শরীয়তপুরে ৪০ কেজি দুধ দিয়ে গোসল করে আবুল হাশেম সরদার (৫৬) নামে এক ‘আওয়ামী লীগ কর্মী’ বিএনপিতে যোগ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আবুল হাশেম নিজেকে পৌরসভা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি হিসেবে দাবি করলেও দলের স্থানীয় নেতারা তা অস্বীকার করেন।
বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে গত শুক্রবার আবুল হাশেম ৪০ কেজি দুধ মাথায় ঢেলে গোসল করেন। তিনি জেলা বিএনপি সভাপতি সফিকুল রহমান কিরণ ও সাধারণ সম্পাদক সরদার নাসির উদ্দিনের হাত ধরে বিএনপিতে যোগদানের ঘোষণা দেন। শরীয়তপুর শহরের ধানুকা এলাকায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার নাসিরউদ্দিন কালুর বাসভবনে এমন ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শরীয়তপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হুগলি এলাকার বাসিন্দা আবুল হাশেম সরদার। তিনি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত। তিনি বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের মিছিল, সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে গেছেন।
গত শুক্রবার জেলা বিএনপি আয়োজিত দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আবুল হাশেম যোগ দেন। সেখানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সহায়তায় তিনি ৪০ কেজি দুধ মাথায় ঢালেন। এরপর মঞ্চে উঠে তিনি বিএনপিতে যোগদানের ঘোষণা দেন। জেলা বিএনপি নেতারা তাকে বরণ করে নেন।
সদ্য বিএনপিতে যোগ দেয়া আবুল হাশেম সরদার বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছি। দুর্দিনে আওয়ামী রাজনীতি করতে গিয়ে অনেক জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছি। কিন্তু কখনো দল থেকে কিছুই পাইনি। শরীয়তপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটিতে আমাকে সহসভাপতি করা হয়েছিল।’ তবে কমিটির বিষয়ে কোনো কাগজপত্র তিনি দেখাতে পারেননি।
আবুল হাশেম অভিযোগ করেন, ‘আওয়ামী লীগের কমিটিতে এখন সুবিধাবাদীরা যোগদান করেছেন। ত্যাগী নেতাদের কোনো মূল্যায়ন বর্তমান নেতারা করছেন না। দলের পদপদবিতে ব্যাপক স্বজনপ্রীতি করছেন তারা। মনের কষ্টে আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগদান করেছি।’
দুধ দিয়ে কেন গোসল করলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রথমে তিনি ১০ কেজি দুধ এনে মাথায় ঢেলে গোসল করার উদ্যোগ নেন। পরবর্তী সময়ে বিএনপির নেতারা আরও ৩০ কেজি দুধ এনে তাকে গোসল করিয়ে দলে স্বাগত জানান।
এদিকে শরীয়তপুর পৌরসভা ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল আজিজ বলেন, আবুল হাশেম সরদার কখনোই আওয়ামী লীগের কোনো নেতা ছিলেন না। বিভিন্ন সময়ে দলের বিভিন্ন কর্মসূচি মিছিল-মিটিংয়ে তিনি থাকতেন। একজন মানুষ যদি এভাবে বিএনপিতে যোগদান করেন তাতে আওয়ামী লীগের কী করার আছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক যুবলীগ নেতা বলেন, ‘আবুল হাশেম কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। তাকে যে সুবিধা দেয়, তার পক্ষেই তিনি কথা বলেন। গত পাঁচ বছরে আবুল হাশেম আওয়ামী লীগ থেকে অনেক সুবিধা নিয়েছেন। হয়তো এখন নতুন করে কোনো সুবিধা চেয়ে না পেয়ে এমনটা করে থাকতে পারেন।’
অন্যদিকে শরীয়তপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালাম শাহ বলেন, ‘আবুল হাশেম আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাদের দুঃশাসনে তিনি ব্যথিত হয়েছেন। এ কারণে মাথায় দুধ ঢেলে গোসল করে বিএনপিতে যোগদানের ঘোষণা দিয়েছেন। আমরাও তাকে বিএনপিতে বরণ করে নিয়েছি।’
কাগজপত্র বিহীন ও চোরাই পণ্য অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কোনো পূর্ব ঘোষণা বা প্রস্ততি ছাড়াই বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সন্ধ্যা ৬টার পর সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ করেছে বেনাপোল কাস্টমস।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, এক সপ্তাহ ধরে চলছে এই নিয়ম।
তাদের এমন সিদ্ধান্তে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দরে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। দুদেশের সীমান্ত জুড়ে পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ জটের সৃষ্টি হয়েছে। বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ী, আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকরা।
তবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছেন, সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অপরদিকে সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলছেন, এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে তবে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
আগে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ থেকে ৪৫০ ট্রাক পণ্য বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করলেও এ সিদ্ধান্তের পর তা কমে ১৮০-২০০টিতে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হতো প্রতিদিন ১৩০ থেকে ১৫০ ট্রাক পণ্য।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ১ আগাস্ট দুদেশের সিদ্ধান্তে বেনাপোল-পেট্রাপোল ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট (আইসিপি) ২৪ ঘণ্টা চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়। ২০২৪ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দেশের সব কাস্টমস হাউসকে ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার নির্দেশ দেয়। কিন্তু বেনাপোলে তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।
বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলছেন, বন্দর ও কাস্টমস কার্যক্রমে সমন্বয়ের অভাবে প্রায়ই প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হয়। প্রতিদিন গড়ে ২০০-২৫০ কোটি টাকার আমদানি-রপ্তানি হয় এ বন্দর দিয়ে। সময়সীমা কমে যাওয়ায় বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী আনারুল ইসলাম বলেন, পূর্ব ঘোষণা ছাড়া সন্ধ্যার পর বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ করায় ব্যবসায়ীরা হতবাক। দুপাশে শত শত ট্রাক আটকে আছে। কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। এভাবে সিদ্ধান্ত চলতে থাকলে ব্যবসায়ীরা বিকল্প হিসেবে ভোমরা, হিলি বা সোনামসজিদমুখী হতে বাধ্য হবে, এতে সরকারের রাজস্বও কমে যাবে।
ভারতের পেট্রোপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশের এই একতরফা সিদ্ধান্তে ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। দুদেশের বাণিজ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। পেট্রাপোল বন্দরে প্রতিদিন ট্রাক জটের মধ্যে পড়ছি। প্রতিদিন হাজারেরও বেশি ট্রাক পণ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকছে পেট্রাপোল বন্দরে। বিগত সময়ে রাত ১২টা পর্যন্ত আমদানি-রপ্তানি চালু ছিল।
বেনাপোলে বন্দর ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট পক্ষদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। তা না করে একতরফাভাবে সময়সীমা কমানো হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী, কর্মচারী এবং সরকারও। আমরা কাস্টমস কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রতিদিন অন্তত ৪০০-৫০০ আমদানিমুখী ট্রাক প্রবেশ নিশ্চিত করা জরুরি।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, কয়েকদিন আগে আমাদের সাথে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের একটি বৈঠক হয়েছিল। তারা প্রস্তাব করেছিল সন্ধ্যা ৬টার পর আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকার। আমরা বলেছি বন্দর ব্যবহারকারী সবার সাথে কথা বলে বিষয়টি জানানো হবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক শামীম হোসেন বলেন, আমরা বন্দর পরিচালনা করি। তবে কাস্টমস অনুমোদন ছাড়া কোনো পণ্য ক্লিয়ার করা সম্ভব নয়। আকস্মিক এই সিদ্ধান্ত রাজস্ব এবং বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বেনাপোল কাস্টমসের কোনো কর্মকর্তা সংবাদকর্মীদের সাথে কথা বলছেন না। কাস্টমসের কোনো তথ্য ও সংবাদকর্মীদের জানানো হয় না। বর্তমান বেনাপোল কাস্টম হাউসে কর্মরত কাস্টমস কমিশনার হাউসের কোনো কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়নি সংবাদকর্মীদের সাথে কথা বলার। এর আগে একজন সহকারী কমিশনার পর্যায়ের কর্মকর্তা সংবাদকর্মীদের সাথে কথা বলতেন।
তবে কাস্টমসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক সমন্বয়ের কারণে সাময়িকভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দ্রুত সমাধান হতে পারে।
ছন্দময় ভঙ্গিতে ধীর লয়ে দল বেধে সাফারী পার্কের ভেতর ঘুরে বেড়াতো জিরাফগুলো। কখনো কখনো দৌঁড়াতো গাছ পালায় আচ্ছাদিত প্রশস্ত প্রান্তরে। সামনের দুই পা এক সঙ্গে ও পেছনের দুই পা একসঙ্গে চলা জিরাফের দৌড়াদৌড়ি দৃশ্যও ছিল উপভোগ্য। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ইন্দ্রবপুর এলাকায় গড়ে ওঠা সাফারী পার্কে এক সময় ১৬ সদস্যের জিরাফ পরিবারের চঞ্চলতা বাড়তি আনন্দ দিত দর্শনার্থীকে। কিন্তু অল্প সময়ের ব্যবধানে গাজীপুর সাফারী পার্ক থেকে একেবারেই বিলিন হলো জিরাফের অস্তিত্ব। ধুকে ধুকে বেঁচে থাকা সর্বশেষ জিরাফটিও মারা গেছে।
জানা গেছে, টিবি রোগে আক্রান্ত হয়ে স্ত্রী জিরাফটি বৃহস্পতিবার মারা যায়। তবে কর্তৃপক্ষ সর্বশেষ জিরাফের মৃত্যুর খবরটি গোপন রাখে। সাফারী পার্ক থেকে জিরাফের অস্তিত্ব বিলিন হওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয় গতকাল শনিবার সকালে।
গাজীপুর সাফারী পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী বনসংরক্ষক তারেক রহমান গণমাধ্যমকে জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বেঁচে থাকা একমাত্র জিরাফটি টিবি আক্রান্ত ছিল। জিরাফটিকে সুস্থ করতে ছয় সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। কিন্ত শেষ পর্যন্ত সেটাকে বাঁচানো গেল না। বৃহস্পতিবার রাতে শেষ জিরাফের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর ময়নাাতদন্ত শেষ করে পার্কের ভেতরেই জিরাফটিকে মাটি চাপা দেওয়া হয়। এ মৃত্যুর মধ্য দিয়ে একেবাইরেই জিরাফের অস্তিত্ব বিলিন হলো সাফারী পার্কে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক জানান, জিরাফ মারা যাওয়ার পরপরই পার্ক কর্তৃপক্ষ একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে।
পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৩ সালে সাফারী পার্ক প্রতিষ্ঠার পর আন্তর্জাতিক প্রাণী বিপণন প্রতিষ্ঠান ফ্যালকন ট্রেডার্সের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ১২টি জিরাফ আনা হয়। পরে উপযুক্ত পরিবেশ পাওয়ায় এসব জিরাফ থেকে জন্ম হয় আরও ৪টি জিরাফের। এর মধ্যে যদিও ২০১৮ সালের জুলাই মাসে কমন ইল্যান্ডের গুতোয় আহত হয়ে একটি ও পরে ২০১৯ সালে জুলাই মাসে অসুস্থ হয়ে বেশ কয়েকটি জিরাফসহ মোট ১৩টি জিরাফের মৃত্যু হয়। এরপর বেঁচে থাকা আরও দুটি জিরাফ মারা যায়। সর্বশেষ টিকে থাকা স্ত্রী জিরাফটিও মারা যায় বৃহস্পতিবার।
জামালপুরে গন অধিকার পরিষদের চতুর্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে নির্বাচনী গণসংযোগ ও আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার ২৬ অক্টোবর দুপুরে সদর উপজেলার গোপালপুর বাজার থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে উপজেলার ভারুয়াখালি, নান্দিনা, শরীফপুর বাজার হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় জেলা গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো: জাকির হোসেন নেতা কর্মীদের নিয়ে জামালপুর সদর-৫ আসনের এমপি প্রার্থী হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের ট্রাক প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন। পরে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেকে সদর আসনের প্রার্থী হিসেবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতের দাবি জানান এবং এমপি মনোনীত হলে অবহেলিত জামালপুর সদরের কৃষক শ্রমিক জনতার পাশে থাকার কথা জানান। এ সময় কয়েকশ নেতা কর্মীসহ সাধারণ মানুষ শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।
বঙ্গোপোসাগরে জেলে সাদ্দাম হোসেনের জালে আড়াই কেজি ওজনের একটি বড় ইলিশ ধরা হড়েছে। ইলিশটি লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মতিরহাট মাছঘাটে ডাকে ৯ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করা হয়।
রোববার (২৬ অক্টোবর) সকালে ইলিশটি সর্বোচ্চ দামে কিনে নেন স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী আমির হোসেন।
জানা গেছে, ভোলার জেলে সাদ্দাম ১৫ জন সঙ্গী নিয়ে সাগরে মাছ শিকারে যান। শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাতে জাল ফেললে অন্যান্য ইলিশের সঙ্গে ওই বড় ইলিশটিও ধরা পড়ে। পরে মাছটি আড়তে আনা হলে ডাকে (নিলামে) ৯ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে মেঘনা নদীতে মাছ কম পাওয়াতে তিনি এমন চড়া দাম পেয়েছেন বলে জানান আড়ৎদার।
আড়ৎদার মো. বাবুল বলেন, জেলে সাদ্দাম অনেকগুলো মাছসহ বড় ইলিশটি আড়তে নিয়ে আসেন। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রথমদিনেই একটি বড় ইলিশ আড়তে এসেছে। বেশি দামেই বিক্রি হয়েছে। সচরাচর এতো বড় ইলিশ ধরা পড়ে না।
ব্যবসায়ী আমির হোসেন বলেন, আড়াই কেজি ওজনের ইলিশটি ৯ হাজার ২০০ টাকায় কিনেছি। ঢাকার মোকামে বড় ইলিশের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। সেখানে পাঠানো হবে। আশা করছি অন্তত ১১ থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারব।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে তিন হাজার টাকার বিনিময়ে নিজের স্ত্রীকে বন্ধুদের কাছে দিয়ে দেয় এক ইটভাটা শ্রমিক। এরপর তিন দিন ধরে পালাক্রমে ধর্ষণের শিকার ওই নারী থানায় অভিযোগ দেয়। এতে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে স্বামীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের মিরশ্বানী এলাকার ইসলামিয়া ব্রিকস ফিল্ডের শ্রমিকদের থাকার ঘরে।
আটক ব্যক্তিরা হলো ভুক্তভোগীর স্বামী নোয়াখালী জেলার সুধারাম (সদর) থানার রামহরিতালুক গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে রাজু আহমেদ (২৬), একই এলাকার মৃত সিরাজ মাঝির ছেলে বেলাল হোসেন (৩৫), আবুল কাশেমের ছেলে মো. হৃদয় (২৫), চাঁন মিয়া মাঝির ছেলে মহিন উদ্দিন (২৬) ও মুন্সীতালুক গ্রামের শাহ আলমের ছেলে আবুল কালাম (৪৫)।
থানায় দায়ের করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রাজুর সঙ্গে তার স্ত্রীর বিয়ে হয় ২০২৩ সালে। রাজু মাদকাসক্ত হওয়ায় বিয়ের পর থেকেই দাম্পত্য জীবনে অশান্তি বিরাজ করছিল। একপর্যায়ে স্ত্রী বাবার বাড়ি নোয়াখালীর মান্দারতলী গ্রামে ফিরে যান। চলতি মাসের শুরুতে সালিশ বৈঠকের পর রাজু আবারও স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে আসে।
গত ১৫ অক্টোবর রাজু কুমিল্লা শহরে থাকার কথা বলে স্ত্রীকে নিয়ে আসে চৌদ্দগ্রামের কালিকাপুর ইউনিয়নের মিরশ্বানীর ইসলামিয়া ব্রিকস ফিল্ডে। সেখানে গিয়ে সে স্ত্রীকে শ্রমিক বেলাল হোসেনের একটি ঘরে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ১৬ অক্টোবর রাতে বেলাল হোসেন রাজুর উপস্থিতিতে তাকে প্রথমবার জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর ১৮ অক্টোবর রাতে রাজুর দুই বন্ধু হৃদয় ও মহিন উদ্দিন একইভাবে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ২০ অক্টোবর রাতে হৃদয় আবার ধর্ষণের চেষ্টা করলে ভুক্তভোগী চিৎকার দিলে সে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর রাজু স্ত্রীকে হুমকি দেয়, বিষয়টি কাউকে জানালে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে। ভয়ে ভুক্তভোগী মুখ না খুললেও একই ইটভাটায় কাজ করা এক সহকর্মী বিষয়টি তার পিতাকে জানায়। খবর পেয়ে পিতা ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করেন।
পরে শুক্রবার রাতে ভুক্তভোগী নারী চৌদ্দগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে রাজু ও তার চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে।
চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করে। শনিবার বিকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।”
পাবনার সদরে মালবাহী ট্রাকের চাপায় বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী তিনজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরও দুইজন গুরুতর আহত হয়েছে।
রোববার (২৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সদরের গয়েশপুর ইউনিয়নের বাঙ্গাবাড়িয়া এলাকায় ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- পাবনা কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তাসমিয়া আক্তার, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আবু তোহা ও ভ্যানচালক আকরাম হোসেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্কুল শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি ভ্যান পুষ্পপাড়া নামক স্থান থেকে জালালপুরের দিকে আসছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে বাঁশবোঝায় একটি ট্রাক আসছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আরেকটি গাড়িকে বাঁচাতে ব্রেক করতেই ট্রাকটি ভ্যানের ওপরে উল্টে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিক্ষার্থী ও ভ্যান চালক নিহত হোন। এঘটনায় আহত সদর উপজেলার মধুপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সাদ হোসেনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মাধপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভ্যানের ড্রাইভারসহ তিনজন নিহত ও দুজন চায়ের দোকানে থাকা ব্যক্তি আহত হয়েছে। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা পক্রিয়াধীন।
ইসকনকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় মুসলিম তরুণীদের টার্গেট করে করে হিন্দু সঙ্ঘবদ্ধচক্র কর্তৃক পালাক্রমে ধর্ষণ ও গাজীপুরে মসজিদের ইমামকে গুম করার ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার নেত্রকোনা বড়বাজার শাহী মসজিদের সামনে খেলাফত আন্দোলনের ঘণ্টাব্যাপী প্রতিবাদী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বড়বাজার শাহী মসজিদের সামনে শুরুতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয় এরপর একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো প্রদক্ষিণ করে বারহাট্টা রোডের জামিয়া ইসলাম উলুম মাদ্রাসার সামনে গিয়ে শেষ হয়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব মাওলানা গাজী মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম রুহী, ইসলাম ঐক্যজোটের জেলা সভাপতি মাওলানা শরিফ উদ্দিন ও সেক্রেটারি মাওলানা আবু সায়েম খান, জেলা হেফাজতে ইসলামের সদস্য সচিব মাওলানা মাজহারুল ইসলাম, খেলাফত আন্দোলন নেতা মাওলানা মুস্তাফা জেহাদী, মুফতি আরিফুজ্জামান, হাফেজ জাকির হোসেন, মুফতি মুসা শেখ, মাওলানা আতাউর রহমান কমলপুরী, মাওলানা শরিফুল ইসলাম, মাওলানা ইজহারুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল মোতালিব, হাফেজ সাকিব আল হাসান প্রমুখ।
এ সময় খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব গাজী মোহাম্মদ আব্দুর রহিম রহিম বলেন, ইসকন ধর্ম প্রচারের নামে দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশে একের পর এক উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে, দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে শান্ত এই ভূমিকে বিদেশি ইন্দনে অশান্ত করে তোলার ফন্দি এঁকেছে। চট্টগ্রামে আদালত প্রাঙ্গণে প্রকাশ্যে অ্যাডভোকেট আলিফ হত্যাকাণ্ড তার জ্বলন্ত উদাহরণ। সাম্প্রতিক সময়ে গাজীপুরে মাদ্রাসার ১৩ বছরের এক ছাত্রীকে হিন্দু একটি চক্র পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে। টঙ্গীতে একজন মসজিদের ইমামকে হত্যার উদ্দেশে গুম করে নিয়ে পঞ্চগড়ে ফেলে রেখেছে।
নরসিংদীর মেঘনা নদীতে এক আকর্ষণীয় তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নরসিংদী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে নরসিংদী জেলা পরিষদ, নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, নরসিংদী পৌরসভা, উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় নরসিংদী-কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-নারায়ণগঞ্জ এবং হবিগঞ্জ জেলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মোট ১২টি নৌদল অংশগ্রহণ করে। শনিবার এ নৌকা প্রতিযোগিতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার মোহাম্মদ উসমান উল্লাহ নৌদল চ্যাম্পিয়নশীপ এবং হবিগঞ্জ জেলার টঙ্গীঘাট উপজেলার কালা মিয়ার নৌদল রানার্সআপের গৌরব অর্জন করে।
নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ করার জন্য হাজার হাজার নারী-পুরুষ-শিশু মেঘনা নদীর দুই তীরে ভীড় জমায়। ইঞ্জিনচালিত নৌকা, স্পিডবোড, লঞ্চ, ট্রলার, ছোট নৌকা অসংখ্য নৌকা দিয়ে মেঘনা নদীতে আকর্ষণীয় এই নৌকাবাইচ উপভোগ করে। নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ হুমায়ুন কবির, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকন, পুলিশ সুপার মেনহাজুল ইসলাম, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা জাহান সরকার, পৌর প্রশাসক মনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (রাজস্ব) মাহমুদা বেগম, হারুন অর রশিদ হারুন প্রমুখ।
দিনাজপুরের পরিচিত মুখ, শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মো. আব্দুল মজিদ গুরুতর অসুস্থ হয়ে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি মেসার্স পৃথিবী বুক স্টলের স্বত্বাধিকারী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন দিনাজপুর জেলা শাখার অর্থ সম্পাদক এবং সাপ্তাহিক আজকের দিনাজপুর পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক হিসেবে সুপরিচিত।
তার অসুস্থতার খবর পেয়ে তাকে হাসপাতালে দেখতে যান সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুর ২৯৩৬-এর নেতারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি মো. ফারুক হোসেন, অর্থ সম্পাদক আব্দুস সালাম, দৈনিক বাংলার দিনাজপুর প্রতিনিধি মো. মিজানুর রহমান মিজান. মো. ওয়ামিকসহ সংগঠনের সদস্যরা। নেতারা তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন এবং দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার ভোরে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের পঞ্চম তলায় ৫০৭ নিউরোলজি বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে, তবে তার অবস্থা গুরুতর বলে পারিবারিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তার সুস্থতার জন্য পরিবার ও সংগঠনের পক্ষ থেকে সকলের কাছে দোয়া কামনা করা হয়েছে।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর ও কাথুলি সীমান্ত দিয়ে ৬০ জন নারী ও পুরুষকে পুশইন করেছে বিএসএফ।
শনিবার সকাল ১০টার সময় কাজিপুর সীমান্তের আন্তর্জাতিক পিলার ১৪৭ মেইন পিলারের নিকট শহীদ স্মরণী দিয়ে ৩০ ব্যক্তিকে ৪৭-বিজিবি কাছে হস্তান্তর করা হয়। এদের মধ্যে ৬ জন তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য রয়েছে।
কাজিপুর কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার শাহাবুদ্দিন তাদের গ্রহণ করেন।
এসব বাংলাদেশিদের হস্তান্তর করেন ১১ গান্দিনা বিএসএফে কোম্পানি কমান্ডার এবিসন ফ্রান্কো।
এছাড়া দুপুর ১২টার সময় একই উপজেলার কাথুলি সীমান্তের আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ১৩৩/৩ এসের নিকট দিয়ে ৩০ জনকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
কাথুলি কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার মিজানুর তাদের গ্রহণ করেন।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, তাদের বাড়ি বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে।
তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে দালালের মাধ্যমে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশ করেছিলেন। ভারতের মুম্বায়, দিল্লি, আসাম রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন তারা। পরে পুলিশ তাদের আটক করে বিএসএফের তেইমপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অনোজ কুমারের কাছে হস্তান্তর করে। অনোজ কুমার পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশের কাথুলীর বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার মিজানুর রহমানের কাছে তাদের হস্তান্তর করেন। আটকদের গাংনী থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
গাংনী থানার ওসি বানী ইসরাইল জানান, বিএসএফ ১৪ বাংলাদেশিকে বুঝিয়ে দিয়েছে। তারা বিভিন্ন সময়ে সীমান্তের বিভিন্ন স্থান দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে ঢুকেছিল। পরিবারের লোকজনকে খবর দিয়ে তাদের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
দেশের আমদানি-রপ্তানির প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বোচ্চ নিরপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সম্প্রতি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগুনের ঘটনার পর সরকারের উচ্চ মহল থেকে দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় কৌশলগত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ ও আশপাশের এলাকাকে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে আনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়মিত নিরাপত্তা কার্যক্রমে বর্তমানে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, আনসার ও বন্দর নিরাপত্তা বাহিনী একযোগে কাজ করছে। বিশেষ করে বন্দরের বৃহত্তম টার্মিনাল নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হওয়ায় সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সবচেয়ে কঠোর রাখা হয়েছে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বন্দরের অভ্যন্তর ও সংলগ্ন জলসীমায় নৌবাহিনীর টহল কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। বন্দরের প্রধান প্রবেশ ও প্রস্থানপথে এখন চেকপোস্টের সংখ্যা দ্বিগুণ করা হয়েছে, যাতে কোনো অননুমোদিত ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে না পারে। একইসঙ্গে বন্দরের কেমিক্যাল গুদাম, তেল ট্যাঙ্কার টার্মিনাল এবং আমদানি-রপ্তানি কার্গো জোনগুলোতেও নিরাপত্তা বলয় সম্প্রসারিত হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টম হাউজের গুরুত্ব বিবেচনায় সেখানে নিরাপত্তা সংস্থার একাধিক টিম নিয়োজিত আছে। নিরাপত্তা বাহিনী প্রতিদিন নিয়মিত ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এছাড়া বন্দর এলাকার আশপাশে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি ও তথ্য সংগ্রহের কাজও বাড়ানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) এনামুল করিম জানান, বন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা কোনো ঝুঁকি নিতে চাই না। জিরো টলারেন্স নীতিতে আমরা সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কাস্টমস ও অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছি। প্রতিটি বিভাগে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, যাতে যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
তিনি বলেন, নিরাপত্তা টিমের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়, বন্দর এলাকায় কোনো ধরনের নাশকতা, অগ্নিসংযোগ বা অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড ঘটলে তা দেশের অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে। তাই ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে বন্দরের ভেতরে ও বাইরে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্টের সংখ্যা বাড়ানো, নিয়মিত চেকপোস্ট ও টহল টিম গঠন এবং প্রতিটি পণ্যবাহী কনটেইনারের তালিকা যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি বিশেষ নিরাপত্তা প্রতিনিধিদল। বাংলাদেশ ন্যাশনাল অথরিটি ফর কেমিক্যাল উইপন কনভেনশন (বিএনএসিডব্লিউসি)-এর নেতৃত্বে গঠিত ১৮ সদস্যের এই দলে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, বন্দর কর্তৃপক্ষ, শুল্ক বিভাগ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ শাহজাহান, কাস্টম হাউজ কমিশনার, বন্দর ট্রাফিক পরিচালক, বন্দর নিরাপত্তা পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কর্মকর্তারা। বৈঠকে স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা নজরদারিসহ বন্দরের নিরাপত্তা জোরদারে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অপরদিকে বন্দর নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করতে সম্প্রতি বন্দরকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে কর্মীরা সম্ভাব্য ঝুঁকি শনাক্ত করা, জরুরি সাড়া প্রদান এবং আগুন লাগলে দ্রুত উদ্ধার ও নিয়ন্ত্রণ কৌশল রপ্ত করছেন।
এ ছাড়া প্রতিটি শিফটে দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপত্তা কর্মীদের নিয়মিত ব্রিফিংয়ের পাশাপাশি বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স ইউনিট’ মোতায়েন করা হয়েছে, যারা যেকোনো সময় জরুরি পদক্ষেপ নিতে সক্ষম।
শনিবার ২৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ বিকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ ২৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ ভোর ৪ টায় কোস্ট গার্ড আউটপোস্ট নলিয়ান কর্তৃক খুলনার দাকোপ থানাধীন সুন্দরবনের নলিয়ান সংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকা হতে ১০৬ কেজি হরিণের মাংস ও ২০০ মিটার হরিণ শিকারের ফাঁদসহ ১ জন হরিণ শিকারিকে আটক করা হয়।
জব্দকৃত হরিণের মাংস, ফাঁদ ও আটককৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বন্যপ্রাণী হত্যা ও পাচার রোধে কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
তিন লা ভবন নির্মাণকাজ শেষ করে হস্তান্তরের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) কার্যক্রম এখনো চালু হয়নি। সেখানে নেই কোন আসবাবপত্র ও বিদ্যুৎ–সংযোগ। পর্যাপ্ত জনবলও নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী বছর থেকে ম্যাটস চালুর সম্ভাবনা আছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ম্যাটসে রেসিডেনসিয়াল ফিল্ড সাইট ট্রেইনিংয়ে (আরএফএসটি) কার্যক্রম শুরু হতে পারে। এরপর পূর্ণাঙ্গভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি ও পাঠদানের প্রস্তুতি নেওয়া হবে। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ৩০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালে জয়পুরহাট-মোকামতলা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ক্ষেতলাল উপজেলার বটতলীতে ম্যাটসের নির্মাণকাজ শুরু হয়।
কাজটি সম্পন্ন করে ময়মনসিংহের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এস এন্টারপ্রাইজ। নির্মাণ শেষে ২০২৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ভবনটি তৎকালীন জয়পুরহাট সিভিল সার্জন ওয়াজেদ আলীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। গত ২০ জানুয়ারি কে এম জোবায়ের গালিবকে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তবে এখনো অন্য কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। প্রতিষ্ঠানটিতে একটি একাডেমিক ভবন, অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের দুটি পৃথক বাসভবন, ছাত্রছাত্রীদের জন্য দুটি আবাসিক হল, গ্যারেজ ও অন্যান্য ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ক্ষেতলাল মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল ভবন ৩০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। ২০২৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাটস বুঝিয়ে দিয়েছেন।
স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, ম্যাটস হস্তান্তরের পর কোনো নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন না। কেউ না থাকায় রাতের বেলায় কয়েক দফায় ম্যাটসে চুরির ঘটনা ঘটেছে। দ্রুত চালু করা না গেলে অযত্ন আর অবহেলায় প্রতিষ্ঠানটি নষ্ট হয়ে হবে।
বটতলী এলাকার মিনহাজুল মুকিত বলেন, যদি চালুই করতে না পারে, তাহলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ করার কোন প্রয়োজন ছিল না।
ম্যাটসের অধ্যক্ষ কে এম জোবায়ের গালিব বলেন, আমাকে গত জানুয়ারিতে এখানে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখনো অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আসবাব ও বিদ্যুৎ–সংযোগ নেই। প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত চালুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক বরাবরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী বছর প্রতিষ্ঠানটি চালু হতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে ম্যাটসে রেসিডেনসিয়াল ফিল্ড সাইট ট্রেনিংয়ের কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
জয়পুরহাট সিভিল সার্জন আল মামুন বলেন, ম্যাটস নির্মাণের পর তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে এখন অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। জানামতে, আপাতত ম্যাটসের কার্যক্রম থাকবে না। রেসিডেনসিয়াল ফিল্ড সাইট ট্রেইনিংয়ের কার্যক্রম শুরু হতে পারে।