রোববার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩

নোয়াখালীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ২ শিশুর মৃত্যু

ফাইল ছবি
আপডেটেড
২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১২:১১
নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত
নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১২:০৮

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মসজিদের ছাদে পাতা কুড়াতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকালে উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়ন হাজীপুর গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া শিশুরা হলো, উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের মোহাম্মদ ফারুক হোসেনের ছেলে মো. জিসান (৯) এবং একই গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে রাহাত হোসেন (১২)।

পুলিশ জানায়, সোমবার সকালে শিশু জিসান ও রাহাত মক্তবে পড়তে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়। কিন্তু তারা মক্তবে না গিয়ে কয়েকজন মিলে গাছের পাতা কুড়াতে গাছ বেয়ে হাজীপুর গ্রামের আস্তানা মসজিদের ছাদে উঠে। এ সময় মসজিদের পাশ ঘেঁষে যাওয়া ১১ হাজার ভোল্টেজের বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে শিশু গুরুতর আহত হয়। একপর্যায়ে তারা নিচে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে।

চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘স্বজনরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন।’

বিষয়:

চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা ছিনতাই

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ২১:৫৮
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় এক গরু ব্যবসায়ীকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে ১৬ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পিএবি সড়কের বরুমচড়া রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।

গরু বিক্রির টাকা নিয়ে ব্যাংকে যাওয়ার পথে ছিনতাইয়ের শিকার ব্যবসায়ীর নাম ফজলুল কাদের মাস্টার (৭০)। বারখাইন ইউনিয়নের দক্ষিণ তৈলারদ্বীপ গ্রামে ৮ নং ওয়ার্ডের মৃত গুরু মিয়ার পুত্র সে।

আহত মাস্টার ফজলুল কাদের জানান, সরকার হাট নামক জায়গা থেকে আনোয়ারায় ব্যাংকে টাকা জমা রাখতে যাওয়ার জন্য একটি সিএনজিতে ওঠেন তিনি। সেখানেই সিএনজিতে যাত্রী বেশে বসে ছিল আরও দুজন লোক। কিছুদূর আসার পর তারা ধস্তাধস্তি শুরু করে। এক পর্যায়ে কোমর থেকে ছুরি বের করে আঘাত করতে থাকেন তাকে। এলোমেলো ছুরি চালানোর সময় নিজেকে প্রাণে রক্ষা করতে পারেন তিনি। তবে সঙ্গে থাকা ১৬ লক্ষ টাকা ও ব্যাংকের চেকবই ছিনিয়ে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়ে চলে যায় দুর্বৃত্তরা।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার তৈলারদ্বীপ এলাকায় নিজস্ব গরুর ফার্ম রয়েছে কাদের মাস্টারের। দীর্ঘদিন তিনি সরকার হাটসহ বিভিন্ন বাজারে গরু বেচাকেনা করে আসছিলেন। টাকাগুলো সিরাজগঞ্জে পাঠানোর জন্য ব্যাংকে যাচ্ছিলেন তিনি।

আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল আহমেদ বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

বিষয়:

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুর্ঘটনায় নিহত ১

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ২২:০১
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে দড়িকান্দি বাস স্ট্যান্ড এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মাইনউদ্দিন নামের মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন।

আজ রোববার রাত পৌনে ৮ টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় অজ্ঞাত গাড়ির ধাক্কায় ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।

নিহত মাইনউদ্দিন কুমিল্লার লাঙ্গলকোট উপজেলার মনিরুল ইসলামের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার দড়িকান্দি বাসট্যান্ড এলাকায় আজ রোববার রাত পৌনে ৮ টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে ঢাকা থেকে কুমিল্লার দিকে যাচ্ছিল মাইনউদ্দিন। এ সময় দ্রুতগামী একটি গাড়ি মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিলে মোটরসাইকেল চালক ছিটকে পড়েন। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। খবর পেয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ ও ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হক বলেন, মরদেহ ও তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করে থানায় রাখা হয়েছে। নিহতের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।


ঢাকার খিলগাঁওয়ে গৃহবধুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

আপডেটেড ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ২১:২৭
ঢামেক প্রতিনিধি

রাজধানীর খিলগাঁওয়ের একটি বাসা থেকে মোসাম্মৎ জান্নাত (২২) বছর বয়সী এক গৃহবধুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে খিলগাঁও থানা পুলিশ।

আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের নিয়ে গেলে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক রাত পৌনে ৮টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার এলাকায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খিলগাঁও থানার উপ পরিদর্শক (এস.আই) নিপেন বিশ্বাস।

তিনি জানান, আজ সন্ধ্যার দিকে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে একটি ৭ তলার ভবনের (বাড়ি নং- ২৯/ঝ/) ঘর থেকে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ বিষয়ে এস.আই আরও জানান, পারিবারিক কলহের কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন পেলে ঘটনার আসল কারণ জানা যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বিষয়:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ২১:১৫
রাবি প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ১৮৪ নম্বর কক্ষে ফুয়াদ আল খতিব নামে একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

আজ রোববার বিকাল ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

প্রথমে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে তাকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ একরামুল ইসলাম।

মৃত ফুয়াদ সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ও হলের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী। গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম রাজিবপুর গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে তিনি।

হলের অন্য শিক্ষার্থীরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ফুয়াদ গ্রামের বাড়িতে যান। গতকাল শনিবার রাত ৩টার দিকে ফিরে এসে হলের কক্ষে প্রবেশ করেন। তারপর আজ বিকেল ৩টা পর্যন্ত সহপাঠীরা তাকে মুঠোফোনে সংযোগ না পেয়ে কক্ষে আসেন এবং অচেতন অবস্থায় তাকে দেখতে পান। পরে হল প্রশাসনের সহায়তায় একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হলের প্রাধ্যক্ষ একরামুল ইসলাম আরও বলেন, আবাসিক শিক্ষার্থীদের সহায়তায় ফুয়াদকে অচেতন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিন থেকে চার ঘণ্টা আগে ফুয়াদ মারা গেছে বলে চিকিৎসক প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন। তবে মারা যাওয়ার সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।


নানা বাড়ি বেড়াতে গিয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

আপডেটেড ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ২১:১২
মাদারীপুর প্রতি‌নি‌ধি

মাদিহা নামের এক দেড় বছর বয়সী শিশুর পুকুরের পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে। মাদারীপুরের কালকিনিতে নানাবাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল সে।

আজ রোববার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে। নিহত মাদিহা উপজেলার শিকারমঙ্গল গ্রামের এনায়েত মুন্সির মেয়ে।

হাসপাতাল ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, পৌর এলাকার চর বিভাগদী গ্রামে মায়ের সঙ্গে নানাবাড়ি বেড়াতে যায় মাদিহা। ঘরের পাশে একটি পুকুর পাড়ে খেলতে গিয়ে পা পিছলে পুকুররে পানিতে পড়ে যায় সে। পরে তাকে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে এলাকাবাসি। উদ্ধারের পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

মাদিহার নানু আফসানা বেগম জানান, সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে আমার নাতি মাদিহা খেলতে গিয়ে পুকুরের পানিতে ডুবে মারা গেছে।

এ ব্যাপারে শিকারমঙ্গল গ্রামের ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী জানান, আসলে বিষয়টি দুঃখজনক। বাচ্চাটি পানিতে ডুবে মারা গেল।

বিষয়:

পর্যটকবাহী জাহাজের যাত্রীদের উদ্ধার করল বাংলাদেশ কোস্টগার্ড

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৯:৪১
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে ডুবোচরে আটকে পড়া সেন্টমার্টিনগামী একটি পর্যটকবাহী জাহাজের যাত্রীদের উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। পর্যটকদের উদ্ধার করে সেন্টমার্টিনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

আজ রোববার দুপুরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে নাফনদীর মোহনায় নাইক্ষ্যংদ্বীয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জাহাজের নাবিকের অদক্ষতার কারনে এমনটি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি।

তিনি বলেন, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে পর্যটকবাহী জাহাজ “এম ভি গ্রিন লাইন-১” ডুবোচরে আটকা পড়ে। আমাদের একাধিক উদ্ধারকারীদল ঘটনাস্থল থেকে পর্যটকদের উদ্ধার করে। পরে তাদের স্পীডবোটে করে সেন্টমার্টিন দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় বেশ কয়েকজন পর্যটক অসুস্থত হয়ে পড়েলে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, রোববার সকালে টেকনাফস্থ বিআইডব্লিউটিএ ঘাট হতে ৪৪ জন পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে বের হয় জাহাজটি। সেন্টমার্টিনের চার নটিক্যাল মাইল উত্তরে একটি ডুবোচরে আটকে যায় জাহাজটি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) টেকনাফ অঞ্চলের ট্রাফিক সুপারভাইজার জহির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, সেন্টমাটিনে যাওয়ারপথে পর্যটকবাহী এমভিগ্রিন লাইন-১ নামে জাহজটি ডুবোচরে আটকে যায়। পরে কোস্টগার্ডকে খবর দিলে তাদের উদ্ধার করা হয়। পর্যটকবাহি অন্য জাহাজগুলো নিরাপদে সেন্টমার্টিনে পৌঁছে গেলেও চালকের অদক্ষতার কারনে গ্রিনলাইন জাহাজটি আটকে যায়।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজটি ডুবোচরে আটকা পড়েছিল। পরে কোস্টগার্ড তাদের উদ্ধার করে। বিষয়টি তদন্ত করে জাহাজ কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।


ঝুঁকিপূর্ণ বেড়া পৌর মার্কেটে ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা

পলেস্তারা খসে পড়েছে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা বেড়া পৌর মার্কেটের ভবনের। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৭:১৯
রাউজ আলী, বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি

পাবনার বেড়া পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত তিন তলাবিশিষ্ট বেড়া পৌর মার্কেটের প্রধান ফটকে টাঙানো রয়েছে ‘একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তি’ শিরোনামে বিশালাকৃতির এক ডিজিটাল নোটিশ। কিন্তু ব্যবসায়ীরা ওই নোটিশের কোনো গুরুত্ব দেয়নি। কর্তৃপক্ষও কেবল নোটিশ টাঙিয়েই দায় সেরেছে।

পৌর কর্তৃপক্ষের টাঙানো ওই নোটিশে বলা হয়েছে, ইতোপূর্বেও এই ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যবহার অনুপযোগী হিসেবে চিহ্নিত করে ভবনের ব্যবসায়ীদের মালামাল সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও ব্যবসায়ীরা ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনেই ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। পুনরায় ব্যবসায়ীদের মালামাল স্থানান্তরের অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় জানমালের কোনো ক্ষতি হলে পৌর কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। গত দশ বছর ধরেই চলছে এ অনুরোধের আসর।

বেড়া পৌর মার্কেটটিকে ২০১৩ সালে প্রথম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এরপর একাধিকবার মার্কেটের অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ীকে পৌর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মালামালসহ সরে যাওয়ার জন্য নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু বিকল্প যাওয়ার জায়গা না থাকায় ঝুঁকি জেনেও ব্যবসায়ীরা এই ভবনেই ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।

তবে এই ভবনে ব্যবসা চালাতে গিয়ে মার্কেটের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা সব সময়ই ভবনটি ধসে যাওয়ার আতঙ্কে থাকেন। এর ওপর ভূমিকম্প হলে তো কথাই নেই। আতঙ্ক এমন চরমে ওঠে যে, তখন অনেকেই এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। গত শনিবার সকালে সংঘটিত ভূমিকম্পের সময়েও প্রাণভয়ে অনেককে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৯২ সালে ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গায় সাবেক পৌর কর্তৃপক্ষ একটি তিন তলা ভবন গড়ে তোলে। অথচ বিধি মোতাবেক ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গায় পাকা স্থাপনা নির্মাণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। স্থানীয় অনেকের অভিযোগ, ওই সময় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে দুর্বল অবকাঠামোর ওপর ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এর ফলে নির্মাণের ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যেই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।

এদিকে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও ব্যবসায়ীদের বিকল্প কোনো স্থানে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়নি পৌর কর্তৃপক্ষ। এমনকি ভবনটির কোনো রকম সংস্কারের উদ্যোগও নেয়া হয়নি। ফলে এটি দিন দিন আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যেই এই ভবনের বিম ও ছাদের পলেস্তারা খুলে পড়েছে। এতে করে কখনো ভবনের ব্যবসায়ী আবার কখনো ক্রেতা কিংবা পথচারীরা আহত হচ্ছেন।

পৌর সুপার মার্কেটের উত্তর-পশ্চিম দিকের ১৭ নম্বর দোকান ভাড়া নিয়ে হার্ডওয়্যারের ব্যবসা চালাতেন মো. মনিরুজ্জামান। দশ দিন আগে তিনি মার্কেট থেকে তার দোকানটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দোকানের সামনের অংশ ও ভেতরের ছাদ থেকে প্রায়ই ইটের টুকরা ও প্লাস্টার খুলে পড়ে। মাস-তিনেক আগে দোকানের ভেতরে ছাদ থেকে বড় একটি অংশ আমার সামনে খুলে পড়েছিল। সেদিন অল্পের জন্য বেঁচে গেছি।’

পৌর মার্কেটে থাকা মুদি দোকানি লিটন চৌধুরী, কাঁসা-পিতল ব্যবসায়ী আব্দুল মোমিনসহ চার-পাঁচজন ব্যবসায়ী জানান, দোকান ছেড়ে দিলে আয়ের পথ একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে। তাই মারাত্মক ঝুঁকি জেনেও তারা এই মার্কেটে ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।

পৌর মার্কেটের সঙ্গে একেবারে লাগোয়া আব্দুল জলিল সুপার মার্কেটের মালিক ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘পৌর মার্কেট ভবনটি ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত সম্পত্তির ওপর অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। এতে দক্ষিণ দিকের ১০ থেকে ১২টি দোকান পুরোপুরি আড়ালে পড়ে গেছে। এসব দোকানে প্রবেশের রাস্তা একেবারেই সরু হয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো- পৌর মার্কেটের ভবনটি এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে আমাদের সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয়।’

বেড়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী ফিরোজুল আলম বলেন, ‘সম্প্রতি ভবনটির অবস্থা-সংক্রান্ত একটি ডিজিটাল নোটিশ বিজ্ঞপ্তি আকারে ভবনে টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। পৌরসভার পক্ষ থেকে মার্কেটটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যবসায়ীদের মাসিক ভাড়া স্থগিত করা হয়েছে। তৃতীয় তলায় থাকা পাবলিক লাইব্রেরিটিও সরিয়ে নেয়া হয়েছে।’

বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটটি ভেঙে ফেলার ব্যাপারে পৌর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অতিদ্রুত আমি কথা বলব।’

বিষয়:

নিয়ন্ত্রণ হারানো ট্রাকের চাপায় প্রাণ গেল ২ অটোরিকশাযাত্রীর

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ট্রাকচাপায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। শনিবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বেড়তলা মুজাহিদ পেট্রোল পাম্পের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, সদর উপজেলার তালশহর পূর্ব ইউনিয়নে সোনাসার গ্রামের আ. খালেকের ছেলে মো. আ. রহমান (৫৫) ও হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার সুবিদপুর গ্রামের আনসার আলীর ছেলে ইকবাল হোসেন (৩২)।

খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওসি বলেন, ‘বেড়তলা মুজাহিদ পেট্রোল পাম্পের সামনেই দাঁড়ানো ছিল অটোরিকশাটি। এসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়াগামী একটি ডাম্প ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অটোরিকশাটির ওপরে উঠে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশাযাত্রী আ. রহমান এবং হাসপাতালে নেয়ার পরে ইকবাল হোসেন মারা যান।’

ওসি আরও বলেন, ‘নিহতদের পরিবারের সিদ্ধান্তে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলেছে। ঘাতক ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে গিয়েছে।’


বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে আমন ধান ও শীতকালীন সবজি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সালাহ্উদ্দিন শুভ, মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’-এর প্রভাব পড়েছে। টানা দুই দিন আকাশ মেঘলা থাকার পর গত বৃহস্পতিবার ভোর থেকে অব্যাহত গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে আমন ধানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা। বৃষ্টির কারণে অনেক কৃষক জমি থেকে আমন ধান কাটা, মাড়াই করতে না পারায় লোকসানের ভয় পাচ্ছেন। এ ছাড়া শীতকালীন সবজিও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

উপজেলার কৃষকরা জানান, এর আগে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আমন ধান ও শীতকালীন সবজির। এখন আমন ধান ঘরে তোলার ধুম পড়েছ। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ধান কাটা, মাড়াই ও ধান শুকাতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে খেতের পাকা ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে। শুধু আমন ধান নয়, রবি ফসলও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে ১৭ হাজার ৩০৮ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষকরা ৫২ শতাংশ আমন ধান ঘরে তুলেছেন। এ ছাড়া ১ হাজার ৫৯৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি ও ৫৫৫ হেক্টর জমিতে আলু, ২৭৯ হেক্টরে টমেটো ও ৪৬৬ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের কৃষক আনোয়ার মিয়া বলেন, ‘আমি ৫ একর জমিতে আমন ধান চাষ করেছি। আমার ধান পুরোপুরি পেকে গেছে। কিছুদিন আগে বৃষ্টির কারণে আমন ধানের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এখন আবার বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানো যাচ্ছে না। ধান ঘরে তোলার সময়ে দুইবারের বৃষ্টিতে অনেক ক্ষতির মুখে পড়লাম।’

রহিমপুর ইউনিয়নের কৃষক বেলাল মিয়া বলেন, ‘কিছুদিন আগে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কারণে আমার আলু ও সরিষা খেত নষ্ট হয়েছে। এখন আবার রোপণ করেছি, আবার বৃষ্টি হচ্ছে। পাকা আমন ধানেরও অনেক ক্ষতি হয়েছে।’

কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, মিধিলির বৃষ্টির কারণে আগে পাকা আমন ধান ও শীতকালীন সবজির কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। এখনকার বৃষ্টিতে আবারও পাকা আমন ধান, সরিষাসহ কিছু সবজির ক্ষতি হতে পারে। পাকা ধান দ্রুত কাটার জন্য কৃষকের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।


রহস্যঘেরা হাজার বছরের দম্পতি বৃক্ষ ‘বট-পাকুড়’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রবীর মোহন্ত, বগুড়া

বিশাল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এ বট-পাকুড় বৃক্ষের দৃষ্টিনন্দন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করে সবাইকে। সবুজ গাছের ডালে ডালে অজস্র পাখির নিবাস। সেসব পাখির কল-কাকলি মুখরিত করে রাখে চারদিক। প্রকৃতির এই অবাক শিল্প উপভোগ করার পাশাপাশি এর গল্প শুনেও আনন্দ পায় অনেকে।

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের চন্ডেশ্বর গ্রামের ছায়াঘেরা শীতল পরিবেশ। ডানে-বাঁয়ে, সামনে-পেছনে যেদিকে তাকানো যাবে বট-পাকুড়ের বিস্তার ছাড়া কিছুই নেই। শত শত মানুষ হাজার বছরের এই দম্পতি বৃক্ষের নিচে বসে বিশ্রাম নেয়। এলাকার বয়োবৃদ্ধদের কাছ থেকে শোনা যায় এর ইতিহাস। এই বট-পাকুড় বৃক্ষকে ঘিরে রয়েছে নানা উপকথা, তৈরি হয়েছে নানা কল্পকাহিনি। তা কখনো আনন্দের, কখনো ভয়ের, আবার কখনো রোগমুক্তির ভরসাস্থল। এসব কিছুই কল্পনানির্ভর। সব ধর্মের মানুষ রোগমুক্তিসহ অন্য কিছু লাভের আশায় এই দম্পতি বৃক্ষের তলায় মানত করে।

ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক ধরে বগুড়ার শেরপুর কলেজগেট এলাকা থেকে সিএনজিতে ২০ টাকা ভাড়ায় কুসুম্বী ইউনিয়নের চণ্ডেশ্বর গ্রামে পৌঁছলেই দেখা মিলবে হাজার বছরের রহস্যঘেরা এই দম্পতি বৃক্ষের। বট-পাকুড় বৃক্ষ একের পর এক ঝুরি নামিয়ে বিরাট আকার ধারণ করেছে। ঝুরিমূল থেকে সৃষ্ট প্রতিটি ডাল সন্তানের মতো জড়িয়ে আছে। মূলবৃক্ষ থেকে নেমে আসা প্রতিটি ঝুরিমূল কালের পরিক্রমায় নতুন একেকটি বট-পাকুড় বৃক্ষে পরিণত হয়েছে।

বয়স হাজার বছর হলেও এখনো যেন তাজা তরুণ আর চিরসবুজ। বার্ধক্যের ছাপ লাগেনি গায়ে। বৃক্ষটির বেড় প্রায় ১০০ ফুট। সনাতন ধর্ম বিশ্বাস অনুসারে, পাকুড় বৃক্ষকে পুরুষ আর বট বৃক্ষকে নারী মনে করা হয়। সেই বিশ্বাস থেকে পূর্বপুরুষরা ঢাকঢোল বাজিয়ে, শাঁখা-সিঁদুর পরিয়ে দুই বৃক্ষের বিয়ের সব কাজ সম্পন্ন করে। এখনো হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকে বিভিন্ন তিথিতে এখানে এসে পূজা দিয়ে যায়।

ওই গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ কাদা উল্লাহ নামে এক ব্যক্তি জানান, তিনি জন্মের পর থেকে গাছগুলোকে একই অবস্থায় দেখছেন। তার বাবা-দাদারও দেখেছে একই। দম্পতি বট-পাকুড় বৃক্ষ ৫ বিঘা জমিজুড়ে রয়েছে। ঘিরে রেখেছে ১০ থেকে ১২ ফুট আয়তনের মোগল আমলের সুরকি ও ইটের তৈরি একটি ঘরকে। আর এখান থেকেই শুরু হয় রহস্য। কেউ বলছে এটা জিনদের আস্তানা, কেউবা বলেন সন্যাসীদের ঘর। অনেকে বলেন জাগ্রত মন্দির। এখনো অজানা, কী আছে ওই ঘরে। নানা অসুখে মানত করেন বিভিন্ন ধর্মের মানুষ। এ থেকে সুস্থতা ফিরে পেয়েছেন মনে করে এর ওপর আস্থা রাখার ঘটনাও প্রচুর।

অনেকে বলেন, মাঝে মধ্যে রাতে বৃক্ষ তলায় বেশ কয়েকটি আলো জ্বলে, আবার বাতাস হয়। নিয়ম মেনে চললে কোনো ক্ষতি হয় না। তবে যে বিশ্বাস করেনি তার ক্ষতি হয়েছে। যার দ্বারা এ বৃক্ষের আঠা বের হয়, তার শরীর দিয়ে রক্ত পড়ে এখনো। ক্ষমা চাইলে সুস্থ হয়, নতুবা নয়।

পঁচাত্তর বছর বয়সি আলহাজ মজিবর রহমান তার পৈতৃক সীমানায় বেড়ে ওঠা দম্পতি বৃক্ষ প্রসঙ্গে বলেন, ‘১৯৬২ সালে ঝড়ে বৃক্ষের একটি ডাল ভেঙে পড়ে। ভাঙা ওই বৃক্ষের ডাল বিক্রির জন্য চেষ্টা করেছি; কিন্তু রাতে স্বপ্নে দেখার পর আর বিক্রি করিনি। কোনোদিন আর করবও না।’

বিষয়:

শিক্ষার্থীবিহীন বিদ্যালয়ে নতুন কর্মচারী নিয়োগ

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাসরিন সিপু, বরগুনা

বরগুনার আমতলী উপজেলার মধ্য চন্দ্রা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আছে হাতেগোনা কয়েকজন। অথচ বেতনভাতা ঠিকই নিচ্ছেন আট শিক্ষক-কর্মচারী। উপরন্তু নিয়োগ দিয়েছেন নৈশপ্রহরী ও পরিছন্নকর্মীসহ আরও চারজন। শিক্ষার্থী না থাকলে কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে লাভ কি? এমন প্রশ্ন এলাকাবাসীর।

১৯৯৩ সালে স্থাপিত হয় মধ্য চন্দ্রা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হয়। বছরের বেশির ভাগ সময়ই হয় না ক্লাস, নেই সাইনবোর্ডও। বিভিন্ন অনিয়মের কারণে বহু বছর আগেই ভেঙে পড়েছে শিক্ষাব্যবস্থা। নামমাত্র চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। স্কুলে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ১০/১৫ জন। অথচ এ প্রতিষ্ঠানে আটজন শিক্ষক কর্মচারীর পেছনে সরকার প্রতি মাসে খরচ বহন করছে ১ লাখ ৩২ হাজার ৯৫০ টাকা।

এ অবস্থায় শিক্ষার্থী শূন্য প্রতিষ্ঠানে গত ০৪ নভেম্বর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে চারজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। শিক্ষার্থীশূন্য প্রতিষ্ঠানে কীভাবে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনভাতা প্রদান ও নতুন করে কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের।

অভিযোগ উঠেছে, চেক জালিয়াতি মামলায় এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক সহকারী শিক্ষক দীর্ঘ ১৮ মাস বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকেও প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় নিয়মিত বেতনভাতা তুলছেন। চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী, কোনো শিক্ষক কিংবা কর্মচারী মামলায় কারাভোগ করলে সাময়িক বরখাস্ত ও সাজাপ্রাপ্ত হলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি বরখাস্ত করে আবেদন বোর্ডে পাঠাবে; কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষককে বরখাস্ত না করে নিয়মিত বেতনভাতা দিয়ে যাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট সোনালী ব্যাংক সূত্রে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে।

গত ৩০ নভেম্বর সরেজমিনে বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ শ্রেণিকক্ষে চেয়ার-টেবিল থাকলেও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি হাতেগোনা। একজন শিক্ষক তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নিচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে চারজন, সপ্তম শ্রেণিতে কোনো শিক্ষার্থী নেই ও অষ্টম শ্রেণিতে তিনজনসহ মোট সাতজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে।

প্রধান শিক্ষক মো. সুলতান বিশ্বাসের কাছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘ভুলবশত আলমারির চাবি বাসায় ফেলে রেখে এসেছি। সাজাপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. শামীমের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় স্কুলে আসছেন না তিনি। ম্যানেজিং কমিটির সব সদস্যের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।’

সাজাপ্রাপ্ত পলাতক শিক্ষক মো. শামীমের মুঠোফোনে ফোন দিলে তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি চাওড়া ইউপি চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বাদল খানকে ফোন দিলে দৈনিক বাংলার প্রতিনিধির পরিচয় পাওয়ার পরে বলেন, ‘আপনি এর আগেও আমার বিরুদ্ধে অনেক কথা বলেছেন, নিউজ করেছেন। আজ আবার এ বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করছেন। আমি আপনার কোনো কথার উত্তর দেব না।’

পরবর্তীতে তথ্য নেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক সুলতান বিশ্বাসের মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘কত টাকা লাগবে বলেন পাঠাইয়া দিই। নিউজ করার দরকার কি? সভাপতির আদেশ, স্কুলের কোনো তথ্য সাংবাদিককে দেওয়া যাবে না।’

এলাকার বাসিন্দা মো. সোহরাব হোসেন মাস্টার বলেন, ‘আমিও একজন শিক্ষক। আমি যতটুকু জানি যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মোট শিক্ষার্থীর ৬০ ভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত না থাকলে শিক্ষকরা কোনোভাবেই সরকারি অংশের বেতনভাতা উত্তোলন করতে পারবেন না; কিন্তু এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দিনের পর দিন কোনো শিক্ষার্থী উপস্থিত না থাকলেও শিক্ষকরা ঠিকই বেতন পাচ্ছেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান, বিদ্যালয় চলাকালীন ১০-১২ জনের বেশি ছাত্র-ছাত্রী আসে না। সবাই পরীক্ষাও দিচ্ছে না। কারণ এখানে শিক্ষার মান একেবারে ভালো না।

উপজেলা শিক্ষা অফিসের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা একাডেমি সুপারভাইজার সেলিম মাহমুদ বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আমার বক্তব্য না নিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারের বক্তব্য নিন। তিনি বর্তমানে উপজেলার দায়িত্বে আছেন।

জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমার জানামতে ছাত্রসংখ্যা ১০/১৫ জন, এরকম কোনো স্কুল আমতলীতে নেই।’

এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বেসরকারি স্কুলের তদারকি করা প্রশাসনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। তাই স্কুলের এ বেহালদশা। তবে কেউ যদি লিখিত অভিযোগ করেন তাহলে তিনি বিভাগীয়ভাবে ব্যবস্থা নেবেন।

বিষয়:

চট্টগ্রাম-২: এক আসনে তিন দলের প্রধানরা এমপি প্রার্থী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রতন কান্তি দেবাশীষ, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম-২ ফটিকছড়ি আসন থেকে তিনটি রাজনৈতিক দলের প্রধান তিন নেতা এমপি পদে লড়তে চান। এ জন্য তারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। যাচাই-বাছাইয়ে বৈধও হয়েছে তাদের মনোনয়নপত্র। এ তিন প্রার্থী হলেন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান আলহাজ সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মতিন এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) চেয়ারম্যান শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আলহাসানী আল মাইজভাণ্ডারী। এদের মধ্যে সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী ও সৈয়দ সাইফুদ্দিন মাইজভাণ্ডারী সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। এ তিন প্রার্থীই সুন্নী মতাদর্শী।

জানা যায়, মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফের কারণে ফটিকছড়ির আলাদা পরিচিতি রয়েছে। ফটিকছড়ির ভোটারদের মধ্যে একটি বড় অংশ মাইজভাণ্ডার দরবারের অনুসারী হলেও ভোটাররা জাতীয় রাজনীতির মতোই দুই ধারা আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে বিভক্ত।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক। শরিক দল হিসেবে সৈয়দ নজিবুল বশর ভাণ্ডারী গেল দুবার নৌকা মার্কায় নির্বাচন করে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এবারও তিনি নৌকা পাওয়ার আশায় রয়েছেন। অন্য দুই দল বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টিও (বিএসপি) সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় রয়েছে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ১৯ নম্বরে নিবন্ধন পায় তরিকত ফেডারেশন। ২০০৮ সালের ৯ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন থেকে নিবন্ধন পায় দলটি। দলটির নির্বাচনী প্রতীক ‘ফুলের মালা’। কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার ধানমন্ডিতে। দলটির চেয়ারম্যান আলহাজ সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী।

নির্বাচন কমিশনে ৩৫ নম্বর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পায় বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট। ২০০৮ সালের ২০ নভেম্বর নিবন্ধন পায় দলটি। দলটির নির্বাচনী প্রতীক ‘মোমবাতি’। কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার ধানমন্ডিতে। দলটির চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মতিন। নির্বাচন কমিশনে সবশেষ নিবন্ধিত দল বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)। দলটির নিবন্ধন নম্বর ৪৯। দলটির নির্বাচনী প্রতীক ‘একতারা’। কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার মিরপুরে। দলটির চেয়ারম্যান শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ।

২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও এ তিনজনই প্রার্থী হয়েছিলেন। তার মধ্যে ফটিকছড়ি আসনে মহাজোটের সমর্থন নিয়ে নৌকা প্রতীকে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৩০ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী। একই আসনে মোমবাতি প্রতীক নিয়ে ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১০ হাজার ১৭৪ ভোট পান শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ।

এ প্রসঙ্গে মাওলানা এম এ মতিন বলেন, ‘আমরা এককভাবে নির্বাচন করছি। ফটিকছড়ি ও পটিয়া আসন থেকে এককভাবে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘ফটিকছড়িতে আমাদের বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে। ইসলামী ফ্রন্টের বিশাল কর্মীবাহিনী রয়েছে। আমাদের ভোট ব্যাংক রয়েছে এখানে।’

বিএসপি চেয়ারম্যান শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আলহাসানী আল মাইজভাণ্ডারী বলেন, ‘আমরা এককভাবে নির্বাচন করছি। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’

অন্যদিকে আসনটিতে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী দেওয়া হলেও এবার ১৪ দলীয় জোটের সমর্থন প্রত্যাশা করছেন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী।

তিনি বলেন, ‘আমরা জোটে আছি। জোটের বাইরে কোনো হিসাব নেই। জোট আগেও ছিল, এখনো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। জোটের বাইরে কোনো কথা নেই।’

সূত্র জানায়, নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী ও সৈয়দ সাইফুদ্দিন মাইজভাণ্ডারী সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা।

রাজনৈতিক মহলে আলোচনা রয়েছে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট থেকে চাচা-ভাতিজা দুজনের একজনকে এ আসন থেকে সমর্থন জানানো হতে পারে। যদিও আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন প্রয়াত সংসদ সদস্য রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। তিনি গতবারও মনোনয়ন পেয়েছিলেন; কিন্তু জোটের কারণে সরে দাঁড়ান। এবারও তাকে সরে দাঁড়াতে হতে পারে।

তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারাও দীর্ঘ দিন থেকে দাবি জানিয়ে আসছেন দল থেকে প্রার্থী দেওয়ার জন্য। বাইরের কাউকে যাতে এ আসনটি ছাড়া না হয়। এ ক্ষেত্রে জোটের শরিক হিসেবে কাউকে দেওয়া হলেও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকায় বেকায়দায় পড়তে পারেন শরিকরা। পদত্যাগী উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা এইচ এম আবু তৈয়ব এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী।

বিষয়:

আজ নেত্রকোনা মুক্ত দিবস

বধ্যভূমিগুলোতে স্মৃতিফলক নির্মাণের দাবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সালাহ উদ্দীন খান রুবেল, নেত্রকোনা

আজ ৯ ডিসেম্বর, নেত্রকোনা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক-হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ সমরে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তাজা রক্তে রঞ্জিত হয়ে শত্রুমুক্ত হয় নেত্রকোনার পবিত্র ভূমি।

এই দিনে জেলা শহরের চতুর্দিক থেকে ভোররাতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা সম্মুখযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন, সেদিন শহরের উত্তর দিক থেকে হানা দিলে দক্ষিণে নেত্রকোনা শহরের কৃষি ফার্মে (বিএডিসি) এক ভয়াবহ যুদ্ধের মাধ্যমে মুক্ত হয় নেত্রকোনা, উত্তোলিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। পূর্ণাঙ্গ বিজয়ের পূর্ব মুহূর্তে পাক-হানাদার বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার (আবু খাঁ), বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সিদ্দিক আহম্মেদ (সাত্তার) নামে তিনজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। জেলার বধ্যভূমিগুলোতে স্মৃতিফলক নির্মাণের দাবি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের।

৯ মাস যুদ্ধে নেত্রকোনায় ৫৯ জনের অধিক বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ শত শত নিরস্ত্র মানুষ পাক বাহিনীর হাতে নিহত হন। সম্ভ্রম হারান কয়েক শত মা-বোন। ২৫ এপ্রিল পাক বাহিনী নেত্রকোনা শহরে প্রবেশ করে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে ডা. মিহির সেন, তার ভাই সিদ্ধার্থ সেন ও বাড়ির কাজের লোক করুণাকে। পরে রাজাকাররা ধরে নিয়ে হত্যা করে মিহির সেনের বাবা হেম সেন এবং কাকা অখিল সেনকে। তারপর চলতে থাকে নির্মম হত্যাকাণ্ড। পাক-হানাদার ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকাররা জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দেয় গ্রামের পর গ্রাম। সাতপাই এলাকায় অবস্থিত নেত্রকোনা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজটিতে (পূর্বনাম-ভোকেশনাল) পাক বাহিনী তাদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করত।

পাক-হানাদারদের অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপীড়নের সাক্ষী হয়ে আছে এ কলেজটি। তবে আজ পর্যন্ত এ কলেজে কোনো বধ্যভূমি বা স্মৃতিফলক নির্মাণ হয়নি। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের সঠিক ইতিহাসসহ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থান সম্পর্কে জানার জন্য তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করতে জেলার বদ্ধভূমিগুলোতে স্মৃতিফলক নির্মাণের দাবি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ও বর্তমান প্রজন্মের।

বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান শাহীন উদ্দীন আহমেদ (ভিপি শাহীন) বলেন, নেত্রকোনায় ১৭টি বধ্যভূমি রয়েছে। সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, প্রত্যেকটি বধ্যভূমিতে স্মৃতিফলক নির্মাণ করার।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ জেলা শাখার সভাপতি, ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান অধ্যাপক ওমর ফারুক বলেন, মুক্ত দিবসে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত এবং চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের চূড়ান্ত বিচারের দাবিসহ আল-বদর, আল-শামস, রাজাকার, দালাল-শান্তি কমিটির উত্তরসূরিদের বিতাড়িত করা হোক।

বিষয়:

banner close