হাতে লম্বা লোহার রড়, মোটরগাড়ির ফোলানো টিউব, ঢাকি ও পাথর চালনি। জীবন-জীবিকার এসব উপকরণ নিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মহানন্দার ঠাণ্ডা পানিতে শরীরের পুরো অংশ ডুবিয়ে পাথর সংগ্রহের কাজ করছে তেঁতুলিয়ার মহানন্দা পাড়ের হাজার হাজার মানুষ। একটানা সন্ধা পর্যন্ত পাথর সংগ্রহ, বাছাই ও গাড়িতে লোড করে যে অর্থ উপার্জিত হয়, তা দিয়েই চলে তাদের সংসার।
মহানন্দার ভারতীয় অংশে এমন হাজারো মানুষ জীবিকার তাগিদে পাথর সংগ্রহ করছে যুগ যুগ ধরে। গত কয়েক মাস ধরে ভারতীয়দের কড়া প্রতিবাদের মুখে সম্প্রতি বিজিবি মহানন্দাসহ সীমান্তের সব নদীর ভারতীয় অংশে পাথর উত্তোলন বন্ধ করে দিলে বিপাকে পড়েন হাজার হাজার পাথরশ্রমিক। বর্তমানে সীমান্তের এসব নদীতে জিরো লাইন অতিক্রম করে পাথর উত্তোলন বন্ধ করতে বিজিবি সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে। বেঁচে থাকার তাগিদে নদী পাড়ের এসব মানুষ বর্তমানে লুকোচুরি করে পাথর তুলতে গিয়ে বিজিবি ও বিএসএফের তোপের মুখে পড়ে সৃষ্টি হচ্ছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, এমনকি প্রাণহানি। এই অবস্থায় পঞ্চগড় ১৮ বিজিবির পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখার সীদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বিজিবি বলছে, নদীর উভয় অংশে গভীর খননের মাধ্যমে পাথর উত্তোলন করার কারণে নদীর তীর ভাঙনের মুখে পড়ে সীমান্ত পিলার বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সমগ্র সীমান্তে ১৯২টি পিলার নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে ভূখণ্ড সংরক্ষণ করতে নানা বিড়ম্বনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বাংলাবান্ধা থেকে তেঁতুলিয়া পুরাতন বাজার পর্যন্ত সীমান্ত রেখায় প্রায় ২০ কিলোমিটার অংশজুড়ে মহানন্দা প্রবাহিত হয়েছে। নদীর তীরে সীমানা পিলার অতিক্রম করে বাংলাদেশিরা ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করছে, অপরিকল্পিতভাবে পাথর উত্তোলন করছে ভারতীয় অংশে। এমন অভিযোগ ও প্রতিবাদ বিএসএফের পক্ষ থেকে করা হয়েছে।
প্রতিবাদে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতি বন্ধ না হলে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ফলে বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থেই জিরো লাইন অতিক্রম করে পাথর সংগ্রহ না করার বিধিনিষেধ আরোপ করেছে বিজিবি।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল যুবায়েদ হাসান জানান, ‘তেঁতুলিয়ার মহানন্দার পাথর উত্তোলনে বিভিন্ন ধাপে ৭ থেকে ১০ হাজার মানুষ কাজ করে। সীমান্তের এসব মানুষ প্রচলিত আইনকানুন মানতে চায় না। তারা ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করে নদীর তীর ধরে পাথর সংগ্রহ করে। ফলে নদীর উভয় দিক ভাঙনের মুখে পড়ে সীমানা পিলারসহ দুদেশের আবাদি জমি নষ্ট হচ্ছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ এ নিয়ে প্রতিবাদ করছে। বিজিবির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে স্থানীয় পর্য়ায়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হলেও একটি মহল সাধারণ মানুষের পক্ষ নিয়ে বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে এই বিধিনিষেধ কার্যকর করেছি।’
তেঁতুলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান ডাব্লুউ বলেন, ‘এই অঞ্চলে কাজের কোনো ক্ষেত্র না থাকায় একটি বড় অংশের মানুষ নদীর পাথর উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত। বিষয়টি নিয়ে আইনশৃংঙ্খলা সভায় আলোচনা হয়েছে। আমরা এসব মানুষকে ভিন্ন কর্মক্ষেত্রে লাগানোর পরিকল্পনা করছি। আপাতত সীমিত আকারে তাদের পাথর সংগ্রহের বিষয়ে বিজিবিকে অনুরোধ করা হয়েছে।’
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘অবৈধ অনুপ্রবেশ করে পাথর উত্তোলন এই এলাকার মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। যা আইনবহির্ভূত তা করা যাবে না। সরকার কর্মহীন মানুষের জন্যে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আমরা চেষ্টা করছি এসব মানুষের বিকল্প কর্মপরিকল্পনার কথা।’
মহানন্দা পাড়ের পাথর শ্রমি কৃষণ কুমার বলেন, ‘আমার পরিবারে মা-বাবাসহ সাতজন। দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে নদীর পাথর তুলে যা রোজগার হয় তা দিয়ে সংসার চলে। এখন পাথর সংগ্রহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কীভাবে চলব, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়েই পাথর তুলছি।’
বুড়িমুটকি এলাকার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘৩০ বছর ধরে এই নদী থেকে পাথর সংগ্রহ করে জীবন চালাচ্ছি। আমার বাপ-দাদারাও এই নদী থেকে পাথর সংগ্রহ করেছে, এখন বন্ধ করলে আমরা কীভাবে চলব, কী খাব।’
পঞ্চগড় ভজনপুর ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থার কারণে এখানকার মাটি ও আবহাওয়া কৃষি ক্ষেত্রের জন্য সম্পূর্ণ বৈরী। তাই জীবন বাঁচার জন্য জনগোষ্ঠীর বৃহৎ অংশ উপার্জনের পথ হিসেবে বেছে নিয়েছে পাথর সংগ্রহের কাজ। এলাকায় শিল্পকারখান তৈরি করে এসব মানুষের কর্মক্ষেত্র তৈরি ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।’
ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে অবস্থিত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (কেবি) কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. আতাউর রহমান আমরণ অনশন শুরু করেছেন। তার এই পদক্ষেপে সংহতি জানিয়ে কলেজের অন্যান্য শিক্ষকরা আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। শনিবার কলেজ প্রাঙ্গণে অনশন করেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, কেবি কলেজে বোমা হামলার হুমকি, শিক্ষকদের শারীরিক নির্যাতনের ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক নানা ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে তারা এই আমরণ অনশন কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক বি. এম. আব্দুল্লাহ রনি জানান, দুপুর ১২টার দিকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অধ্যক্ষ ঘোষণা দেন, কলেজ ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে চলমান হুমকি এবং বহিরাগতদের অনুপ্রবেশের প্রতিবাদে তিনি আমরণ অনশনে বসবেন। তখন অন্যান্য শিক্ষকরা একসাথে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুক। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হলে আমরা অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেব।’
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় দিনদুপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় নগদ ৬০ হাজার ৬০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত যুবকের নাম আরকান চৌধুরী (২৫)। তিনি কাঞ্চনা ইউনিয়নের মনুফকিরহাট জাফর চৌধুরীবাড়ি এলাকার মো. জাকির হোসেনের ছেলে। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের মনুফকিরহাট জাফর চৌধুরীবাড়ি এলাকায় এ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
থানার ওসি জাহেদুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আরকান চৌধুরী ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। শনিবার তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে কাঞ্চনা মনুফকিরহাট হাটের জলদাশপাড়া ব্রিজের ওপর গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা অভি চৌধুরীর কাছ থেকে নগদ ৩ লাখ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন ছিনতাইকারীরা। অভি কাঞ্চনা শাখার কেন্দ্র ব্যবস্থাপক। পরে এ ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন ব্যাংক কর্মকর্তা।
নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় ধনু নদে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্পিডবোট উল্টে শিশুসহ ৪ জন নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ২৪ ঘণ্টা পর উষা মনির (৪) তার লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। শনিবার ধনু নদের চরপাড়া এলাকায় ভাসমান অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়।
খালিয়াজুরী থানার ওসি মকবুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল অন্যদের লাশ উদ্ধারের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। নিখোঁজ রয়েছেন, গাজীপুর ইউনিয়নের বয়রা গ্রামের নবাব মিয়ার মেয়ে শিরিন আক্তার (১৮), আন্ধাইর গ্রামের স্বপন মিয়ার মেয়ে লায়লা (৭) ও সামসু মিয়ার মেয়ে সামিয়া (১১)।
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীর সমাজের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ভুলুয়া নদীর তীব্র ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে গেছে কয়েক হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি ও কয়েক একর কৃষি জমি। ভাঙন রোদে ভূলুয়া নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীর সমাজের ভূলুয়া নদীর পাড়ে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন- চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার হুমায়ুন কবির, মীর সমাজ জামে মসজিদের সভাপতি মো. আব্দুল্লাহ, স্থানীয় বাসিন্দা জহির উদ্দীন, শিক্ষার্থী নাহিদুল ইসলাম, আজিমা বেগম, কুলছুম ও রাবেয়া বেগম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার সিমান্তের চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীর সমাজের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ভূলুয়া নদী। নদীটির সুবর্ণচর অংশে চর জেগে ওঠায় রামগতির অংশে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে মীর সমাজের কয়েক হাজার পরিবার নদীভাঙনের মুখে পড়ে। ইতোমধ্যে অন্তত শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখনো ৪০টির মতো বসতবাড়ি হুমকির মুখে আছে। এছাড়া কয়েক একর কৃষি জমি ভূলুয়া নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর পাশেই রয়েছে, উত্তর চর আফজাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরআফজল মীর সমাজ নুরানী মাদ্রাসা, চরআফজল মীর সমাজ জামে মসজিদসহ অন্তত ১০ হাজার মানুষের বসবাস। এসব মানুষগুলো রয়েছে চরম উদ্বিগ্ন উৎকণ্ঠায়। বক্তারা আরও বলেন, ভুলুয়া নদীর ওই স্থানে দ্রুত ব্লক বাঁধ নির্মাণ না করলে অল্প সময়ের মধ্যে মীর সমাজটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাই তারা দ্রুত নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ-জামান খান বলেন, সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে ওই স্থানে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেবেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দিন সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে স্ট্রোক করে মারা যান চ্যানেল এস-এর সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম শিবলী।
নবনির্বাচিত ডাকসু নেতা ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতারা গত শুক্রবার সন্ধ্যায় টঙ্গীর মধুমিতা রোডের শিবলীর বাসায় তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তারা মৃতের পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং তরিকুল শিবলীর পরিবারের হাতে নগদ দুই লাখ টাকা তুলে দেন।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ডাকসুর নব-নির্বাচিত ভিপি ও শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম, ডাকসু জিএস এস এম ফরহাদ, পরিবহন সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহ ও শিবিরের গাজীপুর মহানগর সভাপতিসহ অন্যান্য নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
গত শুক্রবার রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ডাকসুর নবনির্বাচিত জিএস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ লেখেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের দিন সংবাদ কাভার করতে গিয়ে ইন্তেকাল করেছেন তরিকুল শিবলী ভাই। তিনি রেখে গেছেন দুই সন্তান। বড় সন্তান আয়াতের বয়স চার বছর এবং ছোট সন্তান আজমীনের বয়স দেড় বছর।’
ফরহাদ আরও লেখেন, চার বছর বয়সী আয়াত দীর্ঘ আলাপের ফাঁকে আমাকে বলছে- ‘আমার বাবাকে আল্লাহ নিয়ে গেছেন এবং আল্লাহ বাবাকে সুন্দর একটা জায়গায় রেখেছেন। যেহেতু বাবা আসবেন না, তাই আমি ও আমার মা ছোট বোন আজমীনের খোঁজখবর রাখবো, আদর করবো।’ অবুঝ শিশুর মুখে এমন ভারি কথা!
তিনি জানান, আমরা পরিবারের সঙ্গে প্রাথমিক সাক্ষাতে ছোট্ট দুই শিশুর খরচের জন্য ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে আপাতত দুই লাখ টাকা পৌঁছে দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, আমরা সব প্রয়োজনে সাধ্যমতো পরিবারটির পাশে থাকবো। বাবা হারানো ছোট শিশুদের জন্য দোয়া চাই।
অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার বিভিন্ন অপরাধ প্রবণ এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
শনিবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মো. দুলাল মিয়া (২৭), গোলাম রাব্বি ওরফে বাপ্পি (১৯), মো. শাকিল হাওলাদার (২৫), মো. বাপ্পি (৩০), মো. হৃদয় হোসেন (৩০), মো. বিজয় (১৮), মো. ইজাজুল হোসেন (১৮), মো. কামাল হোসেন (৩২), মো. বাবু ওরফে ছোট বাবু (৩০) ও মো. সুমন (৩২)।
এতে বলা হয়, গত শুক্রবার দিনব্যাপী বিশেষ অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদপুর থানার বিভিন্ন স্থান থেকে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত থাকা দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে নিয়মিত মামলার আসামি, দস্যুতা মামলার আসামি, পরোয়ানাভুক্ত আসামি ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অপরাধী।
গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
রাজধানীর বনানীর একটি বাসা থেকে চুরি যাওয়া ২৪ লাখ সাড়ে ৮৪ হাজার টাকা, মোটরসাইকেল এবং দুইটি মোবাইল ফোনসহ মো. কাউছার আহমেদ (২২) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
গত শুক্রবার রাত পৌঁনে ১২টার দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির বনানী থানা পুলিশ।
শনিবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, গত ৯ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ী মুস্তাজিরুল শোভন ইসলামের বনানীর বাসায় চুরি হয়। হ্যান্ড সুটকেসে থাকা ব্যবসায়িক কাজের জন্য রাখা ৩০ লাখ টাকা চোর চুরি করে নিয়ে যায়। পরে ১১ সেপ্টেম্বর ভিক্টিম মুস্তাজিরুল বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করেন।
এতে আরও বলা হয়, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্তকারী দল দ্রুত চুরির সাথে জড়িত ব্যক্তির পরিচয় ও অবস্থান শনাক্ত করে। পরবর্তীতে মানিকগঞ্জে অভিযান চালিয়ে কাউছারকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে চুরির ঘটনা স্বীকার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে গত দুইদিনে অভিযান চালিয়ে ৩ হাজার ৫৪১টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। এছাড়াও অভিযানকালে ৫৯৫ গাড়ি ডাম্পিং ও ৩১৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
শনিবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ভোর হলেই জমে ওঠে পটুয়াখালীর বড় মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আলিপুর-মহিপুর ঘাট। রাতভর মাছ ধরে বড় ট্রলার গভীর সমুদ্র থেকে ফিরছে। পন্টনে নোঙর করছে একের পর এক ট্রলার, লেবাররা মাছ উঠানোর জন্য প্রস্তুত, আড়তদাররা ব্যস্ত হিসাব কষতে আর পাইকাররা ব্যস্ত কত দ্রুত মাছ কিনে ঢাকায় পাঠানো যায়। তবে এ আড়তগুলোর ব্যস্ততা সারা বছর থাকে কিন্তু বর্তমান মাছের পরিমাণ বাড়লেও দেখা নেই বড় ইলিশের। মনকে মন উন্মুক্ত ডাকে মাছ বিক্রি হচ্ছে যার ওজন ৩০০ থেকে পাঁচশো গ্রাম। এদিকে, বড় ও মাঝারি আকারের ইলিশের দাম সাধারণ ক্রেতাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, এবার ইলিশের দাম কেজিপ্রতি ৯০০ থেকে ২২০০ টাকার মধ্যে। গত বছর একই সময় এই দাম ছিল ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকার মধ্যে।
বন্দরে ঘুরে দেখা যায়, বন্দরে মাছ বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৩৫টি আড়তে, যার প্রতিটি আড়তে আবার ৩-৪ টি ট্রলারে মাছ বিক্রি করে। এ ট্রলারগুলো মূলত এ বন্দরের নয়, কিছু এ বন্দরের থাকলেও বাকিগুলো চট্টগ্রাম কক্সবাজার, বাঁশখালী, ভোলা, নোয়াখালী, সন্দীপ, হাতিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসে এখানে মাছ বিক্রি করেন।
যে কারণে যখন সমুদ্রে মাছ দেখা যায় তখন হাঁকডাকে মুখর থাকে এ বন্দর। তবে অনেক জেলেরা বড় মাছ না পেয়ে হতাশ, ছোট মাছ পরিমাণে বেশি পেলেও আর্থিকভাবে লাভবান কম হয়। যে কারণে সব জেলেদের আকাঙ্ক্ষা বড় মাছ শিকার করার।
জেলেরা বলছে, বেশ কয়েক বছর বড় মাছ কমে আসছে। আবার সমুদ্রে অবৈধ ট্রলিং ট্রলার চলার কারণে মাছ অনেকটা কমে আসছে। তবে বর্তমানে কিছু ট্রলিং এর ওপরে প্রশাসন নজরদারি বাড়ানোর কারণে ট্রলিং বন্ধের পথে তাই কিছু মাছের আবার দেখা মিলছে।
আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মৎস্য ব্যবসায়ী মো. রাসেল জানায়, বর্তমানে সমুদ্রের জেলেরা বড় মাছ কম পায় ছোট মাছ বেশি পায় যার ওজন ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম। আর এ ছোট মাছগুলোর দাম মন প্রতি ১৫ হাজার ৫০০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
মাছগুলো এক কেজি পরিমাণ হইতে ৫ থেকে আটটি মাছ দরকার হয়। তবে মার্কেটে এক কেজি ৮০০ গ্রাম, ৭০০ গ্রামের মাছও পাওয়া যায় তবে পরিমাণে খুবই কম।
ইউনুস নামের আর এক ব্যবসায়ী জানান, ‘আলিপুর মৎস্য অবদান কেন্দ্রে অনেক মাছের দেখা মিলছে। তবে সবগুলো মাছ জাটকা এবং অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ। ইলিশ বড় মাছের পরিমাণ খুবই সামান্য, কে আমি কিছু নরম (সামান্য পচা) মাছ কিনেছি ২৫০ টাকা কেজি। আমাদের এ বন্দরের বড় মাছগুলো অনেক সুস্বাদু হয়, বড় মাছের চাহিদাও বেশি তবে বড় মাছের এখন দেখা নেই। যখন সাগরে টলিং চলছে তখন কোনো ধরনের মাছ পাইনি জেলেরা।’
জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১ কেজি ওজনের ইলিশের মন এক লাখ টাকার ওপরে বিক্রি হয়েছে। ৭-৮ শো গ্রামের ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকায়। ৫-৬ শো গ্রামের ওজন ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। বেশিরভাগ ট্রলার ১০ থেকে ৫০ মন পর্যন্ত মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরেছে।
আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়তদার মো. কামাল ব্যাপারী জানান, আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মোট ৩৫টি মৎস্য আড়ত রয়েছে। যার প্রতিটিতে দৈনিক গড়ে ২-৩টি ট্রলার মাছ বিক্রি করে। বর্তমানে প্রতিটি ট্রলার মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরছে কিন্তু কোনো ট্রলারে বড় মাছের দেখা নেই। একসময়ে জেলেরা উপকূলের কাছাকাছি মাছ পেত কিন্তু এখন উপকূলের বেশিরভাগ স্থানে চর পরার কারণে মাছের অভায়শ্রম পরিবর্তন হয়েছে। যেটা বড় মাছ না পাওয়ার অনেক বড় কারণ।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, সাম্প্রতিক সময় আমরা লক্ষ্য করছি জেলেদের জালে বেশিরভাগ ছোট ইলিশ ধরা পড়ছে। আবহাওয়া জনিত কারণে জেলেরা অনেক সময় গভীর সমুদ্র যেতে পারে না, যে কারণে ছোট মাছগুলো বেশি ধরা পড়ছে। গভীর সমুদ্র যখন জেলেরা যেতে পারবে তখন আরো বড় মাছের দেখা মিলবে। জাটকা ইলিশের অবরোধকালীন সময় হলো পহেলা নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত। তাই বর্তমানে জাটকা ইলিশের বৈধতা রয়েছে।
ময়মনসিংহের ভালুকায় দুটি যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই হেলপার নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার ভরাডোবা তাফরিদ কটন মিলের সামনে ময়মনসিংহগামী সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, ময়মনসিংহগামী আয়ান রিয়ান পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে উল্টো দিক থেকে আসা শ্যামলী বাংলা পরিবহনের একটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই অন্তত ১৫ জন আহত হন। গুরুতর অবস্থায় দুইজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতরা হলেন হালুয়াঘাট কড়ইকান্দার নুরুল আমিনের ছেলে শরীফ মিয়া (২১) এবং ময়মনসিংহের বলাশপুর গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে নিরব (১৫)।
ভরাডোবা হাইওয়ে থানার ওসি এবিএম মেহেদী মাসুদ জানান, নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় রাখা হয়েছে। আহতদের ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে এবং গুরুতর কয়েকজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সকল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও নৃত্য শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের দাবীতে রংপুরে মানবন্ধন সমাবেশ করেছে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম। সংগঠনের জেলা ও মহানগর কমিটির উদ্যোগে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর কাচারী বাজারে কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন জেলা কমিটির সভাপতি এটিএম গোলাম মোস্তফা। জাতীয় শিক্ষক ফোরাম জেলা কমিটির সভাপতি আব্দুল আলিমের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম মহানগরের সভাপতি আওলাদ হোসেন, মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক ধর্মীয় শিক্ষক এইচ এম হাবিবুর রহমান, রফিজ উদ্দিন মডেল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোজাম্মেল বিন আজাদ, ইসলামী আন্দোলন রংপুর জেলা শাখার সহ প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মুহাঃ লিয়াকত বিন সিদ্দিক, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম জেলা শাখার সেক্রেটারী মুহাঃ মশিউর রহমান।
এ সময় বক্তারা বলেন, ধর্মীয় শিক্ষা মানুষের মধ্যে নৈতিকতা ও মূল্যবোধ তৈরী করে। একজন শিশু সেই শিক্ষা পেলে ছোট বয়স থেকেই তার সৎ আচারণের ভিত্তি গড়ে উঠে। ফলে ভবিষ্যতে তারা যখন নেতৃত্বে যাবে, তাদের মাধ্যমে ন্যায় ভিত্তিক সমাজ গড়ে উঠবে। অপরদিকে সংগীত বা নৃত্য কখনো প্রতিষ্ঠানে আবশ্যিক বিষয় হতে পারে না। কেউ চাইলে তাদের সন্তানকে আলাদাভাবে এসব শিখাতে পারে। তাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ না দিয়ে সংগীত ও নৃত্য শিক্ষক নিয়োগ দেয়া কোনভাবেই মেনে নেয়া হবে না।
কুমিল্লায় আমিনুল ইসলামকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় সজীব নামে এক যুবককে আটক করেছে র্যাব। শুক্রবার রাতে চান্দিনা উপজেলার এতবারপুর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। এই সময় তার দেয়া তথ্যমতে হত্যার সময় ব্যবহার করা একটি দা এবং রক্তমাখা কাপড় উদ্ধার করা হয়। শনিবার দুপুরে র্যাব-১১ সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার সাদমান ইবনে আলম সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আটককৃত সজীব (২০) কুমিল্লা চান্দিনা থানার বদরপুর এলাকার সফিকুল ইসলামের ছেলে।
র্যাব জানায়, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভুক্তভোগী আমিনুলের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়েছিল তার নিকটতম আত্মীয় সিরাজ। কিন্তু দীর্ঘদিন চাকরি না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকে সে। টাকা ফেরত চাইলে সিরাজ পরিকল্পিতভাবে আমিনুলকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ৯ সেপ্টেম্বর সিরাজ ও তার সহযোগীরা আমিনুলকে সিলেট ভ্রমণের কথা বলে বাসা থেকে বের করে। ওই রাতে তারা কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকার বিসমিল্লাহ আবাসিক হোটেলে অবস্থান করে। পরদিন ১০ সেপ্টেম্বর রাতে সদর দক্ষিণ উপজেলার মোস্তাফাপুর এলাকায় নিয়ে গিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিছন থেকে গলা কেটে আমিনুলকে হত্যা করা হয়। পরে লাশ বালু চাপা দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় তারা।
উল্লেখ্য যে, ১১ সেপ্টেম্বর দুপুরে স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ বালুর নিচ থেকে আমিনুলের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে এবং পরিচয় শনাক্ত করে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ১২ সেপ্টেম্বর সদর দক্ষিণ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত আমিনুল ইসলাম কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার পারুয়ারা গ্রামের আলী আজমের ছেলে।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মক সংকটে পড়েছে। প্রায় ৩ লাখ ১৬ হাজার মানুষের জন্য ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৬ জন চিকিৎসক। ফলে প্রতিদিন অসংখ্য রোগীকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ২০১০ সালে ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও দীর্ঘ ১৪ বছরেও কাঙ্খিত চিকিৎসক নিয়োগ হয়নি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা গেছে, এখানে মোট ৩২টি চিকিৎসক পদ অনুমোদিত থাকলেও বর্তমানে রয়েছেন একজন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএন্ডএফপিও), একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ও চারজন মেডিকেল অফিসার। বিশাল জনসংখ্যার তুলনায় এই সংখ্যা অত্যন্ত অপ্রতুল।
রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, নিয়ম অনুযায়ী বহির্বিভাগ সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত খোলা থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে দুপুর ১টার পর ডাক্তার পাওয়া যায় না। ভর্তি রোগীদেরও নিয়মিত সেবা দেওয়া হয় না। হাসপাতালের ঔষধ সরবরাহ পর্যাপ্ত নয়, ফলে রোগীদের ওষুধ বাহির থেকে কিনতে হয়। বিদ্যুৎ চলে গেলে জেনারেটর থাকে না।
ডিমলার সদর এলাকার বাসিন্দা ইলিয়াস হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,“এত বড় এলাকার জন্য যদি মাত্র কয়েকজন ডাক্তার থাকেন, তাহলে আমরা যাব কোথায়? চিকিৎসা নিতে এসে শুধু হয়রানি আর অবহেলা পাচ্ছি।”
রোগীর স্বজন মকবুল ইসলাম জানান, চিকিৎসক সংকটের কারণে অনেক সময় ইমারজেন্সি সেবা পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। জায়গার অভাবে রোগীদের মেঝে কিংবা বারান্দায় শুয়ে থাকতে হয়, অনেকে আবার চিকিৎসা না পেয়ে ফিরেও যান।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান বলেন,“এখানে চিকিৎসক, জনবল ও ওষুধের সংকট রয়েছে। তারপরও আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার।”
জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন,“৪৮ তম বিসিএসের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এখান থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক দ্রত সময়ের মধ্যে পদায়ন করা হবে।”