শনিবার, ৯ আগস্ট ২০২৫
২৫ শ্রাবণ ১৪৩২

মাছসংকটে চলনবিলের শুঁটকিপল্লির চাতাল

হাটিকুমরুল-বনপাড়া হাইওয়ে রোডসংলগ্ন রাস্তার পাশের বিশাল এলাকাজুড়ে বিভিন্ন স্থানে বসে মাছ শুঁটকি করার চাতাল। ছবি: দৈনিক বাংলা
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১২:৪৫

সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নাটোর- উত্তরাঞ্চলের এই তিন জেলাজুড়ে বিস্তৃত দেশের মিঠা পানির বড় উৎস চলনবিল। এই বিশাল জলাভূমি একদিকে যেমন অন্যতম বড় শস্য ভাণ্ডার, তেমনই মাছেরও বড় জোগান আসে এখান থেকে। আর এখানকার হরেক প্রজাতির মাছ ঘিরে চলে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ভিন্ন এক কর্মব্যস্ততা। বছরের নির্দিষ্ট সময়ে কর্মতৎপর হয়ে ওঠে এখানকার শুঁটকিপল্লির চাতালগুলো।

যুগের পর যুগ ধরে চলে আসা শুঁটকিপল্লিতে আজও আছে কর্মতৎপরতা। তবে মাছের সরবরাহ আগের মতো নেই। দেশের বৃহত্তম এই জলাভূমিতে সেই থইথই পানি আর নেই। কমে গেছে মাছও। এ অবস্থায় চলনবিলের বিভিন্ন মাছের আড়তে শুঁটকি মাছ শুকানোর ধুম এখন আগের চেয়ে অনেকটাই কম।

এই জনপদের তিন জেলার ৯টি উপজেলার বিশেষত নারীদের দিনমান শ্রমে তৈরি চলনবিলের শুঁটকির সুনাম দেশ ছেড়ে বিদেশেও। কেননা এখানে দেশীয় পদ্ধতিতে শুঁটকি তৈরি করা হয়।

সৈয়দপুর, নিলফামারী ছাড়াও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা ও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে যায় এসব শুঁটকি মাছ। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদিত চলনবিলের মাছের শুঁটকি ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, কাতার, ওমান, বাহরাইন, দুবাই, ইরাক, কুয়েত, লিবিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ ২৫টি দেশে রপ্তানি হয়।

মহাজন কেবল মাছ কিনেই যেন দায়মুক্ত। তাড়াশের মহিষলুটি মাছের আড়ত, চাটমোহর উপজেলার বোয়ালমারী, সিংড়া বাজারসহ বিভিন্ন আড়ত থেকে মাছ কেনেন তারা। এরপর তা পৌঁছে যায় শুঁটকির চাতালে।

ভোরের আলো ফোটা থেকে শুরু হয় শ্রমিকদের কর্মযজ্ঞ। মাছে লবণ মাখানো, মাপজোখ করা, বহন করে মাচায় নেয়া, শুঁটকি উল্টে-পাল্টে নাড়া, শুঁটকি বাছাই করাসহ আরও কত কাজ! আর এসবই হয় নারীদের হাতে।

এসব চাতালে শোল, বোয়াল, পুঁটি, খলশে, চেলা, টেংরা, বাতাসি, চিংড়ি, নলা, টাকি, বাইনসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শুকিয়ে শুঁটকি করা হয়।

সরজমিনে দেখা যায়, হাটিকুমরুল-বনপাড়া হাইওয়ে রোডসংলগ্ন রাস্তার পাশের বিশাল এলাকাজুড়ে বিভিন্ন স্থানে বসে মাছ শুঁটকি করার চাতাল। আশপাশের গ্রামের নারীদের প্রাণ এই শুঁটকিপল্লি। চলনবিলের অধিকাংশ মাছ চলে আসে জেলা-উপজেলা সদরের আড়ত ও বাজারে। সেখান থেকে পাইকাররা শুঁটকির জন্য কিনে আনেন শত শত মণ মাছ।

তাড়াশ ঘরগ্রামের শুঁটকি চাতাল মালিক আবু জাফর বলেন, ‘বিল থেকে সাধারণত ডিসেম্বর মাসের দিকে বিল থেকে পানি নেমে যায়। আর সে সময়টা সামনে রেখেই মূলত চলনবিলে শুরু হয় মাছ ধরার ব্যাপক তৎপরতা। তবে এ বছর ডিসেম্বরের অনেক আগেই বিল থেকে পানি নেমে গেছে। মাছের ভরা মৌসুম এখন।

‘সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত চলবে মাছ সংগ্রহ। বর্ষার পানিতে চলনবিল অঞ্চলে যেসব মাছ বেড়ে ওঠে, সেসব মাছই ধরা চলে এ সময় পর্যন্ত। এখানে চাতালগুলোতে এ মৌসুমে প্রতিদিন শুঁটকি মাছের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫০ থেকে ৬০ মণ।’

আরেক চাতাল মালিক চাটমোহর হান্ডিয়ালের আলমাছ হোসেন বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর মাছের উৎপাদন কম। ফলে বিল থেকে ধরা মাছের দামও তুলনামূলক বেশি। অথচ হিমশিম খাচ্ছি শুঁটকির দাম নিয়ে। শুঁটকির মোকামে সিন্ডিকেটের কারণে গত বছরের চেয়ে এ বছর মহাজনরা কম দামে শুঁটকি কিনছেন। ফলে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে এই ব্যবসায়।’

তিনি বলেন, ‘প্রায় ১২০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ২২টি জলাশয় ও ১৬টি নদীর সমন্বয়ে চলনবিলের প্রায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জলাভূমিতে মাছ আহরণ করে শুঁটকি তৈরি হচ্ছে। গত বছর চলনবিলের বিভিন্ন পল্লি থেকে প্রায় ৮০০ টন শুঁটকি উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে।’

কয়েকজন শুঁটকি চাতাল মালিক জানান, এ বছর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল এক হাজার টন। কিন্তু চলনবিলে মাছ কম হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এবার উৎপাদন কম হবে।

বিনায়েকপুর এলাকার আব্দুল গফুর জানান, ব্যক্তিমালিকানার জায়গা লিজ নিয়ে চালানো চলনবিল অঞ্চলের বিভিন্ন শুঁটকিপল্লিতে এখন কাজ করছেন কয়েকশ নারী। মাছের আকারভেদে শুঁটকির দাম হয় ভিন্ন ভিন্ন। ছোট আকারের মাছের শুঁটকি প্রতিমণ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর বড় আকৃতির মাছের শুঁটকি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা মণ।

চাতাল শ্রমিক রোমেছা বেগম বলেন, ‘মহাজন নিয়মিত আমাদের মতো শ্রমিকদের খেতে দেন। সেজন্য কম মজুরিতে কাজ করেও খুশি আমরা। প্রতিদিন একজন নারী শ্রমিককে মজুরি দেয়া হয় ১৫০ টাকা আর পুরুষ শ্রমিকদের ক্ষেত্রে ৩০০ টাকা।’

সলঙ্গার চাতাল মালিক দেলবার হোসেন জানান, প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বাদাই জাল দিয়ে পোনা মাছ ধরায় চলনবিলে মৎস্য সংকট দেখা দিয়েছে। তাছাড়া খরা মৌসুমে অনেকেই পানি সেচ দিয়ে মাছ ধরে, যার কারণে বিলে মাছ কমে গেছে। বেশি দামে কেনা মাছ দিয়ে শুঁটকি করায় খরচও বেশি হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এ বছর সৈয়দপুর এলাকার শুঁটকি মহাজনদের ব্যবসা সিন্ডিকেটে পড়ে এ ব্যবসায় লোকসান খেয়েছি। এখন পর্যন্ত আমার এক লাখ ৫০ হাজার টাকা লোকসান রয়েছে।’

তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশগুল আজাদ বলেন, ‘চলনবিলের মাছের শুঁটকির সুনাম ও চাহিদা দুটোই রয়েছে। ফলে আমরা এই শুঁটকির মান বৃদ্ধির জন্য চাতাল মালিকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। চাতাল মালিকরা অস্থায়ী হওয়ায় তাদের আর্থিক সহযোগিতা দেয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে এ বিষয়ে আমরা বিবেচনা করছি। আশা করি, এ অঞ্চলের শুঁটকি ব্যবসা আরও বহুদূর এগিয়ে যাবে। শুঁটকি স্বাস্থ্যসম্মতভাবে সংরক্ষণ করতে পারলে তা দেশের অর্থনীতিতেও ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, তাতে সন্দেহ নেই।’

বিষয়:

কারাগার থেকে পালাতে দেয়াল খুঁড়ছিলেন ফাঁসির ৩ আসামি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গাজীপুর প্রতিনিধি

গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালানোর চেষ্টা করছিলেন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি। এ জন্য তারা বিভিন্ন উপকরণ সংগ্রহ করে দেয়াল খুঁড়ছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে বন্দিদের কক্ষে তল্লাশি চালিয়ে উপকরণগুলো জব্দ করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।

এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে কারাগারের জেলার আসাদুর রহমান বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় একটি মামলা করেছেন। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএিমপি) কোনাবাড়ী থানার ওসি সালাহউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কারাগার থেকে পালানোর চেষ্টা করা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দিরা হলেন- টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামের শাহাদাত হোসেন, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মাঝিনা গ্রামের শ্রী রনি মোহন্ত ও কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার দিয়াডাঙ্গা গ্রামের নজরুল ইসলাম মজনু ওরফে মঞ্জু।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট রাত সোয়া ৮টার দিকে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে দায়িত্ব পালন করছিলেন সহকারী প্রধান রক্ষী মোখলেছুর রহমান। এ সময় তিনি তমাল ভবনের নিচ তলায় ১২নং কক্ষ থেকে দেওয়ালে আঘাতের শব্দ শুনতে পান। পরদিন ৬ আগস্ট সকালে ওই কক্ষে তল্লাশি করে একটি লোহার পাত, দুই চুকরা রড, কম্বল কেটে বানানো ২৮ ফুট লম্বা একটি রশি, কম্বল দিয়ে তৈরি ২৫ ফুট লম্বা একটি বেল্ট, লোহার তৈরি দুটি আংটা, ১০ ফুট লম্বা একটি খুঁটিসহ বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বন্দিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা কারা কর্তৃপক্ষকে জানান, জেল থেকে পলানোর জন্য প্রস্তুতির সহায়ক উপকরণ হিসেবে উদ্ধার করা মালামাল তারা সংগ্রহে রেখেছিলেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তারা জেল থেকে পালাতে অথবা সে সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সারা দেশের কারাগারগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

কোনাবাড়ী থানার ওসি সালাহউদ্দিন বলেন, হাইসিকিউরিটি কারাগারের জেলার ওই ঘটনায় মামলা করেছেন।


কুমিল্লায় ফুটবল খেলা শেষে ফেরার পথে ট্রাক খাদে, স্কুলছাত্র নিহত; আহত অন্তত ১০

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ফুটবল ম্যাচ শেষে বাড়ি ফেরার পথে খেলোয়াড় ও সমর্থকবাহী একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র আব্দুল্লাহ আল ইমন (১৪) নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরো অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে উপজেলার বাকশিমুল উত্তরপাড়া এলাকায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ইমন হরিপুর উত্তরপাড়া এলাকার শফিউল আলমের ছেলে এবং হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে বুড়িচং উপজেলার বাকশিমুল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে “এলইডি টিভি কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট”-এর ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় হরিপুর উত্তর একাদশ ও হরিপুর দক্ষিণ একাদশ মুখোমুখি হয়। উত্তেজনাপূর্ণ খেলায় হরিপুর দক্ষিণ একাদশ বিজয়ী হয়।

খেলা শেষে খেলোয়াড় ও সমর্থকরা একটি ট্রাকে করে নিজ নিজ গ্রামে ফিরছিলেন। পথে বুড়িচং-কালিকাপুর সড়কের বাকশিমুল উত্তরপাড়া এলাকায় পৌঁছালে ট্রাকচালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের গভীর খাদে পড়ে যায়।

দুর্ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এসে আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। সেখানে ইমনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। কিন্তু সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ইমনকে মৃত ঘোষণা করেন।

ইমনের মৃত্যুর খবরে তার পরিবার, সহপাঠী ও সমগ্র হরিপুর উত্তরপাড়া এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুল হক বলেন, “খেলা শেষে ফেরার পথে খেলোয়াড় ও সমর্থকদের বহনকারী ট্রাক খাদে পড়ে একজন নিহত হয়েছেন। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।”

শনিবার সকালে জানাজা শেষে ইমনের মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে পরিবার জানিয়েছে।


গাজীপুরে পৃথক ঘটনায় ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার

গাজীপুরের টঙ্গী স্টেশন রোডের ফুটপাতে একটি ট্রাভেল ব্যাগ থেকে অজ্ঞাতনামা এক পুরুষের বেশ কয়েক টুকরো মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ এগুলো উদ্ধার করে। ছবি: ফোকাস বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গাজীপুর প্রতিনিধি

গাজীপুরে পৃথক স্থান থেকে চারটি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। টঙ্গী, কোনাবাড়ি, সালনা ও ভবানীপুর এলাকা থেকে এ লাশগুলো উদ্বার করা হয়। পরে মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

আজ শুক্রবার মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুরের টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় শুক্রবার সকালে একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। পরে কৌতূহল বশতঃ কয়েকজন ব্যক্তি ব্যাগটি খুললে টুকরা করা মরদেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ সকাল ৯টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করে। পুলিশ ধারণা, গত রাতের কোনো এক সময়ে দুর্বৃত্তরা ওই ব্যক্তিকে হত্যা করে লাশটিকে কয়েকটা টুকরা করে। পরে ওই ট্রাভেল ব্যাগে করে ভোরে টঙ্গীর ওই স্থানে ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে।

টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম বলেন, দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে বেশ কয়েকটি টুকরা করে ওই ব্যাগের মধ্যে ভরে টঙ্গীর ওই স্থানে ফেলে পালিয়ে গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।

নগরীর দক্ষিণ সালনা মিয়াপাড়া এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নয়ন (২৮) নামে এক অটোচালকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি শেরপুর জেলার শ্রীবরদী গোসাইপুর এলাকার মোশারফ হোসেন মোসার ছেলে। সদর থানার ওসি মেহেদী হাসান জানান, অটোরিকশা চার্জ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অটোচালকের মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।

অন্যদিকে গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর এলাকায় এক ডেকোরেটর ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করেছে জয়দেবপুর থানার পুলিশ।

নিহতের ছেলে সুমন জানান, রাত ১০টার দিকে তার বাবার মরদেহটি ভবানীপুর অনন্ত ভবন নামে একটি রিসোর্টের কাছে রাস্তার পাশে পড়ে ছিল। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরও জানান, তার বাবার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি দাড় করানো অবস্থায় ছিল। শরীরে কোনো জামা কাপড় ছিল না। দূর্বৃত্তরা তাকে হত্যার পর মরদেহটি এখানে ফেলে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি। জয়দেবপুর থানার ওসি তৌহিদ আহম্মেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অপর দিকে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি এলাকা থেকে এক অটোচালকের মরদেহটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ওই চালকের নাম জিল্লু ফকির (৫০) তিনি ময়মনসিংহের ফুলপুর এলাকার ভালকি গ্রামের মাফেজ খার ছেলে। তিনি ২২ বছর ধরে গাজীপুরের কোনাবাড়ি আমবাগ এলাকায় সপরিবারে বসবাস করতেন।

নিহতের মেয়ে উর্মি জানান, তার বাবা সকাল ৮টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে যান। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে অটোরিকশা যোগে লোকজন ধরাধরি করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিহত ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ হিসেবে বিষক্রিয়া উল্লেখ করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। কোনাবাড়ি থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


আমতলীর মাদক সিন্ডিকেটের মূল হোতা রাসেল গ্রেপ্তার, কঠোর শাস্তির দাবি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাসরিন সিপু, বরগুনা প্রতিনিধি

বরগুনার আমতলী উপজেলার মাদক সিন্ডিকেটের মূল হোতা রাসেল হাওলাদারকে হিরোইনসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়।

শুক্রবার দুপুরে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় স্বস্তি ফিরেছে স্থানীয়দের মধ্যে। তারা রাসেলের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।

জানা গেছে, দক্ষিণ পশ্চিম আমতলী গ্রামের মৃত বারেক হাওলাদারের ছেলে রাসেল হাওলাদার দীর্ঘ ১২ বছর ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে গড়ে তুলেছেন বিস্তৃত নেটওয়ার্ক। অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদেরও এই নেটওয়ার্কে যুক্ত করেছেন তিনি। এ কাজে স্ত্রী, দুই ভাই রুবেল হাওলাদার ও সজিব হাওলাদারকেও সম্পৃক্ত করেছেন। তারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ক্ষুদ্র বিক্রেতাদের কাছে মাদক সরবরাহ ও অর্থ সংগ্রহ করতেন।

এছাড়া স্থানীয়দের অভিযোগ, রাসেলের সঙ্গে পুলিশ, র‍্যার , ডিবি ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কিছু সদস্যের সখ্যতা রয়েছে। ফলে তার বাড়িতে অবাধে যাতায়াত করতেন তারা। রাসেলের বিরুদ্ধে আমতলী থানায় ৯টি এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমতলী থানা পুলিশ রাসেলের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় একগ্রাম হিরোইন, হিরোইন পরিমাপ যন্ত্র ও প্যাকেজিং মেশিন উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় জানান, রাসেলের পরিবারের সকলেই মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত। তাদের কব্জায় পড়ে অনেক পরিবার ধ্বংসের পথে গেছে। তাই তারা রাসেলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান জানান, রাসেলের বিরুদ্ধে ৯টি মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের উপ-পরিদর্শক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আদালতের নির্দেশে রাসেলকে বরগুনা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


সেন্ট মার্টিন দ্বীপের জন্য মহাপরিকল্পনা চূড়ান্তের পথে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের জন্য একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা দীপংকর বর বাসস’কে বলেন, ‘দ্বীপটির জন্য একটি মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। এর পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য বিকল্প আয়ের উপায় নির্ধারণের কর্মসূচিও হাতে নেওয়া হয়েছে।’

তিনি জানান, দ্বীপটির প্রতিবেশ পুনরুদ্ধারের জন্য (দ্বীপের প্রকৃতির ক্ষতি কমিয়ে আবার সুস্থ ও জীবন্ত করে তোলার লক্ষ্যে) সেখানে পর্যটন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আজ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত এক বছরে পরিবেশ সুরক্ষা, বন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় মন্ত্রণালয় বেশ কিছু যুগান্তকারী উদ্যোগ নিয়েছে।

দূষণ কমাতে সারা দেশের শপিংমলগুলোতে নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে। পলিথিন উৎপাদন কারখানা, কাঁচাবাজার ও অন্যান্য স্থানে এর ব্যবহার রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যৌথ অভিযান চলছে।

পাশাপাশি পলিথিনের বিকল্প হিসেবে সাশ্রয়ী মূল্যে পাটের ব্যাগ সরবরাহ নিশ্চিত করতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি যৌথ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে ‘জাতীয় বায়ুমান ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এছাড়া ৮৩০টি অবৈধ ইটভাটা ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং ঢাকার সাভার ও আশুলিয়াকে ‘দূষিত বায়ুমণ্ডল’ এলাকা হিসেবে ঘোষণার প্রক্রিয়া চলছে। অবৈধ সীসা কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং শব্দ দূষণ প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে তরুণদের যুক্ত করা হয়েছে।

গাজীপুরের গাছা খাল দূষণকারী নয়টি কারখানার সংযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে এবং সব পলিথিন উৎপাদনকারী কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পরিবেশ অধিদপ্তরের জন্য নতুন কর্মসূচি অনুমোদিত হয়েছে এবং এর নিজস্ব ৩৭টি অফিস ভবন নির্মাণের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।

পাহাড় সংরক্ষণের জন্য ১৬টি জেলার তালিকাভুক্ত পাহাড়ের তথ্য অনলাইন ডেটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং নিয়মিত নজরদারি চলছে।

জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় ৩৫১ কোটি টাকার ৪১টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়া ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ’ চূড়ান্ত হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ডের ওপর আলোকপাত করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। কক্সবাজার ও সোনাদিয়ায় বিভিন্ন কাজে বরাদ্দকৃত ১০ হাজার ৩২২ একর বনভূমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।

পূর্বাচলে ১৪৪ একর এলাকাকে বিশেষ জীববৈচিত্র্য এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। গত এক বছরে বেদখল হওয়া ৫ হাজার ৯৩ একর বনভূমি পুনরুদ্ধার করে সেখানে আবার বনায়ন করা হয়েছে।

ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছের চারা উৎপাদন ও রোপণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মধুপুর শালবন পুনরুদ্ধারে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হাতির চলাচলের পথ তৈরি এবং জীববৈচিত্র্য বাড়ানোর জন্য চুনতি ও শেরপুরের বন পুনরুদ্ধারের কাজও চলছে।

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে মানব-হাতি সংঘাত কমাতে ১৫৯টি ‘এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম (ইআরটি)’ গঠন করা হয়েছে। বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় ময়ূর ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, বিপন্ন প্রজাতিগুলোকে সুরক্ষিত করা হচ্ছে, জলাভূমিগুলোকে অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে ও ২৯৩টি বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন অভিযানে ৫ হাজার ৬৮৪টি প্রাণীকে উদ্ধার করা হয়েছে।

জাতীয় উদ্যান ও ইকোপার্কগুলোতে প্লাস্টিক ব্যবহার ও পিকনিক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী আইন আধুনিকীকরণ এবং নতুন আইন, বিধি ও নির্দেশিকা প্রণয়নের কাজও চলছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের এসব উদ্যোগ দেশের পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষায় নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এগুলো একটি জলবায়ু প্রতিরোধী ও টেকসই বাংলাদেশ গড়ার পথে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।


বোরহানউদ্দিনে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অবস্থান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মো. ইউসুফ হোসেন অনিক, ভোলা প্রতিনিধি

ভোলার বোরহানউদ্দিনে বিয়ের দাবীতে প্রেমিকের বাড়িতে দুই দিন ধরে অবস্থান করছেন এক তরুণী। তার দাবী, হয়তো প্রেমিকের সঙ্গে তার বিয়ে হবে, নয়তো প্রেমিকের বাড়িতেই তিনি আত্মহত্যা করবেন।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিকেল থেকে এখন পযন্ত প্রেমিকের বাড়ির সিঁড়ির উপরে বসে অবস্থান করছেন ওই তরুণী।

ঘটনাটি ঘটেছে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাচরা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আ.আজিজুল হকের বাড়িতে। তরুণীর প্রেমিকের নাম রিপন। তিনি ওই বাড়ির আঃ আজিজুল হকের ছেলে।

তরুণী জানায়, প্রেমিক রিপনের বাড়ির পাশে তার খালার বাসা রয়েছে। দেড় বছর আগে ওই তরুণী তার খালার বাসায় বেড়াতে আসলে রিপনের সঙ্গে তার দেখা হয়। পরে রিপন তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। সেখান থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দেড় বছরের প্রেমের সম্পর্কে তাদের মধ্যে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে বলেও দাবী করেন তরুণী।

তরুণী আরও জানান, রিপন তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারিরীক সম্পর্ক করেছেন। এখন আর তাকে পাত্তা দেন না। তরুণীর সঙ্গে রিপন সকল ধরণের যোগাযোগ বিছিন্ন করে রেখেছেন। সম্প্রতি অন্য মেয়ের সঙ্গে রিপনের বিয়ে ঠিক হয়েছে জানতে পেরে তিনি অনশনে বসেছেন।

তরুণী দৈনিক বাংলাকে জানান, বিয়ের কথা শুনে কোন উপায় না পেয়ে রিপনের বাসায় আসছি। এখন রিপন আমাকে বিয়ে না করলে আমি এখানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করবো।

এদিকে, প্রেমিক রিপন ঢাকাতে অবস্থান করায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে, তার বাবা আজিজুল হক দৈনিক বাংলাকে বলেন, তার ছেলে ঢাকায় থাকেন। তিনি এবং তার ছেলে ষড়যন্ত্রের শিকার। মেয়েটির খালা বাসা তাদের বাসার পাশে। এই সুবাধে প্রায়ই মেয়েটির যাতায়াত ছিলো তাদের বাসায়। পারিবারিক শত্রুতার জেরেই মেয়েটির দ্বারা ষড়যন্ত্রের শিকার তার ছেলে।

তার ছেলের সাথে তরুণীর দেড় বছরের সম্পর্কের বিষয়টি মিথ্যা দাবী করে তিনি আরও বলেন, অন্য মেয়ের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ের বিষয়টিও মিথ্যা। আমার ছেলেকে এখন বিয়ে দিচ্ছি না। এছাড়াও তার সঙ্গে আমার ছেলের কোন প্রেমের সম্পর্কও হয়নি।

বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, ঘটনাটি তার জানা নেই। প্রতিবেদকের থেকে মাত্র শুনলেন। তবে, ভুক্তভোগীর থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।


চলনবিল থেকে ১৫০টি নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জাল উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমুল হাসান, নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের সিংড়ার চলনবিলের কয়েকটি স্থান থেকে প্রায় ৬ লাখ টাকা মুল্যের ১৫০টি নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারী জাল উদ্দার করেছে সেনাবাহিনী। শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার ডাহিয়া ফকিরপাড়া ও চামারী ইউনিয়নের বিলদহর এলাকায় অভিযান চালানো হয়। পরে নিষিদ্ধ জালগুলো পুড়িয়ে ধ্বংশ করা হয়।

সিংড়ার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন জানান, চলনবিলেন বিভিন্ন অংশে অসাধু মৎস শিকারীরা নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারী জাল দিয়ে মা মাছসহ পোনা মাছ নিধনে মেতে উঠেছে। চলনবিলের জীববৈচিত্র্য রক্ষার্থে স্থানীয় প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সহায়তায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ১৫০টি নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জাল উদ্ধার করে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। এসময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় অবৈধ চায়না দুয়ারি ও কারেন্ট জালের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলবে বলে জানান তিনি।


সাংবাদিক তুহিন হত্যায় গ্রামের বাড়িতে বাবা মায়ের আহাজারি “কেডা আমগর খোঁজ নিবো”

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মো. আল- আমিন, ফুলবাড়িয়া ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন ছাত্রজীবন থেকেই ছিলেন স্বাধীনচেতা ও প্রতিবাদী কন্ঠস্বর। ব্যক্তি জীবনে কোন ধরণের রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ও বাজে আড্ডায় জড়িত না থাকায় গ্রামের লোকজনের কাছে অদ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে বেশ সমাদৃত ছিলেন।

তিনি ফুলবাড়িয়া পৌর সদরের আল হেরা স্কুল থেকে এসএসসি শেষে ২০০২ সালে ভর্তি হন সিলেট এম সাইফুর রহমান কলেজে। তার সহোদর জসিম উদ্দিন গাজীপুরে ব্যবসা করায় ভাইয়ের বাসায় থেকেই গাজীপুর ভাওয়াল কলেজ থেকে অনার্স করেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি ঔষধ কোম্পানির রিপ্রেজেনটিভ হিসেবে চাকুরি করেন। বাবা মা বারণ করলেও ২০১২ সাল থেকেই পুরোদমে সংবাদপত্রে কাজ শুরু করেন। যার দরুণ পেশাগত কারণে পরিবার নিয়ে তিনি গাজীপুরের চান্দনা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে চান্দনা চৌরাস্তার ফুটপাত ও দোকানপাট থেকে চাঁদাবাজির ঘটনা লাইভ করেন তুহিন। পরে নিজ ফেইসবুকে “ যেমন খুশি তেমন রাস্তা পার হওয়ার দৃশ্য গাজীপুর চৌরাস্তা” লিখে ভিডিও পোস্ট করেন। এর পরপরই মসজিদ মার্কেটের সামনে চায়ের দোকানে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় বলে নিহতের স্বজেনরা জানান।

সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে। তিনি বয়োবৃদ্ধ হাসান জামাল ও সাবিহা খাতুনের পুত্র। পাঁচ ভাই ও দুই বোনদের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্ব কনিষ্ঠ। সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনের মৃত্যুতে গ্রাম জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতের পরিবারের লোকজন বিচারের দাবি জানিয়ে আহাজারী করছেন।

সরেজমিনে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখাযায়, নিহতের মা সাবিহা খাতুন বকুল (৭৫) বিলাপ করে বলছেন আমার ছেলে তুহিন কালকেও বলেছে, আমি তোমাকে আগামী মাসে চোখের ডাক্তার দেখাবো, আম্মা কোন চিন্তা করিও না তুমি ভালো হয়ে যাবা । এখন আমগরে কেডা খোঁজ নিবো। কেডা মোবাইল করবো? আমগরে কেডা দেখবো

বলে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। একই অবস্থা বয়োবৃদ্ধ পিতা হাসান জামিলের। দুদিন আগেও তাকে ওষুধ কিনার টাকা পাঠিয়েছেন বলে চিৎকার করছেন।

স্বজেনরা জানান সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন ২০০৫ সাল থেকে গাজীপুরে বসবাস করছেন। স্ত্রী মুক্তা আক্তার সেখানকার একটি কিন্ডার গার্টেন স্কুলে চাকুরি করতেন। স্ত্রী সন্তান নিয়ে সেখানেই ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। তাদের ঘরে সাত বছর বয়সি তৌকির তিন বছর বয়সি ফাহিম নামে দুই শিশু সন্তান রয়েছে। আসাদুজ্জামান তুহিন কে হত্যা করায় তার দুই শিুশু সন্তান, স্ত্রী ও বয়োবৃদ্ধ বাবা মায়ের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিৎ হয়ে পড়েছে। তুহিন হত্যার বিচারের পাশাপাশি সরকারি অথবা ব্যক্তি উদ্যোগে তাদের পরিবারের পাশে দাড়ানোর অনুরোধ করেন।

প্রতিবেশি মোফাজ্জল হোসেন বলেন, তুহিন নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ছিলেন। তার বৃদ্ধ বাবা মা তার উপর নির্ভরশীল ছিলেন। এখন এ পরিবারটি কিভাবে চলবে, কী করবে বুঝতেছি না।

চাচাতো ভাই নাছির উদ্দিন বলেন, আমার ছোট ভাইকে যারা প্রকাশ্যে হত্যা করেছে তাদের প্রকাশ্য ফাঁসি চাই, আমাদের আর কোন কিছুই চাওয়ার নাই।

বোন সাইদা আক্তার রত্না বলেন, মাঝে মাঝে আমাদের খোজ খবর নেয়, আমার ভাই কোন দিন কোন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিন না, কখনো খারাপ ছেলেদের সাথে আড্ডা দিত না, কেন আমার ভাইকে হত্যা করা হলো? আমার ভাইয়ের কি অপরাধ আমরা বিচার চাই। পুলিশ কেন আসামীদেরকে গ্রেপ্তার করছেনা এর জবাব চাই।

এদিকে তুহিন হত্যায় জড়িত সন্ত্রাসীদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে তার নিজ মাতৃভূমি ফুলবাড়িয়াতে শুক্রবার সকালে ফুলবাড়িয়া প্রেসক্লাবের আয়োজনে সাংবাদিকরা মানবন্ধন করেন। পরে বাদ মাগরিব দ্বিতীয় জানাযা নামাজ শেষে তাকে বাড়ির পাশেই পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।


আমরা মানুষের দূর্বলতা কাজে লাগাতে চাই: ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
 এইচ এম মোজাহিদুল ইসলাম নান্নু, পটুয়াখালী প্রতিনিধি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, নির্বাচন হচ্ছে ব্যালটের যুদ্ধ ।নবী রাসূলের জমানায় সরাসরি যুদ্ধের ময়দানে তারা অংশগ্রহণ করেছে ।এখন তো আধুনিক যুগ ।আধুনিক যুগের হচ্ছে ব্যালটের যুদ্ধ।নির্বাচনটা সুধু নির্বাচন না ,এটা হচ্ছে আমাদের ব্যালটের যুদ্ধ ।

শুক্রবার (৮ আগষ্ট )দুপুর ১২টায় বাউফলের কালাইয়া ইউনিয়ন পরিষদ অডিটোরিয়ামে কালাইয়া ইউনিয়ন জামায়াতের মহিলা বিভাগের উদ্যোগে কেন্দ্রভিত্তিক ছাত্রী ও মহিলা দায়িত্বশীল সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, এই যুদ্ধ আল্লাহ আমাদের প্রত্যেক ভাই -বোনদের জন্য ফরজ করেছে ।সুতরাং ফরজ কাজ মনে করে ,আমরা সালাত যেমন আদায় করি ।আল্লাহ্ জমিন ,আল্লাহ্ দিনকে বিজয় করার কাজ টাকেও ঠিক একই ভাবে আমাদের দায়িত্বশীল যারা,কর্মী যারা ,সহযোগী যারা তাদের একই ভাবে ধারণ করতে হবে ।

তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ আমাদের দাওয়াতি কাজ করতে হবে ,বোনদের কাছে পৌঁছাতে হবে ।এটা মৌলিক কাজ ।বাড়ি বাড়ি,ঘরে ঘরে ,জনে জনে ,বারে বারে এই স্লোগান নিয়ে বোনদেরকে বের হতে হবে ।আমরা বোনদের কাছে দাওয়াত দিবো জনে জনে ,বারে বারে ।

তিনি বলেন, বাউফলে অনেক বলেন মাসুদ ভাই আপনার সালাম আমাদের কাছে এই পর্যন্ত ২-৩ বার পৌছেছে, অন্য কেউ এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে আসে নাই । এই প্রথম আপনি যার কাছে পৌঁছাতে পারবেন স্বাভাবিকভাবেই তার আপনার প্রতি একটা দূর্বলতা থাকবে ।আমরা এই দূর্বলতাকে কাজে লাগাতে চাই ।আমরা সবার আগে সবার কাছে পৌঁছাতে চাই ।

এতে সভাপতিত্ব করেন কালাইয়া ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা মোঃ মোশাররফ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাউফল উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ইসাহাক। জামায়াত নেতা মোঃ হাসনাইন, মোহাম্মদ রাসেল, মাহমুদ হাসানসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।


মাগুরায়  জিয়া স্মৃতি সংসদ এর নতুন কমিটি গঠন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শিউলি আফরোজ সাথী, মাগুরা প্রতিনিধি

রুবাইয়াত হোসেন খানকে সভাপতি এবং মনিরুজ্জামান রাসেলকে সাধারণ সম্পাদক ও ইঞ্জিনিয়ার মিরাজকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদ মাগুরা জেলা শাখার নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে।

শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদ মাগুরা জেলা শাখার নবনির্বাচিত কমিটি হলো :

সভাপতি: মোঃ রুবাইয়াত হোসেন খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি: মোঃ আসলাম পারভেজ পলাশ, সহ-সভাপতি:মোঃ মারুফ হোসেন মুন্না ও মোঃ শামীম হোসেন মিলন।

সাধারণ সম্পাদক: মোঃ মনিরুজ্জামান রাসেল, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক: এ্যাড. জিয়াউর রহমান তিতাস,যুগ্ম সম্পাদক:অনিক অপু ও মোঃ লাবু ইসলাম

সাংগঠনিক সম্পাদক: ইঞ্জিনিয়ার মিরাজ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক: মোঃ অনুপ সিদ্দীকি , প্রচার সম্পাদক: নাঈমুর রহমান কোষাধ্যক্ষ:মোঃ সাইফুল ইসলাম ক্রীড়া সম্পাদক:মোঃ আল আমিন ডলার সহ ক্রীড়া সম্পাদক:মোঃ হাদীউজ্জামান লেলিন

সম্মানিত সদস্য:মোস্তাক বিশ্বাস , রিপন ইসলাম জনি, মোঃ আরমান হোসেন,মোঃ আল আমিন মোল্যা,মোঃ সাইদুজ্জামান হামীম , মোঃ রিফাতুল ইসলাম রায়হান, শাহ আলম,জুলফিকার আলি,আব্দুল্লাহ আল-মামুন।

এছাড়াও প্রধান উপদেষ্টা: আলী আহমেদ,

উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য:

আখতার হোসেন,আহসান হাবিব কিশোর, ফারুকুজ্জামান ফারুক,খাঁন হাসান ইমাম সুজা,এ্যাড. রোকনুজ্জামান,আলগীর হোসেন,মিথুন রায় চৌধুরী,শাহেদ হাসান টগর ,পিকুল খান।

প্রধান পৃষ্ঠপোষক: মনোয়ার হোসেন খান

পৃষ্ঠপোষক বৃন্দ:

শরীফ আজিজুল হাসান মোহন, শামসুর রহমান শামসু্,শহিদুল ইসলাম রুপক,মোঃ সাখাওয়াত হোসেন ডলার,মাহফুজুর রহমান,ইঞ্জিঃ জিয়াউর রহমান,আবুল হোসেন মিনা লিটন,মোঃ সুমন হোসেন,কাজী আল-আমিন।


পঞ্চগড় তেঁতুলিয়া উপজেলায় মাদক ও অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে আলোচনা সভা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মো. মিজানুর রহমান, পঞ্চগড় প্রতিনিধি

‘মাদকের বিরুদ্ধে হই সচেতন, বাঁচাই প্রজন্ম বাঁচাই জীবন’—এই প্রতিপাদ্যে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় মাদক ও অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘হেল্প সোসাইটি’র আয়োজনে এ সভার আয়োজন করা হয়।

তিরনইহাট ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন জাতীয় পরিবেশ পদকপ্রাপ্ত কর্মী মাহমুদুল ইসলাম মামুন, তেঁতুলিয়া মডেল থানার সাব ইন্সপেক্টর কমলেশ, শিক্ষক হুমায়ুন কবির, সমাজসেবক তুষার হোসাইন, ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমানুল্লাহ আমান এবং হেল্প সোসাইটির সভাপতি শাকিল আহমেদ।

সভায় ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫০ সদস্যের মাদকবিরোধী কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, ‘মাদক ও অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে ইউনিয়নে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।’

এ ছাড়া, যুব সমাজকে খেলাধুলায় উদ্বুদ্ধ করতে ফকিরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ‘চেয়ারম্যান স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট’ আয়োজনেরও ঘোষণা দেন তিনি।

অনুষ্ঠান শেষে পরিবেশকর্মী মাহমুদুল ইসলাম মামুনকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করে হেল্প সোসাইটি। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভবিষ্যতে এলাকার গুণীজনদের সম্মাননা জানানোসহ মাদক ও অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।


নওগাঁ সীমান্ত দিয়ে ১৮ বাংলাদেশিকে পুশইন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মো. সবুজ হোসেন, নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর ধামইরহাট ও সাপাহার সীমান্ত দিয়ে নারী শিশুসহ ১৮জন বাংলাদেশিকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) ভোরে ধামইরহাট উপজেলার কালুপাড়া সীমান্ত পিলার ২৭১/১ এস ও সাপাহার উপজেলার বামনপাড়া বিওপির মেইন পিলার ২৪৬/২ এস এর কাছ দিয়ে পুশইন করলে বিজিবির সদস্যরা তাদের আটক করেছে।

ধামইরহাটে আটককৃতরা হলেন- খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর গ্রামের বাদশা মিয়া (২০), ইমরান গাজী (৩৪), নাজমুল হাসান (২৪), খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার মাধবপুর গ্রামের শিশু মোছা. সুমা মোল্লা (৪), শিশু রায়হান মোল্লা (৪), নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার মোছা. নুপুর খানম (২২), শিশু মোছা. আশিকা খানম (৪), মোছা. মনিরা খাতুন (১৮), মোছা. রাবেয়া শেখ (২৮), বাবু শিকদার ( ১৭), প্রিয়া শিকদার (২৬), শিশু ফাতেমা শেখ (৭), মোছা. ববিতা শিকদার (৩৫), যশোর জেলার কোতোয়ালি থানার মোছা. দুলি বেগম (৪০)।

সাপাহারে আটককৃতরা হলেন- নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার উথলী গ্রামের ইমদাদুলের স্ত্রী মোছা. হেনা খাতুন (৩৮), একই উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের বালাম শিকদারের স্ত্রী রূপালী (৩৫), তাদের মেয়ে চাঁদনী (৮) এবং ছেলে রমজান (২ বছর ৬ মাস)।

বিজিবি ১৪ (পত্নীতলা) ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে: কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন জানান, ভোরে ১৪ বিজিবির কালুপাড়া বিওপির টহল দল হাবিলদার রুপম চাকমার নেতৃত্বে একটি টহল দল বাংলাদেশের ৫০গজ অভ্যন্তরে সাতনাপাড়া আম বাগানে তাদেরকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে আটক করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কয়েক বছর আগে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা ও বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতের বোম্বাই শহরে ৪জন পুরুষ রাজমিস্ত্রী এবং ৭জন মহিলা বাসা বাড়ীতে কাজ করতে যান। পরবর্তীতে ভারতীয় পুলিশ (সিআইডি) তাদের আটক করে। আজ ভোরে ভারতের বালুরঘাট বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা বাংলাদেশে পুশইন করে।

এদিকে সাপাহার সীমান্তে আটকৃতরাও কয়েক বছর আগে অবৈধভাবে ভারতের মুম্বাইয়ে গিয়ে বাসা–বাড়িতে কাজ করতেন। সম্প্রতি মুম্বাই পুলিশ তাদের আটক করে ‘চেকব্যাক’ প্রক্রিয়ায় পশ্চিমবঙ্গের ছত্রাহাটি বিএসএফ ক্যাম্পে পাঠালে ভোরে তাদেরকেও বাংলাদেশ পুশইন করা হয়। ভোরে সাপাহারের বামনপাড়া বিওপির মেইন পিলার ২৪৬/২ এস থেকে প্রায় ৮০০ গজ ভেতরে রসুলপুর গ্রামের জামে মসজিদের পাশ থেকে তাদের আটক করে বিজিবি।

ধামইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমাম জাফর বলেন, বিজিবি এখনো আটককৃতদের থানায় হস্তান্তর করেনি। হস্তান্তরের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আজিজ জানান, আটককৃতদের ব্যাপারে আইনগত প্রক্রিয়া চলছে।

এর আগে চলতি বছরের ৩১ জুলাই ধামইরহাট সীমান্ত দিয়ে ১০জনকে পুশইন করে বিএসএফ।


বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরিবর্তনের একটা বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে: অধ্যাপক আলী রীয়াজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরিবর্তনের একটি বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

আজ রাজধানীর জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে আয়োজিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক সাংবাদিক সম্মেলনে অধ্যাপক আলী রীয়াজ একথা জানান।

এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরিবর্তন করার একটা বড় রকমের সুযোগ তৈরি হয়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে যতটা সম্ভব স্বচ্ছতার সঙ্গে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, কমিশন একটি পর্যায়ে পৌঁছাতে পেরেছে বলে আমি মনে করি। এর ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়া নিয়ে কমিশন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এবং রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবে।

এ সময় তিনি জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনায় ৬২টি বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় ২০টি বিষয়ের মধ্যে ১১টি বিষয়ে কোনো ধরনের ভিন্নমত বা নোট অব ডিসেন্ট ছিল না, বাকি ৯টি বিষয়ে ‘নোট অব ডিসেন্ট’সহ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

স্থানীয় শাসন ব্যবস্থায় জনপ্রতিনিধি বা জাতীয় সংসদ সদস্যদের যে প্রভাব থাকে, তা নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি আইনত বৈধ নয়। যেভাবে স্থানীয় পর্যায়ের কার্যক্রমে জাতীয় সংসদের সদস্যগণ যুক্ত থাকে, সেটা তাদের থাকার কথাও নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনায় যে ৬২টি বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেখানে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় সাংসদদের প্রভাব নিয়ন্ত্রণের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব রয়েছে।

যে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট আছে জাতীয় সনদ চূড়ান্তকরণের পর তার ভবিষ্যত কী হবে, তা জানতে চাওয়া একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক অবস্থা ও বাস্তব অভিজ্ঞতা কী এবং কী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বাস্তবায়ন করলে নোট অব ডিসেন্ট গুরুত্ববহ হবে, তা জানতে বিশেষজ্ঞগণের মতামত নেওয়া হবে। পাশাপাশি এ বিষয়ে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দল যখন ঐকমত্যে পৌঁছেছে, তার গুরুত্বও বিবেচনা করতে হবে।

কোনো কোনো রাজনৈতিক দল জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী নির্বাচনের কথা বলছে- এই প্রসঙ্গে আলী রীয়াজ জানান, নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে ঐকমত্য কমিশন যুক্ত নয়।

কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়নের কথা বলেছে। এ সনদ বাস্তবায়নের জন্য পর্যায়ক্রমে বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে। এ আলোচনার মেয়াদ দীর্ঘমেয়াদী হবে না বলেও জানান তিনি।

আলী রীয়াজ বলেন, বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সরকারের পক্ষ থেকে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকারের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ঐকমত্য কমিশনের এই সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয় যে, কমিশনের দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবগুলোর কিভাবে বাস্তবায়িত হবে এবং জুলাই সনদে স্বাক্ষরের বাধ্যবাধকতা কেমন হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারও আলোচনায় বসবে কমিশন।


banner close