চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নে রাফিয়া বেগম (৪৫) নামের এক নারী রহস্যজনকভাবে খুন হয়েছেন। নিহত রাফিয়া বেগম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল হাশেমের স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার ভোরে ওই এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আরিফুল কাদেরের বাড়ি-সংলগ্ন পুকুরঘাটে রাফিয়া বেগম নামের ওই নারীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ সকাল সাড়ে ৯টায় লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করে।
নিহতের বড় ছেলে মামুনুর রশীদ জানান, আমার মা দুর্ঘটনায় আঘাত পায়ে পেয়ে ভালোমতো হাঁটাচলা করতে পারেন না। ৬ মাস ধরে তিনি ছনুয়া মনুমিয়াজি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি সেখানে আছেন। শনিবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে স্থানীয়দের মাধ্যমে আমার মা খুন হওয়ার বিষয়টি জানতে পারি। আমার মায়ের মাথায়, কপালে, মুখে ছুরিকাঘাতের দাগ দেখতে পাই। পুলিশ পুকুরঘাট থেকে তার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, কে বা কারা আমার মাকে খুন করেছে, তা সঠিক জানি না। তবে আমার মা যে বাড়িতে থাকে, ওই বাড়িতে বিভিন্ন সময় চুরি-ডাকাতি হয়েছে। হয়তো মা তাদের চিনতে পেরেছেন। আমার ধারণা হয়তো চোরের সক্রিয় সদস্যরা কৌশলে মাকে হত্যা করে পুকুরঘাটে ফেলে চলে গেছে। আমি এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।
পুলিশ জানায়, রাফিয়া নামের এক নারীর লাশ পুকুরঘাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তার কপালে, মুখে, মাথায় ছুরিকাঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন জানান, ভুক্তভোগীর কপালে ধারালো কিছু দিয়ে কোপ দেয়া হয়েছে। পরে তাকে পুকুরে ফেলে দেয়া হয়। লাশ চমেক হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।
আগামী নির্বাচনে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে সারাদেশে জেলা-উপজেলায় বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর চলমান প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সঙ্গে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।
চলমান ২৮ দিনব্যাপী ভিডিপি অ্যাডভান্সড কোর্সের সঙ্গে সমন্বয় করে নির্বাচনী ডিউটির প্রাকপ্রস্তুতি হিসেবে প্রয়োজনীয় অনুশীলন সম্পৃক্ত করা হয়েছে।
এই প্রশিক্ষণের আওতায় বাহিনীর সদস্যদের নির্বাচনে করণীয়, ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন, কেন্দ্রের শৃঙ্খলা রক্ষা, ভোটারদের ভোটদানে সহযোগিতা করা, ব্যালট পেপার এবং ব্যালট বাক্সের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ কয়েকটি বিষয়ে হাতে কলমে মহড়া দেয়া হচ্ছে।
বাহিনীর সদস্যরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই মহড়ায় অংশগ্রহণ করছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার আজকে পর্যন্ত ২৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে।
বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে-১ আগামীকাল এই মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন। আজকের আগে ৭ দিনে এই মামলায় ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা শেষ হয়।
ট্রাইব্যুনালে এই মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম শুনানি করেন। এই সময় অপর প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে এই মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। আর এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে পরে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এক পর্যায়ে এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল।
এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)-এর মহাপরিচালক পর্যায়ের ০৪ দিনব্যাপী (২৫-২৮ আগস্ট) ৫৬তম সীমান্ত সম্মেলনে যোগ দিতে বিএসএফ মহাপরিচালক শ্রী দালজিৎ সিং চৌধুরী এর নেতৃত্বে ০৯ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল ঢাকায় আগমন করেছেন। ভারতীয় প্রতিনিধিদলে বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ছাড়াও ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণও রয়েছেন।
আজ সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে ভারতীয় প্রতিনিধিদল ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী ভারতীয় প্রতিনিধিদলকে অভ্যর্থনা জানান।
উল্লেখ্য, আগামীকাল সকালে বিজিবি সদর দপ্তর, পিলখানা, ঢাকায় বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৬তম সীমান্ত সম্মেলন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে। আগামী ২৮ আগস্ট ০৪ দিনব্যাপী এ সম্মেলন শেষ হবে।
চীনের আনহুই প্রদেশের ভাইস-গভর্নর মি. সুন য়ুং-এর নেতৃত্বে ১৩-সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদল আজ ২৫ আগস্ট ২০২৫ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের সঙ্গে উপাচার্যের সভাকক্ষে সাক্ষাৎ করেছে। প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা ছিলেন মি. ঝো মিংজি, মি. ফ্যাং জিনসং, মিস ইয়াং জিয়াওলিন, মি. হাউ কিজি, মিস ওয়াং হাইক্সিয়া, মি. ইয়াং জেন, মি. লিউ ইয়াং, মি. ঝাই রংশেং, মি. ওয়াং মিংসিন, মি. লিউ চুনইয়াং, মিস ওয়াং ঝেংকিয়াও এবং মি. চেন শানশেং।
সাক্ষাৎকালে তারা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, জৈবপ্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ে যৌথ সহযোগিতামূলক শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম চালুর ব্যাপারে আলোচনা করেন। এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সাংস্কৃতিক দল বিনিময় নিয়েও বৈঠকে আলোচনা করা হয়।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চীনা বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে আরও সহযোগিতামূলক শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণের উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ২৪ আগস্ট (রবিবার) ২০২৫ তারিখে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -সাভার, জোবিঅ -আশুলিয়া আওতাধীন আশলিয়ার বেক্সিমকোর গলি, চক্রবর্তী, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা এলাকায় অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, আনুমানিক ৪০ ফুট অবৈধ বিতরণ লাইনের আনুমানিক ৪০টি ডাবল চুলার অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এতে মাসিক ৪৩,২০০/- টাকার গ্যাস চুরি রোধ করা সম্ভব হয়েছে। বেক্সিমকোর গলি, চক্রবর্তী, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা এর ৩/৪ ইঞ্চি তিনটি সোর্স কিলিং করা হয়েছে।
একই দিনে, জনাব মিল্টন রায়, সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ - সোনারগাঁও, জোবিঅ- সোনারগাঁও আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার পানাম সিটি সংলগ্ন নোয়াইল-দুলালপুর এলাকার ৩টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, ১ টি অবৈধ চুনা কারখানা (ভাট্টি ৩টি) ও আনুমানিক ৮ কিলোমিটার অবৈধ বিতরণ লাইনের আনুমানিক ৫,৫০০টি আবাসিক ডাবল চুলার অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এ সময়, বিভিন্ন ব্যাসের ২১০ ফুট এমএস লাইন পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে।
এছাড়া, জনাব হাসিবুর রহমান, বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর মেট্রো ঢাকা বিক্রয় বিভাগ -২ আওতাধীন জিনজিরা শাখার দক্ষিন কেরানিগঞ্জ, বেগুনপট্টি, দোলেশ্বর এলাকার ০৫ টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, ২টি নামবিহীন অবৈধ ওয়াশিং কারখানা ও ০১ টি আবাসিকে অবৈধভাবে ০৬ টি ডাবল চুলায় গ্যাস ব্যবহার করায় উক্ত গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন ব্যাসের ৪৩০ ফুট লাইন পাইপ, ৩০ ফুট জিআই পাইপ, ২টি বল ভালভ ও ১টি আবাসিক রেগুলেটর অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এতে মাসিক ৮,৮৩,১৮৯/- টাকার গ্যাস সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে।
এছাড়াও, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক ভিজিল্যান্স বিভাগ- নারায়ণগঞ্জ -এর জোবিঅ-ফতুল্লা ও জোবিঅ-নারায়ণগঞ্জ আওতাধীন এলাকার ৮টি বাণিজ্যিক, শিল্প,ক্যাপটিভ ও সিএনজি প্রতিষ্ঠানে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, রায়ান সিএনজি স্টেশন (৭০৬০০০০১৩,৮০৬০০০৬৫৮), কম্প্রেসর রানের মাসিক লোড- ৩২৬৪০৬ ঘ.মি., ক্যাপটিভ রানের মাসিক লোড - ৩৯৬৬৮ ঘ.মি. ক্যাপটিভ রানের হাউজ লাইনে অতিরিক্ত ভাল্ব পরিলক্ষিত হয় যা অপসারণের জন্য গ্রাহককে মৌখিকভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অবশিষ্ট কাকলি ডাইং এন্ড প্রিন্টিং, সুমা স্টীল এন্ড রি-রোলিং, স্টার কাস্টিং এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, ভাই ভাই লাইমস ইন্ডাস্ট্রি, শরীফ লাইমস, ইসলামি বোর্ড ফ্যাক্টরি, রূপনগর প্রিন্টিং ওয়ার্কস পরিদর্শনকালে কোন অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়নি।
দেশের শীর্ষস্থানীয় টাইলস ও স্যানিটারি ওয়্যারস প্রস্তুতকারক মাল্টিন্যাশনাল ব্র্যান্ড আর এ কে সিরামিক্স আজ ২৫ আগস্ট সোমবার চট্টগ্রামের ছোট পুল এক্সেস রোড, আগ্রাবাদে উদ্বোধন করল নতুন ফ্যাক্টরি আউটলেট।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সাধন কুমার দে। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, জিএম ও হেড অব সেলস মো. রাশেদুজ্জামান, ডিজিএম ও হেড অব মার্কেটিং এস এম আরাফাতুর রহমানসহ প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
নতুন এই আউটলেটে ক্রেতারা সাশ্রয়ী মূল্যে পছন্দের টাইলস ও স্যানিটারি ওয়্যারস ক্রয়ের সুযোগ পাবেন। উদ্বোধনী উপলক্ষে নির্দিষ্ট পণ্যে থাকছে সর্বোচ্চ ৭০% পর্যন্ত বিশেষ মূল্য ছাড়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কোম্পানির চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সাধন কুমার দে জানান, আর এ কে সিরামিক্স সবসময়ই গ্রাহকদের জন্য আধুনিক ডিজাইনের টাইলস ও স্যানিটারি পণ্য সরবরাহ করে আসছে। চট্টগ্রামের মানুষের হাতের নাগালে সাশ্রয়ী দামে মানসম্পন্ন পণ্য পৌঁছে দিতে এই নতুন ফ্যাক্টরি আউটলেট চালু করা হলো।
কোম্পানিটি আশা করছে, নতুন এই আউটলেট উদ্বোধনের মাধ্যমে চট্টগ্রামবাসীর ঘরবাড়ি ও ব্যবসায়িক স্থাপনার আধুনিক সাজসজ্জায় আর এ কে সিরামিক্সের পণ্য বড় ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ভয়াবহ শিক্ষা সংকট তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় তহবিল সংকটের কারণে ক্যাম্পভিত্তিক লার্নিং সেন্টার বা অস্থায়ী স্কুলগুলো একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে লাখ লাখ শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে, যা শুধু মানবিক সংকট নয়, বরং ভবিষ্যতে আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্যও বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
৮ বছরের বাস্তুচ্যুতি, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ:
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর দমন-নিপীড়নের মুখে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। গত সোমবার সেই ভয়াবহ বাস্তুচ্যুতির ৮ বছর পূর্ণ হলো। এর মধ্যে একাধিকবার রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও, রাখাইন রাজ্যে পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। ফলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন ধরে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে রয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রায় অর্ধেকই শিশু। তাদের জন্য অস্থায়ী শিক্ষাকেন্দ্র চালু করা হয়েছিল, যাতে অন্তত প্রাথমিক শিক্ষা ও ন্যূনতম সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। তহবিল সংকটের কারণে কেবল কক্সবাজারেই ২ লাখের বেশি শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক রেসকিউ কমিটি (আইআরসি) জানিয়েছে, বর্তমানে ১২ বছরের কম বয়সি কোনো রোহিঙ্গা শিশু পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে না।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে শিশুরা সারাদিন ঘোরাফেরা করছে ক্যাম্পের ভেতর ও বাইরে। অনেকেই জড়িয়ে পড়ছে শ্রম, মাদক, জুয়া বা অন্যান্য অপরাধে। কেউ আবার পাচারের শিকার হচ্ছে। এভাবে পুরো একটি প্রজন্ম ধীরে ধীরে অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
কুতুপালং ক্যাম্পের বাসিন্দা নূর বেগম (ছদ্মনাম) বলেন, ‘আমার মেয়েটা যখন স্কুলে যেত তখন অন্তত নিরাপদ থাকত। এখন সারাদিন ঘরে বসে থাকে বা বাইরে ঘুরে বেড়ায়। আমি সবসময় আতঙ্কে থাকি, যদি কোনো খারাপ কিছু ঘটে যায়।’
শিশু আবদু রহিম বলেন, ‘আগে আমিও আমার বন্ধুরা একসঙ্গে পড়াশোনা করতাম। এখন কেউ কাজ করছে, কেউ দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে, আবার কেউ পাচারের শিকার হচ্ছে। যদি স্কুল খোলা থাকত, এসব বিপদে পড়তে হতো না।’
একজন রোহিঙ্গা মা জানালেন, ‘স্কুল বন্ধ থাকায় মেয়েরা ঘরে বসে থাকে। তাই অনেক সময় অল্প বয়সেই বিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছি। মিয়ানমারে সন্তানদের পড়াতে পারিনি, এখানে সুযোগ পেলেও এখন তা বন্ধ হয়ে গেছে।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিশুরা দীর্ঘসময় অনিশ্চিত পরিবেশে ঘোরাফেরা করছে। এতে তারা পাচারকারী ও অপরাধী চক্রের সহজ টার্গেটে পরিণত হচ্ছে। বিভিন্ন এনজিওর পর্যবেক্ষণ বলছে, কিশোরী মেয়েদের যৌন হয়রানি, জোরপূর্বক বিয়ে এবং পাচারের ঘটনা বাড়ছে।
রোহিঙ্গা নেতা জুবায়ের বলেন, লার্নিং সেন্টারগুলো খোলা থাকলে আমরা শিশুদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারতাম। এখন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এতে শুধু শিশুরা নয়, পুরো ক্যাম্পই ঝুঁকিতে পড়ছে।
রোহিঙ্গা শিক্ষক মো. সেলিম বলেন, ‘শিক্ষা শুধু পড়াশোনার জন্য নয়, শিশুদের সুরক্ষার জন্যও দরকার। স্কুল থাকলে অন্তত তারা কয়েক ঘণ্টা নিরাপদে কাটাতে পারত। এখন তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, যা তাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিচ্ছে।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিক্ষা বঞ্চিত রোহিঙ্গা প্রজন্ম শুধু মানবিক সংকটই নয়, ভবিষ্যতে পুরো অঞ্চলের জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। শিক্ষাহীন হয়ে তারা আরও বেশি অপরাধী চক্রে জড়িয়ে পড়বে, যা দীর্ঘমেয়াদে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।
রোহিঙ্গা শিশুরা বারবার দাবি করছে, তাদের স্কুলগুলো আবার চালু করা হোক।
‘আমরা পড়াশোনায় ফিরতে চাই। আমাদের স্বপ্ন অন্ধকারে হারাক, তা চাই না- বলছে শিশুরা।’
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে টেকসই সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু
রোহিঙ্গা সংকট মেকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় টেকসই সমাধানের পথ খুঁজতে গতকাল রোববার বিকাল কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানী সেনাবাহিনীর হোটেল বে-ওয়াচ মিলনায়তনে আয়োজিত তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে।
সম্মেলনের প্রথম দিন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে শত নারী-পুরুষকে নিয়েসে আনা হয়েছে সেখানে। আগত অতিথিরা এসব রোহিঙ্গাদের মতামত গ্রহণ করছেন। মূল স্বদেশ ফেরতে রোহিঙ্গা ভাবনা নিয়ে শোনা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ভাবনা।
সম্মেলনের অভ্যন্তরে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের প্রবেশ অনুমতি না থাকলেও দায়িত্বশীল একটি সূত্রে বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। যেখানে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমানসহ দেশি-বিদেশিরা অংশ নিচ্ছেন। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয় সূত্র জানায়, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ১০৭ দেশের সমন্বয়ে উচ্চপর্যায়ের একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেই সম্মেলনের প্রস্তুতি স্বরূপ কক্সবাজারের এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলনে ৪০টি দেশের প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন।
সেপ্টেম্বর মাসে উচ্চ আর্দ্রতা ও অবিরাম বৃষ্টিপাত মশার বিস্তারকে সহজতর করবে। ফলে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তির কারণে ডিএনসিসি ও ঢাকা শহরের হাসপাতালগুলো ভারী চাপের মধ্যে থাকবে বলে ধারণা করা হয়েছে ডেঙ্গু পরিস্থিতির পূর্বাভাস প্রতিবেদনে।
রবিবার (২৪ আগস্ট) গুলশান-২-এ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কনফারেন্স রুমে ‘ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া সংলাপ আগস্ট ২০২৫: প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও নিরসন’-বিষয়ক সমন্বয় সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
আগস্ট থেকে অক্টোবরের ডেঙ্গু পরিস্থিতির পূর্বাভাস প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগস্টে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়বে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা। এতে হাসপাতালগুলোতে ভর্তির চাপও বাড়তে পারে।
এ ছাড়া বিগত বছরের অভিজ্ঞতা অনুসারে, সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। উচ্চ আর্দ্রতা ও অবিরাম বৃষ্টিপাতে মশার বিস্তার বাড়বে, ফলে ঢাকা শহরের হাসপাতালগুলোতে ভারী চাপের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে অক্টোবর মাসে বর্ষা শেষে সংক্রমণ কমার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও সুপ্ত কেস ও দ্বিতীয় দফায় প্রাদুর্ভাব চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। এ সময়ও লার্ভিসাইডিং ও স্যানিটেশন কার্যক্রম জোরদার রাখার ওপর প্রতিবেদনে জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।
সভায় মশক নিয়ন্ত্রণে প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে বলা হয়েছে, জনগণের সচেতনতার অভাব, সঠিকভাবে কীটনাশক প্রয়োগ না করা ও অপর্যাপ্ত সরকারি উদ্যোগ। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, পানি নিষ্কাশন সমস্যা ও আবহাওয়ার প্রভাব মশার বংশবিস্তার বাড়াচ্ছে। বাসাবাড়িতে প্রবেশে বাধা ও কীটনাশকের প্রতি মশার প্রতিরোধ ক্ষমতাও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ব্যাহত করছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়হীনতা ও ফগিংনির্ভর ভ্রান্ত ধারণা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে।
সভায় ডেঙ্গু রোধে কিছু সুপারিশ করা হয়েছে, বর্ধিত ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিদিন লার্ভা ধ্বংস অভিযান চালানো, বিশেষ করে, ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডে। জনসমাগম ও নির্মাণস্থলে বিশেষ অভিযান ও ফেলে দেওয়া পাত্রের যথাযথ নিষ্কাশন নিশ্চিত করা। এসএমএস, সামাজিক ও স্থানীয় গণমাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানো। নির্মাণস্থলে পানি জমা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কঠোর আইন প্রয়োগ ও জরিমানা আরোপ করা। প্রতি সপ্তাহে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো।
তা ছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধে রাজউক, সিভিল অ্যাভিয়েশন, ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডসহ সংস্থাগুলোর সমন্বয় জোরদার করা। প্রাদুর্ভাব এলাকায় দ্রুত সাড়া দিতে ডিজিটাল রিপোর্টিং সিস্টেম চালু করা। হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডেঙ্গু ওয়ার্ড, পর্যাপ্ত সরঞ্জাম, প্রশিক্ষিত কর্মী ও দক্ষ ট্রাইএজ সিস্টেম নিশ্চিত করে জাতীয় নির্দেশিকা অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া।
সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলা শুধু সিটি করপোরেশন বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একক দায়িত্ব নয়, সবাইকে মিলেই কাজ করতে হবে। তিনি জানান, ঢাকায় হকার ও অনিয়ন্ত্রিত বাজারের কারণে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় চাপ তৈরি হচ্ছে, যা মশার প্রজননে সহায়ক। তাই মশা নিধনের পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকেও গুরুত্ব দিতে হবে।
এক দিনে আরও ৪৩০ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি
এদিকে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৪৩০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গত শনিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত তারা হাসপাতালে ভার্তি হন। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছেন একজন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১১৫ জনের এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৮ হাজার ৬৩২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দেওয়া তথ্য থেকে এসব জানা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, আগস্টে এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ৬৫২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মারা গেছেন ৩২ জন। সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ১ হাজার ২৮১ ডেঙ্গুরোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৪১৪ জন। বাকি ৮৬৭ জন অন্যান্য বিভাগে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এ বছরের জানুয়ারিতে ১ হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন, মে-তে ১ হাজার ৭৭৩ জন, জুনে ৫ হাজার ৯৫১ জন এবং জুলাইয়ে ১০ হাজার ৬৮৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, এপ্রিলে ৭ জন, মে-তে ৩ জন, জুনে ১৯ জন এবং জুলাইয়ে ৪১ জন মারা গেছেন।
মেহেরপুরের গাংনী কসাইখানায় অসুস্থ এবং মৃত প্রায় গরু জবাই করে মাংস বিক্রয় কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন ও প্রাণি সম্পদ বিভাগ।
সোমবার দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অভিযুক্ত কসাই আশরাফ হোসেনের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে ১০ হাজার টাকা জরিমানা।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সুত্রে জানা গেছে, অসুস্থ এবং মৃত প্রায় একটি গরু প্রাণি সম্পদ বিভাগ থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই জবাই করে মাংস বিক্রি শুরু করেন কসাই আশরাফ হোসেন। খবর পেয়ে প্রাণি সম্পদ বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালায়। অভিযানে মৃতপ্রায় গরুর মাংস কেরোসিন মিশিয়ে মাটির নিচে পুতে দিয়ে ধ্বংস করা হয়। একইসাথে অভিযুক্ত কসাইকে ভোক্তা অধিকার আইনে ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন গাংনী উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মুত্তালিব ও ভ্যাটেনারী সার্জন আরিফুল ইসলাম।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের চরসাদিপুর মাঠ থেকে জাইমা খাতুন (৫৫) নামে এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয়দের খবরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত জাইমা খাতুন ওই গ্রামের মৃত আফাজ উদ্দিনের মেয়ে। তিনি স্বামী পরিত্যক্তা ছিলেন এবং দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাঠের মধ্যে মুখ বাঁধা অবস্থায় পড়ে থাকা মরদেহ দেখতে পেয়ে তারা থানায় খবর দেন। পরে দৌলতপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলায়মান শেখ বলেন, “মরদেহের পায়ে ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং মুখ বাঁধা অবস্থায় পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ঘাস কাটাকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি এবং একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।”
এদিকে, এই রহস্যজনক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য ও নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।
ওসি আরও জানান, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। ইতোমধ্যে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভোলার বোরহানউদ্দিনে নিখোঁজের দুই দিন পর মিনহাজ (৪) নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা।
সোমবার (২৫ আগষ্ট) তার বাড়ির পার্শ্ববর্তী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের খালে মরদেহটি ভেসে উঠতে দেখে স্থানীয়রা।
মিনহাজ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মফিজুল ইসলাম সেন্টুর পুত্র।
শিশুটির পরিবার সূত্রে জানাযায়, মিনহাজ গত শনিবার থেকে নিখোঁজ ছিল। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
অবশেষে সোমবার সকালে বাড়ির পাশের খালে শিশুটির লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পরিবারের সদস্যদের ও বোরহানউদ্দিন থানায় খবর দেন। পরে স্থানীয়রা খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে।
বোরহানউদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান জানান, শিশু মিনহাজের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় বোরহানউদ্দিন থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।শিশুটি দুইদিন আগে নিখোঁজ হয়েছিল। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় পিকআপের চাপায় ইজিবাইক-চালক ও দুইজন যাত্রীসহ মোট ৩ জন নিহত হয়েছেন। এতে আরও অন্তত পাঁচজনর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌঁনে ৯টার দিকে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের ডুমুরিয়া উপজেলার জিলেরডাঙ্গা নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, ইজিবাইক যাত্রী রিনা খাতুন (৩৬) ও মোহাম্মদ রুস্তম আলী খান (৬৫) এবং ইজিবাইকের চালক মোহাম্মদ জাহিদুর মোড়ল (২৫)।
এরমধ্যে রিনা খাতুন ডুমুরিয়ার উত্তর কালিকাপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং বাগদাড়ি গ্রামে বাস করতেন রুস্তম আলী খান। অন্যদিকে নিহত জাহিদুর মোড়ল ডুমুরিয়ার খরসন্ডা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে।
হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা হতাহতদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতাল ও ডুমুরিয়া হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, খুলনা থেকে ছেড়ে আসা চুকনগরগামী একটি পিকআপ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়নের জিলেরডাঙ্গা নামক স্থানে খুলনাগামী যাত্রীবাহী একটি ইজিবাইককে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই রিনা খান ও রুস্তম আলী খান নিহত হন। আর খুমেক হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান জাহিদুর।
ডুমুরিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সিনিয়র ফায়ার ফাইটার সুবোধ মন্ডল জানান, ইজিবাইক ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে ২ জন নিহত হন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও একজন মারা যান।
মরমী সাধক ফকির লালনশাহের কুষ্টিয়াস্থ ছেঁউড়িয়া মাজার ভবনে দীর্ঘদিন ধরে ফাটল দেখা দেয়ায় আতংকিত হয়ে পড়েছেন বাউল ও ভক্তরা। মাজারের পূর্ব ,পশ্চিম উত্তর পাশের অংশের পিলারেও ফাটল ধরেছে। মাজারের গম্বুজেও ফাটলধরায় খসে পড়ছে পলেস্তারা। বৃষ্টি হলেই সমাধীর উপরে পানি পড়ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আসেকানদের খেদমত করছেন খাদেম। তবে বারবার সংস্কার হয় তাতে কোন কাজে আসেনা। তাই এবার সংস্কার নয় করতে হবে পুনর্নির্মাণ, এমন দাবী এসব লালন ভক্ত ফকির বাউলদের।
১৯৬২ সালে নির্মিত লালন মাজারের প্রধান ফটক ও মুল মাজার। এর মধ্যে কেটে গেছে ৬৩ বছর। ১৯৯৬ সালে নির্মিত হয় ভেতরের অডিটোরিয়াম ও মিউজিয়াম। প্রতিবছর দুটি উৎসব আসলেই মূল গেট ও মাজারসাদা, কালো রঙ্গে আচ্ছাদিত হয়। দিনে দিনে ইটের গাঁতুনির ভবন ও মুল গেটের স্থায়ীত্ব হারিয়েছে। দেখা দিয়েছে এখন ফাটল।
বাংলাদেশ সহ বিশ্বের কোটি কোটি লালন ভক্তদের মাঝে বাউল সম্রাট লালন শাহের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে হলে এর মুল ডিজাইন ঠিক রেখে প্রয়োজন স্থায়ী সংস্কার করা প্রয়োজন এমন প্রত্যাশ লালন ভক্ত ও অনুসারীদের।
লালনের আখড়াবাড়িতে ঘুরতে আসা দশনার্থী এস এম রুশদী জানান ফকির লালন সাইজীর আখড়া বাড়িটি এখানে তার সমাধীস্থল (হকের ঘর) এটা এখন বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থায় উপর থেকে চুন-সড়কি খুলে পড়ছে । অনেক জায়গায় ফেটে গেছে। সাইজীর মাথার ও বুকের উপর গম্বুজ ফেটে পানি পড়ছে। চারিদিকে এটা একটা বেহাল অবস্থার মধ্যে আছে।
লালন একাডেমির শিল্পী আনু ফকির বলেন, সাঈজীর মাজারটি পাকিস্তান আমলে তৈরি। ওই হিসাবে মাজারের বযস ৬০ বছরের বেশি হয়ে গেছে। এর আগে সংস্কার একবার করা হয়েছিল কিন্তু সেটা টিকে নাই। এখানে সংস্কার করলে টিকবে না মাজারটি পূর্ণনির্মাণ করতে পারলে ভালো হয়। সাইজীর মাজারের গম্বুজ ফেটে গিয়েছে, পানি পড়ে, সময় সময় প্লাস্টার খুলে পড়ছে। এখানে সব সময় দর্শনার্থীরা চলাফেরা করে এবং খাদেম সাহেব বসে থাকেন। এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে, যখন তখন ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। আমরা জেলা প্রশাসন ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি সাইজীর মাজারটি সংস্কার না করে যেন নতুন করে পুনর্নির্মাণ করা হয়।
মাজারের ভারপ্রাপ্ত খাদেম মাসুদ শাহ বলেন, বাউল সম্রাট লালন শাহের মাজার সারা বিশ্বের ভেতর আন্তর্জাতিক মাজার। এই মাজারে আছে বাত্তির নিচে অন্ধকার। এর আগে তারা সংস্কার করছে। সংস্কার করার কিছুদিনের মধ্যেই আবার যাচ্ছে তাই হয়ে গিয়েছে। পাকিস্তান পিরিয়ডে ১৯৬২ সালে তৈরি করা মাজার। সেই মাজারে আজ চতুরদিকে ফাটল ধরে গেছে। গম্বুজের নিচে চারিদিকে ফাটল ধরে গেছে। বৃষ্টি হলে সাইজীর বুকের উপর পানি পড়ে। ছাদেও রড বেরিয়ে গেছে। আগে একবার ভেঙ্গে খাদেম আহত হয়েছিলেন। আমরা চাচ্ছি সংস্কার না করে মাজারটাকে যেন পুনর্নির্মাণ করা হয়।
লালন একাডেমির সভাপতি ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো: তৌফিকুর রহমান বলেন, যেহেতু এটি একটি সংবেদনশীল বিষয়, সেহেতু ওই মাজারটিকে ভেঙে আবার তৈরি করতে গেলে সে ক্ষেত্রে ভক্তদের সাথে, আশপাশের মানুষ, সুধিজন এবং মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা প্রতিবারের মত সংস্কার এবারও করবো। অলরেডি পদক্ষেপ নেয়ার জন্য গণপূর্ত অধিদপ্তরকে আমরা বলেছি এবং তারা উদ্যোগ নিয়েছে। এটা অচিরেই সমাধান হবে। কিন্তু আশঙ্কা করা হচ্ছে যে দুর্ঘটনা ঘটবে, এরকম আশংকা আমার মনে হয়না আছে। ছোট ছোট কিছু সমস্যা আছে সেগুলো মেরামত করলে ঠিক হয়ে যাবে।