিহত সুমাইয়া আরফিন (২৩) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি কুমিল্লা নগরীর সুজানগর এলাকার বাসিন্দা ও কুমিল্লা আদালতের সাবেক হিসাবরক্ষক মৃত নুরুল ইসলামের মেয়ে। গত সোমবার সকালে ওই বাসা থেকে সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগমের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।


কুমিল্লায় হারিয়ে যাচ্ছে মাছ ধরার ঐতিহ্যবাহী ফাঁদ চাই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তারিকুল ইসলাম তরুণ, কুমিল্লা দক্ষিণ

বর্ষা মৌসুমে টইটম্বুর পানির সঙ্গে উজান থেকে ভেসে আসা দেশীয় মাছ—বজুরী, টেংরা, ঢেলা, দারখিলা, কটকটি, বাইলা, পুটি, সেলবেলা, চান্দা, বৈইচা, পাবদা, শিং, কৈ, টাকি, চেধূরী, এলকোনা, খৈইলশা, ভাংলা, কাটাইড়া, বাতাইয়া, চিংড়ি, বাইম, গুতুমসহ নানান প্রজাতির মাছ একসময় খাল-বিল-জমিতে ডিম ছাড়ার জন্য ছুটে আসত। সেই সময়ে গ্রামের ছেলেরা মাছ ধরার জন্য নানান ফাঁদ পাতত। এর মধ্যে অন্যতম ছিল আনতা, বেউর ও চাই, আনতা। যা আজ বিলুপ্তির পথে।

তবে এখনো কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রামচন্দ্রপুর আনতা হাট সেই পুরনো স্মৃতি ধরে রেখেছে। রামচন্দ্রপুর, দক্ষিণ বাঙ্গরা ও মালাই বাঙ্গরা বাজার, হাটখোলা, ইলিয়াটগঞ্জ, চান্দিনার নোয়াবপুর, বর্ষা মৌসুমে বাঁশের তৈরি আনতা বিক্রির ধুম পড়ে যেত কিন্তু পূর্বে ন্যায় দেশীয় মাছ না থাকায় আস্তে আস্তে এসব মাছ ধরার ফাঁদ তৈরিতে কৃষক, জেলে আগ্রাহ হাচ্ছে। শুধুই মাছ ধরার ফাঁদ নয়, আনতা হয়ে উঠেছে গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ, যা এ সময় স্থানীয়দের মধ্যে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে দেয়।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ও মানভেদে প্রতিটি আনত ৩০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বর্ষার শেষ দিকে এ ফাঁদের চাহিদা আরও বেড়ে যেত। ব্যবসায়ীরাও মৌসুমে ভালো লাভের আশা করত। এন তেমন একটা চোখে পড়ে না, রামচন্দ্রপুরের আনতা ব্যবসায়ী কবির হোসেন বলেন, ‘প্রতি হাটে আমি ৬০ থেকে ৭০টি আনতা বিক্রি করি কিন্তু যখন মাছের ভরা মৌসুম ছিল তখন সারাবছর লোক নিয়োগ করে বিভিন্ন বাড়িতে আনতা তৈরি করতাম। দূর-দূরান্ত থেকেও ক্রেতারা আসত। আর তেমন বিক্রি না থাকায় ব্যাবসা অনেক কমে গেছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে মাছ জমির আইল ধরে নামতে শুরু করে, তখন আইলে আনতা পুঁতে রাখলেই সহজে মাছ ধরা পড়ে। বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় আমরা খুশি হতাম, আমাদের দাবি আনতা, বেউর, চাই, উছা, পেলুন।এই ফাঁদ তৈরিতে সরকার ভর্তুকি দিয়ে অল্প আয়ের মানুষ দের বাচিয়ে রাখা উচিত। পাশাপাশি বাঁশ শিল্প বেচে থাকবে।

স্থানীয় মাছ বিক্রেতা মতিন মিয়া জানান, তিনি প্রতি মৌসুমে ৫-৬টি আনতা কেনেন। আনতা দিয়ে প্রতিদিন ২-৩ কেজি মাছ ধরা পড়ে। নিজেদের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে তিনি ৩০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত আয় করেন।

শুধু মাছ ধরার ফাঁদ নয়, আনতা হয়ে উঠেছে অনেকের জীবিকার উৎস। আনতা তৈরি ও বিক্রি করে বহু পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছে। আবার এর সাহায্যে ধরা মাছ বিক্রি করে অনেকেই বাড়তি আয় করছে। ছোট-বড় সবাইকে মাছ ধরার আনন্দে মাতিয়ে তোলে এই দেশীয় কৌশল, যা আজও মুরাদনগরের গ্রামীণ জীবনের অনন্য ঐতিহ্য বহন করে চলেছে।


banner close