বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
১৪ শ্রাবণ ১৪৩২

মুরগীর পেটে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া

ছবি: সংগৃহীত
রাজিউল হাসান
প্রকাশিত
রাজিউল হাসান
প্রকাশিত : ১৪ অক্টোবর, ২০২২ ০৮:১৫

রাজিউল হাসান

খাঁচার ভেতর অনেক মুরগি জড়াজড়ি করে আছে। ক্রেতা মুরগি পছন্দ করতেই তা ওজনের পর জবাই করে রাখা হলো একটি বাক্সে। সেই বাক্সে আগে বিক্রি হওয়া আরও কয়েকটি মুরগি রাখা আছে। বাক্সের কাছেই মুরগির পালক-চামড়া ছাড়ানোয় ব্যস্ত এক বা দুজন। সেই পালক-চামড়া, নাড়িভুঁড়ি জড়ো করে ফেলা হচ্ছে আরেকটি ঝুড়িতে। দোকানের নিচ দিয়ে তরল বর্জ্য, মুরগির বিষ্ঠা চলে যাচ্ছে ড্রেনে।

রাজধানীসহ দেশের শহর-নগরগুলোয় মুরগির বাজারে যাতায়াত করা যে কারও কাছে এ দৃশ্য পরিচিত। দুই দশকেরও বেশ আগে দেশে পোলট্রি খাতের প্রসার শুরু। এখন এই খাত এতটাই বড় যে প্রায় প্রতিটা গ্রামে মুরগি কিংবা ডিম উৎপাদনকারী খামারের দেখা পাওয়া যায়। কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রাণিজ আমিষকে সুলভ করাসহ নানা ভূমিকা রেখে পোলট্রি খাত দেশের অর্থনীতিকে করেছে আরও গতিশীল। কিন্তু সচেতনতার ঘাটতির কারণে এ খাতই এখন জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠছে। কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর ৫টি বড় বাজারে বিক্রি হওয়া মুরগির পেটে মিলেছে ওষুধ প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া।

দেশেই এক গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে মুরগির পেটে থাকা তিন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। এই ব্যাকটেরিয়াগুলো হলো এশ্চেরিচিয়া কোলাই (ই-কোলাই), স্যালমোনেলা ও স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস (এস অরিয়াস)।

সম্প্রতি বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেচার এ বিষয়ে একটি বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

গবেষণাটি করেছেন ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। তারা রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী মুরগির বাজার, গুলিস্তানের কাপ্তান বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও মিরপুর-১ মুরগির বাজারের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এই পাঁচ বাজার থেকেই রাজধানীর প্রায় সব মুরগির বাজার, সুপারশপে মুরগি যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহারে ব্যাকটেরিয়া ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে ওঠে। ওষুধ প্রতিরোধী জীবাণুর সংক্রমণে গুরুতর সমস্যা হতে পারে। ফুসফুস, যকৃৎ, কিডনিসহ শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো আক্রান্ত হয়ে জীবনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনেক দিন ধরেই অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহারে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্সকে (এএমআর) বিশ্বের শীর্ষ ১০টি হুমকির একটি হিসেবে ঘোষণা করেছে। বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেট-এ গত ১৯ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০১৯ সালে ৪৯ লাখ ৫০ হাজারের মতো মানুষের মৃত্যুর পেছনে এএমআর ভূমিকা রেখেছে। এর মধ্যে ১২ লাখ ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যুর সরাসরি কারণ এএমআর। এই সংখ্যা এইডস কিংবা ম্যালেরিয়ায় বার্ষিক মৃত্যুর সংখ্যার দ্বিগুণের কাছাকাছি।

এই স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে বাংলাদেশ সরকারও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়ে নিউইয়র্কে এএমআরবিষয়ক এক সভায় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বিশ্বনেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, মুরগির মলদ্বার থেকে সংগৃহীত নমুনায় পাওয়া এশ্চেরিচিয়া কোলাই ব্যাকটেরিয়ার ৯৩ দশমিক ২ শতাংশই ওষুধ প্রতিরোধী। স্যালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার শতভাগ এবং স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস ব্যাকটেরিয়ার ৯৭ দশমিক ২ শতাংশ ওষুধ প্রতিরোধী। এর মধ্যে স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস ব্যাকটেরিয়ার ৮ দশমিক ৩ শতাংশ ব্যাপকভাবে ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে, যার সংক্রমণ মোকাবিলায় প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিকগুলো অনেকাংশে এখন অকার্যকর। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই অবস্থাকে বলে মাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্স (এমডিআর)।

গবেষক দল ওই পাঁচ কাঁচাবাজারের চিকেন মার্কেটসংলগ্ন ড্রেন থেকেও নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন। এসব নমুনা পরীক্ষায় দেখা গেছে, সংগৃহীত নমুনায় পাওয়া এশ্চেরিচিয়া কোলাই ব্যাকটেরিয়ার ৮০ শতাংশ এবং স্যালমোনেলার শতভাগ ওষুধ প্রতিরোধী। ড্রেন থেকে সংগৃহীত নমুনায় পাওয়া স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস ব্যাকটেরিয়াগুলোও ব্যাপকভাবে ওষুধ প্রতিরোধী।

এশ্চেরিচিয়া কোলাই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে ডায়রিয়া, পেটব্যাথা, বমিভাব বা বমির মতো উপসর্গ দেখা দেয়। স্যালমোনেলার সংক্রমণে ওই তিন উপসর্গ ছাড়াও জ্বর, মাথাব্যথা, এমনকি মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে। স্টেফাইলোকক্কাস অরিয়াসের সংক্রমণে ফোঁড়া বা এর মতো উপসর্গ হতে পারে। সঙ্গে জ্বরও থাকতে পারে। গবেষকরা বলছেন, এসব পানি ও খাদ্যবাহিত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে যথাসময়ে চিকিৎসা না পেলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। বিশেষ করে শিশু ও বয়োবৃদ্ধসহ যাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম, তাদের জন্য ঝুঁকিটা বেশি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই তিন প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া প্রাণীর অন্ত্রে থাকে বলে তা সরাসরি সংক্রমণ ঘটাতে পারে না। তবে স্বাস্থ্য সচেতনতার ঘাটতি হলেই এগুলো হয়ে উঠতে পারে উদ্বেগের কারণ, বাড়িয়ে দিতে পারে চিকিৎসাব্যয়। গবেষকরা বলছেন, মুরগির অন্ত্র সাধারণত খাওয়া হয় না বলে এগুলো সরাসরি মানুষের পেটে যাওয়ার ঝুঁকি দৃশ্যত নেই। কিন্তু মুরগির বাজারগুলোয় যেভাবে মুরগি প্রক্রিয়াজাত করা হয়, তার কারণে এই ব্যাকটেরিয়াগুলো খুব সহজেই মুরগির মাংসে মিশতে পারে। সেই মাংস যদি ঠিকভাবে পরিষ্কার করা না হয়, ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পর্যাপ্ত সময় ধরে সেদ্ধ করা না হয়, তা হলে সংক্রমণ ঘটতে পারে।

আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হলো, মুরগির বাজারগুলোর ড্রেনেজব্যবস্থায় সরাসরি পড়ছে ওই সব মুরগির তরল বর্জ্য। এসব বর্জ্য বুড়িগঙ্গাসহ ঢাকার আশপাশের নদীগুলোয় মিশছে, যা ওষুধ প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়াগুলো ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

গবেষণায় যা পাওয়া গেছে

গবেষক দলের প্রধান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি সায়েন্স ফ্যাকাল্টির মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. তৌহিদুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, গবেষণার সময় তারা মুরগির ৫টি বাজারের প্রতিটি থেকে মুরগির মলদ্বারের ১০০টি করে নমুনা সংগ্রহ করে। আর মুরগির বাজারসংলগ্ন ড্রেন থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে ৫টি করে। মলদ্বারের ৫০০ নমুনার মধ্যে বাজারপ্রতি ১০টি করে দৈবচয়নের ভিত্তিতে মোট ৫০টি নমুনা বাছাই করে। আর ড্রেন থেকে সংগৃহীত নমুনাগুলোর মধ্যে থেকে একইভাবে ৫টি নমুনা বাছাই করেছেন তারা। এরপর পিসিআরসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন।

গবেষণা নিবন্ধে জানানো হয়, নমুনা পরীক্ষায় কারওয়ান বাজার ও মহাখালী মুরগির বাজারে ওষুধ প্রতিরোধী এশ্চেরিচিয়া কোলাই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে। এই দুই বাজারের শতভাগ নমুনাতেই এই ব্যাকটেরিয়া ছিল। মিরপুর-১ মুরগির বাজারের ৬০ ভাগ নমুনায় ওষুধ প্রতিরোধী এশ্চেরিচিয়া কোলাই পাওয়া গেছে। কাপ্তান বাজারের নমুনার ৯০ শতাংশেই ওষুধ প্রতিরোধী স্যালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। মহাখালীর মুরগির বাজারে এই ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে ৬০ শতাংশ নমুনায়। এদিকে ৫টি মুরগির বাজারের সব কয়টিতেই স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াসের উপস্থিতি বেশি (৭০-৮০ শতাংশ) পাওয়া গেছে। এই মুরগির বাজারগুলোর ৪টির ড্রেন থেকে সংগৃহীত নমুনায় ওই তিন ধরনের ব্যাকটেরিয়াই উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পাওয়া গেছে। শুধু মহাখালী মুরগির বাজারের ড্রেন থেকে সংগৃহীত নমুনায় স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াসের উপস্থিতি সেভাবে ধরা পড়েনি।

গবেষণায় দেখা গেছে, ওষুধ প্রতিরোধী ওই ৩ ধরনের ব্যাকটেরিয়া ৫ থেকে ১৫ ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে পেফ্লোক্সাসিন, অ্যাম্পিসিলিন, ট্রাইমেথোপ্রিম-সালফামেথোক্সাজোল, অ্যামোক্সিসিলিন-ক্লাভুলানিক অ্যাসিড, নালিডিক্সিক অ্যাসিড, অফলোক্সাসিন ও ডক্সিসাইক্লিন, কোলিস্টিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন, গ্যাটিফ্লোক্সাসিন ও সেফিক্সিম জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক অন্যতম। ওই তিন ব্যাকটেরিয়ায় এসব ওষুধ দিন দিন কার্যকরতা হারাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, বৃহদান্ত্র, ত্বক, খাদ্যনালি, মূত্রনালির সংক্রমণ, অস্ত্রোপচারের পর সংক্রমণ, সেপসিস, মেনিনজাইটিস, গলা, সাইনাস, ফুসফুসসহ বিভিন্ন জায়গায় ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ চিকিৎসায় চিকিৎসকরা ওই অ্যান্টিবায়োটিকগুলো ব্যবহার করে থাকেন।

মুরগির পেটে ওষুধ প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া কেন

অধ্যাপক ড. মো. তৌহিদুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমাদের দেশে পোলট্রি খাতের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। তবে তাদের, বিশেষ করে প্রত্যন্ত ও গ্রামীণ অঞ্চলের পোলট্রি খামারগুলোকে নজরদারির আওতায় আনার তেমন ব্যবস্থা এখনো গড়ে ওঠেনি। একসময় খামারিরা মুরগির দ্রুত বর্ধনের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতেন। তবে সরকারের প্রচার-প্রচারণায় এখন সচেতনতা বেড়েছে। কিন্তু তারা এখনো সংক্রমণ প্রতিরোধে আগেভাগেই মুরগিকে অ্যান্টিবায়োটিক খাইয়ে দিচ্ছেন। অর্থাৎ রোগের প্রাদুর্ভাবের আগেই ওষুধ সেবন করানো হচ্ছে। এতে মুরগির অন্ত্রে থাকা ব্যাকটেরিয়াগুলো ওষুধ প্রতিরোধ হয়ে উঠছে।’

গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়, মুরগির বাজারগুলোয় একেক খাঁচায় জড়াজড়ি করে অনেক মুরগি রাখা হয়। সেখানে এক মুরগি থেকে আরেক মুরগিতে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। আবার মুরগিগুলো প্রক্রিয়াজাত করার পর বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও ঠিক নেই। ফলে পরিবেশে ব্যাকটেরিয়াগুলো ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিও বাড়ছে।

পরিত্রাণের উপায় কী

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষ ও প্রাণীতে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধে সবার আগে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধের ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে ব্যাকটেরিয়ার ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে ওঠা ঠেকানো সম্ভব না।

অধ্যাপক ড. মো. তৌহিদুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘সরকারের ঔষধ প্রশাসনের অধীনে ভেটেরিনারি মেডিসিন ইউনিট আছে। কিন্তু তাদের জনবল প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য। এ ক্ষেত্রে একটি সমাধান হতে পারে প্রাণিসম্পদের জন্য আলাদা ঔষধ প্রশাসন গঠন করা। তিনি বলেন, প্রত্যন্ত ও গ্রামীণ মুরগির খামারগুলোকে নজরদারির আওতায় আনতে হবে। এ ছাড়া মুরগির বাজারগুলোয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে। তা হলে হয়তো এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।’

জানতে চাইলে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘মুরগির পেটে ব্যাকটেরিয়া ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে ওঠা অত্যন্ত উদ্বেগের। অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধে পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনায়ও নজর দিতে হবে। কারণ এই বর্জ্যগুলো অনেক ক্ষেত্রেই নদী-নালায় গিয়ে পড়ছে। এতে ব্যাকটেরিয়াগুলো ব্যাপক পরিসরে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে। এ সংকট মোকাবিলায় মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। মানুষ সম্পৃক্ত না হলে সরকারি কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপে খুব বেশি ফল আসবে না।’

এ ব্যাপারে কথা বলতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করে এবং খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

তবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এটা হওয়া উচিত নয়। আমরা এ বিষয়ে চিন্তা করছি।’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের গবেষণাটি তাদের হাতে নেই জানিয়ে সচিব বলেন, ‘গবেষণাটি পেলে আমরা এ বিষয়ে অবশ্যই পদক্ষেপ নেব। সবার সঙ্গে বসে সমাধানের পথ খোঁজা হবে। কারণ গবেষণায় যেসব তথ্য উঠে এসেছে, তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।’


সুনামগঞ্জে জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান নির্ধারণের লক্ষ্যে কর্মশালা অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জাহাঙ্গীর আলম, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জেলা তথ্য অফিসের সমন্বয়ে এবং ইউনিসেফের সহায়তায় ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন এনডিসি ৩.০ বা জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান নির্ধারণের লক্ষ্যে কিশোর কিশোরী ও তরুণদের নিয়ে সুনামগঞ্জ সার্কিট হাউজে মঙ্গলবার দিন ব্যাপি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পাল এর সভাপতিত্বে এবং ইউনিসেফের সোসাল এন্ড বিহেভিয়র চেঞ্জ অফিসার উম্মে হালিমার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা তথ্য অফিসের উপ পরিচালক শেখ ওয়ালিদ ফয়েজ। বক্তব্য রাখেন ইউনিসেফের সিলেট অফিসের চীফ অব ফিল্ড অফিসার কাজী দিল আফরোজা ইসলাম, সুনামগঞ্জ জেলার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মোহাইমিনুল হক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, প্লাস্টিকের ব্যবহার, যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা নিক্ষেপ, রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। তাই পরিবেশ বিপর্যয় এড়াতে আমাদের জীবন যাপনে পরিবর্তন আনতে হবে। রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে হবে। বেশি করে গাছ লাগাতে হবে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ এমনভাবে ভোগ করতে হবে যেন সেগুলো দিয়ে কয়েক প্রজন্ম চলে যায়। বৈশ্বিক বাণিজ্য হচ্ছে পরিবেশগত পরিবর্তনের অন্যতম মাধ্যম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ইউনিসেফের জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ভ্যালেনটিনা স্পিনেডি, কমিউনিকেশন অফিসার নুসরাত শবনম তুর্ণা, ইউরিপোর্ট অফিসার সিহাব উদ্দিন সানি এবং তরুণ জলবায়ুকর্মী ফাজানা ফারুক ঝুমু।


ভৈরবে দিনকালের সাংবাদিককে হত্যার চেষ্টা। থানায় অভিযোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজীবুল হাসান, ভৈরব ( কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জে ভৈরবে দৈনিক দিনকাল পত্রিকার প্রতিনিধিকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিক সোহেলুর রহমানকে হত্যার চেষ্টায় কুখ্যাত মাদক কারবারি ও ছিনতাইকারী শাহিনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ।

সাংবাদিক সোহেলুর রহমান ভৈরব প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব ও দৈনিক দিনকাল পত্রিকার ভৈরব প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। এ ঘটনায় ভৈরব প্রেসক্লাব, টিভি জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশন, বিএমইউজে ভৈরব উপজেলা শাখাসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্ত শাহিনসহ তার মূল হোতাদের গ্রেফতারের দাবী জানান।

লিখিত অভিযোগে সুত্রে জানা যায়, গত ২৮ জুলাই সোমবার সাংবাদিক সোহেলুর রহমান তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কুখ্যাত ও একাধিক মাদক মামলার আসামি শাহিনকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে পোষ্ট দেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে শাহিন তার দলবল নিয়ে গভীর রাতে ভৈরবপুর মধ্যপাড়ায় অবস্থিত সোহেলুর রহমানের বাস ভবনে গিয়ে প্রাণ নাশের হুমকি দেয় । এঘটনায় রাতেই বিষয়টি ফোনে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কে অবগত করেন। পরবর্তীতে আজ সকালে সোহেলুর রহমান বাড়ি থেকে বের হয়ে ভৈরব বাজারে যাওয়ার পথে মনামরা ব্রীজ সংলগ্ন জান্নাত ফার্মেসী থেকে ঔষধ কিনতে গেলে অভিযুক্ত শাহিন ধারালো দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তেড়ে আসে । এসময় আশপাশের লোকজন এসে শাহিনকে দুরে সরিয়ে দিয়ে সাংবাদিককে রক্ষা করে ।

এবিষয়ে সাংবাদিক সোহেলুর রহমান জানান, মাদক ও ছিনতাইয়ের বিরুদ্ধে আমি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলি। শাহিন মাদক কারবারি ও ছিনতাইকারী। গত কয়েক দিন আগে জেল থেকে জামিনে এসে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। তার বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোষ্ট দেয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে তার দলবল নিয়ে গভীর রাতে আমার বাড়িতে এসে আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দেয় । আজ সকালে আবার ভৈরব বাজারে যাওয়ার পথে জান্নাত ফার্মেসীর সামনে ধারালো অস্ত্র আমাকে হত্যার চেষ্টা করে । এসময় লোকজন তাকে বাধাঁ দিলে সে পালিয়ে যায়। এঘটনায় তার বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি ।

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী জানান, এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এই ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশ কাজ করছেন বলে তিনি জানান।


জুলাই সনদ ইহবে পরবর্তী নির্বাচনের ভিত্তি :নাহিদ ইসলাম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ৯০ এর গণ অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক দলগুলো জনগণ ও ছাত্রদের সঙ্গে প্রতারণা করেছিল। জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া এসেছে। আমরা বলেছি, এতে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য থাকতে হবে। জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে এবং এর আইনি ভিত্তি থাকতে হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচিত যেই সরকারে আসুক, তাকে এই সংস্কার বাস্তবায়নে বাধ্যবাধকতা থাকবে। আমরা আশা করি, ৫ আগষ্টের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে জুলাই ঘোষণাপত্র দেবে।

মঙ্গলবার (২৯ ‍জুলাই) বিকালে জেলা শহরের রাজবাড়ী সড়কে আয়োজিত পদযাত্রা শেষে গাজীপুর মহানগর ও জেলা এনসিপি আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, শেখ হাসিনার সরকার সেনাবাহিনীকে রাজমিস্ত্রীতে পরিণত করেছিলেন। পুলিশকে রাজনৈতিক লাঠিয়ালে পরিণত করেছিলেন। এখন পুলিশ সংস্কার হচ্ছে, যাতে কেউ পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে না পারে। সেনাবাহিনীকে আধুনিক করতে নানা উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দিয়ে বলেন, আমরা এনসিপি সুযোগ পেলে সেনাবাহিনীকে সমৃদ্ধ করব।

এনসিপির সংগঠক সারজিস আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আর বক্তব্য দেন, অ্যাডভোকেট আলী নাসের খান, এম এম সোহাইব, এম এম মুহিত, নাহিদা সারওয়ার নিভা প্রমুখ। অন্যান্যদের মধ্যে ডা. তাসনিম জারা, শামান্তা শারমিনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের লড়াই শেষ হয় নাই। আমাদের একটি নতুন বাংলাদেশ হিসেবে লড়াই চলমান আছে। আজকেও দেখেছেন গাজীপুরের সন্ত্রাসীরা টহল দিচ্ছে মহড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। ভয় দেখিয়ে নাগরিক পার্টি জাতীয় গণঅভুত্থানের শক্তিকে তারা রুখে দেবে।

তিনি আরও বলেন, গোপালগঞ্জেও আমাদের বাঁধা দিয়ে রাখা যায় নাই। আমরা গোপালগঞ্জের মাটিতে গিয়েছি। আমরা গাজীপুরের মাটিতেও এসেছি। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় আমরা গিয়েছি, যাবো। আমরা ঘোষণা করেছি বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ইঞ্চি মাটি থেকে আমরা মুজিববাদ বিতাড়িত করব। মুজিববাদদের আমরা বিচারের আওতায় আনব।

জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, গণঅভুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন তাদের সঙ্গে থাকবেন তাদের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন।

এসময় স্থানীয় এনসিপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে শ্রীপুরের মাওনায় আয়োজিত পদযাত্রায় নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা ঘোষণা করেছি বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ইঞ্চি মাটি থেকে আমরা মুজিববাদ বিতাড়িত করব। মুজিববাদদের আমরা বিচারের আওতায় আনব।


নরসিংদীতে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে স্বামীর বাড়িতে তরুণীর অনশন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদীতে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে শিল্পী আক্তার নামে এক তরুণী তার স্বামীর বাড়িতে অনশন করছে। ঘটনাটি ঘটেছে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের সাতপাখিয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের বাড়িতে। অনশনরত শিল্পী আক্তার নরসিংদীর পলাশ উপজেলার দড়িহাওলা গ্রামের জালাল মিয়ার মেয়ে। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে সাতপাখিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে তরুণী অবস্থান করছে। এ খবর পেয়ে শিল্পী আক্তারের স্বামী ও তার পরিবারের লোকেরা ঘরে তালা দিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। অনশনরত শিল্পী আক্তারের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান আজ থেকে ৬ বছর পূর্বে লেবালন প্রবাসী মো: ইমরান মোল্লার সাথে মোবাইল ফোনে তার পরিচয় ঘটে। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রায় ২ মাস পূর্বে ইমরান মোল্লা প্রেমের টানে লেবালন থেকে নিজ বাড়িতে চলে আসে। অতপর গত ১২.০৬.২৫ইং তারিখে তাদের পরিবারের সম্মতি না নিয়ে ৩ লাখ টাকা কাবিনমুলে ইসলামী শরিয়ত মতে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। পরবর্তীতে স্বামী-স্ত্রী নরসিংদী শহরের তরোয়া মহল্লায় একটি ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকে। সুখেই চলছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। কিন্তু শিল্পী আক্তারের পরিবার গরিব বিধায় তার শ্বশুর-শাশুরী বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি।
প্রায় দেড় মাস ঘর সংসার করার পর শিল্পী আক্তারের স্বামী ইমরান মোল্লা পরিবারের চাপ সহ্য করতে না পেরে সে তার স্ত্রী শিল্পী আক্তারকে ফেলে রেখে পিত্রালয়ে চলে যায়। এদিকে অসহায় শিল্পী আক্তার কোন উপায়ন্তর না দেখে তার স্বামীর বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর দাবি নিয়ে অনশন করতে থাকে। পরে শিল্পী আক্তারের স্বামী ইমরান মোল্লা ও তার পরিবারের লোকেরা এসে শিল্পী আক্তারকে মারধর করতে থাকে। এ সময় শিল্পী আক্তার ত্রিপল ৯৯৯ এ খবর দিলে শিবপুর থানা পুলিশ অনশনরত শিল্পী আক্তারকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পুলিশের সহযোগিতায় তার পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দেয়। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা ইমরান মোল্লাকে জিজ্ঞাসা করতে গেলে সে দৌড়ে পালিয়ে যায়। বর্তমানে সবকুল হারিয়ে শিল্পী আক্তার এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। না পারছে পিত্রালয়ে থাকতে, না পাচ্ছে স্বামীর স্বীকৃতি। সে স্থানীয় প্রশাসনের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
শিবপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আফজাল হোসাইন জানান, এব্যাপারে কোন পক্ষ থেকে অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


মাদককে লাল কার্ড দেখিয়ে দেশপ্রেমের শপথ ২০০ শিক্ষার্থী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লা দেবিদ্বারে গাছের চারা হাতে নিয়ে মাদককে লাল কার্ড দেখিয়ে দেশপ্রেমের শপথ নিয়েছে ২০০ শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) উপজেলার বরকামতা নলিণী শিক্ষা নিকেতন বিদ্যালয় মাঠে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘের উদ্যোগে সংগঠনের সদস্যদের জমানো টিফিনের টাকায় গাছের চারা কিনে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।

লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘের প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সভাপতি কাওসার আলম সোহেলের সভাপতিত্বে গাছের চারা বিতরণে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জ্যোৎস্না রানী কর, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদ ভূইয়া, দেবিদ্বার শাখার সভাপতি ইয়াছিন মুন্সী, সাধারণ সম্পাদক রাগীব মাহতাব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন বিন জামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ সরকার, প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ হোসাইন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক সাহেদ ইসলাম, সদস্য ফারহান, শাকিল, সোলাইমান, ফাহাদ প্রমুখ।

লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাওসার আলম সোহেল জানান, সংগঠনটির সব সদস্য শিক্ষার্থী। তারা এক দিনের টিফিনের জমানো টাকায় গাছের চারা কিনে সারাদেশে বিতরণ করছেন। দেশের বিভিন্ন জেলায় গাছের চারা বিতরণ কর্মসূচি চলমান। তাঁরা এবছর বিনামূল্যে ৫০ হাজার গাছের চারা বিতরণ করবেন। তিনি শিক্ষার্থীদের গাছের চারা হাতে নিয়ে মাদক, বাল্য বিবাহকে না ও দেশপ্রেমে জাগ্রত হওয়ার শপথ পাঠ করান।


সীমান্ত নদনদী গুলোতে ক্ষতিকর গ্যাস ট্যাবলেট প্রয়োগ, মাছ ও জীব বৈচিত্র্য হুমকিতে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সেন রায়হান, পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের বিভিন্ন সীমান্ত নদ নদী গুলোতে ক্ষতিকর গ্যাস ট্যাবলেট বা রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করছে এক শ্রেণীর অসাধু জেলে এবং নদী পাড়ের মানুষ। এতে মাছ সহ জীব বৈচিত্র হুমকির মুখে পড়ছে। এসব মাছ বিক্রী হচ্ছে হাট বাজারে। বিষাক্ত জীবানু আক্রান্ত এসব মাছের ক্ষতিকর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ছে মানুষের দেহে। পঞ্চগড় জেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে প্রায় ৪৫ টি নদ নদী। এসব নদ নদীতে রয়েছে নানা প্রজাতির দেশী মাছ। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, নদীতে পানি না থাকা এবং নদ নদীতে বোরো ধানের আবাদের কারণে অনেক নদীতে আগের মতো আর মাছ পাওয়া যায়না। অনেক প্রজাতির মাছ এখন বিলুপ্তের পথে। এসব নদ নদীর মাছ মুলত: এ অঞ্চলের মানুষের আমিষের চাহিদা মিটাতে বিরাট ভূমিকা রাখে। মাছ ধরেই জেলায় প্রায় ৫ সহ¯্রাধিক জেলে জীবীকা নির্বাহ করে থাকেন। এসব নদী থেকে পয়া, গচি, মাগুর, শিং, শোল, বৈরালী, চিতল, চিলি,পুঁুটি,শাটি সহ আরও বিভিন্ন প্রকার মাছ পাওয়া যায়। অনন্য স্বাদের এসব মাছ হাট বাজারে উচ্চ মুল্যে বিক্রী হয়। করোতোয়া, মহানন্দা, ডাহুক, চাওয়াই, তালমা,পাথরাজ হচ্ছে এই জেলার সবচেয়ে বড় নদী। এসব নদীতে সারা বছর দেশী মাছ পাওয়া যায়। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে এসব নদীতে রাতের অন্ধকারে গ্যাস ট্যাবলেট বা বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করা হয়। জেলে এবং স্থানীয় অসাধুরা এভাবে মাছ শিকার করছেন। অনেকে বলছেন জেলেরা রাতের বেলা প্রান্তিক এলাকায় গিয়ে নদীর একটি বিশেষ স্থানের পানিতে গ্যাস ট্যাবলেট অথবা বিষ মিশিয়ে দেয়। ১ থেকে দু ঘন্টা পর মাছেরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। অনেক মাছ মারাও যায়। মাছেরা অসুস্থ হয়ে পানিতে ভেসে বেড়ায়। এসময় জাল দিয়ে অসুস্থ এবং মৃত মাছগুলোকে তুলে আনেন তারা। এই বিষ বা গ্যাস ট্যাবলেট কয়েক কিলোমিটার জুড়ে নদ নদীর পানিতে মিশে যায়। নদীর মৎস্য অভয়াশশ্রমগুলোর আশে পাশেই বেশি বিষ প্রয়োগ করা হয়। স্থানীয় সচেতন মহল এবং পরিবেশ কর্মীরা বলছেন বিষ প্রয়োগে নদ নদীতে মাছ শিকারের ফলে এর নানা ধরনের খারাপ প্রভাব পড়ছে। নদ নদীর মাছ সহ জীব বৈচিত্র হুমকির মুখে পড়েছে। এসব মাছ জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রী করে স্থানীয় জেলে এবং মাছ ব্যাবসায়িরা। বিষ আক্রান্ত এসব মাছ খেলে স্বাস্থ্যগত সমস্যার আশংকাও করছেন তারা। বোদা উপজেলার ফুলতলা গ্রামের শামসুল ইসলাম জানান, সরকারী ভাবে করতোয়া নদীর বিভিন্ন স্থানে মাছের অভয আশ্রম গড়ে তোলা হয়েছে। মৎস্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে এসব আশ্রমে দেশী মাছ সংরক্ষন করার কথা থাকলেও সমিতির অন্তর্ভুক্ত জেলেরা যোগসাজশে রাতের আঁধারে আশ্রমের মা মাছ শিকার করে পাশ্ববর্তী জেলায় বিক্রি করছে। প্রাণ প্রকৃতি পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা কারিগরের নির্বাহী পরিচালক সরকার হায়দার জানান, পঞ্চগড়ের ৫০ নদ নদী থেকে কয়েকশটন মাছ উৎপাদিত হয়। যা এই জেরার আমিষের চাহিদার একটি বড় অংশ পুরন করে। কিন্তু সচেতনতার অভাবে অবৈধ পন্থায় মাছ শিকারের কারণে ধীরে ধীরে দেশী মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় জেলে এবং নদীপাড়ে বসবাসরত মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এটা ভয়ংকর অপরাধ। এই মাছ খেয়ে মানুষের ক্যানসার সহ নানা রকম ভয়ংকর রোগ হতে পারে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) পঞ্চগড় শাখার সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম খায়ের বলেন নদ নদীতে বোরো আবাদে সার কিটনাশক প্রয়োগ করা হয়। অন্যদিকে রাতের অন্ধকারে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন করা হচ্ছে। এটা অপরাধ। এ বিষয়ে সরকারের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। আমাদের সংস্থার পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসন কে অবহিত করা হয়েছে। তারপরও অবৈধ ভাবে মাছ শিকার থামেনি। এ বিষয়ে জেলে এবং নদী পাড়ের মানুষদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কে এম হালিম বলেন বিষয়টি সম্পর্কে আমরা জেনেছি। উপজেলা মৎস্য অফিসে বিষয়টি জানানো হয়েছে। জেলেদের কাছে বার্তা পৌছে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।


নারায়ণগঞ্জে আগুনে পুড়লো ২০টি টিনশেড ঘর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এম এস ডালিম, নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় টিনশেড ঘরে আগুন লেগেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

সোমবার রাত ১১ টার দিকে ফতুল্লার ইসদাইর এলাকায় এ ঘটনায় ঘটে। আগুনে অন্তত ২০টি টিনশেড ঘর পুড়ে গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইসদাইর এলাকার তারা মিয়ার টিনশেড ঘরের ভাড়াটিয়াদের বাসায় আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। খবরপেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে প্রায় একঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। তবে আগুনে বাড়ির মালামাল পুড়ে গেছে। আগুনে অন্তত ২০টি টিনশেড ঘর পুড়ে গেছে।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহজাহান বলেন, মন্ডলপাড়া ও হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ ঘটনায় হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত্র হয়ে। তদন্ত করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।


রাঙামাটির আইকন ঝুলন্ত সেতুতে পানি ছুই ছুই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিজয় ধর, রাঙামাটি প্রতিনিধি

পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে টানা বৃষ্টি ও পাহাড় থেকে নেমে উজানের পানিতে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে, হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাঙামাটির আইকন খ্যাত ঝুলন্ত সেতুর পাটাতনে পানি ছুই ছুই। মঙ্গলবার দুপুর ২ টা দিকে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সেতুর পাটাতনের অনেক স্থানে ২-৩ ইঞ্চি পানি উঠতে শুরু করেছে।
রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুতে ঘুরতে আসা পর্যটক নাসির বলেন, বর্ষা মৌসুমে রাঙামাটির প্রকৃতি অনেক সুন্দর তাই ঘুরতে আসলাম কিন্তু এসে কিছুটা মন খারাপ হয়ে গেলো ব্রীজের উপর পানি আসতে শুরু করেছে।

রাঙামাটি পর্যটন বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রমজান আলী বলেন, কাপ্তাই লেকের পানি বৃদ্ধি পেলে প্রতি বছর ঝুলন্ত সেতু পানিতে ডুবে যায়। আজকে সকাল থেকে সেতুর পাটাতনে পানি ছুই ছুই অবস্থা। যেকোন সময় সেতু পানিতে তলিয়ে যাবে। তিনি বলেন, সেতু ডুবে গেলে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যায় ,পর্যটকরা আর ঝুলন্ত সেতুতে বেড়াতে আসেনা।
এ প্রসঙ্গে রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, এই বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টির কারনে উজানের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লেকের পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারনে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুর পাটাতনে পানি প্রায় ছুই ছুই।মনে হচ্ছে শীঘ্রই পাটাতন ডুবে যাবে। তিনি বলেন,যদি সেতু ডুবে যায় নিরাপত্তার স্বার্থে কতৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে দর্শনার্থীদের চলাচল সাময়িক বন্ধ রাখবো।

কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তথ্য মতে, এ সময় হ্রদে পানি থাকার কথা ৮৯ এমএসএল। হ্রদে পানি রয়েছে ১০৫.২৪ এমএসএল। ৫টি ইউনিট দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ২২২ মেগাওয়াট।

উল্লেখ্য, কাপ্তাই হ্রদের পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল হলেও ১০৫ এমএসএল হলেই প্রতি বছর ঝুলন্ত সেতুটি ডুবে যায়। বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগের কথা বললেও কার্যকর কোনও ভূমিকা চোখে পড়েনি।


বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে জুলাই বিপ্লব আমাদের পথ দেখিয়েছে: জবি উপাচার্য

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেছেন, “জুলাই বিপ্লব আমাদের একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের পথ দেখিয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কিছু পদক্ষেপের কারণে এ অর্জন বিতর্কিত করার প্রচেষ্টা চলছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের আয়োজনে এবং সোশ্যাল ওয়ার্ক ডিবেটিং ক্লাবের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত “জুলাই স্মৃতি প্রথম আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৫”-এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

উপাচার্য বলেন,“যে প্রজন্ম ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক আন্দোলনে যুক্তি, বুদ্ধিমত্তা এবং ত্যাগের মাধ্যমে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিল আজকের এই বিতার্কিক তরুণরাই সেই চেতনার ধারক। আমরা চাই, যুক্তির চর্চা ও মুক্তবুদ্ধির আলোয় শিক্ষার্থীরা গড়ে উঠুক মানবিক ও সাহসী নেতৃত্বে।”

এর আগে ফার্মেসি বিভাগ ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মধ্যকার ফাইনাল প্রতিযোগিতায় ফার্মেসি বিভাগ চ্যাম্পিয়ন এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ রানার আপ হয়। তানজিম পাটোয়ারী ‘ডিবেটার অব দ্য ফাইনাল’ এবং আশিকুর রহমান আকাশ ‘ডিবেটার অব দ্য টুর্নামেন্ট’ নির্বাচিত হন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির মডারেটর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নূরুল্লাহ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ক্লাবের মডারেটর ড. বুশরা জামান। সভাপতিত্ব করেন ক্লাব সভাপতি নাহিদ হাসান রাসেল এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক ইসরাত জাহান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অতিথিরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।


 ‘‘অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদে তিতাস গ্যাস কর্তৃক অভিযান’’

আপডেটেড ২৯ জুলাই, ২০২৫ ১৭:৪৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ২৮ জুলাই (সোমবার) ২০২৫ তারিখে জনাব মনিজা খাতুন, সিনিয়র সহকারী সচিব ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ-এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি-এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -সোনারগাঁও, জোবিঅ-সোনারগাঁও আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার বেইলর এবং নয়াপুর এলাকার বিভিন্ন স্থানে ০৪ টি স্পটে অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, আনুমানিক ৬.৫ কি.মি এলাকার প্রায় ২০০০ টি আবাসিক বার্ণারের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময়ে, ২”ডায়া বিশিষ্ট ২১৫ ফিট, ১.৫" ডায়া বিশিষ্ট ৫০ ফিট, ১.২৫" ডায়া বিশিষ্ট ৭০ ফিট এমএস লাইন/পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও প্লাস্টিক পাইপ উৎসস্থলে বিনষ্ট করা হয়। অবৈধ বিতরণ/সার্ভিস লাইন উচ্ছেদপূর্বক উৎস পয়েন্ট হতে কিলিং/ ক্যাপিং করা হয়েছে।

একই দিনে, আঞ্চলিক ভিজিল্যান্স বিভাগ-নারায়ণগঞ্জ এর সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ টীম কর্তৃক আবিবি-নারায়ণগঞ্জ এর অধীনস্থ জোবিঅ-মুন্সীগঞ্জ এবং আবিবি-সোনারগাঁও এর আওতাধীন জোবিঅ-মেঘনাঘাট এলাকায় ভোর ৬.০০ টা থেকে পর্যায়ক্রমে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযান পরিচালনাকালে ১. আপন বোর্ড মিলস (৩৭০-০০০০২৯) (হাউস লাইনে অতিরিক্ত পোর্ট পরিলক্ষিত হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে পোর্টগুলো কিলিং এবং ওয়েল্ডিং করা হয়)। ২.স্টার ফিশিং এন্ড টুয়াইন ফ্যাক্টরী (৮৭০-০০০০৪৬) পরিদর্শনকালে পরিলক্ষিত অতিরিক্ত পাজিং পয়েন্ট কেটে ওয়েল্ডিং করে স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়। ৩. আইডিয়াল টেক্সটাইল মিলস লিঃ (৩৭০-০০০০০৯) (হাউস লাইনে অতিরিক্ত পোর্ট পরিলক্ষিত হওয়ায় পোর্টগুলা কেটে ওয়েল্ডিং করে স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়। ৪. এভারেস্ট পাওয়ার জেনারেশন লিঃ-এর গ্রাহক আঙ্গিনা পরিদর্শনকালে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়নি এবং ৫. মেসার্স তন্ময় ফিসিং নেট ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ পূর্বের বিচ্ছিন্নকৃত গ্রাহক। পরিদর্শনের লক্ষ্যে গ্রাহক আঙ্গিনায় প্রবেশ করলে গ্রাহক প্রতিনিধি কর্তৃক বাধা প্রদান করায় পরিদর্শন করা সম্ভব হয়নি।


‘জুলাই সনদ’ ঘোষণার আহ্বান ফখরুলের, সংস্কারে ঐকমত্যকে স্বাগত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

১২ দফা মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যকে ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবিলম্বে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা করে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পথ সুগম করার আহ্বান জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ভালো কিছু ঘটছে। আমি আজ (মঙ্গলবার) পত্রিকায় দেখেছি, সব রাজনৈতিক দল ১২ দফা সংস্কার প্রস্তাবে একমত হয়েছে। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।’

তিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ ও তার দলের কঠোর পরিশ্রমের জন্য প্রশংসা করেন, যারা সংস্কার ইস্যুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে কাছাকাছি আনতে কাজ করেছেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই—সংস্কারগুলো বিলম্ব না করে সম্পন্ন করুন এবং অবিলম্বে (জুলাই জাতীয়) সনদ ঘোষণা করুন। দয়া করে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যে তারিখে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, সেই অনুযায়ী নির্বাচন দিন। জাতি সেখানে আশার আলো দেখেছে, অনুপ্রেরণা পেয়েছে। জনগণকে তাদের ভোটাধিকারসহ অন্যান্য অধিকার ফিরিয়ে দিন।’

জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শফিউল বারী বাবুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শফিউল বারী বাবু স্মৃতি সংসদ এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

ফখরুল বলেন, অনেকে বিএনপিকে সমালোচনা করে বলেন, দলটি নাকি সংস্কার চায় না। ‘কিন্তু সংস্কারের ধারণা আমাদের কাছ থেকেই এসেছে—আমরাই এটা শুরু করেছি।’

তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বাকশালের একদলীয় শাসনব্যবস্থা বিলুপ্ত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেন এবং গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন, যা ছিল তার রাজনৈতিক সংস্কারের অংশ।

অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ হিসেবে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান রুদ্ধ ও ব্যর্থ অর্থনৈতিক মডেল থেকে বেরিয়ে এসে মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু করেন, যার ফলে মাত্র সাড়ে তিন বছরে দেশের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি শাসনব্যবস্থার পরিবর্তে সংসদীয় গণতন্ত্র চালু করেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাও প্রবর্তন করেন এবং নারী ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়ন করেন।

‘তাই বিএনপি কখনো সংস্কারকে ভয় পায়নি—আমরা সবসময় সংস্কারকে স্বাগত জানিয়েছি,’ বলেন ফখরুল।

১২টি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ঐকমত্য গঠনে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তবে কিছু প্রস্তাব নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে, যেমন—আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি। এটি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে অপরিচিত।’

তিনি বলেন, ‘সংসদের নিম্নকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের মতো প্রস্তাব এসেছে—যা আমাদের জনগণ বোঝে না। তারা এখনো ইভিএম ভোটিং নিয়ে বিভ্রান্ত—তাহলে পিআর পদ্ধতি কীভাবে বুঝবে?’

কিছু রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার শর্ত দেওয়ায় ফখরুল সমালোচনা করে বলেন, ‘এই ধরনের বিভ্রান্তিকর ধারণা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। জনগণকে এমন একটি ভোটিং ব্যবস্থা দিতে হবে, যা তারা বোঝে এবং যা তাদের যথার্থ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে।’

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতা ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিদেশি ধারণা দিয়ে দেশের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা উচিত নয়।


নওগাঁয় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ড 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর নিয়ামতপুরে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে খাটিয়া (গরু বা ছাগল বেঁধে রাখার খুটিতে আঘাত করার বস্তু) দিয়ে আঘাত করে হত্যার দায়ে মোস্তাফিজুর রহমান (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থ দন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসাইন এ রায় ঘোষণা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইকবাল জামিল চৌধুরী লাকি রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত ওই গৃহবধুর নাম রানী বেগম। তিনি জেলার মান্দা উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের আনিসুর রহমান সাকিদারের মেয়ে।

রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী মোস্তাফিজুর রহমান (৫০) নিয়ামতপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে।

আদলত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১০ আগস্ট রাত সাড়ে ১০ টার দিকে মোস্তাফিজুর তার নিজ বাড়িতে স্ত্রী রানী বেগমের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা যৌতুকের দাবীতে কাঠের খাটিয়া দ্বারা মাথায় আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত এবং জখম করে হত্যা করেন। উক্ত ঘটনায় রানীর বাবা আনিসুর রহমান বাদী হয়ে নিয়ামতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১৪ জন সাক্ষী এবং আসামি পক্ষ থেকে ২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।

সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দীর্ঘদিন ধরে চলা এ মামলায় মামলায় আসামি মোস্তাফিজুর রহমানের উপস্থিতিতে বিচারক তাকে মৃত্যুদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের রায় প্রদান করেন। এ রায়ে বাদী পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ।


পাবনার সাঁথিয়ায় খেলনা পিস্তলসহ দুই ডাকাত আটক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাঁথিয়া (পাবনা)প্রতিনিধি

পাবনার সাঁথিয়ায় খেলনা পিস্তল নিয়ে ডাকাতি করতে গিয়ে জনতার হাতে দুই ডাকাত আটক হয়েছে।আটককৃতরা হলেন সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের পুণ্ডুরিয়া গ্রামের সুজন (২২) ও একই গ্রামের বেলানন ব্যাপারীর ছেলে রাজীব হোসেন (২০)।

তাদের সাঁথিয়া থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করেছে জনতা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,সোমবার (২৮ জুলাই) রাত ৮টার দিকে উপজেলার কাশিনাথপুর বাজারের চাউল পট্টিতে হানা দেয় দুই যুবক। তারা চাউল পট্টিতে খান রাইস মিলের মালিক শামসুর রহমানের দোকানে ঢুকে তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেবার চেষ্টা করেন। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ী ও জনতা এগিয়ে এসে ডাকাতদের হাতেনাতে খেলনা পিস্তলসহ আটক করে। আটকৃত ডাকাতদের জনতা সাঁথিয়া থানা পুলিশর কাছে হস্তান্তর করেছে।

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,ডাকাত দুইজনকে সাঁথিয়া থানা পুলিশের হাতে হস্তান্তর করেছে।

তাদের বিরুদ্ধে আইননানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


banner close