সম্প্রতি চট্টগ্রামের রাউজানে এক কলেজছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে, যার বেশিরভাগই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের প্রতি বিদ্বেষমূলক। এ বিষয়ে বানায়োট গল্প, ফটোকার্ড ও ভিডিওসহ নানা ধরনের কনটেন্ট ফেসবুক-টিকটকের মত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব কনটেন্টে ওই কলেজছাত্রকে খুনের পর অভিযুক্তরা তার ‘মাংস রান্না করে খেয়েছে’ দাবি করে পাহাড়ে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীকে ‘মানুষখেকো’ হিসেবে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। ওই জনগোষ্ঠীর বিষয়ে তৈরি করা হচ্ছে নানা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ। ছড়িয়ে পড়া এসব গুজব ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের কারণে নানা প্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যদের বিভিন্ন বিব্রতকর পরিস্থিতি ও সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এতে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
শুধু তাই নয়, এই ধরনের গুজব ও পাহাড়ে বসবাসকারী গোষ্ঠীর প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানোর ফলে এই অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা মানবাধিকারকর্মী ও সমাজ বিশেষজ্ঞদের। অবশ্য পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এ ধরনের গুজব কারা কেন ছড়িয়েছে তা খুঁজে বের করতে সাইবার টিম মাঠে নেমেছে।
গুজবের কারণে নৃগোষ্ঠীর লোকদের হেনস্তার অভিযোগ
পার্বত্য অঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহর চট্টগ্রামে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাতজন সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। তাদের মধ্যে পাঁচজন অবাধে চলাচল করতে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই গুজবের ফলে কোনো না কোনো সমস্যার মুখোমুখী হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তাদেরই একজন চট্টগ্রামের একটি আঞ্চলিক গণমাধ্যমে প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করা নীলা চাকমা। তিনি জানিয়েছেন, কাজের সুবাদে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রামে থাকতে হয়। রাউজানের ওই কলেজছাত্র খুনের পর শহরে বসবাস করা তার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
নীলা চাকমা বলেন, ‘নিজ এলাকার বাইরে ভাষাসহ নানা কারণে আমরা বুলিংয়ের শিকার হই। এখন মানুষের মাংস খাওয়ার আরেকটা ট্যাগ যুক্ত হলো। এই যে রিকশাওয়ালা মামা, সবজিওয়ালা, দোকানদাররা বলতেছে, আমি খুবই অনিরাপত্তায় ভুগী। যেমন কয়েকদিন আমি এক বান্ধবীর সঙ্গে অক্সিজেন এলাকার অনন্যা আবাসিকে গিয়েছিলাম, সেখান থেকে ফেরার পথে একজন আমাকে আপত্তিকরভাবে স্পর্শ করেছে। আমি প্রতিবাদ করায় উনি আমার সঙ্গে মানুষের মাংস খাওয়ার বিষয় নিয়ে আসছেন।’
“আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তো থাকতে পারতেছি না। নিউজফিডে ২০টা নিউজ থাকলে তার মধ্যে ১০টা আমাদের প্রতি বিদ্বেষমূলক। মেসেঞ্জারে বন্ধুরা বন্ধুরা বলতেছে, ‘তোরা তো এই খাস, তোদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা যাবে না।’ এমনকি গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট মানুষও আছেন এই তালিকায়।”
এমনই আরেকজন ভুক্তভোগীর নাম অভি চাকমা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তিনি। অভি চাকমা তার অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে বলেন, ‘রাউজানের ওই ঘটনার পর যখন ফেসবুকে আমরা মানুষের মাংস খাই বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ল, এর কয়েকদিন পর ক্লাস থেকে ফেরার পথে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের দিকে দুজন মেয়ের সঙ্গে দেখা। দেখে দুজনকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মনে হয়েছে। ওরা আমাদের দেখে এমনভাবে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছে, যেন আমরা বোধহয় জ্যান্ত মানুষ খেয়ে ফেলি। তারা আবার নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিল যে, রাউজানের ওই ঘটনার পর পাহাড়ি দেখলেই তাদের ভয় লাগে। তখন কথাটা আমি শুনে যাওয়ায় তাদের বলেছি, কয়েকজন অপরাধ করলেই তা পুরো জনগোষ্ঠীর দায় হতে পারে না। তাছাড়া মানুষের মাংস খাওয়ার বিষয়টাও গুজব।’
চট্টগ্রাম শহরে কর্মক্ষেত্রে হেনস্তার শিকার স্বপন চাকমা নামের আরও একজনের সঙ্গে কথা হয় দৈনিক বাংলার। শহরের বায়েজিদ বোস্তামি এলাকার কনডেন্স মিল্ক উৎপাদনকারী একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন তিনি। স্বপন বলেন, “ফ্যাক্টরিতে যাওয়ার সময় রাস্তাঘাটে মানুষজন আমাদের দেখলে বলে, ‘তোমাদের চাকমারা নাকি মানুষের মাংস খায়?’ এমনকি ফ্যাক্টরির ভেতর আমাদের সুপারভাইজারও বলে আমাদের চাকমারা নাকি মানুষের মাংস খায়। তখন স্বাভাবিকভাবেই মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।”
যেভাবে ছড়াল মানুষের মাংস খাওয়ার গুজব
ঘটনার শুরু গেল ১১ সেপ্টেম্বর। ওইদিন রাঙামাটি জেলার কাউখালী ইউনিয়নের দুর্গম বালু পাহাড় এলাকা থেকে এক কলেজছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার নাম শিবলী সাদিক হৃদয়। তিনি রাউজানের কদলপুর ইউনিয়নের পঞ্চ পাড়ার মুহাম্মদ শফির ছেলে। কদলপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনার পাশাপাশি স্থানীয় একটি মুরগির খামারে ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করতেন তিনি। মরদেহ উদ্ধারের ১৪ দিন আগে ওই খামার থেকে অপহরণ করা হয়েছিল তাকে।
পুলিশ জানায়, হৃদয়ের সঙ্গে শ্রমিক হিসেবে আরও ছয়জন কাজ করতেন। তারা সবাই পার্বত্য এলাকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্য। ঘটনার মাসখানেক আগে তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় হৃদয়ের। খামার মালিক সেসময় ঘটনাটি মীমাংসা করে দিলেও ক্ষুব্ধ ছিলেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শ্রমিকরা। সেই ক্ষোভ থেকে ২৭ আগস্ট রাতে হৃদয়কে অপহরণ করে আট কিলোমিটার দূরের গহীন পাহাড়ে নিয়ে যান তারা। পরে স্বজনদের ফোন করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এক পর্যায়ে ১ সেপ্টেম্বর হৃদয়ের বাবা শফি বান্দরবানে গিয়ে অপহরণকারীদের কথা মত দুই ব্যক্তিকে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে আসেন। এর আগে ৩১ আগস্ট সর্বশেষ তাদের সঙ্গে হৃদয়ের কথা বলিয়ে দেন অপহরণকারীরা।
মুক্তিপণ দেওয়ার পর ‘হৃদয়কে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, তিনি বাসায় চলে যাবেন’ বলে অপহরণকারীরা স্বজনদের জানালেও বাসায় ফেরেননি তিনি। এই ঘটনায় ৭ সেপ্টেম্বর রাউজান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন স্বজনরা। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সুইচিংমং মারমা (২৪) ও অংথুইমং মারমা (২৫) নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উমংচিং মারমা (২৬) নামের আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১১ সেপ্টেম্বর রাঙামাটি জেলার কাউখালী ইউনিয়নের দুর্গম বালু পাহাড় এলাকা থেকে হৃদয়ের দেহাবশেষ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ নিয়ে ফেরার পথে উমংচিং মারমাকে পুলিশ হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে উত্তেজিত জনতা।
এই ঘটনার পরপরই নিহত হৃদয়ের দেহাবশেষের ছবি এবং নিহত ও অভিযুক্তদের একটি যৌথ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এসব ছবির ক্যাপশনে ‘হত্যাকারীরা হৃদয়কে হত্যার পর তার মাংস রান্না করে খেয়ে হাড় পাহাড়ে ফেলে দিয়েছে’ বলে দাবি করা হয়। ফেসবুক, টিকটক ও ইউটিউবের মত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে কনটেন্ট ক্রিয়টরদের অনেকেই এই গুজবের ওপর ভিত্তি করে ভিডিও তৈরি করে শেয়ার করতে থাকেন। কেউ কেউ ফটোকার্ড তৈরি করেও তা শেয়ার করেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে শুধু ফেসবুক ও ইউটিউবে অধিকতর অনুসন্ধান পদ্ধতিতে (অ্যাডভান্স সার্স সিস্টেম) যাচাই করে এই গুজব ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানো সংক্রান্ত সহস্রাধিক পোস্টের সন্ধান পেয়েছেন এই প্রতিবেদক। এসব পোস্টের মধ্যে অধিকাংশের বক্তব্য আপত্তিকর হওয়ায় প্রতিবেদনে যুক্ত করা যায়নি।
বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সারা বিশ্বের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের হাতেও পৌঁছে গেছে। এতে গুজবটি এত দ্রুত ও কার্যকরভাবে ছড়িয়েছে যে দায়িত্বশীল অনেকেই বিশ্বাস করে তা নিয়ে কথা বলেছেন।
গুজবটি ‘সত্য’ দাবি করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা
এই গুজবটি বাস্তব দাবি করে তা নিয়ে কথা বলেছেন রাঙামাটি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুসা মাতব্বর। তার বক্তব্যের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের বক্তব্যের প্রথম অংশে তিনি সম্প্রতি চট্টগ্রামের রাউজানে খুনের শিকার এক কিশোরের মাংস রান্না করে খাওয়ার অভিযোগ করেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে প্রথম ৪৩ সেকেন্ডে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘গত দুই-তিনদিন আগে রাউজানের একটি ছেলেকে অপহরণ রাঙামাটির কাউখালিতে এনে তার মাংস পর্যন্ত তারা কেটে কেটে রান্না করে খেয়েছে। এটা দুঃখ জনক রাঙামাটিবাসীর জন্য। এই ধরনের ঘটনা যেন পরবর্তী আর না হয়, আমরা আবেদন জানাব সরকারের কাছে। এই সমস্ত এগুলো, এই হত্যাকাণ্ডগুলো আসলে মানুষ কোনো অবস্থাতে, যে কোনো মুহূর্তে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লেগে যেতে পারে। সবাইকে বলব, এই ধরনের ঘৃণ্য অপরাধ- মানুষের মাংস রান্না করে খাওয়া, এটা কতবড় অপরাধ! আমি বলার, মুখের ভাষাই পাচ্ছি না, কী বলব আমি!’
পরের ১ মিনিটে পাহাড়ে অস্ত্রধারীদের কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন তিনি।
অবশ্য পরে যোগাযোগ করলে বক্তব্যের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। ব্যস্ততার অজুহাতে তা নিয়ে বিস্তারিত কথা বলতেও রাজি হননি মুসা মাতব্বর।
তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি প্রথম প্রকাশ করে ‘সম্প্রীতির রাঙামাটি’ নামের এক ফেসবুক পেজ। এই ফেসবুক পেজের মালিক ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি অবজারভারের রাঙামাটি প্রতিনিধি শেখ ইমতিয়াজ কামাল ইমন। ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে তার সঙ্গে কথা বলে দৈনিক বাংলা। তিনি বলেন, ‘৪ থেকে ৫ দিন আগে নির্বাচন নিয়ে আমরা চার থেকে পাঁচটা গণমাধ্যমের প্রতিবেদক ওনার সাক্ষাৎকার নিয়েছি। আমাদের মধ্যে একজন ওনাকে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করলে উনি এই বক্তব্য দিয়েছিলেন। আমার কাছে র-ভিডিও (মূল ভিডিও) আছে।’
যা বললেন মরদেহ উদ্ধারকারী পুলিশ সদস্যরা
শিবলী সাদিক হৃদয় হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। তাদের মধ্যে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন তিনজন। জবানবন্দী দেয়া তিনজনই হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তবে কেউই হৃদয়ের মাংস রান্না করে খাওয়ার বিষয়ে কিছু বলেনি বলে দাবি পুলিশের।
মরদেহ উদ্ধার ও আসামিদের গ্রেপ্তারের সময় অভিযানিক দলে ছিলেন রাউজান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজিজুল হক। এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তাও তিনি। এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘রান্না করে তার মাংস খাওয়ার বিষয়টা ভুয়া। এসবের ভিত্তি নেই। এই বিষয়ে আমরা নিজেরাই তো কিছু পাইনি। ব্লগাররা ভাইরাল হওয়ার জন্য এটা ছড়াচ্ছে। এটা নিয়ে আমাদের সাইবার টিম মাঠে নামছে। আমাদের স্যারও (ওসি) এটা নিয়ে কথা বলেছেন। যারা এসব ভুয়া নিউজ ছড়িয়ে দেশের মধ্যে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করতেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এই মামলায় সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করছেন একজন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মেয়ে। তিনি আমাদের কনস্টেবল। যেহেতু ভাষার একটা সমস্যা আছে, আমরা ওনার সহযোগিতায় কাজগুলো করছি।’
প্রায় একই কথা বলেন রাউজান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ছিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘হত্যায় জড়িতরা নিহতের মাংস রান্না করে খেয়েছে- এরকম কোনো তথ্য আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি। যারা এগুলো ছড়াচ্ছে, তাদের এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করা যেতে পারে-তারা কোথায় পেলেন!’
‘অপহরণের ১৪ দিন পর আমরা দেহাবশেষ পেয়েছি। যে এলাকা থেকে দেহাবশেষ উদ্ধার করেছি, এর আশেপাশের ৮ থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো বাড়িঘর নেই। এটা হলো পাহাড়ি গভীর জঙ্গল। যেহেতু জনবসতি নেই, বিভিন্ন প্রাণি থাকতে পারে জঙ্গলে।’
‘সেসব প্রাণীও হয়ত এভাবে মরদেহ পেলে খেয়ে ফেলতে পারে। তাছাড়া আমরা তো জানি যে, মানুষ যখন মারা যায়, তিন দিনের মধ্যে লাশের পচন শুরু হয়। তো মরদেহটি পাওয়া গেছে খুনের ৮ থেকে ১০ তিন পর। তাই আমাদের ধারণা শেয়ালে বা কোনো প্রাণি খেয়ে ফেলছে, নয়তো পচে গেছে’ যোগ করেন তিনি।
তবে জবানবন্দী দেয়া তিনজনের একজন ওই এলাকায় একদিন রাতে মুরগিসহ ভাত রান্না করে খাওয়ার কথা জানিয়েছেন বলে জানান তিনি। বলেন, ‘যেহেতু তারা সেখানে ছিল, তাই স্বাভাবিকভাবে মুরগি-ভাত রান্না করে তারা এক রাতে খেয়েছে।’
ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ যা বললেন
পুলিশ ও হৃদয়ের স্বজনদের কাছে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, সর্বশেষ ৩১ আগস্ট পরিবারের সঙ্গে হৃদয়ের কথা বলিয়ে দেন অপহরণকারীরা। এর পরপরই তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা সংশ্লিষ্ট সবার। এরপর মরদেহ উদ্ধার করা হয় ১১ সেপ্টেম্বর। মাঝের ১১ থেকে ১২ দিন মরদেহটি গভীর পাহাড়ি জঙ্গলেই ছিল। সাধারণত মরদেহের পচন শুরু হয় পরিবেশ, তাপমাত্রা, ঋতু, মরদেহের ধরনসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে। রাঙ্গামাটির ওই পাহাড়ি গভীর জঙ্গলে ১০ থেকে ১২ দিনে একটা মরদেহের কী অবস্থা হতে পারে তা জানতে চাওয়া হয় ফরেনসিক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. কাশেমের কাছে। তিনি বলেন, ‘মরদেহের মাংস পচে যাবে। কিছু মাংসসহ হাড় অবশ্যই পাওয়া যাবে। কিছু মাংস শরীরে সংযুক্ত থাকতে পারে।’
তবে গভীর জঙ্গলে একটা মরদেহ পড়ে থাকলে বিভিন্ন প্রাণী তা খেয়ে ফেলতে পারে বলে ধারণা তার।
তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন প্রাণী মরদেহের বিভিন্ন অংশ খেয়ে ফেলতে পারে। তবে তা কোনো প্রাণী খেয়েছে নাকি কোনো অস্ত্র দিয়ে কাটা হয়েছে তা জানতে একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দিয়ে মরদেহটা পরীক্ষা করতে হবে। মোটামুটি পচে গেলেও তিনি এই বিষয়ে বলতে পারবেন।’
এই গুজবকে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র বলছেন মানবাধিকারকর্মীরা
বর্তমানে দেশে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংখ্যা ১৬ লাখ প্রায়। তাদের অধিকাংশেরই বাস পার্বত্য চট্টগ্রামে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ‘মানুষের মাংস খাওয়া’ গুজবকে সাম্প্রদায়িক উসকানি ও রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র বলে মনে করেন মানবাধিকারকর্মীরা।
মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের (বিএইচআরএফ) মহাসচিব অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এটা একটা সাম্প্রদায়িক উসকানি ও রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র। এটা যারা করছে, তাদের খুঁজে বের করতে হবে, এতে নিরীহ লোকজন হয়রানির শিকার হচ্ছে। একটা সম্প্রদায়কে টার্গেট করে এভাবে করা- এটা একটা গভীর চক্রান্ত বলে মনে হচ্ছে। যা-ই করুক, অতীতেও এই অঞ্চলের শান্তি নষ্ট করার চেষ্টা করেছে, পারেনি। ভবিষ্যতেও পারবে না ইনশাআল্লাহ।’
মাঠে নামছে সাইবার পুলিশ
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ধরনের গুজব যারা ছড়িয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনার কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার (সাইবার পুলিশ সেন্টার) খন্দকার তৌহিদ হাসান। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা হলে আমরা সাধারণত বিটিআরসির মাধ্যমে এই ধরনের গুজবের লিংকগুলো বন্ধ করে দেই। তাছাড়া এই ধরনের গুজব ছড়ানোর পেছনে যারা জড়িত তাদেরও শনাক্ত করা হবে। শনাক্তের পর আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
নীলফামারী পৌরসভার উদ্যোগে নবনির্মিত কসাইখানা’র উদ্বোধন করা হয়েছে। রবিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা শহরের কলেজপাড়া এলাকায় ১৮শতাংশ জমির উপর এই কসাইখানার উদ্বোধন করেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান প্রধান অতিথি থেকে নবনির্মিত কসাইখানার ফলোক উন্মোচন করেন।
নীলফামারী পৌরসভার প্রশাসক সাইদুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী তারিক রেজা, জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল ইসলাম, নীলফামারী প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আতিয়ার রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আধুনিক মানসম্মত এই কসাইখানার দুটি সেডে একযোগে ২০টি গরু ও ২০টি ছাগল জবাই করা যাবে। ভেটেরিনারি চিকিৎসকের উপস্থিতিতে শহরের কসাইরা এখানে পশু এনে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে জবাই করতে পারবেন। পৌর নির্ধারিত ইমাম দিয়ে পশুগুলো জবাই করা হবে।
পৌর প্রশাসক সাইদুল ইসলাম জানান, এই শহরের মানুষদের দীর্ঘদিনের দাবী ছিলো একটি কসাইখানা স্থাপন। বিচ্ছিন্ন ভাবে পশু জবাই করে মাংস বিক্রি করা হতো এতদিন। এনিয়ে প্রশ্ন ছিলো। যা আজ থেকে দুর হলো।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, আমরা নির্দিষ্ট এলাকায় জবাই করা পশুর মাংস পাচ্ছি এটি হওয়ার ফলে। এটি আমরা নিশ্চিত করতে পারলাম। নিয়ম অনুসারে এটি পরিচালিত হবে এবং স্বাস্থ্য সম্মত ভাবে এটি পরিচালিত হবে।
বলেন, পৌরসভা থেকে কসাইদের পরিচয় পত্র প্রদান করা হবে। পরিচয় পত্র ছাড়া কোন কসাইয়ের পশু জবাই করা হবে না।
পরে নীলফামারী বড় মাঠ পরিদর্শণ করেন জেলা প্রশাসক। বড় মাঠে মোটর সাইকেল প্রবেশ বন্ধে ব্যারিকেট স্থাপন কাজের উদ্বোধন করা হয়।
২১ ডিসেম্বর বিশ্ব মেডিটেশন দিবস। ‘মন ভালো তো সব ভালো’-এই প্রতিপাদ্য নিয়ে রবিবার কুমিল্লায় পালিত হয়েছে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস। এ উপলক্ষে রোববার কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন কুমিল্লা শাখার উদ্যোগে নগরীর পৌর উদ্যানের জামতলায় মেডিটেশন চর্চার আয়োজন করা হয়। এই মেডিটেশন চর্চায় তিন শতাধিক সদস্য ও সহযোগী সদস্যরা অংশ নেন। ঘণ্টাব্যাপী এই আয়োজনে মিডিয়া ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীরা বলেন, মূলত মানসিক প্রশান্তির জন্যই নিয়মিত মেডিটেশন প্রয়োজন। এর মাধ্যমে ধৈর্য ও সহ্য ক্ষমতা বাড়ে। ঠাণ্ডা মাথায় যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা যায়।’
এসময় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শহীদ আল বোখারী মহাজাতক এক অডিওবার্তায় বলেন, কোয়ান্টাম তিন দশক ধরে বলে আসছে ‘মন ভালো তো সব ভালো।’ তিনি বলেন, পরিবেশের দূষণ যেমন সবাইকে কষ্ট দেয়, তেমনি যে কোন মানুষের মনের দূষণ চারপাশের মানুষের কষ্টের কারণ হয়। তাই মন ভালো রাখার গুরুত্ব সর্বাধিক। ব্যক্তি মন ভালো থাকলে, মনে প্রশান্তি থাকলে পরিবারে, সমাজে ও বিশ্বে শান্তি আসবে। এক্ষেত্রে মেডিটেশন সবচেয়ে সহায়ক শক্তি।
তিনি বলেন, এখনকার ডিজিটাল জীবনে বিলাস ও গতি বেড়েছে। কিন্তু ব্যক্তির মন আক্রান্ত হয়েছে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা,অস্থিরতা, ক্ষুব্ধতা, ট্রমা, ভয়, রাগ, অনিশ্চয়তা, বিষণ্নতা ও একাকিত্বে। মনের এই অসুখ মানবদেহের শতকরা ৭৫ শতাংশ রোগ সৃষ্টি করে।
মেডিটেশন চর্চায় সচেতনতা বাড়াতে জাতিসংঘ ২০২৪ সাল থেকে ২১ ডিসেম্বরকে ‘বিশ্ব মেডিটেশন দিবস’হিসেবে ঘোষণা করেছে। এর মাধ্যমে জাতিসংঘ মানসিক ও শারীরিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারকে গুরুত্ব দিয়েছে।
অপরদিকে অডিওবার্তায় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মাদাম নাহার আল বোখারী বলেন, মেডিটেশন ব্যক্তি ও সমাজকে ইতিবাচক পরিবর্তনের পথে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
কুমিল্লা শাখার আর্ডেন্টিয়ার মুহাম্মদ রাসেল বলেন, মেডিটেশন করে লাখো মানুষ প্রশান্তি খুঁজে পেয়েছেন। এই বৈজ্ঞানিক উপায় অনুসরণ করে আপনিও ভালো থাকতে পারেন।
দেশের শীর্ষ গণমাধ্যম প্রথম আলো, ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নি সংযোগ এবং খুলনার ডুমুরিয়ার সাংবাদিককে হত্যার প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আয়োজনে মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কামেশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপি, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান, অর্থ সম্পাদক শেখ ফরিদ আহমেদ, দৈনিক বাংলা পত্রিকার সাতক্ষীরা প্রতিনিধি মোঃ আবু সাঈদ,
এস এম জিন্নাহ, গাজী ফরহাদ, এস এম বিপ্লব হোসেন, জি এম সোহরাব হোসাইন, জামাল উদ্দিন, বরুন ব্যানার্জি, হোসেন আলীসহ অন্যারা। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম. বেলাল হোসাইন।
বক্তারা আরো বলেন, মহান বিপ্লবী শরিফ ওসমান হাদি নিজেও অগ্নি সংযোগ ও ভাংচুরের পক্ষে ছিলেন না। তিনি তার অগ্নি ঝরা বক্তব্য দিয়ে কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে ছিলেন। তার জানাজ নামাজের কোটি মানুষের উপস্থিতিই প্রমান করে সন্ত্রাসী, লুটপাট এবং অগ্নি সংযোগ করে কখনো ভালোবাসা পাওয়া যাবে না। অথচ বিপ্লবী হাদির মৃত্যু খবর শুনেই একটি উপগ্রবাদী গোষ্ঠী প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের মত গণমাধ্যমের কার্যালয়ে অগ্নি সংযোগ করে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার যেমন গণমাধ্যমে কণ্ঠরোধ করতে চেয়েছিল একটি গোষ্ঠী দেশকে অশান্ত করতে একই প্রচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে উল্লেখ করে বক্তারা অবিলম্বে এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার পূর্বক শাস্তি এবং খুলনায় ডুমুরিয়া শলুয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমদাদুল হককে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান বক্তারা।
গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস-আনন্দ ও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম শীর্ষ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহীর চন্দ্রিমা থানা এলাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশে এই সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়।
এবারের সমাবর্তনে সামার ২০২০ থেকে ২০২৫ সালের স্প্রিং সেমিস্টার পর্যন্ত স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৫ হাজার ৩৭৫ জন গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি লাভ করেন। পাশাপাশি ৫ জন শিক্ষার্থী আচার্য ও উপাচার্য পদক অর্জন করেন।
সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস. মুরশিদ। তিনি গ্র্যাজুয়েটদের হাতে ডিগ্রি তুলে দেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শারমীন এস. মুরশিদ বলেন, ‘১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থান—যুগে যুগে কালজয়ী পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিয়েছে তরুণ প্রজন্ম।’
তিনি আরও বলেন, ‘উচ্চশিক্ষার সৃজনশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্বল্প সময়েই নিজেদের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে, যা সম্ভব হয়েছে সঠিক নেতৃত্ব, পরিকল্পনা ও মান বজায় রাখার মাধ্যমে।’
সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্বখ্যাত প্রকৌশল বিজ্ঞানী ও গবেষক, কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবার ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ইকরাম হোসেন। তিনি বলেন, ‘বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিক সম্ভাবনার দিকে চোখ খুলে দিয়েছে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. এম আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রথাগত শিক্ষার মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের খরা, নদীভাঙনসহ নানা সমস্যার টেকসই সমাধান সম্ভব নয়। বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়কে সময়োপযোগী ও আধুনিক শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভূমিকা রাখতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. খাদেমুল ইসলাম মোল্যা বলেন, ‘আন্তবিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র সম্প্রসারণ, ইনোভেশন হাব গঠন এবং আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একাডেমিক এক্সচেঞ্জসহ বিভিন্ন কার্যক্রমকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। এখানে অর্জিত জ্ঞান মানবতার কল্যাণে ব্যবহৃত হবে—এটাই আমাদের বিশ্বাস।’
এবারের সমাবর্তনে চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আল মুক্তাদির মুনেম এবং অর্থনীতি বিভাগের মো. সোহানুর রহমান।
ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অপ্সরা খান, অর্থনীতি বিভাগের শতাব্দী রাণী দাস এবং ফার্মেসি বিভাগের শিখা খাতুন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডিন, রেজিস্ট্রার, শিক্ষক, কর্মকর্তা, অভিভাবক ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নেত্রকোনার অবৈধ ইটভাটায় বিধিভঙ্গ করে তৈরি হচ্ছে ছোট আকৃতির ইট, প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে রমরমা ব্যবসা, উপেক্ষিত পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় অভিযোগ পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় যখন সরকার বদ্ধপরিকর, ঠিক তখনই নেত্রকোনা জেলায় একশ্রেণির প্রভাবশালী মহল নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থে আইন ও বিধি ভঙ্গ করে অবৈধ ইটভাটার রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশগত ছাড়পত্র, নির্ধারিত চিমনির উচ্চতা এবং প্রয়োজনীয় দূরত্ব উপেক্ষা করে তৈরি হচ্ছে ছোট আকৃতির ইট, যা একদিকে যেমন সরকারি নির্মাণকাজে প্রতারণা, তেমনি অন্যদিকে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে। জেলাজুড়ে হাওর অঞ্চল খালিয়াজুড়ী বাদে বাকি ৯টি উপজেলাতেই ছড়িয়ে রয়েছে এসব অবৈধ ইটভাটা।
অভিযোগ রয়েছে, নেত্রকোনায় নিয়মমাফিক মাত্র ৪টি ইটখোলা বৈধভাবে কাজ করছে। বাকি ভাটাগুলো পরিবেশবান্ধব বিহীন (ক্লিন ফায়ার প্রযুক্তি ছাড়া) পদ্ধতিতে এবং বিধিবহির্ভূতভাবে পরিচালিত হচ্ছে। ছোট আকৃতির ইট, প্রতারণার নতুন ফাঁদ, উন্নয়ন কাজের অন্যতম উপাদান হলো ইট। কিন্তু এই ভাটাগুলোতে ইচ্ছাকৃতভাবে ছোট আকৃতির ইট তৈরি করা হচ্ছে। নির্মাণকাজে এই ছোট ইট ব্যবহার করে মূলত সরকারি নিয়মের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন সুস্পষ্ট বিধিভঙ্গ চললেও তা বন্ধ করতে কার্যত কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, সবকিছুই স্থানীয় প্রভাবশালী কুচক্রী মহল ‘ম্যানেজ’ করে নিজেদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে সরকারি বিধিমালা ভঙ্গ করে তৈরি করছে ছোট আকৃতির ইট। নিয়ম অনুযায়ী কাঁচা ইট পোড়ানো হলে তার আকৃতি হতে হবে, লম্বায় ১০ ইঞ্চি, চওড়ায় ৫ ইঞ্চি ও উচ্চতায় ৩ ইঞ্চি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কেন্দুয়া উপজেলা, সদরের DHAKA ব্রিকস, MBB ব্রিকস ও AST ব্রিকসসহ জেলার প্রতিটি ইটের ভাটায় তাদের পোড়ানো ইটের মাপ বা আকৃতি রয়েছে লম্বায় ৮.৫ ইঞ্চি, চওড়ায় ৪.৭৫ ইঞ্চি ও উচ্চতায় ২.৭৫ ইঞ্চি। এতে করে গড়ে এক গাড়িতে প্রায় ২৫০টি ইট বেশি কিনতে হচ্ছে। ইটের সাথে বালু, সিমেন্ট ও শ্রমিক খরচ বেড়ে চলেছে। ফলে গ্রাহকরা ইট উন্নয়ন প্রতারণার শিকার হচ্ছে আর বেড়েছে তাদের নির্মাণ ব্যয়। ভুক্তভোগী ও স্থানীয় লোকজন কিছু বলতে পারে না ভয়ে, কিছু বললেই তাদের উপর হুমকি ও চাপ। নেত্রকোনা জেলায় একমাত্র সদর উপজেলা বালী গ্রামে MHC ব্রিকস সঠিক নিয়মে তাদের ইট উৎপাদন করছে। সরেজমিনে দেখা যায়, MHC ব্রিকস এর পোড়ানো ইটের মাপ বা আকৃতি রয়েছে লম্বায় ১০ ইঞ্চি, চওড়ায় ৫ ইঞ্চি ও উচ্চতায় ৩ ইঞ্চি। নেত্রকোনার সচেতন মহল জানান, প্রতারণা বন্ধ করে ইটের আকৃতি সঠিকভাবে তৈরি করতে ভাটা মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান। এবং এ বিষয়ে তদারকি ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নেত্রকোনা জেলা ইট ভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক টিটু মাস্টারের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি। নেত্রকোনার সাধারণ মানুষের দাবি, MHC ব্রিকসের মতো সকল ইট ভাটায় সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী সঠিক আকৃতির ইট উৎপাদন করে। জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের মারাত্মক ঝুঁকি যে সমস্ত ভাটা চলছে, সেগুলোর বেশিরভাগই নিয়ম ভেঙে লোকালয়, স্কুল-মাদ্রাসা ও বাজারের খুব কাছে স্থাপন করা হয়েছে।
এর ফলে বসতঘর, স্কুল-মাদ্রাসা ও বাজারের পাশে ভাটা স্থাপন করায় জনজীবন বিপর্যস্ত। চিমনির উচ্চতা নির্ধারিত মানদণ্ড অনুসরণ করছে না। চিমনি থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে এবং বায়ুদূষণ চরম আকার ধারণ করেছে। এলাকার কৃষিজমি ও ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। শ্রমিকদের মানবেতর জীবন, শিশু শ্রমের অভিযোগ-বেশ কিছু ভাটায় শিশুশ্রমিক ব্যবহারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া শ্রমিকদের নিয়মিত বেতন ঘাটতি রয়েছে বলেও জানা গেছে, যা শ্রম আইনকে চরমভাবে লঙ্ঘন করছে। প্রশাসনের নীরবতা ও স্থানীয়দের ক্ষোভ স্থানীয় জনসাধারণ ও পরিবেশকর্মীরা এসব অনিয়ম নিয়ে বারবার অভিযোগ জানালেও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। উল্টো, অভিযোগের পরেও প্রভাবশালীরা সবকিছু ম্যানেজ করে চুলায় আগুন জ্বালিয়ে রাখছে। স্থানীয়দের দাবি, পরিবেশ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে নেত্রকোনার পরিবেশ এক মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
অবিলম্বে জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের এই অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সচেতন মহল। পরিবেশ, জলবায়ু ও উন্নয়নের স্বার্থে এই প্রতারণামূলক ও পরিবেশঘাতী ব্যবসা বন্ধ করা জরুরি।
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে আবু বক্কর (৬০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার ঝিনাইগাতী- গজনী সড়কের রাংটিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আবু বক্কর রাংটিয়া এলাকার মৃত আবু তাহেরের ছেলে।
আহতরা হলেন- কবিতা খাতুন (১৫), সিনহা খাতুন (১০) ও সিফাত (২০)। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সকালে বিপরীত দিক থেকে আসা দুটি মোটরসাইকেলের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় মোটরসাইকেলে থাকা চারজন গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু বক্করকে মৃত ঘোষণা করেন।
দুর্ঘটনায় এক মোটরসাইকেলের চালক আবু বক্কর নিহত হলেও অপর মোটরসাইকেলের চালক সিজন (২১) ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে ঝিনাইগাতী থানার এসআই শফিউল্লাহ সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আহত ও নিহতদের উদ্ধারে সহযোগিতা করেন।
এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান জানান, দুর্ঘটনার ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
রাঙামাটি শহরের পুরাতন বাস টার্মিনাল এলাকায় আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) ভোররাতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই অগ্নিকাণ্ডে খাগড়াছড়ি-বান্দরবান রুটে চলাচলকারী তিনটি যাত্রীবাহী বাস, পাঁচটি দোকান এবং একটি বসতবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ফায়ার সার্ভিস সময়মতো পৌঁছাতে না পারায় আগুনের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পায় এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভোররাতে টার্মিনাল এলাকার একটি ফার্নিচারের দোকান থেকে প্রথম আগুনের সূত্রপাত ঘটে এবং মুহূর্তের মধ্যে তা আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিসের একটি দল খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় দুই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে এর আগেই পার্কিং করে রাখা তিনটি বাসসহ পাঁচটি দোকান ও একটি বসতবাড়ি পুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। রাঙামাটি বাস মালিক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম শাকিল জানিয়েছেন, এই অগ্নিকাণ্ডে আনুমানিক এক কোটি টাকারও বেশি সম্পদ নষ্ট হয়েছে।
রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ফার্নিচারের দোকানে মশার কয়েল থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল। তবে তদন্তের পর আগুনের প্রকৃত কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হবে বলে তারা জানিয়েছেন। এই ঘটনায় ওই এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নারায়ণগঞ্জের ধলেশ্বরী নদীতে ফেরি পারাপারের সময় মাঝনদীতে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনে থাকা আরও চারটি যানবাহনকে ঠেলে নদীতে ফেলে দিয়েছে। এ ঘটনায় ট্রাকসহ মোট পাঁচটি যানবাহন পানিতে তলিয়ে যায় এবং এখন পর্যন্ত তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার বক্তাবলি নরসিংপুর এলাকায় মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন—মোটরসাইকেল আরোহী রফিক, রিকশাভ্যান চালক স্বাধীন এবং প্রবাসী মাসুদ রানা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফেরিটি বক্তাবলি থেকে ছেড়ে মাঝনদীতে পৌঁছালে হঠাৎ করেই ফেরিতে থাকা একটি ট্রাক চালু হয়ে সামনের দিকে এগোতে থাকে। চালক নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হলে ট্রাকটি সামনে থাকা একটি মোটরসাইকেল, দুটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও একটি ভ্যানগাড়িকে ঠেলে নিরাপত্তা রেলিং ভেঙে নদীতে ফেলে দেয়। মুহূর্তের মধ্যে ট্রাকসহ সবগুলো যানবাহন পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় ট্রাকচালক সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও অন্য আরোহীরা নিখোঁজ হন।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশ ও ডুবুরি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। দুর্ঘটনার পরপরই রফিককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে দিবাগত রাত ২টার দিকে নদী থেকে বাকি দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বক্তাবলি নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ওসি রকিবুজ্জামান জানান, চালক স্টিয়ারিংয়ে থাকলেও হঠাৎ ট্রাকটি চালু হয়ে যাওয়ায় তিনি নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি, যার ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) হাসিনুজ্জামান জানান, উদ্ধারকৃত মরদেহগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। রবিবার সকাল থেকে ডুবে যাওয়া যানবাহন উদ্ধারে কাজ শুরু হবে এবং আরও কেউ নিখোঁজ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে পুনরায় তল্লাশি চালানো হবে।
বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের ১০১ সদস্য বিশিষ্ট গঠন করা হয়েছে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর একটি স্থানীয় হোটেলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে ২০২৬-২০২৭ ও ২০২৭-২০২৮ সালের জন্য দ্বিবার্ষিক এই কমিটি নির্বাচিত করা হয়।
কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) জনাব খন্দকার শফিকুল হাসান রতন এবং মহাসচিব পদে নির্বাচিত হয়েছেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ মোঃ মনোয়ারুল ইসলাম এনাম। কমিটির প্রধান পৃষ্ঠোপোষক নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ড. মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল পাশা। সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জনাব মোঃ আব্দুল্লাহ মৃধা। ১নং যুগ্ম-মহাসচিব পদে নির্বাচিত হয়েছেন কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার জনাব খন্দকার নাজমুল হাসান। সাংগঠনিক পদে নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোঃ রেজাউর রহমান মিয়া রাজু।
বর্তমানে বাংলাদেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা হল ৫৯টি, এ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসারদের নিয়ে বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের ১০১ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি গঠন করা হয়।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামের সুতারগোপ্তা এলাকায় ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বেলাল হোসেনের বসতবাড়িতে গত শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) গভীর রাতে দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগে তার ৮ বছর বয়সের শিশু কন্যা মোসা. আয়শা আক্তারের মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, বেলাল হোসেনসহ তার অন্য দুই কন্যা বীথি আক্তার ও স্মৃতি আক্তার আগুনে গুরুতর আহত হয়েছে। ইতোমধ্যে আহত দুই কন্যাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে এবং তাদের পিতা বেলাল হোসেন বর্তমানে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দুর্বৃত্তদের কর্তৃক সংঘটিত এই কাপুরুষোচিত ও নৃশংস।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দুর্বৃত্তদের কর্তৃক অগ্নিসন্ত্রাসে শিশু মোসাঃ আয়শা আক্তারের অকাল মৃত্যু এবং অপর দুইবোন সহ বেলাল হোসেনের গুরুতর আহত হওয়ার নির্মম ঘটনায় শোক জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। এটি একটি জঘন্য, অমানবিক ও কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী হামলা যা দেশব্যাপী বিরোধী রাজনৈতিক মত দমনের ধারাবাহিকতারই বহি:প্রকাশ। এ ধরণের ঘটনায় প্রমাণ হয় যে, দেশে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে এবং রাজনৈতিক সহিংসতা ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে।’
বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে এই পৈশাচিক ঘটনার সাথে জড়িত দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান। দুর্বৃত্তদের লাগানো আগুনে নিহত নিষ্পাপ শিশু মোসা. আয়শা আক্তারের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। পাশাপাশি আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করেন।
ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাক শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে হত্যার আগে চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করেন কারখানার ফ্লোর ম্যানেজার। এরপর তাকে উত্তেজিত জনতার হাতে তুলে দেওয়া হয়।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ১০ জনের তথ্য সাংবাদিকদের অবহিত করতে গিয়ে র্যাব-১৪ এর পরিচালক নাইমুল হাসান এই চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন।
এরমধ্যে পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড কোম্পানির ফ্লোর ম্যানেজার আলমগীর হোসেনকে (৩৮) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার সঙ্গে গ্রেপ্তার হয়েছেন কারখানার কোয়ালিটি ইনচার্জ এবং মিরাজ হোসেন আকন (৪৬)।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে র্যাব কর্মকর্তা নাইমুল হাসান বলেন, ‘ঘটনার সূত্রপাত হয় ওইদিন বিকেল ৪টার সময়। ফ্যাক্টরির ফ্লোর ইনচার্জ তাকে (দিপুকে) ইস্তফা দিতে বাধ্য করে। ইস্তফা দেওয়ার পর উত্তেজিত জনতার কাছে সে (ফ্লোর ম্যানেজার) হ্যান্ডওভার করে দেয়।
পুলিশের কাছে কেন দেয়নি, তার নিরাপত্তা কেন নিশ্চিত করেননি সেজন্য পাইওনিয়ার কারখানার দুজনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি।’
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা বারবার চেষ্টা করেছি, কাকে বলেছে, কী বলেছে, এটা কিন্তু কেউ বলতে পারেনি। আমার মনে হয়, উত্তেজিত জনতা কিংবা পূর্বের কোনো শত্রুতা ছিল কিনা সেটাও তদন্ত করে দেখব। একটা লোককে এই অভিযোগে মেরে ফেলা এবং গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে তাকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা কোনোভাবেই আইনে কভার করে না এবং সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও এটাকে গ্রহণযোগ্য মনে করে না।’
মামলা যেহেতু থানায় হয়েছে, ফলে থানা এই মামলা তদন্ত করবে। পাশাপাশি র্যাবের ‘ছায়া-তদন্তের’ কথাও জানান পরিচালক নাইমুল হাসান।
গ্রেপ্তার অন্য আটজন হলেন- তারেক হোসেন (১৯), লিমন সরকার, মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯), নিঝুম উদ্দিন (২০), আজমল হাসান সগীর (২৬), শাহিন মিয়া (১৯) এবং মো. নাজমুল। এরমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
র্যাব-১৪- এর পরিচালক নাঈমুল হাসান বলেন, এরা কেউ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত না। বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ভালুকা উপজেলায় ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে যুবক দিপু চন্দ্র দাসকে (২৮) পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তার লাশে আগুন দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং অর্ধপোড়া লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ভালুকা মডেল থানায় ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
পুন্ড্র সভ্যতার ঐতিহ্যবাহী বগুড়ায় সরকারি আজিজুল হক কলেজের ইতিহাস বিভাগের ২০০৩-০৪ স্নাতক সম্মান শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ১ম পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) উক্ত কলেজের হলরুমে অনুষ্ঠিত পূর্ণমিলণীতে অত্র বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের স্মৃতি রোমন্থন করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে বক্তব্য রাখেন, সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মাহফুজুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অত্র কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসার মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ সরকার, প্রফেসর মোঃ শাহজাহান আলী, শিক্ষকদের মধ্যে মোঃ ফিরোজ আল রেজা, সরোয়ার মোসেদ, মোঃ আসলাম মিয়া, মোঃ দেলোয়ার হোসেন।
পুর্ণমিলনী অনুষ্ঠানে আয়োজক কমিটির মোঃ রেজাউল করিম, আহসান হাবীব সেলিম, সাইফুল ইসলাম, তরুন অধিকারী, কে এম ইফরেখার ববি, কোহিনুর আক্তার, জান্নাতুল ফেরদৌস, ফারুক আরাফাত, রানী, রেজাউল লিটনসহ সকল শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষিত কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট চার লেন সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি কচ্ছপ গতির কবলে পড়েছে। ২০২২ সালে শুরু হওয়া আড়াই বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের কাজ চার বছর পেরিয়ে গেলেও অগ্রগতি মাত্র ৫০-৬০ শতাংশ। জমি অধিগ্রহণ জটিলতা ও মামলার পাহাড় ডিঙাতে না পেরে প্রকল্পের মেয়াদ এখন ২০২৬ সালের জুন ছাড়িয়ে আরও দুই বছর বাড়ানোর তোড়জোড় চলছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ৬ কিলোমিটার জমি অধিগ্রহণের কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো জমি অধিগ্রহণ হয়নি। এ অবস্থায় প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয় চিঠি পাঠানো হয়েছে। সড়কের যেসব জমি অধিগ্রহণে জটিলতা রয়েছে, সেসব জমি অধিগ্রহণ না করেই বিকল্প জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। জমি অধিগ্রহণ শেষ হয়ে গেলে কাজ শেষ করতে ছয় মাস সময় লাগবে। এজন্য প্রকল্পের মেয়াদ দ্বিতীয় দফায় আরও দুই বছর বৃদ্ধির জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, সিলেট নগরীর ভেতর দিয়ে প্রতিদিন শত শত পাথর বোঝাই ভারি ট্রাক চলাচল করে। এতে প্রায় সময় ট্রাক চাপায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এ অবস্থায় দুর্ঘটনা ও মৃত্যু ঝুঁকি এড়াতে নগরীর ভেতর দিয়ে ট্রাক চলাচলের চাপ কমাতে কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট সড়ক নির্মাণের দাবি ওঠে। অবশেষে সিলেটবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২-২০১৪ দুই অর্থবছরে প্রায় সাড়ে ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট সড়কটি নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে সড়কটি চারলেনে উন্নীত করার দাবি তোলেন সিলেটবাসী।
এ পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়। পরের বছর চার লেন সড়কের সঙ্গে দুটি সার্ভিস লেন যুক্ত করে তৈরি করা হয় সংশোধিত প্রস্তাবনা। ২০১৯ সালের দিকে শুধু চারলেনের প্রস্তাবনা জমা পড়ে মন্ত্রণালয়ে। অবশেষে জটিলতা কাটিয়ে ২০২২ সালে কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট চারলেন সড়কের উদ্বোধন করেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
তথ্যমতে, প্রায় ৭২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের আওতায় মাটির কাজসহ ১১.৮৭১ কিলোমিটার (চার লেন) সড়ক হবে রিজিড পেভমেন্টের। আর ০.৭০০ কিলোমিটার হবে ফ্লেক্সিবল পেভমেন্টের। এছাড়া দুটি পিসি গার্ডার সেতু, ২৪টি ছোট আরসিসি কালভার্ট, দুটি লিংক রোড, ছয়টি বাস-বে, আরসিসি ড্রেনসহ ফুটপাত, সিগন্যাল স্থাপন ও সড়ক রক্ষা ব্যবস্থা ছিল প্রকল্পটিতে।
সওজ’র তথ্য অনুযায়ী, প্রকল্পের আওতায় ভূমি অধিগ্রহণ হবে ৩১.৮২ একর। এতে ব্যয় ধরা হয় ২৪২ কোটি ১২ লাখ টাকা। ১ দশমিক ২ মিটার ডিভাইডার এবং দুই পাশে ৭ দশমিক ৯ মিটার করে ১৫ দশমিক ৮ মিটার প্রশস্ত চারলেন বিশিষ্ট এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭২৭ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। অর্থাৎ সড়কটিতে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৫৭ কোটি টাকা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কুমারগাঁও থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার সম্মুখ পর্যন্ত রাস্তার নির্মাণ কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া সড়কের পাশ দিয়ে ড্রেনেজ নির্মাণও সম্পন্ন হয়েছে এ অংশে। তবে নির্মাণাধীন জায়গায় নয়াবাজার-বাদাঘাট রোড মসজিদ ও সোনাতলা বাজারে একটি পারিবারিক কবরস্থান রয়েছে। এসব জায়গায় স্থানীয়দের বাঁধায় কাজ বন্ধ রয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্টা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার শাখাওয়াত হোসেন বলেন, প্রকল্পের আওতায় মোট ১২ কিলোমিটার রাস্তা ছিল। এরমধ্যে ৪ কিলোমিটার রাস্তা ছিলো যেখানে কোনো জমি অধিগ্রহণ করা লাগেনি। সে অংশে প্রায় সকল কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৮ কিলোমিটার রাস্তার কাজ আমরা জমি অধিগ্রহণ ছাড়াই কাজ শুরু করি।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আর কুমারগাঁও-বাঘাটাদের একটি স্থানে কবরস্থানের কিছু অংশ থাকায় সেখানে কিছু কাজ বাকি রয়েছে।
সড়ক বিভাগ সিলেটের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সালাহ্উদ্দিন সোহাগ বলেন, এখানে চারটি মৌজার জায়গা নিয়ে কিছু জটিলতা এখনো রয়েছে। তবে শীগ্রই তা সমাধান হবে। তাছাড়া অন্যান্য জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতা সমাধান হয়েছে এবং সেসব অংশে কাজ চলমান রয়েছে।
সালাহ্উদ্দিন সোহাগ বলেন, প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি না হলেও নতুন করে মেয়াদ বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে, আমরা এই প্রকল্পের জন্য আরও দুই বছর সময় চাইব। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৩০ হেক্টরের মতো জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
আমরা আশা করছি, আগামী এক বছরের মধ্যে রাস্তা চালু করে দিতে পারবো। জমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ৭৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মধ্যে ২৪টি কালভার্ট করার কথা রয়েছে, এরমধ্যে ২২টি কালভার্ট করার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
সিলেটের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বলেন, ধুপনিখলা মৌজা ১.৫ কিলোমিটারের জায়গা নিয়ে স্থানীয়রা কাজে বাঁধা দেওয়ায় জমি অধিগ্রহণে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে থানায় জিডিও করা হয়েছে।