ছোট-বড় অসংখ্য টিলা নিয়ে সিলেট। এসব টিলার পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে প্রায় ১০ হাজার পরিবার। মৃত্যুঝুঁকি নিয়েই টিলার নিচে ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন তারা। টানা বৃষ্টির কারণে সিলেটের পাহাড়টিলা ধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে প্রাণহানির শঙ্কাও বেড়েছে। গত শনিবারই সিলেটের অন্তত ৪টি স্থানে টিলাধসের ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হয়েছে এক শিশু। আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। এ ছাড়া টিলা ধসে অন্তত ৪টি ঘর ভেঙে গেছে।
শনিবার সিলেট সদর উপজেলার খাদিম চা বাগান এলাকায় টিলা ধসে এক শিশু মারা যায়। এ ছাড়া নবীগঞ্জে টিলা ধসে আহত হয়েছেন দশজন। আর জৈন্তাপুর উপজেলায় টিলা ধসে তিনটি বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া টিলা ধসের ঘটনা ঘটেছে নগরের আখালিয়ায়ও। পাঁচ দিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে সিলেটে। বৃষ্টি হয়েছে রোববারও। ফলে বেড়েছে টিলা ধসের শঙ্কাও।
সিলেটে কী পরিমাণ মানুষ টিলার পাদদেশে বসবাস করেন সরকারিভাবে এর কোনো তালিকা নেই, তবে বেসরকারি হিসেবে প্রায় ১০ হাজার পরিবার টিলার পাদদেশে বসবাস করছে। মূলত কম ভাড়ায় কিংবা বিনা ভাড়ায় থাকতে পারার কারণেই দরিদ্র শ্রেণির লোকেরাই টিলার পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করেন। আবার কিছু গোষ্ঠী টিলা কাটা বা দখলে রাখার জন্য টিলার পদদেশে ঘর বানিয়ে ভূমিহীনদের কম ভাড়ায় বরাদ্দ দেয়।
যদিও ২০১২ সালে সিলেটের পাহাড়-টিলা সংরক্ষণে উচ্চ আদালতের এক রায়ে টিলার ওপর ও পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করা দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে পুনর্বাসনের নির্দেশনা দেয়া হয়।
সিলেট নগরের হাওলাদারপাড়া এলাকার একটি টিলার নাম জাগো টিলা। উঁচু এই টিলার একেবারে কিনারা ঘেঁষে সারিবদ্ধভাবে কয়েকটি ঘর। ওপরের ঘরগুলোর ঠিক নিচে, টিলার পাদদেশেও ঘর রয়েছে কয়েকটি। টিলার ওপরে ও ঢালে বসবাস করা সব পরিবারের বাসিন্দাই রয়েছেন ঝুঁকিতে। প্রাণের শঙ্কা নিয়েই বছরের পর বছর ধরে তারা বসবাস করে আসছেন এখানে।
জাগোটিলার ওপর ঘর বানিয়ে বাস করা শামসুল ইসলাম বলেন, ‘এটি সরকারি টিলা। ভাড়া দিতে হয় না। তাই আমরা এখানে ঘর বানিয়ে থাকি।’
ঝুঁকি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ভয় তো আছেই। বৃষ্টি দিলে ভয় আরও বেড়ে যায়। কিন্তু আমরা গরিব মানুষ। জায়গা কেনার সামর্থ্য নেই। ঘর ভাড়া করাও অনেক খরচের। তাই ঝুঁকি নিয়েই এখানে থাকি।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টিলার ওপরে ও পাদদেশে বসবাসকারী বেশিরভাগ লোকজনই এ রকম দরিদ্র। স্থানীয় প্রভাবশালীরা টিলা কাটা ও দখলের জন্য দরিদ্রশ্রেণির লোকজনদের বসিয়েছেন। আবার কম টাকায় পেয়ে টিলার পাদদেশে জমি কিনেও ঘর বানিয়েছেন অনেকে।
বাংলাদেশ পরিবশে আইনবিদ সমিতির (বেলা) হিসাব মতে, সিলেট নগর, সদর, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় প্রায় ৪০০ পাহাড়-টিলা রয়েছে। এসব টিলার ওপর ও পাদদেশে অনেক পরিবার ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করে।
পরিবেশবাদী সংগঠন সেভ দ্য হেরিটেজ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের প্রধান সমন্বয়ক আবদুল হাই বলেন, আমরা বছর তিনেক আগে একটা জরিপ চালিয়ে দেখেছিলাম জেলায় টিলার পাদদেশে প্রায় ১০ হাজার পরিবার ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাস করছেন। এখন এ সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে।
তিনি বলেন, বসবাসের জন্য এসব টিলার অনেকাংশ কেটে ফেলায় টিলাগুলোও দুর্বল হয়ে পড়েছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে এগুলো ধসে পড়ে প্রাণহাণির ঘটনা ঘটে।
অপরিকল্পিতভাবে টিলা কাটা, বৃক্ষ উজাড় ও টিলার পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসের ফলে বৃষ্টি হলেই টিলা ধসে পড়ছে বলে মত এই পরিবেশকর্মীর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরের হাওলাদারপাড়া, আখালিয়া, পীরমহল্লা ব্রাহ্মণশাসন জাহাঙ্গীরনগর, তারাপুর চা বাগান এবং নগরের উপকণ্ঠের বালুচর, বিমানবন্দর সড়ক, খাদিমপাড়া, খাদিমনগর, জোনাকী, ইসলামপুর মেজরটিলা, মংলিরপাড় এলাকায় বিভিন্ন টিলার পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে কয়েকশ পরিবার। এ ছাড়া জৈন্তাপুর, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় টিলা ও পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে সহস্রাধিক পরিবার।
কী পরিমাণ লোক টিলার ওপর ও পাদদেশে বসবাস করেন এমন তথ্য নেই জানিয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল বশিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের উপজেলায় কয়েকটি ইউনিয়নে এ রকম টিলার পাদদেশে লোকজন বসবাস করেন। আমরা তাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করাচ্ছি। ইউনিয়ন পরিষদেও চেয়ারম্যানদের দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছি।
ইউএনও বলেন, প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে তাদের সরানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু যারা টিলার পাদদেশে বসবাস করেন তারা সরতে চান না। কাউকে জোর করে সারালেও কিছুদিন পর তারা আবার ফিরে আসেন।
তবে টিলার পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস ও প্রাণহানির জন্য প্রশাসনের গাফিলতিকে দায়ী করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সিলেটের সমন্বয়ক শাহ শাহেদা আক্তার বলেন, ২০১২ সালে আমাদের করা একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত সিলেটে পাহাড়-টিলা কাটায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। একই সঙ্গে পাহাড়-টিলা সংরক্ষণ ও তার পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী দরিদ্র মানুষজনকে পুনর্বাসনের নির্দেশনা দেন। কিন্তু ওই রায়ের ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হয়নি।
শাহ শাহেদা আক্তার বলেন, কী পরিমাণ লোক ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করেন তারও কোনো হিসেব নেই জেলা প্রশাসনের কাছে। তাদের পুনর্বাসন বা টিলা সংরক্ষণে সরকারি কোনো উদ্যোগ বা প্রকল্প নেই। বরং টিলা ধ্বংস করে অনেক প্রকল্প আছে। সরকারের এই নিষ্ক্রিয়তার কারণেই বারবার এ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটছে।
টিলার পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাকারীদের সরানো যায় না দাবি সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসানেরও। তিনি বলেন, ‘টিলার ওপরে ও পাদদেশে যারা বসবাস করেনম চেষ্টা করেও তাদের অন্যত্র সরানো যায় না। এ বছরও আমরা সব ইউএনওর মাধ্যমে মাইকিং করিয়ে টিলার পাদদেশে বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে যেতে বলেছি। কিন্তু কেউ কথা শোনেনি।’
তিনি বলেন, এটা একটা বড় সমস্যা। তাদের কীভাবে সরানো যায় ও পুনর্বাসন করা যায়, এ নিয়ে ভাবছি। তাদের মধ্যে যদি কেউ ভূমিহীন থেকে থাকেন, তাহলে প্রশাসন বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তাদের সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে।
এবারের নির্বাচন হবে ইতিহাস সৃষ্টিকারী নির্বাচন। আর এই নির্বাচনে আপনাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছি। এখন ডিসিদের একটাই কাজ সেটা হলো নির্বাচন। আর বাকি কাজ হলো রুটিন ওয়ার্ক। সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জয়পুরহাট জেলার নতুন জেলা প্রশাসক মো. আল-মামুন মিয়া। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জেলার সার্বিক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে নতুন জেলা প্রশাসক আলোচনা করেন।
সামনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচন সম্পর্কে সাংবাদিকদের জন্য কোন আগাম বার্তা দিয়েছেন বা আছে কি না? এমন প্রশ্নে জেলা প্রশাসক মো. আল-মামুন মিয়া বলেন, নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেছিলেন। ব্রিফিং শুরু হয়ে প্রধান উপদেষ্টা আমাদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা ভাষণ দিয়েছেন। তারপরে ৪ জন সচিব আবার ব্রিফিং দিয়েছেন। তারমধ্যে ইলেকশন কমিশনের সচিব , তারপরে স্বরাষ্ট্র সচিব , জনপ্রশাসন সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রীপরিষদ সচিব। এ সময় ব্রিফিংয়ে তারা বিভিন্ন দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্য রেখেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় তার বক্তব্যে বলেছেন, একটা নির্বাচন হয় প্রতি পাঁচ বছর পর পর গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু ইতিহাস কীভাবে হবে? ইতিহাস হবে যে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কেমন হবে? অর্থাৎ এবারের নির্বাচনে আরেকটা গণভোট হচ্ছে। কাজেই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কেমন হবে। বাংলাদেশ কি রূপরেখা তার ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবে সেটা এইবারের নির্বাচনে সিদ্ধান্ত হবে? ওনার বক্তব্য হচ্ছে আমরা ব্যর্থ হইতে পারি না। আমরা ব্যর্থ হলে রাষ্ট্র ব্যর্থ হয়ে যাবে। বাংলাদেশ ব্যর্থ হয়ে যাবে। কাজেই যেকোনভাবে আমাদেরকে এই নির্বাচনে সফল হইতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জেসমিন নাহার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাইমেনা শারমীন, জয়পুরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক, জয়পুরহাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, প্রথম আলো জেলা প্রতিনিধি রবিউল ইসলামসহ জেলার ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট, অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়ার সাংবাদিকরা।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিতে আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ার জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের দাবিতে ফরিদপুরে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার ফরিদপুর শহরের জেলখানা গেট এলাকা থেকে পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি খন্দকার আবদুল আউয়াল এর নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে এসে শেষ হয়।
পরে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লার কাছে তারা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এ সময় পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি খন্দকার আবদুল আউয়াল, ফরিদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. সেক নাজিম, সিনিয়র সহসভাপতি মনসুর আহমেদ, সহসভাপতি মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, যুগ্ম সম্পাদক মো. আব্দুর রাজ্জাক, মো. ইবনুল কাজী, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোখলেসুর রহমান, প্রচার সম্পাদক মো. আব্দুল হাকিম, যুব বিষয়ক সম্পাদক মো. মশিউর রহমানসহ অন্যান্য বিদ্যুৎ শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, পতিত স্বৈরাচারের বিদ্যুৎ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী ও তার দোষরদের মদদে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থাকে বেসরকারিকরণের লক্ষ্যে গ্রাহক সেবার মান তলানীতে পৌঁছাতে বিগত ১৭ বছরে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিতে কোন কারিগরী লোকবল নিয়োগ করা হয়নি। ফলে ২১ জেলার বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা বহিরাগত গ্যাটিস নির্ভর হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা একটি অতিমাত্রায় কারিগরী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কোন দক্ষ জনবল তৈরি হয়নি।
আমরা অবিলম্বে ‘আউটসোর্সিং’ প্রক্রিয়ায় লোকবল নিয়োগ বন্ধ করে স্থায়ী শ্রমিক নিয়োগের জন্য ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করছি।
জনপ্রিয় ইসলামী স্কলার, চিন্তক ও বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, রাসুলের (সা.) শিক্ষাদান পদ্ধতি কল্যাণকামিতায় ভরপুর ছিল। তাঁর শিক্ষাদান ছিল উৎসাহমূলক ও আশাব্যঞ্জক। তাঁর শিক্ষাদান পদ্ধতি ছিল সুন্দর ও উপদেশমূলক। অংশগ্রহণমূলক ও প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক শিক্ষাদানকে তিনি অগ্রাধিকার দিতেন। তিনি শুনতেন এবং শোনাতেন। ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) সভ্যতা, সমতা, জীবনবোধ শিখিয়েছেন। তিনি শিক্ষক হিসাবে প্রেরিত হয়েছিলেন। জ্ঞানার্জনকে আল্লাহর রাসুল (সা.) বাধ্যতামূলক করেছিলন। জ্ঞানের আলোকে তিনি বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে বলেছেন। জ্ঞান অর্জন করতে অনীহাকে নবী (সা.) পাপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) আয়োজিত ‘রাসুল (সা.) এর শিক্ষাদান পদ্ধতি’ শীর্ষক এক সেমিনারে জনপ্রিয় ইসলামী স্কলার, চিন্তক ও বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারী প্রধান অতিথি ও প্রধান আলোচকের বক্তব্যে কথাগুলো বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আ ন ম শামসুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ শাহজাহান এবং আইআইইউসির ট্রেজারার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান প্রমুখ। আলোচনার শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অতিথিকে ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে বরণ করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স ডিভিশনের পরিচালক মুহাম্মদ মামুনুর রশীদ এবং অতিরিক্ত পরিচালক চৌধুরী গোলাম মাওলা। সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্পণ শিল্পীগোষ্ঠী মনোমুগ্ধকর ইসলামি সংগীত পরিবেশন করে।
বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় উম্মাহর সম্পদ। এটাকে আমাদেরকেই সুন্দর ও সমৃদ্ধ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, দুনিয়ার সফলতাই আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য নয়। প্রকৃত সফলতা হলো আখেরাতমুখী হওয়া, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উৎকর্ষ অর্জন করা। এই বিশ্ববিদ্যালয় সেই আদর্শেই শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলতে চায়।
২৩ মাস বন্ধ থাকার পর পুনরায় গ্যাস সংযোগ পেল জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা সার কারখানা (জেএফসিএল)। গ্যাস সংযোগ দেওয়ায় ফের ইউরিয়া উৎপাদনে ফেরার কার্যক্রম শুরু করছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। গত সোমবার সন্ধ্যার পর যমুনা সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ চালু করে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যমুনা সার কারখানার উপ-প্রধান প্রকৌশলী (রসায়ন) মো. ফজলুল হক। দীর্ঘদিন পরে গ্যাস সংযোগ পেয়ে কারখানা চালু হওয়ায় খুশি কারখানার কর্মকর্তা, কর্মচারী, শ্রমিক, ডিলার ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
কারখানা সূত্রে জানা যায়, ১৯৯১ সালে তারাকান্দি এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ দানাদার ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানা। এ কারখানাটি বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থা নিয়ন্ত্রণাধীন এবং কেপিআই-১ মানসম্পন্ন সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। কারখানার সঠিক উৎপাদনের জন্য প্রতিদিন গড়ে ৪২ থেকে ৪৩ পিএসআই গ্যাসের প্রয়োজন হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কারখানাটি প্রতিদিন ১ হাজার ৭০০ টন সার উৎপাদন করছিল। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে গ্যাসের প্রেসার স্বল্পতা ও নানা ত্রুটির কারণে উৎপাদন কমে গিয়ে ১ হাজার ২০০ টনে নেমে আসে।
গত ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে তিতাস কোম্পানি গ্যাসের প্রেসার কমিয়ে দেয়ার কারণে উৎপাদন ও কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে বন্ধ থাকার দীর্ঘ ১৩ মাস পর ২০২৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পুনরায় গ্যাস সংযোগ পেয়ে আবারো উৎপাদনে ফিরে কারখানাটি। কিন্তু উৎপাদন শুরুর ৪ দিনের মাথায় কারখানার অ্যামোনিয়া প্ল্যান্টে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আজ বুধবার রাত ৭টার পর ফের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। তারপর থেকে বন্ধ রয়েছে বৃহৎ এ কারখানাটি। এদিকে গত সোমবার থেকে গ্যাসের চাপ পুনরায় বৃদ্ধি করলে ইউরিয়া উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ।
যমুনা সার কারখানার উপ-প্রধান প্রকৌশলী (রসায়ন) মো. ফজলুল হক বলেন, ‘সোমবার সন্ধ্যার পর কারখানায় গ্যাসের চাপ বাড়িয়েছে তিতাস। কারখানার যন্ত্রাংশের কিছুটা মেরামত করে পুরোপুরি উৎপাদনে যেতে আগামী সপ্তাহ নাগাদ সময় লাগতে পারে।’
ঝালকাঠি শহরের কোলঘেঁষে বয়ে যাওয়া সুগন্ধা নদী যুগ যুগ ধরে এখানকার দুই তীরের সৌন্দর্য ছড়িয়েছে। কিন্তু প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ ভাঙনে ভিটে ছাড়া হয়েছে এ নদীর তীরের অনেক পরিবার। এলপিজি বহনকারী দ্রুত গতির জাহাজের ঢেউয়ে শীতকালেও এ নদীর তীর ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। ঘরবাড়ি ভেঙে নদীতে বিলীন হওয়া, চাষের জমি হারানো আর প্রতিদিনের অনিশ্চয়তা যেন এক অদৃশ্য আতঙ্ক হয়ে ছিল এ অঞ্চলের মানুষের জীবনে। সুগন্ধা তীরের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ কাটিয়ে ওঠার স্বপ্ন এখন বাস্তবের কাছে পৌঁছেছে।
ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বিভাগের হাতে নেওয়া ‘সুগন্ধা নদীর ভাঙন থেকে ঝালকাঠি জেলার সদর উপজলো ও নলছটি উপজলোর বিভিন্ন এলাকা রক্ষা’ প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে, যা নদীপাড়ের জনজীবনে নতুন আশার আলো ছড়িয়ে দিয়েছে।
প্রকল্প এলাকায় এখন প্রতিদিনই দেখা যায় শ্রমিকদের বেশ কর্মযজ্ঞ। নদীর তীরে স্থাপন করা হচ্ছে সুরক্ষাবাঁধ, জিওব্যাগ, সিমেন্ট কংক্রিটের ব্লকসহ আধুনিক নদীশাসন কাঠামো।
পাউবো কর্মকর্তারা জানান, ঝালকাঠি সদর ও নলছিটি উপজেলায় বাস্তবায়নাধীন ১৩.২১৫ কি. মি. নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পটির দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্বের কথা মাথায় রেখে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’
সুগন্ধা নদীর স্রোতের ধরন, মাটির গঠন এবং ভাঙনপ্রবনতার বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। এসব ব্যবস্থায় নদীর তীর দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল থাকবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
সুগন্ধা তীরের বাসিন্দা মাহাবুব আলম, মকবুল মৃধা, সবুজ হাওলাদার এবং মনোয়ারা বেগমসহ স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে পরিবর্তনের ছোঁয়া টের পাচ্ছেন তারা। পৌর এলাকার কৃষ্ণকাঠি, কুতুবনগর, শহীদ স্মরণী এলাকার নদীর তীরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কয়েক মাস আগেও যারা ভয়ে নিজের বসতবাড়িতে বিনিয়োগ করতে পারছিলেন না, এখন তারা নতুন ঘর নির্মাণের পরিকল্পনা করছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভাঙনের ভয়ে কমে যাওয়া ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন গতি আসবে। নদীর অপর পাড়ের কৃষকরা নিশ্চিন্তে আগাম মৌসুমের ফসল ফলানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নদীর তীরের বাসিন্দারা আরও জানিয়েছেন, প্রকল্পটি সমাপ্ত হলে বেড়িবাঁধ এলাকা পর্যটন এলাকায় রূপ পাবে। এছাড়া নদীর তীরবর্তী জমির দামও বেড়ে যাবে কয়েকগুণ। যা স্থানীয় অর্থনীতির ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
সুগন্ধা তীরের বাসিন্দা কামরুজ্জামান, হুমায়ুন কবির এবং আজগর হাওলাদার বলছেন, ‘নদীর ভাঙন রোধ শুধু একটি সরকারি প্রকল্প নয়, এটি নদীর পাড়ের মানুষের বেঁচে থাকার লড়াইয়ের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা একটি স্বপ্ন। প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে মানুষ আবাসন ও ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে আরেকটি নিরাপদ বাস্তবতায় প্রবেশ করবে।’
এদিকে প্রকল্পকে সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত টাস্কফোর্স কমিটি নিয়মিতভাবে স্থানীয় দপ্তরে খোঁজ নিচ্ছেন। আর প্রতিনিন একাধিকবার ব্লক তৈরির কাজ ও কাজের গুণগত মান যাচাই করছেন পাউবো ঝালকাঠি কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। নকশা অনুযায়ী নির্মাণকার্য হচ্ছে কি না, তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে কর্তৃপক্ষ। এ কারণে পুরো প্রকল্পটি নিরাপদ, মানসম্মত ও দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উন্নয়ন সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এই প্রকল্প শুধু ভাঙন ঠেকিয়ে মানুষের ঘরবাড়ি রক্ষাই করবে না, বরং ঝালকাঠির সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন পথ খুলে দেবে।
নদীর পাড়কে কেন্দ্র করে তৈরি হবে নতুন বাজার, রেস্টুরেন্ট, পার্ক, কৃষিভিত্তিক উদ্যোগ এবং টেকসই পরিবেশবান্ধব বসতি। সব মিলিয়ে, সুগন্ধা নদী সংরক্ষণ প্রকল্প এখন ঝালকাঠির মানুষের সামনে নিরাপদ, স্থিতিশীল এবং উন্নয়নমুখী ভবিষ্যতের দ্বার উন্মোচিত করছে।
প্রকল্পটি শেষ হলে সুগন্ধা নদীর তীর শুধু ভাঙন মুক্তই হবে না, এটি রূপ নেবে টেকসই উন্নয়নের এক অনন্য সম্ভাবনাময় অঞ্চলে।
#
নওগাঁর মান্দা উপজেলায় নারী উন্নয়ন ফোরামের নামে বরাদ্দকৃত ১০ লাখ টাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন ছাড়াই আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। কাগজে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন দেখানো হলেও ফোরামের সদস্যরা জানেন না বরাদ্দের কথা; কেউ কোনো উপকরণও পাননি। ফলে উপজেলাজুড়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। গত বছর আগস্ট মাসের পর থেকে সভাপতি না থাকার কারণে নারী উন্নয়ন ফোরামের কোনো অস্তিত্ব নেই বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, একের পর এক ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে সরকারি অর্থআত্মসাতের ঘটনা বেড়ে চলেছে। দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সরকারি বার্ষিক উন্নয়ন তহবিলের (এডিবি) আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নারী উন্নয়ন কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রকল্পে মোট ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেখানো হয়। এর মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণের নামে ৫ লাখ টাকা এবং গবাদিপশু বিতরণের নামে আরও ৫ লাখ টাকা।
প্রকল্প দুটি উপজেলা এলজিইডির তালিকায় যথাক্রমে ১৪৮ ও ১৪৯ নম্বরে অন্তর্ভুক্ত এবং কাগজপত্র অনুযায়ী ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে উপজেলা পরিষদের সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, নারী উন্নয়ন ফোরামের ৪২ জন সদস্যের কেউই এই দুই প্রকল্প থেকে কোনো উপকরণ পাননি। বরাদ্দের ব্যাপারেও ছিল না তাদের কোনো ধারণা। গত অর্থবছরের বরাদ্দকৃত সেলাই মেশিন ও গবাদিপশু না পেয়ে (২৪ নভেম্বর ২০২৫) নারী উন্নয়ন ফোরামের সদস্যরা বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আখতার জাহান সাথীর কার্যালয়ে মৌখিক অভিযোগ করে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন।
নারী উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও পরানপুর ইউপির সদস্য কমলা বেগম বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরে নারী উন্নয়ন ফোরামের মাধ্যমে কিছুই দেওয়া হয়নি। বরাদ্দ ছিল কি না, সেটাও আমাদের জানানো হয়নি।’
কসব ইউপির নারী সদস্য আঞ্জুয়ারা ও সানোয়ারা বেগম বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের পর থেকে নারী ফোরামের সভাপতি না থাকায় কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কোনো বরাদ্দ বা বিতরণ সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না।
উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদ জানান, ‘আমি যোগদানের আগেই কাজগুলো সম্পন্ন হয়েছে। সেলাই মেশিন ও গবাদিপশু বিতরণ হয়েছে কি না, তা আমার জানা নেই।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার জাহান সাথী বলেন, ‘প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত থাকলে কাজ বাস্তবায়নের কথা। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এখন বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আনোয়ার হোসেন হত্যা মামলায় দুজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া আরও পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক সাবরিনা নার্গিস এ রায় প্রদান করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- চৌদ্দগ্রাম থানার দেড়কোটা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে জিয়া উল্লাহ ওরফে জিয়া ও একই গ্রামের ইয়াকুব মিয়ার ছেলে জুয়েল রানা ওরফে জুয়েল। এছাড়া যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- চৌদ্দগ্রামের দেড়কোটা গ্রামের কারি ফজলুল হক, আজাদ রহমান, আবদুল কাদের, কবির আহমেদ ও ফেলনা গ্রামের সাদ্দাম হোসেন। রায় ঘোষণাকালে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি কবির আহমেদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং অপর ছয় আসামি পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল সন্ধ্যায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে জিয়া উল্লাহ ওরফে জিয়া ও তার সহযোগীরা আনোয়ার হোসেনের দোকানে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এতে বাধা দিলে তারা আনোয়ার হোসেনকে কুপিয়ে আহত করে। একপর্যায়ে তাকে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। পরদিন ২৩ এপ্রিল এ ঘটনায় নিহতের পিতা দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ২৬ আগস্ট জেলা ডিবির এসআই জিল্লুর রহমান আদালতের নির্দেশে ১৯ জনের বিরুদ্ধে পুনরায় চার্জশিট দাখিল করেন। এ মামলায় ২৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক সাবরিনা নার্গিস দুজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং অপর পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া মামলার চার্জশিটভুক্ত ১২ জন আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন- অ্যাডভোকেট মুমিনুল হক ভূঁইয়া। মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
বাউল শিল্পী আবুল সরকারের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে কিশোরগঞ্জে সার্বজনীন মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়কে কিশোরগঞ্জের বাউল ও শিল্পী সমাজের উদ্যোগে সার্বজনীন ও উন্মুক্ত এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, সারাদেশে ‘তৌহিদী জনতার নামে দরবার শরীফ, মাজার, মসজিদ, মন্দির, কবরস্থানসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হচ্ছে। এমনকি পাগল-ফকিরদের শারীরিক নির্যাতনের পর হত্যার ঘটনাও ঘটছে।
বক্তারা আরও বলেন, বাউল শিল্পী আবুল সরকারকে নিরাপত্তার কথা বলে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, যা অমানবিক ও অগ্রহণযোগ্য। অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন তারা।
বক্তারা জানান, ‘আমরা যে আন্দোলন-অভ্যুত্থান চেয়েছিলাম, তা কোনো সংস্কৃতি ধ্বংসের জন্য নয়, মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরির জন্যও নয়।’
মানববন্ধনে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সুফী সংগঠনের নেতারা সংহতি জানান এবং বাউল আবুল সরকারের দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ইসমাইল হোসেন মধু, বাংলাদেশ জাতীয় বাউল সমিতির কিশোরগঞ্জের সভাপতি বাউল হারিছ, শানে পাঞ্জাতন মহরম জারী দলের পরিচালক বাউল মান্নান, বাউল কিবিরিয়া খোকন, মাসুদুর রহমান মিলন, জেলা যুবদলের সহসভাপতি রকিবুল হাসান ফয়সাল।
এছাড়া ওই মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন তরফীয়া দরবার ও মাজার শরীফের সাজ্জাদনশীন সৈয়দ ইয়াছিন, জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত কুমার সরকার, উদিচির সাধারণ সম্পাদক বাবুল রেজা, বাপা সভানেত্রী অ্যাড. হামিদা বেগম, মহিলা পরিষদ নেত্রী কামরুন্নাহার।
উল্লেখ্য, ৪ নভেম্বর মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জাবরা এলাকায় একটি পালাগানের আসরে বাউল শিল্পী আবুল সরকার ধর্ম অবমাননা করে মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে। তার মন্তব্যের ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় সমালোচনা।
এরপরে ২০ নভেম্বর মাদারীপুরে এক অনুষ্ঠানে আবুল সরকারকে গ্রেপ্তার করে মানিকগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
ইএমই কোরের বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলন-২০২৫ মঙ্গলবার সৈয়দপুর সেনানিবাসস্থ ইএমই সেন্টার অ্যান্ড স্কুল (ইএমইসিঅ্যান্ডএস)-এ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
সেনাবাহিনী প্রধান ইএমই সেন্টার অ্যান্ড স্কুল এ পৌঁছালে তাকে জিওসি আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড, ইএমই কোর এর কর্নেল কমান্ড্যান্ট ও চেয়ারম্যান আরইবি, জিওসি ৬৬ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার রংপুর এরিয়া এবং কমান্ড্যান্ট ইএমইসিঅ্যান্ডএস অভ্যর্থনা জানান।
সেনাবাহিনী প্রধান সম্মেলনে উপস্থিত ইএমই কোরের ইউনিটসমূহের অধিনায়করা এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে কোরের তথা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উন্নয়নকল্পে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
তিনি ইএমই কোরের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য এবং দেশমাতৃকার সেবায় ইএমই কোরের অবদানের কথা উল্লেখ করেন।
এ সময় তিনি আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সক্ষমতা অর্জন করে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার জন্য ইএমই কোরের সকল সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান এবং প্রত্যেক সদস্য আগামী দিনে দেশ সেবার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে জিওসি আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড, ইএমই কোরের কর্নেল কমান্ড্যান্ট ও চেয়ারম্যান আরইবি, সেনাবাহিনীর মাস্টার জেনারেল অব দ্য অর্ডন্যান্স, অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল, জিওসি ৬৬ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার রংপুর এরিয়া, সেনাসদর ও রংপুর এরিয়ার ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা, কমান্ড্যান্ট ইএমই সেন্টার অ্যান্ড স্কুল, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল ইএমই ইউনিটসমূহের অধিনায়করা এবং গণমাধ্যমের স্থানীয় প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শত বছরের প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শ্যামগ্রাম মোহিনী কিশোর স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এ প্রতিষ্ঠানে অষ্টম শ্রেণিতে পড়েন নাহিদা আক্তার। রসুল্লাবাদ গ্রামের এই ছাত্রীর বাড়ি স্কুল থেকে তিন কিলোমিটার দূরে। আগে পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতে হতো তাকে। সময়মতো পৌঁছাতে পারতেন না, অনুপস্থিতিও ছিল নিয়মিত। কয়েক মাস আগে স্কুল থেকে বিনামূল্যে সাইকেল পাওয়ার পর সেই চিত্র বদলে গেছে।
নাহিদার মতো আরও অন্তত ১০০ ছাত্রী প্রতিদিন সাইকেলে চড়ে স্কুলে যাতায়াত করছে। সকাল ৯টার দিকে দল বেঁধে কিংবা একে একে শান্তিপুর, নাছিরাবাদ, নোয়াগ্রাম, শ্রীঘর, রসুল্লাবাদ, বানিয়াচং, কুড়িনালসহ আশপাশের গ্রামগুলো থেকে ছাত্রীদের সাইকেলে আসার দৃশ্য এখন স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের উপস্থিতির হারও বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। শিক্ষকরা বলছেন, আগে দূরত্ব, নিরাপত্তা ও সামাজিক নানা বাধার কারণে অনেক মেয়েই নিয়মিত স্কুলে আসতে পারত না। পরিস্থিতি বদলাতে গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি উদ্যোগ নিয়ে ছাত্রীদের মাঝে সাইকেল বিতরণ করেন।
অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ফাতেমা আক্তার বলে, ‘আমার বাড়ি স্কুল থেকে দুই কিলোমিটার দূরে। প্রথমে সমস্যা হতো, এখন প্রতিদিন সাইকেলেই যাই।’
নবম শ্রেণির ছাত্রী রাশিদা আক্তারের ভাষায়, ‘আগে হেঁটে আসতে অনেক সময় লাগত। এখন তাড়াতাড়ি আসতে পারি। টিফিনে বাড়ি গিয়ে খেয়েও আবার স্কুলে ফেরত আসি।’
পল্লী চিকিৎসক আক্কাছ মিয়া জানান, সাইকেল পাওয়ার পর তার মেয়ে নিয়মিত স্কুলে যায়। ‘কিছু লোক ভালো চোখে না দেখলেও মেয়েকে আমি উৎসাহ দেই,’ বলেন তিনি।
বিদ্যালয়টির ২ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে বেশির ভাগই ছাত্রী। অধ্যক্ষ মোস্তাক আহাম্মদ বলেন, ‘এখন গ্রামের মেয়েরা অনেক এগিয়ে। সাইকেল চালিয়ে তারা স্কুলে আসে। এতে সময় নষ্ট হয় না, নিরাপত্তাও নিশ্চিত হয়।’ ছাত্রীদের জন্য সাইকেলস্ট্যান্ড নির্মাণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রীদের চলাচলের পথে কেউ কটূক্তি করলে কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ‘মেয়েরাও এখন প্রতিবাদ করতে শিখেছে।’
হেমন্তের কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল। শীতের হালকা স্পর্শে দিনের শুরুতেই চট্টগ্রাম বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের খিতাপচর এলাকায় ঝকঝকে সবুজ লাউয়ে ভরে উঠেছে কৃষক মো. সাজ্জাদ হোসেনের খেত। মাচার ফাঁক গলে আসা রোদে ঝিলমিল করছে ঝুলন্ত লাউগুলো।
উঠে যাওয়া আমন ধানের জমিতে এখন বোয়ালখালীর গ্রামজুড়ে শিম, বরবটি, মরিচ, বেগুন থেকে শুরু করে লাউ পর্যন্ত বিভিন্ন সবজির আবাদ চলছে। তবে সাজ্জাদ আগাম লাউ চাষ করে পাচ্ছেন বাড়তি সুবিধা।
৪০ শতক জমিতে উচ্চফলনশীল জাতের লাউ লাগিয়েছেন তিনি। প্রতিদিন সকালে খেত পরিচর্যা- মরা পাতা পরিষ্কার, নিড়ানি, রোগবালাই দেখা- এসব নিয়েই তার দৈনন্দিন কাজ। সপ্তাহে তিন দিন তিনি লাউ সংগ্রহ করে হাটে বিক্রি করেন। আকারভেদে প্রতিটি লাউ ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সাজ্জাদ দৈনিক বাংলাকে জানান, এ মৌসুমে লাউ চাষে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। গত এক মাসে লাউ বিক্রি করে পেয়েছেন ২৪ হাজার টাকা। গাছের অবস্থা ভালো থাকলে পরবর্তী দুই মাসেও লাউ বিক্রি করা যাবে বলে আশা তার। সব মিলিয়ে এক লাখ টাকার মতো আয় হতে পারে বলে তিনি জানান।
‘কম খরচে দ্রুত ফলন পাওয়া যায় বলে এবার লাউ চাষ করেছি,’ বলেন সাজ্জাদ। তিনি জানান, আশ্বিন মাসে বীজ থেকে চারা তৈরি করে লাগানোর প্রায় ৬০ দিনের মধ্যেই ফলন পেতে শুরু করেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উচ্চফলনশীল জাতের লাউ সারা বছরই চাষযোগ্য এবং বীজ বপনের ৪০–৪৫ দিনের মধ্যে লাউ তোলা যায়। প্রচলিত জাতের তুলনায় এ জাতের ফলন আড়াই থেকে তিনগুণ বেশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) কৃষিবিদ কল্পনা রহমান বলেন, ‘বাজারে এখন লাউয়ের ভালো চাহিদা রয়েছে। কৃষকরাও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন। প্রতি হেক্টরে ২৫ থেকে ৩০ মেট্রিক টন লাউ উৎপাদন সম্ভব।’
সাজ্জাদের হিসাবে, তার খেতের ২৪০টি মাদায় লাউ লাগানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত তিনি প্রায় ১,২০০টি লাউ বিক্রি করেছেন। আরও ৩০০টি লাউ চারা রয়েছে এবং প্রতিটি গাছে ৩০ থেকে ৪০টি লাউ পাওয়া যেতে পারে বলে আশা করছেন তিনি।
আগাম চাষ, কম খরচ এবং দ্রুত লাভজনক হওয়ায় এলাকায় লাউ চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের মধ্যে।
বেনাপোল স্থল বন্দর থেকে প্রতি বছর সরকার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে থাকে। অথচ সেই বেনাপোলের মানুষের কোনো উন্নয়ন হয়নি। এই এলাকায় হাজার হাজার শিক্ষিত বেকার ছেলে-মেয়ে রয়েছে। তারা বেকার থাকায় তাদের পরিবার অভাবের মধ্যে রয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এই বন্দরে এই উপজেলার ছেলে-মেয়েরা অগ্রাধীকার ভিত্তিতে চাকরি পাবে এনং বন্দরকে আধুনিকায়ন করে গড়ে তুলব।
গত সোমবার সন্ধ্যা ৭টার সময় বেনাপোল পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড (নামাজগ্রাম দুর্গাপুর) আয়োজিত ওই ওয়ার্ডের সভাপতি আব্দুল মজিদের সভাপতিত্বে যশোর-১ আসনের সাবেক এমপি মফিকুল হাসান তৃপ্তি উঠান বৈঠকে এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে বেনাপোলে একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। সেই সাথে এই স্থল বন্দরকেও আধুনিকায়ন করা হবে। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই আমি এমপি হলে প্রথমে এই জনপদ থেকে মাদক নির্মূল করা হবে।
এর আগে তিনি লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করেন বেনাপোল-২নং ওয়ার্ড ও বেনাপোল বাজারে।
বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বেনাপোল পৌর বিএনপির সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের ভারত।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন
শার্শা উপজেলা বিএনপি যুগ্ম সম্পাদক তাজ উদ্দিনসহ তথ্য গবেষণাবিষয়ক আতাউর রহমান আতা বিএনপি নেতা মফিজর রহমান সজন, পৌর বিএনপিরসহ সভাপতি সাহাবুদ্দিন সহসভাপতি সাহাদুর রহমান খোকন, নাসিমুল গনি বল্টু আব্দার রহমান, ইদ্রিস মালেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম মেহেরুল্লাহ সংগঠন সম্পাদক আব্দুল আহাদ পৌর বিএনপির অর্থ সম্পাদক সামাদ আলি আলী শার্শা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাকিবুল হাসান রিপন পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. সহিদুল ইসলাম শহীদ পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব ইসতিয়াক আহমদ শাওন পৌর যুবদল ছাত্রদল শ্রমিক দলসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কুড়িগ্রাম জেলার উপজেলা পর্যায়ে প্রকল্প সমাপনী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে বেসরকারি সংস্থা এফাদ মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন। এফাদের নির্বাহী প্রধান সাইদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল মতিন, পাঁচগাছী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন সরকার, এসিল্যান্ড আরিফুল ইসলাম, সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মশিউর রহমান, কৃষি কর্মকর্তা নাহিদা আফরিন, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা শাহীন মিয়া, সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সরকার প্রমুখ।
মাল্টেসার ইন্টারন্যাশনাল বিএমজেড-পিটির সহযোগিতায় বিএমজেড-পি আফাদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে শিক্ষক, কৃষক, কৃষাণি, জনপ্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিনিধি, দলিত সম্প্রদায়, তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছিও ঘোগাদহ ইউনিয়নে রেজিলেন্স স্ট্রেংদেনিং অব ভার্নারেবল পপুলেশন ইন নর্দান ওয়েস্টার্ন অ্যান্ড ইস্টার্ন বাংলাদেশ থ্রো এ নেটওয়ার্ক এপ্রোচ অব ফাইভ পার্টনার অর্গানাইজেসন, বিএম জেড পিটি প্রজেক্টটি ২০২২ সালের ১ নভেম্বর শুরু হয়ে ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হবে। প্রকল্পের মোটা সুবিধাভোগী ৯ হাজার ৬৯ জন। এর মধ্যে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ১২ জন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পরিবারের সদস্য ৪৬ জন, দলিত সদস্য ৩০ জন, ট্রান্সজেন্ডার ২২ জন, নারীপ্রধান পরিবার ২৭ জন, ঝুঁকিপূর্ণ পরিবার ৩৪৩ জন, ৪৮০ জন প্রত্যক্ষ সদস্য এবং পরোক্ষ সদস্য ৮,৫৮৯ জন।