বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
৯ পৌষ ১৪৩২

জলাবদ্ধতায় ভেসে গেল দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রীরই সভা

পানিতে ডুবে গেছে মাঠ, প্যান্ডেল সাজানো হলেও হয়নি সভা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
৬ অক্টোবর, ২০২৩ ২০:১২
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ৬ অক্টোবর, ২০২৩ ১৯:৩৭

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই রাজনৈতিক দলের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা বেড়ে চলেছে। ঢাকা-১৯ আসন তথা সাভারেও ইতোমধ্যেই অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশী শুরু করেছেন জনসভা, পথসভা ও উঠোন বৈঠকের মতো প্রচারণামূলক কর্মসূচি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এই আসনটির একাদশ সংসদের সদস্য (এমপি)। তিনিও বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় জনসংযোগ ও সভা-সমাবেশ করে নৌকার পক্ষে ভোট চাইছেন।

শুক্রবার পূর্ব ঘোষণা অনুসারে জুমার নামাজ শেষে আশুলিয়ার গাজীরচট এলাকায় প্রতিমন্ত্রীর একটি সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে ভেস্তে গেছে সেই কর্মসূচি।

জানা গেছে, বিকেল ৩টায় আশুলিয়ার গাজীরচট আকবর মন্ডল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে নির্বাচনী পথসভার আয়োজন করা হয়। ধামসোনা ইউনিয়ন যুবলীগ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল স্থানীয় এমপি ও প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের। কিন্তু হঠাৎ শুক্রবার সকালে আশুলিয়া থানা ও ধামসোনা ইউনিয়ন যুবলীগের পক্ষ থেকে ফেসবুকে অনুষ্ঠান না হওয়ার কথা জানানো হয়। বৈরী আবহাওয়া ও সভাস্থলে জলাবদ্ধতার কারণে অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে বলেও জানান তারা।

পানিতে টইটুম্বুর সভাস্থলের প্যান্ডেলসহ ছবি দিয়ে নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন আশুলিয়া থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মইনুল ইসলাম ভূইয়া। এছাড়া ইউনিয়ন যুবলীগ নেতারাও একই পোস্ট করেন।

তারা লেখেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে আশুলিয়া থানার অন্তর্গত ধামসোনা ইউনিয়ন যুবলীগের আজ বিকেলের অনুষ্ঠান ও পথসভা স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী সময় নির্ধারণ করে জানানো হবে। সবাইকে ধন্যবাদ। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।

থানা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মইনুল ইসলাম ভূইয়া দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘গাজীরচট স্কুলে আজ বিকেল ৩টায় প্রোগ্রাম ছিল। প্রতিমন্ত্রী মহোদয় প্রধান অতিথি ছিলেন। আমরাই আয়োজক ছিলাম। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে স্থগিত করা হয়েছে। মাঠে হাঁটু পানি। তবে পানি নামারও সুযোগ নেই। পানি নিষ্কাশনের তো জায়গা নেই। এই বৃষ্টিতে আমাদের এলাকায় বাড়ি বাড়ি পানি ঢুকছে।’

জলাবদ্ধতার কারণে খোদ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর সমাবেশ স্থগিত হয়ে যাওয়া নিয়ে সর্বত্র আলোচনা চলছে। প্রতিমন্ত্রী তার এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে কোনো কাজ করেননি বলেও কেউ কেউ অভিযোগ তুলছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাজীরচট এলাকার একাধিক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের এলাকায় পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির কারণে এলাকার অধিকাংশ রাস্তা তলিয়ে গেছে। অলিগলি ও অনেক বাসাবাড়িতে পানি উঠেছে। শুনেছি আজ গাজীরচট স্কুলে প্রতিমন্ত্রীর প্রোগ্রাম ছিল। বৃষ্টির কারণে মাঠে হাঁটু পানি জমে থাকার কারণে প্রোগ্রাম ক্যানসেল হয়েছে। শুধু জলাবদ্ধতার কারণেই আজ প্রতিমন্ত্রীর প্রোগ্রামটা হলো না। বিষয়টা মোটেই ভালো দেখায়নি।

গাজীরচট স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ঢাকা জেলা পরিষদের সদস্য এনামুল হক মুন্সি বলেন, ‘জলাবদ্ধতার সমস্যায় দীর্ঘ দিন ধরে ভুগছে গাজীরচট, ইউনিক ও জামগড়া এলাকার মানুষ। শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত এই সমস্যার মধ্য দিয়েই স্কুলে যাতায়াত করে আসছে।’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে স্কুলের মাঠে করা প্যান্ডেল ছিঁড়ে গেছে। এছাড়া পানি জমে মাঠ তলিয়ে যাওয়ায় সভায় স্থগিত করে পরবর্তী সময়ে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

বিষয়:

ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বর্ষ উদযাপন ও পুনর্মিলনী : দুই দিনের উৎসব শুরু হচ্ছে আজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুর জিলা স্কুল গৌরবময় ১৮৫ বর্ষ উদযাপন ও পুনর্মিলনী উপলক্ষে দুই দিনের উৎসব শুরু হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার থেকে।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে জাতীয় এবং উদযাপন পতাকা উত্তোলন, সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, শপথবাক্য পাঠ, ব্যানার, ফেস্টুন, ঘোড়াগাড়িসহ সুসজ্জিত আনন্দ শোভাযাত্রা নিয়ে শহর প্রদক্ষিণের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে দুদিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা।

আগামীকাল শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে র‌্যাফেল ড্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নির্ধারিত ব্যান্ড-সংগীতশিল্পী জেমসের পরিবেশনার মধ্যে দিয়ে শেষ হবে বর্ণাঢ্য এ আয়োজন।

ব্রিটিশ ভারতে সরকারি উদ্যোগে হাতে গোনা যে কয়টি বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে তার একটি ফরিদপুর জিলা স্কুল। আজ বৃহস্পতিবার থেকে ১৮৫ বছর আগে ১৮৪০ সালে যাত্রা শুরু করে এ বিদ্যালয়টি। শুরু থেকেই এ অঞ্চলের শিক্ষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, আন্দোলন ও সংগ্রামে এ স্কুলটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। কালের পরিক্রমায় মযাদা ও গৌরবে আজও এ বিদ্যালয়টি এ অঞ্চলের একটি সেরা বিদ্যালয় হিসেবে তার স্বকীয় ভাবমূর্তি বজায় রেখেছে।

এ অনুষ্ঠানকে সার্থক করতে গঠন করা হয়েছে গৌরবময় ১৮৫ বর্ষ উদযাপন ও পুনর্মিলনী উদযাপন কমিটি। ২১ সদস্যবিশিষ্ট এ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ফরিদপুরের বিশিষ্ট চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমান শামীম ও সদস্য সচিব ওয়াহিদ মিয়া কুটি।

এর পাশাপাশি কাজের সুবিধার জন্য বিভিন্ন কাজের জন্য গঠন করা হয়েছে ১৮টি উপকমিটি।

উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান শামীম বলেন, ‘এ উৎসবের উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাদের প্রাণের স্কুলের সমৃদ্ধ অতীত ও ঐতিহ্য সবার সামনে তুলে ধরা, পাশাপাশি নতুন প্রজন্মকে তাদের অতীত ও ঐতিহ্যর সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া।’

সদস্য সচিব ওয়াহিদ মিয়া কুটি বলেন, ‘আমরা আমাদের অনুষ্ঠানকে নিজেদের মতো করে সাজিয়েছি। এ আয়োজনে আমরা কোনো প্রধান বা বিশেষ অতিথি রাখিনি। এ বিদ্যালয়ের বাইরে কাউকে আমরা এ আয়োজনে আমন্ত্রণ জানাইনি কিংবা যুক্ত কিরিনি। আমরা জিলা স্কুলের সাবেক ও বর্তমান সকল শিক্ষার্থীই প্রধান এবং বিশেষ অতিথি।

দুদিনের অনুষ্ঠানসূচি:

২৫ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকাল ৮টায় উপস্থিতি ও শুভেচ্ছা বিনিময়। সকাল ৯টা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। সকাল ১০টা বর্ণিল আনন্দ র‌্যালি। বেলা ১১টা স্কুল উন্নয়ন ও পরিকল্পনাবিষয়ক আলোচনা। বেলা সাড়ে ১১টায় স্মৃতিচারণ ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান। দুপুর ১টা মধ্যাহ্ন বিরতি। বিকেল ৩টা স্মৃতিচারণ ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা আতশবাশি উৎসব। সন্ধ্যা ৬টা স্কুলের ইতিহাস ও ঐহিত্য নিয়ে তথ্যচিত্র প্রদর্শন এবং সাড়ে ৬টা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

দ্বিতীয় দিন (শুক্রবার) সকাল ৮টা মিনি ম্যারাথন। সকাল ৯টা স্কুলের বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে চিত্রাঙ্কন ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা। সকাল ১০টায় পিঠা উৎসব ও সংগীতানুষ্ঠান। বেলা ১১টা স্মৃতিচারণ ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান। বিকেল ৩টা স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা স্মৃতিচারণমূলক অনুষ্ঠান। ৬টা সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা র‌্যাফেল ড্র। রাত সাড়ে ৭টা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা।


জয়পুরহাটে ৪৩ লাখ টাকার যৌন উত্তেজক সিরাপসহ আটক ১

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জয়পুরহাট প্রতিনিধি

জয়পুরহাট ব্যাটালিয়নের (২০ বিজিবি) অধীনস্থ পাঁচবিবি বিশেষ ক্যাম্পের অভিযানে বিপুল পরিমাণ যৌন উত্তেজক সিরাপসহ একজনকে আটক করেছে বিজিবি। উদ্ধারকৃত মালামালের আনুমানিক বাজার মূল্য ৪৩ লাখ ১,৭২০ টাকা।

আটক ব্যক্তি হলেন, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার পূর্ব কড়িয়া গ্রামের বাবু হোসেনের ছেলে মাহফুজার রহমান (২৬)।

জয়পুরহাট ব্যাটালিয়নের (২০ বিজিবি) অধীনস্থ পাঁচবিবি বিশেষ ক্যাম্পের সীমান্ত এলাকায় মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার রাতে চোরাচালান ও মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) জয়পুরহাট বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাঁচবিবি অস্থায়ী চেকপোষ্টের টহলদল কর্তৃক ওৎ পেতে থাকে। পরবর্তী গোপন সংবাদের বিষয়টি সত্যতা প্রামাণিত হলে তাৎক্ষনিকভাবে ব্যাটালিয়ন সদরকে অবহিত করলে লে. কর্নেল মোহাম্মদ লতিফুল বারী, পিবিজিএমএস, পদাতিক, পরিচালক, অধিনায়ক জয়পুরহাট ব্যাটালিয়ন (২০ বিজিবি) সাথে সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ইমরান হোসেন, পিবিজিএমএস, ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার, জয়পুরহাট ব্যাটালিয়ন (২০ বিজিবি) এবং ব্যাটালিয়ন সদর হতে ২টি বিশেষ টহলদল কর্তৃক লাঙ্গলহাটি তিন রাস্তার মোড় হতে আনুমানিক ১০০ গজ পাঁচবিবি ধানসিঁড়িঁ আবাসিক এলাকায় গোডাউন তল্লাশী করা হয়। ওই গোডাউন তল্লাশীকালে বিপুল পরিমাণে অবৈধ যৌন উত্তেজক সিরাপসহ মাহফুজার রহমানকে আটক করা হয়। এ সময় তার গোডাউন থেকে অবৈধ বাংলাদেশি যৌন উত্তেজক সিরাপসহ বিভিন্ন ওষুধ উদ্ধার করা হয়।

জয়পুরহাট ২০ বিজিবি সূত্রে জানা যায়, মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান, মাদকদ্রব্য, মানব পাচার এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা কামনা করেছে বিজিবি। সীমান্তের নিরাপত্তা ও অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং সামাজিক শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে যেকোনো তথ্য দিয়ে বিজিবিকে সহায়তা করার জন্য সকলকে অনুরোধ করা হলো।


নেত্রকোনায় সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মশালা অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নেত্রকোনা প্রতিনিধি

গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে এবং পরিবেশিত সংবাদে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও লিঙ্গবৈচিত্র্য সম্পন্ন মানুষের সমান অধিকার, অংশগ্রহণ ও নায্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নেত্রকোনায় একটি বিশেষ সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ভয়েস’ (VOICE) ইউনেস্কোর সহায়তায় ‘লিঙ্গ ও প্রতিবন্ধিতা অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমে বৈচিত্র্য’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কর্মশালার মূল আলোচনা ও উদ্দেশ্য বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) নেত্রকোনার স্বাবলম্বী উন্নয়ন সংস্থায় আয়োজিত এই কর্মশালায় গণমাধ্যমে লিঙ্গসমতা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে একটি বাস্তবভিত্তিক নীতিমালা বা নির্দেশিকা প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বক্তারা বলেন, সঠিক নীতিমালা থাকলে সংবাদ উপস্থাপনা, নিয়োগ এবং সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় বৈচিত্র্য যথাযথভাবে প্রতিফলিত হবে। ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেন, ‘সদিচ্ছা থাকলেও অনেক সময় সুস্পষ্ট নির্দেশিকার অভাবে প্রতিবন্ধী ও লিঙ্গবৈচিত্র্য সম্পন্ন মানুষেরা সুযোগ পান না। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদেরও এখন থেকে এই সচেতনতামূলক প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা প্রয়োজন’। স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতির নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার পাল নারী কর্মীদের জন্য কর্মক্ষেত্রে যাতায়াত সুবিধা, মাতৃত্বকালীন ছুটি ও ব্রেস্টফিডিং কর্নারের মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলো নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান। এছাড়া ভয়েসের প্রোগ্রাম অফিসার প্রিয়তা ত্রিপুরা সমাজে প্রচলিত নেতিবাচক ধারণা দূর করতে গণমাধ্যমকর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর জোর দেন। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা এই কর্মশালায় নেত্রকোনায় কর্মরত বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমের সম্পাদক, প্রতিবেদক এবং বার্তা কক্ষের কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।


মাগুরায় বড়দিন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাগুরা প্রতিনিধি

মাগুরা জেলায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিন (ক্রিসমাস) শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপনের লক্ষ্যে একটি প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বেলা ১২ টার সময় মাগুরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মাগুরা জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন নিশাত আল নাহিয়ান, সহকারী পুলিশ সুপার (শালিখা সার্কেল), মাগুরা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল কাদের, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেরুন্নাহার সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা।

সভায় জানানো হয়, এ বছর মাগুরা জেলার ৪টি উপজেলায় মোট ১৮টি চার্চে বড়দিন উপলক্ষে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এসব অনুষ্ঠান নির্বিঘ্ন ও নিরাপদভাবে সম্পন্ন করতে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, উপাসনালয়সমূহের নিরাপত্তা জোরদার, যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখা, বিদ্যুৎ সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিক যেন নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে পারেন, সে বিষয়ে জেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে।

তিনি এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন।

সভা শেষে বড়দিন উদযাপনকে কেন্দ্র করে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করা হয়।


পানি না থাকায় শুকিয়ে চৌচির কক্সবাজারের লবণের মাঠ

* খাল খনন কর্মসূচিতে ধীরগতি * চরম অনিশ্চয়তায় প্রান্তিক লবণ চাষিরা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কক্সবাজার প্রতিনিধি

মৌসুম শুরু হওয়ার এক মাস পার হয়ে গেছে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) খাল খনন কর্মসূচি ধীরগতি হওয়ায় পানি সংকটে কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের হাজার হাজার একর লবণ চাষের জমি এখনো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। আদৌ কখন পানির ব্যবস্থা হবে তার নিশ্চিয়তা নেই। ফলে চৌচির হয়ে পড়ে থাকা লবণ মাঠ, পতিত অবস্থায় পড়ে আছে। এতে প্রান্তিক চাষিরা চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, কক্সবাজার জেলা লবণ চাষের অন্যতম স্থান সদরের এই চৌফলদন্ডী। প্রতি মৌসুমে এখানকার লবণ জমিতে বিপুল পরিমাণ লবণ উৎপাদিত হয়, যা জাতীয় চাহিদার একটি বড় অংশ পূরণে ভূমিকা রাখে। কিন্তু চলতি মৌসুমে সঠিক সময়ে খাল খননে উদ্যোগ নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড। অনেক দেরিতে শুরু করে খননের কাজ, এতে এক মাস পেরিয়ে গেছে। এখনো খনন কাজ শেষ হয়নি এবং কবে শেষ তাও বলা যাচ্ছে না।

চৌফদন্ডীর মধ্যম পাড়ার লবন চাষি মেহের আলী জানান, প্রতি বছর বাংলা সালের কার্তিক মাসের শেষ ১০ দিন থেকে লবণ চাষ শুরু হয়। কিন্তু এবার সে সময়ে এসে খাল খনন কাজ শুরু করে, পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে এক মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো নালায় (খালে) পানি আনা যায়নি। পানির অভাবে লবণ চাষ শুরু করা যায়নি। মৌসুমে মাঠজুড়ে পানি না থাকায় মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে।

চাষিরা প্রশ্ন তুলেন, লবণ মৌসুম চলাকালেই কেন পাউবোর খাল খনন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে? তাদের অভিযোগ, পরিকল্পনাহীন খাল খননের কারণে লবণের মাঠে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে।

স্থানীয় বর্গাচাষি রহমত উল্লাহ বলেন, ‘লবণাক্ত পানি না পাওয়ায় এখনো মাঠ প্রস্তুতের কাজ শুরু করতে পারিনি। মাঠে কাজ শুরু করতে না পারায় সঠিক সময়ে লবণ উৎপাদন করা যাবে না। লবণ চাষের মৌসুম নির্দিষ্ট মেয়াদি। তাই এক মাসের এই ঘাটতি পরে পোষানো যাবে না। এতে সব চাষিরা লোকসানে পড়বে।’

স্থানীয় বর্গাচাষি মো. হামিদ বলেন, ‘আমরা এখনো লবণাক্ত পানি পাচ্ছি না। আর লবণাক্ত পানি না পাওয়ায় এখনো মাঠ প্রস্তুতের কাজ শুরু করতে পারিনি। এই লবণ মৌসুমটা হচ্ছে নির্দিষ্ট সময়ের। এক মাসের ঘাটতি পরে আর পোষানো যাবে না। এতে আমরা সবাই বড় লোকসানের মুখে পড়ব।’

আরেক চাষি আবদুল কাদের বলেন, ‘লবণ চাষের এই সময়ে মাঠ প্রস্তুত, বাঁধ সংস্কার ও পানি নিয়ন্ত্রণে সামান্য দেরি হলেই পুরো মৌসুমটাই ঝুঁকির মুখে পড়ে। মৌসুমের শুরুতেই যদি উৎপাদন ব্যাহত হয়, তাহলে শেষ পর্যন্ত উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয় না।’ পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই খামখেয়ালিপনায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে চাষিরা। তারই অংশ হিসেবে গত রোববার আন্দোলনের ডাক দেয়। মাঠেই মানববন্ধন করে পাউবোর এই অবহেলার প্রতিবাদ জানান এবং দায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

এ ব্যাপারে লবণ চাষি কল্যাণ সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘আমরা উন্নয়নের বিপক্ষে নই। কিন্তু লবণ উৎপাদন ব্যাহত করে কোনো উন্নয়ন আমরা চাই না। খাল খনন চলুক, কিন্তু এমনভাবে করতে হবে যেন লবণ উৎপাদনও একসঙ্গে চলতে পারে। শিগগিরই সমাধান না হলে চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে।’

চাষিদের ক্ষোভ ও দুরবস্থার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশন (বিসিক) কক্সবাজারের উপব্যবস্থাপক জাফর আলম ভূঁইয়া। তিনি চাষিদের কথা শোনেন এবং দ্রুত সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয়ের আশ্বাস দেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকারি প্রাক্কলন সময় মেনে কাজ করতে গিয়ে এই সমস্যা হয়েছে। এতে লবণ চাষ ব্যাহত হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব খাল খনন কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘স্থানীয় লবণশিল্প আজ বড় চ্যালেঞ্জের মুখে। একদিকে লবণাক্ত পানির অভাবে লবণ চাষ ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে, বিদেশি সোডিয়াম সালফেটের চাপ ও বাজারে অস্থিরতার কারণে চাষি থেকে মিল মালিক, সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চাষিরা ন্যায্য মূল্য পাক এবং স্থানীয় শিল্প সুরক্ষিত থাকুক।


টাঙ্গাইলের মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন

* ঘনকুয়াশায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

ঘনকুয়াশার কারণে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। সরেজমিনে বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোর থেকে বেলা সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত মহাসড়কের যমুনা সেতু পূর্ব ইব্রাহীবাদ রেলস্টেশন, এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড ও রাবনা বাইপাস এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

নাদের পরিবহনের চালক সুমন মিয়া বলেন- ঢাকা থেকে দিনাজপুরের উদ্দেশে যাত্রা করছেন। ভোর থেকে স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি কুয়াশা পড়েছে। যার কারণে গাড়ি চালাতে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। অতিরিক্ত ঘনকুয়াশার কারণে সামনে কী আছে তা সহজে বোঝাও যাচ্ছে না।

সিলেট থাকা আসা পাবনাগামী ট্রাক চালক আব্দুল মোমেন বলেন- ঘনকুয়াশার কারণে কিছু বোঝা যায় না। কম গতিতে গাড়ি চালানো হচ্ছে। এছাড়া এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পূর্ব পর্যন্ত সড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনার শঙ্কাটা বেশি থাকে। এর কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাচ্ছি।

যমুনা সেতু পূর্ব থানার ওসি খন্দকার ফুয়াদ রুহানি বলেন- অতিরিক্ত ঘনকুয়াশা থাকলেও স্বাভাবিক মতোই যানবাহন চলাচল করছে। এছাড়া মহাসড়কে দুর্ঘটনারোধে সার্বক্ষণিক পুলিশ কাজ করছে।

এদিকে, সারাদেশের ন্যায় টাঙ্গাইলেও গত কয়েকদিন ধরে অতিরিক্ত ঘনকুয়াশা পড়েছে। টাঙ্গাইল আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক জামাল উদ্দিন বলেন, বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) টাঙ্গাইলে সর্বনিম্ন ১৩ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপামাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।


কেশবপুরে তুলা চাষে নতুন সম্ভাবনা

* বাড়ছে আবাদ ও লাভের হিসাব
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি

কেশবপুর উপজেলা কৃষি অফিসের প্রযুক্তিগত সার্বিক সহযোগিতায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চাষি জমিতে তুলা চাষে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। লাভজনক এই ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে উপজেলা তুলা উন্নয়ন বোর্ড ও কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের কর্মকর্তারা দফায় দফায় মাঠপর্যায়ে প্রান্তিক কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় ও উঠান-বৈঠক করছেন।

গত কয়েক বছর ধরে কৃষি অফিসের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টায় উপজেলার কৃষকদের মধ্যে তুলা চাষের আগ্রহ বাড়ছে। কম খরচে অধিক ফলন ও লাভের সম্ভাবনায় দিনে দিনে তুলার দিকে ঝুঁকছেন প্রান্তিক চাষিরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে তুলা চাষের জন্য উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন নির্বাচন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৬নং কেশবপুর সদর, ১নং ত্রিমোহিনী ও ১০নং সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন। এসব এলাকায় হাইব্রিড ওয়াড গোল্ড-১/২, এইচএস-৪ ও সিবি হাইব্রিড-১ জাতের তুলা চাষ করা হচ্ছে। বিশেষ করে সাতবাড়িয়া ও ত্রিমোহিনী ইউনিয়নে তুলার আবাদ সবচেয়ে বেশি হয়েছে। এর বাইরে অন্যান্য ইউনিয়নেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে তুলা চাষ শুরু হয়েছে।

চাষিরা জানান, ৪২ শতক বা ১ বিঘা জমিতে তুলা চাষ করতে খরচ হয় প্রায় ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা। বিপরীতে প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ১৮ থেকে ২৪ মণ পর্যন্ত তুলা পাওয়া যায়। বর্তমানে প্রতি মণ তুলার বাজারমূল্য ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার টাকা। ফলে এক বিঘা জমিতে খরচ বাদ দিয়ে কৃষকরা প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভবান হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কেশবপুরে তুলার আবাদ সম্প্রসারণে আমরা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি। তুলা একটি লাভজনক ফসল হওয়ায় চাষিদের বেশি বেশি তুলা আবাদে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আমরা আশানুরূপ ফলাফলও পাচ্ছি। গত বছর যেখানে ২২ হেক্টর জমিতে তুলার আবাদ হয়েছিল, চলতি মৌসুমে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হেক্টরে। এবার আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২২ হেক্টর, যা ইতোমধ্যে অতিক্রম করেছে।

কৃষি কর্মকর্তাদের মতে, এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই কেশবপুর উপজেলায় তুলা একটি সম্ভাবনাময় অর্থকরী ফসল হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করবে। এতে একদিকে কৃষকদের আয় বাড়বে, অন্যদিকে স্থানীয় পর্যায়ে তুলার উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।


ঐতিহ্য হারাচ্ছে চলনবিল অঞ্চলের শুঁটকির চাতাল

* দেশি মাছের তীব্র সংকট
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভাঙ্গুড়া (পাবনা) সংবাদদাতা

প্রাকৃতিক জলাশয়ের স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হওয়ায় এবং নির্বিচারে মাছ নিধনের ফলে ক্রমেই সংকটাপন্ন হয়ে উঠছে দেশি মাছ। এই দেশি মাছের প্রভাব বেশি পড়েছে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শুঁটকি চাতাল শিল্পে। অতীতে এক সময় বর্ষা শেষে যে শুঁটকি চাতালগুলো কর্ম চাঞ্চল্যে মুখর থাকত, সেইখানে এখন নীরবতা। দেশি মাছের আকালে বন্ধ হয়ে গেছে অধিকাংশ শুঁটকি চাতাল।

স্থানীয়দের মতে, নদী, খাল-বিল ও ঝিলের স্বাভাবিক চলন নষ্ট হওয়ায় জলাশয়ে পানি ধারণক্ষমতা অনেক কমে গেছে। মানুষের পরিকল্পনায় অপরিকল্পিত বাঁধ, সড়ক ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের ফলে নদী, খাল ও বিলগুলো বর্ষা মৌসুমেও পুরোপুরি বন্যার পানিতে ভরে উঠে না। এরপর প্রকৃত পরিবেশ নষ্ট করা চায়না দুয়ারি, বাদাই ও কারেন্ট জাল সহ নিষিদ্ধ বিভিন্ন জাল দিয়ে নির্বিচারে মাছ শিকার। এতে মা মাছের পাশাপাশি রেণু ও পোনা মাছও ধ্বংস হচ্ছে, ফলে প্রাকৃতিকভাবে মাছের বংশ বিস্তাার মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

মৎস্য সংশ্লিষ্টরা জানান, ভাঙ্গুড়ার মুক্ত জলাশয় ও চলনবিল এলাকায় এক সময় মাগুর, চাপিলা, শিং, পাবদা, টাকি, চিতল, রিটা, গুজি, আইড়, কৈ, বোয়াল, খৈলসা, দেশি সরপুঁটি, শোল, গজার, বাইম, টাটকিনি, তিতপুঁটি, বাঘাইড়, গুলশা, কাজলি, গাং চেলা, টেংরা, মলা, কালো বাউশ সহ অন্তত ৪০-৪৫ প্রজাতির দেশি মাছ পাওয়া যেতো। বর্তমানে এসব মাছ বিলুপ্তির পথে।দেশের বিভিন্ন হাট- বাজার ঘুরে চাষের মাছ ছাড়া দেশি মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে।

নদী ও বিল পাড়ের বাসিন্দা ইমরান, সোহেল হোসেন,বিখ্যাত চলনবিলের মধ্যে অবস্থিত মাগুড়া গ্রামের আমরুল ইসলাম ও ফরিদুল ইসলাম সরদারসহ অনেক এর সাথে কথা হয়। তারা জানান, একসময় বর্ষা মৌসুমে বিখ্যাত চলনবিল সহ ভাঙ্গুড়ার ছোট-বড় সব বিল পানিতে থৈ থৈ করতো। তখন উঁচু জমিতে ফসল আবাদ হত এবং নদী ও খাল-বিলে চলত মাছ শিকার। সেই মাছ দিয়েই সচল থাকত দেশিও শুঁটকি চাতালগুলো। ভাঙ্গুড়া উপজেলার শুঁটকি এক সময় দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশের অন্তত ২০-২২টি দেশে রপ্তানি হতো। কিন্তু জলাশয়ে পানি কমে যাওয়া এবং দেশি মাছ কমে যাওয়ায় এখন সেই রপ্তানি কার্যক্রমেও ভাটা পড়েছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে ভাঙ্গুড়া উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ শুঁটকি চাতাল বন্ধ। একটি খোলা আছে, সেটাতেও উৎপাদন খুবই সীমিত। ফলে চাতালগুলো হারাচ্ছে তাদের পুরনো আমেজ। শুঁটকি উৎপাদন কমে যাওয়ায় আয় হারাচ্ছেন শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা।

শুঁটকি চাতালেন শ্রমিক মর্জিনা খাতুন বলেন, ‘আগে চাতালে কাজের অভাব ছিল না। প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় হত। এখন মাছ না থাকায় অধিকাংশ দিন কাজই থাকে না। সংসার চালানো কষ্ট হয়ে গেছে।’

শুঁটকি ব্যবসায়ী আনছার আলী জানান, আগে নিয়মিতভাবে মাছ পাওয়া গেলেও এ মৌসুমে অনেকেই টানা দুই সপ্তাহেও মাছ পাননি। অনেক ব্যবসায়ী বাধ্য হয়ে চাতাল পুরোপুরি বন্ধ রেখেছেন। তাদের অভিযোগ,বিখ্যাত চলনবিল এলাকায় অপরিকল্পিত পুকুর খনন, অবৈধ জাল স্থাপন এবং অবাধ মাছ শিকার পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

ভাঙ্গুড়া উপজেলার কলকতির শুঁটকি চাতালের মালিক মো. দুলাল হোসেন বলেন, দিলপাশার, মাগুড়া, চক লক্ষীকোল, পুইবিল, আদাবাড়িয়া, বাশবাড়িয়া ও দত্তখারুয়া বিলে একসময় প্রচুর দেশি মাছ পাওয়া যেত। এখন চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে মা মাছ সহ সব ধ্বংস করা হচ্ছে। এতে দেশি মাছের উৎপাদন ও প্রজনন মারাত্মকভাবে কমে গেছে। শুঁটকি উৎপাদন ধরে রাখা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে।’

এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আলী আজম বলেন, ‘চায়না দুয়ারিসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ জালে নির্বিচারে মাছ নিধন এবং বৃষ্টি কম হওয়ায় জলাশয়ে পানি ও মাছ দুটোই কমেছে। অন্যান্য বছর যেখানে তিনটি শুঁটকি চাতাল ছিল, সেখানে এবার রয়েছে মাত্র একটি। গত বছর ১৩ টন শুঁটকি উৎপাদন হলেও এ বছর ৫ থেকে ৭ টন উৎপাদন করাও কঠিন।

তিনি আরও বলেন, দেশি ও বিদেশি বাজারে শুঁটকির চাহিদা থাকলেও জলাশয়ে পর্যাপ্ত মাছ না থাকলে এই শিল্প টিকিয়ে রাখা প্রায় অসম্ভব। এজন্য নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার বন্ধ, জলাশয়ের স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনা এবং মৎস্যজীবীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে নিয়মিত অভিযান ও আইন প্রয়োগ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।


সবুজ কারখানায় নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ

* ২০২৫ সালে ৩৮টি ফ্যাক্টরি সবুজ কারখানার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২৫ সাল বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। পরিবেশবান্ধব ও টেকসই উৎপাদনের পথে অগ্রযাত্রায় এ বছর শিল্পটি একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক স্পর্শ করেছে—একই বছরে রেকর্ডসংখ্যক ৩৮টি নতুন LEED-প্রত্যয়িত (Leadership in Energy and Environmental Design) সবুজ কারখানা যুক্ত হয়ে। এর আগে কখনোই বাংলাদেশের কোনো শিল্পখাত, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্প, এক বছরে এত বিপুল সংখ্যক আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সবুজ স্বীকৃতি অর্জন করতে পারেনি।

শিল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, এই সাফল্য কেবল একটি পরিসংখ্যানগত অর্জন নয়; বরং এটি বৈশ্বিক পোশাক সরবরাহ শৃঙ্খলে পরিবেশগত দায়িত্ব, জ্বালানি দক্ষতা এবং টেকসই উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতৃত্বের প্রতিফলন। ধারাবাহিক এই অগ্রগতির ফলে ২০২৫ সালের শেষে এসে বাংলাদেশে মোট সবুজ কারখানার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭০-এ—যা বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় সর্বোচ্চ।

এই প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে সবুজ রূপান্তরের এই ব্যতিক্রমী যাত্রা, এর প্রভাব ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করে তুলে ধরছে।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (ইউএসজিবিসি) এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ডিজাইন (লিড) গ্রিন ফ্যাক্টরি বা সবুজ কারখানার সার্টিফিকেশন দিয়ে থাকে। ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (ইউএসজিবিসি) তথ্যমতে, দেশে এখন সবুজ কারখানা ২৭০টি। এর মধ্যে গোল্ড ক্যাটাগরির ১৩৭, প্লাটিনাম ১১৪, সিলভার ১৫ ও সার্টিফাইড ক্যাটাগরির ৪ টি। এছাড়া, ৫৫০টির বেশি কারখানা গ্রিন ফ্যাক্টরি হতে রেজিস্ট্রেশন বা পাইপলাইনে রয়েছে।

তথ্যে বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২৫ সালে সবুজ কারখানার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছে দেশের সর্বোচ্চ সংখ্যক ৩৮টি কারখানা। এর আগে ২০২৪ সালে ২৬টি, ২০২৩ সালে ২৪টি, ২০২২ সালে ৩০টি, ২০২১ সালে ২৪টি, ২০২০ সালে ২৩টি ও ২০১৯ সালে ২৮টি ফ্যাক্টরি সবুজ কারখানার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছে।

এদিকে, শীর্ষ ১০০টি পোশাক কারখানার মধ্যে বাংলাদেশেই রয়েছে ৬৮টি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাকিস্তানে রয়েছে ৭টি ও তৃতীয় অবস্থানে থাকা ইন্দোনেশিয়ায় রয়েছে ৬টি।

জানা গেছে, গত বছর ২০০ সবুজ কারখানার মাইলফলক অর্জন করে বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে দেশের পোশাক খাতও নতুন মাইলফলক স্পর্শ করে। ফের বাংলাদেশ এ খাতে নতুন মাইলফলক স্পর্শ করলো। এর মধ্যে দিয়ে পরিবেশবান্ধব পোশাক উৎপাদনে বিশ্ব নেতৃত্ব আরও সুদৃঢ় করেছে বাংলাদেশ।

বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, সবুজ কারখানায় বাংলাদেশ বরাবরই ওপরে রয়েছে। পোশাক মালিকদের দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ, বিজিএমইএ’র কৌশলগত নেতৃত্ব ও শিল্পখাতের সম্মিলিত উদ্যোগেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে পরিবেশবান্ধব উৎপাদনের চাহিদা বাড়ছে। ক্রেতা ও ভোক্তারা কম কার্বন নিঃসরণ, পানি সাশ্রয় ও জ্বালানি দক্ষতার ওপর জোর দিচ্ছেন। বিষয়টি মাথায় রেখে বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলো কার্বন দক্ষতা, পানি ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। লিড সার্টিফিকেশন এখন শুধু পরিবেশ সুরক্ষার বিষয় নয়, বরং বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল।

তিনি আরও বলেন,এই অর্জন প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের পোশাক খাত ভবিষ্যতে ইউরোপীয় ইউনিয়েনের পরিবেশ আইন, কার্বন মূল্য নির্ধারণ ও ডিজিটাল স্বচ্ছতা ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ২০২৫ সালের এই রেকর্ড বিশ্বকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে—বাংলাদেশ শুধু পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষে নয়, বরং সবুজ ও ভবিষ্যৎমুখী শিল্পায়নেও নেতৃত্ব দিচ্ছে।


লালমনিরহাটে পুরোনো আলুর প্রভাবে কমেছে নতুন আলুর দাম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

শীতে উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলার মতো লালমনিরহাটেও কৃষিকাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কৃষিপ্রধান জেলার পাঁচটি উপজেলায় শীতকালীন সবজি ও আগাম আলুর মোটামুটি ভালো ফলন হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ায় ইতোমধ্যে হাট-বাজারে নতুন আলু উঠতে শুরু করলেও তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হওয়ায় কৃষকরা প্রত্যাশিত লাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন কাঁচা শাক-সবজির আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, আগাম নতুন ক্যারেজ জাতের আলু পাইকারি বাজারে পাঁচ কেজির পালা ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা কেজিপ্রতি ১৭ টাকা। হাগড়াই (বগুড়াই) জাতের আলু পাঁচ কেজির পালা ১৩০ টাকায়, অর্থাৎ কেজিপ্রতি ২৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, গত মৌসুমের পুরোনো লাল আলু আড়তে বস্তাপ্রতি ২৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি বস্তায় প্রায় ৬০ কেজি থাকায় কেজিপ্রতি দাম দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৫ টাকা।

খুচরা বাজারে শহরের গোশালা বাজার, পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এলাকা, হাড়িভাঙ্গা, সদর উপজেলার বড়বাড়ী, মহেন্দ্রনগর ও বুড়ির বাজারে আগাম ক্যারেজ জাতের আলু কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২২ টাকা এবং হাগড়াই (বগুড়াই) জাতের আলু ৩০ থেকে ৩২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি, গত মৌসুমের পুরোনো লাল আলু কেজিপ্রতি ৮ থেকে ১০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে আগাম নতুন আলুর দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। আদিতমারীর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের কৃষক ইব্রাহিম হোসেন বাসসকে জানান, গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে নতুন আলুর পাইকারি দাম কেজিপ্রতি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা থেকে নেমে ১৭ থেকে ২৬ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ন্যায্য দাম না পেলে কৃষকদের জীবনযাপন মারাত্মকভাবে সংকটে পড়বে।’

আলুর দাম কমে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে জেলা সদরের বড়বাড়ী কাঁচামাল আড়তের পাইকার মজিদুল মিয়া বাসসকে বলেন, ‘বাজারে পুরোনো আলুর সরবরাহ বেশি থাকায় নতুন আলুর চাহিদা কমে গেছে।’

একই আড়তের আরেক পাইকার হক সাহেব জানান, কৃষক ও পাইকারদের মধ্যে কার্যকর বাজার সংযোগ ও তথ্যের ঘাটতিও দামের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাটে আগাম নতুন আলু চাষ হয়েছে প্রায় ৬৫ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে জেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি এবং উৎপাদন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার ১৫০ মেট্রিক টন।

কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত আগাম আলু বাদে ৬ হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ সম্পন্ন হয়েছে, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩১০ হেক্টর বেশি। আগামী কয়েকদিনে আরও কিছু জমিতে আলুর চাষ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলাভিত্তিক হিসাবে জেলা সদর উপজেলায় ৪ হাজার ১০ হেক্টর, আদিতমারীতে ৮৮০ হেক্টর, কালীগঞ্জে ৯৯০ হেক্টর, হাতীবান্ধায় ৬৮০ হেক্টর এবং পাটগ্রামে ২৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ সম্পন্ন হয়েছে।

আদিতমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক বাসসকে বলেন, ‘অনুকূল আবহাওয়া থাকলে চলতি মৌসুমে আলুর উৎপাদন প্রত্যাশার চেয়েও বেশি হতে পারে।’

জেলা সদরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার সোহায়েল আহমেদ জানান, হিমাগারে সংরক্ষিত পুরোনো আলু বাজারে থাকায় নতুন আলুর দাম চাপের মুখে রয়েছে।

এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আবহাওয়া সহায়ক থাকলে ভালো ফলনের পাশাপাশি কৃষকরা ন্যায্য দামে আলু বিক্রি করতে পারবেন।’

সূত্র : বাসস


উদ্যোক্তা তৈরিতে আনসার-ভিডিপির ‘সঞ্জীবন’ বিষয়ক কর্মশালা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর কল্যাণমূলক উদ্যোগ ‘সঞ্জীবন প্রকল্প’ বিষয়ক দিনব্যাপী কর্মশালা বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি একাডেমির বীর বিক্রম শহীদ এলাহী অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এ কর্মশালাটি বাংলাদেশ আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের আওতায় পরিচালিত হয়। কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আনসার ও ভিডিপি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। তিনি ‘সঞ্জীবন প্রকল্প’-এর উদ্দেশ্য, বাস্তবায়ন কাঠামো এবং এর মাধ্যমে সদস্যদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের সম্ভাবনা তুলে ধরেন।

মহাপরিচালক তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘সঞ্জীবন প্রকল্প আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের মধ্য থেকে দক্ষ, কর্মঠ ও উদ্যোক্তা হতে আগ্রহী ব্যক্তিদের নির্বাচন করে টেকসই কর্মসংস্থান সৃষ্টির একটি সময়োপযোগী প্রয়াস। সুবিধাবঞ্চিত সদস্যদের স্বাবলম্বী করে তুলতেই এই প্রকল্পের পাইলটিং কার্যক্রম দেশের ১২টি জেলার ১২টি উপজেলায় বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ তিনি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সকলকে কাজের পরিধি, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও অর্জনের সূচক সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

মহাপরিচালক উল্লেখ করেন, ‘সঞ্জীবন প্রকল্প’-এর অগ্রযাত্রায় পরিকল্পনা প্রণয়ন থেকে শুরু করে উপকারভোগী নির্বাচন পর্যন্ত প্রতিটি বিষয় সুসংগঠিত ও সুনির্দিষ্ট। সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করে তা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় কৌশল ও সমাধান কাঠামো ইতোমধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে, যা প্রকল্পটির দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য নিশ্চিত করবে বলে তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেন।

কর্মশালায় প্রকল্পভিত্তিক পৃথক সেশন পরিচালনা করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সঞ্জীবন প্রকল্পের প্রস্তাবনা দাখিল প্রক্রিয়া, সদস্য নির্বাচন কৌশল বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেশন পরিচালনা করেন উপমহাপরিচালক ( প্রশিক্ষণ) জনাব মোঃ রফিকুল ইসলাম। প্রকল্পের নন-এগ্রোবেজড কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য রাখেন ২৭ আনসার ব্যাটালিয়নের পরিচালক রুবেল উকিল। তিনি নন-এগ্রোবেজড উদ্যোগের সম্ভাবনা, বাস্তবায়ন পদ্ধতি এবং সদস্যদের দক্ষতা অনুযায়ী প্রকল্প নির্বাচন বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

কর্মশালার একটি গুরুত্বপূর্ণ মোটিভেশনাল সেশন পরিচালনা করেন বাংলাদেশের অন্যতম উদ্যোক্তা এবং ‘নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ। তাঁর অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য অংশগ্রহণকারীদের উদ্যোক্তা মনোভাব গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রাখে এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে সফল উদ্যোগ পরিচালনার পথনির্দেশনা প্রদান করে।


তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে দৌলতপুরে আবেগের জোয়ার, ঢাকার পথে দুই হাজার নেতাকর্মী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

প্রায় ১৭ বছরের দীর্ঘ প্রবাসজীবন শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বইছে আবেগের জোয়ার। এ ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে উপজেলা থেকে অন্তত দুই হাজার নেতাকর্মী ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

দৌলতপুর উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে অর্ধশত বাস, মাইক্রোবাস, হাইস ও প্রাইভেট কারে নেতাকর্মীরা রাজধানীর পথে যাত্রা করেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু হয়। আজ বুধবার সকালেও একাধিক বহর রওনা হয়েছে, আবার কেউ কেউ সন্ধ্যায় যাত্রা করবেন। অনেকে ট্রেন ও নিজস্ব ব্যবস্থায় ঢাকায় যাচ্ছেন। দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রিয় নেতার দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের চোখেমুখে উচ্ছ্বাস ও আবেগ স্পষ্ট। অনেকেই একে আন্দোলন-সংগ্রামের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখছেন।

উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুদুজ্জামান রুবেল বলেন,

“১৭ বছর পর আমাদের নেতা দেশে ফিরছেন—এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। দৌলতপুর থেকে পাঁচটি বাস ও অন্তত ৩০টি যানবাহনে নেতাকর্মীরা ঢাকায় যাচ্ছেন। সবার ভেতরেই এক অন্যরকম আবেগ কাজ করছে।”

দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির মনোনীত প্রার্থী রেজা আহমেদ বাচ্চু বলেন,

“তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি নেতাকর্মীদের জন্য শুধু রাজনৈতিক নয়, আবেগেরও একটি বিষয়। এটি গণতন্ত্রকামী মানুষের জন্য আশার বার্তা।”


সীমান্ত এলাকায় বিজিবির বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার সাধারণ মানুষের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই বাজার এলাকায় শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়ন (৪৬ বিজিবি)-এর উদ্যোগে একটি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। সীমান্ত অঞ্চলের জনগণের আর্থ-সামাজিক জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে আয়োজিত এ মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন ৪৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম জাকারিয়া।

মেডিকেল ক্যাম্পে মোট ৫১০ জন রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে রোগীদের প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়। এ সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা বিভিন্ন জটিল রোগ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করেন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও সুস্থ জীবনধারা বজায় রাখার বিষয়ে পরামর্শ দেন।

শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়ন (৪৬ বিজিবি) কর্তৃপক্ষ জানায়, সীমান্ত এলাকার মানুষের কল্যাণে এ ধরনের মানবিক ও জনসেবামূলক কার্যক্রম নিয়মিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।


banner close