রূপগঞ্জ প্রতিনিধি
গেল রোজার ঈদের পর সাইফুল ইসলাম সাগরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বিয়ে হয় শাহ আলমের মেয়ে শাহনাজের। সে সময় সাইফুল বিদেশে ছিল। ১৫ দিন আগে দেশে আসেন তিনি। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো শ্বশুরবাড়িতে আসেন। নতুন জামাই পেয়ে মহাখুশি শাহ আলমের পরিবার। এর মধ্যে শাহনাজকে তার শ্বশুরবাড়িতে তুলে নিতে ৩০-৪০ জন লোক আসবে। সে উপলক্ষে বাড়িতে নানা আয়োজন। চলছে পিঠা বানানোর কাজ। সারা দিন নানা কাজ সেরে মাটির চুলার ওপর লাকড়ি রেখে রাত দেড়টার দিকে ঘুমাতে যান সবাই। কিন্তু হঠাৎ আগুন লেগে সব আনন্দ ফিকে হয়ে যায় শাহ আলমের।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩ টার দিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার খামার পাড়া এলাকার খাঁ বাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে, চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
শাহ আলম বলেন, প্রায় ১৫ দিন আগে জামাই সাইফুল দেশে আসলেও বৃহস্পতিবার আমাদের বাড়িতে আসে। মেয়েকে তুলে নিতে শুক্রবার তার শ্বশুরবাড়ি থেকে ৩০-৪০ জন লোক আসার কথা ছিল। তাদের আপ্যায়নের জন্য বিভিন্ন ধরনের পিঠা বানানো হয়। এরপর মাটির চুলার ওপর লাকড়ি রেখে রাত দেড়টার দিকে আমরা সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। শাহনাজ ও জামাই সাইফুলকে আমাদের ঘরে রেখে অন্য ঘরে ঘুমাই আমরা। রাত সাড়ে তিনটার দিকে দেখি যে ঘরে মেয়ে ও জামাই ঘুমিয়েছে, সে ঘরে আগুন জ্বলছে। পরে তাদের ডেকে তুলি।
শাহ আলমের স্ত্রী মোকসেদা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আগুনে মুহূর্তের মধ্যেই আমার সাজানো সংসার ছাই হয়ে গেছে। শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলাম কিছুই করতে পারলাম না। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সকালের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।’
রেলপথে দূর্ঘটনা এড়াতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকতে এবং সর্বসাধারণকে সহযোগিতা প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছে রেল কতৃপক্ষ।
সম্প্রতি বিভিন্ন রুটে কয়েকটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে দূর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এসব দূর্ঘটনায় প্রাথমিক সতর্কতা ও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে। প্রত্যেকটি দূর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য পৃথক পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন সাপেক্ষে এসব দূর্ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সম্প্রতি কিছু ঘটনায় প্রতীয়মান হয় যে, রেলপথে দূর্ঘটনার জন্য রেল সংশ্লিষ্টদের বাইরে কতিপয় ব্যক্তি/গোষ্ঠীর তৎপরতা রয়েছে যা নাশকতার
উল্লেখ্য যে, গত ৩ আগস্ট দিবাগত রাতে নাটোরের কাছে মাধনগরে রেল ট্র্যাকে শিকল পেচিয়ে তালা দিয়ে রাখা ছিলো যেনো চলমান ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে দূর্ঘটনায় পতিত হয়। রেলওয়ের লোকাল কি-ম্যান এটা দেখে চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি থামিয়ে দেন। পরে উক্ত শিকল অপসারণ করে ট্রেন চালনা করা হয়। বিষয়টি বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটানোর উদ্দেশ্যে সুচিন্তিতভাবে করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সকলের ধারণা। এ ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে সংশ্লিষ্ট সকলকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, এ ধরণের উদ্দেশ্য প্রণোদিত কার্যকলাপ বাংলাদেশ রেলওয়ে কিংবা সরকারের একার পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত দূরুহ কাজ। এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জনসম্পৃক্ততা ও সবার সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
দেশের যে কো্নো স্থানে রেল লাইন ও এর আশপাশে সন্দেহজনক কিছু দেখা গেলে বা রেল লাইনে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে বা কোনো প্রকার দূর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন কিছু লক্ষ্য করলে তাৎক্ষণিকভাবে তা রেল কর্তৃপক্ষ অথবা স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ের হটলাইন ১৩১ নম্বরে অথবা ৯৯৯ (টোল ফ্রি) নম্বরে ফোন করা যাবে। সকল ক্ষেত্রে তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে।
ব্রুনাইতে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়া ভোলার ছেলে জামাল হোসেনের (৩৫) মরদেহ মৃত্যুর ১৩ দিন পর কফিন বন্ধী হয়ে নিজ গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছেছে।
সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরে ভোলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের জাহাঙ্গালিয়া গ্রামে কফিনে জামালের মরদেহ আসলে স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এরপর জানাজা নামাজ শেষে নিজ পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
এরআগে, গেল ২২ জুলাই দুপুরে ব্রুনাইয়ের চীনারুপাই শহরের একটি নির্মান প্রকল্পে কাজ করা অবস্থায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মারা যান জামাল। পরে, সেখানে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে একটি হিমাগারে রাখা হয় মরদেহ। এরপর যাবতীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে গতকাল একটি বেসরকারি ফ্লাইটে রাত ১টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার লাশ এসে পৌঁছায়। পরে স্বজনরা তার কফিন বন্ধী লাশ নিয়ে ভোলার উদ্দেশ্য রওয়ানা দিয়ে আজ দুপুরে গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছান।
নিহত জামাল ওই গ্রামের হাদিস মিয়ার ছেলে। তিন ভাই আর দুই বোনের মধ্যে জামাল ছিলেন সবার ছোট। আদরের সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা বাবা মা ভাই বোন।
স্বজনরা জানান, 'কথা ছিলো ৩ আগস্ট ছুটিতে প্রবাস থেকে বাংলাদেশে ফিরে ৪ আগস্ট নিজ বাড়ি ভোলাতে আসবেন জামাল। এবার বাড়ি এসে বিয়ে করবেন বলেও জানিয়েছিলেন স্বজনদের।
কিন্তু, দেশে ফেরার দিনে জামাল ঠিকই আসলো। তবে, জীবিত নয় কফিন বন্ধী লাশ হয়ে।'
এদিকে, জামালের মরদেহ গ্রামের বাড়ি ভোলায় পৌঁছানোর পর তাকে একনজর দেখতে ভীর জমিয়েছেন তার স্বজনসহ এলাকাবাসী। ছেলের কফিন ঘিরে বাবা, মা, ভাই, বোনদের আহাজারি যেনো থামছেই না। তার অকাল মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনসহ এলাকাবাসী।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, অভাবের সংসারের দুঃখ গোছাতে এক যুগ আগে পাড়ি জমিয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া মহাদেশের ব্রুনাই দেশে। কাজ নিয়েছিলেন একটি নির্মান প্রকল্পের ইলেক্ট্রিশিয়ান হিসেবে। ঘটনার দিন জামাল ও তার এক সহযোগী মিলে কাজ করছিলেন। পরে জামালের মৃত্যু হলে তার সহকর্মী অপর এক বাঙালি বিকেলে ফোন করে জামালের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর পরিবারকে জানায়।
জামালের বাবা হাদিস মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, 'আমার ছেলে প্রতি মাসেই বাড়ি আসতে চাইতো। কিন্তু ছুটি পায়নি বলে দেশে আসতে পারে নায়। এখন তার চিরতরে ছুটি হয়ে গেছে। আমার ছেলে আমাকে রেখে এতো তারাতারি চলে যাবে এটা মানতে পারছি না।'
জামালের জন্য আহাজারি করে কাঁদছেন প্রতিবেশীরাও তারা বলছেন, জামাল একজন পরিশ্রমী ও সৎ মানুষ ছিলেন। ছুটিতে বাড়িতে আসলে সবার সঙ্গে বিনয়ী আচরণ করতেন। তার এমন মৃত্যুর খবর তারাও কিছুতে মেনে নিতে পারছেন না।
বরিশালের চরবাড়িয়া ইউনিয়নের লামচরী এলাকার রাজা বাজারে সরকারি খালের জায়গা দখল করে নির্মাণাধীন চারটি একতলা পাকা দোকানঘর গুঁড়িয়ে দিয়েছেন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. শাহীন আলম।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুহুল ও আমিন দুই ভাই তাদের পিতা হযরত আলী মৃধা। মামুন ও সোলায়মান তারাও দুই ভাই ,তাদের পিতা মাহাবুর মৃধা এই ৪ জন ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে সরকারি খালের জায়গায় অবৈধভাবে দোকান নির্মাণের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন।
শুরুতে তাদের নিষেধ করা হলেও তারা প্রশাসনের কোনো কথায় কর্ণপাত না করে দখল কার্যক্রম চালিয়ে যান। জমি দখলের বিষয়টি জানতে পেরে চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. শাহীন আলম একাধিকবার উপস্থিত হয়ে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন এবং সতর্ক করেন। পরে তিনি বরিশাল সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহোদয়কে বিষয়টি অবহিত করেন।
তারই নির্দেশে দুপুরে অভিযান চালিয়ে চারটি পাকা দোকানঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় জনগণের সহায়তায় এ উচ্ছেদ অভিযান কার্যকরভাবে সম্পন্ন হয়।
চরবাড়িয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা শাহীন আলম বলেন,সরকারি সম্পত্তি দখলের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। বারবার নিষেধ করা হলেও তারা কথা শোনেননি। তাই আমরা বাধ্য হয়েই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছি। ভবিষ্যতে যারা সরকারি জমি দখল করবে, তাদের বিরুদ্ধেও একইভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন,এটি শুধু আইন প্রয়োগ নয়, জনগণের অধিকার ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার অংশ হিসেবেই আমাদের এ উদ্যোগ। সরকারি খাল দখল করে কেউই পার পাবে না।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে স্থলমাইন বিষ্পোরণের কবলে পড়ে লাকি সিং (২৪) নামে এক বাংলাদেশী তরুণীর পা বিচ্ছিন্ন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সোমবার (৪ আগস্ট) সকালে ৪২ ও ৪৩ নম্বর সীমান্ত পিলারের ওপারে বাঁশ কোড়ল কুড়াতে গিয়ে এ বিস্ফোরণের কবলে পড়েন তিনি।
আহত, লাকি সিং (২৪) নাইক্ষ্যংছড়ির সোনাইছড়ি ইউপির গাছবুনিয়া গ্রামের সুমন কারবারির মেয়ে।
স্থানীয়রা জানান, সকলে বাঁশ কোড়ল (বাঁশের মূলি) সংগ্রহ করতে গিয়ে এক পর্যায়ে ৪২-৪৩ নম্বর সীমান্ত পিলারের ওপারে চলে যান।সেখানে মিয়ানমারের আরাকান আর্মীর পক্ষ থেকে আগে থেকে পুঁতে রাখা স্থলমাইনের ওপর পা পড়লে বিষ্ফোরণের কবলে পড়েন তিনি।এতে তার বাঁম পায়ের গোড়ালি থেকে পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ঘটনাস্থল হতে তাকে উদ্ধার করে
প্রথমে কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের লক্ষীদাড়ি সীমান্তের বিপরীতে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ( বিএসএফের) ছোড়া গুলিতে এক বাংলাদেশি এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। ওই যুবকের মাথা, চোখ, মুখ সহ কয়েকটি স্থানে ছররা গুলি লেগেছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসক। । সোমবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে লক্ষীদাড়ি সীমান্তের ১ নং বিজিবি পোষ্টের কাছে এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ আলমগীর হোসেন(৩৫) বর্তমানে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে । আলমগীর হোসেন সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নের লক্ষীদাঁড়ি গ্রামের শেখ সাঈদ হোসেনের ছেলে।
গুলিবিদ্ধ আলমগীর হোসেনের বোন ইছমত আরা জানান, বাড়ির পাশে কুমড়োর খালের পাশে বিজিবি’র ১নং পোস্টের পাশে শূন্যরেখা বরাবর সরকারি খাস জমিতে তার বড় ভাইয়ের একটি মাছের ঘের রয়েছে। সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টিতে ঘেরটি তলিয়ে যায়। সোমবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে তিনি ওই ঘের নেট দিয়ে ঘেরা ও মাছের খাবার দিতে যান ভাই । ওই সময় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ঘোজাডাঙা বিএসএফ ক্যাম্পের টহলরত সদস্যরা তাকে লক্ষ গুলি ছোঁড়ে। এতে তার মাথা, মুখ, চোখের ভুরুসহ বিভিন্ন স্থানে ছাররা গুলি লাগে।পরে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে ।
এদিকে সীমান্ত গ্রামবাসিদের মধ্যে জাকির হোসেন ও আব্দুল কাদের জানান, আলমগীর দীর্ঘদিন ঘরে ধুড় পাচার ও চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত। সীমান্তে সরকারি জায়গায় তার মাছের ঘের থাকলেও মূল পেশা চোরাচালান। সোমবার ভোরে ভারত থেকে চোরাচালানি পণ্য আনতে গেলে বিএসএফ তাকে গুলি করে। এ সময় তার অন্য দুই সহযোগী পালিয়ে যায়।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ এবিএম আক্তার মারুফ জানান, সোমবার সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে আলমগীরকে জরুরী বিভাগে আনা হয়। তার মুখ, মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে ছাররা গুলি লাগার চিহ্ন রয়েছে।
সাতক্ষীরার ভোমরা বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার জহির আহম্মেদ জানান, তিনি আলম নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন মর্মে শুনেছেন। ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।
সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) শফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগের নাক-কান কাটা গেছে। তারা এখন বিশ্বজুড়ে বিতর্কিত । স্বৈরাচার হিসেবেও খ্যাতি লাভ করেছে । বিগত ১৬ বছর ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে দেশের অর্থ-সম্পদ লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছে । ওই দলকে ফ্যাসিষ্ট দল হিসেবে আর্ন্তজাতিক পুরস্কার দেওয়া উচিত ।
গতকাল সোমবার(৪ জুলাই)দুপুরে”আগষ্ট মার্চ ফর জাস্টিস”কর্মসূচি পালনে এক সমাবেশে নড়াইল জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ফোরাম নেতৃবৃন্দ এ কথা বলেন । এর আগে কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয় । মিছিলটি জেলা আইনজীবি সমিতি ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘুরে একই স্থানে এসে শেষ হয় ।
এখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন,সংগঠনের সভাপতি মো.আজিজুল ইসলাম । বক্তব্য দেন,আইনজীবি সমিতির সভাপতি সাংবাদিক মো.তারিকুজ্জামান লিটু,পিপি ও নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি মো.আব্দুল হক,ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব মোর্শেদ জাপলসহ অন্যরা ।
বক্তারা আরো বলেন,ফ্যাসিস্ট সরকার শাসনামলে আদালতসহ অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করেছে । ক্ষমতার জোড়ে দিনের ভোট রাতে বাক্সবন্দি করে এমপি বানিয়ে ক্ষমতায় বসেছে। অনেক নিরীহ মানুষসহ রাজনীতিবিদদের ফাসিতে ঝুলিয়েছে। বিনা কারণে বিএনপির লাখ লাখ নেতা-কর্মীকে জেলে পাঠিয়েছে। তারা বলেন,প্রকৃতিরও বিচার আছে।
মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আলেম-ওলামার ভূমিকা” শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করে।
শেরপুর জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক এস এম মোহাই মোনুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান।
সভায় উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন ইদ্রিসিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ও জেলা জামিয়াতুল মোদাররেছীনের সভাপতি মাওলানা মোঃ ফজলুর রহমানসহ বিভিন্ন মসজিদের খতিব ও আলেমগণ।
আলোচকবৃন্দ তাঁদের বক্তব্যে আলেম সমাজের নৈতিক নেতৃত্ব, সামাজিক দায়িত্ব এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের গুরুত্ব তুলে ধরার পাশাপাশি জুলাই গণআন্দোলনে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও আলেম-ওলামাদের সাহসী ভূমিকার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন।
আলোচনা সভা শেষে ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি পটুয়াখালী জেলার আহবায়ক কমিটি অনুমোদন করা হয়েছে। এতে মো. শামসুদ্দোহা শাওন-কে আহ্বায়ক ও আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান রুমী-কে সদস্য সচিব করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করা হয়। রবিবার (৩ আগস্ট) দিবাগত রাতে বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থ এ কমিটিন অনুমোদন করেন।
এ কমিটির অনান্য নেতৃবৃন্দ হলেন- সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সাইদুর রহমান, জুলফিকার হাসান (আসিফ), মো. রেজাউল করিম, যুগ্ম আহবায়ক এমএ ওয়ারেজ, ডা. সাইফুল আরেফিন, মো. হাসিবুল হাসান (হাসিব), মো. জোবায়ের হোসেন (বিজয়), মো. মানিক খাঁন,
মো. সোহান মৃধা, সদস্য মো. আল-আমিন, ইঞ্জিনিয়ার মোঃ সাব্বির মাহমুদ, মিজান রহমান, মো. ইব্রাহিম, মো. আবু ইসহাক, মো. শাফায়েত ইসলাম (অলি), আজাদ তালুকদার (মিন্টু), মো. আরিফুজ্জামান (ডালিম), মাইনুর রহমান (প্রিন্স), মো. ইসতিয়াক আহমেদ (তামিম), মোহাম্মদ জাহিদুল, মো. মনির হোসেন, গোলাম সরোয়ার (অপু), মো. মেহেদী হাসান, মো. রাকিবুল ইসলাম শরীফ, মো. জাহিদুল ইসলাম, তুষার মিত্র (শুভ), মো. কাওসার ইসলাম, মো. লিমন, মো. ফাহাদ, মো. সাকিব, মনি, মো. বাদশা, শেখ জুয়েল, মো. নাজমুল, খাঁন হাসিবুল ইসলাম, মো. হাসান, মো. হাসান বসরী, মো. মাইনুল ইসলাম, মো. বাদশা সর্দার, মো. ইমাম হোসেন, মো. সালাম মাস্টার, মো. ফকু মিয়া, মো. মোখলেসুর রহমান, মো. আবুল কালাম, কামরুল, কালাম, শাকিল, শামিম, ডিউক, জহির।
নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থ'র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে, নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দকেও দলীয় নেতাকর্মীরা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বরগুনায় দূর্নীতি দমন কমিশন দুদক ও দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির আয়োজনে বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার সকালে বরগুনা আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় বরগুনার ৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশ গ্রহন করে।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য রেজাউল ইসলাম টিটুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বরগুনা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক আবদুস ছালাম,জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার নিজাম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন নয়ন, বরগুনা জিলা স্কুলের সহকারী শিক্ষক আবদুল ওহাব প্রমুখ।
"ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে সততা ও নিষ্ঠা বোধ জাগ্রত করা না গেলে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়"
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি বরগুনা জেলা কতৃক আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বরগুনা জিলা স্কুল, বরগুনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, বরগুনা আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, বরগুনা কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বরগুনা ডিকেপি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গৌড়িচন্না এন এস মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সেনাখালি গগন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চরকগাছিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, বরগুনা দারুল উমুল কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর অংশ গ্রহন করেন।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নওগাঁয় ইনতেফা কোম্পানির পক্ষ থেকে কৃষকদের মাঝে একটি করে ফলজ ও বনজ গাছের চারা বিতরণ করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে ইনতেফা কোম্পানির উদ্যোগে সারা দেশব্যাপি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইনতেফার পরিবেশক মেসার্স কৃষি বিতান এর সৌজন্যে নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রাঙ্গনে চারা বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
বৃক্ষরোপন কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ী নওগাঁর কৃষিবিদ মোঃ রেজাউল করিম, অতিরিক্ত উপ পরিচালক ( উদ্যান), কৃষিবিদ মোঃ মেহেদুল ইসলাম,অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ), উপসহকারী কৃষি অফিসার মোঃ ফজলে রাব্বি, উপসহকারী কৃষি অফিসার মোঃ শামছুর রহমান, ইনতেফা কোম্পানির এরিয়া ম্যানেজার জনাব মোঃ আফজাল হোসেন, মার্কেটিং অফিসার মোঃ নাহিদ হোসেন এবং কৃষি বিতান এর স্বত্বাধিকারী এস এম মাহবুব রাব্বী হাসান।
এসময় ১০০ জন কৃষক এর মাঝে একটি ফলজ ও একটি বনজ গাছের চারা বিতরণ করা হয়।
এসময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে গাছ রোপনের কোন বিকল্প নেই। আমাদের প্রত্যেক এর উচিত প্রতিবছর কমপক্ষে দুইটি করে চারা রোপন করা। গাছ আমাদের দেয় অতি মূল্যবান অক্সিজেন ও গাছ গ্রহন করে আমাদের থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইড, গাছ রোপন করে গাছের প্রতি যত্নবান হতে হবে। গাছ আমাদের পরম বন্ধু, গাছ আমাদের ঝড়ঝাপসা থেকে রক্ষা করে। গাছের কারনেই আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পায়। তাই গাছ লাগিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
২৪ এর ৪ আগষ্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে মাগুরায় প্রথম শহীদ হন ছাত্রনেতা মেহেদী হাসান রাব্বি। এই গণঅভ্যুত্থানে মাগুরার মোট ১০ জন ছাত্র-জনতা শহীদ হন।
এই উপলক্ষে মাগুরা পৌরসভার ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, ছাত্রদল ও মহিলা দলের আয়োজনে একটি শোক র্্যালি পারনান্দুয়ালী বেপারীপাড়া জামে মসজিদের সামনে থেকে শুরু হয়ে পুরো শহর প্রদক্ষিণ শেষে নবনির্মিত শহীদ রাব্বি স্মৃতিস্তম্ভের সামনে গিয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
এ সময় বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপি'র সদস্য সচিব মনোয়ার হোসেন খান, যুগ্ন আহবায়ক আহসান হাবীব কিশোর, খান হাসান ইমাম সুজা, আলমগীর হোসেন, মিথুন রায় চৌধুরী, সদস্য কুতুব উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক গোলাম জাহিদ, সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, যুবদলের সভাপতি ওয়াসিকুর রহমান কল্লোল, সিনিয়র সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম। এছাড়া পৌরসভার ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সকল স্তরের নেতাকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, আসামিদের চিহ্নিত করে মামলা করা হলেও নাম মাত্র কয়েকজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিরা প্রকাশ্য দিবালোকে ঘোরাফেরা করছে। আইন- শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদেরকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হচ্ছে। শহীদদের পরিবাররা এখনো শংকিত রয়েছে।
গত বছরের ৪ আগস্ট মাগুরায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে স্বৈরাচার সরকার পতনের আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে স্থানীয় জনতার সাথে মিছিলের সামনে এগিয়ে গেলে মাগুরা শহরের ঢাকা রোড ব্রিজ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন মেহেদী হাসান রাব্বি। তিনি ছিলেন একজন মানবিক মানুষ।
আওয়ামী লীগের ‘ফ্যাসিবাদ’ পতনের স্মারক হিসেবে আগামী ৫ ও ৬ আগস্ট দেশব্যাপী বিজয় র্যালি করবে বিএনপি।
সোমবার (৪ আগস্ট) দলটির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট দেশের সব থানা ও উপজেলায় এবং ৬ আগস্ট সব জেলা ও মহানগরে র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। তবে ঢাকায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী বুধবার (৬ আগস্ট) বেলা ২টায় নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকেও বিজয় র্যালি বের হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী ঢাকাবাসীসহ বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের যথাসময়ে র্যালিতে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন।
ঢাকা মহানগরীর সরকারি সাত কলেজের জন্য প্রস্তাবিত ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০ শতাংশ ক্লাস হবে অনলাইনে, আর বাকি ৬০ শতাংশ ক্লাস সশরীরে অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার (৪ আগস্ট) সচিবালয়ে ঢাকা মহানগরীর সরকারি ৭ কলেজের জন্য প্রস্তাবিত ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন সংক্রান্ত কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের রুটিন দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব মজিবর রহমান এ তথ্য জানান।
নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট্য ও পরিচালনাপদ্ধতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা হবে ইন্টারডিসিপ্লিনারি ও হাইব্রিড ধরনের, যেখানে ৪০ শতাংশ অনলাইন, ৬০ শতাংশ অফলাইন (সশরীরে) ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে। সব ধরনের পরীক্ষা সশরীরে অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘ইন্টারডিসিপ্লিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সব শিক্ষার্থী প্রথম চারটি সেমিস্টারে নন-মেজর কোর্স অধ্যয়ন করবে। পরবর্তী চার সেমিস্টারে ডিসিপ্লিন অনুযায়ী মেজর কোর্স অধ্যয়ন করবে। তবে পঞ্চম সেমিস্টারে শর্তপূরণ সাপেক্ষে শিক্ষার্থী ইচ্ছানুযায়ী ডিসিপ্লিন পরিবর্তন করতে পারবে। তবে ক্যাম্পাস পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে না।’
কার্যক্রম হবে চারটি স্কুল ভিত্তিক
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনকার মতো একেকটি কলেজে সব বিষয় পড়াশোনা হবে না। এক বা একাধিক কলেজে স্কুলভিত্তিক ক্লাস হবে। সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এর মধ্যে স্কুল অব সায়েন্সের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ক্যাম্পাস। স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিসের জন্য সরকারি তিতুমীর কলেজ, স্কুল অব বিজনেসের জন্য সরকারি তিতুমীর কলেজ, স্কুল অব ল অ্যান্ড জাস্টিসের জন্য কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ক্যাম্পাস নির্ধারণ করা হয়েছে।
সবার জন্য সুবিধাজনক স্থানে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস নির্ধারণ করা হবে বলে জানানো হয়। কলেজগুলোর বিদ্যমান উচ্চমাধ্যমিক অক্ষুণ্ণ থাকবে। শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারাও কলেজগুলোতে থাকবেন। তবে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের জন্য শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।
এ বছরের মধ্যেই নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অধ্যাদেশ জারি হবে। তবে এবারের ভর্তি কার্যক্রম বিদ্যমান নিয়মেই হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও যা থাকবে
একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাঠামো সম্পর্কে মজিবর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম পরিচালিত হবে একাডেমিক কাউন্সিল, সিনেট ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন প্রক্টর থাকবেন। এছাড়া প্রতিটি কলেজে একজন পুরুষ ও একজন নারী ডেপুটি প্রক্টর থাকবেন। অর্থাৎ ৭ কলেজে সর্বমোট ১৪ জন ডেপুটি প্রক্টর থাকবেন।
সাত কলেজের পাঁচটিতে আগের মতো উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় চালু থাকবে বলে ভারপ্রাপ্ত সচিব জানান। স্নাতক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা টাইম, স্পেস ও রিসোর্স শেয়ারিং পদ্ধতিতে একই ক্যাম্পাস ব্যবহার করবে। কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে। প্রতি ডিসিপ্লিনে যৌক্তিকভাবে ছাত্রসংখ্যা নির্ধারণ করা হবে।
প্রতিটি শিক্ষার্থীকে প্রথম বর্ষেই ল্যাপটপ ও আনুষঙ্গিক সামগ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সেবা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সব প্রশাসনিক কার্যক্রম (ভর্তি, রেজিস্ট্রেশন, আবেদন ইত্যাদি) আইটি বেসড/ডিজিটাল সিস্টেমে সম্পাদিত হবে। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা যেকোনো ধরণের অনুসন্ধান আইটি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে করতে পারবে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়োগ দেওয়া হবে। কলেজগুলোর প্রয়োজন অনুযায়ী নিয়োগকর্তাদের বণ্টন করা হবে।
বাজেট গ্রহণ ও ব্যবস্থাপনা হবে কেন্দ্রীয়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে। প্রতিটি কলেজে আধুনিক মানসম্পন্ন লাইব্রেরি, ক্যাফেটেরিয়া, মেডিকেল সেন্টার ও পরিবহন ব্যবস্থা থাকবে।
বিভিন্ন পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা আগের বিদ্যমান একাডেমিক কাঠামো অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করবেন। অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সময়মতো পরীক্ষা নেওয়া, রেজাল্ট দ্রুত প্রকাশ করা ও সেশনজট কমাতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সচিব।
সাত কলেজের বর্তমান শিক্ষকদের কি হবে?
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক তানজীম উদ্দীন খান বলেন, ‘কলেজের যে মৌলিক বৈশিষ্ট্য, সেখানে আমরা কোনো পরিবর্তন আনছি না। কলেজ কলেজের জায়গায়ই থাকবে। কলেজের শিক্ষকরা কলেজেই থাকবেন। বিদ্যমান কাঠামোয় কলেজের শিক্ষকরাই পাঠদান করবেন। যখন বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো কলেজের কাঠামোর সঙ্গে একীভূত থাকবে না। তখন নিয়োগ হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যে যোগ্যতা বলে নিয়োগ দেওয়া হয় সেই অনুযায়ী। কেউ যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় আসতে চান, যারা যোগ্য আছেন তারা সাধারণ যে প্রক্রিয়া আছে, সে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন।’
ঢাকা মহানগরীর ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ এবং সরকারি বাঙলা কলেজ দেশের সব সরকারি ডিগ্রি কলেজের সঙ্গে ১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি পায়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজগুলোতে একাডেমিক ও প্রশাসনিক নানা জটিল সংকটের সৃষ্টি হলে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও বিদ্যমান সংকট নিরসনে ২০১৭ সালে সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তির পর সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ায় সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে একটি নতুন স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে কলেজগুলোকে পরিচালনার দাবি জানায়।
শিক্ষার্থীদের দাবির পরপরই গত বছরের ২৪ অক্টোবর ‘সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি পর্যালোচনা ও সুপারের সংক্রান্ত কমিটি’ গঠন করা হয়। উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকক্ষ একটি স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর রূপরেখা প্রস্তাব সম্বলিত প্রতিবেদন প্রণয়ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।
সংবাদ সম্মেলনে ইউজিসি চেয়ারম্যান এস এম এ ফায়েজ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক তানজীম উদ্দীন খান, সাত কলেজের অন্তর্বর্তী প্রশাসক ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস এবং কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।